আমানউল্লাহ আমান
বিরোধী দল সাম্প্রতিক সময়ে যে আন্দোলন করছে সেটাকে একটা বৃত্তের ভেতরেই রাখতে চায় ক্ষমতাসীন দল ও সরকার। বৃত্তের বাইরে যাওয়া কিংবা সরকারি দলের মূল্যায়নে ‘সীমা লঙ্ঘন’ করলেই বাধার সম্মুখীন হতে হবে তাদের।
বিরোধীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে বাধা না দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের পর থেকেই অনেকটা জোরেশোরে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টায় আছে আন্দোলনমুখী রাজনৈতিক দলগুলো। রাজপথে কর্মসূচির পাশাপাশি তৎপরতা বাড়িয়েছে ঘরোয়া রাজনীতিতেও। ঘরোয়া তৎপরতায় বাধা না থাকলেও রাজপথের কর্মসূচিতে বাধা আসছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান মনে করেন, সরকারি দল বিরোধী দলকে আন্দোলনে কোনো বাধা দিচ্ছে না। তাদের আন্দোলনে বাধা না দিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে। কিন্তু তারা রাস্তায় বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে, নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে। তখন হয়তো পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘সরকারি দল মুখে বলে একটা, কাজ করে আরেকটা। শান্তিপূর্ণভাবে আমরা কর্মসূচিগুলো করছি, ওই কর্মসূচিগুলোতে তারা বারবার আক্রমণ চালাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বলছেন, রাজপথে বিএনপি জনগণের সাড়া না পেয়ে সহিংসতা করছে। ওই সব ঘটনায় সরকার ও আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা নেই। ক্ষমতাসীন দলটির শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, বিএনপিসহ বিরোধীরা আপাতত নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের সুযোগ পেলেও সীমারেখার ভেতরেই রাখতে হবে আন্দোলন। সীমার বাইরে গেলেই বাড়বে রাজনৈতিক চাপ।
সূত্রগুলোর দাবি অনুযায়ী, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে আন্দোলন করার সুযোগ দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আসার পর গত ৫ মাসে টানা রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে দলটির ওই সব কর্মসূচিতে উপস্থিতি আগের তুলনায় বেড়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের সরকারবিরোধী কর্মসূচিতে সরব উপস্থিতি কিছুটা হলেও চিন্তায় ফেলেছে ক্ষমতাসীন দলকে।
তাদের ধারণা, সরকারবিরোধী কর্মসূচিতে বিএনপির কর্মীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকলে তারা সাহসী হয়ে উঠতে পারে। পরে সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছুটা বেগ পেতে হবে। নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মনোবলে। তাই সরকার ও ক্ষমতাসীন দল প্রথম দিকে নমনীয় হলেও এখন কৌশলে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে। আপাতত হামলার ঘটনাগুলোর বিষয়ে সরকার কঠোর মনোভাব দেখানোর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা মাঠে সতর্ক অবস্থায় থাকছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একজন সদস্য দৈনিক বাংলাকে বলেন, এ সব হামলার ঘটনায় দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। সাধারণ মানুষ মনে করবে হয় আমরা দলীয়প্রধানের কথা শুনছি না অথবা দলীয়প্রধান বাধা না দেয়ার নির্দেশটি শুধু বলার জন্য বলেছেন।
গত ২২ আগস্ট থেকে বিরোধীদের ডাকা বিভিন্ন কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা শুরু হয়। ওই সব হামলার ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে বলে গত ১৮ সেপ্টেম্বর জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, অতিউৎসাহী হয়ে কেউ হামলা করে থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পর দিন ১৯ সেপ্টেম্বর একই সুরে দলীয় নেতা-কর্মীদের সতর্ক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য ওই দিন তিনি বলেন, নেত্রীর নির্দেশনার বাইরে কেউ হামলায় জড়িয়ে পড়লে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব।
গত ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে দলের নেতা-কর্মীদের আবারও সতর্ক করে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। বলে দিয়েছি শৃঙ্খলাভঙ্গ যেই করবে শেখ হাসিনা তাদের রেহাই দেবেন না।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র বলছে, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে অবস্থান করা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনাতেই দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
কিন্তু এর পর দিনই মুন্সীগঞ্জে বিএনপি কর্মীদের সঙ্গে বড় সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় আহত একজনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দলের শীর্ষ নেতা ও সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীদের হুঁশিয়ারির পরও হামলা-মামলা থামছে না।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান দৈনিক বাংলাকে বলেন, বিএনপি যে অবস্থায় আছে তাদের অতীত কর্মকাণ্ডের জন্যই তাদের গোলমাল বাধাতে হয়। বাংলাদেশের ২৯টি জায়গায় বিএনপি সমাবেশ করেছে যেকোনো কারণেই হোক। গোলমাল হলেই সংবাদ হয়। সুতরাং তারাই গোলমাল বাধায়। আমাদের গোলমাল বাধানোর কোনো দরকার নেই। তাই নেতৃবৃন্দ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, দলের কেউ জড়িত থাকলে আমরা দেখব।
তিনি বলেন, আমরা আন্দোলনে বাধা দিইনি। আমরা কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন নিবৃত্ত করতে চাই না। জনগণের সাড়া না পেয়ে ভিন্ন স্বার্থ হাসিলে আন্দোলনের নামে তারা সহিংসতা করতে চাচ্ছে। আন্দোলনের নামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করলে তো বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। নিষ্ক্রিয় নেতা-কর্মীদের চাঙা করতে আন্দোলন-আন্দোলন খেলছে বিএনপি। তাদের মূল লক্ষ্য নির্বাচন, আন্দোলন নয়। আমরা বিএনপির ধ্বংসাত্মক রাজনীতির বিরুদ্ধে দেশের জনগণকে সচেতন করব।
তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন, সরকার বা ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্য কথার কথা। তাদের কথার প্রতিফলন বাস্তবে দেখা যাচ্ছে না। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, যদি তারা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আন্তরিকভাবে এসব কথা বলে থাকেন তাহলে আমরা মনে করব তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। কিন্তু যেভাবে অসংখ্য মামলা করেছে তাতে মনে হয় না কোনো শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। গণতান্ত্রিক পরিসর যদি চালু করে এবং দলগুলোকে রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে দেয় তাহলে বোঝা যাবে তাদের আন্তরিকতা আছে।
সরকার ও ক্ষমতাসীনদের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, সতর্ক বার্তার পরেও মুন্সীগঞ্জে কী ভয়াবহ কাণ্ড ঘটে গেল। ছেলেটা মারা গেল। অন্যান্য জায়গাতেও এ রকম ঘটনা ঘটছে। শান্তিপূর্ণভাবে আমরা কর্মসূচিগুলো করছি, ওই কর্মসূচিগুলোতে তারা বারবার আক্রমণ চালাচ্ছে। আমরা বারবার বলেছি, আমাদের সাংবিধানিক অধিকার আছে। আমাদের কর্মসূচি করতে দিন। গণতন্ত্র তখনই রক্ষা পাবে যদি সরকার গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে চায়।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সূত্রগুলোর দাবি, বিরোধীদের আন্দোলন করতে না দেয়াটা আওয়ামী লীগ বা সরকারের উদ্দেশ্য না। কোথাও কোথাও প্রশাসন, পুলিশ ও দলের নেতা-কর্মীদের অতি উৎসাহী তৎপরতায় হামলার ঘটনাগুলো ঘটছে। বিএনপির দলীয় কোন্দলের বহিঃপ্রকাশও আছে ওই সব হামলার ঘটনায়। বিরোধীদের আন্দোলনকে একটা রাজনৈতিক গণ্ডির ভেতরে রাখাই সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের মূল চাওয়া। যাতে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্ষমতাসীনদের নিয়ন্ত্রণে আছে বলে মনে হয়।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে বিএনপি যাতে মাঠে দৃশ্যমান হতে পারে সেই কৌশলেই আগাচ্ছে তারা। তাই বিএনপি ও বিরোধীদলগুলোর জন্য আন্দোলনের সীমারেখা বেঁধে দিতে চায় আওয়ামী লীগ। সীমারেখার বৃত্তে আবদ্ধ রাখার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দলীয় কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকছে আওয়ামী লীগও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একজন সদস্য দৈনিক বাংলাকে বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা, ২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কট ও ঠেকানোর নামে জ্বালাও-পোড়াও করে বিএনপি রাজনীতির মাঠে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ি রক্ষা, মামলায় সাজা হওয়ার পরও কোনো জনসম্পৃক্ত আন্দোলন করতে পারেনি। ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়েও তারা ছিল অনেকটা সংশয়ে। পুরো প্রভাব নিয়ে মাঠে থাকতে পারেনি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো বয়কট করেছে লাগাতারভাবে। সব মিলিয়ে বিএনপি এখন একটা গণ্ডির ভেতরেই আছে।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, কোণঠাসা বিএনপির কর্মসূচি পালনে বাধা নেই। কিন্তু কর্মসূচিতে উপস্থিতির ওপর ভর করে বিএনপি অন্য কোনো পথে যাতে না যায় সে জন্য চাপ অব্যাহত থাকবে। চাপের কৌশল হিসেবেই শক্তি দেখানোর জন্য কোথাও কোথাও হামলার ঘটনা ঘটছে। এতে করে ভয় পেয়ে বিরোধীকর্মীদের মাঠে উপস্থিতি কমে এলে ক্ষমতাসীনদেরই লাভ। আন্দোলন যাতে সারা দেশে ছড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়ে আওয়ামী লীগ সতর্ক।
সরকারি দলের নেতারা মনে করছেন, নির্বাচন ছাড়া দেশে সরকার পরিবর্তনের সুযোগ নেই। আর নির্বাচনের এখনো ১৪ মাস বাকি। বিএনপি যদি এখনই সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করে দেয় তাহলে নির্বাচন এগিয়ে আসতে আসতে ক্লান্ত হয়ে পড়বে। সাংগঠনিকভাবে আরও ভেঙে পড়বে। শেষ দিকে দুর্বল বিএনপি সব দাবি ছেড়ে বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হবে বলে আওয়ামী লীগের ওই নেতাদের ধারণা। তাই উভয় দিকেই লাভ দেখছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।
যারা বাংলাদেশে নির্বাচন চায় না, তারাই ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। শনিবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, চট্টগ্রামে হামলার ঘটনার পর প্রশাসন যদি কঠোর ব্যবস্থা নিত, তবে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতো না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, হামলা ও সহিংসতার মাধ্যমে পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি যদি মনে করে নির্বাচন রুখে দেবে, তবে সেটি তাদের ভুল ধারণা।
ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, রাজনৈতিক বিতর্ক থাকতেই পারে, কিন্তু ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যে যেন কোনো ফাটল না ধরে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। জাতীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকলে এ ধরনের অপতৎপরতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। এছাড়া, ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে আহূত ঐক্যের ডাকে সাড়া দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে বিএনপি সেখানে যোগ দেবে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, যারা গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে নিয়ে রাজনীতি করে এর একক মালিকানা দাবি করেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে, সেই রাজনীতি ব্যর্থ হয়েছে। সেই সঙ্গে যারা ৭১ এর চেতনাকে ব্যবহার করে রাজনীতি করতে চেয়েছিল তারাও চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে বিজয়ের মাস উপলক্ষে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধে এদেশের সব মানুষেরই সংগ্রাম ছিল। একাত্তেরকে যারা দলীয়করণ করতে চেয়েছে তারা ইতিহাসের আস্তাকূড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। চব্বিশের গণঅভ্যত্থানে শহীদদের রক্তের প্রত্যাশা যেটি সেটি বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির প্রত্যাশা। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, বৈষম্যমূলক সমাজ ব্যবস্থা থেকে মুক্তি, গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং হারানো মানবধিকার ফিরে পেতে চেয়েছে। এগুলোর সমষ্টিগত অভিপ্রায়ের চূড়ান্ত রূপ হচ্ছে গণঅভ্যুত্থান। গণঅভ্যুত্থান শুধুমাত্র ৩৬ দিনের আন্দোলনের ফসল নয়। ২০০৯ থেকে ২৪ পর্যন্ত এ দীর্ঘ স্বৈরাচার বিরোধী সংগ্রামে বহু রক্ত দিতে হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, একটি দল আওয়ামী লীগের ভোট পাওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের বিপক্ষে একটি কথাও বলে না। যারা নিজের দেশের নাগরিককে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে নির্বিচারে হত্যা করেছে এদের ইতিহাস যেন আমরা ভুলে না যাই।অনেকে বলেছিল পিআর ছাড়া নির্বাচন হবে না, আবার একইদিনে গণভোট হলে মানব না। এরা সবাই গণতন্ত্রের বিপক্ষের শিবির, এরা নিজেদের মতো করে গণতন্ত্র চায়। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে জনগণের ভোট দেয়ার প্রত্যাশা নিশ্চিত হয়েছে। বিএনপির গণতন্ত্রের সংজ্ঞা জনমানুষের গণতান্ত্রিক সংজ্ঞা। ভবিষ্যতে রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে মেধাভিত্তিক ও প্রযুক্তি নির্ভর রাজনীতি করতে হবে বলে জানান তিনি।
কৃষিকে আধুনিকায়ন ও উন্নত করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃষকদের মেরুদণ্ড যদি শক্তিশালী হয় তাহলে জাতির অর্থনীতির মুক্তি হবে। কারণ দেশের ৬০ শতাংশ মানুষ কৃষক। বাংলাদেশের মাটি ১২ মাস ফলনের জন্য উপযুক্ত। এসময় তিনি দলের কর্মীদের স্বাস্থ্য কার্ড, ফ্যামিলী কার্ড ও শিক্ষা কার্ডের উপকারিতা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে বোঝানোর আহবান জানান।
৩১ দফা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুধুমাত্র অপরিকল্পিত আবেগী ধর্মীয় মিক্সার নিয়ে আমরা নির্বাচনের যাব না। আমরা যাব সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে। সেই পরিকল্পনা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই সমগ্র জাতির সামনে উপস্থাপন করেছিলেন। ৩১ দফা জাতির মুক্তির সনদের ঠিকানা। ৩১ দফা বাংলাদেশের রাজনীতির মহাকাব্যে পরিণত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, মিরপুর বাঙলা কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, তিতুমীর কলেজ, ঢাকার বিভিন্ন ইউনিটের নারীনেত্রী এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ও বর্তমান নেতারা অংশ নেন।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও সকল প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
এ ছাড়া আগামীকাল সারা দেশে দলটি বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ দলের এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
রিজভী বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলা, চট্টগ্রামে বিএনপির একজনের ওপর হামলাসহ আইশৃঙ্খলার উন্নতি, অপরাধীদের গ্রেপ্তারের আওতায় আনতে শনিবার ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে ৩টা ১৪ মিনিটের দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন তিনি।
তিনি বলেছেন, গণতন্ত্রে রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো জায়গা নেই। কোনো সময়ই না। আমাদের মতাদর্শ যাই হোক না কেন, যে কেউ ভয়ভীতি বা শক্তির আশ্রয় নিলে তাকে একসঙ্গে প্রত্যাখ্যান করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, যখন পুরো জাতি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন খোদ ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে ঘটে যাওয়া এ ঘটনার নিন্দা জানানোর কোনো ভাষা নেই। আমি তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। আমি আশা করি অন্তর্বর্তী সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সন্ত্রাস দমনে দৃঢ়ভাবে ব্যবস্থা নেবে।
উল্লেখ্য, রাজধানীর বিজয়নগরের কালভার্ট রোডে নির্বাচনি প্রচার চালানোর সময় দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর এ ঘটনা ঘটে।
বিএনপি একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রত্যাশা করছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া এ তফসিলের মাধ্যমে একটি নতুন সুযোগের সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানান তিনি। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা যে, নির্বাচন কমিশন একেবারে নিরপেক্ষভাবে, সুষ্ঠুভাবে, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে। এখানে সব রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থী সবাই সচেতনভাবে এ নির্বাচনকে একটি উৎসবমুখর নির্বাচনে পরিণত করবে। কারণ, আমরা সবাই জানি যে, বিগত ১৫ বছর এ দেশে নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে। সুতরাং আজ আবার একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা আজকে একটা নতুন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক একটা পার্লামেন্ট গঠন করতে সক্ষম হবো।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, প্রায় ৯ মাস রাষ্ট্রের যে বিষয়গুলোতে সংস্কার প্রয়োজন ছিল, সেগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। অনেকগুলো বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি, কতগুলো বিষয়ে একমত হতে পারিনি, সেগুলো গণভোটের মাধ্যমে আসবে। একইসঙ্গে আমরা মনে করি যে, আজকে এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।’
প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলেও জোটের সঙ্গে বোঝাপড়ায় কোনো সমস্যা আছে কি না এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের কোনো সমস্যা নেই, রাজনৈতিক দলের মধ্যে এগুলো থাকেই। আমরা চূড়ান্তভাবে তো প্রার্থী তালিকা দেইনি, আপনারা সবাই জানেন। সেই তালিকা এখন চূড়ান্ত হবে, হয়েই গেছে প্রায়। যারা আমাদের সঙ্গে যুগপৎভাবে আন্দোলন করেছেন, তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে।’
দীর্ঘ সময় পর একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন হতে চলেছে। সেক্ষেত্রে এ দিনটি মির্জা ফখরুলের জন্য বিশেষ কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে, এটা অত্যন্ত আনন্দের দিন। আমি একটি কথা কিন্তু আপনাদের বরাবরই বলেছি যে, নির্বাচনের ব্যাপারে আমার কোনো আশঙ্কা নেই, এরকম কোনো চিন্তায় ভুগছি না যে, নির্বাচন হবে কি না। নির্বাচন হতেই হবে এবং সেটার ঘোষণা হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ নির্বাচন হবে।’এসময় তফসিল ঘোষণার পরও যারা নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন তাদেরকে ‘শঙ্কাবাদী’ হিসেবেও উল্লেখ করেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আগামী নির্বাচনে জনগণের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়াই বিএনরি লক্ষ্য।
তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়েই দেশে আবারও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। আন্দোলন সংগ্রাম এখনো শেষ হয়ে যায়নি। নির্বাচনে জয়লাভের মধ্য দিয়েই দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশিত বিজয় অর্জন করতে হবে। জনগণের কাছে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা। ইনশাআল্লাহ আগামী ফ্রেব্রুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে বিএনপি সক্ষম হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা বিভিন্ন সংকটের কার্যকর সমাধান শুধু জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারই দিতে পারে। তাই রাজনৈতিক পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি। জনগণের প্রধান চাহিদা হলো- গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা এবং উৎসবমুখরভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ।
বিএনপি ও দেশের মানুষের জন্য আসন্ন নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সামাজিক সংস্কৃতিক অধিকার সুনিশ্চিত করার জন্যই আমাদের আজকের এই লড়াই। আগামী নির্বাচন অত্যান্ত গুরত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে অন্তর্ভুক্তি মূলক জাতি গড়তে পারবো কিনা সেই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে নিতে হবে।
বিএনপি দেশে একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে চায় উল্লেখ করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, বিএনপির জাতীয়তাবাদী চিন্তাভাবনা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা এ দেশটাকে একটি শান্তির নীড় হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য সহনশীলতা থাকতে হবে। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা থাকতে হবে। দ্বিমত পোষণ করলেও সম্মান থাকতে হবে। আগামী দিনের যে মুক্তির সংগ্রাম সেটা শুধু রাজনৈতিক মুক্তি নয়, মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং সামাজিক অধিকার, ভোটের অধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাও এর লক্ষ্য। তাই দেশের প্রতিটি নাগরিকের কাছে বাংলাদেশের উন্নয়নের ফসল পৌঁছে দেয়ার যে রাজনীতি সেটার জন্য আমরা প্রস্তুত। আগামী দিনে মানুষের প্রত্যাশিত যে বাংলাদেশ, সেটা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা করতে পারব বলে প্রত্যাশা করি।
মাগুরায় জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় ঐতিহাসিক নোমানী ময়দান থেকে বিশাল এক বর্ণাঢ্য নির্বাচনী প্রচারণা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মিছিলে অংশ নেওয়া বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী একই পোশাকে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে অংশ নেন, যা পুরো কর্মসূচিতে আলাদা বৈশিষ্ট্য তৈরি করে।
শুরুতে নোমানী ময়দানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মাগুরা জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির সহকারী অধ্যাপক মাওলানা সাঈদ আহমেদ বাচ্চু। জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী মাওলানা মারুফ কারখীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মাগুরা-১ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও সাবেক জেলা আমির আলহাজ্ব আব্দুল মতিন, মাগুরা–২ আসনের মনোনীত প্রার্থী সহকারী অধ্যাপক মাওলানা এমবি বাকের, জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা মাহবুবুর রহমান, ইসলামী ছাত্র শিবিরে জেলা সভাপতি মোঃ আমিনউদ্দীন আশিকসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশ শেষে একটি বিশাল নির্বাচনী মিছিল বের হয়। মিছিলটি ভায়না মোড় হয়ে ঢাকা রোড প্রদক্ষিণ করে চৌরঙ্গী মোড়ে এসে জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর সহকারী অধ্যাপক মাওলানা সাইদ আহমেদ বাচ্চু আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ করেন। হাজার হাজার নেতা–কর্মীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে শহরব্যাপী উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়।
নেতারা বলেন, জনগণের অধিকার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই তাদের এই কর্মসূচি। তারা শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাগেরহাটের মোংলায় আনজিরা বেগম নামের ৬৫ বছর বয়সী এক অসহায় বৃদ্ধাকে নতুন ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম তার নিজস্ব উদ্যোগে উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নে এই ঘরটি নির্মাণ করে দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আনজিরা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে এই নতুন ঘরের উদ্বোধন করেন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মোংলা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু হোসেন পনি, সাংগঠনিক সম্পাদক শাকির হোসেন এবং সোনাইলতলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মারুফ বিল্লাহসহ স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, স্বামী ও সন্তানহীন আনজিরা বেগম দীর্ঘদিন ধরে অন্যের জমিতে পলিথিন মোড়ানো জরাজীর্ণ ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। বিষয়টি বিএনপি নেতা ফরিদুল ইসলামের নজরে আসার পর তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে ওই বৃদ্ধার জন্য এই নতুন ঘরটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। জীবনের শেষ সময়ে এসে একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন আনজিরা বেগম।
উল্লেখ্য, জনকল্যাণমূলক কাজের অংশ হিসেবে এর আগে গত ৬ ডিসেম্বর বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ভাগা এলাকার আরেক অসহায় ও বাকপ্রতিবন্ধী ভিক্ষুক দীপালি রানী শীলকেও তারেক রহমানের পক্ষ থেকে একটি নতুন ঘর উপহার দিয়েছিলেন শেখ ফরিদুল ইসলাম।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আগামী নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশের জনগণ একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গঠনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দেশের মানুষের মালিকানা তাদের হাতেই ফিরিয়ে দিতে হবে। আগামী দিনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি জনগণের আকাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়ে তুলবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ সময় তিনি আরও উল্লেখ করেন, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমেই ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের জন্য একটি বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই এখন মূল লক্ষ্য।
জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ঠিক আগ মুহূর্তে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শিগগিরই দেশে ফেরার বার্তা দিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বক্তব্যের শুরুতেই মির্জা ফখরুল উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান শিগগিরই আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। তিনি যেদিন বাংলাদেশে পা দেবেন, সেদিন যেন তার আগমনে সমগ্র বাংলাদেশ কেঁপে ওঠে, তা নিশ্চিত করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। ফখরুল প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, নেতা ফেরার সেই দিনটিতেই তারা গোটা বাংলাদেশের চেহারা বদলে দিতে চান। বিএনপি মহাসচিব আরও উল্লেখ করেন, দলের নেতার চিন্তাভাবনা বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং প্রগতির পথে এগিয়ে নিতে তারা বদ্ধপরিকর।
গত ৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া বিএনপির এই কর্মশালায় দলের অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতারা অংশ নিচ্ছেন। উল্লেখ্য, আজ সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন। রাজনীতির এমন গুরুত্বপূর্ণ মোড়েই দলের শীর্ষ নেতার দেশে ফেরার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন বিএনপি মহাসচিব।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বিএনপি শতভাগ প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে অংশ নিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তিনি এ কথা জানান। রুমিন ফারহানা বলেন, দীর্ঘ অপেক্ষার পর বাংলাদেশ একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এই মুহূর্তটির জন্যই দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করেছে এবং নানান চড়াই-উতরাই ও ঝড়-ঝাপটা সহ্য করেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি চাইলে ২০১৪ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিরোধী দলে থাকতে পারত। কিন্তু দলটি চেয়েছিল একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, যেখানে জনগণের ম্যান্ডেট প্রতিফলিত হবে। সেই কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ তৈরি হওয়ায় এবং ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে যাওয়ায় বিএনপি এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। আগামীর রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ এখন নির্মূলের রাজনীতি থেকে বের হয়ে সুস্থ প্রতিযোগিতার যুগে প্রবেশ করবে। এ সময় তিনি বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের উদাহরণ টেনে বলেন, একটা সময় কাউকে ভিন্নমতের বা শিবিরের তকমা দিয়ে নির্যাতনের সংস্কৃতি চালু ছিল, যা থেকে বের হয়ে আসার এখন সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে।
নির্বাচনী মাঠে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বাদানুবাদ ও পাল্টাপাল্টি বক্তব্য প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানা বলেন, ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর একে অপরের দুর্বলতা নিয়ে কথা বলা বা সমালোচনা করা বিশ্বব্যাপীই স্বাভাবিক ঘটনা। জামায়াত যখন স্লোগান দেয় ‘নৌকা-ধানের শীষ দুই সাপের এক বিষ’, তখন বিএনপি বিষয়টিকে সিরিয়াসলি নেয় না। কারণ, জনগণ জানে অতীতে কার কী ভূমিকা ছিল।
টক শোতে জামায়াত আমিরের জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব এবং এনসিপি নেতাদের ৩০০ আসনে জয়ের আশাবাদ নিয়েও কথা বলেন রুমিন। তিনি বলেন, আগে ভোট হতে হবে, তারপর আসনের হিসাব। এনসিপির ৩০০ আসন পাওয়ার দাবির বিষয়ে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন। পাশাপাশি জাতীয় সরকারের ধারণাটি নতুন কিছু নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির ৩১ দফাতেই সব দল ও মতের মানুষকে নিয়ে সরকার গঠনের কথা পরিষ্কারভাবে বলা আছে। এমনকি ২০১৬ সালে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাঁর ‘ভিশন ২০৩০’-এ জাতীয় সরকারের রূপরেখা আগেই তুলে ধরেছিলেন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের প্রথম ধাপের ১২৫ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। তবে ঘোষিত তালিকায় জায়গা পাননি গত জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের স্যালুট দিয়ে দেশজুড়ে আলোচনায় আসা রিকশাচালক সুজন।
গত ২০ নভেম্বর সন্ধ্যায় এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে ঢাকা-৮ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্যে দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন সুজন। কিন্তু আজ ঘোষিত প্রথম তালিকায় তাঁর নাম দেখা যায়নি। এমনকি ঢাকা-৮ আসনে দলটির পক্ষ থেকে অন্য কোনো প্রার্থীর নামও ঘোষণা করা হয়নি। উল্লেখ্য, জুলাই অভ্যুত্থানের সময় রাজপথে শিক্ষার্থীদের প্রতি সুজনের স্যালুটের দৃশ্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল এবং তিনি আন্দোলনের অন্যতম প্রতীকী চরিত্রে পরিণত হয়েছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। তিনি জানান, মনোনয়নপত্র বিতরণের কাজ শেষ হওয়ার পর যাচাই-বাছাই শেষে এই প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তবে এটিই চূড়ান্ত নয় বলে ইঙ্গিত দেন তিনি। আখতার হোসেন বলেন, আজ যাদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, তাদের কারও বিরুদ্ধে যদি কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়, তবে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হবে।
বিগত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশ যেন একটি ‘কালো মেঘের নিচে চাপা’ পড়ে ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি উল্লেখ করেন, এই দীর্ঘ সময়ে ভিন্নমতের রাজনৈতিক কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ—সবাইকেই রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে।
তারেক রহমান বলেন, পতিত সরকারের শাসনামলে রাতের আঁধারে দরজায় কড়া নাড়া, মিথ্যা মামলা, গুম ও নির্যাতনকে একটি সংস্কৃতিতে পরিণত করা হয়েছিল। অসংখ্য পরিবার তাদের প্রিয়জনদের অপেক্ষায় দিন কাটিয়েছে, যারা আর কখনো ফিরে আসেনি। তিনি দাবি করেন, এই নিপীড়নের সবচেয়ে বড় বোঝা বিএনপিকেই বহন করতে হয়েছে। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম ও হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় দলের নেতাকর্মীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এমনকি ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানেও বিএনপির নেতাকর্মীদের রক্তই সবচেয়ে বেশি ঝরেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, শুধু রাজনৈতিক দল নয়; ছাত্র, সাংবাদিক, লেখক ও সাধারণ মানুষও এই ভয়ের সংস্কৃতির শিকার হয়েছেন। কেড়ে নেওয়া হয়েছিল মানুষের মর্যাদা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তারেক রহমান জানান, ২০১৫ সাল থেকে তাঁর কণ্ঠরোধ করা হয়েছিল। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তিনি গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারের পক্ষে লড়াই চালিয়ে গেছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ত্যাগের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, এই অন্ধকার সময়ে দেশনেত্রী ছিলেন ধৈর্য ও প্রতিরোধের প্রতীক। মিথ্যা মামলা ও কারাবাসের মাধ্যমে তাঁকে রাজনৈতিকভাবে নিঃশেষ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি গণতান্ত্রিক আদর্শ থেকে সরে আসেননি। তারেক রহমান নিজের পরিবারের ওপর হওয়া নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে বলেন, তাঁর মা নিজ চোখে সন্তানকে জেলে নেওয়া ও নির্যাতনের যন্ত্রণা সহ্য করেছেন এবং তাঁরা আরেক ভাইকে চিরতরে হারিয়েছেন।
ভবিষ্যৎ রাজনীতির রূপরেখা নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান স্পষ্ট করে বলেন, বিএনপি প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, বরং সমাধানের পথে হাঁটতে চায়। কষ্ট মানুষকে মহান করে তোলে—মায়ের এই শিক্ষা ধারণ করে তিনি এমন একটি রাষ্ট্র গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন, যেখানে সরকারের সমর্থক বা বিরোধী কাউকেই আর রাষ্ট্রের ভয়ে ভীত হতে হবে না। তিনি বলেন, আজ রাজনীতির চেয়েও বড় প্রয়োজন একটি ঐক্যবদ্ধ দেশ, যেখানে মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সুরক্ষিত থাকবে এবং ভিন্ন মতের কারণে কাউকে গুম বা খুনের শিকার হতে হবে না।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের প্রেক্ষাপটে আবরার ফাহাদ, ইলিয়াস আলী, সাগর-রুনিসহ অসংখ্য শহীদের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বিএনপি মারাত্মক ক্ষতি সহ্য করেও ভেঙে পড়েনি। সত্য, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের ওপর বিশ্বাস রেখে দলটি আরও শক্তিশালী হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এমন নিপীড়ন ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি আর ফিরে না আসে এবং মানবাধিকারই যেন হয় ভবিষ্যতের ভিত্তি—সেই লক্ষ্যেই বিএনপি কাজ করে যাবে।