শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫
৭ চৈত্র ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যাটারিচালিত তিন চাকার গাড়ি চলবে: কাদের

বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার ওলামা লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২০ মে, ২০২৪ ১৪:৪১

ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত তিন চাকার গাড়ি চলাচলের অনুমতি দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে দেশের ২২টি মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ সোমবার দুপুরে গুলিস্তান বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ওলামা লীগের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্মূল্যের বাজারে মেহেনতি মানুষের দুঃখ দুর্দশা বিবেচনা করে বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্রব্যমূল্যের কথা চিন্তা করে সিটি এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ওলামা লীগে চাঁদাবাজের স্থান নেই। ধর্মের নামে ধর্ম ব্যবসা চলবে না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করতে হলে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতার আদর্শ মেনে চলতে হবে। শেখ হাসিনার সৎ রাজনীতিকে অনুসরণ করতে হবে। ফ্রি স্টাইলে যা খুশি বলিবেন, এই রকম লোকের আমাদের দরকার নেই।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা আমাদের পবিত্র ধর্ম ইসলামের জন্য ও এর বিকাশে যে অবদান রেখেছেন, যে সব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন বাংলাদেশে অন্য কোন শাসক কিছুই করেননি সে তুলনায়।’


নির্বাচন ইস্যুতে কয়েকজন উপদেষ্টা ও দল ভিন্ন সুরে কথা বলছে

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন ইস্যুতে কোনো কোনো উপদেষ্টা এবং দুই-একটি রাজনৈতিক দল ভিন্ন সুরে কথা বলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, বন্দোবস্তের নামে ভিন্ন সুরে কথা বললে জনগণের মনে প্রশ্ন দেখা দেবে, সুযোগ নেবে পরাজিত শক্তি। চরমপন্থা ও উগ্র ধর্মীয় মতবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে গণতন্ত্রের কবর রচনা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বুধবার রাজধানীর ইস্কাটনে লেডিস ক্লাবে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংস্কার আর নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনীতিতে যখন নানা মেরুকরণ, এমনই এক সময়ে এক ছাদের নিচে এলো দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল।

রাজনীতিবিদদের সম্মানে বিএনপির এই ইফতার মাহফিলে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া প্রায় সব দল মিলে এক মিলনমেলার সৃষ্টি হয় রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে।

অনুষ্ঠানের মধ্যমণি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, ফ্যাসিবাদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। তাই ঐক্য অটুট রাখতে হবে। সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর দরকার নেই উল্লেখ করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, দেশের সংকট যেন দীর্ঘায়িত না হয়, সেটি সর্বোচ্চ বিবেচনায় নিতে হবে।

সংস্কারের জন্য ৩১ দফাই চূড়ান্ত নয় জানিয়ে তারেক বলেন, এখানে সংযোজন-বিয়োজন হতে পারে। সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না। এ সময় নির্বাচন না দেওয়ার কারণেই ফ্যাসিস্টদের চরমভাবে বিদায় হয়েছে বলেও স্মরণ করিয়ে দেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে দলের পক্ষ থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, বিভিন্ন খাতের সংস্কার প্রস্তাবগুলো ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে গেছে। আমি অনুরোধ করব, এগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে মতামত দেওয়ার, যাতে সবাইকে নিয়ে সামনের পথ এগোতে পারি।

ঐক্যের প্রতি জোর দিয়ে ফখরুল বলেন, এই মুহূর্তে ঐক্য অত্যন্ত প্রয়োজন। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলো নিরসন করা।

গণতন্ত্রের পথে যাওয়ার বিকল্প নেই জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দ্রুত নির্বাচনের কথা পরিষ্কারভাবে বলছি। কারণ জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে।

বিএনপির ইফতার মাহফিলে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে নায়েবে আমির ডা. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূরসহ বিভিন্ন দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।


সংস্কার প্রস্তাবগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে মতামত দিন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিভিন্ন খাতের সংস্কার প্রস্তাবগুলো ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে গেছে। আমি অনুরোধ করব, এগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে মতামত দেওয়ার- যাতে সবাইকে নিয়ে সামনের পথ এগোতে পারি।

বুধবার রাজধানীর ইস্কাটনে লেডিস ক্লাবে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে এই ইফতারের আয়োজন করে বিএনপি।

শুরুতে দলের পক্ষ থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা অত্যন্ত কঠিন সময় অতিক্রম করছি। ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশ পেলেও এখনো গণতন্ত্রের দিশা খুঁজে পাচ্ছি না। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশই বাংলাদেশের মূল আকাঙ্ক্ষা।’

ঐক্যের প্রতি জোর দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘এ মুহূর্তে ঐক্য অত্যন্ত প্রয়োজন। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলো নিরসন করা।’ বিএনপি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে দলের ৩১ দফা বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

গণতন্ত্রের পথে যাওয়ার বিকল্প নেই জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দ্রুত নির্বাচনের কথা পরিষ্কারভাবে বলছি। কারণ জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে।’

বিএনপির ইফতার মাহফিলে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে নায়েবে আমির ডা. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ বিভিন্ন দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।


বিএনপিকে মিডিয়া ট্রায়ালের সম্মুখীন করা হচ্ছে: তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আবারও এক এগারোর মতো বিএনপিকে মিডিয়া ট্রায়ালের মুখোমুখি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, যদি একটি স্বচ্ছ নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, দেশের অধিকাংশ মানুষের ভোটের সমর্থন বিএনপির পাওয়া যত বেশি উজ্জ্বল হয়েছে, তত বেশি দেখেছেন বিএনপিকে মিডিয়া ট্রায়ালের সম্মুখীন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সোমবার সকালেও দেশের কয়েকটি পত্রিকায় কিছু ঘটনা দেখলাম। দেখার পর কেন্দ্রীয় অফিসে যখন খবর দিলাম, তারা যাচাই করে আমাকে জানাল ঘটনা ঘটেছে এক রকম, পত্রিকার পাতায় উপস্থাপন করা হয়েছে আরেক রকমভাবে। একটি মহল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে, একই সঙ্গে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা তাদের অবস্থান থেকে যেসব মিডিয়া হাউসের সঙ্গে সম্পর্ক আছে তাদের মাধ্যমে ঠিক ওয়ান ইলেভেনের সময় যেভাবে বিএনপিকে মিডিয়া ট্রায়ালের সম্মুখীন করা হয়েছিল, ঠিক একইভাবে কোনো একটি প্রেক্ষাপট তৈরির চেষ্টা করছেন।

সোমবার সন্ধ্যায় একটি ইফতার মাহফিলে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তারেক রহমান এ অভিযোগ করেন। রাজধানীর বনানীতে হোটেল লেকশোরে জিয়া সাইবার ফোর্সের ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের জন্য এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সেখানে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের সঙ্গে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে মতবিনিময় করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের জন্য একটি জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মতপার্থক্য ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামী দিনের সব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করার আহ্বান জানান তিনি।


একই সঙ্গে আইনসভা ও গণপরিষদ নির্বাচন সম্ভব: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ বিলোপের পাশাপাশি নতুন সংবিধান প্রণয়নে আগামী নির্বাচনে একই সঙ্গে আইনসভা ও গণপরিষদ নির্বাচন আয়োজন সম্ভব বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
ফ্যাসিবাদ-বিরোধী রাজনীতিবিদ, ছাত্র-শ্রমিক, পেশাজীবী, অ্যাক্টিভিস্ট, ওলামায়ে কেরাম ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সম্মানে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ইফতার পার্টিতে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, ‘আমাদের মধ্যে নানা বিষয়ে মতপার্থক্য হতে পারে, তর্কবিতর্ক হতে পারে, নীতিগত বিরোধ হতে পারে, কিন্তু গণতান্ত্রিক সম্পর্ক, সংলাপ ও পারস্পারিক মিথস্ক্রিয়ায় এসব কারণে যেন কোনো ছেদ না পড়ে।’
বাংলাদেশবিরোধী শক্তিরা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে এবং দেশের বিপদ এখনও কাটেনি উল্লেখ করে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘নীতিগত বিরোধ থাকলেও ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবিলায় ঐক্য ধরে রাখতে হবে। এনসিপি বাংলাদেশের শাসন-কাঠামোর গুণগত ও মৌলিক পরিবর্তন চায়। তাই আমরা একটি নতুন সংবিধানের মাধ্যমে একটি নতুন রিপাবলিকের কথা বলছি।’

বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রসঙ্গ টেনে নাহিদ বলেন, ‘সামনের নির্বাচনে একই সঙ্গে আইনসভা ও গণপরিষদ নির্বাচন সম্ভব। এতে করে একদিকে নতুন সংবিধান কায়েম হবে, অন্যদিকে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় নতুন পথের উত্তরণ ঘটবে।’
সরকার সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য যে সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে, সেই সময়ের মধ্যেই এসব কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব বলে জানান তিনি। বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের পাশাপাশি জনপ্রশাসন ও পুলিশ সংস্কারের প্রস্তাবগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধ্যাদেশ জারি করে সম্পন্ন করা উচিত।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হতে হবে। সরকারের একার পক্ষে আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে সবার সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন।’
এছাড়া নির্বাচনের সময়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও গণমাধ্যমের নিরপেক্ষ আচরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

পুরনো রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে প্রত্যাখ্যান করে রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তন আনার ওপর জোর দেন এনসিপির আহ্বায়ক। বলেন, ‘জুলাই গণহত্যার বিচার দ্রুত করতে হবে এবং বিচারের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগের ব্যাপারে রাজনৈতিক ফয়সালার পথে হাঁটতে হবে।’


নির্বাচনের আগে বিচার ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন চায় এনসিপি

সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলামসহ অন্যরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

যেকোনো নির্বাচনে যাওয়ার আগে দৃশ্যমান বিচার ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন দেখতে চান বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘শুধু নির্বাচনই নাগরিক পার্টির এই মুহূর্তে একমাত্র দাবি নয়, তার আগে আমরা দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম দেখতে চাই।’

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য নাগরিক পার্টির প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা বলেছি, সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি গণপরিষদ নির্বাচন দেখতে চাই। শুধু নির্বাচনই নাগরিক পার্টির এই মুহূর্তে একমাত্র দাবি নয়, তার আগে আমরা দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম দেখতে চাই।’

‘ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে জুলাই সনদ সই হওয়ার কথা, জনগণ দেখতে পাবে কোন রাজনৈতিক দল সংস্কারের পক্ষে আছে, কোন দল বিপক্ষে আছে—এই জুলাই সনদ আমরা নির্বাচনের আগে কার্যকর দেখতে চাই। ছাত্রদের পক্ষ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্রের যে দাবি উঠেছিল, দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা সেটার বাস্তবায়ন দেখতে চাই।’

সারা দেশে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, জনপরিসরে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার যেন কঠোর অবস্থান নেয়। নারী নিপীড়নকারীদের যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের আওতায় আনা হয়।’

এ সময় আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থায় রয়টার্সে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারটি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, ‘আমি রয়টার্সকে বলেছি, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নির্বাচন কঠিন হবে। তাদের বলি নাই নির্বাচন হবে না।’

‘আমি বলেছিলাম, এখন যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পুলিশ যে রকম নাজুক অবস্থায় আছে, এরকম নাজুক অবস্থায় নির্বাচন করাটা অনেক কঠিন হবে। এই পুলিশ প্রশাসনের সুষ্ঠু নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা দীর্ঘদিনের নেই। তাদের সক্ষমতা পরীক্ষা হয়নি দীর্ঘদিন ধরে। সে জায়গায় আমরা বলেছি, আমাদের অবশ্যই নির্বাচনের আগে যে পুলিশিং ব্যবস্থা আছে, আইনশৃঙ্খলার যে পরিস্থিতি আছে, সেটা অবশ্যই উন্নত করতে হবে। এজন্য সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকে, সামাজিক শক্তিকে এগিয়ে আসতে হবে, সহযোগিতা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘রয়টার্সের ইন্টারভিউতে কিছু মিসকোট হয়েছে। আমি বলেছিলাম যে, আমাদের আর্থিক বিষয়ে সমাজের যে সচ্ছল মানুষ বা শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছেন, তারা মূলত আমাদের সহযোগিতা করে। আমরা একটা ক্রাউড ফান্ডিংয়ের দিকে যাচ্ছি। অনলাইন ও অফলাইন-কেন্দ্রিক। ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে কার্যালয় স্থাপনসহ ইলেকশন ফান্ডিং রিচ করব। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এটা নিয়ে ভুল তথ্য এসেছে। এটা সংশোধনের জন্য অনুরোধ থাকবে।’

এনসিপির কার্যক্রম বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, আমরা এখন রাজনৈতিক নিবন্ধনের শর্তাবলী নিয়ে মনযোগী হচ্ছি। তৃণমূলে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছি। রোজার পর পুরোদমে শুরু করবো। আমরা নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করছি। জোট গঠনের বা নির্বাচনের প্রার্থীর বিষয়ে আমাদের অবস্থান ব্যক্ত করতে আরও সময় লাগবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা নির্বাচনের সময়ের চেয়ে প্রেক্ষাপটকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা আমাদের জায়গা থেকে দাবি জানাচ্ছি। জুলাই সনদ আর জুলাই ঘোষণাপত্র আলাদা জিনিস। ঘোষণাপত্রের দাবি আরও আগে উঠেছিল ছাত্রদের পক্ষ থেকে। আর জুলাই সনদ প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা করছিলেন যে, সংস্কারের ঐকমত্যের ওপর একটা চার্টার তৈরি হবে যেখানে বাংলাদেশের রূপরেখা ও সংস্কারের কী কী এখন করব, কী কী ভবিষ্যতে করব— এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের কাছে কমিটমেন্ট দিতে হবে। সেটাকে আমরা বলছি জুলাই সনদ।’

‘পরিবর্তন ও ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা থেকে মানুষ গণঅভ্যুত্থানে এসেছিল। এই দুইটা পূরণ করতে হবে। সেটা আমি বলেছি যে, আমরা যেন ভুলে না যাই বিচার; সংস্কারের মধ্য দিয়ে যেন আমরা নির্বাচনের দিকে যাই।’

এর আগে, এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন জানান, আগামী ১০ মার্চ রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহিদ পরিবারের সদস্য ও আহতদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করবে দলটি।

তারপর ১১ মার্চ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের পরিকল্পনার কথাও জানান আখতার।

এ সময় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের প্রধান সংগঠক সারজিস আলম, প্রধান সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


এনসিপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সংখ্যা ২১৭

২৮ ফেব্রুয়ারী রাজধানী ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’(এনসিপি) নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হয়। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সংখ্যা ২১৭।

আজ রোববার ভোররাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেনের পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

বার্তায় বলা হয়, মুক্তির আকাঙ্ক্ষা থেকে এই জনপদের মানুষ ১৯৭১ সালে একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালে প্রণীত মুজিববাদী সংবিধানের মধ্য দিয়ে নির্মিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামো অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠার পথ খুলে দিয়েছে। যার ফলে এ দেশের নাগরিকরা ইতিহাসের বিভিন্ন পরিক্রমায় বাকশাল, স্বৈরতন্ত্র এবং সর্বশেষ ফ্যাসিবাদের শিকার হয়েছে। ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে বাংলাদেশের নাগরিকরা মুক্ত হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামো থেকে ফ্যাসিবাদের সব উপাদান ও কাঠামোকে বিলোপ করতে এবং এই জনপদের মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপদানে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে।

এতে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, মনিরা শারমিন, মাহবুব আলম, সারোয়ার তুষার, অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, তাজনূভা জাবীন, সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া, ড. আতিক মুজাহিদ, আশরাফ উদ্দীন মাহাদী, অর্পিতা শ্যামা দেব, তানজিল মাহমুদ, অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, জাবেদ রাসিন, এহতেশাম হক ও হাসান আলী।

সদস্যসচিব- আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব- ডা. তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিভা, যুগ্ম সদস্যসচিব- আব্দুল্লাহ আল আমিন, আরিফ সোহেল, মো. রশিদুল ইসলাম (রিফাত রশিদ), মো. মাহিন সরকার, মো. নিজাম উদ্দিন, আকরাম হুসেইন, এস এম সাইফ মোস্তাফিজ, সালেহ উদ্দিন সিফাত (দপ্তর), আলাউদ্দীন মোহাম্মদ, ফরিদুল হক, মো: ফারহাদ আলম ভূঁইয়া, মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া, লুৎফর রহমান, মো. মঈনুল ইসলাম (তুহিন), মুশফিক উস সালেহীন, ডা. জাহেদুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম মুসা, অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর, মোশফিকুর রহমান জোহান, মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান, সাগুফতা বুশরা মিশমা, আফসানা ছপা, আহনাফ সাইদ খান, আবু সাঈদ মোহাম্মদ সুজা উদ্দিন, মীর আরশাদুল হক, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, তারেকুল ইসলাম (তারেক রেজা), মশিউর রহমান, জয়নাল আবেদীন শিশির, গাজী সালাউদ্দীন তানভীর, তামিম আহমেদ, তাহসীন রিয়াজ ও প্রীতম দাশ।

মুখ্য সংগঠক- সারজিস আলম (উত্তরাঞ্চল), যুগ্ম মুখ্য সংগঠক- সাইফুল্লাহ হায়দার, আলী নাছের খান, সাকিব মাহদী, মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সাদিয়া ফারজানা দিনা, অলিক মৃ, আসাদুল্লাহ আল গালিব, হানিফ খান সজীব, আবু সাঈদ লিয়ন।

সংগঠক- রাসেল আহমেদ, ইমরান ইমন, ফরহাদ সোহেল, রফিকুল ইসলাম আইনী, মোস্তাক আহমেদ শিশির, আজাদ খান ভাসানী, প্রীতম সোহাগ, দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী, এম এম শোয়াইব, নাহিদ উদ্দিন তারেক, আব্দুল্লাহ আল মনসুর, মিয়াজ মেহরাব তালুকদার, অ্যাডভোকেট শিরীন আক্তার শেলী, আবুল বাশার, আব্দুল্লাহ আল মুহিম, নাজমুল হাসান সোহাগ, খায়রুল কবির ও সাঈদ উজ্জ্বল।

মুখ্য সংগঠক- হাসনাত আবদুল্লাহ (দক্ষিণাঞ্চল), যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মোল্যা রহমাতুল্লাহ্, এস এম শাহরিয়ার, মেজবাহ কামাল মুন্না, জোবাইরুল হাসান আরিফ ও ইমন সৈয়দ।

সংগঠক- আকরাম হোসাইন রাজ, হামযা ইবনে মাহবুব, ওয়াহিদুজ্জামান, আসাদ বিন রনি, মোহাম্মাদ রাকিব, আরমান হোসাইন, মো. রাসেল আহমেদ, অ্যাডভোকেট মনজিলা ঝুমা, শওকত আলী, ডা. আশরাফুল ইসলাম সুমন, মুনতাসির মাহমুদ, ডা. মিনহাজুল আবেদীন, সাকিব শাহরিয়ার, আজিজুর রহমান রিজভী, আব্দুর রহমান, ফয়সাল আহমেদ, নয়ন আহমেদ, কাউছার হাবিব, আব্দুল্লাহ আল মামুন ফয়সাল, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জিহান, মাও. সানাউল্লাহ খান, আরিফুল ইসলাম, নফিউল ইসলাম ও মো. রাকিব হোসেন।

মুখ্য সমন্বয়ক- নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক- আব্দুল হান্নান মাসউদ, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক- অ্যাডভোকেট মো. তারিকুল ইসলাম (যুব), ডা. মো. আব্দুল আহাদ (চিকিৎসা), মাজহারুল ইসলাম ফকির (শ্রমিক), দিলশানা পারুল, আবু হানিফ, আব্দুজ জাহের, কৃষিবিদ গোলাম মোর্তজা সেলিম, মেহেরাব সিফাত, অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ, আশেকীন আলম, ডা. জাহিদুল বারী, কৈলাশ চন্দ্র রবিদাস, ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু, শেখ মোহাম্মদ শাহ মঈনুদ্দিন, খান মুহাম্মদ মুরসালীন, সাদ্দাম হোসেন, আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল, নাভিদ নওরোজ শাহ, তুহিন মাহমুদ, মো. আরিফুর রহমান (তুহিন), সাগর বড়ুয়া, রাফিদ এম ভূঁইয়া ও মাহবুব আলম।

সদস্য- সানজিদা খান দীপ্তি (শহীদ আনাসের মা), খোকন চন্দ্র বর্মন (আহত), মো. ফাহিম রহমান খান পাঠান, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের (সন্দ্বীপ), ঋআজ মোরশেদ, ইমরান নাঈম, মশিউর আমিন শুভ, আল আমিন শুভ, প্লাবন তারিক, ওমর ফারুক, আসাদুল ইসলাম মুকুল, ফিহাদুর রহমান দিবস, মো. তৌহিদ আহমেদ আশিক, মো. আব্দুল মুনঈম, রকিব মাসুদ ইনজামুল হক রামিম, সৈয়দা নীলিমা দোলা, এস আই শাহীন, আসাদুজ্জামান হৃদয়, তানহা শান্তা, ডা. মশিউর রহমান, ইমরান শাহরিয়ার, এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, আব্দুল্লাহিল মামুন নিলয়, আজাদ আহমেদ পাটওয়ারী, জাহিদুল ইসলাম সৈকত, আরজু নায়েম, ডা. মনিরুজ্জামান, তাওহিদ তানজিম, মোহাম্মদ উসামা, মাহবুব-ই-খোদা, তারিক আদনান মুন, নাহিদা বুশরা, তৌহিদ হোসেন মজুমদার, মারজুক আহমেদ, নীলা আফরোজ, নূরতাজ আরা ঐশী, সাইয়েদ জামিল, শেখ খায়রুল কবির আহমেদ, রফিকুল ইসলাম কনক, মীর হাবীব আল মানজুর, মো. ইমরান হোসেন, মো. আরিফুল দাড়িয়া, মো. ইনজামুল হক, আবু সাঈদ মুসা, ডা. আতাউর রহমান রাজিব, সালমান জাভেদ, ইমামুর রশিদ, সাইফুল ইসলাম, ডা. সাবরিনা মনসুর, অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট ছেফায়েত উল্লাহ, আহমেদুর রহমান তনু, দিদার শাহ, রাদিথ বিন জামান, ফারিবা হায়দার, সাইফুল ইসলাম, ইয়াহিয়া জিসান, সোহেল রানা, রিদওয়ান হাসান, হাসিব আর রহমান, ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ, জাওয়াদুল করিম, আল আমিন টুটুল, ইসমাইল হোসেন সিরাজি, ইফতেখারুল ইসলাম, হাফসা জাহান, জায়েদ বিন নাসের, মামুন তুষার, ওমর ফারুক, সালাহউদ্দিন জামিল সৌরভ, মো. হিফজুর রহমান বকুল, আসিফ মোস্তফা জামাল, জোবায়ের আলম, মেজর (অব.) মো. সালাউদ্দিন ও খালেদ সাইফুল্লাহ জুয়েল।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) রাজধানী ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’(এনসিপি) নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হয়। যাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা মূল নেতৃত্বে এসেছেন।


ভেঙে গেল ১২ দলীয় জোট

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ দলীয় জোট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে গেল জোটের প্রধান শরিক জাতীয় পার্টি (জাফর)। একই সঙ্গে ১২ দলীয় জোট বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যানের রাজধানীর খিলগাঁও কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির (জাফর) নির্বাহী কমিটির জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জোট থেকে বের হয়ে গেলেও বিএনপির নেতৃত্বে আগামী দিনে সব আন্দোলন-সংগ্রামে জাতীয় পার্টি (জাফর) অংশীজন হিসেবে সর্বশক্তি দিয়ে রাজপথে লড়াই-সংগ্রাম জোরদার করার ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করা হয়েছে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব সাবেক এমপি আহসান হাবীব লিংকন, পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক এমপি নোয়াব আলী আব্বাস খান, সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট হোসনে আরা আহসান, সেলিম মাস্টার, ব্যারিস্টার মোস্তফা হায়দার জুবায়ের, অ্যাড. মাওলানা রুহুল আমিন, অ্যাড. শফিউদ্দিন ভূঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান শরীফ মিয়া, যুগ্ম মহাসচিব এ এস এম শামীম, কাজী মো. নজরুল, সাংগঠনিক সম্পাদক মহসিন মিয়া, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, প্রচার সম্পাদক লোকমান পাটোয়ারী, দপ্তর সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, ছাত্রসমাজের সভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ, যুব সংহতির আহ্বায়ক রইস উদ্দিন, সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন সরকার প্রমুখ।

এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির (জাফর) সাবেক এমপি আহসান হাবিব লিংকন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ১২ দলীয় জোটের কতিপয় নাম সর্বোচ্চ নেতার কার্যকলাপ নিয়ে জাতীয় পার্টি (জাফর) নেতাদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। যে পরিপেক্ষিতে গতকাল নির্বাহী কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয় গতকাল থেকে মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বাধীন ১২ দলীয় জোট থেকে জাতীয় পার্টি (জাফর) বেরিয়ে এককভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। একই সঙ্গে বিএনপির নেতৃত্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইকে বেগবান করার জন্য মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি (জাফর) রাজপথে লড়াই অব্যাহত রাখবে। গতকাল থেকে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ১২ দলীয় জোটের সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি নিলাম।

খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, শনিবার অনুষ্ঠিত দলের জরুরি সভায় জাতীয় পার্টির (জাফর) নেতারা ১২ দলীয় জোটের দীর্ঘদিনের কার্যকলাপ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে জোটের কয়েকজন নাম সর্বোচ্চ নেতার কর্মকাণ্ড নিয়ে জাতীয় পার্টি (জাফর) নেতারা চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় নেতারা দলের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারকে ১২ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য প্রচণ্ড ছাপ সৃষ্টি করেন। তারপর সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে ১২ দলীয় জোট বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেন জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার।


‘দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠায় ‘গণপরিষদ’ নির্বাচনের জন্য লড়াই করুন

জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দলের সদ্য দায়িত্ব নেওয়া নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন আমাদের অন্যতম প্রাথমিক লক্ষ্য।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে এবং বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থকে সামনে রেখে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনীতি এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণ করব।

শুক্রবার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক নতুন সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে আমাদেরকে সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠার সকল সম্ভাবনার অবসান ঘটাতে হবে।

নতুন দলের সদ্য দায়িত্ব গ্রহণকারী নাহিদ বলেন, ‘আমরা মনে করি, ২৪’র জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক (দ্বিতীয় বারের মতো প্রজাতন্ত্র) প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের সূচনা করেছে।

নবগঠিত দলের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় নাগরিক পার্টি-জেএনপি হবে একটি গণতান্ত্রিক, সমতাভিত্তিক ও জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী একটি রাজনৈতিক দল।

নাহিদ বলেন, ২০২৪‘র জুলাই ছাত্র-জনতার বিপুল আত্মত্যাগের মাধ্যমে এক অভূতপূর্ব গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দেড় দশক ধরে জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটিয়েছে। কিন্তু, আমাদেরকে স্মরণ রাখতে হবে— হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে অর্জিত এই নতুন স্বাধীনতা কেবল একটি সরকার পতন করে আরেকটি সরকার বসানোর জন্যই ঘটেনি।

তিনি বলেন, জনগণ বরং রাষ্ট্রের আস্টেপিস্টে জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের মাধ্যমে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্খা থেকে এই অভ্যুত্থানে সাড়া দিয়েছিল— যেন জনগণের অধিকারভিত্তিক এবং মর্যাদাভিত্তিক একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়। সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিচ্ছি।

নাহিদ বলেন, আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক-এ জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। ভেঙে পড়া রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় গড়ে তোলা ও তাদের গণতান্ত্রিক চরিত্র রক্ষা করা হবে আমাদের রাজনৈতিক অগ্রাধিকার। এর মধ্যে দিয়ে কেবল আমরা একটি পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে আবির্ভুত হতে পারব।

তিনি বলেন, আমরা এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ চাই, যেখানে সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে বিভেদের বদলে ঐক্য, প্রতিশোধের বদলে ন্যায়বিচার এবং পরিবারতন্ত্রের বদলে মেধা ও যোগ্যতার মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা হবে। আমাদের রাজনীতিতে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কোনো স্থান হবে না।

নাহিদ বলেন, আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক-এ সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বরকে মূলধারায় তুলে আনা হবে। রাষ্ট্রে প্রতিটি নাগরিককে সমান গুরুত্ব প্রদান ও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। আমরা একটি ন্যায্যতা ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় আমাদের সংকল্প আবারও পুনর্ব্যক্ত করতে চাই।

তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ২৪’র জুলাই গণঅভ্যুত্থান কেবল একটি ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধেই বিজয় নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণেরও শপথ। চলুন আমরা একসঙ্গে হাত হাত রেখে আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলি— যেখানে প্রতিটি নাগরিকের কণ্ঠস্বর প্রতিধ্বনি হবে, সেখানে ন্যায় প্রতিষ্ঠা মানুষের অধিকারের সংগ্রামই রাজনীতির অন্যতম লক্ষ্য, সেখানে সাম্য ও মানবিক মর্যাদা হবে রাষ্ট্রের ভিত্তি। এখনই হবে নতুন স্বপ্ন দেখার নতুন পথ চলার এবং একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার।

নাহিদ বলেন, আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক অধরা কোনো স্বপ্ন নয়, এটিই আমাদের আজকের দিনের সামনের বাংলাদেশের প্রতিজ্ঞা।

এর আগে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক কমিটি(জেএনসি) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের(এডিএসএম) নেতারা একত্রিত হয়ে নাহিদ ইসলামকে আহ্বায়ক ও আখতার হোসেনকে সদস্য সচিব করে দল গঠন করেন।

অনুষ্ঠানে দলের একটি আংশিক কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়, যা সারা দেশ থেকে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটায়।

সম্মেলনে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদিবকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং তাসনিম জারা ও নাহিদা সারোয়ারকে সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব করা হয়।

এছাড়া হাসনাত আবদুল্লাহকে দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান সংগঠক এবং সারজিস আলমকে উত্তরাঞ্চলের প্রধান সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পেয়েছেন নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সমন্বয়কের দায়িত্ব পেয়েছেন আবদুল হান্নান মাসুদ।

আজ বিকল ৪টা ২০ মিনিটে পবিত্র কোরআন, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।

এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

জুলাই অভ্যুত্থানের সময় শাহাদাত বরণকারী শহীদ ইসমাইল হোসেন রাব্বীর বোন মীম আক্তার আনুষ্ঠানিকভাবে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নাম ঘোষণা করেন।

পরে সদস্য সচিব আখতার হোসেন আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদের নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করেন। কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্যান্য শূন্য পদের নেতাদের নাম শিগগিরই ঘোষণা করা হবে বলে জানান আখতার হোসেন।

এর আগে সামান্তা শারমিন, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, নুসরাত তাবাসসুম, আবদুল হান্নান মাসউদসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রনেতা বক্তব্য দেন।


জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ: মানিক মিয়া এভিনিউ স্লোগানে মুখরিত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নতুন রাজনৈতিক দলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মিছিল নিয়ে দলে দলে যোগ দিচ্ছেন মানুষ।

জাতীয় নাগরিক পার্টি-জেএনসি (ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি) নামে নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় অনুষ্ঠানটি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিকেল পৌনে ৩টা পর্যন্ত শহর ও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জড়ো হয়েছেন।

জাতীয় নাগরিক কমিটি (জেএনসি) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (এডিএসএম) নেতারা নতুন এই রাজনৈতিক দল গঠন করছেন।

নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ দশ পদের জন্য নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে।

নতুন দলের আহ্বায়ক হিসেবে সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব হিসেবে আখতার হোসেনের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।

জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদিব এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব পদে তাসনিম জারা ও নাহিদা সারোয়ার (নোভা) শীর্ষ পদে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

প্রধান সমন্বয়ক পদে নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী ও যুগ্ম সমন্বয়কারী পদে আবদুল হান্নান মাসুদকে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

এছাড়া উত্তরাঞ্চলের প্রধান সংগঠক সারজিস আলম এবং দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহকে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এক ফেসবুক পোস্টে নতুন দলের নাম নিশ্চিত করেন সারজিস আলম। ‘সারা দেশে এই নামেই ব্যানার হোক। এই নামের সাথেই বাংলাদেশ প্রতিধ্বনিত হোক।’

তিনি বলেন, নতুন দল তার রাজনৈতিক ধারায় জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে সমুন্নত রাখবে।

দল গঠনের আগে জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীরা বুধবার 'গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ' নামে একটি নতুন ছাত্র সংগঠন আত্মপ্রকাশ করেন। তবে এই আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের সময় আন্দোলনে অংশ নেওয়া কর্মীদের একটি অংশের প্রতিবাদ করে শ্লোগান দিয়েছিল।


জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া এখন প্রধান কাজ: তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
খুলনা ব্যুরো

সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি জয়লাভ করবে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া এখন প্রধান কাজ।

তিনি বলেন, ‘এখন প্রয়োজন সর্বত্র গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। একই সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, যাতে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে।’

সোমবার খুলনা মহানগর বিএনপির সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘জনগণের সুখ ও দুঃখে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। নেতা-কর্মীদের দায়িত্বশীল ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে। আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংসসহ খাদের কিনারায় ফেলে গেছে। এখন সবাই মিলে দেশকে টেনে তুলতে হবে। খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, যোগাযোগ, চিকিৎসাসহ সব উন্নয়নের জন্য হাতে হাত ধরে কাজ করতে হবে।’

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গত ১৬ বছরে দেশের গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না, একই সঙ্গে সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার হরণ করা হয়েছিল।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য বিএনপির কয়েক লাখ মানুষের নামে গায়েবি মামলা হয়েছে। বিএনপির হাজারও নেতা-কর্মীকে খুন ও গুম করা হয়েছে। ’২৪ জুলাই-আগস্টে প্রায় ২ হাজার ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছেন। কয়েক হাজার আহত হয়েছেন। এদের রক্তকে মূল্য দিতে হবে। তিনি বলেন, আমরা যারা দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, তারা যেন অহেতুক ছোট ছোট বিষয় নিয়ে তর্ক না করি। যাতে করে আমাদের মধ্যে ঐক্যের ফাটল ধরে. আর ফ্যাসিবাদ আবারও ফিরে আসে।

খুলনা মহানগরী বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য আমানউল্লাহ আমান, বেবি নাজনীন, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। এছাড়া আরও বক্তব্য দেন ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা মহানগরীর বিএনপির সদস্য শফিকুল আলম।


‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ নামে নতুন রাজনৈতিক দল আসছে আজ

আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ * নাহিদ ইসলাম আহ্বায়ক ও আখতার হোসেন সদস্য সচিব হিসেবে চূড়ান্ত * দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক পদে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে থাকছেন সারজিস আলম
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ০০:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ শুক্রবার আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল। এর নাম হবে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’(এনসিপি)। বিকেল তিনটায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে এই নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দেওয়া হবে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা উপলক্ষে গতকাল দুপুরে রাজধানীর বাংলামটরে অবস্থিত নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের যৌথ সভা হয়। দল গঠনের সঙ্গে জড়িত নাগরিক কমিটির দুজন নেতা জানান, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক হচ্ছেন নাহিদ ইসলাম। এ ছাড়া সদস্য সচিব পদে আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (উত্তর) সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণ) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এবং যুগ্ম সমন্বয়ক হিসেবে আব্দুল হান্নান মাসুদের নাম চূড়ান্ত হয়েছে।

এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম জানিয়েছিলেন, শুক্রবার দুপুর ৩টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে তরুণদের এই নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হবে। কমিটির একজন নেতা বৃহস্পতিবার এ প্রতিবেদককে জানান, দুপুর ১২টার পর থেকেই জমায়েত শুরু হবে। বিকেল তিনটায় আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে।

নতুন এই দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে নিমন্ত্রণপত্র দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ।

গতকাল রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে ড. ইউনূসের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করেছেন আব্দুল হান্নান মাসউদ।

ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘২৪ পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণপত্র দিলাম, আর দোয়া নিলাম।’ ক্যাপশনের শেষে একটি হার্ট ইমোজি যুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে গত বুধবার জাতীয় নাগরিক কমিটির ফেসবুক পেজের আরেকটি পোস্টে জানানো হয়, এদিন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির ১১তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আহবায়ক, সদস্য সচিব, মুখপাত্র ও মুখ্য সংগঠক ব্যতীত জাতীয় নাগরিক কমিটির অবশিষ্ট অর্গানোগ্রাম, নির্বাহী কমিটি, সেলসমূহ ও সার্চ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ, জাতীয় নাগরিক কমিটির সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা, সংস্কৃতি, জলবায়ু, কূটনীতি, দপ্তর, সোশ্যাল মিডিয়া বিষয়কসহ ইত্যাদি যে সেলগুলো করা হয়েছিল সেগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

এ ছাড়া আহবায়ক, সদস্য সচিব, মুখপাত্র, মুখ্য সংগঠক এর পাশাপাশি ‘যুগ্ম’ ও ‘সহ’ যে পদগুলো ছিলো (যেমন-যুগ্ম আহবায়ক, যুগ্ম সদস্য সচিব, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক, সহ মুখপাত্র ইত্যাদি) সেগুলোও বিলুপ্ত করা হয়েছে। তাছাড়াও, জরুরি সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ৩৪ সদস্যের যে নির্বাহী কমিটি এবং কমিটিতে নতুন সদস্য নেওয়ার জন্য যে সার্চ কমিটি ছিল সেগুলোও বিলুপ্ত করা হয়েছে।

২৮ ফেব্রুয়ারি নতুন দল গঠিত হওয়ার পর পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে বর্তমান আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, মুখপাত্র ও মুখ্য সংগঠক দায়িত্ব নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করবেন। বর্তমানে দায়িত্ব থাকা ব্যক্তিগণ তাদের দায়িত্ব নতুনদের কাছে হস্তান্তর করবেন। নতুন নেতৃত্বরাই পরবর্তীতে তাদের সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন নির্বাহী কমিটিতে কারা থাকবে, সেল ও সম্পাদকগুলোতে কারা থাকবেন।

কমিটির নেতারা জানান, যাত্রার শুরুতে আহ্বায়কের নেতৃত্বে ছয়টি শীর্ষ পদসহ দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা হবে ১০০ থেকে ১৫০ জন। পরে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০০ থেকে ৫০০ জন করা হতে পারে। আর এই কমিটি নিয়েই নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে দলটি।

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয়। সেই সময় উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন নাহিদ ইসলামও। নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের লক্ষ্যে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি পদত্যাগ করেন।


নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে বুধবার

নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টার পদ থেকে কাল পদত্যাগ করতে পারেন
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ০০:০৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি মাসেই ছাত্র ও তরুণদের উদ্যোগে দেশে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে, সেটি এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’। ২৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার জাতীয় সংসদ সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে দলটির আত্মপ্রকাশ হতে যাচ্ছে। এর আগে আগামীকাল মঙ্গলবার নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে।

জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নেতৃত্বে গঠিত হতে যাওয়া দলটির সাংগঠনিক কাঠামো প্রায় চূড়ান্ত। এ দলের শীর্ষ ছয়টি পদ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে এবং এখন প্রায় সবকিছুই নির্ধারিত। জানা গেছে, দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে ‘সমঝোতার’ ভিত্তিতে নতুন দুটি পদও সৃষ্টি করা হচ্ছে। আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, মুখপাত্র এবং মুখ্য সংগঠকের পাশাপাশি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নামে দুটি পদ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

নতুন দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব নিতে যেকোনো সময় অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করতে পারেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। সদস্যসচিব পদ নিয়ে যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছিল সমঝোতার ভিত্তিতে সে পদে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নাম অনেকটাই চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এছাড়া দলের মুখ্য সংগঠক ও মুখপাত্র পদে দেখা যেতে পারে সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে।

পাশাপাশি জাতীয় নাগরিক কমিটির ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আলী আহসান জোনায়েদের নাম রয়েছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিবির সভাপতি। এছাড়া, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে দায়িত্বে আনা হতে পারে, যিনি বর্তমানে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক।

শীর্ষ ছয় পদ ছাড়াও, দলের বাকি গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, তাসনিম জারা, আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম সদস্যসচিব অনিক রায়, মাহবুব আলম ও অলিক মৃ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদকেও দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা যেতে পারে।

এদিকে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ সামনে রেখে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শতাধিক নেতার সমন্বয়ে প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত বুধবার বিকেল থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রস্তুতি কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দলের আত্মপ্রকাশ সামনে রেখে বিভিন্ন দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের শৃঙ্খলা, সাংস্কৃতিক আয়োজনসহ বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য কয়েকটি উপকমিটি গঠন করা হয়।

বুধবার দলটির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে ১ লাখ লোকের সমাগম ঘটাতে চান তারা। সে লক্ষ্যে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে বেশ কয়েকটি কমিটি কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে অনুষ্ঠান প্রস্তুতি কমিটি। গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র তৈরি নিয়ে পৃথক কমিটি রয়েছে। এসব কমিটি দফায় দফায় সভা করছে। এর আগে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ক্যাম্পেইন শুরু করে নাগরিক কমিটি। এতে সাড়ে ৩ লাখের বেশি মানুষ মতামত দিয়েছে। এসব মতামত যাচাই করছেন তারা।

নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘শৃঙ্খলা, গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র প্রণয়নসহ বিভিন্ন কমিটি করা হয়েছে। কয়েকটি সভায় আত্মপ্রকাশের সময়, আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের ধরন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ জনমত জরিপ কর্মসূচি শুরু করেছি। সেখানে আমাদের কাছে লক্ষাধিক উপাত্ত এসেছিল। আমরা সেগুলো নিয়ে নিজেদের মধ্যে পর্যালোচনা করেছি। দল তৈরির জন্য ইতোমধ্যে নানা ধরনের প্রস্তুতিমূলক কমিটি হয়েছে। আশা রাখি, সপ্তাহের শেষ দিকে আমরা আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করতে পারব।’ তবে আত্মপ্রকাশের সময় প্রায় চূড়ান্ত হলেও দলের নাম-সাংগঠনিক কাঠামো এখনো চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি।


জাতীয় ঐক্য ও নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের ষড়যন্ত্র চলছে: তারেক রহমান

বিএনপির বর্ধিত সভায় শীর্ষ নেতারা ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য রাখেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জাতীয় ঐক্য ও নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের ষড়যন্ত্র চলছে।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে ২০১৬ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির দ্বিতীয় বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, জাতীয় ঐক্য ও নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমি দেশের কৃষক, শ্রমিক, জনতা, আলেম, ওলামা পীর মাশায়েখ তথা সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। যারা বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্র বানিয়ে রাখতে চেয়েছিলো তাদের ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনো থেমে নেই। ‘সংস্কার’ কিংবা ‘স্থানীয় নির্বাচন’ এসব ইস্যু নিয়ে জনগণের সামনে এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান।

বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক বিএনপির বর্ধিত সভা আজ দীর্ঘ ৭ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে বিএনপির সর্বশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি। সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়া। ফ্যাসিবাদী শাসনকালে এরপর আর বিএনপির বর্ধিত সভা কিংবা কাউন্সিল অনুষ্ঠান সম্ভব হয়নি।

তারেক রহমান বলেন, চিকিৎসাধীন থাকায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে তিনি এই সভার সাফল্য কামনা করেছেন। তিনি আপনাদের কাছে দোয়া চেয়েছেন। দেশনেত্রীর শারীরিক সুস্থতার জন্য আমরা আল্লাহর দরবারে দোয়া কামনা করছি। মাদার অফ ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়ার সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব আর সুদক্ষ নেতৃত্ব বিএনপিকে পৌঁছে দিয়েছিলো সারাদেশের প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি ঘরে।

তারেক রহমান আরো বলেন, ‘আজকের এই বর্ধিত সভার শুরুতেই আমি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করতে চাই। তিনি একদলীয় অভিশপ্ত বাকশালের অন্ধকারাচ্ছন্ন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের আলো জ্বালিয়েছিলেন। মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের নিষিদ্ধ করা সকল রাজনৈতিক দলকে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। জনগণের ভালোবাসায় ধন্য বিএনপির হাতে গণতন্ত্রের ঝাণ্ডা তুলে দিয়েছিলেন।’

বিএনপির জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং স্বৈরাচার বিরোধী ধারাবাহিক আন্দোলনে, যারা শহীদ হয়েছেন আহত হয়েছেন, সন্তান-স্বজন হারিয়ে যেসব পরিবার নিদারুণ দুঃখ কষ্টের মুখোমুখি হয়েছেন, যাদের শ্রম ঘাম মেধায় বিএনপি আজ আপামর জনগণের কাছে দেশের সবচেয়ে বিশ্বস্ত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, আজকের বর্ধিত সভার শুরুতে তাদের প্রত্যেকের অবদানকেও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহীদ, দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ধারাবাহিক সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে তাবেদার অপশক্তির বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধের সাহসী বীর আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, রিয়া গোপ, আব্দুল আহাদ এবং বিএনপির পাঁচ শতাধিকসহ হাজারো শহীদ এবং আহত যোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি।

তিনি বলেন, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতাপ্রিয় বীর জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর দেশে গণতন্ত্রকামী মানুষের সামনে বাংলাদেশ পুনর্গঠনের এক অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। এই সুযোগ এবং সম্ভাবনা নস্যাৎ করার জন্য এরইমধ্যে নানারকম ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সুকৌশলে রক্তপিচ্ছিল রাজপথে গড়ে ওঠা ‘জাতীয় ঐক্য’ এবং জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের অপচেষ্টা চলছে।

তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। বিএনপির কাছে সংস্কারের ধারণা নতুন কিছু নয়। সরকারে কিংবা বিরোধী দলে বিএনপি যখন যে অবস্থানেই দায়িত্ব পালন করেছে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে, সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সব সময়েই রাষ্ট্র, সরকার ও রাজনীতিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করেছে এবং করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পর দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সংবিধানে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন, ১৯৯১ সালে দেশে সংসদীয় সরকার প্রতিষ্ঠা এসবই ছিল রাষ্ট্র, রাজনীতির ময়দানে যুগান্তকারী সংস্কার। এছাড়াও বিভিন্ন মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকাকালে বিএনপি সরকার স্কুল কলেজে বিনা বেতনে মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, রাষ্ট্র ও সমাজে মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, বিশ্বের তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকে প্রস্তুত রাখতে বিজ্ঞান এবং তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এগুলোও ছিল রাষ্ট্র ও সরকারের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার। এ ধরনের আরো অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, ষড়যন্ত্রের পথ ধরে পলাতক স্বৈরাচারের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পর সংস্কারের সকল পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। বাংলাদেশকে চিরতরে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করে রাখতে গত দেড় দশকে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিল। দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নাজুক করে তুলেছিল। টাকা পাচার আর লুটপাট চালিয়ে দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর করে দিয়েছিল। অকার্যকর করে দেয়া হয়েছিল দেশের সকল সাংবিধানিক এবং বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে জনগণকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাহীন করে দিয়ে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে তুলেছিল।

‘এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র, সরকার এবং রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের লক্ষ্যে মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়া ২০১৭ সালে ভিশন ২০৩০ দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালে বিএনপি ২৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে। পরবর্তীকালে গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়ের পর ঘোষণা করা হয় ৩১ দফা কর্মসূচি। এই ৩১ দফা নিয়ে বর্তমানে বিএনপির উদ্যোগে সারাদেশে জনগণের সঙ্গে সংলাপ চলছে।’

তারেক জিয়া বলেন, রাষ্ট্র-সরকার-রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দল মেরামতের জন্য দফা ৩১টি হলেও এর চূড়ান্ত লক্ষ্য একটি। সেটি হলো একটি নিরাপদ, গণতান্ত্রিক, মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ। ঠিক তেমনি উদ্দেশ্যও একটি। সেটি হলো রাষ্ট্র ও সমাজে জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা। এটি নিশ্চিত করা না গেলে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-গণতন্ত্র-নিরাপত্তা-সমৃদ্ধি কোনটিই টেকসই হবে না।

‘রাষ্ট্রের স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তার জন্য জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের কোনোই বিকল্প নেই। রাষ্ট্র এবং সমাজে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার পূর্ব শর্ত হলো প্রতিটি নাগরিকের ভোট প্রয়োগের অধিকার বাস্তবায়ন। এবং এ লক্ষ্যেই একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি বারবার জনগণের ভোটে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যেই জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানায়।’

তিনি বলেন, আগামী দিনের রাজনীতিতে বিএনপির এই ৩১ দফা হচ্ছে, একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক, মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সনদ। তবে এই ৩১ দফাই শেষ কথা নয়। সময়ের প্রয়োজনে রাষ্ট্র-সরকার-রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলের সংস্কারের জন্য এই ৩১ দফাতেও সংযোজন-বিযোজনের সুযোগ রয়েছে। এমনকি বিএনপির ৩১ দফার সঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার প্রস্তাবনার খুব বেশি ইস্যুতে মৌলিক বিরোধ নেই।

তারেক রহমান বলেন, বিভিন্ন সময়ে ‘জাতীয় নির্বাচন’ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য জনমনে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করলেও ‘জাতীয় নির্বাচন’ নিয়ে কোনো কোনো উপদেষ্টার বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য, মন্তব্য স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের জন্য হতাশার কারণ হয়ে উঠছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দলের নিঃশর্ত সমর্থন থাকলেও সরকার এখনো তাদের কর্মপরিকল্পনায় অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে পারছে না।

তিনি বলেন, সারাদেশে খুন, হত্যা, ধর্ষণ চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি বেড়েই চলেছে। বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, সরকার যেখানে দেশের বাজার পরিস্থিতি কিংবা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন করতে পারছে না সেখানে জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘স্থানীয় নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের নামে কেন দেশের পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করতে চাইছে এটি জনগণের কাছে বোধগম্য নয়।

তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রকামী জনগণ মনে করে, স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সেটি হবে সারাদেশে পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের একটি প্রক্রিয়া যা সরাসরি গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিরোধী। গণহত্যাকারী, টাকা পাচারকারী, দুর্নীতিবাজ মাফিয়া চক্রকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার এই ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না।

তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি জনরায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে গণহত্যাকারী-মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহবান, সারাদেশে গণহত্যাকারীদের দোসর, মাফিয়া চক্রকে পুনর্বাসনের ‘স্থানীয় নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা থেকে সরে আসুন। অবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আগামী দিনের সুনির্দিষ্ট ‘কর্ম পরিকল্পনার রোডম্যাপ’ ঘোষণা করুন।

তিনি বলেন, মাফিয়া প্রধান হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর এ পর্যন্ত ১৬/১৭টি নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিএনপি সকল নতুন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে স্বাগত জানায়। তবে নির্বাচনের মাধ্যমে গ্রহণ কিংবা বর্জনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে জনগণ। প্রতিটি দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু ‘জাতীয় নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সবার আগে নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তুত রাখতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে একটি অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নিরপেক্ষতাই হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সবচেয়ে বড় পুঁজি। কিন্তু সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে ইতোমধ্যেই জনমনে সন্দেহ ও সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে । নিজেদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আরো সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানাই।

দলীয় নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি আপনাদের কাছ থেকে শারীরিকভাবে দূরে থাকলেও যোগাযোগ এবং কর্ম পরিকল্পনার মাধ্যমে আমি কখনোই আপনাদের কাছ থেকে দূরত্ব অনুভব করিনি। আমি বিশ্বাস করি যে দলে আপনাদের মতো ত্যাগী এবং সাহসী নেতাকর্মী রয়েছে সেই দলকে কোনো স্বৈরাচার-ই দমিয়ে রাখতে পারে না।'

তিনি বলেন, এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই যে দেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান তথা দলমত ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার ভোগ করবেন। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই বাংলাদেশ ভূখণ্ডে বসবাসকারী আমাদের সকলের একটিই পরিচয় ‘আমরা বাংলাদেশি’।

পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রেও বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি সুস্পষ্ট। বিএনপি মনে করে বর্তমান বিশ্বে স্থায়ী শত্রু-মিত্র বলে কিছু নেই, উল্লেখ করেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, একটি দেশের সঙ্গে অপর দেশের সম্পর্ক হবে ‘পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা, প্রয়োজন ও ন্যায্যতা’র ভিত্তিতে। অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের নীতি ‘সবার আগে বাংলাদেশ’। অর্থাৎ নিজ দেশ এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষাই হতে হবে প্রথম এবং প্রধান অগ্রাধিকার।

তিনি বলেন, এ মুহূর্তে বিএনপিই দেশের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। বিএনপির কাছে জনগণের যেমন আশা ভরসা প্রত্যাশা রয়েছে, একইসঙ্গে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরাও থেমে নেই। চক্রান্তকারীদের মোকাবেলা করে কিভাবে দলকে আরো শক্তিশালী এবং সুসংহত করা যায় সেই সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা থাকবে।

তিনি বলেন, বিএনপি একটি বৃহৎ পরিবার। এই পরিবারের নানা বিষয়ে আমাদের মতের অমিল থাকতেই পারে। আমরা সবাই আমাদের ঐক্যের শক্তির সক্ষমতা সম্পর্কে অবহিত। ঐক্যই আমাদেরকে বারবার বিজয় আর সফলতা এনে দিয়েছে। গত দেড় দশকে সারাদেশে বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের ভিন্ন দল এবং মতের নেতাকর্মীদেরকে অবর্ণনীয় নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করতে হয়েছে। কেবল বিএনপিরই প্রায় ৬০ লাখের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দেড়লাখ রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমের মতো অনেক নেতাকর্মীর আজ পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি। শুধুমাত্র বিএনপি করার অপরাধে হাজার হাজার নেতা কর্মী সমর্থককে গুম, খুন, অপহরণ করা হয়েছে। তবুও বিএনপির নেতাকর্মীরা কেউ দল ছেড়ে যাননি। স্বৈরাচারের সঙ্গে করেননি আপোষ। এই সৎসাহস এবং সততার কারণে বিএনপি আজ শুধু একটি সাধারণ রাজনৈতিক দলই নয়। দেশের গণতন্ত্রকামী স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণ বিএনপিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ভ্যানগার্ড হিসেবে বিশ্বাস করে। এটি একজন রাজনৈতিক কর্মীর জন্য নিঃসন্দেহে একটি বড় প্রাপ্তি।

তারেক রহমান বলেন, দলের সর্বস্তরের প্রতিটি নেতাকর্মীকে আরো বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। আচরণে হতে হবে আরো সতর্ক ও সংযত। তবে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কোটি কোটি নেতাকর্মী সমর্থকের এই বৃহৎ রাজনৈতিক দলের কোনো কোনো নেতা কর্মী হয়তো নিজের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। তাই আমি আপনাদের আবারো বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের একটি বার্তা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। ব্যক্তির চেয়ে দল বড় দলের চেয়ে দেশ বড়।

দলের প্রতিটি নেতাকর্মীর দীর্ঘদিনের সীমাহীন ত্যাগ তিতিক্ষা আমি গভীরভাবে উপলব্ধি করি উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, যারা দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণ হবেন ব্যক্তির চেয়ে দলের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে বাধ্য হয়েই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও নিতে হবে। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ কিংবা দলের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো কাজকে বিএনপি বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় দেবে না। জনগণই বিএনপির সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস।

জাতীয় নির্বাচনের সময়ও ঘনিয়ে আসছে। মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে দলীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, ‘গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি বার্তা দিতে চাই, বিএনপি শুধুমাত্র আপনাদের ভোটের পুনরুদ্ধারই নয়, আপনার ভোট প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করতে চায়। আপনাদের সমর্থন পেলে বিএনপি এমন একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যে সরকার আপনার কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। আমি জনগণের সমর্থন চাই, সকলের সহযোগিতা চাই।’


banner close