বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩

রায়কে ‘ফরমায়েশি’ বলে ফখরুল আদালত অবমাননা করেছেন: কাদের

ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি
আপডেটেড
৩১ মে, ২০২৩ ১৬:৫৫
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ৩১ মে, ২০২৩ ১৪:৩২

সরকারবিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে আদালত ‘ফরমায়েশি রায়’ দিয়ে কারাগার পাঠাচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘দুর্নীতির মামলায় ইতিপূর্বে বিএনপির দুই নেতাকে নিম্ন আদালতের দেয়া সাজা বহাল রেখে দেশের উচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছেন, সে সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দেশবাসীকে হতাশ করেছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে ফরমায়েশি রায় বলে মির্জা ফখরুল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা দেশের আইন ও পবিত্র আদালত অবমাননার শামিল।’

বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন কাদের।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির এই দুই নেতার আজকের পরিণতি তাদের ধারাবাহিক অপরাজনীতিরই ফসল। বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনমালে হাওয়া ভবন খুলে তারা দুর্নীতি ও লুটপাটের মহোৎসবে মেতে উঠেছিল, যার পরিণতিতে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সেসময় হাওয়া ভবনের কর্ণধার জিয়াপুত্র তারেক রহমানের দুর্নীতির খতিয়ান বিশ্ব গণমাধ্যম ও বিশ্বখ্যাত গোপন নথি প্রকাশকারী সংস্থা উইকিলিকসে বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে।’

কাদের বলেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির দুই নেতার দুর্নীতির মামলার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কোনো যোগসূত্র নেই। ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে এবং তাদের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় নিম্ন আদালত শাস্তিমূলক রায় দেন। প্রায় ১৬ বছর বিচারিক-প্রক্রিয়া শেষ করে আদালত তাদের সাজা দেন।’

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের পবিত্র সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও গুরুত্বপূর্ণ নেতারাও আইন ও বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। এমনকি বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড এবং বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলায়ও ছাত্রলীগের নেতারা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ভোগ করছে।’

ক্ষমতাসীন দল বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন করেছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন করেছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশের বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করে স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিএনপিই বিচারব্যবস্থাকে দলীয়করণ করেছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা খুনি জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করার মধ্য দিয়ে পবিত্র সংবিধানকে কলঙ্কিত করে। মূলত জিয়াউর রহমান দেশে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি চালু করে। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিচারহীনতার সংস্কৃতির পরিবর্তে দেশে আইনের শাসন পুনপ্রতিষ্ঠিত হয়।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে তাদের দলীয় গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করেছে এবং দলের চিহ্নিত শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষা দিয়েছে। অনুরূপভাবে তারা বিজ্ঞ আদালতের রায়কে ফরমায়েশি রায় বলে দেশের উচ্চ আদালত এবং পবিত্র সংবিধানকে অবমাননা করেছে। মার্কিন নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করার পর বিএনপি তাদের বিদেশি প্রভুদের কাছ থেকে করুণা প্রাপ্তির আশায় সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত। উচ্চ আদালতের রায়কে ফরমায়েশি বলা তাদের সেই চলমান ষড়যন্ত্রেরই অংশ। এ ধরনের অপরাধের জন্য দেশের জনগণের কাছে তাদের অচিরেই জবাবদিহি করতে হবে।’


এবার ১২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা আ. লীগের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

এবার ১২ দিনের লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক যৌথসভা শেষে এ কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়। এসব কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছে দলের শীর্ষ নেতারা।

আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের এই সভা শেষে ব্রিফ করেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।

তিনি জানান, ২৩ সেপ্টেম্বর বাইতুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ২৮ সেপ্টেম্বর ইদ-ই-মিলাদুন্নবী ও শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া মাহফিল। ২৯ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা। ২৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর উত্তরায় সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ এবং যাত্রাবাড়ীতে সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। ২৬ সেপ্টেম্বর কেরানীগঞ্জে সমাবেশ করবে ঢাকা জেলা, ২৭ সেপ্টেম্বর টঙ্গীতে সমাবেশ করবে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগ, একই দিন কাফরুলে সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। ৩০ সেপ্টেম্বর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে কৃষক সমাবেশ করা হবে। ৪ অক্টোবর চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ।


ঢাকা দক্ষিণ আ. লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজকে অব্যাহতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তারা জানিয়েছেন, রিয়াজের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ উঠেছে। তার ভিত্তিতে কেন্দ্রের নির্দেশে তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সাংগঠনিকভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। এরপর তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রে সুপারিশ করা হবে।


খাগড়াছড়ি জেলা আ.লীগ: নির্বাচন এলেই প্রকট হয় দ্বন্দ্ব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আবদুল জলিল, খাগড়াছড়ি

হোক জাতীয় কিংবা স্থানীয়। খাগড়াছড়িতে নির্বাচন এলেই জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের দ্বন্দ্বে উত্তাপ ছড়ায় জেলার রাজনীতিতে। আর এ দ্বন্দ্বের বলী হন সাধারণ নেতা-কর্মীরা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আবার প্রকাশ্যে এসেছে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব।

জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিনের এ দ্বন্দ্বটা মূলত আলম পরিবার বনাম জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে। শুরুটা ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে। ২৯৮ নম্বর খাগড়াছড়ি আসনে মনোনয়ন দেয়া হয় তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে; কিন্তু সেই নির্বাচনে দলের বিপক্ষে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হন তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলম। পরে অবশ্য তাকে বহিষ্কার করা হয়। তবে ২০১০ সালের দিকে ‘বাঙালি নেতৃত্ব’-এর অজুহাতে আবার তাকে দলে ফিরিয়ে সাধারণ সম্পাদকের পদ দেয়া হয়।

২০১১ ও ২০১৫ সালে পৌরসভা নির্বাচনে জাহেদুল আলমের ছোট ভাই রফিকুল আলম আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচন করে জয়ী হন। এ সময় ভাইকে সমর্থন দিয়ে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় আবারও জাহেদুল আলমকে বহিষ্কারের প্রস্তাব যায় কেন্দ্রে। দীর্ঘ প্রায় এক বছরের মতো তার বহিষ্কারাদেশ নিয়ে দোদুল্যমান অবস্থায় ছিল দল। এতে করে আওয়ামী লীগে দুটি পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। মূল অংশের পাশাপাশি জাহেদুল আলমের নেতৃত্বেও আলাদা ব্যানারে কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছিল প্রায় তিন বছর ধরে। জেলা কার্যালয়ও ছিল দুটি৷

ফলে কোন্দল তৃণমূলে বিস্তৃত হতে শুরু করে। একাধিক বার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়েছে এ নিয়ে। জনগণ বলতে শুরু করে- ‘এ আসনে আওয়ামী লীগের শত্রু আওয়ামী লীগই।’

২০১৪ ও ২০১৮ সালে খাগড়াছড়ি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে বিজয়ী হন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তিনি সবসময় আলম পরিবার ও জেলা আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব নিরসন করার চেষ্টা করে আসছিলেন। তবে এ দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে বরাবরের মতোই সুবিধা নিতে চাচ্ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী কয়েকজন নেতা।

সবশেষ ২০২১ সালের খাগড়াছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী। এ নির্বাচনেও বরাবরের মতোই স্বতন্ত্র প্রার্থী হন রফিকুল আলম। তবে রফিকুল আলমের ছোট ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম নৌকার প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করেন। লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি হলেও বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। নির্বাচনে হেরে গিয়ে রফিকুল আলম আবার জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের বিপক্ষে শুরু করেন নতুন ষড়যন্ত্র।

স্থানীয় সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপুর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিভিন্ন মিডিয়ায় বক্তব্য দিতে থাকেন। একইভাবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় এমপি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিপক্ষে বিভিন্ন মিডিয়ায় বক্তব্য দিচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রণ বিক্রম ত্রিপুরা, সহ-সভাপতি সমীর দত্ত, সহ-সভাপতি তপন কান্তি দে, মাটিরাঙ্গা পৌর মেয়র শামসুল হকসহ দলের কয়েকজন নেতা।

আবার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপির পক্ষে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতারা ৷ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলে লেখালেখি হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি পৌরসভার সাবেক মেয়র রফিকুল আলম বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পছন্দ না হওয়ায় বারবার তিনি নাগরিক ব্যানারে নির্বাচন করেছেন। তবে জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করেছেন। এ সময় তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন।

‘আওয়ামী লীগের কর্মী হয়ে কীভাবে বারবার নৌকার বিপক্ষে গিয়ে নির্বাচন করেন’- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি দুঃসময়ে, দুর্দিনে, রক্ত দেয়ার সময় ও দলের জন্য অর্থ খরচে ছিলাম। নীতি-নৈতিকতাহীন প্রার্থীদের বিপক্ষে নির্বাচন করেছি।’

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র শামসুল হক বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি একটি পরিচিতি সভা ছাড়া কোনো প্রোগ্রাম করতে পারেননি। তিনি একক ক্ষমতা চালাতে চান। আমরা খাগড়াছড়িতে পরিবর্তন চাই।’

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু জানান, নির্বাচন এলেই এরা দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। ১৯৯১ সাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে তারা নৌকার বিরোধিতা করে আসছে।

এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, সমীর দত্ত চাকমা কখনো আওয়ামী লীগে ভোট দেয়নি। রণ বিক্রম ত্রিপুরা ১৯৯১ সালে নিজেই নির্বাচন করেছে ও ১৯৯৬ সালে নিজেই বিরোধিতা করেছে। আর আলম পরিবার সবসময় নৌকার বিরোধিতা করেছে। নির্বাচন এলেই তারা নানা ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে।


বিরোধীদের প্রতি ক্ষমতাসীনদের বার্তা: নির্বাচন ভণ্ডুলের চেষ্টা করবেন না  

আপডেটেড ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৫:২০
আমানউল্লাহ আমান

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের চূড়ান্ত প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে বিরোধী শিবির। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেয়া ও নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবি বিএনপি ও তার যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীদের।

অন্য দিকে সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। নিজেদের দাবির পক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে পদযাত্রা ও গণমিছিল কর্মসূচি পালন করছিল বিএনপি ও তার আন্দোলন সঙ্গীরা। বিরোধীদের ওই কর্মসূচির দিনে শান্তি সমাবেশ ডেকে রাজপথেই ছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

এরই মধ্যে বিরোধীদের হুমকিকে পাত্তা না দিয়ে কঠোর বার্তা দিতে চায় ক্ষমতাসীনরা। তারা মনে করছে, সম্প্রতি দলীয় সভাপতির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিশাল জমায়েতের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়ে গেছে। বিরোধীদের আন্দোলনের মূল দাবি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি সরকারের কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে না। বিদেশি কূটনীতিকদের কাছ থেকে এ বিষয়ে কোনো ধরনর চাপও নেই সরকারের ওপর। ফলে ক্ষমতাসীনরা চায়, যথাসময়ে নির্বাচন এবং সেই নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তত্ত্বাবধায়কের দাবি যদি সরকার মেনে না নেয় তাহলে বিএনপি হয়তো নির্বাচনের অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এক্ষেত্রে সরকারই লাভবান হবে। বিএনপি হয়তো নির্বাচন প্রতিরোধের চেষ্টা করতে পারে। ক্ষমতাসীনরা এ বিষয়েও সচেতন। তারা এখনই বিরোধীদের সতর্ক করতে চায়, তারা যেন নির্বাচন ভণ্ডুলের চেষ্টা না করে।

গত ২৮ জুলাই রাজধানীতে মহাসমাবেশ করে বিএনপি। ওইদিন রাজধানীতের তারুণ্যের সমাবেশ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তিন সংগঠন। মহাসমাবেশ থেকে ২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগও। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘অনুমতি না পাওয়ায়’ পাল্টা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয় ক্ষমতাসীন দলটি। বিএনপির ডাকা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় সরকারবিরোধী আন্দোলনে ছন্দপতন হয়েছে বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।

আগস্টজুড়ে শোকের কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। বিএনপি আগস্টে কর্মসূচি দিলেও তেমন একটা সাড়া পায়নি বলে মত আওয়ামী লীগ নেতাদের। এরই মধ্যে গত ১ ও ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে বড় জমায়েত করে ক্ষমতাসীন দল। যদিও ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীতে শোভাযাত্রা করে দলটি।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, শান্তি সমাবেশ থেকে উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশের কর্মসূচি রূপ নিয়েছিল। এখন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে বড় বড় শোডাউন দিয়ে জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক সক্ষমতা দেখানোই তাদের কর্মসূচির বড় উদ্দেশ্য। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে দলীয় নেতা-কর্মীদের সতর্ক রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে স্বল্প সময়ে জমায়েত করার জন্য।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, রাজধানীর জমায়েত থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। মাসের শুরুতে শোডাউনের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ক্ষমতাসীন দলের সমালোচকদের কাছে আওয়ামী লীগের জনসমর্থন তুলে ধরা হয়েছে। বিরোধীদের নির্বাচন ঠেকানোর ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ প্রস্তুত রয়েছে। ওয়ার্ম আপ হিসেবে গত ১ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের মাধ্যমে তরুণদের কাছ থেকে জনসমর্থন ও দ্বিতীয়টা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনে আওয়ামী লীগের মাধ্যমে প্রায় ১০ লাখের মতো মানুষের উপস্থিতির মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। সবাইকে বার্তা দেয়া হয়েছে, দেশের সাধারণ জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সক্ষমতাও দেখানো হয়েছে বলে দলটির নেতাদের মতো।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান দৈনিক বাংলাকে বলেন, এই দুই সমাবেশের মাধ্যমে আমাদের প্রধান বার্তা যে আমরা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করলাম। সেই প্রচারণার যে শোডাউন সেটা সারাদেশ, জাতি এবং বিদেশে যারা আমাদের সমালোচনা করে তাদেরও দেখালাম যে, এই জনসমর্থন আমাদের আছে, আমাদের জনগণের কাছ থেকে।

তিনি বলেন, বিএনপির জন্য বার্তা যে নির্বাচনে আসো, নির্বাচন ভণ্ডুল করার কোনো প্রচেষ্টা করো না। নির্বাচনে এসে নিজেদের জনসমর্থন প্রমাণ কর।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা বলেন, চলতি মাসের শুরুতে আমরা যে শোডাউন দিয়েছি তাতে বিএনপির আন্দোলনে মনোবলে ধাক্কা লেগেছে। এই ধাক্কা এক মাসেই কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে মনে হয় না। এই মাসে খুচরা কর্মসূচি দিয়ে সাংগঠনিক শক্তি সঞ্চয়ের চেষ্টা করবে তারা। অক্টোবরের দিকে টানা কর্মসূচি দিতে পারে বিএনপি। তাদের কর্মসূচির ধরন দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ সেপ্টেম্বর ভারত সফরে যাচ্ছেন। সেখান থেকে ফেরার পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বাংলাদেশ সফর করবেন। ১৬ সেপ্টেম্বর সাভারের হেমায়েতপুর থেকে গাবতলী, মিরপুর ও গুলশান হয়ে ভাটারা পর্যন্ত মেট্রোরেল পথের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ওইদিন সাভারে সমাবেশে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। সাভারেও ঢাকার সমাবেশের মতো বড় জমায়েত করার পরিকল্পনা নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যেই ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন। প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে এই দিনটি পালন করবে আওয়ামী লীগ।


ভোটার উপস্থিতিতেই ভরসা আওয়ামী লীগের

আপডেটেড ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৩:১৮
আমানউল্লাহ আমান

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশি-বিদেশি চাপ, বিরোধীদের আন্দোলন ও নানা তৎপরতাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা মনে করেন, কূটনীতিকদের তৎপরতার মূল উদ্দেশ্যে অবাধ, ‍সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন, সংসদ ভেঙে দেয়া ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের যে দাবি বিরোধীরা করছে এ বিষয়ে কূটনীতিকদের কোনো অবস্থান নেই। নির্বাচন পদ্ধতি বা নির্বাচনকালীন সরকার নিয়েও কূটনীতিকদের কোনো প্রস্তাব বা পরামর্শ নেই। এমনকি নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আনার জন্য চাপও নেই, যা সংবিধানেও নেই। তাই আগামী নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ানোতে গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোটার ৪ লাখ ৮৮ হাজার ৬৩৩ জন। মোট ভোট পড়েছে ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ১০ দশমিক ৮৩ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। এর আগে ১৭ জুলাই অনুষ্ঠিত ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোট পড়ে ১১.৫১ শতাংশের মতো। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।

২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছিলেন প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫৩ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচত হওয়ার পরও প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পড়ে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পায় ৭২.১৪ শতাংশ।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন, বিগত দুই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে আসন্ন নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি বেশি হবে। বিশেষ কোনো দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও নির্বাচনে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সক্ষমতা, উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের পক্ষে আগ্রহের বিষয়টি প্রমাণ করার জন্যই ভোটাররা ভোট দিতে আসবেন। এ ক্ষেত্রে ভোটারদের উৎসাহিত করতে আওয়ামী লীগের বিশেষ কিছু করতে হবে না বলেও মত তাদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতা দৈনিক বাংলাকে বলেন, কাউকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানো আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নয়। নির্বাচনে যদি ৫ থেকে ১০ শতাংশ ভোটার উপস্থিত হয় তাতেও নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। কূটনীতিকরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চেয়েছেন। ওই নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশ না নেয় তাতে আমাদের জন্য সুবিধা। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে। ভোটার উপস্থিতি হয়তো একটু কম হবে। আমাদের সংবিধানে তো এমন কোনো বিধান নেই যে ন্যূনতম কত শতাংশ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ না করলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান দৈনিক বাংলাকে বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে কী বোঝায়? ইটস অ্যা মেটার অব পারসেপশন। কে কীভাবে বুঝে? বিএনপির মতো লোকেরা মনে করে বিএনপি নির্বাচনে না আসলে অংশগ্রহণমূলক হবে না। কিন্তু আমরা যত বিদেশির সঙ্গে কথা বলেছি কেউ একথা বলেনি। অংশগ্রহণমূলক বলতে জনগণের অংশগ্রহণ বোঝায়। বাংলাদেশের ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, সব বয়সী- সকলে মিলেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা মানেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।

তিনি বলেন, ভোটাররা নিজেদের মন থেকেই আসবেন। কারণ তারা উন্নয়নের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে। তাদের যে আগ্রহ সেটা প্রমাণ করার জন্যই তারা আসবেন। তাদের উৎসাহিত করার জন্য আমাদের বিশেষ কিছু করতে হবে না। আমাদের সাংগঠনিক সক্ষমতার কারণে তারা আসবেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য আরও বলেন, আমরা এটাও চাই সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক। যাদের যাদের সক্ষমতা আছে। কাউকে তো আমরা জোর করে নির্বাচনে আনব না। আনার প্রয়োজনও নেই। যাদের নির্বাচন করার সক্ষমতা আছে, তারা নির্বাচনে আসবে। যাদের সক্ষমতা নেই, যারা অতীতে জনগণের টাকা লুট করেছে, বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের অভয়ারণ্য বানিয়েছে, বাংলাদেশকে প্রায় ব্যর্থ রাষ্ট্রে রূপান্তর করেছিল, তাদের তো নির্বাচনে আসতে ভয় লাগবেই।

গত মঙ্গলবার গণভবনে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে কি উদ্যোগ নেয়া হবে, এমন এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অংশগ্রহণটা কার অংশগ্রহণ? আমার কাছে অংশগ্রহণ হচ্ছে জনগণের অংশগ্রহণ। জনগণ ভোট দেবে, সেই ভোটে যারা নির্বাচিত হবেন তারা সরকারে আসবে।

তিনি বলেন, অংশগ্রহণ বলতে কাদের অংশগ্রহণ? ভোট চোরদের? ভোট ডাকাতদের? দুর্নীতিবাজ, মানি লন্ডারিং, খুনি, ২১ আগস্ট্রের গ্রেনেড হামলাকারী, জাতির পিতার হত্যাকারী, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী? তাদের অংশগ্রহণ? এটা কি জনগণ চায়? তারা অংশগ্রহণ করলে বৈধ হবে, আর অন্য কেউ অংশগ্রহণ করলে হবে না, এটাতো হতে পারে না। অংশগ্রহণ মানে হলো জনগণের অংশগ্রহণ। তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে যতগুলো উপনির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন হল সেখানে কি জনগণ অংশগ্রহণ করেনি? জনগণতো অংশগ্রহণ করেছে। সেটাই তো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলো।

গত রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বলেছেন, বিএনপি নেতারা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা নিয়ে হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে বক্তব্য প্রদান করেছেন। এই বক্তব্যে বিএনপির ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত ও পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের অপতৎপরতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। নির্বাচন নির্দিষ্ট কোনো দলের জন্য অনুষ্ঠিত হয় না বা কোনো দলের জন্য থেমে থাকে না। ‘সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভুল রাজনীতির কারণে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া বিএনপি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে নস্যাৎ করতেই নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার লাগাতার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। জনগণের মুখোমুখি হতে ভয় পেয়ে বিএনপি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের পথে রাজনীতি করছে।’


বিএনপি এখন নিজেদের অস্তিত্ব নিয়েই দুশ্চিন্তায়: কাদের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

সরকার পতন তো দূরে থাক, বিএনপি এখন নিজেদের অস্তিত্ব নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার সকালে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন উপলক্ষে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সুধী সমাবেশস্থল পরিদর্শনকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির কর্মসূচির ওপর নেতা-কর্মীদের আস্থা নেই, জনগণেরও নেই। কালো পতাকা নিয়ে যে মিছিল হয়, সেটা শোক মিছিল। এ মিছিল দিয়ে উত্তাল পরিস্থিতি সৃষ্টি সম্ভব নয়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ কথায় নয়, কাজে বিশ্বাস করে। মেট্রোরেল ও পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার ইতোমধ্যেই তা প্রমাণ করেছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, কাওলা থেকে ফার্মগেট-তেজগাঁও রেলস্টেশন পর্যন্ত ১০-১১ মিনিটে কাভার করবে। এখানে অনেক যাত্রী আসা যাওয়া করবেন। এর সুফল অবশ্যই পাবে রাজধানীবাসী। এর সঙ্গে যখন মতিঝিল পর্যন্ত উদ্বোধন হয়ে যাবে, তখন সুফল অনেক বেড়ে যাবে এবং ঢাকা আরও আধুনিক শহরে রূপ নেবে। যান চলাচল আরও সহজ হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রকল্পের ৬৫ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে। এখন যে অংশ উদ্বোধন হচ্ছে না, সেখানেও অনেক কাজ হয়ে গেছে। আশা করছি, আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পুরোটা চালু করতে পারব। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট থেকে মগবাজার, মগবাজার থেকে কুতুবখালি পর্যন্ত গন্তব্য। পুরো অংশের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের মানুষ এখন কথা শুনতে অভ্যস্ত নয়, কাজ দেখতে অভ্যস্ত। আওয়ামী লীগ কথা দিয়ে কথা রাখে সেটা সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রমাণিত। শেখ হাসিনার সরকারের সেই উন্নয়ন কর্মসূচির কারণে আওয়ামী লীগের জনসমর্থন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।


নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হলে দেশ-বিদেশে গ্রহণযোগ্য হবে: কাদের

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

জাতিসংঘ বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আর আওয়ামী লীগ চায় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন। নির্বাচন যত প্রতিযোগিতামূলক হবে দেশ-বিদেশে তত গ্রহণযোগ্য হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে জাতিসংঘ সমন্বয় প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক শেষে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আওয়ামী লীগ চায়, সে নির্বাচনে বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক দল অংশ নিক। নির্বাচনে আসতে তাদের কোনো জোরাজুরি করব না। নির্বাচনে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের অধিকার। কোনো সুযোগ নয়।

তিনি বলেন, বিরোধী দল প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, সংসদের বিলুপ্তি, তত্ত্বাবধায়কের যে দাবিতে জোর দিচ্ছে, সে সব বিষয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই, কোনো মাথাব্যথাও নেই। তারা বলেছে, এসব বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকের আলোচনাটা একটু ভিন্ন ছিল। আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে বাংলাদেশের উন্নয়ন, এসডিজিতে করণীয় নিয়ে। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হওয়া ব্যাপক উন্নয়ন অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে বৈঠকে অংশ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত মুহাম্মদ ফারুক খান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত।


নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগে চতুর্মুখী তৎপরতা

আপডেটেড ২৩ আগস্ট, ২০২৩ ১৫:০২
আমানউল্লাহ আমান

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন শিবিরে চলছে প্রস্তুতিমূলক তৎপরতা। ভোটের আগে বিরোধীদের মোকাবিলা, ভোটকে কেন্দ্র করে বিদেশিদের পক্ষে আনা, উন্নয়ন প্রচারে গুরুত্বারোপ করে ভোট টানার পাশাপাশি দলের কোন্দল নিরসনে ত্যাগীদের মূল্যায়নের চেষ্টা আওয়ামী লীগে। দলটির নেতারা মনে করছেন, আওয়ামী লীগে কোন্দল থাকলেও জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে তা নিরসন হয়ে যাবে। তার কারণ হিসেবে তারা মনে করছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা অমান্য করবেন না।

আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী বছর ক্ষমতার ১৫ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে দলের। দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা দলটির কেন্দ্র থেকে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে রয়েছে পাওয়া না-পাওয়ার বেদনা। একই সঙ্গে বিগত দুই নির্বাচনে একচ্ছত্র বিজয়ী হওয়ায় দলটিতে মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। আর তাতেই দলীয় কোন্দল রূপ নিয়েছে বড় আকারে। একই আসনে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নিজের প্রার্থীকে জয়ী করার চেষ্টা ও জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের পদ-পদবিতে বলয় সৃষ্টি করার প্রতিযোগিতা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, তৃণমূল যে কথা বলেছে, সেটা সঠিক। পৃথিবীর কোন রাজনৈতিক দল আছে সেখানে কোন্দল নেই? এসব কোন্দল নির্বাচনকে ঘিরে। প্রতিটি আসনে ১০ জনের বেশিই প্রার্থী আছে। কিন্তু সবাই নেত্রীর কাছে বলেছেন, তিনি যাকে মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষে কাজ করবেন। আমরা আশা করি, সবাই দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন। যদি তা না করেন তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, দলের নেতা-কর্মীদের কাজ হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন ও অপকর্ম তুলে ধরা। কিন্তু তা না করে অনেকেই নিজ দলের জনপ্রতিনিধিদের নামে বদনাম ছড়ান। এমপির বিরুদ্ধে বিষোদগার, সমালোচনা প্রকারন্তরে দলের ও সরকারের সমালোচনা। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে ও জনগণের পাশে থাকতে হবে। প্রার্থী নয়, দলের পক্ষে, নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে মানুষের দরজায় যেতে হবে। যোগ্যতা, দক্ষতা ও জনপ্রিয়তার ওপরই নির্ভর করবে মনোনয়ন। সমালোচনা-বিষোদগার করে মনোনয়ন পাওয়া যাবে না।

দলীয় কোন্দল নিরসনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশনা দিয়েছেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন। ওই সূত্রের তথ্যমতে, দলের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের উদ্দেশে দলীয় প্রধান বলেছেন, দলের দুঃসময়ের যারা ছিলেন, যারা দলের জন্য নানা ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের বাদ দেয়া যাবে না। একই সঙ্গে পুরোনো কমিটিতে যারা ছিলেন, তাদেরও যেন কমিটিতে রাখা হয়।

দলীয় সূত্রগুলো বলছে, বিরোধীদের আন্দোলন মোকাবিলায় দলের পাশাপাশি জোটকে সক্রিয় করা হয়েছে। দলীয় কর্মসূচির পাশাপাশি সরকারি কর্মসূচিও বাড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগ প্রধান। এ ক্ষেত্রে অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে গত ১৫ বছরে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচার ও আওয়ামী লীগ ফের ক্ষমতায় এলে কী কী করবে তা তুলে ধরার চেষ্টা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই সর্বজনীন পেনশন ঘোষণা করেছে সরকার। এই পেনশন ব্যবস্থাকে আগামী নির্বাচনের ভোট সংগ্রহে কাজে লাগাতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি।

আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারের কাজ চলমান রয়েছে। বিগত দিনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে তার একটা চিত্র ইশতেহারে থাকবে। পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবে সে ঘোষণাও নির্বাচনী ইশতেহারে থাকবে। নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি আওয়ামী লীগ রক্ষা করে।’

জানা গেছে, আগামী নির্বাচনের প্রচারে জোরেশোরে মাঠে নামার আহ্বান জানিয়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের অর্জন তুলে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দলের নেতাদের ঘরে ঘরে গিয়ে সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের সুফল প্রচার করতে বলেন।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করা হবে। ওই দিন ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগ সুধী সমাবেশের আয়োজন করবে। যেখানে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি বিশিষ্ট নাগরিকদের বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হবে। যারা সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরবেন। এ কারণে আগামী ২ সেপ্টেম্বর সিলেটে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জনসভা স্থগিত করা হয়েছে। এ জনসভা পরবর্তী সময় হবে। সেই সময় খুলনা ও কুমিল্লা জনসভা করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এরপর আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ জেলায় সমাবেশ করবেন তিনি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কূটনৈতিক তৎপরতা বেড়েছে। ওই তৎপরতায় ক্ষমতাসীন দল চাপের মধ্যেও স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছে। কূটনীতিকরা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বললেও বিরোধীদের দাবির পক্ষে কোনো কথা বলছেন না। আর এই বিষয়টিকেই স্বস্তির জায়গা হিসেবে দেখছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। তাদের মতে, কূটনীতিকরা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চাইছেন, যেটা আমাদেরও চাওয়া। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কূটনীতিকরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা শেখ হাসিনার পদত্যাগ চান না।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, সংবিধান অনুযায়ী আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার বিষয়ে কূটনীতিকদের সঙ্গে একটা বোঝাপড়ায় যাওয়ার চেষ্টা করছে সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। সে ক্ষেত্রে দলের ও সরকারের বিভিন্ন অংশ কাজ করছে। পাশাপাশি সরকারের মিত্র ও আওয়ামী লীগের মিত্রদের কাজে লাগানো হয়েছে। সংবিধান সমুন্নত রেখে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার বিষয়টিকে ঘুরেফিরে সামনে আনাই ক্ষমতাসীনদের বড় কৌশল।

গত ২৪ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই চীন সফর করে ১৪-দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, কেন্দ্রীয় নেতা লুৎফুন নেসা খান বিউটি, তসলিমা খালেদ, জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলম স্বপন, কুষ্টিয়া জেলা সহসভাপতি আহামেদ আলী প্রমুখ।


বিএনপির নেতৃত্বে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র চলছে: কাদের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বিএনপির নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধীরা আজও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, তারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে আঘাত আনতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক থেকে মোকাবিলা করতে হবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে রক্ষিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড না হলে বাংলাদেশ এতদিনে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হত। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির অভিন্ন শত্রু।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে অর্জন ও উন্নয়নে ৫০ বছর পিছিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আজও ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তি পায়নি। বঙ্গবন্ধুকে না হারালে বাংলাদেশ এতদিনে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হত, পরিচিত পেত।


১৫ আগস্টের পেছনে জিয়া, ২১ আগস্টের পেছনে তারেক: তথ্যমন্ত্রী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘটিয়েছিল জিয়াউর রহমান আর বেগম খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ঘটিয়েছিল তারেক রহমান এবং আজকে বিএনপি মানুষ পোড়ানোর রাজনীতি করে।

মঙ্গলবার সকালে জাতীয় শোক দিবসে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের হাতে নিহত বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের সমাধিতে দলীয়ভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে দলীয় শ্রদ্ধা নিবেদনে অংশ নেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার স্ত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল। জাতির ইতিহাসে এত বেদনাবিধূর দিন আর কখনো আসেনি।

তিনি বলেন, কারবালার প্রান্তরে হযরত ইমাম হোসেনকে যখন জবাই করে হত্যা করা হয়, তখনো নারী এবং শিশুদের হত্যা করা হয়নি। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালোরাত্রিতে ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেল, ৪ বছরের শিশু সুকান্ত বাবু, ৮ বছরের শিশু আরিফ সেরনিয়াবাত, ১২ বছরের শিশু বেবি সেরনিয়াবাত, অন্তঃসত্ত্বা আরজু মনিকে হত্যা করা হয়েছিল। শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ নাসেরসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের কাউকে ঘাতকেরা রেহাই দেয়নি।

আর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। হত্যার মাধ্যমে তিনি ক্ষমতা দখল করেন এবং খুনের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে ছিলেন, বলেন হাছান মাহমুদ।

তিনি আরও বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য, বিএনপি এখনো সেই হত্যা-খুনের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। তারা ঘৃণা এবং হিংসার রাজনীতি করে, ১৫ আগস্ট মিথ্যা জন্মদিন পালন করে, কেক কাটে। দেশে যদি সুস্থ রাজনীতির ধারা চালু রাখতে হয়, তাহলে বিএনপির এই অপরাজনীতি বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।


নো বলে গুগলিও হয় না, আউটও হয় না: ফখরুলকে কাদের

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাম্প্রতিক আন্দোলনকে ‘গুলগি’ বলে আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগকে ‘বোল্ড আউট’ করার কথা বলেছেন। এর কাউন্টারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘মির্জা ফখরুল বলেছেন— আওয়ামী লীগকে গুগলি মেরে বোল্ড আউট করে ফেলেছে। গুগলি তো করেছেন, বলতো নো বল। নো বলে গুগলিও হবে না, বোল্ড আউটও হবে না।’

শনিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকীতে বনানী কবরস্থানে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা শেষে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজনীতির অঙ্গনে বিএনপি হচ্ছে ভয়ঙ্কর এক বিষফোঁড়া। এই বিষফোঁড়া যতদিন আছে, ততদিন হত্যা, ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস, যত প্রকার অশান্তি, অস্থিরতা, সবকিছুর মূলের হোতা বিএনপি। ৭৫ তাদেরই সৃষ্টি, মাস্টার মাইন জিয়াউর রহমান। ৩ নভেম্বর, মাস্টারমাইন জিয়াউর রহমান। একুশে আগস্ট, মাস্টারমাইন তারেক রহমান। হাওয়া ভবনের যুবনেতা।’

তিনি বলেন, ‘আজকে এই পরিবারই দেশের জাতীয় পর্যায়ের ১৫ আগস্টের ট্র্যাজেডির হোতা। এরাই সকল অপকর্মের মূলের দায়ী। তারা আবারও বাংলাদেশের রাজনীতিতে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে দিয়েছে।’

বিএনপি নির্বাচন চায় না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এরা নির্বাচন মনেপ্রাণে কোনো দিনও চাইনি। এদের আসল উদ্দেশ্য ষড়যন্ত্র করে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা যাওয়া। ষড়যন্ত্রের গলি পথ দিয়ে ক্ষমতা যাওয়ার ষড়যন্ত্র তারা করছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে শহীদ শেখ কামালে জন্মদিবস। মানুষের জন্মদিবস কতই আনন্দের কিন্তু আজকের এই দিনে আনন্দের চেয়ে তার রক্তাক্ত বিদায়ী ট্র্যাজেডি। আমাদের জীবনে আজকে শোকের বার্তা বয়ে যাচ্ছে।’


চাপে থেকেও স্বস্তি খুঁজে পেয়েছে আ.লীগ

আপডেটেড ৪ আগস্ট, ২০২৩ ১৪:০৬
আমানউল্লাহ আমান

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশে কূটনৈতিক তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডাসহ পশ্চিমা বিশ্ব বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে নানাভাবে কথা বলছে। কূটনৈতিক এসব তৎপরতার মাঝেই বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তি, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন ও ইসি পুনর্গঠনে এক দফার আন্দোলন করছে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। অবাধ, ‍সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে চাপের মধ্যে থাকলেও এর মধ্য থেকে স্বস্তি খুঁজে পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটি মনে করে, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে বিদেশিদের ভিন্ন কোনো অবস্থান না থাকাটা আওয়ামী লীগের জন্য স্বস্তির।

দলটির নেতারা মনে করছেন, ২০১৪ সালে বিএনপি অংশ না নেয়ায় একতরফা নির্বাচন হয়েছিল। ২০১৮ সালেও একটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে দেশের ভেতরে একটা চাপ আছে। সেই সুযোগেই কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু বিরোধীরা যেসব দাবিতে আন্দোলন করছে তার কোনো ছিটেফোঁটাও নেই কূটনীতিকদের কথাবার্তায়। পরিস্থিতি এমন হয়নি যে কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ না নিলে ওই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের কথা আসছে ঘুরেফিরেই। দাবি মেনে কোনো দলকে নির্বাচনে আনার আগ্রহ সরকারের বা আওয়ামী লীগের নেই। নির্বাচন দেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী হবে। সেই নির্বাচনে কে অংশ নিল, কে অংশ নিল না তা নিয়ে আওয়ামী লীগ বা সরকারের মাথাব্যথা নেই। এমনকি কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আনার জন্য কোনো চাপও নেই।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বিএনপিতে জ্ঞানী-গুণী লোক আছে। আমরা আশা করছি তাদের চিন্তার প্রভাব যদি কাজ করে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। যদি তারা নির্বাচনে না আসে তাহলে আমাদের তো কিছু করার নেই। বিএনপি নির্বাচনে না এলেও অন্য দলগুলো তো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আমাদের সংবিধানে তো এমন কিছু বলা নেই যে ওমুক দল নির্বাচনে না এলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না।’

গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমার সঙ্গে সেভাবে কথা হয়নি। তিনি আমাকে শুধু এই কথাই বলেছেন, আমি খুব ইন্টারেস্টিং সময়ে বাংলাদেশে এসেছি। আমি বলেছি, হ্যাঁ। এখন কমবেশি আমাদের মনোযোগ হচ্ছে নির্বাচন। আমরা একটা সুষ্ঠু, অবাধ এবং সহিংসতামুক্ত নির্বাচন করার ব্যাপারে জনগণের কাছে শেখ হাসিনা সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।’

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চাপ অনুভবন করব কেন? অবাধ, ‍সুষ্ঠু নির্বাচন করা আমাদের প্রতিশ্রুতি। এটা আমাদের করতেই হবে। তাই এখানে কোনো চাপের বিষয় নেই। যদি বলেন, চাপ, তাহলে বিবেকের চাপ। আমরা বিবেকের চাপ অনুভব করতে পারি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার, শেখ হাসিনার পদত্যাগ, সংসদ ও নির্বাচন কমিশনের বিলুপ্তি এ ধরনের একটা কথাও বলেনি। তাদের বক্তব্যের মূল সুর ছিল অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। এখানে আর কোনো শব্দ যোগ হয়নি।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনো একটি নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে না বলে জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো অবস্থান নেই। এটি রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা যা সমর্থন করি তা হলো একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যা বাংলাদেশের জনগণকে তাদের পরবর্তী সরকার বেছে নিতে সহায়তা করবে।’

আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দফায় দফায় বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বৈঠক হচ্ছে। এসব বৈঠকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলও অংশ নিয়ে থাকে। মোটামুটি সব বৈঠকেই নির্বাচন প্রসঙ্গ উঠে আসে। আলোচনায় কূটনীতিকরা আগামী নির্বাচন বিষয়ে নানা কথা জানতে চান। সেসব কথার সন্তোষজনক জবাব সরকার ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও দেয়া হয়। বৈঠকগুলোতে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যয়ের কথা তুলে ধরা হয়। বিদেশিদের কাছে তুলে ধরা তথ্যে তারা সন্তুষ্ট বলেও মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল যা দেখতে এসেছিল তা তারা দেখে গেছে। তারা দেখতে এসেছিল বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না এ ব্যাপারে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বোঝার জন্য। আমেরিকান টিম চলে যাওয়ার আগে তাদের সংবাদ সম্মেলনে তারা কী বলেছে? যে আমরা এখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে আশ্বস্ত হয়েছি যে বাংলাদেশে আগামীতে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। যাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি সব জায়গা থেকে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি। সো উই আর ভেরি হ্যাপি। আমরা আশা করছি বাংলাদেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।’

তিনি বলেন, ‘ইউরোপিয়ান টিমেরও অন্যান্য পারপাস ছিল। আমাদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাওয়া। তাদের প্রাথমিক পারপাস ছিল আমাদের নির্বাচনে তারা পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না- এইটা স্ট্যাডি করতে এসেছিল। তাদের সঙ্গে আমাদেরও মিটিং হয়েছে। আমাদের সম্পর্কে তারা অনেক কিছু জানতে চেয়েছে। আগামী নির্বাচন সম্পর্কে আমাদের আইডিয়া জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, সংবিধান মোতাবেক তোমাদের দেশে বা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংবিধান বা আইন অনুযায়ী নির্বাচন হবে- আমাদের দেশেও তাই হবে। তারা বলেছে, ঠিক আছে। তারা আমাদের আলোচনায় খুশি। আমাদের কাছে যা যা প্রশ্ন তারা করেছিল তাতে আমরা যা যা উত্তর দিয়েছি এবং তারা সন্তুষ্ট। বাংলাদেশের যে আইন ও সংবিধান অনুযায়ী এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো নির্বাচন হবে। আমি আশা করি দেশের সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’

গত ১১ জুলাইয় চার দিনের সফরে ঢাকায় আসেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া। সঙ্গে আসেন মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডনাল্ড লু এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) উপসহকারী প্রশাসক অঞ্জলি কৌর। দ্বিপক্ষীয় অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে মানবাধিকার, শ্রমিক অধিকার, নির্বাচন ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা শেষে ১৫ জুলাই ঢাকা ত্যাগ করে প্রতিনিধিদলটি।

রিকার্ডো কেলেরির নেতৃত্বে ছয় সদস্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ইইউ প্রতিনিধিদল গত ৯ জুলাই ঢাকায় আসে। তবে প্রতিনিধিদলের নেতা রিকার্ডো কেলেরিসহ দুজন সদস্য ১৭ জুলাই ঢাকা থেকে ফিরে যান। পরবর্তীতে বাকি চার সদস্য ঢাকায় অবস্থান করেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইইউ কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না, প্রতিনিধিদল সে বিষয়ে সুপারিশ করবে। তাদের সুপারিশের ওপর ভিত্তি করেই ইইউ এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। গত ২৩ জুলাই ঢাকা ত্যাগ করে প্রতিনিধিদলটি।


অসাংবিধানিক ধারা ও পন্থা এ দেশে চলবে না

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বিএনপি ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেছেন, এ দেশে সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত থাকবে। এর বাইরে অসাংবিধানিক ধারা ও পন্থা এ দেশে চলবে না।

রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদে’ বুধবার ১৪ দলের এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশের অগ্রগতি বিএনপির সহ্য হচ্ছে না মন্তব্য করে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, যারা দেশের উন্নয়নের চাকা ঘুরিয়ে দিয়ে নব্য পাকিস্তান বানানোর পাঁয়তারা করেছিল, সেই চক্রান্ত বর্তমানে তারা আবারও করছে। গণতন্ত্র ও নির্বাচনের নামে বিভিন্ন ধুয়া তুলে নির্বাচনী গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করার চক্রান্ত চলছে।’

সমাবেশে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঢাকায় এসে কাদের সঙ্গে আলাপ করল? হ্যাঁ, বুঝলাম তারা আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলাপ করেছে। কিন্তু তারা নিবন্ধনবিহীন জামায়াতের সঙ্গেও আলাপ করেছে।’

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি কমিশনে গিয়ে নির্বাচন কমিশনারের কাছে যেন জবাবদিহি করেছেন। তার প্রশ্নে মনে হয়েছে যেন প্রভু এসেছেন আমাদের দেশে। বিএনপি জনগণকে জিম্মি করে ক্ষমতায় আসতে চায়। সে জন্য তারা প্রভু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর নির্ভর করছে।’

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় আসতে চায় বিএনপি-জামায়াত। তারা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে এ দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।’

জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বেই নির্বাচনকালীন সরকার থাকবে এবং আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ থেকে বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে হবে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, গণতান্ত্রিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন, গণ আজাদী লীগের সভাপতি এস কে সিকদার, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ফারুক, জাতীয় পার্টি জেপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল খায়ের সিদ্দিকী আবু প্রমুখ।

বিষয়:

banner close