মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪
প্রথম ম্যাচ জয়ে রাঙালো বাংলাদেশ

অভিষেকেই আলো ঝলমলে ব্যাটিং তানজিদ তামিমের

ছবি: সংগৃহীত
নাজমুল সাগর
প্রকাশিত
নাজমুল সাগর
প্রকাশিত : ৩ মে, ২০২৪ ২২:৩০

কাগজে-কলমে বড় দল হিসেবেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। কাগজে-কলমের সেই হিসাবটা দেখা গেলো মাঠেও। বাংলাদেশের সামনে এক অসহায় জিম্বাবুয়ে। নির্বিকার তাদের ব্যাটিং লাইন-আপ। তাসকিন-সাইফুদ্দিনদের বোলিংয়ের সামনে অসহায়ত্ব ফুটে উঠল সিকান্দার রাজা, শেন উইলিয়ামসদের।

চট্টলার ব্যাটিং উইকেটেও রাজত্ব চালালো বাংলাদেশের বোলাররা। দীর্ঘদিন পরে ইনজুরি থেকে ফিরে সাইফুদ্দিন দেখালেন; তার বোলিংয়ের ধারটা ঠিক এখনো আগের মতোই আছে। গতির ঝলক দেখিয়েছে তাসকিন আহমেদও। এ দুই পেসার মিলিই চেপে ধরেছিল জিম্বাবুয়েকে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল শেখ মাহেদী। টাইগারদের প্রথম শিকার তারই।

বাংলাদেশের জয়ের বীজ বপন করে দিয়েছিল বোলাররাই। তাই ব্যাটারদের আর খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। অভিষেক ম্যাচেই ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়ে, বাংলাদেশের জয়ের নৌকা বন্দরে নিয়ে গেছেন তানজীদ হাসান তামিম। তুলে নিয়েছেন অর্ধশতক। জানান দিয়েছেন নিজের সামর্থের। বল-ব্যাট দুই বিভাগেই বিশ্বকাপের আগে দারুণভাবে জ্বলে উঠল টাইগাররা। প্রথম ম্যাচেই সাড়ল একটি সুন্দর প্রস্তুতি।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪ ওভার শেষে এক উইকেটে ৩১ রান করা জিম্বাবুয়ের মাথায় হঠাৎই কি যেনো ভূত চেপে বসলো। ৩৬ রানে হারাল দ্বিতীয় উইকেট। এরপর ৫ রান তুলতেই নেই আরও পাঁচ উইকেট। ক্রেইড আরভিন, সিকান্দার রাজা, শেন উইলিয়ামস, রায়ানের বার্লের মত অভিজ্ঞরা ফিরেছেন কোনো রান না করেই।

দেখে মনে হচ্ছিল ৫০ পেরোনই যেনো অসম্ভব জিম্বাবুয়ের জন্য। তবে শেষ পর্যন্ত ক্লিভে মাদানদে ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজার জুটিতে লড়াই করার মতো সংগ্রহ পায় জিম্বাবুয়ে। ২০ ওভার শেষে তারা পূঁজি পায় ১২০ রানের।

টাইগারদের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন পেসার তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আর শেখ মাহেদী। ইনজুরি থেকে দীর্ঘদিন পরে ফিরেই ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেছেন সাইফুদ্দিন; তাসকিনের সংগ্রহও সমান। ২ উইকেট গেছে শেখ মাহেদীর ঝুলিতে।

স্বল্প রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র এক রানেই ফেরেন লিটন দাস। এরপর উইকেটে এসে দুইবার জীবন পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেনি নাজমুল শান্ত (২১)। তবে অপরপ্রান্তের বুক চিতিয়ে খেলেছেন তানজিদ তামিম। বাউন্ডারি ছাড়া করেছেন মুজারাবানিদের। তুলে নিয়েছেন টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম অর্ধশতক। শান্ত আউট হয়ে গেলে উইকেটে নেমে তামিমের সঙ্গে ঝড় তুলতে থাকেন তৌহিদ হৃদয়ও। এ দুইজনের ব্যাটিং ঝড়ে অসহায় হয়ে পড়ে মুজারাবনি-লুক জঙ্গিরা। দুইজন মিলে গড়েন ৬৯ রানের জুটি।

৮ চার আর ২ ছক্কায় ৪৭ বল থেকে ৬৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তানজিদ তামিম। ৫ চার আর এক ছক্কায় ১৮ বল থেকে ৩৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন আরেক ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়।

এ দুইজনের ব্যাটে ভর করে ৪ ওভার ৪ বল বাকি থাকতেই মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা। এ জয়ে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।


সুপার এইটে বাংলাদেশ: ঈদে ডাবল আনন্দ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

এ যেনো ডাবল আনন্দ।আজ পবিত্র ঈদুল আজহা। এমন উৎসবের দিনে দেশবাসীর আনন্দ আরও বাড়িয়ে দিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। নেপালকে হারিয়ে সুপার এইট নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। 'ডি' গ্রুপ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার পর সুপার এইটে গেল চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। বাংলাদেশ ২১ রানে জয়ী হয় আজকের ঈদের দিনে।

ম্যাচের শুরুতে ব্যাটাররা খুব বড় পুঁজি এনে দিতে পারেননি। কিন্তু এমন উইকেটে সেটাই ছিল যথেষ্ট! শুরুতে বল হাতে দাপট দেখালেন তানজিম হাসান সাকিব।

শেষের কাজটা সুনিপুণভাবে করেন মোস্তাফিজুর রহমান ও সাকিব আল হাসান। তাতে নিশ্চিত হয়ে গেল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সুপার এইটে খেলা। আর্নস ভ্যালে স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ১০৬ রানের পুঁজি নিয়েও নেপালকে ২১ রানে হারিয়েছে টাইগাররা। নেপালের টপ অর্ডার গুঁড়িয়ে দেওয়ার নায়ক তানজিম। ডানহাতি এই পেসারকে দিয়ে ৪ ওভারের টানা স্পেল করান বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তানজিমও তাকে হতাশ করেননি। ২ মেডেনসহ স্রেফ ৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন তিনি।

নেপালকে আটকাতে হলে শুরু থেকেই চাপ সৃষ্টি করতে হতো। যদিও প্রথম দুই ওভারে কোনো উইকেট পায়নি। তবে তৃতীয় ওভারে জোড়া আঘাত হানেন তানজিম হাসান সাকিব। দ্বিতীয় বলে কুশল ভুর্তলকে ফুলটস ডেলিভারিতে বোল্ড করেন ডানহাতি এই পেসার। তার চতুর্থ বলটি মিডঅফের ওপর দিয়ে পাঠাতে চেয়েছিলেন অনিল শাহ। কিন্তু ধরা পড়েন নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে। ডাবল উইকেটের ওভারটি তানজিম শেষ করেন মেডেন দিয়ে।

চতুর্থ ওভারে অবশ্য খরুচে ছিলেন তাসকিন। ১১ রান খরচ করেন তিনি। তবে পঞ্চম ওভারে এসে নেপালের অধিনায়ক রোহিত পৌড়েলের উইকেট তুলে নেন তানজিম। এর আগে যদিও দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় দুজনের মধ্যে। সেই রেশ টিকল না খুব বেশিক্ষণ। তানজিমের বলে পয়েন্টে থাকা রিশাদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১ রান করা রোহিত।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আসিফ শেখকে ফেরান মোস্তাফিজুর রহমান। আর নিজের শেষ ওভারের শেষ বলে সন্দ্বীপ জরাকে শিকার করেন তানজিম। রোহিতের মতো সন্দ্বীপও ধরা পড়েন পয়েন্টে থাকা রিশাদের হাতে।

বিপর্যয়ে থাকা নেপালের এরপর হাল ধরেন কুশল মল্লা ও দীপেন্দ্র সিং ঐরী। মাটি কামড়ে পড়ে থেকে পঞ্চম উইকেটে ৫২ রানের জুটিও গড়ে ফেলেন তারা। সেই জুটি ভাঙে শান্তর হাতে এসে। ১৭তম ওভারে মোস্তাফিজের বলে মল্লার (২৭) দারুণ এক ক্যাচ নেন তিনি। পরের ওভারে গুলশান ঝাকে ফেরান তাসকিন। ১৯তম ওভারে এসে কোনো রানই দেননি মোস্তাফিজ। একইসঙ্গে শেষ বলে শিকার করেন ২৫ রান করা দীপেন্দ্রর উইকেট। ৪ ওভারে ১ মেডেনসহ ৭ রান খরচে ২ উইকেট নেন বাঁহাতি এই পেসার। শেষ ওভারে এসে প্রথম দুই বলেই দুই উইকেট নেপালের ৮৫ রানে ইনিংসের ইতি ঘটান সাকিব।

ডি গ্রুপ থেকে এর আগে সুপার এইট নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের সঙ্গী হতে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। সম্পাল কামির বাউন্সার ডাউন দ্য উইকেটে এসে পুল করতে যান তানজিদ হাসান তামিম। কিন্তু টাইমিং ঠিকঠাক হয়নি, বোলারের কাছেই ক্যাচ দেন তিনি। প্রথম ওভার থেকে আসে স্রেফ ৩ রান।

দ্বিতীয় ওভারেও উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এবার বোল্ড হয়ে যান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দীপেন্দ্র সিংয়ের বলে আউট হওয়ার আগে ৫ বলে ৪ রান করেন তিনি।

মাঝে দুই ওভার বাদ দিয়ে আবার উইকেট এনে দেন সম্পাল। নিজের তৃতীয় ওভারে এসে লিটন দাসকে ফেরান তিনি। তার বলে পুল করতে গিয়ে আসিফ শেখের হাতে ক্যাচ দেন লিটন। ১২ বলে ১০ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

পাওয়ার প্লের আগেই তাওহীদ হৃদয়কেও হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। রোহিত পোডেলকে সুইপ করতে গেলে বল বাতাসে ভেসে যায়। হৃদয়ের দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন সন্দীপ লামিচানে। ৭ বলে ৯ রান করে আউট হন হৃদয়।

পাওয়ার প্লেতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে সাকিব আল হাসানের জুটিটিই ছিল বাংলাদেশের জন্য বড় ভরসা। দুজন মিলে দলকে দিচ্ছিলেন ভালো কিছুর বার্তাও। কিন্তু হুট করেই ফের ঘটে ছন্দপতন!

কিন্তু ২০ বলে দুজনের ২২ রানের জুটি ভাঙে হতাশার রান আউটে। সাকিব আল হাসান ফুলটস বল পাঠিয়েছিলেন এক্সট্রা কাভারে। দৌড়ও শুরু করেছিলেন, কিন্তু হঠাৎ তার মনে হয় বলের কাছাকাছি আছেন ফিল্ডার। সাকিব ফেরত পাঠান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। কিন্তু তিনি ফেরার আগেই নন স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প ভাঙে। ১৩ বলে ১৩ রান করে সাজঘরে ফেরত যান রিয়াদ।

তার আউট হওয়ার পর মাথায় হাত দিয়ে হতাশায় বসে পড়েন সাকিব। কিন্তু এরপর নিজেও দায়িত্ব নিয়ে ইনিংস টানতে পারেননি। রোহিত পোডেলের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ২২ বলে ১৭ রান করেন সাকিব। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি।

১৪তম ওভারের প্রথম বলে সন্দীপ লামিচানে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন তানজিম হাসান সাকিবকে। রিভিউ নিয়ে ওই বলে বেঁচে যান তিনি। কিন্তু পরের বলে আরও এক গুগলিতে বোল্ড হয়ে যান ৫ বলে ৩ রান করে।

এরপর বাংলাদেশের জন্য শেষ ভরসা ছিলেন জাকের আলি। অনেকগুলো বলও খেলেছিলেন তিনি। কিন্তু জাকেরও লামিচানের গুগলি না বুঝতে পেরে বোল্ড হয়ে যান। ২৬ বল খেলে ১২ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

তার বিদায়ের পর রিশাদ একটু আশা জাগিয়েছিলেন। কুশল ব্রুথালকে ১৭তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা ও দ্বিতীয়টিতে চার হাঁকান তিনি। ওই ওভার থেকে আসে ১৩ রান। কিন্তু পরের ওভারের প্রথম বলেই লং অফে ক্যাচ দেন রিশাদ।

বাংলাদেশের একশ রানের আশাও তখন মনে হচ্ছিল দূরের কল্পনা। তবে শেষ উইকেট জুটিতে মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ ১৪ বলে ১৮ রান করলে একশ ছাড়াতে পারে বাংলাদেশ। ‍তৃতীয় বলে মোস্তাফিজ রান আউট হলে জুটি ভাঙে। ১৫ বলে ১২ রান করে অপরাজিত থাকেন তাসকিন। নেপালের হয়ে দুই উইকেট করে নেন সম্পাল, লামিচানে, রোহিত ও দীপেন্দ্র।

ব্যাটারদের ব্যর্থতাকে ঢেকে দিয়ে শেষ পর্যন্ত আলো ছড়ালেন বোলাররা। যার ফলে প্রথম আসরের পর আবারও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে খেলার সুযোগ পেল বাংলাদেশ। ঈদের দিনে এমন বাড়তি আনন্দই তো চেয়েছিলেন সমর্থকরা।

কিংস্টনে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ১৯ ওভার ৩ বলে ১০৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৭ রান করেন সাকিব আল হাসান। জবাবে খেলতে নেমে ১৯ ওভার ২ বলে ৮৫ রানে অলআউট হয় নেপাল।


ওয়েস্ট ইন্ডিজে ঈদ পালন করলেন সাকিব-মুস্তাফিজরা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল এখন অবস্থান করছে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্টেই পবিত্র ঈদুল আজহা পালন করেছেন নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

ঈদের দিন নামাজ আদায় শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি শেয়ার করেছেন ক্রিকেটারদের একাংশ। মাতৃভূমি থেকে অনেক মাইল দূরে সতীর্দের সঙ্গেই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন তারা। সেখানে হাস্যউজ্জ্বল অবস্থায় দেখা গেছে সাকিব আল হাসান-মুস্তাফিজুর রহমানদের।

অবশ্য খুব একটা বিশ্রামের সুযোগ পাচ্ছেন না ক্রিকেটাররা। কেননা আগামীকাল ভোরেই নেপালের বিপক্ষে মাঠে নামতে হবে টাইগারদের। এই ম্যাচে জয় পেলেই সুপার এইট নিশ্চিত হবে তাদের। তাই সেরাটাই দিতে চাইবেন সবাই।

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মাচ শেষে অবশ্য সাকিব আল হাসান জানিয়েছিলেন, নেপালকে হারিয়ে দেশবাসীকে ঈদের আনন্দ উপহার দিতে চান। এখন দেখার বিষয় মাঠের খেলায় বাংলাদেশ দল সেটা প্রমাণ করতে পারে কি না।


রোমাঞ্চেভরা খেলায় শেষ বলে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

ক্রিকেট যে অনিশ্চয়তার খেলা সেটা দেখা গেল আরেকবার। অবশ্য এবারের বিশ্বকাপ সেটার প্রমাণ দিচ্ছে বারবারই। বিশ্ব ক্রিকেটে নেপাল এখনো শিশু; অন্যদিকে সেই বয়স পেরিয়ে কৈশর-যৌবন ছাড়িয়ে এখন বৃদ্ধ দক্ষিণ আফ্রিকা। মাঠে নামার আগে তাই সবার চোখেই একক ফেবারিট ছিল প্রোটিয়ারাই। কিন্তু মাঠের খেলায় তাদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিল নেপাল। ইতিহাস গড়ার খুব কাছে গিয়েও ফিরেছে খালি হাতে। মাত্র এক রানের হারে মন ভেঙেছে নেপালিদের। মনে মনে এখন তারা আওড়াতেই পারে- এত কাছে আছ তুমি, তবু কেন দূরে মনে হয়।

অন্যদিকে ‘ডি’ গ্রুপে টানা চার জয় দিয়েই গ্রুপপর্ব শেষ করল দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হেসে-খেলে হারিয়েছিল তারা। কিন্তু পরের তিন ম্যাচেই কষ্টার্জিত জয় পেয়েছে প্রোটিয়ারা। শেষ দুই ম্যাচে তো হারতে হারতেই জিতে গেল তারা।

টি-টোয়েন্টিতে এর আগে কখনোই সাক্ষাৎ হয়নি এই দুই দলের। সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নস ভ্যালে স্টেডিয়ামে প্রথম সাক্ষাতে নেপালকে ১ রানে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ে নেমে প্রোটিয়াদের মাত্র ১১৫ রানে আটকে দেয় নেপাল। শেষ ওভারের শেষ বলে ২ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি নেপাল; থেমেছে ১১৪ রানে। তিন ম্যাচে দ্বিতীয় পরাজয়ে নেপালের বিদায়ও নিশ্চিত হয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের পাল্লা ঝুঁকে ছিল নেপালের দিকে। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল দুই রান। বার্টম্যানের বল ব্যাটে না লাগলেও স্ট্রাইকে থাকা গুলশান ঝা দৌড় শুরু করলেন। তখন বল নিয়েই থ্রো করেছিলেন কুইন্টন ডি কক। বলটি গিয়ে গুলশানের পিঠে লাগলে সেটা পেয়ে স্টাম্প ভেঙে দেন ক্লাসেন।

১৭ ওভার পর্যন্ত ম্যাচে এককভাবে এগিয়ে থাকা নেপালের বিপক্ষে ম্যাচটা জমিয়ে তোলে প্রোটিয়া লেগ স্পিনার তাবরাইজ শামসি। তার স্পিন বিষেই নীল হয়েছে নেপাল। থিতু ব্যাটারদের ফিরিয়ে এশিয়ার দেশটির জয়ের স্বপ্নে ধুলিস্যাৎ করে দেন।

ম্যাচের ১৭ ওভার শেষে স্কোর ছিল ৯৮ রানে ৩ উইকেট। জয়ের জন্য ১৮ বলে প্রয়োজন ১৮ রান। পরের ওভারেই জোড়া আঘাতে নেপালকে বিপদে ফেলেন তাবরাইজ শামসি। তুলে নেন শুরু থেকে জয়ের পথ দেখানো আসিফ শেখ (৪২) ও দীপেন্দ্র সিং এইরির (৬) উইকেট। পরের ওভারে এনরিখ নরকিয়া মাল্লার (১) উইকেট নিলে থ্রিলারে পরিণত হয় ম্যাচ।

তবে সোম্পাল কামি নরকিয়াকে ছক্কা হাঁকিয়ে শেষ ওভারে সমীকরণ দাঁড় করায় ৮ রানের। সেই সমীকরণ বেশ ভালোভাবেই ডিফেন্ড করেছেন প্রোটিয়া বোলার বার্টম্যান। প্রথম দুই বল ডট দিয়ে চাপে ফেলে দেন নেপালকে। তৃতীয় বলে গুলশান ৪ মেরে সেটা কিছুটা দূর করেন। পরের বলে দুই রান নিয়ে জয়ের আরও কাছে চলে যায়। কিন্তু পঞ্চম বলে ডট দিয়ে শেষ বলের সমীকরণে দিশা হারিয়ে ফেলে নেপাল। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে তারা থামে ১১৪ রানে।

১৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা শামসি। একটি করে নিয়েছেন আনরিখ নরকিয়া ও এইডেন মার্করাম। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে উইকেট হারানোর মিছিলে নাম লেখান দক্ষিণ আফ্রিকাও। এইডেন মার্করামও কাবু হয়েছেন নেপালের স্পিন ঘূর্ণিতেই। খোলস ছেড়ে বের হতে পারেননি কোনো ব্যাটারই। দলের পক্ষে ৪৯ বল থেকে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন রিজা হেনড্রিকস। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার এই রানের পেছনে বড় অবদান ছিল ট্রিস্টান স্টাবসেরও। শেষ দিকে ২ চার আর এক ছক্কায় ১৮ বল থেকে ২৭ রান করেন তিনি। নেপালের হয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন কুশল ভুর্তেল। এ ছাড়া বাকি তিন উইকেট নেন দীপেন্দ্র।


ঈদের আনন্দ ডাবল হতে পারে বাংলাদেশের জয়ে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে খেলা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের। প্রস্তুত শেষ সমীকরণের মঞ্চও। নেপালের বিপক্ষে বড় অঘটন না ঘটলেই সুপার এইচে জায়গা করে নেবে বাংলাদেশ। ডি-গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে সোমবার ভোর সাড়ে ৫টায় মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নস ভ্যালে স্টেডিয়ামে। যে মাঠে বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডসকে হারিয়েছিল। খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।

বিশ্বকাপের শুরুতে বাংলাদেশকে নিয়ে যতটা সমালোচনা হয়েছিল, তার সবটাই মিলিয়ে গেছে বিশ্বকাপে টাইগারদের পারফরম্যান্স দেখে। প্রথম ম্যাচে লঙ্কানদের হারিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। পরের দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিততে জিততেও হেরে গিয়েছিল। অবশ্য সে ম্যাচে আম্পায়ারদেরও কিছুটা দায় ছিল। পরের ম্যাচেই আবারও বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছিল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে।

সবশেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সুপার এইটের আরও কাছে চলে গেছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের এবারের আসরের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলা টাইগারদের জন্য এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এ ম্যাচে নেপালকে হারালেই সেই স্বপ্ন পূরণ হবে বাংলাদেশের। হারলেও সম্ভাবনা থাকবে কিন্তু তখন হিসাব মেলাতে হবে নেট রানরেটের। সেখানেও অবশ্য বাংলাদেশই এগিয়ে আছে। আর শেষ ম্যাচে যদি নেদারল্যান্ডস শ্রীলঙ্কার কাছে হারে তাহলে কোনো হিসাবই কষতে হবে না বাংলাদেশের।

নেপালের চেয়ে হিসাব-নিকাশে এগিয়েই আছে বাংলাদেশ। এবারের বিশ্বকাপে তিন ম্যাচ খেলে এখনো কোনো জয়ের দেখা পায়নি নেপালিরা। অন্যদিকে দুই ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ আছে সুপার এইটের কাছে। শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে হারানোয় আরও আত্মবিশ্বাসী টাইগাররা।

বাংলাদেশের চিন্তার একটাই কারণ ব্যাটিং সমস্যা। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান রানে ফেরায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে টাইগার শিবির। কিন্তু লিটন-শান্তর অফফর্ম এখনো পুরোপুরি চিন্তামুক্ত করতে পারছে না। বিশেষ করে সুপার এইটের আগে অন্তত তাদের রানে ফেরাটা জরুরি।

বোলিংয়ে বাংলাদেশ যোজন যোজন এগিয়ে নেপালের চেয়ে। কারণ এই মুহূর্তে সেরা ছন্দে আছে বাংলাদেশের বোলাররা। গতির আগুন ঝড়াচ্ছে পেসার তাসকিন আহমেদ। তার সঙ্গে স্লোয়ার-বাউন্সারে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করছে তানজিম হাসান সাকিব। স্পিনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তরুণ লেগস্পিনার রিশাদ হোসাইন। তাকে সহযোগিতা করছে সাকিব-মাহমুদউল্লাহ। ফিল্ডিংয়েও অন্য সময়ের চেয়ে ভালো করছে টাইগাররা। চোখ রাঙানি দিচ্ছে প্রতিপক্ষকে। মাঠে জয়ের ক্ষুধার জানান দিচ্ছে শরীরি ভাষায়।

তবে নেপালকে ফেলে দেওয়ার সুযোগ নেই; দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যেটা করেছে সেটা দেখার পর অন্তত। প্রোটিয়া ব্যাটারদের নাভিশ্বাস তুলেছিল নেপালি বোলাররা। আর্নস ভ্যালে স্টেডিয়ামে মাত্র ১১৫ রানেই আটকে দিয়েছিল প্রোটিয়াদের। পরে সেই রান তাড়া করে জয়ের কাছেও চলে গিয়েছিল তারা। কিন্তু নীল হয়েছে সেই স্পিন বিষেই। তাবরিজ শামসির এক ওভারেই সব এলোমেলো হয়ে গেছে তাদের। এক রানে হেরেছে নেপাল।

বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস, নেপাল-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দেখে বোঝার বাকি নেই আর্নস ভ্যালে স্টেডিয়ামের আচরণ। স্পিনারদের সহায়তা করতে জুড়ি মেলা ভার তার। সেক্ষেত্রে এ ম্যাচেও বোলিংয়ে বাংলাদেশের কাণ্ডারি হতে পারেন রিশাদ হোসাইন। একাদশেও আসতে পারে পরিবর্তন। উইকেটের কথা চিন্তা করে, সেক্ষেত্রে বাদ পড়তে পারেন জাকির হোসাইন। তার বদলে দেখা যেতে পারে শেখ মাহেদীকে। এ ম্যাচে স্পিন আক্রমণে নেপাল যদি হয় কাটা। তবে বাংলাদেশ সেই কাটা দিয়েই বের করবে কাটা। বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচটি হবে ঈদের ভোরে। নেপালকে হারিয়ে বাংলাদেশের সমর্থকদের ঈদের খুশিকে আরও বাড়িয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। জয় দিয়ে গ্রুপ পর্ব শেষ করার লক্ষ্যই থাকবে টাইগারদের। অবশ্য বাংলাদেশকেও হুমকি দিয়ে রেখেছেন নেপালের অধিনায়ক রোহিত পাডকৌল। বাংলাদেশকে হারিয়েই গ্রুপ পর্ব শেষ করতে চায় তারা।


অস্ট্রেলিয়ার কাছে স্কটল্যান্ডের পাত্তাই পাওয়ার কথা নয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপের এবারের আসরের অন্যতম আলোচিত গ্রুপটি হলো ‘বি’। এর পেছনের বড় কারণ ইংল্যান্ডের বিদায়ের শঙ্কা। তাদের কাঁদিয়ে অনেকটা সুপার এইট নিশ্চিত করেই ফেলেছিল স্কটল্যান্ড। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে সুপার এইটের লড়াই জমিয়ে তুলেছে ইংলিশরা। তবে এখনো সুযোগ আছে স্কটিশদের সামনে। সে জন্য অবশ্য তাদের দিতে হবে কঠিন পরীক্ষাই। রোববার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ের কোনো বিকল্প নেই তাদের। সেই লক্ষ্যেই ভোর সাড়ে ৬টায় অজিদের বিপক্ষে মাঠে নামবে স্কটল্যান্ড। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন সামি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। খেলার চলতি ধারাবিবরণী সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।

বিশ্বকাপের শুরুটা মন্দ হয়নি স্কটল্যান্ডের। প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করার পর নামিবিয়ার বিপক্ষে ৫ উইকেটে এবং ওমানের সঙ্গে ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে স্কটল্যান্ড। ফলে সুপার এইটের দৌড়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে তারা। বি-গ্রুপে ৩ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে স্কটল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এটাই তাদের শেষ ম্যাচ। সুপার এইটের সমীকরণ মেলানোর ম্যাচও বটে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এ ম্যাচ থেকে অন্তত ১ পয়েন্ট পেলেই সুপার এইটের টিকিট পাবে স্কটল্যান্ড। তবে কোনো পয়েন্টই না পেলে আর ইংল্যান্ড যদি রাত ১১টায় নামিবিয়াকে হারায় তাহলে তাদের কোনো সমীকরণই থাকবে না।

পয়েন্ট ভাড়াভাগি কিংবা রানরেট নিয়ে ভাবতে চায় না স্কটিশরা। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সুপার এইটে উঠতে চায় তারা। দলের ওপেনার জিওর্জি মুনশি বলেন, ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়। এ ম্যাচে অজিদের বিপক্ষে সেরা ক্রিকেট খেলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে চাই আমরা। সুপার এইটে খেলার ভালো সুযোগ আমাদের সামনে। আশা করছি, আমরা পারব।’

তিনি এ কথা বললেও খাতা-কলম, শক্তি-সামর্থ্য অতীত পরিসংখ্যান বলছে ভিন্ন কথা; এ ম্যাচের স্পষ্ট ফেভারিট অস্ট্রেলিয়া। ইতোমধ্যে নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচই জয় দিয়ে রাঙিয়েছে অজিরা। সেই তালিকায় নাম ছিল ইংল্যান্ডের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলেরও। প্রথম তিন ম্যাচ জিতে আত্মবিশ্বাসী অস্ট্রেলিয়া।

এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা দল অস্ট্রেলিয়া। শিরোপার বড় দাবিদারও তারা। এ ‍মুহূর্তে নিজেদের সেরা ছন্দে আছেন ক্রিকেটাররা। অ্যাডাম জাম্পা, অ্যাস্টন আগার, মার্কাস স্টয়নিস, মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজলউড, প্যাট কামিন্সদের নিয়ে গড়া অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণ যেকোনো দলকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার সামর্থ্য রাখে। সেই প্রমাণ ইতোমধ্যেই দিয়েছে তারা।

ব্যাটিংয়ে কতটা বিধ্বংসী ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেড, মিচেল মার্শরা সেটারও প্রমাণ দিয়েছে। পাশাপাশি মার্কাস স্টয়নিচ, টিম ডেভিড, ম্যাথিউ ওয়েডরা দায়িত্ব নিতেও যথেষ্ট পারদর্শী। ফিল্ডিংয়েও জুড়িমেলা ভার অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের।

তিন বিভাগেই স্কটিশদের চেয়ে ঢের এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। শেষ ম্যাচ জিতে জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেই সুপার এইট নিশ্চিত করতে চাইবে তারা। তবে জশ হ্যাজলউড যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সেটা নিছকই মজারছলে ছিল সেটা জানিয়েছেন প্যাট কামিন্স।


সুপার এইটে এক পা দিয়ে রাখলো বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৪ জুন, ২০২৪ ০০:৩৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সুপার এইটে এক পা দিয়ে রাখলো বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডসকে ২৫ রানে হারিয়ে ৩ ম্যাচ থেকে ৪ পয়েন্ট নিয়ে এগিয়ে গেল বাংলার বাঘেরা। ‘ডি’ গ্রুপ থেকে ইতোমধ্যেই ছিটকে গেছে শ্রীলঙ্কা। অন্যদিকে সুপার এইটে কোয়ালিফাই করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

তলানিতে থাকা নেপাল কাগজে-কলমে টিকে থাকলেও শক্তিমত্তা বিবেচনায় তাদের সম্ভাবনা অনেকটাই কম। তাই সুপার এইটের লড়াইয়ে বাংলাদেশের পথে কাঁটা হয়ে ছিল নেদারল্যান্ডস। তাই ডাচদের হারিয়ে সমীকরণ সহজ করল টাইগাররা।

এর আগে, জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৫৯ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজিও গড়ে বাংলাদেশ। ডাচদের ব্যাটিংয়ের একটা পর্যায়ে দারুণ অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। বিপদের সময় ট্রাম্পকার্ড বের করলেন লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন। ১৫তম ওভারে দুই উইকেট শিকার করে ম্যাচের চেহারা বদলে দিলেন তিনি।

শুরুতে নেদারল্যান্ডস শিবিরে আঘাত করেছিলেন তাসকিন আহমেদ। পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে মাইকেল লিভিটের উইকেট তুলে নেন ডানহাতি এই পেসার। দেখেশুনে খেলে এগোতে থাকা এই ডাচ ব্যাটারকে ১৮ রানের (১৬ বলে) মাথায় তাওহিদ হৃদয়ের ক্যাচ বানান তিনি।

পরের ওভারে বোলিংয়ে এসেই ডাচ শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন তানজিম হাসান সাকিব। ডানহাতি এই পেসারকে ফলোথ্রু করে সাজঘরের পথে হাঁটেন আরেক ওপেনার ম্যাক্স ও'ডাইউ (১৬ বলে ১২)। দলীয় ৩২ রানের মাথায় ২ উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস।

১৪ ওভারের খেলা শেষে নেদারল্যান্ডসের বোর্ডে ১০৪ রান। নৈপথ্যে চতুর্থ উইকেটে ৪২ রানের ঝোড়ো জুটি। এই জুটির কারণে দারুণ অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশকে। অবশেষে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দিলেন রিশাদ। ১৫তম ওভারে দুুটি উইকেট তুলে নিলেন তিনি। চতুর্থ বলে ৩১ বলে ৪২ রানের জুটি ভাঙেন। ২২ বলে ৩২ রান করা সাইব্রান্ড এনগেলব্রখটকে তানজিম সাকিবের ক্যাচ বানান তিনি। রিশাদের ওভারের শেষ বল খেলতে গিয়ে স্টাম্পড আউট হন ডি লিডে।

মোস্তাফিজের করা ১৭তম ওভারে ১ রান দিয়ে ১ উইকেট শিকারও বাংলাদেশের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। স্কট এডওয়ার্ডসকে (২৩ বলে ২৫) জাকির আলির ক্যাচ বানান তিনি।

ব্যাক-টু-ব্যাক বোলিংয়ে এসেই আবারও রিশাদের উইকেট শিকার। লোগান ফন বিক (৩ বলে ২) রিশাদের হাতেই ক্যাচ হন। সর্বশেষ টিম প্রিংলেকে ফেরান তাসকিন। এতে ২০ ওভারে ডাচরা তুলতে পারে ৮ উইকেটে ১৩৪ রান।

এর আগে সেন্ট ভিনসেন্টে টস হেরে ব্যাট করে নেমে সাকিব আল হাসানের ফিফটিতে ৫ উইকেটে ১৫৯ রান করে বাংলাদেশ। যদিও শুরুতেই অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর উইকেট হারায় টাইগাররা। ৩ বলে ১ করে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আইরিশ স্পিনার আরিয়ান দত্তকে রিভার্স সুইপ খেলে ক্যাচ দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

এরপর আরিয়ানের দ্বিতীয় শিকার হন লিটন। সুইপ খেলে স্কয়ার লেগে এনগেলব্রেখটে দুর্দান্ত ক্যাচ হয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। ২ বলে তিনি করেন ১ রান।

তৃতীয় উইকেটে সাকিবকে নিয়ে ৩২ বলে ৪৮ রানের দারুণ একটি জুটি করেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। তানজিদ ২৬ বলে ৩৫ রান করে আউট হয়ে গেলে জুটি ভাঙে। পল ফন ম্যাকেরেনের বলে ডি লিডের হাতে ক্যাচ হন তিনি।

এদিন ভালো করতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়। তার ব্যাটে যেন বলই আসতেছিল না। ১৫ বল খেললেও রান করতে পেরেছেন মাত্র ৯। শেষ পর্যন্ত টিম প্রিংলের বলে স্টাম্প ছেড়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন ডানহাতি এই ব্যাটার।

মাহমুদউল্লাহ বেশ ভালোভাবেই পিচে সেট হয়েছিলেন। কয়েকটি দারুণ শটও খেলেছিলেন। তবে ম্যাচটি শেষ করে আাসতে পারেননি। ২ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ২১ বলে ২৫ রান করেছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। ফন ম্যাকেরেনের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি, ক্যাচ হন এনগেলব্রেখটের হাতে।

দুর্দান্ত ব্যাট করে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন সাকিব। ৪৬ বলে ৬৪ রানের চোখ জুড়ানো ইনিংস খেলেন বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রায় ২ বছর পর সাকিবের ব্যাট থেকে আসে অর্ধশত রানের ইনিংস। কোনো ছক্কা হাকানো ছাড়াই ৯ বাউন্ডারিতে এই রান করেন সাকিব। তার সঙ্গে ৭ বলে ১৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন জাকের আলি।

নেদারল্যান্ডসের হয়ে ২টি করে উইকেট শিকার করেন আরিয়া দত্ত ও পল ফন ম্যাকেরেন। বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট নেন রিশাদ। ২ উইকেট নেন তাসকিন। ম্যাচসেরা হন সাকিব আল হাসান।


দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং-বোলিং সাম্রাজ্য শাসন করবে নেপালকে

আপডেটেড ১৪ জুন, ২০২৪ ০০:০৬
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগেই নিজেদের সেরা ছন্দে প্রোটিয়ারা। গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচেই জয় পেয়েছে এইডেন মার্করামের দল। ইতোমধ্যে নিশ্চিতও করেছে সুপার এইট। এ ধারা অব্যাহত রেখে চতুর্থ জয়ে চোখ দক্ষিণ আফ্রিকার। আর সে জন্য তাদের সামনে প্রতিপক্ষ ১০ বছর পর বিশ্বকাপ খেলতে আসা নেপাল। আগামীকাল বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৫টায় ডি-গ্রুপ থেকে মুখোমুখি হবে দুই দল। সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনে অনুষ্ঠিত হবে এ ম্যাচটি।

প্রথম তিন ম্যাচে জিতে ডি-গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে সুপার এইট নিশ্চিত করে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অন্যদিকে দুই ম্যাচ খেলে এখনো কোনো ম্যাচে জয় পায়নি নেপাল। প্রথম ম্যাচে হেরেছিল নেদারল্যান্ডসের কাছে। আর দ্বিতীয় ম্যাচ ভেস্তে গেছে বৃষ্টি-বাধায়। তাই ইতোমধ্যেই বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে তাদের।

আইসিসি র‌্যাঙ্কিং, দুই দলের শক্তি, বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেদের পরিচিতি সবকিছুতেই এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। নেপাল দলের বড় তারকা বলতে কেবলই সন্দীপ লামিচানে। অন্যদের ক্রিকেটবিশ্বে আনাগোনা নেই বললেই চলে। সবমিলিয়ে বলা যায় এক অসম লড়াই হতে যাচ্ছে নেপাল আর দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে।

অন্যদিকে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটিং এবং বোলিং লাইনআপ নিয়ে বিশ্বমঞ্চে রাজত্ব করছে প্রোটিয়ারা। এইডেন মার্করাম, কুইন্টন ডি কক, হেনরি ক্লাসেন, ট্রিস্টান স্টাবস, ডেভিড মিলারদের নিয়ে গড়া প্রোটিয়া ব্যাটিং লাইনআপ নেপালের বোলারদের শাসন করবে- এটা তো বলাই যায়। সে সক্ষমতা তারা দেখিয়েছে ইতোমধ্যেই। কঠিন উইকেটেও দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করেছে।

প্রোটিয়া বোলিং নিয়ে সন্দেহ থাকার কোনো প্রশ্নই আসে না বাংলাদেশের বিপক্ষে ওই ম্যাচ বের করে নিয়ে যাওয়ার পর। কেশব মহারাজ, এনরিখ নরকিয়া, কাগিসো রাবাদা, তাবরাইজ শামসিরা নিজেদের অভিজ্ঞতার সবটা ঢেলে দিচ্ছেন ম্যাচে। ছড়ি ঘোরাচ্ছেন প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের ওপর। নেপালের বিপক্ষে আরেকবার সেটাই দেখা যাবে- এটা বলাই যায়।

বিশ্বকাপের এবারের আসরের অন্যতম দাবিদার দক্ষিণ আফ্রিকা। অন্তত সেমিফাইনালের সমীকরণে আছে তারা। এ ম্যাচে তাই গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেওয়া নেপালের বড় প্রাপ্তি হবে ভালো একটা লড়াই করতে পারা।

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা না পাওয়ায় বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারেনি দলটির পোস্টারবয় সন্দীপ লামিচানে। নেপালের বাকি দুই ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজে এবং সেখানকার ভিসা পেতে কোনো জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়নি লামিচানেকে। দলের সঙ্গে যোগও দিয়েছেন তিনি। খেলবেন বাকি দুই ম্যাচে।

তবে এ ম্যাচে ভিন্ন কিছু দেখা গেলেও যেতে পারে। ইতোমধ্যেই প্রথম তিন ম্যাচে জিতে সুপার এইটে খেলা নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এটাও নিশ্চিত হয়ে গেছে ডি-গ্রুপ থেকে শীর্ষ দল হিসেবেই শেষ আটে খেলবে তারা। বিশ্বকাপের নতুন নিয়ম অনুযায়ী সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ কারা সেটাও নিশ্চিত হয়ে গেছে। তাই এ ম্যাচে দলের সেরা তারকাদের বিশ্রাম দিতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেটাই বড় একটা সুযোগ হতে পারে নেপালের জন্য।


নিউজিল্যান্ডের বিদায় ঘণ্টা, ভয়ংকর ক্যারিবীয়রা সুপার এইটে

আপডেটেড ১৪ জুন, ২০২৪ ০০:০৮
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

প্রথম ম্যাচে আফগানদের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে বিপাকেই পড়েছিল নিউজিল্যান্ড। উইলিয়ামসনদের সামনে অপেক্ষা করছিল কঠিন সমীকরণ। সুপার এইটের আশায় টিকে থাকতে হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতেই হবে। এমন সমীকরণ নিয়েই গতকাল মাঠে নেমেছিল কিউইরা। কিন্তু ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত নিরাশ হতে হয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। হেরেছে ১৩ রানে। টানা দুই হারে এখন সি-গ্রুপ থেকে বিদায়ের সন্নিকটে নিউজিল্যান্ড। তবে খাতা-কলমে এখনো কিছুটা আশা বেঁচে আছে ব্ল্যাকক্যাপসদের। সে জন্য মিরাক্কেলই ঘটাতে হবে তাদের। পাশাপাশি তাকিয়ে থাকবে আফগানদের বাকি দুই ম্যাচে বড় ব্যবধানের হার দেখতে।

নিউজিল্যান্ড বিদায় নিলেও টানা তিন ম্যাচ জিতে তৃতীয় দল হিসেবে সুপার এইট নিশ্চিত করল বিশ্বকাপের সহযোগী আয়োজক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে উড়িয়ে দিয়েছিল উগান্ডাকে। আর গতকাল নিউজিল্যান্ডকে হারাল এ ফরম্যাটের দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। চোখ রাঙানি দিয়েছিল হারের। সেখান থেকে অবশ্য দলকে একাই টেনে নিয়ে গিয়েছেন শেরফান রাদারফোর্ড। ১৮ ওভার শেষে ৯ উইকেটে ক্যারিবীয়দের রান ছিল ১১২। শেষ দুই ওভার থেকে ৩৭ রান নিয়ে তিনি সেটাকে নিয়ে গেলেন ১৪৯-এ।

শেষের ২ ওভারে খুঁজে পাওয়া ছন্দে পরে বোলিংয়েও জ্বলে উঠেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিউজিল্যান্ডকে তারা হারিয়েছে ১৩ রানে। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৬ রানেই থেমেছে নিউজিল্যান্ড। টানা তৃতীয় জয়ে সুপার এইটে পৌঁছে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। পাওয়ার প্লেতে মাত্র ২৩ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারায় তারা। ক্যারিবীয়রা পঞ্চম উইকেট হারায় ৩০ রানেই। এরপরও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়ে যায় দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। সেখান থেকে দলের হাল ধরেছেন শেরফান রাদারফোর্ড। ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৩৯ বলে খেলেন ৬৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। এটাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ রান করেছেন নিকোলাস পুরান। ২০ ওভার শেষে ক্যারিবীয়দের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪৯ রান।

মন্থর উইকেটে মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি নিউজিল্যান্ডেরও। প্রথম ৭ ওভারে ৪৫ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়েছে কিউইরা। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ফিরেছেন মোটে ১ রানেই। এর আগে আউট হয়েছেন ফিন অ্যালেন (২৬) ও ডেভন কনওয়ে (৫)। রাচিন রবীন্দ্র (১০) ও ড্যারেল মিচেলও (১২) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। দুজনই ফিরেছেন ১১ ওভারের মধ্যে। ১১ ওভার শেষে ৬৩ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে খাদের কিনারায় চলে যায় ব্ল্যাকক্যাপসরা। সেখান থেকে দলকে টেনে তুলতে একাই লড়ে গেছেন গ্লেন ফিলিপস। ৩৩ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলে নিউজিল্যান্ডকে কিছুটা আশা দেখিয়েছিলেন তিনি। তবে সেটা শুধু হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। ১৮তম ওভারে আলজারি জোসেফের কাছে উইকেট দিলে শেষ হয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের জয়ের আশা।

ক্যারিবীয় বোলার আলজারি জোসেফ ১৯ রান দিয়ে শিকার করেছেন ৪ উইকেট। আর স্পিনার গুদাকেশ মোতি নিয়েছেন ৩ উইকেট।


টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক

সমান সমান পয়েন্টে আছে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস। প্রথম দুই ম্যাচ থেকে ২ পয়েন্ট পেয়েছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসও সমান সংখ্যক ম্যাচ খেলে সমান পয়েন্ট পেয়েছে।

তবে নেট রান রেটে কিছুটা পিছিয়ে ডাচরা। সুপার এইটের পথে এগিয়ে যেতে দুই দলের জন্যই এই ম্যাচে জয় সমান গুরুত্বপূর্ণ।

আজ কিংসটনের স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় টস হওয়ার কথা ছিল। তবে টসের ঠিক আগ মুহূর্তে হানা দেয় বৃষ্টি। অবশ্য সেটা ভারী কোনো বৃষ্টি ছিল না। মিনিট বিশেক বৃষ্টি হয়েছে। তাতে টসে ৩০ মিনিট বিলম্ব হয়েছে।

টস জিতে শুরুতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। ম্যাচ শুরু হবে নির্ধারিত সময়ের থেকে ১৫ মিনিট দেরিতে অর্থাৎ স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে, আর বাংলাদেশ সময় রাত ৮ টা ৪৫ মিনিটে।

বাংলাদেশ গত ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেরেছিল। তারপরও গত ম্যাচে একাদশের ওপর আস্থা রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। অপরিবর্তিত দল নিয়ে মাঠে নামছে টাইগাররা।

অন্যদিকে নেদারল্যান্ডস গত ম্যাচের একাদশ থেকে এক পরিবর্তন নিয়ে আজ একাদশ সাজিয়েছে। তেজা নিদামারুর একাদশে জায়গা হারিয়েছেন। তার পরিবর্তে খেলবেন স্পিনার আরিয়ান দত্ত।

শেষ খবর পাওয়া অনুযায়ী: বাংলাদেশের সংগ্রহ, ৩ ওভারে ২৩ রান, ১ উইকেট।

বাংলাদেশ একাদশ-

লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তাওহীদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলি, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান।

নেদারল্যান্ডস একাদশ-

মাইকেল লেভিট, ম্যাক্স ও’ডাউড, বিক্রমজিত সিং, সিব্রান্ড এঙ্গেলব্রেখট, বাস ডি লিডি, স্কট এডওয়ার্ডস (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), আরিয়ান দত্ত, লোগান ফন বিক, টিম প্রিঙ্গল, পল ফন মিকেরেন ও ভিভিয়ান কিংমা।


উড়ন্ত আফগানদের সুপার এইটের মিশন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

বিশ্বকাপের শুরুটা ভালো হয়নি বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের। গ্রুপ পর্বের ৪ ম্যাচের ২ ম্যাচ খেলে ফেললেও এখনো খোঁজ করছে প্রথম জয়ের। প্রথম ম্যাচে ইংলিশদের কপাল পুড়েছে বৃষ্টিতে; এরপর অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে এখন গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ের শঙ্কায় আছে ইংল্যান্ড। তাদের পরের রাউন্ডে যাওয়া নির্ভর করছে অনেক সমীকরণের ওপর। সে জন্য ইংলিশদের পরের দুই ম্যাচেই জয়ের কোনো বিকল্প নেই। এমন সমীকরণ মাথায় রেখেই আজ রাত ১টায় ওমানের বিপক্ষে মাঠে নামবে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। অ্যান্টিগুয়ারার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ড স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি।

অন্যদিকে বিশ্বকাপে প্রথম দুই ম্যাচেই বড় ব্যবধানে জিতে আত্মবিশ্বাসী আফগানিস্তান। তৃতীয় জয় এবং সুপার এইট নিশ্চিতের লক্ষ্যে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে মাঠে নামবে আফগানিস্তান। ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় আগামীকাল ভোর সাড়ে ৬টায়। দুটি খেলারই চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।

সাদা বলের ক্রিকেটে কঠিন সময় পার করছে ইংল্যান্ড। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপেও বিদায় নিয়েছিল গ্রুপ পর্ব থেকে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও শঙ্কা জেগেছে একই পরিস্থিতির। এখন তাদের দ্বিতীয় রাউন্ডের আশা বেঁচে আছে নানান যদি ও কিন্তুর ওপর। তবে ওমানের বিপক্ষে হোঁচট খেলে সেই আশার বাতিও নিভে যাবে।

ওমানের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের একমাত্র লক্ষ্যই থাকবে জয় ছিনিয়ে নিয়ে অন্তত কাগজে-কলমে হলেও কিছুটা আশা বাঁচিয়ে রাখা। সাম্প্রতিক সময়টা ভালো না গেলেও শক্তি কিংবা নামের বিচারে এগিয়ে থাকবে ইংল্যান্ডই। ক্রিকেটের এ সংস্করণে দুবারের চ্যাম্পিয়ন তারা।

ইংলিশদের কপাল পুড়েছে মূলত প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ায়। ম্যাচটি মাঠে গড়ালে আর স্কটল্যান্ডকে হারাতে পারলে জস বাটলারেরাই এগিয়ে থাকতেন দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার ক্ষেত্রে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ড হারলেও তারা লড়াই করেছিল বেশ। বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রানের ম্যাচে ইংলিশ ব্যাটাররা করেছিল ১৬৫ রান। ওমানের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম জয় তুলে নেবে ইংল্যান্ড- সেটাই প্রত্যাশা করছে ক্রিকেটবিশ্ব।

অন্যদিকে এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের সেরা সময় পার করছে আফগানিস্তান। প্রথম দুই ম্যাচেই রীতিমতো প্রতিপক্ষের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে রশিদ খানের দল। প্রথম ম্যাচে উগান্ডাকে হারিয়েছিল ১২৫ রানের বড় ব্যবধানে। প্রথমে ১৮৩ রান করে উগান্ডার ইনিংস গুটিয়ে দিয়েছিল ৫৮ রানেই। দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকেও উড়িয়ে দিয়েছিল রশিদ খানরা। জয় পেয়েছিল ৮৪ রানের। এ ম্যাচেও প্রথমে ব্যাট করে ১৫৯ রান করেছিল আফগান ব্যাটাররা। পরে নিউজিল্যান্ডকে গুটিয়ে দিয়েছিল ৭৫ রানেই। রশিদ খানের স্পিন ঘূর্ণি আর ফজলহক ফারুকির পেসে কাবু হয়েছিল কেন উইলয়ামসনরা।

প্রথম ম্যাচে জয় নিয়ে সি-গ্রুপের শীর্ষ দল এখন আফগানরা। আকাশচুম্বী রানরেট তাদের। ইতোমধ্যেই শক্ত করেছে সুপার এইটের অবস্থান। এ ম্যাচে জিতলেই তৃতীয় দল হিসেবে সুপার এইট নিশ্চিত করবে আফগানরা।

সুপার এইট নিশ্চিত করার পথে আফগানদের প্রতিপক্ষ তুলনামূলক দুর্বল পাপুয়া নিউগিনি। যারা ইতোমধ্যেই দুটি ম্যাচ খেলে ঘুরপাক খাচ্ছে হারের বৃত্তে। শক্তি কিংবা নামের বিচারেও দুই দলের পার্থক্য যোজন যোজন। বিশ্বের নামকরা লিগগুলোতে হরহামেশাই দেখা যায় আফগান তারকাদের। সেখানে বেশ অনভিজ্ঞ পাপুয়া নিউগিনির ক্রিকেটাররা।

ইতোমধ্যেই প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আত্মবিশ্বাসী আফগানিস্তান। জয়ের ধারায় অটুট থেকে আগের ম্যাচের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে চাইবে আফগানিস্তান। সে ক্ষেত্রে ব্যাটিংয়ে আফগানদের ভরসার নাম রহমানুল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, মোহাম্মদ নবীরা। বোলিংয়ে দায়িত্ব নেবেন অধিনায়ক রশিদ খান, ফজলহক ফারুকিরা।


বোলিং-ব্যাটিং ঝংকার বাংলাদেশকে সুপার এইটে নিতে পারে

আপডেটেড ১২ জুন, ২০২৪ ২১:৫৫
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আশা জাগালেও ৪ রানে হেরে গেছে। ২ ম্যাচ থেকে দুই পয়েন্ট নিয়ে ডি-গ্রুপের ২ নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। আবারও জয়ের ধারায় ফিরতে এবং সুপার এইটে জায়গা শক্ত করতে আগামীকাল মাঠে নামছে টাইগাররা। এবার আর যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত উইকেট নয়, সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়। খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।

ডি-গ্রুপে বাংলাদেশ এবং নেদারল্যান্ডস দুই দলেরই ম্যাচ এবং পয়েন্ট সমান। দুই দলই মাঠে নেমেছে দুটি করে ম্যাচে; সেখানে একটি করে জয় এবং পরাজয় আছে তাদের নামের পাশে। তবে রানরেটে এগিয়ে থাকায় পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। আর তৃতীয় স্থানে রয়েছে নেদারল্যান্ডস। এ ম্যাচেই খোলাসা হয়ে যাবে সহজ নাকি জটিল সমীকরণে পড়তে হবে বাংলাদেশকে।

কাগজ-কলমে, শক্তি-সামর্থ্যে কিংবা অতীত পরিসংখ্যানে নেদারল্যান্ডসের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশই। আইসিসির টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে নেদারল্যান্ডসের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে বাংলাদেশই। বাংলাদেশের অবস্থান ৯ম স্থানে। অন্যদিকে তিন ধাপ পিছিয়ে স্কটল্যান্ড আছে ১২তম স্থানে।

ক্রিকেটের ছোট এ সংস্করণে খাতা-কলমের হিসাব কিংবা র‌্যাঙ্কিংই শেষ নয়। ছোট-বড় বলে আলাদাও করা যায় না কোনো দলকে। নিজেদের দিনে যেকোনো কিছুই ঘটাতে পারে যেকোনো দল। তার ওপর বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ফর্ম একটা দুশ্চিন্তার কারণ। তাই নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

মুখোমুখি পরিসংখ্যান এগিয়ে রাখছে বাংলাদেশকে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে নেদারল্যান্ডসকে দুইবার হারানোর স্মৃতি আছে টাইগারদের। ২০১৬ সালে ধর্মশালায় এবং ২০২২ সালে হোবার্টে ডাচদের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে চারবারের সাক্ষাতে ডাচদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ জিতেছে টাইগাররা।

ভারতে অনুষ্ঠিত ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের কাছে অবশ্য ৮৭ রানের হারের লজ্জা পেয়েছিল বাংলাদেশ। ওই হারের কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছিল টাইগাররা। আবারও অন্য এক বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বাংলাদেশের। তবে এ ফরম্যাটটা টি-টোয়েন্টি বলেই বাংলাদেশ আশা দেখতে পারে। টাইগাররা সেই হারের প্রতিশোধ নিতেই মুখিয়ে থাকবে।

বাংলাদেশের পেসার তানজিম হাসান সাকিবও বলেছিলেন তেমনই, ‘নেদারল্যান্ডসের কাছে আমরা যে ম্যাচে হেরেছিলাম, সেটি এখন অতীত। ওটা ছিল ওয়ানডে ফরম্যাট। কিন্তু এটা ক্রিকেটের ভিন্ন ফরম্যাট।’

এ ম্যাচেও বাংলাদেশের যত চিন্তা কিংবা দুশ্চিন্তার কারণ সেই একই। ব্যাটারদের ব্যর্থতা। সেটার সঙ্গে যোগ হয়েছে দলের অন্যতম সেরা তারকা সাকিব আল হাসানের অফফর্ম। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তিনি ফর্ম ফিরে পাবেন বলেই প্রত্যাশা টাইগার শিবিরে। গত দুই ম্যাচে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি সাকিব। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের কারণ হিসেবে ব্যাট হাতে সাকিবের রান না পাওয়াকে দোষারোপ করা হচ্ছে। তবে সাকিবের অফফর্মের পরও বাংলাদেশ দলে কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচেই দুর্দান্ত বল করেছেন বাংলাদেশের বোলাররা। কমিয়েছেন ব্যাটারদের চাপ। কিন্তু তবুও ব্যর্থতার খোলস থেকে বের হতে পারছেন না বাংলাদেশের টপঅর্ডার ব্যাটাররা। এ ম্যাচেও তেমনটা হলে ২০০৩ সালের লজ্জার স্মৃতি আবারও ফেরত আসতে পারে।

নেদাল্যান্ডসের বিপক্ষে কোনো কারণে পা হড়কালেও বাংলাদেশের সুযোগ থাকবে সুপার এইটে কোয়ালিফাই করা। সে জন্য অবশ্য হারের ব্যবধানটা কম রাখতে হবে এবং নেপালের বিপক্ষে জয় নিশ্চিত করতে হবে। এমনসব জটিল সমীকরণে যেতে না চাইলে এ ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের।


কানাডার বিপক্ষে জিতে টিকে রইল পাকিস্তান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তৃতীয় ম্যাচে এসে অবশেষে জয়ের দেখা পেয়েছে পাকিস্তান। এর আগে তারা হেরেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সঙ্গে।

গতকাল মঙ্গলবার কানাডার বিপক্ষে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে তারা।

নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে টস জিতে কানাডাকে শুরুতে ব্যাট করতে পাঠান বাবর আজম। প্রথম ইনিংসে সাত উইকেটে ১০৬ রান করে সাদ বিন জাফরের দল।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৫ বল হাতে রেখেই দুই উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় পাকিস্তান।

দলের হয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ান অপরাজিত সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেন। আর বাবর আজম করেন ৩৩ রান।

কানাডার হয়ে দুটি উইকেট নেন ডিলন হেইলিগার। বাকি উইকেটটি নেন জেরেমি গর্ডন।

৫৩ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলায় ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে রিজওয়ানের হাতে।


পরাশক্তি ভারতকে প্রতিরোধের লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

এবারের বিশ্বকাপের পাঁচটি গ্রুপের মধ্যে সবচেয়ে জমজমাট কিংবা আলোচিত গ্রুপ হলো গ্রুপ ‘এ’। এ গ্রুপেই আছে ভারত এবং পাকিস্তান। নতুন শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে অবস্থান করছে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে। সমান ম্যাচে পয়েন্ট নিয়ে রানরেটে এগিয়ে থেকে টেবিলের সেরা দল ভারত। দুই দলেরই সুপার এইট অনেকটাই নিশ্চিত। কোনো শঙ্কা না রাখতেই আজ মুখোমুখি হচ্ছে এ দুই দল। যুক্তরাষ্ট্রের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রাত সাড়ে ৮টায় মাঠে নামবে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র। ম্যাচের চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।

আজ দুই দলের লক্ষ্য একটাই; সুপার এইট নিশ্চিত করা। সে জন্য নজর থাকবে গতকাল হওয়া পাকিস্তান-কানাডা ম্যাচের রেজাল্টের দিকেও। যদি পাকিস্তানের কাছে হেরে যায় কানাডা, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত ম্যাচের জয়ী দলের সুপার এইট নিশ্চিত হয়ে যাবে। কানাডা জিতলে গ্রুপের পরের ম্যাচগুলোর জন্য অপেক্ষা করতে হবে, কারা সুপার এইটে খেলবে।

এবারের বিশ্বকাপে দারুণ ছন্দে আছে ভারত। ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই দারুণ পারফর্ম করছে তারা। পাকিস্তানের বিপক্ষে তো অবিশ্বাস্য এক জয়ই পেয়েছে তারা। ১১৯ রানের পুঁজি নিয়েও বোলারদের জাদুকরী বোলিংয়ে ৬ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে রোহিত শর্মার দল। আগের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকেও হারিয়েছিল ১৫ ওভারেই।

এমন জয়ের পরও অবশ্য স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে চান না অধিনায়ক রোহিত শর্মা। জয়ের ধারা অব্যাহত রাখাই মূল লক্ষ্য দলের। তিনি বলেন, ‘প্রথম দুই ম্যাচে আমরা জিতেছি। পাকিস্তানের বিপক্ষে অসাধারণ জয় পেয়েছি আমরা। তারপরও আমরা নিশ্চিন্তে থাকতে চাই না। জয়ের ধারা অব্যাহত রাখাই মূল লক্ষ্য আমাদের। জয়ের ছন্দটা ধরে রাখতে চাই। যাতে কোনো ছেদ না পড়ে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে জয়ের জন্যই মাঠে নামব আমরা।’

এবারই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু প্রথম বিশ্বকাপেই চমক দেখিয়েছে তারা। নিজেদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে নতুন শক্তি হিসেবে। প্রথম ম্যাচে বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও কানাডাকে হারিয়েছিল বিশাল ব্যবধানে। পরের ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল তারা। মূল ম্যাচে ড্র করার পর জিতেছিল সুপার ওভারে।

প্রথম দুই ম্যাচে জয়ের পর যুক্তরাষ্ট্র এখন স্বপ্ন দেখছে সুপার এইটের। তার আগে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে অবশ্য ভারতকে হুমকিই দিয়ে রাখলেন অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল বিশ্বকাপে বড় দলগুলোর বিপক্ষে ভালো ক্রিকেট খেলা। সে ক্ষেত্রে প্রথম পরীক্ষায় পাকিস্তানকে হারিয়েছি আমরা। এবার আমাদের সামনে দ্বিতীয় পরীক্ষার নাম ভারত। এবারও আমরা একত্রে জ্বলে উঠে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে চাই। ভারতকে একবিন্দুও ছাড় দেব না। আমাদের নির্ভীক ক্রিকেট অব্যাহত থাকবে।’

এই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। তাই এ ম্যাচ নিয়ে বাড়তি উন্মাদনা কাজ করছে দুই দলের মধ্যেই। যুক্তরাষ্ট্রের দলপতি প্যাটেল বলেন, ‘ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলব আমরা। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম শক্তিশালী ও জনপ্রিয় দল তারা। সবাই এ ম্যাচটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।’

ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেন, ‘প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলছে যুক্তরাষ্ট্র। নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপেই চমক দেখিয়েছে তারা। এমন দলের সঙ্গে আমরাও খেলতে মুখিয়ে আছি। তাদের জন্য শুভকামনা থাকল।’

তবে এ ম্যাচেও কাজ করছে সেই একই শঙ্কা। রানখরা কাটবে তো ব্যাটারদের? বিশ্বকাপের শুরু থেকেই বোলারদের স্বর্গরাজ্যে পরণিত হয়েছে নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এ মাঠে এ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান হয়েছে ১৩৮। প্রথম ম্যাচেই রান ছিল একশর নিচে। ভারত-পাকিস্তান, বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা-দক্ষিণ আফ্রিকা; কোনো ম্যাচেই হাসেনি ব্যাটারদের ব্যাট। বরং ছড়ি ঘুরিয়েছেন বোলাররা।


banner close