যেকোনো নির্বাচনে যাওয়ার আগে দৃশ্যমান বিচার ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন দেখতে চান বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘শুধু নির্বাচনই নাগরিক পার্টির এই মুহূর্তে একমাত্র দাবি নয়, তার আগে আমরা দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম দেখতে চাই।’
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য নাগরিক পার্টির প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা বলেছি, সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি গণপরিষদ নির্বাচন দেখতে চাই। শুধু নির্বাচনই নাগরিক পার্টির এই মুহূর্তে একমাত্র দাবি নয়, তার আগে আমরা দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম দেখতে চাই।’
‘ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে জুলাই সনদ সই হওয়ার কথা, জনগণ দেখতে পাবে কোন রাজনৈতিক দল সংস্কারের পক্ষে আছে, কোন দল বিপক্ষে আছে—এই জুলাই সনদ আমরা নির্বাচনের আগে কার্যকর দেখতে চাই। ছাত্রদের পক্ষ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্রের যে দাবি উঠেছিল, দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা সেটার বাস্তবায়ন দেখতে চাই।’
সারা দেশে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, জনপরিসরে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার যেন কঠোর অবস্থান নেয়। নারী নিপীড়নকারীদের যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের আওতায় আনা হয়।’
এ সময় আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থায় রয়টার্সে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারটি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, ‘আমি রয়টার্সকে বলেছি, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নির্বাচন কঠিন হবে। তাদের বলি নাই নির্বাচন হবে না।’
‘আমি বলেছিলাম, এখন যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পুলিশ যে রকম নাজুক অবস্থায় আছে, এরকম নাজুক অবস্থায় নির্বাচন করাটা অনেক কঠিন হবে। এই পুলিশ প্রশাসনের সুষ্ঠু নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা দীর্ঘদিনের নেই। তাদের সক্ষমতা পরীক্ষা হয়নি দীর্ঘদিন ধরে। সে জায়গায় আমরা বলেছি, আমাদের অবশ্যই নির্বাচনের আগে যে পুলিশিং ব্যবস্থা আছে, আইনশৃঙ্খলার যে পরিস্থিতি আছে, সেটা অবশ্যই উন্নত করতে হবে। এজন্য সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকে, সামাজিক শক্তিকে এগিয়ে আসতে হবে, সহযোগিতা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘রয়টার্সের ইন্টারভিউতে কিছু মিসকোট হয়েছে। আমি বলেছিলাম যে, আমাদের আর্থিক বিষয়ে সমাজের যে সচ্ছল মানুষ বা শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছেন, তারা মূলত আমাদের সহযোগিতা করে। আমরা একটা ক্রাউড ফান্ডিংয়ের দিকে যাচ্ছি। অনলাইন ও অফলাইন-কেন্দ্রিক। ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে কার্যালয় স্থাপনসহ ইলেকশন ফান্ডিং রিচ করব। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এটা নিয়ে ভুল তথ্য এসেছে। এটা সংশোধনের জন্য অনুরোধ থাকবে।’
এনসিপির কার্যক্রম বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, আমরা এখন রাজনৈতিক নিবন্ধনের শর্তাবলী নিয়ে মনযোগী হচ্ছি। তৃণমূলে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছি। রোজার পর পুরোদমে শুরু করবো। আমরা নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করছি। জোট গঠনের বা নির্বাচনের প্রার্থীর বিষয়ে আমাদের অবস্থান ব্যক্ত করতে আরও সময় লাগবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা নির্বাচনের সময়ের চেয়ে প্রেক্ষাপটকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা আমাদের জায়গা থেকে দাবি জানাচ্ছি। জুলাই সনদ আর জুলাই ঘোষণাপত্র আলাদা জিনিস। ঘোষণাপত্রের দাবি আরও আগে উঠেছিল ছাত্রদের পক্ষ থেকে। আর জুলাই সনদ প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা করছিলেন যে, সংস্কারের ঐকমত্যের ওপর একটা চার্টার তৈরি হবে যেখানে বাংলাদেশের রূপরেখা ও সংস্কারের কী কী এখন করব, কী কী ভবিষ্যতে করব— এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের কাছে কমিটমেন্ট দিতে হবে। সেটাকে আমরা বলছি জুলাই সনদ।’
‘পরিবর্তন ও ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা থেকে মানুষ গণঅভ্যুত্থানে এসেছিল। এই দুইটা পূরণ করতে হবে। সেটা আমি বলেছি যে, আমরা যেন ভুলে না যাই বিচার; সংস্কারের মধ্য দিয়ে যেন আমরা নির্বাচনের দিকে যাই।’
এর আগে, এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন জানান, আগামী ১০ মার্চ রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহিদ পরিবারের সদস্য ও আহতদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করবে দলটি।
তারপর ১১ মার্চ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের পরিকল্পনার কথাও জানান আখতার।
এ সময় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের প্রধান সংগঠক সারজিস আলম, প্রধান সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, একটি রাজনৈতিক দল বিএনপি তথা দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তে নেমেছে। তারা দেশি-বিদেশি মদতপুষ্ট হয়ে এদেশের মানুষকে একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ধর্মীয়ভাবে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আমাদের মা-বোনদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
গতকাল রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যদি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন না করতেন, আর দেশনেত্রী খালেদা জিয়া যদি সেই গণতন্ত্রকে লালন না করতেন, তাহলে আজকের মতো নির্বাচনের সম্ভাবনা কখনোই হতো না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এদেশের মানুষকে এক মিনিটের জন্যও শান্তিতে থাকতে দেননি। গত ১৭ বছরে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে, আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা যে আন্দোলন করেছি—সেই আন্দোলনের সুফল দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।
‘আমরা ভোটের অধিকার আদায় করেছি। এখন ভোট প্রয়োগের সময় এসেছে। আগামী যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেই নির্বাচনে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন—সবার প্রতি এই আহ্বান থাকবে। কারণ, খালেদা জিয়ার হাতেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিরাপদ ছিল, বিএনপির হাতেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব নিরাপদ ছিল।’
মির্জা আব্বাস বলেন, আমার নেত্রী যে গণতন্ত্রের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন, সেই গণতন্ত্রকে অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগ গত ১৭ বছর দুঃশাসন চালিয়েছে। এখন যখন আবারও আমরা গণতন্ত্রের স্বাদ পেতে শুরু করেছি—ঠিক সেই সময় আরেকটি রাজনৈতিক দল বিএনপির বিরুদ্ধে তথা দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।
‘তারা দেশি-বিদেশি মদতপুষ্ট হয়ে এদেশের মানুষকে একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা ধর্মীয়ভাবে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তারা আমাদের মা-বোনদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে’— যোগ করেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়া জেলখানায় অপচিকিৎসার শিকার হয়ে আজ অসুস্থ। অথচ তাকে আজ জাতির সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি যদি মাথাচাড়া দেয় তাহলে ফ্যাসিবাদের চেয়ে তারা ভয়ঙ্কর হবে। এরা ধর্মে ধর্মে বিভেদ তৈরি করে। এদেশের মানুষ ধর্মমনা হলেও ধর্মান্ধ নয়।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও ওই আদেশের উপর গণভোট আয়োজনসহ ৫ দফা দাবিতে ৮ দলের উদ্যোগে ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে রোববার রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, আগামীর সংসদ হবে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত সংসদ। চাঁদাবাজদের প্রতিহত করব ইনশাআল্লাহ। অতীতে যারা চাঁদাবাজি করেছে, তাদের আর খাওয়া নাই। আগামীর সংসদ হবে কোরানের সংসদ। আগামীতে সচিবালয় চলবে সংসদ চলবে বিচারালয় চলবে কোরান দিয়ে। সবকিছু চলবে কোরান দিয়ে।
সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ৮ দলের জোট নতুন জাগরণ তৈরি হয়েছে। অবশ্যই জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। সরকার একইদিনে গণভোটের সিদ্ধান্ত কারও কুপরামর্শে করেছে।
এ সময় সমাবেশের সভাপতি সহকারী সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জুলাই বিপ্লব কোনো একক দলের নেতৃত্বে হয়নি। কিন্তু এই সরকার একটি দলের পকেটে ঢুকে যাচ্ছে। আমরা বলব, নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করুন। গণভোট আগে হতে হবে। ষড়যন্ত্র চলছে। যথাসময়ে নির্বাচন হতে হবে। গণভোট আগে দিতে হবে। গণহত্যার বিচার করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হবে।
রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি ও সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ইমাজ উদ্দিন মণ্ডল ও মুফতি ইমরানের যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি শেখ মো. নুরুন্নবী, বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি শেখ মো. সালাউদ্দিন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ রোকনুজ্জামান রোকন, জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগরীর আমির ড. মাওলানা কেরামত আলী, নায়েবে আমির ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, রাকসুর ভিপি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারণে পূর্বঘোষিত বিজয় দিবসের কর্মসূচি স্থগিত করেছে বিএনপি।
রোববার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় বিজয় দিবসের গৃহীত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
জনগণের কাছে দোয়া কামনা করেছেন তিনি।
তিনি আরও জানান, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত। বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে তার মেডিকেল বোর্ড এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।
এর আগে শনিবার (২৯ নভেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আজকের অসুস্থতা স্বাভাবিক অসুস্থতা নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতির শিকার হয়ে তিনি এমন অসুস্থ হয়েছেন।
গতকাল শনিবার বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত রূপসী বাংলা আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান-২০২৫ এ তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, আমি সবসময় কারা কর্মকর্তাদের থেকে সতর্ক থেকেছি। কারণ, কারাগারে স্লো পয়জন দেওয়া হয়। ভারতীয় একজন সাংবাদিক ঢাকায় এসেছিল। যখন আমার সঙ্গে দেখা হয় উনি বললেন, আমরা কী নিয়ে লাফালাফি করতেছি, উনি তো বাঁচবেন না দুই বছর। আমি বললাম কেন? তিনি বললেন, ওভাবেই ডিজাইন করা আছে। অর্থাৎ এমন করে ডিজাইন করা হয়েছে, উনি ধীরে ধীরে মৃত্যুবরণ করবেন। আল্লাহর রহমত, এখন পর্যন্ত তিনি বেঁচে আছেন। আমরা আল্লাহর কাছে তার সুস্থতা কামনা করব।
তিনি বলেন, বুধবার রাত একটার সময় নেত্রীকে দেখতে গিয়েছিলাম। সেখানে এক ঘণ্টার মতো ছিলাম। আজকে যে খবরটা জানলাম, উনি আগের চেয়ে ভালো আছেন। আল্লাহ তাকে সুস্থ করে তুলবেন, এ কামনা করি।
নির্বাচন নিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে যারা দেশের বাইরে থেকে চক্রান্ত করছে, তারা দেশটাকে বছরের পর বছর দখল করে রেখেছিল। তারা দেশটাকে একেবারে শেষ করে দিয়ে গেছে। তারা এখন বিদেশে বসে বক্তব্য দিচ্ছে, আওয়ামী লীগকে ছাড়া নির্বাচন হবে না। আপনারা বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন করেন নাই? সুতরাং নির্বাচন বাংলাদেশে হবেই। এই ফেব্রুয়ারিতেই হবে, এতে কোনো ভুল নাই।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম মহসীন, সাবেক সভাপতি এ বি এম রফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক বাবুল তালুকদার, রূপসী বাংলা-২০২৫ আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতার আহ্বায়ক নাসিম শিকদার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম প্রমুখ।
রূপসী বাংলা-২০২৫ আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন এম হায়দার আলী (চট্টগ্রাম), দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন শামসুল হক রিপন (ঢাকা) এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এম রাশেদ (চট্টগ্রাম)।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের দপ্তর সম্পাদক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড সিবগাতুল্লাহ সিবগা বলেছেন, দেশে মানুষের চাওয়া–পাওয়া খুবই অল্প, কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এক শ্রেণির নেতা-কর্মী চাঁদাবাজিকে একটি সিস্টেম হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। কৃষকের পণ্য, মিল-ফ্যাক্টরি—সবখানেই তাদের আধিপত্য। এই চাঁদাবাজির কারণে দেশের জীবনে বরকত নষ্ট হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। শুক্রবার সকালে গাজীপুরের কালীগঞ্জ আর আর এন পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘যুব সমাবেশ ২০২৫’-এ প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সিবগাতুল্লাহ সিবগা বলেন, ‘অন্যের সম্পদ ও অধিকার ভক্ষণ করা আগুন ভক্ষণ করার চেয়েও ভয়ঙ্কর। স্বাধীনতার পর বারবার ভোট দিয়েছি—চিন্তা করেছি, হয়তো পরিবর্তন আসবে। কিন্তু যারা নিজেদের দলের দুর্নীতি রুখতে পারে না, তারা জনগণের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে না। সময় বদলেছে, এখন আমরা হজরত ওমরের মতো যোগ্য নেতাকে ভোট দিবো, ইনশাআল্লাহ।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কালীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. আফতাব উদ্দিন এবং সঞ্চালনায় ছিলেন উপজেলা সেক্রেটারি মো. তাজুল ইসলাম।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। অনুষ্ঠানে গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও গাজীপুর মহানগরের নায়েবে আমীর মো. খায়রুল হাসান কালীগঞ্জের উন্নয়ন নিয়ে একটি বিস্তারিত রূপকল্প উপস্থাপন করেন। তিনি রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে ‘সেক্টর ভিত্তিক উন্নয়ন কমিটি’ গঠনের ঘোষণা দেন, যেখানে সৎ ও দক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয় করে স্থানীয় উন্নয়নকে দ্রুততর করার পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গাজীপুর মহানগর আমীর অধ্যাপক মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন, গাজীপুর জেলা আমীর ও গাজীপুর-৩ আসনের প্রার্থী ড. মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, গবেষক আলী আহমাদ মাবরুর (শহীদ আলী আহসান মুজাহিদের পুত্র), গাজীপুর-৪ আসনের প্রার্থী মো. সালাহ উদ্দিন আইউবী, গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শামসুল হক ভূঁইয়া প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল কালীগঞ্জ উপজেলার প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে থানা গেটের সামনে এসে শেষ হয়।
চট্টগ্রাম–৪ (সীতাকুণ্ড, আকবর শাহ, পাহাড়তলী ও খুলশী আংশিক) আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন টানা গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিদিনই কখনো বাঁশবাড়িয়া, কখনো কুমিরা কখনো সোনাইছড়ি, কখনো সৈয়দপুর, কখনো মুরাদপুর কখনো সীতাকুণ্ড পৌরসদর, কখনো পাড়া–মহল্লা, কখনো বাজারপাড়া-যেখানেই মানুষ আছে, সেখানেই তিনি উপস্থিত।
শুক্রবার তিনি বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডজুড়ে গণসংযোগ করেন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষের খোঁজখবর নেন, তাদের সমস্যা শোনেন, আর বদলের প্রত্যাশা নিয়ে আলোচনা করেন।
বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল এবং অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতারা তার সঙ্গে সারাদিন মাঠে ছিলেন। এলাকাজুড়ে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি আর সাধারণ মানুষের আগ্রহ পুরো পরিবেশকে সরব করে তুলেছে।
গণসংযোগ চলাকালে মানুষের মুখে উঠে আসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক দাম, কর্মসংস্থানের অভাব, নিরাপত্তাহীনতা, কৃষক–জেলে–শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের দুর্দশা।
কাজী সালাউদ্দিন তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং বলেন, এই এলাকার উন্নয়ন, ন্যায্য অধিকার আর ভরসার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার জন্যই আমি মাঠে আছি। গণসংযোগে ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। এলাকাজুড়ে ব্যানার, লিফলেট আর হ্যান্ড মাইকে প্রচারণা মানুষের আগ্রহ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। কাজী সালাউদ্দিন জানান, এই এলাকার রাস্তা, ড্রেনেজ, স্বাস্থ্যসেবা, জীবনমান-সবকিছুতেই নতুনভাবে কাজ প্রয়োজন। তাই মানুষ পরিবর্তন চায়।
সংবিধান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাঠে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করে চলেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
দলটি মনে করে, দেশের জনগণ গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিল, সেই রাষ্ট্রের মালিকানা তাদের হাতে নেই। কর্তৃত্ববাদী সরকার রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। এই রাষ্ট্র মেরামত ও পুনর্গঠন করতে হবে। দেশের জনগণের হাতেই দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। সেই নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে ১৮ মাসের মধ্যে এক কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শিক্ষিত বেকারদের জন্য এক বছরের ভাতা চালুর অঙ্গীকার রয়েছে দলটির।
বিএনপি সূত্র জানায়, এবার তরুণ ভোটারদের অগ্রাধিকার দিয়ে প্রচারণা চালাবে দলটি। সেই লক্ষ্যে ‘তারুণ্যের প্রথম ভোট ধানের শীষের পক্ষে হোক’ স্লোগান বেছে নেওয়া হয়েছে।
দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, দেশের সব জনগোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে বিএনপি তাদের প্রচারণায় খাদ্য সহায়তার জন্য ফ্যামিলি কার্ড, বীজ–সার ও অন্য সহায়তার জন্য কৃষক কার্ড এবং চিকিৎসা কার্ড চালুর পরিকল্পনার কথা তুলে ধরবে।
নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা, সমান সুযোগ ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করার অঙ্গীকারও বিএনপির প্রচারণার অন্যতম প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হবে বলে তারা যোগ করেন।
গত সোমবার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব আলোচনা হয়। শীর্ষ নেতারা দলের সম্ভাব্য প্রচারণা কৌশল নিয়ে এই বৈঠকে পর্যালোচনা করেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোটারদের আচরণ বিশ্লেষণ ও তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দিকনির্দেশনা দিতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করা হয়েছে।
দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, সাতটি প্রধান ইস্যুকে কেন্দ্র করে ঘরে ঘরে গিয়ে সরাসরি ভোটারদের কাছে প্রতিশ্রুতি তুলে ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।
দলীয় নেতারা জানান, খাতগুলো হলো- জলবায়ু ও পরিবেশ সুরক্ষা, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, কৃষি, নারী ক্ষমতায়ন, ক্রীড়া ও ধর্মীয় বিষয়। নির্বাচনী প্রচারণার এই অঙ্গীকার তালিকা দলের ৩১ দফা সংস্কার পরিকল্পনার ভিত্তিতে করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েকটি দল শিগগিরই মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ক্ষমতায় গেলে বাস্তবায়নযোগ্য বেশ কয়েকটি প্রতিশ্রুতি বিএনপির লিফলেটে তুলে ধরা হবে। এর মধ্যে রয়েছে পরিবেশ সুরক্ষা, ৫০ লাখ ফ্যামিলি কার্ড চালু, পাঁচ বছরে পাঁচ কোটি গাছ রোপণ এবং গুরুত্বপূর্ণ খাতে চাঁদাবাজি–দুর্নীতি দমনে বিশেষ উদ্যোগ।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) মডেল অনুসরণ করে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ার পরিকল্পনাও প্রচারণায় তুলে ধরবে দলটি।
জলবায়ু ও পানি নিরাপত্তা ইস্যুতে ২০ হাজার কিলোমিটার নদী–খাল পুনরুদ্ধার, কমিউনিটিভিত্তিক সেচ ব্যবস্থা পুনরায় চালু এবং আধুনিক তিস্তা ও গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি থাকবে।
আর্থিক সংকটে থাকা ইমাম-মুয়াজ্জিনদের মাসিক ভাতা প্রদান এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উদ্বেগ নিরসনে বাড়তি উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।
ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা খাতে বড় ধরনের সংস্কার আনা হবে। স্কুলপর্যায়ের পাঠ্যক্রমে ক্রীড়া, শিল্প–সংস্কৃতি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং শিক্ষার্থীদের ক্ষুদ্রশিল্প স্থাপনে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে।
দলীয় সূত্র জানায়, শীর্ষ নেতারা এখন নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় বেশি সময় দিচ্ছেন, দুর্বলতা চিহ্নিত করছেন এবং ভোটের আগে সেগুলো সমাধানে কাজ করছেন। পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণ, ব্যাকআপ এজেন্ট প্রস্তুত এবং ৩১ দফা প্রতিশ্রুতি ও রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা তুলে ধরে ব্যানার–ফেস্টুন–বিলবোর্ড টাঙাচ্ছেন।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর তত্ত্বাবধানে মূলধারার গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও তৃণমূলে প্রচারণা জোরদারে সমন্বিত কৌশল গ্রহণ করেছে বিএনপি। সাত সদস্যবিশিষ্ট সাতটি দল গঠন করা হবে, প্রতিটির জন্য আলাদা নেতা থাকবেন।
‘আমাকে যারা চিনেনি তারা এখনও মাটির নিচে বসবাস করে’ এমন বক্তব্য দিয়ে আবারো আলোচনায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহাজাহান চৌধুরী। তার এ বক্তব্য ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেখানে তাকে বলতে দেখা যায়, আল্লাহর ওয়াস্তে বাড়াবাড়ি করিয়েন না। আমার নাম শাহজাহান চৌধুরী। আমি শুনতেছি, অনেক জনে নাকি উল্টাপাল্টা বলতেছে; খবরদার, খবরদার, খবরদার। আমার নাম শাহজাহান চৌধুরী। আমাকে যারা চিনেনি তারা এখনও মাটির নিচে বসবাস করে। আমি চোখ তুলে দেখতেছি, আমার জন্য আল্লাহ আছে। আল্লাহ মেহেরবানি, আমার জন্য সূর্য দাঁড়িয়ে থাকবে। আল্লাহ তায়ালা আমাকে এরকম মর্যাদা দিয়েছেন।’
চট্টগ্রাম জামায়াতের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন, গত ১৩ নভেম্বর সাতকানিয়া উপজেলার চরতি ইউনিয়নের তুলাতলী এলাকায় গণসংযোগকালে শাহজাহান চৌধুরী এই বক্তব্য দিয়েছিলেন। তবে সম্প্রতি বক্তব্যের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চট্টগ্রামে আবারও সমালোচনা শুরু হয়।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে শাহজাহান চৌধুরী আরও বলেন, সেজন্য বলে যাচ্ছি, চুদুর বুদুর (উল্টাপাল্টা) করিও না। লুলা (অবশ) হয়ে যাবে। আমি যদি চোখের পানি ফেলি, লুলা হয়ে যাবে। আমি অনেক কষ্ট পয়েছি। ১৮ বছরের মধ্যে ৯ বছর জেল খেটেছি। আমি টাকা-পয়সা চাই নাই, ধনদৌলত, কাপড়চোপড়, পরিবারকে চাইনি। আমি আপনাদের দুয়ারে আজকে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, আপনারা দোয়া করবেন। মেহেরবানি করে দোয়া করবেন। আমার চোখের পানি বৃথা যায়নি। এই চরতী আমার শায়েখ, ওস্তাদ মাওলানা মমিনুল হক চৌধুরীর জন্মস্থান। আমি এলাকাকে সম্মান করি, এই এলাকার মাটিকে সম্মান করি। এখানে কোন রাজনীতি নাই। এখানো আর কোনো মার্কা নাই, সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার মার্কা একটা, সেটা হলো দাঁড়িপাল্লা।
উল্লেখ্য, শাহজাহান চৌধুরী আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থেকে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের মনোনীত প্রার্থী।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা উন্নতির দিকে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় তত্ত্বাবধানে কেবিনে তার চিকিৎসা চলছে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এখন শঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে।
বিএনপির চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা উন্নতির দিকে।
চেয়ারপার্সনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের বরাতে তিনি আরও জানান, মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে।
বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ম্যাডাম যে সমস্যায় (ফুসফুসের ইনফেকশন) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, সেই জায়গাটা এখনও স্থিতিশীল আছে। ওনার চিকিৎসায় দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে যে মেডিকেল বোর্ড গঠিত হয়েছিল, তাদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে। তাদের সঙ্গে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সহধর্মিণী ডা. জোবায়দা রহমান সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন।
তিনি আরও বলেন, অতীতের দুঃসময়ে অনেক বাধা সত্ত্বেও মেডিকেল বোর্ডের যে চিকিৎসকরা ম্যাডামের চিকিৎসা করেছিলেন, তারাই এখনও দিনরাত পরিশ্রম করে ম্যাডামের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে, বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, লন্ডন থেকে ছেলে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন। এছাড়া ঢাকায় খালেদা জিয়ার পাশে আছেন ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান।
গত রোববার রাত ৮টায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে। তিনি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। কিছুদিন পরপরই নানা জটিলতায় তাকে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে।
গত ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসার জন্য ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থান শেষে গত ৬ মে দেশে ফেরেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১ আসনসহ মোট ৩টি আসনে লড়বেন তিনি।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আসন থেকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন ড. ফয়জুল হক। বুধবার সকালে জেলা জামায়াতের আমীর অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরপর দুপুর দেরটায় পৌর শহরের একটি রেস্তরায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ড. ফয়জুল হকের প্রার্থীতা চূড়ান্তের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়া হয়।
মনোনয়ন ঘোষণাকালে সংবাদ সম্মেলনে দলটির জেলা আমীর অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঝালকাঠি-১ আসনে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ড. ফয়জুল হক আজ থেকে দাড়িপাল্লা প্রতীকের ছবি তার প্রচার কাজে ব্যাবহার করতে পারবেন।’
জামায়াত ইসলামী মনোনীত ঝালকাঠি-১ আসনের এই প্রার্থী হলেন ঝালকাঠি নেছারাদাদ কমপ্লেক্সের প্রতিষ্ঠাতা ওলীয়ে কামেল হযরত কায়েদ সাহেব হুজুরের নাতি। তিনি বিশিষ্ট আলেম মাওলানা মুজ্জাম্মিলুল হক রাজাপুরী হুজুরের সন্তান। তিনি ১৯৮৭ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পশ্চিম চাড়াখালী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
ড. ফয়জুল হক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে বিএ ও এমএ পাশ করেছেন। পরবর্তীতে তিনি ২০১৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি, মালয়েশিয়া থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ২০২৩ সালে পোস্ট-ডক্টোরাল ফেলোশিপ অর্জন করেছেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীতা ঘোষণার পর গণমাধ্যম কর্মীদের নানা প্রশ্নের জবাবে ড. ফয়জুল বলেছেন, ‘দাড়িপাল্লার মনোনয়ন পেয়ে আমি আনন্দিত। আমি বিশ্বাস করি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাড়িপাল্লা ও জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে ডা. শফিকুর রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন। জনগণ সত্যের পক্ষে ভোট দেবে।’
পরিশেষে দাড়িপাল্লায় ভোট চেয়ে তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর আমীর ড. শফিকুর রহমান ও সকল আলেম-ওলামা, পীর মাসায়েক, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কৃষক ও শ্রমিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ প্রকাশ করেন।’
সংবাদ সম্মেলনে দলটির জেলা শাখার নেতারা ও বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং কুমিল্লার উন্নয়ন অভিমুখী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জনগণের হাতে পৌঁছে দিতে কুমিল্লায় বর্ণাঢ্য মিছিল ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকেলে নগরীর বিভিন্ন সড়কে হাজী ইয়াছিনের সমর্থকদের উদ্যোগে এ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি সম্পন্ন হয়।
মিছিলটি কান্দিরপাড়, টাউন হলসহ আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মী ছাড়াও তরুণ ভোটার, ব্যবসায়ী ও সাধারণ নাগরিকদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য।
কর্মসূচির আয়োজকরা জানান, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা, স্বচ্ছ নির্বাচন, প্রশাসনিক জবাবদিহিতা এবং মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধার-এই চার ভিত্তির ওপরই রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা গঠিত। এই দফাগুলো বাস্তবায়ন ছাড়া দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন সম্ভব নয়।
লিফলেট বিতরণের সময় বক্তারা বলেন, হাজী ইয়াছিন একজন সৎ, পরিচ্ছন্ন ও জনগণের প্রতিনিধি। তিনি নির্বাচিত হলে কুমিল্লায় উন্নয়ন, ন্যায়বিচার ও মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।
কর্মসূচির পুরো সময়জুড়ে স্বেচ্ছাসেবকদের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। পথচারী, দোকানদার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও কর্মসূচি নিয়ে উৎসাহ পরিলক্ষিত হয়।
ইতোমধ্যে কুমিল্লা-৬ আসনে হাজী ইয়াছিনের গণসংযোগ আরও জোরদার হয়েছে বলে সমর্থকরা জানান। তারা মনে করছেন, ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কারই দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ তৈরি করবে। উপস্থিত ছিলেন যারা মিছিলে অংশ নেন কুমিল্লা মহানগর, সদর দক্ষিণ ও আদর্শ সদর উপজেলার বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
বর্ষীয়ান বিএনপি নেতা ও সদর দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এস এ বারী সেলিম কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদুল্লাহ রতন, মাহাবুবর রহমান দুলাল, আতাউর রহমান ছুটি মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য মুজিবুর রহমান কামাল সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম রায়হান কুমিল্লা মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব রোমান হাসান, ১ম যুগ্ম আহ্বায়কসহ অন্যান্যরা।
জাতীয় নির্বাচনের জন্য বিএনপি পুরোপুরি প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী জানান, বিএনপির নির্বাচনের প্রস্তুতি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তপশিল ঘোষণার পর প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত প্রস্তুতিও নেওয়া হবে। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।
বিএনপির এই নেতা বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোটও একই দিনে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত- এটাই দেশের মানুষের প্রত্যাশা।
ধর্মকে অতিরিক্ত ব্যবহার করে রাজনীতি করা অনুচিত উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ধর্মীয় অপব্যাখ্যার ওপর ভিত্তি করে যারা রাজনীতি করছেন, তাদের ব্যাপারে জনগণই রায় দেবে। অতিরিক্ত ধর্মীয় ব্যবহার রাজনীতির জন্য ক্ষতিকর বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রসঙ্গে রিজভী জানান, বর্তমানে বিরোধিতা করলেও ভবিষ্যতে অনেক দলই বিএনপির অংশ হতে পারে।
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সমন্বয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ হতে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল রাজধানীর আবু সায়ীদ কনভেনশন হলে জোটের আত্মপ্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে।
সূত্র জানায়, নতুন এই রাজনৈতিক জোটে থাকছে এবি পার্টি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, আপ বাংলাদেশ।
এই জোটে যুক্ত হতে পারে গণঅধিকার পরিষদ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)।
জোটের সম্ভাব্য শরিক দলগুলোর সূত্র জানিয়েছে, এই জোট হবে নির্বাচনি, আদর্শিক নয়। এই জোট বিএনপির জোট বা জামায়াতসহ আট দলের সঙ্গে নির্বাচনি সমঝোতা করতে পারে। তবে আপাতত একাই থাকবে। জোট বা নির্বাচনি সমঝোতার সিদ্ধান্ত হবে তফসিলের পর। নতুন জোট সংস্কারের জন্য অর্থাৎ গণভোটে হ্যাঁ-এর পক্ষে থাকবে।
এবি পার্টির একজন যুগ্ম আহ্বায়ক আমার দেশকে জানান, নতুন এই রাজনৈতিক জোটে কেউ প্রধান থাকবে না। এখানে সবাই সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকবে।