আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি দীর্ঘদিন ধরে স্পেনের বার্সেলোনায় ছিলেন। ক্লাব ফুটবলের তার বেশিরভাগ বড় বড় অর্জনই এসেছে কাতালানদের জার্সিতে। ফলে স্পেন ছিল তার দ্বিতীয় বাড়ির মতো। সেখানকার ইবিজায় রয়েছে তার বাড়িওঅ।
‘ইবিজা ম্যানশন’ নামের সেই বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরিবেশবিষয়ক আন্দোলনকারীরা মেসির ১১ মিলিয়ন ইউরো সমমূল্যের বাড়িটি ‘পরিবেশ দূষণে সহায়ক’ বলে দাবি তুলেছেন।
আন্দোলনকারীদের সংগঠন ‘ফিউচারো ভেজেটাল’ চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকেই মেসির ইবিজা ভিলায় ভাংচুর চালায় বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য হাফিংটন পোস্ট’।
এমনকি সেই বাড়ির দেয়ালে লাল-কালো রঙে প্রতিবাদী স্লোগান লিখে দেয় তারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পোস্টে দেখা যায়, সংগঠনটির দুই সদস্য একটি ব্যানার নিয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন। যেখানে লেখা ছিল, ‘বিশ্বকে বাঁচান, ধনীদের প্রতিরোধ করুন এবং পুলিশ সরিয়ে নিন।’ তাদের মতে, সরকারের নীতিমালা জলবায়ুজনিত সঙ্কট বাড়িয়ে তুলছে।
আগামী মাসেই পাকিস্তানে শুরু হবে নারী বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব। ৯-১৯ এপ্রিল লাহোরে অনুষ্ঠিত হবে বাছাইপর্বের ম্যাচগুলো। মেগা টুর্নামেন্টটির মূল পর্বে জায়গা পাওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ নারী দলও বাছাইয়ে অংশ নিতে যাচ্ছে। ৩ এপ্রিল পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে বিমান ধরবে বাংলাদেশ দল। তার আগে নিজেধের ঝালিয়ে নিতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে নারী দলের ক্যাম্প।
প্রধান কোচ সারোয়ার ইমরানের নেতৃত্বে শুরু হচ্ছে নারী দলের ক্যাম্প। চলবে আগামী ১ এপ্রিল পর্যন্ত। যে কারণে আসন্ন ঈদুল ফিতরে ছুটি পাচ্ছেন না দলে স্কোয়াডের নারী ক্রিকেটাররা। এদিকে বাছাইপর্বে দলের সঙ্গে থাকবেন না কোনো পেস বোলিং কোচ। স্পিন কোচ হিসেবে থাকবেন ধীনুকা।
বাছাইপর্বের জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ দল ঘোষণা করেছে বিসিবি। নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বে বাছাইপর্ব খেলবে টাইগ্রেসরা।
বাংলাদেশের এই পাকিস্তান সফরে দলের সঙ্গে যাবেন পুরুষ জাতীয় দলের সাবেক ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্পও। তিনি কাজ করবেন নারী দলের ব্যাটিং ইউনিট নিয়ে। এ ছাড়া নতুন করে ফিল্ডিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার আশিক মজুমদার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিসিবির একটি সূত্র। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ প্রথম দিনের অনুশীলন দিয়ে মাঠে থাকবেন সব কোচই।
পাকিস্তানের লাহোরে আগামী ৯-১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব। দ্বিতীয় দিনই (১০ এপ্রিল) নিজেদের প্রথম ম্যাচে নামবে জ্যোতির দল, প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ড। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায়। বাংলাদেশের বাকি ম্যাচগুলো যথাক্রমে ১৩ এপ্রিল আয়ারল্যান্ড (দিবারাত্রি), ১৫ এপ্রিল স্কটল্যান্ড (দিবারাত্রি), ১৭ এপ্রিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ১৯ এপ্রিল স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে। দিনের ম্যাচ সকাল ১০টা এবং দিবারাত্রির ম্যাচগুলো শুরু হবে দুপুর আড়াইটায়।
আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও সদ্য সমাপ্ত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা ঘরে তুলেছেন রোহিত শর্মার ভারত। শিরোপা জয়ের পুরস্কার হিসেবে এবার মোটা অঙ্কের টাকা পেতে যাচ্ছে রোহিত-কোহিলরা। ট্রফিজয়ী দলটিকে ৫৮ কোটি ভারতীয় রুপি দিচ্ছে বিসিসিআই!
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি রজার বিনি বলেছেন, ‘পরপর দুটি আইসিসি শিরোপা জেতা আসলেই বিশেষ কিছু। এই পুরস্কারের মধ্যদিয়ে বিশ্বমঞ্চে টিম ইন্ডিয়ার নিবেদন ও শ্রেষ্ঠত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে।’
বিনি আরও বলেছেন, ‘এই নগদ অর্থ পুরস্কার আসলে দলের কঠোর পরিশ্রমের স্বীকৃতি। ২০২৫ সালে এটি আমাদের দ্বিতীয় আইসিসি ট্রফি। তার আগে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ নারী বিশ্বকাপও ঘরে তুলেছে মেয়েরা, যা মূলত আমাদের দেশের শক্তিশালী ক্রিকেট কাঠামোর প্রতিফলন।’
আইসিসি আগেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিজয়ী দলের জন্য ২.২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নগদ পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। পাশাপাশি প্রতিটি ম্যাচ জয়ের জন্য (সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ছাড়া) বরাদ্দ ছিল অতিরিক্ত ৩৪ হাজার ডলার। পুরস্কারের জন্য মোট তহবিলের পরিমাণ ছিল ৬.৯ মিলিয়ন ডলার, যা আসলে ২০১৭ আইসিসি ট্রফির তুলনায় ৫৩ শতাংশ বেশি।
টুর্নামেন্ট থেকে রানার্স আপ নিউজিল্যান্ড ১.১২ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে। আর সেমিফাইনালে পরাজিত দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া পেয়েছে ৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এ ছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া আটটি দলই ১ লাখ ২৫ হাজার ডলার নিশ্চিত অর্থ পুরস্কার পেয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ভয়াবহ বিপর্যের মধ্যে পড়েছে পাকিস্তানের ক্রিকেট। পরিবর্তন, রদবদল; কোনো কিছুতেই মিলছে না, কোনো সমাধান। এমন অবস্থায় নিজ দেশের ক্রিকেটের পরিবর্তন আনতে কখনো সমালোচনা আবার কখনো পরিকল্পনা বাতিয়ে দিচ্ছেন সাবেক ক্রিকেটাররা। সেই তালিকায় আছেন দেশটির সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি। আরেকদফা পিসিবির সমালোচনা করেছেন তিনি।
বর্তমানে নিউজিল্যান্ড সফরে আছে পাকিস্তান দল। এরই মধ্যে পরপর দুটি টি-টোয়েন্টিতে পাত্তাই পায়নি পাকিস্তান দল। ম্যান ইন গ্রীনদের এমন পারফরম্যান্সে ভীষণ হতাশ শহীদ আফ্রিদি। এমন ব্যর্থতার পেছনে দল নির্বাচনকে দায় দিচ্ছেন তিনি। দেশটির সাবেক অধিনায়কের মতে, কন্ডিশন বিবেচনায় দল গড়তে পারেনি পাকিস্তান।
অভিজ্ঞ বাবর আজম ও নিয়মিত অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানকে বাদ দিয়ে সফরে গিয়ে এখন পর্যন্ত আশানুরূপ কিছুই করতে পারেনি পাকিস্তান। একটি অনুষ্ঠানে কথা বলার সময় পাকিস্তান দলের বিভিন্ন দিক নিয়ে সমালোচনা করেন আফ্রিদি। প্রশ্ন তোলেন চলতি সিরিজের দল নির্বাচন নিয়েও।
তিনি বলেন, ‘কেবল ১০-১১ ম্যাচের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের তারা পাঠিয়েছে। যেখানে স্পিনারদের প্রয়োজন ছিল, তারা পেসার বেছে নিয়েছে।’
পাকিস্তান জাতীয় দলের ব্যাটসম্যানদের এখন অফ-স্পিন খেলা শেখাচ্ছেন ব্যাটিং কোচ মোহাম্মদ ইউসুফ। যা দৃষ্টিকটু লাগছে আফ্রিদির কাছে। তার ভাষায়, ‘পাকিস্তান দলের এই পর্যায়ে এটা শেখানো উচিত নয়।’
বাবর, রিজওয়ানদের দলের বাইরে রাখাকে অবশ্য ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন আফ্রিদি। সাবেক এই অলরাউন্ডারের মতে, চাপ কমানোর জন্য হলেও বিরতি প্রয়োজন যেকোনো ক্রিকেটারের, ‘ক্রিকেটারদের বিরতি দেওয়া প্রয়োজন, হোক সে বাবর আজম কিংবা অন্য কেউ।’
পেসার মোহাম্মদ হাসনাইন ও কিপার ব্যাটসম্যান উসমান খানকে না খেলানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আফ্রিদি। পাকিস্তান দলের ব্যাটিংয়ের ধরন নিয়েও সমালোচনা করেছেন তিনি, ‘সবাই আফ্রিদির মতো খেলার চেষ্টা করছে। কেউ প্রতি ম্যাচে ২০০ রান করতে পারে না।’
৪৮ দলকে নিয়ে বসবে ২০২৬ সালে ফুটবল বিশ্বকাপের আসর। মহাদেশগুলোতে চলছে বাছাইয়ের মহোৎসব। সেই উৎসবের রঙে রঙিন হয়ে সবার আগে বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করল জাপান। গতকাল সাইতামা স্টেডিয়ামে বাহরাইনকে ২-০ গোলে হারিয়ে কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রে হতে যাওয়া এ আসরে নিজেদের জায়গা নিশ্চিত করেছে এশিয়া মহাদেশের দেশটি। এ নিয়ে টানা ৮টি ফুটবল বিশ্বকাপ আসরে খেলার সুযোগ পাচ্ছে জাপান।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এশিয়া অঞ্চল থেকে মোট ৯টি দল আসরের মূল পর্বে খেলার সুযোগ পাবে। এর মধ্যে তৃতীয় রাউন্ডে ৬টি করে দল নিয়ে গঠিত ৩টি গ্রুপের শীর্ষ দুই দল কোয়ালিফাই করবে, আর তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান অধিকারী দল দুটি আরও একটি রাউন্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দুটি অতিরিক্ত স্থান অর্জনের সুযোগ পাবে। জাপান কোয়ালিফাই করেছে তৃতীয় রাউন্ডের ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে।
বাহরাইনের বিপক্ষে ঘরের মাঠ সাইতামাতে দুটি গোলই দ্বিতীয়ার্ধে করেছে জাপান। ৬৬ মিনিটে দায়চি কামাদা ও ৮৭ মিনিটে তাকেফুসা কুবোর গোল করেন।
বাংলাদেশ থেকে সকাল ৯টার ফ্লাইটে ঢাকা থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয় বাংলাদেশ ফুটবল দল। কলকাতায় কয়েক ঘণ্টা যাত্রা বিরতির পর আরেক ফ্লাইটে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় শিলং বিমানবন্দর পৌঁছেছে বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে এখন ভারতে অবস্থান করছে বাংলাদেশ দল।
ভারত সফরের দল নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক সঙ্গী হয়েছে বাংলাদেশ দলের। স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা শুরুতে ৩৮ সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষণা করেন। কিন্তু ক্যাম্পে না ডেকেই বাদ দেওয়া হয় আটজনকে। সেখান থেকেই শুরু বিতর্কের। এরপর সৌদি আরবে ক্যাম্প করে বাংলাদেশ দল। সেখান থেকেই ফেরত পাঠানো হয় ইতালি প্রবাসী ফুটবলার ফাহামিদুল ইসলামকে। এতে স্কোয়াড দাঁড়ায় ২৯ সদস্যের। ইনজুরির কারণ দেখিয়ে বাদ দেওয়া হয় আরও দুই জনকে।
বাকি থাকা ২৭ সদস্যকে নিয়েই দেশে ফিরে ফটোসেশন, সংবাদ সম্মেলন, অনুশীলন; সবই শেষ করেছেন কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। তবে এতকিছুর পরও নিশ্চিত করতে পারেননি চূড়ান্ত স্কোয়াড। ভারত যাওয়ার আগে পিয়াস নোভা, আরিফ হোসেন এবং তাজউদ্দিনকে রেখে গেছেন ক্যাবরেরা। ২৩ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণার কথা থাকলেও ২৪ জনকে নিয়েই ভারতের উদ্দেশ্যে উড়াল দিয়েছে বাংলাদেশ দল। আগামী ২৪ মার্চ ম্যানেজার মিটিংয়ে বাদ পড়বেন আরও একজন।
২৪ সদস্যের যে স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা সেটিও জানা গেছে দল উড়াল দেওয়ার আধাঘণ্টা আগে। অবশ্য ক্যাবরেরা দল নির্বাচন নিয়ে এমন নাটকীয়তা এবং পরিকল্পনাহীনতা এর আগেও দেখা গেছে।
ক্যাবরেরা ঘোষিত ২৪ সদস্যের এই স্কোয়াডে রয়েছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা চৌধুরী। দেশের হয়ে প্রথমবার প্রতিনিধিত্ব করবেন লেস্টার সিটি থেকে ধারে শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলা এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার।
২৪ সদস্যের স্কোয়াডে তিন গোলরক্ষকের সঙ্গে সাত ডিফেন্ডার রেখেছেন ক্যাবরেরা। মিডিফিল্ডের দায়িত্বের জন্য আস্থা রেখেছেন নয়জনের ওপর।
উল্লেখ্য, এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে আগামী মঙ্গলবার ভারতের জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে নামবে বাংলাদেশ। এর আগে ম্যাচ ভেন্যুতে অনুশীলন করবে বাংলাদেশ দল। আক্রমণভাগে ভরসা পাঁচজনের ওপর।
ভারত সফরে বাংলাদেশ দল:
গোলরক্ষক: মিতুল মারমা, সুজন হোসেন, মেহেদী হাসান শ্রাবণ। ডিফেন্ডার: শাকিল আহাদ, রহমত মিয়া, তারিক কাজী, তপু বর্মণ, সাদ উদ্দিন, ঈসা ফয়সাল, শাকিল হোসেন।মিডফিল্ডার: চন্দন রায়, সোহেল রানা, মোহাম্মদ সোহেল রানা, মোহাম্মদ হৃদয়, মজিবুর রহমান জনি, সৈয়দ শাহ কাজেম কিরমানি, শেখ মোরছালিন, জামাল ভূঁইয়া, হামজা চৌধুরী। ফরোয়ার্ড: ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, শাহরিয়ার ইমন, আল আমিন, রাকিব হোসেন।
ব্যাটিং ব্যর্থতায় অনূর্ধ্ব-১৯ নারী এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের শিরোপা জিততে পারলো না বাংলাদেশ দল।
আজ টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভারতের কাছে ৪১ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নামা ভারতকে ৭ উইকেটে ১১৭ রানের বেশি করতে দেয়নি বাংলাদেশের বোলাররা। জবাবে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ১৮.৩ ওভারে ৭৬ রানে অলআউট হয় সুমাইয়া আকতারের দল। ৩২ রানে শেষ ৭ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে টস জিতে প্রথমে ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রন জানায় বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ২৩ রানের সূচনা করে ভারত। পঞ্চম ওভারের তৃতীয় ও ষষ্ঠ বলে ভারত শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন পেসার ফারজানা ইয়াসমিন।
এরপর তৃতীয় উইকেটে ৪১ রানের জুটি গড়েন ভারতের ওপেনার গঙ্গাদী তৃষা ও অধিনায়ক নিকি প্রসাদ। ১২ রান করা প্রসাদকে থামিয়ে জুটি ভাঙেন পেসার হাবিবা ইসলাম।
ভারতের রানের চাকা সচল রেখে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নন তৃষা। ১৬তম ওভারে দলীয় ৮৪ রানে তৃষাকে থামান ফারজানা। ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৭ বলে ৫২ রান করেন তৃষা।
শেষ দিকে মিথালি ভিনোদের ১২ বলে ১৭ এবং আয়ুশি শুক্লার ১০ রানের কল্যাণে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১১৭ রান করে ভারত।
৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সফল বোলার ফারজানা। এছাড়াও নিশিতা আকতার নিশি ২টি ও হাবিবা ইসলাম ১টি উইকেট নেন।
১১৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ওভারে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। খালি হাতে ফিরেন ওপেনার মোসাম্মত ইভা। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে সুমাইয়া আকতারকে নিয়ে ১৬ ও তৃতীয় উইকেটে জুয়াইরিয়া ফেরদৌসের সাথে ২০ রান যোগ করে বাংলাদেশকে লড়াইয়ে রাখেন ওপেনার ফাহমিদা ছোঁয়া।
দলীয় ৪৪ রানে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে ছোঁয়া সাজঘরে ফিরলে ব্যাটিং ধস নামে বাংলাদেশের। ৩২ রানে শেষ ৭ উইকেট হারায় তারা। ১৮.৩ ওভারে ৭৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
ছোঁয়া ও জুয়াইরিয়া ছাড়া বাংলাদেশের কেউই দুই অংকে পা রাখতে পারেনি। জুয়াইরিয়া ৩টি চারে ৩০ বলে সর্বোচ্চ ২২ ও ছোঁয়া ২টি বাউন্ডারিতে ২৪ বলে ১৮ রান করেন। ভারতের স্পিনার শুক্লা ১৭ রানে ৩ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ভারতের তৃষা।
টুর্নামেন্টে ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সুপার ফোরে উঠেছিলো বাংলাদেশ। শ্রীলংকাকে ২৮ রানে ও স্বাগতিক মালয়েশিয়াকে ১২০ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছিলো তারা।
সুপার ফোরের শুরুতেই হোচট খায় বাংলাদেশ। ভারতের কাছে ৮ উইকেটে হেরেছিলো তারা। সুপার ফোরে নিজেদের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে নেপালকে ৯ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে নাম লেখায় বাংলাদেশ।
গত ৮ ডিসেম্বর অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ ওয়ানডে ফরম্যাটের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশের যুবারা। এবার এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট মাথায় পড়ার সুযোগ ছিলো নারীদের। কিন্তু শিরোপা জয়ের আনন্দ নিয়ে বছর শেষ করতে পারলো না নারীরা।
দিনের শুরুটা হলো মেঘে ঢাকা অন্ধকারের মতো। কিন্তু শেষটা হলো ঠিক মেঘ ভেদ করে ওঠা আলোকিত সূর্যের মতো। ব্যাটিং ব্যর্থতায় দিন শুরু করা বাংলাদেশও ম্যাচ শেষ করেছে জয় দিয়ে। লিটন-তামিমদের ব্যর্থতার দিনে নায়ক হয়ে উঠেছেন বোলাররা। তাসকিন-সাকিব কিংবা রিশাদ-মাহাদী; সবাই প্রতিযোগিতায় নেমেছিল কে বেশি ভালো করবে। নিখুঁত লাইন-লেন্থ, গতি-আগ্রাসন, স্পিন ঘূর্ণি; কোনো কিছুরই ঘাটতি ছিল না এ দিন। সেই শক্তি দিয়েই সেন্ট ভিনসেন্ট জয় করেছে টাইগাররা। শুধু ম্যাচ জয়ই নয়, ছয় বছর পরে বাংলাদেশ জিতেছে সিরিজও।
তবে, এর চেয়েও বড় উপলক্ষ আছে টাইগারদের। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে এর আগে ওয়ানডে, টেস্ট দুই সংস্করণেই সিরিজ জেতা হয়ে গেছে বাংলাদেশের। অপেক্ষা ছিল ক্রিকেটের ছোট সংস্করণ টি-টোয়েন্টি সিরিজের; এবার সেটাও পূরণ হলো বাংলাদেশের।
বুধবার সেন্ট ভিনসেন্টে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১২৯ রানের পুঁজি দাঁড় করায় বাংলাদেশ। জবাবে ১৮ ওভার ৩ বলে সব উইকেট হারিয়ে ১০২ রান তুলতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে ২৭ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। এতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ এক ম্যাচ হাতে রেখেই জিতে নিল টাইগাররা।
এ ম্যাচে আলাদা করে নজর কেড়েছেন লিটন কুমার দাসও। ব্যাট হাতে তিনি ব্যর্থ এ দিনও। কিন্তু নেতৃত্বে ছিলেন নিখুঁত। বোলিং পরিবর্তন, মাঠ সাজানো, প্রতিপক্ষকে চেপে ধরা ও চাপে রাখা, পরিস্থিতির দাবি মেটানো, সবকিছুই ছিল নজরকাড়া।
বাংলাদেশের হয়ে ৩.৩ ওভারে মাত্র ১৮ রান খরচায় সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেছেন তাসকিন আহমেদ। সমান দুটি করে উইকেট পেয়েছেন রিশাদ হোসাইন, তানজিম হাসান সাকিব আর শেখ মেহেদী। একটি উইকেট গেছে হাসান মাহমুদের ঝুলিতে। তবে সবাই নিয়ন্ত্রিত আঁটসাঁট বোলিং করেছেন।
বোলারদের আগে অবশ্য বাংলাদেশকে এই ন্যূনতম পুঁজি এনে দেওয়ার কাজটা করেছেন তিন ব্যাটার মেহেদী হাসান মিরাজ, জাকের আলি অনিক আর শামীম হোসেন পাটোয়ারী। আফিফ হোসেনের পরিবর্তে সুযোগ পাওয়া মেহেদী মিরাজ খেলেছেন ২৫ বলে ২৬ রানের কার্যকরী ইনিংস। পাঁচে নামা জাকের আলিও রেখেছেন অবদান; করেছেন ২০ বলে ২১ রান।
তবে শেষ দিকে ফিনিশ করতে নেমে মহাগুরুত্বপূর্ণ ইনিংসটি খেলেছেন এক বছর পরে দলে সুযোগ পাওয়া শামীম হোসেন পাটোয়ারী। দুইশর ওপরে স্ট্রাইক রেটে ১৭ বল থেকেই করেছেন ৩৫ রান। সমান দুটি করে চার আর ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। যেটা শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে লড়াইয়ে রেখেছে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু পেয়েছিল স্বাগতিকরা। প্রথম দুই ওভারে তারা তোলে ১৯ রান। কিন্তু এরপর আর টাইগার বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি ক্যারিবিয়ান ব্যাটাররা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা।
তৃতীয় ওভারে জোড়া আঘাতে শুরুটা করেন তাসকিন আহমেদ। ফেরান ব্র্যান্ডন কিং (৮) আর আন্দ্রে ফ্লেচারকে (০)। ভয়ংকর হওয়ার আগেই জনসন চার্লসকে (১৪) ফেরান শেখ মেহেদী। নিকোলাস পুরানকেও (৫) স্থায়ী হতে দেননি ডানহাতি এই স্পিনার। আগের ম্যাচে ভয়ংকর হওয়া রোভম্যান পাওয়েলকে (৬) ফিরিয়ে শঙ্কা কাটান হাসান মাহমুদ। আর খাতা খোলার আগেই রোমারিও শেফার্ডকে ফেরান তানজিম সাকিব।
এরপর গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেন রিশাদ হোসাইন। টাইগারদের গলার কাঁটা রোস্টন চেজকে (৩২) ফেরান তিনি। পরের বলেই গুদাকেশ মোটিকে (০) ফিরিয়ে জাগান হ্যাটট্রিকের আশাও। আলজারি জোসেফকে শূণ্য রানে ফিরিয়ে স্বাগতিকদের বুকের ধুকধুকানি বাড়ান তানজিম সাকিব। আর ক্যারিবীয়দের আশার শেষ বাতিঘর আকিল হোসাইনকে (৩১) ফিরিয়ে জয় নিশ্চিত করেন তাসকিন।
রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে এমবাপ্পের শুরুটা প্রত্যাশা মতো না হলেও আস্তে আস্তে নিজের উপস্থিতি জানান দিতে শুরু করেছেন তিনি। প্রায় নিয়মিতই দেখা পাচ্ছেন গোলের। তবে এতে সন্তুষ্ট নয় রিয়ালের কোচ কার্লো আনচেলত্তি। ফরাসি তারকার কাছে আরও গোল চান তিনি।
চলতি মৌসুমে এখনও রিয়ালকে সেরা ফর্মে দেখা যায়নি। লা লিগায় তারা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার থেকে ৩ পয়েন্ট পিছিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে। আর ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতায় স্টুটগার্টকে ৩-১ গোলে হারিয়ে আসর শুরুর পর গত রাউন্ডে লিলের মাঠে ১-০ ব্যবধানে হেরে যায় তারা। এবার তাই মাদ্রিদের দলটির সামনে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই।
সংবাদ সম্মেলনে আনচেলত্তি বলেন, ‘আমি চাই, এমবাপ্পে গোল করুক। প্রতিপক্ষের ওপর চাপ দেওয়ার চেয়ে সে গোল করলেই আমি খুশি হব। মাঠে সেন্টার-ফরোয়ার্ডের ভূমিকা বদলে যায়নি। আমি তার কাছে সেটাই চাই, যা (রেয়াল মাদ্রিদের সাবেক স্ট্রাইকার) করিম বেনজেমার কাছে চাইতাম।’
মাঠে এমবাপ্পের পজিশন নিয়ে তিনি বলেন, ‘এমবাপ্পেকে ঠিকমতো মাঠে পজিশন নিতে হবে এবং বল দখলে নিয়ে দ্রুত পাল্টা আক্রমণের সময় তাকে স্মার্ট হতে হবে।’
গত জুনে পিএসজি ছেড়ে রেয়ালে যোগ দেওয়া এমবাপ্পে দলটির হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১২ ম্যাচে ৮টি গোল করেছেন। গত শনিবার লা লিগায় সেলতা ভিগোর বিপক্ষে দুর্দান্ত এক গোলে দলকে এগিয়ে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপজয়ী এই ফরোয়ার্ড।
আগামী ২৮ অক্টোবর ফুটবল বিশ্বের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ব্যালন ডি’অরের জন্য। তবে, এ দিন জানা যাবে আগামী দিনের সম্ভাব্য ব্যালন ডি’অর জয়ীর নামও। সে দিনই ঘোষণা করা হবে উদীয়মান তরুণ ফুটবলারের পুরস্কার ‘গোল্ডেন বয়’।
ইতালীয় সংবাদপত্র তুত্তোস্পোর্ত প্রতিবছর এ পুরস্কার দিয়ে থাকে। এবারও পুরস্কারের জন্য সম্ভাব্য ২৫ জনের নাম ঘোষণা করেছে তারা। গত বছর এ পুরস্কার জিতেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ইংলিশ মিডফিল্ডার জুড বেলিংহাম। এবার তার উত্তরসূরি হিসেবে কার হাতে পুরস্কার উঠবে, সেটাই দেখার অপেক্ষা।
১৮ অক্টোবর তালিকা ঘোষণার পর থেকেই চলছে নানা আলোচনা। কে হতে পারেন এবারের সেরা তরুণ ফুটবলার? ২৮ অক্টোবর প্যারিসে ঘোষণা করা হবে বিজয়ীর নাম। ফুটবলপ্রেমীরা অবশ্য সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে নারাজ, নিজেরাই বেছে নিচ্ছেন পছন্দের বিজয়ীকে। সেই তালিকায় অবশ্য ওপরের দিকেই রয়েছেন লামিনে ইয়ামাল, এনদ্রিক, আলেহান্দ্রো গারনাচো এবং কোভি মাইনুরা। গত মৌসুমের পারফরম্যান্স ও প্রভাব বিবেচনা করলেও এই নামগুলোই বিশেষভাবে সামনে আসে।
তবে অনেকেই অবশ্য বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়াই বেছে নিচ্ছেন ইয়ামালকে। এর পেছনে যথেষ্ট যুক্তিও আছে। অভিষেকের পর থেকে একের পর এক রেকর্ডভাঙা ইয়ামালের সবচেয়ে বড় অর্জন স্পেনের হয়ে ইউরো জয়। এ ছাড়া বার্সার হয়ে যখনই মাঠে নেমেছেন আলো ছড়িয়েছেন এখনো কৈশোরের বৃত্তে থাকা এই উইঙ্গার। এরই মধ্যে অনেকে তাকে লিওনেল মেসি ও ডিয়েগো ম্যারাডোনার সঙ্গেও তুলনা করছেন।
গত মৌসুমে ইয়ামালের পরিসংখ্যানও বেশ উজ্জ্বল ছিল। ৫০ ম্যাচ খেলে ৭ গোলের পাশাপাশি সহায়তা করেছেন ৯ গোলে। তবে পরিসংখ্যান ছাড়াও বিভিন্ন ম্যাচে তার প্রভাব ছিল অসামান্য। ইয়ামালের পারফরম্যান্সের সূত্র ধরেই হয়তো ট্রান্সফারমার্কেট সম্ভাব্য পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে তার কথা বলেছে। সেটি হলে সর্বকনিষ্ঠ পুরস্কার বিজয়ীও হবেন ইয়ামাল।
এর আগে ২০২২ সালে সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে এই পুরস্কার জিতেছিলেন ইয়ামালের স্পেন ও বার্সা সতীর্থ গাভি। তবে এবার গাভিকে ছাড়িয়ে ইয়ামালের জন্য সময়ের ব্যাপার বলেই মনে হচ্ছে।
মনোনীত ২৫ জনের তালিকায় অবশ্য সবচেয়ে বেশি দাপট দেখা গেছে প্রিমিয়ার লিগের। বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এ লিগ থেকে তালিকায় জায়গা পেয়েছেন ৭ ফুটবলার। এ ছাড়া অন্য লিগগুলোর মধ্যে লা লিগা থেকে ৫ জন, লিগ আঁ থেকে ৪ জন এবং বুন্দেসলিগা থেকে ৩ জন ফুটবলার জায়গা পেয়েছেন। আর ক্লাব হিসেবে সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় জায়গা পেয়েছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও পিএসজি থেকে। এ দুই ক্লাব থেকে জায়গা পেয়েছেন ৩ জন করে ফুটবলার।
মিরপুরে প্রথম দিনের উইকেট দুই দলের জন্যই ছিল চরম হতাশার। বাংলাদেশ অলআউট হওয়ার পরে ৬ উইকেট হারিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাও। প্রথম দিনে সফরকারীদের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিল ৩০ রানের। স্বীকৃত ছয় ব্যাটারের আউট হওয়ার পরে দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই গুটিয়ে দেওয়ার আশা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু সেই আশার গুড়ে বালি ঢেলে দেন প্রোটিয়াদের উইকেট রক্ষক ব্যাটার কাইল ভেরেইনে।
ব্যাটিং ব্যর্থতার রাজ্যে ঘুরে দাঁড়ান চিলেকোঠার সেপাই হিসেবে। দুর্দান্ত দুটি জুটি গড়েন মুল্ডার আর ডেন পেটের সঙ্গে। টাইগার বোলারদের ইচ্ছামতো শাসন করেছেন ভেরেইনেরা। মিরাজ-নাঈমদের বিপক্ষে দুর্দান্ত সব সুইপশট খেলেছেন তিনি। তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরিও।
১৮ রানে দিন শুরু করেছিলেন ভেরেইনে। সঙ্গে ছিলেন উইয়ান মুল্ডার। মুল্ডারকে সঙ্গে নিয়ে গড়েন ১১৯ রানের জুটি। হাফসেঞ্চুরি করে মুল্ডার ফিরলে একপাশ আগলে রেখে ডেন পেটকে সঙ্গে নিয়ে আবারও পথচলা শুরু করেন তিনি। ১৩৪ বল খেলে ভেরেইনা শতরানে পা রাখেন লাঞ্চের পর। খ্যাপাটে, আবেগময় ও দীর্ঘ উদযাপনে ২৭ বছর বয়সি ব্যাটসম্যান বুঝিয়ে দেন, এই সেঞ্চুরি তার কাছে বিশেষ কিছু।
সেঞ্চুরির পর ১৪ রান যোগ করতে পারেন তিনি। মিরাজের বলে লাইন মিস করলে বল চলে যায় লিটন দাসের কাছে। তিনি স্টাম্প ভাঙতে ভুল করেননি। ভেরেইনে ফেরত যান স্টাম্পড আউট হয়ে। এর আগে ১৪৪ বল থেকে করেন ১১৪ রান। ইনিংসে ৮ চারের সঙ্গে ২টি ছক্কাও হাঁকান তিনি। প্রথম ইনিংসে ৩০৮ রানে থামা প্রোটিয়াদের ১১৪ রানই এসেছে ভেরেইনের ব্যাট থেকে।
এই সেঞ্চুরিতে ভেরেইনে নাম লিখিয়েছেন এক মাইলফলকে। বাংলাদেশের মাটিতে সফরকারী কোনো দলের ১০ম উইকেটরক্ষক হিসেবে টেস্ট সেঞ্চুরি পেলেন তিনি। এই কীর্তিটি প্রথম করেন জিম্বাবুয়ের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। ২০০১-০২ মৌসুমে চট্টগ্রামে অপরাজিত ১১৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
ভেরেইনের আগে সর্বশেষ এই কীর্তিটি ছিল লোরকান টাকারের। গত বছর মিরপুরে ১০৮ রানের ইনিংস খেলেন আইরিশ উইকেটরক্ষক। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম গিলক্রিস্টও বাংলাদেশে এসে টেস্ট সেঞ্চুরি পেয়েছেন।
ফুটবলীয় এক জীবনে আর কতদিন! এই অল্প সময়েরও বড় একটা অংশ মাঠের বাইরে অপেক্ষা করতে হয়েছে ব্রাজিলিয়ান পোস্টারবয় নেইমার জুনিয়রকে। বেশ কয়েকবার যেতে হয়েছে ডাক্তারের ছুরি-কাঁচির নিচে। ইনজুরি যেন নেইমারের নির্লজ্জ প্রিয়তমা। যাকে কোনোভাবেই পিছু ছাড়ানো যায় না। সর্বশেষ ইনজুরিতে কাঁটায় কাঁটায় এক বছর চার দিন মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে নেইমারকে। ক্যারিয়ারের শেষ ভাগে এসে এই অপেক্ষা বেশ কঠিন ছিল নেইমারের জন্য।
নেইমারের মতোই তার ভক্তরাও অধীর আগ্রহে প্রিয় তারকার ফেরার অপেক্ষা করছিল। অপেক্ষায় ছিল ১২০ গজের সবুজ মাঠে প্রিয় তারকার পায়ের কারকার্ড দেখার। চোট সারিয়ে কবে ফিরবেন নেইমার? এই প্রশ্ন বহুবারই শুনতে হয়েছে জর্জ হেসুস কিংবা ব্রাজিলিয়ান কোচদের। সেই অপেক্ষার শেষ হলো গতকাল রাতেই। এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ এলিটে আল আইনের বিপক্ষে মাঠে নামলেন নেইমার। গোল-অ্যাসিস্ট না পেলেও এদিন দলের দুর্দান্ত এক জয় পেয়েছেন মাঠে থেকেই।
৭৭তম মিনিটে বেঞ্চ থেকে মাঠে নেমেই গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন নেইমার। আলেক্সান্দার মিত্রোভিচের সঙ্গে পাস আদান-প্রদান করে বক্স থেকে শট নেওয়ার সুযোগ তৈরি করেছিলেন। শট নিলেও আল আইন গোলরক্ষকের কারণে সেটায় গোল পাওয়া হয়নি নেইমারের। ম্যাচে যোগ করা ১৬ মিনিট সময়েও একটি গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন নেইমার। সেটিও কাজে লাগাতে পারেননি তিনি।
স্বাচ্ছন্দ্যে ম্যাচ শেষ করার তাৎক্ষণিক প্রক্রিয়ায় ব্রাজিল জাতীয় দলের রেকর্ড গোলদাতা বলেন, ‘আমি ভালো বোধ করছি। আমি সব সময় ভালো দল পেয়েছি। আমি খুব খুশি। আমি ফিরে এসেছি! আমি ফিরে এসেছি!’
৯ গোলের রোমাঞ্চকর এই ম্যাচে আল হিলালের হয়ে হ্যাটট্রিক করেন সালেম-আল দাসারি। আল আইনের হয়ে হ্যাটট্রিক করেন সুফিয়ান রাহিমি। দুই হ্যাটট্রিকের ম্যাচে জয়টা পেয়েছে নেইমারের দলটা। আল আইনকে হারিয়েছে ৪-৫ গোলের ব্যবধানে।
গত বছর ১৮ অক্টোবর বিশ্বকাপ বাছাইয়ে উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে বাঁ হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন নেইমার। এসিএল চোটের পাশাপাশি হাঁটুর মিনিসকাসেও আঘাত পেয়েছিলেন। অস্ত্রোপচারের পর শুরু হয় তার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। তারপর থেকেই শুরু হয়েছিল ‘নেইমারের জন্য অপেক্ষা।’ ৩৬৯ দিন পর ঘুচল সেই অপেক্ষা।
তবে আল হিলালের সব ম্যাচে এখনই দেখা যাবে না নেইমারকে। কারণ সৌদি প্রো লিগে আল হিলাল এখনো রেজিস্ট্রেশন করাতে পারেনি নেইমারকে। আগামী জানুয়ারিতে সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে ক্লাবকে। এর আগে অবশ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে আরও একবার মাঠে নামবেন নেইমার।
প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেও ব্যাটারদের অসহায়ত্বের দেখা মিলল। মাত্র ৪ রানের মধ্যেই নাই দুই উইকেট। এতেই জেঁকে বসল ইনিংস হারের শঙ্কা। তবে ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় আর মুশফিকুর রহিমের লড়াইয়ে সেই শঙ্কা কিছুটা কমেছে। যদিও এখনো ম্যাচে এগিয়ে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকাই। টাইগার ব্যাটারদের যে অবস্থা তাতে প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে তৃতীয় দিনেই ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণ হয়ে যাওয়ার।
আগের দিন ব্যাটিং ব্যর্থতায় পড়লেও দ্বিতীয় দিনে ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। এক সেঞ্চুরিতে ৩০৮ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা। এতে ২০২ রানের বড় লিডের চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ১০১ রান করেছে স্বাগতিকরা। সফরকারীদের চেয়ে এখনো পিছিয়ে আছে ১০১ রানে। আলোকস্বল্পতার কারণে কিছু ওভার বাকি রেখেই দিনের খেলা শেষ হয়। অপরাজিত আছেন দুই ব্যাটার মাহমুদুল হাসান জয় (৩৮) আর মুশফিকুর রহিম (৩১)। এ দুজনের ব্যাটেই অনেকটা নির্ভর করছে এই টেস্টে বাংলাদেশের ভাগ্য।
আগের দিন ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান তোলা দক্ষিণ আফ্রিকা এদিন বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলতে থাকে টাইগার বোলারদের। আগের দিন সর্বোচ্চ ৩০ রানের ইনিংস খেলা দক্ষিণ আফ্রিকা এদিন এক সেঞ্চুরির সঙ্গে পেয়েছে এক হাফসেঞ্চুরিও। মিরাজের বলে ফেরার আগে ১৪৪ বলে ১১৪ রানের ইনিংস খেলেন কাইল ভেরেইনে। আর ১১২ বলে ৫৪ রান আসে মুল্ডারের ব্যাট থেকে। এতেই ৩০৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় দিনে দুটি করে উইকেট নেন পেসার হাসান মাহমুদ আর মেহেদী হাসান মিরাজ।
মিরপুরের কন্ডিশন বিবেচনায় ২০২ রানের লিডটা পাহাড়সমই। এই টেস্ট বাঁচাতে দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ানোর বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের জন্য। যদিও শুরুটা হয় চিরাচরিত রূপেই, ৪ রানের মাথায় নেই দুই উইকেট।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারে বল হাতে নিয়েই টাইগার শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন কাগিসো রাবাদা। ওভারের প্রথম বলেই সাদমান ইসলামকে ফেরান এই প্রোটিয়া পেসার। প্রথম ইনিংসের পরে দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ এ টাইগার ওপেনার (০ ও ১)। আর চতুর্থ বলে কোনো রান করার আগেই ফেরান মুমিনুল হককে (৪ ও ০)।
মাত্র ৪ রানের মাথায় দুই ব্যাটারকে হারানোর পর মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনের জুটি থেকে আসে ৯৮ বলে ৫৫ রান। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেনি শান্ত (২৩)। শান্তর বিদায়ের পর অবশ্য আর কোনো বিপদ হতে দেয়নি জয়-মুশফিক জুটি। এ জুটির রান এখন পর্যন্ত ৫০ বলে ৪২। ফলোঅন এড়াতে বড় জুটি গড়ার বিকল্প নেই বাংলাদেশের।
মিরপুরের উইকেট বরাবরই স্পিনবান্ধব। তবে গতকাল দিনের প্রথম সেশনে দেখা মিলেছে ভিন্ন কিছুর। প্রোটিয়া পেসারদের তোপের মুখে পড়েছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। সফরকারীদের দুই পেসার কাগিসো রাবাদা আর মুল্ডার মিলে নিয়েছেন ৬ উইকেট।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। সফরকারীদের ৬ উইকেটের পাঁচ উকেটই নিয়েছে স্পিনার তাইজুল ইসলাম। মিরপুরে প্রথম দিনেই উইকেটের এমন আচরণ দেখে অবাক প্রোটিয়া পেসার কাগিসো রাবাদা।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে রাবাদা বলেন, ‘হ্যাঁ আমরা অনেক অবাক হয়েছি উইকেটের আচরণ দেখে। আমরা ভেবেছিলাম টার্নিং উইকেট হবে। তবে নতুন বলে এখানে মুভমেন্ট হয়েছে। খুব বেশি সুইং হয়নি আসলে তবে সিম মুভমেন্ট ছিল।
আসলে সত্যি কথা বলতে গেলে নেটেও এরকম উইকেট ছিল। সাধারণত নেট আর ম্যাচের পিচ কাছাকাছিই থাকে। স্পিনারদের জন্য টার্ন হচ্ছে সিমারদের জন্য সিমও হচ্ছে। আমাদের এর ফলে বেশ অবাক লেগেছে। তবে আমরা তো আর পিচ বানাই না। এমন পিচই তৈরি করা হয়েছে এবং এরকমই ছিল পিচ।’
মিরপুরের এই মাঠে অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখেছিলেন রাবাদা। সেই স্মৃতির কথা আবারও মনে করলেন তিনি। রাবাদা বলেন, ‘ঢাকায় আমার ভালো কিছু খেলার স্মৃতি রয়েছে। আমার মনে হয় এই মাঠ পেসারদের সাহায্য করে থাকে, তাই না?’