বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩

নয়াপল্টনের বিকল্প প্রস্তাব আ.লীগকে দিতে হবে: বিএনপি

নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। ছবি: সংগৃহীত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

সরকার বা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সমাবেশের জন্য বিকল্প জায়গার প্রস্তাব না দিলে নয়পল্টনেই বিএনপি সমাবেশ করবে।

দলটি বলছে, নয়াপল্টনে শনিবারের সমাবেশ করার অনুমতি না দিলে বিকল্প ও গ্রহণযোগ্য জায়গার প্রস্তাব আওয়ামী লীগ বা সরকারকে দিতে হবে।

বুধবার দলটির এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়েছে।

রাজধানীতে সমাবেশ করার মতো ফাঁকা জায়গাগুলো আওয়ামী লীগ সরকারই বন্ধ করেছে জানিয়ে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীন দল মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো বন্ধ করতে চায়।

নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘যদি সরকার মনে করে আমাদের (সমাবেশ) করতে দেবে না, আমরা আমাদের কর্মীদের বলেছি, আমাদের সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। এটা কোনো রকম লগি-বৈঠার মিটিং নয়, এটা কোনো মানুষ হত্যার মিটিং নয়, এটা কোনো অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার মিটিং নয়। এটা হলো একটা শান্তিপূর্ণ মিটিং, জনগণের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে, জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের লক্ষ্যে, জনগণের পেটে ভাতের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এই সমাবেশ।’

‘বাধার সৃষ্টি করলে যদি কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে সরকার দায়ী থাকবে, এ কথা আমরা পরিষ্কার বলে দিতে চাই।’

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দবিতে গত ৮ অক্টোবর থেকে বিএনপি বিভাগীয় শহরগুলোতে করেছে। তার ধারাবাহিকতায় ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে সমাবেশ ডাকা হয়েছে। বিএনপি নয়াপল্টনে ওই সমাবেশ করতে চায়, কিন্তু সড়কে সমাবেশ করতে দিতে নারাজ সরকার। পুলিশ অনুমতি দিয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, তবে সেখানে যেতে চায় না বিএনপি। তারা নয়াপল্টনের বিকল্প হিসেবে আরামবাগ চাইলেও সেটিও একরকম নাকচ করে দেয়া হয়েছে।

বিএনপির এই সমাবেশ নিয়ে এখন রাজনীতির ময়দানে তুমুল আলোচনা চলছে।

সমাবেশের তিন দিন বাকি থাকতে বিএনপি যে প্রচার চালাচ্ছে, সেই লিফলেটে সমাবেশস্থলের নামও উল্লেখ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, বিকল্প প্রস্তাব আওয়ামী লীগকেই দিতে হবে। গ্রহণযোগ্য এবং বিকল্প প্রস্তাব আওয়ামী লীগ অথবা সরকারকেই দিতে হবে। অথবা আমাদের প্রস্তাবকে মেনে নিতে হবে, আমরা সভা করব। আমাদের কার্যক্রম চলছে, আমাদের কার্যক্রম চলবে, এটা কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। ঢাকায় সমাবেশ আমরা করব।’

সরকার যদি বিকল্প আর কোনো প্রস্তাব না দেয় তাহলে কী হবে, জানতে চাইলে আব্বাস বলেন, ‘যদি গ্রহণযোগ্য পছন্দনীয় জায়গা বের না করে তাহলে পল্টনই আমাদের পছন্দের জায়গা। পল্টনেই হবে সমাবেশ।’

পুলিশ বাধা দিলে কী হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুলিশের কাজ পুলিশ করবে, আমাদের কাজ আমরা করব। তবে পুলিশ যেন দলীয় না হয়ে যায়, পুলিশ যেন কোনো দলের হাতিয়ার না হয়ে যায়। তাদেরকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। তাদেরকে মনে রাখতে হবে তারা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের চাকরি করেন, আওয়ামী লীগের চাকরি তারা করে না।’

বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে নয়াপল্টনে বোমাবাজির আশঙ্কা নিয়ে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনেরও সমালোচনা করেন আব্বাস।

তিনি বলেন, ‘আজকের পত্রিকায় এসেছে, বিএনপি-জামায়াত বোমাবাজি করবে। গত তিন মাস ধরে সভা করছি, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করছি, কোনো ঝামেলা হয়নি, এখন আমরা বোমাবাজি করব? আমরা বলতে চাই, যদি কোনো ধরনের ঘটনা ঘটে, এর জন্য সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগ দায়ী হবে। এটা আওয়ামী লীগ করছে। বোমাবাজির ঘটনা সৃষ্টি করছে, জন্ম দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এখনও তারা সভা-সমাবেশ নষ্ট করার জন্য একই প্রক্রিয়া অবলম্বন করছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। গণসমাবেশ ঘিরে একটি রিকশার টায়ার বার্স্ট হলেও দায় সরকারের।’

মির্জা আব্বাস বলেন, পুলিশ যদি বলে কোনো দল সড়কে সমাবেশ করতে পারবে না, তাহলে তারা মেনে নেবেন। তবে আপাতত তাদের সমাবেশ নয়াপল্টনেই হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি সমাবেশ করলে সরকারের বক্তব্য হলো এটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতে পারে। ছাত্রলীগের লোকেরা যখন মিটিং করে, তখন পুলিশ বলে দিচ্ছে এই রাস্তা থেকে এই রাস্তা, এই রাস্তা থেকে এই রাস্তা বন্ধ থাকবে। সেখানে কোনো রকম ঝামেলা হয় না। আমরাও এরকম চাই। আমরা যখন নয়াপল্টনে মিটিং করব, তখন পুলিশ দয়া করে কিছু রাস্তা, যেখান দিয়ে পাবলিক চলাচল করতে পারবে সেটা বলে দিক। বলে দিক, আপনারা এই রাস্তায় চলাচল করবেন, এই রাস্তা বন্ধ থাকবে। আইন সবার জন্য সমান হওয়া উচিত।

‘কিন্তু তারা সেটা না করে বিএনপির বেলায় করে এক রকম, আওয়ামী লীগের বেলায় করে আরেক রকম। ছাত্রলীগের বেলায় করে এক রকম, ছাত্রদলের বেলায় করে আরেক রকম। এমন তো হতে দেয়া যায় না।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এমন যদি করা হয় যে, কেউ রাস্তায় মিটিং করতে পারবে না, আমরা একশ ভাগ মেনে নেব। তবে সেই নিয়ম সবার জন্য হতে হবে। আপাতত আমরা আমাদের সমাবেশের জন্য যে আবেদন করেছি, সে আবেদনের স্থানটা ঠিক আছে। আমরা সেখানেই সমাবেশ করব।’

পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের আলোচনার বিষয়ে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘অনেক নতুন নতুন কর্মকর্তা হয়েছে তো, ঢাকায় কোথায় কোথায় মাঠ আছে, কোথায় কোথায় মাঠ ছিল, এটা তারা জানে না। কোথায় কোথায় সভা করতে হবে, এটা তারা জানে না। আমাদের এমন এমন সব জায়গার কথা বলছে, যেখানে এক সময় মাঠ ছিল, এখন নাই।’

‘উত্তরার কথা বলে, ওখানে তো মাঠই নেই এখন, মার্কেট হয়ে গেছে। ফুলবাড়ীয়াতে মাঠ ছিল, আমরা সেখানে মিটিং করেছি, এখন তো মাঠ নেই, মার্কেট হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগই তো করেছে, আমরা তো করি নাই।’

আব্বাস বলেন, ‘জনসভা করার, কথা বলার যে অধিকারগুলো আছে, আছে সেটাকে বন্ধ করে দেয়ার জন্য সকল মাঠ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ঐতিহাসিক পল্টন ময়দান, মুক্তাঙ্গন... ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে আমি ভাসানীর সভা দেখেছি, মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের সভা দেখেছি। এখানে আমাদের রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সভা দেখেছি, বহু সভা দেখেছি ছোটবেলা থেকে। বাবার সঙ্গে গিয়েছি মিটিংগুলোতে। এখন সেখানে সভা করার জায়গা নাই, আউটার স্টেডিয়াম করে ফেলেছেন।’

বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে পুলিশ দলের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করছে বলে অভিযোগ তুলে আব্বাস বলেন, ‘পুলিশের ভয়ে আতঙ্কে আমাদের কর্মীরা বাসায় ঘুমাতে পারছে না।’

‘তারা সরকারের পেটোয়া বাহিনী, প্রাতিষ্ঠানিক বাহিনী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে নেতা-কর্মীদের হয়রানি করছে, তারা বাসায় থাকতে পারছে না, পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, সদস্যসচিব আমিনুল হক, ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

বিষয়:

অতি দ্রুত দেশে গণঅভ্যুত্থান হবে: খন্দকার মোশাররফ

মঙ্গলবার দুপুরে ড‌্যাবের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৮ মার্চ, ২০২৩ ১৭:১৯
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বাংলাদেশে খুব শিগগিরই গণ-অভ্যুত্থান হবে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘সরকারকে হঠাতে হলে একটি গণ-অভ্যুত্থান প্রয়োজন আছে। গণ-অভ্যুত্থান তখনই সফল হয় যখন সব পেশাজীবী সংগঠন এবং জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়। এই গণ-অভ্যুত্থান অতিদ্রুত বাংলাদেশে হবে। এই গণ-অভ্যুত্থানে সবাই যার যার অবস্থান থেকে অবদান রাখবেন।’

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লা‌বের আব্দুস সালাম হ‌লে ডক্টরস অ্যাসো‌সি‌য়েশন অব বাংলা‌দেশ (ড‌্যাব) আয়োজিত ‘স্বাধীনতার ৫২ বছর ও বিপর্যস্ত স্বাস্থ‌্যব‌্যবস্থা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় খন্দকার মোশাররফ এসব কথা বলেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই সরকার দেশের কোনো কিছুই মেরামত করতে পারবে না। গণতন্ত্র যারা হত্যা করেছে, তারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে পারে না। অর্থনীতিকে যারা হত্যা করেছে, তারা কখনো অর্থনীতি মেরামত করতে পারবে না। যারা স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করেছে, তারা কখনোই নতুনভাবে স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে সাজাতে পারবে না। অতএব তাদের যত দ্রুত বিদায় করা যায় তত দ্রুত জাতি এবং দেশের কল্যাণ হবে।’

বিগত ১৪ বছরে স্বাস্থ্যব্যবস্থার ব্যাপক বিপর্যয় হয়েছে উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, স্বাস্থ্য খাতের এ দুরবস্থা হয়েছে মূলত দলীয়করণের ফলে। এখানে সাধারণ মানুষ সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কেউ কেউ আবার দলীয় পরিচয় দিয়ে যা ইচ্ছা তাই করে। এতে সাধারণ মানুষ তাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না। সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই।

সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারদের প্রাইভেট চেম্বারের বিষয়ে নিন্দা জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘একটা সার্কুলার বেরিয়েছে যে, আগামী ৩০ মার্চ থেকে সরকারি হাসপাতালে বিকেল ৩টার পর থেকে ডাক্তাররা প্রাইভেট চেম্বার করতে পারবে। সরকারের দলীয় লোকদের পকেট ভারী করার জন্য সরকার এ ব্যবস্থা নিয়েছে। এতে জনগণের কোনো কাজে আসবে না।’

ড্যাবের সভাপ‌তি অধ‌্যাপক ডা. হারুন আল র‌শিদের সভাপ‌তি‌ত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব‌্য রাখেন বিএন‌পির চেয়ারপারসনের উপ‌দেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা সাংবা‌দিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপ‌তি কা‌দের গ‌নি চৌধুরী ও ড্যাবের মহাসচিব ডা. মো আব্দুস সালাম।


সাতক্ষীরায় বিএনপির ৮ কর্মী আটক

আপডেটেড ২৮ মার্চ, ২০২৩ ১৪:০৯
প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় গোপন বৈঠক থেকে বিএনপির আট নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। গত সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার গোয়ালাডাঙ্গা ফুলবাড়ী মাঠ থেকে তাদের আটক করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আটকরা হলেন শ্রীউলা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক মল্লিক, আশাশুনি উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শেখ শরিফুল আহছান টোকন, শ্রীউলা ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তার হোসেন, সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি আল-আমিন হোসেন, বড়দল ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মো. শরিফুল ইসলাম, বড়দল ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. লতিফ ও উপজেলা যুগ্ম সম্পাদক রবিউল আওয়াল ছোট।

আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম জানান, সোমবার দিবাগত রাতে গোয়ালাডাঙ্গা ফুলবাড়ী মাঠে জামায়াত-বিএনপির ২০-২৫ জন নেতা-কর্মী গোপন বৈঠক করছিল। এমন খবরে সেখানে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আটজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। বাকিরা বোমা ফাটিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি অবিস্ফোরিত ককটেল, লাঠি এবং দা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আশাশুনি থানার এসআই মহিদুর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।

তবে আটক আব্দুল মল্লিকের ছোট ভাই অহিদ মল্লিক বলেন, ‘আমার বড় ভাই রাতে বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আনুমানিক ২টার দিকে পুলিশ বাড়ি থেকে আমার ভাইকে আটক করে নিয়ে যায়। এ ছাড়া একই সময়ে ছাত্রদল নেতা আল-আমিন এবং আক্তার মেম্বারকে আটক করে নিয়ে যায়।’

উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মশিউল হুদা তুহিন বলেন, ‘তারা কোথাও মিটিং করছিল না। প্রত্যেকের বাড়ি থেকে তুলে এনে আটক দেখিয়েছে পুলিশ।’


দেশে ফের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে: ফখরুল

সোমবার ‘মুক্তিযোদ্ধা গণ সমাবেশে’ বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৭ মার্চ, ২০২৩ ১৯:২০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

যারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তি দেয়া হয়নি, তাই দেশে আবারও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘মুক্তিযোদ্ধা গণ সমাবেশে’ বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ সমাবেশের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নওগাঁয় র‌্যাব এক নারীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর তার মৃত্যু হয়েছে। ডাক্তার বলছে, নিহত ওই নারীর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যে র‌্যাবের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, সেই র‌্যাবের বিরুদ্ধে আবারও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠছে। নিষেধাজ্ঞার পর নাটকীয়ভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমে গিয়েছিল, এখন তা আবার ঘটতে শুরু করছে। কারণ যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

পাক হানাদার সরকারের সঙ্গে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো পার্থক্য নেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে যে সরকার অধিষ্ঠিত তা একাত্তরের পাক বাহিনীর প্রেতাত্মা। তারা সাধারণ মানুষের কথা ভাবে না। স্বাধীনতার পর বাহাত্তর সালেই এই আওয়ামী লীগের আসল মুখোশ খুলে গিয়েছিল।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মনে করে তারা একাই যুদ্ধ করেছে। এ কারণে তারা শেরেবাংলা একে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীদের নাম স্মরণ করে না। স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের নাম তো উচ্চারণই করতে চায় না, বরং তাকে আরও দোষ দেয়।’

সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাকে চিবিয়ে খাচ্ছে। স্বাধীনতা বাংলার মানুষের কাজে লাগছে না। লেবুর হালি ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচের কেজি ৩০০ টাকা। ধনী বাংলাদেশকে গরিব বানিয়ে কিছু মানুষ বিদেশে নতুন করে ধনী হওয়ার চেষ্টা করছে। যেদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থাকবে না সেদিন বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে যাবে।’

মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ নোমান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামসহ অনেকে।


সিলেট জেলা কমিটি নিয়ে বিতর্ক-বিভক্তিতে বিএনপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দেবাশীষ দেবু, সিলেট

কাউন্সিলের প্রায় একবছর পর অনুমোদন পেয়েছে সিলেট জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি। দীর্ঘ সময় নিয়ে গঠিত হলেও সিলেটে এ কমিটিতে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিভক্তি। নেতা-কর্মীদের একাংশের অভিযোগ- আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদে রাখা হয়েছে প্রবাসীদেরও। আছেন ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা এবং ‘বিতর্কিত’ ও ‘বিদ্রোহীরা’।

পদবঞ্চিত ও অবমূল্যায়িত নেতাদের অভিযোগ, জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজেদের নির্বাচনী এলাকার আস্থাভাজনদের নিয়ে এই কমিটি গঠন করেছেন। এমন কমিটি নির্বাচনী বছরে সিলেটে দলের অবস্থানকে আরও দুর্বল করবে।

গত বছরের ২৯ মার্চ সিলেট জেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল হয়। এতে আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী সভাপতি, এমরান আহমদ চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক ও শামীম আহমদ সাংগঠনিক সম্পাদক হন। প্রায় একবছর পর গত রোববার সিলেট জেলা বিএনপির ১৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই এ নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়।

বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, নতুন কমিটিতে বেশ কয়েকজন প্রবাসীকে স্থান দেয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্য বিএনপির সহসভাপতি গোলাম রব্বানী ও যুক্তরাজ্যপ্রবাসী আছকির আলীকে জেলা কমিটির সহসভাপতি, ফ্রান্সপ্রবাসী জালাল খানকে মৎস্যবিষয়ক সম্পাদক, যুক্তরাজ্যপ্রবাসী তামিম ইয়াহইয়াকে সহশিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক, আরব আমিরাতপ্রবাসী ও দুবাই বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাহেদ আহমদ রাসেলকে সহ-অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে।

গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে ফেঞ্চুগঞ্জে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছিলেন ওয়াহিদুজ্জামান সুফি। নতুন কমিটিতে তিনি যুগ্ম সম্পাদক। অন্যদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে গত নির্বাচনে প্রার্থী হননি তৎকালীন কানাইঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ও গোয়াইনঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী। গত কমিটিতে তারা সহসভাপতি পদে থাকলেও নতুন কমিটিতে জায়গা পাননি তারা।

জেলা বিএনপির এক নেতা জানান, ওয়াহিদুজ্জামান সুফি সভাপতির আত্মীয় হওয়ায় ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েও তিনি দলে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন। অন্যরা দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিজেদের বলি দিলেও সভাপতি-সম্পাদকের আস্থাভাজন না হওয়ায় পদ পাননি।

বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, প্রায় চার দশক ধরে যারা সিলেটে বিএনপিকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, এগিয়ে নিয়েছেন এবং সাংগঠনিক শক্তি বাড়িয়েছেন তাদের কাউকেই কমিটিতে রাখা হয়নি। অথচ ‘নিখোঁজ’ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর পরিবার থেকে চারজন নির্বাহী কমিটিতে পদ পেয়েছেন।

গত বুধবার দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সিলেট গেলে তার কাছেও এসব অভিযোগ তুলে ধরেন নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া দলের মহাসচিবের কাছে লিখিতভাবেও কমিটি নিয়ে অসন্তোষের কথা জানানো হয়েছে।

নতুন কমিটি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে মহানগর মহিলা দলের সভাপতি রোকসানা বেগম শাহনাজ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাদের নেতা-কর্মীদের একেবারে গুম করে দেয়। এখন দেখছি আমাদের দলও রাজনীতি থেকে নেতাদের গুম করে দিচ্ছে!’

জেলা বিএনপির সর্বশেষ কমিটিতে সহসভাপতি পদে থাকা এক নেতাকে নতুন কমিটিতে উপদেষ্টা করা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ইলিয়াস আলী আমাদের আবেগের জায়গা। তাকে কমিটিতে রাখা নিয়ে সবাই একমত। তার স্ত্রীও রাজনীতিতে কিছুটা সক্রিয়, তাকেও রাখা যায়। কিন্তু ইলিয়াসের ছেলে বেশির ভাগ সময় যুক্তরাজ্যে থাকেন, রাজনীতিতে সক্রিয় নন। তাকে কেন কমিটিতে রাখতে হবে? ইলিয়াস আলীর ভাইও যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে থাকেন। তাকেও কেন গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হলো?

এদিকে আগে থেকেই একাধিক পদে থাকা কোনো কোনো নেতাকে এবার জেলা বিএনপির কমিটিতে রাখা হয়েছে। একই নেতার একাধিক পদ পাওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে যুবদল নেতা লিটন আহমেদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমাদের কোনো কোনো সহকর্মী আজ পদভারে পিষ্ট। সব জায়গাতেই তাদের পদ-বিচরণ। যারা পদহীন, অত্যাচারিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত ও মামলা-হামলায় জর্জরিত তাদের আহাজারি আপনাদের কানে পৌঁছায় না। অনেক ধন্যবাদ আপনাদের।’

সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার ও মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি আহসানকে জেলা বিএনপির কমিটিতে সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে। নতুন কমিটিকে ‘পকেট কমিটি’ অভিহিত করে তারা দুজনেই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘রাজনীতিতে কমিটি নিয়ে ছোটখাটো মতপার্থক্য, বিতর্ক থাকেই। এগুলো রাজনীতিরই অংশ। আমরা পরিচ্ছন্ন কমিটি দেয়ার শতভাগ চেষ্টা করেছি। সক্রিয়, ত্যাগী, নিবেদিতপ্রাণ নেতাদের সমন্বয়ে কমিটি করা হয়েছে।’

ইলিয়াস পরিবারের চারজন কমিটিতে থাকা প্রসঙ্গে কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘ইলিয়াস আলী আমাদের জনপ্রিয় নেতা। সরকার তাকে গুম করে রেখেছে। আমরা বিশ্বাস করি, একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এই সরকারের পতন ঘটবে এবং ইলিয়াস আলীকে ফিরে পাব। সার্বিক বিবেচনায় তাকে ১ নম্বর সদস্য করা হয়েছে। তার স্ত্রী লুনা দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। স্বাভাবিকভাবেই তিনি জেলার সদস্যপদ পেয়েছেন। ইলিয়াস আলীর ভাই আছকির আলী সাবেক ছাত্রনেতা ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। নিজের যোগ্যতায় তিনি এবার সহসভাপতি হয়েছেন। আর ছেলে আবরার ইলিয়াস মানবাধিকারবিষয়ক বিএনপির একটি কমিটির সদস্য। সে পরিপ্রেক্ষিতে তাকে জেলা শাখায় সদস্য করা হয়েছে। আমরা মূলত যোগ্যতা ও দক্ষতা দেখেছি। কে, কোন পরিবারের, তা দেখা হয়নি।’

ছোটখাটো বিতর্ক কাটিয়ে নতুন কমিটির অধীনে জেলা বিএনপি আরও শক্তিশালী হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।


মানবাধিকার নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনে ‘লজ্জিত’ ফখরুল

রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমানের ১৬ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২২ মার্চ, ২০২৩ ১৭:১৩
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে সঠিক তথ্য তুলে ধরেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার নিয়ে যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে লজ্জিত। দেশে এখন গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা নেই। এটি প্রকাশের পরে আওয়ামী লীগের নেতারা নিজেদের মত বানিয়ে কথা বলছে।’

রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বুধবার বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমানের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় ফখরুল এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলেছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর থেকেই আওয়ামী লীগের একক ক্ষমতা একক নেতৃত্বে বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ সচেতনভাবে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার পুরোনো স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছে।’

গোটা দেশ আজ কারাগারে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সচেতনভাবে বাংলাদেশকে গণতন্ত্র থেকে সরিয়ে ফ্যাসিবাদ, কর্তৃত্ববাদ, একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করছে। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এ সরকারের পতন ঘটাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবাইকে ছোট করে দেখাতে পছন্দ করে। আওয়ামী লীগ কাউকে সম্মান দিতে জানে না। তাজউদ্দীন আহমদ, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নামও নেয় না মুখে।’

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ নির্মাণে যেসব মানুষ অবদান রাখছে, তাদের স্মরণ করা হয় না। তাদের নামগুলো পরিকল্পিতভাবে ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ সরকার।’

বিএনপির সাবেক মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আজ আমরা যেসব কথা বলছি, বাংলাদেশ স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব, দেশের গণতন্ত্র, ন্যায়-নীতি, অর্থনীতির বৈষম্য দূর করে যথাসাধ্য সাম্য প্রতিষ্ঠা করা, স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা ছিল কে এম ওবায়দুর রহমানের স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন আজ ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। যে দেশে গণতন্ত্র নেই, সে দেশে মানবাধিকার থাকতে পারে না। দেশের মানবাধিকার নেই সেটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণকে বাদ দিয়ে অব্যাহতভাবে ক্ষমতা দখলের রাজনীতি সৃষ্টি করছে। সংবিধানকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে তারা। সংবিধানের কথা বলা আওয়ামী লীগের মুখে শোভা পায় না। নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা ভোগ করছে আওয়ামী লীগ।’

দেশে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চলছে মন্তব্য করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের কাছে জনগণ বলে কোনো শব্দ নেই। আর এ জন্য সংবিধানের দোহাই দিয়ে জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতা দখল করেছে। কোনো আলাপ-আলোচনার সুযোগ নেই, রাস্তা দখল করে ফয়সালা হবে। সরকারের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ জনগণ ছাড়বে না।’

আওয়ামী লীগ ভোটে বিশ্বাস করে না মন্তব্য করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘যুবকদের এখন লড়াই করার সময়। ছাত্রলীগের নেত্রীরা এখন গরু চোরের সরদার। ক্ষমতা মাটিতে পড়ে থাকবে, তবু আওয়ামী লীগকে থাকতে দেয়া হবে না। এ লড়াই বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের লড়াই। গণ-অভ্যুত্থান, গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের বিদায় হবে।’

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বক্তব্য দেন।

বিষয়:

সেতুমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি

আপডেটেড ২১ মার্চ, ২০২৩ ২৩:১২
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়েতে ১৯ মার্চের বাস দুর্ঘটনায় সরকারের সড়ক বিভাগকে দায়ী করে সেতুমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভা থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সভা মনে করে, এই দুর্ঘটনার জন্য সরকারের সড়ক বিভাগ সম্পূর্ণ দায়ী। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সব দায় নিয়ে সেতুমন্ত্রীর অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয় সোমবার। একই সভায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সরকারদলীয় আইনজীবী ও পুলিশের হামলা, গ্রেপ্তার, মামলা এবং ভোট ডাকাতির উল্লেখ করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটি।

হজ প্যাকেজের সর্বনিম্ন টাকার পরিমাণ হজ পালনেচ্ছুদের নাগালের বাইরে জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি। সেই সঙ্গে ১৯ মার্চ ঢাকার বনানী ক্লাব থেকে সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোমেন আলীসহ প্রায় ৫১ জনকে গ্রেপ্তার ও পরে আদালতে দুই দিন রিমান্ড মঞ্জুরের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় সভায়।

সভায় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান এবং ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।


শওকত মাহমুদ বিএনপি থেকে বহিষ্কার

শওকত মাহমুদ
আপডেটেড ২১ মার্চ, ২০২৩ ১৫:৪৯
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

মঙ্গলবার বিএনপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক মো. তাইফুল ইসলাম টিপুর স্বাক্ষর করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে লিপ্ত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে এর আগেও শওকত মাহমুদকে একবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছিল। তখন তাকে প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হয়েছিল। গত ১৬ মার্চ কলামিস্ট ফরহাদ মজহারের সঙ্গে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে রাজধানীর একটি হোটেলে কিছু রাজনীতিবিদ ও আমলাদের নিয়ে নৈশভোজের আয়োজন করেন তিনি, যা দলের কাউকে তিনি জানাননি। এ কারণে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিষয়:

খালেদা জিয়ার নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচার শুরু

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।ফাইল ছবি
আপডেটেড ১৯ মার্চ, ২০২৩ ১৮:০৪
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বহুল আলোচিত নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় করা মামলার অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্যে দিয়ে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে।

রোববার কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৩ মে দিন ধার্য করেন আদালত। এ দিন খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার হাজিরা দেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজল ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী জিয়া উদ্দিন জিয়া দৈনিক বাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘মামলার আসামি খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সি এম ইউছুফ হোসাইন ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সেলিম ভূঁইয়া আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।’

বিএনপির আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার জানান, এ মামলায় আট জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে।

কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদক এ মামলা করে।

তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে সরকারে থাকাকালে খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন ক্ষমতার অপব্যবহার করে কানাডার কোম্পানিটিকে অবৈধভাবে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুবিধা পাইয়ে দেন। অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।

মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন মুখ্যসচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

এর মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

আসামিদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন আল মামুন বর্তমানে কারাগারে আছেন। নাইকো রিসোর্সেস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ পলাতক রয়েছেন। বাকিদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।

দুদকের করা অন্য দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়।

ওই কারাগার থেকে পরে চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়াারপারসনকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায়ই সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়ে তিনি গুলশানের বাসায় যান।


ভারতীয় হাইকমিশনারের নৈশভোজে বিএনপির ৫ নেতা

আপডেটেড ১৬ মার্চ, ২০২৩ ২১:৪১
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার নৈশভোজের আমন্ত্রণে গেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ পাঁচ নেতা।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাজধানীর বারিধারায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার আমন্ত্রণে তার বাসভবনে যান বিএনপির পাঁচ নেতা।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে আছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।

এর আগে ১২ মার্চ সকাল ১০টার দিকে গুলশান-২ নম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত আটটি দেশের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল।

বিষয়:

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিএনপির নানা কর্মসূচি

বিএনপির পতাকা
আপডেটেড ১৬ মার্চ, ২০২৩ ২১:৪২
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত যৌথ সভায় এসব কর্মসূচি নেয়া হয়। পরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২৬ মার্চ সকাল ৬টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশব্যাপী সব দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। ওইদিন সকাল ৭টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে দলের কেন্দ্রীয় নেতাসহ নেতাকর্মীরা জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্দেশে যাত্রা এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।’

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ঢাকায় ফিরে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করা হবে। ওই দিন মাজার প্রাঙ্গণে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের উদ্যোগে দোয়া অনুষ্ঠিত হবে।’

এছাড়া ২৫ মার্চ বেলা ১১টায় মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মহানগর নাট্যমঞ্চে অথবা নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

বিএনপি মহাসচিব আরও জানান, ২৭ মার্চ বেলা ১১টায় মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘মুক্তিযোদ্ধা গণসমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে। সারাদেশে জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসহ সব ইউনিট মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও অন্যান্য কর্মসূচির আয়োজন করবে। এর বাইরে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসমূহ নিজ উদ্যোগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবে।

যৌথ সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদকরা অংশ নেন।


সরকারের পতন সময়ের ওপর ছাড়ল বিএনপি

আপডেটেড ১৫ মার্চ, ২০২৩ ১৩:৩১
আহমেদ দীপ্ত

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে অনেকটাই অনড় বিএনপি। তাদের দাবি, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন। ১০ দফা দাবি ও ২৭ দফা রূপরেখা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার পতনের হাঁকডাক দিচ্ছেন দলটির নেতারা।

বিএনপির নেতারা বলছেন, নির্বাচনে অংশ নেয়া তাদের এখন মূল লক্ষ্য নয়। তাদের প্রধান লক্ষ্য বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো। আর সেটি করা হবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেয়ার বিষয়ে অনেকটা দৃঢ় অবস্থান জানালেও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে দলটির বক্তব্য হচ্ছে, সবকিছু ‘সময়ের ওপর নির্ভর করবে’।

গত বছরের আগস্ট থেকে কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে সরব হয়ে ওঠে বিএনপি। ১০ ডিসেম্বর বর্তমান সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি ঘোষণা করে দলটি। ওই দাবির সঙ্গে মিল রেখে দাবি ও কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপির সমমনা দলগুলো। একই দিনে একই ধরনের কর্মসূচি নিয়ে গত তিন মাসে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলন তৈরি করেছে দলগুলো। এসব কর্মসূচির দিনে পাল্টা শান্তি সমাবেশ নিয়ে রাজনীতির মাঠে অবস্থান নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

বিএনপি ও তার যুগপৎ সঙ্গীদের কর্মসূচি থেকে সরকারের পদত্যাগের দাবি করা হলেও চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করছেন না তারা। তারা বলছেন, ধাপে ধাপে কর্মসূচি ও আন্দোলনের মাত্রা বাড়ানো হবে। সরকার যদি তাদের অবস্থান থেকে সরে না আসে তা হলে সময় ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে নতুন কর্মসূচি নেয়া হবে। সরকার এখন নির্বাচনের ধুয়া তুলে বিএনপি ও আন্দোলনের সঙ্গীদের দৃষ্টি সরাতে চায়। অতীতের মতো সরকারের কোনো ফাঁদে বিএনপি পা দিতে চায় না।

বিএনপি নেতারা বলছেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির ডাকা সংলাপে অংশ নেয়নি তারা। একই সঙ্গে নবগঠিত নির্বাচন কমিশন ১ বছর পার করলেও তাদের আহ্বানেও সাড়া দেয়নি বিএনপি। পাশাপাশি আন্দোলনের অংশ হিসেবে জাতীয় সংসদ থেকে দলীয় সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করেছে। এ সবই সরকার পতনে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ, যা ধাপে ধাপে আন্দোলনকে বেগবান করছে। এ বছরের মধ্যে সরকার পতনের হুঁশিয়ারি দিলেও পদযাত্রা, মানববন্ধনের মতো শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে আটকে আছে দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি।

দলটির নেতারা সরকার পতনের ঘোষণা দিলেও তার রূপরেখা সম্পর্কে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। যুগপৎ আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করতে বিএনপি ১০ দফা, গণতন্ত্র মঞ্চের ১৪ দফা ও আন্দোলন সঙ্গীদের ঘোষিত দফাগুলোকে একত্রিত করে সমন্বিত ঘোষণার কথা ছিল। সে প্রক্রিয়াও আপাতত ঝিমিয়ে পড়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনেই অংশ নেবে না বিএনপি। সে কথা আমরা বারবার বলেছি। এটিই আমাদের বক্তব্য। এমনকি বিএনপি ঘোষিত ১০ দফার প্রথমটিই হচ্ছে, সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ জাতীয় সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা। এগুলো হলেই আমরা নির্বাচনে যাব। ‘আওয়ামী লীগ কী বলল, না বলল, তাতে আমাদের এখন যায়-আসে না। যদি শেখ হাসিনার অধীনেই আওয়ামী লীগ আরেকটি নির্বাচনের আয়োজন করে, তখন বিএনপি কী করবে তা নির্ভর করে পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে। সময়ই জবাব দেবে সবকিছুর।’

নির্বাচনের আগে দলের অবস্থানের বিষয়টি নিয়ে একই সুরে কথা বললেন স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সেলিমা রহমান। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না এবং এই সরকারের অধীনে কোনো তামাশার নির্বাচনও করতে দেব না।’

সরকার যদি নির্বাচনের আয়োজন করে সেটি বিএনপি প্রতিহত করবে কি না- জানতে চাইলে সেলিমা রহমান বলেন, ‘সেটা সময় বলে দেবে। আমাদের কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণ আছে। বিএনপির পদযাত্রা, মানববন্ধনসহ যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচিগুলোতে সাধারণ মানুষ অংশ নিচ্ছে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে এই সরকারের পতন, ক্ষমতার পালাবদল হোক, এটাই আমরা চাচ্ছি।’

নির্বাচন নিয়ে বিএনপির ভাবনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সেলিমা রহমান বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমরা কোনো চিন্তাই করছি না আপাতত। আমাদের আন্দোলনের লক্ষ্য এখন একটাই- এই সরকারের পতন করাতে হবে। নির্বাচন কখন হবে, কী হবে, কে আসবে তা সরকার সরকারের মতো করে বলছে। আমরা সেটি নিয়ে চিন্তাই করছি না।

আগামী দ্বাদশ নির্বাচন-২০১৪ সালের মতো হবে নাকি, ২০১৮ সালের মতো হবে, নাকি তামাশার নির্বাচন হবে, সেসব নিয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি না।

গত ১৩ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে ভার্চুয়ালি সভা করে বিএনপি। সে সভায় আলোচনা শেষে ছয়টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তার মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত হচ্ছে, ‘বর্তমানে অনির্বাচিত, দুর্নীতিপরায়ণ ফ্যাসিস্ট সরকারের দুর্নীতির খতিয়ান জনসমক্ষে উন্মোচন করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া।’

এ বিষয়ে সেলিমা রহমান বলেন, ‘বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার গত ১৫ বছরে দুর্নীতির পাহাড় গড়ে তুলেছে। সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীদের নানাভাবে অনিয়মের সুবিধা দিয়েছে। বিদ্যুৎ খাতসহ এমন কোনো খাত নেই যেখানে দুর্নীতি হয়নি। এসব জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে।’

বিষয়:

কারাবন্দি রিজভীকে নির্যাতনের অভিযোগ বিএনপির পেশাজীবী নেতাদের

মঙ্গলবার দুপুরে ডিআরইউতে নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৪ মার্চ, ২০২৩ ১৮:৪৩
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

কারাবন্দি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সমমনা পেশাজীবী নেতারা। তারা বলেছেন, ‘রিজভী গুরুতর অসুস্থ। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না।’ অবিলম্বে রহুল কবির রিজভীর মুক্তি দাবি করেন তারা।

রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) মঙ্গলবার দুপুরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর মুক্তির দাবিতে নাগরিক সমাজের ব্যানারে এ সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়া এবং রিজভীসহ বিএনপির যারা কারাবন্দি আছেন, তাদের মুক্তি যতদিন না হবে, পেশাজীবী নেতারা ততদিন রাজপথে থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।’

রুহুল আমিন গাজী আরও বলেন, ‘কারাগারের ভেতর এবং কারাগার থেকে আদালতে আনা-নেয়ার সময় বিএনপি নেতা রিজভীকে নানাভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। তিনি অসুস্থ। অথচ তাকে প্রিজন ভ্যানে দাঁড় করিয়ে আদালতে আনা-নেয়া করা হয়। তা খুবই অমানবিক।’

সরকারের নির্দেশে কারা কর্তৃপক্ষ এমনটা করছে বলেও মন্তব্য করেন রুহুল আমিন গাজী।

সভায় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, ‘আগামীতে শেখ হাসিনার অধীনে দেশের মাটিতে কোনো নির্বাচন হবে না। হতে দেয়া হবে না। আগে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে, তারপর নির্বাচন হবে।’

বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, ‘সরকার মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছে। এটা শুধু দেশের মানুষ নয়, সারা বিশ্বের মানুষ জানে। সেই কারণে খালেদা জিয়া সারা পৃথিবীতে আলোকিত হয়েছেন গণতন্ত্রের মা হিসেবে।’

বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক রাশেদুল হকের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির সহ তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ও পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা মজিবুর রহমান ও অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম।

সভায় অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া বলেন, ‘সরকার রিজভীকে ভয় পায়। এ জন্য তাকে মুক্তি দিচ্ছে না। একজন দাগী আসামিকে যেভাবে আদালতে আনা হয়, অসুস্থ রিজভীকেও সেভাবে আনা হয় আদালতে।’

বিষয়:

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে বসবে না বিএনপি

মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৪ মার্চ, ২০২৩ ১৫:০৯
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিএনপি কোনো সংলাপ করবে না বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘তার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে আমরাও কোনো সংলাপ করব না। কারণ তিনি কথা দিয়ে কথা রাখেন না।’

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের জবাবে ফখরুল এসব কথা বলেন। ‘বিদ্যুৎখাতে জনস্বার্থবিরোধী অসম চুক্তি, নজিরবিহীন দুর্নীতি, চলমান মহা-অব্যবস্থাপনা ও বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে’ এ সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি।

২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল বিএনপি। সেই প্রসঙ্গে টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওই সংলাপে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আর কোনো গ্রেপ্তার (বিএনপি কর্মীদের) হবে না, পুলিশি হয়রানি হবে না, গায়েবি মামলা হবে না। কিন্তু এর তিনদিন পর থেকে আমাদের প্রার্থীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে।’

‘যত চুক্তি তত লাভ’
সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা নীতি সম্পূর্ণ মুখ থুবড়ে পড়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গত ১৪ বছরে বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের শাসনামলে দেশের সমগ্র বিদ্যুৎ খাতে ভয়াবহ দুর্নীতি, লুট ও অব্যবস্থাপনা হয়েছে। এর কুফল এখন সমগ্র দেশবাসীকে ভোগ করতে হচ্ছে। বর্তমানে দেশকে একটি ভয়াবহ অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এরই মধ্যে ভারতের আদানি পাওয়ারের সঙ্গে সরকারের আরেকটি একপেশে ও দেশের জন্য অত্যধিক ক্ষতিকর চুক্তি প্রকাশ হল।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অপরিকল্পিতভাবে চাহিদার অতিরিক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমোদন, অযোগ্য কোম্পানিকে রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রকল্প প্রদান, প্রতিযোগিতা ছাড়া বিনা টেন্ডারে অতিরিক্ত দরে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি এবং স্বল্প মেয়াদের রেন্টাল ও কুইকরেন্টালগুলোর মেয়াদ বাড়িয়ে বিদ্যুৎ খাতে বছরের পর বছর খরচ বাড়ানো হয়েছে। সরকার পরিণাম না ভেবে দেশের স্বার্থবিরোধী প্রাইভেট সেক্টরেও যৌথমালিকানার নামে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের আনন্দে বিভোর ছিল, এখনো আছে। এখন এক শ্রেণির ক্ষমতাবান ব্যক্তি ও সরকারি কর্তাদের পৌষ মাস। যত চুক্তি তত লাভ। কুইক রেন্টাল ও আইপিপি চুক্তিগুলো এমনভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে যাতে সরকার-ঘনিষ্ঠ অলিগার্কদের কৌশলে অবৈধ ও অনৈতিক আর্থিক সুবিধা পাইয়ে দেয়া যায়।’

‘দুই মাসে দাম বেড়েছে তিন বার’
বিদ্যুত-গ্যাসের দাম বাড়ানোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার গত দুই মাসে তিন বার বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুতের মূল্য আরও ৫ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। এ নিয়ে গত ১২ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১২ বার। এতে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১১৮ শতাংশ বাড়ানো হলো। অপরদিকে সরকার গত সাড়ে ১৩ বছরে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে ৪০০ শতাংশ। গ্যাসের দাম বৃদ্ধি উসকে দেবে মূল্যস্ফীতি, জীবনযাপন কষ্টকর হয়ে পড়বে। কিন্তু জবাবদিহিহীন এ সরকারের তাতে কিছু যায় আসে না।’

‘সরকারের অদূরদর্শিতা ও দুর্নীতি’ দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবস্থাকে ভয়াবহ সংকটে নিক্ষেপ করছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের মানুষ আজ বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। বিদ্যুতের অভাবে দেশের কলকারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বিদ্যুৎবেগে কমছে। দেশের গড় মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। জনগণের কাছে জবাবদিহি নেই বলেই সরকারের পক্ষে জাতীয় স্বার্থবিরোধী এসব কাজ করা সম্ভব হচ্ছে।’

বিএনপি মহাসচিব লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘ট্যারিফ কমিশন সূত্র বলছে, অক্টোবর থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম কমছে। বিদ্যুৎ সচিবও বলছেন, কয়লার দাম কমছে এবং আরও কমবে। প্রশ্ন হলো কয়লার কমতি দামের মধ্যেও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলো কেন? এদিকে রামপাল ও বরগুনার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লার দাম বেশি ধরা হচ্ছে মর্মে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংক আপত্তি জানিয়েছে বলে জানা যায়।’

বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে অসম চুক্তির দায় সরকারের মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এসব চুক্তি সম্পাদনের আগে দেশের স্বার্থ সুরক্ষার দায়িত্ব অবশ্যই সরকারের। কিন্তু সরকার সে গুরুদায়িত্ব পালনে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা বাকরুদ্ধ হয়ে যাই এই ভেবে যে, একটি দেশের সরকার দেশ ও জনগণের এত বড় ক্ষতি কীভাবে করতে পারে।’


banner close