সোমবার, ৫ মে ২০২৫
২২ বৈশাখ ১৪৩২

উন্নয়নের ‘চাপাবাজির’ নামে দেশকে দেউলিয়া করা হয়েছে: রিজভী

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী। ছবি: দৈনিক বাংলা
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১০ মে, ২০২৩ ১৭:৫৮

উন্নয়নের নামে সরকার দেশকে দেউলিয়া করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘সরকারের তথাকথিত উন্নয়নের নামে দেশে যে সীমাহীন লুটপাট হয়েছে, তার সব দেনা সাধারণ মানুষের ঘাড়ে পড়েছে। চলতি বছর শুধুমাত্র ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হবে লাখ কোটি টাকার বেশি। উন্নয়নের চাপাবাজির নামে দেশকে দেউলিয়া করে দেয়া হয়েছে।’

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের লুটেরা চক্র আয়েশি জীবন কাটালেও সাধারণ মানুষের এখন নুন আন্তে পান্তা ফুরায় অবস্থা। সরকারের লোকজনের সীমাহীন দুর্নীতিতে দ্রব্যমূল্য, সার-বীজ, কীটনাশকসহ জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিসহ তীব্র তাপদাহে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবনে নাভিশ্বাস চলছে।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এই তীব্র তাপদাহে শহরে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা এবং গ্রামাঞ্চলে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং চলছে। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা চলছে। ইতিমধ্যে দেড় বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৭৪ শতাংশ। ডলারের বিনিময় হার অস্বাভাবিক বেড়েছে। ব্যাংকগুলো লুটপাট করে দেউলিয়া করে দেয়া হয়েছে।’

ক্ষমতাসীনরা দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠান গিলে ফেলছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকসহ সব ব্যাংক গিলে ফেলেছে ক্ষমতাসীনরা। অর্থপাচারকারীদের নাম প্রকাশিত হচ্ছে। সেখানে কেবলমাত্র ক্ষমতাসীন দলের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এবং আওয়ামী নেতাদের নাম। ঋণের নামে ব্যাংক খালি করলো কারা? বিপুল রিজার্ভের তথ্য দিয়ে জোরেসোরে ঢোল বাজালেন প্রধানমন্ত্রী, সেই রিজার্ভ এখন তলানীতে ঠেকলো কিভাবে?’

বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশকে একটি পারিবারিক জমিদারিতে পরিণত করে ১৮ কোটি মানুষকে দ্বিতীয় শ্রেণির প্রজা বানানো হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে নির্বিচার দলীয়করণ, মানবাধিকার হরণ, নানা কালাকানুনের মাধ্যমে কণ্ঠের টুঁটি চেপে ধরা হয়েছে।

মানুষ ন্যায়বিচার পাচ্ছে না উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দলীয়করণের রাজনীতি গণতান্ত্রিক রাজনীতি নয়। সুবিচার নিশ্চিত করতে হলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিরোধী দল শত্রুদল নয়। কিন্তু নিশিরাতের প্রধানমন্ত্রী বিএনপিসহ সব বিরোধী পক্ষ ও মতকে শত্রু জ্ঞান করেন।

কারগারে যুবদল নেতাদের নির্যাতন করা হচ্ছে উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা এর আগেও কারাগারে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর কারাকর্তৃপক্ষের অমানুষিক নিপীড়ন-নির্যাতনের কথা জানিয়েছি। যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরবকে ২৪ ঘণ্টা লকআপে রাখা হয়েছে। কেনো তার ওপর এই বর্বরোচিত আচরণ তা জেল কর্তৃপক্ষকে জবাব দিতে হবে। একইভাবে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্নাকে কারাগারে আটকিয়ে রাখতে একের পর এক গায়েবি মামলা দেয়া হচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মিথ্যাচারের কঠোর সমালোচনা করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘ক্ষণে ক্ষণে তাদের (আওয়ামী লীগ) বক্তব্য পরিবর্তন হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী নির্বাচন হবে না। দেশ-বিদেশের মানুষও তা মেনে নিবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন, মীর শরফত আলী সপু, ডা. রফিকুল ইসলাম, আসাদুল করিম শাহীন, আব্দুল খালেক, আমনিুণল ইসলামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বিষয়:

সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলাম, আছি এবং থাকব: মির্জা ফখরুল

গণহারে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা- স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি: মাহ্‌ফুজ আনাম
আপডেটেড ৫ মে, ২০২৫ ১১:৫২
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি বরাবরই সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি, বিএনপি ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক, সব সময় গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করবে। কখনোই অন্যায়ভাবে অন্যের মতকে চাপিয়ে দেওয়াকে সমর্থন করবে না। আরেকজনের মতের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে।’

গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৫ উপলক্ষে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের প্রতি অতীতে যে নির্যাতন ও নিপীড়ন হয়েছে, আপনাদের আইন কানুনে পুরোপুরি ফ্যাসিবাদী চরিত্র দেওয়া হয়েছে, এগুলোর বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। আমরা লড়াই করে চলেছি। এখনো করছি। খুব স্পষ্ট ভাষায় দৃঢ়ভাবে আবারও বলতে চাই, আমরা কখনোই অন্যায়ভাবে অন্যের মতকে চাপিয়ে দেওয়াকে সমর্থন করব না।’

বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়টি নতুন নয় উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছি, সেই ষাটের দশক থেকে এই বিষয়টি সব সময় সামনে এসেছে। পাকিস্তান শাসকদের বিরুদ্ধে সেই সময়েও আমরা কথা বলেছি, আন্দোলন করেছি, কাজ করেছি। তখন সংবাদমাধ্যমের একটি নিজস্ব স্বকীয়তা ছিল। যেখানে তাদের কোনও গোষ্ঠীভুক্ত করা অতটা সহজ হতো না। তাদের দেশপ্রেম, আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধ ছিল অনেক উঁচু দরের।

বর্তমানে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলতে গিয়ে কিছুটা আতঙ্কিত থাকেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে কিছুটা আতঙ্কিত থাকি সম্প্রতি প্রেসের সামনে কথা বলতে গিয়ে। মনে হচ্ছে, কোন প্রেস আমার কথাগুলো কীভাবে নেবে। তারপর তারা কীভাবে ছাপবে। অথবা সোশ্যাল মিডিয়া কীভাবে এটা উপস্থাপন করবে। এটা আমাদের জন্য, যারা আমরা রাজনীতি করি। এটা আমাদের জন্য সত্যি একটা চিন্তার বিষয়। কারণ, সম্প্রতি চরিত্র হরণ করার যে প্রবণতা বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা দিয়েছে, এটাতে চিন্তিত না হয়ে উপায় নেই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিঃসন্দেহে আগের চেয়ে বেড়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে প্রায় ১৬ ভাগ বেড়েছে। সমস্যা দেখা দেয় তখনই, যখন দেখি কোনও কোনও সংবাদমাধ্যম গোষ্ঠী আরেকটি গোষ্ঠীকে আক্রমণ করে। কোনও কোনও রাজনৈতিক গোষ্ঠীও সেটার সঙ্গে যুক্ত হয় এবং বিভিন্ন রকম রাজনৈতিক কর্মসূচিও দেন। একটি গণতান্ত্রিক মুক্ত সমাজে এটা কতটুকু গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এটি আমার বোধগম্য নয়।

সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের বিপক্ষে প্রচার চালানো হয় যে আমরা সংস্কারের বিপক্ষে। প্রায়ই বলা হয়, সংস্কার নয় আমরা নির্বাচন চাই। অথচ সংস্কারের বিষয়টি শুরু করেছে বিএনপি। দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা এনেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। অনেক আপত্তি সত্ত্বেও বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সংবিধানে যুক্ত করেছে। এগুলো বাস্তবতা। ওই বাস্তবতা থেকে অযথা নানা ইস্যুতে বিএনপিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা একটি ট্রানজেকশন পিরিয়ডে আছি। অনেক রকমের ঘটনা, টানা- হেঁচড়া চলছে। গণতন্ত্রই নেই বলে সংকট হচ্ছে। গত ১৫ বছর ধরে লড়াই করলাম গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য। চব্বিশের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি ফ্যাসিস্ট রেজিমকে সরিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শুরু করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এসময়ে জনগণের ওপর আস্থা রাখতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আমাদের কাছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ একটি বিশাল ব্যাপার। এটাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয় আমাদের চিন্তা। এজন্য, আমরা সেটার জন্য লড়াই করেছি, যুদ্ধ করেছি, প্রাণ দিয়েছি। দীর্ঘ ৯ মাস অবিশ্বাস্য রকমের কষ্টের মধ্য দিয়ে পার করেছি। সেই জায়গায় আমরা কোনও আপস করতে চাই না। এটাকে অনেকে পছন্দ করতে পারেন, নাও করতে পারেন। তাতে ব্যক্তিগতভাবে আমি কিছু মনে করি না। কারণ ‘দ্যাট ইজ মাই বেসিস’, ওটাই আমার মূল ভিত্তি।

সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম। আলোচনা সভায় রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

সম্পাদকদের মধ্যে বক্তব্য দেন দ্য নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবির, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ। আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে দেশে বর্তমানে ২৬৬ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা অথবা সহিংসতা–সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগে মামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহ্ফুজ আনাম। তিনি বলেছেন, গণহারে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের আক্রমণ (মামলা) স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি এবং এটি ভয়ের ব্যাপার।

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার শাসনামল এত জনধিকৃত হয়েছিল, তার অন্যতম কারণ ছিল গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছিল না। আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং আরও অনেক আইনের শিকার হয়েছিলাম। তবে বর্তমানে ২৬৬ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা অথবা সহিংসতা–সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগে মামলা চলছে। এটা কীভাবে সম্ভব? ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও ২০০ বা কিছু বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। ২৬৬ জন সাংবাদিক আজকে খুনের মামলা অথবা সহিংসতা সংক্রান্ত অপরাধের মামলার আসামি। এটা আমাদের জন্য অসম্মানের।’

সরকারের উদ্দেশে মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, ‘এটার অর্থ এই নয় যে কেউ দোষ করেননি। দোষ করে থাকলে সঠিকভাবে মামলা করে শাস্তি দেন এবং আমরা কোনোভাবেই তার পাশে দাঁড়াব না, যদি তিনি সত্যিকার অর্থে সমাজের বিরুদ্ধে বা জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের বিরুদ্ধে তার অবস্থান সে রকম থাকে। কিন্তু আজকে ছয় থেকে সাত মাস হয়েছে, তারা এসব মামলায় পড়েছেন। একটি কদমও এগোয়নি তদন্তের ব্যাপারে।’

যাদের নামে মামলা হয়েছে, সেসব সাংবাদিক একটা ভয়ের মধ্যে থাকেন উল্লেখ করে মাহ্ফুজ আনাম বলেন, তাঁরা ‘মব আক্রমণের’ (দলবদ্ধভাবে আক্রমণ) ভয়ে থাকেন। এ রকম দু-একটা ঘটনা ঘটেছে।

১৩ জন সাংবাদিক গ্রেপ্তার আছেন উল্লেখ করে মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘তারা যদি অপরাধ করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই তাদের বিচার হওয়া উচিত। কিন্তু আজকে সাত মাস, আট মাস ধরে কারাগারে, তারা জামিন পাচ্ছেন না। তাঁদের আইনি কোনো প্রক্রিয়া চলছে না। বিচার হচ্ছে না। তাহলে এটা কি চলতে থাকবে?’

মামলার প্রবণতার কথা বলতে গিয়ে মাহ্ফুজ আনাম বলেন, এখন মামলার যে প্রবণতা, তাতে ১০০ জন, ৫০ জন, ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা, তার মধ্যে একজন সাংবাদিকের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হলো।

সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে করণীয় সম্পর্কে নিজের মতামত তুলে ধরে মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, ‘আমার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব হচ্ছে, সরকারের হয়তো অনেক ব্যস্ততার জন্য এই ২৬৬ জন সাংবাদিকের মামলা দেখতে পাচ্ছে না। কিন্তু তারা দৈবচয়ন ভিত্তিতে ১০-১৫টি মামলা দেখুক না, যেখানে ২০-২৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে একজন-দুজন সাংবাদিক আছেন। তারা যদি একটা, দুইটা, ৫টা দৃষ্টান্ত পায় যে সাংবাদিকদের নামে হওয়া মামলা মিথ্যা মামলা, তাহলে কেন পদক্ষেপ নেবে না? বারবার বলা আমাদের কিছু করণীয় নাই, আমি মনে করি যারা এই মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের হেনস্তা করছেন, এতে তাদের আরও বলিষ্ঠ করা হয়। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমি দাবি করছি, সরকার সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়াক।’

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘যে সাংবাদিক দোষী, যে সাংবাদিকের শাস্তি হওয়া উচিত, আমরা সরকারের পক্ষে থাকব। কিন্তু খামোখা একেবারে গণআকারে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই আক্রমণ আমি মনে করি এটা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য বিরাট একটা পরিপন্থি ব্যাপার ও এটা ভয়ের ব্যাপার।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই সরকার পরিবর্তনের সরকার, এই সরকার সংস্কারের সরকার। আশা করি, এই সরকার গণতন্ত্রকে বলিষ্ঠ করার সরকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে দৃঢ় করার সরকার। কিন্তু এই মুহূর্তে মামলার মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যে নির্যাতন হচ্ছে এবং এটাও শুনেছি হত্যা মামলা দেওয়া হয় কেন, হত্যা মামলায় জামিন পেতে অসুবিধা হয়। সুতরাং যিনি মামলা দিচ্ছেন পরিকল্পিতভাবে, যাতে জামিন না পান। এগুলো তো প্রতীয়মান। সরকারের কাছে কি প্রতীয়মান হবে না?’

সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘আইন, স্বরাষ্ট্র ও অন্যান্য যারা আছেন, তারা উদ্যোগী হয়ে যেন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এটা শুধু আমাদের মনঃক্ষুণ্ন করছে না, বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’

আলোচনা সভায় মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘যে দেশে প্রশ্ন করার জন্য সাংবাদিকের চাকরি যায়, সে দেশে মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন করছি আমরা। অবাক লাগে, আমি বিস্মিত হই, জানি না, আমি কাকে দায়ী করব? আমি কি সরকারকে দায়ী করব, না, আমি কি মালিককে দায়ী করব, না করব না, সাংবাদিক ইউনিয়ন কী করছে বা আমাদের সম্পাদক পরিষদ, যেটিতে আমি প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এখন পর্যন্ত আছি, আমি মনে করি আমরাও ব্যর্থ হয়েছি।’

মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘যা-ই হোক আত্মসমালোচনা আমাদের দরকার, আমরা আসলে কতটুকু করতে পেরেছি। তবে এটা স্বীকার করতেই হবে, পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে অনেকখানি। এক বছর আগে যে অবস্থা ছিল, সেই অবস্থা এখন আর নেই। অনেকখানি বদলেছে।’

গণমাধ্যমে অনৈক্য ও বিভাজন সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে উল্লেখ করে মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘আমি আশা করব, পত্রিকায় পত্রিকায়, ইদানীং আবার টেলিভিশনে টেলিভিশনের মধ্যে যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে, এটি অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।’

নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর বলেন, ‘বাংলাদেশে আজকের দিনে যখন মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন করছেন, ঠিক তার এক বছর আগেও সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে এই দিবসটি পালন করেছিলেন। কিন্তু এই দুদিবসের মধ্যে অনেক অনেক পার্থক্য সূচিত হয়েছে। কিংবা পার্থক্য সূচিত হওয়ার লক্ষণগুলো দেখা দিয়েছে।’

নূরুল কবীর বলেন, ‘সেটা আমরা কতটা ইতিবাচক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারি, এটা কেবল গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর নির্ভর করে না, সেটা নির্ভর করে প্রধানত রাষ্ট্র যারা পরিচালনা করেন, যারা আইন প্রণয়ন ও পরিবর্তন করেন, তাদের ওপরও অনেকাংশে নির্ভর করে।’

আলোচনায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ বলেন, দীর্ঘ ফ্যাসিবাদের কবলে পড়ে অনেক গণমাধ্যম বন্ধ হয়েছে, তারাও অনেক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন, সেগুলো আর ভবিষ্যতে চাইবেন না। জনগণের সমর্থন নিয়ে যারা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবে, তারা মুক্ত গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সভায় বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পাদক ছাড়াও রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ। আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, দৈনিক সংবাদের নির্বাহী সম্পাদক শাহরিয়ার করিম প্রমুখ।


২৩ মে সারা দেশে হেফাজতের বিক্ষোভ কর্মসূচি

শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১২ দফা দাবির মধ্য দিয়ে শেষ হয় হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ। সমাবেশে নারী সংস্কার কমিশন বাতিলসহ ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানান দলটির নেতা-কর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় আগামী তিন মাসের মধ্যে বিভাগীয় সম্মেলন এবং নারী সংস্কার কমিশন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে আগামী ২৩ মে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

শনিবার (৩ মে) দুপুরে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসমাবেশে নতুন এই দুই কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনটির মহাসচিব সাজিদুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় আগামী তিন মাসের মধ্যে বিভাগীয় সম্মেলন করা হবে। আগামী ২৩ মে বাদ জুমা চার দফা দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।’

এর আগে, হেফাজত ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠিত নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিলসহ ১২ দফা ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।

মহাসমাবেশে বক্তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশে কুরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো নীতি বাস্তবায়ন করা যাবে না। এক্ষেত্রে আমরা কোনো ছাড় দেবো না। এই বিতর্কিত কমিশন ও কোরআনবিরোধী প্রতিবেদন অবিলম্বে বাতিল করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম অংশীদার আলেম-ওলামার পরামর্শ নিয়ে নতুন কমিশন গঠন করুন।

পাশাপাশি শাপলা চত্বরে সংঘটিত গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করারও আহ্বান জানান তারা। বলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জীবন দিতে প্রস্তুত। কিন্তু কুরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড বরদাশত করা হবে না।

বক্তারা বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য কমিশন হয়েছে, জুলাই আন্দোলনের গণহত্যার জন্য কমিশন হয়েছে, কিন্তু মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে সংঘটিত গণহত্যার বিচারের জন্য কেন তদন্ত কমিশন গঠন হবে না?

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করা হলেও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে করা মামলা প্রত্যাহার করা হয়নি। এসব মামলা অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানান তারা।

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন সম্পর্কে সমালোচনা করে হেফাজতে ইসলামের নেতারা বলেন, নারীবিষয়ক যে সংস্কার কমিশন, তাতে যেসব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা কুরআন-সুন্নাহবিরোধী। তাদের সংস্কার প্রতিবেদন যদি পাস করা হয় তাহলে জীবন দিয়ে তা রুখে দেওয়া হবে। মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে হেফাজতে ইসলাম।

মহাসমাবেশ থেকে ফিলিস্তিন ও ভারতে ‘মুসলিম গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধে’ সরকারকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়।


জোবাইদার ৪ ধরনের নিরাপত্তা চেয়ে আইজিপিকে বিএনপির চিঠি

ডা. জোবাইদা রহমান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমানের চার ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছে চিঠি দিয়েছে দলটি। গত সোমবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তারের স্বাক্ষরে এই চিঠি দেওয়া হয়।

আবদুস সাত্তার চিঠি দেওয়ার কথা নিশ্চিত করে বলেন, ডা. জোবাইদা রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই চিঠি দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসা শেষে আগামী সোমবার দেশে ফিরবেন। ডা. জোবাইদা রহমান তার সফরসঙ্গী হিসেবে দেশে আসবেন এবং ধানমন্ডির তার বাবার বাসায় অবস্থান করবেন। জিয়া পরিবারের সদস্য এবং তারেক রহমানের সহধর্মিণী হিসেবে তার জীবনের নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। সে কারণে তার ঢাকার বাসায় অবস্থানকালীন এবং যাতায়াতের সময় একজন স্বশস্ত্র গানম্যান, গাড়িসহ পুলিশ প্রটেক্টশন, বাসায় পুলিশ পাহারা এবং বাসায় আর্চওয়ে স্থাপনের মধ্যদিয়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডনে উন্নত চিকিৎসা শেষে আগামী ৫ মে সকালে দেশে ফিরবেন বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে। তার সঙ্গে দুই পুত্রবধূ (তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান) থাকবেন।

সাবেক নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের মেয়ে জোবাইদা রহমান ২০০৭ সালে স্বামী তারেক রহমানকে উন্নত চিকিৎসার লন্ডনে নিয়ে যান। এরপর তিনি আর দেশে ফেরেননি।

তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেছিল।


আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে : নাহিদ ইসলাম

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এবি পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বক্তব্য দেন এনসিপি’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করে অতিদ্রুত তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এবি পার্টির ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটি রায় দিয়েছে, তারা এ দেশে আর কখনো রাজনীতি করতে পারবে না। আমরা যখন বলি জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে আওয়ামী লীগের ব্যাপারে তখন উপায় হচ্ছে একটি ভোটের মাধ্যমে, অন্যটি রাজপথে তাদের অবস্থান জানান দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে, যা ৫ আগস্টে হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে একটি গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। সেখানে এ দেশের জনগণ মুজিববাদ ও আওয়ামী লীগকে অস্বীকার করেছে। জনরোষে পড়ে আওয়ামী লীগের নেতারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এরপরে আওয়ামী লীগ এ দেশে রাজনীতি করতে পারবে কি পারবে না এ আলোচনা আসতে পারে না। তারা রাজনীতির নৈতিক ভিত্তি হারিয়েছে। এখন তার আইনি বন্দোবস্ত কি হবে, সেটাই বিষয়। এ বিষয়ে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে পারি সে পথ আমাদের বের করতে হবে উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করে অতি দ্রুত তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে এবং বিচারের মাধ্যমে আমরা তাদের বিষয়ে একটি চূড়ান্ত ফয়সালা পাবো।


নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ চাইলেন রিজভী

বরিশালে অশ্বীনী কুমার হল চত্বরে জেলা ও মহানগর শ্রমিক দল আয়োজিত মহান মে দিবসের র‍্যালি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা ও নির্বাচনের মাধ্যমে জনগনের অধিকার জনগনের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

আজ বৃহস্পতিবার বরিশালে অশ্বীনী কুমার হল চত্বরে জেলা ও মহানগর শ্রমিক দল আয়োজিত মহান মে দিবসের র‍্যালিপূর্ব সমাবেশে এই দাবি জানান তিনি।

রিজভী বলেন, পালিয়ে গিয়েও দেশে হত‍্যার রাজনীতি অব‍্যাহত রেখেছেন ফ‍্যাসিস্ট শেখ হাসিনা। ২৬২ জনকে হত‍্যার হুমকি দি‍য়ে তার দেওয়া বক্তব্য ফরেনসিক রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে। গোয়েন্দারা প্রমাণ পেয়েছে যে ওই বক্তব্যের কন্ঠ তারই ছিল।

তিনি বলেন, একটি কথা মনে রাখতে হবে, এদেশে আবারো ফ‍্যাসিস্ট ফিরে এলে আপনার আমার কারো রেহাই নেই। অতএব দ্রুত নির্বাচন দিয়ে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে। কেবল তাহলেই সম্ভব হবে পতিত ফ‍্যাসিস্টকে চিরতরে নির্মূল করা। জনগণই পারবে ফ‍্যাসিস্ট ঠেকাতে।

সমাবেশ শেষে মহান মে দিবস উপলক্ষে রিজভীর নেতৃত্বে শ্রমিক দলের র‌্যালিটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণের পর পূনরায় সদর রোডে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

জেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ফয়েজ আহম্মেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান ও আবু নাসের রহমতউল্লাহসহ স্থানীয় নেতারা।


৩১ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে জাকসু নির্বাচন

জাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জাবি প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন আগামী ৩১ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে।

গতকাল বুধবার রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে জাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান।

উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (জাকসু) গঠনতন্ত্রের ৮ (খ) ধারা অনুযায়ী আগামী ৩১ জুলাই ২০২৫ তারিখ সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচন একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে।’


ভোটে নির্বাচিত সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে: আমীর খসরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, সেটা যে সরকারই হোক।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে জোটেরর মিত্র শরিক দল ন্যাপ-ভাসানী, আমজনতার দল ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সাথে আলাদা আলাদা বৈঠকের পর সংবাদ ব্রিফিং-এ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন।

তিনি বলেন, ‘গত ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অবস্থার অর্ডারটা ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহিতা থাকবে সেটা যে সরকারই হোক।'

‘বাংলাদেশের জনগণ এখনো অন্তর্বর্তী সরকারকেই ভালো সমাধান মনে করছে’.. আল-জাজিরায় দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস যে জনগণের কথা বলেছেন ‘সেই জনগণ কারা’ তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, কোনো মহামানব দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য বাংলাদেশের মানুষকে অপেক্ষা করতে হবে, সেটা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নাই।'

নির্বাচন প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যারা ফ্যাসিবাদ অবসানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সাথে যারা রাস্তায় ছিল ইতিমধ্যে ৫০টি দল পরিস্কারভাবে ব্যক্ত করেছে ডিসেম্বরে আগে নির্বাচন দিতে হবে এবং সাথে সাথে সংস্কারের যে কথা বলা হয়, যে সংস্কারগুলোতে ঐকমত্য হবে সেই সংস্কারগুলো ইমিডিয়েটলি করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে রোডম্যাপ দিয়ে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়াটা।'

গুলশানে সোমবার তিনটি রাজনৈতিক দলের সাথে আলাদা আলাদাভাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বৈঠকে বসেন।

ন্যাপ-ভাসানীর নেতৃত্বে দেন দলটির চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম।

আমজনতার দলের নেতৃত্ব ছিলেন দলটির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মশিউজ্জামান এবং বাংলাদেশ পিপলস পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাজমা আখতার।


ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে নতুন দল, মহাসচিব শওকত মাহমুদ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের অগ্রদূত ও খ্যাতিমান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। দলটির নাম রাখা হয়েছে ‘জনতার পার্টি বাংলাদেশ’। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় রাজধানীর শাহবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের রূপসী বাংলা গ্র্যান্ড বলরুমে (নিচতলা) এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দলটির আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেওয়া হয়।

দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘গড়ব মোরা ইনসাফের দেশ’- এ স্লোগানকে সামনে রেখে রাজনীতির মাঠে যাত্রা শুরু করেছে ‘জনতার পার্টি বাংলাদেশ’। দলটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন এবং মহাসচিবের দায়িত্বে আছেন বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে দলের নাম ও ইশতেহার পাঠ করেন শওকত মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, প্রতিটি গণঅভ্যুত্থান, বিপ্লব ও আন্দোলনের পর সংগ্রামী চেতনায় নতুন রাজনৈতিক দলের জন্ম হয়েছে। তিনি মনে করেন, রাষ্ট্রকে একাত্তরের ও ২০২৪ সালের গণজাগরণের চেতনায় পুনর্গঠন করতে হলে নতুন রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব সময়ের দাবি। এ প্রেক্ষাপটে সব ধরনের বৈষম্য, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে, জনকল্যাণ, ইনসাফ ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে এবং গর্বিত জাতীয়তাবোধ দৃঢ় করতে তারা এ নতুন দল গঠনের ঘোষণা দিচ্ছেন।’

অনুষ্ঠানে দলের ২৭ সদস্যের অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা করেন ইলিয়াস কাঞ্চন, যিনি ‘নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। ঘোষিত কমিটির তথ্য অনুযায়ী, ইলিয়াস কাঞ্চন চেয়ারম্যান এবং গোলাম সারোয়ার মিলন নির্বাহী চেয়ারম্যান ও মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন রফিকুল হক হাফিজ, ওয়ালিউর রহমান খান, রেহানা সালাম, মো. আবদুল্লাহ, এম এ ইউসুফ এবং নির্মল চক্রবর্তী। মহাসচিব শওকত মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এম আসাদুজ্জামান। যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন এ বি এম রফিকুল হক তালুকদার রাজা, আল আমিন রাজু ও নাজমুল আহসান।

সমন্বয়কারীর দায়িত্বে রয়েছেন নুরুল কাদের সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ আহমেদ, প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক গুলজার হোসেন এবং প্রচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন হাসিবুর রেজা কল্লোল।

দলটির সম্মানিত সদস্য হিসেবে রয়েছেন মেজর (অব.) ইমরান এবং কর্নেল (অব.) সাব্বির। উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন শাহ মো. আবু জাফর, মেজর (অব.) মুজিব, ইকবাল হোসেন মাহমুদ, ডা. ফরহাদ হোসেন মাহবুব, জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, আউয়াল ঠাকুর, তৌহিদা ফারুকী ও মামুনুর রশীদ।

নতুন দল গঠনের ঘোষণার আগেই ইলিয়াস কাঞ্চনের কাছে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন ‘জনতার বাংলাদেশ পার্টি’র চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম সবুজ খান। গতকাল বৃহস্পতিবার পাঠানো ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ১৩ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ‘জনতার বাংলাদেশ পার্টি’র আত্মপ্রকাশ করা হয়। এরপর ২০ এপ্রিল দলের নিবন্ধনের জন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। তবে মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারা যায়, ‘জনতার পার্টি বাংলাদেশ’ নামে একটি নতুন দল গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। এতে ‘জনতার বাংলাদেশ পার্টি’ ও ‘জনতার পার্টি বাংলাদেশ’ নাম দুটি প্রায় একই হওয়ায় সারা দেশে দলটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। তারা হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এতে দলটির জন্য ক্ষতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে এবং গণতান্ত্রিক চর্চার সৌন্দর্য বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, ইতোমধ্যে ‘জনতা’ শব্দ ব্যবহার করে যেসব রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে, তার মধ্যে রয়েছে ‘জনতার বাংলাদেশ পার্টি’, ‘জাতীয় জনতা পার্টি’ ইত্যাদি। নামের এই সাদৃশ্য সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে জনসচেতনতা তৈরিতে সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। ১৯৯৩ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন নিহত হওয়ার পর থেকেই তিনি ‘নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’ আন্দোলনের মাধ্যমে এ ইস্যুতে দেশজুড়ে জনমত গঠনে কাজ করে আসছেন। বিভিন্ন সময় তাকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হলেও এবারই তিনি প্রথমবারের মতো সরাসরি রাজনীতির মাঠে নামলেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন দল গঠনের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাড়ে ছয় মাসে অন্তত ১৬টি নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে। সে ধারাবাহিকতায় এবার নতুন দল গঠনের মাধ্যমে যুক্ত হলেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।


সংস্কার নাকি নির্বাচন এই খেলা বাদ দিন, সবার আগে বিচার: সারজিস

জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম
আপডেটেড ২৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১৪:১৬
প্রতিনিধি, ঢাবি

দেশের রাজনৈতিক দলগুলো সময়ের বিবেচনায় আগে সংস্কার নাকি আগে নির্বাচন এই প্রতিযোগিতায় নেমেছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।

তিনি বলেন, আপনারা একটি কথা মাথায় ঢুকিয়ে রাখুন। সংস্কার নাকি নির্বাচন এই খেলা বাদ দিয়ে সবার আগে হতে হবে হত্যাকাণ্ডের বিচার। পিলখানা, শাপলা ও জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের অন্য কোন কিছুর নাম নেওয়া প্রাসঙ্গিক হতে পারে না।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে অনুষ্ঠিত শহীদি সমাবেশে বক্তব্যে এই কথা বলেন তিনি।

ইনকিলাব মঞ্চ এই সমাবেশের আয়োজন করেন।

সারজিস আলম বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে বলবো, এই জেনারেশনকে ভয় করুন। যদি এই জেনারেশনের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে যদি তাদের ইমোশন নিয়ে খেলেন তাহলে তারা কাউকে টেনে নামাতে পারে। কুয়েটের ভিসিই তার প্রমাণ।

সারজিস বলেন, আগে বাংলাদেশের মানুষ তাকিয়ে থাকতো কখন যুক্তরাষ্ট্র স্যাংশন দিবে, কখন হাসিনা মারা যাবে বা কখন নতুন নির্বাচন হবে। এরপর তারা মাঠে নামার প্রস্তুতি নিতো। আর যখন ছাত্র জনতা হাসিনাকে বিদায় করেছে সেই হাসিনার খুনের বিচার হওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ অন্য কোন কিছুর নাম নেওয়া এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুখে মানায় না।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করার জন্য বিভিন্ন মহল নানা কারণ দেখাচ্ছে ও পায়তারা করছে বলেও অভিযোগ করেন সারজিস।

বলেন, এই মহল আমাদেরকে শোনায় বহির্বিশ্বে তাদের ইমেজ ক্ষুন্ন হতে পারে। এই স্টেক হোল্ডার ও বিভিন্ন মহলকে আমরা বলতে চাই, বিগত ১৬ বছরে যখন পিলখানা, শাপলা হত্যাকাণ্ড আর সর্বশেষ জুলাই হত্যাকাণ্ড হয়েছে তখন এই বহির্বিশ্বে কোথায় ছিল? তারা আমাদেরকে পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গি দেখায়। সেই পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কোথায় ছিল, যখন হেলিকপ্টার থেকে ছোট ভাইদের হত্যা করা হয়েছে।

সারজিস বলেন, এই ভারত বাংলাদেশে অনেকগুলো খুনের হুকুমদাতা। এই ভারত আশ্রয় দিয়েছে খুনি শেখ হাসিনাকে। শেখ হাসিনাকে ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে পারে না। খাতা-কলমের সম্পর্ক জনগণের সম্পর্ক এক নয়।

ভারতকে উদ্দেশ্য করে সারজিস বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের সাথে প্রতিবেশীর সম্পর্ক দেখতে চায় তাহলে যেসব খুনিকে তারা আশ্রয় দিয়েছে তাদেরকে বাংলাদেশে পাঠাতে হবে।


প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশে সংস্কার করে আসছে বিএনপি: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশে সংস্কার করে আসছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলায় বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির উদ্যোগে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তারেক রহমান বলেন, জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালনে বিএনপি বদ্ধপরিকর। শুধু ঢাকায় নয়, দলের ঘোষিত ৩১ দফা নিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ে কাজ করছে বিএনপি।

বিএনপি মানুষের আস্থা ধরে রাখতে দীর্ঘ ত্যাগ স্বীকার করেছে উল্লেখ করে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকবে, কিন্তু ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। কোনোভাবে যেন এ দেশের মানুষের ভোটের ও গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জনগণের ভোটের আর রাজনৈতিক অধিকার বাধাগ্রস্ত হলে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে।

তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিরোধী দলগুলোর ত্যাগকে বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। আমাদের সফলতা অর্জন করতে হলে এখনো অনেক পরিশ্রম করতে হবে। যেকোনো মূল্যে এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

দলের ৩১ দফা প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, এই ৩১ দফা জনগণের কাছে পৌঁছতে পারলেই দলের প্রতিশ্রুতি পূরণ করা যাবে।

রাজনীতিকে টিকিয়ে রাখতে হলে জনগণ ছাড়া কোনো উপায় নেই বলেও মন্তব্য করেন তারেক রহমান। তিনি আরও বলেন, আমরা জুলুম করব না, প্রতিশোধ নেব না। আমরা প্রতিশোধ নিতে চাই ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে। আমরা দেশের জনগণের কাছে রাষ্ট্রের আগামী কাঠামো তুলে ধরব। জনগণ যাতে আগামী দিনে বিএনপির ওপর আস্থা রাখতে পারে। তাই জনগণের আস্থা ধরে রাখতে প্রতিটি বিএনপি নেতা-কর্মীকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য ভাতা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ছাড়া কৃষিকে আধুনিকায়ন, কৃষকদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হবে।

তারেক রহমান আরও বলেন, ভোট যদি আপনার পক্ষে আনতে হয় তাহলে আপনাকে জনগণের কাছে যেতে হবে, আপনার সংস্কার যদি চলমান রাখতে হয়, সেটিকে বাস্তবায়ন করতে হয়, তাহলে আপনাকে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণ ছাড়া আপনাদের কোনো বিকল্প নেই। বিএনপি আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, বাংলাদেশে যেকোনো মূলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, যেকোনো মূল্যে মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

বিগত সরকারের বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিগত ফ্যাসিস্টের আমলে দেশের বিচার ব্যবস্থা, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা সব ধ্বংস হয়েছে। বিষয়টি অনেকটাই ডায়াবেটিসের মতো।


আ.লীগ কীভাবে রাজনীতি করবে, সেটা নির্ধারণের দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের: রিজভী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগ কীভাবে রাজনীতি করবে, সেই দায়িত্ব বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বেলা ১১টায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার চারু শিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের অগ্নিদগ্ধ বাড়ি পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘সমস্ত গণতন্ত্রকামী মানুষ আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু কনস্টিটিউশনালি বা আইনগতভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ভিত্তি নেই।’

‘যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, তারা প্রত্যেকেই আপনাদের সমর্থন করেছে। সে অনুযায়ী আপনারা দেশ চালাচ্ছেন। এখন আওয়ামী লীগ কীভাবে রাজনীতি করবে, সে দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের,’ যোগ করেন তিনি।

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘প্রশাসন আপনাদের হাতে, অন্য সব স্টেট মেশিনারি আপনাদের হাতে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে আপনারা কী করবেন, সেটা আপনাদেরই ঠিক করতে হবে।’

‘আওয়ামী লীগের দোসরদের অনুসারীরা ঘাপটি মেরে আছে নানা জায়গায়। ওদের কাছে পেট্রোল কিনে বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার যে অর্থ, মানুষকে হত্যা করার জন্য যে অস্ত্র লাগে, সেসব তাদের কাছে আছে।’

তিনি বলেন, ‘সেটাকে দমন করতে আপনাদের কী আইন প্রণয়ন করতে হ,বে সেটা আপনারা জনগণের কাছে খোলাসা করুন। যেহেতু প্রশাসন আপনাদের হাতে। দোসরদের অনেকেই পালিয়ে গেছে পার্শ্ববর্তী দেশসহ অনেক জায়গায়। কিন্তু যারা নৈরাজ্য ছড়াচ্ছে তারা প্রশ্রয় পাচ্ছে কার দ্বারা?’

‘যারা ১৫ বছর যাবত শেখ হাসিনাকে পাহারা দিয়েছে, ব্যাংক লুট করেছে, অন্যের সম্পদ লুট করেছে, টাকা পাচার করেছে, তারা আজ এই জনসমুদ্রের ভিতর কোথায় লুকিয়ে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার যদি খুঁজে বের করতে না পারে, তাহলে তো এই সরকারকে মানুষ ব্যর্থ সরকার বলবে,’ ভাষ্য রিজভীর।

এ সময় মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক ও সাবেক সভাপতি আফরোজা খানম রিতা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আজাদ খান, গোলাম আবেদীন কায়সার, বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া হাবু, যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক তুহিনুর রহমান তুহিন, মাসুদ পারভেজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জিন্নাহ খান, ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল খালেক শুভ, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম খান সজীব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি সংস্কৃতি ও খেলাধুলা বাধ্যতামূলক করা দরকার: তারেক রহমান

লালমনিরহাট জেলা পরিষদ মিলনায়তন অডিটোরিয়ামে বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক দিনব্যাপী কর্মশালায় দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কথা বলছেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
লালমনিরহাট প্রতিনিধি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি সংস্কৃতি ও খেলাধুলা একটি বড় বিষয়। পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুরা যাতে বাধ্যতামূলকভাবে সংস্কৃতি ও খেলাধুলাসহ সব অ্যাক্টিভিটিসে যুক্ত থাকে। এর ফলে শিশুদের যেমন মানসিক বিকাশ ঘটবে তেমনই তাদের শারীরিক বিকাশও ঘটবে।

তিনি আরও বলেন, পত্র-পত্রিকা খুললেই সংস্কার আর সংস্কার। সংস্কার কিন্তু শুরু করেছে বিএনপি। শহীদ জিয়া প্রথম সংস্কার শুরু করেছেন খাল খননের মধ্য দিয়ে। বিএনপি যদি জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সব খাল খনন করে জীবিত করা হবে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রথম কাজ হবে খাল খনন কর্মসূচি। নদীগুলোও খনন করা হবে।

গতকাল মঙ্গলবার লালমনিরহাট জেলা পরিষদ মিলনায়তন অডিটোরিয়ামে বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক দিনব্যাপী কর্মশালায় দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।

কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির আয়োজিত এই কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালার শেষ বেলায় বিকেলে ভার্চুয়ালি যোগ দেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

কর্মশালায় অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তারেক রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশ যদিও ল্যান্ড ওয়াইজ (আয়তনের ক্ষেত্রে) বড় দেশ না, তবুও জনসংখ্যার ভিত্তিতে অনেক বড়। লালমনিরহাটের যেমন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কিছু বৈশিষ্ট্য আছে তেমনই কুড়িগ্রামের আছে, চট্টগ্রামের আছে, কুষ্টিয়ার ওইদিকেও আছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কৃষ্টিকালচার সংস্কৃতি আছে। সে রকম আলাদা আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্যও আছে। আর এই বৈশিষ্ট্যটাই হচ্ছে আমাদের ঐতিহ্য।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি যতবার দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে দেশীয় কৃষ্টি-কালচারকে সামনে এগিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছে। আমরা জানি গত ১৭ বছর বহু সংস্কৃতিকর্মী কষ্টে জীবনযাপন করেছেন। চিকিৎসার অভাবে কষ্টে দিনযাপন করেছেন। যখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কাছে সুযোগ ছিল এমন অনেক সংস্কৃতিকর্মীকে সহযোগিতা করা হয়েছিল। আমাদের সামগ্রিক চিন্তার মধ্যে যেটি রয়েছে তা হচ্ছে আমাদের এই কালচারকে এগিয়ে নিয়ে যাব। প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও কালচারাল একটি বিষয় থাকবে। খেলাধুলার বিষয় থাকবে। পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুরা যেন বাধ্যতামূলকভাবে সব অ্যাক্টিভিটিসে যুক্ত থাকে। এর ফলে তাদের যেমন মানসিক বিকাশ ঘটবে তেমনই শারীরিক বিকাশও ঘটবে।

তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের লক্ষ্যে দেশের জনগণের স্বার্থে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি।

কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরা, নেওয়াজ হালিমা আরলি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা ইকবাল হোসেন শ্যামল। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় লালমনিহাট জেলার পাঁচ উপজেলার দুই শতাধিক নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

কর্মশালায় অংশ নেওয়া বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মনে করেন, তারেক রহমানের ৩১ দফার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশে শান্তি ফিরে আসবে, সব সেক্টর দুর্নীতিমুক্ত হবে, দেশে থাকবে না একনায়কতন্ত্র শাসন ব্যবস্থা।

এর আগে কর্মশালার প্রথম অধিবেশনে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, তারেক রহমানের ৩১ দফার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন হবে। একদলীয় শাসনের মাধ্যমে দেশের মানুষ আর জিম্মি থাকবে না। ৩১ দফার মাধ্যমেই দেশে শান্তি ফিরে আসবে।

তিনি আরও বলেন, পাশ্ববর্তী দেশ ভারত বাংলাদেশের মানুষকে মানুষ মনে করেনি, তারা তাদের মনঃপুত একটি দলকে প্রাধান্য দিয়েছে। জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ দেখিয়ে দিয়েছে, তারা বাইরের প্রভুত্ব মানে না।


ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বিএনপি : নজরুল ইসলাম খান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

আগামী ডিসেম্বর ধরেই জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এ সময়ে ভোট আয়োজনে বাঁধা দেখছে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও সরকারের চাওয়ার মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। সরকার তো বলেনি ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে না। তিনি বলেন, ‘এজন্য আমরা বলেছি, ডিসেম্বরের একটা তারিখ ধরে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক।’

আজ সোমবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে লেবার পার্টির সঙ্গে লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। এটাকে ধরে একটা রোড ম্যাপ ঘোষণা করা হোক। সরকার বলছে যে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তার মানে তারা তো বলেনি যে, ডিসেম্বর নির্বাচন হবে না। কিন্তু আমরা বলছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে এরকম একটা তারিখ ধরে রোড ম্যাপ ঘোষণা করা হোক। পার্থক্য তো খুব বেশি না।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সরকারের কথা অনুযায়ী নির্বাচন ডিসেম্বরে হতে পারে, জানুয়ারিতে হতে পারে, ফেব্রুয়ারিতেও হতে পারে। কাজেই আমাদের সঙ্গে সরকারের পার্থক্য তো বহু মাসের না। আমরা শুধু সরকারকে বলছি, এভাবে না বলে, এভাবে বলেন।’

চলতি বছরের মাঝামাঝি নির্বাচন কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের দ্বায়িত্ব পূর্ণ করতে যাচ্ছেন। তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচনে বাধা কোথায় প্রশ্ন রেখে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, যারা ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় না তাদেরই উত্তর দিতে হবে বছরের শেষে ভোটগ্রহণে অসুবিধা কোথায়?

বিএনপি ৩১ দফা থেকে সরে যাচ্ছে কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এখানে সরাসরি কোনো ব্যাপার নেই। ৩১ দফা বিএনপির প্রস্তাব। সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব এসেছে এর প্রেক্ষিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের মতামত প্রদান করেছে। এটা নিয়ে এখনো কোনো ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠা হয়নি। আমরা বলেছি পর পর দু’বারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না। এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, সিদ্ধান্ত হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম তখন আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছিলেন, এর চেয়ে ভালো কোনো প্রস্তাব যদি কারো কাছে থাকে তাহলে সেটা আমরা বিবেচনা করবো। এ কারণে আমরা দেখবো এর চেয়ে ভালো প্রস্তাব যদি কেউ দেয় সেটা যদি অধিকতর যুক্তিসংগত হয় তবে গ্রহণ করার সঙ্গে ৩১ দফার থেকে বিচ্যুত হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।’

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দাবি করছে প্রশাসন বিএনপির হয়ে কাজ করছে, সেক্ষেত্রে তারা মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে পাল্টা প্রশ্ন রেখে নজরুল ইসলাম বলেন, যারা অভিযোগ করছেন তারা সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন, তারাই বিএনপির লোক বসিয়ে এসেছেন কিনা?

তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে তো প্রশাসন থেকে উৎখাত করা হয়েছে। কোথাও বিএনপির কোনো ছিল না। যারা বৈষম্যের শিকার ছিল, যাদেরকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের ৭’শ অফিসারকে এখনো কোথাও পদায়ন করা হয়নি। তাহলে বিএনপির লোককে বসানো হলো কোথায়?’

বৈঠক শেষে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, জনগণ ও রাজনীতিবিদদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ড. ইউনূস ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেবেন। লেবার পাটির পক্ষ থেকে বিএনপির কাছে জাতীয় কনভেনশন করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।


banner close