ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) গত মৌসুমে সুপার লিগে উঠতে ব্যর্থ মোহামেডান এবার টেনেটুনে সেরা ছয়ে জায়গা করে নিয়েছে। তবে সুপার লিগের শুরুর দিনে কঠিন পরীক্ষা দিতে হচ্ছে তাদের। আগামীকাল প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ আবাহনী। মিরপুরে ম্যাচ শুরু হবে সকাল ৯টায়।
লিগ পর্বে ১১ ম্যাচে ১০টি জিতেছে আবহনী। সমান ম্যাচে মোহামেডান জয় ৬টি। ৪ হারের মধ্যে আবাহনীর বিপক্ষেও হেরেছিল অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের দল। আবাহনীর বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মেহেদী হাসান মিরাজ, রনি তালুকদার ও ইংলিশ চায়নাম্যান বোলার জ্যাক লিনটটকে পাচ্ছে না তারা।
সাকিব আল হাসান খেলবেন কিনা সেটি খোলাসা করেননি মোহামেডান কর্তারা। মিরাজ-রনিসহ জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের আজ রাতে ও আগামীকাল দুই ভাগে ইংল্যান্ডে যাওয়ার কথা থাকলেও ৫ মে পর্যন্ত ছুটি নেয়া সাকিব দলের সঙ্গী হবেন না। আজ মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন এই অলরাউন্ডার। আবাহনী বিপক্ষে ম্যাচটি তাই সাকিব খেললেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
তবু সাকিবকে পাওয়া যাবে না ধরে অধিনায়ক ইমরুল বলেছেন, ‘প্রত্যেক দলের একই সমস্যা হবে। কম বা বেশি সব দলে জাতীয় দলের খেলোয়াড় থাকবে না। শুধু যে আমরা সমস্যা মোকাবেলা করব তা না, সবার জন্য কম্বিনেশন সমস্যা হবে।’
সাকিবের মতো লিটনও দলের ইংল্যান্ডগামী সঙ্গী হচ্ছেন না। তবে এই ম্যাচে খেলবেন না আবাহনীর উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। মোহামেডানের বিপক্ষে ম্যাচ হলেও তবু বাড়তি ভাবনা নেই অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেনের, ‘মোহামেডানের সঙ্গে আলাদা পরিকল্পনা নেই। ওরকমও চাপ নেয়ারও কিছু নেই। যে ৬টা দল আছে সবগুলোই ভালো। একটা দল নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই।’
সুপার লিগে আরও দুটি ম্যাচ হবে আগামীকাল। ফতুল্লার মুখোমুখি হবে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব এবং গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে খেলবে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও প্রাইম ব্যাংক।
একের পর এক গোল করেই যাচ্ছেন আর্লিং ব্রট হালান্দ। গত রোববার ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে ব্রেনফোর্ডের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার সিটির একমাত্র জয়সূচক গোলটি করেন এ নরওয়েজিয়ান তারকাই। এ ম্যাচে দারুণ এক কীর্তি গড়েছেন সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা। প্রিমিয়ার লীগে সবচেয়ে কম ৩৪৯ ম্যাচে ২৫০তম জয় তুলে নিয়েছেন তিনি। ইংল্যান্ডের শীর্ষ লীগে এক ক্লাবের হয়ে ২৫০ জয় তুলে নেওয়া ষোড়শ কোচ গার্দিওলা।
জিটেক স্টেডিয়ামে এ দিনের জয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ৭ ম্যাচে অপরাজিত রইল সিটি। চলতি মৌসুমে এ নিয়ে ৭ ম্যাচে ৯ গোল করলেন হালান্দ। ৬টির বেশি করতে পারেননি আর কেউ। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৫ বছর বয়সি হালান্দের গোলের পরিসংখ্যান আরও চমৎকার। স্রেফ ১১ ম্যাচেই ১৮ বার জাল খুঁজে নিয়েছেন এ নরওয়েজিয়ান ফরোয়ার্ড। এর মধ্যে আবার টানা ৯ ম্যাচেই গোল করেছেন হালান্দ, যা তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বেশি ম্যাচে টানা গোলের রেকর্ড।
ম্যাচশেষে তাই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে হালান্দ বলেন, ‘এখনের মতো আমার এত ভালো আগে কখনো লাগেনি। প্রস্তুতিই মূল বিষয়। শারীরিকভাবে তো হতেই হয়, মানসিকভাবেও তৈরি হওয়া জরুরি।’ গত বছর বাবা হয়েছেন হালান্দ। এত গোলের পেছনে নিজের সন্তানেরও ভূমিকা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন বাচ্চা থাকায় আগের চেয়ে অনেক বেশি ভালো সময় কাটাচ্ছি। এখন বাড়ি ফিরে অনেক রিল্যাক্স থাকি। তাই আমার ছেলেকে কৃতিত্ব দিতেই হবে।’
ব্রেন্টফোর্ডের মাঠ জিটেক স্টেডিয়ামে ৭০ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রাখে সিটি। গোলের দিকে ১০টি শটের মধ্যে ৪টি লক্ষ্যে রাখতে পারে সফরকারীরা। আর ৬টির মধ্যে ১টি শটই লক্ষ্যে থাকে স্বাগতিকদের। এ দিনের ম্যাচে নামার আগে প্রিমিয়ার লীগে শুধু দুটি মাঠেই গোল করতে পারেননি হালান্দ, একটি লিভারপুলের অ্যানফিল্ডে ও আরেকটি এই জিটেক স্টেডিয়ামে। এ দিন নবম মিনিটে সেই আক্ষেপও কমিয়ে ফেলেন হালান্দ। ইওসো গাভার্দিওলের লম্বা পাস দখলে নিয়ে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জালে বল জড়ান তিনি।
বর্তমানে প্রিমিয়ার লীগে ২৩টি মাঠের মধ্যে ২২টিতেই গোল করলেন হালান্দ, সাফল্যের হার শতকরা ৯৬। এটি প্রিমিয়ার লীগের ইতিহাসে অন্য যেকোনো খেলোয়াড়ের চেয়ে বেশি। শেষ পর্যন্ত এ গোলেই জয় নিশ্চিত হয় সিটিজেনদের। অন্যদিকে দ্রুততম ২৫০তম জয় তুলে নেওয়ায় স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের (৪০৪) রেকর্ড ভেঙে দেন গার্দিওলা।
৭ মাচে ৪ জয়, ২ হার ১ ড্রয়ে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার পাঁচে উঠেছে সিটি। সমান ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্সেনাল। গানারদের চেয়ে ১ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে লিভারপুল। সমান ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ যথাক্রমে টটেনহ্যাম হটস্পার এবং বোর্নমাউথ।
এখন থেকে ৫০ বছর আগে প্রথমবারের মতো ক্রিকেট বিশ্বকাপের আসর বসেছিল ইংল্যান্ডে। লর্ডসের ফাইনালে প্রথম বিশ্বকাপ ঘরে তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৯৭৫ বিশ্বকাপজয়ী সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বার্নার্ড জুলিয়েন আর নেই। রোববার উত্তর ত্রিনিদাদের শহর ভালসাইনে ৭৫ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে কোনো উইকেট না পেলেও ১৭ রানের জয়ের ম্যাচে শেষ দিকে ২৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন জুলিয়েন। তবে সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত ছিলেন তিনি। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনেই দাঁড়াতে পারেনি কিউইরা। ৪ উইকেট নেওয়া বাঁহাতি পেসারের তোপে ১৫৮ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। পরে গর্ডন গ্রিনিজ ও আলভিন কালিচরণের জোড়া ফিফটিতে ৫ উইকেটের জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর আগে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও ৪ উইকেট নেন জুলিয়েন। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য পরে ম্যাচসেরাও হন বাঁহাতি পেসার। টুর্নামেন্টে সবমিলিয়ে ৫ ম্যাচ খেলে ৪৮ রান করেন এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০ উইকেট নেন। ব্যাটে-বলে সিদ্ধহস্ত হওয়ার কারণেই তার ওপর বিশেষ আস্থা ছিল সেই সময়কার অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েডের। জুলিয়েনের অবদান নিয়ে ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর গার্ডিয়ান পত্রিকাকে কিংবদন্তি লয়েড বলেছেন, ‘সে সব সময় শতভাগের ওপরে দিত। কখনো দায়িত্ব এড়ায়নি। তার ব্যাট-বলের ওপর আমি সব সময় আস্থা রাখতাম। সে সর্বোচ্চটুকু নিংড়ে দিত।
কী দুর্দান্ত ক্রিকেটারই না ছিলেন।’ জুলিয়ানের ক্যারিয়ার অবশ্য দীর্ঘ ছিল না। ১৯৭৩ সালে অভিষেক হওয়া এই অলরাউন্ডার ১৯৭৭ সালে অবসর নেন। এ সময় ২৪ টেস্ট ও ১২ ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। ক্যারিয়ারের দুটি সেঞ্চুরিই টেস্টে পেয়েছেন তিনি। যার মধ্যে ক্যারিয়ারসেরা ১২১ রানের ইনিংসটি আবার ক্রিকেটের তীর্থভূমি লর্ডসে পেয়েছেন। অন্যদিকে ৫০ টেস্ট উইকেটের বিপরীতে ১৮টি নিয়েছেন ওয়ানডেতে।
৩৯-এ এসেও অপ্রতিরোধ্য আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়েও গোল করাচ্ছেন সমানতালে। মেজর লিগ সকারের ম্যাচে গত রোববার নিউ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামে ইন্টার মায়ামি। অধিনায়ক মেসির হ্যাটট্রিক অ্যাসিস্টে ৪-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে মায়ামি। তাতে এমএলএসের ইস্টার্ন কনফারেন্সের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে তিনে ওঠে এসেছে ইন্টার মায়ামি।
এই ম্যাচে হ্যাটট্রিক অ্যাসিস্টে জাতীয় দল এবং ক্লাব মিলিয়ে ক্যারিয়ারের ৩৯৫ গোলে সরাসরি গোল সহায়তা করেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। ৪০০ অ্যাসিস্টের মাইলফলক স্পর্শ করতে মাত্র পাঁচ গোল দূরে মেসি। অন্যদিকে ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্টের রেকর্ড নিজের দখলে নিতে ফেরেঙ্ক পুস্কাসের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক।
পায়ের পেশিতে চোট নিয়েই ৯০ মিনিট খেললেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকটি শর্ট সেভ করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন বিশ্বকাপজয়ী এই গোলরক্ষক। গত রোববার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে বার্নলিকে ২-১ গোলে হারিয়েছে অ্যাস্টন ভিলা।
ম্যাচ শেষে নিজের ইনস্টাগ্রামে চোটাক্রান্ত পায়ের পেশির একটি ছবি শেয়ার করেন মার্টিনেজ। সেই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘পায়ের পেশিতে টান? কোনো সমস্যা নেই!’ জানা গেছে, ইউরোপা লিগে ফেয়েনুর্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগের ওয়ার্ম-আপের সময় তিনি এই চোট পান।
এই ম্যাচে অ্যাস্টন ভিলার হয়ে জোড়া গোল করেন ডনিয়েল মালেন। অন্যদিকে, বার্নলির একমাত্র গোলটি আসে ৭৭ মিনিটে উগোচুকুর হেড থেকে। তবে পুরো ম্যাচে কয়েকটি দুর্দান্ত সেভ দলের জয় নিশ্চিত করেছেন মার্টিনেজ।
অ্যাস্টন ভিলার হয়ে আরেক আর্জেন্টাইন এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়াও দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেছিলেন। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে মাথায় আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন। এই জয়ে অ্যাস্টন ভিলা সবমিলিয়ে টানা চার ম্যাচে অপরাজিত থাকল।
লিওনেল মেসির পাসের জাদুতে জয়ের পথে ফিরেছে ইন্টার মিয়ামি। গত শনিবার ফোর্ট লডারডেলে নিউ ইংল্যান্ড রেভোলিউশনের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে জিতেছে তারা। এই জয়ে দুই ম্যাচের জয়খরা কাটিয়ে পূর্বাঞ্চলীয় কনফারেন্সে তৃতীয় স্থানে ওঠে এসেছে মিয়ামি। তাদের পয়েন্ট এখন ৫৯, দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিনসিনাটির চেয়ে মাত্র তিন পয়েন্ট কম।
ভেজা মাঠে কঠিন পরিবেশেও ম্যাচটা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন মেসি। গোল করতে না পারলেও তিনি তিনটি অ্যাসিস্ট দিয়ে দলকে এগিয়ে নেন। তাতেই তিনি গড়ে ফেলেছেন রেকর্ড। চলতি মৌসুমে ৪১তম গোল অবদান রাখলেন তিনি। মেজর লিগ সকারে এক মৌসুমে ৪০ বা তার বেশি গোল অবদান রাখা দ্বিতীয় খেলোয়াড় এখন মেসি।
মিয়ামির হয়ে জোড়া গোল করেছেন জর্দি আলবা ও তাদেও আলেন্দে। বিপরীতে নিউ ইংল্যান্ড হেরেছে শেষ ছয় ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতেই।
মেসির প্রথম অ্যাসিস্ট আসে ম্যাচের ৩২তম মিনিটে। দারুণ এক থ্রু পাসে তাদেও আলেন্দেকে গোলের সুযোগ করে দেন তিনি। আলেন্দে গোলরক্ষক ম্যাট টার্নারকে পরাস্ত করে জালে বল পাঠান। প্রথমার্ধের শেষ দিকে মেসির কাছ থেকে পাওয়া বলেই গোল করেন আলবা। ফলে বিরতির আগেই ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় মিয়ামি।
দ্বিতীয়ার্ধে নিউ ইংল্যান্ড ফিরে আসার চেষ্টা করেছিল। ৫৯ মিনিটে কার্লেস গিলের পাস থেকে ডর টুরজেম্যান গোল করলে ব্যবধান কমে ২-১ হয়। তবে মেসি তাতে কোনো সুযোগ দেননি। মাত্র এক মিনিট পর মাঝমাঠ থেকে শুরু করে নিজেই আক্রমণ সাজান তিনি। তার দারুণ পাস থেকে আবারও গোল করেন আলেন্দে।
এর তিন মিনিট পর টেলাসকো সেগোভিয়ার পাস থেকে আলবা করেন নিজের দ্বিতীয় গোল। তাতেই জয় নিশ্চিত হয়ে যায় মিয়ামির।
এই ম্যাচে মেসির পারফরম্যান্স তাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। কার্লোস ভেলার পর মেজর লিগ সকারে এক মৌসুমে ৪০ বা তার বেশি গোল অবদান রাখা দ্বিতীয় খেলোয়াড় এখন এই আর্জেন্টাইন মহাতারকা।
এই হ্যাটট্রিক দিয়ে তিনি মিয়ামির হয়ে ১০০ গোলে অবদান রাখলেন। ৬৬ গোল করেছেন তিনি, এই ম্যাচের পর তার অ্যাসিস্টের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৪-এ। এই মাইলফলক তিনি ছুঁয়ে ফেলেছেন মোটে ৮০ ম্যাচ খেলেই।
এবার মেসির সামনে নতুন রেকর্ড। এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোল অ্যাসিস্টের কীর্তি কার্লোস ভেলার। সে রেকর্ডটা ছুঁতে হলে আরও ৮ গোলে অবদান রাখতে হবে তাকে।
আরও একটা রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন মেসি। আর ৫ অ্যাসিস্ট হলেই চলতি শতাব্দীতে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ছোবেন ৪০০ অ্যাসিস্টের মাইলফলক, আর ১০ গোল করালেই ছাড়িয়ে যাবেন ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্টের রেকর্ড। ৪০৪ অ্যাসিস্ট নিয়ে এই রেকর্ড এখন ফেরেঙ্ক পুশকাসের দখলে।
আসছে নভেম্বরে বাংলাদেশ সফরে আসছে আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল। পূর্ণাঙ্গ সফরে দুটি টেস্ট ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে দুই দল। বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, সফর শুরু হবে আগামী ১১ নভেম্বর সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট দিয়ে। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে ঢাকায়, মিরপুর শেরইবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে, আগামী ১৯ নভেম্বর থেকে।
টেস্ট সিরিজ শেষেই সাদা বলের লড়াইয়ে নামবে দুই দল। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ অনুষ্ঠিত হবে চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। প্রথম ম্যাচ হবে আগামী ২৭ নভেম্বর, দ্বিতীয়টি ২৯ নভেম্বর এবং শেষ ম্যাচ ২ ডিসেম্বর। বর্তমানে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ, যেখানে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ ইতোমধ্যেই নিজেদের করে নিয়েছে জাকের আলীরা। এই সিরিজে বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলার সামনে মুশফিকুর রহিম। সব ঠিক থাকলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্টে এই মাইলফলক স্পর্শ করবেন তিনি।
ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা বার্সেলোনার সঙ্গে আর্লিং হালান্ডের সম্ভাব্য ট্রান্সফার গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন। গার্দিওলার মতে, নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার ‘পরিষ্কারভাবে বোঝে’ যে এমন কিছু করবেন না যা তিনি অর্জন করতে চান না।
হালান্ড সম্প্রতি ২০৩৪ সাল পর্যন্ত ম্যান সিটির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছেন, যা বার্সেলোনায় যাওয়ার সম্ভাবনাকে প্রায় অসম্ভব করে তোলে। এই মৌসুমে হালান্ড ৮ ম্যাচে ১১ গোল করেছেন এবং ক্লাবের হয়ে আরও সাফল্য পেতে মুখিয়ে আছেন।
বার্সেলোনা প্রেসিডেন্ট জোয়ান লাপোর্তা নির্বাচনের প্রচারণার অংশ হিসেবে হালান্ডকে টপ ট্রান্সফার টার্গেটে রেখেছেন। কাতালান ক্লাবের পরিকল্পনা ছিল ২৫ বছর বয়সি তারকাকে লামিনে ইয়ামাল ও পেদ্রির সঙ্গে মিলিয়ে একটি শক্তিশালী দল গড়ে তোলা, কিন্তু হালান্ডের সিটির সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি এ পরিকল্পনাকে কঠিন করে তুলেছে। গার্দিওলা হালান্ডের বুদ্ধিমত্তা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আমি মনে করি আর্লিং এমন কিছুতে সই করবে না যা সে অর্জন করতে চায় না। এটা নিশ্চিত।
তবে ফুটবলে কী হবে, কেউ জানে না। আমার জানা অনুযায়ী আমাদের সঙ্গে তার দীর্ঘ চুক্তি আছে, সে ভালো খেলছে এবং অনেক গোল করছে।’ তিনি বার্সেলোনার আগ্রহও স্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, ‘আপনি কি এমন কোনো ক্লাবের নাম বলতে পারেন যারা আর্লিং হালান্ডকে পেতে স্বপ্ন দেখছে না? আমি বোঝতে পারি বার্সেলোনা তাকে চায়, এবং বিশ্বের সব ক্লাব চায়। যদি সে আমাদের সঙ্গে না থাকত, সিটির জন্যও এটি স্বপ্নের ব্যাপার হতো।’
গার্দিওলা নিশ্চিত করেছেন যে হালান্ডের দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ ইতিহাদে কাটবে এবং তিনি ক্লাবকে দেশীয় ও ইউরোপীয় শীর্ষে পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
গেল মাসে কোমরের ইনজুরি থাকা শর্তেও ফিফা উইন্ডোতে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে বুলগেরিয়া এবং তুরস্কের বিপক্ষে পেইনকিলার খাইয়ে লামিনে ইয়মালকে ৯০ মিনিট করে খেলিয়েছেন জাতীয় দলের কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে। এমন সহজ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে পুরো ম্যাচ খেলানোর কারণে তখন হ্যান্সি ফ্লিক ফুয়েন্তের কঠোর সমালোচনা করেছেন। সেই সঙ্গে জাতীয় দলের কোচ খেলোয়াড়দের যত্ন নেন না বলেও অভিযোগ করেছিলেন এই জার্মান মাস্টারমাইন্ড।
ফিফা উইন্ডো শেষেও সেই ইনজুরিতে ভুগেছিলেন ইয়ামাল। ক্লাবের হয়ে মিস করেছেন চারটিতে ম্যাচ। যদিও সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে পিএসজির বিপক্ষে খেলেছিলেন ইয়ামাল। তবে তিনি যে এখনো ইনজুরি থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি। যার কারণে বার্সার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, জাতীয় দলের জন্য ইয়ামালকে ছাড়বে না ক্লাব।
আগামী ১২ অক্টোবর জর্জিয়া এবং ১৫ অক্টোবর বুলগেরিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলবে স্পেন। এই দুই ম্যাচের জন্য গত শুক্রবার লামিনে ইয়ামালকে নিয়ে ২৬ সদস্যদের দল ঘোষণা করেছে স্পেন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। এর পরই বার্সোলোনা এক বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পিএসজির বিপক্ষে খেলার পর লামিনে ইয়ামালের কুঁচকির সমস্যা ফিরে এসেছে। যার কারণে তিনি সেভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি মিস করবেন এবং সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে তার ২-৩ সপ্তাহ লাগবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।’ সেই সঙ্গে আগামী ২৬ অক্টোরব ‘এরো ক্লাসিকোতে’ ইয়ামালকে পাওয়া যাবে কি না, সেটা নিয়েও রয়েছে শঙ্কা।
বুন্দেসলিগায় রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে বায়ার্ন মিউনিখ। গত শনিবার রাতে আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টকে ৩-০ গোলে হারিয়ে লিগে টানা ষষ্ঠ জয় তুলে নিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। চলতি মৌসুমে সব মিলিয়ে এটি বায়ার্নের টানা দশম জয়।
ডয়চে ব্যাংক পার্কে ম্যাচের শুরুতেই লুইস দিয়াজের গোলে লিড নেয় বায়ার্ন। সার্জে জিনাব্রির ক্রসে মাত্র ১৫ সেকেন্ডেই গোল করেন দিয়াজ। চলতি মৌসুমের সবচেয়ে দ্রুততম গোল এটি। তারপর ২৭ মিনিটে ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেইন দূরপাল্লার নিচু শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। এই গোলের মাধ্যমে বুন্দেসলিগার ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে মৌসুমের প্রথম ছয় ম্যাচে ১১ গোলের কীর্তি গড়েন কেইন। চলতি মৌসুমে সব মিলিয়ে তার গোলসংখ্যা হলো ১০ ম্যাচে ১৮।
দ্বিতীয়ার্ধে ফ্রাঙ্কফুর্টের জ্যাঁ মাতেও বাহোয়া একবার জালে বল জড়ালেও রিতসু দোয়ানের হাত ব্যবহারের কারণে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) গোলটি বাতিল করেন। ৮৪ মিনিটে দিয়াজের দ্বিতীয় গোল নিশ্চিত করে বায়ার্নের টানা দশম জয়। এই জয়ে ৬ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও মজবুত করেছে বায়ার্ন। আরেক ম্যাচে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ১-১ গোলে লাইপজিগের সঙ্গে ড্র করায় চার পয়েন্টে এগিয়ে গেল বাভারিয়ানরা। আন্তর্জাতিক বিরতির পর দেখা হবে লিগের শীর্ষ দুই দল বায়ার্ন ও ডর্টমুন্ডের।
চিলিতে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে বড় ধাক্কা খেল ব্রাজিল। রামন মেনেজেসের নেতৃত্বে তিন ম্যাচে দুই হার ও এক ড্র নিয়ে গ্রুপ পর্বেই বিদায় নিয়েছে পাঁচবারের সাবেক চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-২০ দল।
১৯৭৭ সালে ফিফা যুব চ্যাম্পিয়নশিপ হিসেবে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতায় এবার ২০তমবারের মতো অংশ নেয় ব্রাজিল। আগের ১৯ আসরে দলটি পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন ও চারবার রানার্সআপ হয়েছিল। এর আগে সবচেয়ে খারাপ ফল এসেছিল ২০০৭ সালে, যখন দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নেয় দলটি। এবার সেটিও ছাড়িয়ে গ্রুপ পর্বেই চতুর্থ হয়ে বিদায় নিতে হলো সেলেসাওদের।
গ্রুপের প্রথম ম্যাচে মেক্সিকোর সঙ্গে ২-২ ড্র এবং মরক্কোর কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরে সান্তিয়াগোতে গত শনিবার স্পেনের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না ব্রাজিলের সামনে। দুই দলের জন্যই ম্যাচটি ছিল ‘ডু অর ডাই’।
ম্যাচের ৪৭তম মিনিটে ইকার ব্রাভোর একমাত্র গোলে স্পেন এগিয়ে যায় এবং সেই গোলেই জয় পায় স্পেন। তবে জয় পেলেও তাদেরও পরের পর্বে ওঠা এখনো নিশ্চিত হয়নি। ২৪ দলের এই আসরে ৬ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপের পাশাপাশি সেরা চার তৃতীয় স্থানধারী দল পরের পর্বে খেলবে। স্পেন আপাতত সেই তালিকায় অপেক্ষায় রয়েছে।
গ্রুপ থেকে মরক্কো ও মেক্সিকো যথাক্রমে ৬ ও ৫ পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নিয়েছে। ফলে বিদায়ের সুর বাজল ব্রাজিলের জন্য।
অন্যদিকে, ‘ডি’ গ্রুপে থাকা আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-২০ দল দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে। কিউবাকে ৩-১ ও অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ গোলে হারানোর পর গত শনিবার রাতে ইতালিকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে তারা গ্রুপসেরা হয়েছে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে আসন্ন তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের জন্য ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বে এই দলে প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন ডানহাতি ব্যাটার সাইফ হাসান। এছাড়া দলে ফিরেছেন উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান।
চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে ওয়ানডে দলে জায়গা পেলেন ২৬ বছর বয়সি সাইফ। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে খেলা দল থেকে ইনজুরির কারণে বাদ পড়েছেন নিয়মিত ওপেনার লিটন দাস। পারফরম্যান্সের কারণে জায়গা হয়নি আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের।
দুবাইয়ে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে সেখানেই ওয়ানডে সিরিজের জন্য দলের সঙ্গে যোগ দেবেন ক্রিকেটাররা। তবে ওয়ানডে স্কোয়াডে থাকা পাঁচ ক্রিকেটার- অধিনায়ক মিরাজ, নাজমুল হোসেন শান্ত, হাসান মাহমুদ, তানভীর ইসলাম ও নাহিদ রানা শনিবার রাতেই আরব আমিরাতের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন। ওপেনার নাঈম শেখ এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে দলের সঙ্গে থাকা সৌম্য সরকারের ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা থাকায় তাদের যাত্রা বিলম্বিত হচ্ছে।
আগামী ৮, ১১ ও ১৪ অক্টোবর আবুধাবিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।
১৬ সদস্যের বাংলাদেশ ওয়ানডে স্কোয়াড: মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, শামীম হোসেন, নুরুল হাসান সোহান (উইকেটকিপার), রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের লড়াই শেষ। এখন বিশ্বকাপ সামনে রেখে প্রীতি ম্যাচ খেলে চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করতে হবে দলগুলোকে। আন্তর্জাতিক বিরতির এ ম্যাচগুলো দিয়েই মূলত বেছে নেওয়া হবে বিশ্বকাপের স্কোয়াড। দলের একাদশ ও ফরমেশন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও এসব ম্যাচেই করবেন কোচরা।
অক্টোবরে তেমনই দুটি ম্যাচ খেলবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। যুক্তরাষ্ট্রে ১১ ও ১৪ অক্টোবর ভেনেজুয়েলা ও পুয়ের্তো রিকোর মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। এ ম্যাচ দুটি সামনে রেখে গত শক্রবার রাতে চমক উপহার দিয়ে আর্জেন্টিনার ২৮ জনের স্কোয়াড ঘোষণা করেন কোচ লিওনেল স্কালোনি।
স্কালোনির স্কোয়াডে বেশির ভাগ নাম পরিচিত হলেও আছে অপ্রত্যাশিত কয়েকটি চমক। এ দলে সবচেয়ে বড় চমক সম্ভবত গোলরক্ষক ফাকুন্দো ক্যামবেসেস। রেসিংয়ের ২৮ বছর বয়সি এই গোলরক্ষক প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন। ক্যামবেসেসের মতো প্রথমবার দলে ডাক পেয়েছেন ২১ বছর বয়সি সেন্টার ব্যাক লাওতারো রিভেরো। সেন্ট্রাল কর্দোবায় ধারে খেলার পর সম্প্রতি তাকে ফিরিয়ে এনেছে রিভার প্লেট। প্রতিভার দ্যুতি ছড়িয়েই স্কালোনির দলে জায়গা করে নিয়েছেন এই তরুণ।
তৃতীয় নতুন মুখ হচ্ছেন আনিবাল মোরেনো। ২৬ বছর বয়সি এই মিডফিল্ডার খেলেন ব্রাজিলিয়ান ক্লাব পালমেইরাসে। এই তিন মুখের সঙ্গে আছেন পালমেইরাসের ফরোয়ার্ড হোসে ম্যানুয়েল লোপেজ। সেপ্টেম্বরে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের স্কোয়াডে ডাক পেলেও এখনো অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন এই তরুণ।
নতুনদের পাশাপাশি কিছু পুরোনো নামও যোগ হয়েছে স্কোয়াডে। ফিরে এসেছেন চেলসি মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজ ও বোর্নমাউথের ডিফেন্ডার মার্কোস সেনেসি। নিষেধাজ্ঞা থাকায় আগেরবার ডাক পাননি ফার্নান্দেজ। সেনেসি প্রায় তিন বছরের বেশি সময় পর ফিরলেন জাতীয় দলে। সর্বশেষ তাকে দেখা গিয়েছিল ২০২২ সালের জুনে এস্তোনিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে।
২৮ সদস্যের আর্জেন্টিনা দল
এমিলিয়ানো মার্তিনেজ, গেরোনিমো রুলি, ওয়াল্টার বেনিতেজ, ফাকুন্দো ক্যামবেসেস, গনসালো মন্তিয়েল, নাহুয়েল মলিনা, ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো, লিওনার্দো বালের্দি, নিকোলাস ওতামেন্দি, মার্কোস সেনেসি, লাওতারো রিভেরো, মার্কোস আকুনা, নিকোলাস তালিয়াফিকো, লেয়ান্দ্রো পারেদেস, আনিবাল মোরেনো, রদ্রিগো দি পল, এনজো ফার্নান্দেজ, নিকোলাস পাজ, গিওভানি লো সেলসো, থিয়াগো আলমাদা, অ্যালেক্সিস ম্যাক আলিস্টার, গিওলিয়ানো সিমিওনে, ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনো, লিওনেল মেসি, জোসে ম্যানুয়েল লোপেজ, হুলিয়ান আলভারেজ ও লাওতারো মার্তিনেজ।
প্রতিপক্ষের রানের চাকা থামাতে হবে। কে আসবেন বোলিংয়ে? কে আবার, বাংলাদেশ দলে ‘ডেথ ওভার বিশেষজ্ঞ’ হিসেবে সর্বজনস্বীকৃত সবেধন নীলমণি একজনই আছেন- মুস্তাফিজুর রহমান!
তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে গত শুক্রবার সিরিজ জয়ের ম্যাচে ডেথ ওভারে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তিনি। ১৮ ও ২০তম ওভার মিলিয়ে দিয়েছেন ১৬ রান। ১৮তম ওভারে ৬ রান দিলেও শেষ ওভারে দেন ১০ রান। সব মিলিয়ে ৪ ওভার বোলিং করে উইকেটশূন্য থেকে দেন ৪০ রান। কিপটেমি খুব একটা দেখাতে না পারলেও এর মধ্যেই ৭টি ডেলিভারি ছিল ‘ডট’। আর সেই ডট দিয়েই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির এক দারুণ তালিকায় শীর্ষে ওঠে গেছেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি পেসার।
টি-টোয়েন্টি যেহেতু চার-ছক্কার খেলা, সেখানে প্রতিটি ডট বল সোনার চেয়েও দামি। মোস্তাফিজ এখন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ডট বল আদায় করা বোলার। গত শুক্রবার ম্যাচ চলাকালীন তার ফেসবুক পেজে পোস্ট করে জানানো হয়, ‘আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ডট বল করার রেকর্ড এখন মুস্তাফিজুর রহমানের-১১৪২!’
অর্থাৎ এ পর্যন্ত ১১৪২টি ডট আদায় করেছেন মোস্তাফিজ, যা এই সংস্করণে সর্বোচ্চ। তালিকায় দ্বিতীয় নিউজিল্যান্ডের সাবেক পেসার টিম সাউদি, তৃতীয় বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। চারে ইংল্যান্ডের লেগ স্পিনার আদিল রশিদ, পাঁচে আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ খান।
মোস্তাফিজ ১২০ ইনিংসে বোলিং করেছেন। তার ২৬১৬টি বৈধ ডেলিভারির মধ্যে ডট ১১৪২টি- অর্থাৎ ৪৩.৬৫ শতাংশ বলেই ব্যাটসম্যান রান নিতে পারেননি। মোট রান দিয়েছেন ৩১৯৫। সাউদি ১২৩ ইনিংসে ২৭৫৩ বল করে ডট আদায় করেছেন ১১৩৮টি (৪১.৩৩ শতাংশ)। সাকিব ১২৫ ইনিংসে ২৭২০ বল করে ডট আদায় করেছেন ১০৭৮টি (৩৯.৬৩ শতাংশ)।
এই তালিকায় এক হাজারের বেশি ডট দেওয়া বোলার আছেন কেবল তিনজন- মোস্তাফিজ, সাউদি ও সাকিব। আদিল রশিদ ১২৬ ইনিংসে ২৭৫৬ বল করে ডট আদায় করেছেন ৯৮৮টি (৩৫.৮৪ শতাংশ)। আফগান রশিদ খান ১০৫ ইনিংসে ২৪০৮ বল করে ডট আদায় করেছেন ৯৮৪টি (৪০.৮৬ শতাংশ)।
শীর্ষ দশে বাংলাদেশের আর কোনো বোলার নেই। তবে ১১তম স্থানে আছেন তাসকিন আহমেদ। তিনি ৮১ ইনিংসে ১৭৫৫ বল করে ডট আদায় করেছেন ৮৩৮টি- অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক বলেই (৪৭.৭৪ শতাংশ) ব্যাটসম্যানকে আটকে রেখেছেন।
ডট আদায় করা শীর্ষ পাঁচ বোলারের মধ্যে সবচেয়ে কম ছক্কা হজম করেছেন রশিদ খান (৮২টি)। এরপর আছেন মোস্তাফিজ (১০৪), সাকিব (১২০), সাউদি (১৪২) ও আদিল রশিদ (১৮৪)।
উইকেট শিকারে এই পাঁচজনের মধ্যে এগিয়ে আছেন রশিদ খান। ১৭৯ উইকেট নিয়ে তিনি টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। সাউদি নিয়েছেন ১৬৪, মোস্তাফিজ ১৫২, সাকিব ১৪৮ ও আদিল ১৪১ উইকেট।
কিপটেমির দিক থেকেও শীর্ষে রশিদ খান। তার ইকোনমি রেট ৬.১২। এরপর সাকিব (৬.৮০), মোস্তাফিজ (৭.৩২), আদিল (৭.৪৮) ও সাউদি (৮.০০)।
অর্থাৎ উইকেট, ইকোনমি কিংবা ডট- সব জায়গাতেই নাম আছে মোস্তাফিজের। কখনো কৃপণ, কখনো শিকারি।