বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫
২১ কার্তিক ১৪৩২

সাকিব আমজনতারও সেরা পছন্দ

সাকিবকে বাংলাদেশের নেতৃত্বে ফিরতে দেখে খুশি মাশরাফি। ছবি: ফেসবুক
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১১:৪০

বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক তিনি, বাংলাদেশের ক্রিকেটের রূপ বদলে যাওয়াও তার নেতৃত্বে। দুই বছর আগে সর্বশেষ জাতীয় দলে খেললেও মাশরাফি বিন মুর্তজা এখনো দেশের ক্রিকেটের অদ্বিতীয় চরিত্র। দৈনিক বাংলার নতুন করে শুরুর দিনে দেশের ক্রিকেট নিয়ে সাবেক অধিনায়কের ভাবনা জানতে চেয়েছেন তরিকুল ইসলাম সজল।

প্রশ্ন: টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দল ভালো না করার কারণ কী হতে পারে?

মাশরাফি: এ ফরম্যাটে আমার খুব বেশি প্রত্যাশা নেই। আমার মনে হয় সবারই প্রত্যাশা কম থাকা উচিত। না হলে টিমের ওপর বাড়তি চাপ হয়। যদি দল ভালো করে, তাহলে খুব ভালো। কিন্তু এই ফরম্যাটে আমরা এখনো পর্যন্ত তেমন গুরুত্ব দিইনি।

প্রশ্ন : এবারের এশিয়া কাপও ভালো যায়নি। কিন্তু ২০১৮ সালে ফাইনালে হারের পর আপনি বলেছিলেন, এশিয়া কাপ একসময় মামুলি ব্যাপার হবে বাংলাদেশের জন্য। সেই সময়টা কবে আসবে বলে মনে করেন?

মাশরাফি: ফরম্যাটের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। ভারত-পাকিস্তান এ মুহূর্তে এই ফরম্যাটে সেরা ৩ দলের ২টি। তারা কিন্তু এমনিতে এই জায়গায় আসেনি, বিশ্বব্যাপী ভালো খেলে এসেছে। যেখানে খেলা হচ্ছে, সেটা বলতে গেলে পাকিস্তানের হোম গ্রাউন্ড। ভারত বিশ্বের যেকোনো প্রান্তেই কঠিন দল। আফগানিস্তান ওখানে অনেকদিন ধরে খেলছে। ওখানে খেলা সহজ নয়।

মাশরাফি

প্রশ্ন : তাহলে কি ওয়ানডে হলে মামুলি হতো?

মাশরাফি : মামুলি না হলেও সাহসটা আরও তিন গুণ থাকত। আত্মবিশ্বাস অন্যরকম হতো। পৃথিবীতে এখন কজন ক্রিকেটার আছে যে তিন ফরম্যাটেই খেলে? আমাদের কয়েকজন ক্রিকেটার সব ফরম্যাটে খেললেও এখনো এত বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠেনি। ভালো খেলোয়াড় মানেই যে সব ফরম্যাটে ভালো হবে- এমন নয়।

প্রশ্ন : এশিয়া কাপে যাওয়ার আগে হেড কোচকে সরিয়ে দেয়া হলো। টুর্নামেন্টের আগে এমন পরিবর্তন দলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করেন?

মাশরাফি : যিনি (রাসেল ডমিঙ্গো) ছিলেন তিনিও তেমন কিছু করেননি। আমার মনে হয়েছে বোর্ড এবার একটা ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বোর্ডকে সাধুবাদ জানাব, কারণ সাকিবকে আবার ফেরাতে পেরেছে। সাকিবকে ফেরানো সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত এবং কঠিন সিদ্ধান্ত। কঠিন বলতে ওকে রাজি করানোটা কঠিন। কারণ ও অধিনায়কত্ব করতে চায় কি না...।

কোচের ব্যাপারেও বলি, এটা ভালো সিদ্ধান্ত। কারণ নির্দিষ্ট একটা ফরম্যাট যেকোনো একজনের কাছে থাকা ভালো। যে ছিল তার তো কোনো উন্নতি নেই। শুনেছি দাবি করেছেন, অধিকাংশ ম্যাচ জিতেছেন। সেটা মানি। তবে কোন দলের বিপক্ষে, কোন মাঠে- এগুলোও দেখা প্রয়োজন। এই মুহূর্তে টি-ঠে -টোয়েন্টির জন্য নির্দিষ্ট কিছু খেলোয়াড় খুঁজে বের করা দরকার। সেটার জন্য যদি আলাদা একজন কোচ থাকে, যে এই খেলোয়াড়গুলো খুঁজবে, শুধু টি-টোয়েন্টি নিয়ে ভাববে বা দেশের আনাচ-কানাচে যে ক্রিকেটাররা আছে, তাদের এনে ট্রেনিং করাবে বা তৈরি করবে।

প্রশ্ন : সাকিব কিছুদিন আগে বলেছেন, এখন তার প্রায়োরিটি লিস্টে ক্রিকেট নেই। এমন একজনকে অধিনায়ক বানানো বোর্ডের সঠিক সিদ্ধান্ত মনে করেন?

মাশরাফি : তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি কথা বলব না। মাঠের কথা বললে, সাকিবের বিকল্প কি তৈরি হয়েছে? আপনি যদি বিশ্বে দেখেন, সে শীর্ষস্থান দখল করে আছে। সেখানে সাকিবকে অগ্রাধিকার না দেয়ার কোনো কারণ দেখি না। যদি তার মতো তিন-চারজন থাকত, তাহলে একটা কথা ছিল। তামিম টি-টোয়েন্টি খেলছে না, মুশফিক আসবে না। রিয়াদকে সরানো হয়েছে। অন্য কোনো বিকল্প নেই। সাকিব বিসিবির জন্য যেমন সেরা পছন্দ, আমি মনে করি আমজনতার জন্যও সেরা পছন্দ।

সাকিব আল হাসান


প্রশ্ন : এ ক্ষেত্রে সাকিবের ওপর অধিনায়কত্ব চাপিয়ে দেয়া হয়েছে বলে মনে করেন?

মাশরাফি : বোর্ড এপ্রোচ করেছে, সে নিয়েছে। সে নিতে চায়নি এটা বলার সুযোগ নেই। বোর্ড চেয়েছে এবং সেও নিয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে যে কৌশলে আগাচ্ছে সেটা ঠিক আছে। আমি আগেও বলেছি অধিনায়ককে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। সে যেই হোক। হ্যাঁ, সাকিবকে হয়তো সুযোগ বেশি দেয়া হচ্ছে, অন্যদের হলে এতটা দেয়া হতো না। তামিমকেও একই সুবিধা দেয়া উচিত যেমনটা সাকিবকে দেয়া হচ্ছে।

প্রশ্ন : তবুও তো প্রশ্ন থেকে যায়। বেটউইনার কাণ্ডের পরও বিসিবি তাকে নেতৃত্বে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা কী মন্দের ভালো?

মাশরাফি : আমার মনে হয় এখানে কিছুটা ফাঁক থেকে যাচ্ছে। সাকিবকে কিন্তু নতুন করে দায়িত্বে আনা হয়নি। আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় পড়ার আগেই আনা হয়েছিল। সাকিব থাকলে সে-ই এতদিন টেনে নিয়ে আসত।

প্রশ্ন : এর আগে-পরে বেশ কয়েকবার নেতিবাচক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন সাকিব। সে তুলনায় স্মিথ-ওয়ার্নারদের তো লঘু পাপ ছিল। সাকিবের ক্ষেত্রে একটু বেশিই নমনীয় বোর্ড?

মাশরাফি : স্মিথ-ওয়ার্নার ছাড়া ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া যেভাবে খেলেছে আমরা কি সেভাবে খেলতে পারব? সাকিব না থাকা অবস্থায় আমরা হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে জিতেছি। কারণ উইকেট পক্ষে ছিল। এবার জিম্বাবুয়েতে দেখেন। সাকিবকে ছাড়া টিম কম্বিনেশন তৈরি করা কঠিন হয়ে গেছে। যখন একটু চাপ এসেছে তখনই আমরা অনুভব করেছি সাকিবের প্রয়োজনীয়তা।

সাকিব নিজেকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছে যে, তার বিকল্প নিয়ে ভাবার সুযোগ আসলে নেই। পরে কেউ এলে ভিন্ন হিসাব। আমাকে দিয়েই উদাহরণ দিই। ২০১৯ পর্যন্ত কোনো বিকল্প ছিল না, এ জন্যই আমি টিকে ছিলাম। এখন অপশন এসেছে বলেই আমি নেই। এটা খুবই সাধারণ ব্যাপার।

মাশরাফি


প্রশ্ন: এখন টানা খেলার মধ্যে থাকতে হয়। আগামী চার বছরে বিশ্রামের খুব বেশি সুযোগ নেই। খেলোয়াড়দের ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের ব্যাপারে কথা বলা হলেও কার্যত অগ্রগতি নেই। কিন্তু তিন ফরম্যাটে খেলা ক্রিকেটাররা তো ধকল সামলাতে পারছেন না...

মাশরাফি : এখানে শুধু বিসিবি বা খেলোয়াড়েদের ওপর দোষ চাপিয়ে দিলে হবে না। এখানে ফিজিও, ট্রেনার কতটা যোগ্যতাসম্পন্ন দেখতে হবে।

ক্রিকেটারদের সঙ্গে বসতে হবে। বিসিবিকে ঠিক করতে হবে কোন ফরম্যাটে কোন বোলারকে চায় তারা। বোলার যদি খেলতে না চায়, তখন ব্যবস্থা নিতে হবে সেই বোলারের বিপক্ষে। যদি কেউ সেটা চায়, তাহলে তাকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই বিসিবির। কোনো বোলার যদি বলে আমি টেস্ট খেলব না, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি খেলব- সেক্ষেত্রে তো বিসিবি ছেড়ে কথা বলবে না।

আবার বোলারের সক্ষমতাও দেখতে হবে। টেস্ট ক্রিকেটে তার দক্ষতা কতটুকু, ও কতটা কার্যকরী হবে। এই ব্যাপারগুলো আলোচনা করে বুঝিয়ে দিতে হবে। আগে থেকে বুঝিয়ে দিতে হবে, আমি তোমার কাছে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি চাই। ওয়ানডে নিয়ে ভাবছি না।

এই কথাগুলো যদি ক্রিকেটাররা ব্যক্তিগতভাবে নেয়, তাহলে হবে না। ২০১৭ সালে কোচ আমাকে বলল, টি-টোয়েন্টিতে তোমাকে দিয়ে হচ্ছে না। আমি বুঝেছি, সরে গেছি। ক্রিকেটারদের বুঝতে হবে। এখানে অভিমান বা অভিযোগের কোনো সুযোগ নেই।

প্রশ্ন : ডমিঙ্গো অভিযোগ করেছেন, ২০১৯ সালে যখন আসেন, তখন ড্রেসিংরুমে তরুণদের দমিয়ে রাখার সংস্কৃতি ছিল। সে সময় তো দলের সঙ্গে আপনিও ছিলেন। এমন অভিযোগ কীভাবে দেখেন?

মাশরাফি : আমি আসলে তার সঙ্গে কাজ করিনি। আমি যাওয়ার পরই তো নতুন অধিনায়ক এসেছে। যখন অধিনায়কত্ব পরিবর্তন হয় তখন নতুন কারও এসে গুছিয়ে নিতে সময় লাগে। আমার সময়ে জুনিয়ররা সর্বোচ্চ গুরুত্ব নিয়ে খেলেছে।‌ আমি যে তিন ম্যাচ তার (ডমিঙ্গো) অধীনে খেলেছি, এমন না যে, অনুশীলনেও গিয়েছি। খেলে চলে এসেছি। আমার সঙ্গে যেহেতু কাজের অভিজ্ঞতা নেই, সেহেতু বলতে পারব না।

মাশরাফি

প্রশ্ন: ডমিঙ্গোর গুরুতর অভিযোগ, বোর্ডের হস্তক্ষেপে খেলোয়াড়রা স্বাধীন নয়। বিসিবি মনে করে কড়া হেডমাস্টার দরকার, অনেকটা চন্ডিকা হাথুরুসিংহের মতো। জাতীয় দলের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে আপনার কী মনে হয়?

মাশরাফি : এখানে কড়া হেডমাস্টারের কোনো ব্যাপার না। বিষয়টা হচ্ছে আপনি সঠিক পথে আছেন, না কি নেই। হাথুরুর সঙ্গে ডমিঙ্গোর পার্থক্য বোঝাতে গেলে আমাকে দুজনের সঙ্গে কাজ করতে হতো। কিন্তু আমার সঙ্গে ডমিঙ্গোর অভিজ্ঞতা শূন্য। হাথুরুসিংহেকে দেখেছি, যেখানে কথা বলা দরকার সেখানে বলেছেন। আমাদের ইয়ার্কিগুলো বা একটু স্পেস চাইলে সেগুলো মেনে নেননি, তা তো না। তার যেটা মনে হয়েছে অন্যায়, সে সাকিবকেও বলেছেন, আমাকেও বলেছেন।

হাথুরুসিংহে অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করেছেন, প্রফেশনালি ওভাবেই কাজ করে অভ্যস্ত। আমরা এ ধরনের পেশাদারি মনোভাব নিয়ে বড় হইনি। ফলে একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়, ওনারা মনে করেছেন, রাগারাগি করলেই জিনিসটা ভালো হয়ে যাবে, আসলে তা না।

এটাই তো বোঝাপড়া, কোচ যা বলছে সেটা মেনে নেওয়া, যতই খারাপ লাগুক না কেন! খারাপ হয়তো লেগেছে, কারণ আমি এর সঙ্গে অভ্যস্ত না। কিন্তু আমার সেটা করতে হচ্ছে। একটা ভালো অভ্যাস তৈরি হচ্ছে। আমরা সবকিছুতে নেগেটিভ-পজিটিভ খুঁজি!

প্রশ্ন : সামনে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। অধিনায়ক তামিমের জন্য আপনার পরামর্শ কী থাকবে?

মাশরাফি : পরামর্শ দেয়ার কিছু নেই। তামিম ভালো এগোচ্ছে এটাই সত্য কথা। নিউজিল্যান্ডে আমরা সিরিজ জয়ের মতো অবস্থায় ছিলাম। দুইটা ম্যাচ খুব ক্লোজ হেরে গেছি ক্যাচ পড়ার কারণে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে আমরা ভালো করেছি। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সিরিজ জিতেছি। আফগানিস্তানের সঙ্গে জিতেছি। দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ জয়।

আপনি যদি উন্নতি দেখেন, আমরা হেরেছি শুধু নিউজিল্যান্ড আর জিম্বাবুয়ের কাছে। নিউজিল্যান্ডে সাকিব না থাকা সত্ত্বেও দারুণ ক্রিকেট খেলেছে । যদি গ্রাফ দেখেন, ভালোভাবেই এগোচ্ছে। আর এই ফরম্যাটে দীর্ঘ ৭-৮ বছর ধরে পারফরম্যান্স রেট ৬০ শতাংশের নিচে কখনো আসেনি। তামিম খুব ভালো করছে।

সাকিব

প্রশ্ন : ওয়ানডেতে আমরা বেশ ভালো দল হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত। ২০২৩ বিশ্বকাপ ভারতে। কন্ডিশন অনেকটা একইরকম চেনাজানা থাকবে। কেমন ফল আশা করছেন?

মাশরাফি : আমি ২০১৯ বিশ্বকাপের পরই এক কনফারেন্সে বলছিলাম, আমার বিশ্বাস ২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ভালো কিছু করবে। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। কে যাবে কে যাবে না এটা কোনো ব্যাপার না। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি ভালো কিছু হবে।

প্রশ্ন : মাশরাফি বিন মুর্তজাকে আবার জাতীয় দলে দেখা যাবে?

মাশরাফি : জাতীয় দলে আর ফেরা হবে না। একেবারে মাইনাস একশ।

প্রশ্ন : জাতীয় দলে ফিরবেন না, তাহলে ঘরোয়া ক্রিকেট কতদিন চালিয়ে যাবেন?

মাশরাফি: ক্লাব ক্রিকেটে তো আর বয়সের ব্যাপার নেই। আর বয়স ক্লাব ক্রিকেট খেলার মতো নেই, সেটাও তো না। চল্লিশ এখনো হয়নি।

প্রশ্ন : বাংলাদেশে তো আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেয়ার চল নেই। আপনি কি ঘোষণা দিয়ে ক্রিকেট ছাড়বেন?

মাশরাফি : এটার একটা সুযোগ আছে। ক্লাব থেকে বলে অফিশিয়ালি যাওয়ার ইচ্ছা আছে। (জাতীয় দলে) আমি ফিরতে চাইলেও তো আমাকে আর ফেরানো হবে না।

প্রশ্ন : হঠাৎ করে রাজনীতিতে। একটা স্বপ্ন নিয়ে এসেছেন নিশ্চয়ই। নিজেকে কিভাবে মূল্যায়ন করছেন?

মাশরাফি : আবার রাজনীতিতে চলে গেলেন! তিন বছরের দুই বছরই তো করোনায় চলে গেল। কাজ করতে পারলাম কোথায়! মানুষকে খুশি করা পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ। দিনের পর দিন আপনি শ্রম দিয়ে যাবেন কিন্তু দেখবেন কিছু মানুষ আপনার ওপরে খুশিই না। কিন্তু যখন আপনি চলে যাবেন, তখন দেখা যাবে, আগে যারা খুশি ছিল, তারাই বলবে- ও গেছে, বেঁচে গেছি। আবার যারা অখুশি ছিল, তারা বলবে- ও থাকলেই ভালো ছিল। মানুষের জীবন তো এ রকমই।

মাশরাফি


প্রশ্ন : ক্রিকেটের মতো রাজনীতিতেও উত্থান-পতন আছে। আপনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার দৈর্ঘ্য নয়। তবুও সম্প্রতি বেশ কঠিন পরিস্থিতি (সাম্প্রদায়িক হামলা) পার করলেন। অভিজ্ঞতা থেকে কোনটাকে বেশি শক্ত মনে হয়, ক্রিকেট না-কি রাজনীতি?

মাশরাফি : ক্রিটিক্যাল! দুইটা দুইরকম। যারা ঘটাইছে, তারা তো আর বলে ঘটায় না। আর ধরেন, এটা ঘটে গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাদেরকে সাপোর্ট দেয়া। তখন যে বিষয় ছিল পুনর্বাসনটা গুরুত্বপূর্ণ না, মানসিক যে পুনর্বাসন দরকার সেটা তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া। ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মনে হয়তো একটা দাগ কেটে আছে। আমরা খুব কঠিনভাবে চাচ্ছি, এর বিচার সঠিকভাবে হোক। আমি খুব শক্ত অবস্থানে আছি আমার জায়গা থেকে।

তারা প্রত্যেকেই শাস্তি পাক। হামলা হয়েছে, হামলার পেছনে কারণটা কী! সবকিছু ঠিকঠাকভাবে বের হয়ে আসুক। যে স্ট্যাটাস এসেছে, সেই স্ট্যাটাসের সূত্রপাত কোথায়; আইন কোন আওতায় এনে কীভাবে বিচার করবে। সঠিক বিচার হবে। এটাই দাবি।

ওইখানে যে কাজগুলো ছিল আমরা যথাসাধ্যভাবে চেষ্টা করছি, ওইখানে যারা পলিটিক্যালি আছেন, ননপলিটিক্যালি; গ্রামে তো অনেক মাতব্বর থাকেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে জিনিসটাকে আমরা একটা জায়গায় আনতে পেরেছি। সময় লেগেছে, কিন্তু আনতে পেরেছি।

আসলে এগুলো তো আনসারটেন। আমি তো নড়াইল শহরে বড় হয়েছি, কোনোদিন এসব নিয়ে কোনো বিবাদ দেখিনি। সাম্প্রদায়িকতা ছিল না! আমার মাথায় একেবারেই এ নিয়ে চিন্তা ছিল না। ভেবেছি, আর যাই হোক নড়াইলে সাম্প্রদায়িক হামলা হবে না।

ওই মানসিকতার জায়গা থেকে আমি বের হয়ে আসছি। আমি বরং প্রস্তুত, এর চেয়ে খারাপ কিছু হতে পারে। কারণ মানুষের দ্বারা সবই সম্ভব। এখন আমার যে জিনিসটা মাথায় আছে, খারাপ যেকোনো কিছু হতে পারে। সেভাবে প্রস্তুত থাকা।

ক্রিকেটের সঙ্গে একে আপনি কখনোই মেলাতে পারবেন না। এখানে হচ্ছে সবকিছু সরাসরি, যা দেখছেন সরাসরি। অনুশীলন করছেন, লাইভ দেখছেন। এখানে লুকানোর কোনো সুযোগ নেই। এখানে আপনি কেমন পারফর্মার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সবাই জেনে যাবে। আর রাজনৈতিকভাবে আপনি কেমন পারফর্মার সেটা বের করতে বছরের পর বছর চলে যাবে।


কালাইয়ে ইউএনও কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট

আপডেটেড ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১৮:৪৭
জয়পুরহাট প্রতিনিধি 

জয়পুরহাটের কালাইয়ে তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে ইউএনও কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৫। গত বুধবার বিকেলে কালাই ময়েন উদ্দিন সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমা আক্তার জাহান। উদ্বোধনী খেলায় অংশগ্রহণ করেন কালাই পৌরসভা বনাম পুনট ইউনিয়ন পরিষদ। খেলা শেষে এক গোলে জয়লাভ করেন কালাই পৌরসভা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. নাহিদ নাজনীন ডেইজি, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবিদ আব্দুল্লাহ, কালাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন, কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন, কালাই ময়েন উদ্দিন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বকুল, উপজেলা জনস্বাস্থ্য সহকারী প্রকৌশলী আল আমিন। এছাড়া উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, উপজেলায় পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে ইউএনও কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মাত্রাই, পুনট ও কালাই ময়েন উদ্দিন সরকারি উচ্চবিদ্যালয় তিনটি মাঠে ইউএনও কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাঠজুড়ে ছিল তরুণদের উচ্ছ্বাস ও দর্শকদের প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা এক উৎসবমুখর পরিবেশ। এ খেলাকে কেন্দ্র করে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল দর্শকরা। উদ্বোধনী খেলা পরিচালনা করেন মেহেবুল ইসলাম তালুকদার, হানিফ প্রামাণিক ও সামছুল ইসলাম।

উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় ইউএনও কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে এই প্রথম থিমসং পরিবেশন করা হয়। এতে কণ্ঠ দিয়েছেন কণ্ঠশিল্পী পাগল বিধান, ঐশী রানী দৃষ্টি, সৃষ্টি ও গোলাম আজম ফিতা। এছাড়া খেলা শুরুর আগে মনোজ্ঞ এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন সংগীত শিল্পী ইমরান ও বিধান।

কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমা আক্তার জাহান বলেন, তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে। খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণ সমাজকে মাদক ও সামাজিক অবক্ষয় থেকে দূরে রাখাই এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য।


স্পেনকে ছাড়িয়ে টানা জয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়ল মরক্কো

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

কাতার বিশ্বকাপের চমক জাগানো দল মরক্কো এবার গড়ে ফেলল বিশ্বরেকর্ড। আন্তর্জাতিক ফুটবলে টানা সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জয়ের রেকর্ডটি এখন ‘আটলাস লায়ন্স’দের দখলে। আফ্রিকান অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কঙ্গোকে ১-০ গোলে হারিয়ে স্পেনের গড়া টানা ১৫ জয়ের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে তারা।

গত মঙ্গলবার রাতে কঙ্গোর বিপক্ষে এই জয়ে টানা ১৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে জয় তুলে নিল মরক্কো। এর মাধ্যমে শতভাগ জয় নিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বও শেষ করল তারা। ‘ই’ গ্রুপে আট ম্যাচের সবকটিতে জিতে বেশ আগেই ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছিল আফ্রিকান দলটি।

মরক্কোর এই জয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল গত বছরের মার্চে মৌরিতানিয়ার সঙ্গে ড্র করার পর থেকে। এরপর ১৯ মাসের এই অবিশ্বাস্য ছুটে চলায় তারা ১৬ ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ৫০টি গোল দিয়েছে এবং হজম করেছে মাত্র চারটি।

এর আগে টানা ১৫টি ম্যাচ জিতে এই রেকর্ডের মালিক ছিল স্পেন। ২০০৮ ইউরো থেকে শুরু করে ২০০৯ সালের কনফেডারেশন্স কাপ পর্যন্ত তারা এই কীর্তি ধরে রেখেছিল। এবার সেই রেকর্ড নিজেদের করে নিয়ে ফুটবল বিশ্বে নতুন ইতিহাস লেখল মরক্কো।


বিপিএল আয়োজনে সময়স্বল্পতা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

মেরেকেটে হাতে সময় দুই মাস, বিসিবির নতুন কমিটির পরিকল্পনায় এবারের বিপিএল আয়োজনের সময় ধরা হয়েছে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে মধ্য জানুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু আসরটি ঢেলে সাজানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে বিসিবি, তাতে এখনো শুরুর ভিত তৈরি হয়নি। প্রথমত, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মালিকানা নির্ধারিত হয়নি। এরই মধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ১০টি ফ্র্যাঞ্চাইজি পাঁচ বছরের জন্য নেওয়ার আগ্রহপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে আগ্রহী মালিকানা নেওয়ার জন্য। তার পরও তো অনেক কাজ বাকি।

আবেদন পর্যালোচনা করা, আইনের মধ্যে থেকে আর্থিক সক্ষমতা যাচাই করে মালিকানার বৈধতার দেওয়ার মতো জটিল প্রক্রিয়া রয়েছে। তাতে অন্তত কয়েক সপ্তাহ লেগে যাওয়ার কথা। এরপর রয়েছে চুক্তি, বিপণন, পৃষ্ঠপোষকতা, সম্প্রচার স্বত্ব, বিদেশি ক্রিকেটারদের ড্রাফট, নিরাপত্তাব্যবস্থা, ভেন্যু সংস্কার, সরঞ্জাম ও হোটেল ব্যবস্থাপনা। তড়িঘড়ি করে এসব সম্পন্ন করে আসরটি মাঠে নামাতে গেলে কী হতে পারে, তা ভালো জানা আছে ফারুক আহমেদের।

গতবার সেই অভিজ্ঞতা থেকেই বিসিবির নতুন বোর্ডের সহসভাপতি ফারুক আহমেদ। ‘সময় কিন্তু দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। অনেক কাজ বাকি। বোর্ড চেষ্টা করছে বিপিএলের সব গুছিয়ে আনতে কিন্তু সময় বড্ড কম।’ গত রোববার সিলেটে সংবাদমাধ্যমের সামনে এভাবেই নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন ফারুক আহেমদ। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতেখার রহমানও মেনে নিয়েছেন সময়স্বল্পতার ব্যাপারটি। ‘নেক্সট টু-ইম্পসিবল, খুবই কঠিন। তার পরও আমরা চেষ্টা করব।’ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় এভাবেই বিপিএল আয়োজনের শঙ্কার মেঘ ফুটে এসেছে ইফতেখার রহমানের কণ্ঠে।

২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজ রয়েছে বাংলাদেশের। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি ভারতে টি-২০ বিশ্বকাপ। এর মাঝামাঝিতেই বিপিএল আয়োজন করতে হবে। কিন্তু এই কাছাকাছি সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় বিগব্যাশ (১৪ ডিসেম্বর থেকে ২৫ জানুয়ারি), লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগ (২৭ নভেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর), আমিরাতে আইএল টি-২০ (২ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি) এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় এসএ টি-২০ (২৬ ডিসেম্বর থেকে ২৫ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে।

এই চারটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের সূচি নির্ধারিত থাকায় বিদেশি ক্রিকেটাররা সেখানে নথিভুক্ত হয়ে আছেন। তা ছাড়া পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড জানিয়ে দিয়েছে তাদের ক্রিকেটারদের বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার ছাড়পত্র দেওয়া হবে না। তাহলে কোন বিদেশিদের নিয়ে হবে বিপিএল? এই প্রশ্নের উত্তর যেমন মিলছে না, তেমনি কয়টি ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে এবারের আসর হতে পারে, তার উত্তরও কেউ জানে না। সব মিলিয়ে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে বিসিবি।


অধিনায়ক হিসেবে ‘প্রথম’ স্বাদ গিলের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

আহমেদাবাদের পর দিল্লি টেস্টেও ভারতের জয় অনুমিতই ছিল। মঙ্গলবার পঞ্চম ও শেষ দিন জয়ের জন্য স্বাগতিকদের দরকার ছিল স্রেফ ৫৮ রান। ৭ উইকেটের জয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজও নিজেদের করে নিয়েছে ভারত। দলের লাল বলের অধিনায়ক হিসেবে এটিই শুবমান গিলের প্রথম সিরিজ জয়।

জয়ের জন্য গত সোমবার চতুর্থ দিন ১২১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামে ভারত। সেদিন ১ উইকেটে ৬৩ রানে খেলা শেষ করেন লোকেশ রাহুল ও সাই সুদর্শন। মঙ্গলবার শেষ দিন ৫৮ রান তুলতে আরও ২ উইকেট হারার স্বাগতিকরা। ১১তম ওভারে রোস্টন চেজের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরেন সুদর্শন (৩৯)। অধিনায়ক গিল আউট হন দ্রুতই, ১৩ রান করে। আরেক প্রান্ত আগলে রেখে ফিফটি করে দলকে জিতিয়েই ফিরেন রাহুল (৫৮*)। আরেক অপরাজিত ব্যাটার ধ্রুভ জুরেল (৬*)।

জয়ের পর গিল জানান, অধিনায়কের দায়িত্বে নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছেন তিনি। এ ডানহাতি ব্যাটার বলেন, ‘ভারতকে নেতৃত্ব দিতে পারা অনেক বড় সম্মানের। বলতে পারেন, এখন এসবে অভ্যস্ত হয়ে উঠছি। দলকে সামলানো, অধিনায়কত্ব করা, এসব বড় প্রাপ্তি।’ এ বিষয়ে গিল আরও বলেন, ‘‘অধিনায়কত্বের ব্যাপারটি হলো, ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া। ম্যাচের অবস্থা বুঝে আমি সেরা বিকল্পটি বেছে নিতে চেষ্টা করি। কখনো কখনো সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হয়, নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে ‘এক্স-ফ্যাক্টর’ হয়ে গুরুত্বপূর্ণ রান করতে পারে বা উইকেট নিতে পারে, সেটি ঠিক করতে হয়।’’

আহমেদাবাদে সিরিজের প্রথম টেস্টে ইনিংস ও ১৪০ রানের ব্যাবধানে হার দেখে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সে হিসেবে দ্বিতীয় টেস্টে ভালো পারফর্ম করেছে ক্যারিবিয়ানরা। এখানে দুই ইনিংস মিলিয়ে ২০০ ওভারের বেশি ব্যাট করেছে রোস্ট চেজের দল। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ফলো অনে পড়া সফরকারীরা ব্যাট করে ১১৮.৫ ওভার। ১১৫ রান করেন ওপেনার জন ক্যাম্পবেল। ১০৩ রান আসে শেই হোপের ব্যাট থেকে। ফিফটি করে অপরাজিত থাকেন জাস্টিন গ্রিভস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ দাঁড়ায় সবগুলো উইকেটের বিনিময়ে ৩৯০। তবে ভারতের প্রথম ইনিংসে করা ৫ উইকেটে ৫১৮ রানের জন্য সেটিও যথেষ্ট হয়নি। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ক্যারিবিয়ানদের সংগ্রহ ছিল ২৪৮।

দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮ উইকেট নিতে ম্যাচসেরা কুলদিপ যাদব। আর দুই টেস্টের এক ইনিংস ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েই অপরাজিত সেঞ্চুরি হাঁকানো রবীন্দ্র জাদেজা সিরিজসেরা। দুই টেস্টে ৮ উইকেট নেন এ অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার।

এ জয়ে কোনো এক প্রতিপক্ষের বিপক্ষে টানা সর্বোচ্চ সিরিজ জয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার পাশে বসেছে ভারত। ১৯৯৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই লাল বলের টানা ১০ সিরিজ জিতে প্রোটিয়ারা। আর ২০০২ থেকে এ পর্যন্ত সেই ক্যারিবিয়ানদের সঙ্গেই টানা ১০টি টেস্ট সিরিজ জিতল ভারতীয়রা। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের পর ব্যস্ততা কমছে না গিলের। আজ বুধবার অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হবে ভারত। সেখানে ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে নতুন পথচলা শুরু হবে ২৬ বছর বয়সি গিলের।


মেসির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় স্কালোনি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

ফিফা আন্তর্জাতিক বিরতিতে আজ বুধবার ভোরে মাঠে নামছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। বাংলাদেশ সময় আজ ভোর ৬টায় ফ্লোরিডার লডারহিলে চেইজ স্টেডিয়ামে পুয়ের্তো রিকোর বিপক্ষে মাঠে নামবে আলবিসেলেস্তেরা। আগের ম্যাচে ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে খেলেননি আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসি। দেশটির সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসের প্রতিবেদন, পুয়ের্তো রিকোর বিপক্ষে কিছু সময়ের জন্য হলেও মাঠে নামবেন বিশ্বকাপজয়ী এই মহাতারকা। মেসির খেলার প্রসঙ্গে ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে স্কালোনি বলেছেন, মেসির সঙ্গে কথা বলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।

কোচ বলেন, ‘গত শনিবার মেসিকে খেলতে (মায়ামির ম্যাচে) দেখেছি। যতটা জানি, ম্যাচটি সে ভালোভাবেই শেষ করেছে। তবে তার সঙ্গে এখনো কথা হয়নি আমার। এখন আজকের ম্যাচের আগে শেষ অনুশীলন সেশন আমাদের এবং প্রস্তুতির শেষ ধাপে সবসময়ই যেটা করি, তার (মেসি) সঙ্গে কথা বলব আমি। সে যদি ভালো অবস্থায় থাকে, তাহলে অবশ্যই সে খেলবে আজ।’


ইতিহাস গড়ে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিল ৫ লাখ জনসংখ্যার দেশ কেপ ভার্দে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

আটলান্টিক মহাসাগরে ১০টি দ্বীপ মিলে গঠিত রাষ্ট্র কেপ ভার্দে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, যাদের জনসংখ্যা ৫ লাখ ২৫ হাজারেরও কম। সেই দেশটি ইতিহাস গড়ে ফুটবল বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে। এসওয়াতিনিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের বিশ্বকাপ খেলার টিকিট পায় ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রটি।

রাজধানী প্রাইয়ায় কেপ ভার্দে প্রথমার্ধে গোল না পেলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দলকে এগিয়ে দেন ডেইলন লিভ্রামেন্তো। ছয় গজ বক্সে প্রতিপক্ষের রক্ষণের ভুলে পাওয়া বল জালে পাঠান। এর কিছু পরেই উইলি সেমেদো দুর্দান্ত এক ভলিতে গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। আর অতিরিক্ত সময়ে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার স্টোপিরা গোল করে ব্যবধান তিনে উন্নীত করলে ১৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হয় উল্লাসের বন্যা।

আফ্রিকা কাপ অব নেশনসে (আফকন) সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চমক দেখিয়েছে কেপ ভার্দে। ২০১৩ সালে অভিষেকেই তারা খেলেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। বর্তমানে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ৭০ নম্বরে আছে তারা।

কেপ ভার্দের বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয় গত মাসে। ক্যামেরুনকে ১-০ গোলে হারানোর পর থেকেই বিশ্বকাপের সুবাস পাচ্ছিল তারা। এ জন্য বাকি দুই ম্যাচে একটিতে জিতলেই চলত। এর মধ্যে লিবিয়ার মাঠে গত বুধবার ৩-৩ গোলে ড্র করে প্রথম সুযোগ হাতছাড়া করে তারা। সেদিন শেষ মুহূর্তে সম্ভাব্য জয়সূচক গোলটি বাতিল হয় বিতর্কিত অফসাইডের কারণে।

তবে এসওয়াতিনির বিপক্ষে প্রাইয়ায় দ্বিতীয় সুযোগটি আর হাতছাড়া করেনি তারা। দারুণ এক জয়ে আফ্রিকা থেকে ষষ্ঠ দেশ হিসেবে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে কেপ ভার্দে। দেশের এমন গৌরবময় মুহূর্তে মাঠে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট জোসে মারিয়া নেভেসও।


২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করে নিল ঘানা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

২০২৫ আফ্রিকা কাপ অব নেশন্সে জায়গা না পেয়ে যে ব্যর্থতায় ঘানা স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল, সেই আঘাত ভুলে তারা অবশেষে ফুটবল বিশ্বের মঞ্চে ফিরেছে দুর্দান্তভাবে। গত রোববার রাতে কমোরোসের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে বিশ্বকাপের টিকিট কাটে ঘানা। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে টটেনহ্যামের ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ কুদুসের একমাত্র গোলে জয় নিশ্চিত করে ‘ব্ল্যাক স্টার্সরা’। এর আগে আলজেরিয়া, মিসর, মরক্কো তিউনিসিয়ার পর পঞ্চম আফ্রিকান দেশ হিসেবে ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত হলো ঘানার।

ঘানার রাজধানী আক্রায় এই জয়ে গ্রুপ ‘আই’ থেকে ১০ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে কোয়ালিফায়ার শেষ করল ঘানা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মাদাগাস্কার থেকে ছয় পয়েন্ট বেশি তাদের। আর ১০ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের চারে কমোরোস।

এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, কানাডা বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করা দেশের সংখ্যা হলো ২১টি। ৪৮ দলের বিশ্বকাপে এখনো বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের টুর্নামেন্টে জায়গা পাওয়ার অপেক্ষায় আছে ২৭টি দেশ।

প্রথমার্ধে অনেকটা নিষ্প্রাণ ফুটবল খেলে ঘানা। আগের নয়টি ম্যাচে ২২টি গোল করলেও এদিন কমোরোসের গোলরক্ষককে তেমন একটা পরীক্ষার মুখে ফেলতে পারেনি ওটো অ্যাডোর দল। তবে বিরতির পরই বদলে যায় দৃশ্যপট। থমাস পার্টের পাস থেকে কাছ থেকে সহজ ফিনিশে কুদুস গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। এটি ছিল তার বাছাই পর্বের দ্বিতীয় গোল।

আগের দুবারের দেখাতেই ঘানাকে হারিয়েছিল কমোরোস। ২০২২ আফ্রিকান নেশন্স কাপে কুদুসের দলকে হারায় তারা। এরপর বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম রাউন্ডেও ঘানার মাটিতে ১-০ গোলে জিতে ছিল কমোরোস। তবে এবার সবশেষ দুই হারের শোধ তুলল ঘানা।

২০২৪ সালের নভেম্বরে আফ্রিকা কাপের ফাইনাল পর্বে জায়গা না পাওয়ায় দেশজুড়ে হতাশা ছড়িয়ে পড়ে- ২০০৪ সালের পর এমন ব্যর্থতা আর দেখেনি ঘানা। তখন কোচ অটো অ্যাডোর পদত্যাগ দাবি ওঠে নানা মহল থেকে। কিন্তু দৃঢ়চেতা অ্যাডো জানিয়ে দেন, ‘আমি এমন মানুষ নই যে ব্যর্থতায় হাল ছেড়ে দেই। যদি এমন করতাম, তাহলে কখনো ফুটবলার বা কোচ হতে পারতাম না,’-বলেন তিনি। ‘যে পথ পেরিয়ে আমি এখানে পৌঁছেছি, তা জানলে কেউ পদত্যাগের কথা বলত না।’

প্রথম মেয়াদে কাতার বিশ্বকাপ ২০২২- এ দলকে তোলার পর দ্বিতীয় মেয়াদেও নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন অ্যাডো। নতুন কোচিং স্টাফের সহায়তায় তিনি দলকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেছেন। ১০ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে ‘গ্রুপ আইয়ে’ শীর্ষে থেকে ঘানা এবারও জায়গা করে নিয়েছে ফুটবলের মহাযজ্ঞে।

শেষ দিন পর্যন্ত মাদাগাস্কার লড়াই চালিয়ে গেলেও কোমোরোসের বিপক্ষে মোহাম্মদ কুদুসের গোলই ঘানার বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে দেয়। এই অভিযানে সবচেয়ে আলোচিত নাম ছিলেন জর্ডান আয়ু- পুরো বাছাই পর্বে সাত গোল করে তিনি হয়ে উঠেছেন দলের ভরসা।

ফিফা বিশ্বকাপ ২০২৬ হবে ঘানার পঞ্চম উপস্থিতি বিশ্ব মঞ্চে। ২০০৬ সালে জার্মানিতে অভিষেকের পর দলটি সর্বোচ্চ সাফল্য পায় দক্ষিণ আফ্রিকা ২০১০-এ, যখন মিলোভান রাজেভাচের কোচিংয়ে তারা পৌঁছে যায় কোয়ার্টার ফাইনালে।

সেই টুর্নামেন্টে আসামোয়া গিয়ান ছিলেন অনুপ্রেরণার প্রতীক। শেষ ষোলোয় যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে তার দুর্দান্ত গোল ঘানাকে পাঠায় কোয়ার্টারে, যেখানে উরুগুয়ের বিপক্ষে নাটকীয় সেই ম্যাচ এখনো ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় অধ্যায়।


ইতিহাস গড়লেন স্মৃতি মান্ধানা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা ভারতের স্মৃতি মান্ধানা এবার গড়েছেন অনন্য এক কীর্তি। নারীদের ওয়ানডেতে এক পঞ্জিকাবর্ষে এক হাজার রান করা প্রথম ব্যাটার তিনি। গত রোববার নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম ম্যাচে মুখোমুখি হয় ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। এ ম্যাচে ৬৬ বলে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৮০ রান করেন ভারতের বাঁহাতি ওপেনার।

মেয়েদের ওয়ানডেতে এক বছরে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ডটি আগের ম্যাচেই নিজের করে নেন মান্ধানা। সেটিকে এবার আরও সমৃদ্ধ করলেন তিনি। চলতি বছর ১৮ ওয়ানডে খেলে তার রান হলো ১ হাজার ৬২। ২০২৫ সালে ওয়ানডেতে চারটি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে এই রান করেছেন তিনি। এই বছর সংস্করণটিতে তার ব্যাটিং গড় ৫৯, স্ট্রাইক রেট ১১২.৮৫।

মেয়েদের ওয়ানডেতে এক পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশি রানে মান্ধানার পরেই আছেন অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক বেলিন্ডা ক্লার্ক। ১৯৯৭ সালে ১৬ ওয়ানডে খেলে ৯৭০ রান করেছিলেন মেয়েদের ক্রিকেটে সর্বকালের সেরা ব্যাটার ও অধিনায়কদের একজন ক্লার্ক। এক বছরে ৯০০ রানও করতে পারেননি আর কেউ। ২০২২ সালে ৮৮২ রান করে তালিকায় এখন তিনে দক্ষিণ আফ্রিকার লরা উলভার্ট।

ভিসাখাপাত্নামে এই ইনিংসে ওয়ানডেতে পাঁচ হাজার রান পূর্ণ করলেন মান্ধানা। ১১২ ইনিংসে এই সংস্করণে তার রান এখন পাঁচ হাজার ২২। মেয়েদের ওয়ানডেতে যা দ্রুততম। ১২৯ ইনিংসে পাঁচ হাজার রান করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্টেফানি টেইলর।

পুরুষ ও নারী ওয়ানডে মিলিয়ে ভারতীয়দের মধ্যে দ্রুততম পাঁচ হাজার রান করার রেকর্ড গড়লেন মান্ধানা। এতদিন রেকর্ডটি ছিল কোহলির, ১১৪ ওয়ানডে ইনিংসে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন তিনি।

আর সব দেশ মিলিয়ে মান্ধানা এই তালিকায় তৃতীয়। ৯৭ ইনিংসে পাঁচ হাজার রান করে রেকর্ডটি পাকিস্তানের বাবর আজমের। দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলা ১০১ ইনিংসে পা রেখেছিলেন এই ক্লাবে। বছরে এক হাজার রানের মাইলফলক থেকে ১৮ রান কম নিয়ে ম্যাচটি খেলতে নামেন মান্ধানা। ম্যাচের অষ্টম ওভারে সোফি মলিনিউকে চারের পর ছক্কায় উড়িয়ে মাইলফলকটি স্পর্শ করেন তিনি।

চমৎকার ব্যাটিংয়ে ৪৬ বলে ফিফটিতে পা রাখেন মান্ধানা। এই সময়ে ৭টি চারের সঙ্গে মারেন একটি ছক্কা। দুই ওভার পর কিম গার্থকে ছক্কা মেরে ওয়ানডেতে পাঁচ হাজার রান পূর্ণ করেন তিনি। নামের পাশে চার হাজার ৪২ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন এই ক্রিকেটার।

ইনিংসের ২৫তম ওভারে থামে মান্ধানার পথচলা। মলিনিউকে স্লগ সুইপে ছক্কার চেষ্টায় ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েন তিনি। আরেক ওপেনার প্রাতিকা রাওয়াল ১ ছক্কা ও ১০ চারে করেন ৯৬ বলে ৭৫ রান। সঙ্গে বাকিদের অবদানে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৩০ রানের বড় পুঁজি গড়ে ভারত।


এমএলএস যেন মেসির রাজত্ব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ২০২৫ মৌসুম শেষের পথে। আগামী ১৯ অক্টোবর ভোরে নাশভিলের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে নিয়মিত মৌসুমের শেষ ম্যাচটি খেলবে লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামি। এবারের নিয়মিত মৌসুমটা ইন্টার মায়ামির জন্য খানিকটা হতাশারই বলা যায়। গত মৌসুমে প্রথমবারের মতো লিগে সবার ওপরে থেকে সাপোর্টাস শিল্ড জিতেছিল তারা। কিন্তু এবার সেই শিরোপা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে দলটি। মায়ামিকে পেছনে ফেলে শিরোপা জিতেছে ফিলাডেলফিয়া।

দল হিসেবে মায়ামি শিরোপা ধরে রাখতে ব্যর্থ হলেও, ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে মেসি ছিলেন বরাবরের মতোই উজ্জ্বল। মৌসুমজুড়েই আলো ছড়িয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। ম্যাচের পর ম্যাচে দলকে সামনে থেকে পথ দেখিয়েছেন।

গোল করা এবং গোলে সহায়তার পাশাপাশি অনেক নৈপুণ্যের সূচকে চূড়ায় অবস্থান করছেন মেসি। এমএলএসে এখনো অবশ্য একটি করে ম্যাচ বাকি আছে দলগুলোর। কিন্তু তারপরও খুব বেশি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই, মেসি নিজেকে এতটাই সামনে নিয়ে গেছেন।

মৌসুমে এখন পর্যন্ত হওয়া ৩৩ ম্যাচের ২৭টিতে মাঠে নেমেছেন মেসি। এই ২৭ ম্যাচে সর্বোচ্চ ২৬ গোল করেছেন মেসি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লস অ্যাঞ্জেলেস এফসির ডেনিস বুয়াংগার চেয়ে ২ গোল বেশি। গ্যাবন উইঙ্গার অবশ্য মেসির চেয়ে ৩ ম্যাচ (৩০) বেশি খেলেছেন।

গোলে সহায়তায়ও সবার ওপরে মেসি। এই তালিকায় মেসির মতো ১৮ গোলে সহায়তা করে যৌথভাবে শীর্ষে আছেন ডেনিশ উইঙ্গার আন্দ্রেস ড্রেয়ের। কিন্তু ড্রেয়ের মেসির চেয়ে ৬ ম্যাচ বেশি খেলেছেন। মূল দুই পরিসংখ্যানের বাইরে ম্যাচে একাধিক গোল, সুযোগ তৈরি এবং সফল ড্রিবলসহ বেশ কিছু পরিসংখ্যানে সবার ওপরে মেসি।

শুধু পরিসংখ্যান দিয়ে অবশ্য মেসিকে মাপার সুযোগ নেই। নিউক্লিয়াস হয়ে পুরো মায়ামিকে অনেকটা একাই এগিয়ে নিয়েছেন মেসি। রক্ষণ থেকে আক্রমণভাগ সব জায়গায় মেসি ছিলেন সূত্রধরের ভূমিকায়। যখন যেখানে প্রয়োজন হয়েছে দলের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন।

তবে মেসির জন্য দলকে শিরোপা জেতানোর স্বপ্ন এখনো শেষ হয়ে যায়নি। শিল্ড না জিতলেও মায়ামিকে এমএলএসের প্লে-অফে নিয়ে গেছেন মেসি। এখন সুযোগ আছে প্রথমবারের মতো দলকে এমএলএস কাপ জেতানোর। সেটি জিততে পারলে শিল্ড হারানোর যন্ত্রণা অনেকটাই ভুলে যেতে পারবেন আটবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী।


এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে চ্যাম্পিয়ন রংপুর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি-টোয়েন্টির দ্বিতীয় আসরের শিরোপা জিতল রংপুর বিভাগ। প্রতিযোগিতার প্রথম আসরের শিরোপাও তারা জিতেছিল। দাপুটে ক্রিকেটে এবার খুলনা বিভাগকে ৮ উইকেটে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন হলো রংপুর।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খুলনা বিভাগ ৮ উইকেটে ১৩৬ রান করে। জবাবে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ৩ ওভার আগে জয় নিশ্চিত হয় রংপুরের।

ব্যাটিংয়ে দুই ওপেনার জাহিদ ও নাসির কোন চাপ না নিয়ে অনায়েসে রান করেন। ৭ ওভারে ৬১ রান আসে ওপেনিং জুটি থেকে। জাহিদ ২৭ রানে আউট হলে ভাঙে জুটি। সঙ্গী হারানোর পর নাসির এগিয়ে যান ফিফটির পথে। কিন্তু ৪ রানের আক্ষেপে পুড়তে হয় তাকে। নাসির ৩১ বলে ৪৬ রান করেন ৫টি চার ও ১টি ছক্কায়।

তাতে জয় নাগালে চলে আসে। বাকি কাজ সারেন অভিজ্ঞ নাঈম ইসলাম ও আকবর আলী। ৫ চারে ৩২ বলে ৪০ রান করেন নাঈম। ১৫ বলে ১৯ রান আসে আকবরের ব্যাট থেকে।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা খুলনা বিভাগ বড় পুঁজির খোঁজে ছিল। তাদের ব্যাটিং লাইন আপও ছিল লম্বা। কিন্তু নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি কেউ। সৌম্য সরকার মাত্র ৮ রান করেন ২২ বল খেলে। এনামুল হক বিজয় ১৫ বলে করেন ১২ রান। হতাশ করেন আসিফ হোসেন ধ্রুব৷ ২টি ছক্কা মেরে ভালো কিছুর আশা দেখালেও ১০ বলে ১৪ রান করে ফিরে যান। এছাড়া ওপেনার ইমরানুজ্জামান রানের খাতা খুলতে পারেননি। শেখ পারভেজ হোসেন জীবন করেন ৮ রান। ৬৯ রান তুলতেই তাদের ৫ ব্যাটসম্যান ড্রেসিংরুমে।

অধিনায়ক মিথুন সেখানে কিছুটা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে। দুজনের ব্যাটে কিছুটা আশার আলো দেখতে পায় খুলনা বিভাগ। ৪৪ রান যোগ করেন তারা ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে। মিথুন ৩২ বলে ৪৪ রান করেন ১টি চার ও ৩টি ছক্কায়। মৃত্যুঞ্জয় ১৩ বলে ২৪ রান করেন ২টি করে চার ও ছক্কায়।

খুলনার ব্যাটিং প্রতিরোধ এতটুকুই। বাকিটা সময় ছিল রংপুরের বোলারদের দাপট। ২ উইকেট নিয়ে তাদের সবচেয়ে সফল বোলার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

ফাইনাল সেরা হয়েছেন নাসির হোসেন। টুর্নামেন্ট সেরা আকবর আলী।


এশিয়ার প্রথম ব্যাটার হিসেবে যে কীর্তি গড়লেন বাবর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

এশিয়ার প্রথম ব্যাটার হিসেবে দারুণ এক কীর্তি গড়লেন বাবর আজম। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ৩০০০ রানের কীর্তি। রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলির নামের পাশে এমন মাইলফলক নেই। মাইলফলকটা যে গড়বেন বাবর তা নিশ্চিতই ছিল।

শুধু সময়ের অপেক্ষা ছিল। কেননা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ৩০০০ রান স্পর্শ করার জন্য পাকিস্তানের ব্যাটারের মাত্র ২ রান প্রয়োজন ছিল। লাহোর টেস্টের নিজের মুখোমুখি প্রথম ৬ বলে ১ রান নেওয়ার পর সপ্তম বলে দক্ষিণ আফ্রিকার বাঁহাতি স্পিনার সেনুরান মুথুসামিকে বাউন্ডারি মেরে মাইলফলকে পৌঁছান। লাহোর টেস্ট পর্যন্ত ২৩ রানে অপরাজিত আছেন বাবর।

এতে তার মোট রান দাঁড়িয়েছে ৩০২১। ম্যাচ খেলেছেন ৩৭টি। টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ায় এই মাইলফলক স্পর্শ করার সুযোগ নেই রোহিত (২৭১৬)-কোহলির (২৬১৭)। এখনো খেলছেন এমন এশিয়ান ব্যাটারদের মধ্যে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাবরের পরে আছেন শুবমান গিল (২৮২৬) ও ঋষভ পন্ত (২৭৩১)।

এশিয়ার প্রথম হলেও বাবরের আগে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছেন ৭ জন। তার মধ্যে একমাত্র ব্যাটার হিসেবে ৬ হাজার রান করেছেন জো রুট। ইংল্যান্ডের ব্যাটারের রান ৬০৮০। তার পরে থাকা ৪ হাজার রান করা দুই অস্টেলিয়ান ব্যাটার স্টিভেন স্মিথ (৪২৭৮) ও মারনাস লাবুশানে (৪২২৫)। এরপরে যথাক্রমে আছেন বেন স্টোকস (৩৬১৬), ট্রাভিস হেড (৩৩০০), উসমান খাজা (৩২৮৮) ও জ্যাক ক্রলি (৩০৪১)।


ইনজুরিতে এমবাপ্পে, ফিরে গেছেন মাদ্রিদে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের একদম দ্বারপ্রান্তে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। গত শুক্রবার রাতে প্যারিসে আজারবাইজানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ইউরোপীয় বাছাইপর্বে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জয় পেয়েছে দিদিয়ের দেশমের দল। তবে এই জয়ের মধ্যেই দুঃসংবাদ পেয়েছে ফ্রান্স। কারণ ম্যাচে চোট পেয়েছেন অধিনায়ক কিলিয়ান এমবাপ্পে। যার কারণে তিনি ফিরে গেছেন মাদ্রিদে। এই রিয়াল ফরোয়ার্ডের খেলা হচ্ছে না আইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ।

ডান পায়ের গোড়ালিতে ইনজুরি নিয়ে ফরাসি শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। তবে ম্যাচ খেলার মতো ফিট ছিলেন তিনি। খেলেছেন আজারবাইজানের বিপক্ষে ম্যাচে, করেছেন গোলও। তবে ম্যাচে চোট পান এমবাপ্পে। যার কারণে ম্যাচ শেষ হওয়ার আগে মাঠ ছেড়েছেন এই রিয়াল মাদ্রিদ তারকা।

তাতে লম্বা হলো ফ্রান্সের ইনজুরির তালিকা। উসমান ডেম্বেলে, ডিজায়ার ডু, মার্কাস থুরাম ও ব্র্যাডলি বারকোলার পর এই তালিকায় যোগ দিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ফ্রান্স ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এমবাপ্পেকে নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করে। বিবৃতিতে বলা হয়, ইনজুরির কারণে আজ সোমবার আইসল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবেন না এমবাপ্পে। তিনি ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে ফিরে গেছেন এবং তার বিকল্প হিসেবে কাউকে দলে নেওয়া হবে না।

এছাড়া এমবাপ্পের চোট নিয়ে ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম বলেন, ‘তার গোড়ালিতে ব্যথা আছে এবং সেটি আগের চোটের জায়গাতেই। ব্যথা উল্লেখযোগ্য, তাই ঝুঁকি নেওয়া ঠিক হবে না।’ এর আগে এমবাপ্পের চোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ জাবি আলোনসো। এমবাপ্পে না খেললেও আজ সোমবার বিশ্বকাপ টিকিট সম্ভাবনা আছে জয় পেলে ২০২৬ নিশ্চিত হওয়ার ফরাসিদের।


জুনিয়র হকি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা বাংলাদেশের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

ভারতের তামিলনাডুতে আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জুনিয়র (অনূর্ধ্ব-২১) হকি বিশ্বকাপের খেলা। বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা করেছে হকি ফেডারেশন।

ঘোষিত ২০ সদস্যের এই দলে নেই ওমানে বাছাই পর্বে খেলা ৬ খেলোয়াড়। বাদ পড়েছেন গোলকিপার নয়ন, সুমন্ত চাকমা, শহীদুল ইসলাম, তৈয়ব আলী, সাদ্দাম হোসেন ও শিমুল ইসলাম। মালয়েশিয়ায় চারটি ম্যাচেই চূড়ান্ত হয়ে যায় ২০ সদস্যের দল।

এবারের আসরে ২৪টি দেশ ছয়টি গ্রুপে খেলবে। এফ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও দক্ষিণ কোরিয়া। ২৯ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়া, ৩০ নভেম্বর দক্ষিণ কোরিয়া এবং ২ ডিসেম্বর ফ্রান্সের বিপক্ষে বাংলাদেশের খেলা।

বাংলাদেশ দল: মাহমুদ হাসান, আশরাফুল হক, মেহরাব হোসেন সামিন, রামিন হোসেন, এনাম শরীফ, মুন্না ইসলাম, রাহি হাসান, আজিজার রহমান, সাব্বির হোসেন কনক, দ্বীন ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, ইসমাইল হোসেন, আমিরুল ইসলাম, হোজিফা হোসেন, ওবায়দুল হোসেন, তানভীর রহমান, রাকিবুল ইসলাম, আবদুল্লাহ ও সাহিদুর রহমান।


banner close