প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেটে ও ২৩-বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলটির চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নির্দেশে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে এই আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
মিছিল ও শোভাযাত্রা শেষে বক্তারা বলেন, ‘একটি সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের এই জাতীয় বাজেট। বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার মেগা সরকারে মেগা বাজেট এটি। এ বাজেট জনগণের বাজেট, মানবতার বাজেট, মানুষের অধিকার ও কল্যাণের বাজেট।’
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই বাজেট উপহার দেওয়ায় যুবসমাজের পক্ষ থেকে বক্তারা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও অভিবাদন জানায়।
আরও পড়ুন: সংকটের সময়ে গণমুখী বাজেট হয়েছে: কাদের
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, মুহাম্মদ বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, জহির উদ্দিন খসরু, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইলর হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কাজী সারোয়ার হোসেন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুক্তা আক্তার, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. আলতাফ হোসেন, উপ-কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোল্লা রওশন জামির রানা, উপধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দরা।
এর আগে বিকেলে সংসদে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। যা অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। বিশেষ বৈঠকে বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন হয়।
দুপুর ১২টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক শুরু হয়। অনুমোদিত এ বাজেট দেশের ৫৩তম, আওয়ামী লীগ সরকারের ২৫তম এবং এ অর্থমন্ত্রীর প্রথম বাজেট।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাকি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকবে। ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ইতোমধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়ক আটকে রেখে পথসভা করেছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কুষ্টিয়া ৪ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী শেখ সাদী। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে কুমারখালীর কাজীপাড়া মোড় এলাকায় পথসভা করেন শেখ সাদী।
এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হাফিজুর রহমানসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। সেখানে পুরো সড়ক আটকে রেখে বিএনপি নেতা শেখ সাদী প্রায় পাঁচ মিনিট ১২ সেকেন্ড এবং হাফিজুর রহমান আড়াই মিনিট বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও শেখ সাদী সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের প্রায় চার মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের একটি সাক্ষাৎকার দেন। এ সময় সড়কের দুই দিকে দীর্ঘ যানযট ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়।
দলীয় নেতাকর্মীদের বরাতে জানা যায়, গত ৩ নভেম্বর কুষ্টিয়া ৪ ( কুমারখালী - খোকসা) আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয় সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীকে। কিন্তু রুমীকে টিক্কা দিয়ে তোড়জোড় লবিং করে মনোয়ন পরিবর্তন করে নিজেকে প্রার্থী করার চেষ্টা করছেন শেখ সাদী। এই খবর নিয়ে শনিবার দুপুর একটার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কে এই আসনের শেষ প্রান্ত খোকসার শিয়ালডাঙ্গী এলাকায় এসে পৌঁছান শেখ সাদী। এ সময় ২ উপজেলার হাজার হাজার নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। পরে সেখান থেকে বিশাল গাড়িবহর ও পথসভা নিয়ে খোকসা উপজেলা শহর প্রদক্ষিণ করে কুমারখালী কাজীপাড়া মোড়ে এসে পথসভা শেষ করেন। সেখানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন শেখ সাদী।
জনদুর্ভোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা শেখ সাদী বলেন, ‘আমাকে ভালোবেসে হাজার হাজার মানুষ আজকের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে। কিছুটা ভোগান্তি সৃষ্টি হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করছি।’
ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থী আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণসহ ২৪ নেতাকর্মীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও আসনটির মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে ধানখেতে দাঁড়িয়ে ‘রিভিউ আবেদন’ করেছেন গৌরীপুর উপজেলার কৃষকেরা।
শনিবার দুপুরে উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের বেরাটি গ্রামে ফসলের মাঠে দাঁড়িয়ে শতাধিক কৃষক ক্রিকেটারের ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে এমন রিভিউ আবেদন করেন।
পরে কৃষকেরা হিরণসহ ২৪ নেতার বহিষ্কারদেশ প্রত্যাহার ও ময়মনসিংহ-৩ আসনের মনোনয়ন পরিবর্তন করে হিরণকে মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে ফসলের মাঠে ধানের আঁটি নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসময় তারা স্লোগান দেন ‘ধানের শীষে ভোট চাই মনোনয়ন পরিবর্তন চাই’। 'হিরণ ভাইয়ের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চাই, ধানের শীষে ভোট চাই।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কৃষক ফারুক আহমেদ বলেন, বিগত ১৭ বছর দলের আন্দোলন সংগ্রামে হিরণ ভাই দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি মনোনয়ন না পাওয়ায় তার অনুসারীরা মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিল । কিন্ত এরমধ্যেই হিরণ ভাইসহ ২৪ জনকে বহিষ্কার করা হয়। তাই মনোনয়ন পরিবর্তন ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আমাদের এই কর্মসূচি।কৃষক মরজত আলী বলেন, গৌরীপুরে বিএনপি বলতে আমরা হিরণকে বুঝি। এই এলাকার মানুষ ধানের শীষের প্রার্থী হিসাবে হিরণকে দেখতে চায়। আমাদের নেতা তারেক রহমানের কাছ দাবি বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে মনোনয়ন রিভিউ হলে ধানের শীষ বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে।
কৃষক ফখর উদ্দিন বলেন, আমরা আমরা খেটে খাওয়া কৃষক মানুষ। আমাদের দাবি আদায়ের ভাষাও ভিন্ন। আমরা হিরণ ভাইকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসাবে দেখতে চাই। আমাদের এই দাবির মধ্য দিয়ে ময়মনসিংহ -৩ আসনটি রিভিউ করা হোক এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমান যাতে এই আসনটি রিভিউ করেন এটাই দাবি।
কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন জিয়াউল হক শ্যমল, হারুন অর রশিদ, পাবেল মিয়া, বাবুল আকন্দ, মালেক মিয়া, ওয়াহাব মিয়া প্রমুখ। গত ৯ নভেম্বর গৌরীপুর উপজেলা সদরে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত এম ইকবাল হোসেনের সমর্থক মনোনয়নবঞ্চিত হিরণের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের পর আহাম্মদ তায়েবুর হিরণকে বহিষ্কার করা হয়।
ধর্মীয় বিষয়ে তাকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কিশোরগঞ্জ–৪ (ইটনা–মিঠামইন–অষ্টগ্রাম) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, ‘ধর্মের ইস্যুতে যারা আমার বিরুদ্ধে কথা বলে তারা মিথ্যাবাদী, বেইমান, বিশ্বাসঘাতক, রাজাকার ও স্বাধীনতাবিরোধী।’
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ইটনা উপজেলার রায়টুটী ইউনিয়নের রাজী ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
নিজেকে ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী দাবি করে ফজলুর রহমান বলেন, আমি মুসলমানের ঘরে জন্মেছি। পাঁচ বছর বয়সে বাবা আমাকে মসজিদ ও মাদ্রাসায় পাঠিয়েছেন। অ, আ শেখার আগে আলিফ, বা, তা শিখেছি।
তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে, তবে এ অপপ্রচার তথ্যগতভাবে ভিত্তিহীন।
বিএনপির এই প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, জামায়াতে ইসলামী সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছে। তিনি বলেন, যারা বলে ১৯৭১ কোনো যুদ্ধ ছিল না, বাংলাদেশ মানে না আমি তাদের বিরুদ্ধে। পাকিস্তান থেকে কেউ এলে যারা মনে করে বড় জ্যাঠা এসেছে আমি তাদের বিরুদ্ধে।
সভায় জেলা ও উপজেলা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাও বক্তব্য দেন। তাদের মধ্যে ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম রতন, ইটনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস এম কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুজ্জামান ঠাকুর স্বপন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মনির হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পলাশ রহমান ও সোমেশ কুমার গোপ, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম জুয়েলসহ স্থানীয় নেতারা। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এলিম হোসেন সভায় সভাপতিত্ব করেন।
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ফরিদপুরের ডিক্রিরচরে বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর সদর উপজেলা ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে শহরের মুন্সি ডাংগী শুকুর সরদারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর সদর ৩ আসনের বিএনপির মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী চৌধুরী নায়াব ইউসুফ।
ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি মো. ইসমাইল মুন্সির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ফরিদপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশ, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও শিল্পপতি চৌধুরী ফারিয়ান ইউসুফ, ডিক্রিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমান মাতুব্বর, আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদের সভাপতি আসাদুজ্জামান খান জলিল মেম্বার, ডিক্রিরচর কৃষক দলের সভাপতি মো. আলম শেখ, সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন শেখ শামু সাংগঠনিক সম্পাদক হোসেন বেপারীসহ বিএনপি সহযোগী অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চৌধুরী নায়াব ইউসুফ বলেন, আমি আল্লাহর কাছে সব সময় শুকরিয়া করি, আমার পিতা মরহুম চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের পাশে যারা ছিলেন তারা সবাই আমার সঙ্গে আছেন এবং আমাকে ও আমার প্রতীক ধানের শীর্ষকে বিজয় করতে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের আর কয়েকটা দিন কষ্ট করতে হবে, ভোটের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইতে হবে। আপনাদের মনে জোর রাখতে হবে, সাহস রাখতে হবে ইনশাআল্লাহ বিজয় আমাদেরই হবে।
ফরিদপুরে ডিক্রিরচরে বিএনপির মতবিনিময় সভা
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ফরিদপুরের ডিক্রিরচরে বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর সদর উপজেলা ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে শহরের মুন্সি ডাংগী শুকুর সরদারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর সদর ৩ আসনের বিএনপির মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী চৌধুরী নায়াব ইউসুফ।
ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি মো. ইসমাইল মুন্সির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ফরিদপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশ, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও শিল্পপতি চৌধুরী ফারিয়ান ইউসুফ, ডিক্রিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমান মাতুব্বর, আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদের সভাপতি আসাদুজ্জামান খান জলিল মেম্বার, ডিক্রিরচর কৃষক দলের সভাপতি মো. আলম শেখ, সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন শেখ শামু সাংগঠনিক সম্পাদক হোসেন বেপারীসহ বিএনপি সহযোগী অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চৌধুরী নায়াব ইউসুফ বলেন, আমি আল্লাহর কাছে সব সময় শুকরিয়া করি, আমার পিতা মরহুম চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের পাশে যারা ছিলেন তারা সবাই আমার সঙ্গে আছেন এবং আমাকে ও আমার প্রতীক ধানের শীর্ষকে বিজয় করতে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের আর কয়েকটা দিন কষ্ট করতে হবে, ভোটের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইতে হবে। আপনাদের মনে জোর রাখতে হবে, সাহস রাখতে হবে ইনশাআল্লাহ বিজয় আমাদেরই হবে।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এই রায়কে দলটি নাগরিকদের ভোটাধিকার রক্ষার বিজয় এবং ভবিষ্যতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে একটি অগ্রগতি হিসেবে বর্ণনা করেছে। বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারই অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারে।
আমীর খসরু বলেন, অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল। এই ব্যবস্থায় কোনো কাঠামোগত দুর্বলতা থাকলে তা সংস্কারের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।
আমীর খসরু আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্ব নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকলে তা সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দস কাজল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে এই রায়টি সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ রায়। সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এই সরকারব্যবস্থা আনয়ন করে জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল। ২০১১ সালে আপিল বিভাগ সেই সরকারব্যবস্থা বাতিল করে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। আজকের রায়ের ফলে, সংবিধানে এই সরকার ব্যবস্থা অটোমেটিক্যালি পুনরুজ্জীবিত হলো, মানুষের ভোটের অধিকার আবারও প্রতিষ্ঠিত হলো।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, এই রায়ের ফলে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল হলো। জনগণ এখন নির্দ্বিধায় ভোট দিতে পারবে।
কোনো কোনো জন্মদিন শুধু ব্যক্তিগত আনন্দের নয়; এটি সময়ের স্তরে লেপ্টে থাকা ইতিহাসকে স্পর্শ করে।
২০ নভেম্বর তেমনি একটি দিন—যেদিন পৃথিবীর বুকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এমন এক মানুষ, যার জীবন, যার সংগ্রাম, যার নীরব শক্তি আজও একটি জাতির আশা হয়ে জ্বলে।
তিনি জনাব তারেক রহমান—যিনি জন্মসূত্রের পরিচয়কে অতিক্রম করে হয়ে উঠেছেন জনগণের স্বপ্ন, দেশের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা, ইতিহাসের একটি অম্লান আলোকচিহ্ন।
উত্তরাধিকার থেকে উত্তরণ: একজন নেতার নির্মাণ
স্বাধীনতার মহান ঘোষক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও আপোসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান হিসেবে তার শৈশব রাজনীতি ও রাষ্ট্রবোধের বাতাসেই বড় হয়েছে; কিন্তু তিনি কখনো পারিবারিক গৌরবের ওপর ভর করে নেতৃত্ব দাবি করেননি। তিনি জানতেন—নেতৃত্ব দাবি নয়; নেতৃত্ব অর্জন করতে হয় মানুষের হৃদয়ের বিশ্বাস থেকে।
এজন্য তিনি গ্রাম থেকে শহর, নদী থেকে পাহাড়, কৃষকের ঘর থেকে শ্রমিকের কুটির পর্যন্ত হেঁটেছেন; মানুষের কষ্ট শুনেছেন, তাদের নীরব আর্তনাদ তার চেতনায় খোদাই করেছেন। তিনি মাটির গন্ধ থেকে শিখেছেন মানুষের রাজনীতি কেমন হয়, রাজনীতির মানুষের প্রতি দায় কতটা গভীর। এভাবেই তিনি উত্তরাধিকার থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে নিজের ভিতর গড়ে তুলেছেন সত্যিকারের নেতৃত্বের বীজ।
জনগণমুখী নতুন রাজনীতির নির্মাতা
তারেক রহমান রাজনীতিকে কেবল ক্ষমতার খেলা হিসেবে দেখেননি; তিনি রাজনীতিকে দেখেছেন মানুষের হৃদয়ে পৌঁছানোর পথ হিসেবে। তার কথায় যেমন আছে সংযম, তেমনি তার কাজে আছে বাস্তবতার আলোকছটা। তিনি বিশ্বাস করেন—রাজনীতি তখনই জীবন্ত থাকে, যখন সাধারণ মানুষের স্বর রাজনীতির ভাষা হয়ে ওঠে; যখন গ্রামের চায়ের দোকানের আলোচনাও রাষ্ট্রচিন্তার সমান মর্যাদা পায়; যখন দল নয়, মানুষ হয়ে ওঠে নেতৃত্বের সবচেয়ে বড় ভিত্তি।
তরুণদের তিনি শিখিয়েছেন স্বপ্ন দেখতে; শ্রমজীবী মানুষকে শিখিয়েছেন নিজেদের অধিকার চিনতে; আর দলকে শিখিয়েছেন প্রকৃত শক্তি থাকে তৃণমূলের আস্থায়, মানুষের বিশ্বাসে, সত্যের ওপর দাঁড়ানো নেতৃত্বে।
এইভাবেই তিনি তৈরি করেছেন জননির্ভর এক নতুন রাজনীতির ভিত্তি।
ব্যক্তিজীবনের নীরবতায় লুকানো অগ্নিশিখা
ব্যক্তিজীবনে তিনি সংযত—মোজাইক কাজের মতো নিখুঁত, তবু নীরব। তিনি শব্দ দিয়ে নয়, দৃষ্টির গভীরতা দিয়ে মানুষকে আশ্বস্ত করেন। নিজের অবস্থা, নিজের বেদনা, নিজের ক্লান্তি—কখনোই তিনি মানুষের সামনে তুলে ধরেন না। তিনি জানেন, নেতৃত্বের প্রথম শর্ত হলো নিজের কষ্টকে নিজের ভেতরে ধারণ করা; আর মানুষের কষ্টকে সামনে এনে সেগুলোর সমাধান খোঁজা।
তার নীরবতা দুর্বলতার নয়—এটি শক্তির এক মহিমান্বিত স্তম্ভ। এই নীরবতাতেই লুকিয়ে আছে আগুনের মতো দৃঢ়তা, পাথরের মতো ধৈর্য, আর নদীর মতো সহনশীলতা।
দুঃসময়ের অগ্নিপথে অবিচল এক যোদ্ধা
হাসিনা সরকারের নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন তার জীবনে তৈরি করেছে ইতিহাসের এক ভয়ংকর অধ্যায়—যা আঘাত করেছে তার শরীরে, তার পরিবারে, তার জীবনে। অমানবিক নির্যাতনের ভার তিনি বহন করেছেন নিঃশব্দে; হাজারো মিথ্যা মামলার বোঝায় তার দিন কেটেছে অনিরাপদ ছায়ায়; রায়হীন রায়ের ছুরিকাঘাত তাকে নির্বাসনের কঠোর বাস্তবতায় ঠেলে দিয়েছে।
কিন্তু নিপীড়ন যতই হোক, তাকে ভাঙতে পারেনি। কারাগারের স্যাঁতসেঁতে অন্ধকারও তার চোখের আলো নিভিয়ে দিতে পারেনি; প্রতিহিংসার স্রোতও তার হৃদয়ের মানবিকতা মুছে দিতে পারেনি। তিনি প্রমাণ করেছেন—শরীর ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কিন্তু সত্যিকার নেতৃত্বের আত্মা কখনো বন্দি হয় না।
ভাই হারানো বেদনা কিংবা নির্বাসনে থাকার বেদনা, কোনোটিই তাকে দুর্বল করেনি; বরং দেশ থেকে দূরে থেকেও তার চেতনায় বাংলাদেশের মানচিত্র আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নিজের জন্মভূমিকে দূর থেকে দেখতে না পাওয়ার যে ব্যথা—সেই ব্যথাই তাকে আরও প্রখর, আরও দূরদর্শী, আরও পরিণত করেছে।
রাষ্ট্রদর্শন: যে স্বপ্ন বাস্তবতার দিকে পথ দেখায়
তারেক রহমান গণতন্ত্রকে কেবল রাজনীতির নিয়ম মনে করেন না; তিনি এটিকে মানুষের মর্যাদার কেন্দ্র বলে মনে করেন। তিনি বিশ্বাস করেন—যে রাষ্ট্র মানুষের স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারে না, সেই রাষ্ট্রের উন্নয়ন যতই চমৎকার হোক, তা আসলে কাগজের অলংকার ছাড়া আর কিছু নয়।
তার রাষ্ট্রচিন্তায় আছে সমান সুযোগ, ন্যায়ভিত্তিক সম্পদ বণ্টন, তৃণমূলের ক্ষমতায়ন, কর্মসংস্থান, প্রযুক্তির ব্যবহার, এবং সবচেয়ে বেশি—মানুষের অধিকারকে রাষ্ট্রের কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড় করানোর প্রচেষ্টা। তিনি একটি এমন রাষ্ট্র দেখতে চান, যেখানে মানুষ ভয় নয়—আস্থা নিয়ে জীবনের পথ চলে; যেখানে আইন ব্যক্তি নয়—রাষ্ট্রের সমান চোখে সকলকে দেখে; যেখানে ন্যায়বিচার সত্যিকার অর্থে মানুষের সম্পদ হয়ে দাঁড়ায়।
অর্জনের দীপ্তি ও অপ্রাপ্তির বেদনাময় আলো
তারেক রহমানের জীবনে যেমন আছে মানুষের সতত ভালোবাসা, তেমনি আছে ত্যাগের দীপ্তি। তিনি কোটি মানুষের নেতৃত্বের স্বপ্ন, তরুণদের প্রেরণা, গণতন্ত্রের সংগ্রামী প্রতীক। তিনি দেশের ভেতরে না থেকেও দেশের রাজনীতিকে প্রভাবিত করেন; কারণ তিনি মানুষের হৃদয়ে আছেন, মানুষের কণ্ঠে আছেন।
তবে তার অপ্রাপ্তিও কম নয়—জন্মভূমি থেকে দূরে থাকা, মায়ের দীর্ঘ কারাবাস, ছোট ভাইকে হত্যা, সহযোদ্ধাদের গুম-খুনের স্মৃতি, আর নিজের দেশের আকাশ না দেখতে পারার অসহ্য যন্ত্রণার দীর্ঘ দিনগুলো তার জীবনের বইতে গোপন অধ্যায় হয়ে আছে। এই অপ্রাপ্তিগুলো তার নেতৃত্বকে ভেঙে দেয়নি; বরং তাকে আরও তীক্ষ্ণ, আরও মানবিক, আরও দৃঢ় করেছে।
আজকের বাংলাদেশ তার প্রত্যাবর্তনের প্রতীক্ষায়
একটি জাতির মন আজ অপেক্ষার সঙ্গীতে এক সুরে বাঁধা—এই মানুষটিকে দেশে চাই। যে মানুষটি অতীত থেকে শিক্ষা নিতে জানেন, বর্তমান বুঝতে জানেন, আর ভবিষ্যৎ গড়তে জানেন। যে নেতা অন্যায়ের সামনে নতি স্বীকার করেন না; যে নেতা প্রতিহিংসা নয়, ন্যায়কে রাষ্ট্রের মূলমন্ত্র করতে চান।
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন মানে শুধু একজন নেতার ফেরা নয়—এটি গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম, আইনের শাসনের পুনরুত্থান, রাষ্ট্রের নৈতিক জাগরণ।
তারেক রহমান সেই সত্যের আলোর নাম, সেই স্বপ্নের দিশারী, সেই ভবিষ্যতের প্রতীক যাকে কেন্দ্র করেই একটি জাতি সম্পূর্ণরূপে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার অপেক্ষায় আছে।
মানুষের মর্যাদাকে রাষ্ট্রের পবিত্রতম শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা এবং ভয়কে নয়—সত্যকে আমাদের পথপ্রদর্শক করে আগামী দিনে আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে এগিয়ে যাব।
শুভ জন্মদিন, প্রিয় নেতা জনাব তারেক রহমান।
আপনার যাত্রা হোক আলোয় ভরা, আপনার প্রত্যাবর্তনে উজ্জ্বল হোক আমাদের বাংলাদেশ। মহান আল্লাহ তা’য়ালা আপনাকে নেক হায়াত দান করুন। আমিন।
মেহেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে বিশাল নির্বাচনী মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বুধবার বিকালে মেহেরপুর সরকারি কলেজ মাঠ থেকে জেলা জামায়াতের উদ্যোগে বিশাল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রাটি নেতৃত্ব দেন মেহেরপুর মুজিবনগর-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তাজউদ্দিন খান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. ইকবাল হুসাইন, জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা মহাবুব উল আলম, জেলা রাজনৈতিক সেক্রেটারি কাজী রুহুল আমিন, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুর রউফ মুকুল, সদর উপজেলা আমীর মাওলানা সোহেল রানা, মুজিবনগর উপজেলা আমীর মাওলানা খানজাহান আলী, জেলা বায়তুলমাল সম্পাদক মো. জারজিস হোসাইন, সদর উপজেলা সেক্রেটারি মাস্টার জাব্বারুল ইসলাম, মুজিবনগর উপজেলা সেক্রেটারি মো. খাইরুল বাশারসহ জামায়াতের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা এই মোটরসাইকেল র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
আয়োজকরা বলেন এই শোভাযাত্রাটি সদর উপজেলা থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক মুজিবনগর চক্র শেষ করে মেহেরপুর ডক্টর শামসুজ্জোহা পার্কে এসে শেষ হয়। প্রধান অতিথি এই র্যালিটি সাধারণ মানুষ ও নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করায় সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং আগামীতে নির্বাচন সফল করার লক্ষ্যে নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে আমরা একটা ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে আছি। একটা দোলাচল চলছে। নির্বাচনের সময় ঘোষণা হয়েছে। এখনো শিডিউল হয়নি। হবে আশা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনে কিন্তু সব শেষ নয়। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটা ডেমোক্রেসিতে ফিরে যাওয়া এবং ডেমোক্রেটিক কালচার গড়ে তোলা—এটাই সবচেয়ে বড় অভাব।’
গতকাল বুধবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এ কথাগুলো বলেন। ‘চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে বিএনপি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শনশীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজক বিএনপি ও ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘টেকসই রাষ্ট্র গড়তে হলে বিচার বিভাগ, সংসদ, গণমাধ্যম ও প্রশাসনকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করতে হবে।’
গত ১৬ বছরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হওয়া দমন–পীড়ন, গুম-খুন ও মিথ্যা মামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, বিএনপি একটি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি। তিনি জানেন না, পৃথিবীর কোনো লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এই রকম অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ন-হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে গেছে কি না। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। ২০ হাজারের মতো নেতা-কর্মী শহীদ হয়েছেন। এগুলো ইতিহাসে আনতে হবে, ডকুমেন্টে আনতে হবে। এসব ঘটনা গবেষণার মাধ্যমে নথিভুক্ত করতে নতুন করে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সংস্কার নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির দীর্ঘদিনের প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন দলটির মহাসচিব। তিনি বলেন, আজকে সংস্কারের কথা বলা হয় জোরেশোরে। অথচ তারা আগেই সংস্কারের দাবি তুলেছিলেন। সংস্কারের দাবিকে কেউ ব্যক্তিগত অর্জন হিসেবে উপস্থাপন করলে তা হবে সংকীর্ণতা।
বিএনপি বিপ্লবী দল নয়, বরং লিবারেল ডেমোক্র্যাট হিসেবে সব ধর্ম-বর্ণ-মতের মানুষকে নিয়ে ‘রেইনবো স্টেট’ গঠনের লক্ষ্যে এগোচ্ছে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, বিএনপির অবস্থান পুরোপুরি পরিষ্কার—‘উই আর লিবারেল ডেমোক্র্যাটস’।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশে একদিকে শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের রায় দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে মবক্রেসি ভায়োলেন্স চলছে। এটা কিসের আলামত, তা তিনি জানেন না। তিনি মনে করেন, এই রায়ের গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়ার জন্য একটা বিশেষ মহল বিশ্বদৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য এই কাজগুলো করে। এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে। কোনো মহল সচেতনতার সঙ্গে, অত্যন্ত ধূর্ততার সঙ্গে, চালাকির সঙ্গে এটা করার চেষ্টা করছে কি না, দেখা উচিত। কোনো মহল বিভক্তি সৃষ্টি করছে কি না, তা দেখা উচিত।
গণতন্ত্রের বাস্তব চর্চার অভাবকে দেশের দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সংকটের মূল কারণ বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মূল কথাটা হচ্ছে, ‘আমি তোমার সঙ্গে একমত না হতে পারি, কিন্তু তোমার মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে আমি আমার জীবন দিয়ে হলেও রক্ষা করব।’ দুর্ভাগ্যক্রমে এখানে অনেকে অন্যের মতকে সহ্য করতে চান না।
গণতন্ত্রের পক্ষে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থানের কথা স্মরণ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ছোট্ট বিবৃতিতেই দল ও জাতির জন্য পথনির্দেশনা আছে—‘প্রতিশোধ নয় প্রতিহিংসা নয়, আসুন আমরা গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে সবাই একযোগে কাজ করি।’ বিদেশে থাকা তারেক রহমানও গণতন্ত্রের পক্ষে জনগণকে সংগঠিত করতে ভূমিকা রাখছেন বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জিয়া পরিষদ নেতা অধ্যাপক বি এম নাগিব হোসেন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ও ‘চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে বিএনপি’ বইয়ের সম্পাদক বাবুল তালুকদার। অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিনসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করতে রাষ্ট্রের ৮ হাজার কোটি টাকা লুট করেছিলেন শেখ হাসিনা। বিনা ভোটে নির্বাচন করে টিকে থাকতে চেষ্টা করেছিলেন, কিছুই হয়নি। এত গুম–খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, ব্যাংক থেকে হরিলুট—কোনোভাবেই টিকতে পারলেন না।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়ার শহীদ খোকন পার্ক প্রাঙ্গণে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত দিনব্যাপী সেবামূলক কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিএনপি ব্যক্তিস্বার্থে রাজনীতি করে না। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি মানবতার জন্য, মানবকল্যাণের জন্য, মানবসেবার জন্য রাজনীতি করে। বিএনপির রাজনীতির মুখ্য উদ্দেশ্য মানবসেবা। বিএনপি সেই নীতি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। আমাদের বিএনপি পরিবারের কার্যক্রম তার প্রমাণ।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, রাষ্ট্র যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর লুটপাটের জায়গা হয়, সেই রাজনৈতিক দল লুটেরা, ডাকাত, দানব, রাক্ষস। এদের দ্বারা কখনো জনগণের কল্যাণ হতে পারে না। শেখ হাসিনা নিজের ব্যবসায়ী গোষ্ঠী দিয়ে চাঁদা তুলেছিলেন, ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে ৩ হাজার কোটি টাকা প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পুলিশ, গোয়েন্দা আর ৫ হাজার কোটি টাকা নিজেরা ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন। ব্যাংকে কার টাকা ছিল? জনগণের টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮০০ কোটি টাকা হাওয়া হয়ে গেল, কার টাকা ছিল? বেসিক ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকের টাকা লুট হয়ে গেল, কার টাকা ছিল?
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এ কে এম মাহবুবর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন ও আলী আজগর তালুকদার, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, জেলা বিএনপির সহসভাপতি এম আর ইসলাম, শহর বিএনপির সভাপতি হামিদুল হক চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে দিনব্যাপী বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা, রক্তদান কর্মসূচি, হুইলচেয়ার বিতরণ, শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ, কৃষকদের সার ও বীজ বিতরণ এবং শ্রমিকদের পোশাক বিতরণ করা হয়।
সরকার উৎখাত হওয়ার পর গঠিত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিভিন্ন নির্বাচনী বিধি ও আইন পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পর্যাপ্ত আলোচনা না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক জোনায়েদ সাকি। তিনি নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার এবং একটি জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি তার দলের পক্ষ থেকে এই প্রতিবাদ ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন সাকি।
তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক ট্রানজিশন এবং জাতীয় ঐকমত্যের জন্য আলাপ-আলোচনা অপরিহার্য। বক্তব্যে নির্বাচনী বিধিমালা ও আইনে পরিবর্তন আনার আগে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জোনায়েদ সাকি।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন তার যে আইন দেয়, নির্বাচনী বিধি থেকে শুরু করে যত ধরনের পরিবর্তন তারা করছেন, সেসব বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করা দরকার ছিল। এই আলোচনা করা দরকার ছিল, এই ধরনের বিধি কিংবা যে-কোনো ধরনের চেঞ্জেসের আগে।
সাকি মনে করেন, নির্বাচনসংক্রান্ত কাজ এককভাবে করা সম্ভব নয়। সব স্টেকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে আপনাদের একটি সমন্বিত মতামতটা তৈরি করা দরকার। বিশেষভাবে এই মুহূর্তে, যখন দেশ একটি ডেমোক্র্যাটিক ট্রানজিশনের মধ্যে আছে এবং যেখানে আমাদের ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য খুব জরুরি, তখন এই আলাপ-আলোচনা আরও গুরুত্বপূর্ণ।
নির্বাচন কমিশনের দীর্ঘসূত্রতা ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে তার দল নিবন্ধন পেতে যে প্রতিকূলতার শিকার হয়েছে, সেই অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে আমরা আমাদের নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিলাম, সেই নিবন্ধন তারা দেননি পলিটিক্যাল হস্তক্ষেপের কারণে। কোর্টের নির্দেশ কার্যকর হয় না। ফলে এটা একটা উদাহরণ হিসেবে বললাম যে হার্ড ওয়ার্ক।
তিনি উল্লেখ করেন, উচ্চ আদালতের রায় পাওয়ার পরেও এবং সেই রায়ের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও, গত ৫ আগস্ট সরকারের উৎখাত হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা নিবন্ধন পাননি।
একটি ভালো নির্বাচনের জন্য আইনি কাঠামোর চেয়ে পরিবেশ তৈরির ওপর জোর দেন সাকি। নির্বাচনকালীন পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে সরকার ও ইসির উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি, রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি ‘নির্বাচন পরিবেশ মনিটরিং কমিটি’ গঠনের প্রস্তাব করেন তিনি। এই কমিটি সংঘাতের ঘটনা দ্রুত সমাধান করতে পারবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যখন সহযোগিতা করেছে তখনই কেবল এই দেশে ভালো নির্বাচন হয়েছে। তিনি এই মুহূর্তে বাংলাদেশকে একটি জবাবদিহিমূলক, ক্ষমতার ভারসাম্যপূর্ণ সংগ্রহ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি একটি ‘কনস্টিটিউশনাল কমিশনের মাধ্যমে’ নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের সাংবিধানিক পরিবর্তনের পক্ষে মত দেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে ছোট ও নতুন দলগুলোর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে কয়েকটি বিধির বাস্তবসম্মত পরিবর্তনের দাবি জানান জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, প্রতীক অবশ্যই স্পষ্টরূপে বড়ো আকারে ছাপতে হবে, বিশেষত নতুন দলগুলোর জন্য। জোট গঠন করে কোনো দল জোটগত প্রতীকে নির্বাচন করতে চাইলে, সেই সুযোগ রাখা দরকার। এছাড়া গণভোট এবং জাতীয় নির্বাচনের জন্য আলাদা বুথ ও গণনা পদ্ধতি দরকার এবং কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার ও ব্যাকআপে সেনা সদস্যের নির্দিষ্ট সংখ্যা জনসম্মুখে জানানো দরকার।
তিনি আরও জানান, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি মোবাইল ফাইন্যান্সিং সার্ভিস (এমএফএস) অ্যাকাউন্ট লেনদেনের তথ্যও নির্বাচন কমিশনকে জমা দিতে হবে। ইউনিয়ন/ওয়ার্ড প্রতি ফেস্টুন/পোস্টারের সংখ্যা নির্ধারণের নিয়ম পুনর্বিবেচনা করা দরকার, কারণ এটি বাস্তবসম্মত নয় এবং অসম প্রতিযোগিতা তৈরি করে। এছাড়া প্রচারণার জন্য লিফলেট যথেষ্ট নয়। প্রতিটি ইউনিয়নে/ওয়ার্ডে কমপক্ষে একটি মাইক ব্যবহারের সুযোগ এবং পোস্টার/বিলবোর্ড ব্যবহারের নিয়ম পুনর্বিবেচনা করা দরকার। পাশাপাশি, পোস্টার ব্যাপকভিত্তিক ছাপা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে, নির্বাচন কমিশন নির্দিষ্ট জায়গায় পোস্টার লাগানোর স্থান তৈরি করবে এবং দল প্রতি নির্দিষ্ট সংখ্যক পোস্টার বরাদ্দ থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে গফরগাঁও উপজেলা, পৌর ও পাগলা থানা বিএনপি ও তার সকল অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে পৌরশহরের জামতলা মোড়ে এ জনসমাবেশ আয়োজন করে।
পাগলা থানা বিএনপির সাবেক সদস্য আমির উদ্দিন পালোয়ানের সভাপতিত্বে ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক দিদারুল ইসলাম দিদারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ -১০ (গফরগাঁও -পাগলা) আসনের ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং জেলা দক্ষিণ বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক, বর্তমানে সদস্য ও কারানির্যাতিত নেতা এ্যাড. আল ফাতাহ খান।
তিনি বলেন, দুর্নীতি, দুঃশাসন ও বৈষম্যমুক্ত রাষ্ট্র গঠনে তারেক রহমানের বিকল্প নেই।
বিগত সময়ে দলের দুর্দিনে আমি নির্যাতিত নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ঐকবদ্ধ ছিলাম। আগামীতেও দল ও জনগণের প্রয়োজনে নিজেকে বিলিয়ে দেব।
এসময় এ্যাড. আল ফাতাহ খান স্থানীয় জনগণের হাতে হাতে ৩১ দফা কর্মসূচি সম্বলিত লিফলেট তুলে দেন।
জনসমাবেশের আরও বক্তব্য রাখেন, পাগলা থানা বিএনপির সাবেক সদস্য আমির হোসেন, শাহ নেওয়াজ বাচ্চু, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য সচিব আব্দুর রউফ, পাগলা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের
সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোখলেছুর রহমান, যুগ্ম আহবায়ক ডাঃ ইউসুফ, পাগলা থানা তাঁতি দলের আহবায়ক মনির দপ্তরি, পাগলা থানা মৎস্যজীবীদলের আহবায়ক মোঃ সাদির বেপারী, পাগলা থানা কৃষক দলের আহবায়ক দ্বিন ইসলাম দিলি, পাগলা থানা ছাত্র দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোজাহিদুল কবির সেলিম, সদস্য সচিব সুখেন আকন্দ, জেলা দক্ষিণ যুবদল সদস্য উজ্জ্বল আহমেদ প্রমুখ।
শেরপুরের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেত্রী ও শেরপুর-১ সদর আসনের বিএনপি মনোনীত এমপি প্রার্থী ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা বলেন, আমি পালিয়ে যাব না। ২০১৮ সালে আমার ওপর হামলা করা হয়ে ছিল। গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। আমার মাসহ আমার লোক ওপর হামলাসহ পুলিশি হয়রানি করা হয়েছে। আমি ইচ্ছে করলে পালিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু যায়নি, উল্টো আমি প্রতিবাদ করেছি, প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। আমার নেত্রী খালেদা জিয়া জেল খেটেছেন, ৬-বার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন। স্বামী-সন্তান হারিয়েছেন। তবুও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি। আমরা খালেদা জিয়ার কর্মী আমরাও পালিয়ে যেতে পারি না। ডা. প্রিয়াঙ্কা বলেন, আমি এমপি হলে শেরপুর-১-এর জনগণ ও এলাকার উন্নয়ন করব। ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা গত দুই দিন শেরপুর পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভায় এসব কথা বলেন।
এ সময় শেরপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, সদস্য সচিব অধ্যক্ষ এবিএম মামুনুর রশীদ পলাশ, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ মো. হযরত আলী, সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম, শেরপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান, সদস্য সচিব জাফর আলী, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম স্বপন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আক্রামুজ্জামান রাহাতসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গাজীপুরের টঙ্গীর নন্দিত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সিরাজুল ইসলাম সাথীর বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল। তিনি টঙ্গী পূর্ব থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন। গত সোমবার দিবাগত কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক কাজী আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলীয় নীতি ও সংগঠন পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বহিষ্কৃত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সিরাজুল ইসলাম সাথীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করে তাকে সপর্দে বহাল করা হয়েছে।
এদিকে বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারে খবর ছড়িয়ে পরলে টঙ্গীজুড়ে আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনন্দন জানিয়ে সরব হয়ে উঠেন তার কর্মী সমর্থক ও এলাকাবাসী।
নেতা-কর্মীদের দাবি, দেরিতে হলেও সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কোনো অপরাধ না করেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মিথ্যা অপবাদে কারাবরণ করতে হয়েছে নন্দিত এই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার। অবশেষে দল তার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তারা।
এবিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম সাথী বলেন, আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে রাজনীতি করি। আমরা নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের দিকনির্দেশনায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করে যেতে চাই।
বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার হওয়ায় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।