বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘বরং বিএনপি সংস্কারেরই দল, তবে সবকিছুর মূলে জনগণ। জনগণের সম্মতিতে যেন সব হয়।’
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির আলোচনার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘আমরা গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয়, বিএনপি সংস্কারেরই দল। কিন্তু কেউ কেউ নানান কথা বলেন। তারা যখন সংস্কারের দন্তস্য উচ্চারণ করেননি, তখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন।’
সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে শুরু হয়েছে।
গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ আন্দোলন–সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের সামনে আরেকবার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, আমরা তা কাজে লাগাতে চাই। আমরা এই কমিশনকে সহযোগিতা করছি, এই সরকারকে সহযোগিতা করছি, সেই প্রত্যাশা নিয়েই।’
যদি ঐকমত্য কমিশনের কোনো সনদ না-ও হয়, বিএনপির জন্য সংস্কারের সনদ রয়েছে বলে জানান নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, সবকিছুর মূলে জনগণ এবং জনগণের সম্মতিতে যেন সব হয়। তিনি আরও বলেন, ‘আর জনগণ কার মাধ্যমে সম্মতি জানায়, তা আমরা জানি।’
আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ,আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক সচিব নিরুজ্জামান খান অংশ নেন।
আজ দিনব্যাপী এই আলোচনা চলতে পারে বলে ঐক্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে। আজ আলোচনা শেষ না হলে প্রয়োজনে আগামী সপ্তাহে আবারও বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসবে কমিশন।
কোরআন ও সুন্নাহর বিপরীতে বাংলাদেশে কোনো কানুন (আইন) করা হবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। যদি আগে এই ধরনের আইন করা হয়ে থাকে, সেটি বাতিল করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সম্মিলিত ইমাম খতিব পরিষদ আয়োজিত জাতীয় সম্মেলনে সালাহউদ্দিন আহমদ এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ যুক্ত করেছিলেন। তবে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী সেটি সংবিধান থেকে উচ্ছেদ করে দিয়েছিল। এটি আবার পুনর্বহাল করা হবে।
সম্মেলনে ইমাম ও খতিবদের পক্ষ থেকে সাতটি দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে একটি হলো উপযুক্ত প্রমাণ ও তদন্ত ছাড়া কোনো ইমাম-খতিব ও আলেমকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা যাবে না।
বিষয়টির উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, উপযুক্ত তথ্য–প্রমাণ ছাড়া, প্রাথমিক তদন্ত ছাড়া রাষ্ট্রের কোনো নাগরিককে গ্রেপ্তার করা যায় না। কিন্তু বিগত সময়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী অবৈধ সরকার দাড়ি-টুপির বিরুদ্ধে ছিল, আলেমবিদ্বেষী ছিল, তারা যে কাউকে ধরে নিয়ে এসে জঙ্গি বানানোর নাটক করত। সেই বাংলাদেশ এখন নেই। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নবযাত্রা শুরু হয়েছে। এই দেশে আইনকানুনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোনো বেআইনি কাজ কাউকে করতে দেওয়া হবে না।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বিএনপি মদিনার ইসলামে বিশ্বাস করে এবং বাংলাদেশে যত ফিরকা-ফেতনা আছে, এগুলোর অবসান চায়। অবশ্যই সম্মিলিতভাবে ইমাম-খতিবরা সেভাবে কাজ করবেন। মসজিদে যেন দুনিয়ার কোনো কার্যক্রমকে প্রশ্রয় দেওয়া না হয়। সেটি তাদের খেয়াল রাখতে হবে। মসজিদ, ইমাম, খতিবদের যাতে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা হয়। রাজনৈতিক চর্চার জন্য বহু কেন্দ্র আছে, যাতে কোনো বিতর্ক না হয়, সেটা ইমাম-খতিবদের খেয়াল রাখতে হবে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। আরও বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজি, হেফাজত নেতা জুনায়েদ আল হাবিব প্রমুখ।
সম্মেলনে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন মাওলানা আজহারুল ইসলাম। এগুলো হলো সব ধর্মের প্রতি সহিষ্ণু হয়ে ইসলামি শরিয়াহকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে; রাষ্ট্রের জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে ইমাম-খতিবদের অংশগ্রহণের পাশাপাশি প্রতিটি জেলা, বিভাগীয় এবং থানা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটিতে ইমাম-খতিবদের সম্পৃক্ত করতে হবে; মসজিদ, মাদ্রাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ ও পানির বিল মওকুফ করতে হবে; দেশের সব মসজিদের ইমামদের জন্য সার্ভিস রোল-নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে এবং মসজিদ কমিটিতে সম্মানজনক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; উপযুক্ত প্রমাণ ও তদন্ত ছাড়া কোনো ইমাম-খতিব ও আলেমকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা যাবে না; সরকার স্বীকৃত দাওরায়ে হাদিসের সনদপ্রাপ্ত আলেমদের সরকারি মসজিদে ইমাম-খতিব নিয়োগ ও স্কুল-কলেজে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ এবং কাজি নিয়োগে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং ইমাম-খতিবগণ কর্তৃক সমাজ সংস্কারমূলক কার্যক্রম, যেমন: মাদক ও যৌতুক নিরোধ, সুদ, ঘুষ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনে নিরুৎসাহিত করা এবং পারিবারিক ঐতিহ্য ও সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষামূলক প্রভৃতি কার্যক্রমের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে এবং এ জন্য সম্মানজনক ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন তারা এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কোনো ধরনের ক্ষমতার জন্য, আসনের জন্য তারা কারও সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতা করবেন না। তারা যদি একটি আসনও না পান, এনসিপি তার আদর্শ, নীতি ও লক্ষ্যে অটুট থাকবে।
রোববার রাজধানীর শাহবাগের শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ৬ থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রি শেষে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকে এনসিপির কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। সংবাদ সম্মেলনের পর একই সেন্টারে ৩০০ আসনের জন্য দলটির মনোনয়নপত্র নেওয়া ১ হাজার ৪৮৪ জন প্রার্থীর সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করে এনসিপি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তাদের দল নিয়ে অনেক ধরনের গুঞ্জন, অনেক ধরনের মিথ্যা সংবাদ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে এনসিপিকে একদিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তারা পরিষ্কারভাবে বলেছেন, তারা এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা তাদের নিজেদের রাজনীতি নিয়ে জনগণের কাছে যেতে চান। তবে তাদের নির্বাচনী ইশতেহার, বিভিন্ন দাবি ও নীতি-আদর্শের সঙ্গে যদি কোনো দল বা শক্তি ঐকমত্য পোষণ করে, তাহলে তাদের সঙ্গে আলোচনা থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে তারা ওপেন (উন্মুক্ত) রয়েছেন। তাদের কোনো ধরনের রাজনৈতিক সমঝোতা যদি হয়, সেটা একটা নীতিগত ও আদর্শিক জায়গা থেকে হতে হবে। কোনো ধরনের ক্ষমতার জন্য, আসনের জন্য তারা কারও সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতা করবেন না। তারা যদি একটি আসনও না পান, এনসিপি তার আদর্শ, নীতি ও লক্ষ্যে অটুট থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি কারও সঙ্গে কোনো ধরনের জোট বা আলোচনায় যাই, আমরা খুবই খোলামেলাভাবে সেটা নিয়ে কথা বলতে প্রস্তুত। দেশবাসীর কাছে আমরা বলব, এখানে কোনো গোপন কিছু নেই। কিন্তু একধরনের মিডিয়া ট্রায়াল করা হচ্ছে—এর সঙ্গে আলোচনা বা ওর সঙ্গে আলোচনা। আমাদের মধ্যে যত মতবিরোধ থাকুক না কেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করছে, বিভিন্ন প্রোগ্রামে যাচ্ছে, আলোচনা করছে। ইন্টারনাল (অভ্যন্তরীণ), ইনফরমাল (অনানুষ্ঠানিক) নানা আলোচনায় আমরা অংশগ্রহণ করছি। এটাই একটা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অংশ। সে ধরনের আলোচনাকে একটাভাবে ফ্রেমিং করার চেষ্টা যাতে গণমাধ্যমের মাধ্যমে না করা হয়, সে জন্য গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ রইল।’
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর দিকে ইঙ্গিত করে নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই সনদকে দর-কষাকষি করে বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এখন মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। একসময় তারা বন্ধু ছিল। তারা একটা চক্রান্ত করছে। একটা ভাগ-বাঁটোয়ারার সাজানো নির্বাচন, একটা সমঝোতার নির্বাচন করার পরিকল্পনা তারা করছে। এ ধরনের নির্বাচন হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশের যে নতুন সম্ভাবনা, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে নতুন রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, সেটা ব্যর্থ হবে। এনসিপি এ ধরনের সমঝোতা বা বন্দোবস্তের নির্বাচনে কখনোই সায় দেবে না। বরং তারা এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।
ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে আগামী নির্বাচনে আলেম-ওলামাদের দোয়া ও সমর্থন চেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনায় বিএনপির মূলমন্ত্র হবে ন্যায়পরায়ণতা। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)–এর ন্যায়পরায়ণতার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে একটি ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনে বিএনপি দেশের সব ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিন, আলেম-ওলামা মাশায়েখের দোয়া ও সমর্থন চায়।
রোববার বিকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সম্মিলিত ইমাম খতিব পরিষদ আয়োজিত জাতীয় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন তারেক রহমান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দীর্ঘ দেড় দশকের তাবেদারি শাসন-শোষণের মাধ্যমে আরও একবার প্রমাণিত হয়েছে, ইমান, ইসলাম এবং দেশের স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হলে ঐক্যের বিকল্প নেই। তাই দেশ ও জনগণের স্বাধীনতা সুসংহত করার জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি এমন একটি কল্যাণমূলক সমাজব্যবস্থার পক্ষে, যেখানে মুসলমানরা নিঃসংকোচে কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী নিজেদের জীবন পরিচালনা করতে পারবে। নির্ভয়ে, নিরাপদে ইবাদত করতে পারবে। একইভাবে অন্য ধর্মের মানুষেরা নিরাপদে, নিশ্চিন্তে যার যার ধর্ম ও সংস্কৃতি পালন করতে সক্ষম হবে।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি মনে করে, সমাজ সংস্কারকের ভূমিকা পালনকারী ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিনদের মধ্যে যারা আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন, তাদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এমন বাস্তবতায় তাদের মধ্যে যারা আর্থিক টানাপোড়েনে আছেন, তাদের প্রতি মাসে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্মানী ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির।
বিএনপি ইসলামের মূলনীতি কিংবা মৌলিক বিশ্বাসের সঙ্গে কখনো আপস করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না বলেও উল্লেখ করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
তারেক রহমান বলেন, লাখ লাখ মসজিদ, মাদ্রাসা, ইমাম, মুয়াজ্জিন, মাদ্রাসাশিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রীয় অগ্রগতিমূলক কার্যক্রমের বাইরে রেখে দেশে কখনোই টেকসই উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। এই বাস্তবতা থেকে বিএনপি আগামী দিনের কর্মসূচিতে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
তারেক রহমান আরও বলেন, বিএনপি মনে করে, সমাজ সংস্কারকের ভূমিকা পালনকারী ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিনদের মধ্যে যারা আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন, তাদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এমন বাস্তবতায় তাদের মধ্যে যারা আর্থিক টানাপড়েনে আছেন, তাদের প্রতি মাসে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্মানী ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। ক্ষমতায় যেতে পারলে ইমাম, মুয়াজ্জিনদের সম্মানী দেওয়ার পরিকল্পনা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। একই সঙ্গে ইমাম–মুয়াজ্জিনদের আর্থিকভাবে আরও স্বাবলম্বী করার জন্য ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টকে শক্তিশালী করে বহুমুখী প্রকল্প গ্রহণ করার চিন্তা রয়েছে বিএনপির।
ইমাম-খতিব পরিষদের দাবির বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বেশ কয়েকটি দাবি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পূরণ করার সব রকম সুযোগ রয়েছে। ইমাম-খতিব–মুয়াজ্জিনদের জন্য সার্ভিস রুল (চাকরিবিধি) প্রণয়নের দাবিটি অত্যন্ত যৌক্তিক। অনেক মসজিদে মসজিদ কমিটির ইচ্ছা–অনিচ্ছার ওপরে ইমাম-মুয়াজ্জিনের চাকরি নির্ভর করে, এটি হতে পারে না। বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে সার্ভিস রুল প্রণয়নের ব্যাপারে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উদ্যোগ নেবে। অন্য দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর উদ্যোগও গ্রহণ করবে। তবে প্রতিটি দাবি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা নির্ধারণ করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ যাতে বিএনপিকে দেওয়া হয়, সেই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ইসলামে বিশ্বাসী একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি মনে করে, ইসলামের বিধি-বিধান নিয়ে মতবিরোধ বা ভিন্নমত যাতে রাষ্ট্র এবং সমাজে ফিতনা সৃষ্টি কিংবা বিশ্বাসী সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টির কারণ না হয়; সে বিষয়ে নিশ্চিত করতে নেতৃস্থানীয় উলামায়ে শায়খগণ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবেন। ইসলামী মূল্যবোধের আলোকে বিএনপি এমন একটা রাষ্ট্র বা সমাজের পক্ষে যে রাষ্ট্র বা সমাজে মুসলমানগণ নিঃসংকোচে কোরআন, সুন্নাহ অনুযায়ী নিজেদের জীবন পরিচালিত করতে পারবে।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজি, হেফাজত নেতা জুনায়েদ আল হাবিব প্রমুখ।
আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ফেনী-২ (সদর) আসনের এমপি প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু করেছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। রোববার দুপুরে ফেনী শহরের গ্র্যান্ড সুলতান কনভেনশন হলে সংবাদ সম্মেলন ও মতবিনিময় সভার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রম শুরু হয়।
ফেনী জেলা এবি পার্টির আহবায়ক মাস্টার আহসানুল্লাহর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন এবি পার্টির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শাহ আলম বাদল। উপস্থিত ছিলেন দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, পেশাজীবী পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুল্যা নোমান, জেলার যুগ্ম আহবায়ক মোতাহের হোসেন বাহার, সদস্য সচিব অধ্যাপক ফজলুল হক, যুগ্ম সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম কামরুল, মামুন আনসারী, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত সাজু, কোষাধ্যক্ষ শাহীন সুলতানী, প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক হাবীব মিয়াজী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা মনি, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, সহ দপ্তর সম্পাদ নাজরানা হাফিজ, নারী নেত্রী শাহানা শানু, হুরে জান্নাত ওফেনী পৌর আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ সেলিম প্রমুখ।
জুলাই অভ্যুত্থানে দল হিসেবে যারা সামনে থেকে ভুমিকা রেখেছে তাদের নিয়ে নতুন জোটের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ২৫ নভেম্বর নতুন জোটের ঘোষণা আসতে পারে। এছাড়া জাতীয় রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি। দলীয় নেতাকর্মীদের বাইরে স্বাধীন ভোটারদের সমর্থন কামনা করেন তিনি। এমপি নির্বাচিত না হলেও ফেনীবাসীর জন্য আজীবন কাজ করার অঙ্গীকার করেন তিনি।
বিদেশিদের হাতে বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব দেয়াতে দোষের কিছু নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে সংসয় নেই কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ এখনো রয়েছে। এছাড়া ফেনী বিএনপির সব পক্ষ চাইলে জোটের প্রার্থী হতে আপত্তি নেই বলে জানান তিনি, তবে কাউকে কষ্ট দিয়ে এমপি হওয়ার ইচ্ছা নেই।
শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার গোলাপনগর বাজারে গত শনিবার কুষ্টিয়া-২ আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থী, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরীর নির্বাচনী কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মোকারিমপুর ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত কর্মী সমাবেশে মো. শাহাদত হোসের সভাপতিত্বে ও আতিয়ার রহমানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথী হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, এ এলাকার মানুষের অধিকার আদায়, এলাকার সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি, মাদক, সন্ত্রাস চাঁদাবাজি রোধ, এলাকার সার্বিক উন্নয়নসহ প্রমত্তা পদ্মার ভাঙন রোধে ব্যাপকভাবে কাজ করতে চাই। আর সে জন্যে আপনাদের সহযোগিতা ও ধানের শীষে ভোট চাই।
ওই নির্বাচনী সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপজেলা সদস্য সচিব শাহাজান আলী ও বিশেষ বক্তা হিসেবে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব তসলিম উদ্দিন নিশাত, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সদস্য শিহাবুল ইসলাম, নুর আলম দুলাল, রফিকুল ইসলাম, মিরপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী রব্বান, উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক অ্যাড. আব্দুল হান্নান, সদস্য সচিব রুবেল হোসেন, উপজেলা শ্রমিকদল নেতা জাকির হোসেন বাচ্চু, মাহাবুল আলম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোশারফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান জুয়েল, সদস্য সচিব এসএস আল হোসাইন সোহাগ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
জনাকীর্ণ কর্মী সমাবেশে বক্তারা সকল ভেদাভেদ ভুলে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়ন, দেশগঠন ও রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থীকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপির সর্বস্তরের নেতারা, কর্মী ও সমর্থকরা এবং বিপুলসংখ্যক এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. মাহমুদুল হক রুবেল বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন হচ্ছে দেশকে পুনর্গঠন, দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা এবং মানুষের ভোটাধিকার ও বাকস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার নির্বাচন। ধানের শীষকে বিজয়ী করতে জনগণ ঐক্যবদ্ধ। কোন ষড়যন্ত্রই ধানের শীষের বিজয় ঠেকাতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ। গত শনিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে ও ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টির লক্ষ্যে ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সাবেক এ সংসদ সদস্য আরও বলেন, গত ১৭ বছর বিএনপি ও দেশের মানুষ অনেক নির্যাতন সহ্য করেছে। প্রাণ দিয়েছে, জেল-জুলুম কেটেছে। গুমের শিকার অনেকেই আজও ফিরে আসেননি। দেশের মানুষের অধিকার আদায় ও গণতন্ত্রের জন্য এত রক্ত আর ত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলন সংগ্রামের কঠিন পথ অতিক্রম করেছি। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্ব ঐক্যবদ্ধ থেকে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করে সবাই মিলে আমার নির্বাচনী এলাকা দুই উপজেলাকে নতুন করে ঢেলে সাজাব। তারেক রহমানের ঘোষিত জাতীয় পুনর্গঠন পরিকল্পনা ৩১ দফা বাস্তবায়িত হলে দেশে গণতন্ত্র, সুশাসন, জবাবদিহিতা, মানুষের মৌলিক অধিকার এবং হাওর-পাহাড় ও সমতলের সম-উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নলকুড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মো. হামিদুল ইসলাম। এতে নলকুড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. রকুনুজ্জামানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শাহজাহান আকন্দ, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আব্দুল মান্নান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. মাসুম বিল্লাহ, বিএনপি নেতা আবু সালেহ আহমদ প্রমুখ।
সমাবেশে স্থানীয় বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, কৃষকদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষ অংশ নেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ঢাকার উন্নয়নধারণায় এখনই মৌলিক পরিবর্তন আনা জরুরি।
তিনি বলেন, অতিরিক্ত কংক্রিটনির্ভর উন্নয়ন ঢাকাকে অনিরাপদ ও দুর্ব্যবস্থাপনায় ঠেলে দিয়েছে। বছরের পর বছর আমরা সমস্যা নিয়ে কথা বলি, কিন্তু সমাধানে যেতে সাহসী সিদ্ধান্ত নেই না। আমাদের চিন্তায় পরিবর্তন আনতেই হবে—কারণ পুরোনো কাঠামো এখন আর কাজ করছে না, বলেন উপদেষ্টা।
আজ রোববার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (JICA)-এর কারিগরি সহায়তায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) বাস্তবায়নাধীন ‘Project for Development of Policy and Guidelines for Transit-Oriented Development along Mass Transit Corridors’-এর চতুর্থ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থবহ সংস্কার উদ্যোগ নিলে বিভিন্ন স্তরের প্রতিরোধের বিষয়টি উল্লেখ করে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, কার্যকর সমন্বয়, ক্ষমতায়ন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন।
ঢাকার নাজুক গণপরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন কালো ধোঁয়া নির্গতকারী বাস রাস্তায় চলছে। যানবাহন ও পরিবহন পরিচালনা ব্যবস্থার সংস্কার ছাড়া ঢাকাকে বাসযোগ্য করা সম্ভব নয়। স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা এখন আর বিলাসিতা নয়, অপরিহার্য।’
তিনি আরও বলেন, ট্রানজিট-অরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (টিওডি) স্মার্ট পরিবহন কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে, তবে পরিবেশগত অখণ্ডতা যেন ক্ষুণ্ন না হয়। একটি সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে আরেকটি সমস্যা তৈরি করা যাবে না। মেট্রো স্টেশন বা বাণিজ্যিক স্থাপনার জন্য উন্মুক্ত স্থান ও পরিবেশগত বাফার নষ্ট করা ঠিক হবে না। ঢাকার মানুষ নিঃশ্বাস নেওয়ার মতো খোলা জায়গা চায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
পুরান ঢাকায় রাসায়নিক গুদাম স্থানান্তরে ধীরগতির প্রসঙ্গ তুলে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলোর কারণে প্রয়োজনীয় সংস্কার এগোয় না। তিনি শহরে সবুজায়ন উদ্যোগে কমিউনিটির অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্ব দেন। টিওডি উদ্যোগের মাধ্যমে নগরে আরও উন্মুক্ত স্থান, পার্ক ও সবুজ পরিবেশ সৃষ্টির সম্ভাবনায় আশাবাদ ব্যক্ত করলেও তিনি অপ্রয়োজনীয় বাজার নির্মাণে সতর্কতা বজায় রাখার পরামর্শ দেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ এবং জাইকা বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তমহিদে। সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘জামায়াতের টিকিট (ভোট) কাটলে জান্নাতের টিকিট কাটা হবে। কোথায় আছে আমাকে বলুক তারা, দেখিয়ে দিক কোথায় আছে।’
শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মাল্টিপারপাস হলে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা নিয়ে নেওয়ার কথা ইসলাম সমর্থন করে না বলে জানান ফখরুল। তিনি বলেন, ‘এই কথাগুলো আমি এ জন্যই বলছি, যে এগুলো সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কথাগুলো বলছে সবাই। এই কথাগুলো আজকে জনগণের সামনে আসা উচিত। বেশি করে আসা উচিত।’
‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উন্নয়নে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষার কেয়ারটেকারগণের দেশ ও জাতি গঠনে অগ্রণী ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা এ কথাগুলো বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে মসজিদভিত্তিক উপানুষ্ঠানিক শিক্ষক কার্যক্রম (মউশিক) কেয়ারটেকার কল্যাণ পরিষদ।
আলোচনা সভায় জামায়াতকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই মহলটি রাজনৈতিক অঙ্গনে দাঁড়াতে পারছিল না। জিয়াউর রহমান সাহেব তাদের সুযোগ করে দেন রাজনৈতিক অঙ্গনে আসার। (স্বাধীনতার পরে) তারা প্রথমে আইডিএল (ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক লীগ) নামে এসেছিল। তারপরে তারা বিএনপির সঙ্গে কাজ করেছে। বিএনপিও তাদের নিয়ে কাজ করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে গত ১০ বছর তাদের ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে পরাজিত করার জন্য দৃশ্যমান কোনো কাজ দেখা যায়নি।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে শুনতে পাই ছাত্রলীগের মধ্যে তারা ঢুকেছিল। শুনেছি কিন্তু জানা নাই আমার। অর্থাৎ ছাত্রলীগ সেজে তারা সেখানে ছিল। এই ধরনের কাজ তো আমরা করতে পারি না। আমরা সরাসরি সামনাসামনি লড়াই করেছি। আমাদের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমাদের ২০ হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছে। প্রায় ১৭০০ মানুষকে নেতা, আমাদের এমপিসহ গুম করে দেওয়া হয়েছে। আমরা ২০০, ৩০০, ৪০০ মামলা নিয়ে আছি।’
খালেদা জিয়াকে ছয় বছর কারাগারে রাখা হয়েছে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখন পর্যন্ত দেশে ফিরতে পারেনি বলে উল্লেখ করেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘ছেলেরা জীবন দিয়েছে, সবার ত্যাগের কারণে একটা সুযোগ এসেছে। এখন সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেন সুন্দর, সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করে একটা গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করা যায়, সেই চেষ্টা করতে হবে।’
পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) দিতে হবে বলে একটা রাজনৈতিক দল চিৎকার করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘তারা বলছে, পিআর না হলে নির্বাচন হবে না। অনেক হুংকারও দিয়েছে। এখন আবার সুর নরম হয়ে গেছে। এখন দেখা যাচ্ছে নির্বাচনের জন্য চতুর্দিকে দৌড়ঝাঁপ চলছে। এগুলো ঠিক নয়। মানুষকে যেটা বলা হবে, সেদিকেই সঠিকভাবে যাওয়া উচিত।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমলে মসজিদে খুতবায় কি পড়া হবে, তা কাগজে লিখে পাঠানো হতো। এটা ভেবে আরও দুঃখ হয়, এ দেশেরই কিছু আলেম শেখ হাসিনার সঙ্গে মিটিং করে তাকে ‘কওমি জননী’ উপাধি দিয়েছে।’
একটা ফ্যাসিস্ট শক্তি দলীয় লোক বসিয়ে দেশের সব প্রতিষ্ঠান নষ্ট করে দিয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন একটা মর্যাদাশীল, ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। সেখানে যদি দলীয় লোককে বসানো হয়, যারা বাইরে ইসলামের কথা বলে কিন্তু মুখে ইসলাম বিশ্বাসই করে না, তাহলে সেটি সঠিকভাবে চলবে না। কোন দেশে জাতীয় মসজিদের খতিব পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পালিয়ে যায়। এটি প্রমাণ করে নিয়োগটা রাজনৈতিকভাবে হয়েছে।
ঐকমত্য কমিশন যে পিআর পদ্ধতির কথা বলেছে সেটি সাধারণ মানুষ ঠিকমতো বুঝে না বলেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ বোঝে ওয়ান ম্যান ওয়ান ভোট। একজন ব্যক্তি দাঁড়াবে, তার মার্কা থাকবে। যে মার্কায় আমি ভোট দেব, তাই তো? এটাই আমরা সব সময় সেই আদিকাল থেকে দেখে আসছি। এখন আপনি এটাকে পরিবর্তন করবেন তার জন্য আবার গণভোট করবেন। গণভোটে থাকবে ‘হ্যাঁ’, ‘না’। এখন গণভোটে নাকি চারটা প্রশ্ন থাকবে। চারটা প্রশ্ন একটা গণভোটের ব্যালটে এটা মানুষ কিছু এখন পর্যন্ত বুঝতেই পারছে না। শেষ দিন পর্যন্ত বুঝতেও পারবে না।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অফ গভর্নরসের গভর্নর মাওলানা শাহ্ মো. নেছারুল হক। সঞ্চালনা করেন মসজিদভিত্তিক উপানুষ্ঠানিক শিক্ষক কার্যক্রম (মউশিক) কেয়ারটেকার কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মো. জবাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কদলপুর ইউনিয়নে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পরিচালনা করেছে ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনসমূহ। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকারের নির্দেশনায় এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার সকালে হযরত সৈয়দ চাঁদ শাহ (রহ.)-এর মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু করে নেতাকর্মীরা। পরে ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট-বাজার, জনবহুল স্থান ও গ্রামে গ্রামে সাধারণ মানুষের হাতে লিফলেট তুলে দেন তারা। একই সঙ্গে ধানের শীষের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে গণসংযোগ পরিচালনা করা হয়। দিনব্যাপী এ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবচ্ছারুজ্জামান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ এনাম, সহসভাপতি নাছির, সহ সাধারণ সম্পাদক নুরুল কবির, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক হাফেজ আনোয়ার ইসলাম, ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আবছার দুলাল, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আল মামুন, ৫নং ওয়ার্ড সভাপতি ফোরকান সওদাগর, শ্রমিকদলের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন, কৃষক দলের সভাপতি আব্দুল্লাহ মেম্বার, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম, যুগ্ম সম্পাদক সাইমন। বক্তারা বলেন, তারেক রহমানের প্রণীত ৩১ দফা দেশের ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার রোডম্যাপ। এ দফাগুলো জনগণের মাঝে তুলে ধরতেই আজকের এই গণসংযোগ। তারা আরও বলেন, পরিবর্তন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য ধানের শীষের বিজয় অত্যন্ত জরুরি।
কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়ক আটকে রেখে পথসভা করেছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কুষ্টিয়া ৪ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী শেখ সাদী। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে কুমারখালীর কাজীপাড়া মোড় এলাকায় পথসভা করেন শেখ সাদী।
এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হাফিজুর রহমানসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। সেখানে পুরো সড়ক আটকে রেখে বিএনপি নেতা শেখ সাদী প্রায় পাঁচ মিনিট ১২ সেকেন্ড এবং হাফিজুর রহমান আড়াই মিনিট বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও শেখ সাদী সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের প্রায় চার মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের একটি সাক্ষাৎকার দেন। এ সময় সড়কের দুই দিকে দীর্ঘ যানযট ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়।
দলীয় নেতাকর্মীদের বরাতে জানা যায়, গত ৩ নভেম্বর কুষ্টিয়া ৪ ( কুমারখালী - খোকসা) আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয় সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীকে। কিন্তু রুমীকে টিক্কা দিয়ে তোড়জোড় লবিং করে মনোয়ন পরিবর্তন করে নিজেকে প্রার্থী করার চেষ্টা করছেন শেখ সাদী। এই খবর নিয়ে শনিবার দুপুর একটার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কে এই আসনের শেষ প্রান্ত খোকসার শিয়ালডাঙ্গী এলাকায় এসে পৌঁছান শেখ সাদী। এ সময় ২ উপজেলার হাজার হাজার নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। পরে সেখান থেকে বিশাল গাড়িবহর ও পথসভা নিয়ে খোকসা উপজেলা শহর প্রদক্ষিণ করে কুমারখালী কাজীপাড়া মোড়ে এসে পথসভা শেষ করেন। সেখানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন শেখ সাদী।
জনদুর্ভোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা শেখ সাদী বলেন, ‘আমাকে ভালোবেসে হাজার হাজার মানুষ আজকের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে। কিছুটা ভোগান্তি সৃষ্টি হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করছি।’
ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থী আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণসহ ২৪ নেতাকর্মীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও আসনটির মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে ধানখেতে দাঁড়িয়ে ‘রিভিউ আবেদন’ করেছেন গৌরীপুর উপজেলার কৃষকেরা।
শনিবার দুপুরে উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের বেরাটি গ্রামে ফসলের মাঠে দাঁড়িয়ে শতাধিক কৃষক ক্রিকেটারের ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে এমন রিভিউ আবেদন করেন।
পরে কৃষকেরা হিরণসহ ২৪ নেতার বহিষ্কারদেশ প্রত্যাহার ও ময়মনসিংহ-৩ আসনের মনোনয়ন পরিবর্তন করে হিরণকে মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে ফসলের মাঠে ধানের আঁটি নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসময় তারা স্লোগান দেন ‘ধানের শীষে ভোট চাই মনোনয়ন পরিবর্তন চাই’। 'হিরণ ভাইয়ের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চাই, ধানের শীষে ভোট চাই।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কৃষক ফারুক আহমেদ বলেন, বিগত ১৭ বছর দলের আন্দোলন সংগ্রামে হিরণ ভাই দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি মনোনয়ন না পাওয়ায় তার অনুসারীরা মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিল । কিন্ত এরমধ্যেই হিরণ ভাইসহ ২৪ জনকে বহিষ্কার করা হয়। তাই মনোনয়ন পরিবর্তন ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আমাদের এই কর্মসূচি।কৃষক মরজত আলী বলেন, গৌরীপুরে বিএনপি বলতে আমরা হিরণকে বুঝি। এই এলাকার মানুষ ধানের শীষের প্রার্থী হিসাবে হিরণকে দেখতে চায়। আমাদের নেতা তারেক রহমানের কাছ দাবি বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে মনোনয়ন রিভিউ হলে ধানের শীষ বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে।
কৃষক ফখর উদ্দিন বলেন, আমরা আমরা খেটে খাওয়া কৃষক মানুষ। আমাদের দাবি আদায়ের ভাষাও ভিন্ন। আমরা হিরণ ভাইকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসাবে দেখতে চাই। আমাদের এই দাবির মধ্য দিয়ে ময়মনসিংহ -৩ আসনটি রিভিউ করা হোক এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমান যাতে এই আসনটি রিভিউ করেন এটাই দাবি।
কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন জিয়াউল হক শ্যমল, হারুন অর রশিদ, পাবেল মিয়া, বাবুল আকন্দ, মালেক মিয়া, ওয়াহাব মিয়া প্রমুখ। গত ৯ নভেম্বর গৌরীপুর উপজেলা সদরে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত এম ইকবাল হোসেনের সমর্থক মনোনয়নবঞ্চিত হিরণের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের পর আহাম্মদ তায়েবুর হিরণকে বহিষ্কার করা হয়।
ধর্মীয় বিষয়ে তাকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কিশোরগঞ্জ–৪ (ইটনা–মিঠামইন–অষ্টগ্রাম) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, ‘ধর্মের ইস্যুতে যারা আমার বিরুদ্ধে কথা বলে তারা মিথ্যাবাদী, বেইমান, বিশ্বাসঘাতক, রাজাকার ও স্বাধীনতাবিরোধী।’
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ইটনা উপজেলার রায়টুটী ইউনিয়নের রাজী ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
নিজেকে ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী দাবি করে ফজলুর রহমান বলেন, আমি মুসলমানের ঘরে জন্মেছি। পাঁচ বছর বয়সে বাবা আমাকে মসজিদ ও মাদ্রাসায় পাঠিয়েছেন। অ, আ শেখার আগে আলিফ, বা, তা শিখেছি।
তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে, তবে এ অপপ্রচার তথ্যগতভাবে ভিত্তিহীন।
বিএনপির এই প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, জামায়াতে ইসলামী সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছে। তিনি বলেন, যারা বলে ১৯৭১ কোনো যুদ্ধ ছিল না, বাংলাদেশ মানে না আমি তাদের বিরুদ্ধে। পাকিস্তান থেকে কেউ এলে যারা মনে করে বড় জ্যাঠা এসেছে আমি তাদের বিরুদ্ধে।
সভায় জেলা ও উপজেলা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাও বক্তব্য দেন। তাদের মধ্যে ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম রতন, ইটনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস এম কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুজ্জামান ঠাকুর স্বপন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মনির হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পলাশ রহমান ও সোমেশ কুমার গোপ, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম জুয়েলসহ স্থানীয় নেতারা। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এলিম হোসেন সভায় সভাপতিত্ব করেন।
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ফরিদপুরের ডিক্রিরচরে বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর সদর উপজেলা ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে শহরের মুন্সি ডাংগী শুকুর সরদারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর সদর ৩ আসনের বিএনপির মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী চৌধুরী নায়াব ইউসুফ।
ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি মো. ইসমাইল মুন্সির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ফরিদপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশ, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও শিল্পপতি চৌধুরী ফারিয়ান ইউসুফ, ডিক্রিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমান মাতুব্বর, আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদের সভাপতি আসাদুজ্জামান খান জলিল মেম্বার, ডিক্রিরচর কৃষক দলের সভাপতি মো. আলম শেখ, সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন শেখ শামু সাংগঠনিক সম্পাদক হোসেন বেপারীসহ বিএনপি সহযোগী অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চৌধুরী নায়াব ইউসুফ বলেন, আমি আল্লাহর কাছে সব সময় শুকরিয়া করি, আমার পিতা মরহুম চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের পাশে যারা ছিলেন তারা সবাই আমার সঙ্গে আছেন এবং আমাকে ও আমার প্রতীক ধানের শীর্ষকে বিজয় করতে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের আর কয়েকটা দিন কষ্ট করতে হবে, ভোটের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইতে হবে। আপনাদের মনে জোর রাখতে হবে, সাহস রাখতে হবে ইনশাআল্লাহ বিজয় আমাদেরই হবে।
ফরিদপুরে ডিক্রিরচরে বিএনপির মতবিনিময় সভা
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ফরিদপুরের ডিক্রিরচরে বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর সদর উপজেলা ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে শহরের মুন্সি ডাংগী শুকুর সরদারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর সদর ৩ আসনের বিএনপির মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী চৌধুরী নায়াব ইউসুফ।
ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি মো. ইসমাইল মুন্সির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ফরিদপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশ, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও শিল্পপতি চৌধুরী ফারিয়ান ইউসুফ, ডিক্রিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমান মাতুব্বর, আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদের সভাপতি আসাদুজ্জামান খান জলিল মেম্বার, ডিক্রিরচর কৃষক দলের সভাপতি মো. আলম শেখ, সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন শেখ শামু সাংগঠনিক সম্পাদক হোসেন বেপারীসহ বিএনপি সহযোগী অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চৌধুরী নায়াব ইউসুফ বলেন, আমি আল্লাহর কাছে সব সময় শুকরিয়া করি, আমার পিতা মরহুম চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের পাশে যারা ছিলেন তারা সবাই আমার সঙ্গে আছেন এবং আমাকে ও আমার প্রতীক ধানের শীর্ষকে বিজয় করতে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের আর কয়েকটা দিন কষ্ট করতে হবে, ভোটের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইতে হবে। আপনাদের মনে জোর রাখতে হবে, সাহস রাখতে হবে ইনশাআল্লাহ বিজয় আমাদেরই হবে।