বিএনপির সংসদ সদস্যদের ছেড়ে দেয়া ছয় সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন আজ বুধবার। আসনগুলো হলো- ঠাকুরগাঁও-৩, বগুড়া-৪, বগুড়া-৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২। আসনগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪০ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ১০টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী আছেন ২৩ জন, বাকি ১৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়েও ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছেন ছয়জন। বিএনপি ভোট বর্জনের আহ্বান জানালেও দলটির চার নেতা ভোট করছেন এই নির্বাচনে।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, ছয়টি আসনে একযোগে আজ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট নেয়া হবে। ছয় আসনের ৮৬৭ কেন্দ্রের সবগুলোতে ভোট নেয়া হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে। গতকাল মঙ্গলবার আসনগুলোতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে ইভিএম মেশিনসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের নির্বাচনী সরঞ্জাম। নিজেদের প্রথম সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে ব্যবহার করলেও এবার ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা ব্যবহার করছে না ইসি।
সংসদীয় আসনগুলোতে সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন ভোট আয়োজনের সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে ভোট হবে আশাবাদ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন, ‘সুষ্ঠু ভোটের জন্য সব প্রস্তুতি আছে। কেবল সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করিনি। বাকি সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন করার জন্য যা যা দরকার, আমরা সব করেছি। ভোটকেন্দ্রে নিরবচ্ছিন্নভাবে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোট চলবে। ইভিএমে ভোট দেয়ার জন্য ভোটার এডুকেশন যথেষ্ট করা হচ্ছে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২
ছয় আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নানা ধরনের চমক দেখাচ্ছে এই আসনটি। বিএনপির যে সংসদ সদস্যের পদত্যাগে আসনটি শূন্য হয়েছে, সেই উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়াই আবার দল থেকে পদত্যাগ করে এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে চমকে দেন সবাইকে। পরে দল তাকে বহিষ্কার করে। এদিকে এই আসনে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি, শরিক দলগুলোর কোনো প্রার্থীকে সমর্থনও দেয়নি। বরং প্রতীক বরাদ্দের পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই আব্দুস সাত্তারের নির্বাচনী প্রচারণা এগিয়ে নিয়ে গেছেন। দলটির কেন্দ্রীয় নেতারাও তার পক্ষে জনসভা করেছেন।
এদিকে নির্বাচনের পাঁচ দিন আগে গত শুক্রবার এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা আবু আসিফ আহমেদ নিখোঁজ হয়েছেন বলে অভিযোগ তোলে তার পরিবার। এখন পর্যন্ত তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ফোনালাপে তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি সাজানো কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না করায় সে সন্দেহ আরও জোরালো হয়। শেষ পর্যন্ত ভোটের আগের দিন গতকাল দুপুরে আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নিছা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তার স্বামীর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তবে সার্বিক ঘটনা বিশ্লেষণে আবু আসিফ আত্মগোপনে থাকতে পারেন বলেও নির্বাচন কমিশন মনে করছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান।
এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩১৩ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ১৩২টি। আসনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পাঁচজন। আব্দুস সাত্তার ও আবু আসিফ ছাড়া বাকি প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির আব্দুল হামিদ ভাসানী (লাঙ্গল) ও জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল হক (গোলাপ ফুল) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির সাবেক দুই মেয়াদের সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা (আপেল)। জিয়াউল হক অবশ্য প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
এই আসনে পুলিশ, আনসার সদস্য ও গ্রাম পুলিশের পাশাপাশি চার প্লাটুন বিজিবি ও র্যাবের ১০টি টিম আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়া ১৭টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে একজন করে মোট ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দুজন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ করবেন। এই আসনের উপনির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, ‘আবু আসিফকে খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করতে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।’
ঠাকুরগাঁও-৩
এই আসনে মোট ৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৪১ জন ভোটার। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৫৯ হাজার ৫৩১ জন, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৫ হাজার ২১০ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ১৩৮টি। এর মধ্যে ৭২টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ, যদিও নির্বাচন কমিশন এই কেন্দ্রগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ না বলে গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করছে।
এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয় প্রার্থী। দলীয় প্রার্থীরা হলেন ওয়ার্কার্স পার্টির ইয়াসিন আলী (হাতুড়ি), জাতীয় পার্টির হাফিজ উদ্দীন আহমেদ (লাঙ্গল), জাকের পার্টির এমদাদুল হক (গোলাপ ফুল), বাংলাদেশ ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সাফি আল আসাদ (আম), বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্টের (বিএনএফ) সিরাজুল ইসলাম (টেলিভিশন)। এই আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়নি। একতারা প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোপালচন্দ্র রায় দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ‘বিদ্রোহী’ হিসেবে ভোট করছেন এই আসনে।
এ আসনে প্রতিটি কেন্দ্রে চারজন অস্ত্রধারী পুলিশ, দুজন নারী পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবেন। এ ছাড়া সাত প্লাটুন বিজিবি সদস্য, ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনী এলাকা নজরদারিতে রাখবেন। আঞ্চলিক রিটার্নিং কর্মকর্তা জি এম সাহাতাব উদ্দীন বলেন, ‘নির্বাচনী পরিবেশ ঠিক রাখতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সাদা পোশাকেও পর্যাপ্তসংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬
বগুড়া-৪ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৬৫ হাজার ৪৩৪ জন, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৫ জন। এই আসনের ১১২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ৭৯টি। কেবল কাহালুতেই ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ৫৬টি।
এই আসনে ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯ জন। এ আসনে আওয়ামী লীগ নিজে প্রার্থী না দিয়ে সমর্থন দিয়েছে ১৪ দলীয় জোট থেকে জাসদ প্রার্থী রেজাউল করিম তানসেনকে (মশাল)। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির শাহীন মোস্তফা কামাল (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. তাজ উদ্দীন মণ্ডল (ডাব) ও জাকের পার্টির মো. আব্দুর রশিদ সরদার (গোলাপ ফুল) রয়েছেন দলীয় প্রার্থী। পাঁচ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে কুড়াল প্রতীকে নির্বাচন করছেন সাবেক বিএনপি নেতা কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল, ট্রাক প্রতীকে নির্বাচন করছেন সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মো. মোশফিকুর রহমান কাজল। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আরও আছেন মো. ইলিয়াস আলী, (কলার ছড়ি), মো. গোলাম মোস্তফা, (দালান) ও আলোচিত আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম, (একতারা)।
এদিকে বগুড়া-৬ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ১০ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৮ হাজার ২৫৯ জন, পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২ হাজার ৪৮৪ জন। এই আসনের ১৪৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৭৯টিই ঝুঁকিপূর্ণ।
এই আসনে দলীয় প্রার্থী ছয়জন হলেন- আওয়ামী লীগের রাগেবুল আহসান রিপু (নৌকা), জাসদের মো. ইমদাদুল হক ইমদাদ (মশাল), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. নজরুল ইসলাম (বটগাছ), জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর (লাঙ্গল), জাকের পার্টির মোহাম্মদ ফয়লাস বিন শফিক (গোলাপ ফুল) ও গণফ্রন্টের মো. আফজাল হোসেন (মাছ)। পাঁচ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ আব্দুল মান্নান (ট্রাক) ও বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ সরকার বাদল (কুড়াল)। এ আসনেও প্রার্থী হয়েছেন হিরো আলম। এ ছাড়া মাছুদার রহমান হেলাল (আপেল) ও রাকিব হাসান (কুমির) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।
বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, ‘দুই আসনের উপনির্বাচনে তিনজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৩৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। পাশাপাশি মোতায়েন থাকবে ১৬ প্লাটুন বিজিবি। এ ছাড়া ভোটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সাড়ে ৪ হাজার নিরাপত্তাকর্মী কাজ করবেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৫ হাজার ৪৫০ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৪ হাজার ২৮০ জন, পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১ হাজার ১৭০ জন। আসনটির ১৮০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যা ১২২।
নাচোল, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে দলীয় প্রার্থী চারজন, স্বতন্ত্র দুজন। দলীয় প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের মু. জিয়াউর রহমান (নৌকা), জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক (লাঙ্গল), জাকের পার্টির গোলাম মোস্তফা (গোলাপ ফুল) ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) নবীউল ইসলাম (টেলিভিশন)। এ আসনে স্বতন্ত্র দুজনই আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী। তারা হলেন- মোহাম্মদ আলী সরকার (আপেল) ও খুরশিদ আলম বাচ্চু (মাথাল)।
অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১১ হাজা ৪৯৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৫ হাজার ৬১২ জন, পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫ হাজার ৮৮৩ জন। আসনটির ১৭২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৯৭টি।
এই আসনে প্রার্থী মাত্র তিনজন। তাদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের আব্দুল ওদুদ (নৌকা), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) কামরুজ্জামান খান (টেলিভিশন) এবং আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী সামিউল হক লিটন (আপেল)।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান জানান, ৩৩ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন।
[প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন দৈনিক বাংলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঠাকুরগাঁও, বগুড়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি]
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সরকার গঠন করলে বা সরকারের অংশ হলে প্রাইভেট সেক্টরে শুক্র-শনিবার ছুটি ঘোষণা করব বলে মন্তব্য করেছেন, দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে জুলাই স্পিরিটে আলোকিত পেশাজীবীদের সংগঠন ‘ন্যাশনাল প্রফেশনাল অ্যালায়েন্সের’ আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘পাবলিক এবং প্রাইভেট উভয় সেক্টরে দলীয় দাস, পরিবারতন্ত্র, তৈলমর্দন—এসব ছিল চাকরি পাওয়ার মূল ক্রাইটেরিয়া।’
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগির প্রসঙ্গ নিয়ে পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা কোনো দলের কাছে সিট নেগোসিয়েশনে যাব না।
সিট বণ্টনের পলিটিকস বাংলাদেশে আর চলবে না। ছোট দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বড় দলগুলোর কাছে মাথা নত করবেন না। মেরুদণ্ড বিক্রি করবেন না। পরিবারতন্ত্র, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, ধর্মের রাজনীতি এগুলো আর চলবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন ভাঙা দিয়ে শুরু করেছি, এখন গড়ার সময়।’
ভারতকে উদ্দেশ করে পাটওয়ারী বলেন, ‘ভারতকে বলতে চাই, নির্বাচনে ডিস্টার্ব করতে আসবেন না। দক্ষিণ এশিয়ার বিজেপির সন্ত্রাস রুখে দিতে আমরা প্রস্তুত।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দুই দফায় ১৪টি আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) ও চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) এ দুটি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি দলটি। এই দুই আসনের প্রার্থীর নাম জানতে নেতাকর্মীদের আরো অপেক্ষা করতে হবে। তবে এই দুই আসনে কারা প্রার্থী হতে পারেন, তা নিয়ে দলের নানামুখী আলাপ-আলোচনা চলছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
গত ৩ নভেম্বর প্রথম দফায় চট্টগ্রামের মোট ১৬ আসনের মধ্যে প্রথম দফায় ১১টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিল, তবে পরে একজনের নাম প্রত্যাহার করা হয়। প্রত্যাহার হওয়া ওই আসনসহ গত বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় ৪টিতে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এ নিয়ে চট্টগ্রামের মোট ১৬ আসনের মধ্যে ১৪টিতে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রথম দফায় চট্টগ্রামের ১০টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা হলেন, চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই) আসনে উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে উত্তর জেলার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার আলমগীর,চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে যুবদল নেতা কাজী সালাউদ্দিন, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-হালিশহর) আসনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে দক্ষিণ জেলার সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য সরওয়ার জামাল নিজাম এবং চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রার্থী ঘোষণা করেন। ঘোষিত চার আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনে আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে মোস্তফা কামাল পাশা এবং চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে নাজমুল মোস্তফা আমিনকে প্রার্থী করা হয়েছে।
এদের মধ্যে আবু সুফিয়ানের নাম প্রথম তালিকায়ও ছিল। কিন্তু ঘোষণার পরপরই অজ্ঞাত কারণে সেটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তবে এরপরও তিনি প্রচার-প্রচারণা, গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছিলেন। ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে উঠে আসা আবু সুফিয়ান চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি দক্ষিণ জেলার আহ্বায়কেরও দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও নগরীর একাংশ) আসনে তিনি বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে দুইবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
এদিকে চট্টগ্রামের আলোচিত রাউজান-৬ আসনে শেষ পর্যন্ত বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন প্রয়াত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছোট ভাই গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী। তবে এ আসনে গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পাশাপাশি মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন আরেক হেভিওয়েট নেতা গোলাম আকবর খোন্দকার চৌধুরীও। আওয়ামী লীগ আমলে ১৬ এলাকা ছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীরা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর ঘরে ফেরে গোলাম আকবর ও গিয়াস কাদের- এ দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েন। তাদের অর্ন্তদ্বন্দ্বে ও আধিপত্য বিস্তারে গত ১৫ মাসে রাউজানে খুন হয়েছেন অন্তত ১৭ জন। তবে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (পদ স্থগিত) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী রাউজান থেকে আগেও বিএনপির মনোনয়নে একাধিকবার সংসদ-সদস্য পদে নির্বাচন করেছেন। এর মধ্যে একবার তিনি সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিভিন্ন সময়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ও শিল্প-বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক পদেও দায়িত্ব পালন করেন।
রাউজানের পাশের আসন রাঙ্গুনিয়ায় মনোনয়ন পেয়ে ইতোমধ্যে নির্বাচনের মাঠে নেমে পড়েছেন তার ভাতিজা, সালাহউদ্দিন কাদেরের ছেলে হুম্মাম কাদের। দেশের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ আসনে আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন মোস্তফা কামাল পাশা, যিনি আগেও দুই দফায় সেখান থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এ ছাড়া সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনে মনোনয়ন পাওয়া নাজমুল মোস্তফা আমিন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য ও লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক। এ আসনে তাকে জামায়াতে ইসলামীর হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীকে নির্বাচনের মাঠে মোকাবিলা করতে হবে।
ঘোষিত আসনের প্রার্থীদের নিয়ে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। পাড়ায়, মহল্লায় লিফলেট বিতরণ ও উঠোন কর্মসূচীর মাধ্যমে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপি অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
জামালপুর-৩ মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ আসনে গণঅধিকার পরিষদের মনোনয়ন প্রত্যাশী লিটন মিয়া ট্রাক মার্কায় ভোট চেয়ে মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে মাদারগঞ্জ থেকে মেলান্দহের হাজরাবাড়ি পৌর এলাকায় বিভিন্ন সড়কে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করা হয়। এতে পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেয়।
পরে একটি পথ সভার মধ্য দিয়ে শেষ করা হয়। এ সময় জাতীয় সংসদে তরুণ নেতৃত্ব পৌছে দিতে আগামীতে ট্রাক মার্কায় ভোট চান তারা।
পথসভায় লিটন মিয়া বলেন, গত ১৬ বছর মানুষ তার ভোটের অধিকার পায়নি। এবার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচন করতে পারবে। আর আমরা তরুণরা সংসদে গেলে মানুষের সকল অধিকার নিয়ে কথা বলার সুযোগ থাকবে। তাই ট্রাক মার্কা মানুষের উন্নয়নের মার্কা৷ শেষে মেলান্দহ-মাদারগঞ্জের মানুষের জন্য নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে ইসলামী দলের সংসদ সদস্য প্রার্থীরা এক মঞ্চে। তারা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসলামী ৮ দলীয় ঐক্যজোটের কার্যক্রম জোরদারে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।
গত মঙ্গলবার রাতে প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে নিজেদের উপস্থিতি শক্তভাবে জানান দিতে সোনারগাঁওয়ে বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হামছাদী এলাকায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কার্যালয়ে এক যৌথ আলোচনা সভা মিলিত হয়। সভায় ঐক্যজোটভুক্ত পাঁচ দলের এমপি পদপ্রার্থী একত্রে বসে নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা দেন।
যৌথ আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জামায়েত ইসলামীর মনোনীত এমপি প্রার্থী প্রিন্সিপাল ড. মো. ইকবাল হোসাইন ভূঁইয়া, খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রার্থী মাওলানা শাহজাহান শিবলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. ফারুক আহমেদ মুন্সী, খেলাফত মজলিসের প্রার্থী মুফতি সিরাজুল ইসলামসহ স্থানীয় পাঁচ দলের থানা আমীর, সেক্রেটারি এবং আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সাধারণ মানুষ।
সভায় বক্তারা বলেন, আসন্ন নির্বাচনে ইসলামি ৮ দলীয় ঐক্যজোটের সম্মিলিত অংশগ্রহণকে জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন বলে দাবি করেন। তারা আরও বলেন, দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ইসলামি মূল্যবোধ ও ন্যায়ভিত্তিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য এ ঐক্যের বিকল্প নেই।
প্রার্থীরা বলেন, মহান আল্লাহ জনগণের এই ঐক্য কবুল করুন। এবার ইসলামপন্থী শক্তিই সংসদে দায়িত্ব নেবে, এটাই আমাদের বিশ্বাস। প্রার্থীরা আরও বলেন, আমরা প্রতীক যাই হোক, লক্ষ্য এক -ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষা করা এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। সোনারগাঁওবাসীর ভালোবাসাই আমাদের শক্তি।
এদিকে সভাস্থলে উপস্থিত অনেকেই জানান, বহুদিন পর ইসলামি দলগুলোর এমন ঐক্যবদ্ধ উপস্থিতি তারা দেখলেন। কেউ কেউ মনে করেন, এতে নির্বাচনী মাঠে নতুন সমীকরণ তৈরি হতে পারে। আবার অনেকে মনে করেন, ঐক্যজোটের ভোটব্যাংক থাকলেও আসনটিতে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে প্রধান দুই রাজনৈতিক শক্তির মধ্যেই। স্থানীয়রা জানান, নারায়ণগঞ্জ-০৩ আসনটি সবসময় রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। শিল্পাঞ্চল, পর্যটনকেন্দ্র ও ঘনবসতিপূর্ণ এই সোনারগাঁও এলাকায় বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ দলীয় ঐক্যজোটের এই যৌথ উপস্থিতি স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সভা শেষে প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং শিগগিরই বড় আকারের কয়েকটি জনসভা করার ঘোষণা দেন।
‘গুলি করলে গুলি খাব, তবে আমাকে গুলি করে আমার কর্মীর কাছে যেতে হবে মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠন হাসনাত আবদুল্লাহ বলছেন- ব্যাপারটা এমন না যে! রাস্তার মধ্যে কর্মী নামাইয়া পালাইয়া যামু। রাস্তার মধ্যে কর্মী নামাইয়া, গত ১৭ বছর কে কোথায় ছিল, আমরা দেখেছি। মঙ্গলবার দিনব্যাপী কুমিল্লার দেবিদ্বারের বিভিন্ন এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) পদযাত্রা ও গণযোগাযোগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘মানুষের কাছে শুনতেছি, আমি নাকি ৫০০ ভোট পাব। ৯ মাসের একটা পার্টি- বাপ-দাদার পরিচয় ছাড়া যদি ৫০০ ভোট পায়, এটাই অনেক কিছু না? আপনারা যারা খেটে খাওয়া মানুষ, যারা কর্মজীবী- আপনাদের প্রতিনিধি হয়ে আমি আসছি। আমার খুব বড় বংশ নেই, আমার টাকা–পয়সা নেই, আমি বিদেশেও পড়াশোনা করি নাই, আমি ঘি খেয়েও বড় হই নাই। নেতারা উপর থেকে নিচে আসছেন, আর আমি আপনাদের মধ্য থেকে উপরে উঠেছি।’
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘গত ১৭ বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলের যারা রাস্তা–ঘাটে ছিলেন, আমরা তাদের দেখেছি। বিশেষ করে আমরা বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীকেও রাস্তা-ঘাটে দেখেছি। অথচ এখন তাদের একতারা বলে- তারা নাকি আওয়ামী লীগ! বিষয়টা চিন্তা করে দেখছেন? তারা কারা?’
দিনব্যাপী গণসংযোগের অংশ হিসেবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসানাত আবদুল্লাহ দেবিদ্বার উপজেলার ভানী ইউনিয়নের সূর্যপুর গ্রামে শহীদ কাদির হোসেন সোহাগের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং এর আগে শহীদ কাদিরের কবর জিয়ারত করেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
এ সময় তিনি দেবিদ্বারের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং শাপলা কলি প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থার বিষয় নিয়ে গুজব না ছড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এ আহ্বান জানান।
ব্রিফিংয়ে ডা. জাহিদ বলেন, ২৭ তারিখ থেকে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন বেগম খালেদা জিয়া। বর্তমানে তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন। বিভিন্ন গুজব, বিভিন্ন বক্তব্য দেখার পর থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। যোগাযোগ করছেন দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে।
বিএনপির এ নেতা আরও জানান, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার প্রতিটি ধাপ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে তার জন্য বিদেশে উন্নত চিকিৎসার প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন রয়েছে।
ডা. জাহিদ বলেন, ডাক্তাররা যে চিকিৎসা দিচ্ছেন, সেটি উনি গ্রহণ করতে পারছেন। তবুও বিদেশে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি আছে কি না মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের পরামর্শ নেয়া হচ্ছে। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ ছাড়া বিদেশে নেয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, চিকিৎসায় সরকার সার্বক্ষণিকভাবে সহযোগিতা করছে। সংকটময় মুহূর্তে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই। দোয়ার কারণেই হয়ত বেগম জিয়া সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আমরা আশা করি।
তিনি আরও জানান, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে কেবল তার এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য ছাড়া অন্য কারও বক্তব্য প্রচার না করতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করা হয়েছে।
এসময় ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবরে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও শুভকামনার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেছেন, ‘দেশবাসীর সম্মিলিত সমর্থনই আমাদের পরিবারের শক্তি ও প্রেরণার উৎস।’
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার আগে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তারেক রহমান এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মমতাময়ী দেশনেত্রীর দ্রুত আরোগ্যের জন্য আমরা সবাই নিরন্তর দোয়া করছি। এই কঠিন সময়ে ঐক্য, সহমর্মিতা ও সংহতির জন্য প্রতিটি মানুষের প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা রইলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য যেভাবে সহযোগিতা ও শুভকামনা জানানো হচ্ছে, সেজন্য জিয়া পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ, কূটনীতিকবৃন্দ ও বন্ধুগণের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা, পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষের অপরিসীম ভালোবাসা ও দোয়া, সবকিছু আমাদের আবেগ ও অনুভূতিকে গভীরভাবে স্পর্শ করছে।’
গত ২৩ নভেম্বর থেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে শয্যাশায়ী খালেদা জিয়া। বর্তমানে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। লিভারজনিত সংকট, কিডনির কর্মক্ষমতা হ্রাস, শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিসসহ একাধিক শারীরিক জটিলতা একসঙ্গে দেখা দেওয়ায় তাঁর চিকিৎসা আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত কয়েক দিনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে আইসিইউ সমমানের হাইডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়েছিল। হঠাৎ তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হওয়ায় গত রোববার মধ্যরাতের পর তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয় বলে জানা গেছে। সেখানে তার চিকিৎসকেরা খালেদা জিয়াকে ভেন্টিলেশনে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় আজ মঙ্গলবার দেশব্যাপী মিলাদ ও দোয়া মাহফিল পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
গতকাল সোমবার সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচির কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার বাদ আসর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে বিশেষ মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
পাশাপাশি এদিন দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা ও মহানগরেও বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় অনুরূপ মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির আজ এক বিবৃতিতে এই কর্মসূচি যথাযথভাবে পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল ইউনিটের প্রতি আহ্বান জানান।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সিসিইউতে পূর্বের মতোই চলছে বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
দলের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব ইসলামের মোহাম্মদপুরস্থ বাসভবনে গতকাল সোমবার দুপুরে বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় শেষ দোয়া অনুষ্ঠানে রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নেত্রী নন, তিনি শুধু বিএনপির অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেত্রীও নন। আজ সারা বাংলাদেশের সকল মানুষ-পেশাজীবী, সুশীল সমাজ, ছাত্র, যুবক, শ্রমিক ও কৃষক সবাই তার জন্য দোয়া করছেন। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ঘিরে গোটা জাতি আজ এক বেদনাবিধুর অবস্থার মধ্যে রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বন্দি থাকা অবস্থায় নিজের সন্তান হারিয়েছেন। তিনি অনেক নিপীড়ন ও নির্যাতন সহ্য করেছেন, তবুও তাঁকে নিজের দেশ থেকে সরাতে পারেনি।
তাঁর বিরুদ্ধে অনেক চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র হয়েছে, অনেক নির্যাতন হয়েছে। একটি ভগ্নস্তূপের মতো জেলখানায় তাকে বছরের পর বছর রাখা হয়েছে। তারপরও তাকে এই দেশ ও মাটি থেকে সরানো সম্ভব হয়নি। আজ সারা জাতি তার জন্য দোয়া করছেন।’
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, বেগম জিয়া অত্যন্ত গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমরা সবাই আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আল্লাহ তাকে খুব দ্রুত আরোগ্য দান করুন, সুস্থ করে তুলুন এবং আবারও এ দেশের মানুষের কাছে, জনগণের কাছে তাকে ফিরিয়ে দিন।
বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে রিজভী বলেন, ‘তিনি বর্তমানে সিসিইউতে আছেন। পূর্বে যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল, গতকাল ও গত পরশু যেমন ছিল, আজও তেমনভাবে সেই চিকিৎসা চলছে। এর বাইরে আর কোনো নতুন আপডেট নেই। অন্য যে যা-ই বলুক, এতে কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয়।’
রিজভী আরও বলেন, ‘বেগম জিয়া এখনও সংকটজনক অবস্থায় আছেন। তিনি গুরুতর অসুস্থ, ত গতকাল বা গত পরশু যে অবস্থায় ছিলেন, আজও তিনি সেই একই অবস্থায় আছেন। নানা ধরনের গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে, এতে কেউ যেন কান না দেয়।’
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কোনো নির্দিষ্ট দলের নন, তিনি সমগ্র দেশের মানুষের নেত্রী।
সোমবার রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে হৃদরোগের চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. তাহের বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আগামী রাজনীতি ও নির্বাচন সামনে রেখে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা, বোঝাপড়া ও নীতিগত ঐক্য আরও বাড়ানো প্রয়োজন। তিনি সব রাজনৈতিক দল ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান, যেন সবাই ধৈর্য ও প্রজ্ঞার সঙ্গে দেশকে অগ্রাধিকার দিয়ে দায়িত্ব ঠিক করে।
নিজের চিকিৎসা প্রসঙ্গে তিনি জানান, হৃদযন্ত্রে ব্লক অনুভব করায় তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসক মনিরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা হয়। ব্লকটি শক্ত থাকায় চিকিৎসকদের মধ্যে মতভেদ ছিল। কেউ সিঙ্গাপুরে নেওয়ার পরামর্শ দিলেও তিনি ঢাকাতেই চিকিৎসা নিয়ে সফল হন।
বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ডা. তাহের বলেন, তিনি একজন দেশনেত্রী ও গণতান্ত্রিক নেত্রী। তার আপসহীন নেতৃত্বের কারণেই দেশ গত সাড়ে ১৫ বছরে অন্য দেশের আধিপত্যে পড়েনি। তিনি কোনো দলের নয়, পুরো দেশের মানুষের নেত্রী। জামায়াতের পক্ষ থেকে তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, একটি রাজনৈতিক দল বিএনপি তথা দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তে নেমেছে। তারা দেশি-বিদেশি মদতপুষ্ট হয়ে এদেশের মানুষকে একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ধর্মীয়ভাবে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আমাদের মা-বোনদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
গতকাল রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যদি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন না করতেন, আর দেশনেত্রী খালেদা জিয়া যদি সেই গণতন্ত্রকে লালন না করতেন, তাহলে আজকের মতো নির্বাচনের সম্ভাবনা কখনোই হতো না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এদেশের মানুষকে এক মিনিটের জন্যও শান্তিতে থাকতে দেননি। গত ১৭ বছরে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে, আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা যে আন্দোলন করেছি—সেই আন্দোলনের সুফল দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।
‘আমরা ভোটের অধিকার আদায় করেছি। এখন ভোট প্রয়োগের সময় এসেছে। আগামী যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেই নির্বাচনে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন—সবার প্রতি এই আহ্বান থাকবে। কারণ, খালেদা জিয়ার হাতেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিরাপদ ছিল, বিএনপির হাতেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব নিরাপদ ছিল।’
মির্জা আব্বাস বলেন, আমার নেত্রী যে গণতন্ত্রের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন, সেই গণতন্ত্রকে অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগ গত ১৭ বছর দুঃশাসন চালিয়েছে। এখন যখন আবারও আমরা গণতন্ত্রের স্বাদ পেতে শুরু করেছি—ঠিক সেই সময় আরেকটি রাজনৈতিক দল বিএনপির বিরুদ্ধে তথা দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।
‘তারা দেশি-বিদেশি মদতপুষ্ট হয়ে এদেশের মানুষকে একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা ধর্মীয়ভাবে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তারা আমাদের মা-বোনদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে’— যোগ করেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়া জেলখানায় অপচিকিৎসার শিকার হয়ে আজ অসুস্থ। অথচ তাকে আজ জাতির সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি যদি মাথাচাড়া দেয় তাহলে ফ্যাসিবাদের চেয়ে তারা ভয়ঙ্কর হবে। এরা ধর্মে ধর্মে বিভেদ তৈরি করে। এদেশের মানুষ ধর্মমনা হলেও ধর্মান্ধ নয়।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও ওই আদেশের উপর গণভোট আয়োজনসহ ৫ দফা দাবিতে ৮ দলের উদ্যোগে ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে রোববার রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, আগামীর সংসদ হবে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত সংসদ। চাঁদাবাজদের প্রতিহত করব ইনশাআল্লাহ। অতীতে যারা চাঁদাবাজি করেছে, তাদের আর খাওয়া নাই। আগামীর সংসদ হবে কোরানের সংসদ। আগামীতে সচিবালয় চলবে সংসদ চলবে বিচারালয় চলবে কোরান দিয়ে। সবকিছু চলবে কোরান দিয়ে।
সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ৮ দলের জোট নতুন জাগরণ তৈরি হয়েছে। অবশ্যই জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। সরকার একইদিনে গণভোটের সিদ্ধান্ত কারও কুপরামর্শে করেছে।
এ সময় সমাবেশের সভাপতি সহকারী সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জুলাই বিপ্লব কোনো একক দলের নেতৃত্বে হয়নি। কিন্তু এই সরকার একটি দলের পকেটে ঢুকে যাচ্ছে। আমরা বলব, নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করুন। গণভোট আগে হতে হবে। ষড়যন্ত্র চলছে। যথাসময়ে নির্বাচন হতে হবে। গণভোট আগে দিতে হবে। গণহত্যার বিচার করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হবে।
রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি ও সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ইমাজ উদ্দিন মণ্ডল ও মুফতি ইমরানের যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি শেখ মো. নুরুন্নবী, বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি শেখ মো. সালাউদ্দিন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ রোকনুজ্জামান রোকন, জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগরীর আমির ড. মাওলানা কেরামত আলী, নায়েবে আমির ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, রাকসুর ভিপি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারণে পূর্বঘোষিত বিজয় দিবসের কর্মসূচি স্থগিত করেছে বিএনপি।
রোববার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় বিজয় দিবসের গৃহীত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
জনগণের কাছে দোয়া কামনা করেছেন তিনি।
তিনি আরও জানান, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত। বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে তার মেডিকেল বোর্ড এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।
এর আগে শনিবার (২৯ নভেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।