শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
১০ পৌষ ১৪৩২

সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলাম, আছি এবং থাকব: মির্জা ফখরুল

গণহারে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা- স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি: মাহ্‌ফুজ আনাম
আপডেটেড
৫ মে, ২০২৫ ১১:৫২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ৫ মে, ২০২৫ ১১:৫০

বিএনপি বরাবরই সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি, বিএনপি ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক, সব সময় গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করবে। কখনোই অন্যায়ভাবে অন্যের মতকে চাপিয়ে দেওয়াকে সমর্থন করবে না। আরেকজনের মতের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে।’

গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৫ উপলক্ষে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের প্রতি অতীতে যে নির্যাতন ও নিপীড়ন হয়েছে, আপনাদের আইন কানুনে পুরোপুরি ফ্যাসিবাদী চরিত্র দেওয়া হয়েছে, এগুলোর বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। আমরা লড়াই করে চলেছি। এখনো করছি। খুব স্পষ্ট ভাষায় দৃঢ়ভাবে আবারও বলতে চাই, আমরা কখনোই অন্যায়ভাবে অন্যের মতকে চাপিয়ে দেওয়াকে সমর্থন করব না।’

বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়টি নতুন নয় উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছি, সেই ষাটের দশক থেকে এই বিষয়টি সব সময় সামনে এসেছে। পাকিস্তান শাসকদের বিরুদ্ধে সেই সময়েও আমরা কথা বলেছি, আন্দোলন করেছি, কাজ করেছি। তখন সংবাদমাধ্যমের একটি নিজস্ব স্বকীয়তা ছিল। যেখানে তাদের কোনও গোষ্ঠীভুক্ত করা অতটা সহজ হতো না। তাদের দেশপ্রেম, আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধ ছিল অনেক উঁচু দরের।

বর্তমানে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলতে গিয়ে কিছুটা আতঙ্কিত থাকেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে কিছুটা আতঙ্কিত থাকি সম্প্রতি প্রেসের সামনে কথা বলতে গিয়ে। মনে হচ্ছে, কোন প্রেস আমার কথাগুলো কীভাবে নেবে। তারপর তারা কীভাবে ছাপবে। অথবা সোশ্যাল মিডিয়া কীভাবে এটা উপস্থাপন করবে। এটা আমাদের জন্য, যারা আমরা রাজনীতি করি। এটা আমাদের জন্য সত্যি একটা চিন্তার বিষয়। কারণ, সম্প্রতি চরিত্র হরণ করার যে প্রবণতা বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা দিয়েছে, এটাতে চিন্তিত না হয়ে উপায় নেই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিঃসন্দেহে আগের চেয়ে বেড়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে প্রায় ১৬ ভাগ বেড়েছে। সমস্যা দেখা দেয় তখনই, যখন দেখি কোনও কোনও সংবাদমাধ্যম গোষ্ঠী আরেকটি গোষ্ঠীকে আক্রমণ করে। কোনও কোনও রাজনৈতিক গোষ্ঠীও সেটার সঙ্গে যুক্ত হয় এবং বিভিন্ন রকম রাজনৈতিক কর্মসূচিও দেন। একটি গণতান্ত্রিক মুক্ত সমাজে এটা কতটুকু গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এটি আমার বোধগম্য নয়।

সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের বিপক্ষে প্রচার চালানো হয় যে আমরা সংস্কারের বিপক্ষে। প্রায়ই বলা হয়, সংস্কার নয় আমরা নির্বাচন চাই। অথচ সংস্কারের বিষয়টি শুরু করেছে বিএনপি। দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা এনেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। অনেক আপত্তি সত্ত্বেও বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সংবিধানে যুক্ত করেছে। এগুলো বাস্তবতা। ওই বাস্তবতা থেকে অযথা নানা ইস্যুতে বিএনপিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা একটি ট্রানজেকশন পিরিয়ডে আছি। অনেক রকমের ঘটনা, টানা- হেঁচড়া চলছে। গণতন্ত্রই নেই বলে সংকট হচ্ছে। গত ১৫ বছর ধরে লড়াই করলাম গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য। চব্বিশের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি ফ্যাসিস্ট রেজিমকে সরিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শুরু করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এসময়ে জনগণের ওপর আস্থা রাখতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আমাদের কাছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ একটি বিশাল ব্যাপার। এটাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয় আমাদের চিন্তা। এজন্য, আমরা সেটার জন্য লড়াই করেছি, যুদ্ধ করেছি, প্রাণ দিয়েছি। দীর্ঘ ৯ মাস অবিশ্বাস্য রকমের কষ্টের মধ্য দিয়ে পার করেছি। সেই জায়গায় আমরা কোনও আপস করতে চাই না। এটাকে অনেকে পছন্দ করতে পারেন, নাও করতে পারেন। তাতে ব্যক্তিগতভাবে আমি কিছু মনে করি না। কারণ ‘দ্যাট ইজ মাই বেসিস’, ওটাই আমার মূল ভিত্তি।

সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম। আলোচনা সভায় রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

সম্পাদকদের মধ্যে বক্তব্য দেন দ্য নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবির, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ। আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে দেশে বর্তমানে ২৬৬ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা অথবা সহিংসতা–সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগে মামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহ্ফুজ আনাম। তিনি বলেছেন, গণহারে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের আক্রমণ (মামলা) স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি এবং এটি ভয়ের ব্যাপার।

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার শাসনামল এত জনধিকৃত হয়েছিল, তার অন্যতম কারণ ছিল গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছিল না। আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং আরও অনেক আইনের শিকার হয়েছিলাম। তবে বর্তমানে ২৬৬ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা অথবা সহিংসতা–সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগে মামলা চলছে। এটা কীভাবে সম্ভব? ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও ২০০ বা কিছু বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। ২৬৬ জন সাংবাদিক আজকে খুনের মামলা অথবা সহিংসতা সংক্রান্ত অপরাধের মামলার আসামি। এটা আমাদের জন্য অসম্মানের।’

সরকারের উদ্দেশে মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, ‘এটার অর্থ এই নয় যে কেউ দোষ করেননি। দোষ করে থাকলে সঠিকভাবে মামলা করে শাস্তি দেন এবং আমরা কোনোভাবেই তার পাশে দাঁড়াব না, যদি তিনি সত্যিকার অর্থে সমাজের বিরুদ্ধে বা জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের বিরুদ্ধে তার অবস্থান সে রকম থাকে। কিন্তু আজকে ছয় থেকে সাত মাস হয়েছে, তারা এসব মামলায় পড়েছেন। একটি কদমও এগোয়নি তদন্তের ব্যাপারে।’

যাদের নামে মামলা হয়েছে, সেসব সাংবাদিক একটা ভয়ের মধ্যে থাকেন উল্লেখ করে মাহ্ফুজ আনাম বলেন, তাঁরা ‘মব আক্রমণের’ (দলবদ্ধভাবে আক্রমণ) ভয়ে থাকেন। এ রকম দু-একটা ঘটনা ঘটেছে।

১৩ জন সাংবাদিক গ্রেপ্তার আছেন উল্লেখ করে মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘তারা যদি অপরাধ করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই তাদের বিচার হওয়া উচিত। কিন্তু আজকে সাত মাস, আট মাস ধরে কারাগারে, তারা জামিন পাচ্ছেন না। তাঁদের আইনি কোনো প্রক্রিয়া চলছে না। বিচার হচ্ছে না। তাহলে এটা কি চলতে থাকবে?’

মামলার প্রবণতার কথা বলতে গিয়ে মাহ্ফুজ আনাম বলেন, এখন মামলার যে প্রবণতা, তাতে ১০০ জন, ৫০ জন, ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা, তার মধ্যে একজন সাংবাদিকের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হলো।

সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে করণীয় সম্পর্কে নিজের মতামত তুলে ধরে মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, ‘আমার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব হচ্ছে, সরকারের হয়তো অনেক ব্যস্ততার জন্য এই ২৬৬ জন সাংবাদিকের মামলা দেখতে পাচ্ছে না। কিন্তু তারা দৈবচয়ন ভিত্তিতে ১০-১৫টি মামলা দেখুক না, যেখানে ২০-২৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে একজন-দুজন সাংবাদিক আছেন। তারা যদি একটা, দুইটা, ৫টা দৃষ্টান্ত পায় যে সাংবাদিকদের নামে হওয়া মামলা মিথ্যা মামলা, তাহলে কেন পদক্ষেপ নেবে না? বারবার বলা আমাদের কিছু করণীয় নাই, আমি মনে করি যারা এই মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের হেনস্তা করছেন, এতে তাদের আরও বলিষ্ঠ করা হয়। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমি দাবি করছি, সরকার সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়াক।’

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘যে সাংবাদিক দোষী, যে সাংবাদিকের শাস্তি হওয়া উচিত, আমরা সরকারের পক্ষে থাকব। কিন্তু খামোখা একেবারে গণআকারে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই আক্রমণ আমি মনে করি এটা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য বিরাট একটা পরিপন্থি ব্যাপার ও এটা ভয়ের ব্যাপার।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই সরকার পরিবর্তনের সরকার, এই সরকার সংস্কারের সরকার। আশা করি, এই সরকার গণতন্ত্রকে বলিষ্ঠ করার সরকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে দৃঢ় করার সরকার। কিন্তু এই মুহূর্তে মামলার মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যে নির্যাতন হচ্ছে এবং এটাও শুনেছি হত্যা মামলা দেওয়া হয় কেন, হত্যা মামলায় জামিন পেতে অসুবিধা হয়। সুতরাং যিনি মামলা দিচ্ছেন পরিকল্পিতভাবে, যাতে জামিন না পান। এগুলো তো প্রতীয়মান। সরকারের কাছে কি প্রতীয়মান হবে না?’

সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘আইন, স্বরাষ্ট্র ও অন্যান্য যারা আছেন, তারা উদ্যোগী হয়ে যেন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এটা শুধু আমাদের মনঃক্ষুণ্ন করছে না, বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’

আলোচনা সভায় মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘যে দেশে প্রশ্ন করার জন্য সাংবাদিকের চাকরি যায়, সে দেশে মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন করছি আমরা। অবাক লাগে, আমি বিস্মিত হই, জানি না, আমি কাকে দায়ী করব? আমি কি সরকারকে দায়ী করব, না, আমি কি মালিককে দায়ী করব, না করব না, সাংবাদিক ইউনিয়ন কী করছে বা আমাদের সম্পাদক পরিষদ, যেটিতে আমি প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এখন পর্যন্ত আছি, আমি মনে করি আমরাও ব্যর্থ হয়েছি।’

মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘যা-ই হোক আত্মসমালোচনা আমাদের দরকার, আমরা আসলে কতটুকু করতে পেরেছি। তবে এটা স্বীকার করতেই হবে, পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে অনেকখানি। এক বছর আগে যে অবস্থা ছিল, সেই অবস্থা এখন আর নেই। অনেকখানি বদলেছে।’

গণমাধ্যমে অনৈক্য ও বিভাজন সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে উল্লেখ করে মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘আমি আশা করব, পত্রিকায় পত্রিকায়, ইদানীং আবার টেলিভিশনে টেলিভিশনের মধ্যে যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে, এটি অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।’

নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর বলেন, ‘বাংলাদেশে আজকের দিনে যখন মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন করছেন, ঠিক তার এক বছর আগেও সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে এই দিবসটি পালন করেছিলেন। কিন্তু এই দুদিবসের মধ্যে অনেক অনেক পার্থক্য সূচিত হয়েছে। কিংবা পার্থক্য সূচিত হওয়ার লক্ষণগুলো দেখা দিয়েছে।’

নূরুল কবীর বলেন, ‘সেটা আমরা কতটা ইতিবাচক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারি, এটা কেবল গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর নির্ভর করে না, সেটা নির্ভর করে প্রধানত রাষ্ট্র যারা পরিচালনা করেন, যারা আইন প্রণয়ন ও পরিবর্তন করেন, তাদের ওপরও অনেকাংশে নির্ভর করে।’

আলোচনায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ বলেন, দীর্ঘ ফ্যাসিবাদের কবলে পড়ে অনেক গণমাধ্যম বন্ধ হয়েছে, তারাও অনেক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন, সেগুলো আর ভবিষ্যতে চাইবেন না। জনগণের সমর্থন নিয়ে যারা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবে, তারা মুক্ত গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সভায় বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পাদক ছাড়াও রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ। আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, দৈনিক সংবাদের নির্বাহী সম্পাদক শাহরিয়ার করিম প্রমুখ।


‘আই হ্যাভ আ প্ল্যান’, পূর্বাচলের ভাষণে তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফেরার পর প্রথম জনসভায় এক অনন্য ও দূরদর্শী রূপরেখা তুলে ধরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর পূর্বাচলে আয়োজিত বিশাল গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ অধিকারকর্মী মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের সেই ঐতিহাসিক ভাষণের প্রসঙ্গ টেনে নতুন এক রাজনৈতিক দর্শনের কথা বলেন। উপস্থিত লাখো জনতার উদ্দেশ্যে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘‘মার্টিন লুথার কিংয়ের একটি বিখ্যাত উক্তি ছিল, ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ (আমার একটি স্বপ্ন আছে)। আজ তাঁর সেই কথাটি স্মরণ করে আমি আপনাদের বলতে চাই— ‘আই হ্যাভ আ প্ল্যান’ (আমার একটি পরিকল্পনা আছে)। আমার এই পরিকল্পনা দেশের মানুষের জন্য, আমার প্রিয় মাতৃভূমির জন্য।’’

তারেক রহমান তাঁর ভাষণে ১৯৬৩ সালে ওয়াশিংটনের সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের কথা মনে করিয়ে দেন, যেখানে মার্টিন লুথার কিং কঠিন পরিস্থিতির মাঝেও জাতি হিসেবে উঠে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিকের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এবং মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের স্বার্থে তাঁর কাছে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এই পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন তখনই সম্ভব হবে, যখন দেশের প্রতিটি সাধারণ মানুষ তাঁর পাশে দাঁড়াবে এবং সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। তিনি বিশ্বাস করেন, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণই পারে একটি আধুনিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে তারেক রহমান সামাজিক শৃঙ্খলা এবং জননিরাপত্তার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে, কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বরদাশত করা হবে না। তাঁর মতে, একটি নিরাপদ রাষ্ট্র গড়তে হলে ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি বা পেশা নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। এ সময় তিনি উপস্থিত নেতাকর্মীদের যে কোনো মূল্যে শান্তি বজায় রাখার এবং মানুষের জানমালের সুরক্ষা দেওয়ার শপথ নেওয়ার আহ্বান জানান। দীর্ঘ দেড় যুগ পর প্রিয় নেতার এমন সুচিন্তিত ও সংকল্পবদ্ধ ভাষণ উপস্থিত জনতাকে যেমন আশান্বিত করেছে, তেমনি দেশের আগামীর রাজনীতির জন্য এক নতুন পথনির্দেশক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে তিনি সরাসরি তাঁর অসুস্থ মা বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যাওয়ার কথা রয়েছে।


সবাইকে নিয়ে প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়তে চাই: তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে এক নতুন ও নিরাপদ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখালেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত বিশাল গণসংবর্ধনা সভায় সমবেত লাখো জনতার উদ্দেশ্যে তিনি তাঁর আগামীর রাজনৈতিক দর্শন ও দেশ গড়ার রূপরেখা তুলে ধরেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ধর্ম-বর্ণ কিংবা রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে দেশের প্রতিটি মানুষকে নিয়ে তিনি একটি প্রত্যাশিত ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চান। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মহান আল্লাহর রহমত কামনা করে তিনি জানান, আগামীতে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে মহানবী (সা.)-এর প্রদর্শিত ন্যায়পরায়ণতার আদর্শকেই মূল ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করবে তাঁর দল।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে তারেক রহমান তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেন, "দেশের মানুষের জন্য আমার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে। তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রকামী মানুষের সক্রিয় সহযোগিতা ও সমর্থন প্রয়োজন।" তিনি দেশের বর্তমান অস্থিরতার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, বিভিন্ন আধিপত্যবাদী শক্তি এখনও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সাহসী সৈনিক শরীফ ওসমান হাদির নির্মম হত্যাকাণ্ডকে সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে ধৈর্য ধারণ করার এবং বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান তিনি।

তারেক রহমান তাঁর বক্তব্যে একটি মানবিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, পাহাড় কিংবা সমতল—যেখানের মানুষই হোক না কেন, সবার নাগরিক অধিকার সমান। তিনি এমন একটি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি দেন যেখানে নারী ও শিশুরা দিন-রাত যেকোনো সময় নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে। বিগত দেড় দশকের দুঃশাসনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, এই দীর্ঘ সময়ে অসংখ্য মানুষ গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছেন ও শহীদ হয়েছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। এ সময় তিনি গুরুতর অসুস্থ তাঁর মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকুর যৌথ সঞ্চালনায় এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি এক বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদসহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ মঞ্চে উপস্থিত থেকে তাঁদের প্রিয় নেতাকে বরণ করে নেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর তারেক রহমানের এই সরাসরি দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ উপস্থিত জনতাকে যেমন আবেগপ্লুত করেছে, তেমনি আগামীর রাজনৈতিক লড়াইয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে এক নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে। সংবর্ধনা শেষে তারেক রহমান সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসাধীন মাকে দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে।


একটি নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই: তারেক রহমান

আপডেটেড ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৬:২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফেরার পর প্রথম জনসভায় এক নতুন ও নিরাপদ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখালেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত বিশাল গণসংবর্ধনা মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, "আমরা সবাই মিলে এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলব, যা একজন মমতাময়ী মা তাঁর সন্তানের জন্য দেখেন।" তাঁর মতে, একটি প্রকৃত নিরাপদ দেশ হলো সেটিই, যেখানে প্রতিটি নাগরিক সম্পূর্ণ নিশ্চিন্তে ঘর থেকে বের হতে পারবেন এবং নিরাপদে পুনরায় নিজ ঘরে ফিরে আসতে পারবেন।

বক্তব্যের শুরুতে তারেক রহমান দেশের মানুষের বীরত্বের প্রশংসা করে বলেন, ১৯৭১ সালে এ দেশের মানুষ যেভাবে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, ঠিক তেমনি ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে পুনরায় রক্ষা করেছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের প্রধান আকাঙ্ক্ষা হলো তাঁদের কথা বলার অধিকার এবং হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়া। একটি শোষণমুক্ত ও মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠাই এখন তাঁদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য।

জাতীয় ঐক্যের ওপর বিশেষ জোর দিয়ে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, এখন সময় এসেছে সকলে মিলে দেশ গড়ার। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, তাঁর স্বপ্নের বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণ কিংবা ভৌগোলিক অবস্থান নির্বিশেষে পাহাড় ও সমতলের মানুষ এবং মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হবে। তিনি এমন এক রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি দেন যেখানে নারী, পুরুষ কিংবা শিশু—যেই হোক না কেন, তাঁদের প্রত্যেকের জানমালের পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য যে, আজ বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে তারেক রহমান ৩০০ ফিটের বিশাল সংবর্ধনা মঞ্চে আরোহণ করেন। প্রিয় নেতাকে বরণ করে নিতে সেখানে সকাল থেকেই লক্ষ লক্ষ মানুষের ঢল নামে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সারাদেশের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে তাঁকে উষ্ণ অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান। দীর্ঘ দেড় যুগ পর তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন এবং তাঁর প্রথম দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ উপস্থিত জনতার মাঝে নতুন রাজনৈতিক উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে। সংবর্ধনা শেষে তিনি সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসাধীন মা বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে।


সংবর্ধনা মঞ্চে তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৭ বছর ৩ মাসের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে রাজধানী ঢাকার ৩০০ ফিট সংলগ্ন বিশাল সংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা ৫১ মিনিটে তিনি মঞ্চে আরোহণ করেন। প্রিয় নেতাকে চোখের সামনে পেয়ে সেখানে সমবেত লাখো জনতার বাঁধভাঙা উল্লাস আর মুহুর্মুহু স্লোগানে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। তারেক রহমান মঞ্চে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের এই নজিরবিহীন ভালোবাসার অভিবাদন গ্রহণ করেন।

মঞ্চে তারেক রহমানকে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্যবৃন্দ। সেখানে সালাহ উদ্দিন আহমেদ, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান এবং হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ কেন্দ্রীয় পর্যায়ের জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি বিশেষভাবে প্রস্তুত লাল-সবুজ রঙের বুলেটপ্রুফ বাসে চড়ে তিনি ৩০০ ফিটের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বিমানবন্দর থেকে সভাস্থল পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা হাজার হাজার নেতাকর্মী হাত নেড়ে তাঁদের প্রিয় নেতাকে বরণ করে নেন। ব্যাপক জনস্রোতের কারণে মাত্র কয়েক কিলোমিটারের এই পথ পাড়ি দিতে তারেক রহমানের বহরের সময় লাগে প্রায় সোয়া তিন ঘণ্টা।

তারেক রহমানের এই ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হয় বুধবার লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে। আজ সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে তাঁকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি প্রথমে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে সংক্ষিপ্ত বিরতি শেষে দুপুর ১১টা ৪৫ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকায় পৌঁছায়। ইমিগ্রেশন শেষে ভিআইপি লাউঞ্জে তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপর নিজের শাশুড়ি ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময় করেন তিনি। তারেক রহমানের সাথে তাঁর সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমান এবং কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানও দেশে ফিরেছেন। তবে তাঁরা বিমানবন্দর থেকে সরাসরি গুলশানের বাসভবনে চলে যান।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে তারেক রহমানের পরবর্তী গন্তব্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল। সেখানে তিনি সিসিইউতে চিকিৎসাধীন তাঁর মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে যাবেন। দীর্ঘ দেড় যুগ পর পরিবারের বড় ছেলের এমন ফিরে আসা এবং সাধারণ মানুষের অভূতপূর্ব স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। পুরো ৩০০ ফিট এলাকা বর্তমানে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তারেক রহমান সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে তাঁর বহু প্রতীক্ষিত দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দেবেন।


তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফেরা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক অত্যন্ত ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানাতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় গিয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। শফিকুল আলম বলেন, “বাংলাদেশে বর্তমানে একটি দৃশ্যমান রাজনৈতিক শূন্যতা বিরাজ করছে এবং তারেক রহমানের ফেরার মাধ্যমে সেই শূন্যতা পূরণ হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”

প্রেস সচিব আরও উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ বর্তমানে একটি ঐতিহাসিক ‘গণতান্ত্রিক উত্তরণ’ বা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তারেক রহমান দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা হওয়ায় তাঁর এই প্রত্যাবর্তন সেই উত্তরণ প্রক্রিয়াকে আরও মসৃণ ও সুসংহত করবে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তাঁর ফিরে আসা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে প্রেস সচিব আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তারেক রহমানের নিরাপত্তার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম জানান, মূলত বিএনপিই তাদের নেতার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়টি তদারকি করছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিএনপি প্রশাসনের কাছে যে ধরনের নিরাপত্তা প্রটোকল বা সহায়তা চেয়েছে, তার প্রতিটি অনুরোধ সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পূরণ করছে। উল্লেখ্য, লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে আজ দুপুর ১২টার ঠিক আগে তারেক রহমান ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন, যা তাঁর দীর্ঘ নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়েছে।

বিফ্রিংকালে শফিকুল আলম প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) খোদা বকশ চৌধুরীর পদত্যাগের বিষয়টিও উল্লেখ করেন। তিনি জানান, গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে এই পদত্যাগের ঘটনাটি ঘটেছে, তবে কেন তিনি হঠাৎ দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন সে সম্পর্কে তাঁর কাছে এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।

পরিশেষে বড়দিনের সম্প্রীতির বার্তা তুলে ধরে প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ। অন্তর্বর্তী সরকার চায় প্রতিটি ধর্মের মানুষ যেন তাঁদের ধর্মীয় আচার ও অনুষ্ঠান নির্ভয়ে এবং আনন্দের সাথে পালন করতে পারেন। সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় রাখাই প্রকৃত গণতন্ত্রের মূল লক্ষ্য বলে তিনি মন্তব্য করেন। মূলত তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন এবং ধর্মীয় উৎসবের আবহে দেশে একটি ইতিবাচক রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ তৈরি হবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


তারেক রহমানকে সমর্থন জানিয়ে এনসিপি নেতার পদত্যাগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফেরার ঐতিহাসিক দিনেই তাঁকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে পদত্যাগ করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব মীর আরশাদুল হক। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিশেষ বার্তার মাধ্যমে তিনি এই ঘোষণা দেন। পদত্যাগের পাশাপাশি তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসন থেকে এনসিপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্তও জানিয়েছেন। মীর আরশাদুল হক এনসিপিতে কেন্দ্রীয় নীতি নির্ধারণী পদের পাশাপাশি চট্টগ্রাম মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী ও পরিবেশ সেলের প্রধানসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।

পদত্যাগের কারণ হিসেবে আরশাদুল হক এনসিপির বর্তমান রাজনৈতিক গতিপথ নিয়ে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি তাঁর বিবৃতিতে উল্লেখ করেন যে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রতিশ্রুতি নিয়ে এনসিপির যাত্রা শুরু হলেও গত ১০ মাসের অভিজ্ঞতায় তিনি দেখেছেন দলটির নেতারা সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষায় পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। যে স্বপ্ন ও সম্ভাবনা দেখে তিনি দলটিতে যোগ দিয়েছিলেন, তার কিছুই আর অবশিষ্ট নেই বলে মনে করেন তিনি। তাঁর মতে, দলের বর্তমান নেতৃত্ব এখন ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে, যা তাঁর রাজনৈতিক আদর্শের পরিপন্থী। এ কারণেই তিনি এনসিপির সঙ্গে সকল রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রশংসা করে এই তরুণ নেতা বলেন, দেশের বর্তমান ক্রান্তিলগ্নে সবাইকে ধারণ করে রাষ্ট্র পরিচালনার সক্ষমতা একমাত্র তারেক রহমানেরই রয়েছে। তিনি লক্ষ্য করেছেন যে, যেখানে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো ধর্ম বা সাময়িক জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চাচ্ছে, সেখানে তারেক রহমান স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশ এবং কর্মসংস্থানের মতো মানুষের মৌলিক সমস্যার সমাধানে একটি স্বচ্ছ ও আধুনিক রূপরেখা (ক্লিয়ার ভিশন) জাতির সামনে উপস্থাপন করছেন। তারেক রহমানের এই দূরদর্শী ও বাস্তবসম্মত সমাধানমূলক দৃষ্টিভঙ্গিই তাঁকে বিএনপির প্রতি আকৃষ্ট করেছে বলে তিনি জানান।

আরশাদুল হক দেশের তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, কোনো ধরনের হুজুগ বা পপুলিজমে প্রভাবিত না হয়ে দেশের সামগ্রিক স্বার্থ ও আগামীর মঙ্গলের কথা বিবেচনা করে তারেক রহমানের জনকল্যাণমূলক ভিশন বাস্তবায়নে সমর্থন জানানো উচিত। তারেক রহমানের ফিরে আসার এই দিনটিকে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য এক আশীর্বাদ হিসেবে অভিহিত করেন। এনসিপি নেতাদের প্রতি তাঁর ব্যক্তিগত শুভকামনা থাকলেও রাজনৈতিকভাবে তিনি এখন থেকে তারেক রহমানের ভিশন বাস্তবায়নেই নিজের সমর্থন বজায় রাখবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনের ঠিক আগে এনসিপির মতো একটি উদীয়মান দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতার এই পদত্যাগ ও বিএনপির প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।


তারেক রহমানের সঙ্গে দেশে এল বিড়াল ‘জেবু’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রিয় মাতৃভূমিতে পা রেখেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তবে এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনে তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে শুধু পরিবারের সদস্যরাই নন, লন্ডন থেকে সশরীরে ঢাকায় এসেছে তাঁদের পরিবারের আদরের পোষা বিড়াল ‘জেবু’ও। আজ বেলা ১২টার পর বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জেবুর দেশে ফেরার একটি ছবি পোস্ট করা হয়, যার ক্যাপশনে লেখা ছিল— ‘দেশে ফিরেছে জেবু’। মুহূর্তেই এই পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটিজেনদের নজর কেড়েছে এবং ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে।

এর আগে তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইটটি সিলেট হয়ে বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তাঁর সাথে ছিলেন সহধর্মিনী ডা. জুবাইদা রহমান এবং কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান। জাইমার প্রিয় এই সাইবেরিয়ান বিড়ালটি বেশ কিছুদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ জনপ্রিয়। তারেক রহমান বিভিন্ন সময় জেবুর সঙ্গে তাঁর কাটানো মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও শেয়ার করার পর থেকেই বিড়ালটি সাধারণ মানুষের কাছে বিশেষ করে বিড়ালপ্রেমীদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত হয়ে ওঠে। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান বিড়ালটির প্রতি তাঁর পরিবারের গভীর মমত্বের কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘বিড়ালটি মূলত আমার মেয়ের বিড়াল, তবে এখন সে আমাদের পরিবারের সবারই খুব আদরের হয়ে গিয়েছে এবং আমরা সবাই তাকে অনেক ভালোবাসি।’

বিমানবন্দরে দাপ্তরিক আনুষ্ঠানিকতা শেষে এবং খালি পায়ে প্রিয় মাতৃভূমির মাটি স্পর্শ করার পর তারেক রহমান সরাসরি রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফুট এলাকায় আয়োজিত বিশাল গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রওনা হয়েছেন। সেখানে লক্ষাধিক নেতাকর্মী সকাল থেকেই তাঁদের প্রিয় নেতাকে বরণ করে নিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষ করে তিনি সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন, যেখানে তাঁর মা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দীর্ঘ দেড় যুগ পর পরিবারের বড় ছেলের এই ফেরা এবং সাথে আদরের পোষ্য জেবুর উপস্থিতি বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে এক ভিন্নধর্মী ও আবেগঘন আমেজ তৈরি করেছে। মূলত বিড়ালটিকে ঘিরে আগে থেকেই তৈরি হওয়া কৌতূহল আজ তা সশরীরে দেশে আসায় এক পূর্ণতা পেল।


প্রধান উপদেষ্টাকে ফোন করে কৃতজ্ঞতা জানালেন তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে দেশের মাটিতে পা রেখেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পরপরই তিনি এই সৌজন্যমূলক ফোনালাপ করেন এবং প্রধান উপদেষ্টার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন।

বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, তারেক রহমান অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলছেন। ফোনালাপে তিনি নিজের এবং তাঁর পরিবারের সবার পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে, তাঁর এই দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে সরকার ও প্রশাসন যে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা এবং বিশেষ প্রটোকলের ব্যবস্থা করেছে, তার জন্য তিনি ড. ইউনূসের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সরকার প্রধানের এমন সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গিকে তিনি ইতিবাচক হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন।

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে তারেক রহমানকে বহনকারী বিমানটি ঢাকায় অবতরণ করলে বিমানবন্দরে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ নেতারা। অভ্যর্থনা পর্বে মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সালাহউদ্দিন আহমেদসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে লন্ডন থেকে ফিরেছেন সহধর্মিনী ডা. জুবাইদা রহমান এবং কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান।

বিমানবন্দরের দাপ্তরিক আনুষ্ঠানিকতা এবং জ্যেষ্ঠ নেতাদের সাথে কুশল বিনিময় শেষে দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে তারেক রহমান বিমানবন্দর এলাকা ত্যাগ করেন। টার্মিনাল থেকে বেরিয়ে বাসে ওঠার আগে এক অভাবনীয় ও আবেগঘন দৃশ্যের অবতারণা হয়; তারেক রহমান নিজের জুতা খুলে খালি পায়ে প্রিয় মাতৃভূমির মাটি স্পর্শ করেন এবং অবনত হয়ে এক মুঠো মাটি হাতে তুলে নেন। তাঁর এই প্রতীকী শ্রদ্ধা নিবেদন উপস্থিত হাজার হাজার নেতাকর্মীকে অশ্রুসিক্ত ও আবেগাপ্লুত করে তোলে।

বর্তমানে তিনি একটি বিশেষভাবে প্রস্তুত বুলেটপ্রুফ বাসে করে পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত বিশাল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। সেখান থেকে তিনি সরাসরি যাবেন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে, যেখানে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাঁর মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ পর পরিবারের বড় ছেলের এই ফিরে আসা এবং প্রশাসনের সাথে তাঁর এই সৌজন্যমূলক যোগাযোগ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।


বাসে চড়ে ৩০০ ফিটের পথে তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে এক অভূতপূর্ব ও আবেগঘন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে তিনি কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বিমানবন্দর এলাকা থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন। বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে বাসে ওঠার আগে এক বিশেষ দৃশ্যের অবতারণা হয়; তারেক রহমান নিজের জুতা খুলে খালি পায়ে প্রিয় মাতৃভূমির মাটি স্পর্শ করেন এবং অবনত হয়ে এক মুঠো মাটি হাতে তুলে নেন। তাঁর এই প্রতীকী শ্রদ্ধা নিবেদন উপস্থিত হাজারো নেতাকর্মীকে আবেগাপ্লুত করে তোলে।

এর আগে লন্ডন থেকে আসা তারেক রহমান, তাঁর স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান এবং কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানকে বিমানবন্দরে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। তাঁকে বরণ করে নিতে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ অন্যান্য জ্যেষ্ঠ নেতারা।

বিমানবন্দর ত্যাগের পর তারেক রহমান একটি বিশেষভাবে তৈরি লাল-সবুজ রঙের বুলেটপ্রুফ বাসে চড়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হন। দৃষ্টিনন্দন এই বাসের দুই পাশে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিশাল প্রতিকৃতি শোভা পাচ্ছে এবং বাসের সামনে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ স্লোগানটি খচিত রয়েছে। তারেক রহমান বর্তমানে ‘৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে’ (৩০০ ফিট রোড) হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।

তারেক রহমানের এই দীর্ঘ প্রতীক্ষিত প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে বিমানবন্দর থেকে শুরু করে সংবর্ধনাস্থল পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে। হাতে জাতীয় পতাকা, দলীয় প্রতীক ধানের শীষ, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে নেতাকর্মীরা মুহুর্মুহু স্লোগান দিয়ে তাঁদের প্রিয় নেতাকে স্বাগত জানাচ্ছেন। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত বিশাল গণসংবর্ধনায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদানের পর তিনি সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন তাঁর চিকিৎসাধীন মা বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে। পুরো এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় বজায় রয়েছে।


দেশে ফিরে খালি পায়ে মাটি স্পর্শ করলেন তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৭ বছর ৩ মাসের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) নিজ দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে তাঁকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ‘বিজি-২০২’ ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

বিমানবন্দরের দাপ্তরিক আনুষ্ঠানিকতা শেষে এবং পরিবারের সদস্য ও দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে কুশল বিনিময় করে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি টার্মিনাল থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন। এ সময় এক অভূতপূর্ব ও আবেগঘন দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর প্রিয় মাতৃভূমিতে পা রেখে তারেক রহমান নিজের জুতা খুলে ফেলেন এবং খালি পায়ে বাংলাদেশের মাটি স্পর্শ করেন। তাঁর এই প্রতীকী শ্রদ্ধা নিবেদন ও মাটির প্রতি মমত্ববোধ উপস্থিত হাজারো নেতাকর্মীকে আবেগাপ্লুত করে তোলে। মাটির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের পর তিনি সিআইপি গেটের সামনে অপেক্ষমাণ একটি বিশেষ বাসে আরোহণ করেন।

এর আগে, আজ সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে তারেক রহমানকে বহনকারী বিমানটি সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি শেষে পুনরায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় এবং বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর মাটি স্পর্শ করে। দীর্ঘ দেড় যুগেরও বেশি সময় পর প্রিয় নেতার ফেরার এই ঐতিহাসিক মুহূর্তকে ঘিরে বিমানবন্দর এলাকায় এখন জনস্রোত ও উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। বিমানবন্দর এলাকা থেকে তিনি সরাসরি পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত বিশাল গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন, যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁর অপেক্ষায় রয়েছেন। এরপর তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁর মা বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যাবেন।


দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশের মাটিতে তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

দীর্ঘ ১৭ বছর ৩ মাসের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশের মাটিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) ঠিক দুপুর ১২টায় তাঁকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সফলভাবে অবতরণ করে। এর মাধ্যমে দীর্ঘ দেড় যুগের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরলেন তিনি।

তারেক রহমানের এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের যাত্রা শুরু হয়েছিল বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে। ‘বিজি-২০২’ ফ্লাইটে করে আসা এই দীর্ঘ যাত্রাপথে আজ সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে তিনি প্রথমে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি শেষে সকাল ১১টা ৪ মিনিটে পুনরায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় বিমানটি। অত্যন্ত আবেগঘন এই সফরে তারেক রহমানের সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন তাঁর সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমান এবং কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান। এ ছাড়াও যুক্তরাজ্য বিএনপির প্রায় ৫০ জন নেতাকর্মী একই ফ্লাইটে তাঁর সঙ্গে দেশে ফিরেছেন।

প্রিয় নেতাকে বরণ করে নিতে আজ সকাল থেকেই শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকায় ছিল সাজ সাজ রব। তাঁর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিমানবন্দরে আগে থেকেই একটি বিশেষ বুলেটপ্রুফ গাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিমানবন্দর এলাকায় কয়েক স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। বিমানবন্দরে নামার পর তারেক রহমান কিছুক্ষণ ভিআইপি লাউঞ্জ ‘রজনীগন্ধা’য় অবস্থান করবেন এবং প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন। এরপর তিনি বিমানবন্দর থেকে সরাসরি সড়কপথে কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে ৩০০ ফিট এলাকায় নির্মিত বিশাল সংবর্ধনা মঞ্চে যাবেন।

নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, ৩০০ ফিট এলাকায় সমবেত লাখো জনতার উদ্দেশ্যে তিনি সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন এবং বিকেল ৩টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করবেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে তিনি সরাসরি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন, যেখানে তাঁর মা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দীর্ঘ সময় পর মায়ের শয্যাপাশে প্রায় এক ঘণ্টা কাটিয়ে তিনি গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯ নম্বর রোডের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় ফিরে বিশ্রাম নেবেন। দীর্ঘ দেড় যুগ পর পরিবারের বড় ছেলের এই ফিরে আসা এবং দলীয় প্রধানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে সারা দেশে বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে এক নজিরবিহীন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনীতিতে এক নতুন ও শক্তিশালী বার্তা প্রদান করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


তারেক রহমানকে বরণে বিমানবন্দরে বিশেষ লাল-সবুজ বুলেটপ্রুফ বাস

আপডেটেড ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:১০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর এই ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রহণ করা হয়েছে বিশেষ প্রস্তুতি। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বিমানবন্দরের সিআইপি গেটে আনা হয়েছে বিশেষভাবে তৈরি একটি লাল-সবুজ রঙের বুলেটপ্রুফ বাস। এই বাসটিতে চড়েই তারেক রহমান বিমানবন্দর থেকে তাঁর পরবর্তী গন্তব্যগুলোতে যাতায়াত করবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। দৃষ্টিনন্দন এই বাসটির দুই পাশে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিশাল প্রতিকৃতি সাঁটানো হয়েছে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বাসের জানালাগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা কাচ।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তারেক রহমান দুপুরে বিমান থেকে নামার পর বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে এই বাসে করে সরাসরি রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত সংবর্ধনা সমাবেশে যোগ দেবেন। সেখানে কয়েক লাখ সমবেত নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেওয়ার পর তিনি যাবেন এভারকেয়ার হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন তাঁর মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শয্যাপাশে কিছু সময় কাটাবেন তিনি। পরিবারের বড় ছেলের এমন আবেগঘন ফেরা এবং নিরাপত্তার এই বিশেষ আয়োজন নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে।

এদিকে, তারেক রহমানের আগমনকে ঘিরে পুরো বিমানবন্দর এলাকাকে একটি অভেদ্য দুর্গে পরিণত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাবের বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। বিমানবন্দরের প্রতিটি প্রবেশপথে তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে এবং শুধুমাত্র নির্ধারিত যাত্রীদেরই ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর প্রিয় নেতাকে বরণ করে নিতে এবং তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিএনপি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের কমতি রাখা হয়নি। মূলত একটি সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ পরিবেশের মধ্য দিয়ে এই ঐতিহাসিক দিনটি উদযাপন করাই এখন সকলের প্রধান লক্ষ্য।


সিলেট থেকে ঢাকার পথে তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সিলেটে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি শেষে এখন রাজধানী ঢাকার পথে রয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে তাঁকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-২০২ ফ্লাইটটি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করে। এর আগে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে ফ্লাইটটি সিলেটে অবতরণ করলে সেখানে এক আবেগঘন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের আকাশসীমায় প্রবেশের পরপরই তারেক রহমান তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে লেখেন— ‘দীর্ঘ ৬ হাজার ৩১৪ দিন পর বাংলাদেশের আকাশে!’ তাঁর এই স্ট্যাটাসটি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় এবং নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করে।

লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া ১২টা) স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানকে নিয়ে এই ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু করেছিলেন তারেক রহমান। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ পর তাঁর এই প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে আসাকে কেন্দ্র করে সিলেট ও ঢাকাসহ সারা দেশের বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে এক নজিরবিহীন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বিশেষ করে সিলেটে তাঁর আগমনের খবরে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় জমান এবং মুহুর্মুহু স্লোগানে তাঁকে স্বাগত জানান।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সব ঠিক থাকলে দুপুর ১২টার দিকে তারেক রহমান ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। বিমানবন্দর থেকে তিনি সরাসরি রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত বিশাল গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সেখানে উপস্থিত লাখ লাখ নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে তিনি ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। প্রিয় নেতাকে বরণ করে নিতে ইতিমধ্যে ৩০০ ফিট এলাকা ও কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এই আগমনকে কেন্দ্র করে রাজধানী জুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।


banner close