এশিয়া কাপের সুপার ফোরে ফাইনালের লড়াইয়ে ক্রিকেটের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তানের দ্বৈরথ আরও একবার দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেট বিশ্ব। মঞ্চ যাই হোক, এ দুই দলের ম্যাচ মানে খেলার চেয়ে বেশিকিছু। যেখানে নিজেদের সেরাটা দিতে মুখিয়ে থাকেন দুই দলের খেলোয়াড়রা। এবারের প্রেক্ষাপট বরং অন্য সময়ের চেয়ে বেশি উত্তপ্ত। আসর শুরুর আগে আয়োজন নিয়ে মাঠের বাইরে দুই দেশের লড়াইয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছিল পুরো এশিয়া কাপ।
ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তানের দ্বৈরথ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে। প্রতিবেশী এই দুই দেশ মাঠে মুখোমুখি হওয়া মানে উত্তেজনা যেন পৌঁছে যায় অন্য পর্যায়ে। শুধু মাঠেই নয়, মাঠের বাইরেও এই দুই দেশের সম্পর্ক এমনই। সঙ্গে তো রয়েছে রাজনৈতিক বৈরিতাও। তাই বেশ কয়েক বছর ধরেই দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হয় না এই দুই দেশের মধ্যে; কিন্তু তাতে কী? বড় কোনো টুর্নামেন্ট অর্থাৎ এশিয়া কাপ কিংবা বিশ্বকাপের সূচি এমনভাবেই করা হয় যেন এই আসরগুলোতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশ মুখোমুখি হতে পারে আর দর্শকরা এই হাইভোল্টেজ ম্যাচ উপভোগ করতে পারে। সেই হিসাব আজ শ্রীলঙ্কার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে ফাইনালের দৌড়ে নামছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ।
ওয়ান ডে ক্রিকেটে ভারত-পাক দ্বৈরথের ইতিহাস ৫৫ বছরের পুরোনো। ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত ১৩৩ বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। এর মধ্যে ভারতের জয় ৫৫টিতে, পাকিস্তানের জয় ৭৩টিতে। ৫টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়, অর্থাৎ এই পরিসংখ্যানে পাকিস্তান বেশ এগিয়ে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত এখন পর্যন্ত যে ৫৫টি ওয়ান ডে জিতেছে, তার মধ্যে ২৬টি ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করেছে ভারতীয় দল। ২৯টি ম্যাচে রান তাড়া করে জিতেছে ভারত। অর্থাৎ শুরুতে ফিল্ডিং করলে জেতার হার বেশি। ওয়ানডে ক্রিকেটে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ ১০ ম্যাচের মাত্র ৩টিতে হেরেছে ভারত।
সর্বশেষ ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে পরস্পর দেখা হয়েছিল তাদের। সেই ম্যাচে ভারতের কাছে বৃষ্টি আইনে ৮৯ রানে হেরেছিল পাকিস্তান। তবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হওয়া গত এশিয়া কাপে ভারতকে হারিয়ে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল পাকিস্তান। এরপর ওয়ানডে ফরম্যাটে না হলেও এ সময়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে চারবার মুখোমুখি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। দু’বার করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপের মঞ্চে। এর মধ্যে সমান দু’বার করে জয় ও হারের স্বাদ পেয়েছে দল দুটি।
ওয়ানডেতে দুই দলের লড়াইয়ে সর্বোচ্চ সংগ্রহ ভারতের। ৯ উইকেটে ৩৫৬। অন্যদিকে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ ৮ উইকেটে ৩৪৪। সর্বনিম্ন দলীয় রান ভারতের ৭৯, পাকিস্তানের সর্বনিম্ন ৮৭। ২০২২ টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপে দুইবার মুখোমুখি হয়ে ভারত ও পাকিস্তান। গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানকে ৫ উইকেট হারায় ভারত। আর সুপার ফোরে ভারতকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ফাইনাল খেলে পাকিস্তান। তবে এশিয়া কাপের সর্বোচ্চ ৭টি শিরোপা আছে ভারতের, শেষটি ২০১৮ সালে। পাকিস্তান এশিয়া কাপ জিতেছে দুইবার, ২০০০ এবং ২০১২ সালে। কারেন্ট প্লেয়ারদের মধ্যে এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি রান রোহিত শর্মার। হবারই কথা, সেই ২০০৮ থেকে খেলছেন। ২২ ম্যাচে ৭৪৫ রান। সেঞ্চুরি ১টি, ফিফটি ৬টি। বিপরীতে ২০১৮ এশিয়া কাপে পা রাখা বাবর আজম ওই এক আসরেই ৩৫১ রান তুলে রীতিমতো হইচই ফেলে দেন।
এদিকে আজ এমন একটি লড়াইয়ের আগে কী ভাবছেন দুই দলের খেলোয়াড়রা? কোন দল এগিয়ে- এমন এক প্রশ্নের উত্তরে ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে গতকাল পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম ভারতের চেয়ে নিজেদেরই একটু এগিয়ে রেখেছেন। কেননা এ মাঠে সর্বশেষ ২০০৪ সালে দেখা হয়েছিল দুই দলের। এতে পাকিস্তান জিতেছিল ৫৯ রানে।
বাবর নিজেদের কেন এগিয়ে রাখছেন, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। অনেকেই মনে করতে পারেন, ভারতের চেয়ে নিজেদের বোলিং আক্রমণকে শক্তিশালী মনে করেন বলেই বাবর পাকিস্তানকে এগিয়ে রাখছেন। ব্যাপারটা আসলে তা নয়। ভারত-পাকিস্তান সুপার ফোরের ম্যাচটি হচ্ছে শ্রীলঙ্কায়। এখানে পাকিস্তান টানা অনেক দিন খেলেছে সম্প্রতি। সেই থেকে এখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে খুব ভালোভাবেই পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা মানিয়ে নিয়েছেন বলে মনে করেন বাবর। সেটাই তাদের কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখবে বলে বিশ্বাস তার।
সুপার ফোরে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের দিনে আবহাওয়া কেমন থাকবে, সে বিষয়ে ‘আকুওয়েদার’ জানিয়েছে, বৃষ্টির সম্ভাবনা ৭৫ শতাংশ। দিনের শেষভাগে বজ্রঝড় হতে পারে এবং রাতে বৃষ্টির সম্ভাবনা ৭৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯৬ শতাংশ হতে পারে। ওয়েদার ডটকম জানিয়েছে, আগামীকাল কলম্বোয় বৃষ্টির সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হওয়ায় মাঠের লড়াই উপভোগ করতে পারেননি দর্শকরা। সে ম্যাচে ভারত আগে ব্যাট করে ৪৮.৫ ওভারে ২৬৬ রান তুললেও বৃষ্টির কারণে পাকিস্তান ব্যাটিংয়ে নামতে না পারায় ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়। পাল্লেকেলেতে যেটুকু খেলা হয়েছিল, তাতে পাক পেসারদের সঙ্গে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের লড়াই জমে উঠেছিল।
সুপার ফোরে ইতিমধ্যেই নিজেদের প্রথম ম্যাচ জিতেছে পাকিস্তান। বাংলাদেশকে হারিয়েছেন বাবর আজমরা। রোববার ভারতের বিরুদ্ধে জিতলে ফাইনালের দরজা কার্যত খুলে যাবে তাদের সামনে। অন্যদিকে ভারত চাইবে পাকিস্তানের পথের কাঁটা হয়ে উঠতে। শেষ হাসি তোলা থাকবে কার জন্য? আর তাইতো কলম্বোতে আবার টানটান এক লড়াইয়ের অপেক্ষা।
নারী ফুটসাল বিশ্বকাপের ইতিহাসের পাতায় নাম লিখল ব্রাজিল। ফিলিপাইনের ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের প্রথম আসরেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করল সেলেসাও নারীরা। ফাইনালে শক্তিশালী পর্তুগালকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে তারা।
ম্যানিলার ফিলস্পোর্টস এরেনায় গ্যালারিভর্তি দর্শকের সামনে পুরো ম্যাচজুড়েই ব্রাজিলের আধিপত্য ছিল স্পষ্ট। পর্তুগালের গোলরক্ষক আনা কাতারিনা পেরেইরা বেশ কিছু দুর্দান্ত সেভ করে দলকে ম্যাচে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ব্রাজিলের চমৎকার টেকনিক, সৃজনশীলতা আর স্কোয়াডের গভীরতার সামনে শেষ পর্যন্ত টিকতে পারেনি লুইস কনসেইসাওয়ের দল। ৪০ মিনিটের লড়াই শেষে ৩-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।
ব্রাজিলের ফুটবলে ফুটসালের প্রভাব নতুন কিছু নয়। সাবেক বিশ্বসেরা তারকা রোনালদিনহো নিজেও স্বীকার করেছেন যে, তার জাদুকরী স্কিল ও ছোট জায়গায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতার ভিত্তি গড়ে দিয়েছে এই ফুটসাল। ফাইনালে ব্রাজিল নারী দলের খেলাতেও সেই ঐতিহ্যবাহী ছন্দ ও আত্মবিশ্বাসের ছাপ ছিল স্পষ্ট।
ঐতিহাসিক এই জয়ে উচ্ছ্বসিত ব্রাজিল কোচ উইলসন সাবাইয়া। তার মতে, এই ট্রফি শুধু একটি জয় নয়, বরং এটি ব্রাজিলের স্কুল, কলেজ ও ক্লাব পর্যায়ে ফুটসালকে আরও জনপ্রিয় করবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভালো খেলোয়াড় ও কোচ তৈরিতে ভূমিকা রাখবে। অন্যদিকে, হারলেও নিজেদের পারফরম্যান্স নিয়ে গর্বিত পর্তুগাল কোচ কনসেইসাও। তিনি ব্রাজিলকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘ব্রাজিল অত্যন্ত শক্তিশালী দল। তবে আমরাও পর্তুগালের সম্মান বজায় রেখেই লড়াই করেছি এবং ফাইনালে পৌঁছাতে পেরে আমরা গর্বিত।’
অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল সান্তোস। ব্রাজিলিয়ান সিরি ‘এ’ লিগের শেষ রাউন্ডে ক্রুজেইরোকে ৩-০ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়ে অবনমন বা রেলিগেশন এড়াল ঐতিহাসিক এই ক্লাবটি। আর দলের এই অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন ঘরের ছেলে নেইমার। চোটের অস্বস্তি নিয়েও মাঠে নেমে দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলতে বড় ভূমিকা রাখলেন এই ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার।
ফুটবল সম্রাট পেলের নাম জড়িয়ে থাকা সান্তোস ২০২৩ সালে, পেলের মৃত্যুর মাত্র এক বছর পরই ক্লাবের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় বিভাগে নেমে গিয়েছিল। এবার যেন সেই দুঃস্বপ্ন ফিরে না আসে, সেটাই ছিল ক্লাবের মূল লক্ষ্য। আর এই কঠিন মিশনে নেতৃত্ব দিতেই গত জানুয়ারিতে নিজের পুরনো ঠিকানায় ফিরেছিলেন নেইমার। লিগের শেষ তিন ম্যাচেই তিনি নিজের জাত চিনিয়েছেন। স্পোর্ট রেসিফের বিপক্ষে গোল এবং জুভেন্তুদের বিপক্ষে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকের পর, শেষ ম্যাচেও তিনি ছিলেন দলের মূল চালিকাশক্তি।
রোববার ঘরের মাঠ ভিলা বেলমিরো স্টেডিয়ামে নেইমারের প্লেমেকিং জাদুর দিনে ক্রুজেইরোর জালে প্রথমার্ধের ২৬ ও ২৮ মিনিটে জোড়া গোল করেন থাসিয়ানো। দ্বিতীয়ার্ধের ৬০ মিনিটে দলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন জোয়াও শ্মিট। এই দাপুটে জয়ের ফলে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের ১২তম স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করল সান্তোস।
পুরো মৌসুমে চোটের সঙ্গে লড়াই করা নেইমার মাত্র ১৯টি ম্যাচ খেলতে পারলেও তার অবদান ছিল ৮ গোল। ম্যাচ শেষে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে নেইমার বলেন, ‘আমি ফিরে এসেছি দলকে যতটা সম্ভব সাহায্য করার জন্যই। গত কয়েক সপ্তাহ আমার জন্য খুব কঠিন ছিল। বিশেষ করে হাঁটুর চোটের কারণে খেলাটাই অনিশ্চিত ছিল। যারা আমাকে এই সময়ে সাহস জুগিয়ে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করেছেন, তাদের সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’
এদিকে, লিগের অন্য ম্যাচে সিয়ারার বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতে নিজেদের নবম লিগ শিরোপা নিশ্চিত করেছে ফ্ল্যামেঙ্গো। গত মাসেই কোপা লিবার্তাদোরেস জয়ী দলটি এবার ঘরোয়া লিগেও নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখল।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যু যেন রিয়াল মাদ্রিদের জন্য এক দুঃস্বপ্নের মঞ্চ হয়ে উঠল। নিজেদের দুর্গেই মৌসুমের প্রথম হারের স্বাদ পেল লস ব্লাঙ্কোসরা। তবে শুধু হারই নয়, ম্যাচের পুরো আলো কেড়ে নিল মাঠের বিশৃঙ্খলা—তিনজন খেলোয়াড় দেখলেন লাল কার্ড। শেষ পর্যন্ত ৯ জনের দলে পরিণত হওয়া রিয়াল মাদ্রিদ ২-০ গোলে নতি স্বীকার করল সেল্টা ভিগোর কাছে।
ম্যাচের প্রথমার্ধে অবশ্য এমন ঝড়ের কোনো আভাস ছিল না। বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করলেও ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল পায়নি স্বাগতিকরা, ফলে গোলশূন্যভাবেই বিরতিতে যায় দুই দল। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দৃশ্যপট বদলে যায়। ৫৪ মিনিটে পেনাল্টি বক্সের ভেতর থেকে উইলিয়ট সোয়েডবার্গের দারুণ এক ফ্লিক শটে লিড নেয় সেল্টা। এরপরই শুরু হয় রিয়ালের বিপর্যয়। ৬৪ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ফ্রান গার্সিয়া।
পিছিয়ে পড়ে মেজাজ হারায় রিয়াল শিবির। ইনজুরি সময়ে লাল কার্ড দেখেন আলভারো কারেরাস। এমনকি মাঠে না নেমেও বেঞ্চে বসে রেফারির সাথে তর্কে জড়িয়ে লাল কার্ড দেখতে হয় ব্রাজিলিয়ান তরুণ এনদ্রিককে। ডাগআউটে থাকা কোচ জাভি আলেনসোও হলুদ কার্ডের হাত থেকে রেহাই পাননি। রিয়াল যখন জনবল হারিয়ে কোণঠাসা, ঠিক তখনই প্রতি-আক্রমণে নিজের ও দলের দ্বিতীয় গোলটি করে সেল্টার জয় নিশ্চিত করেন সোয়েডবার্গ।
লা লিগার শিরোপা দৌড়ে এই হার রিয়ালকে বেশ বড় ধাক্কাই দিল। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা তাদের সবশেষ ম্যাচে রিয়াল বেতিসকে ৫-৩ গোলে হারিয়েছে, ফলে শীর্ষস্থানে থাকা বার্সার সঙ্গে রিয়ালের পয়েন্ট ব্যবধান বেড়ে দাঁড়াল চারে। এছাড়া ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে ভিয়ারিয়াল; এক ম্যাচ কম খেলে তারা রিয়ালের চেয়ে মাত্র এক পয়েন্ট পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে। সব মিলিয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদ ও লিভারপুলের পর ঘরের মাঠে এই হারে বেশ চাপেই পড়ল জাভি আলেনসোর শিষ্যরা।
ক্রিকেট
জাতীয় ক্রিকেট লিগ
সিলেট-বরিশাল
ময়মনসিংহ-রাজশাহী
ঢাকা-চট্টগ্রাম
রংপুর-খুলনা
সরাসরি, সকাল ৯-৩০ মি.,
ইউটিউব/বিসিবি
আইএল টি-টোয়েন্টি
ভাইপার্স-জায়ান্টস
সরাসরি, রাত ৮-৩০ মি.,
টি স্পোর্টস
হকি
জুনিয়র হকি বিশ্বকাপ
নামিবিয়া-ওমান
সরাসরি, সকাল ৯-৩০ মি.,
কানাডা-মিসর
সরাসরি, দুপুর ১২টা,
চীন-দক্ষিণ কোরিয়া
সরাসরি, দুপুর ২-৩০ মি.,
বাংলাদেশ-অস্ট্রিয়া
সরাসরি, বিকাল ৫টা,
স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১
ফুটবল
সিরি আ
তুরিনো-এসি মিলান
সরাসরি, রাত ১-৪৫ মি.,
ডিএজেডএন
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
উলভারহ্যাম্পটন-ম্যান ইউনাইটেড
সরাসরি, রাত ২টা,
স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১
ব্রিসবেন টেস্টে ইংল্যান্ডকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচের অ্যাশেজ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। চতুর্থ ইনিংসে জয়ের জন্য ৬৫ রানের মামুলি লক্ষ্য তাড়ায় খুব একটা ঘাম ঝরাতে হয়নি স্টিভ স্মিথের দলকে।
ম্যাচের চতুর্থ দিনে ব্যাট করতে নেমে মাইকেল নেসারের বোলিং তোপে পড়ে ইংল্যান্ড। সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংসে বেন স্টোকস ও উইল জ্যাকস ৯৬ রানের জুটি গড়ে কিছুটা প্রতিরোধের আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু পেসার মাইকেল নেসার জ্বলে উঠলে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপ। জ্যাকস ৪১ এবং ফিফটি করা স্টোকসকে সাজঘরে ফেরানোর পাশাপাশি ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করেন নেসার। শেষ পর্যন্ত ২৪১ রানেই গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড।
ইনিংস পরাজয় এড়ালেও অস্ট্রেলিয়ার সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ৬৫ রান। ছোট এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে গাস অ্যাটকিনসনের বলে ট্রাভিস হেড (২২) ও মার্নাস লাবুশেন (৩) দ্রুত বিদায় নিলেও জয়ে তা কোনো বাধা হতে পারেনি। অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ ৯ বলে ঝড়ো ২৩ রান এবং জ্যাক ওয়েদারাল্ড ১৭ রানে অপরাজিত থেকে দলকে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।
এর আগে ম্যাচের প্রথম ইনিংসে জো রুটের সেঞ্চুরিতে ভর করে ৩৩৪ রান করেছিল ইংল্যান্ড। জবাবে মিচেল স্টার্কের ৭৭ রান ও টপ অর্ডারের পাঁচ ব্যাটারের ফিফটিতে ৫১১ রানের পাহাড় গড়ে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে ১৭৭ রানের বড় লিড এবং ইংলিশ ফিল্ডারদের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ মিসই মূলত ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়। বল হাতে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮ উইকেট এবং ব্যাট হাতে ৭৭ রান করে ম্যাচজুড়ে আলো ছড়িয়েছেন অজি পেসার মিচেল স্টার্ক।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) মাঠে গড়ানোর আগেই বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়েছে চট্টগ্রাম রয়্যালস। ফ্র্যাঞ্চাইজিটির কোচিং স্টাফ, সাপোর্ট স্টাফ নিয়োগ এবং মালিকানার নেপথ্য কুশীলবদের নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। দলের মেন্টর ও ম্যানেজারের পদ থেকে হাবিবুল বাশারের আকস্মিক সরে দাঁড়ানোয় এই গুঞ্জন আরও ডালপালা মেলেছে, যা নিয়ে খোদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্মকর্তাদের মধ্যেই গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির কার্যক্রম এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। বিশেষ করে, ব্রাদার্স ইউনিয়নের কর্মকর্তা আমিন খানের সম্পৃক্ততা নিয়ে জোরালো প্রশ্ন উঠেছে। এর আগে দুর্বার রাজশাহীর সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের ‘লাল তালিকায়’ আমিন খানের নাম রয়েছে বলে জানা যায়। বিসিবির এক পরিচালক জানিয়েছেন, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী আমিন খান সন্দেহের তালিকায় আছেন এবং পরোক্ষভাবে তিনি চট্টগ্রাম দলের সঙ্গে যুক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির কোচিং স্টাফ, কর্মকর্তা ও সাপোর্ট স্টাফদের তালিকা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) দুর্নীতি দমন বিভাগে পাঠানো হয়েছে। তাদের ‘ব্যাকগ্রাউন্ড’ বা অতীত ইতিহাস খতিয়ে দেখার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে বিসিবি।
সন্দেহের তীর আরও জোরালো হয়েছে দলটির কোচ নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে। যেখানে রংপুর রাইডার্স, ঢাকা ক্যাপিটালস, নোয়াখালী এক্সপ্রেস কিংবা সিলেট টাইটান্সের মতো দলগুলো জাতীয় পর্যায়ের কোচ নিয়োগ দিয়েছে, সেখানে চট্টগ্রাম রয়্যালস নিয়োগ দিয়েছে বিভাগীয় কোচ মমিনুল হককে। মমিনুল হক পূর্বে ব্রাদার্স ইউনিয়নের কোচ ছিলেন, যা আমিন খানের সঙ্গে দলটির সংযোগের জল্পনা বাড়িয়ে দিয়েছে।
যদিও আমিন খান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে তাঁর বা তাঁর কোনো আত্মীয়ের সম্পৃক্ততা নেই। ব্রাদার্সের কোচ মমিনুল হক সেখানে থাকায় হয়তো কেউ কেউ তাঁকে জড়াচ্ছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে হাবিবুল বাশারের মতো ব্যক্তিত্বের সরে যাওয়া এবং কোচ নিয়োগ নিয়ে ফিসফাস থামছে না ক্রিকেট ভক্তদের।
বিপিএলে পাঁচ বছরের জন্য এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটি নেওয়া হলেও শুরু থেকেই তাদের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি এবং ব্যাংক জামানত ইস্যুতে দুর্বলতা থাকায় বিসিবি শুরুতে এটি বাতিল করে নিজেরা চালানোর কথা ভেবেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এতসব দুর্বলতা সত্ত্বেও চট্টগ্রামকে ফ্র্যাঞ্চাইজি দেওয়ায় বিসিবির সিদ্ধান্তই এখন প্রশ্নবিদ্ধ। টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই ইনটিগ্রিটি বা স্বচ্ছতা নিয়ে সংকটে পড়া একটি দলের পক্ষে আগামী পাঁচ বছর বিপিএলে টিকে থাকা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। পরিস্থিতি বিবেচনায় বিসিবি দলটির ওপর কড়া নজরদারি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর থেকেই কিলিয়ান এমবাপ্পে যেন থামতেই জানেন না। এবার ক্লাবের ইতিহাসের দরজায় কড়া নাড়ছেন ফরাসি সুপারস্টার। আর মাত্র চারটি গোল করলেই ছুঁয়ে ফেলবেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর এক বর্ষপঞ্জিকার সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড।
গেল বুধবার অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের মাঠে লা লিগায় রিয়ালের ৩-০ গোলের জয়ে জোড়া গোল করেছেন এমবাপ্পে।
এ নিয়ে ২০২৫ সালে তার মোট গোলসংখ্যা এখন ৫৫। রোনালদো ২০১৩ সালে করেছিলেন ক্লাব রেকর্ড ৫৯ গোল।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে ম্যাচসহ রিয়ালের হাতে আছে আরো চারটি ম্যাচ। তাই রেকর্ড ভাঙা সময়ের ব্যাপার বলেই মনে করছেন কোচ জাভি আলোনসো।
সংবাদ সম্মেলনে আলোনসো বলেন, ‘কিলিয়ান রিয়াল মাদ্রিদে ইতিহাস গড়ার পথে। ঠিক যেমন রোনালদো করেছিলেন। তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা, তার পরিসংখ্যান… সব মিলিয়ে সে বিশেষ খেলোয়াড়দের দলে।’
তিনি আরো বলেন, ‘তার মধ্যে যে শক্তি, সতীর্থদের উজ্জীবিত করার সেই ক্ষমতা—এগুলো রোনালদোর সঙ্গে মিল খুঁজে পাই।’
তবে রোনালদো আর এমবাপের মধ্যে কাউকে বেছে নিতে নারাজ আলোনসো।
‘রোনালদো হল রোনালদো, আর কিলিয়ান হল কিলিয়ান। দুজনই অসাধারণ। কিলিয়ানকে পেয়ে আমরা ভাগ্যবান,’ বলেন জাভি আলোনসো।
ভারতীয় ক্রিকেটের উদীয়মান তারকা অভিষেক শর্মা আবারও রেকর্ডবইয়ে নিজের নাম লিখলেন। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) হায়দরাবাদে সৈয়দ মুশতাক আলি ট্রফির এলিট গ্রুপ ‘সি’-ম্যাচে সার্ভিসেসের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ঝড় তুলে এক ক্যালেন্ডার বছরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১০০ ছক্কা হাঁকানো প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ইতিহাস গড়লেন এই ২৩ বছর বয়সী ব্যাটার।
ম্যাচের শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকা অভিষেক তার দ্বিতীয় ছক্কাটিই তাকে পৌঁছে দেয় অনন্য এক উচ্চতায়। সেই মুহূর্তেই নিশ্চিত হয় নতুন রেকর্ডের জন্ম।
তিনি শেষ পর্যন্ত ৩৪ বলে ৮ চার ও ৩ ছক্কায় ৬২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন।
চলতি বছর অভিষেকের ছক্কা-ঝড়ের হিসাবটা আরো বিস্ময়কর। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১৭ ম্যাচে ৪৭ ছক্কা, আইপিএল ২০২৫-এ সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে ১৪ ম্যাচে ২৮ ছক্কা এবং সৈয়দ মুশতাক আলি ট্রফিতে মাত্র ৬ ম্যাচেই ২৬ ছক্কা। মোট মিলিয়ে ২০২৫ সালে ৩৭ ম্যাচে অভিষেকের ছক্কার সংখ্যা ১০১।
ভারতের পূর্ববর্তী রেকর্ডটিও ছিল অভিষেকের। ২০২৪ সালে তিনি মেরেছিলেন ৮৭ ছক্কা। তার আগ পর্যন্ত জাতীয় রেকর্ড ছিল সূর্যকুমার যাদবের (৮৫ ছক্কা, ২০২২)।
বিশ্বজুড়ে এক বছরে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড নিকোলাস পুরানের।
২০২৪ সালে ১৭০ ছক্কা (৭৬ ম্যাচ) মেরেছিলেন তিনি। টি-টোয়েন্টির কিং ক্রিস গেইলই প্রথম ছুঁয়েছিলেন এই ১০০ ছক্কার ম্যাজিক ফিগার (২০১১ সালে)। এরপর আরো ছয়বার এ কীর্তি গড়েন তিনি।
চলতি বছর বিশ্বব্যাপী শীর্ষে আছেন অস্ট্রিয়ার করণবীর সিং, ৩২ ম্যাচে ১২২ ছক্কা। তবে ভারতের সামনে আছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
সেখানে মাত্র ৩টি ছক্কা মারতে পারলেই অভিষেক হতে পারেন টেস্ট খেলুড়ে দেশের মাত্র দ্বিতীয় ক্রিকেটার, যিনি এক বছরে ৫০ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ছক্কা হাঁকাবেন।
গত সপ্তাহেই কনফারেন্স শিরোপা জিতেছিলেন, আর এবার ইন্টার মায়ামির শোকেসে তুললেন মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) সবচেয়ে বড় ট্রফিটি। ফাইনালে নিজে গোল না পেলেও সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়ে ভ্যানকুভার হোয়াইটক্যাপসকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়েছে তার দল।
ঘরের মাঠ চেজ স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতেই ভাগ্যের সহায়তা পায় মায়ামি। ৮ মিনিটে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার ওকাম্পোর আত্মঘাতী গোলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় টাটা মার্টিনোর শিষ্যরা। প্রথমার্ধে আর কোনো গোল না হওয়ায় এই লিড নিয়েই বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় ভ্যানকুভার। ৬০ মিনিটে আলী আহমেদের গোলে সমতায় ফেরে তারা। তবে মায়ামির জাদুকর তখনো যে আসল চমক বাকি রেখেছিলেন! ৭১ মিনিটে মেসির দুর্দান্ত পাসে জালের দেখা পান রদ্রিগো ডি পল, মায়ামি ফিরে পায় লিড।
ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে (৯৬ মিনিট) আর্জেন্টাইন অধিনায়কের আরেকটি নিখুঁত অ্যাসিস্টে দলের জয় ও শিরোপা নিশ্চিত করেন তাদেও আলেন্দে।
এই জয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমএলএস চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করল ইন্টার মায়ামি। আর ব্যক্তিগত অর্জনে নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গেলেন মেসি। এটি তার পেশাদার ক্যারিয়ারের রেকর্ড ৪৮তম শিরোপা।
এমএলএস কাপ জয়ী এই ম্যাচটি অন্য আরেক কারণে বিশেষ ছিল, কারণ এটি ছিল বার্সেলোনার দুই কিংবদন্তি জর্ডি আলবা ও সার্জিও বুসকেটসের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। বার্সার হয়ে ১১ মৌসুমে ছয়টি লা লিগা, একটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং স্পেনের হয়ে ইউরো ২০১২ জিতেছেন আলবা। তিনি বিদায় নিলেন ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা লেফট-ব্যাক হিসেবেই।
অন্যদিকে বুসকেটস, যিনি বার্সেলোনার হয়ে ৭২২ ম্যাচ খেলে ৩২টি ট্রফি জিতেছেন। স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপ ও ইউরো শিরোপাও তুলেছেন তিনি। তার ক্যারিয়ারেরও সুন্দর সমাপ্তি ঘটল এমএলএসে শিরোপা জিতে।
ফুটবলের মহাকাশে বর্তমানে দুই উজ্জ্বল তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসি। মাঠের বাইরে তাদের নিয়ে চলে তুমুল চর্চা, আর মাঠে মুখোমুখি হলে তো কথাই নেই! ক্লাব ফুটবলে দুজনের দেখা হয়েছে বহুবার। ২০১৪ সালের নভেম্বরে এক প্রীতি ম্যাচে জাতীয় দলের জার্সিতে তারা একে-অন্যের বিপক্ষে খেলেছিলেন। কিন্তু বিশ্বকাপে তারা পাঁচবার অংশ নিলেও মাঠে তাদের মুখোমুখি লড়াই দেখা হয়নি। ২০২৬ সালে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ খেলতে চলেছেন মেসি-রোনালদো। এটাই তাদের শেষ বিশ্বকাপ। আর এই বিদায়ী আসরে সেমিফাইনালের আগে দেখা হতে পারে তাদের দল পর্তুগাল ও আর্জেন্টিনার।
আর্জেন্টিনা ও পর্তুগালকে গ্রুপ পর্বে বড় কোনো পরীক্ষা দিতে হবে না বলেই ধারণা। তিনটি সম্ভাব্য পথে তাদের মুখোমুখি লড়াই হতে পারে। প্রথমবার তাদের দেখা হতে পারে ১১ জুলাই কানসাস সিটিতে কোয়ার্টার ফাইনালে। সে ক্ষেত্রে দক্ষিণ আমেরিকান ও ইউরোপিয়ান দলকে তাদের গ্রুপ পর্বের শীর্ষে থাকতে হবে এবং শেষ ৩২ ও ১৬-এর বাধা পার করতে হবে। আর্জেন্টিনার গ্রুপে রয়েছে আলজেরিয়া, অস্ট্রিয়া ও জর্ডান। পর্তুগালের গ্রুপ প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তান, কলম্বিয়া ও আন্তঃমহাদেশীয় প্লে অব জয়ী দল (নিউ ক্যালেডনিয়া, জ্যামাইকা কিংবা কঙ্গো)।
দুই দলই যদি নিজেদের গ্রুপে রানার্সআপ হয় এবং শেষ ৩২ টপকে গেলে শেষ ষোলোতে হবে তাদের লড়াই। আগামী ৬ জুলাই ডালাসে হবে ম্যাচটি। আরেক উপায়ে পর্তুগাল ও আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হতে পারে। পর্তুগাল যদি তাদের গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয় এবং আর্জেন্টিনা তিনে থেকে গ্রুপের খেলা শেষ করে, তাহলে শেষ ষোলোতে ওঠার ম্যাচে দুই দলের দেখা হবে ৩ জুলাই কানসাস সিটিতে।
২০০৬ সাল থেকে মেসি ও রোনালদো বিশ্বকাপে খেলছেন। কিন্তু একবারই তারা মুখোমুখি হওয়ার বেশ কাছে ছিলেন। ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে দেখা হতে পারত দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর; কিন্তু উরুগুয়ে পর্তুগিজদের ছিটকে দেয় এবং আর্জেন্টিনা ফ্রান্সের কাছে হেরে গিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে গতরাতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ফিফা বিশ্বকাপের ড্র। সেই আয়োজনে ফিফা শান্তি পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। নতুন করে এই পুরস্কারটি চালু করেছে ফিফা।
এমন কিছু হতে যাচ্ছে তার সম্ভাবনা অনেকদিন ধরেই ছিল। অবশেষে তা সত্যি হলো ফিফা বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানে। এই পুরস্কার পেয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ফিফাকে। তিনি বলেন, ‘এটি আমার জীবনের অন্যতম সেরা সম্মাননা।’
ফিফা আগেই জানিয়েছিল, ফুটবল বিশ্বজুড়ে শান্তি ও একতার প্রতীক, আর মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে তুলতে যারা ভূমিকা রাখেন, তাদেরই সম্মান জানাতে এই উদ্যোগ। ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেন, ‘পৃথিবী যখন নানা অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন মানুষকে আরও কাছে টেনে আনতে যারা কাজ করছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
পুরস্কার প্রদানের মঞ্চে ট্রাম্পকে ইনফান্তিনো বলেন, ‘এটা তোমার পুরস্কার, এটা তোমার শান্তি পুরস্কার।’
বিশ্বকাপ ড্রয়ে তুলনামূলক সহজ গ্রুপেই পড়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। গ্রুপ ‘জে’-তে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ আলজেরিয়া, অস্ট্রিয়া ও জর্ডানের মতো দল। বুয়েন্স এইরেসে সমর্থকদের অনেকে এই ড্রকে অনুকূল বললেও আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি অবশ্য সবাইকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘সহজ প্রতিপক্ষ বলে কিছু নেই।’
স্কালোনি জানিয়েছেন, আগামী বিশ্বকাপেও তারা একই পরীক্ষিত ছকে খেলবে। গতবার কাতারে শিরোপা ঘরে তুলেছিল আলবিসেলেস্তেরা। স্ক্যালোনি বলেছেন, ‘আমরা সর্বোচ্চটুকু দেব এবং আগের বিশ্বকাপে যেমন করেছি, ঠিক সেভাবে প্রতি বলের জন্য লড়াই করবে।’ শিরোপাধারী দলের কোচ হিসেবে ট্রফি হাতে নিয়েই ড্র মঞ্চে প্রবেশ করেছিলেন স্ক্যালোনি।
গ্রুপিং যেভাবে হয়েছে, তাতে করে ফাইনালে পৌঁছানোর পথটা আর্জেন্টিনার জন্য চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। শেষ ৩২-এ তাদের অপেক্ষায় গ্রুপ ‘এইচ’-এর কোনো দল। যে গ্রুপে রয়েছে স্পেন, উরুগুয়ে, সৌদি আরব ও কেপ ভার্দে। স্ক্যালোনিও মানছেন সেটা, ‘২০২২ সালেও বলেছিলাম সহজ প্রতিপক্ষ বলে কিছু নেই। ম্যাচ খেলতে হবে। যদি (এইচ গ্রুপের) কারও সঙ্গে মুখোমুখি হতে হয়, সেটা কঠিনই হবে। তবে আগে তো আমাদের গ্রুপ পার হতে হবে, তারপর দেখা যাবে।’
আলজেরিয়াকে নিয়ে স্ক্যালোনি বলেছেন, ‘চমৎকার খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া ভালো দল।’ তাদের কোচ ভ্লাদিমির পেটকোভিচ আবার স্ক্যালোনির সাবেক হেড কোচ। ইতালিয়ান ক্লাব লাৎজিওতে একসঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা আছে তাদের।
অস্ট্রিয়ারও প্রশংসা করেছেন তিনি, ‘বাছাইপর্বে দারুণ খেলেছে।’ গ্রুপসেরা হয়েই বিশ্বকাপে এসেছে দলটি। আর প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে আসা জর্ডানকে নিয়ে তথ্য কম থাকলেও স্ক্যালোনি ভীষণ সতর্ক। দলটাকে তারা হালকাভাবে নিচ্ছেন না। কারণ, কাতারে সৌদি আরবের কাছে প্রথম ম্যাচে ২-১ গোলে হারের স্মৃতি যে এখনো তাজা। স্ক্যালানি বলেছেন, ‘সেই অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। তাই খেলতে হবে, লড়তে হবে।’
টস জেতার পর আবেগ লুকাতে পারেননি ভারতের অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। টানা ২০ ম্যাচ টস হারা ভারতের অবশেষে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের শেষ ও তৃতীয় ওয়ানডেতে ভাগ্য ফিরল। বিশাখাপত্তমে টস জেতার পরই রাহুলকে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা যায়। টসের পর ক্যামেরায় ধরা পড়ে- তিনি উচ্ছ্বাস ভরা ভঙ্গিতে ‘ইয়েস!’ বলে মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলে উদযাপন করছেন। এর আগে ভারত শেষ টস জিতেছিল ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে।
টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রাহুল। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বিরাট কোহলির ১৩৫ রানের উপর ভর করে ভারত তুলেছিল ৩৪৯ রান। বড় সংগ্রহ দাঁড় করালেও স্বাগতিকদের জিততে হয়েছিল মাত্র ১৭ রানের ব্যবধানে।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও সেঞ্চুরি তুলে নেন কোহলি- ১০২ রান। সেঞ্চুরি করেন ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ও, খেলেন ১০৫ রানের ইনিংস। ৩৫৮ রানের বড় সংগ্রহ গড়েও ভারত থামাতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকাকে; প্রোটিয়ারা জিতে যায় ৪ উইকেট হাতে রেখে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১১০ রান করেন এইডেন মার্করাম।
অবশেষে টানা ২০ ম্যাচ পর সিরিজ নির্ধারণী ওয়ানডেতে টস জিতল ভারত। এখন দেখার বিষয়- টস জয়ের পর সিরিজটাও নিজেদের করে নিতে পারে কি না স্বাগতিকরা।