মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

এবার জয় ৩২ রানে, তবু অস্বস্তি বাংলাদেশের ব্যাটিং-বোলিংয়ে

বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের শুরুটা আজ ভালো হয়েছে প্রথম ম্যাচের তুলনায়। ছবি: টুইটার
ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশিত
ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ২৩:৪৫

যেদিন শুরু ভালো হয়, সেদিন শেষ ভালো হয় না। যেদিন শেষ ভালো হয়, সেদিন শুরুটা মনমতো থাকে না। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ব্যাটিং যেন এই বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে।

একে তো র‍্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ম্যাচ, তার ওপর দুই টি-টোয়েন্টির এই সিরিজটা মূলত আগামী অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতিসূচক। তাতে বাংলাদেশ জিতল কি না – তা নিয়ে প্রশ্ন সম্ভবত খুব বেশি মানুষের নেই। হারলে অবশ্য চারিদিকে সমালোচনার ঝড় যে বয়ে যাবে, সে-ও জানা কথা। হয়তো সমালোচনা হওয়া স্বাভাবিকও।

তবে জয়-হারের প্রশ্নে সমালোচনার মতো কিছু হয়নি। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে কষ্টেসৃষ্টে ৭ রানে জেতা বাংলাদেশ আজ দুবাইয়েই দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জিতেছে ৩২ রানে। বাংলাদেশের ১৬৯ রানের জবাবে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৩৭ রান করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে জয়-হার ছাপিয়ে এই সিরিজে প্রস্তুতিই তো শেষ কথা, সেখানে বাংলাদেশের ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্নটা জাগছে। শুরু আর শেষ কবে একসঙ্গে ভালো হবে বাংলাদেশের! আজ অবশ্য বোলিংয়েও শুরুটা ভালো হয়েছে, এরপর পথ হারিয়েছে বাংলাদেশ।

আগের ম্যাচে ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভালো হয়নি, আফিফ হোসেনের ব্যাটে চড়ে সেদিন ১৫৭ রান এসেছে। আজ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে রান হলো ৫ উইকেটে ১৬৯ – আগের দিনের চেয়ে ১২ বেশি। অথচ সেদিন পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারে ৩ উইকেটে ৪২ রান তোলা বাংলাদেশ আজ ৬ ওভারে তুলেছে ১ উইকেটে ৪৮। সেদিন ১০ ওভার শেষে ছিল ৪ উইকেটে ৬৭, আজ ২ উইকেটে ৮৩।

কিন্তু উইকেট ধরে রাখা, রান বেশি তোলা – শুরুর এই সুবিধা নিয়েও শেষদিকে ঝড় তোলা হলো না বাংলাদেশের। উল্টো কমেছে। সেদিন ১৫ থেকে ২০ – শেষের এই ছয় ওভারে যেখানে বাংলাদেশ রান তুলেছে ৬৬, আজ এসেছে ৫৬ রান।

প্রথম ওভারেই দুটি চার। দুই ওপেনার মিরাজ ও সাব্বির রহমান চার পেয়েছেন নিজেদের দ্বিতীয় বলেই। নিজের পঞ্চম বলেই ছক্কাও মারলেন সাব্বির। যেটা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সাড়ে চার বছর পর তার প্রথম ছক্কা। প্রথম ৫ বলে ১১ রানকে যদি কোনো ইঙ্গিত বলে কেউ ধরে নেন, তবে সেটা ভুল ছিল। কারণ মাত্র ১ রান যোগ করেই পরের ওভারে বিদায় সাব্বিরের।

মিরাজ অবশ্য অত দ্রুত ফেরেননি। লেগ স্টাম্পের প্রায় ৬ ইঞ্চি বাইরে পিচ হওয়া বলে আম্পায়ার এলবিডব্লু দেয়ার আগে ৪৬ করেছেন। ৩৭ বলের ইনিংসে ৫টি চার মেরেছেন মিরাজ, তবে তাকে যে কারণে এভাবে ওপেনার বানিয়েছে ম্যানেজমেন্ট, সেই ‘ইম্প্যাক্ট’ যদিও বোঝা যায়নি।

তিনে নামা লিটন শুরুটা ভালো করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি (২০ বলে ২৫)। আফিফও পারেননি প্রথম ম্যাচের ফর্ম ধরে রাখতে (১০ বলে ১৮)। কিন্তু তাদের ছোট দুই ইনিংসই দলের রানের গতি বাড়িয়েছে। দুজন আউট হয়েছে আয়ান আফজালের বলে। লিটন কাট করতে গিয়ে। আফিফের বিদায় স্লগ করতে গিয়ে।

মোসাদ্দেক হোসেনের ওপর দায়িত্ব ছিল দলকে শেষ পর্যন্ত টেনে নেয়ার। কিন্তু দিনের ধারা মেনে স্লগ ওভারের শুরুতেই বিদায় নিয়েছেন সেট হওয়া মোসাদ্দেক (২২ বলে ২৭)। শেষদিকে ইয়াসির আলী ও নুরুল হাসানের সোহানের দুটি ক্যামিও বাংলাদেশকে ১৭০-এর কাছে নিয়ে গেছে। ইয়াসির ১৩ বলে করেছেন ২১, ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা হাঁকানো সোহানের রান ১০ বলে ১৯।

বোলিংয়ে অবশ্য শুরুতেই আরব আমিরাতকে ধাক্কা দিয়েছে বাংলাদেশ। ইনিংসের ২৮ বলের মধ্যে ২৯ রানেই ৪ উইকেট ফেলে দেন তাসকিন, নাসুম, মোসাদ্দেকরা। সপ্তম ওভারে পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়েছেন মোসাদ্দেক। তবে ২ ওভারে ৮ রানে ২ উইকেট নেওয়া মোসাদ্দেককে পরে আর কেন বোলিংয়ে আনা হয়নি – সে এক রহস্য বটে।

কিন্তু শুরুতেই ৪ উইকেট ফেলে দেওয়া বাংলাদেশ এরপর উইকেট ফেলতে পেরেছে আর মাত্র একটি! পঞ্চম উইকেটে অধিনায়ক রিজওয়ান (৩৬ বলে অপরাজিত ৫১) ও বাসিল হামিদ (৪০ বলে ৪২) মিলে অবশ্য ৯০ রানের দারুণ এক জুটি গড়েছেন। যদিও সে জুটি কখনো ম্যাচে বাংলাদেশের জয়কে শঙ্কায় ফেলতে পারেনি।

আগের দিন একাদশে না থাকা তাসকিন আজ মোস্তাফিজের বদলে ফিরে ভালো বোলিংই করেছেন, ৪ ওভারে ২২ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট। শরীফুলের বদলে জায়গা পাওয়া এবাদত ৪ ওভারে ২৪ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট। নাসুমও ১ উইকেট পেয়েছেন, তবে ৪ ওভারে দিয়েছেন ৩৬ রান।


সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৬৯/৫ (মিরাজ ৪৬, সাব্বির ১২, লিটন ২৫, আফিফ ১৮, মোসাদ্দেক ২৭, ইয়াসির ২১*, নুরুল ১৯*; আয়ান আফজাল ২/৩৩)

সংযুক্ত আরব আমিরাত: ২০ ওভারে ১৩৭/৫ (ওয়াসিম ১৮, চিরাগ ৫, লাকরা ৪, অরবিন্দ ২, রিজওয়ান ৫১*, হামিদ ৪২, ফরিদ ৮*; সাইফউদ্দিন ০/২৬, তাসকিন ১/২২, নাসুম ১/৩৬, এবাদত ১/২৪, মোসাদ্দেক ২/৮, সাব্বির ০/৯, মিরাজ ০/১২)।


বাঘের থাবায় বিধ্বস্ত জিম্বাবুয়ে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৭ মে, ২০২৪ ১৯:৪২
নাজমুল সাগর

ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ। টপঅর্ডারের ব্যর্থতার পরও জুটি গড়ে দলকে লড়াইয়ে এগিয়ে রাখল তৌহিদ হৃদয় আর জাকের আলি। এরপর দাপট দেখাল বোলাররাও। সেটাতে মনে হলো আরেকটি একপেশে জয়ের ক্ষীণ অপেক্ষা বাংলাদেশের। কিন্তু শেষদিকে উইকেটে এসে হঠাৎই ঝড় তুলতে শুরু করলেন ফরাজ আকরাম। আর এতে একপেশে ম্যাচে তৈরি হল নতুন উত্তেজনা। জয়ের সম্ভাবনাও তৈরি করেছিল জিম্বাবুয়ে। খেলা নিয়ে গেলো শেষ ওভারে। কিন্তু সেসবে জ্বল ঠেলে জয়টা নিজেদেরই করে নিল বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচ সিরিজে টানা তিন ম্যাচ জিতে দুই ম্যাচ হতে রেখেই আরেকটি সিরিজ জয়ের উপাখ্যান লিখল বাংলাদেশ।

আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৯ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ওই রান তাড়া করতে নেমে ১৫৬ রানের বেশি করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে।

তৃতীয় ম্যাচে টসে জিতে বোলিংটাই বেছে নেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ বেগ পেতে হয়েছে বাংলাদেশের দুই ওপেনারকে। তৃতীয় ম্যাচে বর্থতার পরিচয় দিয়ে ফিরে গেছেন লিটন দাস (১২)। এদিন ইনিংস বড় করতে পারেনি তানজিদ হাসানও (২১)। ব্যর্থ হয়েছেন নাজমুল শান্তও (৬)।

টপঅর্ডারের ব্যর্থতায় কিছুটা চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তবে সেই চাপকে সামলে নেন দুই তরুণ ব্যাটার তৌহিদ হৃদয় আর জাকের আলি। দুজনে মিলে গড়েন ৮৭ রানের জুটি। লক্ষ্যপথে ফেরে বাংলাদেশ। ৩ চার আর ২ ছক্কায় ৩৮ বল থেকে ৫৭ রান করে ফেরেন হৃদয়। আর সমান বাউন্ডারিতে ৩৪ বলে ৪৪ রান করেন জাকের। দুইজনই ব্যর্থ হয়েছেন মুজারাবানির ইয়র্কার খেলতে। শেষ পর্যন্ত ১৬৫ রানের পুঁজি দাঁড় করায় বাংলাদেশ।

মাঝারি রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এদিনও ব্যাটিং ব্যর্থতায় পড়ে রোডেশিয়ানরা। ৪৮ রান তুলতেই হারান টপঅর্ডারের চার ব্যাটারকে। ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান ক্রেইগ আরভিন, সিকান্দার রাজাদের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটাররা। এরপরও আগ্রাসী বোলিং চালিয়ে চান সাইফুদ্দিন-সাকিব-রিশাদরা। আর সেটাতে ৯১ রান তুলতেই আট উইকেট হারিয়ে বসে জিম্বাবুয়ে।

কিন্তু এরপর উইকেটে এসে প্রতিরোধ গড়েন ফারাজ আকরাম। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের আভাস দিয়ে, ম্যাচে তৈরি করে উত্তেজনা। সমান ২ চার আর ছক্কায় ১৯ বল থেকে ৩৪ রান করলেও সেটা ম্যাচ জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়নি: কেবল অপেক্ষা বাড়িয়েছে বাংলাদেশের। শেষ পর্যন্ত ৯ রানে জয় পায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের হয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছে সাইফুদ্দিন আর ২টি উইকেট নিয়েছে রিশাদ হোসাইন।


প্রস্তুতিতে জিম্বাবুয়েকে মানতে পারছেন না সাকিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাকি নেই আর এক মাস সময়। বিশ্বকাপের দলগঠন থেকে শুরু করে প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো। ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও। শেষ সময়ের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলছে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এরপর এ মাসের শেষ দিকে বিশ্বকাপের আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে খেলবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।

ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের ইতোমধ্যে মাঠে গড়িয়েছে দুই ম্যাচ। প্রথম দুই ম্যাচেই দাপুটে জয় পেয়েছে টাইগাররা। দেড়শ পেরোনোর আগেই আটকে রেখেছে সফরকারীদের। দেখে মনে হবে বেশ ভালো প্রস্তুতিই সারছে বাংলোদেশ। কিন্তু বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান জানালেন ভিন্ন কথা।

সিরিজ শুরুর আগে থেকেই নেট দুনিয়ায় সমালোচনা চলছিল, প্রতিপক্ষ হিসেবে বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়া তুলনামূলক দুর্বল জিম্বাবুয়েকে বাছাই করায়। প্রশ্ন উঠছিল, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি কতটা আদর্শ হবে। এবার সেই সুরেই সুর মেলালেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাকিব আল হাসান সাংবাদিকদের বলেছেন, জিম্বাবুয়ে আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে খেলে বিশ্বকাপের স্বপ্ন দেখা উচিত নয়। বিশ্বকাপ পুরো আলাদা একটা মঞ্চ, অনেক চাপ থাকে। সেই চাপ কাটিয়ে উঠলেই ভালো পারফরম্যান্স হবে। তবে গতবারের থেকে এবারের পারফরম্যান্স ভালো করার চেষ্টা তো থাকবেই দলের, সে ক্ষেত্রে গ্রুপপর্বে তিনটি ম্যাচ জিততেই হবে।

তাই বিশ্বকাপের আগে টানা দুই ম্যাচ জয়ের পরও আশায় বুক বাঁধতে পারছেন না জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার বলছেন- জিম্বাবুয়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো তুলনামূলক দুর্বল দলের সঙ্গে জিতে তেমন আত্মবিশ্বাস পাওয়া যাবে না। তার চেয়ে ভারত-পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের মতো ক্রিকেট পরাশক্তি দলগুলোর সঙ্গে খেলতে পারলে ভালো হতো।

জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ যেহেতু আমাদের অজানা, তাই সেখানে তাদের বিরুদ্ধে খেলার সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু একদম দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলে কখনো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে নামার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব নয়। গতবার নিউজিল্যান্ড আর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজ খেলে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম।


প্রথম সিরিজ জয়ের হাতছানি অধিনায়ক শান্তর  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল সাগর

চট্টগ্রামে প্রথম দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই দেখা গেল টাইগার বোলারদের আধিপত্য। তাসকিন-সাইফুদ্দিনদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণই করল জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররা। চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে প্রথম দুই ম্যাচেই বড় হার দেখেছে সিকান্দার রাজার দল। তাই তৃতীয় ম্যাচটি এখন তাদের জন্য বাঁচা-মরার লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে এ ম্যাচে টাইগারদের লক্ষ্য থাকবে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করা।

আজ মঙ্গলবার সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচটিও মাঠে গড়াবে সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার। প্রথম দুই ম্যাচে আগ্রাসী বোলিং করেছে টাইগার বোলাররা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসেই জয়ের ভীত করে দিয়েছে তারা। তাসকিন-সাইফুদ্দিনরা স্বল্প রানে বেধে রাখায়; বাংলাদেশের জয় ছিল কেবলই সময়ের ব্যাপার। বাঁচা-মরার ম্যাচে নিশ্চয়ই মরণ কামড় দেওয়ার চেষ্টা করবে জিম্বাবুয়ে। তাই বাংলাদেশকে সিরিজ জিততে হলে তৃতীয় ম্যাচেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে বোলারদের। অবশ্য সে আশা করাই যায়।

শুরুর দুই ম্যাচেই বড় কোনো পরীক্ষা দিতে হয়নি টাইগার বোলারদের। স্বল্প রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে তারা সেটা বেশ সহজেই শেষ করেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের ব্যাটার তানজিদ হাসান তামিম আর তৌহিদ হৃদয়। দুইজনই দেখিয়েছে তাদের শক্তি-সামর্থ্য। টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাট করে বিশ্বকাপ নিয়ে আশার আলো দেখিয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচে এসে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও মরিচা ছুটিয়েছে; আশা দেখিয়েছে। হৃদয়-তানজিদ আশা দেখালেও আশাহত করেছে ওপেনার লিটন দাস আর অধিনায়ক নাজমুল শান্ত। লিটনের অফফর্ম নতুন নয়, সেটারই ধারাবাহিকতা ধরে রাখছে সে। অন্যদিকে নাজমুল শান্তর স্টাইকরেট নিয়ে সমস্যার পাশাপাশি সেট হয়েও ইনিংশ বড় করতে না পারা বেশ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাড়াবে বাংলাদেশের জন্য। চলমান সিরিজে না হলেও বিশ্বকাপে হবে।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এ সিরিজকে বলা হচ্ছে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির অংশ; সেক্ষেত্রে সেরা প্রস্তুতির জন্য তৃতীয় ম্যাচে অন্তত টসে জয়লাভ করলে বাংলাদেশের ব্যাটিং নেওয়া প্রয়োজন। তাহলে ব্যাটাররাও নিজেদের যথেষ্ট প্রস্তুত করার সুযোগ পাবে; বড় রান করার একটা তাড়া থাকবে। পাশাপাশি বোলাররাও প্রতিপক্ষকে ডিফেন্ড করার সুযোগ পাবে। দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আরও অন্তত সপ্তাহ খানেক বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তৃতীয় ম্যাচেও হানা দিতে পারে বৃষ্টি। ম্যাচ পরিত্যাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলেও ওভার কেমে যেতে পারে। অধিনায়কের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সিরিজেই লঙ্কানদের বিপক্ষে হার দেখেছে শান্ত। এবার অধিনায়ক নাজমুল শান্তর সামনে হাতছানি দিচ্ছে তৃতীয় ম্যাচ জিতে প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের।

বিষয়:

হৃদয়ের ব্যাটেই আরেকটি জয়ের উপাখ্যান  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামলো জিম্বাবুয়ে। কিন্তু ভাগ্যের পরিবর্তন আর হলো না। এদিনও প্রথম টি-টোয়েন্টির মতোই টাইগার বোলারদের তোপে নাস্তানাবুদ হলো সিকান্দার রাজারা। ব্যাটিং ব্যর্থতায় তৈরি হল শতক না পূরনের শঙ্কা। তবে অভিষেক ম্যাচেই ঝড়ো ব্যাটিংয়ে আশার আলো দেখালো জনাথন ক্যাম্পবেল। কিন্তু সেটিও জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ফলাফল হিসেবে ৬ উইকেটের হারে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে গেলো জিম্বাবুয়ে।

এদিনও একই ধারা বজায় রাখলো তাসকিন-সাইফুদ্দিন-রিশাদরা। শুরু থেকেই আগ্রাসী বোলিংয়ে কোমড় ভেঙে দিল জিম্বাবুয়ের। ৪২ রানেই তুলে নিল টপঅর্ডারের উইকেট। ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিল প্রথম ইনিংসেই। সহজ রানের লক্ষ্যে বাকি কাজটা বেশ সহজেই শেষ করল ব্যাটাররা।

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও বাংলাদেশের বোলারদের আগ্রাসী বোলিংয়ে, স্কোরবোর্ডে ৪২ রান যোগ করতেই, সাজঘরের পথ দেখলো জিম্বাবুয়ের টপঅর্ডারের পাঁচ ব্যাটার। তবে ৭ নম্বরে উইকেটে নেমে জিম্বাবুয়েকে কিছুটা আশার আলো দেখাল অ্যালিষ্টার ক্যাম্পবেলের ছেলে জোনাথন ক্যাম্পবেল। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে অভিষেকেই দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করে লড়াইয়ের পুঁজি গড়লেন। তার সঙ্গে তাল মেলালেন ব্রায়ান বেনেট। দুইজন মিলে গড়লেন ৭৩ রানের জুটি। যেই জুটি পথ দেখাল জিম্বাবুয়েকে। ৪ চার আর ৩ ছক্কায় ক্যাম্পবেল করলেন ৪৫ রান। আর ২ চার ও ৩ ছক্কায় ২৯ বল থেকে ৪৪ রান করলেন ব্রেনেট। ২০ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ১৩৭ রান।

বল হাতে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। সমান উইকেট গেছে রিশাদ হোসেনের ঝুলিতেও।

স্বল্প রানের জবাবে খেলতে নেমে সাবধানী শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। পাওয়ার-প্লের শেষ বলে গিয়ে জঙ্গির বলে ক্যাচ তুলে দেন তানজিদ হাসান (১৮)। অধিনায়ক নাজমুল শান্ত এদিনও ইনিংস বড় করতে পারেননি (১৬)। এরপর বেশিক্ষণ উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি লিটন দাসও (২৩)। দ্রুতই ফিরে যান জাকির আলিও (১৩)। এরপর জিম্বাবুয়ের আঁটোসাটো বোলিংয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।

তবে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে সেই চাপকে জয় করেন তৌহিদ হৃদয় আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দুইজনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৯ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেট উইকেটে হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ১৬ বল থেকে অপরাজিত ২৪ রান করেন মাহমুদউল্লাহ আর তৌহিদ হৃদয় করেন ২৫ বল থেকে ৩৭ রান।


২-০ তে এগিয়ে গেলো টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

চট্টগ্রামে আরও একটি সহজ জয় বাংলাদেশের। ১৩৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করে টাইগাররা জিতেছে ৬ উইকেট আর ৯ বল হাতে রেখে। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে টাইগাররা।

ওপেনিং জুটিতে ৩৫ বলে ৪১ রান তুলে তানজিদ হাসান তামিম আর লিটন দাস রান তাড়ায় শুরুতা করে দেন বাংলাদেশের। আগের ম্যাচের হাফসেঞ্চুরিয়ান তামিম অবশ্য ভালো করতে পারেননি। ১৯ বলে ১৮ রানেই থামে তার ইনিংস। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ফেরেন ক্যাচ দিয়ে।

নাজমুল হোসেন শান্তও ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়েন বাউন্ডারিতে। ১৫ বলে বাংলাদেশ অধিনায়ক করেন ১৬। লিটন দাস শুরুটা ভালো করলেও এরপর ফর্মে ফেরার চেষ্টায় বল নষ্ট করেন। শেষ পর্যন্ত ২৫ বলে ২৩ করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৬২ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এই রান আসে ১০ ওভারে।

এর মধ্যে বৃষ্টিতে বন্ধ হবার পর আবার খেলা শুরু হলে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন তাওহিদ হৃদয় আর জাকের আলি অনিক। তবে তাদের জুটিটি টেকেনি ২৩ বলে ৩১ রানের বেশি। জাকের আলি বোল্ড হন ১২ বলে ১৩ করে।

তবে দলকে বিপদে পড়তে দেননি তাওহিদ হৃদয় আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পঞ্চম উইকেটে ২৯ বলে অবিচ্ছিন্ন ৪৯ রানের জুটিতে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তারা। ১৬ বলে ২ চার আর ১ ছক্কায় ২৬ রানে মাহমুদউল্লাহ আর ২৫ বলে ৩ বাউন্ডারিতে আর ২ ছক্কায় ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন হৃদয়।

চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৪১ রানে ৭ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ে তুলেছিল ১২৪। এবার একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় ম্যাচে ৪২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে শেষ পর্যন্ত দাঁড় করায় ৭ উইকেটে ১৩৮ রানের সংগ্রহ।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই চাপে ছিল জিম্বাবুয়ে। ধীরগতিতে শুরু করে তারা। কিন্তু লাভ হয়নি।

ইনিংসের চতুর্থ ওভারের শেষ বলে আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। তাদিওয়ানাশে মারুমানি ২ করে হন তাসকিনের এলবিডব্লিউয়ের শিকার।

উইকেট বাঁচানোর চেষ্টায় অনেক বল খেলে ফেলেন আরেক ওপেনার জয়লর্ড গাম্বি। ৩০ বলে ১৭ করে তিনি অবশেষে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।

দশম ওভারে তিন বলের মধ্যে দুই উইকেট তুলে নেন রিশাদ হোসেন। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা (৩) আর ক্লাইভ মাদান্দে (০) ফেরেন ক্যাচ দিয়ে। ১৬ বলে ১৩ করে শেখ মেহেদীকে উইকেট দেন ক্রেইগ আরভিন। ৪২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ে।

সেখান থেকে আজই অভিষেক হওয়া জিম্বাবুইয়ান কিংবদন্তি অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলের ছেলে জোনাথান ক্যাম্পবেল দলের হাল ধরেন। ব্রায়ান বেনেটকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৪৩ বলে ৭৩ রান যোগ করে দিয়ে যান তিনি।

অবশেষে এই জুটিটা ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। ছক্কা হাঁকাতে গিয়েছিলেন ক্যাম্পবেল। মিডউইকেট বাউন্ডারিতে সাইফউদ্দিনের ক্যাচ হয়ে ফেরেন এই অভিষিক্ত। ২৪ বলে ৪৫ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ৪টি চার আর ৩টি ছক্কা হাঁকান ক্যাম্পবেল।

শেষদিকে ঝড় তুলেছেন বেনেট। ২৯ বলে ২ চার আর ৩ ছক্কায় ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন এই ব্যাটার।

তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ১৮ আর রিশাদ হোসেন ৩৩ রানে শিকার করেন দুটি করে উইকেট। শরিফুল ৪ ওভারে দেন ২৬, শেখ মেহেদী ৪ ওভারে ১৮ আর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৪ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে নেন একটি করে উইকেট।


টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

আপডেটেড ৫ মে, ২০২৪ ১৮:২৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

সিরিজ জয় করতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিং নিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ৫ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ১৯ রান।

গত ম্যাচের জয়ী একাদশ নিয়েই দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে জিম্বাবুয়ের একাদশে এ ম্যাচে এসেছে দুটি পরিবর্তন।

বাংলাদেশের একাদশে রয়েছেন নাজমুল হোসেন (অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ, জাকের আলী, মেহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

সিকান্দার রাজা (অধিনায়ক), ক্রেগ আরভিন, জয়লর্ড গাম্বি, ব্রায়ান বেনেট, ক্লাইভ মানদান্দে (উইকেটকিপার), লুক জঙ্গি, রায়ান বার্ল, ব্লেসিং মুজারাবানি ও রিচার্ড এনগারাভা, জোনাথন ক্যাম্পবেল ও অ্যাশলে এনডিলুভু।


দুর্দান্ত সাইফুদ্দিনের লক্ষ্য বিশ্বকাপ দল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

দরজায় কড়া নাড়ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আগেই জানা গিয়েছিল, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ দেখেই বিশ্বকাপের ফাইনাল স্কোয়াড সামনে আনবে বিসিবি। তাই বিশ্বকাপের বিমান ধরতে হলে, মাঠে নিজের ১১০ ভাগ দিতে হবে ক্রিকেটারদের সেটা বেশ ভালো করেই জানেন তারা। এবং করলেনও সেটাই।

প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে স্বাভাবিকভাবেই নজর ছিল পেসার অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের দিকে। কারণ ইনজুরি কাটিয়ে দীর্ঘ ১৮ মাস পরে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। বিশ্বকাপের আগে কেমন করেন তিনি সেটাই দেখার বিষয় ছিল। তবে ইনজুরি সাইফুদ্দিনকে দমাতে পারেনি, ফিরেছেন আরও ধারাল হয়ে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রমাণ করলেন সেটাই। ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে শিকার করলেন তিন উইকেট।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে স্বাভাবিকভাবেই উঠে এল বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা পাকাপাকির ব্যাপারটাও। সাইফুদ্দিন জানালেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, প্রায় ১৮ মাস পর আন্তর্জাতিক মাঠে ফিরলাম। আমার জন্য বিষয়টা কঠিন ছিল। যদি আমি বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পেতে চাই, আমার জন্য এই পারফরম্যান্সটার বিকল্প নেই।’

কিন্তু বিশ্বকাপের আগে তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে সাইফুদ্দিনের। আগের সিরিজে বাজে পারফর্ম করে বাদ পড়ার রেকর্ডও আছে। সাইফউদ্দিন স্মরণ করলেন সেই স্মৃতিও, ‘এর আগে ২০২১-২২ (আসলে ২০২২) বিশ্বকাপে আমি শেষ মুহূর্তে বাদ পড়ি পারফরম্যান্সের কারণে। এ জন্য অনেক সিরিয়াস ছিলাম। পারফর্ম করতে চাচ্ছিলাম।’

অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন বাংলাদেশের পেস বোলিং ইউনিট বেশ শক্তিশালী। একাধারে পারফর্ম করে যাচ্ছেন বেশ কয়েকজন পেসার। তাই দলে টিকে থাকতে হলে প্রতিযোগীতায় নামতে হবে সতীর্থদের সঙ্গে। ছাড়িয়ে যেতে হবে তাদের। এমনটা জানেন সাইফুদ্দিনও, ‘আজকে অনেক নার্ভাস ছিলাম। এর আগে অনেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছি, তবে নার্ভাস ছিলাম না। আমার জন্য ভালো করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যেহেতু দুই ম্যাচ পরে ফিজ আসবে। একাদশ কী হবে না হবে, ম্যানেজমেন্ট জানে। আমি চেষ্টা করেছি ভালো করার। আরও ভালো করতে পারলে ভালো লাগত। আরও ৪টা ম্যাচ বাকি। নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।’

সর্বশেষ বিপিএলেও দুর্দান্ত ছিলেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ফরচুন বরিশালের ট্রফি জয়ে বড় অবদান ছিল এ পেস অলরাউন্ডারের। যেমন বল হাতে ছিলেন দুর্দান্ত তেমনি ব্যাট হাতেও। যেটা সাইফুদ্দিনের বড় অস্ত্র। তবে এমন পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারলে তার জন্য বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়াটা কঠিন হওয়ার কথা নয়।


আত্মবিশ্বাসী টাইগারদের সামনে জিম্বাবুয়ে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল সাগর

সাম্প্রতিক যেকোনো বিচারেই জিম্বাবুয়ের চেয়ে বেশ এগিয়ে বাংলাদেশ। প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাঠেও দেখা গেলে সেটারই প্রতিচ্ছবি। টাইগার বোলারদের থাবায় জবুথবু জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররা। কোনো রান করার আগেই ফিরেছেন জিম্বাবুয়ের চার অভিজ্ঞ ব্যাটার। ম্যাচের পার্থক্যও গড়ে গিয়েছিল সেখানেই। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে রীতিমতো জিম্বাবুয়ের বোলারদের শাসন করলেন টাইগারদের তরুণ দুই ব্যাটার; তানজিদ হাসান তামিম আর তৌহিদ হৃদয়। অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তানজিদ হাসান। অন্যদিকে প্রায় ২০০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন তৌহিদ হৃদয়। ফলাফল হিসেবে ২৮ বল বাকি থাকতেই ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে টাইগাররা।

প্রথম ম্যাচে জয়ে নিঃসন্দেহে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে রয়েছে নাজমুল শান্ত বাহিনী। আত্মবিশ্বাসী টাইগারদের সামনে আরেকবার জিম্বাবুয়ে। সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আজ আবারও চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ এবং জিম্বাবুয়ে। এ ম্যাচটিও শুরু হবে সন্ধ্যা ছয়টায়। খেলার চলতি ধারাবিবরনী সরাসরি প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে চট্টগ্রামের ব্যাটিং স্বর্গেও আগ্রাসী বোলিং করেছে সাইফুদ্দিন-তাসকিন আহমেদরা। কোণঠাসা করে রেখেছিল জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইন আপকে। তাসকিনদের এমন পারফরম্যান্স টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভালো কিছুর আশা দেখায়। যদিও জিম্বাবুয়ের এ ব্যাটিং বিশ্বসেরা নয়, তবুও একটা আত্মবিশ্বাস পাবে পেসাররা। দ্বিতীয় ম্যাচেও বজায় রাখতে হবে একই ধারা। সেটা লম্বা করলে একই ধারা রাখতে হবে বিশ্বকাপেও।

বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে দাপুটে জয় পেলেও ব্যাটিং নিয়ে একটা শঙ্কা থেকেই যায়। অন্তত লিটন দাস যেভাবে আউট হয়েছেন। আর অধিনায়ক নাজমুল শান্তর ব্যাটিংয়ের ধরণ। ওপেনার লিটন দাস এখনও বের হতে পারেননি অফফর্ম থেকে। বিশ্বকাপের আগে তার এমন ফর্ম নিশ্চিতভাবেই ভাবাবে ম্যানেজমেন্টকে। সেক্ষেত্রে বিশ্বকাপের আগে অন্য কাউকে বাজিয়ে দেখা প্রয়োজন ম্যানেজমেন্টকে।

অন্যদিকে শান্তর ব্যাটিংয়ের বলছে আধুনিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সঙ্গে মোটেই মানানসই নয়। শান্তর স্ট্রাইকরেটের দিকে আরও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় বিশ্বকাপে বড় রান তাড়া করা বেশ কঠিন হয়ে পড়বে বাংলাদেশের সামনে। লিটন দাস ব্যর্থ হলেও প্রথম ম্যাচে তানজিদ তামিমের ব্যাটিং বিশ্বকাপের আগে আশা দেখাচ্ছে ওপেনিং সমস্যার সমাধানে। চট্টগ্রামের ইতিহাস বলছে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও দেখা মিলবে বড় রানের। সেক্ষেত্রে ব্যাটারদের দায়িত্ব নিতে হবে।

প্রথম ম্যাচে বোলিংয়ে খুব একটা সাচ্ছন্দে ছিলেন না বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। যেহেতু বিশ্বকাপের আগে এ সিরিজ প্রস্তুতির জন্য তাই তানজিম সাকিবকে পরের ম্যাচে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ শেষ দুই ম্যাচে একাদশে থাকার জোড় সম্ভাবনা রয়েছে আরেক বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের। তাই সাকিবকে সুযোগ দেওয়ার এটাই সময়।


‘ক্লিন হিটার’ শিমরন হেটমায়ার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

২০০৭ সালে ব্রায়ান লারার অবসরের পর হন্যে হয়ে আরেকজন বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান খুঁজছিল ক্যারিবীয়রা। নতুন কোনো তরুণ একটু ভালো খেললেই ক্যারিবীয়রা সঙ্গে সঙ্গেই লারার সঙ্গে সেই তরুণের মিল খুঁজতে শুরু করে। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে প্রায় সবাই। তবে কিছুটা ব্যতিক্রম দেখা গেছে এক তরুণের। লারার ব্যাটিংয়ের ধরনের সঙ্গে হয়তো তার খুব একটা মিল খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু এক জায়গায় দুজনই ছিলেন প্রায় একই; লারার মতো এ তরুণও নিজের দিনে একা হাতে ম্যাচ বের আনতে যথেষ্ট পটু।

১৯৯৬ সালে গায়ানায় জন্ম নেওয়া সেই তরুণের নাম শিমরন হেটমায়ার। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে আপনি ‘ক্লিন হিটার’ বলতে একটুও দ্বিধা করার কথা নয়। হেটমায়ার নিজের দিনে যেন নিজের ইচ্ছামতো ব্যাটে-বলে সংযোগ ঘটাতে পারেন। এরপর বলের স্থান হয় গ্যালারিতে। পেস বলের বিরুদ্ধে ভীষণ শক্তিশালী হেটমায়ার, পুল কিংবা হুক দুটি শটই দারুণ খেলেন। স্পিন বলের বিপক্ষে স্লগ সুইপে বিশাল ছক্কা হাঁকাতেও দারুণ পটু এই তরুণ।

লারার মতো হেটমায়ারের উত্থানটাও যুব বিশ্বকাপের মাধ্যমে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় সেই যুব বিশ্বকাপে তার নেতৃত্বে খেলেই সেই আসরের শিরোপা জেতে উইন্ডিজের যুবারা। সে বিশ্বজয়ের ক্ষেত্রেও ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছিলেন হেটমায়ার; কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ফিফটি করেছিলেন। ফাইনালে পরিচয় দিয়েছিলেন দায়িত্বশীলতার।

আরেকটা জায়গায় হেটমায়ারের মিল খুঁজে পাওয়া যাবে লারার সঙ্গে। সেটা হলো, দুজনই বেশ খামখেয়ালি; পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই খামখেয়ালিপনায় কাটিয়েছেন লারা। আর বিমান ধরতে দেরি হওয়ায় বাদ পড়েছিলেন ২০২৩ বিশ্বকাপের দল থেকেই।

২০১৭ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক হয় সাদা পোশাকের ক্রিকেটে টেস্টে। কিন্তু সেখানে সুবিধা করতে পারেনি হেটমায়ার। সে বছরই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক হয় ওয়ানডেতে। ওই সিরিজেই গায়ে জড়ান টি-টোয়েন্টির জার্সিও।

সাদা বলের ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্ম করে দ্রুত সময়ের মধ্যেই নজর কাড়েন ক্রিকেট বিশ্বের। পরে খেলেছেন আইপিএল, পিএসএল, সিপিএল, বিপিএলসহ বিশ্বের প্রায় সব ফ্র্যাঞ্জাইজি টুর্নামেন্ট।

পুরো নাম- শিমরন হেটমায়ার।

জন্ম- ২৬ ডিসেম্বর ১৯৯৬ সাল।

জন্মস্থান- কাম্বারল্যান্ড, গায়ানা।

রাশি: মকর।

প্রিয় খেলা: ক্রিকেট।

প্রিয় খাবার: সামুদ্রিক খাবার।

প্রিয় পানীয়: বিয়ার।

প্রিয় রং: সাদা, নীল।

প্রিয় ক্রিকেটার: ব্রায়ান লারা, ম্যাথিউ হেইডেন, শেন ওয়ার্ন, ক্রিস গেইল।

প্রিয় ক্রিকেট দল: ওয়েস্ট ইন্ডিস ক্রিকেট দল।

প্রিয় সতীর্থ: কিমো পল, নিকোলাস পুরান।

প্রিয় ফুটবলার: লিওনেল মেসি।

প্রিয় ফুটবল দল: বার্সেলোনা এফসি।

প্রিয় গাড়ি: বিএমডব্লিউ এক্স ৭।

প্রিয় শখ: ক্রিকেট খেলা, ফুটবল খেলা।

প্রিয় জুতার ব্র‌্যান্ড: নাইকি।


অভিষেকেই আলো ঝলমলে ব্যাটিং তানজিদ তামিমের

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমুল সাগর

কাগজে-কলমে বড় দল হিসেবেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। কাগজে-কলমের সেই হিসাবটা দেখা গেলো মাঠেও। বাংলাদেশের সামনে এক অসহায় জিম্বাবুয়ে। নির্বিকার তাদের ব্যাটিং লাইন-আপ। তাসকিন-সাইফুদ্দিনদের বোলিংয়ের সামনে অসহায়ত্ব ফুটে উঠল সিকান্দার রাজা, শেন উইলিয়ামসদের।

চট্টলার ব্যাটিং উইকেটেও রাজত্ব চালালো বাংলাদেশের বোলাররা। দীর্ঘদিন পরে ইনজুরি থেকে ফিরে সাইফুদ্দিন দেখালেন; তার বোলিংয়ের ধারটা ঠিক এখনো আগের মতোই আছে। গতির ঝলক দেখিয়েছে তাসকিন আহমেদও। এ দুই পেসার মিলিই চেপে ধরেছিল জিম্বাবুয়েকে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল শেখ মাহেদী। টাইগারদের প্রথম শিকার তারই।

বাংলাদেশের জয়ের বীজ বপন করে দিয়েছিল বোলাররাই। তাই ব্যাটারদের আর খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। অভিষেক ম্যাচেই ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়ে, বাংলাদেশের জয়ের নৌকা বন্দরে নিয়ে গেছেন তানজীদ হাসান তামিম। তুলে নিয়েছেন অর্ধশতক। জানান দিয়েছেন নিজের সামর্থের। বল-ব্যাট দুই বিভাগেই বিশ্বকাপের আগে দারুণভাবে জ্বলে উঠল টাইগাররা। প্রথম ম্যাচেই সাড়ল একটি সুন্দর প্রস্তুতি।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪ ওভার শেষে এক উইকেটে ৩১ রান করা জিম্বাবুয়ের মাথায় হঠাৎই কি যেনো ভূত চেপে বসলো। ৩৬ রানে হারাল দ্বিতীয় উইকেট। এরপর ৫ রান তুলতেই নেই আরও পাঁচ উইকেট। ক্রেইড আরভিন, সিকান্দার রাজা, শেন উইলিয়ামস, রায়ানের বার্লের মত অভিজ্ঞরা ফিরেছেন কোনো রান না করেই।

দেখে মনে হচ্ছিল ৫০ পেরোনই যেনো অসম্ভব জিম্বাবুয়ের জন্য। তবে শেষ পর্যন্ত ক্লিভে মাদানদে ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজার জুটিতে লড়াই করার মতো সংগ্রহ পায় জিম্বাবুয়ে। ২০ ওভার শেষে তারা পূঁজি পায় ১২০ রানের।

টাইগারদের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন পেসার তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আর শেখ মাহেদী। ইনজুরি থেকে দীর্ঘদিন পরে ফিরেই ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেছেন সাইফুদ্দিন; তাসকিনের সংগ্রহও সমান। ২ উইকেট গেছে শেখ মাহেদীর ঝুলিতে।

স্বল্প রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র এক রানেই ফেরেন লিটন দাস। এরপর উইকেটে এসে দুইবার জীবন পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেনি নাজমুল শান্ত (২১)। তবে অপরপ্রান্তের বুক চিতিয়ে খেলেছেন তানজিদ তামিম। বাউন্ডারি ছাড়া করেছেন মুজারাবানিদের। তুলে নিয়েছেন টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম অর্ধশতক। শান্ত আউট হয়ে গেলে উইকেটে নেমে তামিমের সঙ্গে ঝড় তুলতে থাকেন তৌহিদ হৃদয়ও। এ দুইজনের ব্যাটিং ঝড়ে অসহায় হয়ে পড়ে মুজারাবনি-লুক জঙ্গিরা। দুইজন মিলে গড়েন ৬৯ রানের জুটি।

৮ চার আর ২ ছক্কায় ৪৭ বল থেকে ৬৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তানজিদ তামিম। ৫ চার আর এক ছক্কায় ১৮ বল থেকে ৩৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন আরেক ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়।

এ দুইজনের ব্যাটে ভর করে ৪ ওভার ৪ বল বাকি থাকতেই মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা। এ জয়ে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।


মিথিলার মুকুটে নয়া পালক

আপডেটেড ৪ মে, ২০২৪ ০০:০৮
বিনোদন প্রতিবেদক

একদিকে যেমন বাংলাদেশের প্রথম সারির অভিনেত্রীদের তালিকায় তার নাম, অন্যদিকে ভারতেও তার গুণমুগ্ধ ভক্তের সংখ্যা প্রচুর। সৃজিত ঘরণির মাথায় এবার নয়া পালক। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত ছবি ও অভাগী। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের গল্প অভাগীর স্বর্গ অবলম্বনে তৈরি ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিথিলা। তার অভিনয় সকলকে মুগ্ধ করেছে বলা চলে। আর এই ছবির জন্যই এবার দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে সম্মানিত মিথিলা। একটি ভিডিও নিজেই ভাগ করে নিলেন সেই খবর।

‘ও অভাগী’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই সকলের মনজয় করেছেন তিনি। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘অভাগীর স্বর্গ’-এর উপর ভিত্তি করে এই ছবিটি তৈরি করেছেন পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী। এবং ছবিটির মুখ্য ভূমিকায় দেখা গিয়েছে মিথিলাকে। ছবিটির গল্প থেকে শুরু করে অভাগী রূপে মিথিলার অভিনয় ভীষণভাবে মন কেড়েছে সকলের। এবার এই চরিত্রটির জন্য পুরস্কৃত মিথিলা। অভিনেত্রীকে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। তবে দিল্লিতে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন হলেও, সেদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি রফিয়াথ রশিদ মিথিলা। কারণ, বাংলাদেশে ছিলেন তিনি সেই সময়। অভিনেত্রীর জায়গায় পুরস্কারটি গ্রহণ করেছেন ছবির পরিচালক-প্রযোজক। তবে এমন সম্মানে মিথিলার আনন্দের অন্ত নেই।

তিনি একটি ভিডিওবার্তায় বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে সবাইকে জানাতে চাই যে, দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ১৪-তম দাদাসাহেব ফালকে ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৪-এ আমি সেরা অভিনেত্রীর সম্মানে ভূষিত হয়েছি। ‘ও অভাগী’ ছবিতে অভিনয়ের জন্যই এই পুরস্কার আমি পেয়েছি। আমি এজন্য আমাদের পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী ও প্রযোজক ড. প্রবীর ভৌমিক এবং আমাদের গোটা টিমকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাতে চাই।’

ছবিটি মুক্তির পর থেকেই দর্শকদের মধ্যে আলাদা উন্মাদনা দেখা গিয়েছে এই ছবিকে কেন্দ্র করে। ‘ও অভাগী’ ছবিতে একজন রসিকের চরিত্রে দেখা গিয়েছে। শুধু তিনি নন, আরজে সায়নকে এবং জমিদারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী। সুব্রত দত্তের অভিনয় নজর কেড়েছে সকলের। এছাড়াও অভিনয় করেছেন দেবযানী চট্টোপাধ্যায়, আরজে জিনিয়া, কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সৌরভ হালদারের মতো অভিনেতারা। এ ছবিতে ফুটে উঠেছে এই সমাজের এক অন্য কাহিনি। শুধু এই ছবিতে নয়, মিথিলার অভিনয় এর আগেও বহু ছবিতে মুগ্ধ করেছে বাঙালি দর্শককে।


টাইগারদের বোলিং তোপে জিম্বাবুয়ে থামলো ১২৪ রানে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের বোলিং তোপের মুখে ১২৪ রানে থামলো জিম্বাবুয়ে।

টাইগারদের পক্ষে সাইফউদ্দিন ৪ ওভারে ১৫ আর তাসকিন সমান ওভারে ১৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। ১৬ রানে ২ উইকেট শিকার করেন শেখ মেহেদী। যদিও ভালো করতে পারেননি শরিফুল ইসলাম আর রিশাদ হোসেন। দুজনই ৪ ওভারে ৩৭ করে রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য।

আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম ওভারে দুটি বাউন্ডারি হজম করেন শরিফুল ইসলাম।

দ্বিতীয় ওভারেই স্পিন আক্রমণে নিয়ে আসেন শান্ত। শেখ মেহেদী অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিতে দেরি করেননি। নিজের দ্বিতীয় বলে দুর্দান্ত এক টার্নিং ডেলিভারিতে অভিজ্ঞ ক্রেইগ আরভিনকে (০) বোল্ড করেন এই অফস্পিনার। আরভিন ডিফেন্ড করেও উইকেট বাঁচাতে পারেননি।

পঞ্চম ওভারে দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। প্রায় ১৯ মাস পর দলে ফেরা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নিজের প্রথম ওভারেই উইকেটের দেখা পান। লেগসাইডের বল ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে তাসকিন আহমেদের ক্যাচ হন অভিষিক্ত জয়লর্ড গাম্বি (১৪ বলে ১৭)।

শেখ মেহেদীর করা পরের ওভারে জোড়া উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। প্রথম বলে রানআউট হন ব্রায়ান বেনেট (১৫ বলে ১৬)। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট থেকে মাহমুদউল্লাহর থ্রোতে উইকেট ভেঙে দেন উইকেটরক্ষক জাকের আলি।

পরের বলে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা (০) প্যাডেল সুইপ খেলতে গিয়ে হন টার্নে পরাস্ত। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় স্লিপে লিটন দাসের হাতে। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৪ উইকেটে ৩৮ রান তুলে জিম্বাবুয়ে।

সপ্তম ওভারে এসে আবার তাসকিন টানা দুই বলে করেন দুই শিকার। ব্যাটে লেগে ইনসাইডেজে বোল্ড হন শন উইলিয়ামস (০)। পরের বলে রায়ান বার্ল (০) ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে রিশাদকে ক্যাচ দেন। লুক জঙউইকে (২) তুলে নেন সাইফউদ্দিন।

৪১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন উইকেটরক্ষক ক্লিভ মাদান্দে আর ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। অষ্টম উইকেটে ৬৫ বলে ৭৫ রান যোগ করে জিম্বাবুয়েকে সম্মানজক পুঁজি এনে দিয়েছেন এই যুগল।

শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ৯ বল বাকি থাকতে মাদান্দেকে বোল্ড করে এই জুটি ভাঙেন তাসকিন। জিম্বাবুয়ের উইকেটরক্ষক ব্যাটার করেন ৩৯ বলে লড়াকু ৪৩। শেষ বলে রানআউট হওয়া মাসাকাদজা ৩৮ বলে করেন ৩৪।


নারী আম্পায়ার ইস্যুতে এবার প্রশ্ন তুললেন সুজন

খালেদ মাহমুদ সুজন। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

ডিপিএলের নারী আম্পায়ার নিয়ে বির্তক নিয়ে ইতোমধ্যেই নিজেদের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব আর মোহামেডান। কিন্তু এ ইস্যু নিয়ে বিতর্কের যেন অবসান ঘটছেই না। ক্রিকেট পাড়ায় এখনো চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সেই সমালোচনার পালে এবার হাওয়া দিলেন বিসিবির সাবেক পরিচালক ও আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। বড় ম্যাচে নারী আম্পায়ার জেসিকে দেওয়ায় তিনি প্রশ্নের তীর ছুড়ে দিয়েছেন।

সুজনের মতে বড় ম্যাচে অভিজ্ঞ আম্পায়ার নির্বাচন করা প্রয়োজন অবশ্যই। তিনি বলেন, ‘বড় খেলায় আমি সবসময় মনে করি আপনাকে এমন একজন আম্পায়ার দেওয়া উচিত যার অভিজ্ঞতা আছে, মাঠের প্রেশারটা কিন্তু অনেক বড়। যদিও আজকালকার ক্রিকেটে সেই বিগত আবাহনী-মোহামেডানের সেই প্রেশার নাই। তারপরও বড় দল খেলছে, জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা খেলছে। আপনাকে এমন একজন আম্পায়ার দিতে হবে যার প্রতি খেলোয়াড়দের রেসপেক্টটা থাকে।’

সে ম্যাচের নারী আম্পায়ার জেসিকে ভালো আম্পায়ার মানলেও এখনো প্রিমিয়ার লিগের বড় ম্যাচে আম্পায়ারিং করার অভিজ্ঞতা তার হয়নি বলে দাবি সুজনের, ‘যিনি আম্পায়ারিং করেছেন, সে খুব ভালো আম্পায়ার। বাংলাদেশের হয়ে ভবিষ্যতে খুব ভালো করবে। সে জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড়। সবমিলিয়ে তার একটা ব্যাকগ্রাউন্ড আছে ক্রিকেটে অবশ্যই। কিন্তু আম্পায়ার হিসেবে তার অভিজ্ঞতাটা আমার মনে হয় না প্রিমিয়ার লিগের এত বড় ম্যাচে করার মতো।’

বিসিবির সাবেক এ পরিচালক প্রশ্ন তোলেন দেশে অনেক অভিজ্ঞ আম্পায়ার থাকা সত্ত্বেও কেনো এতবড় ম্যাচে জেসিকে আম্পায়ার দেওয়া হলো। তিনি বলেন, ‘যদি আমার মত দিই, আমার মতে প্রিমিয়ার লিগের এত বড় একটা প্রেশার ম্যাচে আমার মনে হয় যে আরেকটু বিচক্ষণ হতে হবে, আম্পায়ার কারা করছে, দেখতে হবে। আমাদের দেশে এত অভিজ্ঞ আম্পায়ার থাকতে কেন জেসিকে প্রয়োজন হলো আম্পায়ারিং দেওয়ার ওই ম্যাচটাতে আমি জানি না।’

অবশ্য এমন বড় ম্যাচে সাথীরা জাকির জেসিকে আম্পায়ার দেওয়ার ব্যাখ্যা আগেই দিয়েছেন, বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু। তিনি বলেন, ‘সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে, তাই আমরা এসব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দিচ্ছি। আমরা আমাদের নারী আম্পায়ারদের তৈরি করতে চাই। যাতে বিশ্বকাপে আইসিসি এদেরও কিছু ম্যাচ দেয়। তারাও (আইসিসি) দেখছে, ওরা কোথায়, কী করছে। এখন আমি যদি এদের লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে আম্পায়ারিং না করাই বাংলাদেশে, তাহলে হবে না। মেয়ে বলেন, ছেলে বলেন নতুন প্রজন্মে পাইপলাইন তৈরি করার চেষ্টা করছি।’


banner close