মঙ্গলবার, ৬ জুন ২০২৩

সাফে বাংলাদেশের গ্রুপে লেবানন, একই গ্রুপে ভারত-পাকিস্তান

ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত
ক্রীড়া প্রতিবেদক

২০২১ সালে পাকিস্তান ও ভুটানের অনুপস্থিতিতে মাত্র পাঁচ দলের টুর্নামেন্টে পরিণত হয়েছিল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। তাই একটি গ্রুপেই সিঙ্গেল রাউন্ড রবিন লিগে খেলেছিল অংশগ্রহণকারীরা। তবে ২০২৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ আবারও ফিরছে দুই গ্রুপের চেনা পদ্ধতিতে এবং সেখানে ২০০৩ সাফের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের স্থান হয়েছে ‘বি’ গ্রুপে।

আজ দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ড্রতে চূড়ান্ত হয়েছে জুনে ভারতের বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠেয় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপিং। ড্র থেকে নিশ্চিত হয়ে গেল, সেমিফাইনালের আগে ভারত বা পাকিস্তানের সঙ্গে দেখা হচ্ছে না বাংলাদেশের। জামাল ভূঁইয়াদের গ্রুপসঙ্গী সাফ অঞ্চলের বাইরের আমন্ত্রিত দুই দলের একটি লেবানন। ‘বি’ গ্রুপে এ দুই দলের সঙ্গী মালদ্বীপ ও ভুটান।

অন্যদিকে স্বাগতিক ভারত ‘এ’ গ্রুপে খেলবে কুয়েত, পাকিস্তান ও নেপালের সঙ্গে। লেবাননের মতোই কুয়েতও আমন্ত্রিত দল হিসেবে খেলবে এবারের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে। আগামী ২১ জুন কুয়েত-নেপাল ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। একই দিন সন্ধ্যায় মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান।

বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ২২ জুন, লেবাননের বিপক্ষে। এর আগে মাত্র দুবার লেবাননের বিপক্ষে খেলেছে বাংলাদেশ। ২০১১ সালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে ৪-০ গোলে হারিয়েছিল লেবানন। ফিরতি লেগে প্রতিপক্ষকে ২-০ ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ।

দুই গ্রুপের সেরা দুই দল উঠবে সেমিফাইনালে। দুই সেমিফাইনালের বিজয়ী দল ৪ জুলাই শ্রী কান্তিরব স্টেডিয়ামে লড়বে সাফের শিরোপার লড়াইয়ে।

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপকে মাথায় রেখে এরই মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ৩৫ সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছেন। টুর্নামেন্টের আগে আগামী ১৫ জুন কম্বোডিয়ার মাঠে স্বাগতিকদের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা বাংলাদেশ দলের।


রেয়াল মাদ্রিদ থেকে বেনজেমাও বিদায় নিলেন

আপডেটেড ৪ জুন, ২০২৩ ১৬:১৭
ক্রীড়া ডেস্ক

রেয়াল মাদ্রিদ যেন সুইচ গেট খুলে দিয়েছে। আর তা দিয়ে বানের জলের মতো করে বেরিয়ে আসছেন একের পর এক খেলোয়াড়। গতকাল মার্কো আসেনসিও, এদেন অ্যাঁজা, মারিয়ানো ও নাচো এরনান্দেস সবাই একে একে মাদ্রিদকে বিদায় জানিয়েছেন। এমন খবরে মাদ্রিদ সমর্থকেরা একটু আশা ফিরে পেয়েছিলেন, আক্রমণভাগের তিনজন খেলোয়াড় যেহেতু বিদায় নিয়েছে, তাহলে সম্ভব করিম বেনজেমা আর দল ছাড়ছেন না। কিন্তু একটু আগেই মাদ্রিদ আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছে ক্লাব ছেড়ে যাচ্ছেন বর্তমান বালন দ'র জয়ী স্ট্রাইকারও।

এক বিবৃতিতে মাদ্রিদ জানিয়েছে, 'রেয়াল মাদ্রিদ ও আমাদের অধিনায়ক করিম বেনজেমা এ ক্লাবে খেলোয়াড় হিসেবে তার দুর্দান্ত এবং অবিস্মরণীয় সময়টার ইতি টানতে একমত হয়েছেন। আমাদের সর্বকালের সেরা কিংবদন্তিদের একজনকে ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চায় মাদ্রিদ।'

২০০৯ সালে মাদ্রিদে যোগ দিয়ে ১৪ বছরে ক্লাবের সবচেয়ে বেশি ২৫টি শিরোপা জেতার রেকর্ড গড়েছেন বেনজেমা। এ মৌসুমেই তার চুক্তি শেষ হয়ে গেলেও নতুন চুক্তি নবায়নের কথা শোনা যাচ্ছিল। তবে তাকে সৌদি আরব থেকে লোভনীয় এক প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। ওদিকে মাদ্রিদও চুক্তিনবায়নের ক্ষেত্রে বেনজেমার পছন্দের বেতন দিতে রাজি হচ্ছিল না বলে জানা গেছে।


৩০ জনের দলেও মোরসালিন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

গত মৌসুমে মোহামেডানে ধারে খেলে নজর কেড়েছিলেন বসুন্ধরা কিংসের তরুণ মিডফিল্ডার শেখ মোরসালিন। এ মৌসুমে নিজ দলে ওভাবে সুযোগ পাচ্ছিলেন না। সাফের জন্য ঘোষিত প্রাথমিক দলেও ডাক মেলেনি তার। তবে ভাগ্যক্রমে ডাক পেয়ে দ্রুতই জাতীয় দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরার ‘গুডবুকে’ নাম তুলে ফেলেছেন। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য গতকাল ঘোষিত ৩০ জনের প্রাথমিক দলে জায়গা পেয়েছেন মোরসালিন।

গত মাসে ৩৫ সদস্যের প্রাথমিক তালিকা সাফের কাছে জমা দেয়া হয়েছিল। তবে সাদ উদ্দিন ও মতিন মিয়া চোটের কারণে বাদ পড়ায় নেয়া হয় মোরসালিন ও মোহামেডানের স্ট্রাইকার সাজ্জাদ হোসেনকে। গতকাল ঘোষিত ৩০ জনের দলে আছেন সাজ্জাদও। বাদ পড়েছেন আবাহনীর মিডফিল্ডার মেহেদি হাসান রয়েল, শেখ রাসেলের মিডফিল্ডার হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস, শেখ জামালের মিডফিল্ডার আবু সাইদ, কিংসের ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাত ও মোহামেডানের ডিফেন্ডার মুরাদ হোসেন।

কাবরেরার ৩০ জনের দলে তাই নতুন মুখ এখন দুজন- ফর্টিস এফসির ফরোয়ার্ড রফিকুল ইসলাম আর মোরসালিন। ডাক পেয়েছেন বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পাওয়া এলিটা কিংসলিও।

৩০ জনের প্রাথমিক দল

গোলরক্ষক: আনিসুর রহমান জিকু, মিতুল মারমা, শহিদুল আলম সোহেল ও মেহেদী হাসান শ্রাবণ।

ডিফেন্ডার: কাজী তারিক রায়হান, রিমন হোসেন, বিশ্বনাথ ঘোষ, টুটুল হোসেন, তপু বর্মণ, ইশা ফয়সাল, রহমত মিয়া, আলমগীর মোল্লা ও মেহেদি হাসান।

মিডফিল্ডার: মাশুক মিয়া, সোহেল রানা, মজিবুর রহমান জনি, সোহেল রানা, শাহরিয়ার ইমন, রবিউল হাসান, জামাল ভূঁইয়া, মোহাম্মদ হৃদয়, শেখ মোরসালিন।

ফরোয়ার্ড: রাকিব হোসেন, সুমন রেজা, ফয়সাল আহমেদ, এলিটা কিংসলিও, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, রফিকুল ইসলাম ও আমিনুর রহমান সজীব, সাজ্জাদ হোসেন।


স্কালোনিই পারেন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

আর্জেন্টিনার ৩৬ বছরের হাহাকার ঘুচিয়েছেন। হতাশার স্রোতে ভাসা এক দলকে জাগিয়ে তোলেন লিওনেল স্কালোনি। বিশ্বকাপজয়ী কোচের মন জিতে নেয়ার কাজটা গত ডিসেম্বরেই সম্পন্ন। তার প্রতি মুগ্ধতা আর বাড়ানো অসম্ভব বলেই মনে হতো। ভুল প্রমাণিত হলো সেটা।

আর্জেন্টিনায় একটি ফ্লাইটের বিমানে চড়ার উদ্দেশে শাটল বাসে উঠেছিলেন স্কালোনি। সে বাসে স্কালোনির সঙ্গে ছিলেন এক দম্পতিও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, বাসে দাঁড়িয়ে থাকা বৃদ্ধার জুতার ফিতা বেঁধে দিচ্ছেন স্কালোনি। আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ‘মুন্দো আলবিসেলেস্তে’ স্কালোনির সঙ্গে সেই বৃদ্ধার কথোপকথনও প্রকাশ করেছে। স্কালোনি সেই বৃদ্ধাকে বলেছেন, ‘আমি আপনার জুতার ফিতা বেঁধে দিচ্ছি, আপনি যেন পড়ে না যান।’

স্কালোনিকে শুরুতে বৃদ্ধ মহিলা চিনতে পারেননি। পরে আর্জেন্টাইন কোচ যখন ফিতা বেঁধে দিয়ে সোজা হন, তখন মহিলার স্বামী চিনে ফেলেন স্কালোনিকে। এরপর তারা এগিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন স্কালোনিকে।


সেভিয়ার সপ্তম শিরোপা

উয়েফা ইউরোপা লিগে আরও একবার চ্যাম্পিয়ন সেভিয়া। ছবি: টুইটার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

ইউরোপা লিগের ফাইনালে সেভিয়া কখনও হারে না। এটাই সত্য হয়ে উঠল আরেকবার। রোমার বিপক্ষে গতকাল নির্ধারিত ৯০ ও পরের ৩০ মিনিট ১-১ গোলে ড্র থাকা ফাইনাল গড়াল টাইব্রেকারে। যেখানে হোসে মরিনিওর রোমাকে ৪-১ গোলে হারিয়ে ইউরোপা লিগ জিতেছে সেভিয়া। ইউরোপা লিগের এটি সপ্তম শিরোপা সেভিয়ার। এর আগে তার ইউরোপা লিগ জিতেছিল ২০০৬, ২০০৭, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬ ও ২০২০ সালে।

হাঙ্গেরির পুসকাস অ্যারেনায় গতকাল ফাইনালের ৩৫তম মিনিটে দারুণ এক পাল্টা আক্রমণ থেকে দিবালার গোলেই এগিয়ে গিয়েছিল রোমা। সেভিয়ার ইভান রাকিতিচের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে মানচিনি দারুণ পাস দেন দিবালাকে। দুই ডিফেন্ডারের মধ্য দিয়ে ক্ষিপ্র গতিতে বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে দলকে এগিয়ে দেল পাওলো দিবালা। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতায় ফেরে সেভিয়া। এর দায় অবশ্য রোমার ডিফেন্ডার মানচিনিরও। প্রতিপক্ষের হেসুস নাভাসের একটি বিপজ্জনক ক্রস হেডে ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি।

এরপর ১-১ গোলের সমতায় শেষ হয় ৯০ মিনিটের খেলা। পরের ৩০ মিনিটও। শিরোপার নিষ্পত্তির জন্য শেষমেষ আশ্রয় নিতে হয় টাইব্রেকারের। যেখানে সেভিয়ার চার জন শট নিয়ে চারজনই সফল। লুকাস ওকাম্পোস, এরিক লামেলা ও ইভান রাকিতিচের পর সফল শট নেন মন্তিয়েল। স্পট কিকে রোমার গোলটি এসেছে ব্রায়ান ক্রিস্তান্তের শটে। হোসে মরিনিওর দলের দ্বিতীয় শট অসমান্য তৎপরতায় রুখে দেন সেভিয়া গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনু।

ইউরোপা লিগের ফাইনালে সেভিয়া যেমন ছিল অজেয়, তেমনি ইউরোপীয় কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালেও হারেননি কোচ হোসে মরিনিও। গতকাল আর জেতা হলো না তার। সেই দুঃখেই কি না, রানার্সআপ মেডেলটি গ্যালারির এক ক্ষুদে দর্শকের হাতে দিয়ে মাঠ ছাড়েন মরিনিও।


রোমাঞ্চ ছুঁয়ে গেছে আলফাজকেও

আপডেটেড ৩০ মে, ২০২৩ ২২:৫৬
ক্রীড়া ডেস্ক

মার্চে যখন ধুঁকতে থাকা দলটার দায়িত্ব তাকে দেয়া হচ্ছিল, এতটা বোধ হয় মোহামেডানের কর্মকর্তারাও আশা করেননি। আলফাজ আহমেদ নিজেও আশা করেছিলেন কি না, কে জানে!

তখন মোহামেডান লিগে ছয়-সাতে ঘোরাঘুরি করছে, ফেডারেশন কাপে অবশ্য গ্রুপপর্ব পার হয়েছে। কিন্তু সে তো আগের ১৩ বারও অনেকবার পেরিয়েছে, শেষ পর্যন্ত যেতে তো আর পারেনি!

এবার পেরেছে, এবং সে পথে মাস্টারমাইন্ড আলফাজ আহমেদ!

লিগে এই মুহূর্তে চার নম্বরে আছে মোহামেডান, পরের ম্যাচটা জিতলেই উঠে যাবে তিন নম্বরে। এতটুকুই গত কয়েক মৌসুম ধরে ধুঁকতে থাকা– মাঝে ২০১৮-১৯ মৌসুমে একপর্যায়ে অবনমন এড়ানোরও শঙ্কায় পড়ে যাওয়া– মোহামেডানের জন্য স্বস্তির হতে পারত। কিন্তু আলফাজের মোহামেডান অতটুকু নিয়েই পড়ে থাকলে তো!

ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে যখন বসুন্ধরা কিংস সামনে পড়েছিল, মোহামেডানের হারই ধরে নিয়েছিলেন বেশির ভাগ ফুটবলপ্রেমী। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে বসুন্ধরাকে বাড়ি পাঠিয়ে ১৪ বছর পর যখন ফেডারেশন কাপের ফাইনালে ওঠে মোহামেডান, নড়েচড়ে বসতে হয়। এরপর ফাইনালে কাল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে লিখেছে ইতিহাস।

তার পুরোভাগে তিনিই ছিলেন। প্রথমার্ধে দল ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর কাউন্টার অ্যাটাক ছেড়ে আক্রমণনির্ভর কৌশলে গেছেন আলফাজ, তাতেই তো দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দুই গোল পেল মোহামেডান। কিন্তু কৃতিত্বটুকু সব খেলোয়াড়দের বিলিয়ে দিয়েছেন আলফাজ। দিয়াবাতের চার গোল তো প্রশংসা পাচ্ছেই, হাত ভেঙেও মুজাফফরভের খেলে যাওয়া, বদলি নামা গোলকিপার আহসান হাবিব দিপুর টাইব্রেকার-বীরত্ব...বললেন সবকিছুর কথাই। এরপর থাকল মোহামেডানের জন্য প্রেরণার বাণী, ‘এই ট্রফির মাধ্যমে মোহামেডান এগিয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ।’

তবে এমন রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ তো শুধু মোহামেডানেরই আনন্দের কারণ হয়নি, ফুটবলানন্দে ভাসিয়েছে সবাইকেই। আলফাজও সে তৃপ্তি নিয়েই বাড়ি ফিরছেন, ‘এই ম্যাচে শুধু মোহামেডান জেতেনি, জয় হয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলেরও। অবশ্যই এটা আমার জীবনের স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে। খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম, কোচ হিসেবেও চ্যাম্পিয়ন হলাম। এটা স্মৃতিতে গেঁথে থাকবে।’

তৃপ্তির সে স্মৃতি বারবার আলফাজকে এটাও মনে করিয়ে দেবে, এমন অসাধারণ ম্যাচে জয়ী দল ছিল মোহামেডান, আর সে দলের কোচ ছিলেন আলফাজ।


আনন্দ মোহামেডানের, বিনোদন সবার

রুদ্ধ্বশ্বাস ফাইনালে আবাহনীকে হারিয়ে ফেডারেশন কাপ জিতেছে মোহামেডান। ছবি: বাফুফে
আপডেটেড ৩০ মে, ২০২৩ ২২:৫৮
ক্রীড়া প্রতিবেদক

সোনালি অতীত বলে, বাংলাদেশের ফুটবল মানে আবাহনী আর মোহামেডান। কুমিল্লা স্টেডিয়ামের রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল গতকাল জানিয়ে গেল, বাংলাদেশের ফুটবলের বিবর্ণ বর্তমানেও রঙের ছোঁয়া আবাহনী আর মোহামেডানের মতো করে কেউ দিতে পারে না।

১৪ বছর পর মোহামেডান যখন ফেডারেশন কাপের ফাইনালে ওঠে, তাতে মোহামেডান সমর্থকদের স্মৃতিমেদুরতা জেগেছে। কিন্তু আবার ঘরোয়া কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে যে যুযুধান আবাহনী আর মোহামেডান, তা রোমাঞ্চ আর উচ্ছ্বাসে ভাসিয়েছে ফুটবলের সঙ্গে বিন্দুমাত্রও সংশ্রব রাখা যে কাউকেই।

সে উত্তেজনা, রোমাঞ্চ আর স্মৃতিমেদুরতা মিলিয়ে তৈরি হওয়া প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে যাওয়া রুদ্ধশ্বাস এক ফাইনাল কাল দেখেছে কুমিল্লা স্টেডিয়াম! নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে ৮ গোল শেষেও দুই দলে ৪-৪ সমতা, এরপর টাইব্রেকারে বদলি গোলকিপারের বীরত্বে ৪-২ ব্যবধানে জিতে মোহামেডানের ৯ বছরের শিরোপাখরা ঘোচানো... শুধু এতটুকু হয়তো ম্যাচটাকে আলাদা করে রাখা বিশেষত্বের কথা বলে না।

শুধু এতটুকু বলে না, এই ম্যাচই তর্কসাপেক্ষে বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসেরই সেরা ফাইনাল!

এতটুকুতে যে বলা হয় না, ফাহিম ও কলিনদ্রেসের গোলে বিরতিতে আবাহনী ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পরও মোহামেডান সমতা ফিরিয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে চার মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে, এরপর আবার এমেকার গোলে আবাহনী এগিয়ে গেলে মোহামেডান সমতা ফিরিয়েছে দ্বিতীয় দফায়। এতটুকু বলে না যে অতিরিক্ত সময়ে মোহামেডান চতুর্থ গোলে প্রথমবার ম্যাচে এগিয়ে যায়, কিন্তু ১১৮ মিনিটে আবাহনী সমতায় ফেরে বক্সের বাইরে থেকে রহমতের অবিশ্বাস্য শটে।

এটুকু এটাও বলে না যে, ম্যাচে মোহামেডানের চার গোলের সবই করেছেন সুলেমান দিয়াবাতে- যেখানে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আগে কারও হ্যাটট্রিকই ছিল না!

অতটুকু বলেও পুরোপুরি বোঝানো যায় না দুই দলের দারুণ সব আক্রমণ আর সেসবকেও ছাপিয়ে যাওয়া দুর্দান্ত কিছু সেইভের গল্প। আর সেইভের প্রসঙ্গ যখন আসে, মোহামেডানের বদলি গোলকিপার আহসান হাবিব বিপু ক্লাবটার ইতিহাসেই আলাদা জায়গা করে নেয়ার কথা। প্রথম পছন্দের গোলকিপার সুজন অতিরিক্ত সময়ে একটা শট ঠেকাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে ব্যথা পেলেন কাঁধে, এরপর বিপু নামতেই চতুর্থ গোলটা পেয়ে যায় আবাহনী। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। এরপর? মোহামেডানের পাঁচ শটের চতুর্থটিতে শুধু শাহরিয়ার ইমনের শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন আবাহনী গোলকিপার সোহেল, উল্টোদিকে আবাহনীর দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দিয়েছেন বিপু।

আবাহনীর প্রথম শটে রাফায়েল অগুস্তো আর চতুর্থ শটে- সোহেল যখন ইমনের শট ঠেকিয়ে আবাহনীকে আশা দেখিয়েছেন, তার ঠিক পরের শটেই- কলিনদ্রেসের শটও ঠেকিয়ে দিয়েছেন বিপু। প্রসঙ্গত, কলিনদ্রেস আর রাফায়েল- আবাহনীর সবচেয়ে বড় ভরসার দুই বিদেশি!

একটা ম্যাচে পরতে পরতে আর কত গল্প, কত সাব-প্লট থাকতে পারে!

গল্পের তো অনুষঙ্গও লাগে, কুমিল্লায় কাল অনুষঙ্গ হয়ে ছিলেন দুই দলের গ্যালারি রাঙানো হাজার দশেক সমর্থক। আবাহনীর গ্যালারির সৌজন্যে বাংলাদেশের ফুটবলে ইউরোপের ছোঁয়া হয়ে ‘পাইরো’র দেখাও মিলেছে!

সব মিলেই কুমিল্লা স্টেডিয়ামের ফাইনাল কাল অনুচ্চারে জানিয়ে গেল, বাংলাদেশের ফুটবলের বিজ্ঞাপন হতে পারে আবাহনী আর মোহামেডানের এমন চোখধাঁধানো ম্যাচ। ম্যাচে আবাহনীই ফেবারিট ছিল। কিন্তু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁঝেই হয়তো মোহামেডান লড়েছে চোখে চোখ রেখে! মার্চে মো. আলফাজ আহমেদ দায়িত্ব নেয়ার পর বদলে যাওয়া মোহামেডান প্রথমার্ধে কাউন্টার অ্যাটাকে খেললেও দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকেই ঝাঁপিয়েছে আক্রমণে। তাতে ম্যাচটা পেয়েছে ইতিহাসে ঠাঁই পাওয়ার মতো সব গল্প, বাংলাদেশের ফুটবলের বিজ্ঞাপন হওয়ার দাবি।

বসুন্ধরা বাংলাদেশের ফুটবলে পেশাদারত্বের বিজ্ঞাপন, নবাগত ফর্টিসও সে পথে হাঁটার স্বপ্ন দেখে। সাইফ তেমন কিছুর স্বপ্ন দেখিয়েও হারিয়ে গেছে। ব্রাদার্স আর মুক্তিযোদ্ধা তো এখন ফুটবলে দাপটের গল্পেই অপ্রাসঙ্গিক। আবাহনী তবু বসুন্ধরার সঙ্গে যা কিছুটা শিরোপার লড়াইয়ে থাকে, মোহামেডানের সাদা-কালো তো দিনে দিনে ধূসর হওয়ার পথেই ছিল। তাদের জাগিয়ে তুলতে হয়তো এমন একটা শিরোপার দরকার ছিল।

আর বাংলাদেশের ফুটবলের দরকার ছিল এমন একটা ম্যাচের।


বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ভিনিসিয়ুসের যুদ্ধ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

গত রোববার মেস্তায়ায় ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে স্বাগতিক সমর্থকদের বর্ণবিদ্বেষী চরণের শিকার হয়েছিলেন রেয়াল মাদ্রিদের ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। মাঠেই প্রতিবাদ করা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিজের ক্ষোভ জানিয়েছিলেন এবং সে সুবাদে লা লিগা সভাপতির সঙ্গে তর্কযুদ্ধে জড়িয়ে এরই মধ্যে প্রমাণ দিয়ে দিয়েছেন, লা লিগা বর্ণবিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

এরই মধ্যে ব্যাপারটি মাঠ ছাপিয়ে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল পর্যন্ত বর্ণবিদ্বেষী আচরণের জন্য সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে চারজন আগের ঘটনায় ও তিনজন ভ্যালেন্সিয়া ম্যাচের ঘটনায় অভিযুক্ত। বিশ্বজুড়ে স্পেনের ভাবমূর্তি খারাপ হওয়ার শঙ্কা জাগতেই এমন পদক্ষেপ পুলিশের। অথচ গত রোববারের আগেও বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগগুলো কর্তৃপক্ষ খারিজ করে দিত। গত জানুয়ারিতে ভিনিসিয়ুসের এমনই এক অভিযোগে ‘মাত্র কয়েকজন সমর্থক’, ‘মাত্র কয়েক সেকেন্ড’ তাকে ‘বানর’ ডেকেছে বলে অভিযোগ বাতিল করা হয়েছিল। আগের মৌসুমে মাত্র তিনটি অভিযোগ গ্রহণ করেছিল স্প্যানিশ কর্তৃপক্ষ।

ভিনিসিয়ুস অবশ্য আর লা লিগা বা স্প্যানিশ কর্তৃপক্ষের অপেক্ষায় বসে না থেকে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। মাদ্রিদের সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজও অবশেষে মুখ খুলেছেন, ‘আমি ঘোষণা করছি, রেয়াল মাদ্রিদ আমাদের খেলোয়াড়দের সঙ্গে আর কোনো বর্ণবাদী আচরণ সহ্য করবে না।’ তবে যেই এল চিরিঙ্গিতো অনুষ্ঠানের কারণে ভিনিসিয়ুসের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে, সে অনুষ্ঠানের সঙ্গে তার সম্পর্কের ব্যাখ্যা বা সে অনুষ্ঠানের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার কোনো ঘোষণা এখনো দেননি পেরেজ।

মাদ্রিদের বিবৃতি

গত পরশু প্রাথমিক এক বিবৃতিতে ভিনিসিয়ুসের সঙ্গে ‘হেট ক্রাইম’ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করার কথা জানিয়েছিল রেয়াল মাদ্রিদ। তবে সে বিবৃতি অনেক সমর্থকেরই পছন্দ হয়নি। কয়েক ঘণ্টা পরই নতুন বিবৃতিতে আরও কড়া অবস্থানের কথা জানিয়েছে মাদ্রিদ।

বিবৃতিতে এ ঘটনায় ভিনিসিয়ুসকে সমর্থন করায় ফিফা সভাপতি, ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট, রোনালদো নাজারিও, এমবাপ্পে, নেইমার, কাকা, রিও ফার্ডিনান্ড, জাডোন সাঞ্চ, লিনেকার এবং কাসেমিরোকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।

এ ঘটনায় স্প্যানিশ ফুটবলের সমস্যা তুলে ধরায় বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়েছে মাদ্রিদ। আবার কড়া অবস্থান না নেয়ায় স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন সভাপতি লুইস রুবিয়াসের সমালোচনা করা হয়েছে। বারবার এমন ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি না দিয়ে ভিনিসিয়ুসের ঘাড়ে দোষ চাপানোয় শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এবং যেকোনো ধরনের ‘হেট ক্রাইম’-এর ক্ষেত্রে অতি দ্রুত শাস্তি দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

শাক দিয়ে মাছ ঢাকা

স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন ও রেফারি কমিটি ছয় ভিএআর রেফারিকে বরখাস্ত করেছে। ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে বর্ণবাদের শিকার ভিনিসিয়ুস ম্যাচের শেষ দিকে মারামারিতে জড়ালে লাল কার্ড দেখানো হয় তাকে। ভিএআরে শুধু মাদ্রিদ ফরোয়ার্ডের অপরাধের অংশ দেখানো হলেও তাকে গলা চেপে ধরা ভ্যালেন্সিয়া ফুটবলারের অংশ দেখানো হয়নি।

সে ম্যাচে ভিএআরের দায়িত্বে থাকা ইগলেসিয়ায় ভিয়ানুভাকে বরখাস্ত করার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘উগো দুরোর মুখে ভিনিসিয়ুসের আঘাতের ঘটনাই শুধু দেখানো হয়েছে, বাকিটা কেন দেখানো হয়নি তার কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’

বাস্তবতা হলো, এই ছয় রেফারিকে এই মৌসুম শেষে এমনিতেও চাকরিচ্যুত করা হতো। লা লিগা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে কিছু করে না- ভিনিসিয়ুসের এমন দাবির মুখে স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন তাই একটু আগেই এদের বরখাস্ত করে মানুষের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছে।

ঘুম ভেঙেছে কুম্ভকর্ণের

গতকাল স্প্যানিশ পুলিশ চার সমর্থককে আটক করেছে। গত জানুয়ারিতে মাদ্রিদ ডার্বির আগে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের জার্সি পরা এক পুতুলে ফাঁস পরিয়ে একটি ব্রিজ থেকে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছিল। সে ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে এই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ নাম নির্দিষ্ট না করে বলেছে এরা মাদ্রিদভিত্তিক একটি দলের ‘খ্যাপাটে সমর্থক’। তবে স্প্যানিশ মিডিয়াগুলো সরাসরি তাদের আতলেতিকো মাদ্রিদের সমর্থক বলে জানিয়ে দিয়েছে।


রোনালদো এরপর বায়ার্নে?

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও বায়ার্ন মিউনিখকে ঘিরে দলবদলের গুঞ্জন এই প্রথম নয়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড যখন ছাড়তে চেয়েছিলেন, তখন রোনালদোর পছন্দের তালিকার ওপরের দিকেই ছিল জার্মান পরাশক্তিরা। কিন্তু ৩৭ পেরিয়ে যাওয়া রোনালদোর প্রতি আগ্রহ দেখায়নি বায়ার্ন।

এরই মধ্যে পর্তুগিজ মহাতারকা সৌদি আরবে গেছেন। সেখান আল-নাসরের জার্সিতে ১৪ ম্যাচে ১৩ গোল করেছেন। হ্যাটট্রিক করে প্রশংসা জুটিয়েছেন, আবার হতাশা প্রকাশ করে সমালোচনাও কুড়িয়েছেন। তার দলও সম্ভাব্য দুটি শিরোপা জিততে ব্যর্থ হয়েছে। লিগেও আছে দুইয়ে।

এরই মধ্যে আবার রোনালদোর বায়ার্নে যাওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। সে গুঞ্জন তুলেছে জার্মান সংবাদমাধ্যম আবেনসাইটং। এ সংবাদমাধ্যমের দাবি, মার্কাস শোন নামের এক জার্মান ধনকুবের চান রোনালদো বায়ার্নে যোগ দিন। রোনালদোকে টানার যাবতীয় খরচও দিতে চান এই জার্মান ব্যবসায়ী।

রোনালদোকে কেনার জন্য ক্লাবের প্রধান নির্বাহী অলিভার কানকে নাকি মেইল দিয়েছেন শোন, যদি আমাদের প্রতিষ্ঠানকে এই দলবদলের অর্থদাতা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়, তবে আমরা দলবদলের পুরো অর্থ বা স্বাভাবিক বেতনের বাকিটা দিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকব।

এর বিনিময়ে রোনালদোর জার্সি বিক্রির অর্থের ভাগ দাবি করেছেন শোন। সৌদি আরবে বার্ষিক ২০ কোটি ইউরো বেতন পাওয়া রোনালদোকে কি জার্মানিতে টানতে পারবেন শোন?


রিয়ালকে উড়িয়ে ফাইনালে সিটি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক


ম্যানচেস্টার সিটির মাঠ ইতিহাদে আগে কখনও জিততে পারেনি রেয়াল মাদ্রিদ। জিততে পারেনি গতকালও। কিন্তু গতকাল স্বাগতিক ম্যানচেস্টার সিটির সামনে এভাবে গুড়িয়ে যাবে রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নস লিগের চ্যাম্পিয়নরা তা কে জানত!

রেয়াল মাদ্রিদ হেরেছে ৪-০ গোলে। অসাধারণ খেলা সিটির দুর্দান্ত স্ট্রাইকার বের্নাদো সিলভা করেছেন জোড়া গোল। একটি এদের মিলিতাও'র আত্মঘাতী, বাকি গোলটি হুলিয়ান আলভারেসের। প্রথম লেগ ১-১ গোলে ড্র হওয়ায় দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ইস্তাম্বুলের ফাইনালে উঠে গেল পেপ গার্দিওলার দল। ১০ জুনের সেই ফাইনালে সিটির প্রতিপক্ষ ইন্টার মিলান।

আগের দুই আসরে ফাইনাল ও সেমিফাইনাল খেলেছে সিটি। কিন্তু লক্ষ্য যাদের শিরোপা, তাদের শুধু সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল খেলাতে কী আসে যায়! সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের আগে পেপ গার্দিওলা জানিয়ে দিয়েছিলেন, এবার মনে প্রাণেই শিরোপাটা জিততে চান তারা। সেই চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই দুর্দান্ত খেলেছে সিটি। একের পর এক আক্রমণ করেছে তারা। সিরিজ আক্রমণেরই ফসল- ২৩ মিনিটে সিলভার গোল। ডি ব্রুইনের পাস বক্সে ফাঁকায় পেয়ে জোরাল শটে দলকে এগিয়ে নেন পর্তুগিজ মিডফিল্ডার।

অবশ্য এই গোলের আগেও এগিয়ে যেতে পারত সিটি। কিন্তু হা হয়নি রেয়াল মাদ্রিদের গোলরক্ষক কোর্তোয়ার কারণে। শেষ মেষ চার গোল হজম করলেও, কেউ বলবে না বাজে খেলেছে কোর্তোয়া!

গোল হজম করে কোথায় গা ঝাড়া দিয়ে উঠবে রিয়াল তা নয়, উল্টো সিটির দাপুটে পারফরম্যান্সের কাছে কোন ঠাসা হয়েই থাকতে হয়েছে কার্লো আনচেলত্তির দলকে। তাদের মূহু মূহু আক্রমণ দেখে মনে হয়েছে ম্যাচে পিছিয়ে থাকা দল সিটি, গোল পরিশোধের জন্য মরীয়া তারা!

রেয়াল মাদ্রিদ যে চেষ্টা করেনি তা নয়, করেছে। কিন্তু সিটির অতি উদ্ভাসিত পারফরম্যান্সের কাছে তাদের সে চেষ্টা আড়াল হয়ে গেছে। ৩৭ মিনিটে আবার সিলভা সিটিকে এগিয়ে দিলে উচ্ছ্বাসে ঢেউ বয়ে যায় ইতিহাদে। চিন্তার ভাঁজ বাড়তে থাকে কার্লো আনচেলত্তির কপালে।

প্রথমার্ধে সিটির প্রাধান্য কত ছিল তা এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট- ৭০ শতাংশেও বেশি বল পজেশন ছিল সিটির। এ সময় তারা শট নিয়েছে ১৩ টি, যার পাঁচটি লক্ষ্যে। কিন্তু রেয়াল মাদ্রিদের লক্ষ্য শট মাত্র ১টি।

৭৬ মিনিটে কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায় মাদ্রিদের হার। বাঁ দিক থেকে ডি ব্রুইনের ফ্রি কিক ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেই নিজেদের জালে জড়িয়ে দেন মিলিতাও। তখনই জয়োৎসব শুরু হয়ে যায় সিটির। ম্যাচের অন্তিম সময়ে সিটির চতুর্থ গোলটি করেন আলভারেস।


চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে কে- মাদ্রিদ না সিটি?

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

প্রথম লেগ ১-১ সমতায়। চ্যাম্পিয়নস লিগ এখন আর ঘরের মাঠ-পরের মাঠ নিয়ে ভাবে না, ‘অ্যাওয়ে গোল’-এর নিয়ম তো এখন আর নেই। ঘর আর পরের মাঠের ব্যবধান এখন শুধু মাঠে থাকা দর্শকের গলার আওয়াজে।

তা ইতিহাদে আজ রেয়াল মাদ্রিদকে ভয় ধরানোর মতো গলার আওয়াজ ম্যানচেস্টার সিটির সমর্থকদের থাকবে?

ঘরের মাঠে ম্যাচ বলে ম্যান সিটির কিছুটা আশার জোর বাড়তে পারে ঘরের মাঠে তাদের সাম্প্রতিক ফর্মের কারণে। সব টুর্নামেন্ট মিলিয়ে সর্বশেষ ১৪ ম্যাচে ইতিহাদে হারেনি পেপ গার্দিওলার দল, এই ১৪ ম্যাচে ৪৯ গোল করার বিপরীতে খেয়েছে মাত্র ৭টি।

আর হিসাবটা যদি হয় পরের মাঠে রেয়াল মাদ্রিদের রেকর্ডের, তা হলে ম্যান সিটির জন্য আশাও জোগাবে, শঙ্কাও জাগাবে। প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ড্র করে দ্বিতীয় লেগে পরের মাঠে নেমেছে- চ্যাম্পিয়নস লিগে মাদ্রিদের এমন অভিজ্ঞতা ৯ বারের। তার মধ্যে ৭ বারই অভিজ্ঞতাটা সুখকর নয়, বাদ পড়েছে মাদ্রিদ- এটা ম্যান সিটির জন্য আশার বাণী।

আর শঙ্কা- বাকি যে দুবার মাদ্রিদ পরের লেগে গেছে, দুবারই দ্বিতীয় লেগটা ছিল ম্যানচেস্টারে, ২০০০ ও ২০০৩ সালে। ম্যান সিটি তো তখন ইউরোপে অচ্ছুত ছিল, মাদ্রিদের ওই দুবারের উদযাপনের ঘটনা তাদের প্রতিবেশী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মাঠে।

অবশ্য এত রেকর্ড-টেকর্ড ঘাঁটার কী দরকার! ম্যান সিটি শুধু একটা তথ্যেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারে- এবার দ্বিতীয় লেগটা তো আর মাদ্রিদের সান্তিয়াগো বের্নাব্যুতে খেলতে হচ্ছে না। কারণ? আরে, গত মৌসুমের কথা ভুলে গেলে চলবে? সেটাও তো সেমিফাইনালই ছিল। সেবার দ্বিতীয় লেগের ৮৯ মিনিটেও ৫-৪ গোলে এগিয়ে ছিল ম্যান সিটি, কিন্তু ফাইনালে উঠে শিরোপাও জিতে যায় মাদ্রিদই। বের্নাব্যু সেদিন রেঙেছিল রদ্রিগোর ছোঁয়ায়!

এবার ইতিহাদ রাঙাবে কে?

রদ্রিগো নাজারিও

রোনালদো নাজারিওকে তিনি আদর্শ মানেন। গতকাল প্রস্তুতির সময়ও রোনালদো লেখা ব্রাজিলের ৯ নম্বর জার্সি পরেই জিম করেছেন রদ্রিগো। আর এই ‘রদ্রিগো নাজারিও’কেই চাইবে মাদ্রিদ। অবশ্য চ্যাম্পিয়নস লিগে গোলের হিসাবে তো রোনালদোকে ছাড়িয়েই গেছেন রদ্রিগো। রোনালদোর চ্যাম্পিয়নস লিগ গোল ছিল ১৪টি, রদ্রিগোর এরই মধ্যে ১৫ গোল হয়ে গেছে!

ভয় দেখাও

প্রথম লেগে আর্লিং হলান্ডকে বোতলবন্দি করেই রেখেছিল রেয়াল মাদ্রিদ। দ্বিতীয় লেগেও নিশ্চয়ই ম্যান সিটি স্ট্রাইকারের জন্য আলাদা পরিকল্পনা আছে তাদের। এর মধ্যেও বাড়তি একটা পরামর্শ মাদ্রিদের জন্য দিয়ে রেখেছেন আর্সেনালের সাবেক ডিফেন্ডার মার্টিন কিওন, ‘ওদের জার্মান ডিফেন্ডারকে (রুডিগার) দাপট দেখাতে হবে। হলান্ডের এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে ও যে কাউকে টেক্কা দিতে পারবে, কিন্তু আপনাকে ওর মনে সংশয় ঢোকাতে হবে। সে ক্ষেত্রে এভারটনের ইয়েরাই মিনার মতো দরকারে ডার্ক আর্টের আশ্রয়ও নিতে হতে পারে। সেটা গুঁতো দিয়ে হোক, ‘ইচ্ছাকৃত দুর্ঘটনায়’ ওর পা মাড়িয়ে হোক। আপনাকে ওর মাথার ভেতরে ঢুকে যেতে হবে। ওকে ভয় দেখাতে হবে।’

ভিনিকে আলিঙ্গনের কারণ...

প্রথম লেগে ম্যাচের পর ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে আলিঙ্গনে বেঁধেছিলেন ম্যাচজুড়ে প্রায় পুরোটা সময় তাকে চোখে-চোখে রাখা ম্যান সিটি ডিফেন্ডার কাইল ওয়াকার। কারণটা ওয়াকার জানালেন কাল সংবাদ সম্মেলনে, ‘ও আমার ওপর রেইনবো (পেছনে থাকা বলকে পায়ের নাচনে প্রতিপক্ষের মাথার ওপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া) করার চেষ্টা করেছিল। আমি বলতে চেয়েছিলাম যে, ‘এমনটা আর কোরো না প্লিজ।’

অবশ্য ভিনিকে হুঁশিয়ারও করে দিলেন ওয়াকার, ‘আগামীকাল খেলার সুযোগ পেলে ম্যাচ শেষে ওকে আবার এই সম্মানটা আমি দেখাব। তবে এর আগে ম্যাচে... কুকুরের মাংস কুকুরে খাবে!’


আবারও হার মিলানের, ফাইনালে ইন্টার

লাওতারো মার্তিনেসের গোল উদযাপন। ছবি: এএফপি
আপডেটেড ১৭ মে, ২০২৩ ১৩:২৪
ক্রীড়া ডেস্ক

রিয়াল মাদ্রিদের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ বার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে এসি মিলান। কিন্তু সেই মিলানের সঙ্গে বর্তমান মিলানের বেশ ফরাক। তাই তো মিলান ডার্বির রূপ নেয়া চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম এবং দ্বিতীয়- কোনো লেগেই জিততে পারেনি এসি মিলান। প্রথম লেগে ২-০ গোলে জয়ী ইন্টার গতকাল দ্বিতীয় লেগেও ১-০ গোলে মিলানকে হারিয়ে উঠে গেছে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে।

২০০৯-১০ মৌসুমের পর প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠল ইন্টার। সেবারই নিজেদের তৃতীয় শিরোপাটি জিতেছিল তারা। চ্যাম্পিয়নস লিগে কোনো ইতালিয়ান ক্লাবের সবশেষ সাফল্যে হয়ে আছে সেটিই।

প্রথম লেগে হেরে যাওয়ায় দ্বিতীয় লেগে জয়ের বিকল্প ছিল না এসি মিলানের। জিততেই হবে এমন একটা তাগিদ ছিল তাদের শুরুর পারফরম্যান্সে। ম্যাচের ৫ মিনিটে এগিয়েও যেতে পারত তারা। বেশ খানিকটা দূর থেকেই গোলে শট নিয়েছিলেন থিও হার্নান্দেজ। কিন্তু তার জোরাল শট ক্রসবার ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। আরও পাঁচ মিনিট পর গোল পোস্ট ফাঁকা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ ব্রাহিম দিয়াজ। কিছু সময় পর গোলের আরও ভালো একটা সুযোগ পেয়েছিলেন দিয়াজ। তার শট অসমান্য তৎপরতায় আটককে দেন ইন্টার গোলরক্ষক মাইক ম্যাগনান।

প্রতিআক্রমণ থেকেই প্রথম লেগে সাফল্য পেয়েছিল ইন্টার। এদিনও সুযোগের অপেক্ষায় ছিল তারা। কয়েকবার কাঁপিয়েও দিয়েছিল মিলানের রক্ষণকে। তবে ৭৪ মিনিটে আর শেষ রক্ষা হয়নি মিলানের। গোলদাতা আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার লাওতারো মার্তিনেস।
দুই লেগ মিলিয়ে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ফাইনালে উঠে যায় ইন্টার সিমোনে ইনজাগির দল।


তিন মৌসুম পর লিগ শিরোপা ফিরে পেল বার্সা

শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাস বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৫ মে, ২০২৩ ১৩:০১
ক্রীড়া ডেস্ক

এস্পানিওলকে ৪-২ গোলে হারিয়ে লা লিগা চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা। চার ম্যাচ বাকি থাকতেই তিন ম্যাচ পর লিগ শিরোপা পুনরুদ্ধার করল বার্সেলোনা। এর আগে সবশেষ তারা শিরোপা জিতেছিল ২০১৮-১৯ মৌসুমে।
শিরোপার সুবাস পেতে থাকা বার্সাকে আটকানোর ক্ষমতা ছিল না নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এস্পানিওলের। তারওপর রবাট লেভানদফস্কি আবির্ভূত হয়েছিলন স্বরূপে। দলের চার গোলের দুটিই করেছেন পোলিশ এই ফরোয়ার্ড।
ম্যাচের ১১তম মিনিটে বার্সাকে এগিয়ে দেন লেভানদফস্কি। ২০তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আলেহান্দ্রো বালদে। ৪০তম মিনিটে রাফিনিয়ার পাস থেকে বাঁ পায়ের দর্শনীয় শটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন লেভানদফস্কি। চলতি লিগে এটি তার ২১তম গোল।
৩-০ গোলে পিছিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করা বার্সেলোনাকে ৫৩ মিনিটে দলের চতুর্থ গোলটি উপহার দেন জুল কুন্দে। ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের পাস থেকে দূরের পোস্টে গোল করেন তিনি। ৭৩ ও যোগ হওয়া সময়ে এস্পানিওল দুটি গােল পরিশোধ করলেও তা বার্সার শিরোপা উৎসব মাটি করতে পারেনি। এটি লা লিগায় বার্সার ২৭তম শিরোপা।
এই জয়ে ৩৪ ম্যাচে ৮৫ পয়েন্ট বার্সেলোনার। সমান ম্যাচে ৭১ পয়েন্ট নিয়ে দুয়ে রেয়াল মাদ্রিদ।


banner close