গণহত্যা নিয়ে পাকিস্তান ও বিএনপি একই কথা বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, পাকিস্তান যা বলে তারা (বিএনপি) তাই বলে। কারণ তারা পাকিস্তানি ভাবধারায় উজ্জীবিত, তাদের হৃদয়ে পাকিস্তানি চেতনা। তারা এমনটাই বলবে এটাই হওয়া সমীচীন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যের জবাবে রোববার ভোরে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার শত্রুরা সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ— এমন নানান পোশাকে স্বাধীনতাকে চ্যালেঞ্জ করে। তাই এই অপশক্তিকে পরাস্ত করতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ সোনার বাংলা গড়ার পথে রয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার এখন অন্যতম অঙ্গীকার।
নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার সকালে ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে আমরা আলোচনা করব আমাদের নিজেদের সমস্যা নিয়ে। প্রয়োজন হলে নিজেরাই সমাধান করব। এখানে জাতিসংঘের মধ্যস্ততা বা হস্তক্ষেপের প্রয়োজন আছে— এমন রাজনৈতিক সংকট দেশে তৈরি হয়নি।’
‘মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে বিএনপি প্রতিনিয়ত সরকারবিরোধী কুৎসা ও বদনাম রটাচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘কাঙ্ক্ষিত স্যাংশন না পেয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম চিরাচরিত ভঙ্গিতে প্রলাপ বকছেন। মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে তারা প্রতিনিয়ত সরকারবিরোধী কুৎসা ও বদনাম রটাচ্ছেন। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ ও এ দেশের জনগণের মান ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ত্রিশ লাখ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ম্লান করে হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে বিদেশি প্রভুদের নিকট ধরনা দিচ্ছেন এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র চালাচ্ছেন। দেশের মানুষের প্রতি তাদের কোনো আস্থা ও বিশ্বাস নেই এবং দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র, নির্বাচন ও গণরায়কে অবজ্ঞা করে তারা কেবল বিদেশি প্রভুদের কাছে করুণা প্রার্থনা করছেন।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও সরকার ভীত নয়। কারণ আমরা সর্বদা সংবিধান, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যদি এই ভিসানীতি যথাযথভাবে প্রয়োগ হয় তাহলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের এর আওতায় আসার আশঙ্কা রয়েছে। কেননা তারা বরাবরই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করছে এবং নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং নির্বাচন প্রতিরোধের নামে সন্ত্রাসের মাধ্যমে সাংবিধানিক রাজনীতির অচলাবস্থা সৃষ্টির পাঁয়তারা করে আসছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মিথ্যাচার-অপপ্রচারের মধ্য দিয়ে বিএনপি নেতারা খুনি-স্বৈরশাসক, সংবিধান ও গণতন্ত্র হত্যাকারী স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা হিসেবে ভ্রান্ত মিথ তৈরি করার অপচেষ্টা করে আসছে। মূলত এই জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সংবিধান ধ্বংস করেছে।’
তিনি বলেন, “প্যাডসর্বস্ব ভুঁইফোড়, বিবৃতিজীবী, পাকিস্তানপন্থি রাজনীতিক ও যুদ্ধাপরাধীদের ধরে এনে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে রাজনৈতিক দল গঠন করে পাকিস্তানপন্থিদের ক্ষমতায়ন করেছিল জিয়াউর রহমান। রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম ও গণমাধ্যম থেকে মুক্তিযুদ্ধের জয়ধ্বনি ‘জয় বাংলা’ ও ‘জয় বঙ্গবন্ধু’কে নির্বাসনে পাঠিয়েছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে পাকিস্তানি দর্শনের রাজনীতির প্রচলন করেছিল। দিনের পর দিন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে তালাবদ্ধ করে কার্যত অঘোষিতভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছিল।”
কাদের বলেন, ‘অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, আজকে বিএনপির কোনো কোনো নেতার বক্তব্যে তাদের এতটাই দেউলিয়াত্বের বহির্প্রকাশ ঘটেছে যে, তাদেরকে আর কোনো রাজনৈতিক সংগঠন বলা চলে না। জনগণের প্রতি আস্থা না রেখে বিএনপি নেতৃবৃন্দ বিদেশি প্রভুদের পদলেহনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার এ ধরনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী খুনিগোষ্ঠী ও ষড়যন্ত্রকারীদের কাছে আত্মসমর্পণ করবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশবিরোধী এই অপশক্তিকে উৎখাত করা হবে।’
বিশ্ব অস্থিরতার মধ্যেও প্রস্তাবিত বাজেটে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ম্যাজিক লিডারশিপের’ পরিচয় দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাজেট উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবারের বাজেট সংকটে ঘুরে দাঁড়াবার বাজেট। বিশ্ব অস্থিরতার মধ্যেও বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ম্যাজিক লিডারশিপের পরিচয় দিয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি সমাধানের লক্ষে কাজ করছে সরকার।’
তিনি বলেন, ‘অনেক চিন্তা করে এবারের বাজেট করা হয়েছে। বিএনপির নেতাদের কথা শুনলে মনে হয় দেশে দুর্ভিক্ষ হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সারা বিশ্ব সংঘাতময়, অস্থির পরিস্থিতি বিরাজমান। বিশ্ব অস্বস্তিকর অবস্থার পাশাপাশি ডলার সংকট রয়েছে। সোমালিয়াসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে খাদ্য সংকট।’
গত বৃহস্পতিবার সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত বাজেটে বিশ্ব অর্থনীতির নানা সংকটের মধ্যে অনেক আমার বাণী শুনিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। বাজেট নিয়ে সমালোচনাকে ‘গৎবাঁধা’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন সরকারসংশ্লিষ্টরা।
সংবাদ সম্মেলনে কাদের বলেন, যাদের অর্থনীতিই ছিলো লুটপাটের সে বিএনপি এ বাজেটকে লুটপাট বাজেট বলে কি করে? তাদের সময় কী পরিমান বাজেট ছিল? আজকে তা কী হয়েছে? আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে ধারাবাহিক অগ্রগতির ফলে জিডিপির উন্নয়ন হয়েছে। ৮-৯ অর্থবছরে কী ছিল, বাংলাদেশ আজ ৩৫ তম অবস্থানে আছে। বাজেটের কৃচ্ছ্র সাধন করে জিডিপির অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে।’
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘স্বাধীনতার পর রিজার্ভ কী ছিলো? শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৪৮.৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছিলো কিন্তু বিশ্ব সংকটে এটার কিছুটা তারতম্য আছে তবে সব সংকটই সমাধান হয়ে যাবে দ্রুত। বিশ্বের অনেক দেশেই অর্থনৈতিক সঙ্কট সমাধানে অস্থির অবস্থা।’
অনেক দেশের নেতারাই শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকতেই পারে কিন্তু প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি আর উন্নয়ন অবদান অস্বীকার এগুলো কি মানা যায়? অনেক দেশের নেতারাই শেখ হাসিনাকে ফলো করেন এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। সারা বিশ্ব শেখ হাসিনার প্রসংশা করলেও এদেশের বিরোধী দলের লোকরা একটা ধন্যবাদও দিতে পারে না। এদেশের বিরোধী দলের রাজনীতি বিশ্বে বিরল। বিরোধীদল শুধু সমালোচনা আর বিরোধিতা করে কিন্তু ভালো কোনো পরামর্শ দিতে পারে না ‘
বাজেট প্রসঙ্গে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ- সিপিডির বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা তো গতানুগতিক ধারায় কথা বলে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দামের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে বিশ্বের সবাই কষ্টে আছে। বিশ্ব পরিস্থিতি কারণেই মানুষ কষ্টে আছে। সরকার মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে না। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার চেষ্টা করছে।
বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির সময় আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে হামলা করা হতো আওয়ামী লীগের সময় বিএনপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ কখনো হামলা করেনি।
কাদের বলেন, বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগ বারবার নির্যাতিত হয়েছে কিন্তু বর্তমানে বিএনপি অবাধ ভাবে রাজনীতি করার সুযোগ পাচ্ছে।
সরকারবিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে আদালত ‘ফরমায়েশি রায়’ দিয়ে কারাগার পাঠাচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘দুর্নীতির মামলায় ইতিপূর্বে বিএনপির দুই নেতাকে নিম্ন আদালতের দেয়া সাজা বহাল রেখে দেশের উচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছেন, সে সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দেশবাসীকে হতাশ করেছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে ফরমায়েশি রায় বলে মির্জা ফখরুল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা দেশের আইন ও পবিত্র আদালত অবমাননার শামিল।’
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন কাদের।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির এই দুই নেতার আজকের পরিণতি তাদের ধারাবাহিক অপরাজনীতিরই ফসল। বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনমালে হাওয়া ভবন খুলে তারা দুর্নীতি ও লুটপাটের মহোৎসবে মেতে উঠেছিল, যার পরিণতিতে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সেসময় হাওয়া ভবনের কর্ণধার জিয়াপুত্র তারেক রহমানের দুর্নীতির খতিয়ান বিশ্ব গণমাধ্যম ও বিশ্বখ্যাত গোপন নথি প্রকাশকারী সংস্থা উইকিলিকসে বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে।’
কাদের বলেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির দুই নেতার দুর্নীতির মামলার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কোনো যোগসূত্র নেই। ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে এবং তাদের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় নিম্ন আদালত শাস্তিমূলক রায় দেন। প্রায় ১৬ বছর বিচারিক-প্রক্রিয়া শেষ করে আদালত তাদের সাজা দেন।’
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের পবিত্র সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও গুরুত্বপূর্ণ নেতারাও আইন ও বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। এমনকি বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড এবং বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলায়ও ছাত্রলীগের নেতারা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ভোগ করছে।’
ক্ষমতাসীন দল বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন করেছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন করেছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশের বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করে স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিএনপিই বিচারব্যবস্থাকে দলীয়করণ করেছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা খুনি জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করার মধ্য দিয়ে পবিত্র সংবিধানকে কলঙ্কিত করে। মূলত জিয়াউর রহমান দেশে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি চালু করে। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিচারহীনতার সংস্কৃতির পরিবর্তে দেশে আইনের শাসন পুনপ্রতিষ্ঠিত হয়।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে তাদের দলীয় গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করেছে এবং দলের চিহ্নিত শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষা দিয়েছে। অনুরূপভাবে তারা বিজ্ঞ আদালতের রায়কে ফরমায়েশি রায় বলে দেশের উচ্চ আদালত এবং পবিত্র সংবিধানকে অবমাননা করেছে। মার্কিন নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করার পর বিএনপি তাদের বিদেশি প্রভুদের কাছ থেকে করুণা প্রাপ্তির আশায় সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত। উচ্চ আদালতের রায়কে ফরমায়েশি বলা তাদের সেই চলমান ষড়যন্ত্রেরই অংশ। এ ধরনের অপরাধের জন্য দেশের জনগণের কাছে তাদের অচিরেই জবাবদিহি করতে হবে।’
রেমিটেন্স আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি সেই রাজনৈতিক দল, যারা বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়, যারা সরকারের বিরোধিতা করতে যেয়ে প্রবাসীদের বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে নিরুৎসাহিত করে দেশে অর্থনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি করতে চায়। কাজেই রেমিটেন্স বৃদ্ধির সুখবরে বিএনপি নেতারা খুশি নয়।’
মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেয়া বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের রেমিটেন্স আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে। বাংলাদেশের যেকোনো অমপতি ও সফলতায় বিএনপির গাত্রদাহের বহিঃপ্রকাশ মির্জা ফখরুলদের নেতিবাচক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বারবার উন্মোচিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়া সম্পর্কে মির্জা ফখরুলের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যে তারই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। যারা কেবল দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আর্জি নিয়ে চাতক পাখির মতো বিদেশি প্রভুদের দিকে চেয়ে থাকে, তারা রেমিটেন্স বৃদ্ধির সুখবর কোনোভাবেই মেনে নিতে পারবে না, সেটাই স্বাভাবিক।’
তিনি বলেন, ‘প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা প্রদানের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারণেই রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যার সফল নেতৃত্বের কল্যাণে বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক কাঠামো প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগের নিরাপদ স্থান হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মতোই প্রবাসী বাংলাদেশিরাও দেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বর্তমান সরকার অর্থপাচার রোধে কার্যকর আইন প্রণয়ন এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নজির স্থাপন করেছে। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোট শাসনামলে দুর্নীতি ও অর্থপাচারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হয়েছিল। হাওয়া ভবন খুলে খালেদা জিয়ার পুত্ররা দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থপাচারের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছিল। তাদের দুর্নীতি ও অর্থপাচার সম্পর্কে বিশ্বখ্যাত মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সাক্ষ্য দিয়েছে। সিঙ্গাপুর থেকে খালেদা জিয়ার পুত্রদের পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে আওয়ামী লীগের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই বরং বিএনপিই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। আগুন দিয়ে শত শত নিরীহ, নিরাপরাধ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা ও ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী অপশক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য বিএনপিই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এমনকি কানাডার উচ্চ আদালত বিএনপিকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু তারা তাদের অতীত অপকর্ম নিয়ে অনুতপ্ত না হয়ে উল্টো নতুন নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশে দীর্ঘ স্বৈরশাসনের অবসানের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র এবং ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠনের সুনির্দিষ্ট আইন প্রণিত হয়েছে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন ও কারিগরি সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণসহ নির্বাচনী ব্যবস্থার সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। নির্বাচন কমিশনের অধীনেই গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
কাদের বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনও অনুরূপভাবে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শক্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এটাই শেখ হাসিনা সরকারের সংকল্প। অনবিচ্ছিন্ন বিএনপি নিশ্চিত পরাজয় জেনে নির্বাচনে অংশগ্রহণে ভয় পায়। এতিমের অর্থ আত্মসাতের কারণে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হওয়ায় এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ২১শে আগস্ট নারকীর গ্রেনেড হামলার মাস্টার মাইন্ড পলাতক আসামি তারেক রহমান বিদেশে পালিয়ে থাকায় নির্বাচনী মাঠে নেতৃত্ব দেয়ার মতো কোনো নেতা তাদের নেই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সে কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সৎ সাহস রাখে না বিএনপি। তাই তারা নির্বাচন বানচাল এবং গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারাকে ব্যাহত করতেই দেশে বিদেশে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণ যেকোনো মূল্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে অগ্রসরমান উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির ধারাকে অব্যাহত রাখবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি নিয়ে বিএনপি বেকায়দায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো মাথাব্যথা নেই বলেও মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর মধ্যবাড্ডায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাদের বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করব। তাতে বাইরের কে ভিসানীতি দিল, নিষেধাজ্ঞা দিল- এ নিয়ে আওয়ামী লীগের, শেখ হাসিনার কোনো মাথাব্যথা নেই। আমরা তো নির্বাচন সুষ্ঠু করব, অবাধ ও নিরপেক্ষ করব। গাজীপুরে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমেরিকা যে ভিসানীতি প্রকাশ করেছে, তাতে নির্বাচনে বাধা দিলে খবর আছে। আমেরিকার নতুন ভিসানীতিতে বিএনপির গলা বসে গেছে, মুখ শুকিয়ে গেছে। আমরা প্রস্তুত, খেলা হবে। ফাইনাল খেলা আগামী নির্বাচনে- নৌকা বনাম ধানের শীষ খেলা হবে। বাংলার মানুষ ধানের শীষ চায় না।
তিনি বলেন, নতুন ভিসানীতিতে আমেরিকা বলেছে- সুষ্ঠু নির্বাচনে যারাই বাধা দিবে, তাদের ভিসা বন্ধ করে দেবে। এখানে আমাদের কিছুই নেই। সবশেষ গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচন করে দেখিয়ে দিয়েছি, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করব। আসন্ন চার সিটি এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনও সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মার্কিন নতুন ভিসানীতিতে আমাদের একটা লাভ হলো- এতোদিন তারা নালিশ করেছে আমেরিকার দরবারে, আর বলেছে- নিষেধাজ্ঞা আসবে... নিষেধাজ্ঞা কই ? নিষেধাজ্ঞা এখন তাদের বিরুদ্ধে। নতুন ভিসানীতিতে নির্বাচনে গোলমাল করলে, ভাংচুর, মানুষ ও বাস পোড়ালে, যারাই এইসব জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতি করবে, আগুন সন্ত্রাস করবে, তারাই আজকে ভয় পাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের উদ্দেশে তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব ভয় পাচ্ছেন কেন, নির্বাচনকে ভয় কিসের ? আসলে তারা ভয় পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে। তাদের সবচেয়ে বড় শত্রু শেখ হাসিনা, কারণ জনগণের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা শেখ হাসিনা।
নির্বাচনে বাধা দেয়া হলে, প্রতিহত করা হবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে বাধা দেয়া হলে, খবর আছে। আগামী নির্বাচনে নৌকা বনাম ধানের শীষে খেলা হবে। বাংলার মানুষ ভোট দিয়ে বুঝিয়ে দেবে তারা ধানের শীষ চায় না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা মন্তব্য করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য রাজনীতি করেন। তিনি নিজের কথা ভাবেন না, ভাবেন দেশের কথা।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশের নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশিদের ভিসা দেবে না বলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন যে বিবৃতি দিয়েছেন, সেটি আওয়ামী লীগেরও কথা বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
জাতীয় কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মজয়ন্তীতে কবির কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসে বৃহস্পতিবার সকালে তিনি এ কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এ বিবৃতির বিষয়ে আওয়ামী লীগের চিন্তা কী, জানতে চাইলে কাদের বলেন, আমরা নির্বাচন চাই, যুক্তরাষ্ট্র বাধার কথা বলেছে। আমাদেরও একই কথা। এই নির্বাচনে যারা বাধা দেবে তাদের অবশ্যই আমরা প্রতিহত করব। বাধা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে এখানে বক্তব্য আছে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন আমরা একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করব। নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে নির্বাচন কমিশনকে আমরা ফ্যাসিলেট করব, সব ধরনের সহযোগিতা করব।
কাদের বলেন, আমার সর্বশেষ কথা, নির্বাচনকে সামনে রেখে যারা আন্দোলনের নামে বাসে আগুন দেয় ও ভাঙচুর করে, এরাই একটা পলিটিক্যাল ভায়োলেন্সে আছে। কাজেই ওদের খবর আছে।
কাদের বলেন, নজরুল প্রেমের, বিদ্রোহ, বেদনার কবি। সাহিত্যের সব শাখাতেই তার বিচরণ। তিনি অসাম্প্রদায়িক ও মানবতার কবি। নজরুলের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আমরা উজ্জীবিত হতে চাই। এখনো অনেক বাধা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য আমরা লড়াই করব। আজকে সেটাই আমাদের অঙ্গিকার।
শেখ হাসিনাকে হত্যা করে বিএনপি এক দফা বাস্তবায়ন করতে চায় কি না, সে প্রশ্ন রেখেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার সকালে রাজধানীর সড়ক ভবনে বারৈয়ারহাট-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি নেতাদের প্রতি এ প্রশ্ন রাখেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনাকে হত্যায় বিএনপির মৌন সম্মতি আছে। এটা স্লিপ অফ টাং নয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও ভালোভাবে নেননি। কিন্তু বিএনপির কোনো দায়িত্বশীল নেতা এ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেননি। বিএনপির একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেছেন- এটি মুখ ফসকে বলেছে। যিনি শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন তিনি বিএনপির কোনো সাধারণ কর্মী নন। জেলার আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় নেতা। তিনি যা বলেছেন সেটা বিএনপিরই কথা। ২৭ দফা, ১০ দফা নয়, এক দফায় এসেছে তারা। তাহলে কী ধরে নিব- শেখ হাসিনাকে হত্যা করে তারা এক দফা বাস্তবায়ন করতে চায়? এ ব্যাপারে বিএনপি কী বলে সেটা শুনতে চাই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। যারা নির্বাচন প্রতিরোধ করতে আসবে তাদের প্রতিরোধ করা হবে।
এ সময় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন হওয়ার পর সমালোচনা করেন, তারা কীভাবে নির্বাচন করেছে। গত মঙ্গলবার ঢাকায় বিআরটিসির গাড়িতে আগুন ও পুলিশের ওপর হামলা প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপি নৈরাজ্য করবে, সন্ত্রাস করবে এটা তাদের পুরোনো স্বভাব। উদ্ভূত পরিস্থিতি বলে দেবে কোন পরিস্থিতিতে কীভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। আর রাজনীতির একটা ভাষা আছে। রাজনৈতিকভাবে সেটা মোকাবিলা করব। আমরা সহিংসতায় যাব না।
এর আগে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথ উদ্যোগে বারৈয়ারহাট-রামগড় সড়কের প্রশস্তকরণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন ওবায়দুল কাদের। বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির সরকার পতনের ঝড় লন্ডন থেকে নাকি ঠাকুরগাঁও থেকে আসবে তার দিনক্ষণ প্রকাশ করতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘সরকারের সময় কখন শেষ হবে তা নির্ধারণ করবে এদেশের জনগণ।’
শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আওয়ামী ওলামা লীগের প্রথম ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলনে এ কথা বলেন কাদের।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘বিএনপি আছে সরকার পতনের আন্দোলন নিয়ে, আর আওয়ামী লীগ আছে জনগণের জানমাল রক্ষার আন্দোলনে। দেশের মানুষ মনে করে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে পথ হারাবে না বাংলাদেশ।’
আওয়ামী ওলামা লীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক ডক্টর কে এম আব্দুল মোমিন সিরাজীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও শরিক দলগুলো নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। দাবি আদায়ে চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার কথাও বলছেন দলের নেতারা। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও ভোটে জয়ী হয়ে ফের ক্ষমতায় থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ যেন হয় সে জন্য পরিবেশ তৈরি করছে সরকার। একদিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে সরকারপ্রধানের সফর, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠানোর আহ্বান, অন্যদিকে স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভূমিকার মাধ্যমে বিএনপিকে নির্বাচনমুখী করার পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীনরা।
দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতে বিএনপি অংশ নিচ্ছে না। তবে গাইবান্ধার নির্বাচন স্থগিত করা, গাজীপুরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের আচরণবিধি নিয়ে তলব করা, সিটি করপোরেশনের ভোটে সিসি ক্যামেরা বসানোসহ নির্বাচন কমিশন তার কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ তৈরি হয় এমন ইঙ্গিত দিচ্ছে। তা ছাড়া বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর দাবি ছিল ভোটে ইভিএম ব্যবহার না করা। নির্বাচন কমিশন সেই সিদ্ধান্ত থেকেও সরে এসেছে। সরকারি দলও এ নিয়ে কোনো আপত্তি করেনি।
বর্তমান কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে স্থানীয় সরকারের সহস্রাধিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এসব নির্বাচনের কোনোটিতেই বিএনপি দলগতভাবে অংশ নেয়নি। অবশ্য এর আগে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়। তবে সেসব নির্বাচনে ইসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিএনপি নেতারা।
একদিকে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার ব্যাপারে পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে সংবিধানের ভেতরে থেকে আওয়ামী লীগ চেষ্টা চালাচ্ছে, অন্যদিকে বিএনপি বলছে, নির্দলীয় সরকার না হলে তারা নির্বাচনে আসবে না। বিএনপি কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবে কি না, সে আভাসও মিলছে না। এমন পরিস্থিতিতে এই দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের সমঝোতা হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকে যাচ্ছে।
আন্দোলনের বিকল্প কি নির্বাচন, জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমরা এর আগেও আওয়ামী লীগের প্রতিশ্রুতিতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। তবে আওয়ামী লীগ তার কথা রাখে নাই। তাই কোনো অবস্থাতেই আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। বরং নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব আওয়ামী লীগের পুরোনো কৌশল।’
অবশ্য আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব ও কর্তব্য। কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ করা না-করার ওপর নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে না।’
সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যাবে কি না, জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কমিশনের অধীনে। সেই কমিশনের অধীনে সব দল নির্বাচনে আসবে। সেই নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ নেবে সেই অংশগ্রহণের মধ্য দিয়েই নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যেই নির্বাচনটি হবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য।’
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিরোধী দলের অব্যাহত আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের ভেতরে বিভিন্ন সময় কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে, হচ্ছে। নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপিকে রাখার বিষয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যকে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে দেখছে।
তবে বিএনপি নেতারা বারবার বলে আসছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অবশ্য বিএনপি প্রার্থীদের প্রচারণা ও অংশ নেয়ার উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। তবে দলীয়ভাবে বিএনপির সিদ্ধান্ত হলো, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই তারা অংশ নেবে না।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনও হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে। এখন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপিসহ বিভিন্ন দল নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের পুরোনো দাবিতেই আন্দোলনে রয়েছে। দাবি আদায়ে এবার দলটি চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলছে।
এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ তাদের অধীনে নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপিকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় দেয়ার সেই পুরোনো প্রস্তাব সামনে নিয়ে এসেছে। এর সঙ্গে আওয়ামী লীগ বিএনপিকে পুরোনো শর্তের কথা বলছে- ‘বিএনপিকে আগে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিতে হবে’।
গত ৭ মে বনানীর সেতু ভবনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি বলেন, কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত যদি নিতে হয়, তাহলে সংবিধানের মধ্যেই থাকতে হবে। সংবিধানে ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ থাকলে আপনি যেটা বললেন, এটাতে কোনো অসুবিধা নেই।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, “বিএনপি যদি বলে, ‘আমরা নির্বাচনে আসব’। নির্বাচনে এলে তখন এক কথা। তারা নির্বাচন করবেই না তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া। তারা এই সংসদকে চায় না। মন্ত্রিসভা, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চায়। এসব শর্তারোপের মধ্যে আমরা কীভাবে বলব যে, আপনারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিতে আসুন বা অন্য কোনো মন্ত্রণালয় আপনাদের দিচ্ছি? তাদের তো সম্পূর্ণ উত্তর আর দক্ষিণ মেরুর অবস্থান।’
ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্য নিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর প্রতিক্রিয়া অবশ্য নেতিবাচক। এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। বর্তমান সরকার পদত্যাগ করার পর নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের ব্যাপারে আলোচনা হতে পারে, এটিই বিএনপির বর্তমান অবস্থান।’
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, সরকারবিরোধী আন্দোলনে নতুন কর্মসূচিগুলোর বিষয়ে তারা শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে। নতুন কর্মসূচিগুলো হবে শরিকদের সঙ্গে যুগপৎভাবে। তবে এই যুগপৎ আন্দোলন কতদিন চলবে বা চূড়ান্ত আন্দোলনের সময় কখন আসবে- এগুলো এখনো নির্ধারণ করতে পারেনি দলটি।
এদিকে সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আগামী শনিবার (১৩ মে) রাজধানী ঢাকায় মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি যৌথভাবে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করবে।
বিএনপির এই কর্মসূচি ঘোষণার এক দিন পর পাল্টা কর্মসূচি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও আগামী ১৩ মে রাজধানীর মিরপুর-১০ এলাকায় সমাবেশ করার ডাক দেয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে। এতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, সঙ্গীদের সঙ্গে লিয়াজোঁ বৈঠকে বিএনপি আন্দোলনের গতিপথ কোন দিকে নেয়া যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করছে। এ নিয়ে শরিক দলগুলোর মত হলো, একটি অভিন্ন ও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচির মাধ্যমের যুগপৎ আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হবে। কঠোর কর্মসূচি ছাড়া এ সরকারের পতনসহ বাকি দাবিগুলো আদায় করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে বিএনপি নেতাদের মত হলো, ঈদুল আজহার আগেই এই যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচিকে কঠোর কীভাবে করা যায় সে বিষয়ে জোর দিতে হবে।
আগামী দু-এক মাসের মধ্যে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি আসছে কি না, জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আন্দোলন একটা ঢেউয়ের মতো। এটার গতি কখনো ওঠে, আবার কখনো নামে। সেটা জনগণের পরিপ্রেক্ষিত বুঝে নিয়েই আন্দোলনটা করতে হয়। শরিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। সে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেছে।’
একই প্রশ্ন ছিল দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের কাছে। জবাবে তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘কোনো কিছুতেই এই আন্দোলন আর দমে যাবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি চেষ্টা করছে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পদত্যাগ করানো।’
আন্দোলন সহিংস নাকি অহিংস হবে, জানতে চাইলে সেলিমা রহমান বলেন, ‘আন্দোলন কঠোর হবে কি না বা কোন দিকে যাবে, তা আগামীতে সময় ও পরিস্থিতিই বলে দেবে।’
বিএনপি নেতারা বলছেন, ‘১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের পদযাত্রা, বিক্ষোভ সমাবেশসহ রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলোতে বিএনপি নেতাদের বক্ত্যবের সুর একটাই- আগে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তারপর তাদের ১০ দফা মেনে নিতে হবে। এর আগে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না।
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, গত বছরের ১০ ডিসেম্বরের পর থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে বিএনপি নেতা-কর্মীদের মামলা-হামলাসহ নানা রকম নিপীড়ন চালানো হচ্ছে সরকার ও সরকারি দলের পক্ষ থেকে। দলের অনেক নেতা-কর্মী যেমন বিভিন্ন মামলায় আদালতে হাজির হচ্ছেন, কারাগারে যাচ্ছেন। আবার অনেকেই বাড়িতে থাকতে পারছেন না। পাশাপাশি বিএনপির কর্মসূচির দিনে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা। এমন পরিস্থিতি আন্দোলনের গতি ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। মূলত সরকার আন্দোলনের শক্তিকে দুর্বল করতেই এমন ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তার পরও বিএনপি ও যুগপৎ সঙ্গীরা আন্দোলনকে জোরদার করতে দফায় দফায় বৈঠক করে কৌশল নির্ধারণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
যুগপৎ আন্দোলনে কোনো কঠোর কর্মসূচি আগামীতে আসছে কি না, জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিএনপি এখনো মনে করছে, শরিকদের নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের কঠোর কর্মসূচির বিষয়ে ঘোষণা দেয়ার মতো সময় এখনো হয়নি। কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার এখনো সময় আসেনি। সময় এলেই তা গণমাধ্যমে দেশবাসীকে জানানো হবে।’
আওয়ামী লীগ বিএনপিকে কোনো ফাঁদে ফেলছে না মন্তব্য করে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিকে সংলাপ এবং নির্বাচনকালীন সরকারে ডাকা হয়নি। এখানে প্রলোভনের ফাঁদের প্রশ্ন আসে কেন? রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ বিএনপির গণতান্ত্রিক অধিকার, সুযোগ নয়। আওয়ামী লীগ কেন তাদের অনুগ্রহ করবে? ডেকে আনবে।
বুধবার সকালে রাজধানীর এক হোটেলে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বৈদ্যুতিক গাড়িতে রূপান্তর সংক্রান্ত বৈঠক ও সক্ষমতা বৃদ্ধি বিষয়ক এক কর্মশালা শেষ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাহাঙ্গীর আলম আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র হয়েছিলেন, তার মা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত কি না জানা নেই। আর নির্বাচনের অংশগ্রহণের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের।
কাদের বলেন, সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার— এই তিন দাবি বিএনপির। বিএনপির এসব দাবি নিয়ে বিদেশিরা একটি কথাও বলেনি। কোনো চাপ বা প্রস্তাব দেয়নি।
এর আগে কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক পরিবহন খাতে যানবাহনকে নূন্যতম ৩০ শতাংশ ইলেকট্রিক মোটরযানে রূপান্তর করা হবে। আগামী নভেম্বরের বিআরটিসির বহরে যুক্ত হচ্ছে ১০০টি ডাবল ডেকার এসি বাস। এর মধ্যে ৮০টি চলবে ঢাকায়, ২০টি চট্টগ্রাম মহানগরীতে। পর্যায়ক্রমে অন্য বিভাগ ও জেলা শহরেরও তা সম্প্রসারণ করা হবে।
সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন বিদুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমান, বিশ্ব ব্যাংকের কোঅপারেশন ম্যানেজার দানদান চেন, ইউনিসক্যাপের পরিবহন বিভাগের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিভাগীয় প্রকৌশলী মাদান বি রেগমি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি দেবে এমন তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় বিএনপি।
রোববার দুপুরে রাজধানীর সেতুভবনে সেতু কতৃপক্ষের বোর্ড সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০১ ও ২০০৬ সালে মতো পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছিল ওইরকম সরকার বিএনপি চায়। তত্ত্বাবধায়কের চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য হারানো এমন পক্ষপাতদুষ্ট সরকার আওয়ামী লীগ চায় না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিদেশি কোনো চাপ নেই। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা যুক্তরাজ্য কোনো বিদেশি বন্ধু রাষ্ট্র কোনো চাপ দেয় নি। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অবতারণা করেনি।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষ। এই কমিশনের অধীনে নির্বাচন করতে বিএনপির সমস্যা কোথায়? নির্বাচন করার জন্য এই নির্বাচন কমিশনই যথেষ্ট। নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সর্বাত্মক চেষ্টা তাদের মধ্য আছে।’
এর আগে বাংলাদেশ সেতু কতৃপক্ষের বোর্ড সভায় যোগ দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
বিএনপির আন্দোলনের রূপরেখা রাজনীতির নয়, ষড়যন্ত্রের এবং তারা এখন দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার ফন্দি আঁটছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যৌথসভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বৈশ্বিক এই সংকটের মধ্যে দেশের বাজেট সহযোগিতার জন্য বিদেশ থেকে বিশাল অর্থসহায়তা আনার প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কটাক্ষ করায় বিএনপির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপি এখন দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার ফন্দি আঁটছে। ষড়যন্ত্রের রূপরেখা তৈরি করছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মির্জা ফখরুল অবৈধ দলের অবৈধ মহাসচিব। সিটি নির্বাচনে দলীয় পরিচয় গোপন করে প্রার্থী হয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা।’
বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সিটি নির্বাচনে দলীয় সভাপতির নেতৃত্বে মনোনয়ন বোর্ডের নেয়া সিদ্ধান্ত তার দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে মেনে চলার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে মন্ত্রী, এমপিসহ সংশ্লিষ্টদেরও নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।
যৌথসভায় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী এবং যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।