ক্রিকেটের একজন সুদক্ষ নাবিক। তিনি বিশ্ব ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের ধ্রুবতারা। আবার অনেকের কাছে ধৈর্যশীল একজন অধিনায়ক। যার কাজই হচ্ছে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়া। দলের প্রয়োজনে কখনো ব্যাট হাতে আবার কখনো বুদ্ধিদীপ্ত ক্যাপ্টেন্সিতে নায়ক বনেছেন ক্রিকেট মাঠে। কঠিন পরিস্থিতিতেও ঠাণ্ডা মাথায় এগিয়েছেন; হেসেছেন বিজয়ের হাসি। বর্তমান সময়ে বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একজন।
এতক্ষণে আপনি নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন কার কথা বলছি। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন, কেন উইলিয়ামসন এ ট্রু জেন্টলম্যান অব ক্রিকেট। এই মানুষটির ধৈর্যশীলতা সবাইকে মুগ্ধ করে। কোটি ভক্তের হার্টবিট যখন কাঁপতে থাকে, তখন এই মানুষটি দলকে নিয়ে যান সেরা অবস্থানে।
নিউজিল্যান্ডের বে অব প্লেন্টি এলাকার তৌরাঙ্গায় ১৯৯০ সালের ৮ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন কেন স্টুয়ার্ট উইলিয়ামসন। বড় বোন কাইলি, আনা এবং সোফি পাশাপাশি যমজ ভাই লোগানের সঙ্গে কেন বড় হয়ে ওঠেন। তৌরাঙ্গায় বেড়ে ওঠা কেনের পরিবার প্রচণ্ড ক্রীড়াপ্রেমী। তার পরিবারের সদস্যদের ভলিবল, বাস্কেটবল এবং ক্রিকেট খেলা নিয়ে আগ্রহ ছিল। বোনেরা ভলিবলে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকলেও তাদের মা বাস্কেটবল খেলার প্রতিনিধিত্ব করতেন।
কেন স্টুয়ার্ট উইলিয়ামসনের ক্রিকেটে হাতেখড়ি বাবা ব্রেন্ট উইলিয়ামসনের হাত ধরেই। বয়সটা তখন মাত্র ৩ বছর। বাবার সঙ্গে ঘরে বসে টিভি দেখতে থাকা ছোট্ট ছেলেটির নজর পড়ল ঘরের কোণে থাকা ক্রিকেট ব্যাটের দিকে। সেই ৩ বছর বয়সেই ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে পড়ল ছেলেটি; বোলার স্বয়ং বাবা। ঘরের কোণের ছোট্ট জায়গায় ব্যাট হাতে দারুণ সব ডিফেন্স আর ক্লাসিক্যাল ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ হয়েছিল ঘরোয়া ক্রিকেট মাতানো বাবা। এখান থেকে কেনের ক্রিকেট অধ্যায়ের শুরু। তিনি ছেলেবেলা থেকেই শচীন টেন্ডুলকারকে অনুকরণ করতেন।
উইলিয়ামসন আলাদা ছিলেন আরেক জায়গায়। পরিণতিবোধ বলেন বা শান্ত থাকার ক্ষমতাই বলেন, এখানে শুধু ধোনির সঙ্গেই হয়তো তুলনা হতে পারে উইলিয়ামসনের। কেন তার নিজ শহর তৌরাঙ্গায় পিলানস পয়েন্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে সেই প্রতিষ্ঠানের ক্রিকেট প্রোগ্রামের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। স্কুল থেকে ক্রিকেট গ্রাজুয়েশন হওয়ার পর তিনি প্রাথমিকভাবে ক্রিকেটে পদার্পণ করেন।
কেনের বয়স যখন ১২ প্রায়, স্কুলের হয়ে প্রতি ম্যাচেই রানের বন্যা বইয়ে দিতেন। বাবা ব্রেন্ট ছিলেন স্কুল দলের কোচ। তিনি একটা ম্যাচে ঠিক করলেন ছেলে তো অনেক রান করছেই, এবার অন্যদের সুযোগ দেয়া যাক। কিন্তু সেই সুযোগ বাকিরা কাজে লাগাতে পারল না। কেন যখন আট নম্বরে নামলেন, দল বেশ বিপদেই। সেখান থেকে ১১ নম্বরের ব্যাটসম্যানকে নিয়ে দলকে জিতিয়েই ছাড়লেন মাঠ। কিন্তু নিজে আগে বের হলেন না, ১১ নম্বর সতীর্থকেই আগে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিলেন। সেই বয়সেই কেন উইলিয়ামসন বুঝতে পেরেছিলেন, ২২ গজে একা বড় হওয়ায় কোনো গৌরব নেই। যে সত্যিটা বুঝতে বুঝতে পুরো ক্যারিয়ার পার হয়ে যায় কত ক্রিকেটারের!
মাত্র ২০ বছর বয়সে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলে ডাক পান কেন উইলিয়ামসন। ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডের জার্সিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখেন তিনি। এরপর টেস্ট এবং টি-২০ ক্রিকেটে অভিষেক হয় ২০১১ সালে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০১৪ সালের বোলিংয়ে নিষিদ্ধের ঘটনা ছাড়া তেমন কিছু গ্রাস করতে পারেনি তাকে!
ওয়ানডে ক্রিকেটের শুরুটা বাজে হলেও টেস্ট ক্রিকেটের শুরুটা ছিল রাজকীয়ভাবেই। নিজের অভিষেক ম্যাচে খেলেন ২৯৯ বলে ১৩১ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। আর এতেই নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ৮ম ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরি করার গৌরব অর্জন করেন তিনি। তার কারণে ২০১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে নিউজিল্যান্ড। যদিও ম্যাচ নির্ধারিত ৫০ ওভারে টাই হয়, সুপার ওভারও টাই হয় এবং অদ্ভুত নিয়মে, বেশি বাউন্ডারি মারার জন্য ইংল্যান্ডকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়।
কেন উইলিয়ামসন নিজেকে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা হিসেবে প্রমাণ করেছেন। তার ব্যাটিং ক্ষমতা অপ্রতিদ্বন্দ্বী এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও তার খেলা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রয়েছে। তিনি একজন খুব ভালো ফিল্ডার এবং তার সামনে দীর্ঘ ক্যারিয়ার রয়েছে। তার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে খুব একটা আলোচনা করেন না। তার আগ্রহ এবং শখের মধ্যে রয়েছে; ভ্রমণ, সংগীত শোনা, গিটার বাজানো, সার্ফিং, বাস্কেটবল, পোষা কুকুর নিয়ে ঘোরা, গেম খেলা ইত্যাদি। ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার কেনের বর্তমান বয়স ৩৩ বছর ১৬ দিন। তিনি ক্রাইস্টচার্চ, ক্যান্টারবারি, নিউজিল্যান্ডের বাসিন্দা এবং খ্রিষ্টান ধর্মের অন্তর্গত। তার ডাকনাম স্টেডি দ্য শিপ।
কেন উইলিয়ামসন ইতোমধ্যেই নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের একজন সফল অধিনায়ক এবং ভদ্র মানুষ। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জয়ী অধিনায়কও তিনি। সব মিলিয়ে বলা যায় বর্তমান ক্রিকেটের ব্যতিক্রমী চরিত্র কেন উইলিয়ামসন একজন পারফেক্ট ক্রিকেটার।
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটতে চলেছে। ইন্টার মায়ামির সঙ্গেই চুক্তি নবায়ন করতে যাচ্ছেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি। ক্রীড়াবিষয়ক সংবাদমাধ্যম ইএসপিএনের খবর অনুযায়ী, আর্জেন্টাইন মহাতারকার নতুন চুক্তির বিষয়টি এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে ইন্টার মায়ামির জার্সি গায়ে চড়ান মেসি। আড়াই বছরের সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে এ বছরই। বেশ কিছুদিন ধরে নতুন চুক্তির আলোচনা চলছিল, তবে চূড়ান্ত ঘোষণা না আসায় তৈরি হয়েছিল অনিশ্চয়তা। এর মধ্যে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের ক্লাবগুলোর আগ্রহ নিয়েও সংবাদমাধ্যমে এসেছে নানা খবর।
তবে ইএসপিএন জানিয়েছে, মেসি ও মায়ামির মধ্যে আলোচনার প্রায় সব বিষয়েই সমঝোতা হয়ে গেছে। এখন শুধু কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি। দুপক্ষের সম্মতি হলেই তা পাঠানো হবে মেজর লিগ সকার কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের জন্য।
আগামী বছরের বিশ্বকাপ খেললে সেটিই হবে আর্জেন্টিনার হয়ে মেসির শেষ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। তবে মায়ামির সঙ্গে নতুন চুক্তি একাধিক বছরের হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অর্থাৎ আরও কয়েক মৌসুম মাঠে দেখা যাবে মেসির জাদু।
ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর দলটিকে বদলে দিয়েছেন মেসি। প্রথম মৌসুমেই জিতান লিগস কাপ, যা ক্লাবটির ইতিহাসে প্রথম বড় ট্রফি। গত মৌসুমে রেকর্ড পয়েন্ট সংগ্রহ করে জিতে সাপোর্টার্স শিল্ড, যদিও পরবর্তী সময়ে প্লে-অফের প্রথম রাউন্ডেই থেমে যায় যাত্রা। চলতি মৌসুমেও দুর্দান্ত ছন্দে আছেন মেসি। দলের হয়ে ২১ ম্যাচে ২০ গোলের পাশাপাশি ১১টি গোলে সহায়তা করেছেন তিনি।
মেজর লিগ সকারে মেসির রেকর্ডও চোখে পড়ার মতো- ৪৬ ম্যাচে করেছেন ৪১ গোল আর ২৭ অ্যাসিস্ট। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মায়ামির হয়ে ৬২ ম্যাচে করেছেন ৫৪ গোল। ইন্টার মায়ামির সহমালিক ও ধনকুবের হোর্হে মাস কিছুদিন আগে জানিয়েছিলেন, মেসিকে ধরে রাখার জন্য তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। তার ইচ্ছা, আর্জেন্টাইন জাদুকরের অবসরের মঞ্চ হবে ইন্টার মায়ামিই।
পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সালমান আলী আঘা বলেছেন, এশিয়া কাপের সুপার ফোরে পাকিস্তান যেকোনো প্রতিপক্ষের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম। গ্রুপপর্বের ম্যাচে আরব আমিরাতের বিপক্ষে ৪১ রানের জয়ে সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান। ব্যাট করতে নেমে ওপেনার ফখর জমানের অর্ধশতকের পাশাপাশি ৯ নম্বরে নেমে শাহীন শাহ আফ্রিদির ঝোড়ো ১৪ বলের ২৯ রানের ইনিংসে ১৪৬ রান করে পাকিস্তান। জবাবে ১০৫ রানে অলআউট হয় আরব আমিরাত। ম্যাচের পরে সালমান আঘা বলেন, ‘আমরা কাজটি শেষ করেছি, কিন্তু মিডল অর্ডার ব্যাটিংয়ে আমাদের উন্নতি করা জরুরি। আমরা এখনো আমাদের সেরা ব্যাটিং করতে পারিনি। মিডল অর্ডার ভালো করলে যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপরীতে ১৭০ রানের স্কোর করা সম্ভব।’ শাহীনের ব্যাটিং এবং সাইম আইয়ুবের গুরুত্বপূর্ণ বল হাতে অবদানকে বিশেষভাবে প্রশংসা করেন পাকিস্তান অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘শাহীনের ব্যাটিং অনেক উন্নত হয়েছে। তিনি ইতোমধ্যেই বল হাতে দারুণ খেলছেন। সাইম এমন একজন যিনি আমাদের বারবার খেলায় ফেরাতে সাহায্য করছেন এবং আশা করি তিনি শেষ পর্যন্ত এমনই অবদান রাখবেন।’
সুপার ফোরে চ্যালেঞ্জ নিয়ে সালমান আঘা যোগ করেন, ‘আমরা যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্য প্রস্তুত। গত চার মাস ধরে যেভাবে খেলছি, তা বজায় রাখলে আমরা যেকোনো দলের সঙ্গে ভালো করতে পারব।
এশিয়া কাপে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবির) বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার আতিক-উজ-জামান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দলের জার্সির নিম্নমান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। গত বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচে পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের জার্সি ঘামে ভিজে যেতে দেখা যায়।
আতিক অভিযোগ করেন, ‘পাকিস্তান খেলোয়াড়রা নিম্নমানের কিটে ঘামে ভিজছে, অন্য দলগুলো পরে আছে- মানসম্মত ড্রাই-ফিট জার্সি। এটাই হয় যখন টেন্ডার দেওয়া হয় বন্ধুদের হাতে, পেশাদারদের নয়। ঘামের থেকেও বেশি ঝরছে দুর্নীতি।’
এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ৪১ রানে হারিয়ে সুপার ফোরে উঠলেও ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে চিন্তায় আছেন অধিনায়ক সালমান আলি আঘা। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘আমরা কাজটা শেষ করেছি, কিন্তু মাঝের ওভারে আরও ভালো ব্যাটিং করতে হবে। বোলাররা দারুণ করেছে। তবে ব্যাট হাতে সেরা পারফরম্যান্স এখনো আসেনি। যদি ভালো ব্যাটিং করতাম, ১৭০-১৮০ রান তুলতে পারতাম।’ পাকিস্তান ওই ম্যাচে ৯ উইকেটে ১৪৬ রান সংগ্রহ করে।
শেষ দিকে শাহীন শাহ আফ্রিদির ১৪ বলে অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস দলকে মোটামুটি পুঁজি এনে দেয়। তবে টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা আবারও সামনে এসেছে। অধিনায়ক আঘা জোর দিয়ে বলেন, দলের সবচেয়ে বড় কাজ এখন ৭ থেকে ১৫ ওভারের মধ্যে ব্যাটিং উন্নত করা। ‘আমরা যেকোনো চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত। শুধু চাই ভালো ক্রিকেট খেলতে, তাহলেই বড় দলের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সম্ভব।’ পাকিস্তান আগামী ২১ সেপ্টেম্বর সুপার ফোরে মুখোমুখি হবে ভারতের বিপক্ষে।
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আগামী নভেম্বরে বাংলাদেশ সফরে আসবে আয়ারল্যান্ড। সব ঠিক থাকলে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি হবে মুশফিকুর রহিমের শততম টেস্ট। বাংলাদেশের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে এই মাইলফলক গড়বেন তিনি।
ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের আসন্ন দুই টেস্টের সিরিজ শুরু হবে মিরপুর শেরই বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। আগামী ১১ নভেম্বর প্রথম টেস্টের পর ১৯ নভেম্বর দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট হবে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে।
এর আগে আইরিশরা দ্বিতীয় টেস্টের বদলে ওয়ানডে সিরিজ খেলতে চেয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে দুটি টেস্টই হতে যাচ্ছে। এরপর হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
সাদা পোশাকে আগে থেকেই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলুড়ে ক্রিকেটার মুশফিক। এখন পর্যন্ত ৯৮টি টেস্ট খেলেছেন তিনি। ফলে টাইগার ক্রিকেটারদের মধ্যে একমাত্র শততম টেস্ট ম্যাচের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন মুশফিক।
৯৮ ম্যাচে ৩৮.১২ গড়ে ৬৩২৮ রান করেছেন মুশফিক। ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তার অপরাজিত করা ২১৯ রান টেস্টে বাংলাদেশের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস। লাল বলের ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ১২টি সেঞ্চুরি ও ২৭টি হাফসেঞ্চুরি করেছেন মুশফিক। রয়েছে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরিও।
টেস্ট শেষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড। ২৭ ও ২৯ নভেম্বর প্রথম দুই টি-টোয়েন্টির পর তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি হবে ২ ডিসেম্বর ঢাকায়। ওই সিরিজ শেষে বাংলাদেশে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যেখানে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলবে দুই দল। আগামী ১৮ অক্টোবর শুরু হয়ে যা চলবে ১ নভেম্বর পর্যন্ত।
আইসিসির ফিউচার ট্যুরস প্রোগ্রাম (এফটিপি) অনুসারে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে কোনো খেলা নেই বাংলাদেশের। ওই সময়ে হতে পারে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। এরপর ফ্রেব্রয়ারিতে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মাটিতে বসবে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর।
ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মন্তব্যের অভিযোগ এনেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসির) কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগও করেছে তারা। পাকিস্তানের সামা টিভির খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আইসিসির বৈঠকে সূর্যকুমারের শাস্তি এবং ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটকে এশিয়া কাপের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তোলে পিসিবি। তবে পাকিস্তান দলের ম্যানেজার ও অধিনায়কের কাছে পাইক্রফট দুঃখ প্রকাশ করায় প্রথম দাবিটি প্রত্যাহার করে তারা।
সূর্যকুমার যাদবের মন্তব্যে প্রসঙ্গে পিসিবি বলছে, সূর্যকুমার যাদবের বক্তব্য কূটনৈতিক সীমা লঙ্ঘন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে সূর্য বলেছিলেন, আমি মনে করি, জীবনের কিছু বিষয় খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতার চেয়ে বড়। আমাদের সরকার ও বিসিসিআই, আমরা সবাই একসঙ্গে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমরা এখানে ওদের বিপক্ষে শুধু খেলতে এসেছি এবং উচিত জবাব দিয়েছি।
তিনি আরও বলেছিলেন, আমরা পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় সব ভুক্তভোগীর পাশে আছি। তাদের পরিবারের সঙ্গে আমাদের সংহতি আছে। এই জয় আমরা উৎসর্গ করছি আমাদের সাহসী সেনাদের, যারা অপারেশন সিঁদুরে অংশ নিয়েছিলেন। তারা সব সময় আমাদের অনুপ্রেরণা জোগান।
এর আগে, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে টসের সময় এবং ম্যাচ শেষে পাকিস্তান দলের কারও সঙ্গে হাত মেলাননি সূর্যকুমার। এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। পরে পিসিবি জানায়, ম্যাচ রেফারির নির্দেশেই দুই অধিনায়ক হাত মেলাননি এবং পরিস্থিতি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিলে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয়। ভারত সরকারের দাবি, পাকিস্তানের মদদপুষ্ট একটি গোষ্ঠী এ হামলার সঙ্গে জড়িত। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায় এবং পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তান। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় পরে দুদেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
লামিনে ইয়ামালকে নিয়ে শঙ্কাটাই সত্যি হয়েছে। সময়মতো ফিট হয়ে উঠতে না পারায় বার্সেলোনার পরবর্তী ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছেন তিনি। তরুণ এই ফরোয়ার্ডকে ছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিযান শুরু করতে হবে স্প্যানিশ ক্লাবটির।
ইংলিশ ক্লাব নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বৃহস্পতিবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নতুন মৌসুম শুরু করবে বার্সেলোনা। ম্যাচটির জন্য আগের দিন ২২ জনের দল দিয়েছে ক্লাবটি। যেখানে নেই ১৮ বছর বয়সী উইঙ্গার ইয়ামাল।
চলতি মাসের শুরুতে চোট শঙ্কা নিয়েই জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দেন ইয়ামাল। তখন ব্যথানাশক ওষুধ নিয়ে তাকে খেলতে হয় স্পেনের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে। এতে তার অবস্থা আরও খারাপ হয়।
জাতীয় দল থেকে ফেরার পর ইয়ামালের কুঁচকির চোট ধরা পড়ে। পরে লা লিগায় ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে ৬-০ গোলে জয়ের ম্যাচে খেলতে পারেননি তিনি। চোটের ভয় থাকার পরও স্পেনের হয়ে ইয়ামালকে বেশি সময় খেলানো নিয়ে কিছুদিন আগে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিক।
হ্যামস্ট্রিং চোটের সঙ্গে লড়াই করছেন ডিফেন্ডার আলেহান্দ্রো বাল্দে। আর মিডফিল্ডার গাভি ভুগছেন হাঁটুর চোটে। দুইজনের কাউকেই আসছে ম্যাচে পাচ্ছে না বার্সেলোনা।
তবে একটি স্বস্তির সংবাদ আছে বার্সেলোনার জন্য। পেশির চোট কাটিয়ে উঠেছেন ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং। ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে লা লিগার ম্যাচে না খেলা ডাচ অভিজ্ঞ মিডফিল্ডারকে নিউক্যাসল ম্যাচে পাচ্ছে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা।
ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতার গত আসরে সেমি-ফাইনাল খেলে বার্সেলোনা। ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ফাইনালে ওঠার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে হেরে যায় তারা। পরে ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টারকে হারিয়েই প্রথমবারের মতো শিরোপার স্বাদ পায় পিএসজি।
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রাথমিক পর্বে নিউক্যাসল ছাড়া পিএসজি (হোম), চেলসি (অ্যাওয়ে), আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট (হোম), ক্লাব ব্রুজ (অ্যাওয়ে), অলিম্পিয়াকোস (হোম), স্লাভিয়া প্রাহা (অ্যাওয়ে) ও কোপেনহেগেনের (হোম) বিপক্ষে লড়বে বার্সেলোনা।
আগের দুই ম্যাচে গোল পাননি লিওনেল মেসি। সেই দুই ম্যাচে জয় পায়নি ইন্টার মায়ামিও। অবশেষে আজ বুধবার সকালে মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) সিয়াটল সাউন্ডার্সের বিপক্ষে গোল করার পাশাপাশি গোলে সহায়তাও করলেন মেসি।
আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির গোলে ফেরার ম্যাচে জয় পেয়েছে মায়ামিও। সাউন্ডার্সকে মায়ামি হারিয়েছে ৩–১ গোলে। এই জয়ে সাউন্ডার্সের বিপক্ষে প্রতিশোধও নেওয়া হলো মায়ামির। গত ১ সেপ্টেম্বর লিগস কাপ ফাইনালে এই সাউন্ডার্সের কাছেই ৩–০ গোলে হেরেছিল হাভিয়ের মাচেরানোর দল।
ফ্লোরিডার চেজ স্টেডিয়ামে ৩৮ বছর বয়সী মেসি ১২ মিনিটে গোল বানিয়ে দেন স্প্যানিশ সতীর্থ জর্দি আলবাকে। এরপর ৪১ মিনিটে সেই আলবার পাস থেকে নিজেও গোল করে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। এটি মেসির ক্যারিয়ারের ৮৮০তম গোল।
চলতি বছর এ নিয়ে ৪০ গোলে অবদান রাখলেন মেসি। টানা ১৯তম বছর অন্তত ৪০ গোলে অবদান রাখলেন। বিরতির পর ৫২ মিনিটে আমেরিকান ইয়ান ফ্রে মায়ামির হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন। ৬৯ মিনিটে মেক্সিকান মিডফিল্ডার ওবেদ ভার্গাস সাউন্ডার্সের হয়ে একটি গোল শোধ করেন।
সিয়াটলে লিগস কাপের ফাইনালে মায়ামিকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল সাউন্ডার্স। সেদিন ম্যাচ শেষে দুই দলের মধ্যে হাতাহাতিও হয়। একপর্যায়ে ইন্টার মায়ামির উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড লুইস সুয়ারেজ সাউন্ডার্সের এক কর্মকর্তাকে থুতু মারেন।
এ ঘটনার দায়ে সুয়ারেজকে লিগস কাপে ছয় ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয় এবং এমএলএসেও তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ হন। সেই শাস্তির জন্য আজকের ম্যাচটি খেলতে পারেননি সুয়ারেজ।
এর আগে গত শনিবার শার্লটের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হেরে ইস্টার্ন কনফারেন্সে অষ্টম স্থানে নেমে গিয়েছিল মায়ামি। তবে সিয়াটলের বিপক্ষে জয়ের পর ২৭ ম্যাচে ১৪ জয়, ৭ ড্র ও ৬ হারে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে দলটি।
শীর্ষে থাকা ফিলাডেলফিয়ার চেয়ে তারা এখনো ৮ পয়েন্ট পিছিয়ে, তবে তিন ম্যাচ কম খেলেছে। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর ভোরের এমএলএসে মায়ামি পরের ম্যাচ খেলবে ডিসি ইউনাইটেডের বিপক্ষে।
এশিয়া কাপের স্বপ্ন জিইয়ে রাখতে বিকল্প ছিল না জয়ের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভুল করেনি বাংলাদেশ দল। টাইগাররা প্রত্যয় দেখিয়েছেন, সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রেখেছেন আফগানদের হারিয়ে। তাতে আরও একটি লাভ হয়েছে। এখানেও রশিদ খানদের দল লিটন ব্রিগেডের কাছে হেরেছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আইসিসি র্যাংকিং হালনাগাদের পর সুখবরটি পেয়েছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে টাইগারদের রেটিং এখন ২২২। সমান রেটিং নিয়ে ১০ নম্বরে নেমে গেছে আফগানিস্তান। পয়েন্টের দিক থেকে আফগানদের চেয়ে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। টাইগারদের পয়েন্ট যেখানে ১২ হাজার ২২৩, আফগানদের পয়েন্ট সেখানে ৮ হাজার ২১৩। আফগানদের হারানোর আগেও ১০ নম্বরে ছিল বাংলাদেশ। এবার সেখানেই আফগানদের ঠেলে নয়ে উঠেছে লিটনরা।
বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের উঠানামা ছাড়া টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে আর কোনো পরিবর্তন হয়নি। সর্বোচ্চ ২৭১ রেটিং নিয়ে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ভারত। অস্ট্রেলিয়া ২ নম্বরে। তিনে থাকা ইংল্যান্ডের রেটিং ২৫৭। চারে নিউজিল্যান্ড। ৫ নম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৬-এ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শ্রীলঙ্কা ২৩২ রেটিং নিয়ে আছে সাতে। সমান রেটিং নিয়ে ৮ নম্বরে পাকিস্তান।
দলীয় উন্নতির মতো ব্যক্তিগত সাফল্যও এসেছে। বুধবার আইসিসির হালনাগাদে ব্যাটারদের র্যাঙ্কিংয়ে ৪ ধাপ এগিয়ে ৩৫তম স্থানে উঠে এসেছেন তানজিদ হাসান তামিম। বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে তিনিই এখন সবার উপরে।
তানজিদের মতো ব্যাটিং র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হয়েছে জাকের আলী অনিকেরও। ৩ ধাপ এগিয়েছেন তিনি। ব্যাটারদের মধ্যে অবনতি হয়েছে অধিনায়ক লিটন দাস, পারভেজ হোসেন ইমনের। বোলারদের মধ্যে উন্নতি হয়েছে তানজিম হাসান সাকিবের। ৫ ধাপ এগিয়ে ৪২ নম্বরে উঠে এসেছেন তানজিম।
কিংসটাউনে গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেই ম্যাচটা নাসুম আহমেদের নিশ্চয়ই মনে আছে? সেবার তিনি দলে ছিলেন না। তবে সেমিফাইনালে ওঠার সমীকরণসমৃদ্ধ ম্যাচটা নাসুমের নিশ্চয়ই দেখার কথা। বাংলাদেশ সেই ম্যাচ হেরেছিল ৮ রানে, বাদ পড়েছিল সেমিফাইনালে ওঠার দৌড় থেকে।
আবুধাবিতে সেমিফাইনাল নয়, সামনে ছিল সুপার ফোরের সমীকরণ। সেখানে ওঠার আশা টিকিয়ে রাখতে জিততেই হবে—এমন ম্যাচে প্রতিপক্ষ-ও সেই আফগানিস্তান। নাসুম এবার দলে, শুধু দলে কেন নতুন বলও হাতে। বাকিটা আপনি জানেন। বাংলাদেশ এবার জিতেছে, সেই ৮ রানেই!
এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সুপার ফোরে ওঠার আশা এখনো টিকে আছে। কালকের ম্যাচের স্কোরকার্ড দেখে বলতে পারেন, সেটা আসলে ম্যাচসেরা নাসুমের কল্যাণে।
কীভাবে—তা একটু ব্যাখ্যা করা যাক। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১০ ওভারে ১ উইকেটে ৮৭ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। এখান থেকে ২০০ ছুঁই ছুঁই স্কোরের স্বপ্ন দেখা অস্বাভাবিক কিছু ছিল না। কিন্তু পরের ১০ ওভারে বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারিয়ে তুলেছে মাত্র ৬৭ রান—যেখানে শেষ ১২টি বলের মধ্যে ৬টি ‘ডট’। এই দুই ওভারে রান উঠেছে ১৫, উইকেট ১টি।
বিষয়টি দিনের আলোর মতো পরিষ্কার যে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের শেষটা মোটেও ভালো হয়নি। শুকনো মুখে মাঠ ছেড়েছেন দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান জাকের আলী ও নুরুল হাসান। এমন বাঁচা-মরার ম্যাচে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শেষটা ভালো করতে না পারলে স্বাভাবিকভাবেই মানসিক চাপ নিয়ে নামতে হয় ফিল্ডিংয়ে। প্রতিপক্ষের জন্য সেটা আবার উল্টো পরিস্থিতি। শেষ ১০ ওভারে বোলিং করে ম্যাচে মানসিকভাবে তখনই এগিয়ে গিয়েছিল আফগানিস্তান। স্কোরবোর্ডে ১৫৫ রানের লক্ষ্য। টেস্ট খেলুড়ে কোনো দলের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানের এই রান টপকে জয়ের নজির না থাকলেও শেষটা ভালো করায় রশিদ খানদের কাছে কাজটা মোটেও কঠিন লাগার কথা না!
দলের প্রয়োজনের মুহূর্তে দারুণ বোলিং করেন নাসুম। উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি কিপটে বোলিংও করেন
দলের প্রয়োজনের মুহূর্তে দারুণ বোলিং করেন নাসুম। উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি কিপটে বোলিংও করেনএএফপি
যেটা আবার বাংলাদেশের জন্য ছিল উল্টো পরিস্থিতি। লড়াইয়ের পুঁজি যেহেতু সাদামাটা একহারা গড়নের, তাই পাওয়ার প্লেতে একটু বেশি রান দিয়ে ফেললেই শেষে গিয়ে হালে পানি না পাওয়ার ঝুঁকিটা ছিল। এমন পরিস্থিতিতে পাশার দান উল্টে দেন নাসুম।
টি-টোয়েন্টিতে নতুন বলে এমনিতেই বাঁক কম পান স্পিনাররা। সে জন্য নতুন বলে ডেলিভারিগুলো স্টাম্প বরাবর রাখতে চান। তাতে এলবিডব্লিউর সুযোগটাও থাকে। নাসুম আফগানিস্তানের ইনিংসে প্রথম বল থেকে তাঁর ৪ ওভারের কোটার শেষ বলটি পর্যন্ত ঠিক এই নিশানাতেই বোলিং করেছেন। ফল? আফগানিস্তানের ইনিংসে প্রথম বলেই উইকেট পেয়েছেন এলবিডব্লুতে। বোলিং অ্যাকশন এবং নতুন বলের ‘শাইন’-এর কারণে ডেলিভারিটি স্কিড করেছিল। সেদিকুল্লাহ আতাল আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে ব্যাটে পাননি, কারণ ফাঁদটা ছিল ভালো লেংথে বল পড়ার—যেখান থেকে ব্যাকফুটে খেলা খুব বিপজ্জনক। নাসুম ঠিক একই লেংথে বাকি পাঁচটি বল করে পেলেন উইকেট মেডেন ওভার।
বোঝাই যাচ্ছিল, পুঁজি যেহেতু খুব বড় না, তাই দ্রুত উইকেট নিয়ে আফগানিস্তানকে চাপে ফেলতে নাসুমের হাতে নতুন বল তুলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন। প্রথম দফায় নাসুম সেটা পারলেন, তবে দফার তখনো বাকি ছিল।
তাসকিন পরের ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে ভালো সহযোগিতা করার পর নাসুম তাঁর দ্বিতীয় ওভারে দেন মাত্র ৫ রান। এরপর নিজের তৃতীয় ওভারে ২ রানে নেন আরেকটি উইকেট—এবার তাঁর শিকার ইব্রাহিম জাদরান। সেই এলবিডব্লুই এবং ক্রিজে অ্যাঙ্গেলের ব্যবহারে একটু জোরের ওপর করা ডেলিভারিতে—যেটা নতুন বলে বাঁহাতি স্পিনারদের উইকেট নেওয়ার ডেলিভারি। আফগানিস্তানের স্কোর সে সময় ৫ ওভারে ২ উইকেটে ২০। নাসুমের বোলিং বিশ্লেষণ ৩-১-৭-২! ধারাভাষ্যকার তখন বলছিলেন, বাংলাদেশ শুরুটা ভালো করে নিজেদের স্কোরবোর্ডে ‘আরও ১০-১৫ রান যোগ করে নিল।’
বলা বাহুল্য, ধারাভাষ্যকারের সেই কল্পিত ১০-১৫ রান আসলে আফগানিস্তানের ওপর আস্কিং রেট বেড়ে যাওয়ায় চাপ—যেটা আসলে নাসুমেরই দেওয়া ‘উপহার’!
দ্বিপাক্ষিক সিরিজে অংশ নিতে আগামী মাসে বাংলাদেশ সফরে আসছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল। সফরে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ খেলবে ক্যারিবীয়রা। খেলা হবে মিরপুর ও চট্টগ্রামে।
মঙ্গলবার আসন্ন বাংলাদেশ-উইন্ডিজ সিরিজের সূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
আগামী ১৮ অক্টোবর প্রথম ওয়ানডে দিয়ে শুরু হবে এই সিরিজ। এরপর ২০ ও ২৩ অক্টোবর বাকি দুটি ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। ৫০ ওভারের এই লড়াইয়ের পুরোটাই হবে মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
পরবর্তীতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে দুই দল যাবে চট্টগ্রামে। বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে (সাবেক জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম) তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ যথাক্রমে ২৭ ও ৩০ অক্টোবর এবং ১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
এই সিরিজটি উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটাই হতে পারে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে দুই দলের জন্য শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির মঞ্চ। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় যৌথভাবে সংক্ষিপ্ত সংস্করণের মেগা টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে লড়বে ভারত।
বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের সূচি
ওয়ানডে সিরিজ শেরইবাংলা স্টেডিয়াম, মিরপুর
প্রথম ওয়ানডে ১৮ অক্টোবর
দ্বিতীয় ওয়ানডে ২০ অক্টোবর
তৃতীয় ওয়ানডে ২৩ অক্টোবর
টি-টোয়েন্টি সিরিজ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম
প্রথম টি-টোয়েন্টি ২৭ অক্টোবর
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ৩০ অক্টোবর
তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ১ নভেম্বর
এশিয়া কাপের চলতি আসরে টিকে থাকতে হলে আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের কোনো বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে। বাংলাদেশের জন্য আজ বাঁচা-মরার লড়াই। হারলে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়, জিতলে সুপার ফোরে খেলার সুযোগ।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ১২ বার মুখোমুখি হয়েছে। এর মাঝে আফগানিস্তান জয় পেয়েছে ৭ বার, বাংলাদেশ ৫ বার।
২০১৪ সালে প্রথম দেখায় বাংলাদেশ জিতলেও মুখোমুখি শেষ দেখায় গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানদের কাছে হেরেছিল টাইগাররা। তবে কিংসটাউনে সেই ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল। আফগানিস্তান জেতে মাত্র ৮ রানে।
এদিকে টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপে একবারই আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। ২০২২ সালে শারজায় সে ম্যাচে ৭ উইকেটে টাইগারদের হারিয়েছিল আফগানরা।
সবশেষ চার লড়াইয়ে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সমানে সমান, দুটি করে জয় দুই দলের। এই একটা বিষয় আশা জাগালেও দুশ্চিন্তা আছে ভেন্যু নিয়ে।
কেননা আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে পাঁচটা টি-টোয়েন্টি জিতেছে বাংলাদেশ, সবকটাই ঘরের মাঠে। অন্যদিকে আফগানিস্তানের ৭ জয়ের ২টি অ্যাওয়ে ভেন্যু, ৫টি নিরপেক্ষ ভেন্যুতে।
পেশাদার ফুটবল লিগের নাম বদলে যাচ্ছে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ থেকে বদলে নতুন নাম হবে ‘বাংলাদেশ ফুটবল লিগ’ (বিএফএল)।
সম্প্রতি পেশাদার লিগ কমিটির এক সভায় এ কথা জানান বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি ও লিগ কমিটির চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান।
মিডিয়াকে তিনি বলেন, ‘বিপিএলের বদলে পেশাদার লিগের নাম বিএফএল করার একটি একটি প্রস্তাব করা হয়েছে সভায়। আপাতত সবই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।’
এছাড়া আসন্ন নতুন ফুটবল মৌসুমে পেশাদার লিগ ও ফেডারেশনের নতুন পৃষ্ঠপোষকের নামও উন্মুক্ত করা হবে।
আইসিসির মাসসেরা হতে কী লাগে? প্রশ্নটা মোহাম্মদ সিরাজকে জিজ্ঞেস করলে বলতে পারেন, কী আর লাগে; এক ম্যাচ খেলেই তো মাসসেরা হওয়া যায়।
সেই এক ম্যাচও আবার একটু ব্যাখ্যার দাবি রাখে। ম্যাচটা শুরু হয়েছিল জুলাইয়ে, শেষ হয়েছে আগস্টে। অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টটি ওভালে শুরু হয়েছিল গত ৩১ জুলাই। পাঁচ দিনের লড়াইয়ের পর শেষ হয় ৪ আগস্ট। ম্যাচসেরা সিরাজ ইংল্যান্ডের দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৯০ রানে ৯ উইকেট নেন (২১.১১ গড়)। ৬ রানের রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজে ২-২ এ সমতায় ফিরেছিল ভারত।