বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
৯ পৌষ ১৪৩২

‘৭৫ বছরে আওয়ামী লীগের চ্যালেঞ্জ সাম্প্রদায়িক শক্তি’

ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২২ জুন, ২০২৪ ১৪:৪৭

৭৫ বছরে আওয়ামী লীগের চ্যালেঞ্জ সাম্প্রদায়িক শক্তি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

আগামীকাল রোববার আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে আজ শনিবার (২২ জুন) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশের প্রস্তুতি দেখতে গিয়ে গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে সবাই প্রস্তুত। গতকাল থেকেই উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন আওয়ামী লীগের হাত ধরেই। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন এ দেশের স্বাধীনতা। আর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্জন এ দেশের উন্নয়ন। বিজয়কে এখনো সুসংহত করতে পারিনি, সাম্প্রদায়িকতা এখনো বিজয়ের প্রধান অন্তরায়। ৭৫ বছরের আওয়ামী লীগের চ্যালেঞ্জ সাম্প্রদায়িক শক্তি।

কাদের বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বার্তা হলো নতুন প্রজন্ম এবং নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন। রাজনীতি মানুষের জন্য, মানুষের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ছিল, আছে এবং থাকবে।

রাজনীতিবিদদের দুর্নীতিবাজ বানানোর জন্য অপতৎপরতা চালাচ্ছে একটি মহল এমন দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, অসৎ ব্যবসায়ী ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স থাকবে।


তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে নতুন রাজনীতির সূচনা

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
আপডেটেড ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০২:৩৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশের সমকালীন রাজনীতির আকাশে দীর্ঘ আঠারো বছর ধরে যে শূন্যতা, হাহাকার আর দীর্ঘশ্বাসের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছিল, আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) তা এক বিশাল প্রত্যাশার আলোকবর্তিকা হয়ে উদিত হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, যাকে দীর্ঘ প্রায় দুই দশক ধরে প্রতিহিংসার রাজনীতি আর ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার বেড়াজালে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল, তিনি আগামী ২৫ ডিসেম্বর বীরের বেশে ফিরছেন তার প্রিয় মাতৃভূমিতে। এই দীর্ঘ প্রবাসজীবন কিংবা নির্বাসন কেবল তার ব্যক্তিগত লড়াই ছিল না, বরং তা ছিল বাংলাদেশের লুণ্ঠিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার এক সুদীর্ঘ ও কণ্টকাকীর্ণ সংগ্রাম।

দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারা অন্তরীণ রেখে এবং তারেক রহমানকে ভৌগোলিকভাবে দূরে ঠেলে দিয়ে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার আমলে এদেশের জাতীয়তাবাদী চেতনাকেই সমূলে উৎপাটন করতে চেয়েছিল। কিন্তু ইতিহাসের অমোঘ নিয়ম এই যে, সত্য ও ন্যায়কে সাময়িকভাবে অবদমিত রাখা গেলেও শেষ পর্যন্ত তা বিজয়ী বেশে আত্মপ্রকাশ করে।

তারেক রহমানের এই দীর্ঘ অনুপস্থিতিকালে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ছিল অত্যন্ত বন্ধুর এবং অন্ধকারাচ্ছন্ন। ক্ষমতার লালসায় কিংবা রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের নজিরবিহীন ভয়-ভীতিতে দলের বহু নেতাকর্মীকে বিচ্যুত করার অপচেষ্টা হয়েছে বারবার। বিএনপিকে ভেঙে ফেলার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা চলেছে প্রতিটি স্তরে। কিন্তু সেই চরম দুর্দিনেও দলের ঐক্য যে অটুট ছিল এবং কোনো বড় ধরনের ফাটল ধরেনি, সেটির একমাত্র কৃতিত্ব বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুযোগ্য, বিচক্ষণ এবং ধৈর্যশীল নেতৃত্বের। তিনি শুধু নিজের দলের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বজায় রাখেননি, বরং দেশের গণতন্ত্রকামী অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝেও এক অনন্য ঐক্যের সেতু নির্মাণ করেছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি একটি বিরল ঘটনা যে, দীর্ঘ সময় দেশের বাইরে থেকেও একজন নেতা কেবল ভিডিও কনফারেন্স এবং সাংগঠনিক যোগাযোগের মাধ্যমে একটি বিশাল রাজনৈতিক জোটকে অভিন্ন লক্ষ্যে স্থির রাখতে পেরেছেন। তিনি হয়ে উঠেছিলেন ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের এক অদৃশ্য কিন্তু শক্তিশালী সুতো, যা সকল মতের মানুষকে একই প্ল্যাটফর্মে গেঁথে রেখেছিল।

তারেক রহমান ভৌগোলিক দূরত্বকে তুচ্ছ করে নিজের সাংগঠনিক প্রজ্ঞার মাধ্যমে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে শুরু করে তৃণমূলের প্রান্তিক কর্মী পর্যন্ত সরাসরি সংযোগ রক্ষা করেছেন। আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে তিনি প্রতিটি ইউনিয়নে, প্রতিটি গ্রামে সংগঠনের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা রেখেছেন। ফ্যাসিস্ট শক্তি তাকে দেশের মাটি থেকে দূরে সরিয়ে রাখলেও জনগণের হৃৎস্পন্দন থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি, বরং দিন দিন তিনি হয়ে উঠেছেন শোষিত মানুষের ভরসাস্থল। বিএনপিকে খণ্ড-বিখণ্ড করার সকল চক্রান্ত তিনি অত্যন্ত দৃঢ় হাতে দমন করেছেন, যা তার সাংগঠনিক পরিপক্বতারই প্রমাণ দেয়। তার এই নেতৃত্ব কেবল বিএনপিকে রক্ষা করেনি, বরং দেশের সামগ্রিক গণতন্ত্রকামী শক্তিকে একটি মেরুদণ্ড প্রদান করেছে।

আজ দেশ এক চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বপ্ন দেখছে। দীর্ঘ সময় পর বাংলাদেশ যখন স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্ত হয়ে নিঃশ্বাস নিতে শুরু করেছে, এমন এক সন্ধিক্ষণে তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দেশের সাধারণ মানুষের মনে নতুন করে বাঁচার আশার সঞ্চার করেছে। তিনি কেবল একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে ফিরছেন না, বরং তিনি ফিরছেন এক নতুন ও আধুনিক বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ রূপকল্প নিয়ে। তার নির্দেশিত ঐতিহাসিক ‘৩১ দফা’ আজ সারা দেশে এক গণসনদে পরিণত হয়েছে। এই ৩১ দফার মাধ্যমে তিনি দেশের মানুষের সামনে এমন এক রাষ্ট্রের নকশা উপস্থাপন করেছেন, যেখানে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে এবং নাগরিক অধিকার হবে প্রশ্নাতীত।

এই রূপকল্প কেবল বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহার নয়, বরং এটি রাষ্ট্র সংস্কারের এক বৈপ্লবিক পরিকল্পনা। সামাজিক ন্যায়বিচার, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়নের যে স্বপ্ন তারেক রহমান দেখিয়েছেন, তা দেশের তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ— সকলের মধ্যেই উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।

নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সরকার গঠন ও দেশ পরিচালনায় তারেক রহমানের মেধা, দূরদর্শিতা এবং আধুনিক চিন্তাধারা এক যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলেই আজ সর্বস্তরের মানুষ গভীরভাবে বিশ্বাস করে। দীর্ঘ ১৮ বছরের প্রবাসজীবনে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শাসনব্যবস্থা ও উন্নয়ন কাছ থেকে দেখেছেন, যা তাকে একজন বিশ্বমানের রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে গড়ে তুলেছে। দেশের মানুষ আজ মনে করে, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কেবল অর্থনৈতিকভাবেই সমৃদ্ধ হবে না, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এক অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের মাঠে লড়াই থেকে শুরু করে রাষ্ট্রসংস্কারের প্রতিটি ধাপে তার উপস্থিতি আজ অপরিহার্য।

তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এক ইতিবাচক পরিবর্তনের সুবাতাস বয়ে আনবে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিভেদ ও প্রতিহিংসার রাজনীতির বিপরীতে তিনি এক অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমঝোতামূলক রাজনীতির পথ দেখাচ্ছেন। সেই আশাবাদ আজ কোটি কোটি মানুষের প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। দেশের প্রতিটি প্রান্তে, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে ড্রইং রুম পর্যন্ত আজ একটাই আলোচনা— তারেক রহমান ফিরছেন। এই ফেরা মানেই হলো অন্ধকারের অবসান, এই ফেরা মানেই হলো ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা। সাধারণ মানুষের এই আকাশচুম্বী প্রত্যাশাকে ধারণ করেই তারেক রহমান আজ বাংলাদেশের জাতীয় নেতার আসনে আসীন হয়েছেন।

তারেক রহমানের এই ঘরে ফেরা কেবল একজন ব্যক্তির প্রত্যাবর্তন নয়, বরং এটি বাংলাদেশের লুণ্ঠিত মানচিত্রের পুনরুত্থান। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর তার এই পদধ্বনি নেতাকর্মীদের মাঝে যেমন নবপ্রাণের জোয়ার এনেছে, তেমনি সাধারণ মানুষের মাঝেও এক গভীর স্বস্তি বয়ে এনেছে। কারণ বাংলাদেশের মানুষ আজ স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছে যে, তারেক রহমানের নেতৃত্বেই কেবল আসন্ন নির্বাচনে এক বিশাল বিজয় ছিনিয়ে আনা সম্ভব এবং তার স্বপ্নের হাত ধরেই দেশ এক সমৃদ্ধ, বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবে। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কেবল সময়ের দাবি নয়, বরং তা এক নতুন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সূর্যোদয়ের শুভ সূচনা। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেখেছিলেন এবং যা বাস্তবায়নে বেগম খালেদা জিয়া আজীবন সংগ্রাম করেছেন, সেই স্বপ্নের পূর্ণতা দিতেই আজ তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন।

লেখক: মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)


তারেক রহমানের ফেরা: উৎসবের আমেজ ও সর্বাত্মক প্রস্তুতিতে বিএনপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে দেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর এই ঘরে ফেরার মাহেন্দ্রক্ষণকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে এক নজিরবিহীন উদ্দীপনা বিরাজ করছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে সপরিবারে রওয়ানা হওয়া তারেক রহমান বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। তাঁর সাথে সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান, কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান এবং তাঁর ব্যক্তিগত দপ্তরের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। এই যাত্রাপথে তাঁর বহনকারী বিমানটি সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ঘণ্টার একটি সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি করবে।

তারেক রহমানকে বরণ করে নিতে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে এখন সাজ সাজ রব। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি কেবল একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং এক দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ও অর্ধকোটি মানুষের এক মহামিলন মেলায় পরিণত হবে। বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে তারেক রহমান বনানী ও কাকলী হয়ে সরাসরি পূর্বাচলের ৩০০ ফিট সংলগ্ন বিশাল সংবর্ধনাস্থলে যাবেন। সেখানে কয়েক লাখ মানুষের উপস্থিতিতে তিনি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সফল করতে ৩০০ ফিট এলাকায় প্রায় ৪৮ ফুট দীর্ঘ ও ৩৬ ফুট প্রশস্ত একটি বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। জনসমাবেশের গভীরতা ও ব্যপ্তি বিবেচনায় বিমানবন্দর থেকে শুরু করে উত্তরা, মহাখালী এবং কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৯০০টি মাইক এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় ডিজিটাল এলইডি ডিসপ্লে স্থাপন করা হয়েছে।

এই বিশাল জনস্রোত সামাল দিতে এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ঢাকায় আসা সহজ করতে ১০টি রুটে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে শতাধিক বাস ও কয়েক ডজন লঞ্চ ভাড়া করেছেন নেতাকর্মীরা। শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ৩০টি মোবাইল মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়েও কোনো ছাড় দিতে রাজি নয় দলটি। তারেক রহমানের সুরক্ষায় বিদেশ থেকে আনা বিশেষ বুলেটপ্রুফ গাড়ি ও ল্যান্ডক্রুজার প্রাডো এলসি ২৫০ মডেলের গাড়ি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সরকারি পুলিশ প্রটোকলের পাশাপাশি বিএনপির নিজস্ব ‘চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স’ (সিএসএফ) এবং দলের একদল বিশ্বস্ত স্বেচ্ছাসেবক নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় নিশ্চিত করবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিমানবন্দরে দর্শনার্থী প্রবেশে ২৪ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে বিএনপির স্থায়ী কমিটি এক বিশেষ বৈঠক সম্পন্ন করেছে। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করা এই বৈঠকে সংবর্ধনা মঞ্চে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মিত্র দলগুলোর সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়টিও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে। সংবর্ধনা শেষে তারেক রহমান সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁর মা বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যাবেন এবং এরপর গুলশানের বাসভবনে উঠবেন। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে, আগামী শনিবার ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার পর তারেক রহমান ঢাকার কোনো একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন থেকে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। সব মিলিয়ে তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের আগামীর রাজনীতিতে এক নতুন মোড় ঘটাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: সংবর্ধনা শেষে যাবেন মায়ের কাছে

আপডেটেড ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৪:১৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বিস্তারিত কর্মসূচি তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর তারেক রহমানকে স্বাগত জানাবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। বিমানবন্দর থেকে তিনি সরাসরি পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত বিশাল গণসংবর্ধনায় যোগ দেবেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষ করে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন তাঁর চিকিৎসাধীন মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে। সেখান থেকে তিনি গুলশানে মায়ের বাসভবনেই অবস্থান করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, সফরের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ২৬ ডিসেম্বর (শুক্রবার) বাদ জুম্মা তারেক রহমান শেরেবাংলা নগরে তাঁর পিতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করবেন। এরপর তিনি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের অমর শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। পরের দিন ২৭ ডিসেম্বর (শনিবার) সকালে তিনি ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন। ওই দিনই তাঁর রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে গিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেওয়ার এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদির কবর জিয়ারত করার কর্মসূচি রয়েছে।

সালাহউদ্দিন আহমদ তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, তারেক রহমানের এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে বিপুল জনসমাগমের কারণে রাজধানীতে সাধারণ মানুষের কিছুটা চলাচলে বিঘ্ন বা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার জন্য তিনি দলের পক্ষ থেকে অগ্রিম দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চেয়েছেন। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ পর প্রিয় নেতার ফেরার এই মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এবং প্রতিটি কর্মসূচি সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনগুলো বর্তমানে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তারেক রহমানের এই আগমণ ও পরবর্তী কর্মসূচিগুলো দেশের আগামীর রাজনীতিতে এক সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে।


গণমাধ্যমে হামলা করে কখনো কণ্ঠরোধ করা যাবে না: নাসির উদ্দিন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন অভিযোগ করেছেন যে, দেশের শীর্ষ গণমাধ্যমগুলোতে হামলা চালিয়ে নির্বাচন বানচালের এক গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার সৈকত সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জিয়া স্মৃতি ক্রিকেট প্রীতি ম্যাচ’-এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

নাসির উদ্দিন বলেন, জুলাই যোদ্ধা শহীদ শরীফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের পর একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের মতো জাতীয় সংবাদমাধ্যমে হামলা চালিয়েছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করা এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা। তবে তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে, গণমাধ্যমে হামলা চালিয়ে বা ভয় দেখিয়ে সত্যের কণ্ঠরোধ করা কখনো সম্ভব নয়। তিনি আরও মনে করিয়ে দেন যে, ওসমান হাদি নিজেই বলেছিলেন গণমাধ্যমে হামলা কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না।

অনুষ্ঠানে তিনি সরকারের প্রশাসনের সমালোচনা করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানান। পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীকেও তাঁর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান নাসির উদ্দিন। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশাসনের আরও কঠোর ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

আগামী ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের রাজনীতির এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এই দিনটিকে সফল করতে এবং প্রিয় নেতাকে বরণ করে নিতে তিনি ছাত্রদলের সব স্তরের নেতাকর্মীকে বড় জমায়েত নিয়ে ঢাকায় উপস্থিত থাকার উদাত্ত আহ্বান জানান।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপি নেতা এনায়েত উল্যাহ বাবুলসহ ছাত্রদলের স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে অনুষ্ঠিত প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচে সদর উপজেলা দলকে পরাজিত করে সুবর্ণচর উপজেলা দল জয়লাভ করে। মূলত খেলাধুলার মাধ্যমে শহীদ জিয়ার স্মৃতিকে অম্লান রাখা এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।


তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন: নজিরবিহীন নিরাপত্তা বলয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ নির্বাসন শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা উপলক্ষে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রহণ করা হয়েছে অভূতপূর্ব ও নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মিলে পুরো বিমানবন্দর এলাকাকে একটি নিশ্ছিদ্র দুর্গে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। নিরাপত্তার কোনো ফাঁকফোকর না রাখতে বিমানবন্দর ও এর আশপাশের এলাকায় কয়েক স্তরের কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হচ্ছে।

বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগিব সামাদ জানিয়েছেন, এই বিশেষ নিরাপত্তা অভিযানে কয়েক হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবেন। এর মধ্যে বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী, এভসেক, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র‍্যাব, আনসার এবং ডিএমপির সদস্যরা সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। পোশাকধারী সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারিও কয়েক গুণ বাড়ানো হয়েছে। বুধবার বিকেল থেকেই এই বিশেষ মোতায়েন কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। বিমানবন্দরের গোলচত্বর থেকে শুরু করে প্রতিটি প্রবেশ ও বাহির পথে কুইক রেসপন্স টিম ও ডগ স্কোয়াড সার্বক্ষণিক টহল দেবে।

নিরাপত্তা ও অপারেশনাল শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিমানবন্দরে যাত্রী ছাড়া অন্য যেকোনো ভিজিটর বা সহযাত্রীর প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নির্ধারিত ফ্লাইটের যাত্রীদেরও অন্তত পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয় পেরিয়ে তবেই ভেতরে ঢুকতে হবে। শুধু তাই নয়, বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের চলাফেরা এবং বৈধ কার্ড প্রদর্শনের ক্ষেত্রেও কঠোর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে কাউকেই অকারণে চলাফেরা না করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিমানবন্দর ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় ড্রোন উড্ডয়নও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গত ১৯ ডিসেম্বর শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ গ্রহণের সময় কিছু অননুমোদিত ড্রোন উড্ডয়নের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা এবং নিরাপদ বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কায় ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ সাধারণ মানুষের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। সব মিলিয়ে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে এবং বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম সচল রাখতে প্রশাসন এখন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।


গণতন্ত্র উত্তরণকে বাধাগ্রস্ত করতে চক্রান্ত করছে একটি মহল : মির্জা ফখরুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গণতন্ত্র উত্তরণ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি মহল ভয়ঙ্করভাবে চক্রান্ত করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ এখন একটা ট্রাজিশন পিরিয়ডে আছে। একটা ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট শাসন যে শাসন আমাদের মূল্যবোধগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। সেই ফ্যাসিস্ট শাসন থেকে বেরিয়ে এসে আমরা এখন একটা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি এবং নির্বাচনের পরে একটা নির্বাচিত সরকার, নির্বাচিত পার্লামেন্ট আমাদের দেশকে আমাদের জাতিকে সঠিক পথ এগিয়ে নিয়ে যাবে এ প্রত্যাশা আমরা সবাই করছি। কিন্তু এর মধ্যেই দেখা যাচ্ছে যে কিছুসংখ্যক ব্যক্তি, মহল এই ট্রাজিশনালকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য ভয়ঙ্করভাবে চক্রান্ত করছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি আজকে আবারো এই চক্রান্তের ফলে নিহত শহীদ হয়ে যাওয়া ওসমান বিন হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং পরম করুণাময় আল্লাহ তালার কাছে এই দোয়া চাইছি যে, আল্লাহতালা তাকে যেন বেহেশতে সর্বশ্রেষ্ঠ স্থানে নিয়ে যান।

মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা দেখেছেন যে, এই ট্রাডিশনাল পিরিয়ডে সরকারের ব্যর্থতার কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট অবনতি হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা ছিল যে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের যে সরকার, সেই সরকার অন্তত এই কয়েকটা মাস তারা তাদের যোগ্যতার পরিচয় দেবেন এবং দক্ষতার সঙ্গে দেশকে পরিচালনা করবেন।

তিনি বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাই যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে, তারা তাদের কথা রেখেছেন যে, ২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা দিয়েছেন এবং নির্বাচন কমিশন সেটাই করছেন। নির্বাচনের যে পরিবেশ তৈরি করা এই পরিবেশ তৈরি করার জন্য তাদেরকে আরও সচেতন এবং ইতিবাচক ভূমিকা পালন করা দরকার, আরও কার্যকরী ভূমিকা পালন করা দরকার এবং এই বিষয়গুলোতে তাদের ফোকাস আরও বেশি দেবেন এবং তারা আরও ভালোভাবে নির্বাচন যেন অত্যন্ত সুষ্ঠু পরিবেশে হয় সেই বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখবেন এটা আমরা আশা করি।

ফখরুল বলেন, শরিকদের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা শেষ হয়ে গেছে। শরিকদের সঙ্গে আমাদের ভালোবাসা আরও গভীর হয়েছে। এ বিষয়ে আপনারা যথাসময় জানতে পারবেন, যথাসময় তা ঘোষণা করা হবে।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ জমিয়ত জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ইসলামী দলগুলোর মধ্যে অন্যতম শীর্ষ স্থানীয় দল, তাদের সঙ্গে আমাদের একটি নির্বাচনী সমঝোতা হয়েছে। আমাদের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতার ভিত্তিতে যে সমস্ত আসন তাদের সাথে আমাদের সমঝোতা হয়েছে ওই আসনে বিএনপির কোনো প্রার্থী থাকবে না। সারা বাংলাদেশে অন্যান্য আসনে ওনাদের কোন প্রার্থী থাকবে না। আমরা সেই সমযোতার মধ্যে উপনীত হয়েছি।

তিনি জানান, আগামী দিনের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সম্মিলিতভাবে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্য আরও যাদের সঙ্গে আসন সমঝোতা হয়েছে বিএনপির তা পরবর্তীতে জানানো হবে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা সংবিধানের প্রস্তাবনায় মহান আল্লাহর ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস স্থাপন করব, যেটা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান পঞ্চম সংশোধনের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। কোরআন সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন আমরা করবো না, সেটা আমরা অনেক আগেই ঘোষণা দিয়েছি। কওমি লাইনের মাদ্রাসা থেকে যারা পাস করবেন, তাদের সর্বোচ্চ ডিগ্রি আছে সেই লাইনে এবং সেই হিসেবে আমরা কিছুদিন আগে আমাদের কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করেছি, সামনের নির্বাচনী ইশতেহারে থাকবে যে, ইমাম-খতিব-মুয়াজ্জিন তাদের জন্য আমরা রাষ্ট্রীয় ভাতার ব্যবস্থা করব, উৎসব ভাতার ব্যবস্থা করব এবং যেটা একটা ট্রাস্ট আছে সেই ট্রাস্টকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আমরা ব্যবস্থা নেব এবং বিভিন্ন স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ধর্মশিক্ষক হিসেবে বিধি মোতাবেক নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার থাকবে অথবা বিবেচনা করা হবে।


তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন: উৎসবের আমেজ ও বড় প্রত্যাশায় সাজ সাজ রব পৈতৃক ভূমি বগুড়ায়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৮ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশের মাটিতে পা রাখছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের খবরে সারাদেশের মতো পৈতৃক ভূমি বগুড়াতেও বইছে আনন্দের ফল্গুধারা। বিশেষ করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মভূমি হওয়ায় বগুড়ার মানুষের কাছে এই অনুভূতির গভীরতা অনেক বেশি। গত ১৭ বছরের রাজনৈতিক বঞ্চনা, থমকে থাকা উন্নয়ন আর দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ‘ঘরের ছেলে’ ঘরে ফিরছে—এমন আবেগে ভাসছেন জেলার সর্বস্তরের মানুষ।

তারেক রহমানের আগমনকে কেন্দ্র করে তাঁর পূর্বপুরুষদের ভিটা গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ি গ্রামসহ পুরো জেলায় উৎসবের প্রস্তুতি চলছে। এই বাগবাড়ি গ্রাম থেকেই ৪৩ বছর আগে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এলাকার নবীন-প্রবীণ সবার প্রত্যাশা, দেশে ফেরার পর তারেক রহমান অবশ্যই তাঁর পৈতৃক ভিটায় আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সান্নিধ্যে আসবেন। গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা আছির উদ্দিনের মতে, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন সাধারণ মানুষের জন্য মঙ্গলের বার্তা নিয়ে আসবে। অন্যদিকে তরুণ প্রজন্ম মনে করছে, তিনি দেশে ফিরে হাল ধরলে এলাকার মুখ উজ্জ্বল হবে।

স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বগুড়ার মানুষের ওপর নানামুখী চাপ থাকলেও ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর তারা এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। তারেক রহমানকে বরণ করে নিতে বগুড়া থেকে প্রায় ১ হাজার গাড়ির একটি বিশাল বহর নিয়ে নেতাকর্মীরা ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। গাবতলী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক নতুন জানান, তরুণ থেকে বৃদ্ধ, কৃষক থেকে শ্রমজীবী—সব শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের প্রিয় নেতাকে একনজর দেখতে মুখিয়ে আছেন। ঢাকার আনুষ্ঠানিকতা শেষে জানুয়ারি মাসের শুরুতেই তারেক রহমানের বগুড়া সফরের কথা রয়েছে, যেখানে তিনি তাঁর মায়ের আসন বগুড়া-৭ ও নিজের নির্বাচনি আসন বগুড়া-৬-এ জনসভা করতে পারেন।

বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশাহর মতে, পৈতৃক ভিটায় ফেরার মাধ্যমে তারেক রহমান তাঁর শৈশব ও কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত দিনগুলোর আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নেবেন। উল্লেখ্য, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৬ (সদর) আসন থেকে প্রথমবারের মতো সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারেক রহমান। তাঁর দেশে ফেরার রুট অনুযায়ী, তিনি প্রথমে সিলেটে অবতরণ করবেন এবং পরে ঢাকায় এসে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁর মা বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যাবেন। এরপর পূর্বাচলের সংবর্ধনা সভায় যোগ দেওয়ার মাধ্যমে তিনি তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন, যার সাক্ষী হতে বগুড়ার হাজার হাজার নেতাকর্মী এখন ক্ষণগণনা করছেন।


তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে রাজধানীতে বিএনপির বর্ণাঢ্য মিছিল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘ ১৭ বছর পর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীতে একটি বড় ধরনের স্বাগত মিছিল করেছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে এই মিছিলে সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সাবেক ও বর্তমান ছাত্রদল নেতাসহ বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। মিছিলটি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) এলাকা থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় প্রদক্ষিণ করে মৎস্যভবনে গিয়ে শেষ হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়ালের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে তারেক রহমানের আগমনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।

মিছিল পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দীর্ঘ নির্বাসন শেষে তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবরে সারা দেশে বর্তমানে আনন্দের বন্যা বইছে এবং লাখ লাখ মানুষ তাঁদের প্রিয় নেতাকে এক নজর দেখার জন্য ঢাকায় আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তারেক রহমানের ওপর চালানো অমানবিক নির্যাতনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, তৎকালীন মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকার এবং পরবর্তীতে শেখ হাসিনার শাসনামলে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে দেশ থেকে দূরে রাখা হয়েছিল। এমনকি চরম নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়ে তাঁকে ছোট ভাইয়ের জানাজায় অংশ নিতে কিংবা অসুস্থ মায়ের পাশে দাঁড়াতেও দেওয়া হয়নি। জিয়া পরিবারকে ধ্বংস করার সব চক্রান্ত ব্যর্থ করে তারেক রহমান বীরের বেশে দেশে ফিরছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তারেক রহমানের আগমনের দিনের কর্মসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে রিজভী বলেন, আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি লন্ডন থেকে দেশে নামার পর বিমানবন্দর থেকে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন। পথিমধ্যে ৩০০ ফিট এলাকায় তিনি সমবেত জনতার উদ্দেশে একটি সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন এবং এরপর তাঁর মাকে দেখে গুলশানের বাসভবনে ফিরবেন। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটিকে সুশৃঙ্খল রাখতে তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা দিয়ে বলেন, জনসমাগম যত বড়ই হোক না কেন, সবাইকে রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে প্রিয় নেতাকে শুভেচ্ছা জানাতে হবে। কোনোভাবেই যেন অরাজকতা বা যানজটের সৃষ্টি না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে তিনি নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

নিরাপত্তার বিষয়ে রিজভী আরও উল্লেখ করেন যে, তারেক রহমানের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে ইতিমধ্যে দাবি জানানো হয়েছে এবং প্রশাসন থেকে তাঁদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি দলীয়ভাবেও নেতাকর্মীরা তাঁদের নেতার নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সতর্ক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর প্রিয় নেতার ফেরার এই দিনটিকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক স্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে গড়ে তুলতে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো এখন চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে। মূলত শান্তি ও শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে এই বিশাল সংবর্ধনা সফল করাই এখন দলটির প্রধান লক্ষ্য।


জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ৪টি আসন ছাড়ল বিএনপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক মিত্র জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশকে চারটি আসন ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই তথ্য নিশ্চিত করেন। আসন ভাগাভাগির এই সিদ্ধান্তের ফলে সিলেট-৫, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, নীলফামারী-১ এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির কোনো প্রার্থী থাকবে না।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সিলেট-৫ আসনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ উবায়দুল্লাহ ফারুক এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে দলটির সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এ ছাড়া নীলফামারী-১ আসনে দলটির মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে কেন্দ্রীয় নেতা মুফতি মনির হোসেন কাসেমী জোটের পক্ষ থেকে লড়াই করবেন। সমঝোতা অনুযায়ী, এই চারটি আসন বাদে দেশের অন্য কোনো আসনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম তাদের প্রার্থী রাখবে না এবং এই চারজন প্রার্থী তাঁদের নিজস্ব দলীয় প্রতীক ‘খেজুরগাছ’ মার্কায় নির্বাচনে অংশ নেবেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনী ঐক্য সুসংহত করার লক্ষ্যেই এই ছাড় দেওয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ছাড়াও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই আসন ভাগাভাগি আসন্ন নির্বাচনে দুই দলের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে। মূলত যেসব আসনে জমিয়তের শক্তিশালী জনভিত্তি রয়েছে, সেখানে তাঁদের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমেই এই নির্বাচনী নীল নকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে।


ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার অঙ্গীকার ড. এম এ কাইয়ুমের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ঢাকা-১১ আসনের মনোনীত প্রার্থী ড. এম এ কাইয়ুম বলেছেন, তারা এমন একটি সমাজ বিনির্মাণ করতে চান যেখানে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র কিংবা ধনী-দরিদ্রের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি বা জেনজিদের (Gen-Z) সঙ্গে এক মিলনমেলায় অংশ নিয়ে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি মনে করেন, একটি উন্নত রাষ্ট্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকার থাকবে এবং প্রতিটি নাগরিক স্বাধীনভাবে বিচরণ করার সুযোগ পাবে। আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাই হবে তাঁদের মূল লক্ষ্য।

মিলনমেলায় ড. কাইয়ুম বিএনপির ঐতিহাসিক ৩১ দফার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, একটি আধুনিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার রূপরেখা এখানে সুস্পষ্টভাবে দেওয়া হয়েছে। তিনি বিএনপির পূর্ববর্তী শাসনামলের সাফল্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, অতীতে মেয়েদের উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষার সুযোগ এবং ‘খাদ্যের বিনিময়ে শিক্ষা’ কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল, যাতে অভাবের কারণে কোনো দরিদ্র শিশুর পড়াশোনা বন্ধ না হয়। দেশের প্রতিটি স্তরে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়াই ছিল তাঁদের প্রধান লক্ষ্য।

শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে কেবল ধর্মীয় গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ না রেখে সেগুলোকে কারিগরি শিক্ষার আওতায় আনা হয়েছিল। এর ফলে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা দেশে ও বিদেশে সমানভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছিল। তিনি বিশ্বাস করেন, আগামীর বাংলাদেশেও মাদ্রাসা ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বয় ঘটিয়ে একটি দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা হবে। তরুণ প্রজন্মের উৎসাহ ও দেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান জানিয়ে তিনি একটি মানবিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন।


তারেক রহমানের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন কামনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রার্থনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন যেন নির্বিঘ্নে ও সফলভাবে সম্পন্ন হয়, সেই কামনায় নারায়ণগঞ্জে বিশেষ প্রার্থনা সভা করেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী মো. মাসুদুজ্জামান মাসুদের উদ্যোগে নগরীর নিতাইগঞ্জের বলদেব আখড়ায় এই প্রার্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে মহানগর পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অভয় কুমার রায় ও সদস্য সচিব কার্তিক ঘোষসহ জাগো হিন্দু পরিষদের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থেকে তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু ও নিরাপদ পথচলার জন্য প্রার্থনা করেন।

একই দিনে তারেক রহমানের শুভ প্রত্যাবর্তন কামনায় মো. মাসুদুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসায় বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এই কর্মসূচিতে মসজিদের মুসল্লি, মাদ্রাসার এতিম শিশু, আলেম-ওলামা এবং সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ অংশ নিয়ে তারেক রহমানের সুস্থতা ও দেশের কল্যাণে মোনাজাত করেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নেতার প্রত্যাবর্তনের এই মুহূর্তকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জজুড়ে বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। মূলত সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সম্মিলিত এই প্রার্থনা আসন্ন ২৫ ডিসেম্বরের ঐতিহাসিক আগমনকে কেন্দ্র করে এক বিশেষ রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্প্রীতির বার্তা দিচ্ছে।


সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে : মির্জা ফখরুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এখন শুধু সচেতন হলে চলবে না, সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।’

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত ‘মব ভায়োলেন্স’ বা সংঘবদ্ধ সহিংসতাবিরোধী এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সংবাদপত্রের ওপর হামলা গণতন্ত্র ও জুলাই বিপ্লবের ওপর আঘাত। এখন শুধু সচেতন হলে চলবে না, সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমি জানি না আমরা এই মুহূর্তে কোন বাংলাদেশে আছি। সারাজীবন সংগ্রাম করেছি একটা স্বাধীন-সার্বভৌম গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য। আজ যে বাংলাদেশ দেখছি, এই বাংলাদেশের স্বপ্ন আমি কোনো দিন দেখিনি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ ডেইলি স্টার বা প্রথম আলো নয়, আজ গণতন্ত্রের ওপর আঘাত এসেছে। আমার স্বাধীনভাবে চিন্তা করার যে অধিকার, আমার কথা বলার যে অধিকার, তার ওপরে আবার আঘাত এসেছে। জুলাই যুদ্ধের ওপরে আঘাত এসেছে। জুলাই যুদ্ধ ছিল এ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ। আজ সেই জায়গায় আঘাত এসেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠন নয়, সব গণতান্ত্রিককামী মানুষের এখন এক হওয়ার সময় এসে গেছে। আমরা যারা অন্ধকার থেকে আলোতে আসতে চাই, বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটা স্বাধীন-সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই, তাদের এখন শুধু সচেতন হলে চলবে না, রুখে দাঁড়াতে হবে। এখন রুখে দাঁড়ানোর সময় এসে গেছে।’


ক্ষমতায় এলে অর্থনৈতিক গণতন্ত্রায়ণে অগ্রাধিকার দেবে বিএনপি : আমীর খসরু

চট্টগ্রাম নগরীর একটি হোটেলে বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরামের ‘বাণিজ্য সংলাপ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসার সুযোগ পেলে রাজনৈতিক গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অর্থনৈতিক গণতন্ত্রায়ণ ও নিয়ন্ত্রণমুক্ত করণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমরা এতদিন রাজনৈতিক গণতন্ত্রের কথা বলেছি। এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি অর্থনীতির সব স্তরে গণতন্ত্রায়ণ নিশ্চিত করব। এর মূল লক্ষ্য হলো জনগণের সব শ্রেণি-পেশাকে মূলধারার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করা এবং মানুষের অর্থনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর একটি হোটেলে বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাণিজ্য সংলাপ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সাবেক) সভাপতি প্রকৌশলী আলী আহমেদ। বাণিজ্য সংলাপে চট্টগ্রাম বিভাগভুক্ত বিভিন্ন জেলার বিনিয়োগকারী, শীর্ষস্থানীয় উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতরা এবং বিপুল সংখ্যক নারী উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন।

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্য ও পরবর্তী প্রশ্নোত্তর পর্বে অতীত ও বর্তমান সরকারের সময়কালের অর্থনৈতিক চিত্র তুলে ধরেন এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনীতিকে গতিশীল করতে বিএনপির ভবিষ্যৎ নীতিকৌশল ব্যাখ্যা করেন।

তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির প্রতিটি খাত অতিমাত্রায় নিয়ন্ত্রিত। বিএনপি ক্ষমতায় এলে ব্যবসা পরিচালনার সহজতা বাড়াতে ব্যাপক সংস্কার কর্মসূচির আওতায় অর্থনীতিতে নিয়ন্ত্রণমুক্ত করণ ও উদারীকরণ বাস্তবায়ন করা হবে। অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রিত ও রক্ষণশীল অর্থনৈতিক সংস্কৃতি সরকারি-বেসরকারি খাতের কিছু অসাধু চক্রকে লাভবান করছে, যার ফলে ব্যবসার ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। আমাদের আন্তরিক উদ্দেশ্য হলো- দুর্নীতিবাজ গোষ্ঠীর ক্ষমতা ভেঙে দিয়ে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের হাতে অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়া। রপ্তানি ও জিডিপির অনুপাতের বিদ্যমান ভারসাম্যহীনতা দূর করে অর্থনীতির প্রকৃত সক্ষমতা কাজে লাগাতে বিএনপি একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।

অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণমুক্ত করণের জন্য আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থেকে মুক্তি এবং রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় যৌক্তিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের সক্ষমতা ও পেশাদারিত্ব বাড়ানো ছাড়া উদার অর্থনীতির সুফল পাওয়া সম্ভব নয়। আমলাতন্ত্র ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ কমাতে স্বয়ংক্রিয় (অটোমেশন) ব্যবস্থা চালু করা হবে, যা বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক হবে।


banner close