পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ-লুটপাটের ঘটনা কোনো আকস্মিক বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলে দাবি করছে বিএনপি। তারা বলছে, এটি রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সুপরিকল্পিত ঘটনা। নির্বাচনের আগে দেশকে অস্থিতিশীল করতে ও বিএনপির ওপর দোষ চাপাতে আওয়ামী লীগ তাদের আগের খেলা নতুন করে শুরু করেছে।
রোববার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের পক্ষ থেকে সম্প্রতি পঞ্চগড়ের ওই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে একটি তদন্ত প্রতিনিধিদল। সেটির প্রতিবেদন তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনের আগে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিশেষ করে শাসকদলের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বহৎ জনপ্রিয় দল বিএনপির ওপর দোষ চাপিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের পূর্বের খেলা নতুন করে শুরু করেছে। বিএনপিকে আতঙ্কের মধ্যে রাখার নীল নকশার অংশ হিসেবে এই ন্যক্কারজনক হামলা করা হয়েছে।’
এ ঘটনায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের আটক করা হয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পুলিশ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে ২০টি মামলা দিয়েছে, ১২ হাজারেরও বেশি মানুষকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিএনপির ১৮৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এমনকি পঞ্চগড় থেকে অনেক দূরের উপজেলার নেতাকর্মীদেরও এ ঘটনায় আটক করেছে। অভিযান চালিয়ে হয়রানি ও আতঙ্কের সৃষ্টি করা হয়েছে।’
বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা কেউ নিজ বাড়িতে থাকতে পারছেন না দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রকৃত ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে পুলিশসহ সবাই জানে। অথচ নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বিএনপি নেতাকর্মীদের। এতে বোঝা যায় পুলিশ এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে পূর্বের ন্যায় ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপিয়ে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা করে দেশে ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টায় নেমেছে। কিন্তু জনগণ সবই বোঝে।’
হামলার ঘটনায় পুলিশের নীরব ভূমিকা পালনের অভিযোগ তুলে বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারের পূর্বানুমতি নিয়েই তাদের বার্ষিক জলসার দিন ও স্থান নির্ধারণ করে। এ জলসার বিরোধিতা করে কিছু ধর্মীয় সংগঠনের স্থানীয় লোকজন মিছিল মিটিং করে, যা প্রশাসনের জানা ছিল। জলসা বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদনও করে কিছু সংগঠন। তারপরও পুলিশ নিরাপত্তামূলক কঠোর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্তরা প্রকাশ্যেই বলেছেন, আওয়ামী লীগের লোকজন বিশেষ করে পঞ্চগড় সদরের সংসদ সদস্য ও বর্তমান রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজনের ঘনিষ্ঠরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনার পর রেলমন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এলে ক্ষতিগ্রস্তরা চিৎকার করে বলেছে, ঘটনায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী আব্দুর রহমান ও তার ছেলে মোতাহার মন্ত্রীর আশপাশেই উপস্থিত আছে। এই হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচার করা না হলে তারা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবেন। রেলমন্ত্রীর কোনো সদুত্তর না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা তার সামনেই নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।’
অন্যায় করে বিএনপির ওপর দোষ চাপানো আওয়ামী লীগের পুরোনো অভ্যাস মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিন্তু সত্য কোনো দিন চাপা থাকে না। এ দেশের মানুষকে বোকা ভাবার কোনো কারণ নেই।’
বিএনপি মহাসচিবের দাবি, আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বার্ষিক জলসা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে বলে অনেকে মনে করেন। তিনি বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে পঞ্চগড়ের ঘটনা সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, এ হামলার সঙ্গে বিএনপির নেতারা জড়িত। অথচ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা যে এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত তা তিনি বেমালুম চেপে গেলেন। বিবেকের তাড়না বলেও কি কিছু নেই এদের।’
গত ৮ মার্চ পঞ্চগড় সদর উপজেলার আহম্মদ নগর ও বোদা উপজেলার ফলতলা, শাল সিড়ি ও বেংহারি বনগ্রাম ইউনিয়নসহ ঘটনাস্থল এবং ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি সরজমিনে পরিদর্শন করে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। কমিটি ইতোমধ্যে প্রতিবেদন দিয়েছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম এ প্রতিনিধি দলে ছিলেন। কমিটির সদস্যরা পুলিশের গুলিতে নিহত আরিফুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির পক্ষ থেকে ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, যেসব আসনে প্রার্থী দেওয়া হয়নি সেগুলো পরে ঘোষণা করা হবে। এর বাইরে কিছু আসন শরিকদের ছাড়া হবে।
দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বগুড়া-৭, দিনাজপুর-৩ ও ফেনী-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন। মির্জা ফখরুল নিজে ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
অন্যান্য আসনে প্রার্থী হলেন যারা তারা হলেন- ঢাকা-১ খন্দকার আবু আশফাক; ঢাকা-২ আমানউল্লাহ আমান; ঢাকা-৩ গয়েশ্বর চন্দ্র রায়; ঢাকা-৪ তানভীর আহমেদ রবিন; ঢাকা-৫ নবী উল্লাহ নবী; ঢাকা-৫ ইশরাক হোসেন; ঢাকা-৮ মির্জা আব্বাস; ঢাকা-১২ সাইফুল আলম নীরব; ঢাকা-১৪ সানজিদা তুলি; ঢাকা-১৬ আমিনুল হক।
চট্টগ্রাম-১ নুরুল আমিন; চট্টগ্রাম-২ সরোয়ার আলমগীর; চট্টগ্রাম-৪ কাজী সালাউদ্দিন; চট্টগ্রাম-৫ মীর হেলাল উদ্দিন; চট্টগ্রাম-৭ হুম্মাম কাদের চৌধুরী; চট্টগ্রাম-৮ এরশাদ উল্লাহ; চট্টগ্রাম-১০ আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী; চট্টগ্রাম-১২ এনামুল হক; চট্টগ্রাম-১৩ সরোয়ার জামাল নিজাম; চট্টগ্রাম-১৬ মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা।
কক্সবাজার-১ সালাহউদ্দিন আহমদ; কক্সবাজার-৩ লুৎফুর রহমান কাজল; কক্সবাজার-৪ শাহজাহান চৌধুরী; বান্দরবন- সাচিং প্রু; রাঙামাটি- দীপেন দেওয়ান; খাগড়াছড়ি- আবদুল ওয়াদুদ ভুঁইয়া।
বরিশাল-১ জহির উদ্দিন স্বপন; বরিশাল-২ সরদার সরসুদ্দিন আহমেদ সান্টু; বরিশাল-৪ মো. রাজীব আহসান; বরিশাল-৫ মো. মজিবুর রহমান সরোয়ার; বরিশাল-৬ আবুল হোসেন খান।
কুমিল্লা-১ ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন; কুমিল্লা-৩ কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ; কুমিল্লা-৪ মঞ্জুরুল আহসান মুলী; কুমিল্লা-৫ মো. জসিম উদ্দিন; কুমিল্লা-৬ মো. মনিরুল হক চৌধুরী; কুমিল্লা-৮ জাকারিয়া তাহের; কুমিল্লা-৯ মো. আবুল কালাম; কুমিল্লা-১০ মো. আব্দুল গফুর জুঁইয়া; কুমিল্লা-১১ মো. কামরুল হুদা।
নোয়াখালী-১ এ এম মাহবুব উদ্দিন; নোয়াখালী-২ জয়নাল আবেদীন ফারুক; নোয়াখালী-৩ মো. বরকত উল্লাহ বুলু; নোয়াখালী-৪ মো. শাহজাহান; নোয়াখালী-৫ মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম; নোয়াখালী-৬ মোহাম্মদ মাহবুবের রহমান শামীম।
ময়মনসিংহ-১ সৈয়দ এমরান সালেহ; ময়মনসিংহ-২ মোতাহের হোসেন তালুকদার; ময়মনসিংহ-৩ এম ইকবাল হোসেইন; ময়মনসিংহ-৪ মো. আবু ওয়াহাব আখন্দ ওয়ালিদ; ময়মনসিংহ-৫ মোহাম্মদ জাকির হোসেন; ময়মনসিংহ-৬ মো. আখতারুল আলম; ময়মনসিংহ-৭ ডা. মো. মাহবুবুর রহমান; ময়মনসিংহ-৮ লুতফুল্লাহেল সাজেদ; ময়মনসিংহ-৯ ইয়াসের খাঁন চৌধুরী; ময়মনসিংহ-১১ ফকর উদ্দিন আহমেদ।
পঞ্চগড়-১ ব্যারিস্টার মোহাম্মদ নওশাদ অসির; পঞ্চগড়-২ ফরহাদ হোসেন আজাদ; ঠাকুরগাঁও-১ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর; ঠাকুরগাঁও-৩ মো. জাহিদুর রহমান জাহিদ; দিনাজপুর-১ মো. মনজুরুল ইসলাম; দিনাজপুর-২ মো. সাদিক রিয়াজ; দিনাজপুর-৩ বেগম খালেদা জিয়া; দিনাজপুর-৪ মো. আকারুজ্জামান মিয়া; দিনাজপুর-৬ অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
নীলফামারী-২ এ এইচ মো. সাইফুল্লাহ রুবেল; নীলফামারী-৪ মো. আব্দুল গফুর সরকার; লালমনিরহাট - ১ মো. হাসান রাজিব প্রধান; লালমনিরহাট -৩ আসাদুল হাবিব দুলু; রংপুর- ১ মো. মোকাররম হোসেন সুজন; রংপুর-২ মোহাম্মদ আলী সরকার; রংপুর-৩ মো. সামসুজ্জামান সামু; রংপুর -৪ মোহাম্মদ এমদাদুল হক ভরসা; রংপুর-৫ মো. গোলাম রব্বানী; রংপুর-৬ মো. সাইফুল ইসলাম।
কুড়িগ্রাম-১ সাইফুল ইসলাম রানা; কুড়িগ্রাম- ২ মো. সোহেল হোসেন কায়কোবা; কুড়িগ্রাম-৩ তাজভীর উল ইসলাম; কুড়িগ্রাম-৪ মো. আজিজুর রহমান; গাইবান্ধা-১ খন্দকার জিয়াউল ইসলাম মোহাম্মদ আলী; গাইবান্ধা-২ মো. আনিসুজ্জামান খান বাবু; গাইবান্ধা-৩ অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মইনুল হাসান সাদিক; গাইবান্ধা -৪ মোহাম্মদ শামীম কায়সার; গাইবান্ধা-৫ মো. ফারুক আলম সরকার।
জয়পুরহাট-১ মো. মাসুদ রানা প্রধান; জয়পুরহাট-২ আব্দুল বারী; বগুড়া-১ কাজী রফিকুল ইসলাম; বগুড়া-৩ আব্দুল মুহিত তালুকদার; বগুড়া-৪ মো. মোশারফ হোসেন; বগুড়া-৫ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ; বগুড়া-৬ তারেক রহমান; বগুড়া-৭ বেগম খালেদা জিয়া; চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ মো. সাজাহান মিয়া; চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ মো. আমিনুল ইসলাম; চাঁপাইনবাবগঞ্জ -৩ মো. হারুনর রশিদ।
নওগাঁ-১ মো. মোস্তাফিজুর রহমান; নওগাঁ-২ মো. সামসুজোহা খান; নওগাঁ-৩ মো. ফজলে হুদা বাবুল; নওগাঁ-৪ ইকরামুল বারী টিপু; নওগাঁ-৬ শেখ মো. রেজাউল ইসলাম; রাজশাহী-১ মো. শরীফ উদ্দীন; রাজশাহী-২ মো. মিজানুর রহমান মিনু; রাজশাহী-৩ মোহাম্মদ শফিকুল হক মিলন; রাজশাহী-৪ ডি.এম.ডি. জিয়াউর রহমান; রাজশাহী -৫ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম; রাজশাহী-৬ আবু সাঈদ চাঁদ।
নাটোর-১ ফারজানা শারমিন; নাটোর-২ রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু; নাটোর-৪ মো. আব্দুল আজিজ; সিরাজগঞ্জ -২ ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু; সিরাজগঞ্জ-৩ ভিপি আয়নুল হক; সিরাজগঞ্জ-৪ এম আকবর আলী; সিরাজগঞ্জ-৫ মো. আমিরুল ইসলাম খান; সিরাজগঞ্জ-৬ এম এ মুহিত; পাবনা-২ এ কে এম সেলিম রেজা হাবিব; পাবনা-৩ মো. হাসান জাফির তুহিন; পাবনা-৪ হাবিবুর রহমান হাবিব; পাবনা-৫ মো. শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।
মেহেরপুর-১ মাসুদ অরুন; মেহেরপুর-২ মো. আমজাদ হোসেন; কুষ্টিয়া -১ রেজা আহম্মেদ; কুষ্টিয়া-২ রাগীব রউফ চৌধুরী; কুষ্টিয়া-৩ মো. জাকির হোসেন সরকার; কুষ্টিয়া-৪ সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি; চুয়াডাঙ্গা-১ মো. শরীফুজ্জামান; চুয়াডাঙ্গা-২ মাহমুদ হাসান খান; ঝিনাইদহ-৩ মোহাম্মদ মেহেদী হাসান; যশোর-১ মো. মফিকুল হাসান তৃপ্তি; যশোর-২ মোছা. সাবিরা সুলতানা; যশোর-৩ অনিন্দ্য ইসলাম অমিত; যশোর-৪ টি.এস. আইয়ুব; যশোর-৬ কাজী রওনকুল ইসলাম।
মাগুরা-১ মো. মনোয়ার হোসেন; মাগুরা-২ নিতাই রায় চৌধুরী; নড়াইল-১ বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম; খুলনা -২ নজরুল ইসলাম মঞ্জু; খুলনা-৩ রকিবুল ইসলাম বকুল; খুলনা-৪ আজিজুল বারী হেলাল; খুলনা-৫ মোহাম্মদ আলী আসগর; খুলনা-৬ মনিরুল হাসান বাপ্পী; সাতক্ষীরা-১ মো. হাবিবুল ইসলাম হাবিব; সাতক্ষীরা-২ আব্দুর রউফ; সাতক্ষীরা-৩ কাজী আলাউদ্দীন; সাতক্ষীরা-৪ মো. মনিরুজ্জামান।
বরগুনা-১ মো. নজরুল ইসলাম মোল্লা; বরগুনা-২ নুরুল ইসলাম মনি; পটুয়াখালী- ১ এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী; পটুয়াখালী - ৪ এ বি এম মোশাররফ হোসেন; ভোলা-১ গোলাম নবী আলমগীর; ভোলা- ২ মো. হাফিজ ইব্রাহীম; ভোলা- ৩ মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বীক্রম; ভোলা- ৪ মো. নুরুল ইসলাম নয়ন।
ঝালকাঠি- ২ ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্ট; পিরোজপুর-২ আহমেদ সোহেল মঞ্জুর; পিরোজপুর ৩ মো. রুহুল আমিন দুলাল; টাংগাইল-১ ফকির মাহবুব আনাম স্বপন; টাংগাইল-২ আব্দুস সালাম পিন্টু; টাংগাইল-৩ এসএম ওবায়দুল হক নাসির; টাংগাইল-৪ মো. লুৎফর রহমান মতিন; টাংগাইল-৬ মো. রবিউল আউয়াল লাবলু; টাংগাইল-৭ আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী; টাংগাইল-৮ আহমেদ আজম খান; জামালপুর-১ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত; জামালপুর-২ এ ই সুলতান মাহমুদ বাবু; জামালপুর-৩ মো. মুস্তাফিজুর রহমান বাবুল; জামালপুর-৪ মো. ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম; জামালপুর-৫ শাহ মো. ওয়ারেস আলী মামুন।
শেরপুর-১ সানসিলা জেবরিন; শেরপুর-২ মোহাম্মদ ফাহিম চৌধুরী; শেরপুর-৩ মো. মাহমুদুল হক রুবেল; ময়মনসিংহ-১ সৈয়দ এমরান সালেহ; ময়মনসিংহ-২ মোতাহের হোসেন তালুকদার; ময়মনসিংহ-৩ এম ইকবাল হোসেইন; ময়মনসিংহ-৫ মোহাম্মদ জাকির হোসেন; ময়মনসিংহ-৬ মো. আখতারুল আলম; ময়মনসিংহ-৭ ডা. মো. মাহবুবুর রহমান; ময়মনসিংহ-৮ লুতফুল্লাহেল মাজেদ; ময়মনসিংহ-৯ ইয়াসের খাঁন চৌধুরী; ময়মনসিংহ-১১ ফকর উদ্দিন আহমেদ।
নেত্রকোনা-১ ব্যারিস্টার কায়সার কামাল; নেত্রকোনা-২ মো. আনোয়ারুল হক; নেত্রকোনা-৩ রফিকুল ইসলাম হিলালী; নেত্রকোনা-৪ মো. লুৎফুজ্জামান বাবর; নেত্রকোনা-৫ মো. আবু তাহের তালুকদার; কিশোরগঞ্জ-২ এডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন; কিশোরগঞ্জ-৩ ড. ওসমান ফারুক; কিশোরগঞ্জ-৪ মো. ফজলুর রহমান; কিশোরগঞ্জ-৫ মো. শরীফুল আলম; মানিকগঞ্জ-২ মঈনুল ইসলাম খাঁন; মানিকগঞ্জ-৩ আফরোজা খান রিতা; মুন্সীগঞ্জ-১ শেখ মো. আবদুল্লাহ; মুন্সীগঞ্জ-২ মিজানুর রহমান সিনহা; গাজীপুর -২ এম মঞ্জুরুল করিম রনি; গাজীপুর-৩ অধ্যাপক ডা. এসএম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু; গাজীপুর-৪ শাহ রিয়াজুল হান্নান; গাজীপুর -৫ ফজলুল হক মিলন।
নরসিংদী-১ খায়রুল কবির খোকন; নরসিংদী-২ ড. আব্দুল মঈন খান; নরসিংদী-৩ সরদার মো. সাখাওয়াত হোসেন; নরসিংদী-৪ ইঞ্জি. মো. আশরাফ উদ্দিন বকুল; নরসিংদী-৫ মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দীপু; নারায়ণগঞ্জ-১ নজরুল ইসলাম আজাদ; নারায়ণগঞ্জ -২ মো. আজহারুল ইসলাম মান্নান; নারায়ণগঞ্জ-৫ মো. মাসুদুজ্জামান; রাজবাড়ী- ১ আলি নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম; ফরিদপুর- ২ শ্যামা ওবায়েদ ইসলাম; ফরিদপুর- ৩ নায়াব ইউসুফ আহমেদ; ফরিদপুর- ৪ শহীদুল ইসলাম বাবুল; গোপালগঞ্জ - ১ মো. সেলিমুজ্জামান মোল্লা, গোপালগঞ্জ -২ ডা. কে এম বাবর আলী; গোপালগঞ্জ-৩ এস এম জিলানী।
মাদারীপুর- ১ কামাল জামান মোল্লা; মাদারীপুর- ৩ আনিসুর রহমান; শরীয়তপুর - ১ সাইদ আহমেদ আসলাম; শরীয়তপুর- ২ মো. শফিকুর রহমান কিরণ; শরীয়তপুর-৩ মিয়াঁ নুরুদ্দিন আহমেদ অপু; সুনামগঞ্জ-১ আনিসুল হক; সুনামগঞ্জ-৩ মোহাম্মদ কয়সর আমমেদ; সুনামগঞ্জ-৫ কলিম উদ্দিন মিলন; সিলেট-১ খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির চৌধুরী; সিলেট-২ মোছা. তাহসিনা রুশদীর; সিলেট-৩ মোহাম্মদ আবদুল মালিক; সিলেট-৬ এমরান আহমেদ চৌধুরী।
মৌলভীবাজার-১ নাসির উদ্দিন আহমেদ মীঠু; মৌলভীবাজার-২ সওকত হোসেন সকু; মৌলভীবাজার-৩ নাসের রহমান; মৌলভীবাজার-৪ মো. মজিবর রহমান চৌধুরী; হবিগঞ্জ-২ আবু মনসুর সাখাওয়াত হাসান জীবন; হবিগঞ্জ-৩ আলহাজ মো. জি কে গউস; হবিগঞ্জ-৪ এস এম ফয়সাল; ব্রাহ্মনবাড়িয়া- ১ এম এ হান্নান; ব্রাহ্মনবাড়িয়া- ৩ মো. খালেদ হোসেন মাহবুব; ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ মুশফিকুর রহমান; ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৫ মো. আব্দুল মান্নান।
চাঁদপুর - ১ আ ন ম এহসানুল হক মিলন; চাঁদপুর - ২ মো. জালাল উদ্দিন; চাঁদপুর - ৩ শেখ ফরিদ আহমেদ; চাঁদপুর - ৪ মো. হারুনুর রশিদ; চাঁদপুর - ৫ মো. মমিনুল হক; ফেনী-১ বেগম খালেদা জিয়া; ফেনী-২ জয়নাল আবেদীন; ফেনী-৩ আব্দুল আওয়াল মিন্টু; লক্ষ্মীপুর-২ মো. আবুল খায়ের ভূঁইয়া; লক্ষ্মীপুর-৩ মো. শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।
প্রার্থী ঘোষণার আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় জরুরি বৈঠকে বসেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। প্রায় পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত এবং চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, নজরুল ইসলাম খান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মির্জা আব্বাস, হাফিজ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাংগঠনিক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী তৃণমূলের নেতা মো. সামসুল আলম এখন নির্বাচনী মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারেক রহমানের রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের বার্তা পৌছে দিচ্ছেন এবং ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আশা প্রকাশ করেছেন।
সতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান সামসুল আলম নির্বাচিত হয়েছেন দুইবার। দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির তৃণমূল রাজনীতিতে সক্রিয় সামসুল আলম উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়নের সময় পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন। গত ১৭ বছরে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি। স্বৈরাচার হাসিনার বিরুদ্ধে ২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ অগাষ্ট পর্যন্ত আন্দোলন ও সংগ্রামে চালিয়ে আসছিলেন। এসব আন্দোলনে সিলেট টু কুমিল্লা সড়কের মিরপুর, মাধবপুর এলাকায় ছাত্র জনতা নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় রাস্তা বেরিকেটসহ অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচিও পালন করেন। এছাড়া রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি তিনি এলাকায় উন্নয়ন ও শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার উদ্যোগে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় রাস্তাঘাট, সেতু, স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তিনি মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং সভাপতিসহ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে ছাত্র সংসদের সমাজসেবা সম্পাদক ছিলেন এবং পরে ঢাকার তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন; সে সময় পাক সেনারা তার বাড়িঘর জালিয়ে দেয়। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি আধুনিক উপজেলা বিনির্মানের জন্য সরকারি ভাবে বিদেশ সফরেও অংশ নেন। ১৯৮৮ সালে স্থানীয় সরকার পর্যবেক্ষণ সফরে চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে প্রতিনিধি হিসেবে ১ মাসের জন্য ইন্দোনেশিয়া গমন করা ছাড়াও থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর সফর করেন।
এবিষয়ে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘জনগণের ভালোবাসাই আমার শক্তি। বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপির নীতি-আদর্শ প্রতিষ্ঠা ও বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়াকে আধুনিক উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলা আমার অঙ্গীকার।’ তিনি আরো জানান ২০১৪ সালে স্বৈরাচারী হাসিনার আমলে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহণ করিলে বিএনপি থেকে তাকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।
আসন্ন এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২৩৭ আসনে প্রার্থীদের প্রাথমিক নামের তালিকা ঘোষণা করছে বিএনপি। সোমবার (৩ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম পড়ে শোনান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আসন্ন নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৪ আসন থেকে নির্বাচন করবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বগুড়া-৬ আসন থেকে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।
আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসন্ন নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন। এসময় তিনি ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেন।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছেন।
আসন্ন নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ঘোষিত তালিকায় তিনটি আসনে নির্বাচনের কথা রয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার। ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী, দিনাজপুর-৩, বগুড়া-৭ ও ফেনী-১ আসনে লড়বেন বেগম খালেদা জিয়া।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, তার দল জুলাই সনদ ঐক্যবদ্ধভাবে বাস্তবায়ন এবং এর পূর্ণ আইনি বৈধতা নিশ্চিত করার পর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন চায়।
গতকাল রোববার রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণভোট আমরা নির্বাচনের দিনও করতে পারি, আগেও করতে পারি। বরং এটি সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত, এটা তাদের প্রশাসনিক এবং আইন-শৃঙ্খলার ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে।
এনসিপি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন চায় উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা মনে করি, চলতি মাসের মধ্যেই আদেশ জারি হয়ে যাওয়া উচিত। মৌলিক সংস্কারে যে জায়গাগুলোয় ঐকমত্য হয়েছে—আমরা মনে করি, সেসব বিষয়ে গণভোটে যাওয়া উচিত। গণভোট নির্বাচনের দিন হতে পারে, আগেও হতে পারে। এটা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, গণভোট নির্বাচনের আগে নাকি নির্বাচনের দিন হওয়া উচিত, তা নিয়ে আমরা বিভ্রান্তি এবং অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক দেখছি।
গণভোট আগে হবে, না নির্বাচনের দিন হবে—এটা নিয়ে বিএনপি-জামায়াত আবার একটা দ্বন্দ্বে চলে গেছে বলে মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম। এ দ্বন্দ্ব অযথা ও অপ্রয়োজনীয় বলেও জানান তিনি।
নাহিদ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করার জন্য সব রাজনৈতিক দলের ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। সব দলের প্রতি আমাদের অনুরোধ হচ্ছে—ঐক্যবদ্ধ থাকুন। সংস্কার প্রক্রিয়া একমত হলে সম্মিলিতভাবে তা সম্পন্ন করতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, এনসিপি সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার সম্পর্কিত ঐক্যমত্য কমিশনের প্রস্তাবগুলোকে সমর্থন করে—যার মধ্যে রয়েছে উচ্চকক্ষ গঠন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রবর্তন এবং সাংবিধানিক ও বিচারিক পদে নিয়োগ।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি—এই সংস্কারগুলো একটি গণভোটের মাধ্যমে অনুমোদিত হওয়া উচিত।
এনসিপি কোনো জোটে যাচ্ছে কি না—এ প্রশ্নে নাহিদ বলেন, যদি সংস্কারের পক্ষে কেউ না থাকে, তাহলে তাদের সঙ্গে আমাদের জোটে যাওয়া সম্ভব নয়। আমাদের মৌলিক দাবিগুলোর সঙ্গে যারা কাছাকাছি আছে, এ রকম দলের সঙ্গে আমাদের যদি ঐক্যবদ্ধ হতে হয় বা কোনো ধরনের সমঝোতায় যেতে হয়, তাহলে সেটা আমরা বিবেচনায় রাখব।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের শত্রুরা আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে, দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে।’ তিনি বলেন, ‘আজকের যে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সেটি একটা অনিশ্চয়তা হতাশার মধ্যে চলে যাচ্ছে এবং প্রত্যেকটি মানুষ বারবার চিন্তা করছে কি হবে? কি হতে পারে?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি যে, বাংলাদেশের শত্রুরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে, তারা মাথা তুলে উঠতে শুরু করেছে, আমরা দেখছি যতই সময় যাচ্ছে ততই বাংলাদেশে একটা এনার্কি সিচুয়েশন তৈরি করে পুরোপুরি একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চলছে। দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা দেখছি যে, সোশ্যাল মিডিয়াতেও সেই প্রপাগান্ডা, মিথ্যা তথ্য প্রচার করে দেশে একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি করার প্রক্রিয়া চলছে।’
গতকাল রোববার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব শঙ্কা প্রকাশ করেন।
এরকম পরিস্থিতিতে ৭ নভেম্বর ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ দিবস হিসেবে অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন ‘ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যেভাবে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন, দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেভাবে আমাদেরকে পরিচালিত করেছিলেন দীর্ঘ নয় বছর স্বৈরাচার বিরোধী সংগ্রামে এবং পরবর্তীকালের সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। একইভাবে আমরা দেখছি যে, আমাদের নেতা তারেক রহমান সেই সুদূর লন্ডন থেকে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করবার চেষ্টা করছেন, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করবার কাজ করে চলেছেন, আমাদের দলকে পরিচালিত করছেন এবং জাতিকে নতুন আশা জোগাচ্ছেন।’
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন কর্মসূচি চূড়ান্ত করতে দল ও অঙ্গসংগঠনের যৌথ সভা হয় দুপুরে। এই সভায় বিএনপি মহাসচিব সভাপতিত্ব করেন। পরে নেতৃবৃন্দকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন তিনি।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের প্রেক্ষাপট এবং জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রের দায়িত্বে আসার পটভূমি তুলে করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তার সেই শাসন আমলে দেশ একটা কর্মযজ্ঞে নেমে পড়েছিল, জন-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছিল।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে আবার বাংলাদেশের শত্রুরা নির্মমভাবে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে হত্যা করে এবং এরপর দেশে একটি কালো অধ্যায়ের সূচনা হয়।’
একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ অর্থনীতি, শিক্ষা, শিল্প, কৃষি, গণমাধ্যম ও নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমানের ব্যাপক সংস্কার কর্মসূচি তু্লে ধরে মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বারবার যে কথা বলে এসেছি যে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে দর্শন দিয়ে গেছেন, বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদের যে দর্শন, সেই দর্শন কখনো পরাজিত হতে পারে না এবং সেই জন্যই বিএনপি কখনো পরাজিত হয়নি, বারবার জেগে উঠেছে একেবারে সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিনিক্স পাখির মতই বিএনপি জেগে উঠেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘৭ নভেম্বর আমাদের রাজনৈতিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ বলেই আমরা এই দিনটিকে স্মরণ করে রাখতে চাই এবং ৭ নভেম্বরের দর্শন ধারণ করে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, গণভোট ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ অবশ্যই ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেওয়া উচিত যদি ওই আদেশ চুপ্পু থেকে নেওয়া হয় তাহলে সেটি হবে বিপ্লবের কফিনে শেষ পেরেক রোববার বরিশালের শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির জেলা ও মহানগর সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, তিনশ আসনেই পার্টির সাংগঠনিক সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর দল কাজ করছে এবং গুণগত, কাঠামোগত রূপান্তরের মধ্য দিয়ে গ্রহণযোগ্য গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে যেখানে রাজনৈতিক দলের বড় দায়িত্ব রয়েছে।
তিনি বলেন, গণভোট ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে হবে এবং সেটা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেই দিতে হবে। এখন এই আদেশ যদি চুপ্পুর কাছ থেকে নিতে হয় তাহলে তা বিপ্লবের কফিনে শেষ হবে বলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ।
অন্যান্যের বক্তব্য ও প্রেক্ষাপট এ অনুষ্ঠানেই এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক দক্ষিণাঞ্চল ডা. মাহমুদা আলম মিতু, যুগ্ম সদস্য সচিব ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন, এবং দক্ষিনাঞ্চল সংগঠক আসাদ বিন রনিসহ দলের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম গণভোট ও জুলাই সনদ প্রয়োগ সম্পর্কে ইতোমধ্যে স্পষ্ট স্বর জানিয়েছেন তিনি বলেছেন, গণভোটের পাশাপাশি জুলাই সনদের আদেশ ড. মো. ইউনূসকে জারি করা না হলে এবং যদি সেটি ‘চুপ্পুর’ কাছ থেকে নেওয়া হয় তবে সেটি অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি হিসেবে গণ্য হবে; এ ধরনের প্রত্যাখ্যান তিনি নিন্দনীয় বলেছেন।
বরগুনার পাথরঘাটায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য যুব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার পাথরঘাটা পৌর শহরের উপজেলা পরিষদের মুক্তমঞ্চে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠনে সভাপতিত্ব করেন, পাথরঘাটা উপজেলা যুব দলের আহবায়ক জসিম উদ্দিন রানা, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম মনি।
নূরুল ইসলাম মনি বলেন, “যুবকরাই জাতির মেরুদণ্ড। যুবদল সব সময় গণতন্ত্র, ন্যায়ের শাসন ও মানুষের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।” তিনি আরো বলেন,"আমার এমপি হওয়ার কোন ইচ্ছা নাই আমি চাই আপানদের জন্য কাজ করতে, তাতে যদি আপনারা মনে করেন যে আমাকে ভোট দেয়া উচিত তবেই আমাকে ভোট দিয়েন। আপনাদের জন্য সব সময় আমার মন কাঁদে,শেষ বয়সে আপনাদের জন্য কিছু করে যেতে পারলে সেটাই আমার সার্থকতা"।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ, পৌর ও উপজেলা যুবদলের সভাপতি ও সম্পাদকসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। বক্তারা বলেন, দেশের সংকটময় এই সময়ে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সামনের সারিতে থাকতে হবে।
পাথরঘাটা শহরের প্রধান সড়কে আনন্দ মিছিলের মাধ্যমে যুবদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন সূচনা করা হয়। সমাবেশে পাথরঘাটার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার শতাধিক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। উচ্ছ্বাস ও দেশপ্রেমের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো অনুষ্ঠানস্থল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আমাদের দেশে নির্বাচন এলেই ধর্মকে ব্যবহারের চেষ্টা দেখা যায়।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ৯২ শতাংশ মানুষ মুসলমান। আমরা মদিনার ইসলামকে বিশ্বাস করি, আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ইসলামকে বিশ্বাস করি। কিন্তু আমরা মওদুদীর ইসলামে বিশ্বাস করি না। যারা ফিতনা সৃষ্টি করে বিভাজন তৈরি করতে চায়, তাদের থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে।’
শনিবার নারায়ণগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে কাসেমী পরিষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘আজমতে সাহাবা’ মহা সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘হাসিনার সরকার ইসলামবিদ্বেষী ও মুসলিমবিদ্বেষী ছিল। তারা আলেমদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। আল্লাহর হুকুমে কীভাবে তাদের রাজনীতির অবসান হয়েছে, আমরা তার সাক্ষী। আমাদের উচিত এমন রাজনীতি করা, যার মাধ্যমে আওয়ামী অপরাজনীতি বিলুপ্ত হবে। বাংলাদেশে আমরা আদর্শিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করব।’
তিনি বলেন, যারা দ্বীনকে আগে এবং দুনিয়াকে পরে মনে করেন। তারাই ইসলামের প্রকৃত অনুসারী। যারা ইসলামকে ব্যবহার করে রাজনীতিতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায়, তাদের থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে। রাজনৈতিক কারণে কেউ বক্তব্য দিতেই পারে, সেটাকে স্বাগত জানাই—তবে কেউ যেন আমাদের দ্বিনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে।
এ সময় সালাহউদ্দিন আহমদ আহ্বান জানান, আওয়ামী লীগের এই অপরাধনীতি থেকে শিক্ষা নিয়ে ভালো রাজনীতি করতে হবে। মানুষের জন্য রাজনীতি করতে হবে, ইসলামের পক্ষে রাজনীতি করতে হবে।
সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, দেশ ও ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের পরাজিত শক্তিরা আবারও সক্রিয় হয়েছে। এই ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী বলেন, যারা নবীর সাহাবাদের নাম নিয়ে বেভিচারী বলেন, যারা পূজা-রোজা এক বলে, তাদের ভোট দেওয়া জায়েজ না। ঈমান ও ইসলাম রক্ষায় তাদের বিরোধিতা করতে হবে। যার আকিদা সহীহ, যারা শার্ট-প্যান্ট পড়েও সঠিক বিশ্বাসে অবিচল, তাদের ভোট দেওয়া যাবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে এবং জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ফেরদাউসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই মহাসম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, আওলাদে রাসূল আল্লামা সাইদ আল হোসাইনী (পানিস্তান), আল্লামা খলিল আহমাদ কুরাইশী (হাটহাজারী), আল্লামা শায়খ সাজিদুর রহমান, আল্লামা আবু তাহের নদভী (পটিয়া), আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক, ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী (পীর সাহেব জৈনপুরী), মুফতি জসিমুদ্দীন হাটহাজারী, আল্লামা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মুফতি মুবারকুল্লাহ প্রমুখ।
সাংবাদিকদের ন্যূনতম ৩৫ হাজার টাকা বেতন নির্ধারণ, চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পুনর্বহাল ও সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ ২১ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে নীলফামারীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার ঝুম বৃষ্টির মধ্যেও জেলা শহরের ডিসি মোড় এলাকায় নীলফামারী সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তৃতা দেন নীলফামারী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি তাহমিন হক ববি, বর্তমান সভাপতি আতিয়ার রহমান বাড্ডা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান রাব্বি প্রধান, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নূর আলম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক-দৈনিক বাংলার প্রতিনিধি নাসির উদ্দিন শাহ মিলন প্রমুখ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নীলফামারী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ইয়াসিন মোহাম্মদ সিথুন ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রিপন ইসলাম শেখ।
এতে বক্তারা বলেন, জেলা পর্যায়ের সাংবাদিকরা রাজনীতি, সমাজ, উন্নয়ন ও খেলাধুলাসহ সব বিষয়েই কাজ করেন, তবু তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় না। ‘মফস্বল সাংবাদিক’ বলে অবমূল্যায়ন বন্ধ করে সবাইকে স্টাফ রিপোর্টারের মর্যাদা দিতে হবে। সাগর-রুনি হত্যাসহ প্রতিটি সাংবাদিক হত্যার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও ন্যূনতম বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
নীলফামারী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ইয়াসিন মোহাম্মদ সিথুন বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যাসহ সাংবাদিক নির্যাতনের বিচার ও ২১ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’
মানববন্ধনে এটিএন নিউজের প্রতিনিধি মিল্লাদুর রহমান মামুন, ৭১ টেলিভিশনের প্রতিনিধি বিজয় চক্রবর্তী কাজল, নিউজ টোয়েন্টিফোরের প্রতিনিধি আব্দুর রশিদ শাহ সহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নে জন্মান্ধ আব্দুল গফুর মল্লিকের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের খোলাবাড়িয়া গ্রামের এই বৃদ্ধ ব্যক্তিটি, জীবনের শেষ প্রান্তে বেঁচে থাকার সংগ্রামে লড়ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওপরে শিরোনামে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রতিবেদন প্রকাশ হলে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের দৃষ্টিগোচর হয়। পরে তিনি এই বৃদ্ধের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
তারেক রহমানের নির্দেশে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনের একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় আ. গফুর মল্লিকের সাথে সাক্ষাৎ করতে আসেন এবং গফুর মল্লিকের হাতে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে নগদ ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন।
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। এ অনুষ্ঠানে আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের নেতৃত্বে সংগঠনটির উপদেষ্টা, সদস্য সচিব ও সদস্যরা, রাজবাড়ী-১ আসনের ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহসভাপতি অ্যাড. মো. আসলাম মিয়া, রাজবাড়ী-২ আসনের ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর রশীদ, রাজবাড়ী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম. এ খালেদ পাভেলসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৮০ বছর বয়সেও গফুর মোল্লা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ট্রেনে নাড়ু বিক্রি করে সংসার চালান। তার এই সংগ্রামী জীবনের গল্প সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নজরে আসে। মানবিক বিবেচনায় তিনি গফুর মল্লিকের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর কোন দেশে এ ধরণের কোনো ঘটনা নেই, এক কেন্দ্রিক, একদলীয় কর্তৃত্ববাদী দেশে সম্ভব। পার্লামেন্ট নির্বাচনের কী দরকার, গণভোট কী দরকার। সত্যিকার গণতন্ত্রের জন্য অফুরন্ত লড়াই আবু সাঈদ, মুগ্ধ, আহনাফ, ওয়াসিম আকরাম জীবন দিল, তার ঐক্যমত্যে কমিশনের এ ধরণের ভেজাল, জনগণের সাথে একটি প্রতারনামূলক জুলাই সনদ কিভাবে হয়। আমরা নিরাশাবাদী নই, আমরা আশাবাদী। ৫ আগস্টের ঘটনায় বিএনপির সাড়ে ৪শত ৫শত লোক মারা গেছে। আমরা জনগণের জন্য কাজ করব। গণতান্ত্রিক শাসনে আমরা কাজ করব। আগে খাতায় না লিখলেও পাশ করে দেওয়া হতো, এবার এইচএসসির রেজাল্ট দেখেছেন।
উল্লেখ্য, আ. গফুর মল্লিক জীবনের অধিকাংশ সময় বাসে ও ট্রেনে ফেরি করে নারকেলের নাড়ু, টেস্টি হজমি ও বাদাম, মটকা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। যিনি কখনোই ভিক্ষা করতে চাননি। বয়সের ভারে কুঁজো হয়ে গেছেন এবং শরীরের অধিকাংশ শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। তার স্ত্রীকে নিয়ে সংসার হলেও তাদের কোনো সন্তান নেই। কিন্তু নিজের সম্মান রক্ষার্থে আজও কাজ করে যাচ্ছেন, এমনকি নিজের হাতে তৈরি করা নারকেলের নাড়ু ও বাদাম বিক্রি করেই জীবনধারণ করতেন।
৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তাসলিমা আক্তার। তার স্বামীর বাড়ির পার্শ্ববর্তী বেগমগঞ্জ উপজেলার নাজিরপুর গ্রামে। আর পিতার বাড়ি সোনাইমুড়ী উপজেলার মটুবি গ্রামে। সে অনলাইনে আবেদন করে গত ২৮ অক্টোবর সকাল ৯টায় পিতার বাড়ির ঠিকানায় ভোটার হতে আসে উপজেলা নির্বাচন অফিসে।
নির্বাচন কর্মকতা আবু তালেবের রুমে প্রবেশ করার পর ভোটার হতে টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তাকে ও তার বৃদ্ধ মা আলেয়া বেগমকে বের করে দেয়। পুনরায় আবার তার রুমে প্রবেশ করলে ওই কর্মকর্তা রাগান্বিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালগাল শুরু করে। পরে মা-মেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ জানান।
সোনাইমুড়ীর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ড্রাইভার মনির হোসেন। এখন তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়ি চালান। তার এক আত্মীয় ভোটার হতে উপজেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করে। তার জন্ম নিবন্ধনে বয়সের ত্রুটি দেখিয়ে হয়রানি করতে থাকে। পরে সে উপজেলা কর্মচারী পরিচয় দিয়ে নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে গেলে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন বলে গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন। পরে ওই কর্মচারী তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল অফিসের পিয়ন সালাউদ্দিন জানান, তার চাচাতো ভাই মাইনুল ইসলাম ভোটার হতে নির্বাচন অফিসে যান। একইভাবে জন্ম নিবন্ধনে বয়সের ত্রুটি দেখিয়ে আবেদনের ফাইল ফেরত দেন ওই নির্বাচন কর্মকর্তা। পরে ওই অফিসের জনৈক্য এক ব্যক্তির মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা চুক্তি করে ভোটার হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন।
উপজেলার বারগাঁও ইউনিয়নের পলাশ জানান, তার ফুফাতো ভাইয়ের নামের আগে মো. নাই। তিনি মো. যুক্ত করতে অনলাইনে আবেদন করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গেলে নানা অজুহাদ দেখিয়ে ওই আবেদনটি বাতিল করে দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে আবু তালেব যোগদান করার পরেই হয়রানি ও ঘুষ লেনদেন বেড়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দিনের পর দিন ঘুরলেও কাজ না করে দিয়ে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অহেতুক হয়রানি করেন। তার রুমের প্রধান দরজা বন্ধ থাকে, জানালায় থাকে পর্দা দেখা করতেও লাগে অনুমতি। চাহিদামতো প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র জমা দিয়েও পাওয়া যায় না সমস্যার সমাধান জাতীয় পরিচয়পত্রের এসব গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে দেরি হওয়ায় অনেকেই পাসপোর্ট ও চাকরিসহ বিভিন্ন জরুরি কাজ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকইে। এই অফিসে নতুন ভোটার হওয়া, জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল সংশোধন ও ভোটার স্থানান্তরসহ সব কাজেই গুণতে হয় টাকা। ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা নির্বাচন অফিস থেকে উপজেলায় যোগদান করেন নির্বাচন কর্মকর্তা আবু তালেব। এখানে যোগদান করার পরেই তিনি বিভিন্ন ঘুষ ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। প্রবাসীরা তাদের ভোটার আইডিকার্ড সংশোধন করতে এলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। পরে জরুরি ভিত্তিতে করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন ওই কর্মকর্তা। তিনি যোগদান করার পর ঘুষের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা পরিষদের এক কর্মচারী জানান, মায়ের সাথে সন্তানের বয়সের অমিল থাকলে নির্বাচন কর্মকর্তা ওই আবেদনগুলো বাতিল না করে তার ড্রয়ারে রেখে দেন। পরে আবেদনকারীরা নিরুপাই হয়ে টাকার মাধ্যমে ভোটার হয়েছেন বলে অনেকের অভিযোগ। এছাড়া ঠিকানা স্থানান্তর তদন্ত করতে সময়কাল ক্ষেপণ করেন বলেও অনেকে অভিযোগ তুলেছে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা নেন। সেবাগ্রহীতারা তার কার্যালয়ে হয়রানি শিকার হয়ে ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তারের কাছে কয়েকটি অভিযোগ দিয়েছেন।
সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু তালেব দৈনিক বাংলাকে জানান, তিনি এ উপজেলায় যোগদান করার পরই বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়েছে। তবে তিনি ওই অনিয়মের সত্যতা স্বীকার করেননি।
সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসিম আক্তার বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সেবাগ্রহীতারা হয়রানি হচ্ছে এটা সত্য। অভিযোগ পেয়ে কয়েকবার তাকে সতর্ক করা হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাদেকুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ভোটার হতে সেবাপ্রার্থী থেকে টাকা নিয়েছে, এমন প্রমাণ থাকলে দেন। ব্যবস্থা নেব।