দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরাদের নামের তালিকায় ওপরের দিকেই থাকবেন স্পিনার মোহাম্মদ রফিক। তার স্পিন বিষে কাবু হয়েছেন বিশ্বের বাঘা বাঘা সব ব্যাটার। খেলোয়াড়ি জীবন শেষ করেও ভালোবেসে বেছে নিয়েছেন ক্রিকেটটাকেই। দেশের ঘরোয়া লিগের পাশাপাশি কোচ হিসেবে কাজ করেছেন বিপিএলেও। কিন্তু গুণী এ তারকার কদর নেই বিসিবিতে। বোর্ডকর্তারা একাধিকবার তাকে নিয়ে কাজ করার কথা জানালেও শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু হয়নি। যে কারণে আফসোসও রয়েছে সাবেক এ ক্রিকেটারের।
শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে আছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। এ ছাড়া সংস্কার আসবে অন্যান্য পদেও। ছাঁটাই হবেন যে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা তা বলাই বাহুল্য। তাই নতুন বোর্ডে যদি রফিককে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে সেটি তিনি আনন্দের সঙ্গেই গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।
মোহাম্মদ রফিক বলেন, ‘আমরা তো ৯০ সাল থেকে বোর্ডের সঙ্গে আছি। ১৯৯০ সালে যে হাহাকার ছিল এখনো সে হাহাকার চলছে। যারা বোর্ডে বসবেন তারা যদি মনে করেন যে আমরা যারা সাবেক খেলোয়াড় আছি আমাদের এখন প্রয়োজন। যেমন আমি আছি, পাইলট আছে, ফাহিম ভাই আছেন বিকেএসপির, বুলবুল আছে যদি মনে করে যে আমাদের দরকার এ সময় আমরা দেশের হয়ে কাজ করার জন্য প্রস্তুত আছি।’ এখন কাজ করার সুযোগ থাকলে কোনো চিন্তা ছাড়াই প্রস্তুত আছেন রফিক। তবে এসি রুমে বসে কাজ করতে চান না তিনি। সাবেক এই ক্রিকেটার বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ! আমাকে মাঠে কাজ দেন, আমি এসির ভেতর থাকতে চাই না। আমি মাঠের লোক আমি মাঠে থাকতে চাই। আমার টাকা লাগবে না, এখন যে অবস্থা টাকা লাগবে না। যারা নতুন অবস্থায় আসবে তাদের সঙ্গে আমরা আছি যদি আমাদের দরকার মনে করে।’ মোহাম্মদ রফিককে নিয়ে আগ্রহের কথা অনেকবারই জানিয়েছে বিসিবি; কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছু ছিল না বলেই জানালেন রফিক, ‘কোনো অনুষ্ঠানে দেখা হলে বলতো যে, হ্যাঁ রফিক আসো। তারপর আর কোন কথা বলত না।’ রফিকের চাওয়া তবুও ক্রিকেট বেঁচে থাকুক, ‘ইনশাআল্লাহ, ১৯৯০ সালে যখন বোর্ডের কিছু ছিল না তখনও বোর্ডের সঙ্গে ছিলাম। এখন যা খারাপ অবস্থা আমি রফিক আছি, পাইলট আসবে, ফাহিম ভাই আসবে। এরকম কোচ বা যারা আছে ইমরান ভাই আসবে। আমাদের টাকা দরকার নেই, আমরা দেশের ক্রিকেটের সঙ্গে আছি। আমরা চাই দেশের ক্রিকেটটা বেঁচে থাকুক।’
বিশ্ব ক্রিকেটে ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগের জয়জয়কার অনেক বছর ধরেই। আলো-ঝলকানির খেলা, দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়, বিদেশি বিনিয়োগ, দর্শকদের আগ্রহ- সব মিলিয়ে আইপিএলের পথ ধরে টেস্ট খেলুড়ে প্রায় প্রতিটি দেশেই চালু হয়েছে নিজস্ব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ।
তবে এত দিন ব্যতিক্রম ছিল নিউজিল্যান্ড। এবার সেই পথ ধরে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের জগতে ঢুকছে কিউইরাও। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (সিপিএল) মডেলে ২০২৭ সাল থেকে নিজেদের নতুন টি-টোয়েন্টি লিগ চালু করার লক্ষ্য দেশটির।
বর্তমানে একমাত্র নিউ জিল্যান্ডে ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা সুপার স্ম্যাশ। আন্তর্জাতিক তারকা না থাকা আর দর্শক আকর্ষণে ব্যর্থতার কারণে লিগটির গুরুত্ব দিন দিন কমছে। তাই দেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বড় পরিবর্তনের আভাস দিলেন এনজেড-২০ প্রকল্পের প্রধান ডন ম্যাককিনন।
তার মতে, এখন সময় এসেছে সুপার স্ম্যাশের বাইরে ভাবার। ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ভাবনা জানান ম্যাককিনন।
‘আন্তর্জাতিক বাজারে সফল হতে নিউজিল্যান্ডকে নিজস্ব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ তৈরি করতে হবে। যেখানে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (সিপিএল) মতো মডেলেই নতুন লিগ পরিচালিত হতে পারে। টুর্নামেন্টের লাইসেন্স থাকবে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের (এনজেসি) কাছে, তবে লিগ পরিচালনা হবে স্বতন্ত্রভাবে।’
নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড অবশ্য এখনো সবুজ সংকেত দেয়নি। তবে অনুমোদন মিললে নতুন লিগটি সুপার স্ম্যাশের জায়গা নেবে বলে মনে করছেন ম্যাককিনন।
এর আগে ২০১৪ সালে এনজেসি এ ধরনের একটি প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল। তখন বোর্ড মনে করেছিল, আইপিএল বা বিগব্যাশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা কঠিন হবে।
ম্যাককিননের বিশ্বাস, এখন সময় বদলেছে ও নিউজিল্যান্ডের নিজস্ব টি–টোয়েন্টি ব্র্যান্ড তৈরির সুযোগ এসেছে। স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের মতো কিংবদন্তিরাও বেসরকারি মালিকানার লিগের পক্ষে মত দিয়েছেন বলে জানান ম্যাককিনন। খসড়া পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৭ সালের জানুয়ারিতেই টুর্নামেন্ট মাঠে গড়ানোর লক্ষ্য রয়েছে। গত দুই-তিন মাস ধরে বোর্ডের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনায় আছেন প্রকল্প প্রধান।
তবে নতুন লিগের সবচেয়ে বড় বাধা সময়সূচি নির্ধারণ। যাতে বিগব্যাশ (বিবিএল), আইপিএল, এসএ২০ বা আইএলটি২০ এর সঙ্গে সংঘাত না হয়। কারণ এসব লিগে নিয়মিত খেলেন বহু কিউই ক্রিকেটার।
আসন্ন বিপিএলে যুক্ত হলো নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি নোয়াখালী। দলটি খেলবে ‘নোয়াখালী এক্সপ্রেস’ নামে। যেহেতু প্রথমবার বিপিএলে অংশ নিতে যাচ্ছে নোয়াখালী, স্বাভাবিকভাবে এলাকার মানুষদের উৎসাহ-উদ্দীপনা তুঙ্গে। একই সঙ্গে ক্রিকেটপ্রেমীদেরও কৌতূহল—নোয়াখালী এক্সপ্রেসের মালিক কারা, ম্যানেজমেন্টে আছেন কে, নিলামের আগে সরাসরি দলে কারা যোগ দিচ্ছেন—এসব প্রশ্ন নিয়েই আলোচনা চলছে।
এ অবস্থায় গত বুধবার সন্ধ্যার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় আসে একটি খবর—নোয়াখালী এক্সপ্রেসের কোচ হচ্ছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। ঘরোয়া ক্রিকেটে অত্যন্ত অভিজ্ঞ ও সফল এই কোচ এর আগেও বিপিএলে ঢাকাকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন এবং একাধিকবার দলকে ফাইনালে তুলেছেন।
সাম্প্রতিক প্রিমিয়ার লিগেও গুলশান ক্রিকেট ক্লাবকে তার কোচিংয়ে একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটার নিয়েই সুপার লিগে তুলেছেন এবং দলটি লিগ শেষ করেছে পঞ্চম স্থানে—যা ছিল অনেক প্রত্যাশার বাইরে।
গত আসরে ঢাকার কোচ ছিলেন সুজন। তবে তুলনামূলক দুর্বল দল নিয়ে খুব বেশি সাফল্য পাননি। তাই এবারে তিনি কোন দলের দায়িত্ব নেবেন—এ নিয়ে ছিল ব্যাপক জল্পনা। এমন সময়ই ছড়িয়ে পড়ে নোয়াখালীর নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজির কোচ হচ্ছেন তিনি। যদিও এ বিষয়ে শুরুতে সুজন কিংবা নোয়াখালী কর্তৃপক্ষ কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাননি।
বর্তমানে ব্যক্তিগত কাজে দেশের বাইরে থাকা খালেদ মাহমুদ সুজন ২৮ নভেম্বর দেশে ফিরবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তিনি নিশ্চিত করেছেন—হ্যাঁ, তিনি এবারের বিপিএলে নোয়াখালী এক্সপ্রেসের কোচের দায়িত্ব নিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, তিনি বর্তমানে রাজশাহীর বাংলা ট্র্যাক ক্রিকেট একাডেমির প্রধান কোচ হিসেবে কাজ করেন এবং সপ্তাহে ৩–৪ দিন সেখানে সময় দেন। জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত না থাকায় বিপিএলে কোচিং করানোর জন্য তার হাতে প্রয়োজনীয় সময়ও রয়েছে।
সুজন বলেন, ‘আমি এখন খুব একটা ব্যস্ত না। তাই নোয়াখালী এক্সপ্রেসের প্রস্তাব গ্রহণে কোনো বাধা ছিল না। ফ্রি থাকায় নোয়াখালীর কোচিংয়ের দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছি।’
তিনি আরও জানান, ‘নোয়াখালী এক্সপ্রেসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সব আলোচনা চূড়ান্ত হয়েছে। আমিও সিদ্ধান্ত নিয়েছি—এবারের বিপিএলে নোয়াখালীর কোচিংয়ের দায়িত্ব পালন করব।’
সব প্রতিযোগিতা মিলে ৩ ম্যাচে জয়হীন ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এসে জয়ের ধারায় ফিরেছে লস ব্লাঙ্কোস। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে চার গোল করে একাই জয়ের নায়ক ছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ফরাসি তারকার নৈপুণ্যে অলিম্পিয়াকোসকে ৪–৩ গোলে হারিয়েছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
গ্রিসে ম্যাচের শুরুতেই দলীয় আক্রমণ থেকে লিড নেয় অলিম্পিয়াকোস। ২০ গজ দূর থেকে নিশানা ভেদ করেন চিকিনহো। এরপর পুরো মঞ্চটাই দখলে নেন এমবাপ্পে।
২২ মিনিটে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের দুর্দান্ত থ্রু–বলে দৌড়ে গিয়ে অলিম্পিয়াকোস গোলরক্ষক কস্তাস জোলাকিসের পায়ের ফাঁক দিয়ে গোল করে সমতায় ফেরান ফরাসি অধিনায়ক। দুই মিনিট পর আর্দা গুলেরের ক্রস থেকে নিচু হেডে দ্বিতীয় গোলও তুলে নেন তিনি।
এরপর মাত্র ছয় মিনিট ৪২ সেকেন্ডের ব্যবধানে ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ হ্যাটট্রিক পূরণ করেন এমবাপ্পে। রক্ষণ ভেদ করে এগিয়ে গিয়ে দুর্দান্ত ফিনিশে জোলাকিসকে আবারও পরাস্ত করেন তিনি। এ প্রতিযোগিতায় এর চেয়ে দ্রুত হ্যাটট্রিক আছে শুধু লিভারপুলের মোহাম্মদ সালাহর। সেটি রেঞ্জার্সের বিপক্ষে ২০২২ সালে করেছিলেন তিনি।
তার পর প্রথমার্ধে চোটগ্রস্ত চিকিনহোর বদলি হিসেবে নেমে ৫২ মিনিটে জোরালো হেডে ব্যবধান কমান মেহদি তারেমি। থিবো কুর্তোয়া অসুস্থতার কারণে না থাকায় রিয়ালের গোলপোস্ট সামলাচ্ছিলেন আন্দ্রি লুনিন।
অ্যাওয়ে ম্যাচে আগে সাত সফরে গ্রিক প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কখনো জিতেনি রিয়াল। এবার সেই ইতিহাস বদলেছে রিয়াল। যার নায়ক ছিলেন এবাপ্পে। দ্বিতীয়ার্ধে বাম দিক দিয়ে ভিনিসিয়ুসের দারুণ কারিকুরির পর নিজের চতুর্থ গোলটি করেন তিনি। এতে পাঁচ ম্যাচে তার গোল সংখ্যা দাঁড়িয়েছে নয়টি।
শেষ দিকে নয় মিনিট বাকি থাকতে আয়ুব এল কাবি ব্যবধান কমিয়ে রোমাঞ্চের জন্ম দিলেও শেষ পর্যন্ত জয়ের দেখা পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পাঁচ ম্যাচে এটি তাদের চতুর্থ জয়।
রিয়ালের জয়ের দিনে হতাশা নিয়ে মাঠ ছেড়েছে লিভারপুল। অ্যানফিল্ডে গত বুধবার পিএসভি আইন্দোভেনের কাছে ৪–১ গোলে হেরে নিজেদের দুর্দশা আরও বাড়িয়েছে তারা। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে শেষ ১২ ম্যাচে এটি লিভারপুলের নবম হার। ১৯৫৩-৫৪ মৌসুমের পর এবারই তারা এতটা বাজে সময় কাটাচ্ছে।
অপর দিকে বায়ার্ন মিউনিখকে ৩–১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে আসরে নিজেদের শতভাগ জয়ের রেকর্ড অক্ষুণ্ন রেখেছে আর্সেনাল।
লিভারপুলের কোচ হিসেবে অভিষেক মৌসুমেই প্রিমিয়ার লিগ জয়ের স্বাদ পাওয়া আর্না স্লট এখন দেখছেন মুদ্রার উল্টো পিঠ। টানা ব্যর্থতায় তিনি হারাতে পারেন চাকরি, এমন প্রশ্নও উঠছে। তবে অ্যানফিল্ডে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে একদমই চিন্তিত নন বলে জানিয়েছেন এই ডাচ কোচ।
কক্ষচ্যুত লিভারপুল সবশেষ হতাশার গল্প লিখেছে গত বুধবার রাতে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে। স্লটের দেশের ক্লাব পিএসভি আইন্দহোভেনের বিপক্ষে ঘরের মাঠেই ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা।
অ্যানফিল্ডে ষষ্ঠ মিনিটে ইভান পেরিসিচের সফল স্পট কিকে পিছিয়ে পড়ার ১০ মিনিট পর, দমিনিক সোবোসলাইয়ের গোলে সমতায় ফেরে লিভারপুল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আর লড়াই চালিয়ে যেতে পারেনি তারা। ৫৬তম মিনিটে গাস তিলের গোলে আবার এগিয়ে যায় সফরকারীরা। লিভারপুলের জালে শেষ দুটি গোল করেন সোহেইব দ্রিউয়েশ।
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুলের এটা দ্বিতীয় পরাজয়। আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সবশেষ ১২ ম্যাচের ৯টিতেই হারের তেতো স্বাদ পেল দলটি।
দলের এমন ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সের পর সংবাদ সম্মেলনে স্লটের দিকে প্রশ্ন ছুটে গেল, তিনি বরখাস্ত হওয়ার বিষয়ে চিন্তিত কি না। উত্তরে তিনি বললেন, ‘একদমই নই।’
‘আমি বোঝাতে চাচ্ছি যে, এখানে নিজের পদের কথা নয়, আমার সব ভাবনা ও মনোযোগ অন্যান্য বিষয় ঘিরে। আমি (সবকিছু) পর্যালোচনার চেষ্টা করি, যতটা সম্ভব খেলোয়াড়দের সাহায্য করার চেষ্টা করি এবং এটা নিশ্চিত যে, গত মৌসুমে আমি যেভাবে তা করেছিলাম, এখন সেইভাবে করছি না। কারণ, ব্যক্তিগত ভুলের কথা বললেও আমার মনে হয়, সেটাও একরকম দলীয় প্রচেষ্টারই ফল।’
‘তাই আবারও বলছি, আমার আরও ভালো করতে হবে। প্রতিদিন আমি দলকে আরও ভালো করে তোলার চেষ্টাই করি এবং এটাতেই আমার পূর্ণ মনোযোগ।’
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রাথমিক পর্বে দ্বিতীয় হারের পর পাঁচ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ১৩ নম্বরে আছে লিভারপুল।
এই ম্যাচের আগে প্রিমিয়ার লিগে টানা দুই ম্যাচে পরাজিত হয় স্লটের দল; ম্যানচেস্টার সিটি ও নটিংহ্যাম ফরেস্টের বিপক্ষে, দুই ম্যাচেই ৩-০ গোলে পর্যুদস্ত হয় তারা। ১২ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট প্রিমিয়ার লিগের টেবিলে দ্বাদশ স্থানে নেমে গেছে লিভারপুল।
কয়েক দফা পেছানোর পর অবশেষে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নিলাম হতে যাচ্ছে। আগামী ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে দ্বাদশ আসরের নিলাম। আসন্ন আসরের জন্য বিদেশি ক্রিকেটার ক্যাটাগরিতে ৫০০ জনেরও বেশি নাম নিবন্ধন করলেও চূড়ান্ত তালিকায় জায়গায় পেয়েছেন ২৪৫ জন।
তালিকায় পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের সঙ্গে এবার আছেন ভারতীয় ক্রিকেটারও। বোলিং অলরাউন্ডার পীযুষ চাওলা ‘এ’ ক্যাটাগরিতে আছেন। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তার, এছাড়া দীর্ঘদিন আইপিএলে খেলে গত বছর সব ধরনের ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন।
২০০৬ সালে ইংল্যান্ড টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অভিষেক হয়েছিল চাওলার। পরের বছর ওয়ানডেতে অভিষেক হয় দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। ২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আইপিএল খেলেছেন তিনি। ২০২২ সালে তিনি দল পাননি।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে ২০১৪ সালে তিনি আইপিএল শিরোপা জিতেন। সেইবার ফাইনালে পাঞ্জাব কিংসকে হারানোর নেপথ্যে তার ইনিংস গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ২০২১, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে তিনি ছিলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে। ২০২৫ সালে কোনো দল তাকে নেয়নি। মোট ১৯২টা ম্যাচ খেলেছেন তিনি। নিয়েছেন ১৫৭টি উইকেট। ব্যাট হাতে ৬২৪ রান করেছেন।
প্রসঙ্গত, বিপিএলের নিলামে বিদেশিদের তালিকায় সর্বোচ্চ ভিত্তিমূল্যের ‘এ’ ক্যাটাগরিতে পীযুষ চাওলার সঙ্গে আরও আছেন জনসন চার্লস, কিসি কার্টি, কিমো পল, ডমিনিক ড্রেকস, মোহাম্মদ হাসনাইন, জামান খান, আব্দুল সামাদ, উসামা মীর, শোয়েব মালিক, অভিষকা ফার্নান্দো, দাসুন শানাকা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, জর্জ মানসি, জর্জ ডকরেল, বাস ডি লিড, ওয়েন পারনেল, শান মাসুদ, সালমান আলী আঘা, দীনেশ চান্দিমাল, লাহিরু কুমারা, বিনুরা ফার্নান্দো, নিরোশান ডিকওয়েলা, চামিকা করুনারত্নে, জেফরি ভেন্ডারসে, দুনিথ ভেল্লালাগে, দুশমন্থ চামিরা, কামিন্দু মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, মাহিশ থিকশানা, মাথিশা পাথিরানা, চারিথ আসালঙ্কা, মোহাম্মদ ওয়াসিম, মোহাম্মদ হারিস ও আমের জামাল।
‘বি’ ক্যাটাগরিতে রয়েছেন সন্দীপ লামিচানে, আসিফ আলী, সালমান মির্জা, রিচার্ড এনগারাভা, স্কট এডওয়ার্ডস, হ্যারি টেক্টর, আলী খান, হাহসমতউল্লাহ শহিদি, ইসুরু উদানা, সাউদ শাকিল, রবি বোপারা, সামিত প্যাটেল, সাদিরা সামারাউইকরামা, নাহিবউল্লাহ জাদরানের মতো ক্রিকেটার।
ক্যাটাগরি ‘সি’-তে রয়েছেন হায়দার আলী, জাহানদাদ খান, শন উইলিয়ামস, সামিউল্লাহ শিনওয়ারি, জেমস ফুলার, লাহিরু মিলান্থা, খুররম শাহজাদ, দিলশান মুনাবীরা, প্রমোদ মাদুশান, আসেন বান্দারা, আব্দুল্লাহ শফিক, কেনার লুইস, রেইমন রেইফার, শামার স্প্রিঙ্গার, অ্যাঞ্জেলো পেরেরা, আমির হামজা হোটাক, রস হোয়াইটলি, জশ লিটল, ডেন পেটারসন, কাসুন রাজিথা, বিজয়কান্ত বিশ্বকান্ত, লাহিরু উদারা, ইনোসেন্ট কাইয়া, অ্যালিক অ্যাথানেজ, অ্যারন জোন্স, আকিলা ধনঞ্জয়া, শেলডন কটরেল, রায়ান বার্ল, কার্টিস ক্যামফার, পল স্টার্লিংয়ের মতো ক্রিকেটার।
‘ডি’ ক্যাটাগরিতে উসমান কাদির, ব্রায়ান বেনেট, কাশিফ আলী, দীপেন্দ্র সিং অইরি, সালিম সাফি, আহমেদ দানিয়ালরা রয়েছেন। আর ‘ই’ ক্যাটাগরিতে আছেন নিমেশ বিমুক্তি, জশুয়া বিশপ, আসাদ রাজা, আসিফ শেখ, গুলশান ঝা, সোমপাল কামি, রুম্মন রাইস, মির্জা সাদ বেগ, চন্দরপল হেমরাজ, জনাথন ক্যাম্পবেল, অ্যাডওয়ার্ড বার্নার্ডের মতো ক্রিকেটার।
বাছাইয়ে লাল কার্ডের ঘটনায় বিশ্বকাপের শুরুর দিকে নিষেধাজ্ঞার শঙ্কায় ছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সুখবরই পেয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে পর্তুগালের হয়ে খেলতে কোন বাধা থাকছে না পর্তুগিজ তারকার।
৪০ বছর বয়সি রোনালদো চলতি মাসের শুরুতে বাছাইপর্বে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে পর্তুগালের ২–০ গোলে পরাজয়ের ম্যাচে দারা ও’শিয়ার পিঠে কনুই মেরে সরাসরি লাল কার্ড দেখেছিলেন। উগ্র আচরণে সাধারণত তিন ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচের শাস্তি এক বছরের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, ২২৬ আন্তর্জাতিক ম্যাচে এটি ছিল রোনালদোর প্রথম লাল কার্ড। শাস্তি কমানোর ক্ষেত্রে এই বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
বাছাই পর্বে এরই মধ্যে ১৬ নভেম্বর আর্মেনিয়ার বিপক্ষে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়েছেন তিনি। ফলে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে কোন ম্যাচ মিস করতে হচ্ছে না পর্তুগিজ অধিনায়কের।
ফিফা এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে রোনালদো একই ধরনের গুরুতর অপরাধে জড়ালে স্থগিতাদেশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হবে এবং বাকি দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
বাছাইপর্বে পাঁচ গোল করেছেন রোনালদো। তার দলও গ্রুপ ‘এফ’-এর শীর্ষে থেকে টানা সপ্তমবারের মতো বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করেছে।
সদ্য সমাপ্ত আয়ারল্যান্ড সিরিজটি মুশফিকুর রহিমের জন্য বিশেষভাবে স্বরণীয় হয়ে থাকবে। মিরপুর টেস্ট দিয়ে ক্যারিয়ারে একশতম টেস্ট ম্যাচের মাইলফলক ছুঁয়েছেন তিনি। একই ম্যাচে ব্যাট হাতেও সেঞ্চুরি করেছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। তার এমন পারফরম্যান্সের প্রভাব পড়েছে র্যাংকিংয়েও।
বুধবার ক্রিকেটারদের র্যাঙ্কিংয়ের সাপ্তাহিক হালনাগাদ ঘোষণা করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। টেস্ট ব্যাটারদের র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে সবার ওপরে আছেন মুশফিক। তিনি ৭ ধাপ এগিয়ে বর্তমানে ৩০ নম্বরে অবস্থান করছেন।
মুশফিকের মতোই মিরপুর টেস্টে সেঞ্চুরি পেয়েছেন লিটন দাসও। তাতে উন্নতি হয়েছে এই উইকেটকিপার ব্যাটারেরও। তিনি ৮ ধাপ এগিয়ে ৩৭তম স্থানে উঠে এসেছেন। তার সমান ৮ ধাপ উন্নতি হয়েছে মুমিনুল হকের। তিনি ৪৬ নম্বরে অবস্থান করছেন। ২ ধাপ এগিয়ে মাহমুদুল হাসান জয় আছেন ৭২তম স্থানে।
বোলিংয়েও উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশিদের। বিশেষ করে মিরপুর টেস্টে দুর্দান্ত বোলিংয়ে একাধিক রেকর্ড গড়া তাইজুল ইসলাম এগিয়েছেন। টেস্ট বোলারদের তালিকায় ৪ ধাপ এগিয়ে পঞ্চদশ স্থানে আছেন তাইজুল। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে এখন সবার ওপরে তিনি।
অবশেষে বিপিএল নিয়ে বিস্তারিত জানাল গভার্নিং কাউন্সিল। আগামী ৩০ নভেম্বর বিকাল ৩ টায় অনুষ্ঠিত হবে বিপিএলের ১২তম আসরের নিলাম। ৬ দলের বিপিএল হবে এবার। ষষ্ঠ দল হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে নোয়াখালী এক্সপ্রেসকে।
বিপিএল নিলামে অংশ নিতে ৫০০ এর বেশি বিদেশি ক্রিকেটার আবেদন করেছিল। তবে এর মধ্যে থেকে ২৫০ জন ক্রিকেটারকে বাছাই করেছে বিসিবি। বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানিয়েছেন ইফতেখার রহমান মিঠু। আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্দা উঠবে এবারের বিপিএলের। আর ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ১৬ জানুয়ারি। বিপিএলের ম্যাচ মাঠে গড়ানোর আগে ১৭ ডিসেম্বর ঢাকায় বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। বিপিএলের এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে রংপুর রাইডার্স, ঢাকা ক্যাপিটালস, সিলেট টাইটান্স, চট্টগ্রাম রয়্যালস, রাজশাহী ওয়ারিয়র্স ও নোয়াখালী এক্সপ্রেস।
বসুন্ধরা গ্রুপের টগি স্পোর্টস মালিকানা পেয়েছে রংপুর রাইডার্সের। চট্টগ্রাম রয়্যালসের মালিকানা দেওয়া হয়েছে ট্রায়াঙ্গাল সার্ভিসকে। এ ছাড়া নাবিল গ্রুপ রাজশাহী, ক্রিকেট উইথ সামি সিলেট ও চ্যাম্পিয়ন স্পোর্টস (রিমার্ক-হারল্যান) ঢাকা ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং দেশ ট্রাভেলসের মালিকানায় নোয়াখালী এক্সপ্রেস নামে নতুন দল যুক্ত হয়েছে বিপিএলে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে রীতিমতো নাস্তানাবুদ হয়েছে ভারত। টেস্টে নিজেদের ইতিহাসে তারা প্রথমবার একাধিক তিক্ত স্বাদ পেয়েছে। কলকাতার পর গুয়াহাটিতেও টেম্বা বাভুমার দলের কাছে পাত্তা পায়নি পান্ত-রাহুল-বুমরাহরা। ইডেন গার্ডেনে মাত্র আড়াই দিনেই শেষ হয়েছিল ভারত-আফ্রিকার টেস্ট। গুয়াহাটিতে পঞ্চম দিনে খেলা গড়ালেও, নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪০৮ রানে হারল ভারত।
টেস্ট ক্রিকেটে রানের হিসাবে এর আগে ভারত সর্বোচ্চ ব্যবধানে হেরেছিল ২০০৪ সালে। নাগপুরে তারা অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩৪২ রানে হেরে যায়। জেসন গিলেস্পি এবং গ্লেন ম্যাকগ্রার বোলিংয়ের সামনে দুই ইনিংসেই (১৮৫ এবং ২০০) গুটিয়ে যায় রাহুল দ্রাবিড়, শচীন টেন্ডুলকাররা। এর দুই বছর পর করাচিতে পাকিস্তানের কাছে ৩৪১ রানে হারে ভারত। পাকিস্তান ২৪৫ রান তোলার পর প্রথম ইনিংসে ভারত তোলে ২৩৮ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তান তোলে রানপাহাড় (৫৯৯) গড়ার পর ভারত ২৬৫ রানে গুটিয়ে যায়।
সেই দুই হারকে ছাপিয়ে গেছে ঋষভ পান্তদের গতকার বুধবার হার। প্রোটিয়াদের দেওয়া ৫৪৯ রানের অসম্ভব লক্ষ্য ছিল ভারতের সামনে। একদিন এক সেশন হাতে রেখে জয় নয়, বরং ড্র করাই ছিল তাদের লক্ষ্য। অন্তত হোয়াইটওয়াশ এড়ানো যেত। শেষ দিন ৮ উইকেট ছিল তাদের হাতে। ২ উইকেটে ২৭ রানে স্বাগতিকরা খেলা শুরু করে। ভারত ১৪০ রানে অলআউট হলে ৪০৮ রানে গুয়াহাটি টেস্ট জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা।
এছাড়া ভারতকে তাদেরই মাটিতে টেস্টে দুবার হোয়াইটওয়াশ করার নজির নেই আর কোন দলের। ২০০০ সালের পর এবার ২০২৫–এর সায়াহ্নে এসে ভারতকে দ্বিতীয়বার ধবলধোলাইয়ের স্বাদ দিলো আফ্রিকানরা। গতবারের মতো এবারও প্রোটিয়ারা তাদের মাটিতে টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হারাল। এছাড়া গত বছর ভারতকে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল থেকে প্রায় ছিটকে দেয় নিউজিল্যান্ড। ঘরের মাঠে কেবল এই তিনবারই টেস্টে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে ভারত, এর মধ্যে দুবার প্রোটিয়াদের সঙ্গে।
একবিংশ শতাব্দিতে ঘরের মাঠে ভারত এখন পর্যন্ত চারটি টেস্ট সিরিজ হেরেছে। তবে অস্ট্রেলিয়া সঙ্গে ২০০৪ এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১২ সালে পরাজিত সিরিজে তাদের ধবলধোলাই হতে হয়নি। ভারত যখন শোচনীয় পরাজয়ে ধুঁকছে, তেমনি মুদ্রার অপর পিঠে দাঁড়িয়ে টেস্টের বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা। গুয়াহাটিতে তারা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানে জয়ের রেকর্ড গড়েছে। এর আগে ২০১৮ সালে জোহানেসবার্গে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল ৪৯২ রানে।
আফ্রিকান অধিনায়ক হিসেবে হ্যান্সি ক্রনিয়ের পর ভারতকে তাদের দুর্গে ধবলধোলাইয়ের নজির গড়লেন বাভুমা। এখন পর্যন্ত ১২টি টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাভুমা, এর মধ্যে ১১টিতেই জিতে তিনি ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন। প্রথম ১২ টেস্টে সর্বোচ্চ ম্যাচ জয়ের রেকর্ডটা এখন তার দখলে। এর আগে বেন স্টোকস ও লিন্ডসে হাসেট প্রথম ১২ টেস্টে ১০ ম্যাচ জয়ের কীর্তি গড়েছিলেন। বাভুমার অবশিষ্ট ম্যাচটি অবশ্য বৃষ্টিবিঘ্নিত হয়েছিল, ফলে সেটি ড্র হয়ে যায়।
এশিয়ায় দারুণ সময় কাটছে দক্ষিণ আফ্রিকার। গত বছর বাংলাদেশের মাটিতে ২-০ ব্যবধানে জয়, চলতি বছর পাকিস্তানের মাটিতে ১-১ সমতা ও ভারতের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জিতল বাভুমার দল। অথচ ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ সিরিজের আগপর্যন্ত ১৩ টেস্টের ১০টিতেই হেরেছিল প্রোটিয়ারা। তাদের সাফল্য ছিল বাকি তিন ম্যাচ ড্র।
এদিকে, ঘরের মাঠে সিরিজ খেললেও এবার দুই টেস্টে কোনো সেঞ্চুরির দেখা পায়নি ভারতীয় ব্যাটাররা। এমনটা সর্বশেষ হয়েছিল ১৯৯৫-৯৬ সালে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এর আগে সেই কিউইদের বিপক্ষে ১৯৬৯/৭০ সালে সেঞ্চুরিহীন টেস্ট সিরিজ খেলেছিল ভারত। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে এবার দুই টেস্টে স্বাগতিক ব্যাটারদের গড় ছিল ১৫.২৩, যা ভারতের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। এর আগে ২০০২/০৩ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে ভারতীয় ব্যাটারদের সবচেয়ে কম গড় (১২.৪২) ছিল।
পরপর দুই বছর ঘরের মাঠে ভারতের টেস্ট সিরিজ হারার ঘটনা এ নিয়ে মাত্র তৃতীয়বার ঘটল। এর মধ্যে ২০১২-২০২৪ পর্যন্ত টানা ১২ বছর ভারত ঘরের মাঠে কোন টেস্ট সিরিজ হারেনি। ২৫ বছর পর প্রথমবার দুই মৌসুম মিলিয়ে পাঁচটি টেস্টে হারল ভারত। গত বছর তারা নিউজিল্যান্ডের কাছে তিনটি টেস্টেই হেরেছিল। এ ছাড়া ৬৬ বছর পর সাত মাসের ব্যবধানে দেশের মাটিতে পঞ্চম টেস্ট হারল ভারত।
এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ এশিয়ান কাপ ফুটবলের বাছাইয়ে গতকার বুধবার শ্রীলঙ্কাকে ৫-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ১৮ গোল করল গোলাম রব্বানীর দল। কাল শুক্রবার নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে বাহরাইনের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। চীনের ইয়ংচুয়ান স্পোর্টস সেন্টারে বাংলাদেশের তৃতীয় জয় পাওয়ার এ ম্যাচে জোড়া গোল করেন নাজমুল হুদা। একটি করে গোল মোহাম্মদ মানিক, বায়েজিদ বোস্তামি ও ইকরামুল ইসলামের।
৩০ নভেম্বর গ্রুপ পর্বে শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক চীন। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে আগামী বছর মে মাসে সৌদি আরবে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ এশিয়ান কাপে খেলতে পারবে বাংলাদেশ। এবার বাছাইপর্ব দারুণ জয়ে শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে পূর্ব তিমুরকে ৫-০ গোলে হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে ব্রুনেইয়ের জালে ৮ গোল দেয়। ১৬ দল নিয়ে আয়োজিত হবে অনূর্ধ্ব–১৭ এশিয়া কাপ। এরই মধ্যে ৯ দল মূলপর্বে জায়গা করে নিয়েছে, বাকি ৭ দল বাছাইপর্ব থেকে যাবে। এশিয়ান কাপে এখন পর্যন্ত অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ে দুবার আর অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে চারবার অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। কোনবারই গ্রুপপর্ব পেরোতে পারেনি। সবশেষ ২০০৬ সালে বাছাই পেরোলেও মূল পর্বে তিন ম্যাচের তিনটিতেই হারে বাংলাদেশ। ২০২০ সালে বাছাইপর্ব অনুষ্ঠিত হলেও করোনার কারণে মূল টুর্নামেন্ট হয়নি। ২০১৪ সালে টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেয় বাংলাদেশ।
আইসিসি পুরুষদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৬-এর সম্ভাব্য সূচি প্রকাশিত হয়েছে। যা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৮ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতে পারে। ভারত ও শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে আসন্ন টুর্নামেন্টটির আয়োজক হিসেবে থাকছে। সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার মুম্বাইয়ে এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক সূচি ঘোষণা করা হবে।
প্রতিবারের আইসিসি টুর্নামেন্টগুলোর মতো এবারও ভারত-পাকিস্তান একই গ্রুপে থাকছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি কলম্বোতে একে-অপরের বিপক্ষে মাঠে নামবে এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। তাদের গ্রুপে আরও রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, নামিবিয়া ও নেদারল্যান্ডস।
মোট ২০টি দলকে চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে, প্রতি গ্রুপে পাঁচটি করে দল থাকছে। আগের ফরম্যাট অনুযায়ী প্রতিটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল সুপার এইটে জায়গা করে নেবে। সুপার ৮-টে কোয়ালিফাই করা আট দলকে আবার দুই গ্রুপে ভাগ করা হবে। সেখানে প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুই দল যাবে সেমি-ফাইনালের মঞ্চে।
ভারত ও শ্রীলঙ্কার যেসব ভেন্যুতে হবে ম্যাচ
ভারতের যেসব ভেন্যুতে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে: কলকাতা, চেন্নাই, দিল্লি ও আহমেদাবাদ
শ্রীলঙ্কার যেসব ভেন্যুতে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে: কলম্বো ও ক্যান্ডি
ফাইনাল ম্যাচের জন্য নির্ধারিত করা আছে আহমেদাবাদের স্টেডিয়াম। তবে পাকিস্তান ফাইনালে উঠলে ম্যাচটি কলম্বোতে সরিয়ে নেওয়া হবে।
সেমিফাইনাল ম্যাচগুলো আয়োজন করবে মুম্বাই ও কলকাতা। তবে পাকিস্তান সেমিতে উঠলে সেই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে কলম্বোতে।
বিভিন্ন গ্রুপে আছে যারা
> ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, নামিবিয়া ও নেদারল্যান্ডস
> শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড ও ওমান
> বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নেপাল ও ইতালি
> দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও কানাডা
তিনবার পিছিয়ে অবশেষে বিপিএলের ১২তম আসরের জন্য নিলাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ৩০ নভেম্বর। তবে তার আগে শেষ মুহূর্তে নতুন একটি দল অংশ নিতে যাচ্ছে। নতুন দলের নাম নোয়াখালী এক্সপ্রেস। দেশ ট্রাভেলসের মালিকানায় আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে তারা। যার ফলে এবারের বিপিএলে অংশগ্রহণ করছে ৬টি দল। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল জানিয়েছে, আগামী ২৭ নভেম্বরের মধ্যে ছয়টি দলকেই ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে হবে।
এবারের বিপিএলে আরও থাকছে রংপুর রাইডার্স, ঢাকা ক্যাপিটালস, সিলেট টাইটান্স, রাজশাহী ওয়ারিয়র্স ও চিটাগং রয়েলস। এবার নতুন খেলোয়াড় বাছাইয়ে ‘প্লেয়ার্স ড্রাফট’ অনুষ্ঠিত হবে না, পরিবর্তে হবে ‘অকশন’। আগামী ১৯ ডিসেম্বর সিলেট পর্ব দিয়ে টুর্নামেন্টটি শুরুর কথা রয়েছে। ফাইনাল ম্যাচ হবে ২৩ জানুয়ারি।
২০২৬ ছেলেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও একই গ্রুপ দেখা যাবে ভারত ও পাকিস্তানকে। ক্রিকেটবিষয়ক পোর্টাল ইএসপিএনক্রিকইনফো খবর দিয়েছে, কলম্বোতে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি ভারত ও পাকিস্তান মুখোমুখি হবে।
গত এশিয়া কাপে দুই দলের খেলোয়াড়দের হাত না মেলানো ও পিসিবি প্রধান মহসিন নাকভির কাছ থেকে ট্রফি না নেওয়াকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া বিতর্কের পর এটিই হবে প্রথম ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ।
ইএসপিএনক্রিকইনফো তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে একই গ্রুপে থাকছে যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস ও নামিবিয়া। প্রতিবেদনে তারা আরও জানিয়েছে, ৭ ফেব্রুয়ারি মুম্বাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলবে ভারত।
এরপর ১২ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে নামিবিয়া, ১৫ ফেব্রুয়ারি কলম্বোতে পাকিস্তান এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি আহমেদাবাদে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলবে দলটি। গ্রুপ পর্বে প্রতিদিন তিনটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
টুর্নামেন্টটি আয়োজন করবে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত চলবে আসরটি। পাকিস্তান তাদের সব ম্যাচ খেলবে কলম্বো কিংবা ক্যান্ডিতে।
আগের বিশ্বকাপের মতো এবারও ২০ দল ৪টি গ্রুপে ভাগ হবে। প্রতিটি গ্রুপ থেকে সেরা দুই দল যাবে সুপার ৮-টে। সেখান থেকে দুই গ্রুপের সেরা চার দল খেলবে সেমিফাইনালে, এরপর ফাইনাল।
ভারত যদি সুপার ৮-টে ওঠে, তাদের ম্যাচগুলো হবে আহমেদাবাদ, চেন্নাই ও কলকাতায়। সেমিফাইনাল রাখা হয়েছে মুম্বাইয়ে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ফাইনালের ভেন্যু আহমেদাবাদ, তবে পাকিস্তান ফাইনালে উঠলে ভেন্যু সরিয়ে নেওয়া হতে পারে কলম্বোয়।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যে ২০টি দল অংশ নিচ্ছে: ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, কানাডা, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, নেপাল, ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।