শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নয়াপল্টনে আজ বিএনপির সমাবেশ

ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ৭ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০১

নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজ বুধবার (৭ আগস্ট) সমাবেশ করবে বিএনপি। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় দলটি।

সমাবেশ শুরু হবে দুপুর ২টায়। এতে তারেক রহমান ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখবেন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।

এদিকে সমাবেশের ঘোষণার পর মঙ্গলবার রাতেই নয়াপল্টনে মঞ্চ তৈরি শুরু করে দলটি। জানা গেছে, তারেক রহমান ছাড়াও সমাবেশে বক্তব্য দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সিনিয়র নেতারা।

সমাবেশে সাধারণ জনগণসহ বিএনপির এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

মুক্তির পর খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা মির্জা ফখরুলের

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার পর রাতেই তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় খালেদা জিয়াকে হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়।

বঙ্গভবনের উপ-প্রেস সচিব মো. শিপলু জামানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) তার মুক্তির তথ্য জানানো হয়।

বিষয়:

দেশ হাসিনামুক্ত হলেও গণতন্ত্র ফেরেনি: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশ হাসিনামুক্ত হলেও গণতন্ত্র ফেরেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার রাজধানীর উত্তরায় খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের ক্ষোভে দেশ ছেড়েছেন হাসিনা, তবে পালিয়ে গেলেও দিল্লিতে বসে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করছে। নেতা-কর্মীদের বার্তা দিচ্ছে টুপ করে ঢুকে পরবে; এতগুলো মানুষ মারার পরও কোনো অনুশোচনা নেই।

তিনি আরও বলেন, দেশ হাসিনামুক্ত হলেও যে লক্ষ্য, গণতান্ত্রিক অবস্থায় ফিরে যাওয়া সেটি হয়নি। সরকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ন্যূনতম সংস্কার করে নির্বাচন দিতে, যেখানে জনগণ যাকে চাইবে তাকে ক্ষমতায় বসাবে। পদ্মা সেতু থেকে বেগম জিয়াকে টুপ করে ফেলে দিতে চেয়েছিল উল্লেখ করে এ বিএনপি নেতা বলেন, ঠিক সেভাবে টুপ করে চলে আসতে চান শেখ হাসিনা। একটা কথা মনে রাখতে হবে তাকে। মানুষ ভুলবে না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, কেমন মহিলা (হাসিনা), তার মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই, এতগুলো মানুষ হত্যা করল। কতটা ভয়াবহভাবে তিনি জাতির ওপর চেপে বসেছিলেন।

এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ থাকার অনুরোধ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ড. ইউনূসের সরকারকে নির্বাচন দিতে হবে, যেন জনগণ তার অধিকার ফিরে পেতে পারে। নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীন। সরকার নিরপেক্ষ থাকবে বলেই প্রত্যাশা করি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে, বিদ্যুতের দাম বেড়েছে, এর জন্য শুধু ব্যবসায়ীরা দায়ী তা না, বিগত সরকারের দুর্নীতিও দায়ী।

বিএনপি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, গতকাল (শুক্রবার) যৌথ বাহিনীর হাতে নির্যাতনে যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, বিএনপি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেখতে চায় না। বিএনপি বাংলাদেশে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার দেখতে চায় আর কোনো নির্যাতন দেখতে চায় না।


অপকর্মকারীদের বিএনপিতে ঠাঁই নেই: তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

অপকর্মকারী নেতা-কর্মীকে একচুল ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপির প্রতি জনগণের আস্থা ধরে রাখতে বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর সরকারে গেলে দুর্বৃত্তদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বুধবার সাতক্ষীরা তুফান কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রুপরেখা ৩১ দফা বাস্তবায়নে সাতক্ষীরায় কর্মশালাত্তোর এক প্রশ্নোত্তোর পর্বে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৬০ লাখ মামলা ছিল। বিএনপি নেতা-কর্মীরা দুঃসহ জীবন-যাপন করেছেন। অনেক কষ্ট ও আপসহীনতার বিনিময়ে আজকে বিএনপির প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা পেয়েছে। সেই আস্থা গুটিকয়েক মানুষের জন্য নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। তাই সাধারণ জনগণের পাশে থেকে তাদের মন জয় করতে নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেন তিনি। আগামীতে বিএনপি রাস্ট্রীয় ক্ষমতায় আসলে সাতক্ষীরায় রেল লাইন নির্মাণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

এ ছাড়া অস্বচ্ছল নারীদের জন্য কার্ড প্রদান, শিক্ষা, চিকিৎসা, কর্মসংস্থান, সামাজিক সুবিচারসহ কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের প্রতিশ্রুতি দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহবায়ক সৈয়দ ইফতেখার আলীর সভাপতিত্ব কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণ-বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশারফ হোসেন, ডা. শহিদুল আলম, কাজী আলাউদ্দীন, রহমাতুল্লাহ পলাশ, তারিকুল হাসান প্রমুখ।

দিনব্যাপী কর্মশালার শেষ পর্বে বিকেলে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সময় তিন জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা তার কাছে ৩১ দফাসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে প্রশ্ন করেন। এবং তিনি তার দলের ভবিষ্যতৎ পরিকল্পনার আলোকে উত্তর দেন।

যশোর প্রতিনিধি জানান, গতকাল সন্ধ্যায় যশোর শহরের ওরিয়েন হোটেল চত্বরে এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, দেশের সব সংকটে বিএনপি ছিল। তাই মানুষ এখনো বিএনপির ওপর আস্থা রেখেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, একাত্তরে একদল মানুষকে যুদ্ধের মধ্যে ঠেলে দিয়ে ভারতে চলে গেছে, আরেকদল স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে। কিন্তু বিএনপি স্বাধীনতা যুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ে দেশের মানুষের পাশে ছিল। যে কারণে দেশের মানুষ বারবার বিএনপির ওপর আস্থা রেখেছে। জনগণ বিশ্বাস করে আগামীতে ভালো কিছু করতে হলে বিএনপির নেতৃত্বেই হবে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি পজেটিভ পরিবর্তন করতে চায়। এটার জন্য জাদু বা ম্যাজিক নয়, মন-মানসিকতা পরিবর্তন ঘটাতে হবে। বিএনপির সব নেতা-কর্মীকে এজন্য প্রস্তুত হতে হবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘১৬ বছর যে জুলুম -নিপীড়ন হয়েছে তার প্রতিশোধ হবে ৩১ দফার বাস্তবায়ন। যে অপশক্তি বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখতে চায় তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের প্রতিশোধ সফল হবে।’

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জাবিউল্লাহ, প্রশিক্ষণ-বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশারফ হোসেন, সহপ্রশিক্ষণ সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেলের সদস্য মাহমুদা হাবীবা, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, পররাষ্ট্র-বিষয়ক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু চৌধুরী ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বক্তব্য রাখেন।


নির্বাচনসহ ১০ দফায় ঐকমত্যে বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত সময়ে জাতীয় নির্বাচনসহ ১০ দফায় একমত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

সোমবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মো. রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর সাহেব) ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠকে তারা এ ঐক্যমতে পৌঁছান।

বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ রেজাউল করীমের সঙ্গে অত্যন্ত সৌহাদ্যপূর্ণ পরিবেশে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। আমরা মোটামুটি ১০টি বিষয়ে একমত হয়েছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, সভায় ১০ দফার যে বিষয়গুলোতে আমরা একমত হয়েছি, সেগুলো হচ্ছে- আধিপত্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ ও সামাজ্যবাদমুক্ত স্বাধীন সার্বভৌম টেকসই রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি ও টাকা পাচারকারীদের দ্রুত বিচার, ভোটাধিকারসহ সব মানবাধিকার রক্ষায় জাতীয় ঐক্যমত গড়া, ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে ও সব অধিকার বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, আইনশৃঙ্খলার স্বাভাবিককরণ।

পাশাপাশি আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে আঘাত করে কথা না বলা, আগামীতে আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিবাদী শক্তি যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে সে ব্যাপারে রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং প্রশাসনে রয়ে যাওয়া ফ্যাসিবাদের দোসরদের দ্রুত অপসারণ করা।

এমনকি ইসলামী শরিয়াহবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া এবং ইসলামবিরোধী কোনো কথা কেউ বলবে না এ ব্যাপারে দুই দলই ঐক্যমত পোষণ করেছে।

বৈঠক শেষে যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, ‘দেশ, মানবতা এবং রাজনীতির ব্যাপারে যে কথাগুলো আমাদের সঙ্গে হয়েছে; তা বিএনপির মহাসচিব গণমাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন। আমাদেরও ওই একই কথা।’

দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে আমির বলেন, ‘এটা আমরা আগে থেকেই বলে আসছি- খুব বেশি সময় না নিয়ে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন চাই। আর ৬ মাস তো প্রায় চলেই গেল, এক বছরের মধ্যেই সুন্দর একটা জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে এটাই মূলত আমাদের কথা।’

আমির আরও বলেন, ‘ধারাবাহিকভাবে আমাদের দুই দলের মধ্যে আলোচনা চলবে।’ এর আগে দুপুর ১২টায় পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পৌঁছান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। বৈঠক শেষে তারা সেখানে চরমোনাইয়ের পীরের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।

বৈঠকে ইসলামী আন্দোলনের আমিরের সঙ্গে ছিলেন মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম।

এর আগে গত ২২ জানুয়ারি খেলাফত মজলিসের আমির, মহাসচিবসহ ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির মহাসচিব ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। খেলাফত মজলিস একসময় বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের শরিক ছিল। ২০২১ সালের অক্টোবরে একটি ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ জোট ছেড়ে যায় তারা। ২২ জানুয়ারির বৈঠকটি ছিল দুই দলের মধ্যে প্রায় তিন বছর পর।

এই বৈঠকের পর বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে ধর্মভিত্তিক ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে দলটি। এর অংশ হিসেবেই আজ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।


বিএনপি সংস্কার ও নির্বাচন দুটির পক্ষেই, দুটিই জরুরি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি সংস্কার এবং নির্বাচন দুটির পক্ষেই। দুটিই জরুরি। সংস্কার নাকি নির্বাচন- কেউ কেউ এমন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রশ্ন নিয়ে কূটতর্ক করার অপচেষ্টা করেছে। শনিবার বিএনপির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে এ বক্তব্য প্রকাশ করা হয়।

তারেক রহমান দেশের জনগণের চাহিদা তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা যদি দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি দেখি, সেটা কিন্তু ভিন্ন। দেশের কোটি কোটি পরিবারের কাছে এই মুহূর্তে নির্বাচন এবং সংস্কারের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ সংসার পরিচালনা করা।’

তিনি বলেন, একদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অপরদিকে জনগণের উপর চাপিয়ে দেওয়া ভ্যাটের বোঝা। ফলে দেশের কৃষক শ্রমিক দিনমজুর, স্বল্প আয়ের, এমনকি নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর কাছেও সংসার টেকানোই অনেকক্ষেত্রে দায় হয়ে পড়েছে। অনেক পরিবারে চলছে নীরব হাহাকার।

তারেক রহমান আরও বলেন, কীভাবে দ্রব্যমূল্য কমানো যায়, কীভাবে বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্য হাতের নাগালে রাখা যায়, কীভাবে ফ্যাসিস্ট সরকারের মিথ্যা মামলা থেকে জনগণকে রেহাই দেওয়া যায়, কীভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সক্রিয় করা সম্ভব, কীভাবে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়- অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অগ্রাধিকারে এগুলো থাকা অত্যন্ত জরুরি।


‘১/১১-এর ভয়াবহ পরিণতির শিকার বিএনপির চেয়ে কেউ হয়নি’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘কেউ, কেউ বলছে বিএনপি আবারও ১/১১ (ওয়ান-ইলেভেন) আনার পাঁয়তারা করছে। ১/১১-এর ভয়াবহ পরিণতির শিকার বিএনপির চেয়ে কেউ হয়নি।’

শুক্রবার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের নিচতলায় আরাফাত রহমান কোকোর দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাধীনতা পেয়ে অনেকে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছেন বলে দাবি করেছেন তিনি বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে ১/১১ সরকারের নির্যাতন থেকে দলের এমন কোনো নেতা-কর্মী রেহাই পায়নি। এভাবে কথা বললে দেশের গণতন্ত্রের চেহারা কেউ দেখতে পারবেন না। একটি দল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছে। ‘গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল’ তারা এখন সুযোগ পেলেই বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছেন।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘শিশুদের যখন নতুন দাঁত ওঠে তখন উল্টাপাল্টা কথা বলে। এখন কেউ কেউ এমনভাবে কথা বলছেন যেন বিএনপি আওয়ামী লীগের দোসর। বিএনপি ভারতের দোসর। যারা এগুলো বলছেন তারা নিজেরা নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখুন।’

‘আমার ১১ বছর জেল হয়েছে, আমার স্ত্রীর ১৬ বছর, আমার ছোট ভাইয়ের ৮ বছর সাজা হয়েছে। এমনি করে বিএনপির প্রতিটি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে নির্যাতন-নিপীড়ন হয়েছে। আর আজ আমাদের আওয়ামী লীগের সিল বানাতে চান। চক্রান্ত যাই করেন আমরা বুঝি। বিএনপি কিছু বললেই সমস্যা’- যোগ করে বললেন মির্জা আব্বাস।

এ সময় তিনি অনেকে বিদেশে বসে জ্ঞান দিচ্ছেন বলে দাবি করে বলেন, ‘এতে দেশের শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে। আপনাদের যে প্রজ্ঞা আছে তা দেশের কাজে লাগান।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে বলছেন, নতুন দল গঠিত হচ্ছে বিএনপি তা জেলাসি করছে। আমি বলব, যারা এগুলো বলছেন তারা জাতির শত্রু। বিএনপি গণতান্ত্রিক দল। যেকোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকেই স্বাগত জানায়। তবে, জনসমর্থন আদায় করতে হলে জনগণের পালস বুঝতে হবে। কেউ-কেউ বলছেন ৫ আগস্ট যারা এনেছেন সবকিছুর অধিকার তাদের। যারা ১৭ বছর নির্যাতনের শিকার হয়েছে, খুন হয়েছে গুম হয়েছে তাদের কি হবে? আমি নিজে ১৩ বার জেল খেটেছি। আমাদের কোনো অবদান নেই! এগুলো বলে জাতির মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করবেন না।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, সহঃপ্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলীম প্রমুখ।


একাত্তরে আপনারা কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সিলেট ব্যুরো

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক ভূমিকা কী ছিল, কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন তা জাতি জানতে চায়। আপনারা কোন সেক্টর কোন কমান্ডারের অধীনে যুদ্ধ করেছেন?’

সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর পক্ষ থেকে যুব এশিয়া কাপ বিজয়ী ক্রিকেটার ইকবাল হোসেন ইমনের পরিবারকে শুভেচ্ছা উপহার প্রদানকালে তিনি এ বক্তব্য দেন। সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্য ‘দেশে পরীক্ষিত দেশপ্রেমিক শক্তি দুটি, একটি সেনাবাহিনী, আরেকটি জামায়াত’-এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল বলেছে দেশপ্রেমিক তারা এবং সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী দেশপ্রেমিক নিঃসন্দেহে। কারণ তাদের পূর্বসূরিরা এই বাংলাদেশ নির্মাণে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন, তার অন্যতম মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানেও সেনাবাহিনী উজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি ইসলামপন্থি সেই রাজনৈতিক দলকে বলতে চাই, ৭১-এ আপনাদের রাজনৈতিক ভূমিকা কী ছিল? কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন, কোন সেক্টর কমান্ডারের আন্ডারে যুদ্ধ করেছেন? বাংলাদেশে কেউ দেশপ্রেমিক নেই, শুধু একটি রাজনৈতিক দল দেশপ্রেমিক– এ ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি করলে মানুষ হাসবে, মানুষ হাসি ছাড়া আর কিছু দেবে না।’

রিজভী বলেন, ‘এই জাতির ঘাড়ে একটি জগদ্দল পাথর চেপে বসেছিল। এই পাথর এত ভারী যে গোটা জাতিকে রুদ্ধশ্বাস অবস্থায় রেখেছিল। মানুষ নিশ্বাস নিতে পারতো না। মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারতো না। রাজনৈতিক দল ও তার কণ্ঠের স্বাধীনতা ছিল না। মিছিল করতে পারতো না, মিটিং করতে পারতো না। পুলিশ অনুমতি দেওয়ার পর যুবলীগ-ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দেওয়া হতো।’

তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ, র‌্যাব বিনা কারণে বিনা ওয়ারেন্টে রাতে বাসায় গিয়ে পরিবারের নারীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করত। যাকে খুঁজতে গিয়েছে তাকে না পেলে পরিবারের মেয়েদের পর্যন্ত গ্রেপ্তার করে নিয়ে এসেছে।’ ‘শেখ হাসিনা নিজের ক্ষমতাকে নিরাপদ করার জন্য, কণ্টকমুক্ত থাকার জন্য- যে বাংলাদেশে ৩০ লাখ মানুষ অকাতরে জীবন দিয়েছে, দুই লাখ নারী নির্যাতিত হয়েছে, এই যে স্বাধীনতা, এই স্বাধীনতা কলঙ্কিত করেছে শেখ হাসিনা। সিলেটের কৃতী সন্তান ইলিয়াস আলী আজ নেই কেন? শেখ হাসিনার জন্য। কারণ ইলিয়াস আলী দেশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন, তিনি টিপাইমুখ বাঁধ অভিমুখে লংমার্চ করেছিলেন। মানুষ বলে এজন্য তাকে নিরুদ্দেশ করে দেওয়া হয়েছে। কত যুবদল, ছাত্রদলের ছেলে ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছেন, গুমের শিকার হয়েছেন, তার ইয়ত্তা নেই। এই ভয়ংকর মানবতাহীন কাজ করেছেন সাড়ে ১৫ বছর শেখ হাসিনা।’

তিনি বলেন, ‘এখন আমরা খবরের কাগজে দেখতে পারছি জুলাই-আগস্ট হত্যার বিচার এক বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। ড. ইউনূসের প্রতি আমাদের সবার শ্রদ্ধা আছে, এই সরকার তো সর্বজনীন, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের পক্ষের সরকার।’ রিজভী বলেন, ‘শুধু জুলাই আগস্টে যারা নিহত হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, শুধু সেসব অপরাধের বিচার হবে, ইলিয়াস আলীর বিচার হবে না? চৌধুরী আলমের বিচার হবে না? সাড়ে ১৫ বছর যারা ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছেন, তাদের বিচার করবেন না? যারা ক্রসফায়ার দিয়েছেন, শীতলক্ষ্যা নদীতে সাতটি লাশ ভাসিয়ে দিয়েছেন, সেসব দুর্বৃত্ত র‌্যাবের অফিসারদের বিচার হবে না? যে অপরাধ করেছে শেখ হাসিনা, যে কসাইয়ের ভূমিকা পালন করেছে, তার বিচার হবে না?’ জুলাই-আগস্টে আত্মদানকারী ছাত্র-জনতার অবদানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের যেমন বিচার হবে, তেমনি গণতন্ত্রকে উদ্ধারের জন্য যারা অকাতরে জীবন দিয়েছেন, নিরুদ্দেশ হয়ে গেছেন, তাদের কেন বিচার হবে না? হওয়া উচিত। এভাবে বিভাজন রেখা টানলে তা দুঃখজনক।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘স্কুলে পাঠ্যবই সম্পূর্ণ সরবরাহ করা যায়নি, সেটি ভিন্ন ব্যাপার। কিন্তু সেখানে ইতিহাসের বইয়ে তারা কিছু কাজ করেছেন, প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। এখানে এই জাতির বিবেকবানদের জন্য যে অধ্যায় করা হয়েছে, তাতে আমরা দ্বিমত করছি না। সেখানে শেরেবাংলা একে ফজলুল হক, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে মুক্তিযুদ্ধের অধ্যায় রাখা হলো না কেন?’

রিজভী আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান তো শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে শেষ হয়ে যাননি, যুদ্ধ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের অধ্যায় থাকবে না কেন? যারা প্রবাসী সরকার হয়েছিল, সেটা থাকবে, সেটার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের একটা অধ্যায় থাকতে হবে। যতটুকু হয়েছে তার জন্য ধন্যবাদ জানাই; কিন্তু অসম্পূর্ণ থাকবে কেন?’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ একটি বড় ধরনের ঘটনা, শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধিকারের আন্দোলন করেছেন, সেটিতে স্বাধীনতার জন্য একটি মাঠ প্রস্তুত হয়েছে, কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধে কোনো বিশেষ ঘোষণা বা প্রস্তুতির কথা বলেননি। সেই আহ্বান তার নেই। প্রকৃত সত্য হচ্ছে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন জিয়াউর রহমান এবং যুদ্ধ হয়েছে ৯ মাস। সেই অধ্যায়টি রাখা হয়নি। আমি সরকারকে অনুরোধ করব, স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস হওয়া উচিত।’

আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।


জনগণ সঙ্গে না থাকলে কী হয় ৫ আগস্ট দেখিয়ে দিয়েছে: তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জনগণ সঙ্গে না থাকলে কী হয়, তা ৫ আগস্ট দেখিয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, সামনের জাতীয় নির্বাচন এত সহজ নয়। আমরা যদি ভুল করি তাহলে জনগণ আবার কোনো একটা কিছু দেখিয়ে দেবে। তখন কিন্তু পস্তাতে হবে। রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের কাছে স্পষ্ট উদাহরণ রয়েছে, জনগণ যখন ক্ষিপ্ত হয়, তখন কীভাবে স্বৈরাচারকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, জনগণের সমর্থন যদি পেতেই হয় তাহলে কেন আমরা ভালোভাবে নেওয়ার চেষ্টা করবো না। সহকর্মীবৃন্দ দিন শেষে জনগণের কাছে আপনাকে যেতে হবে। জনগণ যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে আপনার আমার কোনো স্থান নেই। নিজেকে যত বড় কিছুই মনে করি না কেন।

তারেক রহমান বলেন, এখনো সময় আছে, আসুন আমরা জনগণের পাশে থাকি। যারা এমন করছে বা করবে যা আপনাকে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে; আমরা তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলব। তারেক রহমান বলেন, জনগণ যেন বুঝে তারা যেভাবে চায় আমরা সেভাবেই আছি। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা তাদের পাশে রয়েছি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকীতে এই হোক আমাদের শপথ। দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান আরও বলেন, অন্য কেউ যদি সরকার গঠন করে তাহলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে হোক বা আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটের শত্রু হোক সেটা কি জাতির জন্য ভালো হবে? আপনাদের মাথায় এতটুকু সেন্স থাকতে হবে।

এখনো সময় আছে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর, মানুষ যেভাবে চায় সেভাবে চলার। দিনশেষে রাজনৈতিক দল হিসেবে, রাজনৈতিককর্মী হিসেবে মানুষের কাছে, ভোটারের কাছে আপনাকে যেতে হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল তারা বিভিন্নভাবে আমাদের বিপক্ষে ওই মোটরসাইকেল ওয়ালাদের কিছু কাজের কারণে তাদের সাথে আমাদের নেতা-কর্মীদের যুক্ত করে কিছু কিছু কথা বলার চেষ্টা করছে। আমাদের সতর্ক সচেতন হতে হবে। কয়েক মাস ধরে বলছি, সামনের নির্বাচন এত সহজ নয়, যত সহজ আপনারা ভাবছেন। ভাবতে পারেন বিএনপির তো গ্রাম পর্যন্ত শাখা প্রশাখা রয়েছে; এত বড়াইয়ের কিছু নেই।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান, কবি সাংবাদিক আব্দুল হাই শিকদার, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।


আবার দেশে-বিদেশে চক্রান্ত শুরু হয়েছে: মির্জা ফখরুল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশে আবার চক্রান্তের খেলা শুরু হয়েছে। কারও নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, “কী করে যারা সত্যিকারে বাংলাদেশে বিশ্বাসী, যারা জোর গলায় বলতে পারে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’- সেই দলকে, সেই নেতাকে তারা দূরে সরিয়ে রাখতে চাচ্ছে। এই চক্রান্ত বহুবার হয়েছে, আজকে আবার শুরু হয়েছে।”

রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম ওই মন্তব্য করে এ কথাগুলো বলেন।

এই সময়কার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সংকটের কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই সংকটের একমাত্র সমাধান হতে পারে সবার কাছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। এটা ইতিহাসে প্রমাণিত। আমরা সে কথাই বারবার বলে আসছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে আবার সেই চক্রান্তের খেলা শুরু হয়েছে। যেটা অতীতেও হয়েছে বহুবার। বাংলাদেশ নিয়ে আবার দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। যার ফলে আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হারিয়েছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ছয় বছর কারাগারে থাকতে হয়েছে, যার ফলে তারেক রহমানকে এখনো পর্যন্ত বিদেশে থাকতে হচ্ছে। এই চক্রান্ত আবার শুরু হয়েছে।’

এই ষড়যন্ত্র সফল হবে না বলে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিনই তাদের চক্রান্ত সফল হতে দেবে না। বিএনপিকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা বহুবার হয়েছে। কখনোই ভেঙে ফেলা সম্ভব হয়নি। বিগত তথাকথিত নির্বাচনের সময়ও চেষ্টা হয়েছে, একটা ছাড়া দুইটা লোককে তারা সরিয়ে নিতে পারেনি। কারণ, বিএনপির যে রাজনীতি- এটা এ দেশের মানুষের রাজনীতি। সে রাজনীতি কী, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্র—এই তিনটি জিনিসের ওপর বিএনপির রাজনীতি, মূল ভিত্তি।’

মির্জা ফখরুল আবারও দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘সংস্কারের নাম করে আমরা এমন কিছু হতে দিতে পারি না, যাতে গণতন্ত্রকে বিঘ্নিত করবে। সরকারের প্রতি আহ্বান জানাতে চাই আর বিলম্ব না করে অনুগ্রহ করে অতি দ্রুত একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করে বাংলাদেশের মানুষকে সংকট থেকে মুক্ত করতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমরাই তৈরি করেছি। আমরা আশা করছি যে অন্তর্বর্তী সরকার ন্যূনতম যে সংস্কারগুলো প্রয়োজন, অর্থাৎ আমাদের নির্বাচন-সংক্রান্ত যে সংস্কার, একটা লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা, প্রশাসনযন্ত্রকে ঠিক করা, বিচারব্যবস্থাকে সংস্কার করা এবং ন্যূনতম অর্থনৈতিক সংস্কারগুলো করা। তার মধ্য দিয়ে একটা নির্বাচন অনুষ্ঠান করা, যেটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।’

বক্তব্যের শুরুতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য করায় দেশের সব গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিএনপির মহাসচিব। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছাত্রদল হচ্ছে আমাদের ভ্যানগার্ড। তাদের এখন জ্ঞানভিত্তিক রাজনীতি করতে হবে। সবচেয়ে যেটা প্রয়োজন, আমাদের সাইবার যুদ্ধ করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের অবস্থান বেশি করে রাখতে হবে। এটি যদি করতে না পারি, তাহলে আমরা এই যুদ্ধে হেরে যাব। মিথ্যা প্রচারণার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোমাদের অ্যাকটিভিটি বাড়াও। দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে মেধা-বুদ্ধি দিয়ে রুখে দাঁড়ানো।’

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন। এ ছাড়া সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে শামসুজ্জমান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, আমানউল্লাহ আমান, খায়রুল কবির, নাজিমউদ্দিন আলম, শহীদউদ্দীন চৌধুরী, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাউদ্দিন, আবদুল কাদের ভূঁইয়া, হাবীবুর রশীদ, বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।


নির্বাচন হলে সব সংকট কেটে যাবে: মির্জা ফখরুল

নির্বাচনের পর জাতীয় সরকার করবে বিএনপি * আমাদের ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা সফল হবে না
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন হলে দেশের সব সংকট কেটে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারেই সমর্থন করছি। তবে দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভালো না, রাজনৈতিক অবস্থাও ভঙ্গুর। আমরা সংস্কার চাই না, এটা ভুল। আমরা সংস্কারও চাই, দ্রুত নির্বাচনও চাই। কারণ, নির্বাচন হলে সব সংকট কেটে যাবে।

শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবি পার্টির জাতীয় কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ফখরুল বলেন, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থানের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশেরই কিছু মানুষ এই ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছেন। আমি জানি, সে চেষ্টা সফল হবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই সম্মিলিতভাবে আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হব বলে আমি বিশ্বাস করি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বৈষম্য দূর করতে তরুণদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একটা নতুন বাংলাদেশ দেখতে চাই। এখানে আমাদের কোনও বিভেদ নেই। তবে আমাদের ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করা হয়েছে। সেটা পারবে না। আমরা এগিয়ে যাব‌। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। হঠকারী সিদ্ধান্ত না নিই।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশকে নতুন করে নির্মাণ করার যে স্বপ্ন আমরা দেখছি, সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে। হঠকারিতা করে, ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে, ভুল পদক্ষেপ নিয়ে- সেই সম্ভাবনাকে বিনষ্ট না করি, সেটা আমাদের সবসময় লক্ষ্য রাখতে হবে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এখন যেটা প্রয়োজন, সব উসকানির পরেও আমরা যেন সিদ্ধান্তে অটল থাকি। একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাই, বৈষম্য দূর করতে চাই, বাংলাদেশের তরুণদের হাতে হাত মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একটা নতুন বাংলাদেশ দেখতে চাই। এখানে আমাদের কোনও বিভেদ নেই।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ভয়াবহ দানবের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি‌। নতুন দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি। এটা যাতে নষ্ট না হয়ে যায়, সেই চেষ্টা করতে হবে। ১৬ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছি। এই ১৬ বছরে বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে। ৭০০ জন গুম হয়েছে। নিহত হয়েছে ২০ হাজারের মতো।

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব ভালো নয়। রাজনৈতিক দিক দিয়ে ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। আমরা সেটাকে একসঙ্গে লড়তে (মোকাবিলা করতে) চাই। সবাই মিলে এই সমস্যাগুলোকে সমাধান করতে চাই।’ নির্বাচনের পরে একটা ঐক্যবদ্ধ জাতীয় সরকার গঠন করতে চায় বিএনপি জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘সবাই মিলে রাজনৈতিক সমস্যাগুলোর সমাধান করতে চাই। যারা অন্যান্য দলে আছে তারা অবশ্যই এটা ভাববেন ও চিন্তা করবেন। তারা তাদের যে মতামত সেটা দেবেন।’

বিএনপি সংস্কারের কথা আগেই বলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সংস্কারের কথা আগেই বলেছি, আবারও বলছি আমরা সংস্কার চাই। কিছু কিছু মানুষ আছেন, তারা একটু বুঝানোর চেষ্টা করেন যে, আমরা সংস্কারের আগেই নির্বাচন চাই বা নির্বাচনের জন্য অস্থির হয়ে গেছি। বিষয়টা তেমন না। আমরা যেটা বলছি, নির্বাচন কেন দ্রুত চাই? এই কারণে দ্রুত চাই যে, নির্বাচনটা হলেই আমাদের শক্তি আরও বাড়বে। সরকার থাকবে, সংসদ থাকবে। যে সংকটগুলো সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো দূর হয়ে যাবে।’ বর্তমান সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাবেন জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘তাদেরকে আমরা সমর্থন দিয়েছি। সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। তাদের পক্ষে সম্ভব… আমরা একটা পথ খুঁজে পাবো, যে পথে আমরা সবাই এগিয়ে যেতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘৫ মাস পরে অনেকেই জিজ্ঞেস করছেন আমাদের অর্জন কী? অর্জন হচ্ছে আজকে আমরা এখানে দাঁড়িয়ে নিঃসংকোচে, নির্ভয়ে কথা বলতে পারছি। এটাই আমাদের একটা বড় বিজয় বলে মনে করি। এখানে এবি পার্টিরও একটা বড় ভূমিকা আছে।’


জাতিকে বিভক্ত করার প্রচেষ্টা রুখতে ঐক্য জরুরি: ফখরুল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশকে রক্ষা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্য অপরিহার্য হলেও একটি মহল জাতিকে বিভক্ত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, 'আমি সবাইকে বিভাজনের রাজনীতি পরিহার করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'দেশকে বাঁচাতে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ঐক্য।’

আজ বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে 'রাজবন্দীর জবানবন্দী' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান।

বইটিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার 'মিথ্যা' মামলায় আদালতে দেওয়া জবানবন্দী সম্পর্কে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

ফখরুল বলেন, সংস্কার অবশ্যই প্রয়োজন, কিন্তু এসব সংস্কারের পেছনে চালিকাশক্তি হিসেবে নির্বাচিত সংসদ ও সরকার থাকতে হবে। ‘এটি ছাড়া আমরা কখনোই সংস্কারকে বৈধতা দিতে পারব না। আমি এখন এ নিয়ে বিতর্কে জড়াতে চাই না।’

তিনি বলেন, 'আমি দেশের সকল গণতন্ত্রকামী ও স্বাধীনতাকামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। বিভক্ত হবেন না। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, কিছু মানুষ দেশ ও দেশের মানুষকে বিভক্ত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

তিনি আরও বলেন, জাতিকে বিভক্ত করার উদ্দেশে কিছু লোক উসকানিমূলক বক্তব্যও দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে এবং দেশে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা থেকে বিরত থাকতে রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি নেতা।


চক্রান্ত চলছে, মাথানত করব না: মির্জা ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা কোনো চক্রান্তের কাছে মাথানত করব না।’ শনিবার ঠাকুরগাঁও পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জেলা ছাত্রদলের আয়োজনে এক সমাবেশে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি একথা বলে।

ছাত্রদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আপনারা জানেন গত ১৫ বছর আমরা আন্দোলন করেছি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। রাজনীতিকে ধ্বংস করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছিল। অসংখ্য ছাত্রকে হত্যা করেছিল। কিছুদিন আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তারা (আওয়ামী লীগ) কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রীকে হত্যা করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, তারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। দেশের সবকিছু ধ্বংস করে দেয়। আজকে তোমাদের আন্দোলন একই সঙ্গে জনগণের আন্দোলন সব মিলিয়ে হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। ফ্যাসিবাদকে যখন বিতাড়িত করতে সক্ষম হয়েছি, তখন আমাদের সামনে একটি সম্ভাবনার দ্বার এসে উপস্থিত হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের যেটা প্রয়োজন তা হচ্ছে ঐক্য। বিশেষ করে জনগণের ঐক্যের সঙ্গে ছাত্রের ঐক্য। ছাত্রদের উদ্দেশে একটি কথা বলতে চাই, সবার আগে পড়াশোনা করতে হবে। পড়াশোনা করে ভালো ফলাফল করতে হবে এবং নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এ দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চাইব, আমরা গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে চাইব। মানুষের অধিকারকে রক্ষা করতে চাইব। সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ণ রাখব। এ বিষয়গুলো সামনে রেখে আমাদের এগুতে হবে।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যারা যুদ্ধ করেছিল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মধ্যদিয়ে, তারা সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক দেশ চেয়েছিলেন। তারা বৈষম্যবিহীন রাষ্ট্র চেয়েছিলেন। আজকে সবখানে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। দুর্নীতি হয়েছে। আমাদের বৈষম্য ও দুর্নীতিকে দূর করে জনগণের একটা সরকার যেন প্রতিষ্ঠা করতে পারি। পার্লামেন্ট করতে পারি। জনগণ যেন ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করতে পারি সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।’


গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিএনপিতে নেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাব চত্বরে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিএনপিতে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাব চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাব চত্বরে গতকাল শীতার্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক সাংবাদিক বলেন, সারা দেশে বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগের নেতারা বিএনপিতে যোগদান করছেন। এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিবের কাছে জানতে চান। তখন মির্জা ফখরুল বলেন, ‘(বিষয়টি) আমার জানা নাই। আমরা অন্তত এটুকু বলতে পারি যে আমাদের এখানে নির্দেশ দেওয়া আছে- এই মুহূর্তে যারা সন্ত্রাসী, যারা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত হয়েছিল, যারা দুর্নীতি করেছে, তাদের কাউকে বিএনপিতে নেওয়া হবে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঠাকুরগাঁওয়ে শীত বেশি হওয়ায় এখানকার মানুষ খুব কষ্ট পায়। আমরা আশা করেছিলাম সরকারের তরফ থেকে দুস্থ মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই ধরনের কোনো উদ্যোগ দেখতে পাইনি। তাই আমরা নিজেরাই দলের পক্ষ থেকে সামান্য শীতবস্ত্র সংগ্রহ করেছি। আমি আশা করব, সরকার এ ব্যাপারে এগিয়ে এসে শীতে দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করবে।’

ফ্যাসিবাদ থেকে উত্তরণের উপায় সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুর্নীতি ও ফ্যাসিবাদ থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হচ্ছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করা। জনগণের যে শাসন, সেই শাসনকে স্থাপিত করতে হবে। অর্থাৎ জনগণের নির্বাচিত যে পার্লামেন্ট, সেই পার্লামেন্ট দিয়েই দেশ পরিচালনা করতে হবে। এ ছাড়া অন্য কোনো উপায় আছে বলে আমার জানা নেই। গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানগুলো যদি নির্মাণ করা যায়, তাহলে সেটাই হবে সবচেয়ে বড় রক্ষাকবচ।’

এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক তারিক আদনান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


সংস্কার চাইলে আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে: মির্জা ফখরুল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

সত্যি সত্যি পরিবর্তন চাইলে, সংস্কার চাইলে আবারও ৫ আগস্টের মতো ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বিএনপি আয়োজিত শিবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল তার ভাষণে ১৯৭১ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাসের সারমর্ম নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেন। এ বক্তৃতায় তিনি বলেন, এখানে অনেকেই ৭১ সালের যুদ্ধের কথা বলতে পারবে না। আমরা ১৯৭১ সালে যারা যুদ্ধ করেছি তাদের লক্ষ্য ছিল আমাদের একটা স্বাধীন দেশ পাব। পাকিস্তানিরা আমাদের ওপর আর অত্যাচার করতে পারবে না। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে আমরা রক্ষা পেয়েছিলাম যুদ্ধ করে। লক্ষ লক্ষ মানুষ সেখানে শহীদ হয়েছিল। আমরা হিন্দু-মুসলমান ভাইয়েরা ঘরবাড়ি ছেড়ে ভারতে চলে গিয়েছিলাম। আমরা সেগুলো ভুলি নাই। আমাদের বাড়িঘর পাক হানাদার বাহিনী লুট করে নিয়ে গিয়েছিল। এরপর স্বাধীন হলাম যুদ্ধ করে। একটা দেশ পেলাম, স্বাধীন বাংলাদেশ। আমাদের আশা ছিল, ভরসা ছিল শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের বড় নেতা। তিনি পাকিস্তান থেকে এসে আমাদের একটা সুন্দর শান্তির দেশ দেবেন। যেখানে পরস্পর ভাই ভাই হয়ে বাঁচব। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের! আমরা সেটা পাই নাই। সে স্বাধীনতার পর থেকে শুরু হয়ে গেছে এ দেশে হানাহানি-কাটাকাটি, খুন, জখম, হিংসা।

ইতিহাস তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যপার যে নেতাকে (শেখ মুজিব) এত মানুষ ভালোবাসল, যে দলটাকে (আওয়ামী লীগ) এত মানুষ ভালোবাসল- সে দলটাই এ দেশের মানুষের ওপরে চড়াও হয়ে গেল।

তিনি বলেন, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে আমরা লড়াই-সংগ্রাম করছি। পরিবর্তন এমনি এমনি হয়ে যায় নাই। এ দেশটা আমাদের সবার।

সংস্কার বিষয়ে মির্জা ফখরুল জনসভায় বলেন, তিনি বুঝতে চান সংস্কার কী? তিনি বলেন, সংস্কার কি আপনারা জানেন, আমাকে জানাতে হবে। আমি বুঝি না সংস্কার কী?

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি সংস্কার বলতে এটুকু বুঝি আমার একটা পরিবর্তন লাগবে। পরিবর্তনটা কী? যেন আমার ভোটটা আমি নিজে দিতে পারি। এটা নিশ্চিত করতে হবে। আর পার্লামেন্টে যেন আমাদের কথাটা আলোচনা হয়। কৃষক ন্যায্য দাম পায়, শ্রমিক যেন ন্যায্য মজুরি পায়। আমরা দিনের শেষে একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারি।

জনগণের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা কি সত্যি সত্যি পরিবর্তন চান, নাকি আবারও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নৌকায় ফিরে যেতে চান? যদি না চান তাহলে কিন্তু যেমন ৫ আগস্ট ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন, আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। রাস্তায় নামতে হবে, ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য, ভাতের অধিকার এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য, সামাজিক মর্যাদা পাওয়ার জন্য।

এ সময় বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা নাই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, কেউ যদি এ দেশে সাম্প্রদায়িক হানাহানি হচ্ছে এমন কথা বলেন, তাহলে এ কথা আমরা মানতে রাজি না। কারণ, আমরা সবাই একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে থাকি।

এ সময় বিএনপির জেলা-উপজেলার নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন স্তরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


banner close