মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

চোখটা এত পোড়ায় কেন...

রজার ফেদেরারের বিদায়ী আবেগ ছুঁয়ে গেল নাদালকেও। পরশু লন্ডনের ওটু অ্যারেনায়। ছবি: টুইটার
প্রকাশিত
প্রকাশিত : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ২১:৪২

আ স ম ফেরদৌস রহমান

হাহাকার, দীর্ঘশ্বাস। আর... শূন্যতা।

ভাবাবেগের অহেতুক বাড়াবাড়ি। এ ছাড়া আর কী? এমন দৃশ্য তো প্রতিদিনই দেখা যায়। ফোরহ্যান্ডে দুর্বল শট রিটার্ন। সঙ্গী ভুল দিকে সরে এলেন, প্রতিপক্ষের রিটার্ন সে সুযোগে পাশ দিয়ে ছুটে গেল। পয়েন্ট। সেট পয়েন্ট। এবং ম্যাচ পয়েন্ট। এমনভাবে তো প্রতিদিনই কেউ না কেউ, বিশ্বের কোনো না কোনো প্রান্তের টেনিস কোর্টে হারছেন। এ নিয়ে এত আহ্লাদ? কোনো মানেই হয় না।

তবু কেন চোখের কোণটা এমন আর্দ্র হয়ে ওঠে বারবার?

সংখ্যায় তারা সাড়ে ১৭ হাজার। নীল ও লালচে আভা মেখে বসেছিলেন সবাই। এক সপ্তাহ ধরেই ছিলেন অপেক্ষায়; এই ম্যাচের, ওই মুহূর্তের। প্রতিযোগিতামূলক টেনিসে শেষবারের মতো দেখা দেবেন রজার ফেদেরার। ২৪ বছরের পথচলা থামবে তার। এই মুহূর্তের সাক্ষী হতে এক সপ্তাহের অপেক্ষা তো বড্ড কম।

১৪ মাস পর পরশু খেলতে নেমেছিলেন রজার ফেদেরার। হাঁটুর চোট শেষ কটা বছর বড্ড ভুগিয়েছে, সে চোটই তাকে এই বছর একবারের জন্য নামতে দেয়নি কোর্টে। গত সপ্তাহে তাই অবসরের ঘোষণাটা দিয়ে দিয়েছেন সুইস কিংবদন্তি।

বিশ্ব তার অবসরের সিদ্ধান্ত জেনেছে ১৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু রাফায়েল নাদাল, দেড় যুগ ধরে যার সঙ্গে লড়ে সর্বকালের সেরা দ্বৈরথের জন্ম দিয়েছেন; সেই নাদালকে সিদ্ধান্তটা ১০ দিন আগেই জানিয়েছেন ফেদেরার। একটু অনুরোধের সুরেই বলেছেন, হাঁটু যদি একটু কথা শোনে; হয়তো, হয়তো- লেভার কাপে ডাবলসে খেলবেন। বিদায়বেলায় প্রিয় বন্ধু কি থাকবেন পাশে?

নাদাল কোর্টে নেমেছেন। বন্ধুর বিদায়টা সর্বাঙ্গ সুন্দর করতে লড়েছেন ম্যাটাডোরের মতো। তাতেও সাফল্য না পেয়ে ফেদেরারকে আলিঙ্গনে বেঁধেছেন, কেঁদেছেন ব্যাকুল হয়ে। কোর্টে যতই ইস্পাতদৃঢ় চরিত্র দেখান না কেন, ফেদেরারের বিদায় সাধারণ এক সমর্থকের মতো নাদালকেও নাড়িয়ে দিয়েছে।

২২টি গ্র্যান্ড স্লাম জেতা এক চ্যাম্পিয়নও তাই প্রীতিম্যাচের এক টুর্নামেন্টে নামার আগে কাঁপছিলেন, খেলা শুরু করেছেন ডাবল ফল্ট দিয়ে। সব যখন সাঙ্গ হলো, তখন আর পারেননি। শত চেষ্টাতেও চোখ বাঁধ মানেনি। টিভিতে তার অশ্রু হাজারও সমর্থকের মনে জাগিয়েছে সঞ্জীবের হাহাকার, ‘চোখটা এত পোড়ায় কেন…?’

চোখটা আসলেই বড্ড পোড়াচ্ছিল। এমন সময়গুলোতে কেন যেন কোনোভাবেই কথা শুনতে চায় না চোখজোড়া। বারবার ভেঙে পড়েছেন নাদাল, বলেছেন তার জীবনের একটা অংশ ফেদেরার সঙ্গে বিদায় নিচ্ছে। নোভাক জোকোভিচ এমন হৃদয় নিংড়ে দেননি, কিন্তু চোখের কোণে জল টলমল করা ঠেকাতে পারেননি তিনিও।

কাঁদছিলেন ফেদেরার নিজে। তার স্ত্রী মিরকা, বাবা-মা – বাদ যাননি কেউ। একে একে সবাইকে ধন্যবাদ দিচ্ছিলেন, হাসছিলেন, কাঁদছিলেন আর কাঁদাচ্ছিলেন। বলছিলেন, এত এত অর্জন, গ্র্যান্ড স্লাম কিছুই চাননি। শুধু টেনিস খেলতে চেয়েছেন আর চেয়েছেন বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে। তা করতে গিয়ে টেনিস ইতিহাসেই জায়গা করে নেবেন, কখনো ভাবেননি।

বয়স ৪১ হয়ে গেছে। পুরশু তার নড়াচড়াতে সেটা স্পষ্ট বোঝা গেছে। মাত্র দুই গজ সামনে পড়া বলের কাছে যেতেও ব্যর্থ হয়েছেন একবার। যে ব্যাকহ্যান্ড পুরো দুই প্রজন্মের দর্শককে মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছিল, তাতেও আগের সে জাদু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু এত হাহাকারের মধ্যেও ফেদেরার হঠাৎই নিজের সেরা রূপ হাজির করছিলেন। বিজয়ীর হাসিতেই তাই বিদায় নেয়ার আশা জাগছিল।

সমর্থকরা আনন্দে মেতেছিলেন। ফেদাল জুটিতে উন্মাতাল ছিল গ্যালারি। এমন আয়োজনের মধ্য দিয়েই তো শেষ করতে চেয়েছেন ফেদেরার। চোট ও ফর্ম সর্বশেষ চার বছরে তাকে কোনো গ্র্যান্ড স্লাম জিততে দেয়নি। অবসরের আগেই গ্র্যান্ড স্লাম জয়ে নাদাল ও জোকোভিচ তাকে ছাড়িয়ে গেছেন।

এতে সমর্থকদের মনে হতাশা বেড়েছে। কিন্তু ফেদেরারের এ নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই। আবার সুযোগ দেয়া হলো, আবার এই পথেই জীবন গড়তেন, ঠিক এইভাবেই ইতি টানতেন। শেষটা জয় দিয়ে হলেই হয়তো সবাই তৃপ্তি নিয়ে ফিরতেন।

জ্যাক সক ও ফ্রান্সিস তিয়াফো সেটা হতে দেননি। পরশু আচমকা টেনিস দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ভিলেন বনে গেছেন জ্যাক সক ও ফ্রান্সিস তিয়াফো। বিদায়ী ম্যাচেও ফেদেরারকে এতটুকু ছাড় দেননি বলে সমর্থকদের রাগক্ষোভ সব বইতে হচ্ছে আমেরিকান জুটিকে। সবারই প্রশ্ন, লেভার কাপের মতো গুরুত্বহীন ম্যাচে কিংবদন্তির বিদায়ী ম্যাচে কি ছাড় দেয়া যেত না?

সক ও তিয়াফো সেটা করলে সবচেয়ে বেশি রাগ অবশ্য ফেদেরারই করতেন। এমন এক ক্যারিয়ারের শেষ দিনে দুই তরুণ প্রতিপক্ষ সর্বোচ্চটুকু না দিলে যে তাকে অপমান করা হতো। টেনিস দুনিয়ায় যে ছাপ তিনি রেখে যাচ্ছেন, তাতে প্রতিপক্ষের ছাড় দেয়ার প্রশ্ন তোলাই যে অন্যায়!

হার দিয়ে বিদায়? ভালোবাসার সব নীলপদ্ম যার কাছে সঁপে রাখা, এমন দুয়েক হারে কী যায় আসে তার।


প্রতিভাদীপ্ত সামর্থবান রিশাদের ব্যাটিংয়ে সিরিজ জয়

আপডেটেড ১৯ মার্চ, ২০২৪ ০০:১৪
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

টাইগার লেগস্পিনার রিশাদ হোসাইন এদিন পুরোদস্তুর ব্যাটার বনে গেলেন। খুনে ব্যাটিংয়ে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে একে একে বাউন্ডারি ছাড়া করতে লাগলেন শ্রীলঙ্কার বোলারদের বল। বিশেষ করে লঙ্কান স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। তিনি খুব সহজে ভুলতে পারবেন না রিশাদ হোসাইনের নাম। কারণ রিশাদের ঝড়টা যে গেছে তার ওপর দিয়েই। হাসারাঙ্গার এক ওবার থেকেই নিয়েছে ২৪ রান। হাঁকিয়েছে ২টি ছক্কা আর ৩টি চার।

তার আগের ওভারেই মেরেছিল ১টি ছক্কা আর চার। শেষ পর্যন্ত ১৮ বল থেকে ৪৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন। রিশাদের এমন ঝোড়ো ব্যাটিং বাংলাদেশের পুরনো এক আক্ষেপ পূরণেরই জানান দিল। লেজের দিকে বাংলাদেশে এমন পাওয়ার হাউস যে খুঁজে পাওয়া দায়। তিনি অন্তত সেটাই পূরণের আশ্বাস দিলেন।

সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটাতে যে দুই দলই সমান সুবিধা পাবে সেটা বোঝা গিয়েছিল ম্যাচের সূচি দেখেই। কারণ সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ দিবা-রাত্রি হওয়ায় মাঠে প্রচুর শিশির দেখা গেছে। যেটা প্রভাব রেখেছিল ম্যাচ জয়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করেছে যারা, তারাই সুবিধা পেয়েছে। গতকাল আর সেটা হওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না।

এই ম্যাচ খেলতে নামার আগে বাংলাদেশ একটি পরিসংখ্যানে এগিয়ে থেকেই মাঠে নেমেছিল। গত এক দশকে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে প্রথম ম্যাচ জিতলে, সিরিজ হারের রেকর্ড নেই টাইগারদের। লঙ্কানদের হারিয়ে সেটার আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করল নাজমুল শান্তর দল।

বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসের সময় ব্যাট হাতে ওপেন করতে দেখা গেল তানজিদ হাসান তামিমকে। অথচ একাদশে তার নাম নেই। তখনই বোঝা গেল সৌম্য সরকারের কনকাশন সাব হিসেবেই ওপেন করতে নেমেছেন তামিম। হতাশ করেননি তিনি; খেললেন বুক চিতিয়ে, করলেন দলের জন্য প্রয়োজনীয় ইনিংস। বাকিদের যাওয়া-আসার ভিড়ে তিনিই ছিলেন টাইগারদের নৌকার মাঝি। ফিরেছেন ৮১ বল থেকে ৮৪ রান করে। এই রান করে অবশ্য তিনি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাখলেন, দীর্ঘ অফফর্মের কারণে তৃতীয় ম্যাচের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়া লিটন দাসকে। নির্বাচকদের জানান দিয়ে রাখলেন ভরসা রাখার।

প্রতিদিনের মতো এদিনও ব্যর্থতার বৃত্ত দিয়েই হেঁটেছেন বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ। বিশেষ করে টপ অর্ডার। লিটন দাসের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পাওয়া বিজয় ইনিংস বড় করতে পারেনি; ফিরেছেন মাত্র ১২ রান করেই। ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও। খোঁচা মেরে উইকেট বিলিয়ে এসেছেন মাত্র ১ রান করেই। ধারাবাহিক হতে পারেননি তৌহিদ হৃদয়ও। করেছেন মোটে ২২ রান। উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। ফিরেছেন মাত্র ১ রানে। ব্যাটিং লাইনআপের এমন দশা জানান দেয় এখনো উন্নতির বাকি আছে অনেক কিছু।

এই ম্যাচে সবচেয়ে দৃষ্টিকটু বিষয় ছিল বোধহয় বাংলাদেশের বোলিং ইনিংসে খেলোয়াড়দের ফিটনেস। এক ম্যাচেই ইনজুরিতে পড়েছেন ৩ জন। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল যেন শ্রীলঙ্কা বাংলোদেশের কন্ডিশনে নয়, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার কন্ডিশনে খেলছে।

টাইগারদের পেস ইউনিটের শক্ত অবস্থান নতুন কিছু নয়, এটি বেশ পুরনো। পেসার বদল হলেও পরিবর্তন আসে না শক্তির, দুর্বলতা দেখায় না প্রতিপক্ষকে। সেটা আরও একবার প্রমাণ করে দেখালেন। শ্রীলঙ্কার ৬ উইকেটই গেছে পেসারদের ঝুলিতে। তাসকিনের শিকার ৩, মুস্তাফিজের শিকার ২ আর সৌম্য সরকারের শিকার ১ উইকেট।

ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়েই টেস্ট জয়ে মাঠে নামবেন টাইগাররা।


সাবাশ বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে যে দুই দলের জন্যই সমান সুযোগ থাকবে- এটা বোঝা গিয়েছিল ম্যাচের সূচি দেখেই। কিন্তু ম্যাচের আগে ঘটল অন্যকিছু। পিচ রিপোর্টে দেখা গেল দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে বেশ বেগ পোহাতে হবে। যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই যেন রাত হয়।

বাংলাদেশেরও হলো তাই, রান তাড়া করতে হবে বাংলাদেশকেই। সেটা করতে নেমে শুরুর দিকে একটু কঠিন হলেও শেষদিকে গিয়ে রিশাদ হোসাইনের তাণ্ডবে সেটা সহজেই করেছে বাংলাদেশ। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ৫৮ বল আর ৪ উইকেট হাতে রেখেই লঙ্কানদের কাঁদিয়ে সিরিজ বাগিয়ে নিল টাইগাররা।

মিরাজ আউট হওয়ার পর হারের শঙ্কা কিছুটা হলেও চোখ রাঙানি দিচ্ছিল বাংলাদেশকে। কারণ এরপর আর কোনো স্বীকৃত ব্যাটার নেই মুশফিকুর রহিম বাদে। এরপর উইকেটে আসেন রিশাদ। নিজের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জানান দিলেন হাসারাঙ্গাকে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে। সেই ওভারেই মারলেন আরেকটি চার। হাসারাঙ্গাকে তুলাধোনা করলেন তার পরের ওভারে। টানা ২ ছক্কা ও ৩ চারে ওই ওভার থেকে নিলেন ২৪ রান। রিশাদ অপরাজিত ছিলেন ১৮ বল থেকে ৪৮ রানে। এই জয়ে বাংলাদেশ গড়ল এক নতুন উপাখ্যান। ধরে রাখল এক দশকের একটি রেকর্ড। যেখানে ওয়ানডেতে প্রথম ম্যাচ জিতলে রেকর্ড নেই সিরিজ হারের।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং ব্যর্থতায় পড়ে লঙ্কানরা। বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার তাসকিন আহমেদ। মাত্র ১৫ তুলতেই ফেরান দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা (১) ও আভিস্কা ফার্নান্দোকে (৪)। প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেও ইনিংস বড় করতে পারেননি কুশল মেন্ডিস (২৯) আর সাদিরা সামিরা বিক্রমা (১৪)। তাড়াতাড়িই ফিরে যান আশালঙ্কাও (৩৭)। ১৫৪ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে শ্রীলঙ্কা।

একটা সময় শঙ্কা জেগেছিল ২০০ রান করার। কিন্তু লিনাংগের দৃঢ়চেতা ব্যাটিংয়ে সেটা উতরে যায় লঙ্কানরা। বাকি ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার ভিড়ে তিনি ছিলেন উইকেট কামড়ে। শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি করে দলের স্কোর ২০০ পার করে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছেড়েছেন তিনি। ১০২ বল থেকে খেলেন ১০১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। লঙ্কানরা দাঁড় করায় ২৩৫ রানের পুঁজি।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশেরও। লিটন দাসের পরিবর্তে সুযোগ পাওয়া এনামুল হক বিজয় করেছেন মোটে ১২ রান। ব্যর্থ ছিলেন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত (১), তৌহিদ হৃদয় (২২), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও (১)। তবে ব্যতিক্রম ছিলেন সৌম্য সরকারের কনকাশন সাব খেলতে নামা তানজিদ তামিম। ওপেনিংয়ে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাখলেন লিটন দাসকে। পুরো ইনিংসেই তিনি পরিচয় দিয়েছেন দায়িত্বশীলতার। ৮১ বল থেকে ৮৪ রান করে দলকে ভালো অবস্থানে রেখেই বিদায় নেন তিনি।

এরপর মুশফিকুর রহিম আর মেহেদী মিরাজ দলের হাল ধরেন। কিন্তু ১৭৮ রানের সময় হাসারাঙ্গার বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মিরাজ। এতে কিছুটা হারের শঙ্কা জেগেছিল বাংলাদেশের। কিন্তু সেসব আর হতে দেননি রিশাদ হোসাইন। শুরুর বল থেকেই চড়াও হন লঙ্কান বোলারদের ওপর। তাদের তুলাধোনা করে হেসেখেলেই ৪ উইকেটের জয় তুলে নেয় টাইগাররা।

এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে নিজেদের করে নিল নাজমুল শান্ত বাহিনী। ১৮ বল থেকে ৪৮ রান আর ৯ ওভার বল করে ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন রিশাদ হোসাইন। আর ৩ ইনিংসে একটি সেঞ্চুরি ও ফিফটিসহ ১৬৩ রান করে সিরিজসেরা হয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।


৪ উইকেটে জিতল বাংলাদেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৪ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ।

সোমবার এ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে শ্রীলঙ্কা। ইনিংসের শেষ বলে অলআউট হওয়ার আগে ২৩৫ রান সংগ্রহ করে তারা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০১ রান করেন লিয়ানাগে। বাংলাদেশের হয়ে ৪২ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন তাসকিন আহমেদ।

জবাবে খেলতে নেমে ৪০ ওভার ২ বলে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেছেন তানজিদ তামিম।


শ্রীলংকার সংগ্রহ ২৩৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে জানিথ লিয়ানাগের প্রথম সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৩৫ রান করেছে শ্রীলংকা। ১৫৪ রানে সপ্তম উইকেট পতনের পর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির ইনিংসে অপরাজিত ১০১ রান করে দলকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন লিয়ানাগে।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে বোলিং করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য পায় বাংলাদেশ। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান পাথুম নিশাঙ্কাকে ১ রানে লেগ বিফোর আউট করেন টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদ।

চতুর্থ ওভারে শ্রীলংকা শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন তাসকিন। উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দিয়ে ৪ রান নিয়ে সাজঘরে ফিরেন আরেক ওপেনার আবিস্কা ফার্নান্দো।

১৫ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর ২৬ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমা। ১১তম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমণে এসেই বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ১৪ রান করা সামারাবিক্রমাকে শিকার করেন তিনি।

৪১ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের পর নতুন ব্যাটার চারিথ আসালঙ্কাকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন কুশল। তাদের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান স্পিনার রিশাদ হোসেন। ১৮তম ওভারে প্রথম বোলিংয়ে এসে ২৯ রান করা কুশলকে শিকার করেন রিশাদ। জুটিতে ৪২ বলে ৩৩ রান যোগ করেন কুশল-আসালঙ্কা।

এরপর পঞ্চম উইকেটে ৪৩ রান যোগ করে শ্রীলংকার রান ১শ পার করেন আসালঙ্কা ও লিয়ানাগে। উইকেটে সেট হওয়া আসালঙ্কা ৫টি চারে ৩৭ রান করে মুস্তাফিজের দ্বিতীয় শিকার হন

আসালঙ্কার পর দুনিথ ওয়েলালাগেকে ১ ও হাসারাঙ্গা ডি সিলভাকে ১১ রানে থামিয়ে লংকানদের চাপের মুখে ঠেলে দেন স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। ১৫৪ রানে সপ্তম উইকেট হারায় লঙ্কানরা।

চাপের মুখে এক প্রান্ত আগলে লড়াই করে ৬৫ বলে ওয়ানডেতে চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন লিয়ানাগে। অষ্টম উইকেটে মহেশ থিকশানার সাথে ৭৮ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৬০ রান যোগ করেন তিনি। থিকশানা ১৫ রানে আউট হলেও, ইনিংসের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে চার মেরে ক্যারিয়ারের নবম ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান ১০১ বল খেলা লিয়ানাগে।

লিয়ানাগের সেঞ্চুরিতে সব উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৩৫ রানের সংগ্রহ পায় শ্রীলংকা। ১১টি চার ও ২টি ছক্কায় ১০২ বলে অপরাজিত ১০১ রান করেন লিয়ানাগে। বাংলাদেশের তাসকিন ৪২ রানে ৩টি, মুস্তাফিজ ৩৯ রানে ও মিরাজ ৩৮ রানে ২টি করে উইকেট নেন।


হাসপাতালে পরিণত হয়েছে ব্রাজিল দল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

চলতি মাসেই শক্তিশালী স্পেন ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। কিন্তু ম্যাচের আগেই যেন হাসপাতালে পরিণত হয়েছে সেলেওসাওরা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লম্বা হচ্ছে ইনজুরির তালিকা। একের পর এক চোটে ছিটকে যাচ্ছেন তারকা ফুটবলাররা। জানা গেছে, এ মুহূর্তে ব্রাজিলের প্রাথমিক ৫০ জনের তালিকার ১৩ জনই রয়েছেন ইনজুরিতে।

এরই মধ্যে এ দুই ম্যাচকে সামনে রেখে দল ঘোষণা করেছেন সেলেসাওদের নতুন কোচ দরিভাল জুনিয়র। দল ঘোষণার আগেই ইনজুরির কারণে বাদ পড়েছিল দলের নিয়মিত গোলরক্ষক এলিসন বেকার। দুই দিন আগে ছিটকে গেছেন আরেক গোলরক্ষক এদেরসন। দুই গোলরক্ষকের সঙ্গে হতাশার খবর দিয়েছেন ডিফেন্ডার মার্কিওনিস ও ফরোয়ার্ড গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লিও। এবার সেই তালিকায় নাম লেখালেন সময়ের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার ক্যাসেমিরো।

অভিজ্ঞ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারকে হারিয়ে বেশ হতাশা প্রকাশ করেছেন দরিভাল জুনিয়র। তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমরা ক্যাসেমিরোকেও হারায়েছি। আসন্ন দুই প্রীতি ম্যাচেই তাকে পাচ্ছি না। তার জায়গায় পর্তুগিজ ক্লাব পোর্তোর হয়ে খেলা মিডফিল্ডার পেপেকে ডাকা হয়েছে।’

এক বিবৃতিতে ইতোমধ্যে ১৩ জন ফুটবলারের চোটের কারণে দলে না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন দরিভাল। তিনি বলেন, ‘আমাদের টিম চিকিৎসক রদ্রিগো লাসমারের একটি প্রতিবেদন পেয়েছি। যেখানে বলা হয়েছে জাতীয় দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে থাকা ৫০ জনের মধ্যে ১৩ জনই ক্লাবের হয়ে খেলতে গিয়ে ইনজুরিতে রয়েছেন।’


২২ গজের ফায়ারম্যান শেন বন্ড

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

পিচ বা কন্ডিশন যেমনই হোক ব্যাটসম্যানের পাঁজর লক্ষ্য করে বল করে তাদের নাভিশ্বাস ওঠানোকে রীতিমতো অভ্যাসে পরিণত করেছিলেন শেন বন্ড। ফর্মের তুঙ্গে থাকা অবস্থাতে একাই যেকোনো ব্যাটিং লাইনআপকে শুইয়ে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল এই পুলিশম্যানের।

সারারাত পুলিশের ডিউটি করে ভোর ছয়টার ট্রেনিংয়েও ফাঁকি দেননি কখনো। ছোট থেকেই যে মনের মধ্যে পুষে রেখেছিল স্যার রিচার্ড হ্যাডলির মত ফাস্ট বোলার হওয়ার আর প্রতিপক্ষকে গতির আগুনে পোড়ানোর স্বপ্ন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে পুলিশের চাকরিতে যাওয়ার পর বেশিদিন স্থায়ী থাকতে পারেননি, বুঝতে পারেন ক্রিকেট থেকে দূরে থাকা সম্ভব নয়, ক্রিকেট যে তার হৃদস্পন্দনে গেঁথে আছে।

এর পরেই শুরু হলো আসল গল্প। আবারও প্রত্যাবর্তন করলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। এরপর আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি। ‘এ’ দলের হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক হয় টেস্ট সিরিজ দিয়ে। সেবার খুব একটা ভালো করতে না পারলেও ২০০২ সালে ত্রিদেশীয় সিরিজ দিয়ে আসেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাদপ্রদীপের আলোয়। সেই সিরিজেই শিকার করেন ২১ উইকেট।

এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি, প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়াকেই নিজের ‘প্ৰিয় খাদ্য’ বানিয়ে ফেলেন। মাত্র ১৭টি এক দিনের ম্যাচে ১৫.৭৯ গড়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেই সংগ্রহ করে ফেলেন ৪৪টি উইকেট, এর মধ্যে রয়েছে তিন তিনবার অসিদের বিরুদ্ধে ৫ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব, এমনকি ক্যারিয়ারের একমাত্র হ্যাটট্রিকটাও সেরে ফেলেন সেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেই হোবার্টে ২০০৭ সালে। পন্টিংদের দেখলেই বোধ হয় আলাদা রকম তেতে উঠতেন বন্ড, আর অসি অধিনায়ক পন্টিংকে টানা ছয়টি ম্যাচে আউট করার এক বিরল কৃতিত্বও স্থাপন করে ফেলেন তিনি।

ফাস্ট, ফিউরিয়াস, অ্যাগ্রেসিভ ও ড্যাশিং এই চারটি শব্দেই হয়তো শেন বন্ডকে বর্ণনা করা যেত, হতে পারতেন তিনি বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার, কিন্তু পঞ্চম আরেকটি শব্দ তাঁর ক্যারিয়ারের সঙ্গে প্রায় সমার্থক হয়ে গিয়েছিল- ‘ইনজুরি’। মারাত্মক পরিমাণে চোটপ্রবণ হওয়ার কারণে মাত্র সাড়ে আট বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১৮টি টেস্ট, ৮২টি এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ আর ২০টি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচেই সীমাবদ্ধ থেকে গেল।

পুরো নাম : শেন এডওয়ার্ড বন্ড

জন্ম : ৭ জুন, ১৯৭৫ সাল

জন্মস্থান : ক্রাইস্টচার্চ, ক্যান্টারবারি, নিউজিল্যান্ড

রাশি: মিথুন

প্রিয় খেলা: ক্রিকেট

প্রিয় খাবার: বার্গার, চকোলেট

প্রিয় পানীয়: ফ্রুট জুস, কফি

প্রিয় রং: সাদা

প্রিয় ক্রিকেটার: ডন ব্রাডম্যান, রিচার্ড হ্যাডলি

প্রিয় ক্রিকেট দল: নিউজিল্যান্ড

প্রিয় সতীর্থ: ড্যানিয়েল ভেট্টরি

প্রিয় গাড়ি: Datsun 1200/B110

প্রিয় শখ: গান শোনা, ক্রিকেট খেলা

প্রিয় জুতার ব্র‌্যান্ড: নাইকি


‘একের ভিতর তিন’ হতে চায় তানজিম সাকিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল সাগর

লেজের দিকে ব্যাটহাতে ভূমিকা রাখতে না পাড়ায় কত ম্যাচ যে বাংলাদেশ হেরেছে তার কোনো ইয়াত্তা নেই। তবে বর্তমানে সেই অন্ধকার থেকে বের হতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। হালের তাসকিন, তানজিম কিংবা রিশাদরা দেখাচ্ছেন আলোর রেখা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে চাপের মুখে দাঁড়িয়েও তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে বেশ কিছু সময় ক্রিজে ছিলেন তানজিম হাসান সাকিব। গড়েছিলেন মোটামুটি রানের একটা জুটিও। যেটা সাহায্য করেছিল বাংলাদেশকে লড়াইয়ের পুঁজি গড়তে।

তানজিম সাকিব যে ব্যাট হাতেও সঙ্গ দিতে পারে এটা বেশ পুরোনো কথাই। শ্রীলঙ্কার মুখে সেটার জানান দিল। লঙ্কানদের বিপক্ষে বল হাতেও দারুণ সময় পার করেছেন তানজিম। প্রথম ওয়ানডে জয়ে ছিল তার বড় অবদান। এবার বিসিবির ডিজিটাল মিডিয়ায় পাঠানো এক ভিডিওর মাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন নিজের লক্ষ্য।

লঙ্কানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে তানজিম ব্যাটহাতে প্রশংসা কুড়ালেও সন্তুষ্ট নন নিজের ব্যাটিং নিয়ে। সাকিব বলেন, ‘যখন ব্যাটিংয়ে নামি আমার চেষ্টা ছিল, আমি হৃদয় ভাইকে সাপোর্ট দিব। শেষের দিকে আমি একটু চার্জ করব। আমি হৃদয় ভাইকে সাপোর্ট দিচ্ছিলাম কিন্তু আমি যে শটে আউট হয়েছি, তাতে আমি আসলে সন্তুষ্ট না।’

ভিডিওতে তানজিম সাকিবের কণ্ঠে আক্ষেপ, আরও কিছুক্ষণ ব্যাটিং না করতে পারার। ‘আমার মনে হয়েছে, আমি যদি আরও দুই ওভার হৃদয় ভাইকে সাপোর্ট দেওয়ার পরে শেষের দুই ওভারে চার্জ করতাম, তাহলে আমরা আরও একটু বেশি রান করতে পারতাম এবং দলের জন্য আরও অবদান রাখতে পারতাম।’

বাংলাদেশ দলে ‘একের ভিতর তিন’ হতে চান এই তরুণ পেসার। অবদান রাখতে চান ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিন বিভাগেই। তানজিম সাকিব জানান, ‘মানুষ তো স্বপ্ন দেখেই। আমি যখন দলের হয়ে খেলি, আমি চেষ্টা করি ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিন দিকে অবদান রাখার। তিন দিক দিয়ে যদি সাপোর্ট দিতে পারি, তাহলে দল অবশ্যই ভালো কিছু পাবে। আমি এটাই চেষ্টা করি। আমি যদি ব্যাটিংয়ে যাই ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে দলকে সাপোর্ট দিতে চাই। বোলিংয়ে গেলে বোলিংয়ের মাধ্যমে এবং ফিল্ডিংয়ে গেলে ফিল্ডিংয়ের মাধ্যমে। তাহলেই দল ভালো করবে। আমি যদি প্রতিটা ক্ষেত্রে ভালো করি, তাহলে দল ভালো পাবে আমার কাছ থেকে।’

তানজিম সাকিবদের এমন ইচ্ছা নিশ্চিতভাবেই আশা দেখায় টাইগার সমর্থকদের। তবে তানজিম সাকিবের সেই স্বপ্ন পূরণ হতে লাগবে আরও কিছুটা সময়। কারণ ডান পায়ের হ্যামিস্ট্রিং ইনজুরির কারণে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছেন তিনি।


গর্জে উঠুক বাংলাদেশ, জেগে উঠুক বাংলাদেশ

আপডেটেড ১৮ মার্চ, ২০২৪ ০০:৪০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

প্রথম ম্যাচের আত্মবিশ্বাস নিয়েই দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নেমেছিল টাইগাররা। নানান উত্থান-পতন ছিল ব্যাটিং ইনিংসে। সবমিলিয়ে লড়াকু এক পুঁজিই গড়েছিল টাইগাররা। বোলিং ইনিংসে জয়ের আশাও জাগিয়েছিল তাসকিন-শরিফুলরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাথুম নিশাঙ্কা আর চারিথ আশালঙ্কার জুটিতে জয়টা অধরাই থেকে গেছে। অপেক্ষা বেড়েছে সিরিজ জয়ের।

আজ সোমবার সকাল ১০টায় আবারও চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে তৃতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।

ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচই ছিল দিবা-রাত্রী ম্যাচ। যেখানে প্রথম ওয়ানডেতে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচটা নিজেদের করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। তবে দুই ম্যাচেই একটা মিল ছিল। পরের ইনিংসে যারা ব্যাট করেছে, তারাই জয়ের স্বাদ পেয়েছে। এর পেছনে বড় কারণ ছিল চট্টগ্রামের আবহাওয়ার। প্রচুর শিশির দেখা গেছে দুই ম্যাচেই; যেটা ব্যাটিং দলকে বেশ খানিকটা সুবিধা দিয়েছে। আর সেটাই কাজে লাগিয়েছে তারা। সিরিজের শেষ ম্যাচটা (আজকের ম্যাচ) অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। তাই এই ম্যাচে আবহাওয়া দুই দলের জন্যই সমান থাকবে। ম্যাচের রেজাল্টে ভূমিকা থাকবে না শিশিরের। সেক্ষেত্রে নিজেদের শক্তিকেই কাজে লাগিয়ে যারা ভালো খেলতে পারবে জয়টা তাদেরই প্রাপ্য হবে।

প্রথম দুই ম্যাচে শুণ্য রানে আউট হওয়ায় তৃতীয় ম্যাচের দল থেকে বাদ পড়েছেন ওপেনার লিটন দাস। সেক্ষেত্রে আজকের ম্যাচে নিশ্চিতভাবেই পরিবর্তন আসবে বাংলাদেশ দলে। লিটনের পরিবর্তে দলে সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে অন্য দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় আর তানজিদ হাসান তামিম। দুইজনই আছে ফর্মে। তবে ওপেনিং পজিশনে দেখা যেতে পারে এনামুল হক বিজয়কেই।

পরিবর্তন আসবে বোলিং লাইনেও। ইনজুরিতে পড়েছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। তার পরিবর্তে একাদশে দেখা যেতে পারে পেসার হাসান মাহমুদকে। ডিপিএলে দুর্দান্ত সময় পার করছিলেন তিনি। সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় তাই হাসান মাহমুদের একাদশা জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন শ্রীলঙ্কার বামহাতি পেসার দিলশান মাদুশাঙ্কাও। যেটা কিছুটা হলেও স্বস্তি দিবে বাংলাদেশকে।

শেষ দুই ম্যাচেই বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে একটা জিনিসে বেশ মিল দেখা গেছে, দুই ম্যাচেই বাকিরা ছিল মোটামুটি ব্যর্থতদের কাতারেই। দলের ১/২ জন হাল ধরেছে। প্রথম ম্যাচে ছিল টপঅর্ডার আর দ্বিতীয় ম্যাচে ছিল মিডল অর্ডার। দ্বিতীয় ম্যাচে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেওয়া যাবে না কোনো ভাবেই।

চট্টগ্রামের মাঠকে বরাবরই বলা হয় রানের স্বর্গরাজ্য। যেখানে ওয়ানডেতে ম্যাচে জয়ের জন্য অন্তত ৩০০ এর বেশি রানের পূঁজি দাঁড়া করাতে হবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ যদি আগে ব্যাট করে তাহলে ৩২০/৩৩০ রানের স্কোর করতে হবে। আর প্রথমে বোলিং করলে লঙ্কানদের আটকে রাখতে হবে ২৭০-২৮০ রানের মধ্যে।

আজকের ম্যাচে জয়ের জন্য ব্যাটিংয়ে দায়িত্ব নিতে হবে টপঅর্ডার ব্যাটারদের। বিশেষ করে সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত আর তৌহিদ হৃদয়কে ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতা আনতে হবে। একই সাথে রানে ফিরতে হবে মুশফিকুর রহিমকেও। ওপেনিং জুটিকে পার করতে হবে অন্তত ১০/১৫ ওভার।

এ ম্যাচে বোলিংয়ের নেতৃত্বটা থাকবে বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের হাতেই। সাম্প্রতিক সময়টা দারুণ যাচ্ছে এই পেসারের। বিপিএলে সবার কম ম্যাচ খেলেও ছিলেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। লঙ্কানদের বিপক্ষে পার করছেন ভালো সময়। সেটারই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে আজকের ম্যাচে।

তবে আজকের ম্যাচে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি উজ্জীবিত করবে একটি পরিসংখ্যান। সেটা হলো গত এক দশকে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ জয়ের পর বাংলাদেশ আর সিরিজ হারেনি। এ সময়ের মধ্যে যে সিরিজগুলো বাংলাদেশ হেরেছে তার সবগুলোতেই বাংলাদেশ হেরেছিল প্রথম ম্যাচ।

তবে খাতা কলমের হিসাব বাইরে রেখে বাংলাদেশকে পারফর্ম করতে হবে মাঠে। জয়ের জন্য সমান গুরুত্ব দিতে হবে সব বিভাগেই। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিন বিভাগেই দিতে হবে ১২০ শতাংশ। ওয়ানডে সিরিজ জয় করে টেস্টের জন্য আত্মবিশ্বাসে বাড়িয়ে তুলুক সেটাই প্রত্যাশ্যা।


তুলির শেষ আঁচড় মাইকেল বেভান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

ভারতের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক মাহেন্দ্র সিং ধোনিকে লম্বা সময় ধরে ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ফিনিশার বলে বিবেচনা করা হয়। তবে ক্রিকেটের ভোকাবুলারিতে এই ফিনিশার শব্দটিকে বাড়তি মর্যাদা দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা মানুষটির নাম মাইকেল বেভান।
১৯৭০ সালের ৮ মে অস্ট্রেলিয়ান ক্যাপিটাল টেরিটরির বেলকনেনে জন্ম নেন মাইকেল বেভান। ১৯৯৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি তিনি ছিলেন বাঁহাতি লেগস্পিনার (চায়না ম্যান)।
১৮টি টেস্ট খেললেও ক্রিকেটের অভিজাত এ ফরম্যাটে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তিনি। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে বড় এক নাম ছিলেন মাইকেল বেভান। ম্যাচ শেষ করে আসার ব্যাপারে অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতার কারণে মাইকেল বেভানের সতীর্থরা তার নাম দিয়েছিলেন ‘দ্য টার্মিনেটর’। তাকে আবার ‘দ্য ফিনিশার’ও বলা হয়।
শুধু অস্ট্রেলিয়ারই নয়, ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ওয়ানডে স্পেশালিস্ট বেভান। ১৩ বছরের লম্বা ক্যারিয়ারে অসংখ্যবার লেজের দিকের ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে ব্যাট করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন বেভান।
‘সো কলড’ বিগ হিটার না হয়েও যে, আস্কিং রেটে ওভারপ্রতি ৮-৯ রান করে নেওয়া সম্ভব; সেটা সম্ভবত বেভানই প্রথম দেখিয়েছিলেন। মাসল পাওয়ার নয়, বেভানের সাফল্যের রহস্য ছিল ‘শৃঙ্খলা’ আর ‘মনের জোর’। যেকোনো পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া আর সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারার ক্ষমতা- এই দুটি জিনিসই তাকে আর দশটি সাধারণ প্লেয়ার থেকে আলাদা করেছিল।
২৩২ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৫৩.৫৮ গড়ে রান করেছেন ৬৯১২। ৪৬ ফিফটি ও ৬ সেঞ্চুরির মালিক এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান নট আউট থেকেছেন ৬৭টি ওয়ানডে ইনিংসে। গড়টা তাই ঈর্ষণীয়, ৫৩.৫৮।
২০০৭ সালে মাইকেল বেভান যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন, তখন ওয়ানডেতে ৫০-এর বেশি ব্যাটিং গড় ছিল কেবল তারই। ১৯৯৯ ও ২০০৩ বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালে অস্ট্রেলিয়া যে ফাইনাল খেলেছিল, তাতে বড় অবদান ছিল মাইকেল বেভানের।
মাইকেল বেভান যেন ছিলেন বিশাল ক্যানভাসে তুলির শেষ আঁচড়। যে আঁচড় মুগ্ধতা তৈরি করত সেই ক্যানভাসের, যে আঁচড় সৌন্দর্যের পূর্ণতা এনে দিত, দৃষ্টিনন্দন করত ক্যানভাসকে।


পুরো নাম: মাইকেল গাইল বেভান।
জন্ম: ৮ মে, ১৯৭০ সাল।
জন্মস্থান: বেলকোনেন, অস্ট্রেলিয়া।
রাশি: বৃষ রাশি।
প্রিয় খেলা: ক্রিকেট।
প্রিয় খাবার: ফ্রাইড চিকেন।
প্রিয় পানীয়: ওয়াইন।
প্রিয় রং: কালো, লাল।
প্রিয় ক্রিকেটার: ডন ব্রাডম্যান।
প্রিয় ক্রিকেট দল: অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল।
প্রিয় সতীর্থ: স্টিভ ওয়াহ।
প্রিয় গাড়ি: অডি।
প্রিয় স্টেডিয়াম: মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড, অস্ট্রেলিয়া ।
প্রিয় শখ: গান শোনা, ক্রিকেট খেলা।
প্রিয় জুতার ব্র‌্যান্ড: অ্যাডিডাস।


টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চালু হচ্ছে নতুন নিয়ম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্রিকেটে প্রায়ই শোনা যায় নির্দিষ্ট সময়ে ম্যাচ শেষ করতে না পারায় খেলোয়ারদের ম্যাচ ফির কিছু শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। তবে এবার আরও কঠিন হতে যাচ্ছে সেই শাস্তি। আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের পরই সাদা বলের ক্রিকেটে অর্থাৎ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পরীক্ষামূলক ‘স্টপ ওয়াচ’ চালু করেছিল আইসিসি। নতুন খবর অনুযায়ী আগামী জুনে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেই স্থায়ীভাবে এই নিয়ম চালু করতে যাচ্ছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

ফিল্ডিং দল প্রতি ওভার শেষে নতুন ওভার শুরুর আগে ৬০ সেকেন্ড সময় পাবে। এই ৬০ সেকেন্ড সময় শেষ হওয়ার আগেই নতুন ওভার শুরু করতে হবে। প্রতিবার এই নিয়ম ভাঙার জন্য আছে পেনাল্টির ব্যবস্থা। মাঠের আম্পায়ার ফিল্ডিং দলকে দুইবার সতর্ক করে দেবেন। তৃতীয়বার নিয়ম ভাঙলে ৫ রান পেনাল্টি হবে। তৃতীয়বার থেকে যতবার এই নিয়ম ভাঙা হবে, প্রতিবারই ৫ রান যোগ হবে প্রতিপক্ষের স্কোর বোর্ডে।

ইলেকট্রনিক স্ক্রিনে ৬০ সেকেন্ডের টাইমার চালু করবেন তৃতীয় আম্পায়ার। তবে ব্যাটসম্যানের কারণে, ডিআরএস বা অন্য কোনো অনিবার্য কারণে পরবর্তী ওভার শুরু করতে দেরি হলে ফিল্ড আম্পায়ার চূড়ান্ত সময় নির্ধারণ করবেন।


হৃদয়ের হৃদয়ছোঁয়া ব্যাটিংয়েও আক্ষেপের বীণা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল সাগর

বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসটি ছিল উত্থান-পতনের। শূন্য রানে লিটন ফিরলেও সেটিকে সামলে নেয় নাজমুল শান্ত আর হৃদয়। চালকের আসনে বসার পর আবারও হয় ছন্দপতন। তবে এসবের মাঝে তৌহিদ হৃদয় ছিলেন উইকেট কামড়ে। কোনোভাবেই লঙ্কান বোলারদের সুবিধা করতে দেননি। পুরো ইনিংস খেলে গেছেন দলের চাহিদা অনুযায়ী। তার অপরাজিত ইনিংসে ভর করেই লড়াকু পুঁজি পায় বাংলাদেশ। তবুও হৃদয় একটা আক্ষেপ করতেই পারে। কাছে গিয়েও যে পাওয়া হয়নি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম শতকটা। অপরাজিত ছিলেন ৯৬ রানে।

ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচটা ভালো করতে পারেননি তৌহিদ হৃদয়। পরাস্ত হয়েছিলেন প্রমোদ মাদুসানের বলে। তার আগে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও খুব একটা ভালো করতে পারেননি। আরেকটু পেছনে গেলে শেষ অর্ধশতকের দেখা পেয়েছিল হৃদয় আরও ৭ ইনিংস আগে। ওয়ানডে বিশ্বকাপে অস্টেলিয়ার বিপক্ষে। এরপর গতকাল পেলেন আরেকটি অর্ধশতক। এটি হৃদয়ের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সপ্তম অর্ধশতক।

উত্থান-পতনের ইনিংসে হৃদয় কখনো জুটি গড়েছেন নাজমুল শান্তকে সঙ্গে নিয়ে, কখনো মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে, কখনো মেহেদী মিরাজের সঙ্গে আবার কখনো তানজিম হাসান সাকিব কিংবা তাসকিন আহমেদের সঙ্গে। বাকিরা ফিরে গেলেও দায়িত্ব নিয়েছেন হৃদয়। ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন ইনিংসটাকে শেষ করেই।

শুরুতে কিছুটা খোলসে আবদ্ধ হয়েছিলেন তৌহিদ হৃদয়। কোনো ঝুঁকি নেননি, অপেক্ষা করেছেন বাজে বলের জন্য। যেটার প্রমাণ মেলে হৃদয়ের ইনিংস দেখলেই। তরুণ এই টাইগার ক্রিকেটার অর্ধশতক পূরণ করেছেন ৭৪ বল থেকে। এ সময় তিনি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন মাত্র ২টি। কিন্তু দলের প্রয়োজনে শেষ দিকে এসে খেলেছেন খোলস থেকে বেড়িয়ে এসে। পরের ৪৬ রান করেছেন ২৮ বলে থেকে। এ সময় হৃদয় হাঁকিয়েছেন ৫টি ছয় ও ১টি চার।

ইনিংসের শেষ দুই বলেই দুটি ছক্কা হাঁকালেন হৃদয়। এতে তার ব্যক্তিগত স্কোরটা দাঁড়াল ৯৬ রানে। এখানেই হৃদয়ের আক্ষেপ থেকে যাবে আর একটি বলের কিংবা একটি চারের। তাহলেই যে পূরণ হয়ে যেত ক্যারিয়ারের প্রথম শতক। ১০২ বল থেকে ৯৬ রানে অপরাজিত থেকে ৪ রানের আক্ষেপ নিয়েই ফিরতে হয় হৃদয়কে।

৯৬ রানের ইনিংসে সপ্তম উইকেটে তানজিম সাকিবের সঙ্গে ৪৭ এবং অষ্টম উইকেটে তাসকিনের সঙ্গে ২৩ বলে ৫০ রানের দারুণ দুটি জুটি গড়েন হৃদয়।


ইনজুরির শেষ হয়েছে কাইল মিলসের ক্যারিয়ার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

শেন বন্ডের গতি কিংবা স্যার রিচার্ড হ্যাডলির সুইংয়ের মাদকতা তার বোলিংয়ে ছিল না। হালের টিম সাউদি কিংবা ট্রেন্ট বোল্টদের ভিড়ে আলাদা করে চেনাতে পারেননি এই প্রজন্মেও। তবুও নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের আক্ষেপ তিনি। নিজের সীমিত সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা দিয়েই চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ইনজুরির করাল গ্রাসে ক্যারিয়ারটা থমকে গেছে বারবার। তিনি কাইল মিলস, কিউই ক্রিকেটের আক্ষেপ।

রাগবির দেশ নিউজিল্যান্ড। দীর্ঘদেহী মিলস যে কেন দেশের জনপ্রিয়তম খেলা ছেড়ে ক্রিকেটের নেশায় মজলেন সে এক প্রশ্ন বটে! বাড়ির উঠানে বড় ভাইদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে কখন যে চামড়ার বলটার সঙ্গে আষ্টে-পৃষ্ঠে জড়িয়ে গেলে তা বোধ হয় মিলস নিজেও জানেন না। অকল্যান্ডের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে অভিষেকের তিন বছর বাদেই ডাক পেয়ে যান জাতীয় দলে।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে এক দিনের ক্রিকেটে অভিষেক হয় মিলসের। প্রথম ম্যাচে আহামরি ভালো বোলিং না করলেও সবাইকে চমকে দেন দ্বিতীয় ম্যাচেই। শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন উইকেটের ম্যাচজয়ী এক স্পেলে ম্যাচসেরার পুরস্কারটা ভাগাভাগি করে নেন ম্যাথু সিনক্লেয়ারের সঙ্গে।

শেন বন্ড এবং ড্যারেল ট্যাফির জন্য দলে ঢোকার সুযোগ পাচ্ছিলেন না মিলস। এই দুইজনের ইনজুরিতে ইংল্যান্ড সফরে টেস্ট দলে ডাক পড়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওভালে নিজের অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ছয় ওভার বল করার পরেই সাইড স্ট্রেনে চোটে পড়ে গোটা সিরিজ থেকেই ছিটকে যান তিনি। ২০০৭ বিশ্বকাপের আগে ছিলেন ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে। শেন বন্ড এবং তার জুটি দেখার অপেক্ষায় ছিল গোটা বিশ্ব। কিন্তু আরও একবার ইনজুরির আঘাত! বিশ্বকাপ দল থেকে অশ্রুসজল চোখে নাম প্রত্যাহার করে নেন মিলস।

২০১৫ সালে সব ধরনের ক্রিকেটকে বিদায় জানান মিলস। লাল বলের চেয়ে সাদা বলের ক্রিকেটেই বেশি কার্যকরী ছিলেন এই পেসার। ১৯ টেস্টে ৪৪ উইকেট শিকার করলেও ১৭০ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ২৪০ উইকেট। এ ছাড়া ৪২ টি-টোয়েন্টিতে তার উইকেট সংখ্যা ৪৩। নিচের দিকে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে মিলসের জুড়ি মেলা ভার।

পুরো নাম : কাইল ডেভিড মিলস

জন্ম : ১৫ মার্চ, ১৯৭৯ সাল

জন্মস্থান : অকল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড

রাশি: মীন

প্রিয় খেলা: ক্রিকেট, ঘোড়দৌড়

প্রিয় খাবার: সামুদ্রিক মাছ

প্রিয় পানীয়: ফ্রুটস জুস

প্রিয় রং: সাদা

প্রিয় ক্রিকেটার: মার্টিন ক্রো, রিচার্ড হ্যাডলি

প্রিয় ব্যাটার: শচীন টেন্ডুলকার, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট

প্রিয় বোলার: মুত্তিয়া মুরালিধরন

প্রিয় ক্রিকেট দল: নিউজিল্যান্ড

প্রিয় সতীর্থ: ব্রেন্ডন ম্যাককালাম

প্রিয় গাড়ি: অডি

প্রিয় শখ: মাছ ধরা

প্রিয় জুতার ব্র‌্যান্ড: পিউমা


নিজ ঘরেই নিগৃহীত ব্রাজিল তারকা ভিনিসিয়াস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

লা-লিগায় ফুটবল মাঠে প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াইয়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে লড়াই চালিয়ে যেতে হয় বর্ণবাদী আচরণের বিরুদ্ধে। প্রায়ই প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকরা তাকে বর্ণবাদী আক্রমণ করে থাকেন। কিন্তু নিজ ঘর রিয়াল মাদ্রিদেই বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন তিনি। সেটা আবার খোদ লস ব্লাঙ্কোসদের ম্যানেজমেন্ট থেকে। যে কারণে ভিনিসিয়াস হুমকি দিয়েছিলেন ম্যাচ বয়কট করার।

হ্যাঁ, ব্যাপারটা অনেকটা এ রকমই। সাম্প্রতিক এক ঘটনায় নিজ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধেই ‘অবস্থান’ নিয়েছিলেন ভিনিসিয়াস। গত ২ মার্চ লা লিগায় ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করে রিয়াল। সে ম্যাচে রিয়ালের হয়ে জোড়া গোল করেছিলেন ভিনিসিয়াস। সে দিন ভ্যালেন্সিয়া ম্যাচের আগে মাঠের বাইরে আরেকটি ‘ম্যাচ’ও খেলতে হয়েছে রিয়াল ও ভিনিসিয়াসকে। সেটা নিজেদের মধ্যেই। শেষ পর্যন্ত রিয়ালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হোসে অ্যাঞ্জেল সানচেজের হস্তক্ষেপে শেষ হয় উত্তপ্ত হয়ে যাওয়া ম্যাচটি।

সেই ঘটনার সূত্রপাত মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রিয়ালের একটি পোস্টকে ঘিরে। ভ্যালেন্সিয়া ম্যাচের আগে ভিনিসিয়াসের একটি ছবি পোস্ট করা হয় রিয়ালের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে। ছবিতে দেখা যায়, মাদ্রিদের ব্যাজে চুমু খাচ্ছেন ভিনিসিয়াস। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু বিপত্তি বাধে ছবিটির নিচে থাকা একটি স্টিকার নিয়ে। সেখানে ইসরায়েলি ডিজে জুটি ‘ভিনি ভিসি’-এর একটি স্টিকার জুড়ে দেওয়া হয়। স্টিকারটিতে গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে মানুষের বিবর্তন। আর সেটি বানর থেকে মানুষ হয়ে ডিজেতে রূপান্তরিত হয়েছে ‘ভিনি ভিসি’-এর স্টিকারে- গ্রাফিকসের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে এটাই।

৩০ মিনিট পরই মুছে ফেলা হয় সেই পোস্টটি। কিন্তু ততক্ষণে সেটি দেখে ফেলেন ভিনিসিয়াস। ব্রাজিল ফরোয়ার্ড এই নিয়ে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন রিয়ালের নির্বাহীদের সঙ্গে। জানা যায়, রিয়াল কর্তৃপক্ষের কাছে ওই পোস্টের ব্যাখ্যা দাবি করেন ভিনিসিয়াস। এমনকি ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে না খেলার হুমকিও দেন।

ভিনিসিয়াস রাগান্বিত হওয়ার পর তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন রিয়ালের প্রধান নির্বাহী হোসে অ্যাঞ্জেল সানচেজ। ভিনির দাবি ছিল, এ মুহূর্তে তিনি বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। আর তখনই কি না রিয়ালের সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে এমন পোস্ট!

হোসে অ্যাঞ্জেল সানচেজ অবশ্য সেই পোস্টের ব্যাখ্যা দেন ভিনিকে। এরপরই শান্ত হন ব্রাজিল তারকা। ভিনির দাবি অনুযায়ী, যারা এই পোস্ট করেছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার ক্ষেত্রে রিয়াল আরও সাবধান হবে; সানচেজ এমন প্রতিশ্রুতিও দেন তাকে।


banner close