তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সংখ্যা ২১৭।
আজ রোববার ভোররাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেনের পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
বার্তায় বলা হয়, মুক্তির আকাঙ্ক্ষা থেকে এই জনপদের মানুষ ১৯৭১ সালে একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালে প্রণীত মুজিববাদী সংবিধানের মধ্য দিয়ে নির্মিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামো অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠার পথ খুলে দিয়েছে। যার ফলে এ দেশের নাগরিকরা ইতিহাসের বিভিন্ন পরিক্রমায় বাকশাল, স্বৈরতন্ত্র এবং সর্বশেষ ফ্যাসিবাদের শিকার হয়েছে। ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে বাংলাদেশের নাগরিকরা মুক্ত হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামো থেকে ফ্যাসিবাদের সব উপাদান ও কাঠামোকে বিলোপ করতে এবং এই জনপদের মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপদানে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে।
এতে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, মনিরা শারমিন, মাহবুব আলম, সারোয়ার তুষার, অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, তাজনূভা জাবীন, সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া, ড. আতিক মুজাহিদ, আশরাফ উদ্দীন মাহাদী, অর্পিতা শ্যামা দেব, তানজিল মাহমুদ, অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, জাবেদ রাসিন, এহতেশাম হক ও হাসান আলী।
সদস্যসচিব- আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব- ডা. তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিভা, যুগ্ম সদস্যসচিব- আব্দুল্লাহ আল আমিন, আরিফ সোহেল, মো. রশিদুল ইসলাম (রিফাত রশিদ), মো. মাহিন সরকার, মো. নিজাম উদ্দিন, আকরাম হুসেইন, এস এম সাইফ মোস্তাফিজ, সালেহ উদ্দিন সিফাত (দপ্তর), আলাউদ্দীন মোহাম্মদ, ফরিদুল হক, মো: ফারহাদ আলম ভূঁইয়া, মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া, লুৎফর রহমান, মো. মঈনুল ইসলাম (তুহিন), মুশফিক উস সালেহীন, ডা. জাহেদুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম মুসা, অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর, মোশফিকুর রহমান জোহান, মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান, সাগুফতা বুশরা মিশমা, আফসানা ছপা, আহনাফ সাইদ খান, আবু সাঈদ মোহাম্মদ সুজা উদ্দিন, মীর আরশাদুল হক, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, তারেকুল ইসলাম (তারেক রেজা), মশিউর রহমান, জয়নাল আবেদীন শিশির, গাজী সালাউদ্দীন তানভীর, তামিম আহমেদ, তাহসীন রিয়াজ ও প্রীতম দাশ।
মুখ্য সংগঠক- সারজিস আলম (উত্তরাঞ্চল), যুগ্ম মুখ্য সংগঠক- সাইফুল্লাহ হায়দার, আলী নাছের খান, সাকিব মাহদী, মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সাদিয়া ফারজানা দিনা, অলিক মৃ, আসাদুল্লাহ আল গালিব, হানিফ খান সজীব, আবু সাঈদ লিয়ন।
সংগঠক- রাসেল আহমেদ, ইমরান ইমন, ফরহাদ সোহেল, রফিকুল ইসলাম আইনী, মোস্তাক আহমেদ শিশির, আজাদ খান ভাসানী, প্রীতম সোহাগ, দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী, এম এম শোয়াইব, নাহিদ উদ্দিন তারেক, আব্দুল্লাহ আল মনসুর, মিয়াজ মেহরাব তালুকদার, অ্যাডভোকেট শিরীন আক্তার শেলী, আবুল বাশার, আব্দুল্লাহ আল মুহিম, নাজমুল হাসান সোহাগ, খায়রুল কবির ও সাঈদ উজ্জ্বল।
মুখ্য সংগঠক- হাসনাত আবদুল্লাহ (দক্ষিণাঞ্চল), যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মোল্যা রহমাতুল্লাহ্, এস এম শাহরিয়ার, মেজবাহ কামাল মুন্না, জোবাইরুল হাসান আরিফ ও ইমন সৈয়দ।
সংগঠক- আকরাম হোসাইন রাজ, হামযা ইবনে মাহবুব, ওয়াহিদুজ্জামান, আসাদ বিন রনি, মোহাম্মাদ রাকিব, আরমান হোসাইন, মো. রাসেল আহমেদ, অ্যাডভোকেট মনজিলা ঝুমা, শওকত আলী, ডা. আশরাফুল ইসলাম সুমন, মুনতাসির মাহমুদ, ডা. মিনহাজুল আবেদীন, সাকিব শাহরিয়ার, আজিজুর রহমান রিজভী, আব্দুর রহমান, ফয়সাল আহমেদ, নয়ন আহমেদ, কাউছার হাবিব, আব্দুল্লাহ আল মামুন ফয়সাল, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জিহান, মাও. সানাউল্লাহ খান, আরিফুল ইসলাম, নফিউল ইসলাম ও মো. রাকিব হোসেন।
মুখ্য সমন্বয়ক- নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক- আব্দুল হান্নান মাসউদ, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক- অ্যাডভোকেট মো. তারিকুল ইসলাম (যুব), ডা. মো. আব্দুল আহাদ (চিকিৎসা), মাজহারুল ইসলাম ফকির (শ্রমিক), দিলশানা পারুল, আবু হানিফ, আব্দুজ জাহের, কৃষিবিদ গোলাম মোর্তজা সেলিম, মেহেরাব সিফাত, অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ, আশেকীন আলম, ডা. জাহিদুল বারী, কৈলাশ চন্দ্র রবিদাস, ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু, শেখ মোহাম্মদ শাহ মঈনুদ্দিন, খান মুহাম্মদ মুরসালীন, সাদ্দাম হোসেন, আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল, নাভিদ নওরোজ শাহ, তুহিন মাহমুদ, মো. আরিফুর রহমান (তুহিন), সাগর বড়ুয়া, রাফিদ এম ভূঁইয়া ও মাহবুব আলম।
সদস্য- সানজিদা খান দীপ্তি (শহীদ আনাসের মা), খোকন চন্দ্র বর্মন (আহত), মো. ফাহিম রহমান খান পাঠান, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের (সন্দ্বীপ), ঋআজ মোরশেদ, ইমরান নাঈম, মশিউর আমিন শুভ, আল আমিন শুভ, প্লাবন তারিক, ওমর ফারুক, আসাদুল ইসলাম মুকুল, ফিহাদুর রহমান দিবস, মো. তৌহিদ আহমেদ আশিক, মো. আব্দুল মুনঈম, রকিব মাসুদ ইনজামুল হক রামিম, সৈয়দা নীলিমা দোলা, এস আই শাহীন, আসাদুজ্জামান হৃদয়, তানহা শান্তা, ডা. মশিউর রহমান, ইমরান শাহরিয়ার, এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, আব্দুল্লাহিল মামুন নিলয়, আজাদ আহমেদ পাটওয়ারী, জাহিদুল ইসলাম সৈকত, আরজু নায়েম, ডা. মনিরুজ্জামান, তাওহিদ তানজিম, মোহাম্মদ উসামা, মাহবুব-ই-খোদা, তারিক আদনান মুন, নাহিদা বুশরা, তৌহিদ হোসেন মজুমদার, মারজুক আহমেদ, নীলা আফরোজ, নূরতাজ আরা ঐশী, সাইয়েদ জামিল, শেখ খায়রুল কবির আহমেদ, রফিকুল ইসলাম কনক, মীর হাবীব আল মানজুর, মো. ইমরান হোসেন, মো. আরিফুল দাড়িয়া, মো. ইনজামুল হক, আবু সাঈদ মুসা, ডা. আতাউর রহমান রাজিব, সালমান জাভেদ, ইমামুর রশিদ, সাইফুল ইসলাম, ডা. সাবরিনা মনসুর, অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট ছেফায়েত উল্লাহ, আহমেদুর রহমান তনু, দিদার শাহ, রাদিথ বিন জামান, ফারিবা হায়দার, সাইফুল ইসলাম, ইয়াহিয়া জিসান, সোহেল রানা, রিদওয়ান হাসান, হাসিব আর রহমান, ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ, জাওয়াদুল করিম, আল আমিন টুটুল, ইসমাইল হোসেন সিরাজি, ইফতেখারুল ইসলাম, হাফসা জাহান, জায়েদ বিন নাসের, মামুন তুষার, ওমর ফারুক, সালাহউদ্দিন জামিল সৌরভ, মো. হিফজুর রহমান বকুল, আসিফ মোস্তফা জামাল, জোবায়ের আলম, মেজর (অব.) মো. সালাউদ্দিন ও খালেদ সাইফুল্লাহ জুয়েল।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) রাজধানী ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’(এনসিপি) নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হয়। যাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা মূল নেতৃত্বে এসেছেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের পথে যাত্রা করেন তিনি।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানান, যুক্তরাজ্য সরকারের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক ও কর্মসূচিতে অংশ নিতেই তার এই লন্ডন সফর।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে বৈঠকের নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় বুধবার সকালে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন জামায়াত আমির।
লন্ডনে নির্ধারিত কর্মসূচি শেষে ডা. শফিকুর রহমান সৌদি আরবে গিয়ে পবিত্র ওমরাহ পালন করবেন বলেও জানান জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা।
সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২১ ডিসেম্বর ডা. শফিকুর রহমান দেশে ফিরবেন বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
লন্ডনে অবস্থানকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে জামায়াত আমিরের কোনো সাক্ষাৎ হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, “এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।”
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও নির্বাচন আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কি না, তা নিয়ে জনমনে এখনো সংশয় রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, একটি স্বাধীন দেশের জন্য জনগণের এই অবিশ্বাস মোটেই শুভ লক্ষণ নয়। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ গণতন্ত্র পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। তার মতে, নির্বাচন নিয়ে আগে থেকে স্পষ্ট বার্তা না থাকা এবং উপদেষ্টা পরিষদের বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের কারণেই জনগণের মধ্যে এই উদ্বেগ ও অবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে।
আব্দুস সালাম বলেন, গত ১৭ বছর ধরে দেশে গণতন্ত্র ও জনগণের মৌলিক অধিকার ছিল না এবং জনগণের মতামতের তোয়াক্কা না করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ইশারায় ক্ষমতা নির্ধারিত হতো। এই সংকট থেকে উত্তরণ, দেশের স্বার্থ রক্ষা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য বিএনপিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় আনা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে তিনি দাবি করেন। তিনি উল্লেখ করেন, জাতীয় যেকোনো সংকটে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া এবং বর্তমানে তারেক রহমান নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আসছেন। বিএনপি একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি করেছিল যাতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া যায়।
সম্প্রতি শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপি সব ধরনের উসকানি উপেক্ষা করে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখছে। এছাড়া দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক দুরবস্থা, বিনিয়োগ খরা এবং বেকারত্ব বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই সংকট কাটাতে আগে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা জরুরি। মুক্তার অখন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুসহ দলের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দেশে ফেরার সময় যুক্তরাজ্যের বিমানবন্দরে ভিড় না করতে এবং বিদায় জানানোর জন্য উপস্থিত না হতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত মহান বিজয় দিবসের এক আলোচনা সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৭-১৮ বছর তিনি যুক্তরাজ্যের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছিলেন, কিন্তু আগামী ২৫ তারিখে তিনি দেশে ফিরে যাচ্ছেন। তিনি নেতাকর্মীদের অনুরোধ করে বলেন, দেশে ফেরার দিন বিমানবন্দরে গিয়ে যেন কেউ হট্টগোল বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করেন। তার মতে, বিমানবন্দরে ভিড় করলে বিদেশিদের সামনে দেশের ও দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে পারে। তিনি কঠোর বার্তা দিয়ে বলেন, যারা তার অনুরোধ মেনে বিমানবন্দরে যাবেন না, তারাই প্রকৃত অর্থে দল ও দেশের সম্মানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আর নিষেধ অমান্য করে যারা যাবেন, তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্যই সেখানে গিয়েছেন বলে তিনি ধরে নেবেন।
বিজয় দিবসের এই আলোচনা সভায় দেশবাসীকে সতর্ক করে তিনি বলেন, একাত্তর, পঁচাত্তর বা ছিয়ানব্বইয়ের মতো ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো থেমে নেই এবং তারা তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি। আগামী দুই মাস পর দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি কেবল স্বপ্ন দেখানোয় নয়, বরং স্বপ্ন বাস্তবায়নের পরিকল্পনায় বিশ্বাসী। সামনের দিনগুলো সহজ হবে না উল্লেখ করে তিনি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান, যাতে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের এক-এগারোর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গ্রেপ্তার হন তারেক রহমান। পরে ২০০৮ সালে জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবারে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান এবং এরপর থেকে সেখানেই অবস্থান করছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে দোয়া মাহফিল ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফোরাম ইউএসএ ইনক-এর উদ্যোগে গত সোমবার জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন রেস্টুরেন্টে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ফোরামের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মুকুলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল মান্নান হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।
মোনাজাতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, আরাফাত রহমান কোকো, শরিফ ওসমান হাদি এবং একাত্তর ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনাসহ বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা হয়। আলোচনা সভায় বক্তারা বিজয়ের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে আগামী নির্বাচনে শহীদ জিয়ার আদর্শের দল বিএনপিকে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। তারা নোংরা রাজনীতি পরিহার করে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও জিয়ার আদর্শ ধারণ করে দলকে সুসংগঠিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া ভারত ও আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করে একটি স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয় অনুষ্ঠানে।
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের কাছে ক্ষমা চেয়ে দলে ফিরেছেন সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি রংপুর-১ আসন থেকে দলের প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) তিনি দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জিএম কাদের ও মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারীর সঙ্গে দেখা করে ক্ষমা চান এবং দলে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ বিষয়ে রাঙ্গা জানান, দল তাকে ক্ষমা করেছে এবং তিনি ফিরে এসেছেন। আসন্ন নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন, তবে মনোনয়ন না পেলেও দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এদিকে রংপুর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ মন্ডলও জাতীয় পার্টিতে ফিরেছেন বলে জানা গেছে। রবিবার রাতে রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে স্থানীয় নেতাদের হাতে ফুল দিয়ে তিনি দলে যোগদান করেন। যদিও পরে এক ফেসবুক লাইভে তিনি যোগদানের বিষয়টি অস্বীকার করে একে সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে দাবি করেন, তবে জাপার স্থানীয় নেতারা তাকে সাদরে গ্রহণ করার কথা জানিয়েছেন। দলীয় সূত্রমতে, রংপুরে জাতীয় পার্টির হারানো দুর্গ পুনরুদ্ধারে রাঙ্গা ও মন্ডলসহ সবাই একযোগে কাজ করবেন।
উল্লেখ্য, রওশন এরশাদ ইস্যুতে পক্ষ নেওয়ায় মসিউর রহমান রাঙ্গাকে এর আগে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। গত দ্বাদশ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। অন্যদিকে, নূর মোহাম্মদ মন্ডল বিভিন্ন সময়ে দল পরিবর্তনের জন্য স্থানীয় রাজনীতিতে বেশ আলোচিত। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা চলছে এবং তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ রয়েছে।
দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশে পা রাখবেন। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি নিজেই দেশে ফেরার এই চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করেন।
লন্ডনে অবস্থানরত দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, আজকের দিনটি দুটি কারণে বিশেষ। প্রথমত, আজ ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘ প্রায় ১৭ থেকে ১৮ বছর আমি আপনাদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে ছিলাম; কিন্তু মহান আল্লাহর ইচ্ছায় আগামী ২৫ তারিখে আমি দেশে ফিরে যাচ্ছি। তার এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটল এবং দলের নেতাকর্মীদের অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে যাচ্ছে।
দেশে ফেরার প্রাক্কালে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিষয়ে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, সামনের দিনগুলো খুব একটা সহজ হবে না। তবে দলের সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারেন, তাহলেই যাবতীয় পরিকল্পনা সফল করা সম্ভব হবে। ঐক্যের মাধ্যমেই কাঙ্ক্ষিত ও প্রত্যাশিত একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উল্লেখ্য, ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়ার পর থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছিলেন।
দীর্ঘ ১৮ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে আগামী ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে ‘আমার ভাবনায় বাংলাদেশ: জাতীয় রিল মেকিং প্রতিযোগিতা’ নামে অভিনব এক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে দলের নতুন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরেন তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন।
১৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতা চলবে তারেক রহমানের দেশে ফেরার দিন অর্থাৎ ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আগ্রহীদের ১১টি নির্ধারিত থিমের যেকোনো একটি বিষয়ে সর্বোচ্চ ১ মিনিট দৈর্ঘ্যের রিল বা ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। নির্ধারিত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে— ফ্যামিলি কার্ড, কৃষক কার্ড, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, পরিবেশ, আমি যেমন দেশ চাই, ক্রীড়া, ইমাম ও মুয়াজ্জিনের সম্মান, প্রবাসী এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ। ভিডিওর ধরন একক বক্তব্য, স্যাটায়ার, গান, সংলাপ কিংবা অভিনয় হতে পারে।
অংশগ্রহণকারীদের ভিডিওটি ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম বা টিকটকের নিজ নিজ অ্যাকাউন্টে #BangladeshFirst হ্যাশট্যাগ দিয়ে পোস্ট করতে হবে এবং সেটির লিংক বিএনপির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের ইভেন্টে জমা দিতে হবে। প্রতিযোগিতার বিচারকার্যে ৩০ শতাংশ নম্বর জনমতের ভিত্তিতে এবং বাকি ৭০ শতাংশ জুরি বোর্ডের রায়ের ওপর নির্ভর করবে। বিজয়ী সেরা ১০ জন অংশগ্রহণকারী একটি অনুষ্ঠানে তারেক রহমানের সঙ্গে একান্ত আলাপের সুযোগ পাবেন। সংবাদ সম্মেলনে মাহাদী আমিন আরও জানান, গুলশানের এই নতুন কার্যালয়টি মূলত দলের নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হবে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের প্রার্থী শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি মন্তব্য করেছেন যে, স্বাধীনতাবিরোধীরা সাধারণ ক্ষমার মর্যাদা রাখতে পারেনি। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের ঝুমুর এলাকার বিজয় স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তিনি এই মন্তব্য করেন। এ্যানি বলেন, যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল এবং দেশের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত ছিল, স্বাধীনতার পর সাধারণ ক্ষমার আওতায় তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা পেয়েছিল। কিন্তু তারা সেই ক্ষমার সম্মান না দিয়ে বরং তা অবমূল্যায়ন করেছে এবং সুবিধামতো কখনো ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট’দের সঙ্গে আবার কখনো তাদের বিরোধীদের সঙ্গে জোট বেধেছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করে এ্যানি বলেন, কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে জিয়াউর রহমানের ঐতিহাসিক ঘোষণা, মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বদান এবং রণাঙ্গনে সরাসরি অংশগ্রহণ ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা হয়তো প্রশ্নবিদ্ধই থেকে যেত। তিনি জিয়াউর রহমানকে দেশে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপদাতা হিসেবে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি, খালেদা জিয়ার আপোষহীন ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, জিয়ার মৃত্যুর পর তিনি দলের হাল ধরেছেন এবং পরপর তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিয়েছেন। শ্রদ্ধা নিবেদনকালে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাবুদ্দিন সাবু, বাফুফের সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপীসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে রাজধানীর গুলশানে নতুন একটি কার্যালয় উদ্বোধন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যালয়টির উদ্বোধন করা হবে।
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গুলশান-২ এর ১০/সি রোডের ৯০ নম্বর বাড়িটি এখন থেকে দলটির নির্বাচনি কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হবে। উদ্বোধন উপলক্ষে আজ বিকেলে সেখানে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। তবে এই সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্টভাবে কারা উপস্থিত থাকবেন, তা এখনো নিশ্চিত করা হয়নি।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আজ যে অফিসটিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, সেটি মূলত আসন্ন নির্বাচনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে দলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা জেলার নেতাকর্মীরা জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করেন।
দিনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার পর এটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এরপরই বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে বেদিতে গিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান ও সালাহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরীসহ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান মন্তব্য করেছেন যে, একটি নির্দিষ্ট দল মুক্তিযুদ্ধকে নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করত এবং দেশের বাকি জনগণকে দাসে পরিণত করার অপচেষ্টা করেছিল। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব ম্যারাথনের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক নীতির কারণেই এ দেশের মানুষ তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছিল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে এবং তখন দেশের আপামর জনতা স্বাধীনতার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তবে স্বাধীনতার পর তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী জনগণের সঙ্গে করা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়। তিনি অভিযোগ করেন, বহুদলীয় গণতন্ত্র ধ্বংস করে মানুষের মৌলিক মানবাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল এবং রক্ষী বাহিনীর নামে একটি দমনমূলক বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল।
১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিদেশ থেকে আসা ত্রাণ আগেই বিক্রি করে দেওয়ার ফলে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। সে সময় ঢাকায় বিপুল সংখ্যক মানুষের লাশ দাফন করতে হয়েছিল। মূলত সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়ে দেশটিকে শ্মশানে পরিণত করা হয়েছিল।
আওয়ামী লীগের বিগত শাসনামলের কঠোর সমালোচনা করে জামায়াত আমির বলেন, দলটি তিন দফায় ক্ষমতায় এসে জাতিকে কেবল রক্তপাত ও সহিংসতার রাজনীতি উপহার দিয়েছে। ১৯৯৬ সালে ক্ষমা চাওয়ার পর জনগণ তাদের সুযোগ দিলেও ক্ষমতায় গিয়ে তারা পুরনো চরিত্রে ফিরে যায়। ২০০৯ সালের পর থেকে খুন, গুম, ধর্ষণ ও দমন-পীড়নের রাজনীতির কারণেই সংশ্লিষ্টদের আজ দেশ ছাড়তে হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনাগুলোকেও তিনি সেই একই অপরাজনীতির ধারাবাহিকতা বলে অভিহিত করেন।
একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও স্বাধীনতার শত্রুরা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, বাংলাদেশের মুক্তিকামী ও গণতন্ত্রকামী জনতা সব ধরনের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অটুট রাখবে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়েছিল আজকের এই দিনে। তাই এই দিনটি বিএনপির কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তারা শপথ নিয়েছেন যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তাদের সংগ্রাম সর্বদা অব্যাহত থাকবে। একইসঙ্গে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন তিনি।
মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করেন। তিনি বেগম জিয়াকে দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা এবং গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে অভিহিত করেন।
এ সময় মির্জা ফখরুল দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, নির্বাসিত জীবন শেষে আগামী ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমান দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তার এই প্রত্যাবর্তন দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই ও সংগ্রামকে আরও বেগবান করবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনাটি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টির গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গতকাল সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভার্চুয়ালি বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, স্বাধীনতাপ্রিয় ও গণতন্ত্রকামী মানুষকে ভয় দেখিয়ে যারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়, তারা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হবে এবং নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তারেক রহমান বলেন, দীর্ঘ দেড় যুগ পর নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের কাঙ্ক্ষিত তারিখ ঘোষণা করলেও একটি স্বার্থান্বেষী মহল অজুহাত ও শর্ত দিয়ে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে তিনি সেই ষড়যন্ত্রেরই বহিঃপ্রকাশ হিসেবে উল্লেখ করেন। প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করতে তিনি প্রশ্ন তোলেন—বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করলে বা নির্বাচন ছাড়া তাদের ক্ষমতায় রাখলে কারা লাভবান হবে? তিনি মনে করেন, এসব প্রশ্নের উত্তরের মধ্যেই ঘাতক ও গণতন্ত্রের শত্রুরা লুকিয়ে আছে। তবে তিনি আশ্বস্ত করেন যে, একাত্তর, পঁচাত্তর, নব্বই এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে বিজয় সুনিশ্চিত।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ছাড়া স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র টেকসই হতে পারে না। তাই বিএনপির মূল লক্ষ্য হলো একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠা করা। তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে প্রতিটি ঘরে বিজয়ের সুফল পৌঁছে দিয়ে একটি সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং দলের সিনিয়র নেতারা বক্তব্য রাখেন।
এদিকে, দীর্ঘ ১৭ বছর প্রবাস জীবন শেষে আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান। দেশে ফেরার আগে আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) লন্ডনের সিটি প্যাভিলিয়নে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন, যা সম্ভবত প্রবাসে তার শেষ জনসভা হতে যাচ্ছে।