তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সংখ্যা ২১৭।
আজ রোববার ভোররাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেনের পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
বার্তায় বলা হয়, মুক্তির আকাঙ্ক্ষা থেকে এই জনপদের মানুষ ১৯৭১ সালে একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালে প্রণীত মুজিববাদী সংবিধানের মধ্য দিয়ে নির্মিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামো অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠার পথ খুলে দিয়েছে। যার ফলে এ দেশের নাগরিকরা ইতিহাসের বিভিন্ন পরিক্রমায় বাকশাল, স্বৈরতন্ত্র এবং সর্বশেষ ফ্যাসিবাদের শিকার হয়েছে। ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে বাংলাদেশের নাগরিকরা মুক্ত হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামো থেকে ফ্যাসিবাদের সব উপাদান ও কাঠামোকে বিলোপ করতে এবং এই জনপদের মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপদানে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে।
এতে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, মনিরা শারমিন, মাহবুব আলম, সারোয়ার তুষার, অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, তাজনূভা জাবীন, সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া, ড. আতিক মুজাহিদ, আশরাফ উদ্দীন মাহাদী, অর্পিতা শ্যামা দেব, তানজিল মাহমুদ, অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, জাবেদ রাসিন, এহতেশাম হক ও হাসান আলী।
সদস্যসচিব- আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব- ডা. তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিভা, যুগ্ম সদস্যসচিব- আব্দুল্লাহ আল আমিন, আরিফ সোহেল, মো. রশিদুল ইসলাম (রিফাত রশিদ), মো. মাহিন সরকার, মো. নিজাম উদ্দিন, আকরাম হুসেইন, এস এম সাইফ মোস্তাফিজ, সালেহ উদ্দিন সিফাত (দপ্তর), আলাউদ্দীন মোহাম্মদ, ফরিদুল হক, মো: ফারহাদ আলম ভূঁইয়া, মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া, লুৎফর রহমান, মো. মঈনুল ইসলাম (তুহিন), মুশফিক উস সালেহীন, ডা. জাহেদুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম মুসা, অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর, মোশফিকুর রহমান জোহান, মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান, সাগুফতা বুশরা মিশমা, আফসানা ছপা, আহনাফ সাইদ খান, আবু সাঈদ মোহাম্মদ সুজা উদ্দিন, মীর আরশাদুল হক, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, তারেকুল ইসলাম (তারেক রেজা), মশিউর রহমান, জয়নাল আবেদীন শিশির, গাজী সালাউদ্দীন তানভীর, তামিম আহমেদ, তাহসীন রিয়াজ ও প্রীতম দাশ।
মুখ্য সংগঠক- সারজিস আলম (উত্তরাঞ্চল), যুগ্ম মুখ্য সংগঠক- সাইফুল্লাহ হায়দার, আলী নাছের খান, সাকিব মাহদী, মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সাদিয়া ফারজানা দিনা, অলিক মৃ, আসাদুল্লাহ আল গালিব, হানিফ খান সজীব, আবু সাঈদ লিয়ন।
সংগঠক- রাসেল আহমেদ, ইমরান ইমন, ফরহাদ সোহেল, রফিকুল ইসলাম আইনী, মোস্তাক আহমেদ শিশির, আজাদ খান ভাসানী, প্রীতম সোহাগ, দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী, এম এম শোয়াইব, নাহিদ উদ্দিন তারেক, আব্দুল্লাহ আল মনসুর, মিয়াজ মেহরাব তালুকদার, অ্যাডভোকেট শিরীন আক্তার শেলী, আবুল বাশার, আব্দুল্লাহ আল মুহিম, নাজমুল হাসান সোহাগ, খায়রুল কবির ও সাঈদ উজ্জ্বল।
মুখ্য সংগঠক- হাসনাত আবদুল্লাহ (দক্ষিণাঞ্চল), যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মোল্যা রহমাতুল্লাহ্, এস এম শাহরিয়ার, মেজবাহ কামাল মুন্না, জোবাইরুল হাসান আরিফ ও ইমন সৈয়দ।
সংগঠক- আকরাম হোসাইন রাজ, হামযা ইবনে মাহবুব, ওয়াহিদুজ্জামান, আসাদ বিন রনি, মোহাম্মাদ রাকিব, আরমান হোসাইন, মো. রাসেল আহমেদ, অ্যাডভোকেট মনজিলা ঝুমা, শওকত আলী, ডা. আশরাফুল ইসলাম সুমন, মুনতাসির মাহমুদ, ডা. মিনহাজুল আবেদীন, সাকিব শাহরিয়ার, আজিজুর রহমান রিজভী, আব্দুর রহমান, ফয়সাল আহমেদ, নয়ন আহমেদ, কাউছার হাবিব, আব্দুল্লাহ আল মামুন ফয়সাল, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জিহান, মাও. সানাউল্লাহ খান, আরিফুল ইসলাম, নফিউল ইসলাম ও মো. রাকিব হোসেন।
মুখ্য সমন্বয়ক- নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক- আব্দুল হান্নান মাসউদ, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক- অ্যাডভোকেট মো. তারিকুল ইসলাম (যুব), ডা. মো. আব্দুল আহাদ (চিকিৎসা), মাজহারুল ইসলাম ফকির (শ্রমিক), দিলশানা পারুল, আবু হানিফ, আব্দুজ জাহের, কৃষিবিদ গোলাম মোর্তজা সেলিম, মেহেরাব সিফাত, অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ, আশেকীন আলম, ডা. জাহিদুল বারী, কৈলাশ চন্দ্র রবিদাস, ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু, শেখ মোহাম্মদ শাহ মঈনুদ্দিন, খান মুহাম্মদ মুরসালীন, সাদ্দাম হোসেন, আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল, নাভিদ নওরোজ শাহ, তুহিন মাহমুদ, মো. আরিফুর রহমান (তুহিন), সাগর বড়ুয়া, রাফিদ এম ভূঁইয়া ও মাহবুব আলম।
সদস্য- সানজিদা খান দীপ্তি (শহীদ আনাসের মা), খোকন চন্দ্র বর্মন (আহত), মো. ফাহিম রহমান খান পাঠান, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের (সন্দ্বীপ), ঋআজ মোরশেদ, ইমরান নাঈম, মশিউর আমিন শুভ, আল আমিন শুভ, প্লাবন তারিক, ওমর ফারুক, আসাদুল ইসলাম মুকুল, ফিহাদুর রহমান দিবস, মো. তৌহিদ আহমেদ আশিক, মো. আব্দুল মুনঈম, রকিব মাসুদ ইনজামুল হক রামিম, সৈয়দা নীলিমা দোলা, এস আই শাহীন, আসাদুজ্জামান হৃদয়, তানহা শান্তা, ডা. মশিউর রহমান, ইমরান শাহরিয়ার, এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, আব্দুল্লাহিল মামুন নিলয়, আজাদ আহমেদ পাটওয়ারী, জাহিদুল ইসলাম সৈকত, আরজু নায়েম, ডা. মনিরুজ্জামান, তাওহিদ তানজিম, মোহাম্মদ উসামা, মাহবুব-ই-খোদা, তারিক আদনান মুন, নাহিদা বুশরা, তৌহিদ হোসেন মজুমদার, মারজুক আহমেদ, নীলা আফরোজ, নূরতাজ আরা ঐশী, সাইয়েদ জামিল, শেখ খায়রুল কবির আহমেদ, রফিকুল ইসলাম কনক, মীর হাবীব আল মানজুর, মো. ইমরান হোসেন, মো. আরিফুল দাড়িয়া, মো. ইনজামুল হক, আবু সাঈদ মুসা, ডা. আতাউর রহমান রাজিব, সালমান জাভেদ, ইমামুর রশিদ, সাইফুল ইসলাম, ডা. সাবরিনা মনসুর, অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট ছেফায়েত উল্লাহ, আহমেদুর রহমান তনু, দিদার শাহ, রাদিথ বিন জামান, ফারিবা হায়দার, সাইফুল ইসলাম, ইয়াহিয়া জিসান, সোহেল রানা, রিদওয়ান হাসান, হাসিব আর রহমান, ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ, জাওয়াদুল করিম, আল আমিন টুটুল, ইসমাইল হোসেন সিরাজি, ইফতেখারুল ইসলাম, হাফসা জাহান, জায়েদ বিন নাসের, মামুন তুষার, ওমর ফারুক, সালাহউদ্দিন জামিল সৌরভ, মো. হিফজুর রহমান বকুল, আসিফ মোস্তফা জামাল, জোবায়ের আলম, মেজর (অব.) মো. সালাউদ্দিন ও খালেদ সাইফুল্লাহ জুয়েল।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) রাজধানী ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’(এনসিপি) নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হয়। যাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা মূল নেতৃত্বে এসেছেন।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদ্য বিদায়ি কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেছেন। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরায় অবস্থিত জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি দলটির রাজনীতিতে যুক্ত হন। এ সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের উপস্থিতিতে জাহিদুল ইসলাম সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে সংগঠনের প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করেন।
জাহিদুল ইসলাম ইসলামী ছাত্রশিবিরের ২০২৫ সেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন শেষে সম্প্রতি বিদায় নেন। এর আগে তিনি সংগঠনের প্রকাশনা সম্পাদকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। কুমিল্লার সন্তান জাহিদুল ইসলাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের একজন কৃতি শিক্ষার্থী ছিলেন। দীর্ঘ ছাত্রজীবন শেষে সরাসরি জামায়াতে ইসলামীর মূল ধারার রাজনীতিতে তাঁর এই অন্তর্ভুক্তি দলটির ভবিষ্যৎ সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে ডা. শফিকুর রহমান তাঁকে স্বাগত জানান এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে নিবেদিত হওয়ার আহ্বান জানান।
নির্বাচন কমিশনের দাপ্তরিক কাজ শেষ করে ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা ২২ মিনিটের দিকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে গিয়ে তিনি মরহুম ভাইয়ের আত্মার মাগফিরাত কামনায় ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন। বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বনানী কবরস্থানে যাওয়ার আগে দুপুর ১টার দিকে তারেক রহমান রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) যান। সেখানে তিনি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) নিবন্ধনের জন্য নিজের আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ প্রদান করেন। তাঁর সাথে কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানও উপস্থিত ছিলেন এবং তিনিও একই সাথে ভোটার নিবন্ধনের বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। নির্বাচন কমিশনের দাপ্তরিক আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি সরাসরি বনানী কবরস্থানের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
এর আগে আজ সকাল ১০টার দিকে গুলশানের বাসভবন থেকে বের হয়ে তারেক রহমানের দিনের প্রথম কর্মসূচি শুরু হয়। তিনি শুরুতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম শহীদ ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করেন। সেখান থেকে তিনি নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত দপ্তরে যান। দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরে নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং পারিবারিক শোকের স্মৃতিচারণে তাঁর আজকের কর্মসূচিগুলো ছিল বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
বনানীতে কবর জিয়ারত শেষে তারেক রহমান ধানমন্ডিতে তাঁর শ্বশুরের বাসভবন ‘মাহবুব ভবনে’ যাওয়ার কথা রয়েছে। এরপর বিকেলের শেষভাগে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন তাঁর চিকিৎসাধীন মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মায়ের শয্যাপাশে বেশ কিছুটা সময় কাটাবেন তিনি। দিনের সকল কর্মসূচি শেষে রাতে তিনি পুনরায় গুলশানের বাসভবনে ফিরে যাবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তারেক রহমানের এই ব্যস্ততম দিনটিতে তাঁর সাথে দলের শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা ছায়ার মতো ছিলেন।
নির্বাচনী কৌশলের অংশ হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন মো. রাশেদ খান। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে বিএনপির প্রতীক ‘ধানের শীষ’ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্যেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দল বদলের এই মুহূর্তে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের কাছে আবেগঘন এক বার্তায় ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন তিনি।
আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বরাবর পাঠানো এক পদত্যাগপত্রে রাশেদ খান তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে দীর্ঘ সময় তাঁরা রাজপথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছেন। এই দীর্ঘ পথচলায় তাঁর কোনো আচরণ বা বক্তব্যে যদি কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন, তবে তিনি সবার কাছে বিনম্রভাবে ক্ষমা চেয়েছেন।
রাশেদ খান তাঁর চিঠিতে আরও লেখেন, “দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করার বিষয়ে আপনার সম্মতি পাওয়ায় আমি ধন্য। আমরা যেখানেই থাকি না কেন, আমাদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন অটুট থাকবে।” ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করলেও মূলত ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার বিষয়টিই ছিল এই পরিবর্তনের মূল অনুঘটক।
এর আগে শুক্রবার রাতে গণঅধিকার পরিষদের এক সভায় রাশেদ খানকে বিএনপিতে যোগ দিয়ে নির্বাচন করার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেওয়া হয়। এ বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর জানান, যেহেতু বর্তমান গণ-আন্দোলন বিএনপির নেতৃত্বে একটি সামগ্রিক সমন্বয়ের মাধ্যমে সফল হয়েছে, তাই তাঁরা আগামী দিনেও বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থাকতে চান। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, বর্তমান আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) অনুযায়ী জোটভুক্ত দলগুলো নিজ নিজ প্রতীকে ভোট করতে বাধ্য, কিন্তু সব এলাকায় ছোট দলগুলোর প্রতীকে জয়লাভ করা কঠিন। তাই কৌশলগত কারণে রাশেদ খানকে বিএনপির হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে লড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘদিনের রাজপথের সহযোদ্ধার এমন দলবদল রাজনৈতিক মহলে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে রাশেদ খান ও নুরুল হক নুর—উভয় পক্ষই বিষয়টিকে একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্যের অংশ হিসেবে দেখছেন। ঝিনাইদহ-৪ আসনে রাশেদ খানের এই প্রার্থিতা ওই এলাকার নির্বাচনী সমীকরণে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মূলত আন্দোলনের সুফল ধরে রাখতে এবং একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতেই এই ‘নির্বাচনী সমঝোতা’র পথ বেছে নিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ ও বিএনপি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান এবং কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে সশরীরে উপস্থিত হয়ে তাঁরা ভোটার নিবন্ধনের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। এর মাধ্যমে দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে নাগরিক অধিকারের প্রথম ধাপটি পূর্ণ করলেন তাঁরা।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ডা. জোবায়দা রহমান ও জাইমা রহমান কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ইটিআই ভবনে পৌঁছান। এরপর ১২টা ২৬ মিনিটে তাঁরা ভবনের ভেতরে প্রবেশ করেন। সেখানে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত বুথে তাঁদের ছবি তোলা হয় এবং বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ গ্রহণসহ ভোটার হিসেবে প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাইয়ের সব কাজ সম্পন্ন হয়। নিবন্ধনের এই পুরো প্রক্রিয়া শেষে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে জাইমা রহমান নির্বাচন কমিশন প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
তারেক রহমানের পরিবারের সদস্যদের এই উপস্থিতি ঘিরে আজ সকাল থেকেই নির্বাচন কমিশন ভবন ও এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। ইসি প্রাঙ্গণে পুলিশ ও র্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করার পাশাপাশি প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথে ব্যারিকেড দেওয়া হয়। নিরাপত্তাজনিত কারণে সাংবাদিকসহ সাধারণ কাউকে ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি, ফলে সংবাদকর্মীদের ইসি চত্বরের বাইরে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, প্রচলিত নিয়ম মেনেই সাধারণ নাগরিকদের মতো ডা. জোবায়দা রহমান ও জাইমা রহমানের ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। ভোটার তালিকা আইন অনুযায়ী তাঁদের নাম অন্তর্ভুক্তিতে কোনো ধরনের আইনি বাধা বা জটিলতা ছিল না। উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৭ বছর তিন মাস লন্ডনে নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে গত ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমানের সঙ্গে তাঁরা সপরিবারে দেশে ফেরেন। আজ ভোটার হওয়ার মাধ্যমে তাঁরা দেশের নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় সরাসরি অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করলেন।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবর জিয়ারত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ২০ মিনিটে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে পৌঁছে এই দুই কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতেহা পাঠ করেন।
এর আগে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে তারেক রহমান তাঁর গুলশানের বাসভবন থেকে যাত্রা শুরু করেন। তাঁর এই সফরকে কেন্দ্র করে পথে পথে নেতাকর্মীদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বনানী ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে তাঁর বহরটি মগবাজার ফ্লাইওভার দিয়ে নামার সময় হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের সামনে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগমে কিছুটা বিলম্ব হয়। সেখানে তেজগাঁও থানা যুবদলের নেতাকর্মীরা স্লোগান দিয়ে তাঁদের প্রিয় নেতাকে স্বাগত জানান। পরবর্তীতে শাহবাগ মোড় হয়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পৌঁছান।
কবর জিয়ারতের সময় তারেক রহমান প্রথমে শহীদ ওসমান হাদির কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা জানান। এরপর তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও ওসমান হাদির কবরের পাশে দাঁড়িয়ে ফাতেহা পাঠ করেন এবং তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন।
এই জিয়ারত অনুষ্ঠানে তারেক রহমানের সাথে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ দলের কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান, উপ-উপাচার্যবৃন্দ, প্রক্টর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভিপি সাদিক কায়েম উপস্থিত ছিলেন।
কবর জিয়ারতের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারেক রহমান তাঁর ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) প্রয়োজনীয় কার্যাদি সম্পন্ন করতে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে রওনা হন। যদিও আজ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কথা ছিল, তবে অনিবার্য কারণে সেই কর্মসূচিটি বাতিল করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে তিনি ধানমন্ডিতে তাঁর শ্বশুরের বাসভবন ‘মাহবুব ভবনে’ যাবেন এবং সেখান থেকে আবারও এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁর মা বেগম খালেদা জিয়াকে দেখে গুলশানের বাসভবনে ফিরবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। মূলত দেশে ফেরার পর সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা পালনের অংশ হিসেবেই তিনি এই কর্মসূচিগুলো পালন করছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফিরে আসা প্রসঙ্গে দেশের ইতিহাসে এমন রাজকীয় প্রত্যাবর্তন বিরল বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, বিশ্ব গণমাধ্যম বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী বলে মনে করছেন যাকে, সেই তারেক রহমান দেশে ফিরে এসেছেন রাজকীয় প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে। সমগ্র বাংলাদেশ তাকে সংবর্ধনা জানিয়েছে, সমগ্র বাংলাদেশ আনন্দিত হয়েছে, উৎসাহিত হয়েছে, জনগণ তাদের প্রাণপ্রিয় নেতাকে ফিরে পেয়েছে। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলানগরে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এই ধরনের রাজকীয় প্রত্যাবর্তন এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা খুব কম নেতার পক্ষে পাওয়া সম্ভব হয়েছে। আজকে তাদের মধ্যে একটা নতুন আশা সঞ্চারিত হয়েছে। যেটা তিনি শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) জনগণের কাছে তুলে ধরেছেন যে, তার একটি পরিকল্পনা আছে। অর্থাৎ জনগণের উন্নয়নের জন্য, বাংলাদেশকে একটি সুদৃঢ় অবস্থায় নেওয়ার জন্য, একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণ করার জন্য তিনি একটি পরিকল্পনা নিয়ে এসেছেন। সেই পরিকল্পনা তিনি ইনশাআল্লাহ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন নিয়ে বাস্তবায়ন করবেন।
ফখরুল আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে, তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে এলো এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশে সুবাতাস বইতে শুরু করল। আমরা সবাই—বাংলাদেশে শুধু তার দল নয়, গোটা বাংলাদেশের গণতান্ত্রকামী মানুষ আজকে অপেক্ষা করে আছি এই নেতার নেতৃত্বে একটা সত্যিকার অর্থেই সুখী, সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে খুব কম নেতার পক্ষেই এমন স্বতঃস্ফূর্ত জনসমর্থন ও গণঅভ্যর্থনা পাওয়া সম্ভব হয়েছে। তরুণ ও সম্ভাবনাময় নেতৃত্ব হিসেবে তারেক রহমানকে আজ দেশের মানুষ শুধু নয়, বিশ্ব গণমাধ্যমও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশে এখন সুবাতাস বইতে শুরু করেছে- উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা শুধু একটি ব্যক্তিগত প্রত্যাবর্তন নয়; এটি দেশের রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। এর মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের প্রত্যাশা বাস্তবায়নের পথ আরও সুগম হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনকে ঘিরে দেশবাসী দীর্ঘ প্রতীক্ষায় ছিল। তার আগমনকে নিয়ে নানা গুঞ্জন ছিল, তার আসার মধ্য দিয়ে সব ষড়যন্ত্র ও সব গুঞ্জনের সমাপ্তি ঘটেছে।’
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘যে লড়াইটা তিনি বিদেশের মাটিতে বসে জনগণের জন্য করেছেন, একটা অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। এখন সেই লড়াইটা প্রত্যক্ষভাবে দেশের মাটিতে বসে জনগনকে নেতৃত্ব দেবেন।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষই তাকে সংবর্ধনা দিয়েছে, বিএনপি একা সংবর্ধনা দেয়নি। দেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে, বিএনপি, বিএনপি নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী, শুভাকাঙ্ক্ষী, দেশের মানুষই তাকে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সংবর্ধনা দিয়েছে। তিনি এখন জগণের নেতা এবং মানুষের ভবিষ্যৎ কর্ণধার তারেক রহমান।’
এদিকে শুক্রবার জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জাতীয় স্মৃতিসৌধে আগমন উপলক্ষে হাজার হাজার নেতাকর্মী জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় অবস্থান নেয়।
এ ছাড়া জাতীয় স্মৃতিসৌধে তারেক রহমানের আগমনকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করে। একই সাথে তার আগমনকে কেন্দ্র করে জাতীয় স্মৃতিসৌধে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয় বলেও জানিয়েছেন জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার খান আনু।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর গত বৃহস্পতিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সপরিবারে দেশে ফেরেন। তাকে অভ্যর্থনা জানাতে সারাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ ঢাকায় সমবেত হন। এতে ঢাকা মহানগরী কার্যত জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন নুরুল ইসলাম সাদ্দাম। আর সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন সিবগাতুল্লাহ সিবগা। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব পান তারা।
নুরুল ইসলাম সাদ্দাম এর আগে ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি তিনি সংগঠনটির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
শিক্ষাজীবনে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত উদ্যোক্তা অর্থনীতিতে পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা কোর্সে অধ্যয়নরত রয়েছেন।
অপরদিকে সিবগাতুল্লাহ ২০২৫ সেশনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন। পাশাপাশি সংগঠনের কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক, প্রকাশনা ও সাহিত্য সম্পাদকসহ আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পাদকীয় পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামীকাল শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন। এদিন সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মাজার প্রাঙ্গণে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করবেন তিনি।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিএনপির মিডিয়া সেল দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের এই কর্মসূচির কথা নিশ্চিত করেছে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, শনিবার সকাল ১১টায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সকল সদস্যসহ সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শহীদ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করতে যাবেন।
এরপর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে ভোটার হবেন এবং নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) রেজিস্ট্রেশন করবেন। তারপর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের দেখতে শ্যামলীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) যাবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজিত গণসংবর্ধনা পরবর্তী বর্জ্য পরিষ্কারে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। রাজধানীর কুড়িল থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত বিস্তৃত জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে (৩০০ ফিট সড়ক) এবং এর আশপাশের এলাকায় পড়ে থাকা বিপুল পরিমাণ ময়লা-আবর্জনা আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে দলটির নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অপসারণ করেন। সকাল থেকেই স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল ও যুবদলের সদস্যদের হাতে ঝাড়ু ও বর্জ্য সংগ্রহের নানা সরঞ্জাম নিয়ে রাজপথ পরিষ্কার করতে দেখা যায়, যেখানে স্থানীয় অনেক বাসিন্দাও সংহতি জানিয়ে অংশ নেন।
পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে সরাসরি নেতৃত্ব দেওয়া ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক জানান যে, রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা পালন করা দলটির প্রধান আদর্শ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী, জনস্বার্থ ও পরিবেশ রক্ষা নিশ্চিত করতেই এই পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। গতকালের বিশাল গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতির কারণে সড়কে প্লাস্টিক বোতল, কাগজের টুকরো, ব্যানার ও ফেস্টুন জমে গিয়েছিল, যা দ্রুত পরিষ্কার করার মাধ্যমে জনভোগান্তি লাঘব ও স্বাভাবিক যান চলাচল নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।
বিএনপি নেতাদের এই পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝেও ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। পথচারী ও স্থানীয়রা জানান যে, বড় কোনো রাজনৈতিক সমাবেশের পর সাধারণত সড়কগুলো নোংরা অবস্থায় পড়ে থাকে, তবে এবার দ্রুত বর্জ্য অপসারণের ফলে পরিবেশ যেমন সুরক্ষিত হয়েছে তেমনি যানবাহন চলাচলেও সুবিধা হয়েছে। দলীয় সূত্র থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, আগামী দিনেও বড় ধরনের কোনো কর্মসূচির পর এ ধরনের সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি জিয়া উদ্যানে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি মরহুম পিতার কবর জিয়ারত করেন। বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে তিনি সমাধিস্থলে পৌঁছালে চন্দ্রিমা উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকায় উপস্থিত হাজারো দলীয় নেতাকর্মী রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে তাকে উষ্ণ অভিবাদন জানান। এ সময় নেতাকর্মীদের মুহুর্মুহু স্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।
এসময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় জিয়া উদ্যান ও এর সংলগ্ন এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও এপিবিএন সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়।
এর আগে দুপুর ২টা ৫৪ মিনিটে তারেক রহমান গুলশান অ্যাভিনিউয়ের নিজ বাসভবন থেকে জিয়া উদ্যানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। বনানী, মহাখালী ফ্লাইওভার এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এলাকা হয়ে তিনি সরাসরি সমাধিস্থলে পৌঁছান। শ্রদ্ধা নিবেদনকালে তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এছাড়াও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ড. এ কে এম শামসুল রহমান শামস, উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস ছাত্তারসহ দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ জিয়ারত অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
শহীদ রাষ্ট্রপতির কবর জিয়ারত ও মোনাজাত শেষে তারেক রহমানের সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। উল্লেখ্য, সাধারণ মানুষের যাতায়াতে যেন কোনো প্রকার ভোগান্তি না হয়, সেই বিষয়টি বিবেচনা করে তিনি এদিন জুমার নামাজ বাসায়ই আদায় করেন। তার যাতায়াতের পুরো পথে এবং সমাবেশস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা বলয় লক্ষ্য করা গেছে।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একজন বাংলাদেশি নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতার নিজ ভূমিতে ফেরার এই অধিকারটি পুনরুদ্ধার হওয়া আমাদের গণতান্ত্রিক লড়াইয়েরই একটি ইতিবাচক প্রতিফলন।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, তারেক রহমান এবং তার পরিবার রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তাকে দীর্ঘ সময় নির্বাসিত থাকতে হয়েছে। হাজারো শহীদের রক্তদানের মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের ফলে এমন প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে; যেখানে তিনি ও তার পরিবার দেশে ফিরে আসতে পেরেছেন।
তার ভাষ্য, আমরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী বাংলাদেশ রাষ্ট্র চাই; যেখানে ভবিষ্যতে ভিন্নমতের কারণে কোনও রাজনৈতিক নেতাকে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের মধ্য দিয়ে যেতে হবে না।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, বিগত দেড় দশকের অবরুদ্ধ রাজনৈতিক পরিবেশ ভেঙে আমরা আজ যে মুক্ত বাংলাদেশের পথে হাঁটছি, সেখানে প্রতিটি নাগরিকের আইনের শাসন ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
তারেক রহমানকে স্বদেশে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন দেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চাকে আরও সুসংহত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় সহাবস্থান এবং সুস্থ প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি গড়ে তোলাই এখন আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ। তারেক রহমানকে স্বদেশে স্বাগত জানাই। দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে তার এই অংশগ্রহণ ফলপ্রসূ হোক।
আাগামী নির্বাচনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র ফিরে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পূর্বাচলের তিনশ ফিট এক্সপ্রেসওয়েতে বিএনপি আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ আমাদের একদিকে আনন্দের দিন। বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে শহীদ জিয়ার পুত্র ও গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। অন্যদিকে গণতন্ত্রের নেত্রী খালেদা জিয়া অসুস্থ-এটি আমাদের জন্য বেদনাদায়ক।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন তারেক রহমান দেশে এসেছেন। আমরা তাকে বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে স্বাগত জানাই। আশা করি, আগামী নির্বাচনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।’
মির্জা ফখরুল বিগত আন্দোলনের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা ফ্যাসিস্ট বিদায় করেছি। তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা একটি কঠিন পথ পাড়ি দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, ২০২৬ সালে তারই নেতৃত্বে আমরা আবারও জয়ী হবো।’
এর আগে দুপুরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তারেক রহমান। ইমিগ্রেশন আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। পরে সেখানে উপস্থিত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কিছু সময় কথা বলেন এবং লবিতে কিছুক্ষণ অবস্থান করেন। এ সময় তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন বলে দলটির মিডিয়া সেল নিশ্চিত করেছে।
পরে লাল-সবুজ রঙের একটি বাসে করে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে করতে তিনি কুড়িল বিশ্বরোডের তিনশ ফিট এলাকায় আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ সময় তারেক রহমানের গাড়িবহরের সঙ্গে বিপুলসংখ্যক মানুষ অনুষ্ঠানস্থলে যান। সেখানে সারাদেশ থেকে আসা নেতাকর্মীরা আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন।