একাদশ জাতীয় সংসদের শূন্য দুটি আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে শাহজাহান আলম সাজু এবং লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে গোলাম ফারুক পিংকুকে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি।
রোববার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এ দুই আসনে উপ-নির্বাচন হবে আগামী ৫ নভেম্বর। তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১১ অক্টোবর এবং যাচাই-বাছাই হবে ১২ অক্টোবর।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা এবং লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শাহজাহান কামাল রাজধানীর হাসপাতালে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভোরে মারা যান।
এরপর গত ১ অক্টোবর সংসদ সচিবালয় এই দুই আসন শূন্য ঘোষণা করে। তারপর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
ভারত ১৭ বছরে আমাদের কিছু দেয়নি, বরং নিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ, ন্যায্য পানির হিস্যা ও আমাদের ওপর পার্শ্ববর্তী দেশের দাদাগিরি বন্ধে গুরুত্ব দেওয়া হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে সহায়তা করেছিল ভারত। এ হিসেবে এ দেশকে তাদের ভালো কিছু দেওয়ার কথা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য গত ১৭ বছরে তারা কিছু দেয়নি, বরং নিয়ে গেছে।
গতকাল শনিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহানন্দা নদীর ওপর নির্মিত রাবার ড্যাম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা চাই, প্রতিবেশী দেশ ইচ্ছে করলেই আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে পারে এবং আমি মনে করি, যেহেতু ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তারা আমাদের সহায়তা করেছেন, তাই আরও বেশি করে আপনাদের বাংলাদেশকে সহায়তা করা দরকার। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা গত সরকার ও মোদি সরকারের সময় দেখেছি, উল্টো তারা বাংলাদেশির চাপে ফেলেছেন, সব নিয়ে গেছেন, কিন্তু বিনিময়ে আমাদের কিছু দেননি। এটা ছিল আওয়ামী লীগ ও হাসিনা সরকারের ব্যর্থতা- যে তারা কিছু নিতে পারেনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা শতভাগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এটা আমাদের রাজনীতি। আমরা বাংলাদেশ নামে যে ভূ-অঞ্চলে বাস করি, এখানকার পুরো পানির হিস্যা, আমাদের সীমান্তে হত্যা, আমাদের ব্যালেন্স অব ট্রেডের সব কিছু ঠিক করা, এই জিনিসগুলোকে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই।
এ সময় বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক শাহজাহান মিঞা, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির শিল্প-বাণিজ্যবিষয়ক সহ-সম্পাদক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. আমিনুল ইসলামসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এদিকে, বিকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে এক গণসমাবেশে জামায়াতের উদ্দশে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা খুব পরিষ্কার করে বলছি- আপনারা ভালো হয়ে যান। এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতিতো অনেক আগে থেকে শুরু হয়েছে। কেন মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন। আপনাদের যত বিলবোর্ড দেখলাম, অন্য কোনো দলের তো এত দেখলাম না। যত পোস্টার দেখলাম, অন্য কোনো দলের এতো দেখলাম না। তাহলে কেন মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন। আপনারাতো নির্বাচন করবেন। নির্বাচন না করলে আপনাদের অস্তিত্ব থাকবে না। নির্বাচন করলে আপনারা পরাজিত হবেন, তাই নির্বাচন পেছাতে চান।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে, এই নির্বাচন হতে হবে। এই নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এই নির্বাচন দিতে যত দেরি হচ্ছে বাংলাদেশ তত দুর্বল হচ্ছে। জনগণের সমর্থন ছাড়া কোনো সরকার সফলতার সঙ্গে দেশ চালাতে পারে না।
অর্থনীতিবিদ ও গণনীতি বিশ্লেষক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, নির্বাচন এখন ক্রমান্বয়ে একটি অবধারিত ঘটনায় পরিণত হচ্ছে। গতকাল শনিবার রাজশাহীতে ‘নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রাক-নির্বাচনি উদ্যোগ’-এর সেখানকার আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত রাজশাহীর পবার ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-এর ফেলো এবং নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নির্বাচন এখন ক্রমান্বয়ে একটি অবধারিত ঘটনায় পরিণত হচ্ছে। যে কোনো একটি ঘটনায় পৌঁছানোর রাস্তা অনেক ক্ষেত্রে সমস্যাসংকুল থাকে। প্রত্যেকেই আশা করছেন, নির্বাচনটা হবে যথাসময়ে, সুষ্ঠুভাবে, অংশগ্রহণমূলক হবে এবং যে ফলাফল আসবে তা বাংলাদেশের আগামী দিনের যে চেষ্টা, সেটাকে আরও এগিয়ে নেবে।
এর আগে পরামর্শ সভায় রাজশাহী অঞ্চলের সাধারণ নাগরিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক, রাজনৈতিক দলের স্থানীয় পর্যায়ের প্রতিনিধি, আইনজীবী, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের পাশাপাশি স্থানীয় উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
সেখানে সংস্কার, সুশাসন, নিরাপত্তা, প্রার্থী নির্বাচন, কর্মসংস্থান, শিক্ষা সংস্কার, স্বাস্থ্য সংস্কার, আঞ্চলিক ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণসহ নানা বিষয়ে অংশগ্রহণকারীরা মত দেন। এছাড়া আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের বিবেচ্য বিষয় ও সরকারের কাছে প্রত্যাশার বিষয়গুলো তারা তুলে ধরেন।
সভা শেষে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অংশগ্রহণকারীরা দেখতে চাচ্ছেন একটা নির্বাচন, যেখানে প্রকৃত জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন। ব্যয়কে নিয়ন্ত্রণ করা, সোশ্যাল মিডিয়া-সামাজিক মিডিয়ার অপব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং যথোপযুক্ত প্রার্থীকে দাঁড় করানোর ব্যাপারে খুব বড়ভাবে কথা আসছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের ব্যয় যদি কমানো না যায়, তাহলে দুর্নীতি কমানো মুশকিল হবে। প্রত্যেকটা জনপ্রতিনিধি কী দায়িত্ব পালন করলেন, বাৎসরিকভাবে সেই হিসাব দেওয়ার কথা তারা বার বার বলছেন।
তিনি জানান, রাজশাহীকে কেন্দ্র করে চারটি বড় বড় বিষয় উঠে আসছে। রাজশাহী মরুকরণ হচ্ছে। উত্তরাঞ্চলে পদ্মা ও তিস্তার পানি সংকটকে নিরসন করা। দ্বিতীয়ত জ্বালানি সংকট রয়েছে। বিশেষ করে গ্যাসের সমস্যা। যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যার কথা এসেছে। এখানে শিল্প নেই। শিল্পায়নের ব্যাপারে অনেকে গুরুত্বারোপ করেছেন। স্বাস্থ্যসেবা, মানসম্মত শিক্ষা, দরিদ্র মানুষের সামাজিক সুরক্ষার ব্যাপারে কথা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি এসেছে নিরাপত্তার বিষয়টি। এটি শুধু অর্থনৈতিক নিরাপত্তার বিষয় না, সামাজিক নিরাপত্তা, সাংস্কৃতিক নিরাপত্তা এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আসছে। নিরাপত্তার বিষয়টিকে মানুষ সুশাসনের সঙ্গে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সঙ্গে, প্রশাসনের দক্ষতা-সক্ষমতার সঙ্গে, রাজনৈতিক মনোভাবের সঙ্গে এবং সরকারের অভিপ্রায়ের সঙ্গে যুক্ত করে দেখেছেন। অর্থাৎ নিরাপত্তার বিষয়টিকে তারা সামগ্রিকতায় বিচার করেছেন।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, এই নিরাপত্তাকে যদি জোরদার করা না যায়, তাহলে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা কষ্টকর হবে বলে অংশগ্রহণকারীরা বিবেচনা করেছেন। নির্বানোত্তর নিরাপত্তার বিষয়টিও তাদের কাছে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। কাজেই এ সব বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ সংবিধানে পুনর্বহাল করবে বলেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
গতকাল শনিবার ঢাকায় এক সমাবেশ তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে প্রথমবারের মতো ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ সংযোজন করেছিলেন, সেটা বহাল আছে। অনেকেই এটা সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল…পারে নাই।’
‘কিন্তু যেটা বহাল নাই… রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে আমরা যেটা সংযোজন করেছিলাম, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, ‘মহান আল্লাহর উপরে আস্থা এবং বিশ্বাস’…সংবিধানের প্রস্তাবনায় ছিল এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ছিল আর্টিকেল ৮ এর মধ্যে। সেটা তুলে নেওয়া হয়েছে আপনারা জানেন।’
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটিরি এই সদস্য সমবেতদের কাছে জানতে চান বিএনপি সেটি পুনর্বহাল করবে কি না? খতমে নবুয়তের নেতা-কর্মীরা সমস্বরে ‘হ্যা’ সূচক জবাব দিলে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ইনশাল্লাহ যেটা আমরা পুনর্বহাল করব।’
খতমে নবুয়তের দাবির প্রসঙ্গ ধরে তিনি বলেন, ‘ইনশাল্লাহ, যদি বাংলাদেশের সরকার পরিচালনার দায়িত্ব আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে দেয়, যদি এদেশের জনগণ আমাদেরকে মহব্বত করে দায়িত্ব দেয়, যদি আপনারা সবাই সহযোগিতা করেন, এই মঞ্চে উপবিষ্ট রাজনৈতিক নেতারা, পীরে কামেল, হয়রতে উলামায়ে কেরাম, আমাদের দেশের বুজুর্গানে দ্বীন, যারা আমাদেরকে পরিচালিত করেন, সবাই যদি আপনারা সহযোগিতা করেন, একসাথে থাকেন তাহলে আজকে যে সমস্ত দাবি দেওয়া হয়েছে সকল দাবি-দাওয়া বা প্রস্তাবের পক্ষে আইনি ব্যবস্থা জাতীয় সংসদে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে।’
এজন্য জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জাতীয় সংসদে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, সারা বাংলাদেশের মুসলমানদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা ইনশাআল্লাহ আপনাদের এই প্রস্তাব গ্রহণ করব।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা মুসলমান, আমরা ‘লা ইলাহা ইল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলাল্লাহতে’ বিশ্বাস করি। রসুলুল্লাহ মুহাম্মদ (সা.) বলে গিয়েছেন, ‘আমিই আখেরি নবী, আমার পরে কোনো রসুল আসবে না, কোনো নবী আসবেন।’
‘যদি কেউ পরে দাবি করে থাকেন, নিজেকে নবী ঘোষণা করে থাকেন তাহলে তিনি রসুলাল্লাহ (সা.) এই বাণীর মধ্যে নাই। আমরা রসুলকে আখেরি নবী হিসেবে বিশ্বাস করে, কলেমা পড়ে আমরা মুসলমান হয়েছি। বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে আমরা এদেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশি পরিচয়ে বিশ্বাস করি। আর যারা রসুলল্লাহর (সা.) পক্ষে নয়, তারা মুসলমান হতে পারে না।’
খতমে নবুওয়ত পরিষদের উদ্যোগে এই আন্তর্জাতিক মহাসম্মেলন হয়। কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে এই মহাসম্মেলনটি সকাল ৯টায় শুরু হয়ে বেলা ২টা পর্যন্ত চলে।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, সৌদি আরব, মিশর থেকে আসা আলেম-উলামারা ও ইসলামী চিন্তাবিদরা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পাকিস্তানের জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি ফজলুর রহমান।
খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ কমিটির আমির মধুপুরের পীর আল্লামা আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভারতের জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি সাইয়্যিদ মাহমুদ মাদানি, পাকিস্তানের বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব হানিফ জালন্দরি এবং মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুসআব নাবীল ইবরাহিম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মহিবুল্লাহ বাবুনগরী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি উবায়দুল্লাহ ফারুক, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুহাম্মদ আবদুল মালেক, হেফাজতে ইসলামের নজিবুল হাসান কাশেমী, মাহবুবুল হক, জুনায়েদ আল হাবিব, আবদুর রব ইউসুফী, পীর মাওলানা খলিলুর রহমান নেসারাবাদী, মাওলানা নুরুল হক, পীর শফিকুল হক, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীন, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান।
জামালপুর–২ (ইসলামপুর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত সাক্ষাৎকারকে বিকৃত আকারে প্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইসলামপুর থানা মোড়ে উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে উপজেলা বিএনপি। সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নবাব অভিযোগ করে বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী একটি মহল বিএনপি মনোনীত প্রার্থীকে নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন। ইসলামপুর আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এম সুলতান মাহমুদ বাবু'র গণমাধ্যমে সদ্য প্রচারিত একটি সাক্ষাৎকারকে বিকৃত আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সুলতান মাহমুদ বাবু দুই বারের সংসদ সদস্য। গত ১৭ বছর আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং তৃণমূল নেতাকর্মীদেরকে ধরে রেখেছেন। তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। জনগণের কাছে নেতিবাচক বার্তা পৌঁছাতে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিএনপি একটি সুসংগঠিত রাজনৈতিক দল। এই বিভ্রান্তি ছড়িয়ে কোনো লাভ হবে না। আমরা এ ধরনের বিকৃত তথ্য প্রচারের তীব্র নিন্দা জানাই।
এ সময় অন্যান্য নেতারা বলেন, বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর জনপ্রিয়তা ও দলের প্রতি তৃণমূলের সমর্থন দেখে স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে কেউ কেউ বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণায় লিপ্ত রয়েছে। তারা গণমাধ্যমে সঠিক তথ্য প্রচারের আহ্বান জানান এবং এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ঘোষণা দেন। দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী এমন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা আব্দুল ওয়াহাব মাস্টার, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান খান শাহিন, এ,কে,এম শহিদুর রহমান, সহ সভাপতি রেহান আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবির আহম্মেদ বিপুল, দপ্তর সম্পাদক ফিরুজ আহম্মেদ মিন্টুসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৩ নভেম্বর সারাদেশের ২৩৭ টি আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এরমধ্যে জামালপুর-২ (ইসলামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম সুলতান মাহমুদ বাবু'র নাম ঘোষণা করা হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য পরিবেশে আয়োজন করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা ও পরামর্শ চেয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।
রোববার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সাথে দ্বিতীয় দিনের প্রথম পর্বের সংলাপে স্বাগত বক্তব্যে এই আহ্বান জানান তিনি।
সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশন একা এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করতে পারে না। বিশেষ করে জাতীয় নেতৃবৃন্দ, যাদের সরাসরি ভোটারদের প্রভাবিত করার ক্ষমতা আছে, তাদের সহযোগিতা অপরিহার্য।
তিনি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কমিশনকে অনেকগুলো বড় ও চ্যালেঞ্জিং কাজে হাত দিতে হয়েছে। কাজের চাপের কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।
কমিশনের কয়েকটি প্রধান কাজ ও সাফল্য প্রসঙ্গে সিইসি জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদ ছিল একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। প্রায় ৭৭ হাজার লোক এই কাজে মাঠে কাজ করেছে। এছাড়া প্রায় ২১ লাখ মৃত ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং ৪০ লাখেরও অধিক লেফট আউট ভোটারকে, যারা ভোটের যোগ্য কিন্তু তালিকায় নাম ছিল না, তাদের শনাক্ত করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
নতুন উদ্যোগ ও ইনিশিয়েটিভ এর বিষয়ে সিইসি বলেন, ডায়াসপোরাদের ভোটদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত জটিল ও নতুন একটি উদ্যোগ। নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত প্রায় ১০ লাখ লোক (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পোলিং ও প্রিসাইডিং অফিসার) যাতে নিজেরা ভোট দিতে পারেন, সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দেশের বাইরে পোস্টেড সরকারি চাকরিজীবীদের ভোটদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং কারাগারে থাকা নাগরিকদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথা তুলে ধরেন নাসির উদ্দীন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা বিলম্বে শুরু হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা এত কাজের চাপের মধ্যে পড়ে গেছি। তবে নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন তাদের পক্ষ থেকে কাজটি অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। সংস্কার কমিশন রিপোর্ট দেওয়ার আগে রাজনৈতিক দলের নেতারাসহ বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে ৮০টির বেশি সংলাপ করেছে। ঐক্যমত্য কমিশনেও নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা হয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকেও সংস্কার কমিশনের কিছু বিষয় স্ব-উদ্যোগে বাস্তবায়নের ঘোষণা ছিল।
নির্বাচনী আচরণ বিধিমালার গুরুত্ব তুলে ধরে সিইসি বলেন, আচরণ বিধিমালা তৈরির পর তা দীর্ঘদিন ওয়েবসাইটে রাখা হয়েছিল এবং রাজনৈতিক দলগুলোর লিখিত মতামত নিয়ে এতে সমন্বয় করা হয়েছে। নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা সুষ্ঠুভাবে পরিপালনের ওপরেই একটি সুন্দর নির্বাচন অনেকাংশে নির্ভর করে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে মনোযোগ দিয়ে আচরণ বিধিমালাটি পড়ে দেখতে এবং তাদের দলের কর্মীদের কাছে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
পরে নিবন্ধিত ছয়টি দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু হয়। এই ছয়টি দল হচ্ছে- গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি-বিএসপি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি। এদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ইসি আরও ছয়টি দল বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-বাংলাদেশ জাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে মতবিনিময় করবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সংলাপের প্রথম দিনে ১২টি দলের সঙ্গে দুই পর্বে মতবিনিময় হয়। মোট ৫৩টি নিবন্ধিত দলে সঙ্গে সংলাপ চলতি মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
যারা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে তারা জ্বলে পুরে মরবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়াপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও কুষ্টিয়া-৪ আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী।
শনিবার সকালে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সমাবেশ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মেহেদী রুমী বলেন, কে কি বিক্ষোভ করলো আই ডোন্ড মাইন্ড ফর দ্যাট, যেমন জামায়াত ইসলামিরা বেহেশতে পাঠাচ্ছে, বেহেশতে কি জামায়াত ইসলাম পাঠাতে পারে, এটা আল্লাহ ও নবী পারেন।
এরকম কে বিক্ষোভ মিছিল করলো, উগ্র স্লোগান দিলো আই ডোন্ড কেয়ার, এরা জ্বলে পুরে মরবে আপনারা অপেক্ষা করেন।
তিনি আরও বলেন, আমি আমার দলের সবার সাথে কথা বলেছি, বিশেষ করে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশি আনছার প্রামাণিকের সাথে, সে বলেছে যদি সে নির্বাচন না করে তাহলে অবশ্যই আমার পক্ষে কাজ করবে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কুমারখালী উপজেলা শাখার আয়োজনে আবুল হোসেন তরুণ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সমাবেশে মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ ফাহিমা রুমীর সভাপতিত্বে কুষ্টিয়া-৪ আসনের মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক সাংসদ সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী। বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমারখালী উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি সাজেদা পারভীন।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও কুষ্টিয়া আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদক অ্যাড শাতিল মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এ্যাড, গোলাম মহম্মদ, কুমারখালী আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ তরিকুল ইসলাম নিপন, উপজেলা মহিলা দলের নেত্রী শাহানা ইসলাম নিতু, মাসুমা আক্তার রত্না, সেলিনা আক্তার মিনি, মেহেরুন নেছা বক্তব্য রাখেন। এসময় সমাবেশে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মহিলা দলের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
মেহেরপুর-২ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আমজাদ হোসেনের ধানের শীষের পক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক বিরাট গণমিছিল। বাঁশবাড়িয়া থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে গাংনী বাজার এলাকায় এসে শেষ হয়।
শনিবার বিকেলে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গাংনী অংশজুড়ে এ গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
গণমিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির দলীয় প্রার্থী সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন। এসময় গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু, গাংনী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মোরাদ আলী, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মতিয়ার রহমান মোল্লাহ, জেলা কৃষক দলের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, গাংনী পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাজমুল হুসাইনসহ স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ, জেলা ও উপজেলা বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতা, যুবদলুছাত্রদলুস্বেচ্ছাসেবকদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। এদিকে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা খন্ড খন্ড মিছিলকে ঘিরে পুরো এলাকায় সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ।
গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে দলে দলে মানুষ মিছিলে যোগ দেন। পুরুষ ভোটারের পাশাপাশি নারীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড, মাথার উপরে উড়তে থাকা ধানের শীষের প্রতীক—সব মিলিয়ে মহাসড়কজুড়ে তৈরি হয় নির্বাচনী উচ্ছ্বাস।
মিছিল চলাকালে আমজাদ হোসেন সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়ে অভিবাদন জানান। নেতাকর্মীদের শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে ভোট চেয়ে তিনি আহ্বান জানান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ থাকার। মিছিলে অংশ নেওয়া অনেক নারী ভোটার বলেন, পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে তারা ধানের শীষকে সমর্থন করছেন। দিনভর আয়োজনে অংশ নেয়া কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিতে গণমিছিলটি পরিণত হয় এক বিশাল শো-অফ-স্ট্রেংথে।
যারা জান্নাতের টিকিটের কথা বলে তাদের খপ্পরে পড়বেন না, মাগুরায় নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের বিশেষ আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান এ আহ্বান জানান।
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মনোয়ার হোসেন খান মাগুরা-১ আসনে সমাজের নারী ও শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠা বিএনপির নির্বাচনী অগ্রঅধিকার বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে শ্রীপুর সরকারি এম. সি. পাইলট বিদ্যালয়ে প্রথম নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক বেগম সেলিমা রহমান। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক এবং মহিলাদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আরলী।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী।
প্রধান, অতিথির বক্তব্যে বেগম সেলিমা রহমান বলেন, সমাজে নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য দূর করতে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের পাশাপাশি সমন্বিত সামাজিক উদ্যোগের প্রয়োজন। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে নারীদের সর্বোচ্চ অধিকার দেওয়া হবে। বিএনপি নারী ও শিশুদের নিয়ে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তাই আপনারা ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিপুল বিজয়ী করবেন। আপনারা আপনাদের নায্য অধিকার বুঝে পাবেন। তাই মা বোনদের বলি আপনাদের একটি দল জান্নাতের টিকিট দিচ্ছে তাদের খপ্পড়ে পড়বেন না।
অনুষ্ঠান বক্তারা মাগুরা–১ আসনে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা, শিক্ষা ও ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। বিকেলে মাগুরা শহরের ঐতিহাসিক নোমানী ময়দানে অনুষ্ঠিত মহিলা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় হাজার হাজার দলীয় নারী কর্মীদের সমাবেশ ঘটে।
যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিই হামলা করে, তাহলে তা মোকাবিলার সক্ষমতা আছে ভেনিজুয়েলার? তারা কি পারবে বিশাল তেল সম্পদ ও জনগণকে রক্ষা করতে? কয়েকদিন ধরেই এসব প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন মহলে।
ভেনিজুয়েলা সরকার গত মঙ্গলবার জানিয়েছে, দেশটির উপকূলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় তারা ‘বৃহৎ জাতীয় সামরিক মোতায়েন’ শুরু করেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রও একটি নতুন অভিযান ঘোষণা করেছে। ‘সাউদার্ন স্পিয়ার’ নামে ওই অভিযানের লক্ষ্য পশ্চিম গোলার্ধে তথাকথিত ‘নারকো-সন্ত্রাসীদের’ দমন করা।
এই উত্তেজনা ভেনিজুয়েলায় উদ্বেগ বাড়িয়েছে। দেশটির কর্মকর্তারা মনে করছেন, প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরানোর অজুহাত হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এসব সামরিক তৎপরতা বাড়াচ্ছে।
কারাকাসে এক অনুষ্ঠানে ভেনিজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল বলেন, ‘আমরা আমেরিকান সাম্রাজ্যকে বলছি, সাহস করে কিছু করবেন না: আমরা প্রস্তুত।’
তবে প্রশ্ন উঠছে—যুক্তরাষ্ট্রের হামলা বা আগ্রাসনের মুখে ভেনিজুয়েলা সত্যিই কতটা প্রস্তুত? তাদের সামরিক সামর্থ্য কতটা? এবং এখানে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নিকোলাস মাদুরোর রাজনৈতিক হিসাব কী?
কয়েক সপ্তাহ ধরে ওয়াশিংটন–কারাকাস উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ক্যারিবীয় সাগর ও পরে প্রশান্ত মহাসাগরে যেসব নৌকা তারা ধ্বংস করেছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রমুখী মাদক বহন করা হচ্ছিল।
এ সপ্তাহেই এমন ২০তম হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। এতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন নিহত হয়েছে। তবে কোনো নৌকায় মাদক ছিল বা সেগুলো যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছিল, এর সপক্ষে কোনো প্রমাণ প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র। হামলার কোনো আইনি ভিত্তিও দেখাতে পারেনি তারা, যা আন্তর্জাতিক আইনের বরখেলাপ বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
ওয়াশিংটনের অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দু একটি প্রমাণবিহীন দাবি, মাদুরো নাকি কার্টেলগুলোর সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার করছেন।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ভেনিজুয়েলা উপকূলে শক্তিশালী বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড পাঠিয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ও সহায়ক জাহাজ। চার হাজারের বেশি সেনা এবং অগণিত ট্যাকটিক্যাল বিমানের সমন্বয়ে এটি একটি অত্যাধুনিক নৌবহর।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে, তাদের লক্ষ্য ঘোষিত উদ্দেশের চেয়েও বিস্তৃত এবং এতে মাদুরো-বিরোধী সামরিক চাপও যুক্ত হয়েছে।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক মার্ক ক্যানসিয়ান বলেন, ফোর্ড মূলত সমুদ্রে বা স্থলে শত্রুর বিরুদ্ধে বড় আকারের আক্রমণের জন্য। মাদকবিরোধী অভিযানে এটি আদর্শ নয়।
তিনি আরও বলেন, এই মোতায়েন স্থায়ী হতে পারে না। বিশ্বের নানা অঞ্চলে এমন শক্তিশালী জাহাজের চাহিদা রয়েছে।
ভেনিজুয়েলা কি প্রস্তুত?
ভেনিজুয়েলা সরকার বলেছে, সম্ভাব্য মার্কিন হামলার মুখে তারা ‘বৃহৎ পরিসরের’ সেনা ও বেসামরিক মোতায়েন শুরু করেছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিমির পাদ্রিনো লোপেজ জানান, ‘ইনডিপেনডেন্স প্ল্যান ২০০’-এর ‘উচ্চতর পর্যায়’ সক্রিয় করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতির বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা জোরদারের উদ্যোগ।
তিনি বলেন, প্রায় দুই লাখ সেনা জাতীয় ভূখণ্ডে মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, দেশটির সামরিক বাহিনী ঐক্যবদ্ধ এবং ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ ভেনিজুয়েলার ওপর কোনো আগ্রাসন সমর্থন করে না।
বিশ্লেষকদের মতে, দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ‘শ্যাভিজমো’ মতাদর্শের অধীনে গড়ে ওঠা ভেনিজুয়েলার সামরিক প্রতিষ্ঠানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বন্ধন খুবই দৃঢ়। এতে তারা সহজে ভাঙবে না।
গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের তথ্যমতে, ২০২৫ সালে সামরিক শক্তিতে বিশ্বের ১৬০ দেশের মধ্যে ভেনিজুয়েলার অবস্থান ৫০তম। লাতিন আমেরিকায় তাদের অবস্থান সপ্তম।
সিএসআইএস’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভেনিজুয়েলার বিমানবাহিনী ছোট এবং আংশিকভাবে কার্যকর। তাদের ৪৯টি বিমানের মধ্যে প্রায় ৩০টি সচল। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে মাত্র তিনটি এফ-১৬ উড়তে সক্ষম।
অন্যদিকে রাশিয়ার নির্মিত এসইউ-৩০ যুদ্ধবিমান ভেনিজুয়েলার প্রধান শক্তি। এগুলোর অন্তত ২১টি সচল রয়েছে, যা আল্ট্রাসনিক অ্যান্টি-শিপ মিসাইল বহনে সক্ষম।
যুদ্ধ শুরু হলে যুক্তরাষ্ট্র প্রথমেই ভেনেজুয়েলার বিমানঘাঁটি ও বিমান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে অঞ্চলটিতে এফ-৩৫ স্টিলথ ফাইটার মোতায়েন করেছে।
গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের মতে, ৩ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার দেশ ভেনিজুয়েলার সামরিক বাহিনীতে ৩ লাখ ৩৭ হাজার সক্রিয় সামরিক সদস্য রয়েছে। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৯ হাজার সক্রিয় সদস্য, ২ লাখ ২০ হাজার আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য এবং বাকি আট হাজার রিজার্ভ কর্মী।
তবে ভেনিজুয়েলার জনবল বেশি হলেও বছরের পর বছর যুদ্ধ–প্রশিক্ষণের অভাব ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকেন্দ্রিক বাহিনীতে রূপান্তর বড় দুর্বলতা হয়ে উঠতে পারে।
দেশটির নৌবাহিনীও যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় খুবই দুর্বল। সার্বিকভাবে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তির সঙ্গে ভেনিজুয়েলার তুলনা চলে না বলেই মত বিশ্লেষকদের।
তবে স্থানীয় প্রতিরোধ ও গেরিলা–ধরনের লড়াইয়ের সম্ভাবনা বাস্তবিক উদ্বেগ তৈরি করতে পারে। অরিনোকো রিসার্চের প্রতিষ্ঠাতা এলিয়াস ফেরর বলেন, ‘যদি সংঘাত হয়, ভেনিজুয়েলা দেশটিকে পরিচালনার অযোগ্য করে তুলতে পারে—এটাই অসম যুদ্ধের কৌশল।’
যুক্তরাষ্ট্র কি সত্যিই হামলা করবে?
ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, মাদকপ্রবাহ ঠেকাতেই সামরিক তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য মাদুরোর ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করা।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ভেনিজুয়েলায় অনুপ্রবেশ চান না। অনেক বিশেষজ্ঞের মত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান কৌশল এখনো রাজনৈতিক, সামরিক নয়।
ভেনিজুয়েলার বিশ্লেষক কার্লোস পিনা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য মাদুরোকে চাপের মুখে পদত্যাগে বাধ্য করা। সরাসরি আক্রমণ সবচেয়ে কম পছন্দনীয় বিকল্প।
নওগাঁ জেলায় আজ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নওগাঁ সদর উপজেলা শাখা কৃষকদলের উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং নওগাঁ-৩ (বদলগাছী–মহাদেবপুর) আসনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ফজলে হুদা বাবুল।
কৃষকদলের সদর উপজেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম।
সদর উপজেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক মকছেদ আলী মণ্ডলের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন—কৃষকদল নওগাঁ জেলা শাখার আহ্বায়ক মমিনুল ইসলাম চঞ্চল, সদস্য সচিব এটিএম ফিরোজ দুলু, যুগ্ম আহ্বায়ক এস. এম. সাহিদুজ্জামান সোহান, বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রেজাউন নবী স্যান্ডোসহ দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সভায় জেলার ১১টি উপজেলা থেকে আগত প্রায় পাঁচ হাজার কৃষকদলের নেতা–কর্মী অংশ নেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রতিবেশী দেশের সাথে সম্পর্ক হবে সমতার ভিত্তিতে। সবার আগে ভারতের দাদাগিরি বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপিতে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে একটি দল। এর মধ্যে দিয়ে তারা ফয়দা নিতে চায়। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তিস্তা ও ফারাক্কা ইস্যুকে প্রাধান্য দেয়া হবে।
ফ্যাসিস্ট দুঃশাসনের পুনরাবৃত্তি ও উগ্র ডানপন্থা রুখতে আগামীতে বামপন্থি ও গণতান্ত্রিক শক্তির সরকার গঠনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতৃবৃন্দ।
তারা বলেছেন, দেশ এক সর্বগ্রাসী সংকটে নিমজ্জিত। মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে পাকিস্তানের জিঞ্জির থেকে মুক্ত করেছি, ভারত কিংবা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নতুন শৃঙ্খলে আবদ্ধ হওয়ার জন্য নয়। ক্ষমতাসীন ইউনূস সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশকে মার্কিন ভূরাজনৈতিক স্বার্থের অনুগত করছে।
যা দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে।
শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিপিবির জাতীয় সমাবেশে এসব কথা বলেন তারা।
সিপিবি সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন পার্টির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের প্রধান উপদেষ্টা খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, সিপিবির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রাগিব আহসান মুন্না, রফিকুজ্জামান লায়েক, জলি তালুকদার, এসএ রশীদ ও মো. আমিনুল ফরিদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. দিবালোক সিংহ, সুরেশ্বর দরবার শরীফের পীর সাহেব শাহ সূফী হাসান শাহ সুরেশ্বরী দিপু নূরী, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি রেবেকা সরেন, বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের সাবেক সভাপতি কৃষ্ণলাল।
সমাবেশে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিনে ‘গণভোটের’ জন্য ড. ইউনূস যে প্রস্তাবনা হাজির করেছেন তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তারা ঐকমত্যের কথা বলে একটি ভুয়া দলিল রচনা করেছে। সাংবিধানিক আদেশ বলবৎ করে সরকার যা করতে যাচ্ছে গণভোটের মধ্য দিয়ে তার বৈধতা হবে না। ঐকমত্যের বাইরে কোনো বিষয় চাপিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। ক্ষমতাসীন সরকার সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের মধ্য দিয়ে দেশকে দীর্ঘমেয়াদি এক দ্বন্দ্ব-সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বারবার স্বৈরাচারী শাসনের কবলে পড়েছে। দেশের মানুষ বুকের রক্ত দিয়ে স্বৈরাচারদের উৎখাত করেছে। নতুন কোনো ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী, স্বৈরাচারী শাসন আমরা দেখতে চাই না।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সমাজ বিপ্লবীদের ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। আমাদের জন্য এখন প্রয়োজন যারা ব্যক্তি মালিকানা উচ্ছেদ করে সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা করতে চান তাদের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট গঠন করা। এবারকার যুক্তফ্রন্ট হবে বিপ্লবীদের যুক্তফ্রন্ট, সমস্ত বামপন্থিদের ফ্রন্ট। আমি মনে করি সেই ফ্রন্টের নেতৃত্ব দিতে হবে কমিউনিস্ট পার্টিকে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির একটি প্রতিনিধিদল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর মিশন টিমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও নীতিগত আলোচনায় অংশগ্রহণ করে।
শুক্রবার ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় এনসিপি প্রতিনিধিদল দেশের সংকটময় সময়ে বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদান এবং জরুরি সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দেওয়ার প্রতি আইএমএফের ধারাবাহিক সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে। এনসিপি মনে করে, টেকসই উন্নয়নের জন্য এই সংস্কারগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আলোচনায় আইএমএফ বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি, রাজস্ব আহরণ, রাজস্ব–জিডিপি অনুপাত, ডিস্ট্রেসড অ্যাসেট এবং যুব কর্মসংস্থান বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। এনসিপি প্রতিনিধিরা এসব চ্যালেঞ্জ স্বীকার করে বলেন, তারা রাজস্ব ডিজিটালাইজেশন, আর্থিক খাতের চলমান সংস্কারকে সমর্থন এবং সংস্কার বাস্তবায়নের ধীরগতির বিষয়ে উদ্বেগ থাকা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সভায় আরও আলোচ্য বিষয় ছিল পূর্ববর্তী সরকারের ‘ক্লেপ্টোক্রেসি’ কীভাবে শুরু হয়েছিল, জাতীয় অর্থনীতি ও প্রশাসনে এর প্রভাব কী ছিল এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্নীতিকে রোধ করতে কী ধরনের কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে ছিল, অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতি কমানো, সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং অন্তর্বর্তী সরকার থেকে নির্বাচিত সরকারের কাছে শান্তিপূর্ণ, সুশৃঙ্খল ক্ষমতা হস্তান্তর। উভয় পক্ষই আশা প্রকাশ করে যে, বাংলাদেশের কঠোর পরিশ্রমী জনগণই উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি এবং জনগণের সম্মিলিত মেধা ও শ্রমের মাধ্যমে দেশ আরও সহনশীল ও স্থিতিশীল অর্থনীতির দিকে এগিয়ে যাবে।
আইএমএফের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ক্রিস পাপাজর্জিউ, বাংলাদেশ মিশন চিফ, ম্যাক্সিম ক্রিশকো, ঢাকা রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং তৌহিদ এলাহি, ডেপুটি সেক্রেটারি ও ইকোনমিক এনালিস্ট। এনসিপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জাবেদ রাসিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ও প্রধান, শিল্প ও বাণিজ্য সেল, মো. সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক ও প্রধান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সেল, আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, যুগ্ম সদস্য সচিব ও কো-লিড, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সেল, আব্দুল্লাহ আল মামুন ফয়সাল, সংগঠক ও কো-লিড, শিল্প ও বাণিজ্য সেল এবং মো. আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও সদস্য, শিল্প ও বাণিজ্য সেল।