ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পলায়ন করেছেন শেখ হাসিনা। এরপরই গাঁ-ঢাকা দিয়েছে সেই সরকারসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। ফলে শূন্য হয়েছে আছে অনেক পদই। এতে পরিবর্তনের হাওয় বইছে দেশের সব জায়গায়ই। সেই হাওয়া যে ক্রিকেট পাড়াকেও ছুঁয়ে যাবে সেটাই মনে হচ্ছে।
আগেই ক্রিকেট বোর্ডে স্বচ্ছতা ফেরানোর কথা বলেছিলেন পেসার রুবেল হোসেন ও ওপেনার ইমরুল কায়েস। এবার একই কথা জানালেন এনামুল হক বিজয়ও। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) যে সকল কাজে স্বচ্ছতা ছিল না বা নেই, সেসব জায়গায় স্বচ্ছতা ফিরবে। তাতে বাংলাদেশ ক্রিকেটেরই উপকার হবে বলেও মনে করেন এই ওপেনার।
বিজয় বলেন, ‘আসলে স্বচ্ছ থাকাটা খুবই জরুরি সবার ক্ষেত্রে, আমি কেন দলে আছি, কেন বাদ পড়ছি, কোথায় খেলছি বা আমার সুযোগ-সুবিধা কতটুকু হচ্ছে, আমি কতটুকু পাচ্ছি। এই জিনিসগুলো প্রশ্নবিদ্ধ থাকে, যেগুলা আমরা সবাই চাই প্রশ্নটা সরে যাক, উত্তরটা আমরা প্রাপ্য।’
ক্রিকেট বোর্ডে ভবিষ্যতে যারা দায়িত্বে আসবে তারা ক্রিকেটারদের সঙ্গে কোনো দুরত্ব রাখবেন না বলেই মনে করেন ‘এ’ দলের এ ওপেনার। বিজয় বলেন, ‘আমি মনে করি ক্রিকেট বোর্ড সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে আমাদের সহযোগিতা করার জন্য। ভবিষ্যতেও যারা দায়িত্বে আসবে তারাও সহযোগিতা করবে। অবশ্যই একটা জায়গায় গ্যাপ থেকে যায়, গ্যাপগুলো পূরণ করে এগিয়ে যাব এটা আমরা সবাই আশা করব।’
পরিবর্তনটা তৃণমুল থেকে হোক সেটাই চান বিজয়। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট শুধু একক কোনো ক্রিকেটারের কথা দিয়ে পরিচালিত হয় না। এখানে আপনারা থাকবেন, সিনিয়র মানুষ থাকবে, নিচের মানুষ থাকবে। আমি মনে করি, ক্রিকেটটাকে উন্নতি করতে হলে তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করতে হয়। সেটার ফল আমরা পাই। তৃণমূল পর্যায়টা মজবুত করা জরুরি। সেটা দল নির্বাচন হতে পারে, উইকেট হতে পারে, আর্থিক হতে পারে, অনুপ্রেরণা হতে পারে, চিকিৎসা হতে পারে, সুবিধাদি হতে পারে। আমাকে যদি বলেন, আমি মনে করি, তৃণমূল থেকে দারুণ গোছাল ক্রিকেট হওয়া জরুরি।’
‘ক্রিকেট খেলোয়াড়, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী বা যেই হই না কেন বা সাংবাদিক বা যে পেশাতেই থাকি না কেন। আমার কাছে মনে হয় সবার আগে আমরা জনগণ। অবশ্যই আমাদের অধিকার আছে যেটা আমরা প্রাপ্য। আমরা সবাই চাইব সবকিছু গোছানোভাবে এগিয়ে যাক, ক্রিকেট বোর্ড প্রতিটা জায়গায় যেন সুবিধা পাই। দেশটা সবাই মিলে যেন আমরা এগোতে পারি।’- যোগ করেন তিনি।
ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টিতে ভারতকে চ্যালেঞ্জ জানানো নিয়মিত ঘটনাই হয়ে গেছে। তবে টেস্ট ক্রিকেটে এখনো দুই দলের ফারাকটা বেশ বড়। আগের টেস্টগুলোতে বাংলাদেশের ওপর রীতিমতো ছড়ি ঘুরিয়েছে তারা। পরিসংখ্যানও কথা বলে রোহিতদের পক্ষেই। তবে বাংলাদেশ দলও এখন নতুন শক্তিতে উজ্জীবিত। প্রতিপক্ষের মোকাবিলায় তারা এখন কথা বলে চোখে চোখ রেখে। কয়দিন আগেই সেটার প্রমাণ দিয়ে এসেছে পাকিস্তানে। পাকিস্তানের মাটিতেই তাদের বাংলাওয়াশ করে এসেছে নাজমুল শান্তর দল। এবার লক্ষ্য ভারত। ভারতের বিপক্ষে ইতিহাস গড়ার লক্ষ্যে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে টাইগাররা। খেলার সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট পরিসংখ্যান পাকিস্তানের মতোই করুণ। ১৩ টেস্টে বাংলাদেশের সাফল্য দুই ম্যাচে ড্র। সেটিও এসেছিল ঘরের মাঠে বৃষ্টির কল্যাণে। অন্যদিকে ৫ ম্যাচেই ইনিংস ব্যবধানে হারের লজ্জার রেকর্ডও আছে বাংলাদেশের।
অবশ্য সেসব নিয়ে ভাবছেন না রোহিত। সংবাদ সম্মেলনে ভারত অধিনায়ক বললেন, প্রতিপক্ষ যে-ই হোক দেশের জার্সি গায়ে তাদের কাছে প্রতিটি ম্যাচই সমান গুরুত্বপূর্ণ, ‘প্রতিটি টেস্ট ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দেশের জন্য খেলছি, ড্রেস রিহার্সাল বলতে কিছু নেই। প্রতিটি ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই ম্যাচগুলো বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। পয়েন্ট টেবিল বেশ উন্মুক্ত। প্রতিটি ম্যাচ খেলতে চাই। আমরা এখানে জিততে চাই।’
তবে ক্রিকেটে পরিসংখ্যানই সব নয়। নির্দিষ্ট দিনে যেকোনো দলই হয়ে উঠতে পারে ভয়ংকর। বর্তমানে সেরা ছন্দেও রয়েছে বাংলাদেশ। তাই ভারতের বিপক্ষে ভালো কিছুর আশা করা যেতেই পারে। যেমনটা হয়েছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে।
ঘরের মাটিতে বরাবরই শক্ত প্রতিপক্ষ ভারত। পাশাপাশি অতীত পরিসংখ্যান তো আছেই। সব মিলিয়ে এ ম্যাচে অনেকটা চাপের মধ্যেই থাকবে বাংলাদেশ। তবে সেই চাপকে ইতিবাচকভাবেই নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ চন্দ্রিকা হাথুরুসিংহে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, টিম ম্যানেজমেন্টের শঙ্কা চেন্নাইয়ের চলমান গরমের কারণে পিচের আচরণ ম্যাচের শেষদিকে বদলে যেতে পারে। আচরণ হতে পারে মিরপুরের পিচের মতোই। এরই মাঝে চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামের পিচ কিউরেটর জানালেন, টেস্টের শেষদিকে একেবারেই স্পিন সহায়ক হয়ে উঠবে উইকেট।
তাই ম্যাচে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবেন সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদের সঙ্গে দেখা যেতে পারে তাইজুল ইসলামকেও। সে ক্ষেত্রে একাদশে দেখা যাবে দুই পেসারকে। তখন বাদ পড়বেন কে সেটি নিয়েই প্রশ্ন। তবে ভারতের বিপক্ষে ব্যাটিং লাইন নিয়ে তেমন কোনো পরিবর্তন নেই।
অধিনায়ক নাজমুল শান্তও বললেন জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামবে তারা। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘লক্ষ্য তো একটাই থাকে আমরা প্রতিটি ম্যাচ জিতব, সব আন্তর্জাতিক দলেরই এই লক্ষ্য থাকে। আমাদেরই একই লক্ষ্য। জেতার জন্য যে জিনিসগুলো করা প্রয়োজন, আমরা ওগুলোই করব। ফল নিয়ে যদি বলেন, পঞ্চম দিনে শেষ সেশনে গিয়ে আমাদের রেজাল্ট নিয়ে চিন্তা। তার আগ পর্যন্ত আমরা নিজেদের শক্তিমত্তা অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করব।’
বিপৎসীমার চরম ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের পানি। স্মরণকালের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে সময় পার করছে দলটি। গত বছর ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাজে পারফরম্যান্সের এবছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ভরাডুবি হয়েছে। লজ্জার ইতিহাস গড়ে গত ৬ মাসে দুইবার ঘরের মাঠে টেস্টে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। দলীয় পারফরম্যান্সে ভাটা পড়েছে ম্যান গ্রিনদের।
তবে দলের বাইরে সমালোচিত হচ্ছেন ব্যক্তি বাবর আজম। ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে সময়গুলোর একটি পার করছেন তিনি। তার নেতৃত্বে সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল পাকিস্তান। আর টেস্টে লম্বা সময় ধরেই রান খরায় ভুগছেন মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান। তাকে নিজের পারফরম্যান্সের দিকে নজর দিতে বলছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ইউনিস খান। তিন সংস্করণ মিলিয়ে সর্বশেষ ১০ ইনিংসে কোনো ফিফটি করতে পারেননি বাবর আজম। পরিসরটা কমিয়ে আনলে- শুধু টেস্টের ক্রিকেটে তার সর্বশেষ পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংস এসেছে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। এরপর ১৬ ইনিংসে তিনি চল্লিশ ছুঁতে পেরেছেন শুধু একবার।
ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশড হওয়া সিরিজে বাবর আজম ছিলেন আরও বিবর্ণ। চার ইনিংসে তার সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল ৩১ রানের। সব মিলিয়ে করেছিলেন মোটে ৬৪ রান। তাই স্বাভাবিকভাবেই চারদিক থেকে ধেয়ে আসছে সমালোচনা। বাবরকে সব বাদ দিয়ে আবার নিজের ক্রিকেটে মনোযোগ ফেরানোর পরামর্শ দিয়েছেন ইউনিস। পাকিস্তানের সাবেক এই তারকা বলেন, ‘বাবরের জন্য আমার একমাত্র পরামর্শ হলো, তার উচিৎ ক্রিকেটে মনোযোগ দেওয়া। তার উচিত নিজের পারফর্ম্যান্স বাড়ানো। বাবর আজমকে অধিনায়ক করা হয়েছিল কারণ ওই সময়ের সেরা ক্রিকেটার ছিল সে। দলের সেরা ক্রিকেটারকে অধিনায়ক বানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আমি সেখানে (পাকিস্তান দলে) ছিলাম।’
তবে পরের কথায় ইউনিস খান শুধু বাবর আজম নয়, কথা বলেছেন পুরো পাকিস্তান দল নিয়েই। পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা পারফর্ম করার চেয়ে কথা বেশি বলে এমন মন্তব্য করেছেন তিনি। ইউনিস বলেন, ‘যদি বাবর ও অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেটাররা মাঠে পারফর্ম করে, তাহলে ফলাফল সবার কাছেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমি একটা বিষয় খেয়াল করেছি, আমাদের ক্রিকেটাররা পারফর্ম করার চেয়ে কথা বলে বেশি।’ অন্যদিকে আরেক তারকা রশিদ লতিফ পাকিস্তানের ক্রিকেট আইসিইউতে আছে মন্তব্য করে বলেন, ‘পাকিস্তানের ক্রিকেট বর্তমানে আইসিইউতে আছে। তাদের এখন পেশাদার চিকিৎসক প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা কৌশলগত দিক থেকে অভিজ্ঞ কাউকে দরকার, সেটি শারীরিক ও আর্থিক দুটো বিষয়ই দেখতে হবে। প্রশিক্ষকসহ প্রয়োজনীয় আরও যা দরকার সেসবেরও ব্যবস্থা করতে হবে। এখানে আপনি অনেক সমস্যা দেখবেন, সেটি হোক মাঠ কিংবা মাঠের বাইরেও।’
বাংলাদেশ-ভারত সিরিজে তামিম ইকবালকে নতুন ভূমিকায় দেখা যাওয়ার গুঞ্জনটা শোনা গিয়েছিল আগেই। এবার সেটাই বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। সে লক্ষ্যেই ভারতের বিমানও ধরেছেন তামিম। সব কিছু ঠিক থাকলে বাংলাদেশের ভারত সফরে ধারাভাষ্য দিতে দেখা যেতে পারে তামিম ইকবালকে। যদিও বিষয়টি এখনো নিশ্চিত করে জানানো হয়নি।
আজ চেন্নাইয়ের বিমান ধরেছেন তামিম। এ সময় তার সঙ্গে একই বিমানে ছিলেন ভারত সিরিজে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া বেশ কয়েকজন ক্রীড়া সাংবাদিক।
লাল-সবুজের জার্সিতে অনেক দিন হলো দেখা যায় না দেশসেরা এ ওপেনারকে। তামিম জাতীয় দলে আবার ফিরবেন কি না সেটিও এখন প্রশ্ন সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে ক্রিকেট ছাড়লে ঠিক কোন পেশায় যাবেন তামিম? সেই প্রশ্নেরও উত্তর তামিম দিয়ে রেখেছিলেন আগেই। কমেন্ট্রিবক্সে মাইক্রোফোনের পেছনে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তামিম।
তামিম বলছিলেন, ‘আমার মনে হয় না আমি কোচিং লাইনে আসব। তবে কমেন্ট্রি আমাকে একটু টানে। আসলে এই বিশ্বকাপেও প্রস্তাব এসেছিল আমার কাছে। দুর্ভাগ্যবশত করা হয়নি। খুব সম্ভবত ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (আমাকে দেখা যেতে পারে)।’
উল্লেখ্য, ১৯ তারিখ থেকে ভারতের মাটিতে শুরু হবে বাংলাদেশ ও ভারতের দুই টেস্ট ও তিন টি-টোয়েন্টির সিরিজ। ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে কানপুরে হবে শেষ টেস্ট। ৬ অক্টোবর গোয়ালিয়রে প্রথম টি-টোয়েন্টির পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে ৯ ও ১২ অক্টোবর।
দেশের ক্রিকেটে গত কয়েক দিনের আলোচিত নাম মেহেদী হাসান মিরাজ। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জন্যই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন মিরাজ। ব্যাট-বল- দুই বিভাগেই মিরাজ এখন আস্থার নাম। তাই অনেকেই তাকে আগামী দিনের সাকিব আল হাসান মনে করছেন। সেই সুরে সুর মেলালেন প্রধান কোচ হাথুরু সিংহেও। মিরাজকে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সাকিব মনে করেন তিনি।
আগামী বৃহস্পতিবার ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ। এর আগে আজ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন প্রধান কোচ হাথুরু সিংহে। সেখানেই এক প্রশ্নের জবাবে হাথুরু সিংহে এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক ফাঁকে প্রশ্ন করা হয়- সাকিবের ভূমিকা পরবর্তীতে কে নেবেন? এই সময় মেহেদী হাসান মিরাজের কথা জানিয়ে হাথুরু বলেন, ‘আমার কাছে সে গত পাঁচ বা ছয় বছরে বাংলাদেশের সবচেয়ে উন্নতি করা ক্রিকেটার। সত্যিকার অর্থেই সে (ভবিষ্যতে) সাকিবের ভূমিকা নেওয়ার জন্য তৈরি। সে তার ব্যাটিং তো বটেই, নিশ্চিত করেই যেটা তার বড় শক্তির জায়গা, সেই বোলিংয়েরও উন্নতি ঘটিয়েছে। এখন সে নিজের ব্যাটিংয়ের উন্নতি ঘটিয়েছে। সে অসাধারণ এককজন ফিল্ডারও।’
ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টিতে ভারতকে চ্যালেঞ্জ জানালেও টেস্টে দুই দলের পার্থক্যটা স্পষ্ট। লাল বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখনো ঢের পিছিয়ে ভারতের চেয়ে। পরিসংখ্যানও সে কথাই বলে। তাই ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে ঘুরেফিরে বাংলাদেশের চাপে থাকার প্রশ্নই আসে বারবার। তবে সেই চাপকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ, ‘এই চাপকে সুবিধা হিসেবে দেখছি। আমার মনে হয় এটা আমাদের অনেক বেশি উদ্বুদ্ধ করে এবং আরও বেশি সামনে তাকানোর সুযোগ করে দেয়। তখন আমরা নিজেদের শক্তি ও সীমাবদ্ধতা ও অবস্থান সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে পারি।’
বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৩ দল- ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। কিন্তু নানা ইস্যুতেই তাদের সঙ্গে খুব বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ হয় না বাংলাদেশের। তাদের বিপক্ষে পরিসংখ্যানও ভালো নয় বাংলাদেশের। পরিসংখ্যান বা ম্যাচের ফলাফল যাই হোক, হাথুরুসিংহে মনে করেন, বড় দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ যত বেশি টেস্ট খেলবে, ততই অনুপ্রাণিত হবে এবং নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাবে।
টাইগার গুরু বলেন, ‘বিশ্বের সেরা দলের বিপক্ষে (টেস্ট) খেলতে পারলে আমরা আরও উৎসাহিত হই। যেমন- ভারতে এসে ভারতের বিপক্ষে খেলা। এখনকার দিনে ক্রিকেটে এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই সেরাদের বিপক্ষে খেলা সব সময় আপনাকে এই অনুভূতি দেয় যে, আপনি একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে কোথায় দাঁড়িয়ে আছেন। আমরা এখন সেই চ্যালেঞ্জের দিকেই তাকিয়ে।’
দুই ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলার বাঘীনিরা। স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা নারী-এ দলের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৭ উইকেটে, দ্বিতীয়টিতে ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়ের পর সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ১০ রানে জিতেছে বাংলাদেশ।
আজ রোববার সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ৯৭ রানের স্বল্প পুঁজি গড়েছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে ৮৭ রানের বেশি করতে পারেনি শ্রীলঙ্কার নারী-এ দল।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দিনটা ভালো যায়নি টাইগ্রেস ব্যাটারদের। স্বাগতিক দলের বোলারদের তোপে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে সফরকারী মেয়েরা। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৯৭ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ২১ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলেছেন দিলারা আক্তার।
দুই ম্যাচ হেরে ব্যাকফুটে থাকা লঙ্কান মেয়েদের সামনে সিরিজ বাঁচানোর দারুণ সুযোগ ছিল। ব্যাটিং ব্যর্থতায় তারাও বেশিদূর এগোতে পারেনি। ৮ উইকেটে ৮৭ রানে থেমে গেছে তাদের ইনিংস। ১০ রানের জয়ে সিরিজ নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। ১৭ সেপ্টেম্বর চতুর্থ ম্যাচ থ্রুস্টান এবং ১৯ সেপ্টেম্বর সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি কল্টসে।
এখন পর্যন্ত পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো প্রথম সারির অনেকগুলো ক্লাবের হয়েই মাঠে নেমেছেন। সেগুলোতে বেশ সফলও তিনি। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে দাঁড়িয়েছেন এখন সিআরসেভেন। লম্বা ক্যারিয়ারে অনেক কিছুই অর্জন করেছেন তিনি। তর্ক সাপেক্ষে সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়ও সিআরসেভেন। তবে আজকের এই রোনালদো হওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। ২০০৩ সালে স্পোর্তিং লিসবন থেকে ইউনাইটেডে যোগ দেওয়ার পরেই তারকা হয়ে ওঠেন রোনালদো।
২০২১ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে আবারও যোগ দিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। খারাপও করছিলেন না রেড ডেভিলদের হয়ে। কিন্তু এরিক টেন হাগ কোচ হয়ে আসার পর রোনালদোর জগৎ ওলটপালট হয়ে যায়। টেন হাগের শুরুর একাদশে তিনি অনিয়মিত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে বিরক্ত হয়ে ওঠা রোনালদো ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের আগে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্লাব ও কোচকে নিয়ে বোমা ফাটিয়ে ইউনাইটেডের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেন। বিশ্বকাপ শেষে যোগ দেন সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসরে।
দ্বিতীয় মেয়াদে তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলেও এখনো রোনালদোর হৃদয়ের কোণে জায়গা করে আছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। এখনও ভালোবাসেন পুরোনো সেই লাল জার্সিটাকে, ‘নিজেকে যেভাবে শুভকামনা জানাই, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জন্যও তাই- তাদেরকে সেরা দল হতে হবে। আমি (এখনো) ক্লাবটিকে ভালোবাসি... আমি অতীত ভুলে যাওয়ার মতো মানুষ নই।’
সেই ভালোবাসার কারণেই এক পডকাস্টে ইউনাইটেডের ভালো করার জন্য পরামর্শও দিয়েছেন রোনালদো। সেখানে অবশ্য ইউনাইটেডের বর্তমান কোচ এরিক টেন হাগের কড়া সমালোচনাও করেছেন তিনি।
টেন হাগের অধীনে ইউনাইটেড গত মৌসুমে অষ্টম হয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ শেষ করেছে, যা এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসে তাদের সর্বনিম্ন অবস্থান। এবারের মৌসুমেও শুরুটা ভালো হয়নি।
ইউনাইটেডের সাবেক ডিফেন্ডার ও রোনালদোর একসময়ের সতীর্থ রিও ফার্ডিনান্ডের পডকাস্ট অনুষ্ঠানে কথা বলেছেন রোনালদো। সেখানে ইউনাইটেডের বেহাল অবস্থার জন্য টেন হাগের মানসিকতাকে দায়ী করেছেন তিনি, ‘কোচ বলেছেন, তার দল (প্রিমিয়ার) লিগ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের একজন কোচ হিসেবে আপনি এ ধরনের কথা বলতে পারেন না। মানসিক দৃষ্টিকোণ থেকে আপনি বলতে পারেন, আমার দলের হয়তো প্রিমিয়ার লিগ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার সামর্থ্য নেই। কিন্তু আপনি না পারার কথা বলতে পারেন না। আপনার দলকে চেষ্টা করতে হবে, আপনাকে চেষ্টা করতে হবে।’
রোনালদো মনে করেন, ইউনাইটেডকে আবারও গৌরবাম্বিত করতে হলে সবকিছু ঢেলে সাজাতে হবে, ‘আমার মতে, এটা এখনো বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাব। তবে তাদের সবকিছু পুনর্নির্মাণ করা প্রয়োজন। সে জন্য সময় দিতে হবে, তাদেরকে বদলাতে হবে। তারাও জানে, এটাই একমাত্র উপায়।’
২০১৯ সালে ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশের বিপক্ষে দিবা-রাত্রির টেস্টে সর্বশেষ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। এরপর থেকে তারকা এই ব্যাটারের ব্যাটে সব ফরম্যাটেই সেঞ্চুরির খরা চলছিল। প্রায় তিন বছর পর টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি দিয়ে সেই খরা কাটিয়েছিলেন কোহলি। নিজের পুরোনো ফর্মেও ফেরেন।
তবে দীর্ঘদিন ধরেই টেস্ট ক্রিকেটের বাইরে বিরাট কোহলি। সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন বছরের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। এরপর ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলেছে ভারত। কিন্তু সেখানে ছিলেন না কোহলি। ছেলের জন্মের কারণে ছুটি নেন তিনি। চলতি মাসেই ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে ভারত। এই সিরিজ দিয়েই আবারও লাল বলের ক্রিকেটে ফিরছেন বিরাট কোহলি।
দীর্ঘদিন ধরে লাল বলের ম্যাচের বাইরে থাকা কোহলি কেমন করবে এই সিরিজে সেটিই এখন বড় প্রশ্ন। তবে কোহলির পক্ষেই বাজি ধরছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার বাসিত আলি। বাংলাদেশের বিপক্ষে কোহলি ডাবল সেঞ্চুরি করবেন বলেই ধারণা বাসিত আলির।
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বাসিত আলি বলেছেন, ‘ইংল্যান্ড সিরিজে বিরাট ছিল না। সদ্য শ্রীলঙ্কাতেও (ওডিআই) ভালো পারফর্ম করতে পারেনি। তবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিরাটের ব্যাটে বড় সেঞ্চুরি দেখা যাবে। সেটা ১১০ কিংবা ১১৫ নয়, হয়তো ডাবল সেঞ্চুরিও দেখা যাবে।’
বাসিত আলির বাজির ঘোড়া বিরাট কোহলির সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স আসলে কেমন? গত জুনে শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রানের দেখা পাননি কোহলি। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষ দশেও নেই। ৮ ম্যাচে ১৮.৮৭ গড় ও ১১২.৬৮ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ১৫১ রান। ফাইনালে দলকে জেতানো ৭৬ রানের ইনিংসটাই সর্বোচ্চ। এরপর গত আগস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ৩ ম্যাচে করেন ৫৮ রান। কোহলি যে মাপের ব্যাটসম্যান, সেই বিচারে বলাই যায়, সাম্প্রতিক সময়ে কোহলি তেমন একটা রানের মধ্যে নেই।
তবে টেস্ট ক্রিকেটে দারুণ উজ্জ্বল ভারতীয় এ তারকা। টেস্ট ক্যারিয়ারে ৭টি ডাবল সেঞ্চুরি রয়েছে কোহলির। টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ ডাবল সেঞ্চুরির তালিকায় তিনি ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি ওয়ালি হ্যামন্ডের সঙ্গে যৌথভাবে চতুর্থ। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৬ টেস্টে ৯ ইনিংসে ৫৪.৬২ গড়ে ৪৩৭ রান করেছেন কোহলি। ২০১৭ সালে হায়দরাবাদ টেস্টে ২০৪ রানের ইনিংস বাংলাদেশের বিপক্ষে কোহলির সর্বোচ্চ।
সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপা জেতার পরপরই ফরম্যাটটি থেকে অবসর নিয়েছেন কোহলি। তাই লাল বলের ক্রিকেটে অনেক বেশি মনোযোগ দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
সিরিজের প্রথম টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত হবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। বাংলাদেশ-ভারতের প্রথম ম্যাচ চেন্নাই এবং কানপুরে শেষ টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের আসন্ন ভারত সফরের জন্য টেস্ট দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এই দলে সুযোগ পেয়েছেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান জাকের আলী। দলে আরও রাখা হয়েছে সাকিব আল হাসানকে। এই সিরিজকে সামনে রেখে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এখন চলছে প্লেয়ারদের প্রস্তুতি।
টেস্টের জন্য বাংলাদেশ দলে যারা আছেন
নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, জাকির হাসান, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন কুমার দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, জাকের আলী, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা, তাইজুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, নাঈম হাসান ও খালেদ আহমেদ।
সিরিজের প্রথম টেস্ট ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে চেন্নাইয়ে এবং ২৭ সেপ্টেম্বর কানপুরে দ্বিতীয় টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ-ভারত। এই সিরিজের আগে ভারতের বিপক্ষে ১৩টি টেস্ট খেললেও একটাতেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। দুটি টেস্ট ড্র হয়েছে। এর মধ্যে ১১টি ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজের পর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দুই দল।
কিছুদিন আগেই পাকিস্তানকে ২-০ ব্যবধানে তাদেরই মাঠে টেস্ট সিরিজে হারিয়েছে টাইগাররা। পাকিস্তানের বিপক্ষে এটিই ছিল তাদের প্রথম টেস্ট ও টেস্ট সিরিজ জয়।
স্মরণকালের অন্যতম দুঃসময় পার করছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। বিশ্বকাপ জয়ের জন্য খেলতে যাওয়া দলটির বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব উৎরানোই এখনো নিশ্চিত নয়। যাদের বিপক্ষে জয় ব্যতীত অন্য কিছুই ভাবত না সেলেসাও সমর্থকরা, তাদের বিপক্ষেই এখন হারের গ্লানি জুটছে ব্রাজিলের। বিশ্বকাপ শুরু হতে যেহেতু এখনো বাকি প্রায় দুই বছর। তাই বাজে সময় কাটিয়ে আগামী বিশ্বকাপেও জয়ের জন্যই মাঠে নামতে চান ব্রাজিলিয়ান তরুন তুর্কি রদ্রিগো। তবে বিশ্বকাপ জয়ের জন্য উদীয়মান এ তারকা জানালেন, নেইমারকে তাদের লাগবেই।
ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসের সফলতম গোলস্কোরার নেইমার। দলের প্রাণভোমরাও তিনিই। কিন্তু চোটের কারণে গত বছরের অক্টোবর থেকে তিনি মাঠের বাইরে। তাকে ছাড়া এই সময়টায় ব্রাজিল হয়ে উঠেছে আরও ছন্নছাড়া।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে উরুগুয়ে, কলম্বিয়া ও আর্জেন্টিনার কাছে হেরে যায় ব্রাজিল। বাছাইয়ের ইতিহাসে টানা তিন ম্যাচে হার তাদের জন্য ছিল প্রথম। টানা চার ম্যাচ জয়বিহীন থাকার পর গত শুক্রবার রদ্রিগোর গোলে ইকুয়েডরকে হারিয়েছে তারা। বাছাইয়ের পয়েন্ট তালিকায় ছয় থেকে উঠে আসে চারে।
রদ্রিগোর মতে, নেইমারের ঘাটতি দলে পূরণ করা যাচ্ছে না। আগামী বিশ্বকাপ জিততে হলে নেইমারের বিকল্প তিনি দেখেন না। রদ্রিগো বলেন, ‘আমার কিছু বলার নেই। সবাই দেখতে পাচ্ছে। এটা খুবই পরিষ্কার যে, তার অভাব কতটা অনুভূত হচ্ছে দলে। তিনি আমাদের তারকা, আমাদের সেরা ফুটবলার। বিশ্বকাপ জিততে হলে তাকে আমাদের লাগবে। সবাইকে ভালো থেকে তাকে সহায়তা করতে হবে।’
নেইমারকে ফিরে পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই নেইমারকে সুস্থ দেখতে চাই। তিনি যদি সুস্থ থাকেন… সেরে ওঠার শেষ পর্যায়ে আছেন তিনি। যত দ্রুত সম্ভব তাকে ফিরে পেতে চাই আমরা।’
গত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নেয় ব্রাজিল। সেই ম্যাচে টাইব্রেকারে বল জালে পাঠাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন রদ্রিগো। ম্যাচের পরে তিনি ক্ষমা চেয়েছিলেন, ‘নেইমারকে ট্রফি উঁচিয়ে ধরা থেকে বঞ্চিত করায়।’
নেইমারের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের গল্পও শোনালেন রদ্রিগো। ফুটবলার হিসেবে তো তাকে আদর্শই মানেন রিয়াল মাদ্রিদের তরুণ উইঙ্গার, পাশাপাশি মানুষ হিসেবেও তার হৃদয়ে আলাদা জায়গা নিয়ে আছেন নেইমার। তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিতই পরস্পরকে ম্যাসেজ পাঠাই। এখন সে দলের সঙ্গে অনুশীলনে ফেরার পথে আছে। সতীর্থ হিসেবে তিনি দারুণ। মানুষ হিসেবে তিনি যেমন… তাকে নিয়ে কেউ খারাপ কথা বললে আমার কষ্ট লাগে।’
নেইমারকে আদর্শ জানিয়ে রদ্রিগো বলেন, ‘তিনি সবসময় আমাকে নানা কিছু লেখেন, সহায়তা করেন। তাকে আমি ভালোবাসি। ফুটবলার হিসেবে তিনি তো আমার আদর্শই, মানুষ হিসেবেও সে অসাধারণ একজন।’
ফুটবল ও ক্রিকেট সরাসরি নিয়ন্ত্রিত স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে। এখানে সরকারি হস্তক্ষেপে নিষেধাজ্ঞা আসে ফিফা এবং আইসিসি থেকে। এই দুই ফেডারেশন বাদে বাকি সব ফেডারেশনের সভাপতি সরকার থেকে মনোনয়ন পায়। তাই এগুলোতে সরকারি হস্তক্ষেপে কোনো বাধা নেই।
আগেই অপসারণ করা হয়েছিল বাংলাদেশ দাবা ও কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতিকে। দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল ব্রিজ ফেডারেশনের সভাপতিকে। আজ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে দেশের আরও ৪২টি ক্রীড়া ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিদের অপসারণ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব এস এম হুমায়ূন কবীরের সই করা এই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন ২০১৮ এর ২২ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার দেশের বিদ্যমান ফেডারেশন/ অ্যাসোসিয়েশন/বোর্ড/সংস্থার কার্যক্রম অধিকতর সক্রিয় ও সংস্কারের উদ্দেশে সভাপতিদের অপসারণ করা হয়েছে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত ফেডারেশন/অ্যাসোসিয়েশনগুলো হলো- ব্যাডমিন্টন, শুটিং, হ্যান্ডবল, জুডো, কারাতে, তায়কোয়ানদো, টেবিল টেনিস, জিমন্যাস্টিকস, বাস্কেটবল, আর্চারি, মহিলা ক্রীড়া সংস্থা, বক্সিং, বধির ক্রীড়া, বাশাআপ, রাগবি, ফেন্সিং, বেসবল, প্যারা অলিম্পিক কমিটি, সার্ফিং, মাউন্টেনারিং, চুকবল, নেপাক টাকরো, জুজুৎসু, প্যারা আর্চারি, ভারোত্তোলন, উশু, ক্যারম, সাইক্লিং, টেরিস, রেসলিং, রোলার স্কেটিং, কান্ট্রি গেমস, থ্রোবল, ভলিবল, স্কোয়াশ, রোইং, আন্তর্জাতিক তায়কোয়ানদো অ্যাসোসিয়েশন, ঘুড়ি অ্যাসোসিয়েশন, অ্যাথলেটিকস, খিউকুশিন কারাতে, খো খো, মার্শাল আর্ট।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ইতিহাস গড়ে তাদেরই মাটিতে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে এসেছে বাংলাদেশ। এবার টাইগারদের নতুন লক্ষ্য ভারত। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি আর দুই ম্যাচের টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। এই দুই দলের বিপক্ষেই বাংলাদেশের খেলায় থাকে এক অন্যরকম উত্তেজনা; সেটা মাঠের ভেতর কিংবা বাহির, দুই জায়গাতেই। ভারতবধের জন্য প্রস্তুত হতেই মিরপুরে ব্যস্ত সময় পার করছে টাইগাররা। আসন্ন সিরিজ উপলক্ষ্যে সেখানেই সংবাদ সম্মেলনে কথা বললেন লিটন কুমার দাস।
ভারত কিংবা পাকিস্তান দুই দলর বিপক্ষেই খেলা চাপ নয় বরং অনুপ্রেরণার বললেন লিটন দাস। তিনি বলেন, ‘এটা আসলে অনুপ্রেরণাই দেয়। ভালো খেললে সুনাম হবে, দুজন মানুষ চিনবে। এর চেয়ে বড় পাওয়া তো আর কিছু থাকতে পারে না! আমার মনে হয় না চাপের কিছু আছে। টেস্ট ক্রিকেটটা আমরা এখন মোটামুটি ভালো খেলছি। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে, এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন।’
ভারতের বিপক্ষে অবশ্য অন্য এক চ্যালেঞ্জের কথা জানালেন লিটন দাস। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ খেলেছে কোকাবুরা বলে কিন্তু ভারতের বিপক্ষে খেলবেন এসজি বলে। এটা চিন্তা বাড়াচ্ছে বাংলাদেশের। লিটন বলেন, ‘ভারত সিরিজ আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। প্রস্তুতি বলতে যতটুকু পারছি আমাদের মূল বোলারদেরই ফেইস করছি। কিছুটা চ্যালেঞ্জ তো আছেই। কারণ, কোকাবুরা বলের নতুন বলটা খেলা কঠিন, পুরাতন বলটা খেলা সহজ। তবে এসজি বলে নতুন বলটা একটু সহজ, পুরাতন বল খেলা কঠিন। এসব কিছু আমাদের মানিয়ে নিতে হবে।’
পাকিস্তানকে হারানোর সাফল্যে বুদ হতে চান না লিটন দাস। বরং সেটাকে অতীত বললেন তিনি, ‘দেখেন আমরা পাকিস্তানে খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছি। এটা আমার কাছে মনে হয় এটা অতীত হয়ে গেছে। এখান থেকে কনফিডেন্স পেয়েছি, যখন হোমে ইন্ডিয়ার সঙ্গে খেলব তখন ইন্ডিয়া অলওয়েজ শক্তিশালী দল। আমি বলব না যে খুব চ্যালেঞ্জিং হবে, আবার সহজ হবে।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে অতীমানবীয় এক ইনিংস খেলে দলকে জয়ের পথ দেখিয়েছিলেন লিটন দাস। ধ্বংস্তূপের ভেতর থেকে দলকে টেনে তুলে এনেছিলেন তিনি। সে প্রসঙ্গে লিটন বলেন, ‘আমি ৯-১০ বছর হয়ে গেছে ক্রিকেট খেলছি। ও রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে। এখনই সময় দায়িত্ব নেওয়ার। দায়িত্ব যদি এখন না নিই, তাহলে আর কখন। সুযোগ পেলেই, আমি বলছি দায়িত্ব নেওয়ার কথা; কিন্তু তার মানে এই না যে প্রতি ম্যাচেই আমাকে দায়িত্ব নিতে হবে। আমি মানুষ, আমার ভুল হতেই পারে।’
নিজের ব্যাটিংয়ের ধরন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যে খুব আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলেছি তা না। আমার কাছে যে বলগুলো মনে হয়েছে স্কোরিং, সেগুলোতে স্কোর চেষ্টা করেছি।’
সেই যে কোপা আমেরিকার ফাইনালে ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি, এরপর আর মাঠে ফেরা হয়নি তার। ইনজুরি থেকে ফিরতেই এখন যত ব্যস্ততা মেসির। মাঝে অনুশীলন করলেও এখনো মাঠে নামা হয়নি তার। ঠিক কবে মাঠে নামবেন মেসি সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাও যায়নি।
তবে এবার মেসির ফেরা নিয়ে সুখবর দিলেন আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি। আগামী অক্টোবরে বিশ্বকাপজয়ী এই ফরোয়ার্ডকে দলে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। অক্টোবরের উইন্ডোতে ভেনেজুয়েলা ও বলিভিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে আর্জেন্টনা। সেই ম্যাচে মেসিকে পাওয়ার আশা তার।
স্কালোনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, সে খেলা শুরু করবে। যখন পরবর্তী স্কোয়াডের তালিকা (অক্টোবরে) দেব, তখন সবার মতো তার সঙ্গেও যোগাযোগ করব। এরপর আমরা দেখব, সে ফেরার জন্য প্রস্তুত কি না।’
মেসিকে ছাড়াই দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইয়ের ম্যাচে চিলিকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে আর্জেন্টিনা। দলের সেরা খেলোয়াড়কে ছাড়া যেভাবে নিজেদের মেলে ধরছেন বাকিরা, তাতে বেশ সন্তুষ্ট আর্জেন্টিনা কোচ। তিনি বলেন, ‘লিওর (মেসি) ওপর নির্ভরশীল না হওয়া একটা ফুটবল দলের জন্য কঠিন। সে যে দলেই ছিল, প্রত্যেক দলেই এমনটা হয়েছে। সে দলের অনন্য একজন ফুটবলার। (আর্জেন্টিনার) এই দলের ভালো দিক হলো, মাঠে যেই থাকুক না কেন নিজেদের খেলা নিয়ে পরিষ্কার একটা ধারণা আমাদের আছে।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লিটন দাসের সঙ্গে ওই জুটি গড়তে ৭৮ রানের ইনিংস খেলা কিংবা প্রথম টেস্টের ৭৭ রান। বল হাতেও পাকিস্তানের বিপক্ষে ছিলেন দুর্দান্ত। দুই ম্যাচ মিলিয়ে শিকার ১০ উইকেট। সব মিলিয়ে পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের বড় কারিগর মিরাজ। এর আগে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও হেসেছিল মিরাজের ব্যাট। দ্বিতীয় টেস্টে খেলেছিলেন ৮১ রানের অপরাজিত ইনিংস। ওই সিরিজে বল হাতে তার শিকার ৫ উইকেট। গত বছর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে জেতা সিলেট টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৫০ রান।
মিরাজের এমন পারফরম্যান্স বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হওয়ার আশা দেখায় বাংলাদেশি ভক্তদের। ক্যারিয়ারে গোধুলিতে থাকা সাকিবের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবেই দেখা যাবে তাকে। মিরাজ নিজেও স্বপ্ন দেখেন সেটার। গতকাল গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানালেন নিজের কথা। মিরাজ বলেন, ‘একটা দলে যদি দুজন অলরাউন্ডার খেলে, দলের জন্য অনেক সুবিধা থাকে। যেহেতু আমার ব্যাটিংটা এখন ভালো হচ্ছে... শুরুর দিকে আমার ব্যাটিংটা সেভাবে পায়নি দল। আমি বোলার হিসেবে খেলেছি। এখন অবদান রাখছি, খুব ভালো লাগছে।’
বিশ্বসেরা হতে গেলে যে অনেক কাঠখর পোড়াতে হবে সেটা মিরাজও জানে, ‘(বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হতে) অনুশীলন করতে হবে, কষ্ট করতে হবে। এটা এক-দুই বছরে সম্ভব না। লম্বা সময় ধরে ভালো খেলতে হবে। এখন যেভাবে চলছে এটা যদি লম্বা সময় ধরে রাখতে পারি, তাহলে আশা করি একদিন (বিশ্বসেরা) অলরাউন্ডার হতে পারব।’ অভিষেকের পর থেকেই টেস্টে বোলার হিসেবে দলের নিয়মিত সদস্য মিরাজ। তবে পরিপূর্ণ অলরাউন্ডার হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হচ্ছে মূলত ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিক হওয়ার পর থেকে। ৮ নম্বরে নেমে গত কয়েক বছর ধরেই কার্যকর সব ইনিংস খেলছেন মিরাজ। তবে ৮ নম্বরে বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যান হওয়ার ইচ্ছা নেই মিরাজের। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ওপরের দিকের বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যান হতে চান। তাই তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, কত নম্বরের সেরা হতে চান তিনি?
উত্তরে নির্দিষ্ট করে কোনো ব্যাটিং পজিশনের কথা অবশ্য বলেননি মিরাজ, ‘হ্যাঁ! ৮ নম্বরের সেরা হতে চাই না। কারণ ৮ নম্বরে ব্যাটিং করা অনেক চাপ (হাসি)। অনেক সময় পরিস্থিতি থাকে, দল অনেক ভালো খেলেছে, তারপর আমার ৮ নম্বরে নামতে হয়। আবার এমন পরিস্থিতিও থাকে, দলের সব ব্যাটসম্যানরা খারাপ করেছে, তারপর আমার চাপের মধ্যে নামতে হয়। জিনিসটা ওই ইঙ্গিতে আমি বলেছিলাম, যে ৮ নম্বরের সেরা ব্যাটসম্যান হতে চাই না, ওপরের দিকের সেরা ব্যাটসম্যান হতে চাই।’