বিএনপিকে ষড়যন্ত্রের পথে ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক মোড়লরা আপনাদের ক্ষমতায় আনতে পারবে না। বিএনপি নামক দলটির অবশিষ্ট রক্ষা করতে চাইলে নির্বাচনের পথে আসুন।
বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নানক এসব কথা বলেন।
বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনামলে ১৭ আগস্ট সারা দেশে বোমা হামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন হামলা-মামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, সেই বিএনপি জামায়াত এখন আমাদের গণতন্ত্রের কথা শোনায়, মানবাধিকার শেখায়?
দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে অভিযোগ করা জাতীয়-আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোরও সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের এ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে দেবে না, এই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ কে পাস করেছিল ফখরুল সাহেব? আপনাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। এখন গণতন্ত্রের কথা বলেন, মানবাধিকারের কথা বলেন? আইনের শাসনের কথা বলেন? তখন ঘোড়াও হাসে...কী বলে ওরা?
নানক বলেন, শেখ হাসিনা গণতন্ত্র দিয়েছেন, কথা বলার সুযোগ দিয়েছে। সেই কারণে কথা বলেন। তবে সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাবেন না। (বিএনপি নেতা) গয়েশ্বর বাবু বলছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যদি না থাকে তাহলে এক লাখ মানুষের জীবন যাবে। গয়েশ্বর বাবু সেই স্বপ্নেই আপনারা বিভোর থাকেন। এই বাংলাদেশ পঁচাত্তরের বাংলাদেশ নয়। এই বাংলাদেশে আজ আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সব শক্তির। তারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব, বাঙালি জাতীয়তাবাদের গণজাগরণ রক্ষা করার জন্য জীবন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে।
বিএনপি-জামায়াত চক্রান্ত চালাচ্ছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, এই চক্রান্তের অংশ হিসাবেই আজকে তারা মানুষের কাছে পৌঁছাতে না পেরে, মানুষের হৃদয়কে জয় করতে না পেরে এখন দৌড়াচ্ছে আন্তর্জাতিক মোড়লদের কাছে। এই আন্তর্জাতিক মোড়লরা আপনাদের ক্ষমতায় আনতে পারবে না।
বিএনপির ‘এক দফা’র আন্দোলনের সমালোচনা করে নানক বলেন, জনগণকে এই পর্যন্ত কী দিয়েছেন? ২০০১ সালে মায়ের সামনে মেয়েকে রেপ (ধর্ষণ) করেছেন। ভাইয়ের সামনে বোনকে রেপ করেছেন। আমাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছেন, হাত কেটেছেন চোখ উপড়ে ফেলেছেন। ২০১৪ সালে নির্বাচন প্রতিহতের আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করে জীবন্ত মানুষ হত্যা করেছেন। বাস, ট্রেন, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন, রাস্তার গাছ কেটে ফেলেছেন। শেখ হাসিনা সৃষ্টি করেন, আর তোমরা ধ্বংস করো। কাজেই মির্জা ফখরুল সাহেব, জনগণের জন্য যেহেতু কোনো কিছু করেননি, সেই জনগণকে কোনোদিনই আপনারা পাশে পাবেন না।
বিএনপিকে ষড়যন্ত্রের পথে ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রের পথ ছেড়ে দিয়ে যদি বিএনপি নামক দলটির অবশিষ্ট রক্ষা করতে চান, তাহলে আপনারা নির্বাচনের ফিরে আসুন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। প্রমাণ করুন বাংলাদেশের জনগণ সৃষ্টির পক্ষে না, ধ্বংসের পক্ষে? তা-ই প্রমাণ হয়ে যাক আগামী নির্বাচনে।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে উল্লেখ করে নানক বলেন, আগামী নির্বাচন হবে সবার কাছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। তাই সেই নির্বাচনে বিএনপিকে জনগণের কাছে অগ্নিপরীক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানাই।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফির সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ।
নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন লাভ ও নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা কলি’ পাওয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর নিজ এলাকা কুমিল্লার দেবিদ্বারে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা করেছে দলটির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
শনিবার দুপুরে দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ এলাকা থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের প্রায় আট কিলোমিটার এলাকা প্রদক্ষিণ করে দেবিদ্বার হাইস্কুল মাঠে এসে শেষ হয়। এতে মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও পিকআপসহ নানা বাহনে করে শত শত নেতা-কর্মী বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে ও ঐতিহ্যবাহী সাজে সজ্জিত হয়ে অংশ নেন। মিছিলে ‘শাপলা কলি’ প্রতীকের পাশাপাশি দলের দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর ছবি সংবলিত ব্যানার ও ফেস্টুন শোভা পায়।
এ সময় ‘এনসিপির মার্কা শাপলা কলি,’ ‘দিল্লি না ঢাকা-ঢাকা ঢাকা, ইনকিলাব জিন্দাবাদ,’ ‘গ্রাম-শহর অলিগলি, জিতবে এবার শাপলা কলি’ শ্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।
এনসিপির দেবিদ্বার উপজেলা প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন লাভ আমাদের দলের জন্য একটি ঐতিহাসিক অর্জন। এটি প্রমাণ করে, জাতীয় নাগরিক পার্টি জনগণের স্বার্থে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জনগণের ভালোবাসা ও সমর্থন নিয়েই আগামী নির্বাচনে ‘শাপলা কলি’ হবে পরিবর্তনের প্রতীক।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির নেতা মো. শামীম কাউসার, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক নাজমুল হাসান নাহিদ, কাজী নাছির উদ্দীন, আরিফুল ইসলাম, ফয়সাল হোসেন, এমরান হোসেন, ফয়সাল মির্জা, জামাল হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্র সংসদের নেতা রাকিবুল হাসান হৃদয়, সাজেদুল রাফসান, শাহাদাত হোসেন শ্যামল ও মো. হাসানসহ আরও অনেকে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে যে ঐকমত্যে পৌঁছানো হয়েছে- তা আমাদের মেনে নিতে হবে। এই ঐকমত্যের বাইরে কথা বলা হলে রাজনীতি ও সমাজে অপ্রয়োজনীয় বিভেদ সৃষ্টি হবে, যা গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়।
আমির খসরু বলেন, আজ একটি ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাজনৈতিক সংলাপ হয়েছে। এটি গণতন্ত্রকে যেমন এগিয়ে নেয়, তেমনি সমাজকেও সামনে নিয়ে যায়। আমরা একে অপরের সঙ্গে কথা বলা থেকে অনেক দূরে সরে গেছি, বিশেষ করে গত ১৫ বছরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে সবাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি। সংলাপের মাধ্যমে সেই ভাঙন কাটিয়ে উঠতে হবে।
গতকাল শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের নবনির্মিত ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সংলাপ করব, ঐকমত্যে পৌঁছব, যতটুকু সম্ভব। যেটুকু ঐকমত্যে পৌঁছানো যাবে না, সেটি সহনশীলতার সঙ্গে মেনে নিতে হবে।
নতুন বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, কোনো সরকার একা নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারে না। এজন্য সবার অংশগ্রহণ ও দায়বদ্ধতা জরুরি। প্রত্যেকে নিজের অবস্থান থেকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখলেই দেশ এগিয়ে যাবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় আসা দেশের জন্য টার্নিং পয়েন্ট ছিল।
শুক্রবার জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে মহাসচিবের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
৭ নভেম্বরের ঘটনাপ্রবাহ স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৯৭৫ সালের এই দিনে দেশপ্রেমিক সৈনিক ও জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে আধিপত্যবাদের চক্রান্ত বানচাল করে দেয় এবং স্বাধীনতার ঘোষক ও রাষ্ট্রনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে গৃহবন্দি থেকে মুক্ত করে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করে। এটাই ছিল বাংলাদেশের অগ্রগতির টার্নিং পয়েন্ট।’
তিনি বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন, গণমাধ্যম ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করেন। মাত্র চার বছরে তিনি দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন, মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করেন। তিনি যে ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, তার ওপর দাঁড়িয়েই আজকের বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশে এখন আবারও গণতন্ত্র ধ্বংসের চক্রান্ত চলছে। এই অবস্থায় ৭ নভেম্বরের চেতনা থেকেই আমাদের এগোতে হবে, যে পথে সত্যিকার অর্থেই গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র নির্মাণ করা সম্ভব হবে এবং জনগণের ভোটাধিকার ও ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তা মিলবে। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।’
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের গণভোট প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে ফখরুল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য (বৃহস্পতিবার) দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত আপনাদের পরিষ্কারভাবে জানানো হয়েছে। সেটাই আমাদের অবস্থান।’
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, এ জেড এম জাহিদ হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদসহ মহানগর উত্তর আমিনুল হক, দক্ষিণ রফিকুল আলম মজনু, তানভীর আহমেদ রবিনসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মহানগর বিএনপি, মহিলা দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, তাঁতীদল, মুক্তিযোদ্ধা দল, মৎস্যজীবী দলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারাও আলাদাভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এদিকে, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ঢাকাসহ সারাদেশে র্যালি কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। রাজধানীতে বিকেল ৩টায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে র্যালি শুরু হয়ে কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, বাংলোমোটর হয়ে সোনারগাঁও হোটেল মোড়ে শেষ হয়।
দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের ৭ নভেম্বর গুরুত্বপূর্ণ দিন। এ দিনে সৈনিক ও জনতা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। তাই ৭ নভেম্বরের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সব পর্যায়ের নেতারা। শুক্রবার জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে বিএনপির উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র্যালি ও সমাবেশে এ্ই আহ্বান জানান তারা।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানকে স্মরণ করে এদিন সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। দিনটি উদযাপন করা হয়েছে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে আবির্ভাবের ঐতিহাসিক মুহূর্তকে স্মরণ করার মধ্য দিয়ে।
রাজধানীতে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি করছে বিএনপি। বিকাল ৪টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এই র্যালি শুরু হয়। র্যালিটি নয়াপল্টন থেকে কাকরাইল, মালিবাগ ও বাংলামোটর হয়ে সোনারগাঁও হোটেলের সামনে গিয়ে শেষ হবে।
র্যালিপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশের জন্য কার্যালয়ের সামনে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়। র্যালি উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
কর্মসূচিকে ঘিরে বেলা ২টা থেকে নয়াপল্টন বিএনপির কার্যালয়ের সামনে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের জড়ো হতে দেখা গেছে। এ সময় নেতাকর্মীরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের নামে বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তুলেন।
র্যালিতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সংবলিত ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে অংশ নেন নেতাকর্মীরা।
দিবসটি স্মরণে সকালে সারাদেশে বিএনপির সব কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ১০টায় দলের শীর্ষ নেতারা শহীদ রাষ্ট্রপতি ও দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন।
এছাড়া বিএনপির সহযোগী সংগঠন ও স্থানীয় শাখাগুলো আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ফটো প্রদর্শনী, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং অনাথ শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাসামগ্রী বিতরণের মতো নানা আয়োজন করে।
প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
রাজশাহী: মহানগর ও জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু।
রাজশাহী মহানগর বিএনপি সভাপতি মামুন অর রশিদ মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি ওয়ালিউল হক রানা, জয়নুল আবেদীন শিবলী ও মুক্তার হোসেন মুক্তার।
দিবসটি উপলক্ষে বিএনপির দলীয় সকল কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি কোরআন তিলাওয়াত ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ভাষণ প্রচার করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিজানুর রহমান মিনু বলেন, আজকের দিনে সিপাহি-জনতা বিপ্লবের মাধ্যমে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে মুক্ত করেন। মুক্তির পর তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ শুরু করেন। কৃষির উন্নয়নে খাল খননসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেন।
বগুড়া: দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলন এবং শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে দিবসটি শুরু হয়।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় শহীদ খোকন পার্কে জেলা যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবকদরের আয়োজনে ৩ দিনব্যাপী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উপর স্থির চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত করা হয়। বাদ জুম্মায় জেলা বিএনপির উদ্যোগে বায়তুর রহমান সেন্ট্রাল মসজিদে জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত হয়।
এদিন বিকাল ৪টায় জেলা বিএনপির আয়োজনে আলতাফুনেছার খেলার মাঠ থেকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে বিশাল বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদিক্ষণ করে। র্যালিটি দৃষ্টিনন্দন করতে বেগম খালেদা জিয়ার সাজে সেজেছেন তরুণীরা, প্রতীকীভাবে সাজানো হয়েছে সামরিক ও সাঁজোয়া যান, হাতি, ঘোড়ারগাড়ি ও পালকি।
র্যালি পূবে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্বে করেন জেলা বিএনপির সভাপতি বেজাউল করিম বাদশা। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু।
সমাবেশে বক্তারা জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের বিভিন্ন তাৎপর্য বিষয়ে তুলে ধরেন।
নাটোর: জেলায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও সমাবেশ করেছে জেলা বিএনপি। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপশহর মাঠে শোভাযাত্রাপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাড. এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।
সমাবেশে এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, শহীদ জিয়ার আদর্শকে ধারণ করেই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। ৭ই নভেম্বর সিপাহ জনতা আন্দোলনের মাধ্যমে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে জেল থেকে মুক্ত করে এনেছিল। সে দিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র সার্বভৌমত্ব রক্ষা পেয়েছিল।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওযাজের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আসাদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান খান বাবুল চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম আফতাব, মোস্তাফিজুর রহমান শাহিন, নাটোর পৌরসভার সাবেক মেয়র কাজী শাহ আলম ও এমদাদুল হক আল মামুন প্রমুখ।
সমাবেশের পরে বের হওয়া বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
বান্দরবান: শুক্রবার বিকালে শহরের রাজার মাঠ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মুক্তমঞ্চে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে বান্দরবান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাচিং প্রু জেরী, যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যাপক ওসমান গনি, মশিউর রহমান মিঠুন, মজিবুর রশিদসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিএনপি নেতৃবৃন্দ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। এ দিনে সৈনিক ও জনতা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। ৭ নভেম্বরের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
কুষ্টিয়া: শুক্রবার দুপুরে কুমারখালী বাসস্ট্যান্ডে কুমারখালী উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং সকল অঙ্গসংগঠনের আয়োজনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এবং সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী।
কুমারখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নওয়াব আলীর সভাপতিত্বে ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এস এম শাতিল মাহমুদের সঞ্চালনায় এ সভায় জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের জেলা কমিটির সাবেক সভানেত্রী সৈয়দ ফাহিমা বানু, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও জেলা বিএনপি সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার সামছুজ্জোহা জাহিদ, কুমারখালী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার আব্দুল গাফ্ফার, কুমারখালী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম লিপন, কুমারখালী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন জিলাল, কুমারখালী উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি কিয়াম বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান সহ কুষ্টিয়া জেলা এবং কুমারখালী ও খোকসা উপজেলার বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
লালমনিরহাট: শুক্রবার বিকালে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা শেষে একটি র্যালী অনুষ্ঠিত হয়। র্যালীটি জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে মিশন মোড়সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এ কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।
এ সময় জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক একেএম মমিনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আফজাল হোসেন, সাহেদুল হক পাটোয়ারী, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনিছুর রহমান ভিপি আনিস প্রমুখ সহ জেলা, উপজেলা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মাগুরা: শুক্রবার সকালে দিনটি উপলক্ষে শহরের ভায়না মোড়ে বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা হয়। পরে সেখান থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় ভায়না মোড়ে এসে শেষ হয়।
র্যালি শেষে আয়োজিত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আকতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক খান হাসান ইমাম সুজা, যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন, জেলা বিএনপির সদস্য নাজমুল হাসান লিটনসহ বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভায় বক্তারা ৭ নভেম্বরের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদান স্মরণ করেন।
বরগুনা: শুক্রবার সকালে বিএনপি কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়েছে। বরগুনা জেলা বিএনপির উদ্যোগে সন্ধ্যা ৭টায় বিএনপি কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বরগুনা জেলা বিএনপির আহবায়ক নজরুল ইসলাম মোল্লা বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হুমায়ুন হাসান শাহিন জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফয়জুল মালেক সজিব। সভা পরিচালনা করেন বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান পান্না।
বরগুনা জেলা বিএনপির আহবায়ক নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন ৭ নভেম্বর আমাদের ইতিহাসের এক গৌরবময় দিন। জাতীয় ঐক্য ও দেশপ্রেম জাগ্রত করার এই দিনটি আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করছি।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সবাইকে ঐক্যবদ্ব থাকার আহ্বান জানান।
সিলেট: সিলেটে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল র্যালি, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল। বাংলাদেশ বেতার সিলেট কেন্দ্র এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করে।
ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে শুক্রবার বিকালে একটি র্যালি হয়েছে। র্যালিটি নগরীর কোর্ট পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে র্যালিটি চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
এর আগে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, ‘১৯৭৫ সালের এই দিনে নিদারুণ দুঃসময়ে দেশপ্রেমিক জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। যেভাবে স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে তিনি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন, সেভাবেই জাতীয় সংকটের মুহূর্তে তিনি জাতির রক্ষাকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন। জিয়ার বাংলাদেশ কখনও পরাধীন হবে না - এদেশ পার্শ্ববর্তী শক্তির সঙ্গে সম্মানের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা বলবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘৭ নভেম্বরের চেতনা আমাদের আহ্বান জানায়- সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ন্যায়বিচার ও সুশাসনের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।’
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, আঙুল বাকা করার ভয় দেখানো হচ্ছে- আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমরা সেই আঙুল ভেঙ্গে দেব। অতীতেও এমন বহু ভয় দেখানো হয়েছিল, কিন্তু বিএনপি কখনও পিছু হটেনি, ভয় পায়নি। আগামী জাতীয় নির্বাচনে সিলেট জেলার ছয়টি আসনসহ বিভাগের ১৯টি আসনে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বিজয়ের উপহার দেব, ইনশাআল্লাহ।’
সমাবেশে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন আশুক ও মহানগর বিএনপির সহসভাপতি ডা. নাজমুল ইসলাম। র্যালি ও সমাবেশে জেলা ও মহানগর বিএনপি ছাড়াও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করে।
দিবসটি উপলক্ষে জেলা ও মহানগর বিএনপির আওতাধীন সকল থানা, ওয়ার্ড, উপজেলা ও পৌর ইউনিটেও পৃথকভাবে র্যালি, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল হয়। পাশাপাশি দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসমূহ নিজেদের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালন করেছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি ও নোয়াখালী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, আগামী নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। যেকোনো ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। বিগত সময়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে ২২ জন নেতাকর্মী নোয়াখালী- ১ আসনে নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। শুক্রবার বিকালে সোনাইমুড়ী রেলওয়ে চত্বরে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি।
সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক দিদার হোসেন।
পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক মোতাহের হোসেন মানিকের সভাপতিত্বে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বা্য়ক মাসুদ আলম ফরহাদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পৌর বিএনপির সদস্য সচিব রেজায়ে রাব্বি মাহবুব। বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল গণি পাটোয়ারী মামুন, মাসুদের রহমান, ফখরুল আলম, লুৎফুর রহমান, পৌরসভা বিএনপির যুগ্ম আহ্বা্য়ক জালাল আহমেদ।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পরই তার দল নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হবে।
আজ বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফোরাম (ইউটিএফ)-এর আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘সনদে কোনো মতভেদের সুযোগ নেই। যেটুকু ঐকমত্যে গৃহীত হয়েছে সেটিই থাকবে, বাকিটা জনগণই নির্ধারণ করবে।’
নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপে জুলাই চার্টার বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, আসন্ন নির্বাচন জুলাই সনদের আইনগত কাঠামোর ভিত্তিতেই অনুষ্ঠিত হবে, যা ছাত্রনেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের চেতনার প্রতিফলন ঘটাবে।
নাহিদ বলেন, ‘আমরা চাই আগামী সংসদ এবং সংস্কার পরিষদে তরুণ, শিক্ষক, নারী, সংখ্যালঘু ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের প্রতিনিধিত্ব থাকুক, যাতে জুলাই সনদের চেতনা বাস্তবে রূপ পায়।’
নিজের আগের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, জুলাই সনদের আদেশ অবশ্যই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মাধ্যমেই জারি করতে হবে। নির্বাচনের আগে আমাদের অগ্রাধিকার হলো দাবি অনুযায়ী গণভোট অনুষ্ঠিত করা।’
তিনি আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে যারা অংশ নিয়েছেন, তাদের সবাইকে আসন্ন সংসদে প্রতিনিধিত্ব দিতে হবে। এই সংসদই একটি সংস্কার পরিষদ গঠন করবে, যারা নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য কাজ করবে।
নাহিদ বলেন, ‘শিক্ষকরা অবশ্যই এই প্রক্রিয়ার অংশ হবেন এবং এনসিপি তা নিশ্চিত করবে।’
জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষকদের ভূমিকা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষকদের অবদান জাতি চিরকাল মনে রাখবে। গত ১৬ বছর ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে পদোন্নতি নির্ধারিত হয়েছে রাজনৈতিক আনুগত্যের ভিত্তিতে, যা ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে টিকিয়ে রেখেছে। ব্যক্তিমন ও সমাজের মানসিকতার পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ দূর করা সম্ভব নয়।’
আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলামকে আহ্বায়ক এবং ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামীম হামিদিকে সদস্য সচিব করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফোরামের (ইউটিএফ) কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সভায় অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম ইউটিএফ ঘোষণাপত্র পাঠ করেন এবং দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বক্তব্য রাখেন। সূত্র: বাসস
কুমিল্লা টাউন হলে ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন কুমিল্লা সদর আসনের মনোনয়ন বঞ্চিত চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিন।
শুক্রবার বিকালে কুমিল্লা জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য বক্তব্য রাখতে গিয়ে আমিনুর রশীদ ইয়াছিন বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন না দিলেও আপনারা যারা বিএনপি করেন, শহীদ জিয়ার আদর্শ লালন করেন তারা নানা কর্মসূচির মাধ্যমে আমাকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আমি আপনাদের ভালোবাসায় সিক্ত। এক জীবনে এটা আমার বড় পাওয়া।
হাজী ইয়াছিন আরও বলেন, আল্লাহ নিশ্চয়ই আপনাদের মনের কষ্ট বোঝেন ও দেখেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ উত্তম পরিকল্পনাকারী। তিনি সত্য উন্নয়নের সাথেই থাকেন। আমার বিশ্বাস আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আমি আমার স্বপ্নপূরণ করতে পারব।
এর আগে শহরের কান্দিরপাড় জেলা বিএনপির কার্যালয় প্রাঙ্গণে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা হয়। পরে টাউনহলে সমাবেশ করে দলটির নেতাকর্মীরা।
পরে হাজী আমিনুল রাশে ইয়াসিনের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে জেলা ও মহানগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শিক্ষার্থী মীর মুগ্ধর ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেছেন, তরুণ প্রজন্ম এবং জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের জন্য বৃহৎ রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম থেকে কাজ করার উদ্দেশে বিএনপিতে যোগ দিয়েছি। তরুণদের এই দলটির কাছ থেকে অনেক কিছু পাওয়ার আছে, অনেক চাহিদা আছে। আমি মনে করি, এই প্ল্যাটফর্ম থেকে তরুণদের সেই চাহিদাগুলো পূরণে কাজ করতে পারব।
স্নিগ্ধ গত মঙ্গলবার বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে সদস্য ফরম জমা দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগ দেন।
বিএনপিতে যোগ দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে স্নিগ্ধ গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, নিঃসন্দেহে বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। এই দলের মাধ্যমে আমি জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের নিয়ে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে পারব। এছাড়া বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখার অনেকগুলোর সঙ্গে আমি সরাসরি কাজ করতে আগ্রহী।
এর আগে যোগদানের পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে তিনি তার আকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরেন। স্নিগ্ধ লেখেন, তার রাজনীতিতে আসার অন্যতম লক্ষ্য হলো সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে জুলাইকে প্রতিনিধিত্ব করা, শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের ‘ভয়েস’ হয়ে ওঠা এবং রাজনীতিতে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।
স্নিগ্ধ উল্লেখ করেন, তার ভাই মুগ্ধ বা পরিবারের কেউ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। মুগ্ধকে ‘দেশের সম্পদ’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, তিনি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত থেকে এবং নিজ যোগ্যতায় রাজনীতিতে এসেছেন।
স্নিগ্ধ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাকে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য দলে চেয়েছেন, যা তার নিজের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা।
রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে নির্বাচন কমিশনের সামনে আমরণ অনশন করছেন আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমান। তার এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, তারেক এ দেশের স্বার্থে কথা বলেছেন, আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে কথা বলেছেন। আমজনতার দলের অবশ্যই নিবন্ধন প্রাপ্য।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের প্রধান ফটকে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমজনতার দল এরই মধ্যে আবেদন করেছিল, সে আবেদনটি গ্রাহ্য করা হয়নি। আমি দেখেছি, আরও গুরুত্বহীন কিছু দল তারাও নিবন্ধিত হয়েছে। কিন্তু তারেকের দলের নিবন্ধন দেওয়া হলো না কেন, আমি বুঝতে পারলাম না। তারেক একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। তার বৈধতার জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছিলেন। তিনি তো কোনো গোপন রাজনৈতিক দল করতে চাননি। আইনসম্মত রাজনৈতিক দল করতে চেয়েছে। যদি তার উদ্দেশ্য খারাপ থাকতো, তাহলে গোপন রাজনৈতিক দল করে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ করতেন। রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ তারেক করেননি।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, স্বাধীনতার স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে এ নেতা (তারেক) কথা বলেছেন। আমি দেখেছি, তিনি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলেছেন। দেশকে যারা অর্থনৈতিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে এবং সাংস্কৃতিকভাবে আধিপত্য বিস্তার করতে চায়, সে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন তারেক। আজ তার দলের নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না, তাহলে নির্বাচন কমিশন কাদের নিবন্ধন দেবে?
রিজভী বলেন, কাউকে আমি ছোট করতে চাই না। কিন্তু তার (তারেক) যে চিন্তা, রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং কর্মসূচি অনুযায়ী যে রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন, সে রাজনৈতিক দলের (আমজনতার দল) নিবন্ধন অবশ্যই প্রাপ্য। এ ন্যায়সংগত কারণে যে অনশন করছেন, তার এ অনশন কর্মসূচির প্রতি আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) পক্ষ থেকে পূর্ণ সংহতি জ্ঞাপন করছি।
গত মঙ্গলবার তারেক রহমান অনশন শুরুর পর নির্বাচন ভবনের সামনে আরও কয়েকটি দলের নেতাকর্মীরা সংহতি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে নেমেছেন।
জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও নভেম্বরে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে আগামী ১১ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনরত আট দল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান শেষে রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
গোলাম পরওয়ার বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক স্মারকলিপি গ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন, তবে আমরা চাইছিলাম সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার কাছেই স্মারকলিপি দিতে। পরে তার নির্দেশে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান আমাদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
গোলাম পরওয়ার আরও জানান, আমরা আট দলের শীর্ষ নেতারা শিল্প উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেছি। তিনি আমাদের দাবির সঙ্গে দ্বিমত করেননি এবং বলেছেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করবেন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, শিল্প উপদেষ্টা আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা জরুরি। আমরা সেটিকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছি।
সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, আগামী ১১ তারিখে ঢাকায় লাখো জনতার উপস্থিতির আগে আমাদের পাঁচ দফা দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন। তা না হলে ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে।
এ সময় জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, ‘সোজা আঙুলে যদি ঘি না উঠে, তাহলে আঙুল বাঁকা করব।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর পল্টন মোড়ে গণমিছিল-পূর্ব সমাবেশে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। বলেন, ‘মরা আপনাদের চালাকি বুঝি। আপনাদের চালাকির ভিত্তিতেই দাবি আদায়ের পন্থাও আমরা আবিষ্কার করব। আমরা এখানো নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলনে আছি।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবি ও নির্বাচনের আগে গণভোটসহ ৫ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করছে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনসহ সমমনা আটটি দল। গণমিছিল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ছিল দলগুলোর।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে দলগুলো আলাদা মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়ে এসে সমবেত হয়। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে দুপুর ১২টার দিকে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রা শুরু করে।
সমাবেশে জামায়াতের নায়েবে আমির তাহের বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরেও গণভোট করতে আইনি বাধা নেই। এ বিষয়ে সময়ক্ষেপণ অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলবে।
গণভোটে টাকার অভাব হবে না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, অনেকে গণভোটের ক্ষেত্রে খরচের কথা বলেন। একদিনে বাংলাদেশে যে পরিমাণ চাঁদাবাজি হয়, সেই টাকা দিয়ে একটা গণভোট করা সম্ভব।
জামায়াতের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে জানিয়ে তাহের আরও বলেন, সরকারকেও এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করতে হবে। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য জামায়াত একটি কমিটি গঠন করেছে। অন্য দলগুলোও যাতে আলোচনার জন্য কমিটি গঠন করে।
এই জামায়াত নেতার ভাষ্য, জাতি মনে করে মেজর দলগুলো বসে শুধু জুলাই সনদ নয়, আগামী নির্বাচন কীভাবে হবে সেই বিষয়েও আলোচনা করবে। সেই আলোচনায় নির্বাচনে ভোট ডাকাতি যে হবে না—দলগুলোকে এই বিষয়ে ঐক্যমত্য পোষণ করতে হবে। জাতির কাছে টেলিভিশনে ওয়াদা করতে হবে—কেন্দ্র দখল হবে না। করলে সেই কেন্দ্রের ভোট বাতিল হবে, এমন ঘোষণা দিতে হবে। প্রধান উপদেষ্টাকেও বলতে হবে, নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে সেটি বাতিল করে নতুন করে নির্বাচন দেবেন। এদেশের মানুষ আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন দেখতে চায় না।
তিনি নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। এরপরও উন্নতি না হলে আগামী ১১ নভেম্বর ঢাকা মহানগরী হবে জনতার নগরী।
জাতীয় নির্বাচন পেছালেও গণভোট আগে হতে হবে বলে সমাবেশে দাবি জানান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান। বলেন, জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট হবে না। যেদিনই নির্বাচন হোক, গণভোট আগে দিতে হবে। নির্বাচন পিছিয়ে গেলেও গণভোট আগে হতে হবে। যারা বলেছে, সংস্কার লাগবে না, তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে না।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী ও নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে দুপুর ১২টার দিকে পল্টন থেকে গণমিছিল নিয়ে যমুনার অভিমুখে এগোতে থাকেন দলগুলোর নেতাকর্মীরা। সোয়া ১২টার পর মিছিলটি মৎস্য ভবন এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ বাধা দেয়। পরে আট দলের নয়জন নেতার একটি প্রতিনিধিদল যমুনায় প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিতে যান।
তারা হলেন—জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক মূসা, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির সভাপতি একেএম আনোয়ারুল ইসলাম।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট হতে হবে। এ বিষয়ে আমরা একমত। সংসদ নির্বাচনের আগে কোনো গণভোট হতে দেওয়া হবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিকালে যশোর টাউন হল মাঠে স্মরণসভায় বিএনপির মহাসচিব বলেন, কয়েকটি রাজনৈতিক দল বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে। নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এটা জনগণ মেনে নেবে না। অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন হয়েছি ফ্যাসিস্টের হাত থেকে। একটা সুযোগ পেয়েছি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার। কোনো মহলের চক্রান্তে আমরা এই সুযোগ বিনষ্ট হতে দিতে পারি না।
এসময় উপদেষ্টা পরিষদ পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যেগুলোতে ঐকমত্য হবে সেটা থাকবে, আর যেটা হবে না, সেটা আগামী পার্লামেন্টে চলে যাবে, সেখানে নির্ধারিত হবে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা, হঠাৎ করে দেখা গেল যে, এই উপদেষ্টা কমিটি একটা উপদেষ্টা মণ্ডলী সভা করলেন, সভা করার পরে আসিফ নজরুল সাহেব জাতিকে জানালেন, যে বিষয়গুলো এখনো সমাধান হয়নি, সেগুলো সমাধান করার জন্য আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে সাত দিনের সময় দিচ্ছি।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আমরা তো প্রত্যেকটা সভায় গেছি। প্রত্যেকটা সভায় আমাদের মতামত দিয়েছি। আজকে কেন আবার এই প্রসঙ্গ উঠছে যে, রাজনৈতিক দলগুলোকে বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে! তাহলে আপনারা কী করলেন এত দিন ধরে?
ফখরুল বলেন, আমি আজ পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, যে দাবি-দাওয়াগুলো নিয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ঘেরাও করছে, অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে, আবার একটা চক্রান্ত করছে নির্বাচন বানচাল করার জন্য, নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য—এটা এই দেশের জনগণ মেনে নেবে না। আমরা অনেক দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছি। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো বিষয়ে রাস্তায় নামিনি কিন্তু মনে রাখবেন, বিএনপি কোনো ভেসে আসা দল নয়! বিএনপি এই দেশের জনগণের গড়া একটি দল। শহীদ জিয়াউর রহমানের দল, স্বাধীনতার ঘোষকের দল। এই দল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার, গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন সংগ্রাম করা নেত্রীর দল। আমাদের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ২০ হাজার মানুষকে হত্যা, এক হাজার ৭০০ মানুষকে গুম করে দেওয়া—সেই অবস্থা থেকে উঠে আসা একটি দল। সুতরাং আমাদেরকে খাটো করে দেখবেন না, অবজ্ঞা করে দেখবেন না। আমরা যদি রাস্তায় নামি, তাহলে কিন্তু রাজনৈতিক বিষয়গুলো ভিন্নভাবেই আসবে।
রাজনৈতিক দলগুলো প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দয়া করে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করবেন না। দয়া করে দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবেন না। দয়া করে দেশের মানুষকে অশান্তিতে ফেলার কোনো ব্যবস্থা করবেন না। আমরা বহু সংগ্রাম-লড়াই করেছি। আপনারা আজকে নতুন করে শুরু করতে যাচ্ছেন আপনাদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার জন্য, সেটা এই দেশের মানুষ কিন্তু কোনো মতেই মেনে নেবে না।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকনের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক দপ্তর সম্পাদক, যশোর-১ (শার্শা) আসনে বিএনপির প্রার্থী মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক, যশোর-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য, যশোর-২ আসনে দলীয় প্রার্থী সাবিরা সুলতানা মুন্নী, কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, কেন্দ্রীয় সদস্য, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি যশোর-৬ আসনে দলীয় প্রার্থী কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, জেলা কমিটির সাবেক নেতা অ্যাডভোকেট মুহম্মদ ইসহক, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলামসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন- তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক নার্গিস বেগম, তরিকুলের ছেলে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনকি সম্পাদক ও যশোর-৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
শেরপুর জেলা বিএনপি ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম ও সদস্য সচিব অধ্যক্ষ এবিএম মামুনুর রশিদ পলাশ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ দুটি কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
অনুমোদনপ্রাপ্ত কমিটিগুলোর মধ্যে ঝিনাইগাতী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে আলহাজ্ব মো. শাহজাহান আকন্দকে এবং সদস্য সচিব করা হয়েছে মো. লুৎফর রহমানকে। ১০১ সদস্য বিশিষ্ট এই আহ্বায়ক কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দেয় শেরপুর জেলা বিএনপি।
অন্যদিকে, শ্রীবরদী উপজেলা বিএনপির ১০১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিতে আহ্বায়ক হয়েছেন মো. আব্দুর রহিম দুলাল এবং সদস্য সচিব হয়েছেন আবদুল্লাহ আল মামুন দুলাল।
কমিটি অনুমোদনের পর ঝিনাইগাতী উপজেলা বিএনপির নবনিযুক্ত সদস্য সচিব মো. লুৎফর রহমান এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আমি সর্বপ্রথম কৃতজ্ঞতা জানাই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানের প্রতি। ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই শেরপুর-৩ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী, সাবেক তিনবারের এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জননেতা মাহমুদুল হক রুবেল ভাইকে। পাশাপাশি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ও সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ পলাশসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকেও ধন্যবাদ জানাই আমাদের প্রতি আস্থা রাখার জন্য। আমরা মাঠে থেকে মানুষের পাশে থেকে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করবো ইনশাআল্লাহ।”
অন্যদিকে আহ্বায়ক আলহাজ্ব মো. শাহজাহান আকন্দ বলেন,
“দল আমাদের ওপর যে আস্থা রেখেছে, তার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে বিজয়ী করতে কাজ করবো। এখন সময় মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়ার। আমরা চাই, আগামীর প্রতিটি পদক্ষেপ হোক দলের, দেশের ও জনগণের কল্যাণে।”
স্থানীয় রাজনীতিতে এই দুই উপজেলা কমিটি অনুমোদনকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।