মঙ্গলবার, ৬ জুন ২০২৩

অতি দ্রুত দেশে গণঅভ্যুত্থান হবে: খন্দকার মোশাররফ

মঙ্গলবার দুপুরে ড‌্যাবের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
২৮ মার্চ, ২০২৩ ১৭:১৯
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বাংলাদেশে খুব শিগগিরই গণ-অভ্যুত্থান হবে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘সরকারকে হঠাতে হলে একটি গণ-অভ্যুত্থান প্রয়োজন আছে। গণ-অভ্যুত্থান তখনই সফল হয় যখন সব পেশাজীবী সংগঠন এবং জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়। এই গণ-অভ্যুত্থান অতিদ্রুত বাংলাদেশে হবে। এই গণ-অভ্যুত্থানে সবাই যার যার অবস্থান থেকে অবদান রাখবেন।’

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লা‌বের আব্দুস সালাম হ‌লে ডক্টরস অ্যাসো‌সি‌য়েশন অব বাংলা‌দেশ (ড‌্যাব) আয়োজিত ‘স্বাধীনতার ৫২ বছর ও বিপর্যস্ত স্বাস্থ‌্যব‌্যবস্থা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় খন্দকার মোশাররফ এসব কথা বলেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই সরকার দেশের কোনো কিছুই মেরামত করতে পারবে না। গণতন্ত্র যারা হত্যা করেছে, তারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে পারে না। অর্থনীতিকে যারা হত্যা করেছে, তারা কখনো অর্থনীতি মেরামত করতে পারবে না। যারা স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করেছে, তারা কখনোই নতুনভাবে স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে সাজাতে পারবে না। অতএব তাদের যত দ্রুত বিদায় করা যায় তত দ্রুত জাতি এবং দেশের কল্যাণ হবে।’

বিগত ১৪ বছরে স্বাস্থ্যব্যবস্থার ব্যাপক বিপর্যয় হয়েছে উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, স্বাস্থ্য খাতের এ দুরবস্থা হয়েছে মূলত দলীয়করণের ফলে। এখানে সাধারণ মানুষ সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কেউ কেউ আবার দলীয় পরিচয় দিয়ে যা ইচ্ছা তাই করে। এতে সাধারণ মানুষ তাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না। সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই।

সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারদের প্রাইভেট চেম্বারের বিষয়ে নিন্দা জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘একটা সার্কুলার বেরিয়েছে যে, আগামী ৩০ মার্চ থেকে সরকারি হাসপাতালে বিকেল ৩টার পর থেকে ডাক্তাররা প্রাইভেট চেম্বার করতে পারবে। সরকারের দলীয় লোকদের পকেট ভারী করার জন্য সরকার এ ব্যবস্থা নিয়েছে। এতে জনগণের কোনো কাজে আসবে না।’

ড্যাবের সভাপ‌তি অধ‌্যাপক ডা. হারুন আল র‌শিদের সভাপ‌তি‌ত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব‌্য রাখেন বিএন‌পির চেয়ারপারসনের উপ‌দেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা সাংবা‌দিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপ‌তি কা‌দের গ‌নি চৌধুরী ও ড্যাবের মহাসচিব ডা. মো আব্দুস সালাম।


এবার সিলেটে বিএনপির ৪৩ নেতা-কর্মী স্থায়ী বহিষ্কার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সিলেট ব্যুরো

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৪৩ নেতা-কর্মীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বিএনপি। তাদের মধ্যে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো. ছালাহ উদ্দিন রিমনও রয়েছেন। বাকিদের মধ্যে ৩৮ জন পুরুষ কাউন্সিলর ও ৪ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন।

সোমবার রাতে কেন্দ্র থেকে সিলেট মহানগর বিএনপির কাছে বহিষ্কারের আদেশ পাঠানো হয়।

সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, সিলেট সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া ৪৩ জনকে বিএনপি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ৪১ নেতা-কর্মীকে প্রথমে শোকজ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা শোকজের কোনো জবাব দেননি। এরপর কেন্দ্রে আরও দুইজনের নাম পাঠানো হয়। সব মিলিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া সিলেটের ৪৩ নেতাকর্মীকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।

সোমবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বহিষ্কারাদেশে বলা হয়েছে, ‘সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আপনি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করার কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব সন্তোষজনক নয়। আপনার নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত গত ১৫ বছর ধরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে করা গুম, খুন ও সরকারি পৈশাচিক নিপীড়নের শিকার হয়েছে এমন পরিবারসহ গণতন্ত্রকামী জনগোষ্ঠীর আকাঙ্ক্ষার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। দলীয় গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে আজীবন বহিষ্কারর করা হলো। এবং গণতন্ত্র উদ্ধারের ইতিহাসে আপনার নাম একজন বেইমান, বিশ্বাসঘাতক ও মীরজাফর হিসেবে উচ্চারিত হবে।’

এর আগে গত শনিবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী পৃথকভাবে এসব শোকজ নোটিশ ইস্যু করেন। শোকজ নোটিশে বলা হয়, ‘১৫ বছর ধরে অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপিসহ জনগণ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে খালেদা জিয়া দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর ধরে কারাভোগ করছেন। বিএনপি এই অবৈধ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ দলের সদস্য হয়ে ব্যক্তিস্বার্থ চিন্তা করে দলীয় বড় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করেছেন। সুতরাং কেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তার কারণ দেখিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দলের কেন্দ্রীয় দপ্তারে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হলো।’

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বিএনপি বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাচ্ছে না। কিন্তু সিলেটে যারা দলের সিদ্ধান্ত আমান্য করে প্রার্থী হয়েছিলেন, তাদের দল আজীবন বহিষ্কার করেছে।

২০০২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত চারবার নির্বাচন হয়েছে। ২০০৩ সালে প্রথম নির্বাচনে বিজয়ী হন বদর উদ্দিন কামরান। ২০০৮ সালের দ্বিতীয় নির্বাচনেও তিনি মেয়র নির্বাচিত হন কারাগার থেকে। ২০১৩ সাল থেকে মেয়র পদে আছেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। তবে এবার তিনি দলের সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচনে প্রার্থী হননি।

আগামী ২১ জুন পঞ্চমবারের মতো সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে।


সরকার বদল হলেও বিনিয়োগ অব্যাহত চায় জাপান: আমীর খসরু

রোববার সকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়
আপডেটেড ৪ জুন, ২০২৩ ১৩:২১
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বাংলাদেশ ও জাপানের অংশীদারিত্ব অনেক পুরোনো উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘তারা (জাপান) দেখতে চায়, সরকার বদল হলেও এটা যেন অব্যাহত থাকে। স্বাভাবিকভাবেই তারা এটা দেখতে চাইবে। বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থা, মানবাধিকার এসব নিয়ে আজ সবার উদ্বেগ। স্বাভাবিকভাবে তাদেরও উদ্বেগ আছে। তারা জানতে চায়, কী হচ্ছে, আগামীতে কী হতে যাচ্ছে। এটাই তারা বোঝার চেষ্টা করছেন।’

রোববার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আমির খসরু। এর আগে সেখানে জাপানি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয়।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের আমীর খসরু বলেন, ‘জাপান বাংলাদেশের মানুষের কাছে খুবই গ্রহণযোগ্য একটি দেশ। জাপানের অনেক বিনিয়োগ বাংলাদেশে আছে। তাদের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশ সরকারের অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ করছে। সুতরাং জাপান বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক লম্বা।’

জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলাপ হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘জাপানের রাষ্ট্রদূত কিছুদিন আগে এখানে নতুন এসেছেন। তিনি সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছেন। স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশ জাপানের বন্ধুত্ব ও পার্টনারশিপ অনেক পুরোনো। বাংলাদেশের সঙ্গে যাদের পার্টনারশিপ, তার মধ্যে জাপান অন্যতম।’

জাপান বাংলাদেশের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম, তখন প্রচুর বিনিয়োগ জাপান থেকে এসেছে। প্রচুর অবকাঠামোগত বিনিয়োগ হয়েছে বিএনপির সময়। একদলীয় শাসনের পরে মুক্তবাজার অর্থনীতি, যেটা বিএনপি বাংলাদেশে শুরু করেছে, তারপর থেকে জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক বেশি হয়েছে।’

জাপানের রাষ্ট্রদূতকে বিএনপির পক্ষ থেকে কী বলা হয়েছে— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশে যা হচ্ছে, তাই বলেছি। সেগুলো বলা যাবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে আইনের শাসন, নির্বাচন, মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা, স্বাভাবিকভাবে এসব নিয়ে উদ্বেগ সারা বিশ্ববাসীর আছে, দেশের মানুষের আছে, জাপানেরও থাকার কথা। তারা এসব জানতে চাচ্ছে। আগামী দিনের বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে, এটা তারা জানতে চায়।’

রোববার সকাল ১০টায় বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয়। বৈঠকে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ছিলেন জাপান দূতাবাসের প্রথম রাজনৈতিক সচিব মিস ইগাই। এ ছাড়া বিএনপির পক্ষ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দলের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।


ফরমায়েশি রায়ে বিরোধীদের কারাগারে পাঠাতে চাইছে সরকার: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
আপডেটেড ৩০ মে, ২০২৩ ১৩:১৬
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

সরকার ফরমায়েশি রায় দিয়ে বিরোধীদের কারাগারে পাঠাতে চাইছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াসহ বিএনপি নেতা-কর্মীদের নামে থাকা মামলাগুলোর রায় দেয়া থেকে বোঝা যায়, সরকার সম্পূর্ণভাবে রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে দখল করে নিয়েছে। যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলন করছে, ফরমায়েশি রায় দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠিয়ে আন্দোলন স্তব্ধ করতে চাইছে। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে তারা (আওয়ামী লীগ) এই একই কাজ করছে।’

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে তার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের রায় দিয়ে আন্দোলনকে বন্ধ করা যায় না। জনগণ তাদের অধিকার অবশ্যই আদায় করবে। আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। তাদের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত করা।’

ফখরুল বলেন, ‘গোটা বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে দূরে রাখা, রাজনৈতিক অধিকার থেকে দূরে রাখা, একটি সুষ্ঠু ভোট থেকে জনগণকে দূরে রাখা এবং আবার যেন একদলীয় নির্বাচন করতে পারে, সেলক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। কিন্তু এবার জনগণ সেটা করতে দেবে না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এ ঘটনা থেকে পরিস্কার হয়েছে, এ সরকারকে দিয়ে শুভবুদ্ধির উদয় হবে না। একমাত্র জনগণের উত্তাল আন্দোলনের মধ্যদিয়ে সরকারকে পরাজিত করে আইন ও গণতন্ত্রের শাসন এবং সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা ফেরত আনতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আমরা শপথ নিয়েছি, বাংলাদেশের হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করব। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে একটি গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।’

খালেদা জিয়া গৃহবন্দি হয়ে আছেন বলেও দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে নিস্তব্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন ও প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।


তিন মাসের আগাম জামিন পেলেন নিপুণ রায়

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৯ মে, ২০২৩ ১৬:১৮
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ঢাকার কেরানীগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীকে তিন মাসের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তার জামিনের আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ জামিন দেন। এ সময়ের মধ্যে তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।

আদালতে নিপুণের পক্ষে শুনানি করেন তার বাবা নিতাই রায় চৌধুরী, সঙ্গে ছিলেন বদরুদ্দোজা বাদল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

আদেশের পর অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে বলেন, আদালত আমাদের আবেদনের শুনানি নিয়ে তিন মাসের আগাম জামিন দিয়েছেন।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে গত শুক্রবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হন নিপুণ রায় চৌধুরী। তিনি ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সংঘর্ষের পর দিন শনিবার ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা হয়। এ মামলায় তিনি মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে হুইল চেয়ারে করে হাইকোর্টে হাজির হয়ে আগাম জামিন চান। পরে আদালত শুনানি নিয়ে তাকে জামিন দেন।

মামলায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের অফিসে হামলা ও আসবাব ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়।

আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, হাজি নাজিম উদ্দিন মাস্টার, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আশফাকের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়। এ ছাড়া আরও ৫ শতাধিক অজ্ঞাত নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

বিষয়:

বিএনপি কর্মীদের গ্রেপ্তারের খেলায় সরকার: ফখরুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

রাষ্ট্র পরিচালনায় সব ক্ষেত্রে ‘ব্যর্থ’ আওয়ামী লীগ সরকার দিশেহারা হয়ে অমানবিকভাবে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের খেলায় মেতে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। সকালে রাজধানীর একটি হোটেল থেকে নোয়াখালী জেলা বিএনপির ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহমানকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এই বিবৃতি দেন বিএনপি মহাসচিব।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মিথ্যা মামলা দায়ের এবং হত্যা, গুমসহ অব্যাহত গতিতে গ্রেপ্তার করে কারান্তরীণের মাধ্যমে গোটা দেশকেই একটি কারাগারে রূপান্তরিত করেছে ক্ষমতাসীন সরকার।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, বর্তমান সময়ে এই গ্রেপ্তারের ঘটনা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। এই ধরনের অপকর্ম সরকারের চলমান প্রক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে। নোয়াখালী জেলা বিএনপির ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহমানকে গ্রেপ্তারের ঘটনা সেই চলমান প্রক্রিয়ারই অংশ।


চাঁদের বক্তব্যকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়েছে সরকার: রিজভী

ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৫ মে, ২০২৩ ১৬:৫৯
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

‘সরকার এখন আবু সাঈদ চাঁদের বক্তব্যকে উপলক্ষ্য করে দেশব্যাপী মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তার জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি করেছে’ বলে মন্তব্য করছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তার অভিযোগ, ‘এটিকে একটা অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে জেগে ওঠা গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমন করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে।’

বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।

বিএনপিরে এই নেতা আরও বলেন, ‘আবু সাঈদ চাঁদের মেয়ে জাকিয়া সুলতানা, জাকিয়া সুলতানার মেয়ে আরিশা (বয়স ৪ বছর), বড় বোনের মেয়ে মাসুদা আক্তার এবং ছোট মেয়ের জামাই শেখ সালাউদ্দিন আহম্মেদকে গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদের নামে হয়রানির মাধ্যমে অমানবিকতার যে দৃশ্য ফুটে উঠেছে তা নজিরবিহীন। ৪ বছরের অবুঝ শিশুসহ নিরপরাধ মহিলা ও পুরুষকে আটকের ঘটনা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। ৪ বছরের অবুঝ শিশুসহ গ্রেপ্তার নারীদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আবু সাঈদ চাঁদের অন্যান্য আত্মীয়স্বজন এবং আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই মুহূর্তে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানাচ্ছি।’

‘বুধবার গভীর রাতে পুলিশ গাজীপুর মহানগরের বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে-বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালিয়ে অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে’ বলেও দাবি করেছেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘গাজীপুর মহানগর বিএনপির সদস্য মো. রবিউল আলম রবি, ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আশিকুর রহমানসহ ১১ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া সারাদেশে গত এক সপ্তাহে ৬৮০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

গত ১৯ মে রাজশাহীর পুঠিয়ায় শিবপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বিএনপি আয়োজিত এক জনসভায় রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য আবু সাঈদ চাঁদ প্রধানমন্ত্রীকে ‘কবরে পাঠানোর’ হুমকি দিয়ে বক্তব্য দেন। এ ঘটনায় পুঠিয়া থানায় গত ২১ মে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ বাদি হয়ে একটি মামলা করেন। এছাড়াও এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়। বৃহস্পতিবার আবু সাঈদ চাঁদকে গ্রেপ্তার করে রাজশাহী মহানগর পুলিশ।

বিষয়:

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি সুষ্ঠু নির্বাচনে সহা্য়ক হবে: আমীর খসরু

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বাংলাদেশিদের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ‘ভালো পদক্ষেপ’ বলে মনে করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও শঙ্কা রয়েছে। এ নির্বাচনে যেন ভোট চুরি না হয় সেসব বিষয় বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসানীতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

গত বুধবার বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। এই ভিসানীতির আওতায় বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন-প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িতদের ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করবে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিংকেন বলেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায় তাদের সবাইকে সমর্থন দিতে তিনি এই নীতি ঘোষণা করেছেন।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থানে বিএনপির সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি অর্জন হবে কি না- এমন প্রশ্নে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষকে অর্জন করতে হবে। এটা একটা পদক্ষেপ। এটা সহায়ক হবে তবে আরও অনেক কিছু করতে হবে।’

বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিলে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেবে না- এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা রয়েছে এটা তারই প্রতিফলন। অন্য কোনো দেশের নির্বাচন নিয়ে তো আলাপ হচ্ছে না। পার্শ্ববর্তী ৪-৫ টা দেশে নির্বাচন হচ্ছে। বাংলাদেশে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে যে শঙ্কা, তা থেকেই এ বিষয়গুলো উঠে আসছে।

মার্কিন নতুন ভিসানীতি বিএনপির জন্য দুশ্চিন্তার কারণ বলে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যের জবাবে বিএনপি নেতা আমীর খসরু বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) যদি উদ্বিগ্ন না হয় ভালো কথা। কিন্তু মানুষ যদি তার ভোটাধিকার না পায়, অধিকার ফিরে না পায় তাহলে তাদের (আওয়ামী লীগ) দুশ্চিন্তার কারণ আছে।’

মার্কিন ভিসানীতি আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য ‘ভালো একটি পদক্ষেপ’ আখ্যা দিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা এটাকে ওয়েলকাম (স্বাগত) করছি এই কারণে, আগামী নির্বাচনকে মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে সব ব্যক্তি-সংগঠনকে অ্যাড্রেস করা হয়েছে। এটা দেশবাসীকে গ্রহণ করেছে করেছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থানে বিএনপির সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি অর্জন হবে কি না- এমন প্রশ্নে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষকে অর্জন করতে হবে। এটা একটা পদক্ষেপ। এটা সহায়ক হবে তবে আরও অনেক কিছু করতে হবে।’


প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিএনপি নেতা চাঁদের বক্তব্য ‘স্লিপ অব টাং’ : রিজভী

সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভীসহ অন্যরা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৩ মে, ২০২৩ ১৭:০৮
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের বক্তব্যকে ‘স্লিপ অব টাং’ (মুখ ফসকে বেরোনো) বলে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘এটি নিয়ে আওয়ামী লীগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অবনতিশীল পরিস্থিতি তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে অনেক পলিটিক্যাল রেটোরিক (ভাষা) থাকে। বাড়িয়ে বলার একটা বিষয় থাকে। এটাতে আওয়ামী লীগ ও তার দলের প্রধান এতই পারঙ্গম যে পৃথিবীর কোনো শাসকই তার কাছে আসতে পারবে না।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘জেলা পর্যায়ে বিএনপির এক আহ্বায়ক তার বক্তব্যে মুখ ফসকে একটা কথা বলে ফেলেছেন। কিন্তু এটা নিয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী চরিত্রের প্রকাশের যে আয়োজন তা দেখে সারা জাতি শিহরিত।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে নরক রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ তাণ্ডব, তামাশা ও ভাওতাবাজির নাটক শুরু করেছে। পত্র-পত্রিকা, ইলেকট্রনিক ও স্যোশাল মিডিয়ায় নানা রকম গুজব ছড়িয়ে গণমানুষকে বিভ্রান্ত করতে সরকারের পেইড বাহিনী মাঠে নেমেছে।’

এ সময় রিজভী অভিযোগ করেন, ‘রাজশাহীর বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদকে না পেয়ে তার আপন ছোট ভাই মুক্তা, বড় মেয়ের জামাই জেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক জিয়া, তার ব্যক্তিগত সহকারী জালালের স্ত্রী, শাশুড়ি ও ছোট ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মোট ৩০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

রিজভী আরও বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক গতকাল মানববন্ধন করে প্রস্তাব দিয়েছেন যে, নির্বাচন ছাড়াই বর্তমান সংসদ ও আওয়ামী সরকারের মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়াতে হবে। তার এই প্রস্তাবের পক্ষে সরকার দলের নেতারা সমর্থন দিচ্ছেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতি শেখ হাসিনার চিরকালীন বিরক্তি ও বিতৃষ্ণা।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।

বিষয়:

ফের করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৩ মে, ২০২৩ ১৫:৩০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

আবারও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো করোনায় আক্রান্ত হলেন বিএনপি মহাসচিব।

বিএনপি মহাসচিবের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।

তিনি জানান, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট পেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। গত সোমবার দুপুর থেকে অসুস্থবোধ করছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শায়রুল কবির খান আরও জানান, মির্জা ফখরুল রাজধানীর বেসরকারি স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এর আগে দুইবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন মির্জা ফখরুল।


আওয়ামী লীগ ওয়াদা ভঙ্গকারী দল: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
আপডেটেড ২১ মে, ২০২৩ ১৪:৪৯
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

আওয়ামী লীগকে ‘ওয়াদা ভঙ্গকারী’ দল আখ্যা দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘নিজেদের অধিকার নিজেদের আদায় করতে হবে, বাইরে থেকে কেউ এসে দাবি পূরণ করে দেবে না।’

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে রোববার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাগপা।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীল বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অর্থনীতিকে খুবলে খুবলে খাচ্ছে। হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। অবশ্যই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। না হলে কারও অস্তিত্ব থাকবে না।’

ফখরুল আরও বলেন, ‘১৯৯৬ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছিল, তখন আজকের আওয়ামী লীগ অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেসব তো পূরণ করেইনি বরং সেখান থেকে দূরে সরে গেছে। তারা দুইটি ভুয়া নির্বাচন করেছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে কোনো ভোটার ভোট দিতে যায়নি। ২০১৮ সালেও নিশিরাতে ভোট করেছে এই আওয়ামী লীগ। আজ এই সরকার নির্বাচন ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন সিটি করপোরেশন নির্বাচন হচ্ছে, সেখানেও তারা কী করছে। এমন অবস্থায় আমাদের সিলেটের সাবেক নির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ভোট না করার ঘোষণা দিয়েছেন।’

এ সরকার ক্ষমতায় থাকলে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কারণ তারা নির্বাচনী প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এতগুলো মিডিয়া আছে কিন্তু স্বাধীনভাবে লিখতে ও বলতে পারে না। অসংখ্য সাংবাদিক দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। সাগর-রুনি দম্পতির চার্জশিট দিতে পারেনি। কেউ কথা বলতে পারে না চাকরির ভয়ে।’

দেশের পরিস্থিতি ‍তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শফিউল আলম প্রধান একটি সাম্য ও মুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন এবং লড়াইও করেছেন। কিন্তু আজও সেই দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ এই সরকার দিচ্ছে না। কারণ তারা তাদের মাথা বিক্রি করে দিয়েছে। আমরা ক্রান্তিকালে এসে দাঁড়িয়েছি।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখন সিদ্ধান্ত হবে বাংলাদেশ কি এখন গণতান্ত্রিক হবে নাকি পরনির্ভরশীল ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র হবে? একদিকে একটি শাসকগোষ্ঠী ও অন্যদিকে জনগণ। দেশের মানুষের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে সরকার। তারা অন্যায়ভাব র‌্যাব, পুলিশ ও দলীয় গুণ্ডা দিয়ে জনগণের আন্দোলন দমাতে চায়।’

অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, দেশের গণতন্ত্র অবরুদ্ধ, মানবাধিকার ভুলুণ্ঠিত। যে কথা বলে তার বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়, নির্যাতন করা হয়। এই অবস্থায় এই অবৈধ, অগণতান্ত্রিক ও অনির্বাচিত সরকারকে আর সময় দেয়া যায় না। জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে আন্দোলনের বিকল্প নেই।

দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নেই উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আব্দুস সালাম বলেন, এই হাসিনা সরকারের বিদায় করতে হলে আন্দোলনে নামা ছাড়া বিকল্প নাই। কারণ তারা নিজেদের দেশের মালিক মনে করছে। এদের আর সময় দেয়া যাবে না। যেখানে বাধা আসবে, সেখানেই পাল্টা আক্রমণ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান বলেন, দেশের আজ করুণ পরিস্থিতি। নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে নিত্যপণ্য। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর চলছে নির্যাতন নিপীড়ন। এই আওয়ামী লীগ সরকারকে আর সময় দেয়া যায় না।

যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাগপার সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহাদত হোসেন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য খন্দকার আবিদুর রহমান, আ স ম মেজবাহউদ্দিন, অধ্যক্ষ হুমায়ূন কবির ও যুগ্ম সম্পাদক ডা. আওলাদ হোসেন।


সিটি ভোট বর্জন নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বিএনপি

আপডেটেড ২১ মে, ২০২৩ ১৪:৫৮
আহমেদ দীপ্ত

বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না- এখন পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তে অনড় বিএনপি। দল না চাইলেও পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে বিচ্ছিন্নভাবে দলের অনেকে মনোনয়নপত্র তুলেছেন। মেয়র পদেও বিএনপি প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন, এমন গুঞ্জনও আছে। দলীয় ফোরামে অনেকবার আলোচনা ও চিঠি দেয়ার পরও নির্বাচন থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা সরছেন না।

ফলে আন্দোলন জোরদার করার চেষ্টায় থাকা দলটি হিমশিম খাচ্ছে নেতা-কর্মীদের সামলাতে। এমন পরিস্থিতিতে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় গাজীপুর সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণের কারণে ২৯ বিএনপি নেতাকে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বাকি চার সিটির তিনটিতে ৬৬ জন বিএনপি নেতা নির্বাচনে অংশ নিতে ইতিমধ্যেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার আলোচনায় সবচেয়ে বেশি শোনা গেছে সিলেটের দুবারের মেয়র অরিফুল হক চৌধুরীর নাম। বহিষ্কার না হয়ে দলে থাকতে চেয়ে শেষ পর্যন্ত মেয়র পদে ভোটে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আরিফ। শনিবার এক জনসভায় আরিফ বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে আমার দল বিএনপি অংশ নেবে না। আমি এই সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ালাম।’ আরিফের সিদ্ধান্ত এলেও অন্যদের কাছ থেকে তেমন সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি।

দলটির নেতারা বলছেন, নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনকে বিএনপি চূড়ান্ত পরিণতির দিকে নিতে চাইছে। সে কারণে দলের পক্ষ থেকে এখন সিটি করপোরেশনের ভোট বর্জন এবং মাঠের কর্মসূচিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপি এখন দুটি বিষয়ে বেশি জোর দিচ্ছে। এক, আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অংশ না নেয়া ও সে অনুযায়ী দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরত রাখা এবং দ্বিতীয়টি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ১০ দফা দাবিতে সরকার হটানোর আন্দোলনকে চাঙা রাখা। এই দুটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বিএনপি নতুন করে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

তবে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির ৩০ নেতা মনোনয়নপত্র তোলেন। দল থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়ার পর তাদের মধ্যে মাত্র একজন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। বাকি ২৯ জন দলের সিদ্ধান্ত না মানায় তাদের দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

নির্বাচনে অংশ নিলেই দল থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে, এই সিদ্ধান্তে দলের তৃণমূলে প্রভাব পড়বে কি না, জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন, তাদের প্রথমে চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। এর পরও যখন তারা থামেননি, তখন দল থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়। এখন যারা দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন, তারা নির্বাচনে অংশ নিতেই পারেন। তারা বহিষ্কৃত হয়েই গেছেন। এই ব্যবস্থা অন্যদের জন্য একটি বার্তা।’

‘শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতার পরিবর্তন চাই’

বিএনপি নেতারা বলছেন, তারা শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতার পরিবর্তন চান। তারা কোনো সংঘাত চান না। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে সিটি করপোরেশনের ভোটে অংশ নিলে দলের সরকারবিরোধী আন্দোলন ও অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এর নেতিবাচক প্রভাব জাতীয় নির্বাচনেও পড়তে পারে। তখন সরকারি দলের টোপের মুখে জাতীয় নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন বিএনপি নেতারা।

গত শুক্রবার এক জনসমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা কোনো সংঘাত চাই না। আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতার পরিবর্তন চাই। সে জন্য নির্বাচনই একমাত্র উপায়। সেই নির্বাচন কখনোই আওয়ামী লীগের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না।’

এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল গত নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের কথা উল্লেখ করেন। ফখরুল বলেন, ‘২০১৮ সালে আমাদের (বিএনপি) ডেকে নিয়ে গিয়ে সংলাপ করা হলো। বলা হলো, কোনো গ্রেপ্তার, হয়রানি করা হবে না। কিন্তু নির্বাচনের আগেই বিএনপির প্রার্থীদের গ্রেপ্তার করা হলো। অসংখ্য মামলা দেয়া হলো, কেউ ভোট দিতে যেতে পারেনি। ফলে এবার সরকারের নির্বাচনের টোপে আমরা পা দেব না।’

‘সুষ্ঠু নির্বাচন হবে’

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে কয়েক মাস ধরে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে। এসব বৈঠকে তারা আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের ওপর জোর দিয়েছেন। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে কূটনৈতিকদের জানানো হয়েছে, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি ক্ষমতাসীন সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচনে যাবে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বলেছে, সংবিধান মেনে বর্তমান সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপি বিদেশিদের কাছে নালিশ দিচ্ছে এবং এর ওপর ভর করে বিদেশিরা মাথা ঘামাচ্ছেন। এসব নিয়ে মাথা না ঘামাতে অনুরোধ করেছেন স্বয়ং দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গত শুক্রবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক সমাবেশে তিনি বলেন, ‘বিএনপি যতই নালিশ করুক, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আমার দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, পক্ষপাতহীন এবং অংশগ্রহণমূলক একটা ঐতিহাসিক নির্বাচন হবে। আপনাদের কারও এ নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই। হাঁটু ভাঙা, কোমর ভাঙা (বিএনপি) দল যতই কাকুতি-মিনতি করুক, এদের প্রলাপ শুনে লাভ নেই।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ও শরিক দলগুলো নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। দাবি আদায়ে চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার কথাও বলছেন দলের নেতারা। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও ভোটে জয়ী হয়ে ফের ক্ষমতায় থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সব দলের অংশগ্রহণ যেন হয়, সে জন্য পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টায় সরকার। একদিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে সরকারপ্রধানের সফর, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠানোর আহ্বান, অন্যদিকে স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভূমিকার মাধ্যমে বিএনপিকে নির্বাচনমুখী করার পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছেন ক্ষমতাসীনরা।

দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতে বিএনপি অংশ নিচ্ছে না। তবে গাইবান্ধার নির্বাচন স্থগিত করা, গাজীপুরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের আচরণবিধি নিয়ে তলব করা, সিটি করপোরেশনের ভোটে সিসি ক্যামেরা বসানোসহ নির্বাচন কমিশন তার কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ তৈরি হয় এমন ইঙ্গিত দিচ্ছে। তা ছাড়া বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর দাবি ছিল ভোটে ইভিএম ব্যবহার না করা। নির্বাচন কমিশন সেই সিদ্ধান্ত থেকেও সরে এসেছে। সরকারি দলও এ নিয়ে কোনো আপত্তি করেনি।

বর্তমান কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে স্থানীয় সরকারের সহস্রাধিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এসব নির্বাচনের কোনোটিতেই বিএনপি দলগতভাবে অংশ নেয়নি। অবশ্য এর আগে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়। তবে সেসব নির্বাচনে ইসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিএনপি নেতারা।

একদিকে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার ব্যাপারে পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে সংবিধানের ভেতরে থেকে আওয়ামী লীগ চেষ্টা চালাচ্ছে, অন্যদিকে বিএনপি বলছে- নির্দলীয় সরকার না হলে তারা নির্বাচনে আসবে না। বিএনপি কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবে কি না, সে আভাসও মিলছে না। এমন পরিস্থিতিতে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের সমঝোতা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকে যাচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আন্দোলন এবং নির্বাচন একসঙ্গে চলতে পারে না। বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার মানে এই অবৈধ সরকারকে আরও বৈধতা দেয়া। যেখানে এই অবৈধ সরকার থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য নেতা-কর্মীরা জীবন দিয়ে আন্দোলন করছেন, গ্রেপ্তার-হয়রানির শিকার হচ্ছেন, সেখানে নির্বাচনে গিয়ে যারা হালুয়া-রুটির ভাগ নেবে, তাদের সঙ্গে নিয়ে তো আন্দোলন হতে পারে না।’


জামালপুরে বিএনপির ৪৪ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

আপডেটেড ১৯ মে, ২০২৩ ১৫:২৩
প্রতিনিধি, জামালপুর

জামালপুরে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে বিএনপির ৪৪ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে জামালপুর শহর, সরিষাবাড়ী, বকশীগঞ্জের মেলান্দহ ও ইসলামপুরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন জেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাইনউদ্দিন বাবুল, জেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম, জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছাত্তার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফারুক হোসন, জেলা শ্রমিক দলের সদস্য মনোয়ার হোসেন মনু, রানাগাছা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাওলানা সরোয়ার আলম।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, পুলিশ বিনা ওয়ারেন্টে বিএনপির জনসমাবেশ বানচাল করার জন্য নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের নামে নাশকতার পরিকল্পনার নামে গায়েবি মামলা দিয়েছে। গ্রেপ্তারদের নামে এ মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করছি।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, নাশকতার পরিকল্পনা করার সময় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ৪৪ জন বিএনপির নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে সোপর্দ করা হবে।


ভোট লুট করে ক্ষমতায় থাকার দিন শেষ: রিজভী

রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন রুহুল কবির রিজভী। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৮ মে, ২০২৩ ১৬:০১
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে এবং রাতের অন্ধকারে ভোট লুট করে ক্ষমতায় থাকার দিন শেষ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, সরকারের এখন ত্রিশঙ্কু অবস্থা। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন এবং ২০১৮ সালে নিশিরাতে ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে রাখতে পারলেও এবার আর তা সম্ভব হচ্ছে না। এটা আওয়ামী লীগ প্রধান ও সেই দলের সাধারণ সম্পাদক নিজেরাই স্বীকার করেছেন।

রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়ে দেশের মানুষের দুর্বার আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে সরকার এখন আবোল-তাবোল বলছে বলেও দাবি করেন রিজভী। বলেন, কোনো ফন্দি-ফিকির, কূটকৌশলে আর কাজ হচ্ছে না। শেখ হাসিনা টের পাচ্ছেন, ভোট লুটের দিন শেষ। সরকার এখন চরম আতঙ্ক বোধ করছে। সে জন্য নতুন ষড়যন্ত্রে মেতেছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা শুনলেই সরকারের গলা শুকিয়ে যায়। কারণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এই সরকারের সবচেয়ে বড় শত্রু। তাদের সামনে পরিত্রাণের একটাই পথ এবং তা হলো পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির নেতা আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস ও নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুর সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।

বিষয়:

banner close