শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

আইপিএলকে সাকিব-লিটনের ‘না’

আপডেটেড
৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৫:২২
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৫:২১

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) মানেই ক্রিকেটভক্তদের পাশাপাশি বিশ্বের ক্রিকেটারদের ভেতরও চলে উন্মাদনা। অর্থের ঝনঝনানির কারণে ক্রিকেটাররা মুখিয়ে থাকে টুর্নামেন্টের ড্রাফটে নিজেদের নাম লেখাতে। ড্রাফটের পর তীর্থের কাকের মতো বসে থাকে দল পাওয়ার আশায়।

প্রতি বছরের মতো আইপিএলের আসন্ন আসরের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ইতোমধ্যেই। আগামী আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফটও সম্পন্ন হয়েছে। ১৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন আসরের নিলাম। আসরকে সামনে রেখে বিশ্বের ১ হাজার ১১৬ জন ক্রিকেটার নাম লিখিয়েছেন প্লেয়ার্স ড্রাফটে।

বাংলাদেশ থেকে ড্রাফটে জায়গা করে নিয়েছেন ৬ ক্রিকেটার। এরা হলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ।

আসন্ন এই আসর থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের ভেতর সবচেয়ে বেশি বার আইপিএলে খেলা সাকিব আল হাসান। একই পথে হেঁটেছেন লিটন কুমার দাসও। কিছুদিন আগেই কলকাতা নাইট রাইডার্স সম্পর্ক ছিন্ন করেছে এ দুজনের সঙ্গে। সে কারণেই ড্রাফটে নিজেদের নাম দেননি সাকিব-লিটন। সাকিব-লিটনের মতো আসন্ন আইপিএলকে ‘না’ বলেছেন জোফরা আর্চার ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।

বাংলাদেশি ছয় ক্রিকেটারের ভেতর সর্বাধিক ভিত্তিমূল্য মুস্তাফিজের। কাটার মাস্টারের বেইজ ভ্যালু ধরা হয়েছে ২ কোটি রুপি।

এদিকে প্লেয়ার্স ড্রাফটে বরাবরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি নাম লিখিয়েছে ভারতের ক্রিকেটাররা। ড্রাফটে নাম নিশ্চিত করা ১ হাজার ১১৬ ক্রিকেটারের ভেতর ৮৩০ জনই ভারতীয়। বিদেশি রয়েছেন ৩৩৬ জন।

এবারের ড্রাফটে জায়গা করে নেয়া ৯০৯ ক্রিকেটারের কোনো অভিজ্ঞতাই নেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার।

সর্বোচ্চ ভিত্তিমূল্যে দুই কোটি রুপি ধরা বিদেশি ক্রিকেটাররা হলেন, মুজিব-উর রহমান, শন অ্যাবট, প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড, ট্র্যাভিস হেড, ড্যারিল মিচেল, রাচিন রবীন্দ্র, জশ ইংলিশ, মিচেল স্টার্ক, স্টিভ স্মিথ, মুস্তাফিজুর রহমান, টম ব্যান্টন, হ্যারি ব্রুক, বেন ডাকেট, জেমি ওভারটন, আদিল রশিদ, ডেভিড উইলি, ক্রিস ওকস, লকি ফার্গুসন, জেরাল্ড কোয়েটজে, রাইলি রুশো, রসি ভ্যান ডার ডুসেন ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস।

দেড় কোটি রুপি ভিত্তি ধরা হয়েছে মোহাম্মদ নবি, মইসেস হেনরিকস, ক্রিস লিন, কেইন রিচার্ডসন, ড্যানিয়েল স্যামস, ড্যানিয়েল ওরাল, টম ক্যারান, মার্চেন্ট ডি ল্যাঙ্গ, ক্রিস জর্ডান, ডাওয়িড মালান, টাইমাল মিলস, ফিল সল্ট, কোরি অ্যান্ডারসন, কোলিন মুনরো, জিমি নিশাম, টিম সাউদি, কলিন ইনগ্রাম, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, জেসন হোল্ডার ও শেরফেন রাদারফোর্ডের।

এদিকে এক কোটি রুপি ভিত্তিমূল্য ধার্য করা ক্রিকেটারদের ঘরে আছেন অ্যাশটন এইগার, রিলে মেরেডিথ, ডি’আরকি শর্ট, অ্যাশটন টার্নার, গাস অ্যাটকিনসন, স্যাম বিলিংস, মাইকেল ব্রেসওয়েল, মার্টিন গাপটিল, কাইল জেমিসন, অ্যাডাম মিলনে, ড্যারিল মিচেল, ওয়েইন ফার্নেল, ডোয়েন প্রিটোরিয়াস, আলজেরি জোসেফ, রভম্যান পাওয়েল ও ডেভিড উইজ।

আইপিএলের ১০ ফ্র্যাঞ্চাইজি মোট ৭৭ ক্রিকেটারকে কিনতে পারবেন। এর ভেতর ৩০ জন থাকবেন বিদেশি ক্রিকেটার। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো খেলোয়াড় কেনার পেছনে সব মিলিয়ে ২৬২.৯৫ কোটি ভারতীয় রুপি খরচ করতে পারবে।

বিষয়:

তানজিদের সেঞ্চুরি,​​​​​​​ চট্টগ্রামের সংগ্রহ ১৯২

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ওপেনার তানজিদ হাসানের প্রথম সেঞ্চুরিতে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে বড় সংগ্রহ পেয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ৩৯তম ম্যাচে আজ প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯২ রান করে চট্টগ্রাম। ৬৫ বলে ১১৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তানজিদ।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে খুলনার বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মোহাম্মদ ওয়াসিমকে হারায় চট্টগ্রাম। ১ রান করে খুলনার স্পিনার নাসুম আহমেদের শিকার হন ওয়াসিম।

শুরুতেই সতীর্থকে হারালেও দায়িত্ব নিয়ে চট্টগ্রামের রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন আরেক ওপেনার তানজিদ। দ্বিতীয় উইকেটে সৈকত আলিকে নিয়ে ৩৭ বলে ৫৬ রান যোগ করেন তিনি। জুটিতে ৩টি চারে ১৮ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেসন হোল্ডারের শিকার হন সৈকত।

সৈকতের সাথে হাফ-সেঞ্চুরির জুটির পর তৃতীয় উইকেটে নিউজিল্যান্ডের টম ব্রুসের সাথে ৬১ বলে ১১০ রান তুলেন তানজিদ। এই জুটি গড়ার পথেই ৩২ বলে হাফ-সেঞ্চুরির পর টি-টোয়েন্টিতে প্রথম সেঞ্চুরিও তুলে নেন তানজিদ। এবারের বিপিএলে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরি করতে ৫৮ বল খেলেছেন তিনি। বিপিএলের ইতিহাসে ৩২তম সেঞ্চুরি করলেন তানজিদ।

১৯তম ওভারের প্রথম বলে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার ওয়েন পারনেলের শিকার হওয়ার আগে ৮টি করে চার-ছক্কায় ৬৫ বলে ১১৬ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন বাঁ-হাতি ব্যাটার তানজিদ। এই ইনিংস খেলার পথে চলতি বিপিএলে এ পর্যন্ত ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।

দলীয় ১৭০ রানে তানজিদ ফেরার পর শেষ ১১ বলে ২২ রান যোগ করতে পারে চট্টগ্রাম। ৪ উইকেটে ১৯২ রানের বড় সংগ্রহ পায় চট্টগ্রাম।

২টি চারে ৫ বলে ১০ রান করে আউট হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের রোমারিও শেফার্ড। ২৩ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ব্রুস ৩৬ ও অধিনায়ক শুভাগত হোম ৩ বলে ৭ রানে অপরাজিত থাকেন। খুলনার পারনেল-নাসুম-হোল্ডার ও মুকিদুল ইসলাম ১টি করে উইকেট নেন।

বিষয়:

ঢাকা টেস্ট হেরে অস্বস্তিতে বাংলাদেশ

আপডেটেড ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৮:৩৯
ক্রীড়া প্রতিবেদক

নিজেদের বানানো স্পিনফাঁদে নিজেদেরই আত্মাহুতি দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। বছরের শেষ টেস্টে হারতে হয়েছে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৪ উইকেটে। আর তাতে করে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে।

চলতি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চক্রের শুরুটা জয় দিয়ে করলেও দ্বিতীয় ম্যাচেই বাংলাদেশ ফিরে গেছে তাদের চিরচেনারূপে। কিউই স্পিনবিষ কুরে কুরে খেয়েছে টাইগার ব্যাটারদের। যে কারণে জয়ের সম্ভাবনা দেখিয়ে শুরু করা টেস্টকে বাংলাদেশ নিয়ে গেছে পরাজয়ের দোরগোড়ায়।

কিউইদের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে জিতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম চক্রে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে উঠে এলেও দ্বিতীয় ম্যাচে হেরে বাংলাদেশ নেমে গেছে পয়েন্ট টেবিলের চারে। তবে স্বস্তির কথা এই যে, রেটিং পয়েন্টে আসেনি কোনো পরিবর্তন। প্রথম ম্যাচ জিতে পাওয়া ১২ পয়েন্টই বহাল রয়েছে দ্বিতীয় ম্যাচে হারার পরও।

এদিকে টেবিলে উন্নতি হয়েছে নিউজিল্যান্ডের। ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে উঠে উসেছে কিউইরা। দুটি টেস্টে জয় নিয়ে এখনো শীর্ষে আছে পাকিস্তান। তাদের পয়েন্ট ২৪। দুই টেস্টে একটি করে জয় ও ড্র নিয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ভারত।

তালিকায় পাঁচ থেকে আটে যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা।

এখন পর্যন্ত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুটি চক্র সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম আসরে নিউজিল্যান্ড এবং সর্বশেষ চক্রের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। দুইবারই ভারত ফাইনালে হেরেছে।

২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া আইসিসির এই প্রতিযোগিতার তৃতীয় চক্র চলছে এখন। সব মিলিয়ে ৯ দলের মধ্যে ৬৯টি ম্যাচ শেষে ঠিক হবে বিজয়ীর নাম। এই দৌড় শেষ হবে ২০২৫ সালের জুনে। এরপর টেবিলের এক আর দুইয়ে থাকা দল খেলবে ফাইনাল। তাদের মধ্যে জয়ী দল হবে টেস্ট চ্যাম্পিয়ন।


মাহমুদউল্লাহকে বাদ দেয়ার বিষয়ে যা বলল বিসিবি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১২ আগস্ট, ২০২৩ ১৩:১৩
ক্রীড়া প্রতিবেদক

গতকাল বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের অধিনায়ক ঘোষণা করা হয়। আন্ত-মহাদেশীয় টুর্নামেন্টের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের জন্য শনিবার ঘোষণা করা হয়েছে বাংলাদেশের ১৭ জনের স্কোয়াড। তবে এতে জায়গা হয়নি সাইলেন্ট কিলার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। একই সঙ্গে তার বিশ্বকাপে না যাওয়াটাও যে অনেকাংশে চূড়ান্ত হয়ে গেল। তবে স্কোয়াডে চমক হিসেবে রয়েছেন তরুণ উদ্বোধনী ব্যাটার তানজিদ হাসান তামিম।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে এশিয়া কাপের স্কোয়াড ঘোষণা করেন বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন। এ সময় মাহমুদউল্লাহকে কেনো নেয়া হয়নি সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি।

মাহমুদউল্লাহ যে ১৭ জনের স্কোয়াডে থাকছেন না সেটি আগেই জানিয়ে দেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনও। সাকিবকে অধিনায়ক ঘোষণা করার সময় মাহমুদউল্লাহর ইস্যুটিও উঠে আসে। মূলত টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনার অংশেই ছিলেন না এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার।

মাহমুদউল্লাহকে দলে না নেয়ার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন বলেন, ‘তাকে (মাহমুদউল্লাহ) নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। টিম ম্যানেজমেন্ট ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথম দিকে মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। তারপর অনেক আলোচনা হওয়ার পর টিম ম্যানেজমেন্ট আমাদের কাছে একটা প্ল্যান দেয়। কোন দেশের বিপক্ষে কীভাবে খেলবে, ওই প্ল্যান। ওই চিন্তাভাবনা করেই রিয়াদকে অফ করা হয়েছে। ম্যানেজমেন্টের প্ল্যানটাকে অবশ্যই আমরা ভালো মনে করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওদের সাথে হেড কোচের একটা প্ল্যান করা হয়েছে, দল কীভাবে পরিচালনা করবে, সব আলোচনা করা হয়েছে। আমাদের অধিনায়কের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

মাহমুদউল্লাহ যে বিশ্বকাপের পরিকল্পনা থেকেও অঘোষিতভাবে বাদ পড়েছেন সেটিও এখন পরিষ্কার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা বিশ্বকাপের দল নয়, এশিয়া কাপের দল। সুতরাং আমরা এই মুহূর্তে শুধু এশিয়া কাপ নিয়েই চিন্তাভাবনা করছি। বিশ্বকাপের দল দিই, তারপর এটা নিয়ে আলোচনা হবে। এশিয়া কাপের জন্য টিম ম্যানেজমেন্ট আমাদের যে প্ল্যান দেয়া হয়েছিল— একজন অতিরিক্ত স্পিনার নিয়ে খেলা বা অতিরিক্ত পেস বোলার নিয়ে খেলা, এ ধরণের অনেক আলোচনাই হয়েছে। সাত-আট নম্বরে কারা খেলবে, সেই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।’

তবে মিনহাজুল জানিয়েছেন, নিজেদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে আফিফ হোসেনকে নিয়ে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে দলে ফেরা আফিফ দুই ম্যাচে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে রান করেছেন ৪ ও ০। তবু ১৭ জনের দলে জায়গা হয়েছে এই বাঁহাতির। এ নিয়ে প্রধান নির্বাচকের ব্যাখ্যা, ‘আফিফকে নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। ম্যানেজমেন্ট কেন তাকে চাইছে এসব নিয়ে। তারপরও কিছু কিছু জায়গা আছে, ক্যাপ্টেনের পছন্দ হতে পারে, সেই জায়গায় আমরা তাকে সুযোগ দিয়েছি।’

মাহমুদউল্লাহ বাংলাদেশের সর্বশেষ তিনটি ওয়ানডে সিরিজেও ছিলেন না। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে মাহমুদউল্লাহর উপস্থিতি দেখে মনে হচ্ছিল, এশিয়া কাপের দলে হয়তো জায়গা হবে এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের। কিন্তু তা আর হলো না। মাহমুদউল্লাহকে বাদ দিয়েই আজ ঘোষণা করা হলো এশিয়া কাপের স্কোয়াড।

এদিকে আগামী ৩০ আগস্ট থেকে শুরু হবে এশিয়া কাপ। পাকিস্তান মূল আয়োজক হলেও সহআয়োজক হিসেবে থাকছে শ্রীলঙ্কা। মোট ম্যাচ ১৩টি, শ্রীলঙ্কায় হবে ৯ ম্যাচ। বাকি ৪ ম্যাচ পাকিস্তানে। গ্রুপপর্বে বাংলাদেশ দুটি ম্যাচ খেলবে দুই দেশে— শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যান্ডিতে খেলার পর লাহোরে হবে আফগানিস্তানের সঙ্গে ম্যাচ। দুটি ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ সময় পাবে মাত্র দুদিন। ৩১ আগস্ট নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামবে সাকিব আল হাসানের দল। ৩ সেপ্টেম্বর টাইগারদের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান।


এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে বাংলাদেশের স্কোয়াড

ছবি: ইএসপিএন ক্রিকইনফো
আপডেটেড ১২ আগস্ট, ২০২৩ ১১:৫৪
ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্রিকেটে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই শুরু হবে আগামী ৩০ আগস্ট থেকে। ইতোমধ্যে সবগুলো দল তাদের স্কোয়াড ঘোষণা করে ফেলেছে। বাকি ছিল শুধু বাংলাদেশ। সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে এশিয়া কাপের স্কোয়াড ঘোষণা করেন বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন। বড় এই টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে অনেকটা চমকে দিয়েছেন নির্বাচকরা। অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের যেমন জায়গা হয়নি, তেমনি আলোচনায় না থাকা অনেকে ফিরেছেন দলে। সব মিলিয়ে কী কী রদবদল হলো বাংলাদেশ ওয়ানডে দলে?

গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক করা হয়েছে সাকিব আল হাসানকে। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের অধীনে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে খেলবে টাইগাররা। সাকিব অধিনায়ক হওয়ার পর বাকি ছিল এশিয়া কাপের জন্য দল ঘোষণা করা। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বেঁধে দেয়া সময়ের শেষ দিনে এসে দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ।

দলে প্রথমবার ডাক পেয়েছেন, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। ইমার্জিং এশিয়া কাপে ৪ ম্যাচে ৩ ফিফটির পুরস্কার পেলেন তিনি। বাংলাদেশ দলের মধ্যে তানজিদের রানই ছিল সর্বোচ্চ। এদিকে দলে জায়গা হয়নি সিনিয়র ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। মাহমুদউল্লাহ সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ওয়ানডে খেলেছেন চলতি বছরের মার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। এছাড়া বাদ পড়েছেন রনি তালুকদার ও তাইজুল ইসলাম।

মাহমুদউল্লাহকে দলে না নেয়ার বিষয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন বলেছেন, ‘তাকে নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। টিম ম্যানেজমেন্ট ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা মনে করেছি, ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত ভালো হয়েছে।’

দলে ফিরেছেন স্পিনার নাসুম আহমেদ, স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান। গত মার্চে আয়ারল্যান্ড সিরিজে বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেন নাসুম। মেহেদী হাসান বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ খেলেছেন গত বছর এশিয়া কাপে। ওয়ানডে দলে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকবেন শামীম হোসেন। বাংলাদেশের হয়ে এর আগে ১৭টি টি–টুয়েন্টি খেলেছেন শামীম। এর আগে ওয়ানডে দলে ডাক পেলেও খেলার সুযোগ পাননি।

৩০ আগস্ট থেকে শুরু হবে এশিয়া কাপ। পাকিস্তান মূল আয়োজক হলেও সহআয়োজক হিসেবে থাকছে শ্রীলঙ্কা। মোট ম্যাচ ১৩টি। এরমধ্যে শ্রীলঙ্কায় হবে ৯ ম্যাচ, বাকি ৪টি পাকিস্তানে। গ্রুপপর্বে বাংলাদেশ দুটি ম্যাচ খেলবে দুই দেশে— শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যান্ডিতে খেলার পর লাহোরে হবে আফগানিস্তানের সঙ্গে ম্যাচ। দুটি ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ সময় পাবে মাত্র দুদিন। ৩১ আগস্ট নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামবে সাকিব আল হাসানের দল। ৩ সেপ্টেম্বর টাইগারদের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান।

বাংলাদেশ দল
সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, তানজিদ হাসান তামিম, মুশফিকুর রহিম, তাওহীদ হৃদয়, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, শেখ মাহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, শামীম পাটোয়ারি , আফিফ হোসেন ধ্রুব, ইবাদত হোসেন চৌধুরী, শরীফুল ইসলাম ও নাঈম শেখ।

বিষয়:

তামিম থাকবে অনুপ্রেরণা হয়ে: সাকিব

ক্রিকেট মাঠে তামিম ও সাকিব
আপডেটেড ৭ জুলাই, ২০২৩ ১২:৪৫
ক্রীড়া ডেস্ক

আন্তর্জাতিক সব ফরম্যাটের ক্রিকেট থেকে তামিম ইকবাল খানের অবসরের ঘোষণা মেনে নিতে কষ্ট হলেও তাকে শুভকামনা জানিয়েছেন সতীর্থরাও। বাদ ছিলেন সাকিব আল হাসান, যার সঙ্গে তামিমের সম্পর্কে টানাপোড়েন নিয়ে গুঞ্জন দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে দীর্ঘদিনের। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সাকিবও মুখ খুলেছেন। শুভকামনা জানিয়েছেন নতুন জীবনের জন্য। দুজনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়েও করেছেন স্মৃতিচারণ।

আফগানিস্তানের সঙ্গে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচের পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামে আবেগঘন এক সংবাদ সম্মেলন থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তামিম। এরপর দিনভর ও রাতেও তামিম ইস্যুই ছিল সারা দেশে অনলাইন-অফলাইনে টক অব দ্য টাউন। এ নিয়ে সাকিবের বক্তব্য এসেছে পরদিন শুক্রবার।

এদিন বেলা পৌনে ১২টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড পেজ থেকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সাকিব। বলেছেন, তামিম যেভাবে ক্রিকেটকে ধারণ করতেন, মাঠে নামলে সেটিই তাদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

দুজনের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সূচনালগ্নের কথা উল্লেখ করে সাকিব লিখেছেন, ২০০৩ সালে অনূর্ধ্ব-১৫ ক্রিকেট দলে খেলার মাধ্যমে তাদের জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করার যাত্রা শুরু হয়। এরপর গত ২০ বছরে তারা একই স্বপ্ন ও লক্ষ্য নিয়ে পথচলার মাধ্যমে এক অটুট বন্ধন ও বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে অন্যদের সঙ্গে তারাও (তামিম ও সাকিব) অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। ক্রিকেটের প্রতি তামিমের নিবেদন ও আগ্রাসন অন্য অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা বলেও সাকিব উল্লেখ করেছেন।

সাকিব আরও লিখেছেন, দেশের জন্য জয় ছিনিয়ে আনার একই লক্ষ্য অর্জনে আমরা পরস্পরের শক্তির ওপর নির্ভর করেছি। তোমার রান আর রেকর্ডগুলোই তোমার কথা বলবে। একজন খেলোয়াড় হিসেবে তোমার যা কিছু অর্জন, তোমার সতীর্থ হিসেবে আমরাও তার জন্য অত্যন্ত গর্বিত।

তামিমকে আর ক্রিকেটের মাঠে না পাওয়ার অনভূতি ‘অদ্ভুত’ হবে বলে মনে করছেন সাকিব। অবসর নিলেও পরোক্ষভাবে তামিম মাঠে থাকবেন বলেও বিশ্বাস তার। তামিমকে তিনি শুভকামনা জানিয়েছেন ক্রিকেট-পরবর্তী জীবনের জন্য।

সাকিব লিখেছেন, মাঠে তোমাকে আর না পাওয়াটা হবে অদ্ভুত। কিন্তু আমরা যখন মাঠে লড়াই করতে নামব, তোমার মধ্যে যে আগুন ছিল সেটি প্রতিটি লড়াইয়েই আমাদের মধ্যেও জ্বলে উঠবে। তুমি তোমার নতুন জীবনেও সীমানা পেরিয়ে ছক্কা হাঁকাতে থাকো এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে নতুন মুহূর্তগুলো উপভোগ করো।

ওয়ানডে বিশ্বকাপের মাত্র তিন মাস আগে দলের অধিনায়কের অবসরের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা এখনো থামছে না। বৃহস্পতিবার দুপুরে তামিমের ঘোষণার পর রাতেই জরুরি সভাতেও বসেছিল ক্রিকেট বোর্ড। পরে মধ্যরাত পেরিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হোসেন পাপন সাংবাদিকদের বলেন, তামিম আনুষ্ঠানিকভাবে বিসিবিকে কিছু জানায়নি। ফলে বিসিবির কাছে তিনিই এখনো ওয়ানডে দলের ক্যাপ্টেন। বিসিবি আশা করছে, ‘আবেগ থেকে নেয়া সিদ্ধান্ত’ পাল্টে তামিম ফিরে আসবেন মাঠে।

আফগানিস্তানের সঙ্গে ওয়ানডে সিরিজের পরের দুই ম্যাচের জন্য তাই নতুন অধিনায়ক পাচ্ছে না দল। পাপন জানিয়েছেন, লিটন দাস দলের সহঅধিনায়ক। শনিবার তামিম দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে না নামলে লিটনই দল চালাবেন।


তামিমের ফেরার অপেক্ষায় বিসিবি, দল চালাবে ভাইস ক্যাপ্টেন

তামিম ইকবাল ও লিটন দাস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

দুপুরে আচমকা সব ধরনের ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবালের। রাতেই ক্রিকেট বোর্ড বিসিবিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক। সেই বৈঠক শেষে বিসিবি বস নাজমুল হোসেন পাপন বললেন, অবসরের বিষয়ে বোর্ডকে কিছুই না বলায় তামিমই এখনো ওয়ানডে দলের অধিনায়ক। তবে চলমান সিরিজের বাকি দুই ম্যাচ তিনি না খেললে ‘স্বাভাবিক নিয়মে’ ভাইস ক্যাপ্টেন থাকবেন দলের দায়িত্বে। এ ক্ষেত্রে দায়িত্বটি গিয়ে পড়ছে লিটন দাসের ওপর।

চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের সঙ্গে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচের পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে জরুরি সংবাদ সম্মেলন থেকে আচমকা অবসরের ঘোষণার কথা বলেন তামিম। জানান, বুধবারের প্রথম ম্যাচটিই ছিল তার ক্যারিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ।

তামিমের অবসরের কারণ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্যে অন্যতম ছিল ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্বের প্রসঙ্গটিও। এশিয়া কাপ বা বিশ্বকাপের জন্য অন্য কাউকে অধিনায়ক হিসেবে ভাবা হচ্ছে কি না, সে প্রশ্নও ডালপালা মেলেছে। বিসিবির রুদ্ধদ্বার বৈঠকে তাই ওয়ানডে দলের জন্য নতুন কোনো অধিনায়ক বাছাই করা হয়েছে কি না, সে প্রশ্ন একাধিকবারই রেখেছেন সাংবাদিকরা।

এ প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তামিম সংবাদ সম্মেলন করে অবসরের ঘোষণা দিলেও বোর্ডকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানাননি। ফলে বোর্ডের কাছে এখনো তামিমই ক্যাপ্টেন।

নাজমুল হোসেন পাপন বলেন, ‘আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত ক্যাপ্টেন তামিম ইকবাল। কারণ ও আমাদের কাছে রিজাইন করেনি। তাই তামিমই ক্যাপ্টেন। এখনো সেটাই আছে।’

তামিম পরের দুই ম্যাচ না খেললে অধিনায়কের দায়িত্ব কে পালন করবেন, এ প্রশ্নের জবাবে পাপন বলেন, ‘কোনো কারণে ক্যাপ্টেন খেলতে না পারলে ভাইস ক্যাপ্টেন চল চালিয়ে নিয়ে যায়। সেভাবেই চলবে। ওয়ানডেতে ক্যাপ্টেন হিসেবে এখনই পারমানেন্টলি কাউকে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে না।’

এর আগে সাকিব আল হাসানকে টেস্ট দলের অধিনায়ক হলেও সর্বশেষ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে পারেননি তিনি। ওই সময় ‘ভাইস ক্যাপ্টেন’ তথা সহঅধিনায়ক হিসেবে লিটন দাস ম্যাচটিতে অধিনায়কত্ব করেন। বিসিবি সভাপতি যা বললেন তাতে ওয়ানডে দলেও লিটন দাসই সহঅধিনায়ক।

সাংবাদিকরা অবশ্য বলার চেষ্টা করলেন, উভয় ক্ষেত্রেই দল ঘোষণার ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিকভাবে কাউকে সহঅধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। তবে বিসিবি সভাপতি নিজের বক্তব্যে ছিলেন অনড়। বললেন, লিটন দাস যে সহঅধিনায়ক, এটি আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত।

তামিম যদি শেষ পর্যন্ত অবসর ভেঙে না ফেরেন, সেক্ষেত্রে দলের অধিনায়ক কে হবেন, সেটিও প্রশ্ন ছিল সংবাদ কর্মীদের। এ বিষয়ে বোর্ড কিছু ভাবছে না বলেই জানালেন পাপন। বললেন, তামিমের ফেরার অপেক্ষাতে আছে বিসিবি।

বোর্ড সভাপতি বলেন, সামনের এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের জন্য তামিমকে অত্যন্ত দরকার। আমরা ওর কাছে নাফিস ইকবালের (তামিমের বড় ভাই, সাবেক ক্রিকেটার) মাধ্যমে মেসেজ দিয়েছি। এই কথায় যদি ও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে, আমি খুশি হব। আমরা সে জন্য (অবসর ভেঙে ফিরে আসার ঘোষণা) অপেক্ষা করছি।

পাপন বলেন, আমাদের পরিকল্পনায় আছে, ও (তামিম) সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ফেরত আসুক। না করলে (ফেরত না এলে) তখন সিদ্ধান্ত নেব কী করব। আগে থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলে লাভটা কী! এখন ভাইস ক্যাপ্টেন দল চালাবে। এর বাইরে সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে আবেগঘন এক সংবাদ সম্মেলনে তামিম অবসরের ঘোষণা দেন। বলেন, বুধবার আফগানিস্তানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচটিই ছিল তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। কোনো ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই তাকে আর দেখা যাবে না।

১৬ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানা সহজ ছিল না জানিয়ে তামিম বলেন, গত কিছুদিন ধরে চিন্তাভাবনা করে, পরিবারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেই তিনি অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ নিয়ে আলোচনার ইতিও এখানেই দেখতে চেয়েছেন তিনি।


এভাবে হঠাৎ কেন অবসরে তামিম?

সংবাদ সম্মেলনে তামিম। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

তামিম ইকবাল অবসর নিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে- খবরটা ধাক্কা হয়ে এসেছে। অবসর ঘোষণার সময়ে তামিমের কান্না আর্দ্র করেছে তার অনেক ভক্তের চোখ। কিন্তু সব ছাপিয়ে গতকাল দিন শেষ হতেই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াল, এভাবে হঠাৎ করে তামিমের অবসরে যাওয়ার কারণ কী?

তার বয়স ৩৪ হয়ে গেছে, বলতে গেলে অবসরেরই বয়স। তবে বিসিবির সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কাল বলছিলেন, তামিম চাইলে অন্তত আরও দুবছর খেলে যেতে পারতেন!

এই চোট, ওই চোটে ভুগছেন অনেক দিন ধরেই। মাঠের চেয়ে মাঠের বাইরেই সময় কাটছিল বেশি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে গত পরশু প্রথম ওয়ানডেতেই তো নেমেছেন কোমরের চোট সারিয়ে শতভাগ ফিট হওয়ার আগেই, যা কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ভালোভাবে নেননি বলে শোনা যায়। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও কড়া সমালোচনা করেছেন তামিমের।

তার ব্যাটেও ফর্ম সেভাবে ছিল না। গত বছরের জুলাইয়ে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা দুই ফিফটির পর তামিমের ব্যাটে ১৩ ইনিংসে ফিফটি মাত্র একটি, সেটি বাদ দিলে ৪০-এর ঘর পেরিয়েছেন মাত্র একবার! অথচ এই ১৩ ইনিংসের তিনটি ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, বাকি ১০টিতে প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড-আফগানিস্তান-জিম্বাবুয়ে।

কিন্তু এসব কিছুর পরও তামিমের অবসর ঘোষণার সময়কে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ হবে অক্টোবরে, সেখানে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ ছিল তামিমের সামনে। হেলায় সে সুযোগ হারানোর মানুষ তো তামিম নন!

তার ওপর অবসর ঘোষণা করলেন সিরিজের মাঝপথে এসে। বাকি দুই ম্যাচ না খেলেই অবসরে চলে গেলেন! সিরিজের মাঝপথে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা বিরল নয়, প্রায় সবক্ষেত্রেই খেলোয়াড়রা সিরিজ শেষ করে অবসরে যাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু তামিম অবসরে গেলেন সিরিজের মাঝপথে! তামিম যতই বলুন, অনেক দিন ধরে সিদ্ধান্তটা নিয়ে ভাবছেন। এভাবে সিরিজের মাঝপথে অবসর নেয়া অন্য কিছুর গন্ধ টেনে আনে।

শতভাগ ফিট না হয়েও প্রথম ওয়ানডেতে তামিমের খেলা নিয়ে হাথুরুসিংহে আর পাপনের কড়া সমালোচনার কারণে এভাবে অবসরে গেছেন তামিম? শুনতে বালখিল্য শোনাবে। ব্যাপারটা তেমন নয় আসলে। হতে পারে তাদের সমালোচনা কফিনে শেষ পেরেকের কাজ করেছে। তবে শুধু অতটুকুর জন্য অবসরে গেছেন তামিম, এমন কথা তামিমের ঘোর সমালোচকও বলবেন না। তামিম নিজেই কাল এক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, বোর্ড সভাপতির কথাগুলো ‘জাস্ট আইসিং অন দ্য কেক।’

তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশি এক সংবাদমাধ্যমে তামিমের কথা বাংলাদেশ ক্রিকেটে ‘ক্যানসার’-এর রূপ ধারণ করা দ্বন্দ্বের দিকেই ইঙ্গিত করল! তামিমের কথায় ইঙ্গিত, তার মনে হয়েছে, তাকে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব দিলেও বিসিবি সেটি কেড়ে নিয়ে অন্য কাউকে দিতে চেয়েছে। ‘অন্য কেউ’ কে? তা বুঝতে খুব একটা কষ্ট হওয়ার কথা নয়। এ ক্ষেত্রে প্রসঙ্গত বা অপ্রাসঙ্গিকভাবেও ভাবতে পারেন। উল্লেখ্য, তামিম এতদিন ওয়ানডে অধিনায়ক ছিলেন, টেস্ট আর টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

তামিম আর সাকিবের দ্বন্দ্ব বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনেক দিন ধরেই ‘ওপেন সিক্রেট।’ দুজন তারকা, তিন ঘরানার অধিনায়কও। কিন্তু দুজন মাঠে নিতান্ত প্রয়োজন না হলে কথাই বলতেন না! ড্রেসিংরুমে দুজনের দুই ভাগের গুঞ্জন স্বাভাবিকভাবেই ছিল। এই ‘ইগো’র লড়াই-ই কি শেষ পর্যন্ত তামিমের শেষ টেনে দিল? হয়তো!

হ্যাঁ, তামিমের চোট নিয়ে হতাশা ছিল দলে। তামিমের ফর্মহীনতা, ফিটনেসের অভাব, দিনে দিনে পড়তে থাকা স্ট্রাইকরেট, ধীরে-সুস্থে শুরু করে খেলার ধরন নিয়ে সমালোচনা কয়েক বছর ধরেই চলছে। তামিম বেশির ভাগ সময়েই সেসবে গা-করেননি বলে অভিযোগ। এখানেও তো ব্যাপারটা ‘ইগো’রই ছিল!


আবেগে মোড়ানো সংবাদ সম্মেলনে বারবার কাঁদলেন তামিম

সংবাদ সম্মেলনে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন তামিম। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম

১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে বিদায় জানালেন দেশের ক্রিকেটের অন্যতম নক্ষত্র তামিম ইকবাল। ৩৪ বছর বয়সী তামিম ক্রিকেট আরও কিছুদিন খেলবেন বলেই প্রত্যাশা ছিল সবার। তবে ফর্মহীনতা আর ফিটনেস ইস্যুতে কদিন ধরেই সমালোচনার মুখে ছিলেন। আফগানিস্তানের সঙ্গে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে পুরোপুরি ফিট না থেকেও খেলায় সেই সমালোচনা আরও গতি পায়। পরদিনই জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন।

‘সময়ের আগে’ই অবসর বলেই হয়তো জরুরি সেই সংবাদ সম্মেলনে ভীষণ আবেগাক্রান্ত ছিলেন তামিম। নিজের কথা, পরিবারের কথা, ক্রিকেটের কথা বলতে বলতে বারবারই তামিম কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানা এলাকার হোটেল টাওয়ার ইনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে।

অবসরের ঘোষণা দিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠেই তামিম বলেন, বুধবার আফগানিস্তানের সঙ্গে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচটিই তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। অর্থাৎ সিরিজের শেষ দুটি ম্যাচ আর খেলবেন না তিনি। স্বাভাবিকভাবেই মাস তিনেক পর অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপেও দল পাচ্ছে না তামিমকে।

‘আমি সবসময় একটা কথা বলেছি যে আমি খেলাটি খেলেছি...’- সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন টাইগার ওয়ানডে দলের ক্যাপ্টেন। প্রায় মিনিটখানেক কোনো কথাই বলতে পারেননি তিনি।

আবেগ নিয়ন্ত্রণে এনে তামিম বলেন, ‘আমি সবসময় বলেছি, আমি ক্রিকেট খেলি আমার বাবার স্বপ্নপূরণ করার জন্য।’ এ পর্যায়ে বাবার প্রসঙ্গ উঠতেই ফের কান্নায় ভেঙে পড়েন তামিম।

কান্না সামলে তামিম বলেন, ‘আমি জানিনা আমি ১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে কতটুকু তা পূরণ করতে পেরেছি। অসংখ্য মানুষকে আমার ধন্যবাদ জানানো প্রয়োজন।’

চট্টগ্রামের বনেদি খান পরিবারের সদস্য তামিম। চাচা আকরাম খান দেশের ক্রিকেটের অন্যতম এক নায়ক। ভাই নাফিস ইকবালও জাতীয় দলে খেলেছেন একসময়। তবে ক্রিকেটে তামিমের হাতেখড়ি তার ছোট চাচা প্রয়াত আকবর খানের হাত ধরে। ধন্যবাদ জ্ঞাপনে প্রথমেই তার প্রসঙ্গটিই উঠে এসেছে তামিমের কণ্ঠে।

তামিম বলেন, ‘আমার সবচেয়ে ছোট চাচা, যিনি ইন্তেকাল করেছেন, ওনার নাম আকবর খান। ওনার হাত ধরেই আসলে আমার প্রথম ক্রিকেট বলের টুর্নামেন্ট খেলা। তিনি এবং তার পরিবারকে ধন্যবাদ।’

ছোটবেলার কোচের প্রসঙ্গও তামিমের চোখে জল এনেছে। ‘এমএ আজিজে তপন দা নামের একজন কোচ আছেন, তার কাছে আমি ছোটকাল থেকে...’ বলতে বলতে ফের কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। একটু সামলে নিয়ে বলেন, ‘...যার কাছে আমি ছোটবেলা থেকে প্র্যাকটিস করেছি। তাই ওনাকে ধন্যবাদ।’

যাদের সঙ্গে খেলেছেন, তাদের সবাইকেও ধন্যবাদ জানিয়ে তামিম বলেন, ‘আমি যাদের সঙ্গে খেলেছি তাদের ধন্যবাদ। আমি অনূর্ধ্ব ১৩, ১৫, ১৭, ১৯, ১৮, প্রিমিয়ার লীগ, ন্যাশনাল লীগ, ন্যাশনাল টিম যাদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছি, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। বিশেষ করে ন্যাশনাল টিমে যারা আমার কলিগ, তাদের (ধন্যবাদ)। অবশ্যই ক্রিকেট বোর্ড, দীর্ঘ সময় ধরে তারা আমাকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ করে দিয়েছে এবং ক্যাপ্টেনকেও (ধন্যবাদ)।’

‘আমার আসলে খুব বেশি কিছু বলার নেই। একটা বিষয় আমি বলব, আমি আমার সর্বোচ্চটা চেষ্টা করেছি।’ বলতে বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন দেশের নির্ভরযোগ্য এই ব্যাটার।’

আবেগাক্রান্ত কণ্ঠে তামিম বলেন, ‘সম্ভবত আমি যথেষ্ট ভালো করিনি। কিন্তু আমি যখন মাঠে ছিলাম, আমি আমার শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করেছি। অনেকগুলো বিষয় আছে, আমি কিছু বলতে চাই আসলে। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, আমি প্রায় কথা বলতে পারছি না। কিন্তু আমি আশা করি, আপনারা পরিস্থিতিটা বুঝবেন।’

‘এই পরিস্থিতি কথা বলার মতো সহজ না। আমি এত বছর যখন খেলেছি, হঠাৎ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শেষ করে দেয়া আমার জন্য এত সহজ না। আমি আশা করি, আপনারা বুঝবেন।’

ক্রীড়া সাংবাদিকদের উদ্দেশে তামিম বলেন, ‘আমি শুধু একটি অনুরোধ করব, যারা সামনে ক্রিকেট খেলবে, আপনারা তাদের কথা ভালো লিখবেন, খারাপ লিখবেন, কিন্তু ক্রিকেটই যেন হয়, ক্রিকেটের বাইরের সীমানা যেন না পেরোয়। যদি তারা ভালো খেলে, ভালো বলবেন। খারাপ খেললে সমালোচনা করবেন। আশা করি আপনারা সবাই বুঝবেন যে আমরা মাঝে মাঝে সীমা অতিক্রম করে ফেলি।’

তামিম আরও বলেন, ‘আমি আবারও বলব, আমি সবদিকে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আমি আবার রিপিট করি, আমি খেলা শুরু করেছি বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য। জানি না কতটুকু পেরেছি। কিন্তু আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছি। একজন মানুষ ও ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে গড়তে যারাই আমাকে সাহায্য করেছেন, আমি সবাইকে অন্তরের অন্তস্তল থেকে ধন্যবাদ জানাই।’

পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তামিম বলেন, ‘আমার মা, আমি তাকে ভুলতে পারব না। আমার ভাই, আমার স্ত্রী, আমার দুই সন্তান- আমার এই জার্নিতে তারা অনেক কষ্ট করেছে। একইভাবে তাদের আনন্দেরও অনেককিছু ছিল। আমি তাদেরও ধন্যবাদ জানাই।’

নিজের নেয়া অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে যেন খুব বেশি আলোচনা না হয়, সে আহ্বানও জানান তামিম। বলেন, ‘এর চেয়ে বেশি আসলে আমার কিছু বলার নেই। এটাই অনুরোধ করব, আমার (অবসরের) টপিকটা এখানেই শেষ করে দেন। এটি গুরুত্বপূর্ণ, অন্তত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য। একে নিয়ে আর বেশি গুতাগুতি করবেন না। কেন কেন, কী, আরও কী হতে পারত বা না হতে পারত- (এসব আলোচনা) শেষ করে দিন।’

‘আমি সবসময় বলি, টিম যেকোনো ব্যক্তির চেয়ে বড়। টিমে ফোকাস করুন। এই সিরিজের আরও দুটি খেলা বাকি, আমি আশা করি আমরা জিতব,’- এটুকু বলেই সংবাদ সম্মেলন শেষ করেন তামিম ইকবাল খান।


বাংলাদেশ করেছে ১৬৯, আফগানিস্তানের লক্ষ্য ১৬৪

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়ে সিরিজে নেমেছিল বাংলাদেশ। দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের সাম্প্রতিক রেকর্ড আর শক্তির পার্থক্য মিলিয়ে বাংলাদেশকেই এই সিরিজে ফেবারিট মেনেছেন সবাই। তবে আফগানিস্তান হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিল – তারা ছেড়ে কথা বলবে না।

চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আজ বাংলাদেশের ইনিংস শেষে আফগানিস্তানই এগিয়ে। দুই দফা বৃষ্টিতে সংক্ষেপিত হয়ে যাওয়া ম্যাচ হচ্ছে ৪৩ ওভারের, তাতে আগে ব্যাট করে রশিদ-মুজিব-ফারুকিদের বোলিংয়ের সামনে কাঁপতে থাকা বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে করতে পেরেছে ১৬৯ রান।

তবে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ৪৩ ওভারে আফগানিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ১৬৪ রান।

বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের বর্ণনায় এভাবে বলা যায়– তাওহীদ হৃদয় এবং বাকিরা! টস জিতে আগে বোলিং কেন নিয়েছে আফগানিস্তান, সেটি হাড়ে হাড়ে টের পাইয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ ইনিংসে হৃদয় ফিফটি পেয়েছেন, এর বাইরে ২০ রানের ঘরেই গেছেন কেবল একজন – লিটন দাস (২৬)! বাংলাদেশ ইনিংসে ৩৫-এর ঘর পেরিয়েছে শুধু একটি জুটি, চতুর্থ উইকেটে সাকিব ও হৃদয়ের।

পুরোপুরি ফিট না হয়েও ম্যাচে নেমে পড়া অধিনায়ক তামিম ইকবাল ফারুকির শিকার হয়ে ফিরেছেন সপ্তম ওভারে, ২১ বলে করেছেন ১৩ রান। ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে লিটন দাস দলকে ৬৫ রানে রেখে ফিরেছেন মুজিব উর রহমানের শিকার হয়ে। এর ৫ বল ও ৭ রান পর, ইনিংসে মোহাম্মদ নবীর প্রথম বলে, সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ফর্মে থাকা নাজমুল হাসান শান্তও (১২) ফিরলে বাংলাদেশ চাপে পড়ে যায়।

সে থেকে আর উদ্ধার মেলেনি। সাকিব (১৫), মুশফিক (১), মিরাজরা (৫) ফিরেছেন দ্রুতই। এই সিরিজ দিয়ে দলে ফেরা আফিফ (৪) রান পাননি। এক প্রান্তে একলাই লড়ে গেছেন শুধু হৃদয়। আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে নিজের তৃতীয় ফিফটি তুলে তিনিও আউট হয়ে গেছেন ৫১ রানে।

আফগানিস্তানের ফারুকি ২৪ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট, রশিদ ও মুজিবের উইকেট দুটি করে।


বিশ্বকাপের দলে থাকবে না চমক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি তো বহু আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, এশিয়া কাপে যে দল দেখা যাবে, সে দলকেই বিশ্বকাপের দল বলে বুঝে নিতে হবে। কাগজে-কলমে তা সম্ভব হবে কি না, সেটা এখনই বলা কঠিন।

গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে নাম আছে জেনে দেশ ছেড়েছিলেন সাব্বির রহমান। বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ড সিরিজ শেষ হতে না হতেই বিশ্বকাপ দল থেকে ছিটকে পড়েছিলেন তিনি। ফর্মের ওঠানামা যেমন আছে, তেমনি চোটাঘাতের সম্ভাবনাও তো উড়িয়ে দেয়া যায় না। তবে এসব ‘বাধা’র সম্মুখীন না হলে, বোর্ড সভাপতির কথাই সত্য হবে বলেই মনে হচ্ছে।

ঈদের আগে টেস্ট খেলে ফিরে গেছে আফগানিস্তান। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে তারা আবার আসবে ঈদের পর। এরই মধ্যে অনুশীলনে নেমে পড়েছেন ওয়ানডে সিরিজের দলে থাকা ক্রিকেটাররা। যাদের মধ্যে নেই প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার এনামুল হক বিজয়। এই ওপেনারের সুযোগ না পাওয়া প্রসঙ্গে গতকাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন নির্বাচক কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক।

নির্বাচকদের চিন্তায় বিজয় ভালোমতোই আছেন জানিয়ে রাজ্জাক অবশ্য বাস্তবতাও তুলে ধরেছেন। নিয়মিত সাফল্য পাওয়া ওয়ানডে দলে খুব বেশি পরিবর্তন আনার সুযোগ নেই বলে এশিয়া কাপে যে দল দেখা যাবে সে দলেরই বিশ্বকাপে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি, এটা মেনে নিয়েছেন, ‘একদিক থেকে ঠিক (একই দল)। তবে কিছু ব্যাপার তো হাতে রাখতে হয়। পারফরম্যান্স, সুস্থতা, চোটের ব্যাপার আছে। সে ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আসতেই পারে। যদি দেখা যায় সুন্দরভাবে সেট, তা হলে তো... । তবে এটা আনুষ্ঠানিকভাবে বলা খুবই কঠিন।’

বিজয় সুযোগ না পেলেও আবাহনীতে তার ওপেনিং সঙ্গী ঠিকই ডাক পেয়েছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এ ব্যাপারে রাজ্জাকের যুক্তি, ‘ওরা তরুণ খেলোয়াড়, ওরাই খেলবে সামনে। অনেক দিন ধরে যাতে খেলতে পারে। আমাদের ওয়ানডে দলে খুব বেশি পরিবর্তনের সুযোগ এ মুহূর্তে নেই। নাঈম প্রিমিয়ার লিগে ভালো করেছে। যেহেতু পারফর্ম করেছে, কোনো সমস্যা হলে দল যেন উপকৃত হয়।’


২৮১ রান করতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

জো রুট, হ্যারি ব্রুক, বেন স্টোকস- বাজবল ক্রিকেটেই সম্পূর্ণ ভিন্ন তিন ধরনের ব্যাটিং দেখা গেল। তিন ধরনের ব্যাটিংই থামল পঞ্চাশ পেরোনোর আগে। তাতে এজবাস্টন টেস্টে ইংল্যান্ডের সম্ভাব্য লিড তিন শ পেরোনোর আশা জাগিয়েও আটকে গেল তিন শর নিচে।

পরশু বৃষ্টি থামিয়ে দেয়ার আগে ২ উইকেট ২৮ রান করেছিল ইংল্যান্ড। গতকাল তাই সবাই আশায় ছিলেন বাজবল দেখার অপেক্ষায়। ওলি পোপ ও জো রুট সেভাবেই শুরু করেছিলেন। দিনের প্রথম ১৫ বলের মধ্যেই পঞ্চাশ পেরিয়ে গেল ইংল্যান্ড।

পরের চার ওভারে আর ২৭ রান এসেছে। এমন ঝড় থামাতে বিশেষ কিছুর দরকার ছিল, সেটা এল অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের হাত থেকেই। অফ স্টাম্পের বাইরে দুর্দান্ত এক ইয়র্কার। সেটা পিচ করে একটু ইনসুইং করে ঢুকে পড়ল পোপের ডিফেন্স ভেদ করে। ৫০ রানে থামল তৃতীয় উইকেট জুটি।

রুট অবশ্য এমন ধাক্কাও গায়ে মাখেননি। হ্যারি ব্রুককে নিয়ে ওয়ানডে গতিতে ছুটছিলেন। একদিকে ধ্রুপদী ব্যাটিংয়ে রান ফোয়ারা রুটের, অন্য দিকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের স্বাধীনতা পাওয়া ব্রুক। দুই ধরনের বাজবলের তোড়ে দিনের প্রথম পানি পানের বিরতি আসার আগেই ৯৩ রান পেয়ে যায় ইংল্যান্ড। বিরতির পর সেই বাজবলই কাল হলো। নাথান লায়নকে লেগ সাইডে তুলে মারতে গিয়ে একটু বেরিয়েছিলেন রুট, কিন্তু বলের বাড়তি স্পিন তাকে ফাঁকি দিয়ে চলে যায়। দিনের প্রথম নার্ভাস ফর্টিজের শিকার রুট (৪৬)।

হ্যারি ব্রুক রুটের চেয়েও আগ্রাসী ছিলেন। কিন্তু তার আগ্রাসনকেই দুর্বলতা বানাল অস্ট্রেলিয়া। এমনভাবে ফিল্ডিং সাজাল যেন সহজে রান তুলতে না পারেন। টানা কয়েক ওভারে রান তুলতে না পারার চাপে সেই লায়নকেই তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন ব্রুক, ঠিক ৪৬ রানে ছিলেন তিনি।

দেড় শ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর বাজবল থেকে সরে এল ইংল্যান্ড। অবশেষে প্রথাগত টেস্ট ক্রিকেট দেখা গেল বেন স্টোকস ও জনি বেয়ারস্টোর মাঝে। মধ্যাহ্নবিরতির আগে তবু উইকেট হারাতে বসেছিল ইংল্যান্ড। স্কট বোল্যান্ডের নাকল বলে নাকাল হয়ে এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন বেয়ারস্টো। কিন্তু রিভিউ নেয়ার পর বেঁচে যান তিনি।

বিরতির পর অবশ্য আর টিকতে পারেননি, লায়নের বলে এলবিডব্লিউ। ইংল্যান্ডের লিড তখন মাত্র দুই শ পেরিয়েছে। অধিনায়ক বেন স্টোকস আরেকটু সাবধানী হলেন। তবু টিকতে পারলেন না। প্রতিপক্ষ অধিনায়কের বল উইকেটে পড়ে ঢুকছে দেখেও পা সময়মতো নাড়াতে পারেননি। ব্যাট তাই জায়গামতো গেল না, এলবিডব্লিউ। দলকে ২১০ রানে রেখে ফিরলেন অধিনায়ক (৪৩)।

ইংল্যান্ড এরপর তাকিয়ে ছিল মঈন আলীর দিকে। কিন্তু অবসর থেকে ফেরা মঈন দ্বিতীয় ইনিংসেও ফর্মে ফেরেননি। কিন্তু ওলি রবিনসন বাড়তি দায়িত্ব বুঝে নিয়ে দলকে টেনে নিয়েছেন। তার ২৭ রান ইংল্যান্ডকে আড়াইশ পার করে দিয়েছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চা-বিরতির আগে ২৭৩ রানে অলআউট ইংল্যান্ড। ২৮১ রান করতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে।


৩৯ বছর পর ১-২-৩ একই দেশের

লাবুশেন ও গ্রিন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া ডেস্ক

শীর্ষে মারনাস লাবুশেন। স্টিভ স্মিথ দুই নম্বরে। এর সঙ্গে আইসিসি থেকে গতকাল প্রকাশিত সাপ্তাহিক র‍্যাঙ্কিংয়ের টেস্ট ব্যাটিংয়ে তিন ধাপ এগিয়ে তিন নম্বরে উঠেছেন ট্রাভিস হেড। টেস্ট ব্যাটিংয়ের ১-২-৩-এ একই দেশের তিন ব্যাটসম্যান!

এমন কীর্তি একেবারে বিরল নয়, তবে সর্বশেষ এমন কিছুর দেখা মিলেছে ৩৯ বছর আগে। ১৯৮৪ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত সে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের তিন ব্যাটসম্যান – শীর্ষে গর্ডন গ্রিনিজ (৮১০ পয়েন্ট), দুই নম্বরে ক্লাইভ লয়েড (৭৮৭), তিনে ল্যারি গোমেজ (৭৭৩)।

অস্ট্রেলিয়ানরা সে কীর্তি ছুঁয়েছেন এক অর্জনের বদৌলতে – টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। ওভালে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে ২০৯ রানে হারিয়ে টেস্টের গদার দখল দুই বছরের জন্য বুঝে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ – তিন সংস্করণে আইসিসির বড় তিন ট্রফি জেতা একমাত্র দলও তাতে বনে গেছে অস্ট্রেলিয়া। ফাইনালে দারুণ পারফরম্যান্সেরই ফল - টেস্ট ব্যাটিংয়ের র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে তিন অস্ট্রেলিয়ান।

ফাইনালে প্রথম ইনিংসে ১৬৩ রানের দারুণ ইনিংস খেলা হেডের সঙ্গে ১২১ রান করা স্মিথের ২৭৫ রানের চতুর্থ উইকেট জুটিই পার্থক্য গড়ে দেয়। ওই ইনিংসের কল্যাণেই হেডের শীর্ষ তিনে উঠে আসা, তাতে অস্ট্রেলিয়ার দারুণ অর্জনও হলো।

বোলারদের র‍্যাঙ্কিংয়েও অস্ট্রেলিয়ানদের উন্নতি হয়েছে। দুই ধাপ এগিয়ে ইংল্যান্ডের ওলি রবিনসনের সঙ্গে যৌথভাবে ষষ্ঠ অজি স্পিনার নাথান লায়ন। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতকে ধসিয়ে দেয়া পেসার স্কট বোলান্ড পাঁচ ধাপ এগিয়ে ৩৬তম।

টেস্টের বোলারদের র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ফাইনালে ভারতের একাদশে জায়গা না পাওয়া রবিচন্দ্রন অশ্বিন। দুই নম্বরে জেমস অ্যান্ডারসন, তিনে অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স। অলরাউন্ডারদের র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ দশে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। শীর্ষস্থান রবীন্দ্র জাদেজারই।

শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যান

র‍্যাঙ্কিং ব্যাটসম্যান রেটিং

১ মারনাস লাবুশেন ৯০৩

২ স্টিভ স্মিথ ৮৮৫

৩ ট্রাভিস হেড ৮৮৪

৪ কেইন উইলিয়ামসন ৮৮৩

৫ বাবর আজম ৮৬২


banner close