বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫
১৫ আশ্বিন ১৪৩২
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত বলছি

এশিয়ার বৃহত্তর রঙ্গমঞ্চে ভারত-পাকিস্তান মহারথ

প্রকাশিত
প্রকাশিত : ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০৯:০০

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর থেকেই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে। এর প্রধান কারণ দুই দেশের রাজনৈতিক ও সীমান্তে সামরিক উত্তেজনা। আর এ উত্তেজনা গিয়ে পড়েছে দুই দেশের ক্রীড়াঙ্গনেও। যেকোনো ধরনের খেলাই হোক না কেন। সেটি যদি হয় ভারত বনাম পাকিস্তান, তাহলে তো কথাই নেই। খেলোয়াড় থেকে দর্শক অথবা কলাকুশলী থেকে কোচ কেউই বাদ যান না। উত্তেজনা তুঙ্গে থাকবে। বাড়তি অ্য়াড্রিনালিন ক্ষয় হবেই প্লেয়ারদের মধ্যে। এ যুদ্ধের জন্য সারা বিশ্বের ক্রিকেটভক্তরাও থাকেন উদ্গ্রীব।

যা-ই হোক, দীর্ঘদিন বাদে আরও একবার সেই রোমাঞ্চের সামনে ক্রিকেটবিশ্ব। আজ এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে উপমহাদেশের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান-ভারত। শ্রীলঙ্কার পাহাড়ি অঞ্চলের বেশ দর্শনীয় ৩৫ হাজার ধারণ-ক্ষমতাসম্পন্ন পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ৩টায় শুরু হবে এ মহারণ। রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে শেষ প্রায় ১০ বছর হতে চলল দ্বিপক্ষীয় কোনো সিরিজে মাঠে নেই ভারত-পাকিস্তান। উত্তেজনায় ঠাসা এই দুই দলের ম্যাচ দেখতে ভক্ত-সমর্থকদের একমাত্র ভরসা আইসিসি বা এসসিসির কোনো ইভেন্ট। আর তাই হয়তো ২২ গজের যুদ্ধ সরাসরি দেখতে ম্যাচটির টিকিট নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে গিয়েছিল। অনলাইনে ছাড়া মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যায়। কেননা মাঠে থেকে শত্রুপ্রতিম দুই দেশের লড়াই না দেখলে চলে! দর্শকদের চাহিদাতেই ম্যাচটির টিকিট যেন সোনার হরিণ!

মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে শুরু হয়ে গেছে যুদ্ধও। দুই দলের খেলোয়াড়দের কথার যুদ্ধ। গোলা-বারুদ আর ট্যাংক-কামান নিয়ে যুদ্ধের দামামা না বাজলেও এশিয়া কাপের এই বিগ ম্যাচ নিয়ে হাওয়া বইতে শুরু করেছে। কে এগিয়ে, কে-ই বা পিছিয়ে? দুই দলের শক্তি-দুর্বলতা কেমন, তা নিয়ে সাবেক থেকে শুরু করে বর্তমান ক্রিকেটাররাও বিশ্লেষণ শুরু করেছেন।

পাকিস্তানের সাবেক ব্যাটার সালমান বাট ও ভারতের স্পিনার রবিচন্দ্র অশ্বিন তাদের ইউটিউব চ্যানেলে এই ম্যাচ নিয়ে কথা বলেছেন। স্টার স্পোর্টসকে নিজের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়াও। তবে সাম্প্রতিক ফর্ম আর অতীত রেকর্ড দুটোই আমলে নিলে এবার কোনো দলকেই এগিয়ে রাখার উপায় নেই। বরং ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগে যেটা নিয়ে আলোচনা থাকে, বরাবরের মতো সেই ‘চাপ’ নিয়েই আলোচনাটা বেশি।

যেহেতু মর্যাদার লড়াই। চাপ থাকবেই। এ বিষয়টাকে যেই দল সামলে নিতে পারবে, তারাই ভালো করবে। কেননা লড়াইটা হবে সাপে-নেউলে। এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের এ লড়াইয়ে সাতবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত সব সময়ই অন্যতম ফেভারিট হয়ে এই আসরে অংশ নিয়েছে। এবারও সেটির ব্যতিক্রম হচ্ছে না। চিরাচরিতভাবেই ভারতের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা দলের লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলির মতো সুপারস্টারদের পাশাপাশি তরুণ সেনসেশন সুরিয়াকুমার ইয়াদাভ, শ্রেয়াস আইয়ার, শুভমান গিলরা প্রত্যেকেই ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পরীক্ষিত পারফর্মার। অলরাউন্ডার ডিপার্টমেন্টেও অন্য যেকোনো দলের চেয়ে বেশি খেলোয়াড় রয়েছে ভারতের। হার্দিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, শার্দুল ঠাকুররা ব্যাট ও বল দুই বিভাগেই যথেষ্ট শক্তিশালী। ব্যাটিংয়ে ভূমিকা রাখতে পারেন, এমন বোলাররা রয়েছেন দলে।

অন্যদিকে পাকিস্তানের এই টুর্নামেন্টের ফলাফল নিয়ে প্রত্যাশাটা স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা বেশি থাকবে। দুবারের চ্যাম্পিয়নদের সবচেয়ে বড় শক্তি নিঃসন্দেহে তাদের পেস অ্যাটাক। শাহীন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ আর নাসিম শাহ ত্রয়ীকে বর্তানে শুধু এশিয়ার নয়, বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পেস বোলিং আক্রমণ বললেও অত্যুক্তি করা হবে না। ব্যাটিংয়েও পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় রয়েছেন, যারা নিয়মিত পারফর্ম করে যাচ্ছেন। ইমাম উল হক, ফখর জামান, বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান বা ইফতিখার আহমেদ প্রত্যেকেই দলের প্রয়োজনে বড় ও কার্যকর ইনিংস খেলার প্রমাণ দিয়েছেন। অলরাউন্ডার শাদাব খান ও মোহাম্মদ নাওয়াজের সাম্প্রতিক ফর্মও বেশ ভালো। সাম্প্রতিক সময়ে কমসংখ্যক ওয়ানডে খেলা পাকিস্তানের একমাত্র দুর্বলতা মনে করা হচ্ছে। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকে চার বছরে তারা ওয়ানডে খেলেছে মাত্র ৩১টি, যার মধ্যে ১২টিই ছিল জিম্বাবুয়ে, নেদারল্যান্ডস, আফগানিস্তানের মতো তুলনামূলক দুর্বল দলের সঙ্গে।

মাঠের যুদ্ধ হবে পাকিস্তানের শাহিন শাহ আফ্রিদি বনাম ভারতের রোহিত শর্মা। ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা ও বাঁহাতি পাকিস্তানি পেসার শাহিন শাহর দ্বৈরথ স্বর্গীয় কিছু নয়। অতিসম্প্রতি এই একজন বাঁহাতি পেসার ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছিল ভারতের টপ অর্ডার। অন্যদিকে পেসারদের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ঝড় তোলা শর্মা। যিনি একাই বদলে দিতে পারেন সব সমীকরণ। পিছিয়ে নেই হারিস রউফ বনাম বিরাট কোহলির যুদ্ধও। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও সম্প্রতি আগ্রাসন চালিয়েছেন রউফ। তবে কোহলির চ্যালেঞ্জ এখনো তার সামনে জ্বলজ্বল করছে। শুধু তা-ই নয়, বিরাট এখন ফিরেছেন নিজের সবচেয়ে সফল ফরম্যাটে। লড়াই হবে বাবর আজম বনাম জসপ্রিত বুমরাহ কিংবা কুলদ্বীপ যাদব বনাম ইফতেখার আহমেদের মধ্যে। ভুলে যাবেন না, বাবরের ওয়ানডেতে দুই দিন আগের করা রেকর্ড।

এখন প্রশ্ন হলো কোন দল জিতবে এ যুদ্ধে। ক্রিকেটে আগে থেকে কোনো প্রেডিকশন চলে না। ম্যাচের দিন যে দল সব বিভাগ ভাল করবে তারাই জিতবে। ভারত পাকিস্তানের থেকে অনেক বেশি ধারাবাহিক। তুলনায় পাকিস্তান কিছুটা আনপ্রেডিক্টেবল। কোন দিন কী করবে, সেটা বোঝা মুশকিল। নিজেদের দিনে পাকিস্তানকে আটকানো মুশকিল। আবার যেদিন তারা খেলতে পারে না, সেদিন সব বিভাগ খারাপ করে বসে। সেদিক দিয়ে বিচার করলে বলব, ভারত কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকবে। সার্বিকভাবে আমার কাছে মনে ভারত জিতবে এই ম্যাচ।

তবে যে ম্যাচ ঘিরে ক্রিকেটপ্রেমীদের এত আগ্রহ-এত রোমাঞ্চ, সেই ম্যাচ আদৌ হবে তো! দুই দিন ধরেই কোনো না কোনো সময় বৃষ্টি হচ্ছে ক্যান্ডিতে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের দিন, অর্থাৎ শনিবার ক্যান্ডিতে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর। যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং বিবিসির তথ্যানুযায়ী এদিন ক্যান্ডিতে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ। তবে এমন খেলা মাঠে গড়াবে, এমন প্রত্যাশা আমরা করতেই পারি।

একটা সময় ছিল, যখন দুই দল মুখোমুখি হলেই মাঠে একটা ‘যুদ্ধ-যুদ্ধ’ আবহ তৈরি হতো। সেটা হতো, সেই উত্তেজনা মিইয়ে যায়নি, এখনো বিদ্যমান। তবে দুই দেশের ক্রিকেটাররা ‘ভারত-পাকিস্তান ম্যাচকে আর দশটা ম্যাচের মতোই দেখতে শুরু করেছেন। আমরা যখন যুবক বয়সে খেলা দেখতে বসতাম, তখন শুধু আমাদের কাছে নয়, বিশ্ববাসীর কাছে ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত লড়াই বলেও আখ্যা দেয়া যায় নিঃসন্দেহে। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার লড়াই যদি হয়ে থাকে বনেদিয়ানা আর ঐতিহ্যের স্মারক, ভারত-পাকিস্তান মানেই যেন উত্তেজনার পারদ আর আগুনে লড়াই ছিল। যদিও সাম্প্রতিক দিনগুলোতে কোথায় যেন মিলিয়ে গিয়েছে পুরোনো দিনগুলোর সেই সময়টা। এখন আর আগের মতো জমে ওঠে না ‘পাকিস্তান-ভারত’ মহারণ। দেখা যায় না মানুষের মধ্যে সেই আবেগ।

আগে পাকিস্তান-ভারত খেলা শুরুর চার-পাঁচ দিন আগে থেকেই গোটা বিশ্ব তথা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে শুরু হতো বাকযুদ্ধে কে সেরা। কারা জিতবে এ লড়াই। কে কত রান করবে কিংবা উইকেট পাবে। দিন-রাত গ্রামের চায়ের দোকান অথবা নদীর পাড় কিংবা পুকুরের টংয়ে বসে শুধু একই বাতচিত। কোথাও কোথাও তর্কের একপর্যায়ে শুরু হয়ে যেত হাতাহাতি কিংবা মারপিট। এসব এখন শুধুই গল্প। যে গল্পের কারিগর ছিলেন রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেসখ্যাত শোয়েব আকতার কিংবা ভারতের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুকাররা।

এখন তাই যুদ্ধের আবহে নয়, ভ্রাতৃত্বের আবহেই হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের লড়াই। এর অবশ্য যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে মনে হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের উত্থান প্রধান কারণ। কেননা এখন উত্তেজনার পারদ ছড়ায় বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ। সেটা যে ধরনের কিংবা যে পর্যায়ের খেলাই হোক না কেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক কারণেই ভারত-বাংলাদেশ বা পাকিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচগুলো সবচেয়ে বেশি উত্তেজনাপূর্ণ। বাংলাদেশ কয়েক বছর ধরে যে ধরনের ক্রিকেট খেলছে, তার কারণে এমনটা হয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থীতিশীল হওয়ায় এবং ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট দলকে বহনকারী বাসে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে পাকিস্তানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে, যা বিশ্ব ক্রিকেটে পাকিস্তানের জনপ্রিয়তাকে যেমন ক্ষুণ্ন করেছে। তেমনিভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সরে আসায় ও পাকিস্তানের ঘরোয়া খেলাগুলো মন্থর হওয়ায় সেই অর্থে ভালো খেলোয়াড় উঠে না আসায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলে পরিণত হয়েছে তারা। যার ফলে আন্তর্জাতিক খেলায় ভারতের সঙ্গে আগের মতো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করতে পারছে না দলটি। আর সে কারণে ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধ এখন ভ্রাতৃত্বের আবহে পরিণত হয়েছে। তবে ক্রিকেটে সৌন্দর্য ধরে রাখতে অব্যাহত থাকুক এবং জিইয়ে থাকুক ভারত-পাকিস্তান মহারণ।


টি-টোয়েন্টিতে সাকিবকে টপকে শীর্ষে মুস্তাফিজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

বাংলাদেশ ক্রিকেটের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে নতুন এক মাইলফলকে পৌঁছেছেন বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার রেকর্ড এখন তার দখলে।

এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচে অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকে আউট করার মধ্য দিয়ে নিজের ১৫০তম টি-টোয়েন্টি উইকেট শিকার করেন মুস্তাফিজ। এদিনই তিনি পেছনে ফেলেন দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষে থাকা সাকিব আল হাসানকে, তার উইকেট সংখ্যা ছিল ১৪৯।

এর আগে সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে ৩ উইকেট নিয়ে সাকিবকে স্পর্শ করেছিলেন মুস্তাফিজ। ভারতের বিপক্ষে উইকেট নিয়েই গড়ে ফেললেন নতুন রেকর্ড।

মুস্তাফিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের পরিসংখ্যানও চমকপ্রদ। ১১৮ ম্যাচে ১৫০ উইকেট, গড় ২০.৬৫ এবং সেরা বোলিং ফিগার ১০ রানে ৬ উইকেট। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে এই ১০ রানের ৬ উইকেটের রেকর্ডটি এখনো টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে পেস বোলারদের সেরা বোলিং ফিগার হিসেবে রয়ে গেছে।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে চতুর্থ বোলার হিসেবে ১৫০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁলেন মুস্তাফিজ। তার আগে এই মাইলফলক অর্জন করেছেন নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদি, ইশ সোধি এবং আফগানিস্তানের রশিদ খান।

১৭৩ উইকেটে নিয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেটের রেকর্ডটি এখনো আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খানের। সামনের দিনে এই তালিকাতেও আরও ওপরে উঠে আসার সুযোগ রয়েছে মুস্তাফিজের সামনে।


যে কারণে আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বোর্ড

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বোর্ডের (ইউএসএসির) ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। গত মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

এর আগে চলতি বছরের জুলাইয়ে বার্ষিক সাধারণ সভায় ইউএসএসিকে তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছিল। শর্ত ছিল, ‘স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন’ আয়োজন করতে হবে এবং ‘শাসন কাঠামোয় বড় পরিবর্তন’ আনতে হবে। তা না হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শেষ পর্যন্ত শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ইউএসএসির সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। তবে এতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় দলগুলো আইসিসির কোনো টুর্নামেন্ট খেলতে পারবে না এমনটা নয়। তারা আগের মতোই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে। আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণেও এর কোনো প্রভাব ফেলবে না। এছাড়া ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকের প্রস্তুতিতেও কোনো বাধা থাকছে না। এ সময়ে জাতীয় দলের উন্নয়ন ও হাই-পারফরম্যান্স কার্যক্রম সরাসরি তদারকি করবে আইসিসি এবং তাদের নিযুক্ত প্রতিনিধিরা।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের জন্য একটি নরমালাইজেশন কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি শাসন কাঠামো, কার্যক্রম ও সংগঠনের সংস্কার পরিকল্পনা তৈরি করবে এবং পুরো প্রক্রিয়ায় নজরদারি করবে।

আইসিসির মতে, এই পদক্ষেপ ক্রিকেটের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নিশ্চিত করা হবে, খেলোয়াড়দের ক্যারিয়ার বা যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেটের বিকাশ কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়।


ছক্কার রেকর্ডে সবাইকে ছাড়িয়ে শীর্ষে বৈভব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

মাত্র ১৩ বছর বয়সেই আইপিএলে দল পেয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন ভারতের বিস্ময় বালক বৈভব সূর্যবংশী। এরপর ১৪ বছর ৩২ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করে হৈ-চৈ ফেলে দেন এই ব্যাটার। এবার অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ড গড়েছেন তিনি।

ইংল্যান্ডের মাটিতে দুর্দান্ত সফর কাটিয়ে ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল এখন অস্ট্রেলিয়ায়। ২১ সেপ্টেম্বর প্রথম ওয়ানডেতে স্বাগতিক অজিদের ৭ উইকেটে হারায় ভারতীয় যুবারা। বুধবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছে এই দুই দল।

অস্ট্রেলিয়ার যুবাদের বিপক্ষে তিন ফিফটিতে ৩০০ রানের বড় সংগ্রহ পেয়েছে সফরকারী ভারত। তাদের পক্ষে অভিজ্ঞান কুন্ডু সর্বোচ্চ ৭১, বৈভব সূর্যবংশী ও ভিহান মালহোত্রা সমান ৭০ রান করেছেন।

৬৮ বলে ৭০ রানের ইনিংসটি খেলার পথে ৫টি চার ও ৬টি ছক্কা হাঁকায় বৈভব। এর মধ্য দিয়ে যুব ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড হয়ে গেল ১৪ বছর বয়সি এই ভারতীয় ব্যাটারের। মাত্র ১০ ওয়ানডেতে বৈভব ৪১টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন বৈভব।

এতদিন ৩৮টি ছয় নিয়ে রেকর্ডটি দখলে ছিল আরেক ভারতীয় উন্মুক্ত চাঁদের। ওই কীর্তি গড়তে ২০১১-১২ সালে তিনি ২১টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। এই তালিকায় এরপর যথাক্রমে আছেন- বাংলাদেশের জাওয়াদ আবরার (৩৫), পাকিস্তানের শাহজাইব খান (৩১), বাংলাদেশের তাওহীদ হৃদয় (৩০) ও ভারতের যশস্বী জয়সওয়াল (৩০)।


ব্যালন ডিঅর জয়ে মেসির আর্জেন্টিনাকে ছুঁয়ে ফেলল ফ্রান্স

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

সমস্ত জল্পনা-কল্পনা শেষে উসমান দেম্বেলের হাতেই উঠল ব্যালন ডিঅর ট্রফি। ষষ্ঠ ফরাসি ফুটবলার হিসেবে ব্যালন ডিঅর ট্রফি জিতলেন এই পিএসজি তারকা। দেম্বেলের আগে ফরাসিদের মধ্যে ব্যালন ডিঅর জিতেছেন রাইমন্ড কোপা, মিশেল প্লাতিনি, জ্যাঁ পিয়েরে পাপিন, জিনেদিন জিদান এবং করিম বেনজেমা। এই ছয়জন মিলে সব মিলিয়ে ব্যালন ডিঅর জিতেছেন ৮ বার। যেখানে মিশেল প্লাতিনি একাই জিতেছেন ৩ বার এবং বাকিরা একবার করে।

আর ৮ বার ব্যালন ডিঅর জেতার মধ্য দিয়ে দেশ হিসেবে সর্বোচ্চ ব্যালন ডিঅর জয়ে ফ্রান্স ছুঁয়ে ফেলল আর্জেন্টিনাকে। ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা সমান ব্যালন ডিঅর জিতলেও, দুই দেশের জেতার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য আছে।

ফ্রান্সের হয়ে ৬ জন মিলে যেখানে আটবার জিতেছেন, সেখানে আর্জেন্টিনার হয়ে লিওনেল মেসি একাই জিতেছেন আটবার। যা এককভাবে কোনো ফুটবলারের সর্বোচ্চ ব্যালন ডিঅর জয়ের রেকর্ডও বটে।

মেসি প্রথম ব্যালন ডিঅর জেতেন ২০০৯ সালে। এরপর ২০১০ থেকে ২০১২ পর্যন্ত টানা আরও তিনটি ব্যালন ডিঅর জেতেন তিনি। মাঝে তিন বছরের বিরতি দিয়ে ব্যক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের ট্রফিটি মেসি জেতেন ২০১৫ সালে। পরবর্তী তিনটি ব্যালন ডিঅর মেসি জেতেন ২০১৯, ২০২১ ও ২০২৩ সালে।

অন্য দিকে ফ্রান্সের হয়ে প্রথম ব্যালন ডিঅর জেতেন রাইমন্ড কোপা। এরপর ১৯৮৩, ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে হ্যাটট্রিক ট্রফি জেতেন মিশেল প্লাতিনি। জ্যাঁ পিয়েরে পাপিন জেতেন ১৯৯১ সালে।

কিংবদন্তি জিনেদিন জিদানের হাতে ট্রফিটি ওঠে ১৯৯৮ সালে বিশ্বকাপ জেতার পর। এরপর লম্বা বিরতি দিয়ে ২০২২ সালে এই ট্রফি জেতেন করিম বেনজেমা। আর এবার জিতলেন দেম্বেলে।

দেশ হিসেবে ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনার পর যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে আছে জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও পর্তুগাল। পর্তুগালের হয়ে অবশ্য ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো একাই জিতেছেন ৫ বার। অন্যদের মধ্যে জিতেছেন ইউসেবিও এবং লুইস ফিগো। এ ছাড়া ৫ বার করে এই ট্রফিটি জিতে ৩ নম্বরে আছে ইতালি ও ব্রাজিল। ব্রাজিলের হয়ে ২ বার জিতেছেন রোনালদো নাজারিও।


আবার বেঙ্গলের সভাপতি হলেন সৌরভ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

ছয় বছর পর আবারও বাংলার ক্রিকেট প্রশাসনে ফিরলেন সৌরভ গাঙ্গুলী। ভারতের সাবেক অধিনায়ককে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের (সিএবি) সভাপতি হিসেবে পুনর্নির্বাচিত করা হয়েছে। গত শনিবার সিএবির ৯৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

এর আগে ২০১৫ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত একই পদে ছিলেন গাঙ্গুলী। এবার তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন বড় ভাই স্নেহাশিস গাঙ্গুলীর স্থলাভিষিক্ত হয়ে। টানা ছয় বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ায় স্নেহাশিসকে পদ ছাড়তে হয়েছে।

পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর সংবাদ সংস্থা ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে সৌরভ গাঙ্গুলী বলেন, ‘এর আগেও আমি পাঁচ বছর সভাপতি হিসেবে কাজ করেছি। এবারও আমরা সেরাটাই করার চেষ্টা করব। ভারতে ক্রিকেটের বিপুল উন্মাদনা আছে। প্রচুর প্রতিভা আছে। সেই প্রতিভাকে দিকনির্দেশনা দেওয়াটাই আমাদের কাজ হবে।’

সিএবির দায়িত্ব শেষ করার পর ২০১৯ সালে বিসিসিআইয়ের সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছিলেন গাঙ্গুলী। সেই দায়িত্বে ছিলেন ২০২২ সাল পর্যন্ত। চলতি বছরের শুরুর দিকেই গাঙ্গুলীকে আবারও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে আইসিসি পুরুষদের ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে। ২০২১ সালে প্রথমবার এই পদে দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি।

চলমান এশিয়া কাপে সুপার ফোরের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের জয়ের পরও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন গাঙ্গুলী। অভিষেক শর্মার ৭৪ আর সহঅধিনায়ক শুবমান গিলের ৪৭ রানে ভর করে ভারত ১৭২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছে। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারত খুব ভালো দল। আমাদের হাতে এশিয়া কাপ জেতার ভালো সুযোগ আছে। আশা করি আমরা ভালো খেলব।’

বিসিসিআই সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দেওয়া সাবেক দিল্লি তারকা মিঠুন মানহাসকেও অভিনন্দন জানিয়েছেন গাঙ্গুলী। তিনি বলেন, ‘আমি তাকে অভিনন্দন জানাই। এটা অনেক বড় পদ। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও দক্ষ বোর্ডের সভাপতি হওয়া মানে বিশাল দায়িত্ব। ভারতের হয়ে খেলা ক্রিকেটাররা অবিশ্বাস্য প্রতিভাবান। তাদের সামলানো আর পথ দেখানো কঠিন দায়িত্ব। আমি আশা করি, ও এবং তার টিম খুব ভালোভাবে কাজ করবে।’


প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা আছে বিসিবি কোষাগারে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কোষাগারে কত টাকা আছে তা নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা অঙ্কের কথা শোনা গেলেও এবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানা গেল সেই সংখ্যা। বিদায়ী পরিচালনা পর্ষদ ১৩৯৮ কোটি টাকা কোষাগারে রেখে দায়িত্ব ছাড়ছে।

২০২১ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পাওয়া এই বোর্ড তিনজন সভাপতির নেতৃত্বে কাজ করেছে। প্রথমে ছিলেন নাজমুল হাসান, যিনি টানা তিন মেয়াদে সভাপতি ছিলেন।

তবে গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি দায়িত্ব হারান। এরপর ফারুক আহমেদ মাত্র ৯ মাস সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। সর্বশেষ প্রায় চার মাস ধরে বিসিবির সভাপতি ছিলেন সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তার সভাপতিত্বেই গত সোমবার অনুষ্ঠিত হয় বিদায়ী বোর্ডের শেষ সভা।

নির্ধারিত সময়ের আড়াই ঘণ্টা পর রাত ৯টায় সভা শুরু হয়ে শেষ পর্যন্ত মধ্যরাত পর্যন্ত চলে। সভা দীর্ঘ হওয়ার মূল কারণ ছিল বিসিবি নির্বাচনের কাউন্সিলর অনুমোদনকে ঘিরে জটিলতা। দেশের ক্রিকেটে এই মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়ও এটিই।

সভা শেষে মধ্যরাতে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি পরিচালক ইফতেখার রহমান আর্থিক অবস্থার হালনাগাদ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘১৩৯৮ কোটি টাকা আমরা রেখে যাচ্ছি। এফডিআর, হাতে থাকা নগদ অর্থ, ব্যাংক ব্যালেন্স- সব মিলিয়েই এই প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা রাখা হচ্ছে।’

সভায় বিপিএল নিয়েও আলোচনা হয়। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে বিপিএল হওয়ার কথা থাকলেও বিসিবি নির্বাচনের ব্যস্ততায় প্রক্রিয়া আটকে আছে। এখনো চূড়ান্ত হয়নি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো।

সামনে জাতীয় নির্বাচন ঘিরেও পরিস্থিতি অনিশ্চিত।

ইফতেখার রহমান বলেন, ‘আমরা টার্গেট করছি, ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে বিপিএল হবে। তবে দায়িত্বটা পরবর্তী বোর্ডের। আমরা কিছু কাজ এগিয়ে রেখে যাচ্ছি। পরের বোর্ড এসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’


কিংবদন্তি আম্পায়ার বার্ড মারা গেছেন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় ও বিখ্যাত আম্পায়ার হ্যারল্ড ‘ডিকি’ বার্ড মারা গেছেন। ৯২ বছর বয়সে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।

ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের বার্নসলিতে জন্ম বার্ডের। সেখানকার কাউন্টি দল ইয়র্কশায়ারের হয়ে ১৯৫৬ সালে ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। ২০১৪ সালে ইয়র্কশায়ারের সভাপতিও হন। ক্লাবটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে করা পোস্টে বার্ডের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। ইয়র্কশায়ার ক্লাব শোকবার্তায় জানিয়েছে, ‘ডিকি বার্ড শুধু একজন আম্পায়ার নন, তিনি ছিলেন ক্রিকেটের এক অনন্য চরিত্র। তার সততা, রসবোধ আর খেলাধুলার প্রতি নিবেদন তাকে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে। ইয়র্কশায়ার পরিবারের সকলেই তাকে গভীরভাবে স্মরণ করবে।’

১৯৭৩ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আম্পায়ারিং করেছেন বার্ড। এ সময়ে ৬৬টি টেস্ট ও ৬৯টি ওয়ানডে ম্যাচ পরিচালনা করেন তিনি। এর মধ্যে তিনটি বিশ্বকাপ ফাইনালও ছিল তার দায়িত্বে। খেলোয়াড় ও দর্শকদের কাছে সৎ, রসিক ও স্বতন্ত্র আম্পায়ার হিসেবে তিনি সমানভাবে সমাদৃত ছিলেন। ক্রিকেটে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৮৬ সালে ‘এমবিই’ ও ২০১২ সালে ‘ওবিই’ সম্মান পান তিনি।


অবসর ভেঙে জাতীয় দলে ফিরলেন ডি কক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

অবসর ভেঙে আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন কুইন্টন ডি কক। আগামী মাসে পাকিস্তান সফরের টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সিরিজের জন্য এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করেছে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা (সিএসএ)।

গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন ডি কক। এর আগে ২০২১ সালে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন তিনি। আর ২০২৩ বিশ্বকাপের পর ওয়ানডে ক্রিকেট থেকেও বিদায় জানান।

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে ডি ককের ফেরা দলে বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাবে বলে মনে করছেন দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ শুকরি কনরাড। তিনি বলেন, ‘এসএ২০ লিগ থেকেই আমরা খেলোয়াড়দের প্রস্তুতি দেখব। আর ডি ককের মতো অভিজ্ঞ কেউ দলে ফিরলে, তা আমাদের জন্য বাড়তি সুবিধা।’

দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সিতে ১৫৫ ওয়ানডে, ৯২ টি-টোয়েন্টি ও ৫৪ টেস্ট খেলেছেন ডি কক। জাতীয় দল থেকে বিদায় নিলেও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে তিনি ছিলেন নিয়মিত মুখ। এ বছর খেলেছেন এসএ-২০, আইপিএল, মেজর লিগ ক্রিকেট এবং ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে।


চীনে দাপুটে জয় দিয়ে বাফুফে একাডেমি দলের যাত্রা শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

শ্রীলঙ্কায় চলমান সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে চীনের লিজাং শহরে তিয়ানইউ লিওফাং আমন্ত্রিত টুর্নামেন্টে খেলছে বাফুফে একাডেমির আরেকটি অনূর্ধ্ব-১৭ দল। প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচেই গোলের ঝড় তুলে বড় জয় নিয়ে নিজেদের সামর্থ্য জানান দিল কিশোররা।

গত রোববার গ্রুপ পর্বের ম্যাচে সেনইয়াং অনূর্ধ্ব-১৭ দলকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বাফুফে একাডেমি দলটি। ৮০ মিনিটের ম্যাচে প্রথমার্ধেই আশিকের গোলে লিড নেয় বাংলাদেশ। বিরতির পর আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে তারা। ৫৪ মিনিটে তাহসান গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। এর পরের মিনিটেই আশিক নিজের দ্বিতীয় গোল করেন। ৫৯ মিনিটে হেদায়েতের গোল দলের বড় জয় নিশ্চিত করে। চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিকে কেন্দ্র করে আয়োজন করা হচ্ছে নানা ক্রীড়া কার্যক্রম। গেল পরশু ঢাকায়ে জাতীয় স্টেডিয়ামে চীনের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের একটি নারী দল বাংলাদেশ নারী ফুটবল একাডেমির সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলেছে। একই উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় চীনের এই আমন্ত্রিত টুর্নামেন্টে খেলছে বাফুফে একাডেমি দল।


বিসিবি নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত, চিঠি বৈধ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনে জেলা ও বিভাগের এডহক কমিটি থেকে কাউন্সিলর চেয়ে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের চিঠির কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্ট। হাইকোর্টের সেই আদেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত।

গত রোববার হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ। বিসিবির আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহিন এম রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, বি‌সি‌বি নির্বাচনে জেলা ও বিভা‌গের এডহক ক‌মি‌টি থে‌কে কাউন্সিলর ‌চে‌য়ে বি‌সি‌বি সভাপ‌তি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের চি‌ঠির কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বি‌সি‌বি নির্বাচ‌নে জেলা ও বিভা‌গের এডহক ক‌মি‌টি থে‌কে কাউন্সিলর ‌চে‌য়ে বি‌সি‌বি সভাপ‌তির চি‌ঠি কেন অ‌বৈধ নয়, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাই‌কো‌র্ট।

বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালত রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর বি‌সি‌বি নির্বাচ‌নে জেলা ও বিভা‌গের এডহক ক‌মি‌টি থে‌কে কাউন্সিলর ‌চে‌য়ে চিঠি দেন বি‌সি‌বি সভাপ‌তি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের গঠনতন্ত্র (২০২৪ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী একটি সাধারণ পরিষদ গঠন এবং পরিচালনা পরিষদ নির্বাচন-২০২৫ অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাধারণ পরিষদে বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার (ক্যাটাগরী-১) ‘কাউন্সিলরের’ নাম মনোনয়নের জন্য বোর্ড কর্তৃক সূত্রে উল্লিখিত গত ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখ রেজিস্ট্রার্ড ডাকযোগে বিজ্ঞপ্তি এবং গত ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে কুরিয়ারযোগে একটি পত্র, কাউন্সিলর মনোনয়ন মূল ফরম এবং গঠনতন্ত্রের কপি বিভাগীয়/জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি/আহ্বায়ক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকেও গত ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে কাউন্সিলর মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের গঠনতন্ত্র (২০২৪ সালে সংশোধিতের) আওতায় বিশেষ করে অনুচ্ছেদ ৯.১ এর (ক) এবং (খ) আবশ্যিকভাবে অনুসরণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।


বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচে দায়িত্বে থাকবেন আম্পায়ার জেসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

প্রথম বাংলাদেশি নারী আম্পায়ার হিসেবে ক্রিকেট বিশ্বকাপে দায়িত্ব নিয়ে ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন জেসি। নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচে আম্পায়ারিং করবেন বাংলাদেশের সাথিরা জাকির জেসি। ভারতে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শুরু হবে ৮ দলের এই টুর্নামেন্ট। এবারের বিশ্বকাপে সব ম্যাচেই আম্পায়ারিং করবেন নারী অফিসিয়ালরা। জেসিসহ ১৪ জন নারী আম্পায়ার পরিচালনা করবেন বিশ্বকাপের ৩১ ম্যাচ। জেসি ৫ ম্যাচে থাকবেন অনফিল্ড আম্পায়ার। আর ২টি করে ম্যাচে টিভি আম্পায়ার এবং চতুর্থ আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। আপাতত প্রাথমিক পর্বের ম্যাচগুলোর আম্পায়ারদের তালিকা প্রকাশ করেছে আইসিসি। সেমিফাইনাল ও ফাইনালের আম্পায়ারদের নাম পরে জানানো হবে।

আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর গুয়াহাটিতে ভারত-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার বিশ্বকাপের পর্দা উঠবে। এই ম্যাচে চতুর্থ আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন জেসি। মাঠের আম্পায়ার হিসেবে পাঁচ ম্যাচে আম্পায়ারিং করবে তিনি।

গুয়াহাটিতে আগামী ৩ অক্টোবর ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা, ৬ অক্টোবর ইন্দোরে নিউজিল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৫ অক্টোবর কলম্বোতে ইংল্যান্ড-পাকিস্তান ও ২৬ অক্টোবর বিশাখাপত্তনমে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড লড়াইয়ে মাঠে থাকবেন জেসি। উদ্বোধনী ম্যাচের পর ১১ অক্টোবর কলম্বোতে শ্রীলঙ্কা-ইংল্যান্ড ম্যাচে চতুর্থ আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। আর টিভি আম্পায়ারের ভূমিকায় তাকে দেখা যাবে ১৯ অক্টোবর ইন্দোরে ভারত-ইংল্যান্ড ও ২৩ অক্টোবর মুম্বাইয়ে ভারত-নিউজিল্যান্ড লড়াইয়ে। গত বছর আইসিসি ডেভেলপমেন্ট প্যানেলে আম্পায়ার হিসেবে তালিকাভুক্ত জেসি। এরপর নারী এশিয়া কাপ, অনূর্ধ্ব-১৯ নারী এশিয়া কাপ ও অনূর্ধ্ব-১৯ নারী বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কিছুদিন আগে বাংলাদেশের প্রথম নারী আম্পায়ার হিসেবে পুরুষদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও ম্যাচ পরিচালনা করেছেন। এবার বিশ্বকাপে আম্পায়ারিং করে আরেকটি ইতিহাসে ‘প্রথম’ হতে যাচ্ছেন এই আম্পায়ার। বাংলাদেশের হয়ে একটি টি-টোয়েন্টি ও দুটি ওয়ানডে খেলেছেন জেসি। ২০১৩ সালে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা জেসি খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার ছাড়ার পরই আম্পায়ারিং শুরু করেন। এরই মধ্যে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে ছেলেদের টুর্নামেন্টে বড় ম্যাচেও আম্পায়ারিং করেছেন তিনি।

আগামী সেপ্টেম্বর-নভেম্বরে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় যৌথভাবে অনুষ্ঠিত হবে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসর। টুর্নামেন্টে ৩৩ দিনে মোট ৩১টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে বাংলাদেশসহ মোট আটটি দল বিশ্বসেরার মুকুট জয়ের লড়াইয়ে নামবে।


এক ম্যাচে ৯৯ চার ও ১২ ছক্কা, ৭৮১ রান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের নারী দল মুখোমুখি হয় এক ওয়ানডে ম্যাচে। ম্যাচটি শুধু জয়-পরাজয়ের জন্য নয়, বরং ছিল নিখাদ ব্যাটিং বিনোদনের। অস্ট্রেলিয়ার মেয়েরা ৪৩ রানের ব্যবধানে জয় পেলেও, ক্রিকেটপ্রেমীদের দৃষ্টি আটকে রেখেছে দুই দলের দারুণ ব্যাটিং।

অস্ট্রেলিয়া আগে ব্যাট করে ৪১২ রান সংগ্রহ করে। ভারতের মেয়েরাও জবাবে দারুণ লড়াই দেখায় এবং ৩৬৯ রানে অলআউট হয়। ফলে দুই দল মিলিয়ে মোট রান হয়েছে ৭৮১, যা নারী ওয়ানডেতে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ।

ভারতের বিপক্ষে ৪১২ রানের ইনিংসটি অস্ট্রেলিয়ার মেয়েদের ওয়ানডেতে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ইনিংস। ১৯৯৭ সালের বিশ্বকাপে ডেনমার্কের বিপক্ষে তারা সমান রান করেছিল। ম্যাচে মোট ৯৯টি চার ও ১২টি ছক্কা হয়েছে, অর্থাৎ দর্শকরা এক ম্যাচে ১১১টি বাউন্ডারি দেখেছেন। এটি নারী ওয়ানডেতে প্রথম বারের মতো বাউন্ডারির সেঞ্চুরি।

এই ম্যাচে নারী ওয়ানডেতে প্রথমবার ভারত ৪০০ রান হজম করেছে। এর আগে তারা অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩৭১ রান হজম করেছিল। রান তাড়ায় সব দল মিলিয়ে ভারতের ৩৬৯ রানের ইনিংস এখন সর্বোচ্চ। আগের সর্বোচ্চ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার, যা গত বছর বেঙ্গালুরুতে ভারতের ৩২৫ রানের জবাবে ৩২১ রান।


কেন বাংলাদেশের ‘বিপদের বন্ধু’ মোস্তাফিজ?

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

কথা খুব কম বলেন। মৃদুভাষী মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের কাছেও আরাধ্য। যে কয়েকবার তিনি তাদের মুখোমুখি হয়েছেন- তার কাছে যাওয়া প্রায় সব প্রশ্নেরই উত্তর ছিল ছোট। কখনো এক বাক্যে, কখনো এক-দুই শব্দেই থমকে গেছেন মোস্তাফিজ।

অথচ জাতীয় দলে তার সতীর্থ কাউকে জিজ্ঞেস করে দেখুন, তাদের দলের সবচেয়ে বেশি মজা করেন কে? সবার তালিকারই ওপরের একটা জায়গা থাকবে মোস্তাফিজের জন্য। ক্রিকেটারদের মুখের সেই কথা বিশ্বাস করা কঠিনই হওয়ার কথা বাইরের অন্যদের জন্য।

তবে একটা দৃশ্যের বর্ণনায় হয়তো কিছুটা বোঝানো যাবে মাঠের বাইরের মোস্তাফিজকে।

আরও দিন তিনেক আগে আবুধাবি থেকে দুবাইয়ে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। সবার লাগেজ গুছিয়ে তারা তোলে দিয়েছিলেন টিম বাসে। মোস্তাফিজ এলেন শেষের দিকে, এসে হোটেলের গেটে নয়- তিনি ছুটে গেলেন পেস বোলিং কোচ টেইটের দিকে।

মোস্তাফিজ তার লাগেজটা একবার টেইটের গা ছুঁইয়ে দেন, তিনি তাকালেই আবার সরিয়ে নেন। মিনিট কয়েকের সেই দুষ্টুমিতে দুজনের কারও মুখেই কথা নেই, তবে মুখে ছিল চওড়া হাসি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষের ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে টেইট বলে গেছেন, এটাই নাকি তার কাজ।

‘এটা’ মানে মোস্তাফিজকে খুশি রাখা- তাতে দলের মঙ্গল বলে মনে করেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই পেসার। টেইটের মুখে কথাটা ছিল এমন, ‘আমার কাজ হচ্ছে তাকে খুশি ও আত্মবিশ্বাসী রাখা। বাকিটা সে নিজেই করে ফেলবে।’

সেই কাজটা মোস্তাফিজ কতটা ভালো করতে পারেন, তা দেখা গেছে এক দিন পরই। গত শনিবার রাতে দুবাইয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে তাসকিন আহমেদ শ্রীলঙ্কার পাওয়ারপ্লেতে একটা উইকেট নিতে পেরেছিলেন বটে, কিন্তু ৬ ওভারে শ্রীলঙ্কা তুলে ফেলেছিল ৫৩ রান।

তখন দল চাপে। অধিনায়ক লিটন দাস বোলিংয়ে নিয়ে আসেন মোস্তাফিজকে। ৩ রান দিয়ে ওভারটা তিনি শেষ করেন। পরের ওভারে এসে মেহেদী তুলে নেন পাওয়ারপ্লেজুড়ে আক্রমণাত্মক থাকা কুশল মেন্ডিসের উইকেট।

দলের দরকারের সময়ে উইকেট এনে দিয়েছেন মোস্তাফিজ। গত শনিবার দুবাইয়ে এশিয়া কাপের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দলের দরকারের সময়ে উইকেট এনে দিয়েছেন মোস্তাফিজ। গত শনিবার দুবাইয়ে এশিয়া কাপের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এসিসি ১৪তম ওভার। উইকেটে থিতু হয়ে গেছে দাসুন শানাকা আর কুশল পেরেরার জুটি। বোলিংয়ে আবার এলেন মোস্তাফিজ। তৃতীয় বলে চার হজম করলেন। অফ স্টাম্পের বাইরে নিচু হওয়া পরের বলটাই কুশল পেরেরার ব্যাট ছুঁয়ে চলে যায় লিটন দাসের হাতে। ভাঙল জমে যাওয়া ২৭ বলে ৩২ রানের জুটি।

১৭তম ওভার। ততক্ষণে শানাকা বিধ্বংসী হয়ে গেছেন। তাকে চমৎকার সঙ্গ দিচ্ছেন লঙ্কান অধিনায়ক চারিত আসালাঙ্কা। বাংলাদেশ দল আবারও চাপে। আবার হাজির মোস্তাফিজ। প্রথম চার বলে বাউন্ডারি এলো না। পঞ্চম বলে ক্যাচ তুলে দিলেন শানাকা- কিন্তু ধরতে পারলে তো! কোনো বাউন্ডারি হজম না করেই মোস্তাফিজ শেষ করলেন ওভারটা।

এক ওভার পর আবার হাজির মোস্তাফিজ। তিনি ওভারটা শুরু করলেন এমন একটা পরিস্থিতিতে, যখন আগের দুটি বলেই ছক্কা খেয়েছেন শরীফুল ইসলাম। এবারও দল চাপে। শেষ দিকে রান বাড়ার তাড়া ও উইকেট- দুটিই আছে শ্রীলঙ্কার হাতে।

প্রথম বলে ক্যাচ ছাড়লেন হৃদয়, তবে বলটাতে রান আউট হলেন আসালাঙ্কা। চতুর্থটিতে ক্যাচ দিলেন কামিন্দু মেন্ডিস, শেষটিতে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাও। সব মিলিয়ে ওভার থেকে এল ৫ রান। আবার ত্রাতা মোস্তাফিজ। শ্রীলঙ্কা ২০ ওভারে ১৬৮ রান তুললেও চার ওভারে মোস্তাফিজ ২০ রান দিয়ে পেলেন ৩ উইকেট। বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত রানটা ৪ উইকেট আর ১ বল হাতে রেখে জিতেছে।

এ তো শুধু গত শনিবারের গল্প। মোস্তাফিজ বাংলাদেশের জন্য ত্রাতা হয়েছেন বারবারই। ডেথ ওভার, মানে ইনিংসের শেষ চার ওভারে তার পরিসংখ্যানটাই দেখুন- আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এই সময়ে ওভারপ্রতি ৭.৯২ গড়ে রান দিয়েছেন মোস্তাফিজ।

বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি (৫৭) টি-টোয়েন্টি জয়ের সাক্ষীও মোস্তাফিজ। কিন্তু এই ম্যাচগুলোতে তার অবদান কেমন? ওভারপ্রতি ৬.২০ গড়ে রান দিয়ে এই পেসার নিয়েছেন ১০৩ উইকেট। সামগ্রিক এই অবস্থাটা আরও বেশি করে পোক্ত হয়েছে এ বছর এসে।

কীভাবে তা বলার আগে একটা বিশেষ দ্রষ্টব্য দিয়ে রাখা জরুরি- বাংলাদেশ শুধু মোস্তাফিজের জন্যই জিতেনি। তবে তাকে ছাড়া খেলা এ বছর ৮টি-টোয়েন্টির সবগুলোতেই হেরেছে বাংলাদেশ। মোস্তাফিজের খেলা ১১টি-টোয়েন্টির যে একটি হার, তাও এবারের এই এশিয়া কাপেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।

সুপার ফোরে এসে সেই শ্রীলঙ্কাকে হারানোর জয়ের নায়ক হয়েছেন সাইফ হাসান। তবে সেই পথটা গড়ে দিতে মোস্তাফিজও ইট-বালু দিয়েছেন ঠিকঠাক। তাকে হয়তো সবচেয়ে ভালো ব্যাখ্যা করতে পারবে ম্যাচের শেষে সংবাদ সম্মেলনে বলা সাইফের কথাটাই, ‘তিনি যখনই বল করে, দল একটা সংকটময় পরিস্থিতিতে থাকে। তিনি বিপদের সময় বোলিংয়ে আসেন। বেশির ভাগ সময় ডেলিভারও করে।’

সত্যিই তো, মোস্তাফিজ তো বাংলাদেশের বিপদের বন্ধুই। ত্রাতা হন সংকটের সময়ে। তিনি ‘খুশি’ থাকলে জিতে যায় বাংলাদেশও!


banner close