বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
২৯ কার্তিক ১৪৩২

আ.লীগ-বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি: দেশবাসীর দৃষ্টি এখন ২৮ অক্টোবরে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ ১৫:৫৭

আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ওই দিন রাজধানীর নয়াপল্টন ও বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে দুই দলের ডাকা সমাবেশকে কেন্দ্র করে জনমনে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। ঢাকায় সমাবেশ হলেও দেশবাসীর নজর ২৮ অক্টোবর ঘিরে। সংঘাতের আশঙ্কা জনমনে থাকলেও বিশ্লেষকরা বড় ধরনের কিছু ঘটার আশঙ্কা নেই বলে মনে করছেন। তবে তারা ছোটখাটো কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।

তারা মনে করছেন, যেহেতু ঢাকার বাইরে থেকে বহুসংখ্যক নেতা-কর্মী আসার সম্ভাবনা রয়েছে- তাই নাটকীয়ভাবে কিছু ঘটলেও ঘটতে পারে। তা ছাড়া তৃণমূলের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সময় অসম্ভব হয়ে পড়ে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজপথের বিরোধী দল তাদের দাবির পক্ষে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবে। সেই শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের দাবি আদায় হবে কি না তা নির্ভর করবে আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা কতটুকু তার ওপর। অন্যদিকে, বড় ধরনের সংঘাত ও সহিংসতা এড়াতে সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের অনুমতি চেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশকে (ডিএমপি) চিঠি দিয়েছে দলটি। একই দিনে ঢাকায় পৃথক পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীরাও। যদিও ওই দিনের মহাসমাবেশ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ হবে বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আমরা কোনো নেতা-কর্মীকে অবস্থান নেয়ার নির্দেশ দিইনি। তিনি তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা না দিতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তবে বিএনপি ও তার আন্দোলন-সঙ্গীদের কর্মসূচির দিনে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তারাও রাজপথে তাদের শক্তির মহড়া দিয়ে নিজেদের শক্তি ও জনপ্রিয়তা প্রদর্শন করতে চায়। সমাবেশের অনুমতি এবং ট্রাফিক ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বরাবর চিঠি দিয়েছে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এর ফলে নিকট-দূরত্বে প্রধান দুই দলের সমাবেশ ঘিরে সহিংসতা ও নাশকতার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে জনমনে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়, সরকারের পতন চায়। তারা এ দাবির পক্ষে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে সে দাবি আদায় হবে কি না তা নির্ভর করবে আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা কতটা পেল। একই দিনে ক্ষমতাসীনদের কর্মসূচি ডাকার সমালোচনা করেন তিনি।

২৮ অক্টোবর সমাবেশ ঘিরে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে বিরোধীদের উচিত ইশতেহার নিয়ে হাজির হওয়া, আলাপ-আলোচনা করা। ক্ষমতাসীন দলের এ ধরনের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ এড়িয়ে চলা দরকার। কারণ বিরোধীরা তার দাবির পক্ষে যত কর্মসূচি ডাকবে, সব কর্মসূচিতেই যদি ক্ষমতাসীনরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ডাকে, তা হলে তার শক্তি ক্ষয় হবে, সে দুর্বল হয়ে পড়বে। তা হলে নির্বাচন কীভাবে করবে? বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা করছি না। যদি হয়ও, সেটা হবে বিচ্ছিন্ন অথবা নাটকীয় কিছু।

এদিকে ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে দুই দলের সমাবেশ এখন টক অব দ্য কান্ট্রি। কী হচ্ছে, কী হবে, রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোনদিকে যাবে, এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষের মাঝে। যদিও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা মনে করছেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ ঘিরে তেমন কিছুই হবে না। কারণ ওই দিন রাজপথ দখলে রাখবে আওয়ামী লীগ। আর বিএনপি নেতারা বলছেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবেন তারা।

মহাসমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে গতকাল রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা করে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এ সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব, সকল বিভাগের সাংগঠনিক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা বিভাগের সকল মহানগর ও জেলাগুলোর সভাপতি/আহবায়ক/সাধারণ সম্পাদক/সদস্য সচিব, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি/আহ্বায়ক/সাধারণ সম্পাদক/সদস্য সচিব, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রতিটি কর্মসূচি আমরা অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে করে আসছি। ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশও অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত হবে। সিকিউরিটি জন্য আমাদের নিজস্ব যে ব্যবস্থা দরকার, সেটাও নিচ্ছি। কোনো নেতা-কর্মীকে ঢাকায় এসে বসে পড়তে তো বলিনি। বরং বলেছি, ২৮ তারিখের কর্মসূচির পরে যে যার জায়গায় চলে যাবে। পরবর্তী কর্মসূচির জন্য অপেক্ষা করবে। ২৮ অক্টোবর আমরা এমন কোনো কর্মসূচি দেব না যে, তারা (নেতা-কর্মীরা) ঢাকায় বসে থাকবে।

এদিকে ২৮ অক্টোবর দুপুর ২টা থেকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠে থাকবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগের যৌথ আয়োজনে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবে বলে দক্ষিণের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। এতে বক্তব্য রাখবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। সমাবেশ সঞ্চালনা করবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।

আওয়ামী লীগ শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত করতে চায় বলে দলটির বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়। সূত্রের দাবি অনুযায়ী, নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য ঢাকা মহানগরের থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রতিনিধি সম্মেলন করা হচ্ছে। ওইসব সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকার নেতা-কর্মীদের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। ওই দিন সমাবেশের পাশাপাশি সকাল থেকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সতর্ক অবস্থানে থাকবেন বলেও মহানগর আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের একজন নেতা জানান, শুধু ঢাকা মহানগর নয়- রাজধানীর আশপাশের গাজীপুর জেলা, মহানগর, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জের নেতা-কর্মীদেরও ঢাকায় আসার নির্দেশনা দেয়া হবে। একই সঙ্গে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোকেও সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতা-কর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। সংগঠনগুলো এ নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে, গতকাল রোববার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘সংবিধান মেনেই নির্বাচন হবে। অবরোধ, দখলের হুমকি দিয়ে তাদের খায়েশ পূর্ণ হবে না। ঢাকা অবরোধ, দখলের নামে আবার অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও–পোড়াওয়ের হুমকি আসছে। যাঁরা মনে মনে স্বপ্ন দেখছেন অবরোধ করে, রাস্তা দখল করে আগের মতো বাস, রেল, মানুষ পুড়িয়ে বাংলাদেশের সংবিধানকে কচুকাটা করবেন, সেটা কোনো দিন হবে না। আমরা হতে দেব না।’

বিএনপি সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ সফল করতে সারা দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। বিভিন্ন জেলা থেকে নেতা-কর্মীদের ঢাকায় এনে বড় লোক সমাগম করতে চায় দলটি। তার অংশ হিসেবে জেলায় জেলায় সফর করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা।

আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির মহাসমাবেশ, ছোট সমাবেশ, মাঝারি সমাবেশ এবং তাদের হাঁটা, দৌড় বা বসা কর্মসূচি, ভবিষ্যতে হয়তো হামাগুড়ি দেয়া কর্মসূচি আসবে- এগুলোতে আমরা কখনো চাপ অনুভব করি নাই। আমরা রাজপথের দল, আমরা রাজপথে আছি, রাজপথে থাকব। ২৮ তারিখেও রাজপথ আওয়ামী লীগের দখলে থাকবে।’

তবে জনমনে যত শঙ্কাই থাকুক না কেন, ২৮ অক্টোবর ঢাকায় নাশকতার কোনো আশঙ্কা দেখছে না পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করবে। আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেব। আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আমাদের কাছে নিরাপত্তার কোনো শঙ্কা নেই।’

তবে বিএনপি শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশের ডাক দিলেও তাদের যেসব নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা আছে তারা থাকবেন পুলিশের রেড মার্কিংয়ে। ডিবিপ্রধান জানিয়েছেন, ‘চেকপোস্টে পুলিশের কড়াকড়ি ও তল্লাশি অভিযান থাকবে। আদালতের পরোয়ানাভুক্ত আসামি গ্রেপ্তারেও পুলিশ সক্রিয় থাকবে।’


রাজধানীতে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল

আপডেটেড ১৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১৩:৫৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে জুলাইসহ সকল গণহত্যার বিচার, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান ও আওয়ামী লীগের নাশকতা সৃষ্টির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে মিছিলটি ঢাকা কলেজ থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি রেজাউল করিম শাকিল ও ঢাকা মহানগর পূর্বে সভাপতি এবং ডাকসুর ছাত্র পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহর যৌথ সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাহিদুল ইসলাম বলেন, জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ এক নতুন সূর্যোদয়ের স্বপ্ন দেখছে। বাংলাদেশ আজ ফ্যাসিবাদমুক্ত, সমৃদ্ধ নতুন দেশ গড়ার জন্য প্রজন্মের এক জাগরণ তৈরি করেছে। শহীদ পরিবারের কান্না, আহত ও পঙ্গুদের রক্ত এখনো কথা বলছে; অথচ জুলাই গণহত্যার বিচার নিয়ে টালবাহানা চলছে। দেড় বছর পার হলেও অসংখ্য চাক্ষুষ প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত একটি রায়ও দিতে পারেনি সরকার।

তিনি বলেন, যারা জুলাইকে ধারণ করতে পারবেন না, তারা দেশের দায়িত্ব নেওয়ার যোগ্য নন। কেউ কেউ ইতোমধ্যে আওয়ামী পুনর্বাসনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন। তারা ক্ষমতায় আসার পূর্বেই আওয়ামী লীগের সকল মামলা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন—এই অধিকার জনগণ আপনাদের দেয়নি। এরকম চলতে থাকলে যে প্রজন্ম হাসিনাকে লাল কার্ড দেখিয়েছে, তারা আপনাদেরকেও ‘ডাবল লাল কার্ড’ দেখাবে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। তারা ইতোমধ্যে সারাদেশে আগুন সন্ত্রাস চালিয়েছে; ময়মনসিংহে গাড়িচালককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। আগামীতে কোনো আগুন সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদের রাজনীতি এ দেশে চলবে না।

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাই গণহত্যা, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যাসহ সকল গণহত্যার বিচার দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই সনদ এ জাতির অন্যতম আকাঙ্ক্ষা, যার মাধ্যমে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার হবে। কিন্তু একটি দল এক্ষেত্রে সচেতনভাবে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অবিলম্বে রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল সেক্টরকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করে গণভোট আয়োজন করতে হবে—যার মাধ্যমে শহীদ, আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। গণভোটের পর অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।

ছাত্রশিবির সভাপতি সকলকে ছাত্রশিবির ঘোষিত রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ও সারাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মু’তাসিম বিল্লাহ শাহেদী, প্রকাশনা সম্পাদক ও ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি ও ডাকসু জিএস এস. এম. ফরহাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি হেলাল উদ্দিন, মহানগর পশ্চিম সভাপতি হাফেজ আবু তাহের এবং মেডিকেল জোন সভাপতি ডা. যায়েদ আহমেদ।


গণভোটের আড়ালে স্বৈরাচারকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, একটি দল ফ্যাসিবাদের নিষ্ঠুরতা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে গিয়ে ফ্যাসিবাদের ছাতার নিচে আশ্রয় নিয়েছিল। বর্তমান পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে সেই দলের ছাতার নিচে পরাজিত পলাতক স্বৈরাচার আশ্রয় নিয়েছে কি না, এটি ভাবার সময় এসেছে। গণভোটের আড়ালে পতিত, পরাজিত ও পলাতক অপশক্তিকে রাষ্ট্র রাজনীতিতে পুনর্বাসনের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান তিনি।

বুধবার রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপির আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তারেক রহমান। সভার সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তারেক রহমান বলেন, ‘কয়েকটি রাজনৈতিক দল বর্তমানে বিভিন্ন শর্ত দিয়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে। নির্বাচনের জটিলতা সৃষ্টি মানে একদিকে রাষ্ট্রের খবরদারির সুযোগ নেওয়া, অন্যদিকে পতিত স্বৈরাচারের পুনরাগমনের পথ সুগম করা। এই স্বৈরাচারীর সহযোগিতায় আমরা সম্প্রতি রাজধানীতে আগুন-সন্ত্রাস দেখেছি।’

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘কিছু রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে গণতান্ত্রিক জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোকে হুমকিধমকি না দিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জনগণের মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান জানান।’

তারেক রহমান বলেন, ‘জুলাই সনদে যা অঙ্গীকার করা হয়েছে, বিএনপি সেই অঙ্গীকার রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কিন্তু কেউ যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দুর্বল ভেবে অপকৌশলের আশ্রয় নেয় বা বিএনপির বিজয় ঠেকাতে ষড়যন্ত্র করে, তবে সেটিই শেষ পর্যন্ত তাদের রাজনৈতিক বিপর্যয়ের কারণ হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের বলছি—অযথা পরিস্থিতি ঘোলাটে করবেন না।’

অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে তারেক রহমান বলেন, ‘এ বছর আলু চাষিরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। প্রতি কেজি আলুর খরচ যেখানে ২৫-২৭ টাকা, সেখানে তারা অর্ধেক দামে বিক্রি করতে পারছে না। ফলে কৃষকরা প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কায় আছেন। গণভোটে এই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করার চেয়ে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এখন অনেক বেশি জরুরি।’

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যায় বাংলাদেশ শীর্ষে রয়েছে। অথচ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে শতাধিক আলোচনার পরও সড়ক নিরাপত্তা ইস্যুটি গুরুত্ব পায়নি।’

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া রহমানের সংস্কার শুরু করেছিল; কিন্তু তিনি সম্পন্ন করতে পারে নাই। তারেক রহমানকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনার আব্বা-আম্মা যেখানে শেষ করেছেন, আপনি সেখান থেকে শুরু করে সামনের দিকে এগিয়ে যান। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সাহায্য করব।’

আলোচনা সভায় সভাপত্বিতের বক্তব্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দেশের একটা সংকট তৈরি হয়েছে, সেটা অপ্রয়োজনীয় সংকট । এটার কোনো প্রয়োজন ছিল না । অতএব সংকটটা তৈরি করা হয়েছে আমি মনে করি- অত্যন্ত উদ্দেশ্যমূলকভাবে।

জাতীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই যে একটা সংকট তৈরি হয়েছে, অপ্রয়োজনীয় সংকট। এটার কোনো প্রয়োজন ছিল না। অতএব সংকটটা তৈরি করা হয়েছে আমি মনে করি- অত্যন্ত উদ্দেশ্যমূলকভাবে। অর্থাৎ বাংলাদেশের যে গণতান্ত্রিক উত্তরণ; সে পথকে বাধাগ্রস্ত করা বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে সংস্কারের জন্য যে নির্বাচন হওয়া দরকার সে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করা জনগণের ভবিষ্যৎকে একটা অনিশ্চিত অবস্থায় ফেলা।’

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। সঞ্চালনা করেন বিএনপি প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও সাত্তার পাটোয়ারী। এছাড়া বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, এবি পার্টি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণ-অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এবং লেবার পার্টি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান।


নবীন-প্রবীণে অনন্য উজ্জীবিত তৃণমূল

তারেক রহমানের প্রার্থী মনোনয়ন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে এবার প্রার্থী মনোনয়নে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। প্রার্থী তালিকায় নবীন ও প্রবীণের সমন্বয় যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাসকে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। ফলে এবারের প্রার্থী মনোনয়ন দলটির বর্তমান নেতৃত্বকে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও উজ্জীবিত হয়ে উঠছেন। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশনা এবং বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে পরিচালিত এই মনোনয়ন দলের অভ্যন্তরীণ কাঠামোতে বড় ধরনের সংস্কারের ইঙ্গিতও বহন করছে।
দলের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়াটি এবার কয়েকটি সুসংগঠিত স্তরে পরিচালিত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রার্থীদের তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই করা হয়েছে পাঁচ স্তরের সতর্ক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়ায় প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, সামাজিক অবস্থান, নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের কাছে তার জনপ্রিয়তা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামে তার সক্রিয় অংশগ্রহণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকরা প্রত্যেক প্রার্থীর বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সংগ্রহ করে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সামনে উপস্থাপন করেছেন। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার জন্য দলের পক্ষ থেকে পাঁচটি ভিন্ন ধরনের জরিপ চালানো হয়েছে। এই জরিপগুলো আন্তর্জাতিক ও বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়েছে এবং প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে ভোটারদের কাছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করা হয়েছে।
জরিপের তথ্য জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করা হয়, যেখানে প্রতিটি প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে জনমত অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছে।
জরিপের পাশাপাশি তারেক রহমান সরাসরি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা, নির্বাচনী এলাকার ভৌগোলিক ও সামাজিক পরিস্থিতি, ভোটারদের কাছে তার জনপ্রিয়তা, রাজনৈতিক অঙ্গনে তার ভূমিকা এবং দলের প্রতি তার ত্যাগের মূল্যায়ন করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার মূল লক্ষ্য ছিল প্রার্থী বাছাইকে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, বিজ্ঞানভিত্তিক এবং দলের দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখা।
এদিকে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রার্থী তালিকায় নবীন ও প্রবীণ নেতাদের সমন্বয় প্রমাণ করে যে, দল কেবল রাজনৈতিক দাপট বা প্রভাব নয়, বরং যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাসকেও সমানভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। তারা বলছেন, তিন-চারটি আসন ছাড়া বাকি তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ তেমন নেই বললেই চলে, যা দলের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নির্দেশ করে।
নেতাকর্মীরাও বেশ উজ্জীবিত হয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মাঠে প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা নির্বাচনী এলাকায় শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন এবং নিজেদের পক্ষে জনমত গঠনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দু-তিনটি ব্যতিক্রম ছাড়া প্রার্থী ঘোষণার পর বড় কোনো বিতর্ক বা অসন্তোষ দেখা যায়নি, যা তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি দলের আস্থার প্রতিফলন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা।
এবার ৫ স্তরের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত করা হয়েছে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭ সম্ভাব্য প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা। এই মনোনয়ন চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে তারেক রহমান ছিলেন অত্যন্ত কঠোর ভূমিকায়। ঘোষিত প্রার্থী তালিকা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে, এবারের মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে দলীয় নিয়ম, প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা, নির্বাচনী এলাকায় তার গ্রহণযোগ্যতা এবং রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামে তার আত্মত্যাগমূলক অবদানের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছে। অতীতে দলের অভ্যন্তরে বিভিন্ন মহলের তদবির বা পারিবারিক প্রভাবের যে অভিযোগ উঠত, তারেক রহমানের কঠোর অবস্থানের কারণে এবার তার কোনো অবকাশ রাখা হয়নি।
ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী ৬৩টি আসন এখনও ফাঁকা রাখা হয়েছে। এসব ফাঁকা আসন কৌশলগত কারণে এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মিত্র দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা এবং সামগ্রিক নির্বাচনী কৌশল অনুযায়ী পরবর্তীতে এসব আসনের প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে। এই ফাঁকা আসনগুলো ভবিষ্যৎ দর কষাকষির জন্য একটি বড় সুযোগ তৈরি করেছে।
ঢাকা সিটি করপোরেশনের ১৫টি আসনের মধ্যে নয়টিতে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। অবশিষ্ট ছয়টি আসনের মধ্যে ঢাকা-১৩ ও ঢাকা-১৭ উল্লেখযোগ্য। এই আসনগুলোতে এনডিএম (জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন), জাতীয় পার্টি, এলডিপি (লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি), গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য এবং গণঅধিকার পরিষদ প্রার্থী দিতে পারে বলেও জানা যায়।
আসন নিয়ে আলোচনা চলছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সঙ্গেও। দলটি অন্তত ২০টি আসনে বিএনপির সঙ্গে জোট বা সমঝোতা করতে আগ্রহী বলে রাজনৈতিক মহলে খবর পাওয়া গেছে। দলটি অনানুষ্ঠানিকভাবে এমনই আলোচনা চালাচ্ছে, পাশাপাশি ভবিষ্যতের রাজনৈতিক নিরাপত্তার বিষয়েও আগ্রহী। জানা গেছে, এনসিপির নেতারা চাইছেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে মন্ত্রিসভায় তাদের অন্তত তিনজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হোক।
এনসিপির সঙ্গে চলমান এই আলোচনাগুলো এখনো আনুষ্ঠানিক নয়। কার সঙ্গে জোট হবে বা কোন আসনে সমঝোতা হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এখন পর্যন্ত অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ে আলোচনা অনুযায়ী, ঢাকার চারটি আসনসহ মোট অন্তত ২০টি আসনে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা চায় এনসিপি। এই আসনগুলোর মধ্যে অনেক স্থানে বিএনপি ইতোমধ্যেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে, তবে প্রাথমিক সমঝোতার ভিত্তিতে প্রার্থী প্রত্যাহারের সম্ভাবনাও রয়েছে, যা চূড়ান্ত জোটের রূপরেখা নির্ধারণ করবে। বিএনপি সূত্র জানায়, আসন ভাগাভাগি ছাড়াও তারা চাইছে, এনসিপি জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কোনো নির্বাচনী সমঝোতায় না যায়, যা জোটের অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন নির্দেশ করে। যদিও এনসিপি ২০টি আসনের দাবি তুলেছে, বিএনপি এখন পর্যন্ত তাদের জন্য ৮টি আসন ছাড়ার কথা বলছে।
শরিকদের মধ্যে প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করা হলেও ঢাকা-১৩ আসনে এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ ইতোমধ্যেই বিএনপির ‘গ্রিন সিগনাল’ নিয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন, যা একটি অনানুষ্ঠানিক সমঝোতার ইঙ্গিত। অন্যদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে জোনায়েদ সাকির গণসংহতি আন্দোলনের হয়ে প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। বগুড়া-২, পিরোজপুর-১, লক্ষ্মীপুর-১, কিশোরগঞ্জ-৫ ও ঝালকাঠি-১ আসনেও মিত্র দলের প্রার্থীদের সম্ভাবনা রয়েছে।


ভোট হলে তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না

জামায়াতের উদ্দেশে:মির্জা ফখরুল
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

দেশের মানুষ পিআর পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত নয় দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এটা আমরা গ্রহণ করব না। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী বলছে, পিআর পদ্ধতিতেই ভোট করতে হবে। সেটা না করলে নাকি ভোট হবে না। ভাই, ভোটকে এত ভয় পাচ্ছ কেন? কারণ, তারা জানে, ভোট হলে তাদের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বড়গাঁও ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেলেন তিনি।
জামায়াতের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তারা ইসলামের অপব্যাখ্যা দিচ্ছে। আমরা মনে করি, আমার কর্মেই হবে আমার বেহেশত। আমার কর্মের মধ্য দিয়ে আমি বেহেশতে যাব। আমি যদি মানুষকে ভালোবাসি, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, রোজা রাখি, মিথ্যা কথা না বলি, সুদ না খাই, তাহলে বেহেশতে যাওয়ার একটি পথ তৈরি হবে। জামায়াতের টিকিট কাটলেই কি কেউ বেহেশতে যেতে পারবে? যারা এসব মুনাফেকি করে, তাদের কাছ থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে।
এনসিপির প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ঠাকুরগাঁওয়ের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ওরা তো ভোটই পাবে না। এই কারণে ওরাও জামায়াতের সঙ্গে সুর মিলায়, পিআর আগত দিবা হবে, সনদ বাস্তবায়ন করিবা হবে। এগুলো শুধুই বিভ্রান্ত করা। ভোট পেছানো আর আগের ব্যবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার চক্রান্ত। আমরা সংস্কারের যেগুলোতে একমত হয়েছি, বিএনপি শুধু সেগুলোর পক্ষে থাকবে। অন্য কিছুর দায় বিএনপি নেবে না। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শারীরিক শিক্ষা ও সংগীত শিক্ষক প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, শিশুদের সুস্থ করে গড়ে তোলার জন্য শারীরিক শিক্ষা খুবই দরকার। সেই সঙ্গে শিশুরা গান শিখলে অসুবিধা কোথায়? অসুবিধা তো নাই, বরং তারা ভালো কিছু শিখতে পারছে।
নির্বাচন পিছিয়ে গেলে দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশের সামনে সব সময় সুযোগ আসে না। এবার একটি সুযোগ এসেছে। আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সঠিক একটি সরকার গঠন করতে হবে।
আওয়ামী লীগের লকডাউন কর্মসূচি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা ভারতের দিল্লিতে গিয়ে হরতাল ঘোষণা করেছে, দেখলাম ঢাকাতে কিছু গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। এখন যারা গাড়ি পোড়াবে, দেশের সম্পদ নষ্ট করবে, তাকে কি আমরা এ দেশে আসতে দেব? সাহস থাকলে আসো। এ দেশের জনগণের সামনে এসে রাজনীতি করো। দিল্লিতে বসে দেশের সর্বনাশ আর কোরো না।
মতবিনিময় সভায় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন, বড়গাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আহম্মদ আলীসহ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বক্তব্য রাখেন।


কালাইয়ে এক মঞ্চে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার শপথ 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জয়পুরহাট-২ আসনের বিএনপির দলীয় প্রার্থী আব্দুল বারীর হাতে হাত রেখে কালাই উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতারা শপথ নেন। মঙ্গলবার বিকেলে কালাই সরকারি ময়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে জয়পুরহাট-২ আসনের বিএনপির দলীয় প্রার্থী আব্দুল বারীর হাতে হাত রেখে কালাই উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতারা শপথ নেন।

জয়পুরহাট-২ (কালাই-ক্ষেতলাল-আক্কেলপুর) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে অন্তঃকোন্দল চলছিল। এ আসনে অর্ধডজনেরও বেশি নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। একেকজনের পক্ষে স্থানীয় উপজেলা ও পৌর বিএনপির শীর্ষ নেতারা অবস্থান নিয়েছিলেন। এতে দলটির ভেতরে প্রকাশ্য বিভক্তি তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত এ আসনে সাবেক আমলা আব্দুল বারী বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন। এলাকায় তিনি ‘ডিসি বারী’ নামে পরিচিত। দলের বিভক্তি কাটাতে কালাই উপজেলার বিএনপি নেতারা এক হয়ে কাজ হয়ে ধানের শীষের বিজয়ের শপথ করেছেন।

কালাই সরকারি ময়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। আক্কেলপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপি সভার আয়োজন করে। এতে দলের মনোনীত প্রার্থী আব্দুল বারী প্রধান অতিথি ছিলেন।

জানা যায়, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক এ এইচ এম ওবায়দুর রহমান ওরফে চন্দন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা, সাবেক সচিব ও বিএনপি নেতা আব্দুল বারী, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা সিরাজুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক নেতা আব্বাস আলীসহ অনেকে গণসংযোগ চালিয়ে আসছিলেন। শেষ পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন পান আব্দুল বারী। উপজেলা ও পৌর বিএনপির শীর্ষ নেতারা আগে থেকে ভিন্ন ভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছিলেন। মতবিনিময় সভায় সেই বিভক্তির অবসান ঘটানোর চেষ্টা হয়।

মতবিনিময় সভায় কালাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মৌদুদ আলম সরকারের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহমুদুল হাসান এলান, কালাই পৌর বিএনপির আহ্বায়ক সাজ্জাদুর রহমান তালুকদার সোহেল, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আলীম, কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা মেহেদী হাসান, জয়পুরহাট জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি এএইচএম ওবায়দুর রহমান সুইট। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন ও পৌর বিএনপির নেতাকর্মীসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।


নারী সমাবেশে ধানের শীষে ভোট চাইলেন ফখরুল পত্নী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁও সদর আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরে সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগম এক নারী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় যোগ দিয়ে ধানের শীষের জন্য ভোট চেয়েছেন। মঙ্গলবার স্বামীর নির্বাচনী এলাকা সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত ওই নারী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় আমন্ত্রিত প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি উপস্থিত হন।

সে সভায় ইউনিয়নের সকল ধর্মের প্রায় হাজারের বেশি নারী উপস্থিত হন এবং নতুন করে সনাতন ধর্মালম্বী শতাধিক নারী-পুরুষ বিএনপিতে যোগদান করেন। এ সময় তিনি নারীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শোনেন এবং সমাজের অর্থনৈতিক সমস্যা দূরীকরণে নারীদের কেমন ভূমিকা থাকা দরকার সে বিষয়ে মতবিনিময় করেন।

প্রতিমা রানী নামের এক নারী বলেন, ‘আমরা এ অঞ্চলের নারীরা কী কী কাজে দক্ষতা বলেছি। তিনি ধানের শীষের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে আহ্বান করেছেন। আমরা আনন্দের সঙ্গে বিষয়টি গ্রহণ করেছি। আশা করি আমাদের উদ্যোক্তা হতে তারা সুযোগ সৃষ্টি করে দেবেন।’

রেহেনা পারভীন বলেন, ‘আমরা ঠাকুরগাঁওয়ের নারীরা এই জেলার মতো অবহেলিত। আমরা চাই সত্যিকার অর্থে আমাদের জন্য কাজ হোক আমরা সমাজে অবদান রাখতে চাই।’

নারী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল পত্নী রাহাত আরা বেগম বলেন, ‘ভেবেছিলাম উঠান বৈঠক। কিন্তু এটি নারী সমাবেশে পরিণত করে ফেলেছেন আপনারা। সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, আপনারা এ জেলায় এমন একজন মানুষকে পেয়েছেন যিনি কোনো দিন আপনাদের ছেড়ে যাননি। তিনি (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) নিজ পরিবারের মতো আপনাদের সাথে মনে করেছেন। আপনাদের সময় দিয়েছেন। তার বয়স হয়েছে। এটা তার শেষ নির্বাচন। এবারে আপনারা তাকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে জয়ী করুন। আপনাদের হতাশ হতে হবে না ইনশাআল্লাহ ‘

এ সময় জেলা মহিলাদলের সভাপতি ফরাতুন নাহার প্যারিসের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মাঝে স্বাগত বক্তব্য দেন, আকচা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আকচা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গোলাম সারওয়ার চৌধুরী, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক নাজমা পরভীন, জেলা মহিলা দলের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক শাহনাজ পারভীন প্রমুখ।


আওয়ামী লীগ এখন দেশে অপ্রাসঙ্গিক: হাসনাত আব্দুল্লাহ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ এখন বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক। আমাদের এখন সামনের দিকে ভাবতে হবে। কিন্তু টকশোতে দেখেছি, কিছু পেইড বুদ্ধিজীবীরা আওয়ামী লীগের পক্ষে বৈধতা উৎপাদন করছে। তবে গত দুই দিনের কার্যক্রমে বোঝা উচিত আওয়ামী লীগ কখনো গণমানুষের দল ছিল না। আগুন-সন্ত্রাস ও জ্বালও পোড়াও অতীতে কারা করেছিল, বর্তমানে করা করছে- গত দুই দিনের কার্যক্রমে এগুলো সুস্পষ্ট হয়েছে। মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ শহরের নতুন সমবায় মার্কেট ভবনের ৯ম তলায় দলটির জেলা ও মহানগর কার্যালয়ের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংস্কারের পক্ষে যারা জোটবদ্ধ হতে চায়, তাদের নিয়ে আমরা জোট গঠন করতে পারি। সংস্কারের পক্ষে, বাংলাদেশের পক্ষে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে এবং ভারতীয় আদিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যে শক্তি গঠিত হয়েছে। কিন্তু যারা সংস্কারের বিপক্ষে, জনআকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তাদের সাথে এনসিপির কোনো জোট বা নির্বাচনী অ্যালাইয়েন্স (জোট/ঐক্য) সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, দেশের সামগ্রিক স্বার্থে এনসিপি সব সময় ছাড় দিয়ে এসেছে। সংস্কারের পক্ষে ও জাতীয় ঐকমত্যের প্রশ্নে সব সময় ছাড় দিয়ে এসেছি। জাতীয় ঐকমত্যের প্রশ্নে ও সংস্কারের প্রশ্নে যে দলগুলো আসতে চায় তাদের আমরা স্বাগতম জানাব।

ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পতন নিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যালটের মাধ্যমে হয়নি। আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। গণ-অভ্যুত্থানের ম্যান্ডেড হচ্ছে জনতার ম্যান্ডেড। কোনো রাজনীতিক দলের উপযোগিতা ফুরিয়ে যায় বলে গণ-অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়। কোনো রাজনীতিক দলের নীতি আদর্শ জনআঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে গেলে গণ-অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়। যেহেতু গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে, স্বাভাবিক পক্রিয়ায় ব্যালটের মধ্য দিয়ে যারা দলটিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে তারা মূলত আগুন-সন্ত্রাসের ও বুলেটের পক্ষে বৈধতা উৎপাদন করছে। তাই ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল আমিন, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক শওকত আলী, সদস্য আহমেদুর রহমান তনু, এনসিপি, যুবশক্তি, শ্রমিকশক্তি, ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা।


নীলফামারীতে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নীলফামারী প্রতিনিধি

নীলফামারী সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দলীয় নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে এ সদস্য সংগ্রহ অভিযান আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আকবর আলী খান, রেদোয়ানুল হক বাবু, আহমেদ আলী বাবু এবং চড়াইখোলা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন মোল্লা প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বিএনপি দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে তৃণমূল পর্যায়ে নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত করছে। দলকে সংগঠিত করতে প্রত্যেক নেতাকর্মীকে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক অর্থবিষয়ক সম্পাদক মো. হাকিমুর রহমান চৌধুরী, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বাবুল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রহমান, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক লেবু কবিরাজ, সাবেক দপ্তর সম্পাদক দেলজার রহমান, ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম প্রামাণিকসহ আরও অনেকে।


গ্রামীণ নারী ও তরুণ ভোটারদের মধ্যে ব্যতিক্রমী উচ্ছ্বাস

কেশবপুরে বিএনপির প্রার্থী রওনকুল ইসলাম
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের রাজনীতিতে নতুন প্রাণের সঞ্চার ঘটিয়েছেন ধানের শীষ প্রতীকের এমপি প্রার্থী কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। নির্বাচনী মাঠে নেমেই তিনি সাধারণ মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। গ্রামের মা-বোন, তরুণ সমাজ ও কৃষক-শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষ বলছেন, ‘ধানের শীষে মার্কা মেরেছি অন্তরে, ভোট দেব এবার শ্রাবণকে। গ্রাম থেকে শহরে শ্রাবণকে নিয়ে তরুণদের মধ্যে উত্তেজনা। প্রতিদিনই তিনি উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল, বাজার ও শহরে ছুটে যাচ্ছেন ভোটারদের কাছে। চিংড়া বাজার, প্রতাপপুর, হাসানপুর, আটন্ডা শ্রীফলা, সাতবাড়িয়া, পাজিয়া, সাগরদাঁড়ি ও কেশবপুর সদর এলাকায় সহ ইতোমধ্যেই ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

শ্রাবণের সঙ্গে দেখা করতে স্থানীয়দের ভিড় লেগে থাকে। হাসানপুর ইউনিয়নের এক নারী ভোটার বলেন, ওই ছেলেটা সবার কাছে আসে, কথা বলে। তার মধ্যে অহংকার নেই। আমরা ওকেই চাই।

নারী ও তরুণদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। গ্রামীণ নারী ও তরুণ ভোটারদের মধ্যে শ্রাবণকে ঘিরে দেখা দিয়েছে ব্যতিক্রমী উচ্ছ্বাস। তরুণরা বলছেন ‘শ্রাবণ মানে তরুণ নেতৃত্ব, ধানের শীষ মানে পরিবর্তনের প্রতীক। মঙ্গলকোট এক তরুণ ভোটার জানান, আমরা এমন প্রার্থী চাই, যিনি মাঠে থাকবেন, মানুষের কথা শুনবেন। শ্রাবণ ভাই তেমনই একজন নেতা। ইতোমধ্যে জনসংযোগই শ্রাবণের বড় শক্তিতে রূপান্তরিত করেছে।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শ্রাবণের জনপ্রিয়তার মূল কারণ তার ভদ্র আচরণ ও সরাসরি জনসংযোগ। তিনি একজন তরুণ, শিক্ষিত ও প্রখর বক্তা, যিনি অল্প সময়েই মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।

কেশবপুরের প্রবীণ রাজনৈতিক বিশ্লেষক বাগদাহ গ্রামের আলাউদ্দিন বলেন, শ্রাবণ তরুণ নেতৃত্বের প্রতীক। জনগণের আস্থা তিনি অর্জন করেছেন তার ব্যবহারে, কর্মে ও প্রতিশ্রুতিতে। শ্রাবণ পরিবর্তনের যে অঙ্গীকার করেছেন, নির্বাচনী প্রচারণায় শ্রাবণ তার অঙ্গীকার হিসেবে তুলে ধরেছেন ভবদহ জলবদ্ধতা নিরসন, কৃষি উন্নয়ন, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি। স্থানীয়দের বিশ্বাস, তিনি নির্বাচিত হলে কেশবপুরের দীর্ঘদিনের উন্নয়নের অচলাবস্থা দূর হবে, বিশেষ করে কৃষি ও শিক্ষাখাতে আসবে গতি। কেশবপুরের সাধারণ মানুষের ধারণা, এবার ভোটে পরিবর্তন আসবেই। মাঠে ঘাটে, বাজার, মহল্লায় এখন একটাই স্লোগান, ধানের শীষে ভোট দাও, শ্রাবণকে এমপি বানাও।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই উচ্ছ্বাস শুধু একটি দলের নয়, বরং পরিবর্তনের প্রত্যাশায় থাকা সাধারণ মানুষের। ধানের শীষের প্রার্থী কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ এখন কেশবপুরের রাজনীতির আলোচিত নাম। নির্বাচনী মাঠে তার জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ বর্তমানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য।


শেরপুরে বিএনপির এমপি প্রার্থী প্রিয়াংকা আবারো নির্বাচনী মাঠে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শেরপুর প্রতিনিধি

২০১৮ সালের বিএনপির আলেচিত সর্ব কনিষ্ঠ এমপি প্রার্থী ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা আবারো নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। এবারো বিএনপির সর্ব কনিষ্ঠ এমপি প্রার্থী তিনি। বিএনপির প্রাথমিক প্রার্থী হিসেবে শেরপুর-১ আসনে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

গত সোমবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত শেরপুর সদর উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নে ৭নং, ৬নং চর, গোয়ালপাড়া ও পয়েস্তিরচর এলকায় বাড়ি বাড়ি যান এবং গণসংযোগ করেন। তিনি একাধিক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

এ সময় তিনি ২০১৮ সালে তার ওপর হামলা, অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে যাওয়া, পরে তার চাকরি চলে যাওয়া তার ওপর নানা নির্যাতনের কথা তিনি তুলে ধরেন। দেন উন্নয়ন বঞ্চিত এলাকার উন্নয়ন করার প্রতিশ্রুতি।

তিনি বলেন, আমি আপনাদের সন্তান। আমি সেবা করার জন্যই এসেছি, আমাকে আপনাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে সংসদে পাঠান আমি উন্নয়ন বঞ্চিত এসব এলাকার উন্নয়ন করব। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো বেকারদের।

এ সময় শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপি সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম, ম শফিউল ইসলাম চান, রফিকুল আলম শিপন, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম স্বপন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আক্রামজ্জামান রাহাত, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসেম সিদ্দিকী বাবু, মৎসজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান, সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক পারভেজসহ বিএনপি ও অঙ্গ দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিনে চরাঞ্চলের মানুষ বঞ্চিত হয়েছে। নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এবার উন্নয়নের পালা। চর এলাকার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এবার প্রিয়াঙ্কাকে নির্বাচিত করবে।

বিএনপি নেতা আকরামুজ্জামান রাহাত বলেন, চর এলাকার সমস্ত নেতারা প্রিয়াঙ্কার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আমাদের মেয়ে ডা. প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে যতই ষড়যন্ত্র করেন, কোন লাভ হবেনা। এবার প্রিয়াঙ্কাকে মানুষ এমপি নির্বাচিত করবে।


ঢাকা-১৮ আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী এস এম জাহাঙ্গীর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার রাজনীতির অন্যতম আলোচিত আসন ঢাকা-১৮। এই আসনে দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর।

স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা, সাংগঠনিক দক্ষতা এবং কর্মীদের প্রতি আন্তরিকতা তাকে এ আসনে একজন শক্তিশালী নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

এস এম জাহাঙ্গীর শুধু রাজনৈতিক কর্মসূচিতেই নয়, সাধারণ মানুষের পাশে থেকেও কাজ করেছেন। বর্তমান সরকারের দমন-নিপীড়নের সময় তিনি কর্মীদের আইনি সহায়তা প্রদান, তাদের পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া এবং দুর্দিনে সাহস জোগানোর মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন।

১৯৯১ সালে তেজগাঁও কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন এস এম জাহাঙ্গীর। এরপর তিনি ছাত্রদল ও যুবদলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ঢাকা-১৮ উপনির্বাচনে বিএনপি তাকে মনোনয়ন দেয়, যা দলের প্রতি তার প্রতি আস্থার প্রতিফলন বলে মনে করেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অসংখ্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে ৩২৯টি মামলা রয়েছে, যা তাকে বিএনপির শীর্ষ তিন মামলাবহুল নেতার একজন হিসেবে অবস্থান দিয়েছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হরতালের এক কর্মসূচিতে প্রথমবার আটক হয়ে এক মাস কারাভোগ করেন তিনি। এরপর থেকে আটক, জামিন ও পলাতক জীবনের মধ্য দিয়েই তার রাজনৈতিক পথচলা অব্যাহত রয়েছে।

সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের ৩১ দফা দাবির প্রচার ও ডেঙ্গু সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন এস এম জাহাঙ্গীর। তার নেতৃত্বে ঢাকা-১৮ আসনের বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট এখন অনেকটাই সুসংগঠিত হয়েছে বলে দলীয় নেতারা দাবি করেছেন।


গণভোট ইস্যুতে আজ সরকারকে বার্তা দেবে বিএনপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গণভোট ইস্যুতে সরকারকে উদ্দেশে করে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বেলা ১২টায় গুলশানে চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরা হবে।

সোমবার (১০ নভেম্বর) রাতে গুলশানে চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সোমবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে শুরু হয়ে বৈঠকটি শেষ হয় রাত ১১টা ১৫ মিনিটে। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বৈঠকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিগত সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরেন। এ সময় দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের প্রচার-প্রচারণার কৌশল এবং শরিক দলের সঙ্গে আসন বণ্টন ও ভোটের কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন নেতার মতে, গণভোট ইস্যুতে সরকারের আচরণ এখন স্পষ্টতই একতরফা। বিএনপি মনে করে, গণভোট জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে হতে হবে—এ বিষয়ে সরকারকে কঠোর বার্তা দেওয়া হবে।

তারা আরো জানান, ‘রাষ্ট্র সংস্কারে প্রণীত জুলাই জাতীয় সনদ–২০২৫ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ও গণভোট নিয়ে তৈরি রাজনৈতিক সংকট নিরসনে’ সরকারের মনোভাব ও পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা হয়।

বিএনপি সূত্র জানায়, বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট নিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতার অগ্রগতি সম্পর্কে মতামত জানতে চান তারেক রহমান। নেতারা এ বিষয়ে একে একে আলোচনা করেন।

আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হয়, সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব বিষয়ে বিএনপির অবস্থান ও সরকারের প্রতি বার্তা জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে।


আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে নুরুল হক নুর যা বললেন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর সোমবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে বলেছেন, “আওয়ামী লীগ এখন মরা লাশ” এবং আগামী ৫০ বছরে দেশের রাজনীতিতে দলের ফিরার কোনো সম্ভাবনা নেই।

নুর তার পোস্টে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, “দেশে অবস্থানরত লীগের ভাইদের বলব—স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বিদেশে নিরাপদে পালিয়ে থাকা শত-সহস্র কোটি টাকার মালিক নেতাদের কথায় হুজুগে রাস্তায় নেমে নিজের ও পরিবারের জন্য বিপদ ডেকে আইনেন না। মুখোশ বা মাস্ক পড়ে ঝটিকা বা গুপ্ত মিছিল করার কোনো প্রয়োজন নেই। চুপচাপ থাকলে ভালো থাকবে, উৎপাত করলে বিপদ।”

তিনি উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপি ও জামায়াতের বিরোধী নেতা-কর্মীরা যে জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তার তুলনায় বর্তমান অবস্থান অনেক ভালো। তবে নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে নেতাকর্মীদের “উৎসাহে লাফালাফি না করতে” তিনি পরামর্শ দিয়েছেন।

নুর আরও বলেন, “৭৫ সালে শেখ মুজিব, ২৪ সালে তার মেয়ে শেখ হাসিনা—দুই দফায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির মৃত্যু ঘটিয়ে ভারত চলে গেছেন। এখন বিচারিক প্রক্রিয়ায় দলের দাফন-কাফন সম্পন্ন হবে। তাই মরা লাশের পেছনে ছুটে গিয়ে হয়রান না হয়ে নতুন দিনের সম্ভাবনার নতুন বাংলাদেশের সঙ্গে থাকুন।”

তিনি পোস্টে যোগ করেছেন, নতুন বাংলাদেশ সবাই মিলে গড়তে হবে, যেখানে কোনো ক্ষমতালোভী শাসক থাকবে না, ফ্যাসিবাদের ছায়া থাকবে না, থাকবে মানুষের ভয়হীন চিত্তে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম, সততা, দায় ও দরদের রাজনীতি।


banner close