বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
৮ শ্রাবণ ১৪৩২

অগণতান্ত্রিক অপশক্তির কাছে ক্ষমতা জনগণ মেনে নেবে না: কাদের

ওবায়দুল কাদের। ছবি: ফাইল ছবি
আপডেটেড
৪ মে, ২০২৩ ১৬:৫৫
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ৩ মে, ২০২৩ ১৯:৪৮

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যকে মিথ্যা দাবি করে তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠা ব্যাহত করে অগণতান্ত্রিক কোনো অপশক্তির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর এ দেশের জনগণ মেনে নেবে না।

গণমাধ্যমে বুধবার পাঠানো এক বিবৃতিতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই বলেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে অবৈধ-অনির্বাচিত সরকার বলার ধৃষ্টতা দেখাতে পারেন। বিগত সময়ে সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী নির্বাচন হয়েছে এবং দেশের জনগণ তাতে আওয়ামী লীগের পক্ষে রায় দিয়েছে। জনগণের রায়ের ভিত্তিতেই আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। আগামী দিনেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি মহাসচিব দুর্নীতি ও অর্থ পাচার নিয়ে কথা বলেছেন। এটা ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া কিছু নয়। তাদের নেতা দুর্নীতির বরপুত্র তারেক রহমান হাওয়া ভবন খুলে দুর্নীতির রাজ্য কাফেন করেছিল। লুটপাট ও অর্থ পাচারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল। অর্থ পাচার মামলায় দণ্ডিত হয়ে তারেক রহমান বিদেশে পলাতক রয়েছে। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার আরেক পুত্র কোকোর পাচারকৃত অর্থ সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত এনেছে সরকার। দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বিএনপির মজ্জাগত রোগ। জনগণের টাকা বিদেশে পাচারের যে অপসংস্কৃতি বিএনপি প্রতিষ্ঠিত করেছিল, তা নির্মূল করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে এ দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার নিরন্তর সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। ধারাবাহিকভাবে তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকায় বাংলাদেশ একের পর এক মাইলফলক অর্জন করেছে। বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের অগ্রগতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারার কারণে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বিশ্বসভায় প্রশংসিত হয়েছে।


নির্বাচন নিয়ে সরকার সঠিক পথেই এগোচ্ছে: মির্জা ফখরুল

আপডেটেড ২৩ জুলাই, ২০২৫ ১৪:৩৮
ইউএনবি

নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সঠিক পথেই এগোচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে বিএনপিসহ চারটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ওই বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কী আলাপ হয়েছে—সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে তা জানতে চাওয়া হয়েছিল।

উত্তরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা হঠাৎ করেই আমাদের ডেকেছিলেন। ডাকেন মাঝে মাঝে যখন সরকারের ক্রাইসিস তৈরি হয়। আমরা যাই কারণ আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ—এই সরকারকে সহযোগিতা করব; গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য যা কিছু করা দরকার করব। তবে আমরা মনে করি, এই মতবিনিময়টা আরও ঘনঘন হলে ভালো হতো।’

মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কালকে (সোমবার) যেটা হয়েছে, একটি বিমান দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক কচি প্রাণ গেছে। আমি নিজেও দেখতে গিয়েছিলাম। আমরা দুঃখপ্রকাশ করেছি, শোক জানিয়েছি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল মাইলস্টোন স্কুলে দুই উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করা হয়েছিল।’

‘আবার পরীক্ষা-সংক্রান্ত জটিলতায় সচিবালয়ে ছাত্ররা ঢুকে পড়ে, যেটা সবার কাছে মনে হয়েছে এটা প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকদিন আগে গোপালগঞ্জে ফ্যাসিস্ট শক্তির লোকজন যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল, তাদের উত্থানের নমুনা মনে হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘এটার জন্য উনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল; তাদের সবার সঙ্গে আলোচনার জন্য তিনি ডেকেছেন। আমরা সেখানে আলোচনা করেছি। নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দ্রুত ত্বরান্বিত করা, উনার যে প্রতিশ্রুতি—ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাঝামাঝি সময়ে যে নির্বাচন হবে, আমরা মনে করি সে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তিনি বলেছেন সে ব্যবস্থা নেবেন।’

সরকার কি নির্বাচন নিয়ে সঠিক পথে এগোচ্ছে?— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি তো দেখছি এগোচ্ছে।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সীমাবদ্ধতা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, এই সরকারের ত্রুটি থাকবে স্বাভাবিক। তবে এই দুর্বলতাকে বড় করে না দেখে তাদের সদিচ্ছাকে বড় করে দেখা উচিত। নির্বাচন নিয়ে সরকারের আন্তরিকতার ঘাটতি দেখছি না।

দলীয় প্রধান একইসঙ্গে সরকারপ্রধান বা প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না—এমন একটি প্রস্তাব জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দিয়েছে। এ প্রস্তাবের ব্যাপারে আপনাদের অবস্থান কী?— এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা তো তাদের প্রস্তাব। এ প্রস্তাবের পক্ষে, বিপক্ষে রাজনৈতিক দলগুলো মত দিচ্ছে। সবার মতামতই শুনতে হবে। এটাই তো গণতন্ত্রের মূল কথা। সব ফুল ফুটতে দাও— এটাই তো গণতন্ত্র।’

মাইলস্টোনের দুর্ঘটনায় কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা?— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে কোনো ষড়যন্ত্র দেখছি না। এটা স্রেফ দুর্ঘটনা। আমি এ বিষয়ে এক্সপার্ট নই, তবে এটা নিছক দুর্ঘটনা ছাড়া আর কিছু মনে হচ্ছে না। নিকট অতীতেও এ ধরনের দুর্ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেছে।’

দুর্ঘটনার পর সরকারের কোনো গাফিলতি ছিল কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সরকারের কোনো গাফিলতি ছিল না। তবে, অভিজ্ঞতার অভাব ছিল। তারা তো কখনো রাষ্ট্র পরিচালনা করেনি; সবাই অনভিজ্ঞ। এই আমরা যেমন রাষ্ট্র পরিচালনা করেছি, আমাদের অভিজ্ঞতা আছে, সেই অভিজ্ঞতা তাদের নাই।’

‘আরেকটা সমস্য হলো ইগো। তারা কোনো বিষয় আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেন না। আমাদের কাছ থেকে কোনো পরামর্শ নেন না। এটা ইগোর কারণে হয়ে থাকতে পারে।’

সাম্প্রতিক সময়ের বিশৃঙ্খলা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু বিশৃঙ্খলা ঘটছে। এখানে নিশ্চয়ই ফ্যাসিস্টরা সমস্যা তৈরির চেষ্টা করছে।’


ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশের প্রতিটি সংকটকে সংহতি নিয়ে মোকাবিলা করতে হবে : তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং প্রতিটি সংকটকে সংহতি নিয়ে মোকাবিলা করতে হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলেন, জাতির এই শোকের সময়ে আমি সকল গণতন্ত্রপন্থী সহযোদ্ধার প্রতি শান্ত ও সংহত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, বিভেদমূলক সংঘাত কিংবা জনতার উচ্ছৃঙ্খল আচরণ বন্ধ করতে হলে আমাদের সহনশীলতা ও আত্মসংযমের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের কিছু সদস্যের মাধ্যমে জনতা ও পুলিশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির এবং সহিংসতা উসকে দেওয়ার উদ্বেগজনক খবর পাওয়া যাচ্ছে। এসব গোষ্ঠীকে অনুরোধ করব, বাংলাদেশের ইতিহাসের এমন একটি শোকাবহ মুহূর্তকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগানোর অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকুন। এর পরিবর্তে জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং সহানুভূতি ও সংহতি প্রদর্শনের দিকেই আমাদের মনোযোগ দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, আমাদের শক্তি ব্যয় হোক নিখোঁজ প্রিয়জনদের খুঁজে বের করা, নিহতদের সঠিকভাবে তালিকাভুক্ত করা, আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং বিমান দুর্ঘটনার মূল কারণ নির্ধারণে কর্তৃপক্ষকে নিরপেক্ষ ও কার্যকর তদন্তের সুযোগ করে দেওয়ার কাজে।

তারেক রহমান বলেন, প্রাণহানির শিকার নিরীহ ব্যক্তিবর্গ এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর পাশে রয়েছে আমাদের হৃদয়ের গভীর সহানুভূতি। বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং প্রতিটি সংকটকে সংহতি নিয়ে মোকাবিলা করতে হবে।


ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন নিয়ে রিজভীর প্রশ্ন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান চালানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিমানবন্দরের পাশে কী ধরনের লোকালয় গড়ে উঠবে, তার পরিকল্পনা থাকা উচিত।

ওই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যারা চিকিৎসাধীন, তাদের দেখতে গতকাল সোমবার বিকাল পাঁচটার দিকে যান রুহুল কবির রিজভী। সেখানেই তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ প্রশ্ন তোলেন। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ অন্য নেতারা ছিলেন।

রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এ এলাকার মধ্যে প্রশিক্ষণ বিমান দিয়ে উড্ডয়ন শিখবে, এটা আমার কাছে রহস্যজনক মনে হয়। এটা বিস্তীর্ণ প্রান্তরে হতে পারে। যশোর, কক্সবাজারের মতো জায়গায় হতে পারে। সেখানে পাশে সমুদ্র আছে, বিস্তীর্ণ জায়গা আছে। কিন্তু এ ধরনের ঘনবসতিপূর্ণ জায়গায় প্রশিক্ষণ বিমানে প্রশিক্ষণ নেবে, এটা আমি কোনোভাবেই যেন মেনে নিতে পারছি না।’

রুহুল কবির আরও বলেন, ‘নেভিগেশন বা টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আমি অবশ্যই জানব না। কিন্তু সাদা চোখে যেটা মনে হয়েছে, চারদিকে এত বাড়িঘর, মানুষ থইথই করছে, এর মধ্যে একটা প্রশিক্ষণ বিমানে প্রশিক্ষণ নিতে পারে না। এটা নিয়ে প্রশাসন, সরকারের গুরুদায়িত্ব আছে। দায়িত্বে অবহেলা করলে প্রতিনিয়ত মানুষের জীবন বিপন্ন হতে থাকবে।’

রিজভী বলেন, ‘বিমানবন্দরের পাশে কী ধরনের লোকালয় গড়ে উঠবে, তার পরিকল্পনা থাকা উচিত। আমার মনে হয়, যেসব লোকালয় গড়ে উঠেছে, তা পরিকল্পনার অংশ নয়। এত ঘনবসতি এই এলাকায় হতে পারে না।’

বিএনপির নেতাকর্মীরা এ ঘটনায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে জানিয়ে রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। দলের নেতাকর্মীরা রক্তের জোগান দেওয়াসহ অন্যান্য সহযোগিতা করছে। দলের কয়েকটি কর্মসূচিও স্থগিত করা হয়েছে।


অন্তর্বর্তী সরকারকে দশের মধ্যে সর্বোচ্চ পাঁচ দেবেন নূর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

গেলে এগারো মাসে বিএনপি-জামায়াতকে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পুনর্বহাল ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। সরকার প্রত্যাশিত কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, তাদের মূল্যায়ন করতে গেলে দশের মধ্যে সর্বোচ্চ চার কিংবা পাঁচ দেব।

শনিবার (১৯ জুলাই) জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে এক আলোচনায় সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে এই মঞ্চ গঠন করেছে। মূলত গেল বছরের ১৯ জানুয়ারি গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনার স্মরণেই এই আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে।

সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে উঠে আসা এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘এগারো মাসে সরকারের কার্যক্রম মূল্যায়ন করে দশের মধ্যে যদি তাদের নম্বর দিতে বলেন, তাহলে সর্বোচ্চ চার বা পাঁচ দেব। এই নম্বর দিতেও কষ্ট হয়। কারণ তারা দেশের এতটুকু পরিবর্তনও করতে পারেননি।’

তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য আমরা লড়াই করেছি। কিন্তু দুঃখ লাগে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও উপদেষ্টা পরিষদের কাছে আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল, সেটা এগারো মাসেও শুধু বিএনপি-জামায়াতকে প্রশাসনে পুনর্বহাল ছাড়া আর কোনো কার্যকর পরিবর্তন হয়নি। এটা আমাদের প্রত্যাশা ছিল না।’

‘দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা, ভূমি কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনওি) কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ে মানুষে সেবা পেতে কোনো পরিবর্তন হয়নি। যেসব রাজনৈতিক নেতার ক্ষমতা আছে, এসব অফিস তাদের কথাই চলছে। আমরা এই ব্যবস্থারই পরিবর্তন চেয়েছিলাম,’ যোগ করেন তিনি।

নুর বলেন, ‘আমরা অনেকদিন ধরে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সংসদের কথা বলছি। প্রধানমন্ত্রীর এককেন্দ্রিক ও স্বৈরাচারী ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদের সংশোধনসহ যেসব পরিবর্তনের কথা বলেছি, সেগুলো বাস্তবায়নের সময়ে এসেছে আজ।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনেও গাছাড়া-লাগামছাড়া ভাব এসেছে বলে মন্তব্য করেন ডাকসুর সাবেক এই ভিপি। তিনি বলেন, কিন্তু কিছু কিছু মৌলিক সংস্কারে আমাদের একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে।

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদে উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে সব দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে বলেও জানান এই তরুণ রাজনীতিবিদ। তিনি বলেন, এটা যদি করা যায়, তাহলে কিছু ভিন্নমত পার্লামেন্টে থাকবে। নাহলে এই পার্লামেন্ট আগের মতোই থাকবে।

এ সময়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


বিভ্রান্তির রাজনীতির মাধ্যমে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে একটি দল: সালাহউদ্দিন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সব সময় বিভ্রান্তিকর রাজনীতি করা একটি দল এখন ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ।

তিনি শুক্রবার (১৮ জুলাই) এক সমাবেশে বলেন, ‘তারা একসময় স্বাধীনতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল, পরে জনগণ বা তাদের অনুভূতির বিরুদ্ধে গিয়েছিল। তারা এখন গোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। আমি তাদের নাম বলব না- আপনারা বুঝতেই পারছেন আমি কাদের কথা বলছি।’

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির এক পদযাত্রার বক্তব্যে সালাহউদ্দিন আহমেদ এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, দেশের সংসদ নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি করা এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার উপর জোর দেওয়া দলগুলোর কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, তাদের একটি খারাপ উদ্দেশ্য রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘যারা বাংলাদেশে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি তুলছেন - তাদের একটি খারাপ উদ্দেশ্য রয়েছে।’

চরমোনাইর পীরের প্রতিষ্ঠিত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নাম ‍উচ্চারণ না করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যে দলটি ১৬ বছর ধরে হাতপাখা (আইএবির নির্বাচনী প্রতীক) দিয়ে আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করেছিল, তারা এখন দাবি করছে যে পিআর ব্যবস্থা ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়।’

জামায়াতের নাম না নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সবসময় বিভ্রান্তিকর রাজনীতিতে লিপ্ত থাকা আরেকটি দল তাদের (আইএবি) সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এই পিআর ব্যবস্থা বোঝে না।

তিনি বলেন, একজন প্রার্থী একটি নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকা থেকে নির্বাচিত হয় এবং সংসদ সদস্য (এমপি) হয়—জনগণ এমন একটি ব্যবস্থাকে বোঝে। সেই সংসদ সদস্য জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, স্থানীয় সমস্যা সমাধানে কাজ করেন এবং আইন প্রণয়নে অংশগ্রহণ করেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কিন্তু পিআর ব্যবস্থায়, আপনি মিরপুরে আমিনুলকে ভোট দিতে পারেন এবং সন্দ্বীপের বাবুলকে আপনার এমপি হিসেবে পেতে পারেন। এই দেশের মানুষ এই ব্যবস্থা সম্পর্কে জানে না এবং চায়ও না।’

সালাউদ্দিন বলেন, আদালতের রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল করা হয়েছে এবং তিন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক ক্ষমতা তাদের রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা এই নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী প্রশাসনকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার হিসেবে বিবেচনা করি। আপনাদের একমাত্র দায়িত্ব হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সংসদ নির্বাচন নিশ্চিত করা। স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের কোনো কর্তৃত্ব আপনাদের নেই।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, সুতরাং, যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে অনুষ্ঠিত করার জন্য চাপ দিচ্ছেন, তারাই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে জাতীয় নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছেন।


চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির তীব্র নিন্দা বিএনপির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

চট্টগ্রাম শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপি।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা বিবৃতি এই উদ্বেগ প্রকাশ করে দলটি।

এতে দলটি বলেছে, ‘চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে বিএনপি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। সেখানে চাঁদাবাজি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে।’

দলটি ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এবং সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুর্বৃত্তদের প্রতিরোধ করার আহ্বান জানিয়েছে।

একই সঙ্গে বিএনপি স্থানীয় প্রশাসনকে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং মিথ্যা মামলা ও চাঁদাবাজি থেকে নিরীহ ব্যবসায়ীদের রক্ষা করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার জোরালো আহ্বান জানানো হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, ‘রাজধানীর পরে, চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর। বন্দর নগরী হিসেবে, চট্টগ্রাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বেশিরভাগ ব্যবসা-বাণিজ্য এখান থেকেই পরিচালিত হয়। তাই, বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং জাতীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য এই শহরে আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি অপরিহার্য।’

দলটি বলেছে, এটি দুর্ভাগ্যজনক যে বর্তমানে মিথ্যা মামলা এবং ব্যাপক চাঁদাবাজি ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার করছে, যার ফলে চট্টগ্রামে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এমন খারাপ পরিস্থিতি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। যদি এটি অব্যাহত থাকে—তাহলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়তে পারে।’


মিটফোর্ডে হত্যাকান্ডে তদন্ত কমিটি গঠন বিএনপির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় এক ভাঙারি ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বিএনপি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, এই ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

দলের সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে ব্যবহার করার সন্দেহ রয়েছে এবং কিছু মহলের উসকানিতে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য এই ধরনের ঘটনা দৃষ্টান্ত হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।’

সোমবার (১৪ জুলাই) বিএনপি চেয়ারম্যানের গুলশান অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডকে দেশের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি এবং দুষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে বিশ্বাসের যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

ফখরুল বলেন, ‘এই নির্মম হত্যার পেছনের সত্য উদঘাটন করতে আমরা একটি উপযুক্ত সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত ও তথ্য সংগ্রহ কমিটি গঠন করেছি, যারা প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করবে এবং তা জনসমক্ষে নিয়ে আসবে।’

তিনি বলেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এই দুঃখজনক ও অপ্রত্যাশিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে, বিশেষ করে একটি ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণার অংশ হিসেবে দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল ও তার শীর্ষ নেতা তারেক রহমানকে খলনায়ক হিসেবে তুলে ধরার জন্য মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে, যার বিরুদ্ধে দল কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

ফখরুল বলেন, দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এরইমধ্যে ঢাকা মিটফোর্ড এলাকার লাল চাঁদ সোহাগ নামে একজন ভাঙারি ব্যবসায়ীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

তিনি বলেন, সরাসরি কোনো প্রমাণ না থাকলেও পুলিশের অভিযোগে নাম উল্লেখিতদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা অনুযায়ী সর্বোচ্চ সাংগঠনিক পদক্ষেপ—আজীবন বহিষ্কার—গ্রহণ করেছে দল।

বিএনপি নেতা জানান, নিহতের পরিবার ইতোমধ্যে মামলার বিবৃতিতে অসঙ্গতি থাকার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

তিনি বলেন, পরিবারের বক্তব্য অনুযায়ী, আসল দোষীদের জায়গায় রিপোর্টে তিন জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই। দুঃখজনকভাবে, নির্মম হত্যায় সরাসরি যুক্ত প্রকৃত অপরাধীরা এখনও চিহ্নিত বা গ্রেফতার হয়নি এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নাম বা পরিচয় প্রকাশ করতে পারেনি।


জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে সুনির্দিষ্ট চক্রান্ত হচ্ছে: মির্জা ফখরুল 

তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে সরাতে একদল দুষ্টচক্র অপপ্রচারে লিপ্ত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে লেখা একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার বিকেলে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে সুনির্দিষ্ট চক্রান্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এখন যে অপপ্রচার চলছে, তার পেছনে একেবারে সুনির্দিষ্ট চক্রান্ত রয়েছে। সেই চক্রান্ত হচ্ছে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করে দেওয়া। সেই চক্রান্ত হচ্ছে যে নেতা (তারেক রহমান), যিনি উঠে আসছেন, যার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তাকে নিশ্চিহ্ন করা। তাকে খারাপ জায়গায় ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা।

আজ রোববার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে লেখা একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির বিরুদ্ধে সাইবার আক্রমণ হয়েছে, এমন অভিযোগ করে অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাইবার অ্যাটাক হয়েছে আমাদের ওপরে চতুর্দিক থেকে।...পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য, বিএনপিকে উড়িয়ে দেওয়ার জন্য। এবং সবচেয়ে মারাত্মক যেটা, ফর দ্য ফার্স্ট টাইম (প্রথমবারের মতো) এবার আমাদের নেতা তারেক সাহেবের ওপরে আক্রমণ হয়েছে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন নিশ্চয়ই তার নাম ধরে, তার কথা বলে, তাকে বিভিন্নভাবে মেলাইন করে, তার সম্পর্কে কথা বলেছে, যেটা খুব অ্যালার্মিং (বিপজ্জনক)।’

গণমাধ্যমের চিত্র পরিবর্তন হচ্ছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল দলের নেতা–কর্মীদের ‘সাইবার যুদ্ধের’ জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এখন কিন্তু মিডিয়া পাল্টে যাচ্ছে। এখন খবরের কাগজ, ইলেকট্রনিক মিডিয়া—এটাই শুধু প্রভাবিত করছে না। সোশ্যাল মিডিয়া (সামাজিক মাধ্যম) প্রচণ্ডভাবে প্রভাবিত করছে মানুষকে।

অপপ্রচারের জবাব দিতে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিতে তরুণদের প্রবলভাবে আসা দরকার। যে অপপ্রচার চলছে, তার উত্তর সঙ্গে সঙ্গে দিতে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিকে এত সহজে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। বিএনপি প্রতিবাদ করেছে। প্রমাণ করেছে যে বিএনপি ধ্বংসস্তূপ থেকে জেগে উঠতে জানে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) জেলে যাওয়ার পর থেকে ওনার (তারেক রহমান) সঙ্গে সরাসরি কাজ করছি। আমি দেখেছি যে তার অসাধারণ একটা সাংগঠনিক দক্ষতা আছে। এটা খুব কম রাজনীতিবিদের মধ্যে আছে। অতি অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বিশাল অংশকে সংগঠিত করে ফেলতে পারেন। এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বাংলাদেশের গ্রামে পৌঁছে গেছেন।’

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মো. ইসমাইল জবিউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টাল অনুষদের ডিন সাখাওয়াৎ হোসেন সায়ন্থ।

অনুষ্ঠানে ‘তারেক রহমান: দ্য হোপ অব বাংলাদেশ’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বিএনপির পক্ষে বইটি প্রকাশ করেছে ‘জেড ম্যান প্রোডাকশন’। এই বইয়ের সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান, নির্বাহী সম্পাদক আব্দুর রহমান নূর, সহসম্পাদক রেজওয়ানুল হক, উপসম্পাদক মেহেদী আরজান। বইটি ৩২৩ পৃষ্ঠার। এ বইয়ের ১১টি অধ্যায়ে তারেক রহমানের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন; রাজনীতিতে অভিযাত্রার সূচনালগ্ন; বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ; বিএনপিকে তৃণমূল পর্যায় থেকে চাঙা করার উদ্যোগ; ষড়যন্ত্রমূলক গ্রেপ্তার ও পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ; ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে তারেক রহমানের দায়িত্ব গ্রহণ; দেশ গঠনের রূপরেখা প্রণয়নে তার ভূমিকাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।


দীর্ঘ ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ বাকশাল ২ কায়েম করেছিল: ড. আব্দুল মঈন খান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আমিনুল ইসলাম বনি রাজশাহী

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বিএনপি হচ্ছে জনগণের দল। দীর্ঘ ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ বাকশাল ২ কায়েম করেছিল । বিএনপি জনগণের শক্তি, ভোট ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। এই দল তিনটি বিষয়ে বেশি বিশ্বাস করে। এক হচ্ছে সততা, আইনশৃঙ্খলার প্রতি বিশ্বাস ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের উৎপাদনমুখী রাজনীতি। তিনি আরও বলেন, বিএনপি জনগণের দল বলে দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্যাতনেও পিছুপা হয়নি। হাজার হাজার ও লাখ লাখ নেতা-কর্মী আসামি হয়ে দলের প্রতি আনুগত্য বজায় রেখেছে। দীর্ঘ ১৬ বছরে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের বিতারিত করতে তারুণ্যের অহঙ্কার তারেক রহমান দিকনির্দেশন দিয়ে এসেছেন। এরই ফলে হচ্ছে জুলাই-আগস্ট। ছাত্র-জনতা একসঙ্গে রাস্তার নেমে স্বৈরাচার হাসিনাকে বিদায় করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমরা অনেক রাজনীতিক দল বাংলাদেশে দেখেছি। পথভ্রষ্ট রাজনৈতিক দল দেখেছি। আওয়ামী লীগ হচ্ছে সেই পথভ্রষ্ট রাজনীতিক দল। আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে, তাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। আগামীতে এরকম পরিস্থিত যেন কোনো দলের না হয় সেদিকে নেতা-কর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি। শনিবার (১২ জুলাই) দুপুর ১২টায় রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী ভবন মোহন পার্কে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি উপলক্ষে ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এই সরকারে যারা এসেছে, জনগণ যাদের এই গুরুদায়িত্ব দিয়েছে। এদেশে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করে সারা বাংলাদেশকে পূর্ণরায় গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে আনার জন্য। আমরা জানি এখানে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। দেশে ন্যায় বিচারের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই- সংস্কার এবং বিচার দুইটাই কিন্তু একটি চলমান প্রক্রীয়া। এটা এই রকম নয়, আমরা আজকে সংস্কার করে দিলাম, সব সংস্কার শেষ হয়ে গেল। আমরা সুবিচার করে দিলাম, সব সুবিচার আজকে শেষ হয়ে গেল। সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া এরকম নয়। এটা হচ্ছে চলমান প্রধান অতিথি আরও বলেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকার বলত আগে উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র। মনে আছে আপনারাদের? এটা ছিল ভুয়া কথা। আজকে কারও মুখে আমরা এটা শুনতে চাই না- আগে সংস্কার হবে, আগে বিচার হবে, পরে গণতন্ত্র হবে, পরে নির্বাচন হবে। এই কথা আজকে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুখে শুনতে চাই না। তিনি বলেন, এখন সময় হচ্ছে- আমরা শৃঙ্খলভাবে একটি পরিবেশ পরিস্থিতি বাংলাদেশে সৃষ্টি করব। যেখানে সুষ্টু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। আমরা ১৬ বছর ধৈর্য রেখেছি। আমরা আগামি কয়েক মাস ধৈর্য রাখব। আমরা নিয়মের বাইরে যাব না। আমরা শৃঙ্খলার বাইরে যাব না। আমরা কারও উপরে জোর করে কোনো কিছু চাপিয়ে দেব না। কেন না সেটা গণতন্ত্র নয়, সেটা স্বৈরাচার। স্বৈরাচারের রাজনীতিতে বিএনপি বিশ্বাস করে না। বিএনপি বিশ্বাস করে আইনের শাসনে। আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি। আমরা মানুষের ভোটে বিশ্বাস করি। আমরা মানুষের গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। যে যতই স্বড়যন্ত্র করুক, বাংলাদেশের মানুষের উপরে আমাদের আস্থা আছে। আগামি নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রতিনিধিত্ব করার আমাদের সুযোগ দেবে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি ভিন্নধর্মী রাজনীতিক দল। আমরা অনেক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে দেখেছি। পথভ্রষ্ট রাজনৈতিক দল দেখেছি। আওয়ামী লীগ হচ্ছে পথভ্রষ্ট রাজনীতিক দল। এই যে আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। আজকে দীর্ঘ ১১ মাস অতিবাহিত হয়েছে। এই ১১ মাসের মধ্যে একজন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী কাউকে দেখাতে পারবেন যে সৎসাহস নিয়ে বলতে পেড়েছে- যে আমরা বাংলাদেশের মানুষের প্রতি অন্যায় করেছি। আমরা ক্ষমা চাই। কেউ বলে নাই।

তিনি বলেন, আজকে সেই রাজনৈতিক দলকে বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাক্ষাণ করেছে। আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে, আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে। বিএনপি যেন কোনো দিন আওয়ামী লীগের মতো এই ধরনের আচারণ না করে। আমরা মানুষের সেবা করার জন্য রাজনীতিতে এসেছি। আমরা রাজনীতিকে আওয়ামী লীগের মতো ব্যবসা হিসেবে নেয় নাই। আমরা মানুষের সেবা করব। আমরা সেই সেবার উদ্দেশ্যে নিয়ে রাজনীতিতে এসেছি। আপনারা মানুষের সেবা করবেন। মানুষে আপনাদের প্রতিদান দেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বক্তব্যে পূর্বে নেতা-কর্মীদের হাতে সদস্য ফরম তুলে দিয়ে এর শুভ উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট বীরমুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী ঈশার সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত। বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা। রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুন-অর-রশিদ সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম সরকার, শফিকুল ইসলাম শাফিক, জয়নুল আবেদন শিবলী, চন্দ্রিমা থানার থানা বিএনপির সভাপতি ফাহিজুল হক ফাহি, সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম জনি, বোয়ালিায়া থানা (পশ্চিম) বিএনপির সভাপতি শামসুজ্জামান মিলু সাধারণ সম্পাদক বজলুজ্জামান মহন, বোয়ালিয়া (পূর্ব) বিএনপির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম নিপু, সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন ও কাশিয়াডাঙ্গা থানা বিএনপির সদস্য সচিব মজিউল আহসান হিমেল।

আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম জনি, সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রবি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান জনি, মহানগর কৃষক দলের আহ্বায়ক শরফুজ্জাামান শামীম, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট রওশন আরা পপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গুলসান আরা মমতা, রোজিনা, রিতা, ক্রীড়া সম্পদিক বিথি, সহক্রীড়া সম্পাদক লাভলীসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।


ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে বোরহানউদ্দিনে বিএনপির বিক্ষোভ

আপডেটেড ১২ জুলাই, ২০২৫ ২১:০১
ইউসুফ হোসেন অনিক, ভোলা

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল) সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) হত্যার প্রতিবাদ ও হত্যাকারীদের ফাসির দাবিতে বোরহানউদ্দিনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বোরহানউদ্দিন উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা।

শনিবার ( ১২ জুলাই ) সন্ধ্যায় উপজেলা সড়কের বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উত্তর বাসষ্টান্ডে গিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে শেষ হয়।

এসময় উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা বিচার বিচার বিচার চাই, সোহাগ হত্যার বিচার চাই। আমার ভাই কবরে, খুনি কেনো বাহিরে। রশি লাগলে রশি নে, খুনীরে ফাসি দে সহ নানা স্লোগান দিতে থাকে।

ব্যাবসায়ী সোহাগ হত্যায় দ্রুত বিচার চেয়ে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জসিমউদ্দিন খাঁনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক সরোয়ার আলম খাঁন, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কাজী মো: আজম, যুগ্ন আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম ফিরোজ কাজী, যুগ্ন আহ্বায়ক শহীদুল আলম নাসিম কাজী, পৌর বিএনপির সি: সহ সভাপতি বশির আহমেদ, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক ফাইজুল ইসলাম, উপজেলা যুবদল আহ্বায়ক শিহাব হাওলাদার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আতিফ আসলাম রুবেল, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি দানিশ চৌধুরী, পৌর ছাত্রদল সভাপতি রায়হান আহমেদ শাকিল প্রমুখ।

তারা বলেন, “৯ জুলাই মিটফোর্ড হাসাপাতালে সামনে যেভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে, আমরা বোরহানউদ্দিন উপজেলা ও পৌর বিএনপির সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা চাই, অনতিবিলম্বে সোহাগ হত্যাকাণ্ডের জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে সম্প্রতি চাদপুরে মসজিদের ভিতরে এক ইমামের উপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তারা আরো বলেন, তারেক রহমান ও বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে। বিএনপি শহীদ জিয়াউর রহমানের গড়া দল, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া তারেক রহমান সহ আমরা এই দলের জন্য অনেক শ্রম দিয়েছি আওয়ামীলীগের হামলা মামলার স্বীকার হয়ে রাজপথে টিকে ছিলাম। এসময় বক্তারা জামায়াত ও এনসিপির নানা সমালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মেধাবী ছাত্র আবরার কে যখন হত্যা করা হয়েছে তখন কোথায় ছিলো আপনাদের প্রতিবাদ কই তখন তো আপনাদের প্রতিবাদ করতে দেখিনি। বিএনপি শহীদ জিয়াউর রহমানের গড়া দল এই দলে কোনো চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীর ঠাই নেই আমাদের নেতা খালেদা জিয়া তারেক রহমান সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পছন্দ করেনা আমরাও করিনা। যখনই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষনা হবে ঠিক তখনই বিএনপিকে নতুন মিডিয়া ট্রায়ালে ফেলতে একটি মহল কাজ করে যাচ্ছে তাই আমাদের নেতাকর্মীদের আরো সজাগ থাকার আহ্বান জানান'।


জনগণের পক্ষে বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি গড়ে তুলুন: নাহিদ ইসলাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জনগণের পক্ষে বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি গড়ে তুলুন।

বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলার পথসভায় নাহিদ এমন মন্তব্য করেন।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও উন্নয়নের পক্ষে দাঁড়ান। দেশ গঠনে সংস্কারের পক্ষে দাঁড়াতে হবে।’

মুজিববাদী ফ্যাসিস্ট দল বাংলাদেশে আসতে হলে আমাদের জীবনের ওপর দিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, বিচার সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে আপনারা আমাদের পাশে দাঁড়ালে হতাশ হবেন না। নাগরিক পার্টি আপনাদের ইনসাফভিত্তিক রাজনীতি উপহার দেবে।

বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে দেশব্যাপী ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে গণঅভ্যুত্থান থেকে গড়ে উঠা এই নতুন রাজনৈতিক দল। পদযাত্রাটি গত ১ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২৯ জুলাই পর্যন্ত চলবে।

নাহিদ বলেন, ভারত সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থনে শেখ হাসিনা সরকার এদেশের মানুষদের গুম, খুন করেছে। বাংলাদেশের সীমান্ত, মাটি, মানুষ ও মানচিত্রকে রক্ষা করা ছাত্র-তরুণদের দায়িত্ব। সেই দায়িত্বের ভিত্তিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি কাজ করবে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল হত্যাকাণ্ডের জন্য খুনি হাসিনা ও তার দল দায়ী। ভারত সরকার এই সন্ত্রাসী, খুনি বাহিনীকে নিজ দেশে আশ্রয় দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতীয় আধিপত্যের দ্বারা বাংলাদেশের মানুষদের মানবিক মর্যাদা, সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হয়েছে, তাদের দাসত্বের জীবনযাপন করতে হয়েছিল। ভারত আমাদের পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করছে। রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিকভাবে বারবার আমাদের অবনমন করা হয়েছে।

ভারতের সাথে সমতার ভিত্তিতে সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের সাথে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক চায় তবে সেই সম্পর্ক হবে সমতা, ন্যায্যতা ও মর্যাদার ভিত্তিতে।


জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যশোর ১ শার্শা আসনে বাড়তে শুরু করেছে রাজনৈতিক উত্তাপ। দীর্ঘদিন পর ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায় ভোটারদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎসাহ ও আগ্রহ। এ আসনে বিএনপির চার জন মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সমাবেশ মিছিল মিটিংসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে নির্বাচনী মাঠ বিএনপির দখলে আছে। এ আসনে বিএনপির একাধীক প্রার্থী থাকলেও সবাই এক কাতারে থেকে দলীয় প্রোগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। দলীয় স্বার্থে এবারের নির্বাচনে বিএনপিকে বিজয়ী করতে সবাই তারা প্রতিদিন শার্শার কোনো না কোনো ওয়ার্ড বা ইউনিয়নে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন একই সঙ্গে। এদিকে জামায়াত ইসলামীর প্রকাশ্যে কোনো মিছিল মিটিং করতে দেখা না গেলেও বিভিন্ন এলাকার মাদ্রাসায় ঘরোয়াভাবে বৈঠক করতে দেখা যাচ্ছে। আর ঘর গোছাতে ফরম পূরণ করে বাড়াচ্ছেন সদস্য। এবারের নির্বাচনে যশোরের এ আসনে জামায়াত ইসলামীকে বিজয়ী করতে কাজ করছেন নেতাকর্মীরা।

যশোরের-১ শার্শা আসনের ১১টি ইউনিয়নে মোট ভোট কেন্দ্র ১০২টি। এ আসনে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা ২৯৯২৮০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫০৪৪০ জন এবং নারী ভোটার সংখ্যা ১৪৮৮৮৩ জন।

বিএনপির পক্ষে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে রয়েছেন দলের সাবেক কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মফিকুল হাসান তৃপ্তি। দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ মফিকুল হাসান তৃপ্তি গত ১৭ বছরে নানাভাবে মামলা হামলার শিকার হওয়া ছাড়াও জেল খেটেছেন কয়েকবার। বিগত সরকারের আমলে প্রশাসন দ্বারা নানাভাবে হয়রানির স্বীকার হলেও দল ছেড়ে যাননি তিনি। মফিকুল হাসান তৃপ্তি এবারও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ লক্ষ্যে শার্শার প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের নিয়ে মিছিল মিটিং ও পথ সভা করে যাচ্ছেন।

শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দল প্রিয় ও সুপরিচিত আলহাজ নুরুজ্জামান লিটন নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। তিনি এবার যশোর ১ শার্শা আসন থেকে এনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনিও গত সরকারের আমলে নানাভাবে মামলা হামলার স্বীকার হয়েছেন। তারপরও দল থেকে বিচ্যুত হননি। বিগত সরকারের আমলে নেতা কর্মীদের আগলে রেখেছেন তিনি। পাশে থেকেছেন সবসময়। এবারের নির্বাচনে বেনাপোলসহ শার্শাবাসীর দাবি নুরুজ্জামান লিটনই হবে বিএনপির প্রার্থী। এদিকে, বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বর্তমানে উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা আলহাজ খাইরুজ্জামান মধু। ওয়ান ইলেভেনের সময় সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতনের স্বীকার হওয়া ত্যাগী নেতা খাইরুজ্জামান মধুর বিগত ১৭ বছর জেলখানায়ই ছিল বাড়ি। তিনি বিএনপির মনোনয়ন পেতে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছে ছুটে বেড়াচ্ছেন।

অন্যদিকে, নির্বাচনী মাঠে পিছিয়ে নেই শার্শা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক্ ও বর্তমানের সভাপতি আবুল হাসান জহির। তিনি শার্শা আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী।

বিগত সরকারের আমলে জেলখাটাসহ নানা হযরানির স্বীকার হওয়া ছাড়াও আবুল হাসান জহিরের বিরুদ্ধে হয়েছে অগণিত মামলা।

তবে এ আসনে এবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী থাকায় ফুরফুরে মেজাজে নেতাকর্মীরা। জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা আজীজুর রহমান দলের নেতা কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে যাচ্ছেন। নেতাকর্মীরা প্রতিদিন সকালে দল বেধে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ফরম পূরণ করে সদস্য সংগ্রহ করছেন।

এ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রতিদিন মিছিল ও জনসমাবেশ করে তাদের নির্বচনী মাঠ গরম করছেন। তবে যশোর ১ শার্শা আসনে বিএনপি ও জামায়াত ইসলামী ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের কাউকে দেখা যাচ্ছে না।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বলছেন আমাদেন রাজনৈতিক দলের প্রধান যেভাবে আমাদের নির্দেশ দেবেন আমরা সেভাবেই কাজ করব।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই দলীয় ব্যানারে নির্বাচন করার টিকিট দেবেন। আমাদের মধ্যে দলীয় কোনো কোন্দল নেই। দল যাকে মনোনয়ন দেবেন আমরা সবাই তার পক্ষেই নির্বাচনী কাজ করব।


তরুণ ভোটারদের পছন্দের শীর্ষে বিএনপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, আগামী নির্বাচনে তরুণদের চোখে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

জরিপে অংশ নেওয়া তরুণরা জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি সবচেয়ে বেশি ভোট পাবে।

সানেম-অ্যাকশনএইড পরিচালিত ‘যুব জরিপ-২০২৫’ শীর্ষক এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদের অংশগ্রহণে সারা দেশের আট বিভাগের ২ হাজারের বেশি পরিবারের ওপরে এ জরিপ চালানো হয়েছে।

জরিপের তথ্যানুযায়ী, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি আনুমানিক ৩৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ ভোট পাবে। বিএনপির পড়েই আছে জামায়াতে ইসলামী। দলটি ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ ভোট পাবে বলে মনে করছেন তরুণরা।

অন্যান্য ইসলামপন্থি দল, এনসিপি ও জাতীয় পার্টির অবস্থান আরও নিচে। এছাড়াও, যদি আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারত, তবে ১৫ শতাংশ ভোট পেত বলে মনে করেছেন জরিপে অংশ নেওয়া তরুণরা। বিএনপির প্রতি পুরুষ ভোটারদের সমর্থন নারীদের তুলনায় একটু বেশি। জামায়াতের ক্ষেত্রেও পুরুষ সমর্থন বেশি নারীর তুলনায়। অন্যদিকে, এনসিপির প্রতি নারীদের সমর্থন পুরুষদের চেয়ে বেশি, এবং শহরাঞ্চলে এই দলের জনপ্রিয়তা গ্রামাঞ্চলের তুলনায় বেশি।

উল্লেখ্য, জরিপের ফল গত রোববার প্রকাশ করেছে সানেম, যা তরুণদের রাজনৈতিক ঝোঁক ও আগ্রহের একটি সময়োপযোগী প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

দেশের তরুণদের মধ্যে ৯৩ দশমিক ৯৬ শতাংশই আশাবাদী আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। তবে ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ ইতোমধ্যেই নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা হারিয়েছেন। আগামী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ৭৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ তরুণ, অন্যদিকে ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ তরুণ ভোট দিতে অনাগ্রহী বলে জরিপে উঠে এসেছে।

জুলাই আন্দোলনের পরবর্তী রাজনীতি ও সংস্কার নিয়ে তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি জরিপে উঠে এসেছে। রাজনৈতিক সচেতনতার দিক থেকে মাত্র ২৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ তরুণ নিয়মিত দেশের রাজনীতির হালচাল অনুসরণ করেন, ৩৯ দশমিক ০৯ শতাংশ মাঝে মাঝে করেন, আর ৩৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ এ ব্যাপারে একেবারেই আগ্রহী না।

নারীদের মধ্যে ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ জাতীয় রাজনীতিতে আগ্রহী না, যেখানে পুরুষদের মধ্যে এ হার ১৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ঘনিষ্ঠভাবে রাজনীতি অনুসরণকারী তরুণের হারও খুব কম—পুরুষদের মধ্যে ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে মাত্র ৫ দশমিক ১৮ শতাংশ। আঞ্চলিক রাজনীতির ক্ষেত্রেও একই চিত্র—পুরুষদের মধ্যে ১২ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ১৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

জরিপে রাজনৈতিক দলের কার্যকারিতা নিয়ে তরুণদের মধ্যে আস্থার ঘাটতি স্পষ্ট। মাত্র ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ মনে করে, রাজনৈতিক দলগুলোর এজেন্ডায় দেশের প্রকৃত সমস্যার প্রতিফলন ঘটে, যেখানে ৪৯ দশমিক ৪২ শতাংশ একেবারেই এ বিষয়ে একমত না। দেশের ৫০ শতাংশ তরুণ মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সঙ্গে কোনো সংযোগ স্থাপন করতে পারেনি, আর বিপরীতে ১৬ দশমিক ১ শতাংশ তরুণ মনে করেন যে দলগুলো তরুণদের সঙ্গে যুক্ত।

রাজনৈতিক পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়েও তরুণদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশ মনে করেন সংস্কার ছাড়াই পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব। তবে ৫৬ দশমিক ৪ শতাংশ বিশ্বাস করেন, যদি প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলে পরিবর্তন সম্ভব। অপরদিকে, ১১ দশমিক ৩ শতাংশ তরুণ ভবিষ্যতে পরিস্থিতির আরও অবনতি দেখছেন এবং ১৩ দশমিক ১ শতাংশ মনে করেন, কিছুই পরিবর্তন হবে না।

দেশের ৮২ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণ কোনোভাবেই রাজনীতিতে যুক্ত হতে আগ্রহী না। ১১ দশমিক ৫ শতাংশ তরুণের মধ্যে কিছুটা আগ্রহ আছে এবং মাত্র ১ দশমিক ৬ শতাংশ বর্তমানে কোনো না কোনোভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন।

রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল নিয়ে তরুণদের প্রত্যাশা অনেকটাই আদর্শভিত্তিক। ৬০ শতাংশ তরুণ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রত্যাশা করেন তারা পৃষ্ঠপোষকতা, স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক সহিংসতা দূর করবে। ৫৪ শতাংশ চায় নিয়মিত নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রথা পুনঃপ্রতিষ্ঠা হোক। পাশাপাশি, ৪৮ দশমিক ২৩ শতাংশ তরুণ মনে করেন ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত নয়।

জরিপ পরিচালনা করা সংস্থা দুটি জানিয়েছেন, জুলাই আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে তরুণরা রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের গতিপথ, অন্তর্ভুক্তি ও কার্যকারিতা সম্পর্কে কীভাবে চিন্তা করছে—তাও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে জরিপটিতে। জরিপটি তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সংস্কারের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছে। সার্বিকভাবে, এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল তরুণদের দাবি ও আকাঙ্ক্ষাগুলো আরও জোরালোভাবে তুলে ধরা, যেন তা নীতিনির্ধারক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয় এবং যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়।


banner close