শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫
২৬ বৈশাখ ১৪৩২

দেশের যোগাযোগ খাতে ঈর্ষণীয় অর্জন ও অগ্রযাত্রা

সৈয়দ আবুল হোসেন
প্রকাশিত
সৈয়দ আবুল হোসেন
প্রকাশিত : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১২:৪৪

বাংলাদেশ একটি স্বপ্নের নাম। বাংলাদেশ আমাদের স্বপ্নের নির্মাণ। এই বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য আমরা ধাপে ধাপে সংগ্রাম করেছি, আন্দোলন চালিয়েছি এবং মুক্তিযুদ্ধ করেছি।

বায়ান্নতে ভাষার জন্য আমরা লড়াই করেছি। চুয়ান্নতে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করেছি। বাষট্টিতে আমরা গণতান্ত্রিক শিক্ষার জন্য আন্দোলন করেছি। ছেষট্টিতে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সংগ্রাম করেছি। আটষট্টিতে সাংস্কৃতিক স্বাধিকারের জন্য আমরা লড়েছি। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে জনগণ অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সত্তরের নির্বাচনে দাবি আদায়ে আমরা জনগণের ঐতিহাসিক রায় পেয়েছি। একাত্তরের অসহযোগ ও মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতায় আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।

১৯৪৭ সাল থেকে দীর্ঘ ২৪ বছরের বন্ধুর পথপরিক্রমায় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ আমরা স্বাধীনতা লাভ করি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয়। এই দীর্ঘ পথযাত্রায় অনেক মানুষ রাস্তায় নেমেছে। অনেক মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছে। অনেক মানুষ কারাবরণ করেছে। অনেক মানুষ নির্যাতিত হয়েছে। অনেক মানুষ অকাতরে প্রাণ দিয়েছে। অনেক মানুষ শহীদ হয়েছে। অনেক মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছে। বাংলাদেশ অজুত প্রাণের দান। বলা হয়, অসংখ্য মানুষের এক স্বপ্নময় নির্মাণ- এই বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ নির্মাণের নানা আন্দোলনে এবং স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির জনক।

স্বাধীনতাযুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা। অথচ দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই দেশের পুনর্গঠন ও সামগ্রিক উন্নয়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত এই যোগাযোগ ব্যবস্থা। যোগাযোগ ব্যবস্থা দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। পল এইচ ল্যান্ডিসের ভাষায়- ‘উন্নয়ন হঠাৎ ঘটে যায় না। লক্ষ্য স্থির করে নিজেদের মধ্যে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধন দ্বারা উন্নয়ন সম্ভব হয়’। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ফিরেই উন্নয়নের লক্ষ্য স্থির করেন। এবং প্রথমেই দেশের ক্ষতিগ্রস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এবং সফল রাষ্ট্রনির্মাণের অভিজ্ঞতাকে তিনি এ ক্ষেত্রে কাজে লাগান।

মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে পাকিস্তানিবাহিনী পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয়। এর ফলে মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর দেশের অর্থনীতি প্রায় অচল হয়ে পড়ে। খাদ্যশস্য, শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল, কৃষিজাত দ্রব্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানি ও রপ্তানি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এ পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে সামগ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনর্গঠনের পদক্ষেপ নেন। নৌপরিবহনের উন্নয়ন করেন। যোগাযোগের অন্যান্য ক্ষেত্রসহ বেসামরিক বিমান চলাচলের ওপর গুরুত্ব দেন।

বঙ্গবন্ধুর সরকার দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে দেশের বড় বড় সেতু, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, টেলিফোন ভবন পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করেন। পরে তিনি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, তিস্তা ও ভৈরব রেলওয়ে ব্রিজ পুনর্নির্মাণ করেন এবং তা যানবাহনের জন্য খুলে দেন। বঙ্গবন্ধু একই সঙ্গে যমুনা নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় ধ্বংসপ্রাপ্ত সব ব্রিজ পুনর্নির্মাণ করেন। তিনি চলমান সড়কগুলো মেরামতের পাশাপাশি দেশব্যাপী অতিরিক্ত ৯৭টি নতুন সড়ক নির্মাণ করেন। ঢাকা-আরিচা রুটের বড় বড় সড়ক সেতুগুলো বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে নির্মিত হয়। যমুনা নদীর উপর সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ ছিল বঙ্গবন্ধুর এক বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত। তাঁর গঠিত কমিশন ১৯৭৪ সালে ৪ নভেম্বর যমুনা সেতুর প্রাথমিক সম্ভাব্যতা রিপোর্ট প্রণয়ন করে।

বঙ্গবন্ধুর সময় ১৯৭২ সালের ৭ মার্চের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-যশোর এবং ঢাকা-কুমিল্লা রুটে বিমান চালুর ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় আন্তর্জাতিক রুটে একটি বোয়িং সংযোজিত হয়। ১৯৭৩ সালের ১৮ জুন ঢাকা-লন্ডন রুটে বিমানের প্রথম ফ্লাইট চালু হয়। কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন গঠিত হয়।

বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবরণের পর বাঙালি জাতি এক বিভীষিকাময় দৃশ্য অবলোকন করে। এরপর নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে যারা ক্ষমতাসীন হয়েছিল- তারা গদি রক্ষায়ই বেশি মনোযোগী ছিল। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে তারা মনোযোগী ছিল না। দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো নির্মাণে তারা গুরুত্ব দেয়নি। সর্বত্র ছিটেফোঁটা কাজসহ ‘আইওয়াশ’ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। ফলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা পরিকল্পিতভাবে এগোয়নি। বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পিত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে তারা এড়িয়ে গেছে।

বর্তমান সরকার জনগণের সরকার। আওয়ামী লীগ সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে। জাতির মূল উদ্দেশ্য ‘ফোকাস’ করে পরিকল্পিত প্ল্যান নিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন। সমগ্র দেশব্যাপী সড়ক, রেল, নৌপথ ও বিমান খাতের উন্নয়নে নানা উদ্যোগ নেয়। নতুন নতুন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে। যমুনা সেতু নির্মাণ সমাপ্ত করে দেশের উত্তরাঞ্চলকে সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত করে। এই যমুনা সেতু বর্তমানে ‘বঙ্গবন্ধু সেতু’ নামকরণ করা হয়েছে। ২০০১ সালে ৪ জুলাই মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তিনি সারা দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে মেগাপ্রকল্পসহ নানা পদক্ষেপ নেন। কিন্তু ২০০১-এ বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে সব উন্নয়ন কর্মসূচিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে। ফলে বাংলাদেশ পরিকল্পিত যোগাযোগ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পথ থেকে ছিটকে পড়ে।

২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে। এরপর টানা ১৪ বছর আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেন্ট নিয়ে দেশ পরিচালনায় নিয়োজিত। এ সময় দেশে বেশ কয়েকটি মেগাপ্রকল্পসহ অসংখ্য সড়ক, সেতু, নৌপথ ও রেললাইনসহ সর্বত্র ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ফলে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে, জনগণের জীবনমান উন্নয়নে আমূল পরিবর্তন এসেছে। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদদের ভাষায়- বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের অগ্রযাত্রায়।

২০০৯ সালে সরকার গঠিত হলে আমি যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমি যোগাযোগ খাতের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করি। নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করি। এবং বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিই। আমি প্রায় তিন বছর যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছি। এ সময় আমি দিনরাত পরিশ্রম করেছি। সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। যোগাযোগ খাতের উন্নয়নে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের দেশের কাজে উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছি।

এ তিন বছরে আমি সেতু বিভাগের মাধ্যমে মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে ‘পদ্মা সেতু’ নির্মাণের যাবতীয় প্রস্তুতি কার্যক্রম শুরু করি। অল্প সময়ে দ্রুততার সঙ্গে সেতুর প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করি। দাতাদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করি। ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়াও শেষ করি। যেখানে বঙ্গবন্ধু সেতুর প্রস্তুতিকাজ ১০ বছর লেগেছিল, সেখানে মাত্র দুই বছরে পদ্মা সেতুর প্রস্তুতিকাজ শেষ করি। পরের ইতিহাস, সবার জানা আছে। বিশ্বব্যাংকের ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা অভিযোগে নির্দিষ্ট সময়ে টার্গেট মোতাবেক ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতু চালু করা সম্ভব হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবিচল সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্ত নিজস্ব অর্থায়নে ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালু করা হয়।

দেশের অর্থনীতিতে ‘পদ্মা সেতু’ একটি জাদুকরি সংযোজন। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রতীক। গৌরবের প্রতীক। পদ্মা সেতু দেশের জনগণের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রেষ্ঠ উপহার। পদ্মা সেতু দেশের জিডিপিতে শতকরা ১.২৬ ভাগ এবং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে শতকরা ২.৩ ভাগ অবদান রাখবে।

এ সময় আমি ঢাকা-এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ পয়েন্টে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে কর্ণফুলী টানেল, ঢাকার জাহাঙ্গীর গেট, রোকেয়া সরণি টানেল, বেকুটিয়া ব্রিজ নির্মাণ ও বঙ্গবন্ধু সেতুর দুপাড়ে ‘বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি স্থাপন’ প্রকল্প গ্রহণ করি। ঢাকা মহানগরীর যানজাট নিরসন ও যাত্রী পরিবহনে ‘মেট্রো রেল’ চালুর সিদ্ধান্ত নিই। এগুলো এখন দৃশ্যমান।

আমি যোগাযোগমন্ত্রী থাকাকালে তিন বছরে অনেক ব্রিজ নির্মাণ করে চালু করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে মোহাম্মদপুর বসিলায় শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু। গাজীপুরে আহসানউল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু। ডেমরায় সুলতানা কামাল সেতু। চট্টগ্রামের ৩য় কর্ণফুলী নদীর ওপর শাহ আমানত সেতু। বরিশালে দপদপিয়া নদীর ওপর শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতু। ভোগাই নদীর ওপর ভোগাই সেতু প্রভৃতি।

এ ছাড়া দেশব্যাপী আরো কয়েকটি ব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করি। ব্রিজগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো: কাজিরটেক ৭ম চীন-বাংলাদেশ সেতু। লেবুখালি ব্রিজ। কুয়াকাটা সড়কে- খেপুপাড়ায় আন্ধামানিক নদীতে শেখ কামাল সেতু। হাজিপুর সোনাতলা নদীর ওপর শেখ জামাল সেতু এবং মহিপুরে শিববাড়িয়া নদীর ওপর শহীদ শেখ রাসেল সেতু। কালনা ব্রিজ। দ্বিতীয় যমুনা ব্রিজ। তৃতীয় শীতলক্ষ্যা ব্রিজ। রুমা সেতু। মেঘনা-গোমতি ব্রিজ। কাচদহ সেতু। গোপালগঞ্জে শেখ লুৎফর রহমান সেতু। দ্বিতীয় কাঁচপুর ব্রিজ নির্মাণ। চট্টগ্রাম-কালুঘাট রেলওয়ে-কাম রোড ব্রিজ। বরিশালে বিভিন্ন উপজেলা কানেকটিং-এর জন্য ৪টি ব্রিজ নির্মাণে উদ্যোগ নিই। এগুলো নির্মাণের পর বর্তমানে চালু হয়েছে। প্রতিটি ব্রিজ দেশব্যাপী এক অভিন্ন সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয়েছে।

আমার মন্ত্রিত্বকালে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশব্যাপী এক অভিন্ন ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা গৃহীত হয়। এরমধ্যে রয়েছে: ঢাকা-চট্টগ্রাম ৪-লেন সড়ক। জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ হাইওয়ে নির্মাণ। মিরপুর-এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার নির্মাণ। রংপুরে ৪-লেন সড়ক। ডেমরা-আশুলিয়া ৪-লেন সড়ক নির্মাণ। সায়দাবাদ থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত ৮-লেন সড়ক। যাত্রাবাড়ী-ডেমরা ৪-লেন সড়ক। মোংলায় ১২টি সড়ক নির্মাণ। মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেম। জয়দেবপুর-ঢাকা-হাটিকামরুল ৪-লেন সড়ক। ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা ৪-লেন সড়ক। বগুড়া-নাটোর সড়ক প্রশস্তকরণ। রংপুর বাইপাস। সাউথ-ওয়েস্ট রোড নেটওয়ার্ক প্রজেক্ট। ঢাকা বাইপাস সড়ক। ও ঢাকা রিং রোড নির্মাণ। এ ছাড়া এ সময় যাতায়াতের সুবিধার জন্য ঢাকা শহরে ৩২৫টি চায়নিজ অরিজিন বাস চালু করা হয়।

যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে আমি রেলকে পরিবেশবান্ধব, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী পরিবহন মাধ্যমে গড়ে তোলারও উদ্যোগ নিই। রেলওয়ের উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়ন শুরু করি। উল্লেখ্য, পদক্ষেপ হলো: দেশের রেলবিহীন প্রতিটি জেলায় ধাপে ধাপে রেলপথ সম্প্রসারণ করা। ঢাকা-চট্টগ্রাম সেকশনে লাইন ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা ও ডাবল-লাইনে উন্নীত করা। নতুন কোচ, ইঞ্জিন সংগ্রহপূর্বক আরও নতুন ট্রেন চালুর মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ যাত্রী চাহিদা মেটানোর উদ্যোগ নেয়া। রেলওয়েতে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ প্রদান। রেলকে ধীরে ধীরে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের চেষ্টা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াত সহজ ও যানজট কমিয়ে আনার জন্য কমিউটার ট্রেন সার্ভিস চালু করেছি।

এ সময়, ঢাকা মহানগীর যানজট নিরসন ও যাত্রী পরিবহনে মেট্রোরেল চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করি। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে রেলওয়েকে আরও গতিশীল ও দক্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রেল পরিবহন নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হওয়া। পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগসহ যমুনা নদীর ওপর পৃথক রেল ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা। দ্বিতীয় ভৈরব ও তৃতীয় তিস্তা রেল সেতু নির্মাণ। যাত্রীসেবা নিশ্চিত করা ও মালামাল পরিবহনে সক্ষমতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক লোকোমোটিভ, যাত্রীবাহী কোচ, ফ্লাটওয়াগন, ব্রেকভ্যানসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সংগ্রহ করা।

আমার তিন বছর দায়িত্ব পালনের সময়ে দেশে অভিন্ন সড়ক নেটওয়ার্কের লক্ষ্যে এ সব প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কোনো সরকারের তিন বছরে এত মেগাপ্রকল্প এবং জনগণের সুবিধাবৃদ্ধির কর্মসূচি নেয়া হয়নি। এ সব কর্মসূচির অধিকাংশ এখন চালু হয়েছে। ফলে এখন জনগণ এ সব সড়ক ও ব্রিজের সুবিধা ভোগ করছে।

২০১২ থেকে ২০২৩ সাল। এ সময় দেশে সড়ক, রেল, নৌপথ ও বিমান পথের উন্নয়নে নানা কর্মসূচি গৃহীত হয়েছে। এবং আমার সময় গৃহীত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখন সারা বাংলাদেশ সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত। বঙ্গবন্ধু ব্রিজ সমগ্র উত্তরাঞ্চলকে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যুক্ত করেছে। ‘পদ্মা সেতু’ সমগ্র দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যুক্ত করেছে। দেশব্যাপী সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন হয়েছে। বর্তমানে দেশে প্রায় ২২ হাজার কিলোমিটার মহাসড়ক নেটওয়ার্ক রয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৪৫৩ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক ৪-লেন বা ৬-লেনে উন্নীত হয়েছে।

এ ছাড়া, বাংলাদেশে প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা চালু হয়েছে। ৮-লেন বিশিষ্ট যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর, ৪-লেন বিশিষ্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিহ, নবীনগর-ডিইপিজেড-চন্দ্রা, গাজীপুর-টাঙ্গাইলসহ বেশকিছু মহাসড়কের কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ৪৪১ কিলোমিটার মহাসড়ক উভয়পাশে পৃথক সার্ভিস লেনসহ এবং ১৭৬ কিলোমিটার মহাসড়ক সার্ভিস লেন ছাড়া ৪-লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান রয়েছে। অধিকন্তু সারা দেশের ১৭৫২ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক উভয় পাশে সার্ভিস লেনসহ ৪-লেনে উন্নীতকরণে নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। আরো ৫৯০ কিলোমিটার জাতীয় সড়ক সার্ভিস লেনসহ ৪-লেনে উন্নীতকরণের সম্ভাব্যতা যাচাইসহ বিস্তারিত নকশা প্রণয়নের কাজ চলছে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর জাতীয় ও মহাসড়ক নির্মাণে অবদান অব্যাহত রেখেছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর গ্রাম থেকে গ্রাম, গ্রাম থেকে উপজেলা এবং জেলা শহরের সঙ্গে উপজেলার যাতায়াত সহজিকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ফলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হাজার হাজার কিলোমিটার কাঁচা ও পাকা সড়ক নির্মিত হয়েছে। ফলে এখন জনগণের দোরগোড়ায় সড়ক নেটওয়ার্ক পৌঁছে গেছে।

দুর্গম পাহাড়ি তিন জেলার মানুষের সহজ যাতায়াতের জন্য সড়ক নির্মিত হয়েছে। উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশের মানুষ, ঢাকার জনগণ মেট্রোরেলে যাতায়াত করছে। মাটির তলদেশ দিয়ে ঢাকা মেট্রোরেলের কাজও শুরু হয়েছে। ঢাকার যানজট নিরসনে বিভিন্ন ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে। চাহিদার ভিত্তিতে আরো ফ্লাইওভার ও সড়ক নির্মাণে প্রস্তুতিকরণ কাজ প্রণয়ন করা হয়েছে। বিশ্বমানের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য আরো বেশ কিছু মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল-ভুটানকে নিয়ে সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) আঞ্চলিক সহযোগিতার আওতায় একটি সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ এগিয়ে চলেছে।

পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পনা ২০৪১ অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের সব মহাসড়ক ৬-লেন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশের সব মহাসড়ক ৮-লেনে উন্নীত করা হবে। দেশের প্রতিটি জেলার সঙ্গে রেল পরিসেবা চালু করা হবে। বাংলাদেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য ২৪ হাজার কিলোমিটার। পরিবহনযোগ্য নৌপথ প্রায় ৬ হাজার। এই নৌপথের উন্নয়নে সরকার নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে সড়ক, রেল, আকাশ ও নৌপথকে সমান গুরুত্ব দিয়ে একটি আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজও চলছে। টোকিওতে অনুষ্ঠিত এক বিজনেস সেমিনারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমরা এ অঞ্চলের সব দেশের সঙ্গে সড়ক, রেল, জল ও আকাশ পথে যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে গড়ে তুলতে চাই’।

বর্তমান বিশ্ব ‘গ্লোবাল ভিলেজ’-এ রূপান্তরিত হয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে আকাশ পথের এখনো কোনো বিকল্প নেই। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আকাশপথের যোগাযোগ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, আকাশপথের উন্নয়নের মাধমে দেশের উন্নয়ন দ্রুত করা সম্ভব। তাই তিনি বাংলাদেশ বিমানের বহরে নতুন নতুন বিমান সংযোজন করেছেন। ঢাকার বিমান বন্দরের উন্নয়ন করেছেন। থার্ড টার্মিনাল যুক্ত করে বিমান-ওঠানামা ও যাত্রীসেবা বাড়িয়েছেন। তিনি সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করেছেন। দেশের অন্যান্য বিমান বন্দরের সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়েছেন। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী আরেকটি নতুন বিমান বন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। বিভিন্ন সম্ভাব্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে। আশা করি, এটা সার্বিক বিবেচনায় মাদারীপুরের শিবচরে হবে। যেহেতু মুন্সীগঞ্জে প্রস্তাবটি নিয়ে অগ্রসর হওয়া যায়নি।

টেলিযোগ ব্যবস্থা বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারই ‘অপটিক্যাল ফাইভার কেবলস’ সংযোজনের মাধ্যমে বিশ্বের সঙ্গে, দেশের সঙ্গে সরাসরি নেটওয়ার্ক যোগাযোগ স্থাপন করেছে। দেশে বর্তমানে ৪টি ভূ-উপকেন্দ্র রয়েছে। বিদেশি নির্ভরশীলতা কমাতে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ স্থাপন করা হয়েছে। টেলিভিশন ও বেতারকে কার্যকর মাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। আজ ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বকে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ জন্য পৃথক আইসিটি মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বর্তমান সরকার টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণ করে বাংলাদেশকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ রূপান্তরের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

যে কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর আবর্তিত হয় দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। বাংলাদেশের জন্য এ কথাটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে কৃষিজাত দ্রব্যাদি, শিল্পের কাঁচামাল, শিল্পজাত পণ্যসামগ্রী সহজ ও স্বল্প ব্যয়ে স্থানান্তরের সুবিধা হয়। এর ফলে দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। শিল্প ও ব্যবসার প্রসার ঘটে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হয়। এ জন্যই যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ‘অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি’র বাহন বলা হয়।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পর্কে পণ্ডিত কার্ল সিডম্যান বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন একটি সম্প্রদায় বা অঞ্চলের জন্য উন্নত ও বিস্তৃতভাবে ভাগ করা অর্থনৈতিক কল্যাণ ও জীবনযাত্রার মান তৈরি করতে ভৌত, মানবিক, আর্থিক ও সামাজিক সম্পদ তৈরি এবং ব্যবহার করার একটি প্রক্রিয়া’। আর সম্পদ তৈরি ও তা মানুষের কল্যাণে ব্যবহারে দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রয়োজন হয়। এ প্রসঙ্গে হেনরি এস ফায়ারস্টোন বলেন, ‘নেতৃত্বের সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ও তাদের সন্তুষ্টি অর্জন’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসাধারণ নেতৃত্বগুণ এবং দেশের মানবিক, সামাজিক ও আর্থিক খাতের পরিকল্পতি উন্নয়নে, উন্নয়নের সঠিক ধারা অনুসরণ করায় আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের ঈর্ষণীয় অগ্রযাত্রায়। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিটি কর্মসূচি, উন্নয়ন কর্মসূচি দেশের মানুষের কল্যাণে বাস্তবায়িত হচ্ছে। শেখ হাসিনা উন্নয়নবান্ধব নেত্রী। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নবান্ধব নেত্রী। শিক্ষাবান্ধব নেত্রী। বিদ্যুৎবান্ধব নেত্রী। ডিজিটাল বাংলাদেশের নেত্রী। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার একচ্ছত্র নেত্রী। আজ বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। গত দেড় দশকে দেশে যে উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে, সে উন্নয়নের ঊর্ধ্বগতি দেখে সারা বিশ্বের নেতারা বিস্মিত, অভিভূত। বাংলাদেশ ভাগ্যবান- আমরা ভাগ্যবান যে শেখ হাসিনার মতো উদ্যোগী ও সাহসী এবং দেশপ্রেমিক নেতা আমরা পেয়েছি। আল্লাহর কাছে আমরা শোকরিয়া আদায় করছি। মহান আল্লাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দীর্ঘজীবী করুন।

বঙ্গবন্ধু বাঙালির অধিকার আদায় ও স্বাধীনতার জন্য জীবনের অধিকাংশ সময় জেল খেটেছেন। তিনি সারাটা জীবন, নিজের মানুষের, বাঙালিকে ভালোবেসেছিলেন। বাঙালির অধিকার আদায়ের জন্য আমৃত্যু সংগ্রাম করেছেন। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু নিজেই বলেছিলেন- ‘My strength is I love my people. My weakness is I love them too much.’

আজ বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই। তাঁর সততা, দেশপ্রেম, আদর্শ ও কর্মপ্রয়াস নিবিড়ভাবে গ্রথিত হয়ে আছে বাঙালির অস্তিত্বে, বাঙালির অস্তিমজ্জায়। বঙ্গবন্ধু’র আদর্শ যা আমাদের চিন্তা-চেতনায় একাকার তা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই আমরা গড়ে তুলব আগামীর বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা, বঙ্গবন্ধুর সেই ‘উন্নয়ন পতাকা’ নিয়ে এগিয়ে চলেছেন। উন্নয়ন পতাকা নিয়ে এগিয়ে চলার উদ্দেশ্য হলো- বাংলাদেশকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা। জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন করা। বঙ্গবন্ধুর আজন্ম স্বপ্ন- সোনার বাংলা গড়ে তোলা। প্রসঙ্গত প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিককালের দুটি উক্তি প্রণিধান্যযোগ্য। উক্তি দুটো হলো: ‘আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে দেশের উন্নয়ন করে’। ‘আমার কাছে ক্ষমতা মানেই হচ্ছে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করা। জনগণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করা’। আসুন, আমরা সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করি। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নসহ দেশের অর্থনৈতিক খাতগুলোকে শক্তিশালী করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলি।

লেখক: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিককর্মী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সমাজসেবক, শিক্ষা-উদ্যোক্তা ও সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী


সড়ক সুরক্ষায় কাজে আসছে না এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল প্রতিনিধি

যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক সুরক্ষায় অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন বন্ধে বেনাপোল এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশনটি পরিচালনায় বছরে সরকারের ২ কোটি ২৩ লাখ টাকা খরচ হলেও কোনো সুফল নেই। সড়কে পণ্য পরিবহনকারী বাণিজ্যিক সংগঠনগুলোর সহযোগিতা না পাওয়ায় সেবা দিতে পারছে না। এদিকে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ভোমরা ও নওয়াপাড়া বন্দর সড়ক বাদ রেখে কেবল বেনাপোল সড়কে স্কেল চালু করলে এ রুটে বাণিজ্য কমার আশঙ্কায় স্কেল ব্যবহারে তাদের আপত্তি রয়েছে।

প্রতিবছর সড়ক উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছেন। তবে পণ্য পরিবহনকারী ট্রাকচালকরা সড়ক আইন না মানায় অল্প দিনেই সড়কগুলো ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে। এতে সড়ক ব্যয় যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে দুর্ঘটনা। সড়ক পথে ভারতের সঙ্গে যে বাণিজ্য হয় যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় তার ৮০ শতাংশ হয় বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহার করে। বাংলাদেশ-জাপান বন্ধুত্বের সম্পর্ক বাড়াতে জাপানি এনজিও সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২২ সালে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক সুরক্ষায় বেনাপোল পৌর গেট এলাকায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ওয়িং স্কেল স্থাপন করে। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট ওয়িংস্কেল পরিচালনায় ৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা চুক্তিতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইউডিসিকে টেন্ডার দেয় সরকার। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে কর্মকর্তা প্রকৌশলী ও কর্মচারীসহ স্কেল পরিচালনায় ৪২ জন কাজ করছেন। নিরাপত্তায় রয়েছে ৭ জন আনসার সদস্য। অতিরিক্ত পণ্য পরিবহনে প্রথম টনে ৫ হাজার ও দ্বিতীয় টনপ্রতি ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে স্কেলে অতিরিক্ত পণ্য শনাক্ত হলেও জরিমানা আদায় বা ওভার লোড বন্ধে কোনো প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণে অর্থ বিফলে যাচ্ছে এবং অতিরিক্ত পণ্য বহনে সড়ক নষ্ট হচ্ছে। পরিবহন ব্যবসায়ীরা বলেন, নওয়াপাড়া ও ভোমরা বন্দর সড়ক বাদ রেখে কেবল বেনাপোলে স্কেল চালু করলে এ রুটে ব্যবসা কমে আসবে। পার্শ্ববর্তী বন্দরগুলোতে স্কেল চালু হলে বেনাপোল এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশনটি ব্যবহার করবেন ব্যবসায়ীরা।

বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির সভাপতি আতিকুজ্জমান সনি বলেন, পদ্মা নদীর এপারে বেনাপোলসহ আরও চারটি বন্দর রয়েছে। ভোমরা বন্দর, নওয়াপাড়া বন্দর ও মোংলা বন্দর। ভোমরা বন্দর, নওয়াপাড়া বন্দর ও মোংলা বন্দরে ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন না করে বেনাপোল বন্দরসংলগ্ন সড়কে ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করে আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সড়ক সুরক্ষায় বেনাপোল যশোর সড়কে ওজন স্কেল স্থাপনকে সাধুবাদ জানায়। তবে অন্য তিনটি বন্দরে ওজন স্কেল স্থাপন করে একত্রে চারটি বন্দর সংলগ্ন সড়কে ওজন স্কেল চালু করার দাবি জানায়। শুধু বেনাপোলে সড়কে ওজন স্কেল চালু করা করা হলে ব্যবসায়ীরা বেনাপোল বন্দর ছেড়ে অন্য বন্দরে চলে যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে বেনাপোল বন্দর। এ জন্য এ স্কেল ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না।

বেনাপোলের ব্যবসায়ী সাজেদুর রহমান জানান, বেনাপোল-যশোর সড়কের পৌর গেট এলাকায় ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করার ফলে ব্যবসায়ীদের মাঝে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেশী মোংলা, ভোমরা ও নওয়াপাড়া বন্দরে কোনো ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করা হয়নি। বেনাপোল সড়কের ওজন স্কেল চালু করা হলে এ বন্দর দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব নয়। অন্য বন্দর দিয়ে ট্রাকে মাল একটু কম বা বেশি হলেও কোনো সমস্যা হবে না। তাহলে কেন আমি এ বন্দর দিয়ে মাল এনে জরিমানা দিব? পার্শ্ববর্তী অন্য বন্দরগুলোয় ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল চালু করা হলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

নাভারন হাইওয়ে পুলিশের ওসি রোকনুজ্জামান জানান, বেনাপোল দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর। এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত পণ্যবাহী ট্রাক যাতায়াত করে থাকে। এ বন্দরে আসা পণ্যবাহী ট্রাকগুলো বেনাপোল-যশোর সড়ক ব্যবহার করে থাকেন। ট্রাকগুলোতে অতিরিক্ত পণ্য বহন করলেও কোনো ওজন স্লিপ না থাকার কারণে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছি না। পণ্যবাহী ট্রাকের ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বেনাপোল পৌর গেটে ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন করা হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের অসহযোগিতার কারণে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেলটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। এ স্কেলটি চালু করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।


কাজের জন্য কক্সবাজার গিয়ে নিখোঁজ ৬

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

কাজের উদ্দেশ্যে কক্সবাজার গিয়ে পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার একই গ্রামের পাঁচ তরুণসহ ছয়জন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কারও কোনো সন্ধান পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা।

নিখোঁজরা হলেন— জকিগঞ্জ উপজেলার ৪ নম্বর খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ (২০), ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১), মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও মৃত সরবদির ছেলে আব্দুল জলিল (৫৫)।

তারা সবাই উপজেলার ৪ নম্বর খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহার মহল গ্রামের বাসিন্দা।

নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা জানায়, মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে সিলেট থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন তারা। পরদিন ১৬ এপ্রিল (বুধবার) সকালে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পৌঁছা পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও এরপর থেকে তাদের সকলের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে পুলিশ বলছে, মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাকিং করে ছয়জনের অবস্থান কক্সবাজার দেখাচ্ছে। পুলিশ এনিয়ে কাজ করছে।

নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খলাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সফর উদ্দিন।

নিখোঁজ এমাদ উদ্দিনের চাচাতো ভাই আব্দুল বাছিত দুলাল বলেন, ‘কক্সবাজার পৌঁছার পর জানিয়েছিল পৌঁছেছে। এরপর থেকে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন কক্সবাজারে যাচ্ছেন। সেখানে গিয়ে থানায় জিডি করবেন। জকিগঞ্জ থানায় অভিযোগ নিচ্ছে না।’

নিখোঁজ রশিদ আহমদের ভাই আব্দুল বাছিত বলেন, ‘৪ থেকে ৫ বছর ধরে রশিদ চট্টগ্রামে কাজ করে। বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। কক্সবাজার এই প্রথম গিয়েছে। ওইখানে এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতো। ওইদিনও ওই ঠিকাদারের কাছে তারা যায়। এরপর থেকেই তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ। যদি তারা স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকতো বা কেউ জিম্মি করত, তাহলে তো টাকা পয়সা চাইতো, এরকম কিছুই না। আমাদের ধারণা তাদের ওইখানে যে লোক নিয়েছে, ওই লোকই কিছু করেছে।’

তবে ঠিকাদারের নাম ঠিকানা কোনো কিছু জানাতে পারেননি নিখোঁজ রশিদের ভাই বাছিত।

নিখোঁজ খালেদ হাসানের বাবা ও ইউপি সদস্য সফর উদ্দিন বলেন, ‘তারা প্রায় সময়ে কাজের জন্য চট্টগ্রাম ৫ থেকে ৬ মাস থাকে। ঈদে বা ওয়াজের সময় বাড়িতে আসে। আবার সেখানে গিয়ে কাজ করত। মঙ্গলবারের পর থেকে আর কোনো যোগাযোগ নেই। গতকাল সারারাত থানায় ছিলাম।

তিনি বলেন, ‘ঠিকাদারের মোবাইল বন্ধ। তবে ঠিকাদারের নাম রশিদ ও তার সঙ্গে একজনের নাম বাবুল বলে জানিয়েছেন থানার ওসি। যে জায়গা থেকে তারা নিখোঁজ হয়েছেন সেখানে অভিযোগ দেওয়ার জন্য পুলিশ জানিয়েছে। আমাদের এলাকার আরও লোকজন সেখানে রয়েছেন তারাও তাদের মতো করে খোঁজাখুঁজি করছেন।’

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, ‘নিখোঁজ ছয়জনই দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে কাজ করেন। এখন হঠাৎ করে পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করতে পারছেন না। আমরা গত ১৮ এপ্রিল বিষয়টি অবগত হয়েছি। এরপর থেকে কাজ করছি। মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান কক্সবাজার দেখাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কারও পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।’


উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়েছেন পিয়ন

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের পিওন সুমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা।
আপডেটেড ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১৫:৩০
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মাহবুব আলম সুমন নামে মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের এক পিয়নের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন সরকারি অনুদানের কথা বলে ও প্রধান উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে তাদের কাছ থেকে এ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগীরা প্রতিকার চেয়ে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমানের কাছে পৃথক তিনটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগকারীরা হলেন- সনমান্দি ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের নুরউদ্দিনের মেয়ে স্বর্ণা আক্তার, একই ইউনিয়নের গিরদান গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে তাসলিমা বেগম ও নাজিরপুর গ্রামের মুকবিল হোসেনের ছেলে জনি মিয়া।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তারের কার্যালয়ের পিয়ন মাহবুব আলম সুমন সনমান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দরিদ্র অসহায়দের নগদ দুই লাখ করে টাকা অর্থ সহায়তা দেবেন বলে প্রচার করেন। সেই অর্থ পেতে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসংস্থান ব্যাংকে ৬ হাজার টাকা করে জমা দিতে হবে বলে জানান। পিওনের কথা বিশ্বাস করে ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের শতাধিক মানুষ তাকে ৬ হাজার টাকা করে ব্যাংকে দেওয়ার জন্য দিয়েছেন। তবে ওই টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার নাম করে তিনি আবেদনকারীদের মোবাইল ফোনে সান্ত্বনা এসএমএস দিয়েছেন। সেখানে লেখা রয়েছে আপনার অ্যাকাউন্টে পাঁচ হাজার টাকা জমা হয়েছে। তবে বিষয়টি আবেদনকারীদের সন্দেহ হলে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসংস্থান ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে তাদের নামে কোনো অ্যাকাউন্ট নেই। তাছাড়া সেখানে কোনো প্রকার টাকা-পয়সা জমা হয়নি।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রধান উপদেষ্টার অনুদানের কথা বলে নগদ টাকা ছাড়াও সরকারি ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রায় ৩২ জনের কাছ থেকে তিনি এক থেকে দেড় লাখ, গাভী দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২৬ জনের কাছ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়া মাতৃত্বকালীন ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, খাদ্য ভাতা পাইয়ে দেওয়ার জন্যও টাকা নিয়েছেন।

ভুক্তভোগী স্বর্ণা আক্তার জানান, তারা গরিব মানুষ। মাহবুব আলম সুমন মৎস্য কর্মকর্তার পরিচয়ে প্রধান উপদেষ্টার অনুদান দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন। তারা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

সনমান্দী ইউনিউনের আরেক ভুক্তভোগী তাছলিমা বেগম জানান, তাদের এলাকার অনেকের থেকেই বাড়ি ও গাভী দিবে বলে এক থেকে দেড় লাখ টাকা টাকা নিয়েছেন। অফিসে এসে জানতে পেরেছি তিনি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা নিয়েছেন।

অভিযুক্ত পিওন মাহবুব আলম সুমনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তাকে ক্ষুদে বার্তা দেওয়া হলেও কোনো উত্তর আসেনি।

সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে তাকে শোকজ করা হয়েছে। তদন্তে সত্যতা পেলে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান বলেন, ‘আমার কাছে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


অনিয়ম-দুর্নীতিতে হাবুডুবু খাচ্ছে কৃষি অফিস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের প্রতিটি খাতেই অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়ে কৃষি অফিসকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করছে কর্মকর্তা শাহিন রানা। কৃষকদের জন্য ধান, সয়াবিন, বাদাম ও ভুট্টা কাটার যন্ত্রপাতি বরাদ্দ এনে তা প্রকৃত কৃষকদের না দিয়ে তার পছন্দের লোক দিয়ে অন্যদের কাছে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ট্রেনিং, প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর নামে কৃষকদের এনে নামমাত্র নাস্তা ও সামান্য নগদ টাকা ধরিয়ে দিয়ে সাদা কাগজ স্বাক্ষর ও টিপসই নিয়ে বিদায় করা হয়। কৃষি অফিসটি এভাবে দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিণত করছেন এই কর্মকর্তা।

অভিযোগ উঠেছে, কৃষক প্রশিক্ষণ, মাঠ দিবস, প্রদর্শনী, কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বরাদ্দসহ বিভিন্ন খাতের বরাদ্দের সিংহভাগ লুটপাট হচ্ছে। তারা কৃষকদের নিয়ে একটি ফসলের মাঠ দিবসের অনুষ্ঠান করে ব্যানার টাঙিয়ে ছবি তুলে রেখেই বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করে চলেছেন। এছাড়া প্রতিটি বরাদ্দের কলাম ফাঁকা রেখেই স্টক-রেজিস্টারে নেওয়া হয় কৃষকদের স্বাক্ষর ও টিপসই।

এসব অভিযোগের সত্যতার খোঁজে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রদর্শনীতে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকদের জন্য বরাদ্দের চার ভাগের তিন ভাগই চলে যাচ্ছে কৃষি কর্মকর্তা শাহিন রানার পকেটে। সরকারি বরাদ্দের এক-চতুর্থাংশও কৃষকরা পাচ্ছেন না। অফিসের যন্ত্রপাতি (মেশিন) থেকে শুরু করে প্রতিটি খাত থেকে কৃষি কর্মকর্তার বাণিজ্য এখন ওপেন সিক্রেট। বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে অংশ গ্রহণকারী কৃষকদের মানসম্মত নাস্তা ও খাবার দেওয়া হচ্ছে না বলেও জানান অন্তত ১৫ জন কৃষক।

বেশির ভাগ কৃষকই জানেন না, তাদের জন্য সরকার কি পরিমাণ বরাদ্দ দিচ্ছে এবং কৃষকরা পাচ্ছেন কতটুকু। তারা বলছেন, আমরা তো এত কিছু জানিও না, আর বুঝিও না। কৃষি অফিসে বরাদ্দের পরিমাণ জানতে চাইলে কিছুই জানায় না। উল্টো তার নাম কেটে দেওয়ার হুমকি ধমকিও দেন এ কর্মকর্তা। এতে কৃষকরা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।

কৃষি অফিস বলছে, বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সরিষা, খেসারি, মসুর, চিনাবাদামসহ বিভিন্ন ফসলের প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে এবং কৃষকদের সব বরাদ্দ পূর্ণভাবে বণ্টন করা হয়েছে। কিন্তু নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একটি সূত্র বলছে, উন্নত মানের ধান, গম, পাট ও ভুট্টার বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণের নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৫ জন কৃষককে ৫ একরের একটি করে প্রদর্শনী প্লট দেওয়ার কথা। কোন গ্রুপে ১৫ হাজার আবার কোন গ্রুপে ১০ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না। হেক্টর-প্রতি কৃষকের জন্য যে পরিমাণ বীজ, সার, কীটনাশক,নগদ টাকাসহ যেসব উপকরণ দেওয়ার কথা তাও দেওয়া হয়েছে নামমাত্র।

এএসসিপি প্রকল্পের মাধ্যমে রয়েছে কৃষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। প্রতিটি প্রশিক্ষণে অংশ নেন ৩০ জন কৃষক। ওই প্রশিক্ষণে প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থী কৃষকের জন্য খাবার বাবদ বরাদ্দ ৪০০ টাকা এবং ব্যাগ বাবদ ৬৫০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও কৃষকদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় ১০০ টাকা দামের ১ প্যাকেট বিরিয়ানি আর ১০০ থেকে ১৫০ টাকার একটি ব্যাগ। তাদের অভিযোগ বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে অংশ গ্রহণকারী কৃষকদের মানসম্মত নাশতা ও খাবার দেওয়া হচ্ছে না।

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে কৃষক ও যন্ত্রপাতি বরাদ্দের তালিকা চাইলে তিনি আজ নয় কাল বলে তালবাহানা করে তালিকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ প্রতিবেদক কাগজপত্রের জন্য কৃষি অফিস অন্তত তিনবার গিয়ে তার কাছ থেকে এসব তথ্য নিতে পারেননি।

একটি বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, গত বছর কমলনগর উপজেলায় ভুট্টা কাটার মেশিন ৮ টি,কম্বাইন হারভেস্টার ২ টি,রিপার ৪ টি,রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ওয়াকিং টাইপ ২ টি ও পাওয়ার স্প্রয়ার ১ টি বরাদ্দ দেওয়া হয়। কমলনগর উপজেলায় ভুট্টা চাষ না হলেও এ কর্মকর্তা লুটপাটের উদ্দেশ্যে ধান কাটার মেশিন বাদ দিয়ে ভুট্টা কাটার মেশিনের চাহিদা পাঠান। এতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে ৮ টি মেইজ শেলার (ভুট্টা মাড়ার মেশিন) বরাদ্দ দেন। মেশিনগুলো প্রকৃত কৃষকদের না দিয়ে তার অনুগত লোকজনের নামে বরাদ্দ দেখিয়ে ফটোসেশান করে ওই মেশিন অন্যদের নিকট নামেমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দেন। ৪ টি রিপার পেলেও ওইগুলো তার পছন্দের এক দালালের মাধ্যমে ভৈরব নিয়ে বিক্রি করার অভিযোগ উঠে।

উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের ফজুমিয়ারহাট এলাকার মোঃ আবুল কাশেমের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম পেয়েছেন একটি মেইজ শেলার মেশিন। ১৫ দিনের মাথায় তিনি ওই মেশিনটি অন্য এক কৃষকের নিকট বিক্রি করে দেন।

চরলরেন্স এলাকার হাছন আলীর নামে একটি মেইজ শেলার মেশিন বরাদ্দ দেখানো হয়। তার ফোন নম্বরে কল করা হলে নাম্বারটি ঢাকার এক বাসিন্দা দাবী করে বলেন, তার বাড়ী ঢাকায়, তিনি এসব বিষয়ে কিছুই জানেননা। তার ফোন নাম্বার কৃষি অফিসের তালিকায় কেন থাকবে বলে প্রশ্ন রাখেন তিনি।

পুষ্টি বাগানের জন্য বিভিন্ন গ্রুপে ১৪৫ জন কৃষককে ৩ হাজার ৭০০ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতি কৃষককে ৫টি গাছের চারা,২৫০ টাকার বীজ, ও ৪৫০ টাকার সার দিয়ে বাকি টাকা সম্পূর্ণ তার পকেটে ঠুকান বলে অভিযোগ করেন ৫ জন কৃষক।

এসএসিপি প্রকল্পের আওতায় বাগান পরিচর্যার জন্য শতাধিক কৃষককে ট্রেনিং দেওয়া হয়। এতে প্রত্যেক কৃষকের জন্য ১০ হাজার ৫০০ টাকা ভাতা দেওয়ার কথা থাকলেও কৃষি কর্মকর্তা সাদা-কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দুইভাগ ৫ হাজার টাকা ধরিয়ে দেন। এ নিয়ে কৃষকদের সাথে কর্মকর্তার বাকবিতণ্ডাও হয়েছে বলে তিনজন কৃষক এ প্রতিবেদকে নিশ্চিত করেন।

এছাড়া এসএসিপি প্রকল্পের আওতায় কৃষক ট্রেনিংয়ের নামে ২০ টাকার নাস্তা,১২০ টাকার দুপুরের খাওয়া ও নগদে ২৫০ টাকা ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ভাবেই চলছে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এ দপ্তরটি।

এসএসিপি প্রকল্পে ট্রেনিং নেওয়া সাহেবের-হাট এলাকার কৃষক খুরশিদ আলম বলেন, একবার একটা ট্রেনিং করে তিনি ৮০০ টাকার ভাতা পেয়েছেন।

চরফলকন এলাকার কৃষক মো. ইউসুফ জানান, তার একটি পুষ্টি বাগান রয়েছে। কখনো ট্রেনিং করেননি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে একটা আমের চারা, লেবুর চারা ও একটি সাইনবোর্ড ছাড়া তিনি কিছুই পাননি।

চরলরেন্স এলাকার কৃষক মোঃ ইউসুফ জানান, তার একটি টমেটো বাগান রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে একটি প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে একবার ২ হাজার ৫০০, আবার ৩ হাজার টাকা ও কিছু বীজ পেয়েছেন তিনি।

বরাদ্দের বিষয়ে অফিসের এক সহকারী বলেন, ‘কৃষক ও কৃষি যন্ত্রপাতি বরাদ্দের কোনো কপি আমাদের দেওয়া হয় না। অফিস থেকে মৌখিকভাবে জানানো হয়, আমরা ডায়েরিতে নোট করে নিই।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কমলনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিন রানা বলেন, ভুলত্রুটি থাকতেই পারে। তবে তার আমলে কৃষকদের বরাদ্দ সঠিকভাবে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের পছন্দের কেউ থাকলে নাম দিতে পারেন। আমি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আপনাদের দেওয়া নামগুলোকে বরাদ্দের আওতায় নিয়ে আসব।’


৪০০ কিলোমিটার সাঁতরে চাঁদপুরে রফিকুল, গন্তব্য বঙ্গোপসাগর

আপডেটেড ২৩ মার্চ, ২০২৫ ১৩:০৯
ইউএনবি

দীর্ঘ ৪০০ কিলোমিটার নৌপথ সাঁতরে চাঁদপুরে পৌঁছেছেন সাহসী সাঁতারু রফিকুল ইসলাম। তার লক্ষ্য বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত যাওয়া। কুড়িগ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকা ঝুনকারচর থেকে তিনি যাত্রা শুরু করেছেন। এই যাত্রায় চাঁদপুরে পৌঁছাতে তার সময় লেগেছে ১৯ দিন।

সিরাজগঞ্জের বেলকুচির বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম একজন সাহসী উদ্যমী সাঁতারু। তার আরেকটি বিশেষ পরিচয় হলো তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী এভারেস্ট বিজয়ী নিশাত মজুমদারের স্বামী। তিনিও তার সঙ্গে রয়েছেন।

চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মোলহেডে শনিবার (২২ মার্চ ) বিকালে সাঁতারু রফিকুল ইসলাম সাঁতার কেটে মেঘনা পাড়ে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান চাঁদপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুনতাসির আহমেদ, বিশ্ব ভ্রমণকারী তানভীর অপুসহ চাঁদপুরবাসী।

সাঁতারু রফিকুল ইউএনবিকে জানান, অভিযাত্রী সংগঠনের পক্ষ থেকে কাজ করা হয় অ্যাডভেঞ্চার রোমাঞ্চকর বিষয়ে। এরই ধারাবাহিকতায়শোক থেকে শক্তিস্বাধীনতা দিবসের অর্জনের শক্তি হিসেবে গত ২১ ফেব্রুয়ারি ভোরবেলা থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার নৌপথ সাঁতরিয়ে অতিক্রম করবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে তিনি নদীতে ঝাপ দেন, শুরু করেন সাঁতার।

তিনি আরও বলেন, শনিবার শরীয়তপুরের সুরেশ্বর চরআত্রা এলাকা থেকে সকাল ৭টায় রওনা করে বিকাল সাড়ে ৪টায় চাঁদপুর মোলহেডে এসে পৌঁছেন তিনি।

সময় তিনি ২২ কিলোমিটার নদী পথ সাঁতরে আসেন। দেখা গেলো তিনি বেশ চাঙা উদ্যমী। (মরালী বুস্ট আপ)

তিনি আরও বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ২২ মার্চ শনিবার দিন পর্যন্ত তিনি প্রায় ৪০০ কিলোমিটার নদী পথ সাঁতার কেটেছেন।

এর মধ্যেকুড়িগ্রামের চিলমারী, যমুনা সেতু , পদ্মা-মেঘনাসহ অনেক নদী পথ পাড়ি দিয়েছেন তিনি।

রফিকুল ইসলাম রবিবার ভোরে চাঁদপুর থেকে রওনা করবেন ১৫০ কিলোমিটার নৌ পথ পাড়ি দিয়ে বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশে। তার সঙ্গে রয়েছেন সার্বক্ষণিক অনুপ্রেরণাদানকারী এভারেষ্ট বিজয়ী সহধর্মীনি নিশাত মজুমদার, সহযাত্রী ফারুকসহ গ্রেট ডেলটা (কুড়িগ্রাম থেকে শুরু হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে বঙ্গোপসাগর ) অভিযাত্রী সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা।

সাহসী এই সাঁতারু আরও বলেন, নদীমাতৃক আমাদের এই দেশ। এদেশে অনেক ছোট, বড় নদী রয়েছে। সাঁতার কাটতে কাটতে চেনা যায় নদীর পারের সহজ সরল মানুষদের। নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সকলের দোয়াও কামনা করেন তিনি।


নাফ নদীতে ৩৩ জন বিজিবি সদস্য নিখোঁজের খবরটি গুজবনির্ভর অপপ্রচার: বিজিবি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সীমান্তবর্তী নাফ নদীতে অভিযানে গিয়ে বিজিবির ৩৩ জন সদস্য নিখোঁজের বিষয়টি গুজবনির্ভর অপপ্রচার বলে জানিয়েছে বিজিবি

শনিবার রাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে কথা জানানো হয়।

বিজিবি জানিয়েছে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে, গত দুই দিন ৩৩ জন বিজিবি সদস্য নাফ নদীতে মিশনে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গুজবনির্ভর এই অপপ্রচারে বিজিবির দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত এই তথ্যটি ভিত্তিহীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে ২২ মার্চ ভোররাতে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপের পশ্চিমপাড়া ঘাটের নিকট দিয়ে রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা অবৈধ উপায়ে সাগরপথে বাংলাদেশে আসার সময় প্রবল স্রোতের কারণে নৌকাটি উল্টে যায়। খবর পেয়ে সৈকতের পার্শবর্তী স্থানে কর্তব্যরত বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় জেলেদেরকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের উদ্ধারের জন্য ছুটে যায় এবং ২৪ জন রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকাজ চলাকালে সমুদ্র উত্তাল থাকায় এবং অন্ধকার রাতের কারণে একজন বিজিবি সদস্য সম্ভাব্য পা পিছলে পড়ে সমুদ্রে নিখোঁজ হয়।

পরবর্তীতে ডুবে যাওয়া নৌকাসহ ২৪ জন রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করেছে বিজিবি। সম্পূর্ণ দুর্ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং বর্তমানে নিখোঁজ একজন বিজিবি সদস্যসহ অন্যান্য রোহিঙ্গাদেরকে উদ্ধার সার্চ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।


গাজীপুরে একই পরিবারের ৩ জনের লাশ উদ্ধার

আপডেটেড ২৩ মার্চ, ২০২৫ ১১:৪৯
ইউএনবি

গাজীপুরের কাশিমপুরে নিজ বসত ঘর থেকে স্বামী- স্ত্রী ও এক সন্তানের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (২৩ মার্চ) লাশগুলো উদ্ধার করে পুলিশ।

লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, রবিবার সকালে কাশিমপুরের গোবিন্দবাড়ি এলাকার একটি বাসা থেকে নাজমুলের লাশ ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় এবং তার স্ত্রী খাদিজা ও শিশু কন্যা নাদিয়ার লাশ বিছানা থেকে উদ্ধার করা হয়।

ধারণা করা হচ্ছে, নাজমুল নিজে ফাঁসিতে ঝুলার আগে স্ত্রী ও সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন। পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদের জেড়ে এর আগে নাজমুল ব্লেড দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্তাক্ত করে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


গাইবান্ধায় অটোচালকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আইয়ুব আলী দুলা (৫২) নামে এক অটোচালকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পূর্বশত্রুতার জেরে ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা পুলিশের।

রোববার (১৪ এপ্রিল) দিনগত রাত ১টার টার দিকে উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের সিন্টাজুরি এলাকা হতে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ ওই মরদেহ উদ্ধার করে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) উদয় কুমার সাহা।

তিনি বলেন, ‘সোমবার দিনগত রাত ১টার দিকে উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের সিন্টাজুরি এলাকায় এক অটোচালকের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে গোবিন্দগঞ্জ থানার পুলিশ ওই রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনাটি রাত পৌনে ১২টা থেকে সোয়া ১২টার মধ্যে ঘটানো হয়েছে। মরদেহের পাশ থেকে অটোটিসহ চালকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং চালকের পরিহিত পোশাকের ভেতরে থাকা কিছু নগদ টাকাও পাওয়া গেছে। ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা এবং প্রাথমিক পুলিশি তদন্তে মনে হচ্ছে ঘটনাটি পূর্বশত্রুতার জেরে ঘটানো হতে পারে, ছিনতাই নয়।’

এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বিষয়টি অতি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি। হত্যাকান্ডের প্রকৃত কারণ উদঘাটনসহ জড়িতদের শনাক্ত এবং তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।’

বিষয়:

বঙ্গবন্ধু সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা টোল আদায়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

ঈদের আর মাত্র বাকি দুইদিন। ঈদের আনন্দ পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করার জন্য নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে মানুষ। এর ফলে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। মহাসড়কে যানজটেরও সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধির ফলে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে যানবাহন পারাপার ও টোল আদায় স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে।

বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিস সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ৬ টা থেকে মঙ্গলবার ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৪৩ হাজার ৪২৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে এবং যার মোট টোল আদায় হয়েছে তিন কোটি ৩৬ লাখ ৬ হাজার ৮৫০ টাকা।

এরমধ্যে টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব অংশে ২৭ হাজার ২৩২টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ ৪ হাজার ৯৫০ টাকা এবং সিরাজগঞ্জের সেতু পশ্চিম অংশে ১৬ হাজার ১৯৫ টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩২ লাখ ৬১ হাজার ৯০০ টাকা।

বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, যানজট নিরসনে সেতুর উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য চারটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। যানবাহনের চাপ বেড়েছে।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) মীর সাজেদুর রহমান জানান, মহাসড়কে প‌রিবহনের খুব চাপ রয়েছে। এতে পরিবহনগুলো খুবই ধীরগ‌তিতে চলাচল করছে। এ ছাড়া সেতুর উপর এক‌টি বাস নষ্ট হওয়ায় পাঁচ মি‌নিট বন্ধ ছিল প‌রিবহন চলাচল। পরিবহনগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার কারণেও অন‌্য প‌রিবহনগুলোতে ধীরগ‌তির সৃ‌ষ্টি হয়েছে। প‌রিবহন চলাচল স্বাভাবিক রাখ‌তে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দা‌য়িত্ব পালন কর‌ছেন।

বিষয়:

বাগেরহাটে কালবৈশাখী ঝড়ে নিহত ১, আহত ৩

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১৫:৪৮
বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের সময় গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে জেলার কচুয়া উপজেলা চরসোনাকুড় গ্রামে মো. আরিফুল ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বাগেরহাট শহরের বাসস্টান্ড এলাকায় বিলবোর্ড ভেঙ্গে যাত্রীবাহী বাসের উপর পড়ে বাসের চালকসহ ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।

রোববার সকাল সাড়ে ৯টার এ ঘূর্ণিঝড়ে জেলার শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, রামপাল, কচুয়া ও বাগেরহাট সদর উপজেলার কয়েক হাজার গাছ উপড়ে পড়েছে। সেই সাথে বিধ্বস্ত কয়েক শত কাঁচা ও আধা কাঁচা বাড়িঘর। ঝড়ে গাছ পড়ে ও বিদ্যুৎতের খুটি উপড়ে পড়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বিদ্যুৎ সংযোগ।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ‘কালবৈশাখী ঝড়ে জেলা সদরসহ অন্যান্য উপজেলাগুলোতে গাছপালা উপড়ে পড়ার পাশাপাশি কিছু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ে গাছ পড়ে ও বিদ্যুৎতের খুটি উপড়ে পড়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে পুরো জেলার বিদ্যুৎ সংযোগ।’

তিনি বলেন, ‘জেলার প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৮ লাখ টাকা ও ৬শ মেট্রিকটন চাল বরাদ্ধ করা হয়েছে।’

বিষয়:

ঘরের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে দুই শতাধিক গৃহহীন পরিবারের

গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্ণেয়া ইউনিয়নের ভাঙ্গাগড়া এলাকায় নির্মাণ হচ্ছে দুই শতাধিক বাড়ি। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মীর আনোয়ার আলী, রংপুর

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মুজিববর্ষের ৪র্থ ধাপে ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। দেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না- প্রধানমন্ত্রীর এমন অঙ্গীকার বাস্তবায়নে দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের বাসস্থান নিশ্চিত করা হচ্ছে। সারা দেশের ন্যায় গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্ণেয়া ইউনিয়নের ভাঙ্গাগড়া এলাকায় গৃহ নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অত্যন্ত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইউএনও নাহিদ তামান্না মর্ণেয়া ইউনিয়নের ভাঙ্গাগড়া এলাকায় ২১০ টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের জন্য মুজিব শতবর্ষের ঘর নির্মাণ কাজ তদারকি করছেন। প্রতিটি পরিবারের জন্য ২ শতাংশ জমির ওপর ২টি সেমি পাকা ঘর, ১টি রান্না ঘর ও ১টি টয়লেট নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এতে করে ২১০টি পরিবারের ঘর নির্মাণ করতে মোট ব্যয় হবে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ঘরগুলোর প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ইউএনও।

সরেজমিনে উপজেলার মর্ণেয়া ইউনিয়নের ভাঙ্গাগড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, প্রবেশদ্বারে লাগানো রয়েছে প্রকল্পের তথ্য সম্বলিত সাইনবোর্ড। উঁচু জমিতে অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে বাড়িগুলোর নির্মাণ কাজ চলছে। এরই মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রশংসা করে জানান, প্রকল্পের ঘরগুলো এখন মানসম্মতভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। ঘর তৈরিতে উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সব সময় তদারকি করছেন, কাজের নির্মাণ সামগ্রী এবং নির্মাণ কাজ মানসম্মত। এক সাথে অনেকগুলো আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করায় প্রকল্পটির সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে, যা দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। ছোট ছোট ঘর নির্মাণে উন্নত সামগ্রী ব্যবহার করায় দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। অসহায় মানুষগুলো তাদের দুঃখ কষ্ট ভুলে গিয়ে রঙিন এ ঘরে বসবাস করার যে স্বপ্ন দেখছিলেন তা বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল দেশের কোন মানুষ গৃহহীন বা না খেয়ে থাকবে না, তাই তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের ঘোষণা অনুযায়ী সারা দেশের ন্যায় গঙ্গাচড়া উপজেলায় ঘর নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।’

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না বলেন, ‘ঘর নির্মাণ কমিটি নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নে নিয়জিত আছেন। আমি কাজগুলো সব সময় তদারকি করছি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মনিটরিং অফিসার এসে নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরগুলো খুবই কঠোরভাবে মনিটরিং করা হয় এবং সচিত্র প্রতিবেদন রাখা হয়। প্রকল্পের কাজ নিয়মানুযায়ী সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে।’

বিষয়:

নানার বাড়ির পাশে মিলল শিশুর লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে নিখোঁজের এক দিন পর সাকিব সিকদার (১০) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ ধারণা করছে, শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের পাচঁরুখী গ্রামে নানা বাড়ির পাশ থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত সাকিব রুপগঞ্জের গোলাকান্দাইল এলাকার জিকু সিকদারের ছেলে।

আড়াইহাজার থানার ওসি মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ জানান, ১৭-১৮ দিন আগে শিশুটি তার মায়ের সঙ্গে উপজেলার পাঁচরুখী গ্রামে নানাবাড়িতে বেড়াতে আসে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে তার মা তাকে ব্লেড আনতে বাজারে পাঠান। এরপর থেকে সে আর বাড়ি ফিরেনি। এদিকে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তার নানাদের নতুন বাড়ির পাশে শিশুটির লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। সে সামান্য বাকপ্রতিবন্ধী ছিল।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।


ফেনীতে ট্রাক-ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ২

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার মুহুরীগঞ্জে আজ সকালে রেলপথ পারাপারের সময় বালুবোঝাই ট্রাকে ট্রেনের ধাক্কায় ২ জন নিহত হয়েছেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মুহুরীগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন বালুমহাল এলাকায় চট্টগ্রামগামী মেইল ট্রেনের ধাক্কায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতদের একজন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার কাউয়ারাকা গ্রামের আবুল হাওলাদারের ছেলে ট্রাকচালক মো. মিজান (৩২)। অপর নিহত ট্রেনযাত্রীর নাম-পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার জাকির হাসান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ট্রেনের ধাক্কায় ট্রাকটি অন্তত ১০০ মিটার সামনে গিয়ে পড়ে। গেইটম্যান মো. সাইফুল ট্রেন অতিক্রম করার সময় সেখানে ছিলেন না।

ফেনী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক শাহ আলম জানান, রেললাইনের উপর পড়ে থাকা দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক সরিয়ে নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এরপর ছাগলনাইয়া থানা পুলিশ নিহতদের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন।

ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমাম ট্রেন দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সুপার মো. জাকির হাসান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয়:

banner close