রোববার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

ভারতকে ২৬৬ রানের টার্গেট দিল বাংলাদেশ

৮০ রানের ইনিংস খেলার পথে সাকিব আল হাসানের একটি শট। ছবি: সংগৃহীত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ২০:১৭

অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ হৃদয়ের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরির পর টেল-এন্ডারদের দৃঢ়তায় এশিয়া কাপ সুপার ফোর পর্বের শেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৬৫ রান করেছে বাংলাদেশ। মিডল অর্ডারে সাকিব ৮০ ও হৃদয় ৫৪ রান করেন। ব্যাটিং অর্ডারে নিচের দিকে নাসুম আহমেদ ৪৪, মাহেদি হাসান অপরাজিত ২৯ ও অভিষিক্ত তানজিম হাসান অপরাজিত ১৪ রান করেন। এখন ২৬৬ রানের টার্গেটে ব্যাটিং করছে ভারত।

কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শুক্রবার নিয়মরক্ষার ম্যাচে টসে ভারতের বিপক্ষে হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পায় বাংলাদেশ। পাঁচটি পরিবর্তন নিয়ে সাজানো একাদশে দলের হয়ে ইনিংস শুরু করেন টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে অভিষেক হওয়া তানজিদ হাসান ও লিটন দাস।

প্রথম দুই ওভারে তিনটি চার মেরে ইনিংসের যাত্রা করেন তানজিদ। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে পেসার মোহাম্মদ সামির বলে বোল্ড হন ওপেনিংয়ে ফেরা লিটন। ২ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।

পরের ওভারের প্রথম বলে শারদুলের বলে ইনসাইড এজ বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন অভিষেক ম্যাচে গোল্ডেন ডাকের মালিক তানজিদ। ১২ বলে ১৩ রান করেন তিনি।

তিন নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি এনামুল হক। শারদুলের বলে পুল করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ১১ রানে ৪ রান করা এনামুল হক বিজয় ক্যাচ দিলে দলীয় ২৮ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

পাঁচ নম্বরে নামেন আগের তিন ম্যাচে ওপেনার হিসেবে নামা মেহেদি হাসান মিরাজ। শারদুলের করা দশম ওভারে দু’বার জীবন পান তিনি। জীবন পেয়েও প্যাটেলের শিকার হয়ে ২৮ বলে ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।

দলীয় ৫৯ রানে মিরাজের বিদায়ের পর বড় জুটির চেষ্টা করেন অধিনায়ক সাকিব ও তাওহিদ হৃদয়। উইকেটে সেট হতে সাবধানে খেলতে থাকেন তারা। ২৪তম ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১০০ স্পর্শ করে । ২৬তম ওভারে প্যাটেলের চতুর্থ ডেলিভারিতে ছক্কা মেরে ওয়ানডেতে ৫৫তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৬৫ বল খেলা সাকিব।

হাফ-সেঞ্চুরির পরও বেশ ভালোই খেলছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। কিন্তু ৩৪তম ওভারে শারদুলের বলে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৮৫ বলে ৮০ রান করা সাকিব। পঞ্চম উইকেটে হৃদয়ের সঙ্গে ১১৫ বলে ১০১ রানের জুটি গড়েন ২৮ রানে উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুলের হাতে জীবন পাওয়া সাকিব।

সাকিব ফেরার পরের ওভারে জাদেজার বলে লেগ বিফোর আউট হন সাত নম্বরে নামা শামীম হোসেন (১)। এতে দলীয় ১৬১ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে আবারও চাপে পড়ে বাংলাদেশ।

সপ্তম উইকেটে নাসুমের সাথে ৩২ রানের জুটি গড়ার পথে ওয়ানডেতে পঞ্চম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন হৃদয়। অর্ধশতকের পর সামির বলে পুল করে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৮১ বলে ৫৪ রান করা হৃদয়।

হৃদয় ফেরার পর বাংলাদেশকে সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে গেছেন তিন টেল এন্ডার নাসুম, মাহেদি ও তানজিম। অষ্টম উইকেটে মাহেদি-নাসুম ৩৬ বলে ৪৫ এবং নবম উইকেটে ১৬ বলে অবিচ্ছিন্ন ২৭ রান তুলেন মাহেদি-তানজিম। এতে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৬৫ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।

৬টি চার ও ১টি ছক্কায় নাসুম ৪৫ বলে ৪৪, ৩টি চারে ২৩ বলে মাহেদি অপরাজিত ২৯ এবং ১টি করে চার-ছক্কায় ৮ বলে অপরাজিত ১৪ রান করেন তানজিম। ভারতের শারদুল ৩টি ও সামি ২টি উইকেট নেন।


ঢাকা টেস্ট হেরে অস্বস্তিতে বাংলাদেশ

আপডেটেড ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৮:৩৯
ক্রীড়া প্রতিবেদক

নিজেদের বানানো স্পিনফাঁদে নিজেদেরই আত্মাহুতি দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। বছরের শেষ টেস্টে হারতে হয়েছে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৪ উইকেটে। আর তাতে করে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে।

চলতি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চক্রের শুরুটা জয় দিয়ে করলেও দ্বিতীয় ম্যাচেই বাংলাদেশ ফিরে গেছে তাদের চিরচেনারূপে। কিউই স্পিনবিষ কুরে কুরে খেয়েছে টাইগার ব্যাটারদের। যে কারণে জয়ের সম্ভাবনা দেখিয়ে শুরু করা টেস্টকে বাংলাদেশ নিয়ে গেছে পরাজয়ের দোরগোড়ায়।

কিউইদের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে জিতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম চক্রে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে উঠে এলেও দ্বিতীয় ম্যাচে হেরে বাংলাদেশ নেমে গেছে পয়েন্ট টেবিলের চারে। তবে স্বস্তির কথা এই যে, রেটিং পয়েন্টে আসেনি কোনো পরিবর্তন। প্রথম ম্যাচ জিতে পাওয়া ১২ পয়েন্টই বহাল রয়েছে দ্বিতীয় ম্যাচে হারার পরও।

এদিকে টেবিলে উন্নতি হয়েছে নিউজিল্যান্ডের। ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে উঠে উসেছে কিউইরা। দুটি টেস্টে জয় নিয়ে এখনো শীর্ষে আছে পাকিস্তান। তাদের পয়েন্ট ২৪। দুই টেস্টে একটি করে জয় ও ড্র নিয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ভারত।

তালিকায় পাঁচ থেকে আটে যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা।

এখন পর্যন্ত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুটি চক্র সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম আসরে নিউজিল্যান্ড এবং সর্বশেষ চক্রের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। দুইবারই ভারত ফাইনালে হেরেছে।

২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া আইসিসির এই প্রতিযোগিতার তৃতীয় চক্র চলছে এখন। সব মিলিয়ে ৯ দলের মধ্যে ৬৯টি ম্যাচ শেষে ঠিক হবে বিজয়ীর নাম। এই দৌড় শেষ হবে ২০২৫ সালের জুনে। এরপর টেবিলের এক আর দুইয়ে থাকা দল খেলবে ফাইনাল। তাদের মধ্যে জয়ী দল হবে টেস্ট চ্যাম্পিয়ন।


জগৎ কাঁপানো গোল গেটার এমবাপ্পে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

পুরো নাম- কিলিয়ান এমবাপ্পে লোতাঁ

জন্ম- ২০ ডিসেম্বর ১৯৯৮

জন্মস্থান- প্যারিস, ফ্রান্স

রাশি- মিথুন রাশি

প্রিয় খেলা- ফুটবল, আমেরিকান ভলিবল

প্রিয় খাবার- পাস্তা

প্রিয় রং- লাল

প্রিয় ফুল- লাল গোলাপ

প্রিয় পশু- সিংহ

প্রিয় ফুটবলার- ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, রোনালদিনহো, ম্যারাডোনা

প্রিয় পানীয়- মিন্ট, অরেঞ্জ জুস

প্রিয় অভিনেতা- লিওনার্দো ডি ক্যাপরিও

প্রিয় অভিনেত্রী- অ্যাঞ্জেলিনা জলি

প্রিয় সতীর্থ- আশরাফ হাকিমী

প্রিয় গাড়ি- মার্সিডিজ, অডি, বিএমডব্লিউ

প্রিয় ফুটবল দল- প্যারিস সেইন্ট জার্মেই

প্রিয় কোচ/ম্যানেজার- আর্সেন ওয়েঙ্গার

প্রিয় সংগীতশিল্পী- জাস্টিন বিবার

প্রিয় গান- কন্ট্রোলা

প্রিয় জুতার ব্র্যান্ড- নাইকি


একাত্তর টিভিকে মুশফিকের আইনি নোটিশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় দলের ক্রিকেটার মুশফিক রহিমের পক্ষ থেকে বেসরকারি চ্যানেল ‘একাত্তার টিভিকে’ আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

নোটিশে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় এবং শেষ টেস্টে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আউট নিয়ে ভিত্তিহীন, মনগড়া, অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য পরিবেশন’ করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

শনিবার টেলিভিশন চ্যানেলটির হেড অব নিউজ, ক্রীড়া সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে এ নোটিশ পাঠানো হয় বলে মুশফিক রহিমের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান দৈনিক বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছে, অন্যথায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া প্রচারিত ওই প্রতিবেদনটি শিগগিরই ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে ভুল, অসত্য ও মানহানিকর তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদনের জন্য ৭১ টেলিভিশনকে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনাসহ তাদের টিভি চ্যানেলে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রচার করতে বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক সাইফুল রূপককে ভবিষ্যতে এমন অসত্য ও মনগড়া প্রতিবেদন না করার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে মর্মে মুশফিকুর রহিমের কাছে লিখিতভাবে ৭১ টেলিভিশন কর্তৃপক্ষকে জানাতেও বলা হয়।

নোটিশে আরও বলা হয়, প্রতিবেদনটি দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় মানহানির অপরাধ ও সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ এর ২৫(১)(ক), ২৫(২) এবং ২৯ ধারায় সাইবার বুলিংয়ের অপরাধ হয়েছে। নোটিশ অনুযায়ী প্রতিকার না পেলে ফৌজদারি ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের দেওয়ানি আদালতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আউট হয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। বিষয়টি নিয়ে ‘মিরপুর টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ের গন্ধ! সন্দেহ সিনিয়র ক্রিকেটারের দিকে!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় ৭১ টেলিভিশনের নিয়মিত অনুষ্ঠান ‘খেলাযোগের’ ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে।

এই প্রতিবেদন নিয়ে আপত্তি তুলে নোটিশ পাঠান মুশফিকুর রহিম।


নিউজিল্যান্ডের টার্গেট ১৩৭

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নিউজিল্যান্ড স্পিনার আজাজ প্যাটেলের ঘুর্ণিতে ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৪ রানে অলআউট হয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জিততে নিউজিল্যান্ডের লাগবে ১৩৭ রান।

দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেটে ৩৮ রানে তৃতীয় দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ৩০ রানে এগিয়ে ছিল টাইগাররা। ওপেনার জাকির হাসান ১৬ ও মোমিনুল শূণ্যতে অপরাজিত ছিলেন।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ চতুর্থ দিনের শুরুতে ব্যক্তিগত ১০ রানে আউট হন মোমিনুল। এরপর মুশফিকুর রহিম ৯, শাহাদাত হোসেন ৪, মেহেদি হাসান মিরাজ ৩, নুরুল হাসান শূণ্য, নাইম হাসান ৯, জাকির ৫৯ ও শরিফুল ইসলাম ৮ রানে আউট হন। ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন তাইজুল ইসলাম।

নিউজিল্যান্ডের প্যাটেল ৫৭ রানে ৬ উইকেট নেন। মিচেল স্যান্টনার ৩টি ও টিম সাউদি ১টি উইকেট নেন।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ১৭২ রানের জবাবে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ১৮০ রান।


নাটকীয় উপাদানে পরিপূর্ন দ্বিতীয় টেস্ট

নিউজিল্যান্ডের উইকেট পতনের পর সতীর্থদের সাথে মিরাজের উল্লাস। ছবি: বিসিবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনে উইকেটবৃষ্টির পর দ্বিতীয় দিনের খেলা ভেস্তে গিয়েছিল নিম্নচাপের বৃষ্টিতে। প্রথম দিনেই কিউইদের ৫ রানের খরচায় ৫ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখাচ্ছিল সফরকারীদের সামনে বড় লক্ষ্য ছুড়ে দেওয়ার।

কিন্তু তৃতীয় দিনে এসে সে স্বপ্ন ভেঙে চৌচির হয়েছে গ্লেন ফিলিপসের হাতে। উইকেটের এক প্রান্ত আগলে ধরে সফরকারীদের নিয়ে গেছেন লিডের পথে। ৮ রানের লিড মিললেও কিউইদের জন্য স্বভাবতই এটি বিশাল অর্জন।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ১৭২ রানের জবাবে ১৮০ রানের পুঁজি নিয়ে থামে কিউইদের ইনিংসের চাকা। ৮ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিন শেষে স্বাগতিকরা পুঁজি পেয়েছে ২ উইকেটের খরচায় ৩৮ রানের। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের লিড ৩০ রানের।

শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায় দিনের খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও টানা বৃষ্টির কারণে আউটফিল্ড শুকাতে দেরি হওয়ায় দুই দলের ক্রিকেটাররা মাঠে নামেন দুপুর ১২টায়।

টানা বৃষ্টির কারণে হোম অব ক্রিকেটের উইকেট খানিকটা ভেজা থাকায় শুরু থেকেই স্পিন আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু টাইগারদের সে পরিকল্পনা খুব বেশি কাজে দেয়নি। ভেজা উইকেটের সুবিধা নিতে পারেননি তাইজুল-মিরাজরা।

টাইগার স্পিনারদের ব্যর্থতার সুযোগটা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগান ড্যারিল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপস। দুজনই উইকেটে থিতু হয়ে বসে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন দলকে। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে রীতিমতো শঙ্কায় ফেলে দিয়েছিলেন দুজন বাংলাদেশকে।

তবে ইনিংসের ২২তম ওভারে মিচেলকে ফিরিয়ে বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ানো ৪৯ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি ভাঙেন নাঈম হাসান। মাঠ ছাড়ার আগে মিচেলের ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান।

খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি মিচেল স্যান্টনারও। মাত্র ১ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।

ব্যাক টু ব্যাক দুই উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দিলেও আটে নামা কাইল জেমিসনের দুর্দান্ত সঙ্গ কাজে লাগিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন ফিলিপস। ২৮ বলে ২০ রান করে কাইল বিদায় নেওয়ার পর সাউদিকে সঙ্গী বানান ফিলিপস।

৭২ বলে ৮৭ করে শরিফুলের শিকার বনে ফিলিপসের মাঠ ছাড়ার পর আর এক রানও যোগ করা সম্ভব হয়নি সাউদি ও অ্যাজাজ প্যাটেলের পক্ষে। ১৮০ রানের থেমে যেতে হয় সফরকারীদের। আর সেই সুবাদে তারা লিড পায় ৮ রানের।

৮ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু শুরুতেই বড়সড় হোঁচট খেতে হয় স্বাগতিকদের। উইকেটে এসেই দলকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন মাহমুদুল হাসান জয়। ইনিংসের প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। অ্যাজাজ প্যাটেলের বলে স্লিপে ক্যাচ দেওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২ রান।

প্রথম ওভারে জয়কে হারানোর পর দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু তাকে উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি সাউদি। সাউদির অফ স্টাম্পের বাইরের ফুল লেন্থের বল ইনসাইড আউট করে মিড অফের ওপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন, তবে দূরত্ব কিংবা উচ্চতা কিছুই পাননি। ফলে ১৫ রান করে মিড অফে উইলিয়ামসনের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।

এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধ করতে বাধ্য হন আম্পায়াররা। প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করেও খেলা শুরু করার পরিস্থিতি না আসায় বিকেল সোয়া চারটায় সমাপ্তি ঘোষণা করা হয় দিনের খেলার।

প্রথম দিনেই চালকের আসনে থাকলেও তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ চলে যায় প্যাসেঞ্জারের আসনে। যেখানে বড় লিড ছুড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল, সেখানে উল্টো পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে স্বাগতিকরা।

লিড না পেলেও তাতে কোনো আক্ষেপ নেই টাইগারদের। অন্তত খালি চোখে দিন শেষে তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বলছিল এমনটাই। তবে লিড পেলে খারাপ হতো না বলে জানিয়েছেন স্পিনার নাঈম হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে নাঈম বলেন, ‘তারাও তো ক্রিকেট খেলতে এসেছে, তাই না? একটা পার্টনারশিপ তো হতেই পারে। যে কেউ একজন ভালো খেলতে পারে। ও ভালো করেছে, তাই লিড নিতে পেরেছে। লিড পেলে ভালো হতো। আল্লাহর রহমতে এখন আমরা ৩০ রান লিডে আছি। ভালো ব্যাটিং করলে ইনশাল্লাহ একটা ভালো স্কোর হবে। টোটাল যা-ই হোক, আমরা ফাইট করে ইনশাল্লাহ জিতব।’

চতুর্থ দিন ব্যাট হাতে পারফর্ম দেখিয়ে ভালো কিছু করে দেখাবে বাংলাদেশ, এমনই আশাবাদ ব্যক্ত করেন নাঈম।

তিনি বলেন, ‘বোলিং ঝামেলা হচ্ছে না। প্রথম দিনের তুলনায় আজ উইকেট একটু ভালো ছিল ব্যাটিংয়ের জন্য। আমরা যদি একটা ভালো স্কোর দাঁড় করাতে পারি, তাহলে ইনশাল্লাহ জিতব। আমরা এখন ম্যাচে এগিয়ে আছি। এটা ধরে রাখতে হবে। যতক্ষণ ভালো ব্যাট করব, ততক্ষণ ভালো হবে।’


এগিয়ে থেকে তৃতীয় দিন শেষ করল বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৭:৫৬
বাসস

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ৩০ রানে এগিয়ে স্বাগতিক বাংলাাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে তৃতীয় দিন শেষে ২ উইকেটে ৩৮ রান করেছে টাইগাররা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ১৭২ রানের জবাবে ১৮০ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। বৃষ্টি ও আলো স্বল্পতার কারণে আজ তৃতীয় দিন ৩২ দশমিক ৩ ওভার খেলা হয়েছে।

বৃষ্টির কারণে গতকাল দ্বিতীয় দিন মাঠেই নামতে পারেনি দুদলের খেলোয়াড়রা। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিনই অলআউট হয় বাংলাাদেশ। জবাবে দিন শেষে ৫ উইকেটে ৫৫ রান করেছিলো নিউজিল্যান্ড। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ১১৭ রানে পিছিয়ে ছিলো কিউইরা। ড্যারিল মিচেল ১২ গ্লেন ফিলিপস ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। বৃষ্টির কারণে দ্বিতীয় দিনের খেলা পরিত্যক্ত হয়। আজ তৃতীয় দিনের শুরুতে মাঠ ভেজা থাকায় দুপুর ১২টায় খেলা শুরু হয়। মিচেলকে ১৮ রানে বিদায় করে বাংলাদেশকে দিনের প্রথম সাফল্য এনে দেন স্পিনার নাইম হাসান। পরের ওভারে স্যান্টনারকেও ব্যক্তিগত ১ রানে শিকার করেন নাইম। প্রথম স্লিপে স্যান্টনারের ক্যাচ নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

৯৭ রানে সপ্তম উইকেট পতনের পর কাইল জেমিসনকে নিয়ে রানের চাকা সচল করেন ফিলিপস। মারমুখী ব্যাটিংয়ে ৩৮ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ফিলিপস। এরপর জুটিতেও হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন ফিলিপস-জেমিসন। জুটিতে হাফসেঞ্চুরি আসার পর তাদের বিচ্ছিন্ন করেন পেসার শরিফুল ইসলাম। ইনিংসের প্রথম ওভার বল করার পর ৩৩তম ওভারে দ্বিতীয়বারের মতো আক্রমনে এসেই তুলে উইকেট নেন শরিফুল। প্রথম স্লিপে শাহাদাতের দারুন ক্যাচে শরিফুলের শিকার হন ৩টি চারে ২০ রান করা জেমিসন। ফিলিপসের সাথে ৫৩ বলে ৫৫ রান যোগ করেন জেমিসন।

এরপর অধিনায়ক টিম সাউদিকে নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে লিড এনে দেন ফিলিপস। ৩৬তম ওভারে ফিলিপসকেও বিদায় করে নিউজিল্যান্ডকে বড় লিড নেওয়া সুযোগ নষ্ট করেন দেন শরিফুল। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৭২ বলে ৮৭ রান করে আউট হন ফিলিপস। দলীয় ১৮০ রানে নবম ব্যাটার হিসেবে ফিলিপস আউট হবার ৩ বল পর ১৮০ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। শেষ ব্যাটার হিসেবে সাউদিকে ১৪ রানে শিকার করেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের মেহেদি হাসান মিরাজ ৫৩ রানে ও তাইজুল ইসলাম ৬৪ রানে ৩টি করে এবং শরিফুল ইসলাম ১৫ রানে ও নাইম হাসান ২১ রানে ২টি করে উইকেট নেন। প্রথম ইনিংসে ৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই স্পিনার দিয়ে শুরু করে সাফল্য পায় নিউজিল্যান্ড। স্পিনার আজাজ প্যাটেলের বলে স্লিপে মিচেলকে ক্যাচ দিয়ে ২ রানে বিদায় নেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। প্রথম ওভারে জয়কে হারানোর পর দ্বিতীয় ওভারেই লিড নেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় উইকেটে আরেক ওপেনার জাকির হাসানকে নিয়ে জুটি গড়ার পথে ছিলেন শান্ত। কিন্তু অষ্টম ওভারে সাউদির বলে ড্রাইভ দিয়ে মিড অফে কেন উইলিয়ামসনকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ২টি চারে ১৫ রান করা তিনি। অষ্টম ওভারের পঞ্চম বলে ৩৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতন হয় বাংলাদেশের। ঐ ওভারের শেষ বলের পর দুপুর ২টা ৪৬ মিনিটে আলো স্বল্পতায় বন্ধ হয় খেলা। পরবর্তীতে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বিকেল ৪টা ১৩ মিনিটে দিনের নির্ধারিত সময়ের ৬৭ মিনিট আগেই শেষ হয় খেলা।

জাকির ১৬ ও মোমিনুল শূণ্য হাতে অপরাজিত আছেন। নিউজিল্যান্ডের প্যাটের ও সাউদি ১টি করে উইকেট নেন।

স্কোর কার্ড : (টস-বাংলাদেশ)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ১৭২/১০, ৬৬.২ ওভার (মুশফিক ৩৫, শাহাদাত ৩১, ফিলিপস ৩/৩১)
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস (প্রথম দিন শেষে ৫৫/৫, ১২.৪ ওভার) :
লাথাম ক নুরুল ব তাইজুল ৪
কনওয়ে ব মিরাজ ১১
উইলিয়ামসন ব শাহাদাত ব মিরাজ ১৩
নিকোলস ক শরিফুল ব তাইজুল ১
মিচেল ক মিরাজ ব নাইম ১৮
ব্লান্ডেল এলবি ব মিরাজ ০
ফিলিপস ক নুরুল ব শরিফুল ৮৭
স্যান্টনার ক শান্ত ব নাইম ১
জেমিসন ক শাহাদাত ব শরিফুল ২০
সাউদি ক মিরাজ ব তাইজুল ১৪
প্যাটেল অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (বা-৫, লে বা-৫, ও-১) ১১
মোট (অলআউট, ৩৭.১ ওভার) ১৮০
উইকেট পতন : ১-২০ (কনওয়ে), ২-২২ (লাথাম), ৩-৩০ (নিকোলস), ৪-৪৬ (উইলিয়ামসন), ৫-৪৬ (ব্লান্ডেল), ৬-৯৫ (মিচেল), ৭-৯৭ (স্যান্টনার), ৮-১৫২ (জেমিসন), ৯-১৮০ (ফিলিপস), ১০-১৮০ (সাউদি)।

বাংলাদেশ বোলিং :
শরিফুল : ৪-১-১৫-২ (ও-১),
মিরাজ : ১১-১-৫৩-৩,
তাইজুল: ১৬.১-০-৬৪-৩,
নাইম: ৪-০-২১-২,
মোমিনুল: ২-০-১৭-০।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস :
জাকির অপরাজিত ১৬
জয় ক মিচেল ব প্যাটেল ২
শান্ত ক উইলিয়ামসন ব সাউদি ১৫
মোমিনুল অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (বা-৪, লে বা-১) ৫
মোট (২ উইকেট, ৮ ওভার) ৩৮
উইকেট পতন : ১-৩ (জয়), ২-৩৮ (শান্ত)।
নিউজিল্যান্ড বোলিং :
প্যাটেল : ৪-০-১৩-১,
স্যান্টনার : ২-০-১২-০,
সাউদি : ২-০-৮-১।


বিসিএল: চট্টগ্রামে নাসুম ঘূর্ণি, সিলেটে দাপুটে বৃষ্টি

আপডেটেড ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৩:৩০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সাউথ জোন ও ইস্ট জোনের মধ্যকার তৃতীয় দিনের খেলা জমে উঠেছিল সাউথ জোনের দুই ব্যাটার ফজলে মাহমুদ ও মোহাম্মদ মিঠুন মিলে। নর্থ জোনের করা ৪০২ রানের জবাবটা এই দুই ব্যাটার দিচ্ছিলেন বেশ ভালোভাবেই। কিন্তু সাউথ জোনের কপালে সেই সুখ বেশিক্ষণ সয়নি নাসুম ঘূর্ণির কারণে।

মিঠুনকে ফিরিয়ে ৯০ রানের জুটি ভেঙে দিনের শুরুতেই ইস্ট জোনকে ব্রেক থ্রু এনে দেন বাঁহাতি এই অর্থোডক্স স্পিনার। নাসুমের এনে দেওয়া ব্রেক থ্রু কাজে লাগিয়ে সাউথ জোনের একের পর এক উইকেট তুলে আনতে থাকেন রেজাউর রহমান। পুরোনো বলে বিধ্বংসীরূপে আবির্ভূত হয়ে একে একে তুলে নেন সাউথ জোনের ফজলে মাহমুদ, মার্শাল আইয়ুব, আফিফ হোসেন ও মেহেদী হাসানের উইকেট। আর তাতেই খেই হারিয়ে ফেলে মিঠুনের সাউথ জোন।

এরপর বৃষ্টিবাধায় খেলা থামার আগে ও পরে সাউথ জোনের বাকি চার উইকেট ঝুলিতে পুরে পাঁচ উইকেটের কোঠা পূরণের পাশাপাশি সাউথ জোনের ইনিংসের যবনিকাপাত করেন নাসুম। তাতে করে দুর্দান্ত শুরুর পরও মাত্র ২৮২ রান করেই থেমে যায় তাদের ইনিংসের চাকা।

বড় লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরতে হয় ইস্ট জোনের দুই ওপেনার ও এক টপ অর্ডারসহ মোট তিন ব্যাটারকে। পাঁচ ওভার ব্যাটিং করে কেবল এক রানের পুঁজি নিয়ে দিন শেষ করতে হয় সাউথ জোনকে।

এদিকে সিলেটে দিনের অপর খেলা তৃতীয় দিনে মাঠেই গড়ায়নি বৃষ্টি বাধায়। একটি বলও গড়ায়নি মাঠে। বল গড়ানোর আগেই সমাপ্তি ঘোষণা করা হয় তৃতীয় দিনের।

তৃতীয় দিন শেষে সেন্ট্রাল জোনের করা ২৮১ রানের জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩৬ রানের পুঁজি নিয়েছে নর্থ জোন।


রেকর্ডের বরপুত্র লারার রেকর্ড ভাঙবেন গিল!

আপডেটেড ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৩:৩০
ক্রীড়া ডেস্ক

ক্রিকেটপ্রেমী কিংবা যেসব মানুষ অল্প একটু হলেও ক্রিকেটের খোঁজ রাখেন, তারা ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ব্রায়ান লারার নাম শুনেননি এমনটা হতে পারে না। হ্যাঁ, সাবেক এই ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক এতটাই বিখ্যাত যতটা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যপ্রেমীদের মাঝে বিখ্যাত। নিজের ১৬ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে লারা এমন অসংখ্য ইনিংস খেলেছেন, যা এখনো ৯০-এর দশকের ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে গেঁথে আছে।

তাহলে লারার সেরা ইনিংস কোনটি? এমন প্রশ্ন করা হলে অবশ্যই বেশির ভাগ ক্রিকেটবোদ্ধা বেছে নেবেন ২০০৪ সালে অ্যান্টিগায় খেলা তার ৪০০ রানের অপরাজিত ইনিংস। এই ইনিংসটি এখন পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। অবশ্য এটিকে আপনি চাইলে নির্দ্বিধায় টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ইনিংস হিসেবেও আখ্যায়িত করতে পারেন।

লারার এই অপরাজিত ৪০০ রানে মহাকাব্যিক ইনিংস আইসিসির ‘হল অব ফেমেও’ আছে প্রথম সারির দিকে। অবশ্য প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসটি আছে লারার নামেই। হ্যাঁ, ঠিকই ধরতে পেরেছেন। ১৯৯৪ সালে ইংলিশ কাউন্টি ক্লাব ওয়ারউইকশায়ারের হয়ে ডারহামের বিপক্ষে ব্রায়ান লারার ৫০০ রানের অপরাজিত সেই ইনিংসটির কথাই বলছি।

২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে লারার অবসর নেওয়ার পর থেকে অনেক ব্যাটার এসেছেন আবার চলেও গিয়েছেন। কিন্তু কেউই তাঁর এ দুই রেকর্ড ভাঙতে পারেননি। তবে লারা মনে করেন, তাঁর এ দুই অবিশ্বাস্য রেকর্ড ভাঙতে পারেন বর্তমান ভারতীয় দলের ওপেনার শুভমান গিল। ভারতীয় এক গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথাই বলেন।

লারা বলেন, ‘আমার দুটি রেকর্ডই ভাঙতে পারেন শুভমান গিল। বর্তমান প্রজন্মের অন্যতম প্রতিভাবান ব্যাটার হচ্ছেন গিল। সামনের দিনগুলোতে সে ক্রিকেটে রাজত্ব করবে। আশা করি, সে আরও বড় রেকর্ড ভাঙতে যাচ্ছে।’

চলমান বছরের ব্যাট হাতে বেশ দারুণ ছন্দেই আছেন গিল। বলতে গেলে এ বছরই এখন পর্যন্ত তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সেরা বছর। নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ১২৮, টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা ১২৬ রানের ইনিংস কিংবা ওয়ানডে ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি, ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই গিলের সেরা ইনিংস এসেছে এ বছরই।

এমনকি সদ্য শেষ হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপেও ৩৮.২৫ গড় এবং ১০৪ স্ট্রাইক রেটে গিল রান করেছেন ২৭০। এ ছাড়া চলতি বছর তিন ফরম্যাট মিলিয়ে তার রানই সর্বোচ্চ ২১১৮। যে কারণে শুধু লারা না, বরং বেশির ভাগ ক্রিকেটবোদ্ধাই গিলকে ক্রিকেটের এক ভবিষ্যৎ সুপারস্টার হিসেবে ধরে নিয়েছেন।

সে হিসেবে গিল ব্রায়ান লারার রেকর্ডগুলো ভাঙতে পারেন কি পারেন না, তা সময়ই বলে দেবে। কিন্তু আসন্ন দিনগুলোতে গিল যে নিজের স্টাইলিশ ব্যাটিং দিয়ে ক্রিকেট অনুরাগীদের মন ভোলাবেন তা অন্ততপক্ষে আশা করা যেতেই পারে।


কিং মিডফিল্ডার কাকা

আপডেটেড ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৩:০৮
ক্রিড়া ডেস্ক

পুরো নাম- রিকার্ডো আইজেকসন ডস সান্তোস লেইতে

জন্ম- ২২ এপ্রিল, ২০২৩

জন্মস্থান- গামা, ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট, ব্রাজিল

রাশি- বৃষ রাশি

প্রিয় খেলা- ফুটবল

প্রিয় খাবার- গ্রিলজাতীয় খাবার

প্রিয় রঙ- সাদা, কালো, ধূসর

প্রিয় ফুটবলার- রাই সুজা

প্রিয় পানীয়- পানি

প্রিয় গাড়ি- অডি কিউ ফাইভ, অডি কিউ সেভেন

প্রিয় ফুটবল দল- ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দল

প্রিয় কোচ/ম্যানেজার- কার্লো আনচেলত্তি

প্রিয় অভিনেত্রী- জুলিয়া রবার্টস

প্রিয় গান- প্রোমেসা

প্রিয় বই- বাইবেল


মিস্টার ওয়ান কোহলিকে বাদ দিয়েই বিশ্বকাপের ছক আঁকছে ভারত!

আপডেটেড ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৩:২৯
ক্রীড়া ডেস্ক

ঘরের মাঠে সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে রানের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন ভারতের টপ অর্ডার ব্যাটার বিরাট কোহলি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে সংগ্রহ করেছিলেন ৭৬৫ রান। একই সঙ্গে নিজেকে নিয়ে যান অনন্য এক উচ্চতায়।

কিন্তু যদি হুট করেই গুঞ্জন ওঠে তারকা এই ক্রিকেটারকে রেখেই আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরিকল্পনা করছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই, তবে সেটি স্বভাবতই হেসে উড়িয়ে দেবেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।

তবে এমনই এক গুঞ্জন উঠেছে ভারতের গণমাধ্যমে। বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের জোর দাবি, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে যৌথভাবে আয়োজিত শর্টার ফরম্যাটের বিশ্বকাপের স্কোয়াডে কোহলির জায়গাটাই অনিশ্চিত।

শুধু তা-ই নয়, এমনও গুঞ্জন রয়েছে যে, ক্রিকেটের শর্টার ফরম্যাটকেই বিদায় জানিয়ে দিতে পারেন তারকা এই ক্রিকেটার। যদিও সব কিছুই এখনো গুঞ্জনের ভেতরই সীমাবদ্ধ রয়েছে।

তবে গুঞ্জনের পারদ আরও বেড়ে গেছে যখন কিনা বিসিসিআইয়ের কর্তারা হুট করেই পাঁচ ঘণ্টার লম্বা এক সভা করার কারণে। সম্প্রতি সেই ম্যারাথন সভায় বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা, নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান অজিত আগারকার ও হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড়।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিনটি করে মোট ছয়টি টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পাবে ভারত। এদিকে কোহলি, রোহিত এবং বুমরাহ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সাদা বলের ক্রিকেট থেকে বিশ্রাম চেয়েছেন। আর তাতে করে এই তিন ক্রিকেটার বিশ্বকাপের আগে কেবল তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে থাকবেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানা যায় যেহেতু কোহলি ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে শর্টার ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত মাঠে নামেননি, সে কারণেই কেবল তিন ম্যাচের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে নিয়ে বাজি ধরতে চায় না বোর্ড। যদিও একই অবস্থা রোহিত শর্মারও।

কিন্তু অধিনায়কের কোটায় বিসিসিআইয়ের বিশেষ বিবেচনায় আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তার জায়গাটা নিশ্চিত- সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন কোহলি শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের মিশনে সঙ্গী হবেন কি না সেটি নির্ভর করছে বোর্ডের সঙ্গে ডানহাতি এই ব্যাটারের চূড়ান্ত আলোচনার পর।

কোহলিকে যদি শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের জন্য বিবেচনায় রাখা না হয়, তবে কে খেলবেন নম্বর তিনে, সেটি এখন থেকেই ভেবে রেখেছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড। বোর্ড ও টিম ম্যানেজমেন্ট তিন নম্বরে একজনকে চান যিনি কিনা শুরু থেকেই মারকুটে খেলায় পটু। আর সেদিক বিবেচনায় তাদের পছন্দ ঈশান কিষাণ।


বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা

আপডেটেড ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২১:১৯
বাসস

মিরপুরে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে।
ভোর থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। এসময় পুরো মাঠ কভার দিয়ে ঢাকা ছিলো। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি আরও বাড়তে থাকলে । বেলা ১টা ৫৪ মিনিটে দ্বিতীয় দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষনা করেন ম্যাচ কর্মকর্তারা।

আগামীকাল তৃতীয় দিনের খেলা শুরু হবে নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট আগে, অর্থাৎ সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে।
গতকাল টেস্টের প্রথম দিন টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। স্পিন সহায়ক পিচে ব্যাট হাতে নেমে ৬৬ দশমিক ২ ওভারে ১৭২ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে মুশফিকুর রহিম ৩৫, শাহাদাত হোসেন ৩১, মেহেদি হাসান মিরাজ ২০, মাহমুদুল হাসান জয় ১৪ ও নাইম হাসান অপরাজিত ১৩ রান করেন। নিউজিল্যান্ডের দুই স্পিনার মিচেল স্যান্টনার ও গ্লেন ফিলিপস ৩টি করে উইকেট নেন।

এরপর দিনের শেষ সেশনে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ স্পিনারদের ঘুর্ণির মুখে পড়ে ৪৬ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। আলো স্বল্পতার কারনে দিনের খেলা আগেভাগে শেষ হওয়ায় বাকী সময়ে আর কোন উইকেট হারায়নি নিউজিল্যান্ড। দিন শেষে ১২ দশমিক ৪ ওভারে ৫ উইকেটে ৫৫ রান করে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের মিরাজ ১৭ রানে ৩টি ও তাইজুল ২৯ রানে ২ উইকেট নেন।


সাকিব-মিরাজকে ছাড়িয়ে গেলেন তাইজুল

ছবি: ক্রিকইনফো
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

আঙুলের ইনজুরির কারণে দেশের ক্রিকেটের পোস্টারবয় সাকিব আল হাসান নেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজটিতে। কিন্তু বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারের অভাবটা ব্যাট হাতে না পারলেও বল হাতে বিন্দুমাত্র টের পেতে দেননি জাতীয় দলের আরেক বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম।

প্রথম টেস্টে কিউইদের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ের নেপথ্যে থাকা তাইজুল একাই বাগিয়ে নিয়েছিলেন ১০ উইকেট। আর তাতেই টেস্ট বোলারদের র‍্যাঙ্কিংয়ে লম্বা লাফ দিয়েছেন এই টাইগার স্পিনার।

সদ্য হালনাগাদকৃত র‍্যাঙ্কিংয়ে আট ধাপ এগিয়েছেন তাইজুল। পেছনে ফেলেছেন সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজকে। বিদেশিদের ভেতর পেছনে ফেলেছেন এনরিক নরকিয়া, নেইল ওয়াগনার, কেমার রোচ, মোহাম্মদ শামি, মার্ক উডের মতো বোলারদের।

বর্তমানে তাইজুলের রেটিং পয়েন্ট ৭০৮। অবস্থান করছেন র‍্যাঙ্কিংয়ের ১৪ নম্বরে।

র‍্যাঙ্কিংয়ের ২৩ নম্বরে দ্বিতীয় বাংলাদেশি স্পিনার হিসেবে অবস্থান মিরাজের। ৫৯২ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে তিনি এগিয়েছেন দুই ধাপ। দুই ধাপ এগিয়েছেন সাকিব আল হাসানও। বর্তমানে তার রেটিং পয়েন্ট ৫৭১। অবস্থান করছেন র‍্যাঙ্কিংয়ের ২৭ নম্বরে।

এদিকে ৮৭৯ পয়েন্ট নিয়ে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছেন ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন আশ্বিন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে বহাল তবিয়তেই রয়েছেন কাগিসো রাবাদা ও রবীন্দ্র জাদেজা। এরপর যথাক্রমে রয়েছেন প্যাট কামিন্স, শাহীন শাহ আফ্রিদি ও অলি রবিনসন (যৌথভাবে পঞ্চম), জেমস এন্ডারসন, নেইথন লিয়ন। সবাই এগিয়েছেন এক ধাপ করে।

র‍্যাঙ্কিংয়ের ৯ নম্বরে থাকা লঙ্কান বোলার প্রবাথ জয়সুরিয়া এগিয়েছেন দুই ধাপ। আর তিন ধাপ এগিয়ে সেরা দশে ঢুকে পড়েছেন অজি পেসার মিচেল স্টার্ক।


মিরপুরে উইকেটবৃষ্টি: প্রথম দিনেই চালকের আসনে বাংলাদেশ

উইকেট নেয়ার পর মিরাজের উল্লাস। ছবি: এপি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কাজী নাহিয়ান আরেফীন

আগে থেকেই ধারণা ছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেটটি হবে স্পিনবান্ধব। হয়েছেও শেষ পর্যন্ত সেটি। কিন্তু শের-ই-বাংলার ‘ধানক্ষেত’-খ্যাত এই স্লো আর লো উইকেটে ব্যাটারদের ব্যাট করতে এমন বেগ পেতে হবে- সেটি হয়তো ধারণা করতে পারেননি কেউই।

স্পিনারদের একচেটিয়া রাজত্ব ও ব্যাটারদের উইকেটে কেবল টিকে থাকার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টার দিন পতন ঘটেছে মোট ১৫ উইকেটের।

উইকেটবৃষ্টির দিনে কেবল সোয়া তিন সেশন ব্যাট করে মাত্র ১৭২ রানেই থেমে যায় স্বাগতিকদের প্রথম ইনিংসের চাকা। তবে কিউইরা ব্যাট করতে নেমে যে খুব স্বস্তির দিন পার করেছে, সেটি বলা যাবে না কোনোভাবেই। কেননা দিন শেষে কেবল ৫৫ রান স্কোরবোর্ডে তুলতে সক্ষম হয়েছে তারা। বিনিময়ে প্রথম দিন তাদের বিলিয়ে দিতে হয়েছে পাঁচ পাঁচটি উইকেট।

এক তাইজুল ও মিরাজেই ধসে যায় কিউই ব্যাটিং লাইন-আপ। আর সে সুবাদে ১১৭ রানে এগিয়ে থেকে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ।
আলোকস্বল্পতার কারণে প্রথম দিন কিউইরা খেলতে সক্ষম হয় ১২.৪ ওভার। ১২ বলে ১০ রান করে অপরাজিত রয়েছেন ড্যারিল মিচেল। উইকেটের অপর প্রান্তে ৬ বলে ৫ রান করে তাকে সঙ্গ দেন গ্লেন ফিলিপস।

হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে দিনের শুরু থেকেই ছিল বাজে আবহাওয়া ও আলোকস্বল্পতার চোখ রাঙানি। মেঘলা আবহাওয়ার কারণে দিনের শুরু থেকেই জ্বালিয়ে রাখা হয়েছিল ফ্ল্যাডলাইট। সেই সঙ্গে ছিল থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।

এমন বিরূপ আবহাওয়ার ভেতর টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি। ব্যাট করতে নেমে শুরুতে কিউই পেসতোপ সামলে নিয়ে দেখেশুনে খেলতে থাকলেও খুব বেশিক্ষণ সতর্ক থাকতে পারেননি স্বাগতিক ব্যাটাররা।

বোলিং আক্রমণে স্পিনার আসার পর টাইগাররা ফেরে স্বরূপে। স্বাগতিকদের শিবিরে শুরু হয় প্রথাগত ও নিজেদের ঐতিহ্যবাহী দৃষ্টিকটু ও বাজেভাবে অকাতরে উইকেট বিলিয়ে সাজঘরে ফেরার মিছিল। যার শুরুটা হয় জাকির হোসেনকে দিয়ে।

উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে মাত্র ৮ রান করেই সাজঘরের পথ ধরতে হয় এই ওপেনারকে। পরের ওভারে ফেরেন আরেক ওপেনার জয়ও। অ্যাজাজ প্যাটেলের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটেন ডানহাতি এই ব্যাটার। মাঠ ছাড়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৪ রান।

দ্রুত দুই ওপেনারকে হারিয়ে হালভাঙা তরীর মতো দিশাহারা বাংলাদেশ খেই ফিরে পাওয়ার জন্য তাকিয়ে ছিল অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও অভিজ্ঞ মুমিনুল হকের দিকে। কিন্তু স্যান্টনার ও অ্যাজাজ প্যাটেলের সুবাদে সেটি হয়ে ওঠেনি। দলীয় ৪১ রানের মাথায় মুমিনুল (৫) ফেরার পরের ওভারেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ৯ রানে মাঠ ছাড়তে হয় শান্তকেও। আর তাতেই ৪৭ রানে চার টপ অর্ডার হারিয়ে অল্পতেই গুটিয়ে যাওয়ার চোখ রাঙানি দেখতে থাকে স্বাগতিকরা।

তবে সেই চাপ সামলে নিয়ে দলকে অনেকটাই ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনেন মুশফিকুর রহিম ও শাহাদাত হোসেন দিপু। কিন্তু দলটা যে বাংলাদেশ। ভালো সময় চলতে থাকলেও জোর করে খারাপ সময় নিয়ে আসাই যেন তাদের লক্ষ্য থাকে।

আর সে কারণেই ইনিংসের ৪১তম ওভারে বল ঠেকানোর পর সেটি হাত দিয়ে ধরে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন মুশফিক। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে এমন আউটের কীর্তি গড়েছেন মুশি। একই সঙ্গে ছেলেদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১২তম ব্যাটার হিসেবে এমন অদ্ভুতভাবে আউট হন মুশফিক। মাঠ ছাড়ার আগে ব্যক্তিগত খাতায় যোগ করেন ৩৫ রান।

মুশির বিদায়ের পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে স্বাগতিকদের ব্যাটিং লাইন-আপ। দুই সেশন ব্যাট করে দলীয় সংগ্রহ ১৪৯ রানে পৌঁছানোর পর তৃতীয় সেশনে কেবল ২৩ রান যোগ করা সম্ভব হয় স্বাগতিক ব্যাটারদের পক্ষে। আর সে সুবাদে প্রথম ইনিংসে হাথুরুর শিষ্যদের পুঁজি দাঁড়ায় সবগুলো উইকেট হারিয়ে ১৭২ রান।

কিউইরা স্পিন দাপট দেখালেও বল হাতে টাইগার স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলামও ছিলেন আগ্রাসী ভূমিকায়। দলীয় ২২ রানের ভেতরই এই দুই স্পিনার তুলে নেন টম ল্যাথাম এবং ডেভন কনওয়ের উইকেট।

মাত্র ১ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আউট হন অফফর্মে থাকা ব্যাটার হেনরি নিকোলাসও। এরপর ম্যাচের দ্বাদশ ওভারে জোড়া আঘাত হানেন মিরাজ, ফেরান আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান কেন উইলিয়ামসন এবং কিউই উইকেটকিপার ব্যাটার টম ব্লান্ডেলকে।

এরপর আলোকস্বল্পতায় ১৩তম ওভারে দিন ঘোষণা করা হয়। আর দিন শেষে ৫ উইকেটের খরচায় ৫৫ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারীরা।


banner close