নতুন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘সরকারের দুর্নীতির ধারাবাহিকতার ঘোষণাপত্র’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এই বাজেট কল্পনাবিলাসী বাস্তবায়ন অযোগ্য এক উচ্চাভিলাষী বাজেট। এটা স্রেফ দুর্নীতিবাজ বর্তমান সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লুটের লক্ষ্যে প্রণীত অর্থ লুটেরাদের বাজেট।’
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিএনপির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাজেটে চলমান অর্থনৈতিক সংকট, ক্রমবর্ধমান আয়-বৈষম্য, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে যাওয়া, বেপরোয়া অর্থপাচার, জনগণের কাঁধে রাষ্ট্রীয় ঋণের বোঝা একবারের জন্যও স্বীকার করা হয়নি। পরিত্রাণের উপায়ও বলা হয়নি। তেমনিভাবে সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে সুশাসন ও ন্যায়বিচারের ধারণাকে।’
প্রস্তাবিত বাজেট জনকল্যাণের নয় মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই বাজেট পরিচালনা ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৩ দশমিক ৪ শতাংশ এবং উন্নয়ন ব্যয় ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ। এই অর্থের সংস্থান হবে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা আয় থেকে। আর ঘাটতি ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা আসবে ঋণ থেকে। রাজস্ব আয়ের ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ পরোক্ষ কর (ভ্যাট) এবং ৩০ দশমিক ৭ শতাংশ প্রত্যক্ষ কর। এরই সঙ্গে সরকার জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং মুদ্রাস্ফীতির হার ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার প্রত্যাশা করছে। এই বাজেট বাস্তবতা-বিবর্জিত, প্রতারণামূলক, লোক দেখানো বাজেট, জনকল্যাণের নয়।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি ও বিনিয়োগসহ সামষ্টিক অর্থনীতির যেসব প্রক্ষেপণ করা হয়েছে তা অর্জনযোগ্য নয়। জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করলেও তা কীভাবে অর্জন করা হবে তার কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা বাজেটে নেই। চলতি অর্থবছরেও ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করা হয়েছে প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। সংশোধনী বাজেটে তা পরে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ পুনর্নির্ধারণ করা হয়। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এবারও এই প্রবৃদ্ধির টার্গেট অর্জন সম্ভব হবে না। কেননা, অর্থনীতি এমনিতেই চাপের মধ্যে রয়েছে।’
মূল্যস্ফীতি কমাতে বাজেটে কার্যকর পদক্ষেপ নেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ। গত মে মাসে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ, যা গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। বাস্তবে এই মূল্যস্ফীতি ১৮ থেকে ২০ শতাংশের ওপরে হবে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবহন এবং খাদ্যের পাশাপাশি তেল, চাল, আদা, চিনি, ডিম, মুরগিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য অনেক আগেই মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।’
‘রিজার্ভ কমছে, ঋণ বাড়ছে’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি মহাবিপর্যয়ে রয়েছে। ডলারের সংকট প্রকট। পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খুলতে গেলে প্রায় সব ব্যাংক ফিরিয়ে দিচ্ছে। সরকারি হিসাব মতে, গত ৭ বছরে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে গেছে। আইএমএফের হিসাব বলছে, প্রকৃত রিজার্ভ দাঁড়ায় ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।’
দেশে খেলাপি ঋণ বাড়ার প্রধান কারণ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘২০০৯ সালে যেখানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা, এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। তবে পুনঃ তফসিলকৃত ঋণ যোগ করলে প্রকৃত খেলাপি ঋণ ৪ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গত বছরের প্রথম নয় মাসেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। গত ৩ মাসেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত ৬ বছরে বিদেশি ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। চীন ও রাশিয়া থেকে নেয়া কঠিন শর্তের ঋণ শোধ করা শুরু হলে ২০২৪ সাল থেকেই বর্তমানের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে। সে সময় পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে।’
‘মধ্যবিত্তের ওপর জুলুম চলছে’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সরকার ইতিপূর্বে করযোগ্য আয় নেই এমন ব্যক্তিদেরও ৪৪ ধরনের সেবা নিতে কর বাধ্যতামূলক করেছে, যা মধ্যবিত্তের ওপর জুলুম। প্রশ্ন হলো, যার আয় কম তিনি কি ওই সব রাষ্ট্রীয় সেবা পাবেন না? একদিকে ন্যূনতম আয়কর সীমা বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা প্রস্তাব করেছে, অপরদিকে আয় না থাকলেও ন্যূনতম ২ হাজার টাকা আয়কর ধার্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা সাংঘর্ষিক, ন্যায়নীতি বর্জিত এবং আয়ের ওপর করনীতিরও পরিপন্থি।’
প্রস্তাবিত বাজেটে শেয়ারবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ বিনিয়োগকারীর জন্য কোনো আশার আলো নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শেয়ারবাজারে সর্বস্বান্ত হাজার হাজার মানুষের আহাজারি সরকারের কানে পৌঁছায় না। এই সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে শেয়ারবাজারের সংকট দূর হবে বলে কেউ বিশ্বাসও করে না। শেয়ার বাজার বিপর্যয়ের ওপরে গঠিত তদন্ত রিপোর্ট আজও প্রকাশিত হয়নি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশে এবার তারা স্মার্ট লুটপাটের বাজেট দিয়েছে। তারা চুরিতে স্মার্ট। ভোট চুরি, ব্যাংক চুরি, অর্থ পাচার এসব কিছুতেই। স্মার্টলি লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি করার, ব্যাংক লুটপাট, সিন্ডিকেট পরিচালনা, জনগণের সম্পদ লুটের পাকা বন্দোবস্ত করা হয়েছে এই বাজেটে।’
দেশে চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট দেশের প্রধান জাতীয় সংকটে পরিণত হয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সরকার না থাকলে সরকারের জাবাবদিহিতা থাকে না। দেশের অর্থনীতির জন্য কল্যাণকর বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এই জাতীয় সংকট থেকে মুক্তি পেতে জবাবদিহি ও দায়বদ্ধমূলক নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল হোসেন জবিউল্লাহ।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভিসানীতি ও নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করে না আওয়ামী লীগ।
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের আসন্ন গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা দিলে তাতে জড়িতদের ভিসা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গতকাল শুক্রবারের মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওই ঘোষণা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভিসানীতি, নিষেধাজ্ঞা হলে ক্ষতিটা তাদেরই, যারা নির্বাচনে বাধা দিতে চায় এবং প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। ভিসানীতি ও নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করে না আওয়ামী লীগ।’
‘ভিসানীতি বাস্তবায়নের বাস্তবতাটা কী সেটা দেখার বিষয়। আওয়ামী লীগ চায় অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার এ নিয়ে জনগণের কাছে অঙ্গীকার করেছেন।’
আসন্ন নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্তের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ভোট দেবে দেশের জনগণ। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। বিদেশিদের পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়টি তাদের ব্যাপার। এখানে পর্যবেক্ষক পাঠানোর নিয়ম আছে। ভিয়েনা কনভেনশন আছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করতে ক্ষমতার মঞ্চে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচন হতে দেবে না বলে দলটির নেতাদের বক্তব্যের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির ইচ্ছাতেই কি নির্বাচন হবে? বিএনপি নির্বাচন চায় না। তারা যদি নির্বাচন বয়কট করতে চায় করবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ চায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন। বিএনপির নির্বাচনে আসাটা তাদের অধিকার। তবে নির্বাচনে না এসে নির্বাচনবিরোধী যে কোনো ষড়যন্ত্র করলে জনগণ তা প্রতিরোধ করবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়কের কোনো যৌক্তিকতা নেই। উচ্চ আদালত এটা বাতিল করে দিয়েছেন।’
বিএনপির উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রাখেন, তারা কেন সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে দেশকে? সারা বিশ্বে গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সেভাবে হবে।
অক্টোবরে বিএনপির আন্দোলনের মরণকামড়ের হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মরণকামড় দিতে গিয়ে বিএনপিই মরে ভূত হয়ে যাবে।’
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুই সেলফিতে রাজনীতির সব ফয়সালা হয়ে গেছে। দুই সেলফিতে বিএনপির রাতের ঘুম শেষ।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তার দৃঢ় সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এসময় লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, পলাতক খুনি যে দলের নেতা, সেই দলকে মানুষ কেন ভোট দেবে?
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এক নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের একটি হোটেলে নিউইয়র্ক মেট্রাপলিটন আওয়ামী লীগ এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি কি আসলেই নির্বাচন চায়? তাদের নেতা কে?’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘পলাতক আসামি, অর্থ চোর, অস্ত্র চোরাচালানকারী, খুনি ও ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাকারী—এই যদি একটি দলের নেতা হয়, তবে মানুষ কেন সেই দলকে এবং তাকে ভোট দেবে?’
তিনি বলেন, ‘তারা ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভোট পায়নি এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করেনি।’
নির্বাচন ঠেকানোর নামে অগ্নিসংযোগ করে মানুষ হত্যার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কত প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এখনো সেই পোড়া মানুষের মুখ দেখলেই বোঝা যাবে যে কী জঘন্য কাজ হয়েছে। যারা এটি করেছে, তাদের মতো আর কেউ ঘৃণ্য হতে পারে না।’
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। জনগণ সঠিকভাবে ভোট দেবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের অন্তত অনুধাবন করা উচিত যে- তারা নৌকায় (আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক) ভোট দিয়ে স্বাধীনতা লাভ করেছে এবং নৌকার পক্ষে ভোট দেয়ায় আজ জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘নৌকায় (দেশের জনগণ) ভোট দেওয়ার কারণে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা বিদেশে থাকেন তাদের বুঝতে হবে বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে বিদেশে কারও সঙ্গে কথা বলা যেত না, এখন মানুষ বাংলাদেশকে সম্মানের চোখে দেখে।
প্রধানমন্ত্রী অপপ্রচারে কর্ণপাত না করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যেন সবসময় উজ্জ্বল হয়-তা আপনাদের সবাইকে সর্বদা মনে রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ যখন বিশ্বনেতারা (বাংলাদেশের সাফল্য) স্বীকৃতি দিচ্ছেন, তখন আমাদের কিছু পাপাচারী যা বলছে তাতে মনোযোগ দেওয়ার দরকার নেই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিভিন্ন অপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্তরা এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে ও তাদের অপকর্ম ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ও অ্যাপসের মাধ্যমে বিভিন্ন মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছে।’
নিন্দুকদের মুখোশ উন্মোচন করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিথ্যা অপপ্রচার করলে তাদের মুখ উন্মোচিত করতে হবে। মানুষের সামনে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা দরকার।’
এই চোরচক্র থেকে সবাইকে সচেতন হওয়ারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা সরকারের প্রতি অশনি সংকেত বলে মনে করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি। তারা ‘প্রহসনমূলক ও একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা পরিহার করে’ অবিলম্বে পদত্যাগ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্তও করেছে।
শনিবার জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা, ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং সহিংসতার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বিঘ্ন সৃষ্টি, সুশীল সমাজ বা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রকাশে বাধা দেয়াসহ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার সরকারের নীল নকশার এহেন কর্মকাণ্ডের ফলশ্রুতিতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি।’
“গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও আইনের শাসনের অভাবে ক্ষমতাসীনদের তথাকথিত ‘বিশ্বের রোল’ মডেল বাংলাদেশ আজ নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, উগান্ডা, নিকারাগুয়া ও বেলারুশের সমমর্যাদায় চিহ্নিত হচ্ছে।”
জেএসডির শীর্ষ দুই নেতা বলেন, ‘সরকারের দীর্ঘদিনের অগণতান্ত্রিক অপশাসন মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের মর্যাদাকে ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছে।’
বিবৃতিতে আ স ম আবদুর রব ও শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে, সংসদ ভেঙে দিয়ে, সরকারের পদত্যাগ ও জাতীয় সরকার গঠন করাই হবে বিদ্যমান বহুমুখী সংকটের আপৎকালীন সমাধান।’
সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আন্দোলনের এখনো কিছুই দেখেননি। সেপ্টেম্বরের পর অক্টোবর আসবে। অক্টোবর হবে পতনের মাস, স্বাধীনতার মাস, মানবাধিকার মাস। অক্টোবরে এ সরকারের সঙ্গে দেনা-পাওনার সব কিছু মীমাংসা হয়ে যাবে।
শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ এবং আমান উল্লাহ আমান, সালাউদ্দিন আহমেদ, রফিকুল আলম মজনু, তানভীর আহমেদ রবিনসহ নেতাদের মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আমাদের দেশের ৫২ বছর বয়স হয়েছে। এ ৫২ বছর বয়সে আমাদের অর্জন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি। কেন করেছে? কারণ বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। ভোটের অধিকার নেই, মানবাধিকার নেই। আর এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র আগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, এখন ভিসানীতি প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু করেছে। কেন বাংলাদেশের ওপর ভিসা নীতি আসবে? এটা কোনো আনন্দের সংবাদ নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে দেশ এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছে, সেই দেশে এখন গণতন্ত্র নেই স্বাধীনতা নেই।’
চারদিকের অবস্থা ভালো নয় উল্লেখ করে বিএনপির এ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘যেদিনই বিএনপি ও বিরোধী দল মিটিং ডাকে লাখ লাখ মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়। জনগণ শেখ হাসিনার হাত থেকে বাঁচার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। আন্দোলনের এখনো কিছু দেখেননি। হুইসেলটা বাজলে বুঝবেন আন্দোলন কাকে বলে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের পর অক্টোবর আসবে। অক্টোবর হবে মুক্তির মাস। অক্টোবর হবে জালিমের পতনের মাস। অক্টোবর হবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মাস। অক্টোবর হবে ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার মাস। অক্টোবর হবে স্বাধীনতা-মানবাধিকারের মাস। এই অক্টোবরেই সরকারের সঙ্গে দেনা-পাওনার সব কিছু মীমাংসা হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল প্রধানমন্ত্রী আমেরিকায় থাকাবস্থায় ভিসানীতির কার্যকারিতা শুরুর ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। কারণ বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষের ভোটাধিকার নেই, মানুষের মানবাধিকার নেই, মানুষের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। এজন্য তারা (যুক্তরাষ্ট্র) আগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, এখন ভিসানীতি কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে। শোনা যাচ্ছে সরকারি দলের অনেক নেতা, প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা এই ভিসানীতির আওতায় পড়েছেন।’
শামসুজ্জামান দুদু আরও বলেন, ‘আপনারা (সরকার) বহু টাকা ইতোমধ্যে লুটপাট করেছেন। লক্ষ হাজার কোটি টাকা আপনারা দেশ থেকে বিদেশে নিয়ে গেছেন। ভিসানীতির আওতায় যদি আপনি পড়ে যান, তাহলে আমেরিকায় যদি আপনার বাড়ি, টাকা থাকে, সেটা তো ভোগ করতে পারবেন না। আমি জানি আপনারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। কিন্তু এই যে অন্যায় করেছেন, এর জন্য আমাদের লজ্জা হয়।’
রাষ্ট্র এখন দানবে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘সে (রাষ্ট্র) মানুষকে দেখে না, নাগরিককে দেখে না। সে দানবের মতো আচরণ করছে। বর্তমান সরকার যত তাড়াতাড়ি পদত্যাগ করবে, ততই তার জন্য, দেশের জন্য, মানুষের জন্য ভালো হবে। এই সরকারের পদত্যাগের কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমেরিকায় এক-দুই দিন থাকার কথা। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, এই পুরো মাস তিনি সেখানে থাকবেন। কেন, কীসের জন্য তিনি থাকবেন, সেটি রাষ্ট্রীয়ভাবে ও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়নি। আবার শোনা যাচ্ছে তিনি অতি তাড়াতাড়ি চলে আসবেন। আসেন, দেশে দাঁড়িয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তাহলে কিছুটা হলেও রক্ষার পথ পাওয়া যাবে। মানুষ, দেশ, জনগণ চায় আপনি পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবেন। আর যদি না করেন, দেশের মানুষ আপনাদের বাধ্য করবে পদত্যাগ করতে।’
সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী। বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়ের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ইউনূস আলী, কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আবদুল্লাহ আল বাকী, যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু, রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
আগামী নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করতে যে হাতে আগুন দিতে আসবে সেই হাত ভেঙে দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেছেন, ‘উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করেন, অগ্রগতির পথে বাধা সৃষ্টি করেন, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন অস্বাভাবিক করেন, তাহলে যে হাতে বোমা মারবেন, সে হাত ভেঙে দেয়া হবে।’
শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটের সামনে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘সেদিন আমি পবিত্র ওমরাহ পালনে মক্কায় ছিলাম। আমার কানে অনেক কথা এসেছিল। আমি সেদিনও বলেছিলাম, আমার ১৭ তলা, ১৯ তলা ভবনের দরকার নেই। এখানে যে শেড ছিল, সেই শেড করেই মার্কেট চালু করতে হবে।’
ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিদের উদ্দেশে নানক বলেন, ‘রাতে কৃষি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়, ব্যবসায়ীরা সর্বস্ব হারিয়েছেন। এটি মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের প্রাণের মার্কেট। দোকানদার ভাইদের আশ্বস্ত করার, সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা আমার জানা নেই।’
অগ্নি নির্বাপনে সহযোগিতা করায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশ থেকে আমরা কেউ বিচ্ছিন্ন না। এই মার্কেটে আগুন লেগেছে। আশেপাশে গরম লাগেনি? দেশে অশান্তি সৃষ্টি হলে আমরা কেউ শান্তিতে থাকতে পারব না। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই, পার্শ্ববর্তী এলাকার বিহারী ভাইদের। তারা এই কৃষি মার্কেটে দুর্ঘটনা ঘটনার পর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। আরও কৃতজ্ঞতা জানাই পুলিশ ভাইদের প্রতিও।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘নির্বাচন নিয়ে হুমকি’ দিয়েছেন উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘কীসের হুমকি দেন? নির্বাচন হবে, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। যদি সংঘাত সৃষ্টি করেন, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করেন, উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করেন, অগ্রগতির পথে বাধা সৃষ্টি করেন, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন অস্বাভাবিক করেন, তাহলে যে হাতে বোমা মারবেন, সে হাত ভেঙে দেয়া হবে, যে হাতে আগুন দেবেন, সে হাত পুড়িয়ে দেয়া হবে।’
আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় আসে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় আসে না, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতায় আসে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে। ২০০১ সালে শেখ হাসিনা একদিনও বেশি ক্ষমতায় থাকেননি, ক্ষমতা হস্তান্তর করে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন। আমরা যা বলি তা করি।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ সলিমুল্লাহ সলুর সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য সাদেক খান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, যুব মহিলা লীগের সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজি, ৩৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসিফ আহমেদসহ অন্যরা।
মানবিক কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেছে বাংলাদেশ জাসদ।
শুক্রবার দলটির সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার জীবন সংকটাপন্ন। তিনি আদালতের বিচারে কারাদণ্ড প্রাপ্ত হওয়ার পর কারাগারে আড়াই বছর ও পরবর্তীতে সাড়ে তিন বছর শর্ত মেনে বাড়িতে আছেন। আমরা মনে করি সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে মানবিক কারণে মুক্তি দেওয়া প্রয়োজন।’
সরকারকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয় বিবৃতিতে।
চিকিৎসা শেষে আগামীকাল শনিবার দেশে ফিরছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় ঢাকায় ফিরবেন তিনি।
শুক্রবার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার শেখ ওয়ালিদ ফয়েজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, দেশে ফিরে বিমানবন্দরের সিআইপি গেটে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুর যান মন্ত্রী।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে তাকে সিসিইউতে নেয়া হয় বলে জানা গেছে।
বিএনপির চেয়াপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার জানান, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত চিকিৎসক বোর্ডের সিদ্ধান্ত ও পরামর্শ অনুযায়ী তাকে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সিসিইউতে নেয়া হয়।
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বরও একবার সিসিইউতে নেয়া হয়েছিল খালেদা জিয়াকে। তবে সেবার ১০ ঘণ্টার মতো সিসিইউতে রেখে আবার কেবিনে স্থানান্তর করা হয় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। তার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা একাধিকবার সংবাদ সম্মেলনে করে বলেছেন, অতি দ্রুত তার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট (প্রতিস্থাপন) করা দরকার। যেটা বাংলাদেশ সম্ভব নয়। এই জন্য তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে একাধিকবার আবেদন করে তার পরিবার। এ ছাড়া বিএনপির পক্ষ থেকে তাকে বিদেশে চিকিৎসা জন্য যেতে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১ মাসের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। এরআগেও বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাকে। এরই মধ্যে তার হার্টে ৩ টি ব্লক ধরা পড়লে একটিতে রিং পরানো হয়।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, সাইবার সিকিউরিটি আইন করা হয়েছে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে।
রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পেশাজীবী সমাজের এক সভায় গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি এ কথা বলেন।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, বাকস্বাধীনতাকে বাধা দেয়া হলে গণতন্ত্র থাকতে পারে না। সাইবার সিকিউরিটি আইনে যেকোনো সংবাদকেই সরকার রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে গণ্য করতে পারবে। গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করতে পারবে সাইবার সিকিউরিটি আইনে। এখন গণমাধ্যমে সেলফ সেন্সরশিপ চলছে, আগামীতে কোনো সেন্সর দরকার হবে না। কারণ গণমাধ্যম কোনো সংবাদই করতে পারবে না। এতে সব নিউজ চ্যানেল বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, সাইবার সিকিউরিটি আইন করা হয়েছে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে। নিউজের পরিবর্তে টেলিভিশনে গানবাজনা ও নাটক চলবে, কেউই আর সংবাদ পরিবেশন করতে পারবে না। বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্রের অভাব। দেশে এখন গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্র চর্চা করার পরিবেশ নেই। দেশ এখন একদলীয় শাসনব্যবস্থার দিকে চলে যাচ্ছে। সাইবার সিকিউরিটি আইনের মাধ্যমে মানুষের বাকস্বাধীনতা, ভাবপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে।
জাতীয় পেশাজীবী সমাজের সভাপতি ডা. মোস্তাফিকুর রহমান আকাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা আল মাহমুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদের।
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প যখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তখন সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকীর চলে যাওয়াটা চলচ্চিত্র অঙ্গণের জন্য, সাংস্কৃতিক অঙ্গণের জন্য বিরাট অপূরণীয় ক্ষতি। কারণ তার মতো এ রকম গুণী নির্মাতা একদিনে তৈরি হয়নি।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সদ্যপ্রয়াত চলচ্চিত্রকার সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকীর মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ৭৭ বছর বয়সে প্রয়াত এই সংস্কৃতি ব্যক্তিত্বের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, “তিনি একজন গুণী চলচ্চিত্র নির্মাতা, প্রযোজক, পরিচালক, কাহিনীকার ছিলেন। তার প্রথম ছবি ঘুড্ডি, যা দেশে সাড়া ফেলেছিল এবং সেই সিনেমার ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’ গানটি এখনো দেশের মানুষের মুখে মুখে ফেরে।”
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সালাহউদ্দীন জাকী ভাই একুশে পদকপ্রাপ্ত, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। সবচেয়ে বড় বিষয়, তিনি একজন সজ্জন ভদ্র মানুষ ছিলেন। তার চলনে-বলনে কোনো বাহুল্য ছিল না, নিজেকে জাহির করার কোনো প্রবণতা তার মধ্যে কখনো দেখিনি। তার পরিবার যাতে এই শোক কাটিয়ে উঠতে পারে, সে জন্য মহান স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি।’
রোডমার্চ বিএনপির নেতাদের চলে যাওয়া ঠেকাতে পারবে না
এ সময় সাংবাদিকরা বিএনপির রোডমার্চ কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন করলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নেতাদের চলে যাওয়া ঠেকানোর জন্য বিএনপি এখন রোডমার্চ দিচ্ছে, হয়ত কদিন পর আরও অন্য কর্মসূচি দেবে। এগুলো করেও বিএনপি থেকে নেতাদের সরে যাওয়া এবং অন্য দলে যোগ দেয়া কিংবা নতুন প্লাটফর্ম করা তারা ঠেকাতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি কিছুদিন পরপর নানা ধরণের কর্মসূচি দেয়। কর্মসূচির মধ্যে কোনো নতুনত্ব নাই। কদিন হাঁটা কর্মসূচি, কদিন বসা কর্মসূচি, কদিন গণমিছিল কর্মসূচি এগুলো গতানুগতিক। বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো তাদের দল থেকে যে নেতারা চলে যাচ্ছে সেটি নিয়ে কিছু বলার জন্য।’
তথ্য মন্ত্রণালয়ে শুদ্ধাচার পুরস্কার
এ দিন বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন সংস্থাগুলোর মধ্যে মনোনীত কর্মচারিদের হাতে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের শুদ্ধাচার পুরস্কার তুলে দেন মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার ও উর্ধ্বতন কর্মচারিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান নীতিমালা ২০২১ অনুযায়ী দপ্তর প্রধান হিসেবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মুহ. সাইফুল্লাহ, ২য় থেকে ৯ম গ্রেডের অফিসারদের মধ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব (প্রশাসন-৪) মো. রাশিদুল করিম, ১০ম থেকে ১৬তম গ্রেডের মধ্যে প্রশাসনিক কর্মকর্তা কোহিনূর আক্তার প্রীতি, ১৭তম থেকে ২০তম গ্রেডের মধ্যে অফিস সহায়ক শেখ মো. সাইফুল্লাহ এ পুরস্কার গ্রহণ করেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রোডমার্চ বিএনপির নেতাদের চলে যাওয়া ঠেকাতে পারবে না। মন্ত্রী বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সদ্যপ্রয়াত চলচ্চিত্রকার সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকীর মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেন।
এ সময় সাংবাদিকরা বিএনপির রোডমার্চ কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নেতাদের চলে যাওয়া ঠেকানোর জন্য বিএনপি এখন রোডমার্চ দিচ্ছে, হয়তো ক’দিন পর আরও অন্য কর্মসূচি দেবে। এগুলো করেও বিএনপি থেকে নেতাদের সরে যাওয়া এবং অন্য দলে যোগ দেয়া কিংবা নতুন প্লাটফর্ম করা তারা ঠেকাতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি কিছুদিন পরপর নানা ধরনের কর্মসূচি দেয়। কর্মসূচির মধ্যে কোনো নতুনত্ব নাই। ক’দিন হাঁটা কর্মসূচি, ক’দিন বসা কর্মসূচি, ক’দিন গণমিছিল কর্মসূচি এগুলো গতানুগতিক। বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো তাদের দল থেকে যে নেতারা চলে যাচ্ছে সেটি নিয়ে কিছু বলার জন্য।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প যখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তখন সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকীর চলে যাওয়াটা চলচ্চিত্র অঙ্গণের জন্য, সাংস্কৃতিক অঙ্গণের জন্য বিরাট অপূরণীয় ক্ষতি। কারণ তার মতো এ রকম গুণী নির্মাতা একদিনে তৈরি হয়নি।’
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ৭৭ বছর বয়সে প্রয়াত এই সংস্কৃতি ব্যক্তিত্বের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, তিনি একজন গুণী চলচ্চিত্র নির্মাতা, প্রযোজক, পরিচালক, কাহিনীকার ছিলেন। তার প্রথম ছবি ঘুড্ডি, যা দেশে সাড়া ফেলেছিল। সেই সিনেমার ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’ গানটি এখনো দেশের মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সালাহউদ্দীন জাকী একুশে পদকপ্রাপ্ত, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। সবচেয়ে বড় বিষয়, তিনি একজন সজ্জন ভদ্র মানুষ ছিলেন। তার চলনে, বলনে কোনো বাহুল্য ছিল না, নিজেকে জাহির করার কোনো প্রবণতা তার মধ্যে কখনো দেখিনি। তার পরিবার যাতে এই শোক কাটিয়ে উঠতে পারে সে জন্য মহান স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি।’
এদিন বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন সংস্থাগুলোর মনোনীত কর্মচারিদের হাতে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের শুদ্ধাচার পুরস্কার তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তি এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে বিএনপির আন্দোলনে ঘোষিত ১৫ দিনের কর্মসূচিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালনের ঘোষণা থাকলেও তা আরও দুদিন বাড়িয়ে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেয়া হয়েছে।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা জানান। তিনি জানান, নতুন করে কর্মসূচি ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হল। একই সঙ্গে বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী প্রয়োজনে কিছু কর্মসূচি যোগ হতে পারে।
এর আগে গত সোমবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ১৫ দিনের এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। এটি সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের বিএনপির সপ্তম কর্মসূচি।
কর্মসূচিতে পরিবর্তন বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকার যাত্রাবাড়ী এবং উত্তরের সমাবেশ হবে। একই দিনে বাদ জুমা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় সারাদেশের মহানগর, জেলা, উপজেলা এবং পৌরসভায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
কর্মসূচির প্রথম দিন গতকাল বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা জেলার জিনজিরা, কেরানীগঞ্জ এবং গাজীপুরের টঙ্গীতে সমাবেশ করে দলটি। বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জের ভৈরব-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-হবিগঞ্জ-মৌলভীবাজার-সিলেটে রোডমার্চ কর্মসূচি রয়েছে।
এছাড়া আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর বৃহত্তর বরিশাল পটুয়াখালী রোডমার্চ; ২৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর দাবিতে দেশের সব জেলা এবং মহানগরে প্রতিবাদ সমাবেশ; ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরের নয়াবাজার এবং আমীনবাজারে সমাবেশ; ২৬ সেপ্টেম্বর খুলনা বিভাগের রোডমার্চ; ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় জনসমাবেশ; ২৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে ঢাকায় মহিলা সমাবেশ; ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় শ্রমজীবী কনভেনশন।
১ অক্টোবর ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জ জেলায় রোডমার্চ; ২ অক্টোবর ঢাকায় কৃষক সমাবেশ; ৩ অক্টোবর ফরিদপুর বিভাগের রোডমার্চ এবং সমাবেশ; ৪ অক্টোবর ঢাকায় পেশাজীবী কনভেনশন এবং ৫ অক্টোবর কুমিল্লা, ফেনী, মিরসরাই ও চট্টগ্রামে রোডমার্চ।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা মনে করছি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ যা করছে এটা কোনোভাবেই একটি দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সহায়ক নয়, বরং এর বিপক্ষে যাচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপি একটি পলিটিক্যাল পার্টি। আমরা সরকারেও ছিলাম বিরোধীদলেও ছিলাম। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের সামনে এসব বিষয় বলা এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা। যে কাজটা আমরা বর্তমানে করছি।’
বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এত প্রহসন ও গ্রেপ্তার, মামলা এবং বাধার মুখেও আমরা একেবারে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি। তবে শেষ পরিণতি কী হবে না হবে, এটা নির্ভর করছে সরকারের ওপর। পাশাপাশি আমাদের আচরণও নির্ভর করবে সরকারের আচরণের ওপর।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ফজলে নূর তাপস যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে জমিদারি ও সন্ত্রাসী ভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এটাই হচ্ছে তাদের কথা বলার চরিত্র ও মানসিকতা। তাদের সব কিছুর মধ্যে একটা সন্ত্রাসী ব্যাপার থাকে। এটা হচ্ছে তাদের জমিদারি। তারা এই ধরনের কথা বলে। কে কী বলে সেটা আমাদের দেখার বিষয় না।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
গতকাল বুধবার রাজধানীর বনশ্রীতে এক অনুষ্ঠানে ডিএসসিসি মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে রাজধানী ঢাকায় আর ঢুকতে দেয়া হবে না।
এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা এই ধরনের কথাকে গুরুত্ব দেই না। কারণ অতীতে আমরা এগুলো বহু (অনেক) ফেস করেছি। এগুলো নিয়ে আমরা চিন্তাও করি না। কে কী বলল এতে বাংলাদেশের জনগণের কিছু যায় আসে না। জনগণের লক্ষ্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।