প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার হটাতে অতি বাম, অতি ডান মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘বিরোধী দলের আন্দোলন সরকার ঠাণ্ডা মাথায় পর্যবেক্ষণ করছে। বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে তাদের লক্ষ্য একটাই—হটাও শেখ হাসিনা। তারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেও অতি বাম অতি ডান ইকুয়াল টু শূন্য।’
শনিবার দুপুরে ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে কাদের এসব কথা বলেন।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার দাবিতে বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের নামে মাঠে সংঘাত করে লাভ নেই। নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সরকার শুধু রুটিন ওয়ার্ক করবে। নির্বাচনে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো সুযোগ নেই।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের উসকানিমূলক অপতৎপরতা, সরকার পতনের দিবা স্বপ্ন সফল হবে না। আমরা বিশ্বাস করি তারা নির্বাচনে আসবে, সব নিবন্ধিত দলকে আমরা স্বাগত জানাই।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফেনী ২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান, পুলিশ সুপার জাকির হাসান, ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল প্রমুখ।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওবায়দুল কাদের হেলিকপ্টারযোগে ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজে অবতরণ করেন। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সংবর্ধনা নিয়ে তিনি নিজ জেলা নোয়াখালীর উদ্দেশে যাত্রা করেন।
বড় বাজেটের নামে ভ্যাট-ট্যাক্সের বোঝা জনগণের ওপর চাপানো হয়েছে বলে মনে করছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ। দলটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘স্বাধীনতার পর দেশের বয়স যত বাড়ছে, বাজেটের আকার তত বড় হচ্ছে। এবারের বাজেটও তার ব্যতিক্রম নয়।’
প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে এক প্রতিক্রিয়া ফিরোজ আরও বলেন, ‘ঘাটতি বাজেট হলেও সরকারকে খরচ তো করতেই হবে। তাই ঘাটতি পূরণের উপায় হিসেবে বলা হয়েছে, ঘাটতি পূরণ (অর্থসংস্থান) করা হবে দুইভাবে- দৈশিক ঋণ ও অভ্যন্তরীণ ঋণ নিয়ে ‘
বাজেটে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বরাদ্দ তুলনামূলকভাবে না বাড়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা যা গত বাজেটে ছিল ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। সেই ৫ শতাংশের ঘরেই থেকে গেল স্বাস্থ্য বাজেট।’
নিম্ন প্রবৃদ্ধি, সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, সর্বনিম্ন বৈদেশিক মুদ্রার কর্তৃত্বপরায়ণতা ও বৈদেশিক চাপের মুখে প্রদত্ত বাজেটে সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি বলে মনে করছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি- সিপিবি। দলটি বলছে, বাজেটে দুর্নীতি ও বৈষম্য মুক্তির নির্দেশনা নেই, বরং জনগণের কাঁধে নানাভাবে করের বোঝা চাপবে- যা সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও বিপর্যস্ত করে তুলবে।
সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত বাজেট সম্পর্কে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় আরও বলেছেন, ‘নয়া উদারনীতিবাদী অর্থনৈতিক দর্শনের ভিত্তিতে প্রণীত বাজেট বড় লোকের স্বার্থই রক্ষা করবে।’ বাজেটে পাচারের টাকা ফেরত আনা ও খেলাপি ঋণ উদ্ধারে বিশেষ নির্দেশনা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়, সাধারণ মানুষের উপার্জিত অর্থই লুট হয়ে যাচ্ছে, অথচ এটি উদ্ধারে কোনো ভূমিকা নেই।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই বাজেটে ঘাটতি আরও বৃদ্ধি পাবে ও আরও নির্ভরতার ঝুঁকি থেকে যাবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ধারায় এ বাজেট প্রণীত হয়নি। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সংবিধানের নির্দেশনা মানা হয়নি। মুক্তবাজারের নামে লুটপাটের ধারা আমাদের সংবিধান অনুমোদন দেয় না, অথচ ওই ধারায় বাজেট প্রণীত হয়েছে। এ বাজেট আমলা ও লুটেরানির্ভর। এটা প্রণয়নে জনগণের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। বাজেটের ঘাটতি পূরণের জন্য সাধারণ মানুষ, মধ্যবিত্তের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের বোঝা চাপানো হবে। এই বাজেট আয় বৈষম্য, সম্পদ বৈষম্য, খাদ্য-শিক্ষা-স্বাস্থ্য বৈষম্য, আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করতে কোনো ভূমিকা নেবে না বরং বৈষম্য আরও বাড়াবে।’
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বাজেটটা এমনভাবে করা হয়েছে, মানুষের কষ্টটা লাঘব হবে। দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে।’
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বাজেট উপস্থাপনের পর সংসদের বাইরে সাংবাদিকদের কাছে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় কাদের এ কথা বলেন।
নতুন বাজেটকে জনবান্ধব বলার কারণ জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জনবান্ধব এজন্য বলেছি, সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে এ বাজেটটা প্রণীত হয়েছে।’
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার। এটি বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ২৩তম ও বাংলাদেশের ৫২তম বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেট ২৬ জুন অনুমোদন হবে আর ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে।
সরকার ‘ঋণ করে ঘি খাওয়ার বড় বাজেট দিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী অর্থনীতি বাস্তবায়নে স্মার্টলি লুটপাটের জন্য বাজেট দিয়েছে সরকার। ঋণ করে ঘি খাওয়ার জন্য এত বড় বাজেট দেয়া হয়েছে। এর বোঝা জনগণকে বইতে হবে।’
রাজধানীর বনানীতে বৃহস্পতিবার বিকেলে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী তার বাসভবনে ২০২৩–২৪ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন। এ সময় আমির খসরুর বাসার ভেতরে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা অবস্থান করছেন জানিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এই ধরনের একটা সরকার দেশের জন্য কী ধরনের বাজেট দেবে তা বোঝাই যাচ্ছে। বিরোধী দলের প্রতিক্রিয়া শুনতেও রাজি নয় তারা।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার লাখ-লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। অথচ দেশে রিজার্ভের টাকা নেই। সাধারণ মানুষ অনেকে আজ ঋণ করে চলছেন। তাদের সঞ্চয় শেষ হয়ে গেছে। অনেকে দুই বেলার জায়গায় একবেলা খেয়ে থাকছেন।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ শিরোনামে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সংসদে পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি ডিজিটাল উপস্থাপনার মাধ্যমে বাজেট পেশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় সংসদে উপস্থিত ছিলেন।
এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ঠিক করা হয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ।
আওয়ামী লীগ কখনো ষড়যন্ত্র অথবা পেছনের দরজা দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেনি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনো খালি মাঠে গোল দেয়নি এবং কাউকে খালি মাঠে গোল দেয়ার সুযোগও দেয়নি। আমরা সর্বদা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন চাই। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে, জনগণই ক্ষমতার একমাত্র উৎস।’
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে কাদের আরও বলেন, ‘বিএনপি তথাকথিত আন্দোলনের নামে তাদের নেতা-কর্মীদের দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত সন্ত্রাসী ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। আগুনসন্ত্রাসের মাধ্যমে শত শত নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তারা দেশের গণতান্ত্রিক সুষ্ঠু পরিবেশ ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে উগ্রবাদী অপশক্তির সন্ত্রাসীদের লালন-পালন এবং পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির এসব সন্ত্রাসীবাহিনী জনগণের জানমালের ক্ষতিসাধন করে, অথচ এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলেই গণমাধ্যমের সামনে তারা বিরোধী দল দমনের বানোয়াট অভিযোগ উত্থাপন করে। সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করতে বদ্ধপরিকর। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কেউ জড়িত থাকলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আসতে হবে। এটাই সর্বজনীন নীতি।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম খালি মাঠে গোল দেয়ার কথা বলেছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সাত দশকের বেশি সময় ধরে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ও আইন প্রতিষ্ঠায় নিরন্তন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। বর্বর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী থেকে শুরু করে সামরিক স্বৈরাচারদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাকে অক্ষুণ্ণ রেখেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোট আমলের সন্ত্রাস-দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এবং ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে তাদের সংঘটিত অগ্নিসন্ত্রাসসহ বিভিন্ন সময়ের সন্ত্রাসীকর্মকাণ্ডের কারণে দায়েককৃত মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া দীর্ঘ দিন যাবত চলমান রয়েছে। সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ নয় বলেই প্রচলিত আইন অনুযায়ী দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই মামলাসমূহ পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হয়ে বিচারিক প্রক্রিয়াকে চিরাচরিতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন।’
কাদের বলেন, ‘বিএনপি একদিকে তাদের নেতা-কর্মীদের সন্ত্রাসের পথে ঠেলে দেয়, অন্যদিকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেই বিরোধীদল দমনের তথাকথিত অভিযোগ তোলে। একদিকে তারা গণতন্ত্রে আস্থা না রেখে নির্বাচন বানচাল এবং নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্র করে, অন্যদিকে সরকারের ওপর তারা দোষ চাপায়। তাদের এই দ্বিচারিতাই বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং বিকাশের প্রধান অন্তরায়।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের কথা বলেছেন। বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস নয়, বরং জননেত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় রাষ্ট্রকাঠামো শক্তিশালী এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে সুদৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়িয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠন আইন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইনসহ বহুমাত্রিক পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহের বিকাশে বিএনপি কি কখনো কোনো ধরনের উদ্যোগ নিয়েছিল? বিএনপি ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে প্রহসনের হ্যাঁ/না ভোটের আয়োজন, ছলচাতুরি ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল, ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারির প্রহসনমূলক ভোটারবিহীন নির্বাচন, ২০০৬ সালে তাদের রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা’র অপমৃত্যু ঘটানো, ১ কোটি ২৩ লক্ষ ভুয়া ভোটার সৃষ্টিসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা করেনি।”
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। সফল রাষ্ট্রনায়ক দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আবারও জনগণের বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে উন্নয়ন- অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় এগিয়ে যাবো।’
সাবেক আলোচিত ছাত্রনেতা ও জাসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল আলম খানের অবস্থা সংকটাপন্ন।
তাকে বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়া হয়।
সিরাজুল আলমের ভাই পেয়ারু মো. ফেরদৌস আলম খান জানান, গত ৭ মে রাত সাড়ে ১০টায় শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা নিয়ে ঢাকার পান্থপথে শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি হন সিরাজুল আলম। পরে তাকে চিকিৎসকদের পরামর্শে গত ২০ মে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সিরাজুল আলম খানের পরিবার এবং শুভানুধ্যায়ীরা তার শারীরিক সুস্থতা এবং দ্রুত আরোগ্যের জন্য দেশবাসীর দোয়া চেয়েছেন।
নতুন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষের জন্য বাজেটে কোনো সুখবর নেই; বাস্তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে (আইএমএফ) খুশি রেখেই এই বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ হওয়ার পর এক প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় সাইফুল হক বলেন, ‘বাজেটে আশার পরিবর্তে হতাশা বাড়িয়ে তোলা হয়েছে। সেবাখাতে ভর্তুকি কমিয়ে বাজেটে প্রকৃত বরাদ্দ সংকুচিত করা হয়েছে। আইএমএফকে আস্থায় নিতে শহর ও গ্রামের গরিবদের জন্য চলে আসা প্রকল্পসমূহে প্রদত্ত বরাদ্দ ও ভর্তুকিও কমিয়ে আনা হয়েছে। আইএমএফের শর্ত পূরণে বাড়তি ৪৮ হাজার কোটি টাকা কর আদায় করতে হবে। সেটিও দিতে হবে সাধারণ মানুষকে। ৪৪টি সেবা পেতে ন্যূনকর হিসেবে যে দুই হাজার টাকা গুনতে হবে তা রীতিমতো অত্যাচারের শামিল।’
তিনি বলেন, ‘একটি অর্থনৈতিক দুঃসময়ে যে ধরনের সমতাধর্মী আশা জাগানিয়া বাজেট দরকার তা বাজেট প্রস্তাবনায় অনুপস্থিত। খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্য কমবে কি না ও জীবনযাত্রার অসহনীয় ব্যয়ভার কমবে কি না বাজেটে এরকম কোনো আশাবাদী প্রস্তাব নেই। মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে মানুষের প্রকৃত আয় বৃদ্ধি পাবে কি না তারও কোনো নির্দেশনা নেই।’
সাইফুল হক বলেন, ‘বাজেটে রাজস্ব ব্যয়সহ অনুৎপাদনশীল ব্যয় কমিয়ে আনার কোনো প্রস্তাবনা নেই। তাছাড়া ঋণ করে ঘি খাওয়ার মাশুল দিতে গিয়ে বাজেটের টাকার এক বড় অংশ বেরিয়ে যাবে ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধ করতে। বাজেটের দুই লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা ঘাটতি পূরণের আসল বোঝা শেষ পর্যন্ত বহন করতে হবে সাধারণ মানুষকে। করের আওতা বৃদ্ধি করে ও বিত্তবানদের ওপর বর্ধিত কর আদায় করে রাজস্ব বৃদ্ধির দৃশ্যমান ও বিশ্বাসযোগ্য কোনো প্রস্তাবনা বাজেটে নেই।’
প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বন্ধ পাটকল ও চিনিকলসহ জাতীয় শিল্পের বিকাশ ও প্রকৃত উদ্যোক্তাদের জন্য বাজেটে নির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব নেই। শ্রমিকদের জন্য জাতীয় ন্যূনতম মজুরি কমিশন ঘোষণা ও মহার্ঘ ভাতা চালুর ব্যাপারেও প্রস্তাব নেই। কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দও নিতান্ত অপ্রতুল। স্মার্ট বাংলাদেশের যাত্রী হওয়ার জন্য নাগরিকদের যে অধিকার ও সক্ষমতা দরকার অর্থমন্ত্রী সে ব্যাপারেও কোনো আশাবাদ সৃষ্টি করতে পারেননি। এই বাজেট দারিদ্র্য ও নিঃস্বকরণ প্রক্রিয়াকে পরোক্ষভাবে আরও জোরদার করবে।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতির পরও বিএনপির শুভবুদ্ধির উদয় হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি মহাসচিবের (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) বক্তব্যে মনে হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসানীতি চালু করার পরও তাদের কোনো শুভবুদ্ধির উদয় হয়নি। তারা আগের মতো জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি, নির্বাচন প্রতিহত করা, বর্জন করার রাজনীতি থেকে সরে আসতে পারছে না। তবে তাদের সরে আসতেই হবে।’
বুধবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস’ উপলক্ষে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা-মানস আয়োজিত আলোচনা সভায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতিতে এটা স্পষ্ট করেছে যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতি তাদের কোনো সমর্থন নাই। একটি সুষ্ঠু, অবাধ, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক সেটিই তারা চায়। যারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধা দেবে বা নির্বাচন প্রতিহত করবে তাদের বিরুদ্ধে এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হবে। কিন্তু এরপরও তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়নি।’
নির্বাচনে সরকার সব রজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ চায় উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার সবসময় অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় এবং আমরা চাই বিএনপিসহ সমস্ত রাজনৈতিক দল সেখানে অংশগ্রহণ করুক। আগামী নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি নির্বাচন হোক। তার মাধ্যমে দেশের জনগণ আগামীর সরকার নির্বাচিত করুক। সেটিই সরকার চায়, সেটিই শেখ হাসিনা চান, সেটিই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চায়।’
বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বিচারের রায় উচ্চ আদালতে বহাল থাকা নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করছে। আমান সাহেব আর টুকু সাহেবের মামলা বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের। এই মামলা আওয়ামী লীগ দায়ের করেনি। সেই মামলায় তাদের শাস্তি হয়েছিল। তারা হাইকোর্টে গিয়েছিলেন, হাইকোর্ট সেই রায় বহাল রেখেছে। আবার গয়েশ্বর বাবুসহ আরও অনেকে গাড়ি-ঘোড়া ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, একইসঙ্গে পুলিশ ও জনতার ওপর হামলা পরিচালনা করা সত্ত্বেও তারা যে আগাম জামিন পেয়েছেন, এতেই তো প্রমাণ হয় আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করে। এর চেয়ে আর বড় প্রমাণ তো দরকার নেই।’
‘রাজনীতি করতে হলে সাধারণ মানুষের কাতারে নামতে হয়’
‘এক সময় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুর্নীতির বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছিলেন, রাজনীতি করতে চেয়েছিলেন আর এখন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা’, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তার প্রতি যথেষ্ট সম্মান রেখেই বলতে চাই, দুর্নীতি দমন কমিশন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সত্যতা পেয়েছে বিধায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। শ্রমিক-কর্মচারীদের যে লভ্যাংশ দেয়ার কথা সেটি না দিয়ে বিভিন্ন অংকের টাকা শ্রমিক-কর্মচারীদের নেতাদের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে ঘুষ হিসেবে। সেজন্য মামলায় তার সঙ্গে নেতারাও আসামি হয়েছেন। এখানে দুর্নীতি হয়েছে, অনিয়ম হয়েছে সেটিই দুদক বলছে এবং সেজন্য মামলা হয়েছে।’
রাজনীতি করতে হলে পরিবারের চেয়েও সাধারণ মানুষকে গুরুত্ব দিতে হয় উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আর তিনি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) রাজনৈতিক দল গঠন করার চেষ্টা করেছিলেন এবং বুঝতে পেরেছেন যারা মানুষের কাছ থেকে যোজন-যোজন দূরে থাকেন তাদের পক্ষে রাজনৈতিক দল করা সহজ নয়। রাজনীতি করতে হলে সাধারণ মানুষের কাতারে নামতে হয়, সাধারণ মানুষের সঙ্গে থাকতে হয়। নিজের পরিবারের চেয়েও সাধারণ মানুষকে গুরুত্ব বেশি দিতে হয়। সেটি যারা করতে পারে না, তাদের পক্ষে রাজনৈতিক দল বা রাজনীতি করা সম্ভবপর নয়। তারা কেউ কেউ মন্ত্রী হতে পারেন কিন্তু রাজনীতিবিদ বা গণমানুষের নেতা হওয়া তাদের পক্ষে কখনো সম্ভব নয়।’
‘মাদক চাষের চেয়ে খাদ্য ফলানো অনেক গুরুত্বপূর্ণ’
এর আগে ৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের প্রতিপাদ্য ‘উই নিড ফুড, নট টোব্যাকো’ অনুসারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিপাদ্য ‘তামাক নয় খাদ্য ফলান’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে তামাকের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। আমি সারা জীবন একটিও সিগারেট বা তামাক গ্রহণ করিনি। পৃথিবীতে বহু ক্ষুধার্ত মানুষ আছে। মাদক চাষের চেয়ে তাদের জন্য খাদ্য ফলানো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মাদক চাষের জন্য ব্যবহৃত জমি যদি আমরা খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহার করতে পারি তাহলে খাদ্য উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে, দেশ, জাতি, সমাজ, বিশ্ব উপকৃত হবে।’
মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের প্রয়োজনীতা তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করছেন। কোনো পরিবারে যদি কেউ মাদকাসক্ত থাকে সেটি শুধু তাকে নয়, পুরো পরিবারকে ভোগায়। এটি একটি মারাত্মক ব্যক্তিগত এবং সামাজিক ব্যাধি। এটি থেকে সমাজকে আসলেই মুক্ত রাখা দরকার। এ জন্য ব্যাপক ক্যাম্পেইন প্রয়োজন। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের পাশাপাশি পারিবারিক, সামাজিক ও গণমাধ্যমে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মানুষকে আরও সচেতন করা প্রয়োজন। বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করার জন্য প্রয়োজন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা।’
'মানস' সভাপতি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. অরূপরতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির প্রধান নির্বাহী মোহম্মদ নূরুজ্জামান, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।
বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন যত বাড়বে, আন্দোলনের গতি আরও তীব্র হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ‘বহু বছর ধরেই দেখছি যারাই গণতন্ত্রের কথা বলে, এই অগণতান্ত্রিক সরকার তাদের ওপর নিপীড়ন চালায়। তাদের ওপর আক্রমণ করে, আহত-নিহত করে, গুম-খুন করে, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয় গ্রেপ্তার করে। এসব অপরাধ করার পরেও এই সরকার দাবি করে তাদের হাতেই নাকি গণতন্ত্র নিরাপদ।’
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য আরও বলেন, ‘অত্যাচার যত বাড়বে, অন্যায়ের প্রতিবাদ তত তীব্র হবে। আমাদের এই ক্ষোভ পুষে রাখতে হবে। আগামীতে যে বৃহত্তর আন্দোলন হবে সেখানে এই ক্ষোভ-ব্যথা বুকে নিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বুধবার এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন নজরুল ইসলাম। নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সরকার ‘ফ্যাসিবাদী’ মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরশাসক এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রাজপথের লড়াকু সৈনিক আমাদের নিপুণ রায়ের ওপর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ হামলা করে গুরুতর আহত করেছে। নিপুণ সাহস হারায়নি।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই দেশে ২০১৪ ও ১৮ সালের মতো নির্বাচন আর হবে না। নির্বাচন হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। সেই নির্বাচনের যাতে বিরোধী দলের জনপ্রিয় নেতারা অংশগ্রহণ করতে না পারে সে জন্য মিথ্যা ভিত্তিহীন মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাচনের বাইরে রাখার নতুন কৌশল নিয়েছে।’
মানববন্ধনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আন্দোলনের জন্য স্বস্তিদায়ক স্থানের প্রয়োজন হয় না, অনুকূল পরিবেশের প্রয়োজন হয় না, যে কোনো পরিবেশে আন্দোলন করা যায়। আমাদের নিপুন রায় তা দেখিয়েছে।’
রিজভী আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে এই সরকার অনেক তামাশা দেখাবে। তারই অংশ হিসেবে নিপুণের ওপরে আঘাত করা হয়েছে। কাপুরুষ না হলে একজন নারীকে এভাবে আঘাত করে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজদের আদালতে যেতে হয় না। কিন্তু বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী প্রতিদিন আদালতের বারান্দায় যেতে হয়।’
নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম।
বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রাম বন্ধ করতে সরকার ‘ভয়াবহ পরিকল্পনা’ নিয়ে মাঠে নেমেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘সরকারবিরোধী দলের ১ হাজার ৩৫০টি মামলা নিয়ে মাঠে নেমেছে। আগামী নির্বাচনের আগেই এই মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে, যাতে নির্বাচনে প্রতিপক্ষ ছাড়া খালি মাঠে খেলে সহজে জয়ী হতে পারে।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার রাষ্ট্রের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে আছে। অত্যন্ত ক্ষোভ ও বেদনার সঙ্গে লক্ষ্য করছি, পুরোনো মামলাগুলো আবারও শুনানি করে রাজনৈতিক নেতাদের সাজা দেয়া হলো। মৃত্যু ঘনিয়ে আসার আগে যখন কোনো আশা থাকে না, তখন কোনো কিছু আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করে।’
বিএনপির আইনজীবীদের ওপর পুলিশি নির্যাতন চালানো হয় উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যে মামলায় বিএনপির দুই নেতাকে সাজা দেয়া হয়েছে তা হাইকোর্ট থেকে আগেই খারিজ হয়ে গিয়েছিল। একইভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের ২০০৭ সালের মামলাগুলো চালু করা হয়েছে। প্রতিদিন সাক্ষী হাজির করা হচ্ছে। এ নিয়ে কোর্টে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা কথা বলতে চাইলে তাদের ওপর সরকারি দলের আইনজীবীরা হামলা করে। পুলিশ দিয়ে নির্যাতন চালানো হয়।’
প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সরকার নোংরা ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘একই ধরনের মামলায় বিচারক আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে খালাস দিয়েছে, অথচ ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আমানউল্লাহ আমান ও তার স্ত্রীকে সাজা দেয়া হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সারা দেশে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে সাত শতাধিক। গত ১২ দিনে নতুন মামলা হয়েছে ১৫২টি। আসামি সাড়ে পাঁচ হাজার। ভয়-ত্রাস সৃষ্টি করে এক কায়দায় নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায়। কিন্তু মানুষ এবার তা সফল হতে দেবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আইন সম্পাদক কায়সার কামাল, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুসহ অন্যরা।
সরকারবিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে আদালত ‘ফরমায়েশি রায়’ দিয়ে কারাগার পাঠাচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘দুর্নীতির মামলায় ইতিপূর্বে বিএনপির দুই নেতাকে নিম্ন আদালতের দেয়া সাজা বহাল রেখে দেশের উচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছেন, সে সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দেশবাসীকে হতাশ করেছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে ফরমায়েশি রায় বলে মির্জা ফখরুল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা দেশের আইন ও পবিত্র আদালত অবমাননার শামিল।’
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন কাদের।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির এই দুই নেতার আজকের পরিণতি তাদের ধারাবাহিক অপরাজনীতিরই ফসল। বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনমালে হাওয়া ভবন খুলে তারা দুর্নীতি ও লুটপাটের মহোৎসবে মেতে উঠেছিল, যার পরিণতিতে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সেসময় হাওয়া ভবনের কর্ণধার জিয়াপুত্র তারেক রহমানের দুর্নীতির খতিয়ান বিশ্ব গণমাধ্যম ও বিশ্বখ্যাত গোপন নথি প্রকাশকারী সংস্থা উইকিলিকসে বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে।’
কাদের বলেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির দুই নেতার দুর্নীতির মামলার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কোনো যোগসূত্র নেই। ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে এবং তাদের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় নিম্ন আদালত শাস্তিমূলক রায় দেন। প্রায় ১৬ বছর বিচারিক-প্রক্রিয়া শেষ করে আদালত তাদের সাজা দেন।’
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের পবিত্র সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও গুরুত্বপূর্ণ নেতারাও আইন ও বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। এমনকি বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড এবং বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলায়ও ছাত্রলীগের নেতারা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ভোগ করছে।’
ক্ষমতাসীন দল বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন করেছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন করেছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশের বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করে স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিএনপিই বিচারব্যবস্থাকে দলীয়করণ করেছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা খুনি জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করার মধ্য দিয়ে পবিত্র সংবিধানকে কলঙ্কিত করে। মূলত জিয়াউর রহমান দেশে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি চালু করে। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিচারহীনতার সংস্কৃতির পরিবর্তে দেশে আইনের শাসন পুনপ্রতিষ্ঠিত হয়।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে তাদের দলীয় গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করেছে এবং দলের চিহ্নিত শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষা দিয়েছে। অনুরূপভাবে তারা বিজ্ঞ আদালতের রায়কে ফরমায়েশি রায় বলে দেশের উচ্চ আদালত এবং পবিত্র সংবিধানকে অবমাননা করেছে। মার্কিন নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করার পর বিএনপি তাদের বিদেশি প্রভুদের কাছ থেকে করুণা প্রাপ্তির আশায় সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত। উচ্চ আদালতের রায়কে ফরমায়েশি বলা তাদের সেই চলমান ষড়যন্ত্রেরই অংশ। এ ধরনের অপরাধের জন্য দেশের জনগণের কাছে তাদের অচিরেই জবাবদিহি করতে হবে।’
মেগাপ্রকল্পের অপচয় ও বৈদেশিক নির্ভরতা বাজেটে জনকল্যাণ বয়ে আনে না বলে মনে করছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। আইএমএফ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণবিরোধী শর্তাবলী ও চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে দুর্নীতি-বৈষম্যমুক্ত, গণতান্ত্রিক সমাজ গড়া ও সুশাসনের লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাজেট প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে দলটি।
রাজধানীর পুরানা পল্টনে মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে আসন্ন জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪ কে সামনে রেখে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সিপিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘চ্যালেঞ্জের মুখে বাজেট ২০২৩-২৪। নিম্ন প্রবৃদ্ধি, সর্বোচ্চ মূদ্রাস্ফীতি, সর্বনিম্ন বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ, শহরাঞ্চলে সর্বোচ্চ আয় বৈষম্য, গণতন্ত্রহীনতা ও কর্তৃত্বপরায়ণতা, বৈদেশিক চাপ’ এসবের মধ্যে বাজেট হতে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ, সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান, এ এন রাশেদা।
বৈষম্য হ্রাসের জন্য প্রগতিশীল প্রত্যক্ষ করনীতি ও প্রগতিশীল ভ্যাটনীতি চালু, শিক্ষা-স্বাস্থ্য-সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, প্রয়োজন অনুযায়ী ও বাস্তবায়ন ক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, সেগুলি দুর্নীতিহীনভাবে বণ্টনের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যে দর্শনের উপর ভিত্তি করে বাজেট প্রণীত হচ্ছে তা সামগ্রিকভাবে জনগণের কল্যাণ বয়ে আনবে না। মুক্তিযুদ্ধের অর্থনীতির ধারায় বাজেট প্রণয়নের দাবি দীর্ঘদিনের। সে দাবি আজও উপেক্ষিত।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ধনী তোষণের ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে বৈষম্য কমবে না। বেসামরিক-সামরিক আমলাদের পরিবর্তে সাধারণ মানুষের স্বার্থে বরাদ্দ বাড়িয়ে সঠিকভাবে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে নয়-ছয় হয়। অথচ শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সেবা খাতে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন হয় না, এটা সরকারের ব্যর্থতা। ঋণখেলাপি বহাল রেখে, টাকা পাচারের সুযোগ দিয়ে জনগণের টাকা ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ ডা. ফজলুর রহমান, সদস্য আহসান হাবিব লাবলু, আনোয়ার হোসেন রেজা, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, লুনা নূর।
শান্তিপূর্ণ পথে সরকারের বিদায় নেয়ার সুযোগ আছে মন্তব্য করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা সরকারের উদ্দেশে বলছেন, আর একটি তামাশার নির্বাচনের সুযোগ দেশবাসী সরকারকে দেবে না। সময় শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই পদত্যাগ করুন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার পথ খুলে দিন।
মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যালয়ে এক সভায় এসব কথা বলেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তারা বলেন, শান্তিপূর্ণ পথে বিদায় নেয়ার সুযোগ কাজে না লাগালে গণ আন্দোলনের পথে লজ্জাজনকভাবেই এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে।
সভায় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, সরকার বেসামাল হয়ে পরিকল্পিতভাবে দেশকে ভয়ংকর অনিশ্চয়তা ও সংঘাত-সহিংসতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এর পুরো দায়-দায়িত্ব সরকার ও সরকারি দলকেই বহন করতে হবে।
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী।
মঞ্চের নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ এখন আর জনগণের ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। জবরদস্তি করে ক্ষমতায় থাকতেই তারা পছন্দ করে। নিয়মতান্ত্রিক ভাবে সরকার পরিবর্তনের রাস্তাও তারা বন্ধ করে দিয়েছে।
আদা-পেঁয়াজসহ অতি আবশ্যক ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় সভায়। আগামী ৪-৭ জুন গণতন্ত্র মঞ্চের ঢাকা-দিনাজপুর রোডমার্চ সফল করার আহ্বান জানানো হয়।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান ও মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন ও কেন্দ্রীয় নেতা দিদার ভুঁইয়া, ভাসানী অনুসারী পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান।