রোববার, ৫ মে ২০২৪

বন্ধুর পথে বন্ধু হয়ে...

ছবি: সংগৃহীত
শাহরিয়ার ফিরোজ
প্রকাশিত
শাহরিয়ার ফিরোজ
প্রকাশিত : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১১:০৮

শাহরিয়ার ফিরোজ

রজার ফেদেরারের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের সেরা অর্জন কী? মিরকা ভাব্রিনেচ!

উত্তরটা শুনে অনেকেই হয়তো ভ্রু কুচকাবেন- এটা কোনো উত্তর হলো! কোর্টের সাফল্য হিসেবে তো আর সহধর্মিণীকে পাননি ফেদেরার। তবে এটাও তো অস্বীকারের কোনো জো নেই, টেনিসে না এলে হয়তো জীবনসঙ্গী হিসেবে মিরকা ভাব্রিনেচকে পাওয়াই হতো না ফেদেরারের। আর মিরকা পাশে না থাকলে যে ফেদেরারেরও ‘ফেদেরার’ হওয়া হয়ে ওঠে না!

মোটা দাগে মনে হতে পারে, এটা অতিসরলীকরণ। কিন্তু ফেদেরারের পূর্বাপর যারা জানেন, তাদের কাছে এটাই সত্যি! গত শনিবার ফেদেরারের বিদায়ী বক্তব্যে অবশ্য তার জীবনের ‘কোহিনুর’ হিসেবে আসেননি মিরকা, যা এসেছে সেটা ধন্যবাদসূচক বাণী মাত্র। কিন্তু দিন কয়েক আগেই মিরকা তার জীবনের কতখানি সেটি এক সাক্ষাৎকারে খোলাখুলি জানিয়েছেন ফেদেরার। টেনিস ওয়ার্ল্ড সাময়িকীকে দেয়া সে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘ওর গুরুত্ব বলে বোঝানো যাবে না। এটা শুধু টেনিসেই নয়, সব ক্ষেত্রেই। আমার দিকটা বোঝা, কী করলে আমার ভালো হয়, সেসব চিন্তা করাই যেন ওর জীবনের একমাত্র ভাবনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

মিথ্যা বলেননি ফেদেরার।

সিডনি অলিম্পিক গেমস টেনিসে অংশ নিতে গিয়ে প্রথম দেখা। গেমস ভিলেজে থাকার সময়ে পরস্পরকে জানা, অভিসারের শুরু। হ্যাঁ, ওই অলিম্পিক গেমস ভিলেজেই ১৮ বছর বয়সী ফেদেরার প্রথম চুমু খেয়েছিলেন ২১ বছর বয়সী মিরকাকে! এমন ‘সাহসী’ হয়ে ওঠার প্রেরণা পেয়েছিলেন সুইস অলিম্পিক দলের সদস্যদের কাছ থেকেই।

সে ঘটনা নিয়ে পরে সিএনএনে এক সাক্ষাৎকারে ফেদেরারের স্মৃতিচারণা, ‘গেমস ভিলেজের ডরমেটরিতে আমরা সপ্তাহ দুয়েক ছিলাম। রেসলার থেকে শুরু করে অন্য সব দুর্দান্ত অ্যাথলেটদের সঙ্গেই ছিলাম। আমার ধারণা, ওই দুই সপ্তাহে আমাদের সম্পর্কটা অনেক জমে উঠেছিল। এক দিন এক রেসলার বলল, “আরে এখন কাছে গিয়ে ওকে চুমু দাও। তখন আমার মনে হচ্ছিল, ‘না...মানে...কী করব বুঝতে পারছি না...।’ যা-ই হোক, আমি শেষ পর্যন্ত চুমু খেলাম। ও আমাকে বলছিল, ও আমাকে যখন চুমু খেয়েছিল তখন আমি খুবই তরুণ ছিলাম। আমি ওকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম যে, আমার বয়স সাড়ে আঠারো।”

এরপর? অলিম্পিক থেকে দেশে ফেরা, পরস্পরকে আরও ভালোভাবে জানা, সম্পর্কটা আরও গাঢ় হওয়া। বছরখানেক যেতেই কোর্টে জুটি বেঁধে খেলতেও শুরু করেছিলেন তারা। ২০০২ সালে মিশ্র দ্বৈতের টুর্নামেন্ট হপম্যান কাপেও সুইজারল্যান্ডের হয়ে একসঙ্গে খেলেছেন। ওই বছরই পায়ের চোটে পড়েন মিরকা। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, এই চোট সহজে ভালো হওয়ার নয়। অগত্যা টেনিসকেই বিদায় বলে দিলেন মিরকা।

এরপর মিরকার ধ্যান-জ্ঞান হয়ে উঠলেন ফেদেরার। সেটা আক্ষরিক অর্থেই। প্রেমিকপ্রবরের সার্বক্ষণিক দেখভালের জন্য হয়ে গেলেন ফেদেরার জনসংযোগ কর্মকর্তা। আর সেই সুবাদে ফেদেরারের বিশ্বভ্রমণের সার্বক্ষণিক সঙ্গী।

তবে নিজেকে জাহির করার ইচ্ছা কখনোই ছিল না মিরকার। ফেদেরারের ছায়াসঙ্গী হিসেবে থেকেছেন বটে কিন্তু কখনোই ঈগলের চোখ নিয়ে লেগে থাকা পাপারাজ্জিদের খোরাক হননি। মারিয়া শারাপোভার সঙ্গে গ্রিগর দিমিত্রভের দুই দিনের সম্পর্ক কিংবা লেইটন হিউইটের সঙ্গে বেক ক্যাটরাইটের লম্বা সময়ের প্রেম যেভাবে সংবাদমাধ্যমের খোরাক হয়েছে, তেমনটা কখনোই দেখা যায়নি ফেদেরার-মিরকার ক্ষেত্রে। তবে লোকের চোখের আড়ালে মনের দেয়া-নেয়া থেমে থাকেনি।

২০০৯ সালে সাত পাকে বাঁধা পড়েন তারা। ততদিনে রজারের নামের পাশে ১৪টি গ্র্যান্ড স্লাম। চারদিকে নাম-যশ। প্রাইজমানি আর এনডোর্সমেন্ট মিলে ফুলে-ফাঁপা বিত্তবৈভব। কিন্তু সেটা বিন্দুমাত্র প্রভাব ফেলেনি ফেদেরারের জীবনে। প্রভাব ফেলতে দেননি মিরকা।

মধ্যবিত্তের আটপৌরে জীবনের সঙ্গে হয়তো পরিচিত নন মিরকা, কিন্তু ফেদেরারের জীবনটাকে তিনি যে ছকে সাজিয়েছেন, সে ছকের সঙ্গে যেন আটপৌরে জীবনের অনেক মিল! ‘বাইরে খেয়ে পয়সা ধ্বংস করা যাবে না’, ‘মাছ হলে আর মাংসের বিলাসিতা নয়’- এমন অনুশাসনের সঙ্গে ফেদেরারকে নিয়ে মিরকার অনুশাসনের কত মিল! ‘বেশি রাত করা যাবে না আগে আগে ঘুমোতে যাবে’, ‘কাল তুমি জিমে আধা ঘণ্টা কম কাটিয়েছ, এটা ঠিক হয়নি’... আপনজনের অধিকার তো এমনই হয়।

পেশাদার সার্কিটে খেললেও নিজে নাম-যশ কামাতে পারেননি মিরকা। সর্বোচ্চ ক্যারিয়ার র‌্যাঙ্কিং ছিল ২১৪। চোটের কারণে আগেভাগে টেনিসকে বিদায় বলে দেয়ায় তার যে অতৃপ্তি ছিল, ফেদেরারের মধ্যেই সে অতৃপ্তির পূর্ণতা খুঁজেছেন। নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর ভালোবাসার মানুষের পূর্ণতার খোঁজ যখন মিলে যায়, এর চেয়ে বড় প্রেরণা হয়তো ফেদেরারের আর হতে পারত না।

সেই মিরকা ফেদেরারের ক্যারিয়ারের ‘কোহিনুর’ নয় তো কে? অবশ্য শুধু ক্যারিয়ারের কথাই বলা হচ্ছে কেন!


দুর্দান্ত সাইফুদ্দিনের লক্ষ্য বিশ্বকাপ দল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

দরজায় কড়া নাড়ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আগেই জানা গিয়েছিল, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ দেখেই বিশ্বকাপের ফাইনাল স্কোয়াড সামনে আনবে বিসিবি। তাই বিশ্বকাপের বিমান ধরতে হলে, মাঠে নিজের ১১০ ভাগ দিতে হবে ক্রিকেটারদের সেটা বেশ ভালো করেই জানেন তারা। এবং করলেনও সেটাই।

প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে স্বাভাবিকভাবেই নজর ছিল পেসার অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের দিকে। কারণ ইনজুরি কাটিয়ে দীর্ঘ ১৮ মাস পরে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। বিশ্বকাপের আগে কেমন করেন তিনি সেটাই দেখার বিষয় ছিল। তবে ইনজুরি সাইফুদ্দিনকে দমাতে পারেনি, ফিরেছেন আরও ধারাল হয়ে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রমাণ করলেন সেটাই। ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে শিকার করলেন তিন উইকেট।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে স্বাভাবিকভাবেই উঠে এল বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা পাকাপাকির ব্যাপারটাও। সাইফুদ্দিন জানালেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, প্রায় ১৮ মাস পর আন্তর্জাতিক মাঠে ফিরলাম। আমার জন্য বিষয়টা কঠিন ছিল। যদি আমি বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পেতে চাই, আমার জন্য এই পারফরম্যান্সটার বিকল্প নেই।’

কিন্তু বিশ্বকাপের আগে তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে সাইফুদ্দিনের। আগের সিরিজে বাজে পারফর্ম করে বাদ পড়ার রেকর্ডও আছে। সাইফউদ্দিন স্মরণ করলেন সেই স্মৃতিও, ‘এর আগে ২০২১-২২ (আসলে ২০২২) বিশ্বকাপে আমি শেষ মুহূর্তে বাদ পড়ি পারফরম্যান্সের কারণে। এ জন্য অনেক সিরিয়াস ছিলাম। পারফর্ম করতে চাচ্ছিলাম।’

অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন বাংলাদেশের পেস বোলিং ইউনিট বেশ শক্তিশালী। একাধারে পারফর্ম করে যাচ্ছেন বেশ কয়েকজন পেসার। তাই দলে টিকে থাকতে হলে প্রতিযোগীতায় নামতে হবে সতীর্থদের সঙ্গে। ছাড়িয়ে যেতে হবে তাদের। এমনটা জানেন সাইফুদ্দিনও, ‘আজকে অনেক নার্ভাস ছিলাম। এর আগে অনেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছি, তবে নার্ভাস ছিলাম না। আমার জন্য ভালো করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যেহেতু দুই ম্যাচ পরে ফিজ আসবে। একাদশ কী হবে না হবে, ম্যানেজমেন্ট জানে। আমি চেষ্টা করেছি ভালো করার। আরও ভালো করতে পারলে ভালো লাগত। আরও ৪টা ম্যাচ বাকি। নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।’

সর্বশেষ বিপিএলেও দুর্দান্ত ছিলেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ফরচুন বরিশালের ট্রফি জয়ে বড় অবদান ছিল এ পেস অলরাউন্ডারের। যেমন বল হাতে ছিলেন দুর্দান্ত তেমনি ব্যাট হাতেও। যেটা সাইফুদ্দিনের বড় অস্ত্র। তবে এমন পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারলে তার জন্য বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়াটা কঠিন হওয়ার কথা নয়।


আত্মবিশ্বাসী টাইগারদের সামনে জিম্বাবুয়ে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল সাগর

সাম্প্রতিক যেকোনো বিচারেই জিম্বাবুয়ের চেয়ে বেশ এগিয়ে বাংলাদেশ। প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাঠেও দেখা গেলে সেটারই প্রতিচ্ছবি। টাইগার বোলারদের থাবায় জবুথবু জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররা। কোনো রান করার আগেই ফিরেছেন জিম্বাবুয়ের চার অভিজ্ঞ ব্যাটার। ম্যাচের পার্থক্যও গড়ে গিয়েছিল সেখানেই। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে রীতিমতো জিম্বাবুয়ের বোলারদের শাসন করলেন টাইগারদের তরুণ দুই ব্যাটার; তানজিদ হাসান তামিম আর তৌহিদ হৃদয়। অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তানজিদ হাসান। অন্যদিকে প্রায় ২০০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন তৌহিদ হৃদয়। ফলাফল হিসেবে ২৮ বল বাকি থাকতেই ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে টাইগাররা।

প্রথম ম্যাচে জয়ে নিঃসন্দেহে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে রয়েছে নাজমুল শান্ত বাহিনী। আত্মবিশ্বাসী টাইগারদের সামনে আরেকবার জিম্বাবুয়ে। সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আজ আবারও চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ এবং জিম্বাবুয়ে। এ ম্যাচটিও শুরু হবে সন্ধ্যা ছয়টায়। খেলার চলতি ধারাবিবরনী সরাসরি প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে চট্টগ্রামের ব্যাটিং স্বর্গেও আগ্রাসী বোলিং করেছে সাইফুদ্দিন-তাসকিন আহমেদরা। কোণঠাসা করে রেখেছিল জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইন আপকে। তাসকিনদের এমন পারফরম্যান্স টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভালো কিছুর আশা দেখায়। যদিও জিম্বাবুয়ের এ ব্যাটিং বিশ্বসেরা নয়, তবুও একটা আত্মবিশ্বাস পাবে পেসাররা। দ্বিতীয় ম্যাচেও বজায় রাখতে হবে একই ধারা। সেটা লম্বা করলে একই ধারা রাখতে হবে বিশ্বকাপেও।

বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে দাপুটে জয় পেলেও ব্যাটিং নিয়ে একটা শঙ্কা থেকেই যায়। অন্তত লিটন দাস যেভাবে আউট হয়েছেন। আর অধিনায়ক নাজমুল শান্তর ব্যাটিংয়ের ধরণ। ওপেনার লিটন দাস এখনও বের হতে পারেননি অফফর্ম থেকে। বিশ্বকাপের আগে তার এমন ফর্ম নিশ্চিতভাবেই ভাবাবে ম্যানেজমেন্টকে। সেক্ষেত্রে বিশ্বকাপের আগে অন্য কাউকে বাজিয়ে দেখা প্রয়োজন ম্যানেজমেন্টকে।

অন্যদিকে শান্তর ব্যাটিংয়ের বলছে আধুনিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সঙ্গে মোটেই মানানসই নয়। শান্তর স্ট্রাইকরেটের দিকে আরও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় বিশ্বকাপে বড় রান তাড়া করা বেশ কঠিন হয়ে পড়বে বাংলাদেশের সামনে। লিটন দাস ব্যর্থ হলেও প্রথম ম্যাচে তানজিদ তামিমের ব্যাটিং বিশ্বকাপের আগে আশা দেখাচ্ছে ওপেনিং সমস্যার সমাধানে। চট্টগ্রামের ইতিহাস বলছে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও দেখা মিলবে বড় রানের। সেক্ষেত্রে ব্যাটারদের দায়িত্ব নিতে হবে।

প্রথম ম্যাচে বোলিংয়ে খুব একটা সাচ্ছন্দে ছিলেন না বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। যেহেতু বিশ্বকাপের আগে এ সিরিজ প্রস্তুতির জন্য তাই তানজিম সাকিবকে পরের ম্যাচে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ শেষ দুই ম্যাচে একাদশে থাকার জোড় সম্ভাবনা রয়েছে আরেক বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের। তাই সাকিবকে সুযোগ দেওয়ার এটাই সময়।


‘ক্লিন হিটার’ শিমরন হেটমায়ার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

২০০৭ সালে ব্রায়ান লারার অবসরের পর হন্যে হয়ে আরেকজন বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান খুঁজছিল ক্যারিবীয়রা। নতুন কোনো তরুণ একটু ভালো খেললেই ক্যারিবীয়রা সঙ্গে সঙ্গেই লারার সঙ্গে সেই তরুণের মিল খুঁজতে শুরু করে। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে প্রায় সবাই। তবে কিছুটা ব্যতিক্রম দেখা গেছে এক তরুণের। লারার ব্যাটিংয়ের ধরনের সঙ্গে হয়তো তার খুব একটা মিল খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু এক জায়গায় দুজনই ছিলেন প্রায় একই; লারার মতো এ তরুণও নিজের দিনে একা হাতে ম্যাচ বের আনতে যথেষ্ট পটু।

১৯৯৬ সালে গায়ানায় জন্ম নেওয়া সেই তরুণের নাম শিমরন হেটমায়ার। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে আপনি ‘ক্লিন হিটার’ বলতে একটুও দ্বিধা করার কথা নয়। হেটমায়ার নিজের দিনে যেন নিজের ইচ্ছামতো ব্যাটে-বলে সংযোগ ঘটাতে পারেন। এরপর বলের স্থান হয় গ্যালারিতে। পেস বলের বিরুদ্ধে ভীষণ শক্তিশালী হেটমায়ার, পুল কিংবা হুক দুটি শটই দারুণ খেলেন। স্পিন বলের বিপক্ষে স্লগ সুইপে বিশাল ছক্কা হাঁকাতেও দারুণ পটু এই তরুণ।

লারার মতো হেটমায়ারের উত্থানটাও যুব বিশ্বকাপের মাধ্যমে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় সেই যুব বিশ্বকাপে তার নেতৃত্বে খেলেই সেই আসরের শিরোপা জেতে উইন্ডিজের যুবারা। সে বিশ্বজয়ের ক্ষেত্রেও ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছিলেন হেটমায়ার; কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ফিফটি করেছিলেন। ফাইনালে পরিচয় দিয়েছিলেন দায়িত্বশীলতার।

আরেকটা জায়গায় হেটমায়ারের মিল খুঁজে পাওয়া যাবে লারার সঙ্গে। সেটা হলো, দুজনই বেশ খামখেয়ালি; পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই খামখেয়ালিপনায় কাটিয়েছেন লারা। আর বিমান ধরতে দেরি হওয়ায় বাদ পড়েছিলেন ২০২৩ বিশ্বকাপের দল থেকেই।

২০১৭ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক হয় সাদা পোশাকের ক্রিকেটে টেস্টে। কিন্তু সেখানে সুবিধা করতে পারেনি হেটমায়ার। সে বছরই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক হয় ওয়ানডেতে। ওই সিরিজেই গায়ে জড়ান টি-টোয়েন্টির জার্সিও।

সাদা বলের ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্ম করে দ্রুত সময়ের মধ্যেই নজর কাড়েন ক্রিকেট বিশ্বের। পরে খেলেছেন আইপিএল, পিএসএল, সিপিএল, বিপিএলসহ বিশ্বের প্রায় সব ফ্র্যাঞ্জাইজি টুর্নামেন্ট।

পুরো নাম- শিমরন হেটমায়ার।

জন্ম- ২৬ ডিসেম্বর ১৯৯৬ সাল।

জন্মস্থান- কাম্বারল্যান্ড, গায়ানা।

রাশি: মকর।

প্রিয় খেলা: ক্রিকেট।

প্রিয় খাবার: সামুদ্রিক খাবার।

প্রিয় পানীয়: বিয়ার।

প্রিয় রং: সাদা, নীল।

প্রিয় ক্রিকেটার: ব্রায়ান লারা, ম্যাথিউ হেইডেন, শেন ওয়ার্ন, ক্রিস গেইল।

প্রিয় ক্রিকেট দল: ওয়েস্ট ইন্ডিস ক্রিকেট দল।

প্রিয় সতীর্থ: কিমো পল, নিকোলাস পুরান।

প্রিয় ফুটবলার: লিওনেল মেসি।

প্রিয় ফুটবল দল: বার্সেলোনা এফসি।

প্রিয় গাড়ি: বিএমডব্লিউ এক্স ৭।

প্রিয় শখ: ক্রিকেট খেলা, ফুটবল খেলা।

প্রিয় জুতার ব্র‌্যান্ড: নাইকি।


অভিষেকেই আলো ঝলমলে ব্যাটিং তানজিদ তামিমের

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল সাগর

কাগজে-কলমে বড় দল হিসেবেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। কাগজে-কলমের সেই হিসাবটা দেখা গেলো মাঠেও। বাংলাদেশের সামনে এক অসহায় জিম্বাবুয়ে। নির্বিকার তাদের ব্যাটিং লাইন-আপ। তাসকিন-সাইফুদ্দিনদের বোলিংয়ের সামনে অসহায়ত্ব ফুটে উঠল সিকান্দার রাজা, শেন উইলিয়ামসদের।

চট্টলার ব্যাটিং উইকেটেও রাজত্ব চালালো বাংলাদেশের বোলাররা। দীর্ঘদিন পরে ইনজুরি থেকে ফিরে সাইফুদ্দিন দেখালেন; তার বোলিংয়ের ধারটা ঠিক এখনো আগের মতোই আছে। গতির ঝলক দেখিয়েছে তাসকিন আহমেদও। এ দুই পেসার মিলিই চেপে ধরেছিল জিম্বাবুয়েকে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল শেখ মাহেদী। টাইগারদের প্রথম শিকার তারই।

বাংলাদেশের জয়ের বীজ বপন করে দিয়েছিল বোলাররাই। তাই ব্যাটারদের আর খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। অভিষেক ম্যাচেই ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়ে, বাংলাদেশের জয়ের নৌকা বন্দরে নিয়ে গেছেন তানজীদ হাসান তামিম। তুলে নিয়েছেন অর্ধশতক। জানান দিয়েছেন নিজের সামর্থের। বল-ব্যাট দুই বিভাগেই বিশ্বকাপের আগে দারুণভাবে জ্বলে উঠল টাইগাররা। প্রথম ম্যাচেই সাড়ল একটি সুন্দর প্রস্তুতি।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪ ওভার শেষে এক উইকেটে ৩১ রান করা জিম্বাবুয়ের মাথায় হঠাৎই কি যেনো ভূত চেপে বসলো। ৩৬ রানে হারাল দ্বিতীয় উইকেট। এরপর ৫ রান তুলতেই নেই আরও পাঁচ উইকেট। ক্রেইড আরভিন, সিকান্দার রাজা, শেন উইলিয়ামস, রায়ানের বার্লের মত অভিজ্ঞরা ফিরেছেন কোনো রান না করেই।

দেখে মনে হচ্ছিল ৫০ পেরোনই যেনো অসম্ভব জিম্বাবুয়ের জন্য। তবে শেষ পর্যন্ত ক্লিভে মাদানদে ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজার জুটিতে লড়াই করার মতো সংগ্রহ পায় জিম্বাবুয়ে। ২০ ওভার শেষে তারা পূঁজি পায় ১২০ রানের।

টাইগারদের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন পেসার তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আর শেখ মাহেদী। ইনজুরি থেকে দীর্ঘদিন পরে ফিরেই ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেছেন সাইফুদ্দিন; তাসকিনের সংগ্রহও সমান। ২ উইকেট গেছে শেখ মাহেদীর ঝুলিতে।

স্বল্প রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র এক রানেই ফেরেন লিটন দাস। এরপর উইকেটে এসে দুইবার জীবন পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেনি নাজমুল শান্ত (২১)। তবে অপরপ্রান্তের বুক চিতিয়ে খেলেছেন তানজিদ তামিম। বাউন্ডারি ছাড়া করেছেন মুজারাবানিদের। তুলে নিয়েছেন টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম অর্ধশতক। শান্ত আউট হয়ে গেলে উইকেটে নেমে তামিমের সঙ্গে ঝড় তুলতে থাকেন তৌহিদ হৃদয়ও। এ দুইজনের ব্যাটিং ঝড়ে অসহায় হয়ে পড়ে মুজারাবনি-লুক জঙ্গিরা। দুইজন মিলে গড়েন ৬৯ রানের জুটি।

৮ চার আর ২ ছক্কায় ৪৭ বল থেকে ৬৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তানজিদ তামিম। ৫ চার আর এক ছক্কায় ১৮ বল থেকে ৩৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন আরেক ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়।

এ দুইজনের ব্যাটে ভর করে ৪ ওভার ৪ বল বাকি থাকতেই মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা। এ জয়ে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।


মিথিলার মুকুটে নয়া পালক

আপডেটেড ৪ মে, ২০২৪ ০০:০৮
বিনোদন প্রতিবেদক

একদিকে যেমন বাংলাদেশের প্রথম সারির অভিনেত্রীদের তালিকায় তার নাম, অন্যদিকে ভারতেও তার গুণমুগ্ধ ভক্তের সংখ্যা প্রচুর। সৃজিত ঘরণির মাথায় এবার নয়া পালক। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত ছবি ও অভাগী। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের গল্প অভাগীর স্বর্গ অবলম্বনে তৈরি ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিথিলা। তার অভিনয় সকলকে মুগ্ধ করেছে বলা চলে। আর এই ছবির জন্যই এবার দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে সম্মানিত মিথিলা। একটি ভিডিও নিজেই ভাগ করে নিলেন সেই খবর।

‘ও অভাগী’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই সকলের মনজয় করেছেন তিনি। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘অভাগীর স্বর্গ’-এর উপর ভিত্তি করে এই ছবিটি তৈরি করেছেন পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী। এবং ছবিটির মুখ্য ভূমিকায় দেখা গিয়েছে মিথিলাকে। ছবিটির গল্প থেকে শুরু করে অভাগী রূপে মিথিলার অভিনয় ভীষণভাবে মন কেড়েছে সকলের। এবার এই চরিত্রটির জন্য পুরস্কৃত মিথিলা। অভিনেত্রীকে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। তবে দিল্লিতে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন হলেও, সেদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি রফিয়াথ রশিদ মিথিলা। কারণ, বাংলাদেশে ছিলেন তিনি সেই সময়। অভিনেত্রীর জায়গায় পুরস্কারটি গ্রহণ করেছেন ছবির পরিচালক-প্রযোজক। তবে এমন সম্মানে মিথিলার আনন্দের অন্ত নেই।

তিনি একটি ভিডিওবার্তায় বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে সবাইকে জানাতে চাই যে, দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ১৪-তম দাদাসাহেব ফালকে ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৪-এ আমি সেরা অভিনেত্রীর সম্মানে ভূষিত হয়েছি। ‘ও অভাগী’ ছবিতে অভিনয়ের জন্যই এই পুরস্কার আমি পেয়েছি। আমি এজন্য আমাদের পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী ও প্রযোজক ড. প্রবীর ভৌমিক এবং আমাদের গোটা টিমকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাতে চাই।’

ছবিটি মুক্তির পর থেকেই দর্শকদের মধ্যে আলাদা উন্মাদনা দেখা গিয়েছে এই ছবিকে কেন্দ্র করে। ‘ও অভাগী’ ছবিতে একজন রসিকের চরিত্রে দেখা গিয়েছে। শুধু তিনি নন, আরজে সায়নকে এবং জমিদারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী। সুব্রত দত্তের অভিনয় নজর কেড়েছে সকলের। এছাড়াও অভিনয় করেছেন দেবযানী চট্টোপাধ্যায়, আরজে জিনিয়া, কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সৌরভ হালদারের মতো অভিনেতারা। এ ছবিতে ফুটে উঠেছে এই সমাজের এক অন্য কাহিনি। শুধু এই ছবিতে নয়, মিথিলার অভিনয় এর আগেও বহু ছবিতে মুগ্ধ করেছে বাঙালি দর্শককে।


টাইগারদের বোলিং তোপে জিম্বাবুয়ে থামলো ১২৪ রানে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের বোলিং তোপের মুখে ১২৪ রানে থামলো জিম্বাবুয়ে।

টাইগারদের পক্ষে সাইফউদ্দিন ৪ ওভারে ১৫ আর তাসকিন সমান ওভারে ১৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। ১৬ রানে ২ উইকেট শিকার করেন শেখ মেহেদী। যদিও ভালো করতে পারেননি শরিফুল ইসলাম আর রিশাদ হোসেন। দুজনই ৪ ওভারে ৩৭ করে রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য।

আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম ওভারে দুটি বাউন্ডারি হজম করেন শরিফুল ইসলাম।

দ্বিতীয় ওভারেই স্পিন আক্রমণে নিয়ে আসেন শান্ত। শেখ মেহেদী অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিতে দেরি করেননি। নিজের দ্বিতীয় বলে দুর্দান্ত এক টার্নিং ডেলিভারিতে অভিজ্ঞ ক্রেইগ আরভিনকে (০) বোল্ড করেন এই অফস্পিনার। আরভিন ডিফেন্ড করেও উইকেট বাঁচাতে পারেননি।

পঞ্চম ওভারে দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। প্রায় ১৯ মাস পর দলে ফেরা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নিজের প্রথম ওভারেই উইকেটের দেখা পান। লেগসাইডের বল ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে তাসকিন আহমেদের ক্যাচ হন অভিষিক্ত জয়লর্ড গাম্বি (১৪ বলে ১৭)।

শেখ মেহেদীর করা পরের ওভারে জোড়া উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। প্রথম বলে রানআউট হন ব্রায়ান বেনেট (১৫ বলে ১৬)। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট থেকে মাহমুদউল্লাহর থ্রোতে উইকেট ভেঙে দেন উইকেটরক্ষক জাকের আলি।

পরের বলে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা (০) প্যাডেল সুইপ খেলতে গিয়ে হন টার্নে পরাস্ত। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় স্লিপে লিটন দাসের হাতে। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৪ উইকেটে ৩৮ রান তুলে জিম্বাবুয়ে।

সপ্তম ওভারে এসে আবার তাসকিন টানা দুই বলে করেন দুই শিকার। ব্যাটে লেগে ইনসাইডেজে বোল্ড হন শন উইলিয়ামস (০)। পরের বলে রায়ান বার্ল (০) ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে রিশাদকে ক্যাচ দেন। লুক জঙউইকে (২) তুলে নেন সাইফউদ্দিন।

৪১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন উইকেটরক্ষক ক্লিভ মাদান্দে আর ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। অষ্টম উইকেটে ৬৫ বলে ৭৫ রান যোগ করে জিম্বাবুয়েকে সম্মানজক পুঁজি এনে দিয়েছেন এই যুগল।

শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ৯ বল বাকি থাকতে মাদান্দেকে বোল্ড করে এই জুটি ভাঙেন তাসকিন। জিম্বাবুয়ের উইকেটরক্ষক ব্যাটার করেন ৩৯ বলে লড়াকু ৪৩। শেষ বলে রানআউট হওয়া মাসাকাদজা ৩৮ বলে করেন ৩৪।


নারী আম্পায়ার ইস্যুতে এবার প্রশ্ন তুললেন সুজন

খালেদ মাহমুদ সুজন। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

ডিপিএলের নারী আম্পায়ার নিয়ে বির্তক নিয়ে ইতোমধ্যেই নিজেদের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব আর মোহামেডান। কিন্তু এ ইস্যু নিয়ে বিতর্কের যেন অবসান ঘটছেই না। ক্রিকেট পাড়ায় এখনো চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সেই সমালোচনার পালে এবার হাওয়া দিলেন বিসিবির সাবেক পরিচালক ও আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। বড় ম্যাচে নারী আম্পায়ার জেসিকে দেওয়ায় তিনি প্রশ্নের তীর ছুড়ে দিয়েছেন।

সুজনের মতে বড় ম্যাচে অভিজ্ঞ আম্পায়ার নির্বাচন করা প্রয়োজন অবশ্যই। তিনি বলেন, ‘বড় খেলায় আমি সবসময় মনে করি আপনাকে এমন একজন আম্পায়ার দেওয়া উচিত যার অভিজ্ঞতা আছে, মাঠের প্রেশারটা কিন্তু অনেক বড়। যদিও আজকালকার ক্রিকেটে সেই বিগত আবাহনী-মোহামেডানের সেই প্রেশার নাই। তারপরও বড় দল খেলছে, জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা খেলছে। আপনাকে এমন একজন আম্পায়ার দিতে হবে যার প্রতি খেলোয়াড়দের রেসপেক্টটা থাকে।’

সে ম্যাচের নারী আম্পায়ার জেসিকে ভালো আম্পায়ার মানলেও এখনো প্রিমিয়ার লিগের বড় ম্যাচে আম্পায়ারিং করার অভিজ্ঞতা তার হয়নি বলে দাবি সুজনের, ‘যিনি আম্পায়ারিং করেছেন, সে খুব ভালো আম্পায়ার। বাংলাদেশের হয়ে ভবিষ্যতে খুব ভালো করবে। সে জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড়। সবমিলিয়ে তার একটা ব্যাকগ্রাউন্ড আছে ক্রিকেটে অবশ্যই। কিন্তু আম্পায়ার হিসেবে তার অভিজ্ঞতাটা আমার মনে হয় না প্রিমিয়ার লিগের এত বড় ম্যাচে করার মতো।’

বিসিবির সাবেক এ পরিচালক প্রশ্ন তোলেন দেশে অনেক অভিজ্ঞ আম্পায়ার থাকা সত্ত্বেও কেনো এতবড় ম্যাচে জেসিকে আম্পায়ার দেওয়া হলো। তিনি বলেন, ‘যদি আমার মত দিই, আমার মতে প্রিমিয়ার লিগের এত বড় একটা প্রেশার ম্যাচে আমার মনে হয় যে আরেকটু বিচক্ষণ হতে হবে, আম্পায়ার কারা করছে, দেখতে হবে। আমাদের দেশে এত অভিজ্ঞ আম্পায়ার থাকতে কেন জেসিকে প্রয়োজন হলো আম্পায়ারিং দেওয়ার ওই ম্যাচটাতে আমি জানি না।’

অবশ্য এমন বড় ম্যাচে সাথীরা জাকির জেসিকে আম্পায়ার দেওয়ার ব্যাখ্যা আগেই দিয়েছেন, বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু। তিনি বলেন, ‘সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে, তাই আমরা এসব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দিচ্ছি। আমরা আমাদের নারী আম্পায়ারদের তৈরি করতে চাই। যাতে বিশ্বকাপে আইসিসি এদেরও কিছু ম্যাচ দেয়। তারাও (আইসিসি) দেখছে, ওরা কোথায়, কী করছে। এখন আমি যদি এদের লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে আম্পায়ারিং না করাই বাংলাদেশে, তাহলে হবে না। মেয়ে বলেন, ছেলে বলেন নতুন প্রজন্মে পাইপলাইন তৈরি করার চেষ্টা করছি।’


অস্ট্রেলিয়ার প্রথম মুসলিম ক্রিকেটার উসমান খাজা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

কথা ছিল কত শত মানুষের আকাশে ওড়ার স্বপ্নপূরণ করবেন; বিমান নিয়ে চষে বেড়াবেন নীলাভ ওই আকাশে। তাই গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছিলেন নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাভিয়েশনের ওপর। তবে বিমান নিয়ে আকাশ নয় ব্যাট হাতে অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে চষে বেড়িয়েছেন বাইশ গজ। তিনি অজিদের টপ-অর্ডার ব্যাটার উসমান খাজা।

উসমান খাজার খেলার কথা ছিল পাকিস্তানের হয়ে। কারণ ১৯৮৬ সালে তার জন্মটা হয়েছিল পাকিস্তানের ইসলামাবাদ শহরে। মাত্র ৪ বছর বয়সেই বদলে যায় তার ভাগ্য; উসমান খাজার পরিবার পাড়ি জমান নিউ সাউথ ওয়েলস শহরে। সেখানেই ক্রিকেটে হাতেখড়ি নেন খাজা। অল্প বয়সেই নিজের ব্যাটিং দক্ষতা দিয়ে নজর কাড়েন সবার।

২০০৮ সালে নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় খাজার। সেই বছরই নজরে আসেন দারুণ এক কীর্তি গড়ে। দলটির দ্বিতীয় একাদশের হয়ে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টানা ডাবল সেঞ্চুরি করেন খাজা।

উসমান খাজার এমন পারফরম্যান্স নজর এড়ায়নি অজি ক্রিকেট বোর্ড কর্তাদের। পুরস্কার আসে ২০১১ সালে। রিকি পন্টিংয়ের ইনজুরি খুলে দেয় খাজার ভাগ্য; সুযোগ পায় অ্যাশেজ সিরিজে। প্রথম কোনো মুসলিম ও পাকিস্তানি ক্রিকেটার হিসেবে অস্ট্রেলিয়া দলে জায়গা পান তিনি। দুই বছর পরে ২০১৩ সালে খাজার অভিষেক হয় ওয়ানডে ক্রিকেটে। তারও তিন বছর পরে ২০১৬ সালে অভিষেক হয় টি-টোয়েন্টিতে।

সাদা পোশাকের টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার নিয়মিত সদস্য উমান খাজা; কিন্তু রঙিন পোশাকের ক্রিকেটে খাজার উপস্থিতি বেশ সীমিত। ২০১৩ সালে ওয়ানডে অভিষেক হলেও খেলেছেন মোট ৪০টি ম্যাচ। টি-টোয়েন্টিতে সেই পরিসংখ্যান আরও সীমিত; ২০১৬ সালে অভিষেকের পর খেলেছেন মোটে ৯টি ম্যাচ। অন্যদিকে ২০১১ সালে টেস্টে অভিষেকের পর খেলেছেন ৭৩টি ম্যাচ।

উসমান খাজা টেস্টে কতটা সাবলীল তার প্রমাণ মেলে একটি পরিসংখ্যান থেকে; ২০২২ সাল থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ৭টি সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। সে সময় এতগুলো সেঞ্চুরি করতে পারেনি আর কোনো ব্যাটার। ৭৩ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৫টি সেঞ্চুরি করেছেন খাজা।

পুরো নাম: উসমান তারিখ খাজা।

জন্ম: ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৮৬ সাল।

জন্মস্থান: ইসলামাবাদ, পাকিস্তান।

রাশি: মকর রাশি।

প্রিয় খেলা: ক্রিকেট, গলফ।

প্রিয় খাবার: চিকেন স্যান্ডউইচ।

প্রিয় পানীয়: সফট ড্রিংকস (রেড বুল)।

প্রিয় রং: সাদা ও কালো।

প্রিয় ক্রিকেটার: অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও ব্রায়ান লারা।

প্রিয় ক্রিকেট দল: অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল।

প্রিয় সতীর্থ: নাথান লায়ন ও ডেভিড ওয়ার্নার।

প্রিয় ফুটবলার: দিয়েগো ম্যারাডোনা ও লিওনেল মেসি।

প্রিয় ফুটবল দল: আর্জেন্টিনা।

প্রিয় গাড়ি: মার্সিডিজ বেঞ্জ।

প্রিয় শখ: মাছধরা ও ভ্রমণ।

প্রিয় জুতার ব্র‌্যান্ড: নাইকি।


টি-টোয়েন্টিতে ‘চার’ হাঁকানোর রেকর্ড বাবরের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

বাবর আজমের কভার ড্রাইভ অনেক ক্রিকেটপ্রেমীরই প্রিয়। তবে শুধু কভার ড্রাইভ নয়, মাঠের অন্যান্য দিকেও ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বাউন্ডারি হাঁকাতে জানেন এই পাকিস্তানি ব্যাটার। উড়িয়ে নয়, বাবর খেলেন মাটি কামড়ে। ছক্কা নয়, চার হাঁকাতেই যেন স্বস্তি ডানহাতি এই ব্যাটারের। চোখজুড়ানো এই ব্যাটিং করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দারুণ একটি রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন বাবর। সেটা ‘চার’ হাঁকানোর রেকর্ড। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের এই ক্রিকেটে ১০৮ ম্যাচে ৪০৯টি চার হাঁকিয়েছেন বাবর। এতে আয়ারল্যান্ডের ব্যাটার পল স্টার্লিংকে ছাড়িয়ে চার হাঁকানোর তালিকায় শীর্ষে উঠে গেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক।

এতদিন সবচেয়ে চার হাঁকানোর রেকর্ডটি ছিল স্টার্লিংয়ের। আইরিশ এই ব্যাটার ১৩৬ ম্যাচে চার হাঁকিয়েছেন ৪০৭টি। আর গতকাল লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ৪৪ বলে ৬৯ রানের ইনিংসে ৬টি চার হাঁকান বাবর। এতেই স্টার্লিংকে পেছনে ফেলেন তিনি।

চার হাঁকানোর তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন বিরাট কোহলি। ১০৯ ইনিংসে ৩৬১টি চার হাঁকিয়েছেন ভারতীয় তারকা ক্রিকেটার। কোহলির পরই আছেন আরেক ভারতীয় ক্রিকেটার রোহিত শর্মা। ১৪৩ ম্যাচে এই ভারতীয় ব্যাটার হাঁকিয়েছেন ৩৫৯টি চার।

এদিন আরও একটি রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন বাবর। এতদিন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে জাতীয় দলকে সবচেয়ে বেশি ৭৬ ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ড নিজের করে রেখেছিলেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার অ্যারন ফিঞ্চ। গতকাল ফিঞ্চের সেই রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেন বাবর। বাবরের রেকর্ডের দিনে নিউজিল্যান্ডকে ৯ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান। স্বাগতিকদের দেওয়া ১৭৯ রানের জবাবে কিউইরা অলআউট হয়ে গেছে ১৬৯ রানে।


ইংলিশদের লর্ডসের নতুন নায়ক ক্রিস ওকস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

ইংলিশ তরীর হাল ধরতে যুগে যুগে অনেক প্রেসারই এসেছে। তাদের কেউ কেউ নিজের দক্ষতার সবটুকু ঠেলে দিয়ে দাগ কেটে রেখে গেছেন দর্শকদের মনে। বাইশ গজে কেউ ছুড়েছেন আগুনের গোলা, কেউ প্রতিপক্ষের কাঁপন তুলেছেন সুইং কিংবা বাউন্স দিয়ে। তাদেরই একজন হবেন ক্রিস ওকস। গতি, বাউন্স আর সুইং দিয়ে কাবু করেন প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের। বিশেষ করে ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল আর ফাইনালে ওকসের পারফরম্যান্স আজীবন মনে রাখবে ইংলিশরা।

১৯৮৯ সালে ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে জন্ম ক্রিস ওকসের। ক্রিকেটের হাতেখড়ি সাত বছর বয়সে; স্থানীয় ফোর ওকস সেন্টস ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে। নিজের প্রতিভার জানান দিয়ে ২০০৮ সালে জায়গা করে নেন ওয়ারউইকশায়ারের মূল দলে। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে অভিষেক মৌসুমেই ২০.৫৭ বোলিং গড়ে শিকার করেন ৪২ উইকেট।

চ্যাম্পিয়নশিপে ওকসের এমন পারফরম্যান্স নজর এড়ায়নি ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ড কর্তাদের। ২০০৯ সালে ডাক আসে ইংল্যান্ড লায়ন্স দলে। অভিষেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪৩ রান খরচায় শিকার করেন ৬ উইকেট।

শুধু বল হাতেই নয় ওকস যে ব্যাটিংয়েও বেশ দক্ষ সেটাও জানা যায় ওই মৌসুমেই। হ্যাম্পশায়ারে বিপক্ষে ৯ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে তুলে নেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিজের প্রথম শতক; অপরাজিত থাকেন ১৩১ রানে।

কাউন্টিতে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের পুরস্কার পান ২০১১ সালে এসে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক হয় ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি দলে। ওয়ানডে ক্রিকেটের রঙিন পোশাকও গায়ে জড়ান একই সিরিজে। ২০১৩ সালে এসে পূরণ হয় টেস্ট দলের স্বপ্ন; এবারও প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়াই।

ইংল্যান্ডের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেটের নিয়মিত মুখ ক্রিস ওকস। কিন্তু নিজেকে সেভাবে প্রমাণ করতে পারেননি টেস্ট দলে। যে কারণে নিয়মিত হতে পারেননি লাল বলের ক্রিকেটে। ক্রিকেটের এ ফরম্যাটে ওকস সবচেয় বেশি সফল হয়েছেন ক্রিকেটের আতুর্ঘর খ্যাত লর্ডসের মাঠে। ক্যারিয়ারে একমাত্র শতকটি হাঁকিয়েছেন তিনি লর্ডসে, নাম তুলেছেন অনার্স বোর্ডে। বল হাতেও অনার্স বোর্ডে নাম আছে তার। এখন পর্যন্ত টেস্ট ক্যারিয়ারে তিনবার ইনিংসে পাঁচ উইকেট এবং একবার ম্যাচে দশ উইকেট শিকার করেছেন, যার সবকটি ম্যাচই ছিল লর্ডসে।

পুরো নাম: ক্রিস্টোফার রজার ওকস

জন্ম: ২ মার্চ, ১৯৮৯

জন্মস্থান: বার্মিংহাম, পশ্চিম মিডল্যান্ডস, ইংল্যান্ড

রাশি: মীন

প্রিয় খেলা: ক্রিকেট, গলফ

প্রিয় খাবার: ক্লাব স্যান্ডউইচ

প্রিয় পানীয়: হেইনিকেন বিয়ার

প্রিয় রং: সাদা

প্রিয় ক্রিকেটার: জ্যাক ক্যালিস

প্রিয় ক্রিকেট দল: ইংল্যান্ড

প্রিয় সতীর্থ: স্টিভেন ফিন, জন বাটলার, অ্যালেক্স হেলস।

প্রিয় গাড়ি: ফেরারি লা ফেরারি।

প্রিয় স্টেডিয়াম: এজবাস্টন ক্রিকেট গ্রাউন্ড, ইংল্যান্ড।

প্রিয় শখ: সাইকেল চালানো, ভ্রমণ।

প্রিয় জুতার ব্র্যান্ড: নাইক।


বিশ্বকাপ প্রস্তুতির ভালো সুযোগ দেখছেন জ্যোতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল সাগর

নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেরও খুব একটা দেরি নেই। আগামী সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশেই বসবে নারী ক্রিকেটের বৈশ্বিক এ আসর। ঘরের মাঠে ভালো কিছুর আশায় ক্রিকেট বোর্ড থেকে শুরু করে দর্শক সবাই। তাই বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি রাখতে চায় না বিসিবি। সে জন্য পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে ভারতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ইতোমধ্যেই সিলেটে অবস্থান করছে দুই দল। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ বিকেল ৪টায় মাঠে গড়াবে সিরিজের প্রথম ম্যাচ।

বিশ্বকাপের আগে এ সিরিজকে প্রস্তুতির ভালো সুযোগ হিসেবে দেখছেন টাইগ্রেসদের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। গতকাল শনিবার ম্যাচ-পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে সেটিই জানালেন তিনি। জ্যোতি বলেন, ‘আমি যেটা চিন্তা করছি এটা সুযোগ হিসেবে দেখছি। কারণ ভারত ভালো দল এবং তারা কিন্তু ফুল প্যাকেজ নিয়ে এবার এসেছে। বিশ্বকাপে হয়তো তারা এই টিমটাই খেলবে। ওদের জন্য একটা ভালো প্রস্তুতির সুযোগ, আমাদের জন্যও।’

কিছুদিন আগেই অস্ট্রেলিয়ার নারীদের বিপক্ষে দুঃস্বপ্নের একটা সিরিজ পার করেছে বাংলাদেশ। ব্যাটিং ব্যর্থতায় হোয়াইট ওয়াশের লজ্জা পেয়েছে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দুই সিরিজেই। সেখান থেকে কামব্যক করতে হলে ভালো ক্রিকটে খেলতে হবে। এবং এটাকেই সেরা সুযোগ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘ভারতের মতো দলের বিপক্ষে পাঁচটা টি-টোয়েন্টি খেলা এবং দলটা যে কঠিন সময় পার করে এসেছে। সেটা থেকে কামব্যাক করতে হলে আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। আমাদের জন্য এটা বড় সুযোগ। সিলেটের মাঠ, এখানে আমাদের অনেক বড় অর্জন নেই হয়তো। কিন্তু ভালো ক্রিকেট খেলার কিছু স্মৃতি আছে। সেগুলোকে নিয়েই ইনশাআল্লাহ চেষ্টা থাকবে।’

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ মানেই এখন অন্যরকম দ্বৈরথ কাজ করে। ভারত নারীদের বিপক্ষে গত সিরিজেও যেটা দেখা গিয়েছিল। টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারলেও ড্র করেছিল ওয়ানডে সিরিজে। শেষ ম্যাচে মাঠের আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্টি জানিয়েছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক। পরে সেটি চলে এসেছিল পুরস্কার বিতরণী মঞ্চেও। সমালোচনার মুখেও পড়েছিলেন তিনি। সেই প্রশ্ন আসতেই জ্যোতি জানালেন সেসব কিছু মনে রাখেনি তারা, ‘প্রথমত দেখেন, জানি না যেটা আপনি বললেন রাইভালরির কথা। অতীতে অনেক কিছু হয়ে গেছে। কিন্তু যা হয়েছে, তা অতীত। ওটা নিয়ে আমরা বসে নেই।’

আজকের ম্যাচটা ভালোভাবে শুরুর দিকেই নজর টাইগ্রেসদের কাপ্তান নিগার সুলতানা জ্যোতির।


আবারও ইংলিশ লিগ মাতাবেন বাংলাদেশি হামজা চৌধুরী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল সাগর

দেশের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে হামজা চৌধুরী নামটা অপরিচিত হওয়ার কথা নয়। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সবচেয়ে বড় তারকা বলা যায় তাকে। অধিনায়কত্ব করেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জয়ী দল লেস্টার সিটির। আবারও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে মাঠে নামতে যাচ্ছে এই বাংলাদেশি তারকা। লিগে খেলা নিশ্চিত করেছে তার দল।

২০১৫-১৬ মৌসুমে রূপকথার গল্প লিখেছিল লেস্টার সিটি। অখ্যাত দলটিই সেবার সবাইকে অবাক করে দিয়ে শিরোপা জিতেছিল ইংল্যান্ডের গৌরবময় প্রিমিয়ার লিগের। কোনো ম্যাচ খেলা না হলেও সে দলের সদস্য ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হামজা চৌধুরী। এর পরে অবশ্য প্রিমিয়ার লিগে দলটির হয়ে অধিনায়কত্ব করার সুযোগও হয়েছিল তার।

কিন্তু ২০২২-২৩ মৌসুমে রেলিগেটেড হয়ে নেমে যেতে হয়েছিল ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে। তবে তারা যে হারিয়ে যেতে আসেনি, সেটার জানান দিলেন এক মৌসুম পরেই। ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে আবারও প্রিমিয়ার লিগে ফিরে এসেছে লেস্টার সিটি। আগামী মৌসুমেই প্রিমিয়ার লিগে খেলবে তারা। সাউথাম্পটনকে আগের ম্যাচে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে নিজেদের কাজ এগিয়ে রেখেছিল লেস্টার সিটি। শুক্রবার কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের বিপক্ষে লিডস ইউনাইটেডের ৪-০ গোলের হারে নিশ্চিত হয়ে যায় লেস্টার সিটির প্রিমিয়ার লিগে প্রত্যাবর্তন।

নিয়ম অনুযায়ী ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষ দুটি দল সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে প্রিমিয়ার লিগে। লেস্টার সিটির এখন শীর্ষ দুইয়ে থাকা নিশ্চিত।

কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের কাছে হারা লিডস ইউনাইটেড এখনো পর্যন্ত পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে আছে; ৪৫ ম্যাচে ৯০ পয়েন্ট তাদের। কিন্তু ম্যাচ বাকি আছে মোটে একটি। অন্যদিকে তাদের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলেও ৯৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে আছে লেস্টার সিটি। ৮৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে ইপ্সউইচ টাউন। তবে তাদের ম্যাচ বাকি এখনো তিনটি। শীর্ষ দুইয়ে থাকার সম্ভাবনায় তাই তারাই এগিয়ে।

পয়েন্ট টেবিলের পরিস্থিতি জানান দিচ্ছে, দুইয়ে থাকা লিডসের আর কোনো সম্ভাবনা নেই লেস্টার সিটিকে টপকে যাওয়ার। তাই লেস্টারের অন্তত সেরা দুইয়ের পেছনে যাওয়ার আর সুযোগ নেই। লেস্টারের বাকি আছে আরও দুটি ম্যাচ। এই দুই ম্যাচ থেকে চার পয়েন্ট পেলেই চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাও জিতে নেবে তারা।

তাই এখন বলাই যায় সবকিছু ঠিক থাকলে আবারও প্রিমিয়ার লিগ মাতাতে দেখা যাবে বাংলাদেশি হামজা চৌধুরীকে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ দলে হামজা চৌধুরীর জোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে।


প্রোটিয়াদের বাইশ গজের আরেক আতঙ্ক ডি কক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের গোড়াপত্তনটাই ছিল তার মুল কাজ। পাশাপাশি সামলাতেন উইকেট কিপিংয়ের দায়িত্বটাও। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে নাকানি-চুবানি খেয়েছে অনেক বাঘা বাঘা বোলাররা। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাইশ গড়ে চলেছে তার ব্যাটিং রাজত্ব। নিজের দিনে তিনি ছিলেন বোলারদের জন্য এক মুর্তিমান আতঙ্কের নাম। বলছি প্রোটিয়া কিংবদন্তি কুইন্টন ডি ককের কথা। সদা শান্ত-শিষ্ট, ভদ্র ক্রিকেটারের অন্যান্য উদাহরণ তিনি।

১৯৯২ সালে দক্ষিন আফ্রিকার জোহানেসবার্গে জন্ম কুইন্টন ডি ককের। তার ক্রিকেটের হাতেখড়ি জোহানেসবার্গের অ্যাডওয়ার্ডস স্কুলের সপ্তম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায়। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই ২০০৯-১০ মৌসুমে গৌতেংয়ের হয়ে মুল দলে অভিষেক হয়। সেখানে দারুণ পারফর্মের সুবাদে ২০১২ সালে ডাক পান দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে বিশ্বকাপ খেলার। নিজের ছাপটা বেশ ভালোভাবেই রাখেন সেখানে। টুর্নামেন্টের চতুর্থ সেরা রান সংগ্রাহক হন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।

২০১২ সালের ডিসেম্বরেই ডি কক ডাক পান টি-টোয়েন্টি দলে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই ২৩ বল থেকে ২৮ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জেতান। এরপর ডি কক শো দেখা যায় ২০১৩ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। কিউইদের ওই সিরিজেই অভিষেক হয় ওয়ানডে ম্যাচেও। সে ম্যাটে মিডল অর্ডারে ব্যাটিংয়ে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তিনি। ৩৪ বল থেকে করেন ১৮ রান। তার দলও হেরে যায়।

তবে প্রথম ম্যাচে খারাপ করলেও হারিয়ে যাননি ডি কক; নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছেন। উন্নতির ছোঁয়ায় বদলে ফেলেছেন নিজেকে। মিডল অর্ডার থেকে চলে এসেছেন ইনিংস ওপেন করতে। এখানেই সফল তিনি। পরবর্তীতে এটাই ছিল তার প্রিয় পজিশন। প্রোটিয়া এ বাঁহাতি উইকেট রক্ষকের সাদা পোষাকের ক্রিকেটে অভিষেক হয় ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।

২০২১ সালে বিদায় জানান টেস্ট ক্রিকেটকে। ২০২৩ বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচটিই হবে ওয়ানডেতে তার শেষ ম্যাচ; এমন ঘোষণা দিয়েই ভারত এসেছিলেন ডি কক। মনে রাখার মত একটি বিশ্বকাপ দিয়েই ইতি টানেন ওয়ানডে ক্রিকেটের।

পুরো নাম- কুইন্টন ডি কক।

জন্ম- ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৯২ সাল।

জন্মস্থান- জোহানেসবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা।

রাশি: ধনু রাশি।

প্রিয় খেলা: ক্রিকেট, গলফ।

প্রিয় খাবার: ক্লাব স্যান্ডউইচ।

প্রিয় পানীয়: বিয়ার।

প্রিয় রং: সাদা, কালো।

প্রিয় ক্রিকেটার: কুমার সাঙ্গাকারা, ক্রিস গেইল।

প্রিয় ক্রিকেট দল: দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল।

প্রিয় সতীর্থ: হাসিম আমলা, এবি ডি ভিলিয়ার্স।

প্রিয় বোলার: ডেল স্টেইন।

প্রিয় গাড়ি: মার্সিডিজ বেঞ্জ, হুন্ডাই।

প্রিয় শখ: মাছ ধরা।

প্রিয় জুতার ব্র‌্যান্ড: সিএ স্পোর্টস।


banner close