শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
৩০ কার্তিক ১৪৩২

সহিংস আন্দোলনের কারণে মানুষ আর বিএনপির সঙ্গে নেই: শেখ হাসিনা

মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২২:৪৬

জিয়া পরিবার পুরোটাই একটা খুনি পরিবার উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনীর অফিসার, সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছিলেন। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে সেই একইভাবে এ দেশে হত্যাকাণ্ডের রাজনীতি শুরু করেন। ২০০৭ সালে আর জীবনে রাজনীতি করব না বলে তারেক জিয়া মুচলেকা দিয়ে দেশের বাইরে চলে যায়। সেখানে বসে এখন দেশের মানুষকে হুকুম দিয়ে মানুষ হত্যা করাচ্ছে।

তিনি বলেন, এবার প্রথম দিকে বিএনপি আন্দোলনে কিছু মানুষের সমর্থন পেয়েছিল। কিন্তু সহিংস আন্দোলন করায় মানুষ এখন আর তাদের সঙ্গে নেই।

গোপালগঞ্জ সফরের দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার নিজ নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়ায় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি মেনে দলীয় মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। নির্বাচনে আচরণবিধি মেনে চলার বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকায় নিজ নির্বাচনী আসনে দুই দিনের সফরে সরকারি সুবিধা ও প্রটোকল কোনোটাই নেননি শেখ হাসিনা। গত বৃহস্পতিবার সরকারি প্রটোকল ছাড়াই পতাকাবিহীন ব্যক্তিগত গাড়িতে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া যান আওয়ামী লীগ সভাপতি। সেখানে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কবরে শ্রদ্ধার্ঘ্য দিয়েছেন, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতের পর টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাড়িতে করেছেন দলীয় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়। এ সময় ছিল না সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। রাতেও প্রটোকল ছাড়াই ছিলেন নিজ বাড়িতে। শুক্রবার সকালে টুঙ্গিপাড়া থেকে কোটালীপাড়ায় গেছেন পতাকাবিহীন ব্যক্তিগত গাড়িতে।

গোপালগঞ্জে নিজ আসনে সফরের সময় নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে শুক্রবারও প্রটোকল ছাড়াই টুঙ্গিপাড়া থেকে কোটালীপাড়ায় যান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্দোলনের নামে এখন তারা আগুন দিয়ে মানুষ পোড়াচ্ছে। পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, হানাদার বাহিনীর প্রেতাত্মা এদের ওপর ভর করেছে। পুলিশকে যেভাবে মাটিতে ফেলে পেটাল, এর চেয়ে জঘন্য কাজ মনে হয় আর হতে পারে না। পুলিশ- একটা গরিব মানুষের ছেলে, একটা চাকরি করে। তাকে এভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হলো, সে যখন বেহুঁশ হয়ে গেছে, মৃতপ্রায় তার মাথা থেকে হেলমেট ফেলে দিয়ে মাথায় কোপাল, মারল। এ কোন দেশে আমরা বাস করি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরাই বিএনপির নেতা। কী বীভৎস এরা। এভাবে একটা পুলিশ পিটিয়ে মারল। অ্যাম্বুলেন্সে পুলিশ ঢোকার পর সেখানে আগুন দিল। ২-৩টা অ্যাম্বুলেন্স পোড়াল। সাধারণ রোগী নিয়ে যাচ্ছে, সেই অ্যাম্বুলেন্সের ওপর তারা আক্রমণ করে। রোগীসহ অ্যাম্বুলেন্সের ওপর আক্রমণ করে বিএনপি। এই হলো তাদের চরিত্র। তাদের ওপর মানুষের আস্থা-বিশ্বাস থাকবে কী করে। এখন আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও। এদের শিক্ষাটা বোধ হয় ওই ইসরায়েলের কাছ থেকে নেওয়া। যারা প্যালেস্টাইনের ওপর আক্রমণ করছে। হাসপাতালে রক্তের স্রোত বয়ে যাচ্ছে গাজায়। এরা মনে হয় ওইখান থেকে শিক্ষা নিয়ে চলে।

বিএনপিকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আবার তারা আউটসোর্সিং আন্দোলন করে। সমাজের কিছু অবাধ্য লোকজনের হাতে টাকা দিয়ে আগুন দেওয়ায়। যুবদলের নেতা নিজে সরাসরি আগুন দিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছে। জনগণ কিন্তু সচেতন। তাদের ধরে ধরে পুলিশে দিয়ে দিচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বারবার আমি মৃত্যুকে সামনে দেখেছি। এই কোটালীপাড়াতেও বিশাল বিশাল বোমা মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল। মিটিংয়ে আক্রমণ, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা এগুলো তো প্রতিনিয়ত ছিল। সরাসরি গুলি- এ অবস্থার মধ্য দিয়েও আল্লাহ বারবার আমাকে বাঁচিয়ে রাখলেন।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা ৯৬ সালে সরকার গঠন করি। আবার ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি। ২০০৯ থেকে আমরা এ পর্যন্ত একটানা সরকারে আছি। অন্তত আজ এটুকু বলতে পারি, বাংলাদেশটা বদলে গেছে। বাংলাদেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হয়েছে, এখন আর খাদ্যের হাহাকারটা নেই। খাদ্য নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি। চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে পেরেছি। শিক্ষার সুযোগ আমরা সৃষ্টি করেছি। ঠিক যা জাতির পিতা চেয়েছিলেন। একটানা সরকারে থাকতে না পারলে আমাদের উন্নয়ন দৃশ্যমান হতো না।’

কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্য দেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, শহীদ উল্লাহ খোন্দকার, আয়নাল হোসেন শেখ প্রমুখ।

কোটালীপাড়ায় মতবিনিময় শেষে তিনি সড়কপথে টুঙ্গিপাড়া যান। বিকেলে তিনি টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।


বদলগাছীতে ৭শতাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবারের বিএনপিতে যোগদান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সবুজ হোসেন, নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর বদলগাছীতে ৭শতাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবার বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। ধানের শিষে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বেচ্ছায় যোগ দেন
ওই সকল পরিবার।

বৃহস্পতিবার ১৩ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিসহ উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের হাতে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটিতে যোগ দেন।

উপজেলার মিঠাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে জগপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির প্রাঙ্গণে যোগদানের এই আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল। যিনি সদ্য ঘোষিত
নওগাঁ-৩ (বদলগাছী-মহাদেবপুর) আসনে বিএনপি মনোনীত এমপি প্রার্থী।

৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি খায়রুল ইসলামের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাদী চৌধুরী টিপু, বাংলাদেশ নওগাঁ জেলা পুজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য প্রদীপ কুমার কুন্ডু, বদলগাছী উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ও মিঠাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হাসানসহ ছাত্রদল, যুবদল, শ্রমিক দল, মহিলা দলের নেতাকর্মীরা।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সনাতন ধর্মাবলম্বীর জগপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান বিশ্বনাথ মন্ডল, সাবেক ইউপি সদস্য ভূপেন্দ্রনাথ মণ্ডল, সাধন চন্দ্র সরকার,অমিত কুমার, শরন কুমার, সুবল চন্দ্র প্রামাণিক, দিপক সরকার, উজ্জ্বল কুমার উৎপল, অম্লদা, দিলিপ সরকার, নিরাঞ্জন সরকার সহ আরো অনেকে।

তারা বলেন, আমরা যারা সনাতনী অনেক দিন বিএনপিকে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাইনি। এছাড়া ফজলে হুদা বাবুল আমাদের পরিচিত ও এলাকার সন্তান। তিনি আগে থেকেই আমাদের খোঁজ খবর রাখতেন। তাই এবার ফজলে হুদা বাবুল ভাইকে ভোট দিয়ে তাকে এমপি হিসেবে নির্বাচিত করবো। এসময় তারা ফজলে হুদা বাবুলের কাছে এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের দাবি করেন।

অনুভূতি জানতে চাইলে ফজলে হুদা বাবুল বলেন, “বিএনপি সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার ও স্বাধীনতার পক্ষে। আজ যারা স্বেচ্ছায় আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন, তাদের আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই।” আপনারা আমাকে যে ভালোবাসা দিলেন, আমি আমৃত্যু সেই ভালোবাসা দেওয়ার চেষ্টা করবো।

ফজলে হুদা আরও বলেন, শুধু এই সকল পরিবার নয়, মহাদেবপুর ও বদলগাছী উপজেলায় প্রায় সকল সনাতনী ভাই বোনেরা বিএনপিকে ভালোবেসে ধানের শিষে ভোট দিবে। আর আমি এমপি মনোনীত হলে তাদের জন্য আমার প্রথম কাজ হবে তাদেরকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলার কাজ সম্পন্ন করা। কারণ শিক্ষিত হলেই তারা উন্নতি করা শিখবে।

উল্লেখ, গত বৃহস্পতিবার ৬ নভেম্বর উপজেলার শুরকালি মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ৫শতাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবার বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন।


খালেদা জিয়ার পক্ষে আজ থেকে প্রচারণা শুরু করছে জেলা বিএনপি

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে আজ শুক্রবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে যাচ্ছে দিনাজপুর জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলো। বৃহস্পতিবার দিনাজপুর শিশু একাডেমিতে আয়োজিত এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর সদর-৩ আসনে বেগম খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ ঘিরে এ সভার আয়োজন করে জেলা বিএনপি। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

সভা সূত্রে জানা যায়, আজ শুক্রবার থেকেই জেলার সব মসজিদে বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা সম্বলিত লিফলেট বিতরণের কর্মসূচি পরিচালিত হবে। পাশাপাশি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর আরেকটি সমন্বয় সভা শিগগিরই অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানানো হয়।

এর আগে প্যারাডাইস কমিউনিটি অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টারে সাংবাদিক ও সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে বেগম খালেদা জিয়ার সম্মানে প্রধান অতিথির আসন ফাঁকা রেখে অনুষ্ঠান শুরু করা হয় এবং তাঁর পক্ষে আনুষ্ঠানিক প্রচারণার উদ্বোধন করেন ডা. জাহিদ হোসেন।

গণভোট ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন একই দিনে আয়োজনের সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, “এটি জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এতে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে।” পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, “এ সিদ্ধান্তকে ঘিরে যারা বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছে, তারা জনস্বার্থের পরিপন্থী কাজ করছে।”

জাহিদ হোসেন তরুণ ভোটারদের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “দেশের ১২ কোটির মধ্যে প্রায় ৪ কোটি তরুণ ভোটার। তাদের কাছে যেভাবে পৌঁছানো যায়, সেভাবে কাজ করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে তরুণ প্রজন্ম আন্দোলনের নেত্রী হিসেবে দেখেছে, ফলে নেতাকর্মীদের আচরণ ও কর্মকাণ্ড তরুণদের কাছে ইতিবাচক বার্তা দিতে হবে।

সভায় জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ কচি, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


গণতন্ত্রে ফিরতে নির্বাচনই একমাত্র বিকল্প: মির্জা ফখরুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সংস্কারের সব উদ্যোগ বিএনপি শুরু করেছে। গণতন্ত্রের জন্য প্রাণ দিলেও চর্চার সুযোগ হয়নি। বারবার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে একটি গণতান্ত্রিক শক্তি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে বাকশাল করেছিল। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার সুযোগ এসেছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে। এখন গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার জন্য নির্বাচনই একমাত্র বিকল্প।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‌‘জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি।

সংস্কারের উদ্যোগ বিএনপিই নিয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, রাষ্ট্র মেরামতে ৩১ দফা দিয়েছে বিএনপি। সংস্কারের সব উদ্যোগ বিএনপি শুরু করেছে। ভিন্নমত থাকবেই। সবাই একমত হবে না। আজকে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়েও ভিন্নমত থাকতে পারে। তবে, ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন দিয়ে পার্লামেন্ট গঠন করা হবে, যারা সব বিষয়ে মীমাংসা করবে।

পিআর চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, পিআর সাধারণ মানুষ বোঝে না। চাপিয়ে দেওয়ার আগে জনগণকে তৈরি করে নিতে হবে। তাদেরকে বোঝাতে হবে।

মির্জা ফখরুল দাবি করেন, ফ্যাসিস্টবিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।

এদিকে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের ৫০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কখনো আপস করব না। আমরা অবশ্যই আমাদের জাতীয় স্বার্থকে ঊর্ধ্বে রেখে আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গড়ার চেষ্টা করব। সব মানুষের, কৃষক–শ্রমিক–মেহনতি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করব।

আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি ‘জনগণের সরকার’ গঠন করবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকের পরিস্থিতিতে গণঅভ্যুত্থানের পর এই বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি জনগণের সরকার আমরা গঠন করতে সক্ষম হব।

জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক দর্শন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রয়াত এই রাষ্ট্রনেতা ক্ষমতায় গিয়ে দেশকে রাজনৈতিক সংস্কারের মধ্যে নিয়ে এসেছিলেন এবং একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় শাসনের দিকে নিয়ে যান।

অনুষ্ঠানে বিএনপির সাংস্কৃতিকবিষয়ক উপদেষ্টা আশরাফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে সংস্কার নিয়ে যে আলোচনা, তার উদ্ভাবক ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তবে জিয়াউর রহমান সংস্কারকাজ শেষ করে যেতে পারেননি।

এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস)।

এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিএনপির সহসাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সাইদ সোহরাব। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জাসাসের আহ্বায়ক হেলাল খান এ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন জাসাসের সদস্যসচিব জাকির হোসেন রোকন।


কুমিল্লায় ৮ ইসলামী দলের অবস্থান কর্মসূচি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তরিকুল ইসলাম তরুন, কুমিল্লা দক্ষিণ

ফ্যাসিবাদ ও তার দোসরদের মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে ইউনূস সরকার বলে অভিযোগ তুলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী ৮ দলের নেতারা। তারা বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের দোসরদের এমন দুসাহস বাংলার আপামর জনতা কখনো মেনে নেবে না। বৃহস্পতিবার কুমিল্লা নগরীর টাউন হল মুক্তমঞ্চে ‘ফ্যাসিবাদী শক্তির নাশকতা ও অপতৎপরতা প্রতিরোধে’ আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে এ বক্তব্য দেন ৮ ইসলামী দলের নেতারা।

বক্তারা বলেন, গণভোট ও জুলাই সনদের ভিত্তি ছাড়া কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না ইসলামী আট দল। তারা আরও বলেন, ‘আমরা নির্বাচন চাই, তবে আমাদের ছেলে-মেয়েদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করে জুলাই সনদ ও গণভোট ছাড়া নির্বাচনে যেতে পারি না। বাংলাদেশের জনগণও তা মেনে নেবে না।’

কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা মহানগর আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লা মহানগর সভাপতি এম এম বিল্লাল হোসাইন, খেলাফত মজলিস কুমিল্লা মহানগর সভাপতি মাওলানা সৈয়দ আব্দুল কাদের জামাল, এবং কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক এ কে এম এমদাদুল হক মামুন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি কাউন্সিল মোশারফ হোসাইন, জামায়াতের সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমান, খেলাফত মজলিসের সহসভাপতি মাওলানা আমীর হামজা, সেক্রেটারি মাওলানা ইলিয়াস বিন হাসেম, ইসলামী আন্দোলনের সেক্রেটারি মাওলানা এনামুল হক মজুমদার, ছাত্রশিবির কুমিল্লা মহানগর সেক্রেটারি নাজমুল হাসানসহ আট ইসলামী দলের শীর্ষ নেতারা।


একতা ধ্বংস হলে ফ্যাসিবাদী প্রবণতা বাড়তে পারে: আমীর খসরু

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকায় নবনিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লেটের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একতা ধ্বংস হলে ফ্যাসিবাদী প্রবণতা বাড়তে পারে।’ তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সবাই দেশে নির্বাচন দেখতে চায়। যারা সরকার ও জনগণকে জিম্মি করবে, তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে৷’

বৃহস্পতিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকায় নবনিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লেটের সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, ‘কোনো দলের কর্মসূচির সঙ্গে নির্বাচন ঘোলাটে হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এতে নির্বাচনী কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে না৷ যারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না, তারা এ ধরনের অস্থিরতা তৈরি করছে। তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য নির্বাচন কার্যক্রম বিনষ্ট হবে না, নির্বাচন পেছাবে না। জনগণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরতে অপেক্ষায় আছে।’

তিনি বলেন, ‘যারা অপচেষ্টা করছে, তারা নির্বাচন চায় না। কোনো দলের অধিকার নেই সরকারকে বা জনগণকে জিম্মি করে তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া। যারা সরকারকে জিম্মির দিকে নিয়ে যাবে, তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে৷ যারা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে, তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।’

ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে দেশটির সঙ্গে শিল্প খাতে সহযোগিতা ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শারলে ভবিষ্যতে সম্ভাব্য যৌথ প্রকল্প ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগগুলোর কথাও উল্লেখ করেছেন।’

নির্বাচনের পর নতুন সরকার আসলে বিদেশি রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক কেমন হবে, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ- এসব বিষয় ছাড়াও ক্রিয়েটিভ সেক্টর নিয়েও ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে এমন ঘটনাবলি নিয়ন্ত্রণ ও সঠিক তথ্য নিশ্চিত করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রদূত আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন হবে, তত তাড়াতাড়ি ফ্রান্স সম্পর্ক উন্নয়নে এগিয়ে আসবে।’


জনগণের ভোটেই বিএনপির বিজয় আসবে: মাহমুদুল হক রুবেল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শান্ত শিফাত, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি

শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের উত্তর কান্দলী গ্রামে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি নতুন মসজিদের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। মসজিদটির নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন শেরপুর-৩ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহমুদুল হক রুবেল।

মালয়েশিয়া প্রবাসী শামীম আহামেদের উদ্যোগে এ মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। উদ্বোধন শেষে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মতিউর রহমান মধুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাহমুদুল হক রুবেল।

তিনি বলেন, “এই গ্রামটি বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হলেও বিগত সরকারগুলোর সময়ে এখানে কোনো উন্নয়ন হয়নি। রাস্তাঘাট, মসজিদ, মাদ্রাসা—সব ক্ষেত্রেই অবহেলা করা হয়েছে, যা আমি আজ সরেজমিনে দেখে গেলাম।”

তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “আপনারা যদি ধানের শীষে ভোট দিয়ে আমাকে এমপি নির্বাচিত করেন, তাহলে জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকেই আপনাদের এলাকার রাস্তাঘাট, মসজিদ, মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নকাজ শুরু করবো।”

এ সময় তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করতে ঘরে ঘরে গিয়ে কাজ করতে হবে, যাতে সবাই বিএনপিকে ভোট দেয়।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহজাহান আকন্দ, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান, ধানশাইল ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোলাপ হোসেনসহ উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।


নারায়ণগঞ্জে এনসিপির মশাল মিছিলে হঠাৎ ‘জয় বাংলা’ স্লোগান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জ শহরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর মশাল মিছিলে হঠাৎ এক যুবকের ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ওই যুবককে ধাওয়া দেয় নেতা-কর্মীরা। গত বুধবার শহরের চাষাঢ়া বাগে জান্নাত মসজিদের সামনের সড়কে এই ঘটনা ঘটে। তবে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া ওই যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের ঘোষিত ১৩ নভেম্বরের লকডাউন কর্মসূচির প্রতিবাদে রাতে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মশাল মিছিল বের করে এনসিপির নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি চাষাঢ়া সলিমুল্লাহ সড়ক হয়ে বাগে জান্নাত জামে মসজিদের সামনে পৌঁছালে হঠাৎ সামনে এসে এক বহিরাগত যুবক ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। এতে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ও তারা ওই যুবককে ধাওয়া দেয়। এ সময় ওই যুবক দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে অনেক খোঁজা-খুঁজি করে ওই যুবককে না পেয়ে এনসিপির নেতা-কর্মীরা পুনরায় মিছিলটি নিয়ে এগিয়ে যায়। পরে মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চাষাঢ়া বিজয় স্তম্ভে এসে শেষ হয়।

এ বিষয়ে মিছিলে অংশগ্রহণ করা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের কেন্দ্রীয় সংগঠক শওকত আলী বলেন, ‘আমাদের মিছিলের পেছনে হঠাৎ এক বহিরাগত যুবক জয় বাংলা স্লোগান দেয় এবং চিৎকার করে বলে ‘আমি জয় বাংলা করি, আমারে কিছু কর।’ তখন আমাদের মিছিলের পেছনের অংশে কয়েকজন মেয়ে সদস্য ছিল। তারা দৌড়ে এসে আমাদের ডাক দিলে সাথে সাথে ছেলেটিকে ধরতে যাই। কিন্তু তত ক্ষণে ওই যুবক দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে অনেক খোঁজা-খুঁজি করেও তাকে আর পাওয়া যায়নি। জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া ওই যুবক কোথা থেকে এসেছে এবং তার পরিচয় কী তা কিছুই জানতে পারি নাই। পরে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিলটি শেষ হয়েছে।

এ সময় মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এর অঙ্গ-সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক নিরব রায়হান, জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম, সাবেক মুখপাত্র সারফারাজ হক সজিবসহ প্রমুখ।


ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারীদের ক্ষমাকরা হবে না: নুরুল হক নুর

হবিগঞ্জ পৌরসভা মাঠে বক্তব্য রাখছেন নুরুল হক নুর।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন– আওয়ামী লীগের যে সকল নেতা-কর্মী জুলাই আন্দোলনের বিপক্ষে ছিল না, মানুষের ঘরবাড়ি লুটপাট করে নাই কিংবা ছাত্র-জনতার উপর হামলা-মামলা করে নাই, তারা বিভিন্ন দলে যোগদান করতে পারবেন।

গত বুধবার বিকালে হবিগঞ্জ পৌরসভা মাঠে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন- বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, গণঅধিকারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে পরিচ্ছন্ন আওয়ামী লীগের কর্মীরা যোগদান করতে পারবে। কিন্তু যারা দেশের সম্পদ লুটপাট করেছে, বিদেশে টাকা পাচার করেছে, ছাত্র জনতার উপর হামলা করেছে তাদের কখনো ক্ষমাকরা হবে না।

ভিপি নুর বলেন– আগামীতে সবাই মিলে এইমুহূর্তে একটি জাতীয় ঐকমত্যের সরকার দরকার, তা নাহলে আবারও ফ্যাসিবাদ আমাদের ওপর চেপে বসবে। এছাড়া এই মুহূর্তে গণভোট ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন আলাদাভাবে করার বাস্তবতা নেই। কারও সাথে জোট করা বা একীভূত হওয়ার খুব বেশি সুযোগ নাই । তবে ইতোমধ্যে অনেক দল আমাদের সাথে থেকে নির্বাচন করার জন্য যোগাযোগ করছে।

তিনি বলেন– আওয়ামী লীগ বিদেশে পালিয়ে গিয়েও দেশে নাশকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তারা বাসে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ করছে। তাদের ব্যাপারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।

গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর সদস্য ও হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী চৌধুরী আশরাফুল বারী নোমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি আরও বলেন– অনেকে জুলাই আন্দোলনের পর মামলা বাণিজ্য করেছে, শহীদদের নাম বিক্রি করেছে তাদের চিহ্নিত করে রাখতে হবে।


নির্বাচনের আগে গণভোটের যৌক্তিকতা নেই, সময়ও নেই: সালাহউদ্দিন আহমদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট করার কোনো যৌক্তিকতা নেই এবং সময় বা প্রয়োজনও নেই।’

গতকাল বুধবার রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে জুলাই সনদ, গণভোটসহ বিভিন্ন বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘গণভোট আগে হওয়ার কোনো যৌক্তিকতা এখন নেই, সময় নেই। তা ছাড়া প্রয়োজনও নেই। কারণ একই দিনে অর্থাৎ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনে যদি আমরা একটা ছোট্ট ব্যালটে এই গণসম্মতিটা নিতে পারি, সেটাই হবে সবচাইতে যৌক্তিক, প্রাসঙ্গিক, গ্রহণযোগ্য এবং অতিরিক্ত ব্যয় হবে না।’

তিনি বলেন, ‘নোট অব ডিসেন্ট ছাড়া গণভোট আয়োজন করার কোনো বিষয়ই ঐকমত্য কমিশনে আলোচনা হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলো যেসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাবে তা নিয়ে জাতীয় সনদ হবে এবং পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ সনদ বাস্তবায়ন করবে- এই বক্তব্য থেকে প্রধান উপদেষ্টা সরে যেতে পারেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে ক্ল্যাশ অব ইন্টারেস্ট আছে। এ সরকার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে সহযোগিতায় থাকব, ভোটে অংশগ্রহণ করব, জনগণকে উদ্বুদ্ধ করব। কিন্তু সেই সরকারের প্রধান হিসেবে এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে যে সুপারিশগুলো সরকারের কাছে দেওয়া হলো, সেখানে অনেকটা আমি বলব যে জুলাই জাতীয় সনদ যেভাবে স্বাক্ষরিত হয়েছে, তার থেকে (সরকার) বহুদূরে সরে গিয়েছে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা আশা করি এমন কোনো পদক্ষেপ সরকার নেবে না, যার মধ্য দিয়ে জাতিতে বিভক্তি সৃষ্টি হবে, অনৈক্য সৃষ্টি হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি ‘নিরপেক্ষ’ আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আলোচনার শেষ পর্যায়ে জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরিত হওয়ার দু’একদিন আগে প্রধান উপদেষ্টা সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বসলেন। আমরা সেখানে প্রস্তাব করেছি যে একটা ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেই জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরিত হোক এবং সেই সনদের বাস্তবায়নের জন্য সবাই আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ হব।’

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘সেই হিসেবে সনদপ্রণীত হয়েছে এবং সেই সনদে প্রায় ৮৪টি দফা ছিল। সেই ৮৪টি দফার বিভিন্ন দফায়, সব দফায় নয়, আমাদের এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কিছু কিছু বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট ছিল। এই নোট অব ডিসেন্ট প্রথাগত নোট অব ডিসেন্ট নয়। সেই নোট অব ডিসেন্টে লেখা আছে যে, এই দফাগুলো যে রাজনৈতিক দল অথবা জোট যে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, সেটা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রকাশ করে যদি জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত হয়, তাহলে তারা সেই মতে বাস্তবায়ন করতে পারবে।’

এনসিপির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে এ সমস্ত বিষয়ে শেষ কথা বলা যায় না, তবে এখন পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর মধ্যে চূড়ান্ত কোনো প্রস্তাব হয়নি।’

‘এখন পর্যন্ত এনসিপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হব কী হব না বা তারা আমাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ইলেকশন করবে কী করবে না, সেটার কোনো প্রস্তাব তাদের পক্ষ থেকেও আসেনি আর আমাদের পক্ষ থেকেও যায়নি; তবু একেবারে সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়ার কথাও নয় - এ বিষয়ে আরও অপেক্ষা করতে হবে।’

এ সময় সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চলতি মাসের শেষের দিকে দেশে ফিরবেন বলে তারা আশা করছেন।


রাজধানীতে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল

আপডেটেড ১৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১৩:৫৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে জুলাইসহ সকল গণহত্যার বিচার, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান ও আওয়ামী লীগের নাশকতা সৃষ্টির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে মিছিলটি ঢাকা কলেজ থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি রেজাউল করিম শাকিল ও ঢাকা মহানগর পূর্বে সভাপতি এবং ডাকসুর ছাত্র পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহর যৌথ সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাহিদুল ইসলাম বলেন, জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ এক নতুন সূর্যোদয়ের স্বপ্ন দেখছে। বাংলাদেশ আজ ফ্যাসিবাদমুক্ত, সমৃদ্ধ নতুন দেশ গড়ার জন্য প্রজন্মের এক জাগরণ তৈরি করেছে। শহীদ পরিবারের কান্না, আহত ও পঙ্গুদের রক্ত এখনো কথা বলছে; অথচ জুলাই গণহত্যার বিচার নিয়ে টালবাহানা চলছে। দেড় বছর পার হলেও অসংখ্য চাক্ষুষ প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত একটি রায়ও দিতে পারেনি সরকার।

তিনি বলেন, যারা জুলাইকে ধারণ করতে পারবেন না, তারা দেশের দায়িত্ব নেওয়ার যোগ্য নন। কেউ কেউ ইতোমধ্যে আওয়ামী পুনর্বাসনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন। তারা ক্ষমতায় আসার পূর্বেই আওয়ামী লীগের সকল মামলা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন—এই অধিকার জনগণ আপনাদের দেয়নি। এরকম চলতে থাকলে যে প্রজন্ম হাসিনাকে লাল কার্ড দেখিয়েছে, তারা আপনাদেরকেও ‘ডাবল লাল কার্ড’ দেখাবে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। তারা ইতোমধ্যে সারাদেশে আগুন সন্ত্রাস চালিয়েছে; ময়মনসিংহে গাড়িচালককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। আগামীতে কোনো আগুন সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদের রাজনীতি এ দেশে চলবে না।

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাই গণহত্যা, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যাসহ সকল গণহত্যার বিচার দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই সনদ এ জাতির অন্যতম আকাঙ্ক্ষা, যার মাধ্যমে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার হবে। কিন্তু একটি দল এক্ষেত্রে সচেতনভাবে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অবিলম্বে রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল সেক্টরকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করে গণভোট আয়োজন করতে হবে—যার মাধ্যমে শহীদ, আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। গণভোটের পর অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।

ছাত্রশিবির সভাপতি সকলকে ছাত্রশিবির ঘোষিত রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ও সারাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মু’তাসিম বিল্লাহ শাহেদী, প্রকাশনা সম্পাদক ও ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি ও ডাকসু জিএস এস. এম. ফরহাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি হেলাল উদ্দিন, মহানগর পশ্চিম সভাপতি হাফেজ আবু তাহের এবং মেডিকেল জোন সভাপতি ডা. যায়েদ আহমেদ।


গণভোটের আড়ালে স্বৈরাচারকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, একটি দল ফ্যাসিবাদের নিষ্ঠুরতা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে গিয়ে ফ্যাসিবাদের ছাতার নিচে আশ্রয় নিয়েছিল। বর্তমান পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে সেই দলের ছাতার নিচে পরাজিত পলাতক স্বৈরাচার আশ্রয় নিয়েছে কি না, এটি ভাবার সময় এসেছে। গণভোটের আড়ালে পতিত, পরাজিত ও পলাতক অপশক্তিকে রাষ্ট্র রাজনীতিতে পুনর্বাসনের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান তিনি।

বুধবার রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপির আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তারেক রহমান। সভার সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তারেক রহমান বলেন, ‘কয়েকটি রাজনৈতিক দল বর্তমানে বিভিন্ন শর্ত দিয়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে। নির্বাচনের জটিলতা সৃষ্টি মানে একদিকে রাষ্ট্রের খবরদারির সুযোগ নেওয়া, অন্যদিকে পতিত স্বৈরাচারের পুনরাগমনের পথ সুগম করা। এই স্বৈরাচারীর সহযোগিতায় আমরা সম্প্রতি রাজধানীতে আগুন-সন্ত্রাস দেখেছি।’

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘কিছু রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে গণতান্ত্রিক জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোকে হুমকিধমকি না দিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জনগণের মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান জানান।’

তারেক রহমান বলেন, ‘জুলাই সনদে যা অঙ্গীকার করা হয়েছে, বিএনপি সেই অঙ্গীকার রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কিন্তু কেউ যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দুর্বল ভেবে অপকৌশলের আশ্রয় নেয় বা বিএনপির বিজয় ঠেকাতে ষড়যন্ত্র করে, তবে সেটিই শেষ পর্যন্ত তাদের রাজনৈতিক বিপর্যয়ের কারণ হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের বলছি—অযথা পরিস্থিতি ঘোলাটে করবেন না।’

অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে তারেক রহমান বলেন, ‘এ বছর আলু চাষিরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। প্রতি কেজি আলুর খরচ যেখানে ২৫-২৭ টাকা, সেখানে তারা অর্ধেক দামে বিক্রি করতে পারছে না। ফলে কৃষকরা প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কায় আছেন। গণভোটে এই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করার চেয়ে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এখন অনেক বেশি জরুরি।’

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যায় বাংলাদেশ শীর্ষে রয়েছে। অথচ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে শতাধিক আলোচনার পরও সড়ক নিরাপত্তা ইস্যুটি গুরুত্ব পায়নি।’

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া রহমানের সংস্কার শুরু করেছিল; কিন্তু তিনি সম্পন্ন করতে পারে নাই। তারেক রহমানকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনার আব্বা-আম্মা যেখানে শেষ করেছেন, আপনি সেখান থেকে শুরু করে সামনের দিকে এগিয়ে যান। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সাহায্য করব।’

আলোচনা সভায় সভাপত্বিতের বক্তব্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দেশের একটা সংকট তৈরি হয়েছে, সেটা অপ্রয়োজনীয় সংকট । এটার কোনো প্রয়োজন ছিল না । অতএব সংকটটা তৈরি করা হয়েছে আমি মনে করি- অত্যন্ত উদ্দেশ্যমূলকভাবে।

জাতীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই যে একটা সংকট তৈরি হয়েছে, অপ্রয়োজনীয় সংকট। এটার কোনো প্রয়োজন ছিল না। অতএব সংকটটা তৈরি করা হয়েছে আমি মনে করি- অত্যন্ত উদ্দেশ্যমূলকভাবে। অর্থাৎ বাংলাদেশের যে গণতান্ত্রিক উত্তরণ; সে পথকে বাধাগ্রস্ত করা বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে সংস্কারের জন্য যে নির্বাচন হওয়া দরকার সে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করা জনগণের ভবিষ্যৎকে একটা অনিশ্চিত অবস্থায় ফেলা।’

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। সঞ্চালনা করেন বিএনপি প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও সাত্তার পাটোয়ারী। এছাড়া বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, এবি পার্টি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণ-অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এবং লেবার পার্টি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান।


নবীন-প্রবীণে অনন্য উজ্জীবিত তৃণমূল

তারেক রহমানের প্রার্থী মনোনয়ন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে এবার প্রার্থী মনোনয়নে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। প্রার্থী তালিকায় নবীন ও প্রবীণের সমন্বয় যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাসকে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। ফলে এবারের প্রার্থী মনোনয়ন দলটির বর্তমান নেতৃত্বকে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও উজ্জীবিত হয়ে উঠছেন। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশনা এবং বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে পরিচালিত এই মনোনয়ন দলের অভ্যন্তরীণ কাঠামোতে বড় ধরনের সংস্কারের ইঙ্গিতও বহন করছে।
দলের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়াটি এবার কয়েকটি সুসংগঠিত স্তরে পরিচালিত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রার্থীদের তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই করা হয়েছে পাঁচ স্তরের সতর্ক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়ায় প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, সামাজিক অবস্থান, নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের কাছে তার জনপ্রিয়তা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামে তার সক্রিয় অংশগ্রহণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকরা প্রত্যেক প্রার্থীর বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সংগ্রহ করে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সামনে উপস্থাপন করেছেন। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার জন্য দলের পক্ষ থেকে পাঁচটি ভিন্ন ধরনের জরিপ চালানো হয়েছে। এই জরিপগুলো আন্তর্জাতিক ও বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়েছে এবং প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে ভোটারদের কাছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করা হয়েছে।
জরিপের তথ্য জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করা হয়, যেখানে প্রতিটি প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে জনমত অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছে।
জরিপের পাশাপাশি তারেক রহমান সরাসরি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা, নির্বাচনী এলাকার ভৌগোলিক ও সামাজিক পরিস্থিতি, ভোটারদের কাছে তার জনপ্রিয়তা, রাজনৈতিক অঙ্গনে তার ভূমিকা এবং দলের প্রতি তার ত্যাগের মূল্যায়ন করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার মূল লক্ষ্য ছিল প্রার্থী বাছাইকে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, বিজ্ঞানভিত্তিক এবং দলের দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখা।
এদিকে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রার্থী তালিকায় নবীন ও প্রবীণ নেতাদের সমন্বয় প্রমাণ করে যে, দল কেবল রাজনৈতিক দাপট বা প্রভাব নয়, বরং যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাসকেও সমানভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। তারা বলছেন, তিন-চারটি আসন ছাড়া বাকি তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ তেমন নেই বললেই চলে, যা দলের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নির্দেশ করে।
নেতাকর্মীরাও বেশ উজ্জীবিত হয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মাঠে প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা নির্বাচনী এলাকায় শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন এবং নিজেদের পক্ষে জনমত গঠনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দু-তিনটি ব্যতিক্রম ছাড়া প্রার্থী ঘোষণার পর বড় কোনো বিতর্ক বা অসন্তোষ দেখা যায়নি, যা তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি দলের আস্থার প্রতিফলন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা।
এবার ৫ স্তরের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত করা হয়েছে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭ সম্ভাব্য প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা। এই মনোনয়ন চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে তারেক রহমান ছিলেন অত্যন্ত কঠোর ভূমিকায়। ঘোষিত প্রার্থী তালিকা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে, এবারের মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে দলীয় নিয়ম, প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা, নির্বাচনী এলাকায় তার গ্রহণযোগ্যতা এবং রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামে তার আত্মত্যাগমূলক অবদানের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছে। অতীতে দলের অভ্যন্তরে বিভিন্ন মহলের তদবির বা পারিবারিক প্রভাবের যে অভিযোগ উঠত, তারেক রহমানের কঠোর অবস্থানের কারণে এবার তার কোনো অবকাশ রাখা হয়নি।
ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী ৬৩টি আসন এখনও ফাঁকা রাখা হয়েছে। এসব ফাঁকা আসন কৌশলগত কারণে এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মিত্র দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা এবং সামগ্রিক নির্বাচনী কৌশল অনুযায়ী পরবর্তীতে এসব আসনের প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে। এই ফাঁকা আসনগুলো ভবিষ্যৎ দর কষাকষির জন্য একটি বড় সুযোগ তৈরি করেছে।
ঢাকা সিটি করপোরেশনের ১৫টি আসনের মধ্যে নয়টিতে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। অবশিষ্ট ছয়টি আসনের মধ্যে ঢাকা-১৩ ও ঢাকা-১৭ উল্লেখযোগ্য। এই আসনগুলোতে এনডিএম (জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন), জাতীয় পার্টি, এলডিপি (লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি), গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য এবং গণঅধিকার পরিষদ প্রার্থী দিতে পারে বলেও জানা যায়।
আসন নিয়ে আলোচনা চলছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সঙ্গেও। দলটি অন্তত ২০টি আসনে বিএনপির সঙ্গে জোট বা সমঝোতা করতে আগ্রহী বলে রাজনৈতিক মহলে খবর পাওয়া গেছে। দলটি অনানুষ্ঠানিকভাবে এমনই আলোচনা চালাচ্ছে, পাশাপাশি ভবিষ্যতের রাজনৈতিক নিরাপত্তার বিষয়েও আগ্রহী। জানা গেছে, এনসিপির নেতারা চাইছেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে মন্ত্রিসভায় তাদের অন্তত তিনজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হোক।
এনসিপির সঙ্গে চলমান এই আলোচনাগুলো এখনো আনুষ্ঠানিক নয়। কার সঙ্গে জোট হবে বা কোন আসনে সমঝোতা হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এখন পর্যন্ত অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ে আলোচনা অনুযায়ী, ঢাকার চারটি আসনসহ মোট অন্তত ২০টি আসনে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা চায় এনসিপি। এই আসনগুলোর মধ্যে অনেক স্থানে বিএনপি ইতোমধ্যেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে, তবে প্রাথমিক সমঝোতার ভিত্তিতে প্রার্থী প্রত্যাহারের সম্ভাবনাও রয়েছে, যা চূড়ান্ত জোটের রূপরেখা নির্ধারণ করবে। বিএনপি সূত্র জানায়, আসন ভাগাভাগি ছাড়াও তারা চাইছে, এনসিপি জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কোনো নির্বাচনী সমঝোতায় না যায়, যা জোটের অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন নির্দেশ করে। যদিও এনসিপি ২০টি আসনের দাবি তুলেছে, বিএনপি এখন পর্যন্ত তাদের জন্য ৮টি আসন ছাড়ার কথা বলছে।
শরিকদের মধ্যে প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করা হলেও ঢাকা-১৩ আসনে এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ ইতোমধ্যেই বিএনপির ‘গ্রিন সিগনাল’ নিয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন, যা একটি অনানুষ্ঠানিক সমঝোতার ইঙ্গিত। অন্যদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে জোনায়েদ সাকির গণসংহতি আন্দোলনের হয়ে প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। বগুড়া-২, পিরোজপুর-১, লক্ষ্মীপুর-১, কিশোরগঞ্জ-৫ ও ঝালকাঠি-১ আসনেও মিত্র দলের প্রার্থীদের সম্ভাবনা রয়েছে।


ভোট হলে তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না

জামায়াতের উদ্দেশে:মির্জা ফখরুল
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

দেশের মানুষ পিআর পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত নয় দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এটা আমরা গ্রহণ করব না। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী বলছে, পিআর পদ্ধতিতেই ভোট করতে হবে। সেটা না করলে নাকি ভোট হবে না। ভাই, ভোটকে এত ভয় পাচ্ছ কেন? কারণ, তারা জানে, ভোট হলে তাদের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বড়গাঁও ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেলেন তিনি।
জামায়াতের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তারা ইসলামের অপব্যাখ্যা দিচ্ছে। আমরা মনে করি, আমার কর্মেই হবে আমার বেহেশত। আমার কর্মের মধ্য দিয়ে আমি বেহেশতে যাব। আমি যদি মানুষকে ভালোবাসি, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, রোজা রাখি, মিথ্যা কথা না বলি, সুদ না খাই, তাহলে বেহেশতে যাওয়ার একটি পথ তৈরি হবে। জামায়াতের টিকিট কাটলেই কি কেউ বেহেশতে যেতে পারবে? যারা এসব মুনাফেকি করে, তাদের কাছ থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে।
এনসিপির প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ঠাকুরগাঁওয়ের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ওরা তো ভোটই পাবে না। এই কারণে ওরাও জামায়াতের সঙ্গে সুর মিলায়, পিআর আগত দিবা হবে, সনদ বাস্তবায়ন করিবা হবে। এগুলো শুধুই বিভ্রান্ত করা। ভোট পেছানো আর আগের ব্যবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার চক্রান্ত। আমরা সংস্কারের যেগুলোতে একমত হয়েছি, বিএনপি শুধু সেগুলোর পক্ষে থাকবে। অন্য কিছুর দায় বিএনপি নেবে না। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শারীরিক শিক্ষা ও সংগীত শিক্ষক প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, শিশুদের সুস্থ করে গড়ে তোলার জন্য শারীরিক শিক্ষা খুবই দরকার। সেই সঙ্গে শিশুরা গান শিখলে অসুবিধা কোথায়? অসুবিধা তো নাই, বরং তারা ভালো কিছু শিখতে পারছে।
নির্বাচন পিছিয়ে গেলে দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশের সামনে সব সময় সুযোগ আসে না। এবার একটি সুযোগ এসেছে। আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সঠিক একটি সরকার গঠন করতে হবে।
আওয়ামী লীগের লকডাউন কর্মসূচি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা ভারতের দিল্লিতে গিয়ে হরতাল ঘোষণা করেছে, দেখলাম ঢাকাতে কিছু গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। এখন যারা গাড়ি পোড়াবে, দেশের সম্পদ নষ্ট করবে, তাকে কি আমরা এ দেশে আসতে দেব? সাহস থাকলে আসো। এ দেশের জনগণের সামনে এসে রাজনীতি করো। দিল্লিতে বসে দেশের সর্বনাশ আর কোরো না।
মতবিনিময় সভায় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন, বড়গাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আহম্মদ আলীসহ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বক্তব্য রাখেন।


banner close