শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
৬ বৈশাখ ১৪৩২

জাতীয় ঐক্য ও নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের ষড়যন্ত্র চলছে: তারেক রহমান

বিএনপির বর্ধিত সভায় শীর্ষ নেতারা ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য রাখেন। ছবি: সংগৃহীত
বাসস
প্রকাশিত
বাসস
প্রকাশিত : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ১৭:৫৩

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জাতীয় ঐক্য ও নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের ষড়যন্ত্র চলছে।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে ২০১৬ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির দ্বিতীয় বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, জাতীয় ঐক্য ও নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমি দেশের কৃষক, শ্রমিক, জনতা, আলেম, ওলামা পীর মাশায়েখ তথা সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। যারা বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্র বানিয়ে রাখতে চেয়েছিলো তাদের ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনো থেমে নেই। ‘সংস্কার’ কিংবা ‘স্থানীয় নির্বাচন’ এসব ইস্যু নিয়ে জনগণের সামনে এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান।

বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক বিএনপির বর্ধিত সভা আজ দীর্ঘ ৭ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে বিএনপির সর্বশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি। সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়া। ফ্যাসিবাদী শাসনকালে এরপর আর বিএনপির বর্ধিত সভা কিংবা কাউন্সিল অনুষ্ঠান সম্ভব হয়নি।

তারেক রহমান বলেন, চিকিৎসাধীন থাকায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে তিনি এই সভার সাফল্য কামনা করেছেন। তিনি আপনাদের কাছে দোয়া চেয়েছেন। দেশনেত্রীর শারীরিক সুস্থতার জন্য আমরা আল্লাহর দরবারে দোয়া কামনা করছি। মাদার অফ ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়ার সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব আর সুদক্ষ নেতৃত্ব বিএনপিকে পৌঁছে দিয়েছিলো সারাদেশের প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি ঘরে।

তারেক রহমান আরো বলেন, ‘আজকের এই বর্ধিত সভার শুরুতেই আমি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করতে চাই। তিনি একদলীয় অভিশপ্ত বাকশালের অন্ধকারাচ্ছন্ন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের আলো জ্বালিয়েছিলেন। মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের নিষিদ্ধ করা সকল রাজনৈতিক দলকে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। জনগণের ভালোবাসায় ধন্য বিএনপির হাতে গণতন্ত্রের ঝাণ্ডা তুলে দিয়েছিলেন।’

বিএনপির জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং স্বৈরাচার বিরোধী ধারাবাহিক আন্দোলনে, যারা শহীদ হয়েছেন আহত হয়েছেন, সন্তান-স্বজন হারিয়ে যেসব পরিবার নিদারুণ দুঃখ কষ্টের মুখোমুখি হয়েছেন, যাদের শ্রম ঘাম মেধায় বিএনপি আজ আপামর জনগণের কাছে দেশের সবচেয়ে বিশ্বস্ত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, আজকের বর্ধিত সভার শুরুতে তাদের প্রত্যেকের অবদানকেও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহীদ, দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ধারাবাহিক সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে তাবেদার অপশক্তির বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধের সাহসী বীর আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, রিয়া গোপ, আব্দুল আহাদ এবং বিএনপির পাঁচ শতাধিকসহ হাজারো শহীদ এবং আহত যোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি।

তিনি বলেন, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতাপ্রিয় বীর জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর দেশে গণতন্ত্রকামী মানুষের সামনে বাংলাদেশ পুনর্গঠনের এক অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। এই সুযোগ এবং সম্ভাবনা নস্যাৎ করার জন্য এরইমধ্যে নানারকম ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সুকৌশলে রক্তপিচ্ছিল রাজপথে গড়ে ওঠা ‘জাতীয় ঐক্য’ এবং জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের অপচেষ্টা চলছে।

তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। বিএনপির কাছে সংস্কারের ধারণা নতুন কিছু নয়। সরকারে কিংবা বিরোধী দলে বিএনপি যখন যে অবস্থানেই দায়িত্ব পালন করেছে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে, সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সব সময়েই রাষ্ট্র, সরকার ও রাজনীতিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করেছে এবং করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পর দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সংবিধানে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন, ১৯৯১ সালে দেশে সংসদীয় সরকার প্রতিষ্ঠা এসবই ছিল রাষ্ট্র, রাজনীতির ময়দানে যুগান্তকারী সংস্কার। এছাড়াও বিভিন্ন মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকাকালে বিএনপি সরকার স্কুল কলেজে বিনা বেতনে মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, রাষ্ট্র ও সমাজে মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, বিশ্বের তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকে প্রস্তুত রাখতে বিজ্ঞান এবং তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এগুলোও ছিল রাষ্ট্র ও সরকারের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার। এ ধরনের আরো অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, ষড়যন্ত্রের পথ ধরে পলাতক স্বৈরাচারের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পর সংস্কারের সকল পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। বাংলাদেশকে চিরতরে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করে রাখতে গত দেড় দশকে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিল। দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নাজুক করে তুলেছিল। টাকা পাচার আর লুটপাট চালিয়ে দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর করে দিয়েছিল। অকার্যকর করে দেয়া হয়েছিল দেশের সকল সাংবিধানিক এবং বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে জনগণকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাহীন করে দিয়ে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে তুলেছিল।

‘এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র, সরকার এবং রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের লক্ষ্যে মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়া ২০১৭ সালে ভিশন ২০৩০ দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালে বিএনপি ২৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে। পরবর্তীকালে গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়ের পর ঘোষণা করা হয় ৩১ দফা কর্মসূচি। এই ৩১ দফা নিয়ে বর্তমানে বিএনপির উদ্যোগে সারাদেশে জনগণের সঙ্গে সংলাপ চলছে।’

তারেক জিয়া বলেন, রাষ্ট্র-সরকার-রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দল মেরামতের জন্য দফা ৩১টি হলেও এর চূড়ান্ত লক্ষ্য একটি। সেটি হলো একটি নিরাপদ, গণতান্ত্রিক, মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ। ঠিক তেমনি উদ্দেশ্যও একটি। সেটি হলো রাষ্ট্র ও সমাজে জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা। এটি নিশ্চিত করা না গেলে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-গণতন্ত্র-নিরাপত্তা-সমৃদ্ধি কোনটিই টেকসই হবে না।

‘রাষ্ট্রের স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তার জন্য জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের কোনোই বিকল্প নেই। রাষ্ট্র এবং সমাজে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার পূর্ব শর্ত হলো প্রতিটি নাগরিকের ভোট প্রয়োগের অধিকার বাস্তবায়ন। এবং এ লক্ষ্যেই একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি বারবার জনগণের ভোটে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যেই জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানায়।’

তিনি বলেন, আগামী দিনের রাজনীতিতে বিএনপির এই ৩১ দফা হচ্ছে, একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক, মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সনদ। তবে এই ৩১ দফাই শেষ কথা নয়। সময়ের প্রয়োজনে রাষ্ট্র-সরকার-রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলের সংস্কারের জন্য এই ৩১ দফাতেও সংযোজন-বিযোজনের সুযোগ রয়েছে। এমনকি বিএনপির ৩১ দফার সঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার প্রস্তাবনার খুব বেশি ইস্যুতে মৌলিক বিরোধ নেই।

তারেক রহমান বলেন, বিভিন্ন সময়ে ‘জাতীয় নির্বাচন’ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য জনমনে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করলেও ‘জাতীয় নির্বাচন’ নিয়ে কোনো কোনো উপদেষ্টার বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য, মন্তব্য স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের জন্য হতাশার কারণ হয়ে উঠছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দলের নিঃশর্ত সমর্থন থাকলেও সরকার এখনো তাদের কর্মপরিকল্পনায় অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে পারছে না।

তিনি বলেন, সারাদেশে খুন, হত্যা, ধর্ষণ চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি বেড়েই চলেছে। বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, সরকার যেখানে দেশের বাজার পরিস্থিতি কিংবা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন করতে পারছে না সেখানে জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘স্থানীয় নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের নামে কেন দেশের পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করতে চাইছে এটি জনগণের কাছে বোধগম্য নয়।

তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রকামী জনগণ মনে করে, স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সেটি হবে সারাদেশে পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের একটি প্রক্রিয়া যা সরাসরি গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিরোধী। গণহত্যাকারী, টাকা পাচারকারী, দুর্নীতিবাজ মাফিয়া চক্রকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার এই ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না।

তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি জনরায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে গণহত্যাকারী-মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহবান, সারাদেশে গণহত্যাকারীদের দোসর, মাফিয়া চক্রকে পুনর্বাসনের ‘স্থানীয় নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা থেকে সরে আসুন। অবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আগামী দিনের সুনির্দিষ্ট ‘কর্ম পরিকল্পনার রোডম্যাপ’ ঘোষণা করুন।

তিনি বলেন, মাফিয়া প্রধান হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর এ পর্যন্ত ১৬/১৭টি নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিএনপি সকল নতুন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে স্বাগত জানায়। তবে নির্বাচনের মাধ্যমে গ্রহণ কিংবা বর্জনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে জনগণ। প্রতিটি দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু ‘জাতীয় নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সবার আগে নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তুত রাখতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে একটি অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নিরপেক্ষতাই হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সবচেয়ে বড় পুঁজি। কিন্তু সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে ইতোমধ্যেই জনমনে সন্দেহ ও সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে । নিজেদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আরো সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানাই।

দলীয় নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি আপনাদের কাছ থেকে শারীরিকভাবে দূরে থাকলেও যোগাযোগ এবং কর্ম পরিকল্পনার মাধ্যমে আমি কখনোই আপনাদের কাছ থেকে দূরত্ব অনুভব করিনি। আমি বিশ্বাস করি যে দলে আপনাদের মতো ত্যাগী এবং সাহসী নেতাকর্মী রয়েছে সেই দলকে কোনো স্বৈরাচার-ই দমিয়ে রাখতে পারে না।'

তিনি বলেন, এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই যে দেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান তথা দলমত ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার ভোগ করবেন। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই বাংলাদেশ ভূখণ্ডে বসবাসকারী আমাদের সকলের একটিই পরিচয় ‘আমরা বাংলাদেশি’।

পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রেও বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি সুস্পষ্ট। বিএনপি মনে করে বর্তমান বিশ্বে স্থায়ী শত্রু-মিত্র বলে কিছু নেই, উল্লেখ করেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, একটি দেশের সঙ্গে অপর দেশের সম্পর্ক হবে ‘পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা, প্রয়োজন ও ন্যায্যতা’র ভিত্তিতে। অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের নীতি ‘সবার আগে বাংলাদেশ’। অর্থাৎ নিজ দেশ এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষাই হতে হবে প্রথম এবং প্রধান অগ্রাধিকার।

তিনি বলেন, এ মুহূর্তে বিএনপিই দেশের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। বিএনপির কাছে জনগণের যেমন আশা ভরসা প্রত্যাশা রয়েছে, একইসঙ্গে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরাও থেমে নেই। চক্রান্তকারীদের মোকাবেলা করে কিভাবে দলকে আরো শক্তিশালী এবং সুসংহত করা যায় সেই সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা থাকবে।

তিনি বলেন, বিএনপি একটি বৃহৎ পরিবার। এই পরিবারের নানা বিষয়ে আমাদের মতের অমিল থাকতেই পারে। আমরা সবাই আমাদের ঐক্যের শক্তির সক্ষমতা সম্পর্কে অবহিত। ঐক্যই আমাদেরকে বারবার বিজয় আর সফলতা এনে দিয়েছে। গত দেড় দশকে সারাদেশে বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের ভিন্ন দল এবং মতের নেতাকর্মীদেরকে অবর্ণনীয় নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করতে হয়েছে। কেবল বিএনপিরই প্রায় ৬০ লাখের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দেড়লাখ রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমের মতো অনেক নেতাকর্মীর আজ পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি। শুধুমাত্র বিএনপি করার অপরাধে হাজার হাজার নেতা কর্মী সমর্থককে গুম, খুন, অপহরণ করা হয়েছে। তবুও বিএনপির নেতাকর্মীরা কেউ দল ছেড়ে যাননি। স্বৈরাচারের সঙ্গে করেননি আপোষ। এই সৎসাহস এবং সততার কারণে বিএনপি আজ শুধু একটি সাধারণ রাজনৈতিক দলই নয়। দেশের গণতন্ত্রকামী স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণ বিএনপিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ভ্যানগার্ড হিসেবে বিশ্বাস করে। এটি একজন রাজনৈতিক কর্মীর জন্য নিঃসন্দেহে একটি বড় প্রাপ্তি।

তারেক রহমান বলেন, দলের সর্বস্তরের প্রতিটি নেতাকর্মীকে আরো বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। আচরণে হতে হবে আরো সতর্ক ও সংযত। তবে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কোটি কোটি নেতাকর্মী সমর্থকের এই বৃহৎ রাজনৈতিক দলের কোনো কোনো নেতা কর্মী হয়তো নিজের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। তাই আমি আপনাদের আবারো বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের একটি বার্তা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। ব্যক্তির চেয়ে দল বড় দলের চেয়ে দেশ বড়।

দলের প্রতিটি নেতাকর্মীর দীর্ঘদিনের সীমাহীন ত্যাগ তিতিক্ষা আমি গভীরভাবে উপলব্ধি করি উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, যারা দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণ হবেন ব্যক্তির চেয়ে দলের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে বাধ্য হয়েই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও নিতে হবে। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ কিংবা দলের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো কাজকে বিএনপি বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় দেবে না। জনগণই বিএনপির সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস।

জাতীয় নির্বাচনের সময়ও ঘনিয়ে আসছে। মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে দলীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, ‘গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি বার্তা দিতে চাই, বিএনপি শুধুমাত্র আপনাদের ভোটের পুনরুদ্ধারই নয়, আপনার ভোট প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করতে চায়। আপনাদের সমর্থন পেলে বিএনপি এমন একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যে সরকার আপনার কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। আমি জনগণের সমর্থন চাই, সকলের সহযোগিতা চাই।’


বিএনপি সংস্কারের বিষয়ে সিরিয়াস: সালাহউদ্দিন

* ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির সংলাপ
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিশেষ প্রতিবেদক
    * সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে স্প্রেডশিটের বিস্তর ফারাক * সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন না করে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় হলে প্রশ্ন উঠবে

সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশের মধ্যে ২৫টির সঙ্গে একমত ও ২৫টির মতো বিষয়ে আংশিকভাবে একমত এবং বাকিগুলোতে দ্বিমত প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে বিশেষ করে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা সংবিধানসম্মত হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এছাড়া সুপারিশগুলো ‘স্প্রেডশিট’ আকারে পাঠিয়ে হ্যা-না মতামতের প্রক্রিয়া বিভ্রান্তিকর বলে মনে করছেন বিএনপি নেতারা। অন্যান্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়েও দলটির পক্ষ থেকে মতামত দেওয়া হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের বিরতিতে এসব বিষয় গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে স্প্রেডশিটের ‘বিস্তর ফারাক’ তারা দেখতে পেয়েছেন। ‘স্প্রেডশিটে সংক্ষিপ্ত হ্যাঁ/না জবাব দেওয়ার জন্য যে কাগজগুলো দিল, তাতে করে অনেকটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে, মিস লিড করা হয়েছে। স্প্রেডশিট দিয়ে আমাদের উনারা বিভ্রান্ত করেছেন, মিস লিড করেছেন। এটা দেওয়া উচিত হয়নি।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম এ সদস্য জানান, দলের পক্ষ থেকে তারা সুপারিশের বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কার সংক্রান্ত হার্ড কপি জমা দিয়েছেন। সংবিধান সংস্কার, বিচার বিভাগ, নির্বাচনসহ সব বিষয়ে মতামত দেয়া হয়েছে। বিএনপি সংস্কারের বিষয়ে সিরিয়াস বলে এ সময় উল্লেখ করেন তিনি। বিচারবিভাগের সংস্কারে ৮৯ দফা নিয়ে মতামত জানানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘সবকিছু সাংবিধানিক হওয়া উচিত। বিচারবিভাগের স্বাধীনতা চাই। প্রক্রিয়াটা যেন সাংবিধানিক হয়। বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে বেশিরভাগই সংশোধনী দিয়েছে। এনআইডি, সীমানা নির্ধারণ নির্বাচন কমিশনের অধীনেই থাকা উচিত।’

সালাহউদ্দিন বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের বিস্তারিত প্রতিবেদনে ১৩১টি প্রস্তাব থাকলেও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের স্প্রেডশিটে এর মাত্র ৭০ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। বিএনপি সংবিধান সংস্কার কমিশনের ২৫টি প্রস্তাবে একমত, ২৫টির মতো বিষয়ে আংশিকভাবে একমত। বাকি বিষয়গুলোতে একমত হতে পারেনি। আমরা যে সমস্ত বিষয়ে বিস্তারিত মতামত দিয়েছি, সে বিষয়ে কমিশনকে যৌক্তিকভাবে বোঝাব এবং তাদের প্রস্তাবের বিষয়েও আমরা যৌক্তিকভাবে জানতে চাচ্ছি। যেটা যৌক্তিক, সেটা জাতির কল্যাণের দিকে লক্ষ্য রেখে আমরা অবশ্যই বিবেচনা করব।

বিচার বিভাগের মতামত নিয়ে প্রতিবেদনে ‘মিস লিড’ করার অভিযোগ তুলে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিস্তারিত প্রতিবেদনের ১৫০টি মতামতের মধ্যে ৮৯টির বিষয়ে মতামত দিয়েছি। বাকিগুলোর অধিকাংশ ক্ষেত্রে একমত হওয়া বা মন্তব্যসহ একমত হওয়ার কথা জানিয়েছি। যেসব বিষয়ে ‘হ্যাঁ/ না’ তে মতামত চাওয়া হয়েছে, তার সঙ্গে বিস্তারিত প্রতিবেদনের ‘বিস্তর ফারাক’। কেননা সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের সংশোধনী ব্যতিরেকে বিচারক নিয়োগের অধ্যাদেশ জারি করা ততক্ষণ পর্যন্ত অসাংবিধানিক হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না তা সংবিধানে গৃহীত হচ্ছে। এছাড়া ‘১১৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা সংবিধানসম্মত হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রইবে। বিচার বিভাগ কর্তৃক সংবিধান লঙ্ঘন সমুচিত হবে না।’ বিএনপি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা চায় জানিয়ে সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘প্রক্রিয়া যাতে আইনানুগ ও সাংবিধানিক পদ্ধতিতে হয়, সেজন্য বিস্তারিত মতামত দেব। লিখিতও দিয়েছি।’

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের অধিকাংশ বিষয় ‘সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত’– মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কিছু বিষয়ে তারা এমন প্রস্তাব দিয়েছে, যা বাস্তবায়ন করলে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন সত্তা বজায় থাকবে না।’ যদিও বিএনপির সঙ্গে কমিশনের আলোচনা দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, প্রয়োজনে আরও আলোচনা হবে। কারণ আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আগাচ্ছি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দলে বৃহস্পতিবার ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে। এ দলে আরো ছিলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ ও কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যরিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে বিএনপির সঙ্গে কমিশনের বৈঠক শুরু হয়।

ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশের হাল ধরা অন্তর্র্বতী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে দুই ধাপে ১১টি কমিশন গঠন করে। কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়। সেদিন ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপিসহ সবগুলো রাজনৈতিক দলের প্রথম বৈঠক হয়। এরপর সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মতামত জানতে চায় ঐকমত্য কমিশন। পরে মতামত তুলে ধরে ৩৪টি দল, যাদের সঙ্গে এখন আলাদা করে বৈঠক করছে কমিশন।

বৃহস্পতিবার বিএনপির সেঙ্গে আলোচনার শুরুতে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, এদেশে গণতন্ত্র হোঁচট খেয়েছে, ব্যক্তিতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এ দেশে; সেগুলো যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে। এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো সংগ্রাম করেছে, বিএনপি অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা; যাতে করে বাংলাদেশে একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারি।’


বিএনপি সংস্কারেরই দল, তবে সবকিছুর মূলে জনগণ: নজরুল ইসলাম খান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘বরং বিএনপি সংস্কারেরই দল, তবে সবকিছুর মূলে জনগণ। জনগণের সম্মতিতে যেন সব হয়।’

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির আলোচনার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘আমরা গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয়, বিএনপি সংস্কারেরই দল। কিন্তু কেউ কেউ নানান কথা বলেন। তারা যখন সংস্কারের দন্তস্য উচ্চারণ করেননি, তখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন।’

সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে শুরু হয়েছে।

গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ আন্দোলন–সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের সামনে আরেকবার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, আমরা তা কাজে লাগাতে চাই। আমরা এই কমিশনকে সহযোগিতা করছি, এই সরকারকে সহযোগিতা করছি, সেই প্রত্যাশা নিয়েই।’

যদি ঐকমত্য কমিশনের কোনো সনদ না-ও হয়, বিএনপির জন্য সংস্কারের সনদ রয়েছে বলে জানান নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, সবকিছুর মূলে জনগণ এবং জনগণের সম্মতিতে যেন সব হয়। তিনি আরও বলেন, ‘আর জনগণ কার মাধ্যমে সম্মতি জানায়, তা আমরা জানি।’

আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ,আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক সচিব নিরুজ্জামান খান অংশ নেন।

আজ দিনব্যাপী এই আলোচনা চলতে পারে বলে ঐক্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে। আজ আলোচনা শেষ না হলে প্রয়োজনে আগামী সপ্তাহে আবারও বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসবে কমিশন।


প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে একেবারে সন্তুষ্ট নই: মির্জা ফখরুল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিশেষ প্রতিনিধি

আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের’ ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে’ এমন বক্তব্যে হতাশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘তার (প্রধান উপদেষ্টার) বক্তব্যে আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই।’

আজ বুধবার মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে বের হওয়ার পর তিনি এ হতাশা ব্যক্ত করেন। বিএনপির মিডিয়া উইং থেকে জানানো হয়, বৈঠকে দলটির পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে একটি চিঠিও দেয়া হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা সুনির্দিষ্ট করে নির্বাচনের ডেটলাইন দেননি। তিনি বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে তিনি নির্বাচন শেষ করতে চান। উনি ডিসেম্বর থেকে জুন বলেছেন, উনি বলেননি এটা ডিসেম্বরে হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি যে, আমাদের কাটঅফ টাইম ইজ ডিসেম্বর। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন যদি না হয়, তাহলে দেশে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং সামাজিক পরিস্থিতি, সেটা আরও খারাপের দিকে যাবে। সেটা তখন নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।এ সময় ডিসেম্বরে নির্বাচন না হলে বিএনপি কী করবে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে দলটির মহাসচিব বলেন, দলের মধ্যে এবং মিত্র দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের আলোচনার প্রধান বিষয় ছিলো নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নিয়ে। সে বিষয়ে কথা বলেছি। আর বলেছি যে, যে পরিস্থিতি আছে এবং দেশের যে অবস্থা, তাতে করে আমরা বিশ্বাস করি এখানে দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, যে সংস্কার কমিশনগুলো করা হয়েছে, সেগুলোতে আমরা সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছি। কয়েকদিন আগে সংস্কার কমিশনের কাছে আমাদের মতামতগুলো দিয়েছি। আগামীকালও আমাদের সঙ্গে বৈঠক আছে। সবগুলো দল যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেগুলো নিয়ে আমরা একটা চার্টার করতে রাজি আছি। তারপরে আমরা নির্বাচনের দিকে চলে যেতে পারি। বাকি যেসব সংস্কারে আমরা একমত হব, সেটা আমরা অবশ্যই আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচিত হয়ে আসবেন, তারা সেগুলো বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেবেন। এটাই ছিল আমাদের (বিএনপির) মূল কথা।

এ বৈঠকের জন্য বেলা সোয় ১২টায় ‘যমুনা’য় পৌঁছায় বিএনপি মহাসচিবসহ দলের স্থায়ী কমিটির ৭ সদস্য। পৌনে দুই ঘণ্টার বৈঠকে নির্বাচনী রোডম্যাপ, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার, শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

সরকারের পক্ষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ছিলেন উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।

চিঠিতে যা বলা হয়েছে

চিঠিতে বিএনপি উল্লেখ করে, মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে গণতন্ত্র ও মানবিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রতিটি লড়াইয়ের নেতৃত্বদানকারী কিংবা গর্বিত সক্রিয় অংশীদার হিসেবে বিএনপি তার অবস্থান থেকে প্রতিটি লড়াইয়ের সুফল জনগণের জন্য কার্যকর করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে এবং করছে। সেই লক্ষ্যেই এবারও জুলাই-আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের সুফল জনগণের কল্যাণে এবং তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে নিবেদিত করার টেকসই ক্ষেত্র প্রস্তুতের লক্ষ্যে দেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপরিচালনার ভার আপনার নেতৃত্বে অন্তর্র্বতী সরকার প্রতিষ্ঠায় আমরা সমর্থন জানিয়েছি এবং দায়িত্ব পালনে আপনাকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি এবং সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। আপনার ও আপনার নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্র্বতী সরকারের কাছে প্রায় দেড় যুগ ধরে গণতান্ত্রিক অধিকারহীন জনগণের স্বাভাবিক প্রত্যাশা ছিল। যত দ্রুত সম্ভব ফ্যাসিবাদী দল, তাদের দলীয় সরকার ও তার দোসরদের আইনের আওতায় এনে তাদের গণবিরোধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার, দুর্নীতি-অনাচারের মাধ্যমে দেশের সম্পদ লুণ্ঠনকারীদের বিচার ও পাচার করা অর্থ পুনরুদ্ধারের, ফ্যাসিস্ট সরকারের হাতে নিহত ও আহতদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ, সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন এবং দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পতিত সরকারের সব অপচক্র ও সিন্ডিকেট ধ্বংস করার পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া, যাতে তারা সম্মিলিতভাবে দেশে সুষ্ঠু রাজনীতি, উন্নত অর্থনীতি এবং জনগণের মানবিক অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে পারে।’

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘বিএনপি মনে করে যে জনগণের স্বার্থরক্ষা ও স্থায়ী কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য গণতান্ত্রিক শাসনের বিকল্প নেই। আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সংস্কার একটি সদা চলমান অনিবার্য প্রক্রিয়া। বিগত ফ্যাসিবাদী পতিত সরকারের মতো “আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র” যেমন জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের অপকৌশল ছিল, এখনো কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর “আগে সংস্কার পরে গণতন্ত্র” তেমনই ভ্রান্ত কূটতর্ক। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও কার্যকর করার মাধ্যমেই সবার জন্য উন্নয়ন সম্ভব এবং এ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য রাষ্ট্রব্যবস্থা, আইন, নীতি, বিধানের সংস্কার অপরিহার্য। এর সবগুলো পরস্পরের পরিপূরক, কোনোটাই কোনোটার বিকল্প নয়; পরস্পর সাংঘর্ষিকও নয়।’

এতে আরও বলা হয়, আজ যারা সংস্কারের কথা বেশি বেশি বলে এবং বিএনপিকে সংস্কারের বিপক্ষের শক্তি বলে চিহ্নিত করার অপচেষ্টা করছে, তাদের ভিশন-২০৩০ এবং রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচিতে যেসব সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে ও যেসব পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে, তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, গোষ্ঠীস্বার্থে এবং রাজনীতি কিংবা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে হেয় ও অপ্রাসঙ্গিক করার অপচেষ্টায় অযথা সময়ক্ষেপণ করে জনগণকে তাদের ভোটাধিকার তথা রাষ্ট্রের মালিকানা প্রতিষ্ঠার অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার কৌশলকে বিএনপি সমর্থন করে না। দেশ ও জনগণের স্বার্থে জনগণের সম্মতি নিয়ে ৩১ দফায় বর্ণিত এবং ঐকমত্যে গৃহীত সব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিএনপি সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করে। চিঠিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী ও তার সরকারের বক্তব্য ও মতামতে সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি এর কিছু ব্যতিক্রম আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। আপনার সরকারের কিছু ব্যক্তি এবং আপনাকে সমর্থনকারী বলে দাবিদার কিছু ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রকাশ্য বক্তব্য ও অবস্থান জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। আশা করি আপনি এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’

বিএনপি বলে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য যেসব আইন, বিধি, বিধান সংস্কারে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেসব পরিবর্তন জরুরি, তা সম্পন্ন করার মাধ্যমে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্ভব বলে আমরা মনে করি। সে লক্ষ্যে অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমরা আপনার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা এনআইডি প্রকল্প নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার এবং নির্বাচনি এলাকা পুনর্র্নিধারণের বিষয়ে আইনি জটিলতা দ্রুত নিরসনেরও প্রস্তাব করছি। একই সঙ্গে পতিত ফ্যাসিবাদী দল ও সেই দলীয় সরকারের সঙ্গে যারাই যুক্ত ছিল, তাদের বিচার দ্রুত করে রাজনীতির ময়দানকে জঞ্জালমুক্ত করার; জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ ও সুচিকিৎসা দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার এবং দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার অধিকতর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে ১/১১-এর অবৈধ সরকার এবং পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে করা সব মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি পুনর্ব্যক্ত করছি।


তিন খাতে দ্রুত সংস্কার করে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চাইবে বিএনপি

* প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক আজ
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিশেষ প্রতিবেদক

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আজ বুধবার সাক্ষাৎ করবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এর আগে একাধিকবার প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে বৈঠকে অংশ নিলেও আজ নিজেদের আগ্রহে তার সঙ্গে আলোচনা করতে যাচ্ছে দলটি। দুপুর ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দলটির নেতারা জানিয়েছেন, আলোচনার মূল ইস্যু হবে আগামী জাতীয় নির্বাচন। বৈঠকে তারা কবে নির্বাচন এবং কবে নাগাদ এর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে তা প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চাইবেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে আজকের বৈঠকের সম্ভাব্য এজেন্ডা জানতে চাইলে তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হবে। তবে, নির্বাচন থাকবে প্রধান ইস্যু। পূর্বের দাবি অনুযায়ী, নির্বাচনের লক্ষ্যে ‘নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ এবং প্রশাসন’ এই তিন খাতে যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন, ততটুকু দ্রুত সম্পন্ন করে দাবিকৃত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানানো হবে।

প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একাধিকবার তার প্রকাশ্য বক্তব্যে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন। তার মতে, দলগুলো বড় ধরনের সংস্কার চাইলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে আর কম সংস্কার চাইলে নির্বাচন হতে পারে ডিসেম্বরে। কিন্তু বিএনপি দাবি করে আসছে চলতি বছরের জুন থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন। দলটির নেতারা বিভিন্ন বক্তব্যে বারবার চলতি বছরের জুন থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দাবি করে আসছেন। ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন দেওয়াই অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব বলেও তারা উল্লেখ করেন।

যদিও নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপির দাবির পক্ষে অন্য দলগুলো একমত নয়। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। জামায়াত প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দাবি করেছে। আর এনসিপির নেতারা বলছেন, সংস্কার শেষ করেই নির্বাচন হতে হবে।

যদিও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন ঘিরেই তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এদিকে বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র দৈনিক বাংলাকে জানান, নির্বাচন নিয়ে চারদিকে যেসব গুজব ডালপালা মেলছে সেসব বন্ধে প্রধান উপদেষ্টাকে নির্বাচন নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দেওয়ার আহ্বান জানানো হবে।

এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ গত ৯ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করেই বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চাওয়া হবে।

তিনি বলেছেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুনির্দিষ্টভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বরের আগে একটা রোডম্যাপ অবশ্যই চাইব। তিনি তা স্পষ্টভাবে জাতির সামনে যথাযথ প্রক্রিয়ায় উপস্থাপন করেন, যাতে অনিশ্চয়তার যে একটা ভাব আছে, সেটা কেটে যায়।

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা বলব যে এটা যথেষ্ট সময়। তার আগে আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা জুনের মধ্যে সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবে। প্রধান উপদেষ্টাও ইতোপূর্বে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার জন্য তারা সমস্ত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন।’

বিএনপি নেতা বলেন, ‘যেহেতু বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষের বক্তব্যে একটা ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে, সেটি পরিষ্কার করার জন্য আমরা তাকে (প্রধান উপদেষ্টা) আহ্বান জানাব।’

উল্লেখ্য যে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতন ঘটে এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করে ভারতে চলে যান। এরপর ৮ আগস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের প্রথম থেকেই বিএনপি প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে আসছে। বিএনপি বলছে, ডিসেম্বরের পর নির্বাচন নেওয়ার চেষ্টা হলে তারা বিরোধিতা করবে এবং প্রয়োজনে রাজপথে কর্মসূচি পালন করবে।

জানা যায়, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে সমমনা সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করবে বিএনপি। সর্বশেষ গত সপ্তাহে দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর পর দলটির পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চাওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আজকের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।


আমরা ঐক্যের মধ্যে দিয়ে নতুন বাংলাদেশ তৈরি করব

ছবি:সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আলোচনার মধ্য দিয়ে, ঐক্যের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ তৈরি করব। নিঃসন্দেহে আমাদের মধ্যে ঐক্য সম্ভব হবে এবং আমরা সফল হবো।’

আগামী ১৬ এপ্রিল উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের নতুন রোডম্যাপ আশা করছি। আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে শিফটিং হচ্ছে, এই সমস্যারও সমাধান হবে।’

এক সপ্তাহ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আজ সোমবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি’র মহাসচিব এসব কথা বলেন।

দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা গোটা জাতি আশা করছি- বাংলার ১৪৩২ নববর্ষ গোটা জাতির জন্য নতুন দিগন্ত নিয়ে আসবে। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মন ও হৃদয় উদ্ভাসিত হবে, নতুন সম্ভাবনার আনন্দে। এটাই আমরা প্রত্যাশা করি। মনে করি, আমাদের অতীতের যত ধুলোবালি, জঞ্জাল সবকিছু উড়িয়ে দিয়ে নতুন বৈশাখ সম্পূর্ণ এক নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করবে।

এর আগে গত ৬ এপ্রিল স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্ত্রী রাহাত আরা বেগম।


নববর্ষে জাতির আকাঙ্ক্ষা মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া: রিজভী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

আজকের নববর্ষে জাতির আকাঙ্ক্ষা অতিদ্রুত মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
আজ সোমবার দুপুরে নববর্ষ উপলক্ষে রাজধানীর সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে সতীর্থ স্বজনের উদ্যোগে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন,'যার জন্য আমরা গত ১৫ থেকে ১৬ বছর ধরে লড়াই করছি এখনও সেটি নিশ্চিত হয়নি। সেটি নিশ্চিত করার পথেই আমরা এগুচ্ছি। কিন্তু, এটি নিয়ে টালবাহানা করা চলবে না। চলবে না এই অর্থেই যে, এটার জন্যই তো সংগ্রাম হয়েছে—সেটা হলো গণতন্ত্র। সুতরাং নববর্ষে জাতির আকাঙ্ক্ষা মানুষের ভোটাধিকার ফিরেয়ে দেওয়া। কারণ, শেখ হাসিনা মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এই ভোটাধিকার কেড়ে নিতে গিয়ে তিনি(হাসিনা) আজীবন ক্ষমতাবিলাসী চেতনা নিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, দেশের ন্যায় বিচার, আদালত, আইন কানুন, গণমাধ্যম সবকিছু ভেঙেচুরে তছনছ করে দিয়ে একটা একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।
রিজভী বলেন, 'শেখ হাসিনার এই ভয়ংকর থাবার মধ্যেও এদেশের মানুষ তার নিজস্ব চিন্তা তার নিজস্ব সংস্কৃতি তার গৌরবময় অতীত এবং তার আবহমান বাংলার প্রকৃত যে আদর্শ—সেটা বুকে ধারন করেই লড়াই করেছে। আর এই লড়াই করেছে বলেই আমরা আজকে বিজয়ী হয়েছি।
তিনি বলেন, এই বিজয়কে আরও দীর্ঘস্থায়ী করতে হবে। এই বিজয়কে একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে অবশ্যই আমি যে কথাটি বললাম— আজকের নববর্ষের জাতির আকাঙ্খা হচ্ছে অতিদ্রুত ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া।
রিজভী প্রশ্ন রেখে বলেন, 'ভোটাধিকারকে কেন সংস্কারের সঙ্গে এক করে দেওয়া হচ্ছে? পৃথিবীর কোথাও তো এটা দেখা হয়নি। গণতন্ত্র মানেই সংস্কার। গণতন্ত্র মানে একটা নদীর প্রবল স্রোতের মতো একটা পদ্ধতি, একটি ধারাবাহিকতা। যে নদীর পানি যত খরস্রোতা, সেই নদীর পানি তত স্বচ্ছ। কারণ, সেখানে কোনো ধরনের আবদ্ধতা তৈরি হয় না ‘।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, 'বিগত ১৫ থেকে ১৬ বছর অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে একটি বিদেশি সংস্কৃতির উপদানগুলো আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে কত পরিকল্পিত এবং সূক্ষ্মভাবে তারা যে মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে যে সমস্ত মুখোশ ব্যবহার করত, যে প্রতিকৃতিগুলো তারা ব্যবহার করত—সেখানে পরিকল্পিতভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিকৃতভাবে চিহ্নিত করে একে সেটা নিয়ে তারা মঙ্গল শোভাযাত্রা করেছে।
তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশে প্রত্যেকের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত থাকতে হবে। সেখানে পরিকল্পিতভাবে দাড়িওয়ালা, টুপি ওয়ালাদেরকে বিকৃত করা হতো, কেন? সব দাড়িওয়ালা টুপিওয়ালারা তো স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধিতা করেনি। দেশের প্রত্যেকটি মানুষ একটি পর্যায়ে বুঝতে পেরেছে আমরা একটি পরিকল্পিত আগ্রাসী শক্তির সাংস্কৃতিক আধিপত্যের মধ্যে পড়ে যাচ্ছি।
রিজভী বলেন, '৫ আগস্টের আন্দোলনের যে সফলতা, এই যে দুনিয়া কাঁপানো যে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শুধু একটি রাজনৈতিক দল বা ফ্যাসিস্টের পতন নয়—এটা ছিল আমাদের পদলিত করে রাখার যে সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিক আধিপত্যবাদী চক্রান্ত, সেটার বিরুদ্ধেও কিন্তু এই লড়াইয়ে বিজয়ী হওয়া। শুধু হাসিনার পতন নয়, আমরা সমস্ত দিক থেকে বিজয়ী হয়েছি—এটার মধ্য দিয়ে।
এসময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, কবি রেজাবুদ্দৌলা স্টারলিন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদল নেতা তৌহিদ আউয়াল, রাজু আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


টাকা দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসে প্রতিবেদন ছাপিয়েছে আ. লীগের দোসররা

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

আওয়ামী লীগের দোসররা তাদের অবৈধ টাকা দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (২ এপ্রিল) নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে ধর্মীয় উগ্রপন্থিদের উত্থানের বিষয়ে মার্কিন প্রভাবশালী দৈনিকটিতে প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এসব বলেন তিনি।
রিজভী বলেন,‘পরাজিত শক্তি নিউইয়র্ক টাইমসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট করিয়েছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা হাজার হাজার কোটি অবৈধ টাকার মালিক। তাদের অবৈধ টাকা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে।’
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশে উগ্রবাদের কোনো উত্থান ঘটেনি। বরং বর্তমানে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের কোনো ছোবল নেই, মানুষ নির্বিঘ্নে ধর্মপালন করছেন। কথা বলতে পারছেন। নির্ভয়ে ও স্বস্তিতে ঈদ পালন করেছেন। শেখ হাসিনার আমলে যা সম্ভব ছিল না।’
আরও পড়ুন: সংস্কার সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে: বিএনপি মহাসচিব
আওয়ামী লীগের দোসররা বিশ্বব্যাপী অপতথ্য ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা জঙ্গি দমনের নামে নাটক করে সেটা বিশ্ববাসীকে দেখিয়েছেন। এটা ক্ষমতায় টিকে থাকতে তার রাজনৈতিক কৌশল ছিল। একজন সাবেক আইজিপির বইয়েও তা উঠে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘কালো টাকা খরচ করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। অস্থিরতা তৈরি করতে দেশকে ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারা।’
এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা বিএনপির বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন বলে অভিযোগ ক‌রেন বিএনপির এই নেতা। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে অভিমত দেন তিনি।
স্থানীয় সময় সোমবার (৩১ মার্চ) নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় বাংলাদেশে ধর্মীয় উগ্রবাদীদের উত্থানের শঙ্কা প্রকাশ করে একটি প্রতিবেদন করা হয়। এ প্রতিবেদনটি নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।


সংস্কার সম্পর্কে ভুলভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (মাঝে)। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সংস্কার সম্পর্কে বিএনপির বক্তব্যকে একটি মহল ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে প্রচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারে বিএনপির সমর্থন রয়েছে বলে জানান তিনি।
বুধবার (২ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সংস্কার সম্পর্কে আমাদের বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। কিছু মহল প্রচার করছে, বিএনপি আগে নির্বাচন, পরে সংস্কার চায়। এটি পুরোপুরি মিথ্যা। আমরা বরাবরই সংস্কারের পক্ষে কথা বলেছি।’
‘আমরা বলেছি, একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের জন্য মিনিমাম যে সংস্কারগুলো করা দরকার সেগুলো করতে হবে। আমরা কখনোই বলিনি আগে নির্বাচন, পরে সংস্কার। এটা ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপ চায় বিএনপি: ফখরুল
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার, আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার সংস্কার এবং বিচার বিভাগের সংস্কারের ওপর বিএনপির জোর সমর্থন রয়েছে বলে অভিমত দেন দলটির এই মহাসচিব।
সংস্কার সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘তারা জ্ঞানী মানুষ, পণ্ডিত লোক, বিশাল ডিগ্রিধারী। তাদেরকে আমরা শ্রদ্ধা ও সম্মান করি। কিন্তু তারা যদি জনগণের বাইরে গিয়ে কিছু করে আমরা সেটিকে সমর্থন করতে পারব না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রই হচ্ছে রাষ্ট্র পরিচালনার শ্রেষ্ঠ ব্যবস্থা। এখানে কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসার পরে স্বৈরাচারী হয়ে উঠলে জনগণই তাদের সরিয়ে দেবে। তাদের পরিস্থিতিও আওয়ামী সরকারের মতো হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের নিজস্ব মতামত থাকবে। জনগণ বেছে নেবেন, কোনটি তাদের জন্য উপযোগী। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নিজস্ব নীতিমালা নিয়ে জনগণের কাছে যাবে এবং জনগণ যাদের সমর্থন দেবেন, তারাই সরকার ও পার্লামেন্ট গঠন করবে, এটাই গণতন্ত্র।’
এসময় জেলা বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: ইউএনবি


বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণ স্থানীয় পর্যায়ে নেই : এনসিপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঢাবি প্রতিনিধি

স্থানীয় পর্যায়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
এসব ঘটনার কারণে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণ স্থানীয় পর্যায়ে নেই বলেও মনে করে দলটি।
আজ বুধবার দুপুরে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।
অন্তর্কোন্দলের জেরে অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা গভীর উদ্বেগের উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে সালেহ সিফাত বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাগণ প্রায় সময় রাজনৈতিক কারণে হামলার বিরুদ্ধে কথা বলছেন ঠিকই এবং অবাধ্য ও অপরাধী নেতাকর্মীদের বহিষ্কার করা হলেও এ ধরনের হিংস্র কার্যকলাপ চলছে।
এসব ঘটনা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ঘোলাটে ও অস্থির করে তুলছে বলেও মনে করেন এনসিপি।
বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠন দ্বারা এসব হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
জাতীয়তাবাদী দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করারও আহ্বান জানিয়েছে এনসিপি।
সহিংসতার কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করে এনসিপি তাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গত ৩০ মার্চ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে স্থানীয় ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের মধ্যে সংঘর্ষের সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-আহ্বায়ক মাহবুব আলম মাহির পিতা আজিজুর রহমান বাচ্চু মোল্লা হামলার শিকার হন। এতে তার হাত ভেঙে যায় এবং তিনি গুরুতর আহত হন।
এর আগে ২৪ মার্চ নোয়াখালীর হাতিয়ায় পথসভা ও জনসংযোগের সময় স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন সদস্য এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদের ওপর হামলা চালায়।
এনসিপির দাবি, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের কর্মীদের নিয়মিত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে এবং সাত-আট মাস পর ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দিচ্ছে।
সাত-আট মাস পর স্থানীয় বিএনপির হাতে ঠিক কোন ধরনের বাস্তবতা তৈরি হবে যার দরুন তারা 'দেখে নিতে' পারবেন তা এনসিপির বোধগম্য নয় বলেও উল্লেখ করা হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।


সংস্কার-নির্বাচন আলাদা জিনিস না: মির্জা ফখরুল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংস্কার আর নির্বাচন আলাদা জিনিস না। সংস্কার সংস্কারের মত চলবে। নির্বাচন নির্বাচনের মতো চলবে। এছাড়া সংস্কার প্রস্তাব যথাযথভাবে পর্যালোচনা করেই বিএনপি মতামত দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ে নিজ বাসভবনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার সদ্য সমাপ্ত চীনসফর প্রসঙ্গে মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে চীন এক তরফাভাবে একটা দলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছে। তবে এখন তারা চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করে সব দলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ছে। চীন বাংলাদেশে উৎপাদনে ও উন্নয়নে বিনিয়োগের জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেটা দেশের জন্য আশাবাদের কথা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে বিষয়ে মতের ঐক্য হবে সেগুলো মেনেই নির্বাচন হবে। যারাই নির্বাচিত হবে সেই সংস্কার করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পরে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল ও ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি। এসময় জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাফরুল্লাহ, যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদ হাসান, ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ কায়েসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


৮ বছর পর পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করবেন খালেদা জিয়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

দীর্ঘ প্রায় আট বছর পর লন্ডনে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। এবারের ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন তার বড় ছেলে তারেক রহমান, পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান, তাদের মেয়ে জাইমা রহমান, ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান, তাদের দুই মেয়ে জাফিয়া ও জাহিয়া রহমানের সঙ্গে।

লন্ডন থেকে ইউএনবির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলতে গিয়ে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, ‘দীর্ঘদিন পর পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে তিনি মানসিকভাবে বেশ প্রাফুল্ল ও স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘২৫ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর থেকে খালেদা জিয়া লন্ডনের ক্লিনিকের অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে বাড়িতে চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসকদের একটি দল নিয়মিত তার স্বাস্থ্যের খবরাখবর রাখছেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।’

বাংলাদেশে ফেরার বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. জাহিদ বলেন, ‘ঈদের পর যেকোনো সময় তিনি দেশে ফিরতে পারেন, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চিকিৎসক দলের অনুমতির ওপর নির্ভর করছে।’

‘তার বর্তমান অবস্থা স্থিতিশীল, তাই আমি আশা করছি, মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন।’

যুক্তরাজ্যে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে রবিবার অথবা সোমবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে সেখানে।

২০১৭ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়ে তিনি তিন মাস অবস্থান করেছিলেন এবং সেসময় ঈদুল আজহা তার পরিবারের সঙ্গে উদযাপন করেন। কিন্তু ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হওয়ার পর থেকে তিনি আর পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারেননি।

৭৯ বছর বয়সী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি ও হৃদযন্ত্রের সমস্যা, ডায়াবেটিস এবং বাতের সমস্যায় ভুগছেন।


নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপ চায় বিএনপি: ফখরুল

স্বাধীনতা দিবসে জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছে বিএনপি।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বুধবার (২৬ মার্চ) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে নেতাকর্মীদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদেন শেষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই হতাশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি খুবই হতাশ হয়েছি যে, গতকাল জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে স্পষ্ট কোনো নির্বাচনী রোডম্যাপ উল্লেখ করেননি প্রধান উপদেষ্টা।’
ফখরুল বলেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া হবে এটি একটি অস্পষ্ট বক্তব্য। ‘এটি খুবই অস্পষ্ট।’ ডিসেম্বর থেকে জুন -ছয় মাস। তাই এখানে কোনো রোডম্যাপ দেওয়া হয়নি।’
বিএনপি নেতা নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য দলের আহ্বান পুর্নব্যক্ত করেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, অন্যথায় যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার সমাধান হবে না।
ফখরুল বলেন, বিএনপি কেবল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে না। ‘বিএনপি জাতির স্বার্থে, জাতির নিরাপত্তায়, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং নির্বাচিত সংসদ ও সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে।’
আরও পড়ুন: সংকট উত্তরণে রাষ্ট্র পরিচালনায় অভিজ্ঞ বিএনপিকে দরকার: মুরাদ
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা আশা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম সংস্কার করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ফখরুল।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তারা জিয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেন।
এর আগে নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সাভারের জাতীয় স্মৃতি সৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
ফখরুল হতাশা প্রকাশ করে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম উল্লেখ করেননি। ‘কিন্তু এটিই ইতিহাস’।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের বিকৃত করা ইতিহাস চায় না বিএনপি।
বিএনপি নেতা বলেন, দেশে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে, তত তাড়াতাড়ি দেশের সমস্যাগুলো সমাধান হবে।


হত্যা মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে পলক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় ওবায়দুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সোমবার সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত।

এ ছাড়া ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে হত্যার অভিযোগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় করা আরও দুই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে আদালত।

আজ তাকে কারাগার থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তারা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।

শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক পলকের জামিন আবেদন নাকচ করে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিকে যাত্রাবাড়ী থানার আরও দুই মামলায় পলককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন ।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলায় মৃত্যুবরণ করেন ওবায়দুল ইসলাম। এ ঘটনায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।

গত ১৪ আগস্ট রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় পলককে গ্রেফতার করে ডিবি। এরপর ছাত্র-জনতার আন্দোলনকেন্দ্রিক একাধিক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাকে। একাধিক মামলায় তাকে রিমান্ডেও নেওয়া হয়।


banner close