দ্রব্যমূল্য নিয়ে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে মজুতদার ও সিন্ডিকেটদের বিএনপি পৃষ্ঠপোষকতা ও মদদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি সিন্ডিকেট লালন পালন করছে, মজুদদারদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে - একথা বললে কি ভুল হবে? যারা করছে তারা বিএনপির পুরনো সিন্ডিকেট।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি সরকার ছিল ব্যবসায়ী সরকার। আওয়ামী লীগ ব্যবসা করতে আসেনি। এখানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার হাল ছেড়ে দিয়েছে -এ কথা মনে করার কোন কারণ নেই। যে অশুভ চক্র দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে জন অসন্তোষের কারণ সৃষ্টি করছে, তাদের কোন অবস্থাতেই ছাড় দেয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী নিজেই জোরালোভাবে সেটি বলেছেন।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিদ্যুতে যথেষ্ট ভর্তুকি দিতে হচ্ছে সরকারকে। এই ভর্তুকি ধীরে ধীরে কমাতে চাই। সে কারণে সমন্বয় করাটা জরুরী হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ সুবিধা যদি বজায় রাখতে চাই তাহলে সমন্বয়টা আমাদের করতে হবে।’
ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপি দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছিল জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে দিনে ১৮ ঘন্টা লোডশেডি হয়েছে এবং সেখানে বিদ্যুতের দাম পাঁচ বছরে তারা ৯ বার বাড়িয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছে। শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৯ হাজার সাতশ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে।’
‘বিএনপি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে এবং এই আন্দোলনে সরকারের পতন অবশ্যই হবে’ বিএনপি নেতাদের এমন মন্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এখন প্রশ্ন হচ্ছে দেশে একটা নির্বাচন হয়ে গেল। তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসের মহড়া দিয়েছে। আগুন সন্ত্রাস করেছে। আন্দোলনের নামে বিএনপি কত ভয়ংকর ভূমিকায় যেতে পারে সেটা তারা করে দেখিয়েছে বারে বারে। তারা জনগণের সম্পৃক্ত ছিল না বলে অতীতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ভুল ও নেতিবাচক রাজনীতি করে যাচ্ছে বিএনপি। তারা একসময় নিশ্চয়ই স্বীকার করবে আন্দোলনে তাদের ভুল আছে। নির্বাচনে না আসাটা বিএনপির সবচেয়ে বড় ভুল। এখন তারা উপলব্ধি করবে।’
উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি দলগতভাবে অংশ না নিলেও তৃণমূলে নেতারা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় নির্বাচন করবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে দলটির মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব চলছে। আমরা দলীয় প্রতীক দিয়ে নির্বাচন করছি না। এমন অবস্থায় স্বতন্ত্র পরিচয়ে বিএনপির অনেকে নির্বাচন করবে। দলীয়ভাবে যাই করুক যারা তৃণমূলে আছেন তাদের অস্তিত্বের বিষয় আছে। তৃণমূলে অস্তিত্ব নিয়ে টিকে থাকার প্রশ্ন আছে। আমার ধারণা বিএনপির অনেকেই অংশ নিবে। দলগতভাবে তারা যাই বলুক না কেন।’
বর্তমানে অর্থনীতির সংকট আছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এজন্য আমরা দায়ী নই। বিশ্বে যুদ্ধ বিগ্রহ যেভাবে প্রসারিত হচ্ছে তাতে অর্থনীতির উপর প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে হচ্ছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। কিন্তু দ্রব্যমূল্য যাতে মানুষের ক্রয়-ক্ষমতার মধ্যে থাকে সে ব্যাপারে সরকার যথেষ্ট তৎপরতায় কাজ করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন, তার আলোকে সবাই কাজ করে যাচ্ছে।’
বিদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক এক মন্ত্রীর বিপুল অর্থ সম্পদ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি করে কেউ ছাড় পাবে না। তিনি মন্ত্রী হন আর যেই হোন।’
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও মির্জা আজম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে সংস্কার প্রক্রিয়া বিলম্ব না করে দ্রুত সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক।
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে, যা সংস্কার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করছে। আমি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এ বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি আরও বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করতে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে জরুরি ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকার সেনবাগ ফোরাম এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। এসময় ভারতে পালিয়ে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান ফারুক।
ফারুক দাবি করেন, বাংলাদেশে ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমের গুম এবং বহু বিরোধী নেতাকর্মীকে হত্যার সঙ্গে জড়িত শেখ হাসিনাকে বিশেষ নিরাপত্তার মধ্যে দিল্লির একটি পার্কে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে।
বিএনপি নেতা বলেন, একসময় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের কাছে গর্ব করা দেশটির রাজধানী দিল্লির একটি পার্কে হেঁটে বেড়াচ্ছেন শেখ হাসিনার মতো একজন স্বৈরশাসক। অথচ ভারত গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে গর্ব করে।
তিনি বলেন, 'আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি জানাচ্ছি, সেই শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনুন, যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে।’
ফারুক বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া সিন্ডিকেটের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেত্মারা জড়িত।
তিনি বলেন, ‘আলু সিন্ডিকেট, পেঁয়াজ সিন্ডিকেট ও চিনি সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতরা আবারও সতর্ক হয়ে ষড়যন্ত্র করছে।’
আওয়ামী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে বলেও জানান বিএনপি নেতা। ‘আমরা যত বেশি অপেক্ষা করব, তত বেশি তারা নিজেদের জাহির করবে... তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে এবং তাদের থাবা ভাঙতে হবে।’
২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের সময় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা চাঁদাবাজির চারটি মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ আদেশ দেন। আদালতে তারেক রহমানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী।
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন জানান, ২০০৩ ও ২০০৪ সালে চাঁদাবাজি করেছেন- এমন অভিযোগ এনে দুই জন ব্যবসায়ী ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের সময় কাফরুল থানায় চারটি চাঁদাবাজির মামলা করেন। এসব মামলা জরুরি ক্ষমতা বিধিমালার আওতায় আনার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়। ২০০৮ সালেই মামলাগুলোর কার্যকারিতা স্থগিত করে এসব মামলার কার্যক্রম কেন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করে হাইকোর্ট মামলাগুলো বাতিল করেছেন।
মাহবুব উদ্দিন খোকন আরও বলেন, এ মামলায় খায়রুল কবির খোকনও আসামি ছিলেন। এখন মামলাগুলো আর কারও বিরুদ্ধে চলবে না।
জানা গেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। এরপর তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, আয়কর ফাঁকি, অবৈধ সম্পদ অর্জন, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৫টি মামলা করা হয়। পরে ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্ত হয়েই উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান তিনি। বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন তিনি।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসররা তাদের কালো টাকা ও বেআইনি অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান ও মহড়া দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
গতকাল সোমবার ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী শহীদ শাইখ আসহাবুল ইয়ামিনের কবর জিয়ারত শেষে তিনি এসব কথা বলেন। পরে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, মানুষ দু-মুঠো যাতে খেতে পারে এজন্য বাজার সিন্ডিকেট, মার্কেট সিন্ডিকেট যারা এতদিন ধরে করে রেখেছে, তাদের গ্রেপ্তার করুন। আমরা অল্প কিছু ড্রাইভ দেখতে পাচ্ছি, ব্যাপক ড্রাইভ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। গণতন্ত্র তো হলো শান্তির পথে মানুষ যাতে বসবাস করতে পারে এবং খোলা গলায় যাতে মানুষ সমালোচনা করতে পারে, কথা বলতে পারে এটাই তো গণতন্ত্র। আইনের শাসন থাকবে, কে কোন দল করে সেটা বড় কথা নয়। যে অন্যায় করবে তাকেই পুলিশ ধরবে- এটাই গণতন্ত্র।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র মানে শুধু নির্বাচন না, নির্বাচন গণতন্ত্রের একটি উপাদান। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন একটি উপাদান। সেখানেও একটি জটিলতা দেখছি। আনুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে আসছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশ তৈরি করুন। যাতে মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তার পছন্দমতো ব্যক্তিকে ভোট দিতে পারে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গতকাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের লোকজন গোলাগুলি করেছে। আওয়ামী লীগের লোকজন জন-অরণ্যের মধ্যে লুকিয়ে থেকে প্রয়োজন মতো বের হয়ে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করবে। যে কারণে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিএনপি বারবার চাপ দিয়ে আসছে। যদি ফ্যাসিবাদের পুনর্জীবন ঘটে, তাহলে এর দায় তাদের নিতে হবে।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের এত দিন পার হলেও বেআইনি কোনো অস্ত্র উদ্ধার করতে পারছেন না।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির ডাকা আজ শনিবারের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কথা জানায় দলটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ২৯ ধারার ক্ষমতাবলে (সভাস্থল) পাইওনিয়ার রোডের ৬৬ নম্বর ভবন, কাকরাইলসহ আশপাশের এলাকায় যেকোনো সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ প্রদর্শন নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
জাতীয় পার্টি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি সাময়িক স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তী কর্মসূচি জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এর আগে শনিবার দুপুর ২টায় রাজধানীর কাকরাইলে মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা দেয় দলটি। চেয়ারম্যান ও মহাসচিবসহ দলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ছাড়াও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে এ সমাবেশ ডেকেছিল জাতীয় পার্টি। একইদিন জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে গণপ্রতিরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা। এ অবস্থায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে রাজধানীর কাকরাইল ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে সম্প্রতি উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নম্বর ১১১-৭৬)–এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে আগামীকাল শনিবার পাইওনিয়ার রোডের ৬৬ নম্বর ভবন, পাইওনিয়ার রোড, কাকরাইলসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় যেকোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হলো।
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমাদের দেশের আকাশে সাড়ে ১৫ বছর কালো মেঘের ছায়া ছিল। মেঘ কেটে যায়নি। আমরা সবাই সচেতন নাগরিক হিসেবে এটা টের পাচ্ছি। এই সময়ে জাতীয় ঐক্যের বড়ই প্রয়োজন। এই সময়টা বিভক্তির নয়। এই সময়টা ব্যক্তি স্বার্থ দেখার নয়। এই সময়টা দলীয় স্বার্থও দেখার নয়। এই কথাটা আমরা যেন বুঝি, আমরা যেন মেনে চলি।’
শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নবনির্বাচিত আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি গণ-আন্দোলনে আওয়ামী লীগ বিদায় নিলেও ‘জুলুম’ শেষ হয়নি বলেও মনে করেন। তাই এমন সময়ে জাতীয় স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াত আমির।
জামায়াত আমির বলেন, ‘আমাদের জাতি বড়ই মজলুম। সাড়ে ১৫ বছরের জুলুমের সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি। এখনো তার অনেক রেশ রয়ে গেছে। আবার নতুন-নতুন অনেক সমস্যাও দেখা দিচ্ছে।’
ঐক্যের প্রসঙ্গে নিজেদের দৃঢ় প্রত্যয়ের ঘোষণা দিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে কথা দিচ্ছি, এই আওয়াজে আমরা সবার আগে দৌড়ে যাব ইনশা আল্লাহ। দুনিয়ার বিভিন্ন জায়গায় জাতিসত্তার অনেক উত্থান-পতন হয়েছে। আমাদের এই জাতি স্বাধীনতার ৫৩ বছরে অনেক উত্থান-পতন দেখেছে।’
জুলাই বিপ্লবের’ অর্জন জামায়াতের নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অকপটে স্বীকার করি, এটি আমাদের অর্জন নয়। আমাদের চেষ্টার ফসল নয়। বরং এটি আল্লাহতায়ালার একান্ত মেহেরবানি।’
অন্যান্য ইস্যু থেকে সরে এসে যত দ্রুত সম্ভব অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের দিকে নজর দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
'জাতি হিসেবে টিকে থাকতে হলে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই' এ কথা উল্লেখ করে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করা। কারণ, আমরা সবাই রাজনৈতিক কর্মী। আমরা রাজনীতি করি দেশ ও দেশের মানুষের জন্য। তাই, অল্প সময়ের মধ্যে আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন-এটা আমাদের প্রত্যাশা।’
বুধবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সার্চ কমিটির ঘোষণার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন,‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল সার্চ কমিটি ঘোষণার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ব্যবস্থা করে দলগুলোর পরামর্শ নেওয়া হবে। কিন্তু তা করা হয়নি। তবে এটাকে বড় ধরনের সমস্যা মনে করছি না। আমরা মনে করি- দ্রুত ইলেকশন কমিশন হোক এবং ইলেকশন কমিশন অতি দ্রুততার সঙ্গে তাদের কাজটা করবে।'
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকারের ভিন্ন কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে দেশের মানুষ ভালবাসে। এজন্য তাঁর অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত, যাতে মানুষের কাছে তাঁর এ অবস্থান নষ্ট না হয়। আমরা প্রত্যাশা করবো, সংস্কার কমিটির সদস্যরা দ্রুতই সকল রিপোর্ট জনগণের সামনে উন্মুক্ত করবেন। তবে, এমন কিছু করা যাবে না, যা দেশ ও সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়।’
রাষ্ট্র মেরামত কিংবা পরিবর্তন অথবা সংস্কার - যেটাই বলা হোক না কেন তা অবশ্যই করতে হবে যুগোপযোগী- এ কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা কঠিন এক সময় পার করছি। এই সময়ে আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনো কাজ করলে রাষ্ট্র বিপদে পড়ে যেতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারে পলিটিক্যাল কোনো লোক নেই। আর রাজনীতিবিদ ছাড়া কোনো সংস্কারই সফল হতে পারে না। তাছাড়া, বাংলাদেশের রাজনীতিও সহজ নয়। তবে, আমরা ধৈর্য্যের সঙ্গে কাজ করছি।
বিগত আওয়ামী লীগের বিগত ১৫ বছরে ১ লাখ ২৫ হাজার মামলায় সারা দেশের ৬০ লাখ মানুষকে আসামি করার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখানে এমন লোক খুব আছে, যারা কারাগারে যায়নি, এমন লোক কম আছে, যারা মামলা খায়নি। ফাঁসি থেকে শুরু করে হত্যা, গুম, খুন—সবকিছু এই দেশে আওয়ামী লীগ করেছে। সেখানে রাতারাতি আমরা সব পরিবর্তন করে ফেলতে পারব না...একটা সময় দিতে হবে, ধৈর্য ধরতে হবে,...টলারেন্স। আমরা আশা করব, অতি দ্রুত এবং তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) অবশ্যই চেষ্টা করছে।’
এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টি- ‘জাগপা’র চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘আমরা বলতাম হাসিনাবিহীন বাংলাদেশ চাই- আজকে হাসিনাবিহীন বাংলাদেশ পেয়েছি, এখন আওয়ামীবিহীন বাংলাদেশ করতে হবে।
সোমবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আওয়ামী লীগ, ভদ্রলোক আর আওয়ামী লীগের গণতন্ত্র পাশাপাশি চলতে পারে না।’
তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগ চলে গেছে, আমরা ভেবে ভেবে খুশি হই। কিন্তু খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। এদের চর-অনুচর এখনো বাংলাদেশের রাজনীতি, সংস্কৃতি, সচিবালয়, পুলিশ, মিলিটারি- যেখানে বলেন, এদের চর রয়ে গেছে। এদের রেখে কোনো পরিস্থিতিতেই আপনি পরিপূর্ণ গণতন্ত্র বাংলাদেশে কায়েম করতে পারবেন না।’
আব্বাস বলেন, 'জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি ও অন্যান্য দল বিভিন্ন কথা না বলে, যদি একটি কথায় আসতে পারি, যদি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারি, তাহলে দেশটা পুনর্গঠিত হবে। না হলে এই দেশটা নিয়ে সারা জীবন আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত কিন্তু খেলতেই থাকবে। এটা কখনোই হতে দেওয়া যাবে না।'
জামায়াত নেতাকর্মীদের বিএনপি চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়ার সালাম ও শুভেচ্ছা জানান মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, গত রাতে তিনি দলের চেয়ারপারসনকে জামায়াতের আলোচনা সভায় অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, 'বিগত দিনে কোনো এক সময় হয়তো আমরা একসঙ্গে হতে পারিনি। কোনো এক সময় হয়তো একসঙ্গে হয়ে আওয়ামী লীগকে তাড়িয়েছিলাম। আমরা আগামী দিনে সব সময়ের জন্য, দেখি চেষ্টা করে পারি কি না, একসঙ্গে হয়ে এই দেশটাকে আবারও সুন্দর করে পুনর্গঠিত করতে পারি কি না।'
সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, নানা ধরনের সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির জন্য চেষ্টা চলছে, পাঁয়তারা চলছে।
বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে রোববার এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে ৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত রাজধানীতে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে শাহাদাতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সংবিধানের সংকট যদি হয়, রাষ্ট্রীয় সংকট যদি হয়, রাজনৈতিক সংকট যদি হয়, সেই সংকটের পিছে কী শক্তি আছে সেইটা আমাদের আগেই অ্যানালাইসিস করতে হবে। বিপ্লবের পরে বিপ্লবের ফসল ছিনতাই হয়ে যায় নাকি সেটা চিন্তা করতে হবে। সুতরাং রাষ্ট্রীয় সংকট যাতে সৃষ্টি না হয়, সাংবিধানিক সংকট যাতে সৃষ্টি না হয়, সেই সংকট সামনে রেখে পতিত ফ্যাসিবাদ যাতে সুযোগ নিতে না পারে সেই বিষয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে। আমাদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নেই। ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ জনতার দাবি। সিদ্ধান্ত সারা দেশে প্রশংসিত হয়েছে, সবাই গ্রহণ করেছে।’ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ করা জনতার দাবি উল্লেখ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘গুলি করে ছাত্র মারার পর আওয়ামী লীগ আবার এই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পাবে কিনা তা জনতার আদালতে সিদ্ধান্ত হবে। ট্রাইবুনালে একটা সংশোধনী আনার কথা শুনছি। সংগঠন হিসেবে, রাজনৈতিক দল হিসাবে যদি গণহত্যার সঙ্গে জড়িত হয় তাহলে রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসাবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও দলের বিচার হবে। সেই সংশোধনী যদি আইনে আনে এবং ট্রাইবুনালে যদি বিচার হয় সেই বিচারের ফলাফল কী হয় তখন দেখা যাবে। আমরা এখন কোনো ফয়সালা দিতে চাই না। গণহত্যাকারী কোন দল বাংলাদেশের রাজনীতি করতে পারবে কি না তা আদালত ও দেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে।’
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রশাসনিক আদেশে বা আমি-আপনি চাইলে কেউ নিষিদ্ধ হোক সেই দায়িত্ব আমরা নিতে চাই না। দেশের জনগণ যদি চায় তাহলে জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল হিসেবে সিদ্ধান্ত নেবে।’ এদিকে গতকাল সকালে সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ এলডিপির প্রতিনিধি সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘এখন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ঘোলাটে করার জন্য একটা প্রগতিশীল চক্র চেষ্টা করে যাচ্ছে। তার ইঙ্গিত বহন করে বঙ্গভবনের সামনে হওয়া মিছিল। নতুন করে আরেকটা রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করার চক্রান্ত আমরা দেখতে পাচ্ছি। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অস্থিতিশীল করার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ১২ দলীয় জোটসহ সবাইকে প্রস্তুতি নিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের ওপর অনেক নির্যাতন ও নিপীড়ন করেছে। চৌধুরী আলম-ইলিয়াস আলীসহ হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গুম-খুন করেছে। নির্যাতনের জন্য আয়নাঘর তৈরি করেছে। হারুন- বিপ্লবদের মতো লোক তৈরি করে বহু মায়ের বুক খালি করেছে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করেছে শেখ হাসিনা। ষড়যন্ত্র করে সংবিধান পরিবর্তন যদি না হতো, তাহলে সংসদীয় রাজনীতির মাধ্যমে এই দেশ পরিচালিত হতো। কিন্তু সেই সংসদীয় রাজনীতিকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আড়াই মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। এখনো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাজনৈতিক মামলা প্রতাহ্যার হলো না। মন্ত্রণালয়ের যারা দায়িত্বে আছেন তারা এখনো শ্বেতপত্র প্রকাশ করেনি। কোন মন্ত্রণালয় কত হাজার কোটি টাকা লুট করেছে, তাও প্রকাশ করা হচ্ছে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আপনার প্রতি আমাদের বিশ্বাস আছে, এটা টিকিয়ে রাখতে হলে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশে নির্বাচনের তারিখ অবিলম্বে আপনি ঘোষণা করেন। তাহলে আমরা বুঝতে পারব, দেশ কোনো দিকে যাচ্ছে। যারা রাজনীতি করে তারাই দেশ পরিচালনা করবে। আমরা আশা করব, অবিলম্বে শেখ হাসিনার জঞ্জাল মুক্ত করবেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। সময় এসেছে জনগণের ভোটের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার। বিএনপি আগেই ৩১ দফা দিয়েছে। এখান থেকে সংযোজন বিয়োজন করে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নির্বাচনী সংস্কার সম্ভব।
শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির ষষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
যে জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে তা ধরে রাখতে সব রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পরে বাংলাদেশের মানুষের মনোজগতের পরিবর্তন এসেছে। মানুষের আকাঙ্ক্ষা জেগেছে। মানুষের নতুন ভাবনা জেগেছে। আগামীর বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের এই জাতীয় ঐক্য অটুট রাখতে হবে। এই জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে আমাদের গন্তব্য সুন্দর করতে হবে। সেই গন্তব্যস্থলটা কোথায়? সেই গন্তব্যস্থল হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা তাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া।
আমীর খসরু বলেন, গত ১৫-১৬ বছর ধরে দেশে জনগণের কোনো ক্ষমতা ছিল না। আওয়ামী সরকার মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে তাদের বঞ্চিত করেছে। এখন সময় এসেছে জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনের নজরদারিতে থাকতাম। জেলে যাওয়ার আশঙ্কা সব সময় থাকত। এখন একটু রাতে ঘুমাতে পারছি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক আব্দুল হালিম, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
শহীদ নূর হোসেন দিবসকে ঘিরে রাজধানীর জিরো পয়েন্টে (গুলিস্তান) রোববার সারাদিন ছিল টান টান উত্তেজনা। দিনভর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ ছাত্র-জনতার ছিল স্লোগানে মুখরিত। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সড়কে নামার সুযোগই দেয়নি জুলাই-আগস্টে গণআন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।
শনিবার আওয়ামী লীগ তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শহীদ নূর হোসেন দিবস পালনের ঘোষণা দিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের জিরো পয়েন্টে আসার আহ্বান জানায়। এরপর তাদের প্রতিহত করতে পাল্টা সমাবেশ ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বেলা ৩টায় কর্মসূচি পালনের ঘোষণা থাকলেও জিরো পয়েন্টের নূর হোসেন চত্বরে আওয়ামী লীগের কাউকেই দেখা যায়নি। বরং তাদের বিক্ষোভ মিছিল প্রতিহত করতে ওই এলাকায় অবস্থান নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। আর গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে অবস্থান নেন বিএনপি-যুবদল-মহিলা দলসহ দলটির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকেই জিরো পয়েন্ট মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেন। তারা আওয়ামী লীগবিরোধী বিভিন্ন মিছিল করেন। গণজমায়াতের জন্য জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের সামনে প্রধান সড়কের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে গণহত্যার জন্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জানান তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শনিবার রাত থেকেই অবস্থান নেন বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। রোববার সকালে সেখানে বিএনপি, যুবদল ও মহিলা দলের বিভিন্ন শাখা ও ইউনিটের নেতা-কর্মীদের মিছিল ও অবস্থান করতে দেখা যায়। তাদেরও আওয়ামী লীগবিরোধী স্লোগান দিতে শোনা যায়।
অন্যদিকে শনিবার রাত ও রোববার সকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে আওয়ামী লীগের সমর্থক সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করে মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
এদিকে শহীদ নূর হোসেন দিবসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সারা দেশে ১৯১ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করেছে কর্তৃপক্ষ। বিজিবির পাশাপাশি পুলিশ, র্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যদের সারা দেশে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়। রাজধানীতে সচিবালয়ের আশপাশে এবং বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অফিসের আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ-যুবলীগের প্রকাশ্যে আসার অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
রোববার সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘হিন্দুস্তান বসে হুংকার দেবেন আর গুলিস্তানে সংঘর্ষ করবেন। সেই সুযোগ ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা আপনাদের দেবে না।’
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ প্রাসঙ্গিক কি না; সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গেছে ৫ আগস্ট। ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে গণহত্যার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের যত দিন পর্যন্ত না বিচার নিশ্চিত হয়, যত দিন পর্যন্ত ছাত্র-জনতার সিদ্ধান্ত না হয়, তত দিন পর্যন্ত তাদের প্রকাশ্যে আসার কোনো ধরনের অধিকার নেই।’
এদিকে, জিরো পয়েন্টে উপস্থিত হয়ে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, আওয়ামী লীগ সরাসরি গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। ছাত্রলীগের আগে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা দরকার ছিল। এ দলটির প্রতি ন্যূনতম সহানুভূতি দেখানো যাবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলব, কেন খুনিদের গ্রেপ্তার করছেন না? আপনারা কি আওয়ামী লীগকে ধরতে ভয় পাচ্ছেন? এই দেশের বিপ্লবী ছাত্র-জনতাকে বলব পুলিশ আওয়ামী খুনিদের আটক না করলে, আপনারা এই খুনিদের ধরে পুলিশে দেন।
রাশেদ খান বলেন, আওয়ামী লীগ আজ গর্তের মধ্যে লুকিয়ে আছে। কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এত দিন শেখ মুজিবের ছবি নিয়ে মিছিল করেছে, আর এখন ট্রাম্পের ছবি নিয়ে মিছিল করার পাঁয়তারা করছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হাতে কি আওয়ামী লীগের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে? আওয়ামী লীগের কর্মীদের বলতে চাই- আপনারা শেখ হাসিনার ফাঁদে পা দেবেন না।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অল্প সময়ের জন্য ক্ষমতায় আছে। তারা দেশ পরিচালনা করতে যেখানেই যাচ্ছে, সেখানেই ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি কীভাবে ঘটানো যায়, এর জন্য একটি গোষ্ঠী লেগে আছে। এরা তারাই যারা বিগত দিনে অত্যাচার-নির্যাতন, খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল, ডাকাতি-সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ছিল।
রোববার দুপুরে জুয়েলার্স ব্যবসায়ী হিরা লাল দেবনাথের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। সেই চক্রই বিভিন্নভাবে আগেও যেমন হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করেছিল, এখনো সুযোগ বুঝে আঘাত করে আসছে। ওই আঘাত করে এ সরকারকে দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগ এনে দেওয়ার চেষ্টা করছে। সব ধর্মের মানুষ ও রাজনৈতিক দল সবাই মিলে আমরা একসঙ্গে মিলেমিশে আছি এবং থাকব।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জেলা শাখার ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন শেষে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেয় বাজুস নেতারা। শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) রাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের হামছাদী গ্রামে কাজির দিঘীর পাড় বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে মারা যায় হিরা।
শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, অতীতে কারা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, জমি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করেছে। তা বুঝতে কারও বাকি নেই। তারা কিন্তু সবাই পালিয়ে যায়নি, দেশে আছে। তারা ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়কে আঘাত করছে। আর পার্শ্ববর্তী দেশকে বোঝাতে চায় যে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় নিরাপদ নয়। কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনই সব জায়গায় বক্তব্য দিচ্ছে ‘আমরা অতীতে যেভাবে অত্যাচারিত হয়েছি, এখন সেভাবে অত্যাচারিত হচ্ছি না’। আমাদের দায়িত্ব হলো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আরও বেশি সজাগ থাকা। কারণ দেশটা আমাদের সবার। দেশটাকে আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। জাতিকে রক্ষা করতে হবে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের সবাইকে একত্রিত করেছেন এবং চেষ্টা করেছেন। সব রাজনৈতিকদলসহ আমরা সবাই মিলে ছাত্র-জনতার আন্দোলন তৈরি করেছি। এ আন্দোলনের ধারাবাহিকতা আমাদের রক্ষা করতে হবে। আন্দোলনের সুফল-ফসল আমাদের ঘরে নিয়ে আসতে হবে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ফারুক হোসাইন নুরনবী, লক্ষ্মীপুর বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্যপরিষদের সভাপতি শংকর মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিলন মণ্ডল, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি স্বপন দেবনাথ, সাধারণ সম্পাদক শিমুল সাহা, বাজুস জেলা শাখার সভাপতি সমীর কর্মকার, সাধারণ সম্পাদক পরেশ কর্মকার ও নিহত হিরার ছেলে প্রিতম দেবনাথ প্রমুখ।
দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র রুখতে হলে নিরাপদ ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, জবাবদিহি নিশ্চিত করতে না পারলে ভালো কিছু সম্ভব না। ভোট যাতে হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। মানুষ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে কৃষক দলের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
১০ নভেম্বর থেকে আগামী তিনমাস প্রতিটি ইউনিয়নে কৃষক সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, কৃষক দলকে কৃষকনির্ভর করে গড়ে তুলতে হবে। কৃষক সমাবেশে কৃষকদের সমস্যা শুনতে হবে। তারপর সেই সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবে।
তারেক রহমান বলেন, ক্ষমতায় গেলে শহীদ জিয়াউর রহমানের খাল খনন কর্মসূচি শুরু করা হবে। আমাদের দেশে অনেক জায়গা আছে যেখানে আমাদের দেশের কৃষক প্রয়োজনীয় পানি পায় না। ফসল উৎপাদনে বাধাগ্রস্ত হয়। খাল খননের মাধ্যমে শহীদ জিয়া পানির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। যেখানে একটি ফসল হতো সেখানে পানির কারণে দুটি হয়েছিল, দুটি ফসলের জায়গায় তিনটি ফসল হয়েছিল।
বাংলাদেশের নারীদের বড় একটা অংশ কৃষির সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাই কৃষির প্রতি নজর দিতে হবে। আমরা প্রতিবার চেষ্টা করেছি কৃষি সমস্যার প্রতি নজর দিতে। খালেদা জিয়ার সময় পাঁচ হাজার পর্যন্ত কৃষি ঋণ মওকুফ করে দেওয়া হয়েছিল। ফসলের মৌসুমে বিদ্যুৎ বিল সরকার বহন করত। যার মধ্য দিয়ে কৃষকদের কিছু সমস্যার সমাধান হয়েছে।
তারেক রহমান বলেন, বিভিন্ন সময় ফসল নষ্ট হয় সে জন্য আমরা কৃষি বিমার কথা চিন্তা করেছি। অনেক সময় মহাজন থেকে ঋণ নেয়, যা কৃষকের ওপর চাপ সৃষ্টি করে, সেখান থেকে আমরা যদি এটা করতে পারি তাহলে এই সমস্যাটা আর হবে না।
২০ কোটি মানুষের জন্য খাদ্য উৎপাদন করতে হলে কৃষির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এত মানুষের জন্য খাদ্য আমদানি সম্ভব না। তাই যেগুলো মৌলিক খাদ্য, সেগুলো দেশেই উৎপাদন করতে হবে। তাই কীভাবে কৃষি জমি বাড়ানো যায় সেটা আমাদের চিন্তা করতে হবে। কিছু পদক্ষেপ আছে যেগুলো করলে কৃষি জমি বাড়ানো যায়, এটা একমাত্র সম্ভব ক্ষমতায় গেলে।
ইসকনকে (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। শুক্রবার চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদ চত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।
হাজারী গলিতে ওসমান নামের এক ব্যবসায়ীর দোকানে হামলা এবং যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা ও এসিড নিক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান হেফাজত নেতারা। সমাবেশে তারা বলেন, ইসকন সনাতনীদের কোনো ধর্মীয় সংগঠন নয়। ইসকন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরই মধ্যে নিষিদ্ধ হয়েছে। তাই বাংলাদেশেও ইসকন নিষিদ্ধ করা হোক। ইসকনকে নিষিদ্ধ না করা হলে হেফাজতের পক্ষ থেকে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
অনুষ্ঠানে তারা আরোও বলেন, আমাদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, সেটাকে ধরে রাখা। কোনো কারণে, কোনো উসকানিতে তা যেন বিনষ্ট না হয়। এখানে ষড়যন্ত্র হচ্ছে ভেতর থেকে, বাইর থেকে।
হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি মাওলানা তাজুল ইসলাম সাহেবের সভাপতিত্বে ও মহানগর হেফাজত নেতা মাওলানা ইকবাল খলিলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় সহকারী প্রচার সম্পাদক মাওলানা ফয়সাল তাজ, কেন্দ্রীয় সহকারী প্রচার সম্পাদক মাওলানা সায়েম উল্লাহ, কেন্দ্রীয় ছাত্র ও যুববিষয়ক সম্পাদক মাওলানা কামরুল ইসলাম কাসেমী প্রমুখ।