দেশে সবচেয়ে ক্ষতিকর মাদক মিয়ানমার থেকে ঢুকছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। দেশটির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে এই মাদক নিয়ন্ত্রণে শতভাগ সফল হওয়া যাচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সচিবালয়ে আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সেক্রেটারি রিপোর্টার্স ফোরামের সংলাপে অংশ নিয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, মাদক আমরা তৈরি করি না। বাইরে থেকে মাদক আসে। সবচেয়ে ক্ষতিকর মাদক আসে মিয়ানমার থেকে।
মন্ত্রী এসময় আরও বলেন, ভারত থেকে ফেনসিডিল আসে। তবে এটা নিয়ন্ত্রণে ভারতের সঙ্গে আমরা যৌথভাবে কাজ করছি। মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে শতভাগ সফল হতে পারছি না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশ সার্ভিস থেকে আমরা ডোপ টেস্ট শুরু করেছি। সরকারি কর্মকর্তাদের ডোপ টেস্ট প্রবর্তনের চেষ্টা করছি। মূল উদ্দেশ্য হলো মাদকের ব্যবহার কমিয়ে আনা।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এসময় নিজের মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলোও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি পত্রিকার সুরে সুর মিলিয়ে ‘চাইল্ড এক্সপ্লয়টেশনের’ মতো ঘৃণ্য কাজকে নির্লজ্জ সমর্থন দিয়েছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে যা আওয়ামী লীগের প্রতি অন্ধবিদ্বেষ ও আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে কাদের আরও বলেন, ‘বিএনপি কখনো এদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। যারা স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও দেশের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, প্রকৃতপক্ষে তাদের মানসিকতা এখনো পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দি! যখনই তারা ক্ষমতায় এসেছে জনগণ ও দেশের উন্নয়নের জন্য তারা কোনো কাজ করেনি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নিরবচ্ছিন্নভাবে এ দেশের জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। একসময়ের ক্ষুধা-দারিদ্র্য মঙ্গা ও দুর্ভিক্ষপীড়িত বাংলাদেশ আজ সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্যের ফলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় এক বিশেষ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে অর্জিত সক্ষমতার কারণেই দেশে কেউ আর না খেয়ে দিনাতিপাত করে না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির সময় দেশের অবস্থা কী ছিল মির্জা ফখরুল কী ভুলে গেছেন? তাদের শাসনামলে উত্তরবঙ্গে মঙ্গাপীড়িত মানুষ না খেতে পেরে কীভাবে ধুঁকে ধুঁকে মারা গেছে! বঙ্গবন্ধুকন্যার বহুমাত্রিক পদক্ষেপের ফলে দুর্বিষহ ক্ষুধার সেই অভিশপ্ত অন্ধকার থেকে মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশ। মির্জা ফখরুলরা তাদের সময়ের দুঃসহ ইতিহাস আড়াল করার জন্যই সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘করোনা মহামারির অভিঘাতের মধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি একটি গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যার প্রকোপে সারা পৃথিবীতে আশঙ্কাজনক হারে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল্যস্ফীতির চাপে বাংলাদেশের জনগণও কিছুটা কষ্টে আছে। মানুষের এই কষ্ট লাঘবের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের জনবান্ধব ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির পাশাপাশি সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সরকার যখন বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা করে জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে, তখনই সংকটকে পুঁজি করে কতিপয় চিহ্নিত মহল সরকারের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেছেন, ‘আমাদের সংবিধানের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে, তারা জাতীয় শত্রু। এ নিয়ে (সংবিধানের বিরুদ্ধে কথা বললে) যে আইন রয়েছে, সেই আইনে তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হয় না? যারা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব দেশের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলে, সেই আইনে কেন তাদের গ্রেপ্তার করা হয় না? কেন তাদের সেই আইনে শাস্তি দেয়া হয় না? এটাই আজ আমাদের জিজ্ঞাসা। সেই আইন যথাযথ প্রয়োগ করে জনগণের সামনে স্বাধীনতাবিরোধীদের শাস্তি দেয়া হোক।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে আমু এসব কথা বলেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আমরা ১৪ দল স্বাধীনতার পক্ষে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে এবং বঙ্গবন্ধু রচিত সংবিধান পক্ষে কাজ করে আসছি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবিচলভাবে জাতীয় চার মূলনীতির ভিত্তিতে আমরা এগিয়ে যাবো।’
আমির হোসেন আমু আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার পর কে ক্ষমতায় এল? খন্দকার মোস্তাক। আওয়ামী লীগ নেতা, অর্থাৎ একটা ধারণা দেয়া হলো আওয়ামী লীগপন্থিরাই ক্ষমতায় আছে। তার আড়াই মাস পর ক্ষমতায় এল জিয়াউর রহমান। পরিচয় কী? মুক্তিযোদ্ধা। কর্মকাণ্ড কী? কর্মকাণ্ড হচ্ছে অমুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল্যবোধকে হত্যা করে এই দেশে পাকিস্তানী রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা। সেই লক্ষ্যে সেদিন ১৫ আগস্ট সংঘটিত করে এদের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।’
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন— ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাতীয় পার্টি জেপির মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে সিকদার, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন ও ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন।
প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ও সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তারসহ গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি। বৃহস্পতিবার জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এক বিবৃতিতে উদ্বেগ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘জনগণকে সহিংসতা থেকে বা বেআইনি আচরণ থেকে রক্ষা করতে না পারাটা একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। আরও একটা বৈশিষ্ট্য যা ব্যর্থ রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তা হলো- সরকার কর্তৃক সংবিধান, আইন-কানুন, বিধি-বিধান অহরহ লঙ্ঘন করা; মিথ্যা তথ্য, দুর্নীতি এবং অর্থপাচারের কারণে সরকারি দলের ওপর সে আইন প্রয়োগ না করে, ভিন্ন মতের ওপর অব্যাহতভাবে আইনের অপপ্রয়োগ করা। এসবই গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের ওপর আক্রমণের শামিল।’
সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের ৩০ ঘণ্টা পর আদালতে হাজির করা সংবিধানের সরাসরি লঙ্ঘন। সরকার ক্ষমতার দম্ভে সংবিধান মেনে চলাকে একেবারেই অপ্রয়োজনীয় করে তুলেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তার অজুহাতে গ্রেপ্তারের মাত্রা ও ব্যপ্তি আরও দৃশ্যমান হওয়ায়, আভ্যন্তরীণ ও ভূ-রাজনীতিতে সরকার বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলেন বিবৃতি দাতারা।
বিবৃতিতে নেতারা অবিলম্বে প্রথম আলোর সম্পাদকসহ অন্যান্যদের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মুক্তির দাবি জানান।
প্রতিবারের মতো এবারও পবিত্র রমজান মাসে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে এ ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে কূটনীতিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছে বিএনপি। ইফতার মাহফিলে রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, দলের জ্যেষ্ঠ নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেবেন।
এক-এগারোর কুশীলবরা দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘এক-এগারোর কুশীলবরা এবং বিএনপি একজোট হয়ে ষড়যন্ত্রের পাঁয়তারা করছে। কিন্তু এতে কোনো লাভ হবে না, বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় না। বাংলাদেশে সেটি কখনো হবে না।’
বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জিল্লুর রহমান পরিষদ আয়োজিত এই সভায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবং প্রয়াত জিল্লুর রহমানের মেয়ে তানিয়া রহমান বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।
হাছান মাহমুদ প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘এক-এগারোর পর দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার ক্ষেত্রে প্রয়াত জিল্লুর রহমান অসাধারণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হয়েছিলেন বলেই অনেক চাপ, রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে শেখ হাসিনাকে মুক্ত করার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সর্বোপরি দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন। সংকটকালে ধৈর্য্যশীল ও অবিচল থেকে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার শিক্ষা জিল্লুর রহমানের কাছ থেকে আমরা পেয়েছি। দেশের ইতিহাসে, দেশের রাজনীতির ইতিহাসে একজন ভালো মানুষ এবং অজাতশত্রু রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকবেন।’
বিএনপির উদ্দেশ্যে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এক-এগারোর কুশীলবরা আবার দেশে-বিদেশে সক্রিয় হয়েছে। তারা আবার বিশেষ ধরনের সরকারের স্বপ্ন দেখছে। বিএনপিও তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। কারণ বিএনপি বুঝতে পেরেছে, নির্বাচনে তাদের কোনো আশা নাই। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সর্বশক্তি নিয়ে তারা সিট পেয়েছিল ২৯টা। ২০১৪ সালে নির্বাচন থেকে পালিয়ে গিয়েছিল, ২০১৮ সালের নির্বাচনে ডান-বাম, অতিডান-অতিবাম-তালেবান সবাইকে নিয়ে, ড. কামাল হোসেনের মতো মানুষকে হায়ার করেও মহিলা আসনসহ সিট পেয়েছিল মাত্র ৭টি। গত ১৪ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন অগ্রগতি হয়েছে এতে জনগণ তাকে যে আবার নির্বাচিত করবে। বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ পোড়ানোর অপরাজনীতির কারণে মানুষ যে তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সেটিও তারা অনুধাবন করতে পেরেছে।’
বিএনপি দেশে গণ্ডগোল লাগাতে চায় উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এক-এগারোর কুশীলবরা, বিএনপি আর বিশেষ পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিসহ সবাই এক জোট হয়ে দেশে একটি গণ্ডগোল লাগানোর জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সক্রিয় হয়েছে, কিন্তু সেটি বাংলাদেশের মানুষ আর কখনো হতে দেবে না। আগামী নির্বাচন যথাসময়ে এবং সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধিনে অনুষ্ঠিত হবে। সমস্ত সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশের মতো আমাদের দেশেও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন, তার সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে।’
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্মৃতিচারণ করেন এবং তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন। তানিয়া রহমান তার বাবার আত্মার শান্তির জন্য সবার কাছে দোয়া চান। জিল্লুর রহমান পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামান খোকার সভাপতিত্বে এবং রোকন উদ্দীন পাঠানের সঞ্চালনায় আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, অ্যাডভোকেট এ বি এম বায়েজিদ, মুক্তিযোদ্ধা হারুন-অর-রশিদ বীরপ্রতীক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মানিক লাল ঘোষ সভায় বক্তব্য দেন।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে কোনো আলোচনায় যাবে না বিএনপি। দলের নেতারা মনে করেন, নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পযন্ত ইসির সঙ্গে আলোচনায় যাওয়া অর্থহীন। এ কারণে ইসির সংলাপের আহবানে সাড়া দেয়নি দলটি।
রাজধানীর গুলশানে বুধবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের কাযালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে দলের পক্ষ থেকে এই অবস্থানের কথা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গত মঙ্গলবার দুপুরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সভা হয়। সে সভায় চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইসির সঙ্গে কোনো আলোচনায় যাবে না বিএনপি- এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ভার্চুয়ালি হওয়া এ সভায় দলের পক্ষ থেকে সাতটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি মনে করে, বর্তমানের মূল রাজনৈতিক সংকট নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কোন আলোচনা অথবা সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না এবং তা হবে অর্থহীন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের পক্ষে বিএনপি মহাসচিবকে পাঠানো চিঠির বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় আলোচনা হয়। সে চিঠিতে বিএনপিকে আনুষ্ঠানিক না হলেও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়।
এ নিয়ে দলের পক্ষ থেকে সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ‘যেহেতু মূল রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানের কোন সম্ভাবনা নির্বাচন কমিশন প্রস্তাবিত আলোচনা ও মতবিনিময়ে সম্ভব নয় সে কারনে বিএনপি এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারছে না। পত্র পাঠানোর জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানানো হয়।’
বিএনপি মনে করে, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে যে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয়। ইচ্ছা থাকলেও নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে অনুষ্ঠানের ইসির ক্ষমতা নেই।
বিএনপির সভায় নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আলোচনা হয়। বিএনপি মনে করে, এই জনবিচ্ছিন্ন সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সরকারি দলের ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ও এক শ্রেণির কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণেই নিত্যপণ্যের দাম কমানোর কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। অথচ সরকারের মন্ত্রী এবং শাসক দলের নেতারা জিনিসপত্রের দাম জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই আছে বলে জনগণের সঙ্গে মসকরা ছাড়া আর কিছু নয়। সরকার এ ব্যাপারে উদাসীন।
বিএনপি ইতিমধ্যে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছে। সভায় আগামী ১ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত মহানগর, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে গৃহীত মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি যথাযথভাবে পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল শাখাকে অনুরোধ জানানো হয়।
গত ১৭ মার্চ রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ই-মেইল সার্ভার দখলে নেয় হ্যাকাররা। বিষয়টি নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় আলোচনা হয়। এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিএনপি নেতারা মনে করেন, ডিজিটাল সিকিউটিরি মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সাইবার নিরাপত্তা রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান গুলোর আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে চূড়ান্তভাবে এ সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সাইবার আক্রমণের কবলে পড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির ঘটনা এখনও পর্যন্ত কোন সুরাহা করতে না পারা সরকারের ব্যর্থতা। এতে কোন প্রভাবশালী মহলের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় নওগাঁয় র্যাবের হেফাজতে ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিনের (৪৫) মৃত্যুর ঘটনায় নিন্দা জানানো হয়। বিএনপি মনে করে, সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে একজন নারীকে কোন সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়াই তুলে নেয়া এবং ফলশ্রুতিতে মৃত্যু আবারও প্রমাণ করে, এই সরকারের অধীনে কর্মরত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেই চলেছে। এ ঘটনা অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য জনসম্মুখে উপস্থাপনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি নেতারা।
যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিকদের দেশে বসবাসকারী নিকট আত্মীয়দের ওপর হামলা ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলায় ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকার নাইনসায়ের খান সামির ভাই মাহিনুর আহমেদ খানকে গত ১৭ মার্চ সাদা পোশাকধারী লোকেরা মারাত্মকভাবে কুপিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বিএনপি মহাসচিব।
স্থায়ী কমিটির সভা সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন আগেও বিফলে গেছে, আবারও বিফলে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে সরকারি অনুদানে নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘মাইক'র বিশেষ প্রদর্শনী অনুষ্ঠান শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হবে- বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হানিফ বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এখন অনেক সচেতন। তারা ইতিহাস জানে। তারা জানে এই বিএনপি একাত্তরের পরাজিত শক্তি পাকিস্তানের দোসর হিসেবে কাজ করছে। তারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করে না, দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান। আন্দোলন, গণ-অভ্যুত্থান করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো যাবে না। কারণ তারা সরকারের পতন ঘটানোর ক্ষমতা রাখে না।’
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণই মূলত স্বাধীনতার ডাক বা ঘোষণা। কারণ ভাষণের পরই গোটা বাঙালি জাতি যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছিল।’
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে কেন্দ্র করে নির্মিত 'মাইক' সিনেমার প্রশংসা করে হানিফ বলেন, ‘সিনেমাটি অসাধারণ হয়েছে। পঁচাত্তরের পরে ইতিহাসকে উল্টা পথে চলানোর চেষ্টা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর নাম-নিশানা মুছে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। যার কারণে প্রজন্ম ভুল ইতিহাস জানত সঠিক ইতিহাস জানত না। মাইক সিনেমায় সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। সিনেমাটি ইতিহাসের মাইলফলক, ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।’
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, কবি অসীম সাহা, 'মাইক' চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী তানভিন সুইটি, অভিনেতা নাদের চৌধুরী, শিশুশিল্পী সানজিদ রহমান খান, আলী আবদুল্লাহ দাইয়ান ভূঁইয়াসহ চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট কলাকুশলীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে খুব শিগগিরই গণ-অভ্যুত্থান হবে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘সরকারকে হঠাতে হলে একটি গণ-অভ্যুত্থান প্রয়োজন আছে। গণ-অভ্যুত্থান তখনই সফল হয় যখন সব পেশাজীবী সংগঠন এবং জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়। এই গণ-অভ্যুত্থান অতিদ্রুত বাংলাদেশে হবে। এই গণ-অভ্যুত্থানে সবাই যার যার অবস্থান থেকে অবদান রাখবেন।’
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত ‘স্বাধীনতার ৫২ বছর ও বিপর্যস্ত স্বাস্থ্যব্যবস্থা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় খন্দকার মোশাররফ এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই সরকার দেশের কোনো কিছুই মেরামত করতে পারবে না। গণতন্ত্র যারা হত্যা করেছে, তারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে পারে না। অর্থনীতিকে যারা হত্যা করেছে, তারা কখনো অর্থনীতি মেরামত করতে পারবে না। যারা স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করেছে, তারা কখনোই নতুনভাবে স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে সাজাতে পারবে না। অতএব তাদের যত দ্রুত বিদায় করা যায় তত দ্রুত জাতি এবং দেশের কল্যাণ হবে।’
বিগত ১৪ বছরে স্বাস্থ্যব্যবস্থার ব্যাপক বিপর্যয় হয়েছে উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, স্বাস্থ্য খাতের এ দুরবস্থা হয়েছে মূলত দলীয়করণের ফলে। এখানে সাধারণ মানুষ সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কেউ কেউ আবার দলীয় পরিচয় দিয়ে যা ইচ্ছা তাই করে। এতে সাধারণ মানুষ তাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না। সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই।
সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারদের প্রাইভেট চেম্বারের বিষয়ে নিন্দা জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘একটা সার্কুলার বেরিয়েছে যে, আগামী ৩০ মার্চ থেকে সরকারি হাসপাতালে বিকেল ৩টার পর থেকে ডাক্তাররা প্রাইভেট চেম্বার করতে পারবে। সরকারের দলীয় লোকদের পকেট ভারী করার জন্য সরকার এ ব্যবস্থা নিয়েছে। এতে জনগণের কোনো কাজে আসবে না।’
ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী ও ড্যাবের মহাসচিব ডা. মো আব্দুস সালাম।
বিএনপি জন্মলগ্ন থেকে আদর্শগতভাবে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্মের মূল চেতনা-বিরোধী রাজনীতি করে আসছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাম্প্রতিক বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে এই বিবৃতি দেন তিনি।
‘আওয়ামী লীগ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রেতাত্মা’- মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটি শতাব্দীর সেরা কৌতুকই শুধু নয়, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তাদের (বিএনপি) চরম বিদ্বেষ ও আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নেতারা এমন অসংলগ্ন প্রলাপ বকছে। মনে হয় রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তাদের বিবেক-বুদ্ধিই শুধু হারায়নি, চক্ষুলজ্জাও হারিয়ে গেছে।’
কাদের বলেন, ‘বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের ইতিহাসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ইতিহাস অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত ও আড়াই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে এ দেশের স্বাধীনতা অর্জন করে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মির্জা ফখরুলের এই ধরনের অশালীন ও ধৃষ্টতাপূর্ণ মন্তব্য শুধু আওয়ামী লীগের সুমহান ঐতিহ্যকে অসম্মানিত করেনি বরং ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগকেও অপমানিত করেছে। একই সঙ্গে তিনি সমগ্র জাতি ও জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তার রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। মির্জা ফখরুলের ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য সমগ্র জাতির অনুভূতিতে চরমভাবে আঘাত হেনেছে। আমরা এ বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ঐতিহাসিক সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রণীত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান।’
কাদের আরও বলেন, ‘পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে যে নীতি-আদর্শ শক্তি ও প্রেরণা জুগিয়েছে, তা এ রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে সংবিধানে প্রতিফলিত হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা।’
“মির্জা ফখরুল কিছুদিন আগে মন্তব্য করেছিলেন- ‘পাকিস্তান আমলে ভালো ছিলাম’। তাদের পাকিস্তান-প্রীতি নতুন কোনো বিষয় নয়। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান এ দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূ-লুণ্ঠিত করে গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে পাকিস্তানি ভাবাদর্শে বাংলাদেশকে পরিচালিত করেছিল”, যোগ করেন কাদের।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ধারাকে পরিপুষ্ট করেছিল। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে খালেদা জিয়া একইভাবে পাকিস্তানি ভাবাদর্শে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। ক্ষমতা দখলের নীলনকশা বাস্তবায়নে ১৯৯১ সালে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের কাছ থেকে অর্থ সহায়তা নিয়েছিল বলে কয়েক বছর আগে সে দেশের আদালতে সংস্থাটির তৎকালীন প্রধান জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছিল।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এক জেনারেল আসিফ নাওয়াজ জানজুয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া শোকবার্তা পাঠিয়ে জাতির ঐতিহাসিক সংগ্রামের চেতনার মূলভিত্তিতে আঘাত করেছিলেন। বিএনপি চেতনা ও মননে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তার প্রতিভূ পাকিস্তানকে ধারণ করে।’
সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত পাকিস্তানের গণমাধ্যমেও বাংলাদেশ ও এদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় মিলিটারি ডিক্টেটর জিয়াউর রহমানের পকেট থেকে পাকিস্তানি দর্শনের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত বিএনপি, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে এখনো মানসিকভাবে মেনে নিতে পারে নাই। এটা তাদের মানসিক দৈন্য।’
কাদের আরও বলেন, ‘আজকে যখন দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছে, তখনো বিএনপি নেতারা স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী সমগ্র দেশবাসী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ ঐক্যবদ্ধ এবং তারা আগামীতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে, ইনশাআল্লাহ।’
সাংবিধানিক ধারা মেনেই যথাসময়ে জাতীয় নির্বাচন হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনমুখী দল অভিহিত করে রওশন বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাতীয় পার্টি সব নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। পার্টি আগামী নির্বাচনেও অংশ নেবে।’
সোমবার রাজধানীর গুলশানে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা ও ইফতার অনুষ্ঠানে এক লিখিত বক্তব্যে রওশন এরশাদ এসব কথা বলেন।
নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে মাঠপর্যায়ে দলকে সংগঠিত করার আহ্বান জানিয়ে রওশন এরশাদ বলেন, ‘এখন থেকেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিজ নিজ আসনে গণসংযোগ শুরু করতে হবে। দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
জাতীয় পার্টিতে কোনো বিভেদ নেই উল্লেখ করে রওশন বলেন, ‘এরশাদের রেখে যাওয়া নির্দেশনামতো পার্টি চলবে। যারা তার নির্দেশনা মানবেন না, তারা পার্টি ও নিজের ক্ষতি ডেকে আনবেন।’
রওশন এরশাদ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চেষ্টায় উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী পবিত্র রমজানের সিয়াম সাধনাকে তোয়াক্কা না করে সব নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করে চলছেন। দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতি নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন-জীবিকা দুর্বিষহ করে তুলছে। তাদের জন্য দেশের গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা আর উন্নয়নের উজ্জ্বলতা ম্লান হয়ে পড়ছে। এতে করে স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মাহুতি দানকারী শহীদদের আত্মা কষ্ট পাচ্ছে। সর্বগ্রাসী দুর্নীতি এখন ক্যানসারের রূপ নিয়েছে।’
আলোচনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন দলের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য দেলোয়ার হোসেন খান, মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, মসিউর রহমান রাঙা, কাজী মামুনুর রশীদ, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, গোলাম কিবরিয়া, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাজমা আক্তার, এস এম ফয়সাল চিশতী, হাবিবুল্লাহ বেলালী, উপদেষ্টা রওশন আরা মান্না, সাবেক উপদেষ্টা রফিকুল হক, জিয়াউল হক মৃধা, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমনই এক দলের মহাসচিব যে দলের সর্বশেষ সম্মেলন কবে হয়েছে সেটি বোধ হয় তিনি নিজেই ভুলে গেছেন। যে দলের অভ্যন্তরেই গণতন্ত্র নেই তারা আবার দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে কীভাবে? বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা ও আন্দোলন জাতির সঙ্গে পরিহাসের শামিল
সোমবার এক বিবৃতিতে কাদের আরও বলেন, ‘বন্দুকের নলের মুখে অবৈধ ও অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে গঠিত অবৈধ দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুখে গণতন্ত্র এবং ভোটাধিকারের কথা ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া কিছু নয়। যে দলের প্রতিষ্ঠাতা অসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী সামরিক স্বৈরশাসক, যে দলের প্রতিষ্ঠা হয়েছে মিলিটারি ডিক্টেটরের পকেট থেকে, সেই দল দেশের জনগণকে কী গণতন্ত্র দেবে?’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অবৈধভাবে সেনা প্রধান, প্রধান সামরিক আইন কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রপতির পদ দখল করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য ১৯৭৭ সালে হ্যাঁ-না ভোটের নামে দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিলেন স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান। ১৯৭৮ সালের ৩ জুন একইসঙ্গে সেনা প্রধানের দায়িত্বে থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আয়োজন করে গণতন্ত্রকামী জনগণের সঙ্গে নির্মম তামাশা করেছিলেন স্বৈরাচার জিয়া। যদি মির্জা ফখরুলকে প্রশ্ন করি, স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান কোন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল?’
কাদের আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের ক্ষমতায়ন ও গণতান্ত্রিক চেতনাকে সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার গণতন্ত্রকে ক্রমান্বয়ে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম ও ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে এ দেশের জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সে ভোটাধিকার সুরক্ষা দেয়ার লক্ষে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগই সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করে আসছে। আমরা প্রত্যাশা করি, অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে এবং জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই রাষ্ট্রক্ষমতা পরিবর্তন হবে।’
যারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তি দেয়া হয়নি, তাই দেশে আবারও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘মুক্তিযোদ্ধা গণ সমাবেশে’ বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ সমাবেশের আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নওগাঁয় র্যাব এক নারীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর তার মৃত্যু হয়েছে। ডাক্তার বলছে, নিহত ওই নারীর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যে র্যাবের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, সেই র্যাবের বিরুদ্ধে আবারও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠছে। নিষেধাজ্ঞার পর নাটকীয়ভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমে গিয়েছিল, এখন তা আবার ঘটতে শুরু করছে। কারণ যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’
পাক হানাদার সরকারের সঙ্গে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো পার্থক্য নেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে যে সরকার অধিষ্ঠিত তা একাত্তরের পাক বাহিনীর প্রেতাত্মা। তারা সাধারণ মানুষের কথা ভাবে না। স্বাধীনতার পর বাহাত্তর সালেই এই আওয়ামী লীগের আসল মুখোশ খুলে গিয়েছিল।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মনে করে তারা একাই যুদ্ধ করেছে। এ কারণে তারা শেরেবাংলা একে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীদের নাম স্মরণ করে না। স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের নাম তো উচ্চারণই করতে চায় না, বরং তাকে আরও দোষ দেয়।’
সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাকে চিবিয়ে খাচ্ছে। স্বাধীনতা বাংলার মানুষের কাজে লাগছে না। লেবুর হালি ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচের কেজি ৩০০ টাকা। ধনী বাংলাদেশকে গরিব বানিয়ে কিছু মানুষ বিদেশে নতুন করে ধনী হওয়ার চেষ্টা করছে। যেদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থাকবে না সেদিন বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে যাবে।’
মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ নোমান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামসহ অনেকে।
জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ আর খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের পেছনে ফেলে দিয়ে রাজাকারদের প্রতিষ্ঠিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে বিআইডব্লিউটিএ কার্যালয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু একটি সুখি, সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। যেখানে স্বাধীনতার সুখ থাকবে। স্বাধীনতার সুখ প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু সাড়ে তিন বছরে দেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। ঠিক তখনই শুরু হয় ষড়যন্ত্র।’
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা যখনই সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করেছি তখনই আমাদের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে।’
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল বলেই আপামর বাঙালি জাতি লাভবান হয়েছিল। আমরা একটি জাতিসত্ত্বার পরিচয় পেয়েছিলাম। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর লাভবান হয়েছিল স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার, আলবদর-আলশামসরা। আজকে জাতীয় রাজনীতিতে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুলরা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা না করলে এসব পরিবারের জাতীয় পর্যায়ে আসার কোনো সুযোগ ছিল না। জাতীয় পর্যায়ে আসতো মুক্তিযোদ্ধারা; মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা।’
নৌ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের পেছনে ফেলে দিয়ে রাজাকারদের প্রতিষ্ঠিত করেছে জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া। সেই জায়গায় বাংলাদেশ আর কখনও ফিরে যাবে না। কারণ নতুন প্রজন্ম এখন বাংলাদেশের মূল ইতিহাস জানতে পেরেছে। তারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নাটক, চলচ্চিত্র নির্মাণ করছে, মুক্তিযুদ্ধের শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। পিছিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক, নাট্যকার ও অভিনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আরও বক্তব্য দেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) দেলোয়ারা বেগম, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মো. নিজামুল হক, বিআইডব্লিউটিসি'র চেয়ারম্যান এস এম ফেরদৌস আলম এবং বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা।