বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বিএনপির ছেড়ে দেয়া ৬ আসনে ভোট আজ

বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনে উপনির্বাচন হবে বুধবার। আগের দিন মঙ্গলবার বগুড়া শহরের পৌর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ভোটের সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০৯:০৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০৩

বিএনপির সংসদ সদস্যদের ছেড়ে দেয়া ছয় সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন আজ বুধবার। আসনগুলো হলো- ঠাকুরগাঁও-৩, বগুড়া-৪, বগুড়া-৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২। আসনগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪০ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ১০টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী আছেন ২৩ জন, বাকি ১৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়েও ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছেন ছয়জন। বিএনপি ভোট বর্জনের আহ্বান জানালেও দলটির চার নেতা ভোট করছেন এই নির্বাচনে।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, ছয়টি আসনে একযোগে আজ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট নেয়া হবে। ছয় আসনের ৮৬৭ কেন্দ্রের সবগুলোতে ভোট নেয়া হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে। গতকাল মঙ্গলবার আসনগুলোতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে ইভিএম মেশিনসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের নির্বাচনী সরঞ্জাম। নিজেদের প্রথম সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে ব্যবহার করলেও এবার ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা ব্যবহার করছে না ইসি।

সংসদীয় আসনগুলোতে সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন ভোট আয়োজনের সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে ভোট হবে আশাবাদ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন, ‘সুষ্ঠু ভোটের জন্য সব প্রস্তুতি আছে। কেবল সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করিনি। বাকি সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন করার জন্য যা যা দরকার, আমরা সব করেছি। ভোটকেন্দ্রে নিরবচ্ছিন্নভাবে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোট চলবে। ইভিএমে ভোট দেয়ার জন্য ভোটার এডুকেশন যথেষ্ট করা হচ্ছে।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২

ছয় আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নানা ধরনের চমক দেখাচ্ছে এই আসনটি। বিএনপির যে সংসদ সদস্যের পদত্যাগে আসনটি শূন্য হয়েছে, সেই উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়াই আবার দল থেকে পদত্যাগ করে এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে চমকে দেন সবাইকে। পরে দল তাকে বহিষ্কার করে। এদিকে এই আসনে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি, শরিক দলগুলোর কোনো প্রার্থীকে সমর্থনও দেয়নি। বরং প্রতীক বরাদ্দের পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই আব্দুস সাত্তারের নির্বাচনী প্রচারণা এগিয়ে নিয়ে গেছেন। দলটির কেন্দ্রীয় নেতারাও তার পক্ষে জনসভা করেছেন।

এদিকে নির্বাচনের পাঁচ দিন আগে গত শুক্রবার এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা আবু আসিফ আহমেদ নিখোঁজ হয়েছেন বলে অভিযোগ তোলে তার পরিবার। এখন পর্যন্ত তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ফোনালাপে তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি সাজানো কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না করায় সে সন্দেহ আরও জোরালো হয়। শেষ পর্যন্ত ভোটের আগের দিন গতকাল দুপুরে আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নিছা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তার স্বামীর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তবে সার্বিক ঘটনা বিশ্লেষণে আবু আসিফ আত্মগোপনে থাকতে পারেন বলেও নির্বাচন কমিশন মনে করছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান।

এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩১৩ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ১৩২টি। আসনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পাঁচজন। আব্দুস সাত্তার ও আবু আসিফ ছাড়া বাকি প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির আব্দুল হামিদ ভাসানী (লাঙ্গল) ও জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল হক (গোলাপ ফুল) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির সাবেক দুই মেয়াদের সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা (আপেল)। জিয়াউল হক অবশ্য প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

এই আসনে পুলিশ, আনসার সদস্য ও গ্রাম পুলিশের পাশাপাশি চার প্লাটুন বিজিবি ও র‌্যাবের ১০টি টিম আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়া ১৭টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে একজন করে মোট ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দুজন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ করবেন। এই আসনের উপনির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, ‘আবু আসিফকে খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করতে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।’

ঠাকুরগাঁও-৩

এই আসনে মোট ৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৪১ জন ভোটার। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৫৯ হাজার ৫৩১ জন, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৫ হাজার ২১০ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ১৩৮টি। এর মধ্যে ৭২টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ, যদিও নির্বাচন কমিশন এই কেন্দ্রগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ না বলে গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করছে।

এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয় প্রার্থী। দলীয় প্রার্থীরা হলেন ওয়ার্কার্স পার্টির ইয়াসিন আলী (হাতুড়ি), জাতীয় পার্টির হাফিজ উদ্দীন আহমেদ (লাঙ্গল), জাকের পার্টির এমদাদুল হক (গোলাপ ফুল), বাংলাদেশ ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সাফি আল আসাদ (আম), বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্টের (বিএনএফ) সিরাজুল ইসলাম (টেলিভিশন)। এই আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়নি। একতারা প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোপালচন্দ্র রায় দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ‘বিদ্রোহী’ হিসেবে ভোট করছেন এই আসনে।

এ আসনে প্রতিটি কেন্দ্রে চারজন অস্ত্রধারী পুলিশ, দুজন নারী পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবেন। এ ছাড়া সাত প্লাটুন বিজিবি সদস্য, ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনী এলাকা নজরদারিতে রাখবেন। আঞ্চলিক রিটার্নিং কর্মকর্তা জি এম সাহাতাব উদ্দীন বলেন, ‘নির্বাচনী পরিবেশ ঠিক রাখতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সাদা পোশাকেও পর্যাপ্তসংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন থাকবে।

বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬

বগুড়া-৪ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৬৫ হাজার ৪৩৪ জন, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৫ জন। এই আসনের ১১২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ৭৯টি। কেবল কাহালুতেই ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ৫৬টি।

এই আসনে ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯ জন। এ আসনে আওয়ামী লীগ নিজে প্রার্থী না দিয়ে সমর্থন দিয়েছে ১৪ দলীয় জোট থেকে জাসদ প্রার্থী রেজাউল করিম তানসেনকে (মশাল)। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির শাহীন মোস্তফা কামাল (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. তাজ উদ্দীন মণ্ডল (ডাব) ও জাকের পার্টির মো. আব্দুর রশিদ সরদার (গোলাপ ফুল) রয়েছেন দলীয় প্রার্থী। পাঁচ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে কুড়াল প্রতীকে নির্বাচন করছেন সাবেক বিএনপি নেতা কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল, ট্রাক প্রতীকে নির্বাচন করছেন সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মো. মোশফিকুর রহমান কাজল। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আরও আছেন মো. ইলিয়াস আলী, (কলার ছড়ি), মো. গোলাম মোস্তফা, (দালান) ও আলোচিত আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম, (একতারা)।

এদিকে বগুড়া-৬ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ১০ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৮ হাজার ২৫৯ জন, পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২ হাজার ৪৮৪ জন। এই আসনের ১৪৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৭৯টিই ঝুঁকিপূর্ণ।

এই আসনে দলীয় প্রার্থী ছয়জন হলেন- আওয়ামী লীগের রাগেবুল আহসান রিপু (নৌকা), জাসদের মো. ইমদাদুল হক ইমদাদ (মশাল), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. নজরুল ইসলাম (বটগাছ), জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর (লাঙ্গল), জাকের পার্টির মোহাম্মদ ফয়লাস বিন শফিক (গোলাপ ফুল) ও গণফ্রন্টের মো. আফজাল হোসেন (মাছ)। পাঁচ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ আব্দুল মান্নান (ট্রাক) ও বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ সরকার বাদল (কুড়াল)। এ আসনেও প্রার্থী হয়েছেন হিরো আলম। এ ছাড়া মাছুদার রহমান হেলাল (আপেল) ও রাকিব হাসান (কুমির) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।

বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, ‘দুই আসনের উপনির্বাচনে তিনজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৩৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। পাশাপাশি মোতায়েন থাকবে ১৬ প্লাটুন বিজিবি। এ ছাড়া ভোটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সাড়ে ৪ হাজার নিরাপত্তাকর্মী কাজ করবেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৫ হাজার ৪৫০ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৪ হাজার ২৮০ জন, পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১ হাজার ১৭০ জন। আসনটির ১৮০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যা ১২২।

নাচোল, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে দলীয় প্রার্থী চারজন, স্বতন্ত্র দুজন। দলীয় প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের মু. জিয়াউর রহমান (নৌকা), জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক (লাঙ্গল), জাকের পার্টির গোলাম মোস্তফা (গোলাপ ফুল) ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) নবীউল ইসলাম (টেলিভিশন)। এ আসনে স্বতন্ত্র দুজনই আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী। তারা হলেন- মোহাম্মদ আলী সরকার (আপেল) ও খুরশিদ আলম বাচ্চু (মাথাল)।

অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১১ হাজা ৪৯৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৫ হাজার ৬১২ জন, পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫ হাজার ৮৮৩ জন। আসনটির ১৭২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৯৭টি।

এই আসনে প্রার্থী মাত্র তিনজন। তাদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের আব্দুল ওদুদ (নৌকা), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) কামরুজ্জামান খান (টেলিভিশন) এবং আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী সামিউল হক লিটন (আপেল)।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান জানান, ৩৩ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন।

[প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন দৈনিক বাংলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঠাকুরগাঁও, বগুড়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি]


রাস্তায় কর্মী নামাইয়া ১৭ বছর কে কোথায় ছিল দেখেছি: হাসনাত আবদুল্লাহ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দেবিদ্বার ও কুমিল্লা প্রতিনিধি

‘গুলি করলে গুলি খাব, তবে আমাকে গুলি করে আমার কর্মীর কাছে যেতে হবে মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠন হাসনাত আবদুল্লাহ বলছেন- ব্যাপারটা এমন না যে! রাস্তার মধ্যে কর্মী নামাইয়া পালাইয়া যামু। রাস্তার মধ্যে কর্মী নামাইয়া, গত ১৭ বছর কে কোথায় ছিল, আমরা দেখেছি। মঙ্গলবার দিনব্যাপী কুমিল্লার দেবিদ্বারের বিভিন্ন এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) পদযাত্রা ও গণযোগাযোগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘মানুষের কাছে শুনতেছি, আমি নাকি ৫০০ ভোট পাব। ৯ মাসের একটা পার্টি- বাপ-দাদার পরিচয় ছাড়া যদি ৫০০ ভোট পায়, এটাই অনেক কিছু না? আপনারা যারা খেটে খাওয়া মানুষ, যারা কর্মজীবী- আপনাদের প্রতিনিধি হয়ে আমি আসছি। আমার খুব বড় বংশ নেই, আমার টাকা–পয়সা নেই, আমি বিদেশেও পড়াশোনা করি নাই, আমি ঘি খেয়েও বড় হই নাই। নেতারা উপর থেকে নিচে আসছেন, আর আমি আপনাদের মধ্য থেকে উপরে উঠেছি।’

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘গত ১৭ বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলের যারা রাস্তা–ঘাটে ছিলেন, আমরা তাদের দেখেছি। বিশেষ করে আমরা বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীকেও রাস্তা-ঘাটে দেখেছি। অথচ এখন তাদের একতারা বলে- তারা নাকি আওয়ামী লীগ! বিষয়টা চিন্তা করে দেখছেন? তারা কারা?’

দিনব্যাপী গণসংযোগের অংশ হিসেবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসানাত আবদুল্লাহ দেবিদ্বার উপজেলার ভানী ইউনিয়নের সূর্যপুর গ্রামে শহীদ কাদির হোসেন সোহাগের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং এর আগে শহীদ কাদিরের কবর জিয়ারত করেন হাসনাত আবদুল্লাহ।

এ সময় তিনি দেবিদ্বারের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং শাপলা কলি প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।


খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান

আপডেটেড ২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৫:০৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থার বিষয় নিয়ে গুজব না ছড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এ আহ্বান জানান।

ব্রিফিংয়ে ডা. জাহিদ বলেন, ২৭ তারিখ থেকে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন বেগম খালেদা জিয়া। বর্তমানে তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন। বিভিন্ন গুজব, বিভিন্ন বক্তব্য দেখার পর থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। যোগাযোগ করছেন দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে।

বিএনপির এ নেতা আরও জানান, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার প্রতিটি ধাপ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে তার জন্য বিদেশে উন্নত চিকিৎসার প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন রয়েছে।

ডা. জাহিদ বলেন, ডাক্তাররা যে চিকিৎসা দিচ্ছেন, সেটি উনি গ্রহণ করতে পারছেন। তবুও বিদেশে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি আছে কি না মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের পরামর্শ নেয়া হচ্ছে। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ ছাড়া বিদেশে নেয়ার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, চিকিৎসায় সরকার সার্বক্ষণিকভাবে সহযোগিতা করছে। সংকটময় মুহূর্তে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই। দোয়ার কারণেই হয়ত বেগম জিয়া সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আমরা আশা করি।

তিনি আরও জানান, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে কেবল তার এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য ছাড়া অন্য কারও বক্তব্য প্রচার না করতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করা হয়েছে।

এসময় ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।


দেশবাসীর সম্মিলিত সমর্থনই আমাদের পরিবারের শক্তি ও প্রেরণার উৎস

আপডেটেড ২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৪:৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবরে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও শুভকামনার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেছেন, ‘দেশবাসীর সম্মিলিত সমর্থনই আমাদের পরিবারের শক্তি ও প্রেরণার উৎস।’

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার আগে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তারেক রহমান এ কথা বলেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মমতাময়ী দেশনেত্রীর দ্রুত আরোগ্যের জন্য আমরা সবাই নিরন্তর দোয়া করছি। এই কঠিন সময়ে ঐক্য, সহমর্মিতা ও সংহতির জন্য প্রতিটি মানুষের প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা রইলো।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য যেভাবে সহযোগিতা ও শুভকামনা জানানো হচ্ছে, সেজন্য জিয়া পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ, কূটনীতিকবৃন্দ ও বন্ধুগণের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা, পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষের অপরিসীম ভালোবাসা ও দোয়া, সবকিছু আমাদের আবেগ ও অনুভূতিকে গভীরভাবে স্পর্শ করছে।’

গত ২৩ নভেম্বর থেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে শয্যাশায়ী খালেদা জিয়া। বর্তমানে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। লিভারজনিত সংকট, কিডনির কর্মক্ষমতা হ্রাস, শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিসসহ একাধিক শারীরিক জটিলতা একসঙ্গে দেখা দেওয়ায় তাঁর চিকিৎসা আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত কয়েক দিনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে আইসিইউ সমমানের হাইডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়েছিল। হঠাৎ তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হওয়ায় গত রোববার মধ্যরাতের পর তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয় বলে জানা গেছে। সেখানে তার চিকিৎসকেরা খালেদা জিয়াকে ভেন্টিলেশনে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছেন।


খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ছাত্রদলের দেশব্যাপী মিলাদ-মাহফিল আজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় আজ মঙ্গলবার দেশব্যাপী মিলাদ ও দোয়া মাহফিল পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

গতকাল সোমবার সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচির কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার বাদ আসর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে বিশেষ মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

পাশাপাশি এদিন দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা ও মহানগরেও বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় অনুরূপ মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির আজ এক বিবৃতিতে এই কর্মসূচি যথাযথভাবে পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল ইউনিটের প্রতি আহ্বান জানান।


খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান রিজভীর

আপডেটেড ২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:৪১
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সিসিইউতে পূর্বের মতোই চলছে বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

দলের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব ইসলামের মোহাম্মদপুরস্থ বাসভবনে গতকাল সোমবার দুপুরে বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় শেষ দোয়া অনুষ্ঠানে রিজভী এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নেত্রী নন, তিনি শুধু বিএনপির অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেত্রীও নন। আজ সারা বাংলাদেশের সকল মানুষ-পেশাজীবী, সুশীল সমাজ, ছাত্র, যুবক, শ্রমিক ও কৃষক সবাই তার জন্য দোয়া করছেন। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ঘিরে গোটা জাতি আজ এক বেদনাবিধুর অবস্থার মধ্যে রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বন্দি থাকা অবস্থায় নিজের সন্তান হারিয়েছেন। তিনি অনেক নিপীড়ন ও নির্যাতন সহ্য করেছেন, তবুও তাঁকে নিজের দেশ থেকে সরাতে পারেনি।

তাঁর বিরুদ্ধে অনেক চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র হয়েছে, অনেক নির্যাতন হয়েছে। একটি ভগ্নস্তূপের মতো জেলখানায় তাকে বছরের পর বছর রাখা হয়েছে। তারপরও তাকে এই দেশ ও মাটি থেকে সরানো সম্ভব হয়নি। আজ সারা জাতি তার জন্য দোয়া করছেন।’

বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, বেগম জিয়া অত্যন্ত গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমরা সবাই আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আল্লাহ তাকে খুব দ্রুত আরোগ্য দান করুন, সুস্থ করে তুলুন এবং আবারও এ দেশের মানুষের কাছে, জনগণের কাছে তাকে ফিরিয়ে দিন।

বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে রিজভী বলেন, ‘তিনি বর্তমানে সিসিইউতে আছেন। পূর্বে যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল, গতকাল ও গত পরশু যেমন ছিল, আজও তেমনভাবে সেই চিকিৎসা চলছে। এর বাইরে আর কোনো নতুন আপডেট নেই। অন্য যে যা-ই বলুক, এতে কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয়।’

রিজভী আরও বলেন, ‘বেগম জিয়া এখনও সংকটজনক অবস্থায় আছেন। তিনি গুরুতর অসুস্থ, ত গতকাল বা গত পরশু যে অবস্থায় ছিলেন, আজও তিনি সেই একই অবস্থায় আছেন। নানা ধরনের গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে, এতে কেউ যেন কান না দেয়।’


খালেদা জিয়া কোনো দলের নয়, সমগ্র দেশের নেত্রী: ডা. তাহের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কোনো নির্দিষ্ট দলের নন, তিনি সমগ্র দেশের মানুষের নেত্রী।

সোমবার রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে হৃদরোগের চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ডা. তাহের বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আগামী রাজনীতি ও নির্বাচন সামনে রেখে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা, বোঝাপড়া ও নীতিগত ঐক্য আরও বাড়ানো প্রয়োজন। তিনি সব রাজনৈতিক দল ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান, যেন সবাই ধৈর্য ও প্রজ্ঞার সঙ্গে দেশকে অগ্রাধিকার দিয়ে দায়িত্ব ঠিক করে।

নিজের চিকিৎসা প্রসঙ্গে তিনি জানান, হৃদযন্ত্রে ব্লক অনুভব করায় তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসক মনিরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা হয়। ব্লকটি শক্ত থাকায় চিকিৎসকদের মধ্যে মতভেদ ছিল। কেউ সিঙ্গাপুরে নেওয়ার পরামর্শ দিলেও তিনি ঢাকাতেই চিকিৎসা নিয়ে সফল হন।

বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ডা. তাহের বলেন, তিনি একজন দেশনেত্রী ও গণতান্ত্রিক নেত্রী। তার আপসহীন নেতৃত্বের কারণেই দেশ গত সাড়ে ১৫ বছরে অন্য দেশের আধিপত্যে পড়েনি। তিনি কোনো দলের নয়, পুরো দেশের মানুষের নেত্রী। জামায়াতের পক্ষ থেকে তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন তিনি।


একটি রাজনৈতিক দল বিএনপি ও দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তে নেমেছে: মির্জা আব্বাস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, একটি রাজনৈতিক দল বিএনপি তথা দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তে নেমেছে। তারা দেশি-বিদেশি মদতপুষ্ট হয়ে এদেশের মানুষকে একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ধর্মীয়ভাবে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আমাদের মা-বোনদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
গতকাল রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যদি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন না করতেন, আর দেশনেত্রী খালেদা জিয়া যদি সেই গণতন্ত্রকে লালন না করতেন, তাহলে আজকের মতো নির্বাচনের সম্ভাবনা কখনোই হতো না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এদেশের মানুষকে এক মিনিটের জন্যও শান্তিতে থাকতে দেননি। গত ১৭ বছরে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে, আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা যে আন্দোলন করেছি—সেই আন্দোলনের সুফল দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।
‘আমরা ভোটের অধিকার আদায় করেছি। এখন ভোট প্রয়োগের সময় এসেছে। আগামী যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেই নির্বাচনে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন—সবার প্রতি এই আহ্বান থাকবে। কারণ, খালেদা জিয়ার হাতেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিরাপদ ছিল, বিএনপির হাতেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব নিরাপদ ছিল।’
মির্জা আব্বাস বলেন, আমার নেত্রী যে গণতন্ত্রের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন, সেই গণতন্ত্রকে অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগ গত ১৭ বছর দুঃশাসন চালিয়েছে। এখন যখন আবারও আমরা গণতন্ত্রের স্বাদ পেতে শুরু করেছি—ঠিক সেই সময় আরেকটি রাজনৈতিক দল বিএনপির বিরুদ্ধে তথা দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।
‘তারা দেশি-বিদেশি মদতপুষ্ট হয়ে এদেশের মানুষকে একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা ধর্মীয়ভাবে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তারা আমাদের মা-বোনদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে’— যোগ করেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়া জেলখানায় অপচিকিৎসার শিকার হয়ে আজ অসুস্থ। অথচ তাকে আজ জাতির সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি যদি মাথাচাড়া দেয় তাহলে ফ্যাসিবাদের চেয়ে তারা ভয়ঙ্কর হবে। এরা ধর্মে ধর্মে বিভেদ তৈরি করে। এদেশের মানুষ ধর্মমনা হলেও ধর্মান্ধ নয়।


৫ দফা দাবিতে ৮ দলের উদ্যোগে রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজশাহী প্রতিনিধি

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও ওই আদেশের উপর গণভোট আয়োজনসহ ৫ দফা দাবিতে ৮ দলের উদ্যোগে ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে রোববার রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, আগামীর সংসদ হবে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত সংসদ। চাঁদাবাজদের প্রতিহত করব ইনশাআল্লাহ। অতীতে যারা চাঁদাবাজি করেছে, তাদের আর খাওয়া নাই। আগামীর সংসদ হবে কোরানের সংসদ। আগামীতে সচিবালয় চলবে সংসদ চলবে বিচারালয় চলবে কোরান দিয়ে। সবকিছু চলবে কোরান দিয়ে।

সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ৮ দলের জোট নতুন জাগরণ তৈরি হয়েছে। অবশ্যই জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। সরকার একইদিনে গণভোটের সিদ্ধান্ত কারও কুপরামর্শে করেছে।

এ সময় সমাবেশের সভাপতি সহকারী সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জুলাই বিপ্লব কোনো একক দলের নেতৃত্বে হয়নি। কিন্তু এই সরকার একটি দলের পকেটে ঢুকে যাচ্ছে। আমরা বলব, নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করুন। গণভোট আগে হতে হবে। ষড়যন্ত্র চলছে। যথাসময়ে নির্বাচন হতে হবে। গণভোট আগে দিতে হবে। গণহত্যার বিচার করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হবে।

রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি ও সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ইমাজ উদ্দিন মণ্ডল ও মুফতি ইমরানের যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি শেখ মো. নুরুন্নবী, বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি শেখ মো. সালাউদ্দিন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ রোকনুজ্জামান রোকন, জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগরীর আমির ড. মাওলানা কেরামত আলী, নায়েবে আমির ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, রাকসুর ভিপি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।


বিজয় দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি স্থগিত করল বিএনপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারণে পূর্বঘোষিত বিজয় দিবসের কর্মসূচি স্থগিত করেছে বিএনপি।
রোববার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় বিজয় দিবসের গৃহীত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
জনগণের কাছে দোয়া কামনা করেছেন তিনি।

তিনি আরও জানান, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত। বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে তার মেডিকেল বোর্ড এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।

এর আগে শনিবার (২৯ নভেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।


বেগম জিয়ার আজকের অসুস্থতা স্বাভাবিক নয়: মির্জা আব্বাস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আজকের অসুস্থতা স্বাভাবিক অসুস্থতা নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতির শিকার হয়ে তিনি এমন অসুস্থ হয়েছেন।

গতকাল শনিবার বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত রূপসী বাংলা আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান-২০২৫ এ তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, আমি সবসময় কারা কর্মকর্তাদের থেকে সতর্ক থেকেছি। কারণ, কারাগারে স্লো পয়জন দেওয়া হয়। ভারতীয় একজন সাংবাদিক ঢাকায় এসেছিল। যখন আমার সঙ্গে দেখা হয় উনি বললেন, আমরা কী নিয়ে লাফালাফি করতেছি, উনি তো বাঁচবেন না দুই বছর। আমি বললাম কেন? তিনি বললেন, ওভাবেই ডিজাইন করা আছে। অর্থাৎ এমন করে ডিজাইন করা হয়েছে, উনি ধীরে ধীরে মৃত্যুবরণ করবেন। আল্লাহর রহমত, এখন পর্যন্ত তিনি বেঁচে আছেন। আমরা আল্লাহর কাছে তার সুস্থতা কামনা করব।

তিনি বলেন, বুধবার রাত একটার সময় নেত্রীকে দেখতে গিয়েছিলাম। সেখানে এক ঘণ্টার মতো ছিলাম। আজকে যে খবরটা জানলাম, উনি আগের চেয়ে ভালো আছেন। আল্লাহ তাকে সুস্থ করে তুলবেন, এ কামনা করি।

নির্বাচন নিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে যারা দেশের বাইরে থেকে চক্রান্ত করছে, তারা দেশটাকে বছরের পর বছর দখল করে রেখেছিল। তারা দেশটাকে একেবারে শেষ করে দিয়ে গেছে। তারা এখন বিদেশে বসে বক্তব্য দিচ্ছে, আওয়ামী লীগকে ছাড়া নির্বাচন হবে না। আপনারা বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন করেন নাই? সুতরাং নির্বাচন বাংলাদেশে হবেই। এই ফেব্রুয়ারিতেই হবে, এতে কোনো ভুল নাই।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম মহসীন, সাবেক সভাপতি এ বি এম রফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক বাবুল তালুকদার, রূপসী বাংলা-২০২৫ আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতার আহ্বায়ক নাসিম শিকদার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম প্রমুখ।

রূপসী বাংলা-২০২৫ আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন এম হায়দার আলী (চট্টগ্রাম), দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন শামসুল হক রিপন (ঢাকা) এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এম রাশেদ (চট্টগ্রাম)।


চাঁদাবাজির সিস্টেমে জীবনের বরকত নষ্ট হয়েছে: সিবগাতুল্লাহ সিবগা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের দপ্তর সম্পাদক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড সিবগাতুল্লাহ সিবগা বলেছেন, দেশে মানুষের চাওয়া–পাওয়া খুবই অল্প, কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এক শ্রেণির নেতা-কর্মী চাঁদাবাজিকে একটি সিস্টেম হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। কৃষকের পণ্য, মিল-ফ্যাক্টরি—সবখানেই তাদের আধিপত্য। এই চাঁদাবাজির কারণে দেশের জীবনে বরকত নষ্ট হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। শুক্রবার সকালে গাজীপুরের কালীগঞ্জ আর আর এন পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘যুব সমাবেশ ২০২৫’-এ প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

সিবগাতুল্লাহ সিবগা বলেন, ‘অন্যের সম্পদ ও অধিকার ভক্ষণ করা আগুন ভক্ষণ করার চেয়েও ভয়ঙ্কর। স্বাধীনতার পর বারবার ভোট দিয়েছি—চিন্তা করেছি, হয়তো পরিবর্তন আসবে। কিন্তু যারা নিজেদের দলের দুর্নীতি রুখতে পারে না, তারা জনগণের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে না। সময় বদলেছে, এখন আমরা হজরত ওমরের মতো যোগ্য নেতাকে ভোট দিবো, ইনশাআল্লাহ।’

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কালীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. আফতাব উদ্দিন এবং সঞ্চালনায় ছিলেন উপজেলা সেক্রেটারি মো. তাজুল ইসলাম।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। অনুষ্ঠানে গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও গাজীপুর মহানগরের নায়েবে আমীর মো. খায়রুল হাসান কালীগঞ্জের উন্নয়ন নিয়ে একটি বিস্তারিত রূপকল্প উপস্থাপন করেন। তিনি রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে ‘সেক্টর ভিত্তিক উন্নয়ন কমিটি’ গঠনের ঘোষণা দেন, যেখানে সৎ ও দক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয় করে স্থানীয় উন্নয়নকে দ্রুততর করার পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গাজীপুর মহানগর আমীর অধ্যাপক মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন, গাজীপুর জেলা আমীর ও গাজীপুর-৩ আসনের প্রার্থী ড. মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, গবেষক আলী আহমাদ মাবরুর (শহীদ আলী আহসান মুজাহিদের পুত্র), গাজীপুর-৪ আসনের প্রার্থী মো. সালাহ উদ্দিন আইউবী, গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শামসুল হক ভূঁইয়া প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল কালীগঞ্জ উপজেলার প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে থানা গেটের সামনে এসে শেষ হয়।


সীতাকুণ্ডে বিএনপি প্রার্থী কাজী সালাউদ্দিনের গণসংযোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম–৪ (সীতাকুণ্ড, আকবর শাহ, পাহাড়তলী ও খুলশী আংশিক) আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন টানা গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিদিনই কখনো বাঁশবাড়িয়া, কখনো কুমিরা কখনো সোনাইছড়ি, কখনো সৈয়দপুর, কখনো মুরাদপুর কখনো সীতাকুণ্ড পৌরসদর, কখনো পাড়া–মহল্লা, কখনো বাজারপাড়া-যেখানেই মানুষ আছে, সেখানেই তিনি উপস্থিত।

শুক্রবার তিনি বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডজুড়ে গণসংযোগ করেন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষের খোঁজখবর নেন, তাদের সমস্যা শোনেন, আর বদলের প্রত্যাশা নিয়ে আলোচনা করেন।

বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল এবং অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতারা তার সঙ্গে সারাদিন মাঠে ছিলেন। এলাকাজুড়ে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি আর সাধারণ মানুষের আগ্রহ পুরো পরিবেশকে সরব করে তুলেছে।

গণসংযোগ চলাকালে মানুষের মুখে উঠে আসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক দাম, কর্মসংস্থানের অভাব, নিরাপত্তাহীনতা, কৃষক–জেলে–শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের দুর্দশা।

কাজী সালাউদ্দিন তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং বলেন, এই এলাকার উন্নয়ন, ন্যায্য অধিকার আর ভরসার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার জন্যই আমি মাঠে আছি। গণসংযোগে ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। এলাকাজুড়ে ব্যানার, লিফলেট আর হ্যান্ড মাইকে প্রচারণা মানুষের আগ্রহ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। কাজী সালাউদ্দিন জানান, এই এলাকার রাস্তা, ড্রেনেজ, স্বাস্থ্যসেবা, জীবনমান-সবকিছুতেই নতুনভাবে কাজ প্রয়োজন। তাই মানুষ পরিবর্তন চায়।


বিএনপির লক্ষ্য গণতান্ত্রিক সংস্কার, অর্থনৈতিক উন্নয়ন

অঙ্গীকার: ক্ষমতায় গেলে কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিক্ষিত বেকারদের দেওয়া হবে ভাতা এবং প্রতিষ্ঠা করা হবে সামাজিক ন্যায়বিচার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক
    রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা

সংবিধান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাঠে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করে চলেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

দলটি মনে করে, দেশের জনগণ গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিল, সেই রাষ্ট্রের মালিকানা তাদের হাতে নেই। কর্তৃত্ববাদী সরকার রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। এই রাষ্ট্র মেরামত ও পুনর্গঠন করতে হবে। দেশের জনগণের হাতেই দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। সেই নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে ১৮ মাসের মধ্যে এক কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শিক্ষিত বেকারদের জন্য এক বছরের ভাতা চালুর অঙ্গীকার রয়েছে দলটির।

বিএনপি সূত্র জানায়, এবার তরুণ ভোটারদের অগ্রাধিকার দিয়ে প্রচারণা চালাবে দলটি। সেই লক্ষ্যে ‘তারুণ্যের প্রথম ভোট ধানের শীষের পক্ষে হোক’ স্লোগান বেছে নেওয়া হয়েছে।

দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, দেশের সব জনগোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে বিএনপি তাদের প্রচারণায় খাদ্য সহায়তার জন্য ফ্যামিলি কার্ড, বীজ–সার ও অন্য সহায়তার জন্য কৃষক কার্ড এবং চিকিৎসা কার্ড চালুর পরিকল্পনার কথা তুলে ধরবে।

নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা, সমান সুযোগ ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করার অঙ্গীকারও বিএনপির প্রচারণার অন্যতম প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হবে বলে তারা যোগ করেন।

গত সোমবার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব আলোচনা হয়। শীর্ষ নেতারা দলের সম্ভাব্য প্রচারণা কৌশল নিয়ে এই বৈঠকে পর্যালোচনা করেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোটারদের আচরণ বিশ্লেষণ ও তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দিকনির্দেশনা দিতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করা হয়েছে।

দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, সাতটি প্রধান ইস্যুকে কেন্দ্র করে ঘরে ঘরে গিয়ে সরাসরি ভোটারদের কাছে প্রতিশ্রুতি তুলে ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।

দলীয় নেতারা জানান, খাতগুলো হলো- জলবায়ু ও পরিবেশ সুরক্ষা, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, কৃষি, নারী ক্ষমতায়ন, ক্রীড়া ও ধর্মীয় বিষয়। নির্বাচনী প্রচারণার এই অঙ্গীকার তালিকা দলের ৩১ দফা সংস্কার পরিকল্পনার ভিত্তিতে করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েকটি দল শিগগিরই মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ক্ষমতায় গেলে বাস্তবায়নযোগ্য বেশ কয়েকটি প্রতিশ্রুতি বিএনপির লিফলেটে তুলে ধরা হবে। এর মধ্যে রয়েছে পরিবেশ সুরক্ষা, ৫০ লাখ ফ্যামিলি কার্ড চালু, পাঁচ বছরে পাঁচ কোটি গাছ রোপণ এবং গুরুত্বপূর্ণ খাতে চাঁদাবাজি–দুর্নীতি দমনে বিশেষ উদ্যোগ।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) মডেল অনুসরণ করে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ার পরিকল্পনাও প্রচারণায় তুলে ধরবে দলটি।

জলবায়ু ও পানি নিরাপত্তা ইস্যুতে ২০ হাজার কিলোমিটার নদী–খাল পুনরুদ্ধার, কমিউনিটিভিত্তিক সেচ ব্যবস্থা পুনরায় চালু এবং আধুনিক তিস্তা ও গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি থাকবে।

আর্থিক সংকটে থাকা ইমাম-মুয়াজ্জিনদের মাসিক ভাতা প্রদান এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উদ্বেগ নিরসনে বাড়তি উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।

ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা খাতে বড় ধরনের সংস্কার আনা হবে। স্কুলপর্যায়ের পাঠ্যক্রমে ক্রীড়া, শিল্প–সংস্কৃতি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং শিক্ষার্থীদের ক্ষুদ্রশিল্প স্থাপনে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে।

দলীয় সূত্র জানায়, শীর্ষ নেতারা এখন নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় বেশি সময় দিচ্ছেন, দুর্বলতা চিহ্নিত করছেন এবং ভোটের আগে সেগুলো সমাধানে কাজ করছেন। পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণ, ব্যাকআপ এজেন্ট প্রস্তুত এবং ৩১ দফা প্রতিশ্রুতি ও রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা তুলে ধরে ব্যানার–ফেস্টুন–বিলবোর্ড টাঙাচ্ছেন।

দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর তত্ত্বাবধানে মূলধারার গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও তৃণমূলে প্রচারণা জোরদারে সমন্বিত কৌশল গ্রহণ করেছে বিএনপি। সাত সদস্যবিশিষ্ট সাতটি দল গঠন করা হবে, প্রতিটির জন্য আলাদা নেতা থাকবেন।


banner close