শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫
২৪ কার্তিক ১৪৩২

জাতীয় ঐক্য ও নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের ষড়যন্ত্র চলছে: তারেক রহমান

বিএনপির বর্ধিত সভায় শীর্ষ নেতারা ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য রাখেন। ছবি: সংগৃহীত
বাসস
প্রকাশিত
বাসস
প্রকাশিত : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ১৭:৫৩

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জাতীয় ঐক্য ও নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের ষড়যন্ত্র চলছে।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে ২০১৬ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির দ্বিতীয় বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, জাতীয় ঐক্য ও নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমি দেশের কৃষক, শ্রমিক, জনতা, আলেম, ওলামা পীর মাশায়েখ তথা সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। যারা বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্র বানিয়ে রাখতে চেয়েছিলো তাদের ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনো থেমে নেই। ‘সংস্কার’ কিংবা ‘স্থানীয় নির্বাচন’ এসব ইস্যু নিয়ে জনগণের সামনে এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান।

বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক বিএনপির বর্ধিত সভা আজ দীর্ঘ ৭ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে বিএনপির সর্বশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি। সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়া। ফ্যাসিবাদী শাসনকালে এরপর আর বিএনপির বর্ধিত সভা কিংবা কাউন্সিল অনুষ্ঠান সম্ভব হয়নি।

তারেক রহমান বলেন, চিকিৎসাধীন থাকায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে তিনি এই সভার সাফল্য কামনা করেছেন। তিনি আপনাদের কাছে দোয়া চেয়েছেন। দেশনেত্রীর শারীরিক সুস্থতার জন্য আমরা আল্লাহর দরবারে দোয়া কামনা করছি। মাদার অফ ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়ার সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব আর সুদক্ষ নেতৃত্ব বিএনপিকে পৌঁছে দিয়েছিলো সারাদেশের প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি ঘরে।

তারেক রহমান আরো বলেন, ‘আজকের এই বর্ধিত সভার শুরুতেই আমি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করতে চাই। তিনি একদলীয় অভিশপ্ত বাকশালের অন্ধকারাচ্ছন্ন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের আলো জ্বালিয়েছিলেন। মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের নিষিদ্ধ করা সকল রাজনৈতিক দলকে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। জনগণের ভালোবাসায় ধন্য বিএনপির হাতে গণতন্ত্রের ঝাণ্ডা তুলে দিয়েছিলেন।’

বিএনপির জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং স্বৈরাচার বিরোধী ধারাবাহিক আন্দোলনে, যারা শহীদ হয়েছেন আহত হয়েছেন, সন্তান-স্বজন হারিয়ে যেসব পরিবার নিদারুণ দুঃখ কষ্টের মুখোমুখি হয়েছেন, যাদের শ্রম ঘাম মেধায় বিএনপি আজ আপামর জনগণের কাছে দেশের সবচেয়ে বিশ্বস্ত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, আজকের বর্ধিত সভার শুরুতে তাদের প্রত্যেকের অবদানকেও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহীদ, দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ধারাবাহিক সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে তাবেদার অপশক্তির বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধের সাহসী বীর আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, রিয়া গোপ, আব্দুল আহাদ এবং বিএনপির পাঁচ শতাধিকসহ হাজারো শহীদ এবং আহত যোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি।

তিনি বলেন, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতাপ্রিয় বীর জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর দেশে গণতন্ত্রকামী মানুষের সামনে বাংলাদেশ পুনর্গঠনের এক অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। এই সুযোগ এবং সম্ভাবনা নস্যাৎ করার জন্য এরইমধ্যে নানারকম ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সুকৌশলে রক্তপিচ্ছিল রাজপথে গড়ে ওঠা ‘জাতীয় ঐক্য’ এবং জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের অপচেষ্টা চলছে।

তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। বিএনপির কাছে সংস্কারের ধারণা নতুন কিছু নয়। সরকারে কিংবা বিরোধী দলে বিএনপি যখন যে অবস্থানেই দায়িত্ব পালন করেছে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে, সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সব সময়েই রাষ্ট্র, সরকার ও রাজনীতিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করেছে এবং করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পর দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সংবিধানে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন, ১৯৯১ সালে দেশে সংসদীয় সরকার প্রতিষ্ঠা এসবই ছিল রাষ্ট্র, রাজনীতির ময়দানে যুগান্তকারী সংস্কার। এছাড়াও বিভিন্ন মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকাকালে বিএনপি সরকার স্কুল কলেজে বিনা বেতনে মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, রাষ্ট্র ও সমাজে মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, বিশ্বের তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকে প্রস্তুত রাখতে বিজ্ঞান এবং তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এগুলোও ছিল রাষ্ট্র ও সরকারের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার। এ ধরনের আরো অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, ষড়যন্ত্রের পথ ধরে পলাতক স্বৈরাচারের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পর সংস্কারের সকল পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। বাংলাদেশকে চিরতরে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করে রাখতে গত দেড় দশকে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিল। দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নাজুক করে তুলেছিল। টাকা পাচার আর লুটপাট চালিয়ে দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর করে দিয়েছিল। অকার্যকর করে দেয়া হয়েছিল দেশের সকল সাংবিধানিক এবং বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে জনগণকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাহীন করে দিয়ে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে তুলেছিল।

‘এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র, সরকার এবং রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের লক্ষ্যে মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়া ২০১৭ সালে ভিশন ২০৩০ দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালে বিএনপি ২৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে। পরবর্তীকালে গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়ের পর ঘোষণা করা হয় ৩১ দফা কর্মসূচি। এই ৩১ দফা নিয়ে বর্তমানে বিএনপির উদ্যোগে সারাদেশে জনগণের সঙ্গে সংলাপ চলছে।’

তারেক জিয়া বলেন, রাষ্ট্র-সরকার-রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দল মেরামতের জন্য দফা ৩১টি হলেও এর চূড়ান্ত লক্ষ্য একটি। সেটি হলো একটি নিরাপদ, গণতান্ত্রিক, মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ। ঠিক তেমনি উদ্দেশ্যও একটি। সেটি হলো রাষ্ট্র ও সমাজে জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা। এটি নিশ্চিত করা না গেলে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-গণতন্ত্র-নিরাপত্তা-সমৃদ্ধি কোনটিই টেকসই হবে না।

‘রাষ্ট্রের স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তার জন্য জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের কোনোই বিকল্প নেই। রাষ্ট্র এবং সমাজে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার পূর্ব শর্ত হলো প্রতিটি নাগরিকের ভোট প্রয়োগের অধিকার বাস্তবায়ন। এবং এ লক্ষ্যেই একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি বারবার জনগণের ভোটে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যেই জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানায়।’

তিনি বলেন, আগামী দিনের রাজনীতিতে বিএনপির এই ৩১ দফা হচ্ছে, একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক, মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সনদ। তবে এই ৩১ দফাই শেষ কথা নয়। সময়ের প্রয়োজনে রাষ্ট্র-সরকার-রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলের সংস্কারের জন্য এই ৩১ দফাতেও সংযোজন-বিযোজনের সুযোগ রয়েছে। এমনকি বিএনপির ৩১ দফার সঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার প্রস্তাবনার খুব বেশি ইস্যুতে মৌলিক বিরোধ নেই।

তারেক রহমান বলেন, বিভিন্ন সময়ে ‘জাতীয় নির্বাচন’ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য জনমনে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করলেও ‘জাতীয় নির্বাচন’ নিয়ে কোনো কোনো উপদেষ্টার বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য, মন্তব্য স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের জন্য হতাশার কারণ হয়ে উঠছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দলের নিঃশর্ত সমর্থন থাকলেও সরকার এখনো তাদের কর্মপরিকল্পনায় অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে পারছে না।

তিনি বলেন, সারাদেশে খুন, হত্যা, ধর্ষণ চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি বেড়েই চলেছে। বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, সরকার যেখানে দেশের বাজার পরিস্থিতি কিংবা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন করতে পারছে না সেখানে জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘স্থানীয় নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের নামে কেন দেশের পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করতে চাইছে এটি জনগণের কাছে বোধগম্য নয়।

তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রকামী জনগণ মনে করে, স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সেটি হবে সারাদেশে পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের একটি প্রক্রিয়া যা সরাসরি গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিরোধী। গণহত্যাকারী, টাকা পাচারকারী, দুর্নীতিবাজ মাফিয়া চক্রকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার এই ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না।

তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি জনরায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে গণহত্যাকারী-মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহবান, সারাদেশে গণহত্যাকারীদের দোসর, মাফিয়া চক্রকে পুনর্বাসনের ‘স্থানীয় নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা থেকে সরে আসুন। অবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আগামী দিনের সুনির্দিষ্ট ‘কর্ম পরিকল্পনার রোডম্যাপ’ ঘোষণা করুন।

তিনি বলেন, মাফিয়া প্রধান হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর এ পর্যন্ত ১৬/১৭টি নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিএনপি সকল নতুন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে স্বাগত জানায়। তবে নির্বাচনের মাধ্যমে গ্রহণ কিংবা বর্জনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে জনগণ। প্রতিটি দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু ‘জাতীয় নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সবার আগে নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তুত রাখতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে একটি অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নিরপেক্ষতাই হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সবচেয়ে বড় পুঁজি। কিন্তু সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে ইতোমধ্যেই জনমনে সন্দেহ ও সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে । নিজেদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আরো সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানাই।

দলীয় নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি আপনাদের কাছ থেকে শারীরিকভাবে দূরে থাকলেও যোগাযোগ এবং কর্ম পরিকল্পনার মাধ্যমে আমি কখনোই আপনাদের কাছ থেকে দূরত্ব অনুভব করিনি। আমি বিশ্বাস করি যে দলে আপনাদের মতো ত্যাগী এবং সাহসী নেতাকর্মী রয়েছে সেই দলকে কোনো স্বৈরাচার-ই দমিয়ে রাখতে পারে না।'

তিনি বলেন, এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই যে দেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান তথা দলমত ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার ভোগ করবেন। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই বাংলাদেশ ভূখণ্ডে বসবাসকারী আমাদের সকলের একটিই পরিচয় ‘আমরা বাংলাদেশি’।

পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রেও বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি সুস্পষ্ট। বিএনপি মনে করে বর্তমান বিশ্বে স্থায়ী শত্রু-মিত্র বলে কিছু নেই, উল্লেখ করেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, একটি দেশের সঙ্গে অপর দেশের সম্পর্ক হবে ‘পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা, প্রয়োজন ও ন্যায্যতা’র ভিত্তিতে। অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের নীতি ‘সবার আগে বাংলাদেশ’। অর্থাৎ নিজ দেশ এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষাই হতে হবে প্রথম এবং প্রধান অগ্রাধিকার।

তিনি বলেন, এ মুহূর্তে বিএনপিই দেশের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। বিএনপির কাছে জনগণের যেমন আশা ভরসা প্রত্যাশা রয়েছে, একইসঙ্গে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরাও থেমে নেই। চক্রান্তকারীদের মোকাবেলা করে কিভাবে দলকে আরো শক্তিশালী এবং সুসংহত করা যায় সেই সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা থাকবে।

তিনি বলেন, বিএনপি একটি বৃহৎ পরিবার। এই পরিবারের নানা বিষয়ে আমাদের মতের অমিল থাকতেই পারে। আমরা সবাই আমাদের ঐক্যের শক্তির সক্ষমতা সম্পর্কে অবহিত। ঐক্যই আমাদেরকে বারবার বিজয় আর সফলতা এনে দিয়েছে। গত দেড় দশকে সারাদেশে বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের ভিন্ন দল এবং মতের নেতাকর্মীদেরকে অবর্ণনীয় নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করতে হয়েছে। কেবল বিএনপিরই প্রায় ৬০ লাখের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দেড়লাখ রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমের মতো অনেক নেতাকর্মীর আজ পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি। শুধুমাত্র বিএনপি করার অপরাধে হাজার হাজার নেতা কর্মী সমর্থককে গুম, খুন, অপহরণ করা হয়েছে। তবুও বিএনপির নেতাকর্মীরা কেউ দল ছেড়ে যাননি। স্বৈরাচারের সঙ্গে করেননি আপোষ। এই সৎসাহস এবং সততার কারণে বিএনপি আজ শুধু একটি সাধারণ রাজনৈতিক দলই নয়। দেশের গণতন্ত্রকামী স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণ বিএনপিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ভ্যানগার্ড হিসেবে বিশ্বাস করে। এটি একজন রাজনৈতিক কর্মীর জন্য নিঃসন্দেহে একটি বড় প্রাপ্তি।

তারেক রহমান বলেন, দলের সর্বস্তরের প্রতিটি নেতাকর্মীকে আরো বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। আচরণে হতে হবে আরো সতর্ক ও সংযত। তবে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কোটি কোটি নেতাকর্মী সমর্থকের এই বৃহৎ রাজনৈতিক দলের কোনো কোনো নেতা কর্মী হয়তো নিজের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। তাই আমি আপনাদের আবারো বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের একটি বার্তা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। ব্যক্তির চেয়ে দল বড় দলের চেয়ে দেশ বড়।

দলের প্রতিটি নেতাকর্মীর দীর্ঘদিনের সীমাহীন ত্যাগ তিতিক্ষা আমি গভীরভাবে উপলব্ধি করি উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, যারা দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণ হবেন ব্যক্তির চেয়ে দলের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে বাধ্য হয়েই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও নিতে হবে। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ কিংবা দলের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো কাজকে বিএনপি বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় দেবে না। জনগণই বিএনপির সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস।

জাতীয় নির্বাচনের সময়ও ঘনিয়ে আসছে। মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে দলীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, ‘গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি বার্তা দিতে চাই, বিএনপি শুধুমাত্র আপনাদের ভোটের পুনরুদ্ধারই নয়, আপনার ভোট প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করতে চায়। আপনাদের সমর্থন পেলে বিএনপি এমন একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যে সরকার আপনার কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। আমি জনগণের সমর্থন চাই, সকলের সহযোগিতা চাই।’


আগামী নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে: ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নোয়াখালী প্রতিনিধি

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি ও নোয়াখালী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, আগামী নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। যেকোনো ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। বিগত সময়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে ২২ জন নেতাকর্মী নোয়াখালী- ১ আসনে নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। শুক্রবার বিকালে সোনাইমুড়ী রেলওয়ে চত্বরে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি।

সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক দিদার হোসেন।

পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক মোতাহের হোসেন মানিকের সভাপতিত্বে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বা্য়ক মাসুদ আলম ফরহাদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পৌর বিএনপির সদস্য সচিব রেজায়ে রাব্বি মাহবুব। বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল গণি পাটোয়ারী মামুন, মাসুদের রহমান, ফখরুল আলম, লুৎফুর রহমান, পৌরসভা বিএনপির যুগ্ম আহ্বা্য়ক জালাল আহমেদ।


জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পরই নির্বাচনে যাবে এনসিপি: নাহিদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আজ বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফোরাম (ইউটিএফ)-এর আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন। ছবি: বাসস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পরই তার দল নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হবে।

আজ বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফোরাম (ইউটিএফ)-এর আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘সনদে কোনো মতভেদের সুযোগ নেই। যেটুকু ঐকমত্যে গৃহীত হয়েছে সেটিই থাকবে, বাকিটা জনগণই নির্ধারণ করবে।’

নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপে জুলাই চার্টার বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, আসন্ন নির্বাচন জুলাই সনদের আইনগত কাঠামোর ভিত্তিতেই অনুষ্ঠিত হবে, যা ছাত্রনেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের চেতনার প্রতিফলন ঘটাবে।

নাহিদ বলেন, ‘আমরা চাই আগামী সংসদ এবং সংস্কার পরিষদে তরুণ, শিক্ষক, নারী, সংখ্যালঘু ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের প্রতিনিধিত্ব থাকুক, যাতে জুলাই সনদের চেতনা বাস্তবে রূপ পায়।’

নিজের আগের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, জুলাই সনদের আদেশ অবশ্যই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মাধ্যমেই জারি করতে হবে। নির্বাচনের আগে আমাদের অগ্রাধিকার হলো দাবি অনুযায়ী গণভোট অনুষ্ঠিত করা।’

তিনি আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে যারা অংশ নিয়েছেন, তাদের সবাইকে আসন্ন সংসদে প্রতিনিধিত্ব দিতে হবে। এই সংসদই একটি সংস্কার পরিষদ গঠন করবে, যারা নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য কাজ করবে।

নাহিদ বলেন, ‘শিক্ষকরা অবশ্যই এই প্রক্রিয়ার অংশ হবেন এবং এনসিপি তা নিশ্চিত করবে।’

জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষকদের ভূমিকা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষকদের অবদান জাতি চিরকাল মনে রাখবে। গত ১৬ বছর ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে পদোন্নতি নির্ধারিত হয়েছে রাজনৈতিক আনুগত্যের ভিত্তিতে, যা ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে টিকিয়ে রেখেছে। ব্যক্তিমন ও সমাজের মানসিকতার পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ দূর করা সম্ভব নয়।’

আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলামকে আহ্বায়ক এবং ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামীম হামিদিকে সদস্য সচিব করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফোরামের (ইউটিএফ) কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

সভায় অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম ইউটিএফ ঘোষণাপত্র পাঠ করেন এবং দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বক্তব্য রাখেন। সূত্র: বাসস


নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত বিএনপি নেতা: আমিনুর রশিদ 

আপডেটেড ৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২০:২২
কুমিল্লা প্রতিনিধি 

কুমিল্লা টাউন হলে ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন কুমিল্লা সদর আসনের মনোনয়ন বঞ্চিত চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিন।

শুক্রবার বিকালে কুমিল্লা জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য বক্তব্য রাখতে গিয়ে আমিনুর রশীদ ইয়াছিন বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন না দিলেও আপনারা যারা বিএনপি করেন, শহীদ জিয়ার আদর্শ লালন করেন তারা নানা কর্মসূচির মাধ্যমে আমাকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আমি আপনাদের ভালোবাসায় সিক্ত। এক জীবনে এটা আমার বড় পাওয়া।

হাজী ইয়াছিন আরও বলেন, আল্লাহ নিশ্চয়ই আপনাদের মনের কষ্ট বোঝেন ও দেখেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ উত্তম পরিকল্পনাকারী। তিনি সত্য উন্নয়নের সাথেই থাকেন। আমার বিশ্বাস আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আমি আমার স্বপ্নপূরণ করতে পারব।

এর আগে শহরের কান্দিরপাড় জেলা বিএনপির কার্যালয় প্রাঙ্গণে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা হয়। পরে টাউনহলে সমাবেশ করে দলটির নেতাকর্মীরা।

পরে হাজী আমিনুল রাশে ইয়াসিনের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‌্যালিতে জেলা ও মহানগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।


বিএনপি থেকে তরুণদের অনেক কিছু পাওয়ার আছে: স্নিগ্ধ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শিক্ষার্থী মীর মুগ্ধর ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেছেন, তরুণ প্রজন্ম এবং জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের জন্য বৃহৎ রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম থেকে কাজ করার উদ্দেশে বিএনপিতে যোগ দিয়েছি। তরুণদের এই দলটির কাছ থেকে অনেক কিছু পাওয়ার আছে, অনেক চাহিদা আছে। আমি মনে করি, এই প্ল্যাটফর্ম থেকে তরুণদের সেই চাহিদাগুলো পূরণে কাজ করতে পারব।
স্নিগ্ধ গত মঙ্গলবার বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে সদস্য ফরম জমা দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগ দেন।
বিএনপিতে যোগ দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে স্নিগ্ধ গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, নিঃসন্দেহে বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। এই দলের মাধ্যমে আমি জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের নিয়ে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে পারব। এছাড়া বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখার অনেকগুলোর সঙ্গে আমি সরাসরি কাজ করতে আগ্রহী।
এর আগে যোগদানের পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে তিনি তার আকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরেন। স্নিগ্ধ লেখেন, তার রাজনীতিতে আসার অন্যতম লক্ষ্য হলো সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে জুলাইকে প্রতিনিধিত্ব করা, শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের ‘ভয়েস’ হয়ে ওঠা এবং রাজনীতিতে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।
স্নিগ্ধ উল্লেখ করেন, তার ভাই মুগ্ধ বা পরিবারের কেউ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। মুগ্ধকে ‘দেশের সম্পদ’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, তিনি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত থেকে এবং নিজ যোগ্যতায় রাজনীতিতে এসেছেন।
স্নিগ্ধ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাকে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য দলে চেয়েছেন, যা তার নিজের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা।


আমজনতার দল অবশ্যই নিবন্ধন প্রাপ্য: রুহুল কবির রিজভী

আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমানের কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে নির্বাচন কমিশনের সামনে আমরণ অনশন করছেন আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমান। তার এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, তারেক এ দেশের স্বার্থে কথা বলেছেন, আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে কথা বলেছেন। আমজনতার দলের অবশ্যই নিবন্ধন প্রাপ্য।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের প্রধান ফটকে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমজনতার দল এরই মধ্যে আবেদন করেছিল, সে আবেদনটি গ্রাহ্য করা হয়নি। আমি দেখেছি, আরও গুরুত্বহীন কিছু দল তারাও নিবন্ধিত হয়েছে। কিন্তু তারেকের দলের নিবন্ধন দেওয়া হলো না কেন, আমি বুঝতে পারলাম না। তারেক একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। তার বৈধতার জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছিলেন। তিনি তো কোনো গোপন রাজনৈতিক দল করতে চাননি। আইনসম্মত রাজনৈতিক দল করতে চেয়েছে। যদি তার উদ্দেশ্য খারাপ থাকতো, তাহলে গোপন রাজনৈতিক দল করে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ করতেন। রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ তারেক করেননি।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, স্বাধীনতার স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে এ নেতা (তারেক) কথা বলেছেন। আমি দেখেছি, তিনি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলেছেন। দেশকে যারা অর্থনৈতিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে এবং সাংস্কৃতিকভাবে আধিপত্য বিস্তার করতে চায়, সে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন তারেক। আজ তার দলের নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না, তাহলে নির্বাচন কমিশন কাদের নিবন্ধন দেবে?
রিজভী বলেন, কাউকে আমি ছোট করতে চাই না। কিন্তু তার (তারেক) যে চিন্তা, রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং কর্মসূচি অনুযায়ী যে রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন, সে রাজনৈতিক দলের (আমজনতার দল) নিবন্ধন অবশ্যই প্রাপ্য। এ ন্যায়সংগত কারণে যে অনশন করছেন, তার এ অনশন কর্মসূচির প্রতি আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) পক্ষ থেকে পূর্ণ সংহতি জ্ঞাপন করছি।
গত মঙ্গলবার তারেক রহমান অনশন শুরুর পর নির্বাচন ভবনের সামনে আরও কয়েকটি দলের নেতাকর্মীরা সংহতি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে নেমেছেন।


ঢাকায় ৮ ইসলামী দলের মহাসমাবেশ ১১ নভেম্বর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও নভেম্বরে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে আগামী ১১ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনরত আট দল।

বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান শেষে রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

গোলাম পরওয়ার বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক স্মারকলিপি গ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন, তবে আমরা চাইছিলাম সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার কাছেই স্মারকলিপি দিতে। পরে তার নির্দেশে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান আমাদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।

গোলাম পরওয়ার আরও জানান, আমরা আট দলের শীর্ষ নেতারা শিল্প উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেছি। তিনি আমাদের দাবির সঙ্গে দ্বিমত করেননি এবং বলেছেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করবেন।

গোলাম পরওয়ার বলেন, শিল্প উপদেষ্টা আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা জরুরি। আমরা সেটিকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছি।

সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, আগামী ১১ তারিখে ঢাকায় লাখো জনতার উপস্থিতির আগে আমাদের পাঁচ দফা দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন। তা না হলে ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে।

এ সময় জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকা করব: জামায়াত নেতা তাহের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, ‘সোজা আঙুলে যদি ঘি না উঠে, তাহলে আঙুল বাঁকা করব।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর পল্টন মোড়ে গণমিছিল-পূর্ব সমাবেশে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। বলেন, ‘মরা আপনাদের চালাকি বুঝি। আপনাদের চালাকির ভিত্তিতেই দাবি আদায়ের পন্থাও আমরা আবিষ্কার করব। আমরা এখানো নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলনে আছি।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবি ও নির্বাচনের আগে গণভোটসহ ৫ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করছে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনসহ সমমনা আটটি দল। গণমিছিল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ছিল দলগুলোর।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে দলগুলো আলাদা মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়ে এসে সমবেত হয়। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে দুপুর ১২টার দিকে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রা শুরু করে।

সমাবেশে জামায়াতের নায়েবে আমির তাহের বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরেও গণভোট করতে আইনি বাধা নেই। এ বিষয়ে সময়ক্ষেপণ অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলবে।

গণভোটে টাকার অভাব হবে না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, অনেকে গণভোটের ক্ষেত্রে খরচের কথা বলেন। একদিনে বাংলাদেশে যে পরিমাণ চাঁদাবাজি হয়, সেই টাকা দিয়ে একটা গণভোট করা সম্ভব।

জামায়াতের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে জানিয়ে তাহের আরও বলেন, সরকারকেও এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করতে হবে। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য জামায়াত একটি কমিটি গঠন করেছে। অন্য দলগুলোও যাতে আলোচনার জন্য কমিটি গঠন করে।

এই জামায়াত নেতার ভাষ্য, জাতি মনে করে মেজর দলগুলো বসে শুধু জুলাই সনদ নয়, আগামী নির্বাচন কীভাবে হবে সেই বিষয়েও আলোচনা করবে। সেই আলোচনায় নির্বাচনে ভোট ডাকাতি যে হবে না—দলগুলোকে এই বিষয়ে ঐক্যমত্য পোষণ করতে হবে। জাতির কাছে টেলিভিশনে ওয়াদা করতে হবে—কেন্দ্র দখল হবে না। করলে সেই কেন্দ্রের ভোট বাতিল হবে, এমন ঘোষণা দিতে হবে। প্রধান উপদেষ্টাকেও বলতে হবে, নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে সেটি বাতিল করে নতুন করে নির্বাচন দেবেন। এদেশের মানুষ আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন দেখতে চায় না।

তিনি নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। এরপরও উন্নতি না হলে আগামী ১১ নভেম্বর ঢাকা মহানগরী হবে জনতার নগরী।

জাতীয় নির্বাচন পেছালেও গণভোট আগে হতে হবে বলে সমাবেশে দাবি জানান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান। বলেন, জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট হবে না। যেদিনই নির্বাচন হোক, গণভোট আগে দিতে হবে। নির্বাচন পিছিয়ে গেলেও গণভোট আগে হতে হবে। যারা বলেছে, সংস্কার লাগবে না, তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে না।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী ও নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে দুপুর ১২টার দিকে পল্টন থেকে গণমিছিল নিয়ে যমুনার অভিমুখে এগোতে থাকেন দলগুলোর নেতাকর্মীরা। সোয়া ১২টার পর মিছিলটি মৎস্য ভবন এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ বাধা দেয়। পরে আট দলের নয়জন নেতার একটি প্রতিনিধিদল যমুনায় প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিতে যান।

তারা হলেন—জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক মূসা, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির সভাপতি একেএম আনোয়ারুল ইসলাম।


সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট হতে দেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল

আপডেটেড ৬ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:৩০
যশোর প্রতিনিধি  

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট হতে হবে। এ বিষয়ে আমরা একমত। সংসদ নির্বাচনের আগে কোনো গণভোট হতে দেওয়া হবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার বিকালে যশোর টাউন হল মাঠে স্মরণসভায় বিএনপির মহাসচিব বলেন, কয়েকটি রাজনৈতিক দল বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে। নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এটা জনগণ মেনে নেবে না। অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন হয়েছি ফ্যাসিস্টের হাত থেকে। একটা সুযোগ পেয়েছি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার। কোনো মহলের চক্রান্তে আমরা এই সুযোগ বিনষ্ট হতে দিতে পারি না।

এসময় উপদেষ্টা পরিষদ পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যেগুলোতে ঐকমত্য হবে সেটা থাকবে, আর যেটা হবে না, সেটা আগামী পার্লামেন্টে চলে যাবে, সেখানে নির্ধারিত হবে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা, হঠাৎ করে দেখা গেল যে, এই উপদেষ্টা কমিটি একটা উপদেষ্টা মণ্ডলী সভা করলেন, সভা করার পরে আসিফ নজরুল সাহেব জাতিকে জানালেন, যে বিষয়গুলো এখনো সমাধান হয়নি, সেগুলো সমাধান করার জন্য আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে সাত দিনের সময় দিচ্ছি।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আমরা তো প্রত্যেকটা সভায় গেছি। প্রত্যেকটা সভায় আমাদের মতামত দিয়েছি। আজকে কেন আবার এই প্রসঙ্গ উঠছে যে, রাজনৈতিক দলগুলোকে বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে! তাহলে আপনারা কী করলেন এত দিন ধরে?

ফখরুল বলেন, আমি আজ পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, যে দাবি-দাওয়াগুলো নিয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ঘেরাও করছে, অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে, আবার একটা চক্রান্ত করছে নির্বাচন বানচাল করার জন্য, নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য—এটা এই দেশের জনগণ মেনে নেবে না। আমরা অনেক দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছি। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো বিষয়ে রাস্তায় নামিনি কিন্তু মনে রাখবেন, বিএনপি কোনো ভেসে আসা দল নয়! বিএনপি এই দেশের জনগণের গড়া একটি দল। শহীদ জিয়াউর রহমানের দল, স্বাধীনতার ঘোষকের দল। এই দল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার, গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন সংগ্রাম করা নেত্রীর দল। আমাদের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ২০ হাজার মানুষকে হত্যা, এক হাজার ৭০০ মানুষকে গুম করে দেওয়া—সেই অবস্থা থেকে উঠে আসা একটি দল। সুতরাং আমাদেরকে খাটো করে দেখবেন না, অবজ্ঞা করে দেখবেন না। আমরা যদি রাস্তায় নামি, তাহলে কিন্তু রাজনৈতিক বিষয়গুলো ভিন্নভাবেই আসবে।

রাজনৈতিক দলগুলো প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দয়া করে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করবেন না। দয়া করে দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবেন না। দয়া করে দেশের মানুষকে অশান্তিতে ফেলার কোনো ব্যবস্থা করবেন না। আমরা বহু সংগ্রাম-লড়াই করেছি। আপনারা আজকে নতুন করে শুরু করতে যাচ্ছেন আপনাদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার জন্য, সেটা এই দেশের মানুষ কিন্তু কোনো মতেই মেনে নেবে না।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকনের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক দপ্তর সম্পাদক, যশোর-১ (শার্শা) আসনে বিএনপির প্রার্থী মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক, যশোর-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য, যশোর-২ আসনে দলীয় প্রার্থী সাবিরা সুলতানা মুন্নী, কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, কেন্দ্রীয় সদস্য, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি যশোর-৬ আসনে দলীয় প্রার্থী কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, জেলা কমিটির সাবেক নেতা অ্যাডভোকেট মুহম্মদ ইসহক, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলামসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন- তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক নার্গিস বেগম, তরিকুলের ছেলে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনকি সম্পাদক ও যশোর-৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।


শেরপুরে বিএনপির ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শান্ত শিফাত, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি

শেরপুর জেলা বিএনপি ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম ও সদস্য সচিব অধ্যক্ষ এবিএম মামুনুর রশিদ পলাশ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ দুটি কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

অনুমোদনপ্রাপ্ত কমিটিগুলোর মধ্যে ঝিনাইগাতী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে আলহাজ্ব মো. শাহজাহান আকন্দকে এবং সদস্য সচিব করা হয়েছে মো. লুৎফর রহমানকে। ১০১ সদস্য বিশিষ্ট এই আহ্বায়ক কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দেয় শেরপুর জেলা বিএনপি।

অন্যদিকে, শ্রীবরদী উপজেলা বিএনপির ১০১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিতে আহ্বায়ক হয়েছেন মো. আব্দুর রহিম দুলাল এবং সদস্য সচিব হয়েছেন আবদুল্লাহ আল মামুন দুলাল।

কমিটি অনুমোদনের পর ঝিনাইগাতী উপজেলা বিএনপির নবনিযুক্ত সদস্য সচিব মো. লুৎফর রহমান এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আমি সর্বপ্রথম কৃতজ্ঞতা জানাই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানের প্রতি। ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই শেরপুর-৩ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী, সাবেক তিনবারের এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জননেতা মাহমুদুল হক রুবেল ভাইকে। পাশাপাশি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ও সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ পলাশসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকেও ধন্যবাদ জানাই আমাদের প্রতি আস্থা রাখার জন্য। আমরা মাঠে থেকে মানুষের পাশে থেকে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করবো ইনশাআল্লাহ।”

অন্যদিকে আহ্বায়ক আলহাজ্ব মো. শাহজাহান আকন্দ বলেন,
“দল আমাদের ওপর যে আস্থা রেখেছে, তার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে বিজয়ী করতে কাজ করবো। এখন সময় মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়ার। আমরা চাই, আগামীর প্রতিটি পদক্ষেপ হোক দলের, দেশের ও জনগণের কল্যাণে।”

স্থানীয় রাজনীতিতে এই দুই উপজেলা কমিটি অনুমোদনকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।


বিএনপিতে যোগদানের বিষয়ে যা বললেন রেজা কিবরিয়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও রাজনীতিক রেজা কিবরিয়া। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তার। গতকাল বুধবার (৫ নভেম্বর) গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।

রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘আমি ইতিমধ্যেই বিএনপিতে যোগদান করেছি এবং প্রাথমিক সদস্য ফরম পূরণ করেছি।

কয়েক দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করব।’

হবিগঞ্জ-১ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনের আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।’

রেজা কিবরিয়ার এর আগে গণফোরামে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন, ঐক্যফ্রন্ট ব্যানারে ধানের শীষে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং গণ অধিকার পরিষদে আহ্বায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।


পাঁচ দফা দাবিতে আট ইসলামি দলের পদযাত্রা আজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ রাজধানীতে পদযাত্রা করবে আট ইসলামি দল। এর মধ্যে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি)।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় পল্টনে সমবেত হয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে স্মারকলিপি প্রদানের লক্ষ্যে এ পদযাত্রা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

এর আগে গত সোমবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন আট দলের নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, “দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন জরুরি।”

এ সময় ইসলামি দলগুলোর নেতারা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি, এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা নিশ্চিত করার দাবিও জানান।

সংবাদ সম্মেলনের আগে পুরানা পল্টনে দলগুলোর শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেন। সেখানে জামায়াতে ইসলামী নেতারা অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনার তাগিদকে স্বাগত জানান। তবে একই সঙ্গে ‘আলোচনায় রেফারি নিয়োগের’ দাবি তোলেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

জামায়াতসহ অংশগ্রহণকারী দলগুলোর নেতারা জানিয়েছেন, তাদের এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হবে এবং স্মারকলিপিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে রাজনৈতিক সংস্কার, ন্যায্য নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবি জানানো হবে।


আগামী নির্বাচনে আ. লীগের অংশগ্রহণের সুযোগ নেই: জামায়াত আমির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সিলেট প্রতিনিধি

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতেই আগামী নির্বাচন হতে হবে। তা না হলে নানা বিশৃঙ্খলার সুযোগ তৈরি হবে।’ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বুধবার সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গণমাধ্যমকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তৃতীয় মেয়াদে জামায়াতের আমির নির্বাচিত হওয়ার পর দুদিনের সফরে সিলেটে এসে পৌঁছান ডা. শফিকুর রহমান। বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে ভিড় করেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ তো নিজেরাই নির্বাচন চায় না। আপনারা কি জোর করে তাদের ওপর নির্বাচন চাপিয়ে দিতে চান? তারা যদি নির্বাচন চাইতো তাহলে গত তিনটি নির্বাচনের সুযোগ পেয়েছে, হাতছাড়া করলো কেন? তারা যে নির্বাচনে বিশ্বাসী সেটা তারা প্রমাণ করতে পারেনি। যে জিনিস তারা পছন্দ করে না সেটা উপহার দিতে গেলে তাদের ওপর জুলুম করা হবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কোনো জোটে যাচ্ছে না জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা জোট করছি না, বরং জনগণকেই সঙ্গে নিয়ে ভোটের ময়দানে নামবো। ইসলামী দলগুলোর পাশাপাশি দেশপ্রেমিক, প্রতিশ্রুতিশীল ও সৎ মানুষরাও আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। আমরা সবাইকে নিয়েই দেশ গড়তে চাই।

দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। মানুষ ভোট দিতে চায়, পরিবর্তন চায়। সুশাসনের পরিবর্তে দেশে দুঃশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দুর্নীতি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণ রাস্তায় নেমেছে। আমরা জাতিকে আহ্বান জানাচ্ছি—দুর্নীতিকে ‘না’ বলুন। কেউ নিজে দুর্নীতি করবেন না, অন্যকেও করতে দেবেন না। তাহলেই আমাদের দেশটা সুন্দর হবে।

প্রশাসনের নিরপেক্ষতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছে ইতোমধ্যে প্রস্তাব দিয়েছি- অতীতে যারা নির্বাচনে পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে, তাদের সরিয়ে দিতে হবে। কারণ জনগণ যখন জেগে ওঠে, তখন কোনো প্রশাসনিক প্রভাব টিকতে পারে না। জনগণের ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটে।

নির্বাচনের সময়সূচি প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আদায় করে ছাড়ব। বেশি দেরি হলে বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অস্থিতিশীলতা দেখা দিতে পারে। তাই সময়মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়াই শ্রেয়।

তিনি আরও বলেন, জামায়াত ইতোমধ্যে বিভিন্ন আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। তবে এটা চূড়ান্ত নয়। আমরা সবাইকে নিয়ে চলছি, তাই প্রয়োজন হলে প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তন আসবে।

এ সময় সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির ফখরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


১৫ নভেম্বর এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা: নাহিদ ইসলাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এ মাসের ১৫ তারিখ আমরা প্রাথমিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করব। আমরা এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং ৩০০ আসনে আমাদের প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে।

বুধবার নারায়ণগঞ্জে সিদ্ধিরগঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়ে মৃত্যুবরণকারী শহীদ গাজী সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘কোন দলের সাথে জোট অবশ্যই রাজনীতিক বা আদর্শিক জায়গা থেকে হতে পারে। জুলাই সনদে আমাদের সংস্কারের দাবিগুলোর সঙ্গে যদি কোন দল সংহতি প্রকাশ করে সেক্ষেত্রে জোটের বিষয় বিবেচনা করবো। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

বিএনপির কয়েকটি আসন ছেড়ে দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘৩০০ আসনে আমাদের প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। তবে যারা ফ্যাসিবাদ বিরোধী ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, সেখানে খালেদা জিয়ার (বিএনপির সাবেক প্রধানমন্ত্রী) কথা আমাদের নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী বলেছেন। তার সম্মানে সেই সব আসনে আমরা প্রার্থী দেব না। এছাড়া সর্বাধিক আসনে আমরা ‘শাপলা কলি’ প্রতিকের জন্য প্রার্থী দেব।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে নির্বাচনের যে সংস্কৃতি যাদের টাকা আছে, যারা গডফাদারগিরি করে তারা নির্বাচনে দাঁড়ায়। আমরা সেই সংস্কৃতিকে এবার চ্যালেঞ্জ করতে চাই। এলাকার গ্রহণযোগ্য, সাধারণ ও খেটে খাওয়া মানুষকে আমরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদে দেখতে চাই। আমরা সেই উদ্দেশ্যে কাজ করছি।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের হাজারো যোদ্ধারা সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের ছিল। তারা তা সম্পূর্ণরুপে পালন করতে পারেনি বিধায় এখনো লাশের সারি বাড়তেছে। আমাদের শহীদদের সংখ্যা বাড়তেছে। আমরা সরকারের প্রতি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, আহত যোদ্ধাদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ব্যবস্থা অব্যাহত না থাকলে এরকম মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে থাকবে। এমনকি পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকার যে আসুক না কেন, চিকিৎসার বিষয়ে সবার কমিটমেন্ট থাকা প্রয়োজন।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলা সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আহমেদ তনু, সদস্য সালেহ আহমেদসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের ছোড়া গুলিতে এক চোখের দৃষ্টি হারানো ও গলায় স্প্লিন্টার নিয়েই টানা ১৫ মাস বেঁচে থাকার পর গত ২৬ অক্টোবর রাতে মৃত্যুবরণ করেন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার গোদনাইল এলাকার গাজী সালাউদ্দিন। তার মৃত্যুতে শোকাহত পরিবারকে শান্তনা ও সমবেদনা জানাতে তার গোদনাইলের বাড়িতে যান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এ সময় নিহতের স্ত্রী রানী বেগমসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন।


banner close