ফুটবল ও ক্রিকেট সরাসরি নিয়ন্ত্রিত স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে। এখানে সরকারি হস্তক্ষেপে নিষেধাজ্ঞা আসে ফিফা এবং আইসিসি থেকে। এই দুই ফেডারেশন বাদে বাকি সব ফেডারেশনের সভাপতি সরকার থেকে মনোনয়ন পায়। তাই এগুলোতে সরকারি হস্তক্ষেপে কোনো বাধা নেই।
আগেই অপসারণ করা হয়েছিল বাংলাদেশ দাবা ও কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতিকে। দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল ব্রিজ ফেডারেশনের সভাপতিকে। আজ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে দেশের আরও ৪২টি ক্রীড়া ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিদের অপসারণ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব এস এম হুমায়ূন কবীরের সই করা এই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন ২০১৮ এর ২২ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার দেশের বিদ্যমান ফেডারেশন/ অ্যাসোসিয়েশন/বোর্ড/সংস্থার কার্যক্রম অধিকতর সক্রিয় ও সংস্কারের উদ্দেশে সভাপতিদের অপসারণ করা হয়েছে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত ফেডারেশন/অ্যাসোসিয়েশনগুলো হলো- ব্যাডমিন্টন, শুটিং, হ্যান্ডবল, জুডো, কারাতে, তায়কোয়ানদো, টেবিল টেনিস, জিমন্যাস্টিকস, বাস্কেটবল, আর্চারি, মহিলা ক্রীড়া সংস্থা, বক্সিং, বধির ক্রীড়া, বাশাআপ, রাগবি, ফেন্সিং, বেসবল, প্যারা অলিম্পিক কমিটি, সার্ফিং, মাউন্টেনারিং, চুকবল, নেপাক টাকরো, জুজুৎসু, প্যারা আর্চারি, ভারোত্তোলন, উশু, ক্যারম, সাইক্লিং, টেরিস, রেসলিং, রোলার স্কেটিং, কান্ট্রি গেমস, থ্রোবল, ভলিবল, স্কোয়াশ, রোইং, আন্তর্জাতিক তায়কোয়ানদো অ্যাসোসিয়েশন, ঘুড়ি অ্যাসোসিয়েশন, অ্যাথলেটিকস, খিউকুশিন কারাতে, খো খো, মার্শাল আর্ট।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১১তম আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফট শেষ হয়েছে আজ। নবীন-প্রবীনের মেলবন্ধনসহ এবারও বিদেশি প্লেয়ারদের ব্যাটের ঝলকানি দেখা যাবে দেশের সবচেয়ে বড় এ টুর্নামেন্টে।
আগামী ২৭ ডিসেম্বর শুরু হতে যাচ্ছে বিপিএলের এবারের আসর। আসরে নবাগত দল দুর্বার রাজশাহীসহ মাঠে নামবে আরও সাতটি দল। যে যে দলে যারা রয়েছেন:
ঢাকা ক্যাপিটালস
মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিদ হাসান, লিটন দাস, হাবিবুর রহমান, মুকিদুল ইসলাম, আবু জায়েদ, মুশফিক হাসান, সাব্বির রহমান, মুনিম শাহরিয়ার, আসিফ হাসান, শাহাদাত হোসেন, থিসারা পেরেরা, জনসন চার্লস, শাহনেওয়াজ দাহানি, মীর হামজা, স্টিফেন এসকিনেজি, সাইম আইয়ুব ও আমির হামজা।
চিটাগং কিংস
সাকিব আল হাসান, শরীফুল ইসলাম, শামীম হোসেন, পারভেজ হোসেন, খালেদ আহমেদ, আলিস আল ইসলাম, মোহাম্মদ মিঠুন, নাঈম ইসলাম, মারুফ মৃধা, রাহাতুল ফেরদৌস, শেখ পারভেজ, মার্শাল আইয়ুব, মঈন আলী, উসমান খান, হায়দার আলী, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, বিনুরা ফার্নান্দো, গ্রাহাম ক্লার্ক ও থমাস ও’কনেল।
দুর্বার রাজশাহী
এনামুল হক, তাসকিন আহমেদ, জিশান আলম, ইয়াসির আলী, সাব্বির হোসেন, সানজামুল ইসলাম, এসএম মেহরব হোসেন, আকবর আলী, হাসান মুরাদ, শফিউল ইসলাম, মোহর শেখ, সাদ নাসিম ও লাহিরু সামারাকুন।
ফরচুন বরিশাল
তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ, তানভীর ইসলাম, নাজমুল হোসেন, রিপন মন্ডল, ইবাদত হোসেন, নাঈম হাসান, রিশাদ হোসেন, তাইজুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম, ডেভিড ম্যালান, কাইল মায়ার্স, মোহাম্মদ নবী, ফাহিম আশরাফ, আলী মোহাম্মদ, খান জাহানদাদ, জেমস ফুলার, পাথুম নিশাঙ্কা ও নান্দ্রে বার্গার।
খুলনা টাইগার্স
মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন, নাসুম আহমেদ, হাসান মাহমুদ, মোহাম্মদ নাঈম, ইমরুল কায়েস, মাহিদুল ইসলাম, আবু হায়দার, জিয়াউর রহমান, মাহফুজুর রহমান, মাহমুদুল হাসান, ওশানে থমাস, মোহাম্মদ হাসনাইন, লুইস গ্রেগরি ও মোহাম্মদ নেওয়াজ।
রংপুর রাইডার্স
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, নাহিদ রানা, সৌম্য সরকার, নুরুল হাসান, মেহেদী হাসান, সাইফ হাসান, রাকিবুল হাসান, রেজাউর রহমান, ইরফান শুক্কুর, কামরুল ইসলাম, তৌফিক খান, অ্যালেক্স হেলস, খুশদিল শাহ, আল্লাহ গজনফর, স্টিভেন রায়ান টেলর, সৌরভ নেত্রবালকার, আকিফ জাভেদ ও কার্টিস ক্যাম্ফার।
সিলেট স্ট্রাইকার্স
মাশরাফি বিন মুর্তজা, জাকির হাসান, জাকের আলী, তানজিম হাসান, রনি তালুকদার, আল আমিন হোসেন, আরাফাত সানি, রুয়েল মিয়া, আরিফুল হক, নিহাদুজ্জামান, নাহিদুল ইসলাম, পল স্টার্লিং, জর্জ মানসি, রাহকিম কর্নওয়াল, সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ও রিস টপলি।
নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে মাঠে গড়াতে যাচ্ছে বিপিএলের ১১তম আসর। এর আগে ১০টি আসর অনুষ্ঠিত হলেও দেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের মান নিয়ে এখনো প্রশ্ন রয়েছে। প্রতি আসরেই বিপিএল নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অবস্থাদৃষ্ট এমন যে, বিপিএল মানে যেন ‘বিতর্ক প্রিমিয়ার লিগ’। ক্রিকেটারদের বেতন নিয়ে সমস্যা যেন প্রতি আসরের একটি স্বাভাবিক চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে দেশের পট-পরিবর্তনের ফলে পরিবর্তন এসেছে বিসিবিতেও। নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ এবার ঝেড়ে ফেলতে চান পুরনো সব বিতর্ক। উপহার দিতে চান উপভোগ্য একটি বিতর্কহীন বিপিএল। সেজন্য ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সহযোগিতা নিয়ে কাজ করছে বিসিবি। এবারের বিপিএলে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে টুর্নামেন্টের সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোয় এবং সেটি করা হচ্ছে খোদ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পরিকল্পনা অনুযায়ী।
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ ও বিপিএল সামনে রেখে গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। সভাপতি ফারুক আহমেদসহ বোর্ডের আরও কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে সভা করেছেন, যেখানে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন। সভায় নতুন বিপিএলের একটা প্রেজেন্টেশনও বিসিবির বিপিএল বিভাগ থেকে ক্রীড়া উপদেষ্টাকে দেখানো হয়েছে।
সভা শেষে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলনে ক্রীড়া উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরিবর্তিত সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিপিএলকে কীভাবে মানুষের সঙ্গে আরও সম্পৃক্ত করা যায়, সেটাই আমরা চেষ্টা করছি।’
বিপিএলের প্রতি দর্শকদের আগ্রহ আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিপিএলকে একটা টুর্নামেন্ট হিসেবে ভালোভাবে উপস্থাপন করতে চাই। বিসিবি অবশ্যই বড় ভূমিকাটা রাখবে। তবে আমার মনে হয়েছে, আমাদের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু অলিম্পিকের মতো ইভেন্টের ডিজাইনে সাহায্য করতেন, তিনি সর্বশেষ অলিম্পিকেও বড় একটা ভূমিকা রেখেছেন, বিপিএলের মতো টুর্নামেন্টে আমরা যদি তার সেই অভিজ্ঞতা ব্যবহার না করি, সেটা দুর্ভাগ্যজনক হবে।’
এই চিন্তা থেকেই ক্রীড়া উপদেষ্টা সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দেন বিসিবির কর্মকর্তাদের। যেখানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস বিপিএলে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর এবং নতুনত্ব আনার তাৎক্ষণিক কিছু ধারণা দেন। সেসব নিয়েই একটা প্রাথমিক প্রেজেন্টেশন দাঁড় করায় বিসিবির বিপিএল বিভাগ। দুই-তিন দিনের মধ্যে এটা নিয়ে আবারও প্রধান উপদেষ্টার সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে বিসিবি ঠিক করবে চূড়ান্ত পরিকল্পনা।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘বিপিএলকে কীভাবে আন্তর্জাতিকভাবে আরও স্বীকৃত করা যায় এবং কী কী নতুনত্ব যুক্ত করা যায়, তা থেকে বিসিবি আজ একটা প্রেজেন্টেশন দিয়েছে। দিন দুয়েকের মধ্যে আমরা আবারও বসব। আমরা চাই এবারের বিপিএলটাকে নতুন করে সাজাতে এবং এবারের বিপিএল যেন আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে নতুন উদ্দীপনা নিয়ে আসে।’
সাকিবের দেশে ফেরা বা খেলার ব্যাপারে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। রোববার বিসিবিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। ভারতের মাটিতে টেস্ট চলাকালে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশের অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। জানিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলে অবসরে যেতে চান তিনি; কিন্তু হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় তার দেশের মাটিতে অবসর নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা।
সম্প্রতি সাকিবের বিরুদ্ধে মিরপুর স্টেডিয়ামের দেয়ালে বেশ কিছু লেখা দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে পোস্ট দিচ্ছেন। তাদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন ক্রিকেটার তিনি খেলবেন এবং তিনি বাংলাদেশের নাগরিক, তার আসার ক্ষেত্রে তো কোনো বাধা আমি দেখি না। তবে দেয়ালে লিখনের যে কথা বলছেন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় যা দেখছি, এটা তো আসলে আবেগের ব্যাপার। তাদেরও ওই অধিকার আছে। গণতান্ত্রিক দেশ, সাংবিধানিক অধিকার আছে যেকোনো ধরনের মুভমেন্ট বা যেকোনো কিছু করার। তবে এ ক্ষেত্রে আমার আহ্বান থাকবে কারো নিরাপত্তা যেন হুমকির মুখে না ফেলি।’
‘যদি আইনগত কোনো বিষয় থাকে, আইন তো আইনের গতিতে চলে। এ বিষয়ে তো আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না। তবে নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত’- বললেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘দেশে আসা কিংবা বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা তো থাকার কথা না। আমি যতটুকু জানি। আর আইনের বিষয়টা আইন মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যা করতে পারবে। আমি বিশেষজ্ঞও না কিংবা আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও না।’ এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে আসিফ মাহমুদ বলেছেন, ‘আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদেরও কথা হয়েছে। আসিফ নজরুল (আইন উপদেষ্টা) স্যার ইতোমধ্যে বলেছেন, সংশ্লিষ্টতা না পেলে প্রাথমিক তদন্তে যে মামলা হয়েছে, ওখান থেকে নাম বাদ পড়ে যাবে।’ আগামী সপ্তাহে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসবে দক্ষিণ আফ্রিকা। মিরপুরে ২১ অক্টোবর শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। সাকিবের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার নিরাপত্তা নিয়েও কথা বলেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু দক্ষিণ আফ্রিকা আসবে, আমাদের পরিবেশটাও ভালো রাখতে হবে। না হলে বাইরের দেশগুলো বাংলাদেশে আসতে নিরাপত্তার অভাবটা অনুভব করবে।’
সাকিবের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, ‘প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। ক্রিকেট দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেটা আমরা নিশ্চিত করব।’ সাকিবকে নিয়ে অনেকের মনে জমে থাকা ক্ষোভ প্রসঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমি মনে করি যে ইমোশনের জায়গাটা অবশ্যই আছে। যেহেতু বড় একটা আন্দোলন হয়েছে এবং সাকিবের আগের ফ্যাসিবাদী সরকারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। যেটা উনি ক্লিয়ারেন্স দিয়েছেন উনার (ফেসবুক) পোস্টে। তারপরও কিছু ইমোশন রয়ে গেছে। যৌক্তিক কিংবা অযৌক্তিক ওই প্রশ্নে যাব না। সেটা অন্য বিতর্ক।’
আসিফ মাহমুদ যোগ করে বলেন, ‘বাংলাদেশে এত বড় একটা অভ্যুত্থান হয়েছে। এরপর আসলে যেটা হয়, বিভিন্ন দেশে যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেক্ষেত্রে মানুষ আইনের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল জায়গাটা ধরে রেখেছে। আমরা ওই ধরনের পরিস্থিতির দিকে আসলে এত বেশি যাই নাই। সবাই প্রত্যাশাও করছিল খুব বাজে অবস্থা হবে।’
ঘরের মাঠে টানা ১১ টেস্টে জয় নেই। দিনের হিসাবে ১৩৩১ দিন। সর্বশেষ পাকিস্তান হেরেছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। সেটাও প্রথম ইনিংসে ৫৫৬ রান করে। টেস্টের ১৪৭ বছরের ইতিহাসে পাকিস্তান প্রথম দল হিসেবে প্রথম ইনিংসে ৫০০-এর বেশি রান তুলেও ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে। এমন হার দেখে পাকিস্তানের একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে নিজের হতাশা ঝেড়েছেন পাকিস্তানের সাবেক পেসার শোয়েব আখতার। দলের কঠোর সমালোচনা করে এই পেসার বলেছেন, এখন শুধু পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য দোয়াই করা যেতে পারে।
পিটিভি স্পোর্টসে শোয়েব বলেছেন, ‘যা করেছেন তার ফল পাবেন। দশকজুড়েই আমি অধঃপতন দেখছি। পরিস্থিতি হতাশার। হারতেই পারে, কিন্তু খেলাটা অন্তত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। তবে গত দুই দিনে যা দেখেছি, তারা পুরোপুরিই আশা ছেড়ে দিয়েছে। এটাই দেখিয়ে দেয় আমাদের যথেষ্ট সামর্থ্য নেই। ইংল্যান্ড আমাদের সঙ্গে ৮০০–এর বেশি করে, বাংলাদেশও হারায়।’ ম্যানেজমেন্ট ও অধিনায়ক দুর্বল হলে দলে অন্তর্দ্বন্দ্ব তৈরি হবেই। অধিনায়ক স্বার্থপর হলে, গ্রুপিং হবে। এমনটাই হবে, যদি কোচরা অধিনায়ককে ভয় পায়।
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান চক্রে পাকিস্তান আছে তলানিতে। ৮ ম্যাচে তাদের জয় মাত্র ২টি। এ নিয়ে শোয়েব ক্ষোভ ঝেড়েছেন, ‘সমর্থকেরা বলছে টেস্ট থেকে পাকিস্তানের নাম প্রত্যাহার করা উচিত। আমাদের খেলা উচিত নয়। পাকিস্তানকে নতুন করে দল গঠনের জন্য দুই বছর সময় দেওয়া হোক। এমন অনেক মন্তব্য আমার কাছে এসেছে। অনেক দল ভাবছে, এমনকি আইসিসি ভাবছে, পাকিস্তানে কি দল পাঠিয়ে তাদের টেস্ট স্ট্যাটাস বাঁচিয়ে রাখা উচিত কি না। এই হার আসলে হৃদয় ভেঙে দিয়েছে। এটা পাকিস্তান ক্রিকেট, সমর্থক ও আসন্ন প্রতিভার জন্য অনেক কষ্টের। পিসিবিকে অনুরোধ করছি বিশৃঙ্খলা ঠিক করতে।’
পাকিস্তানের বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক শান মাসুদ। টানা ৬ টেস্টে তার অধীনে হারার পর প্রশ্ন উঠেছে তাকে নিয়ে। ব্যাটসম্যান হিসেবেও তার রেকর্ড আহামরি কিছু নয়। ৩৬ টেস্টের ক্যারিয়ারে ৫টি সেঞ্চুরি ও ১০টি ফিফটি। ব্যাটিং গড় ৩০-এর একটু বেশি।
শোয়েব কথা বলেছেন পাকিস্তান দলের অধিনায়কত্ব নিয়েও, ‘আপনার ম্যানেজমেন্ট ও অধিনায়ক দুর্বল হলে দলে অন্তর্দ্বন্দ্ব তৈরি হবেই। অধিনায়ক স্বার্থপর হলে, গ্রুপিং হবে। এমনটাই হবে, যদি কোচরা অধিনায়ককে ভয় পায়। আসলে আমাদের জন্য এই হার মেনে নেওয়াটা কঠিন। পাকিস্তান দ্বিতীয় টেস্টে ও তৃতীয় টেস্টে জিতবে, এমন কোনো আশা আমার নেই। তবে উন্নতি করুক, এটুকু আশা আমি করতে পারি। পাকিস্তান ক্রিকেটে গত ৫-১০ বছরে কী অবস্থা, সেটা আপনার জানা। কোথায় আমরা আছি, কেন এখানে আছি। এখন শুধু দোয়াই করা যেতে পারে।’
২০২০ সালের শুরু থেকে পৃথিবী বড় ধরনের পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে গেছে। দশকটা শুরুই হয়েছিল দুনিয়াকাঁপানো এক মহামারি দিয়ে। করোনাভাইরাসের সেই প্রভাব এখনো পৃথিবী থেকে পুরোপুরি মুছে যায়নি।
এ ছাড়া চলতি দশকে এরই মধ্যে আমরা যুদ্ধ, ক্ষমতা পরিবর্তন, বিপ্লবসহ অনেক ঘটনার সাক্ষী হয়েছি। ঠিক একইভাবে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে ফুটবলজগতও। এই সময়ে প্রায় তিন দশক পর লিগ শিরোপা জিতেছে লিভারপুল ও নাপোলি।
দেখতে হয়েছে ডিয়েগো ম্যারাডোনা ও পেলের মতো কিংবদন্তিদের বিদায়ও। আবার এই সময়ে ঐতিহাসিক অর্জনের সাক্ষী হয়েছে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। এই দশকেই ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে তারা। এমনকি দুবার কোপা আমেরিকা শিরোপাও জিতেছে তারা, সঙ্গে আছে একটি ফিনালিসিমার ট্রফিও।
এ ছাড়া জয়ের পরিসংখ্যানও বলছে, এই দশকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে আধিপত্য বিস্তার করা দলটির নাম আর্জেন্টিনা। ট্রান্সফারমার্কেটের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত করা হিসাব অনুযায়ী, এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ৪৮ ম্যাচ জিতেছেন মেসিরা।
এ তালিকায় দ্বিতীয় নামটি অবশ্য একটু অবাক করার মতোই। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ জেতা দলটি মরক্কো। কাতার বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলা দলটি জিতেছে ৪৫ ম্যাচ। আর তিনে থাকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল জিতেছে ৪১ ম্যাচ, যদিও এ সময়ে কোনো শিরোপা জেতা হয়নি দেশটির। তবে অবাক করার মতো ব্যাপার হচ্ছে, এই তালিকার সেরা দশে জায়গা হয়নি ব্রাজিল, ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম ও ক্রোয়েশিয়ার মতো দেশগুলোর।
এর মধ্যে ব্রাজিলের পতনটা রীতিমতো বিস্ময়কর। বিপর্যয়ের মধ্যে থাকা ব্রাজিল ম্যাচ জয়ের তালিকায় আছে ২১ নম্বরে। ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ৫২ ম্যাচ খেলে তারা জিতেছে ৩৩ ম্যাচে। আরেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানির অবস্থা অবশ্য আরও খারাপ। ৫৮ ম্যাচে তাদের জয় ২৮টিতে, অবস্থান ৩২ নম্বরে।
ভারত সফরজুড়ে বাংলাদেশ দলের বাজে পারফরম্যান্সের কারণ হিসেবে নানা ধরনের যুক্তি দিয়েছেন ক্রিকেটাররা। কখনো ভারতীয় ক্রিকেটের শানশওকতের কথা, কখনো আইপিএল-বিপিএলের পার্থক্য। গতকাল হায়দরাবাদে বাংলাদেশ দলের ফিল্ডিং কোচ নিক পোথাস শোনালেন দুই দলের শারীরিক শক্তির ব্যবধানের কথা।
২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে হারের পর ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ২টি হেরেছে বাংলাদেশ। ভারত ঘরের মাঠে টানা ১৬তম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিয়েছে ১ ম্যাচ হাতে রেখেই। আজ রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে হবে সিরিজের শেষ ম্যাচ। তার আগে সিরিজ জুড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতার বিষয়টি বারবার এসেছে গতকাল পোথাসের সংবাদ সম্মেলনে।
উত্তর দিতে গিয়ে ভারত থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথাটা অনেকবার বলেছেন পোথাস। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট যেহেতু, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ছক্কা মারার সামর্থ্যের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে পোথাস দুই দলের খেলোয়াড়দের ওজনের পার্থক্য তুলে ধরেন, ‘কঠিন কথা বললেন। একজন যদি ৯৫-১০০ কেজি ওজনের হয় আর আরেকজন যদি হয় ৬৫ কেজি, তাহলে একজন তো বেশি দূরে বল পাঠাবেই। অবশ্যই এখানে টাইমিং আছে, টেকনিক আছে, সব আছে। আমরা প্রতিনিয়ত কাজও করে যাচ্ছি।’
এরপর ঘুরেফিরে আইপিএলের যুক্তিতে গেলেন পোথাস, ‘আইপিএলের দিকেও তাকাতে হবে। আইপিএল দুনিয়ার সেরা টুর্নামেন্ট। প্লেয়ারদের কোয়ালিটি মিলিয়ে দারুণ টুর্নামেন্ট। আইপিএল খেলোয়াড়দের তৈরি করে দেয় আন্তর্জাতিক মঞ্চের জন্য। ফলে এখানে আপনি পুরো ভিন্ন দুটি জিনিসের তুলনা করছেন যে ভারতের কটি ছক্কা এবং আমাদের কটি ছক্কা। এটা অনেকটা এমন হয়ে গেল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ কটি ছক্কা মেরেছে আর আমরা কটি। তারা অনেক শক্তিশালী ক্রিকেটার। আমরা স্ট্রেংথ এবং কন্ডিশনিংয়ের দিকে উন্নতি করছি। কিন্তু জেনেটিকস নিয়ে তো আর লড়াই করতে পারবেন না।’
তাই বলে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দেড় শও করতে পারবে না বাংলাদেশ? এ প্রশ্নের উত্তরে পোথাস ভারতের শক্তিমত্তার কথা তুলে ধরেন, ‘আমরা দারুণ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তাদেরই মাঠে খেলছি। আপনি সঠিক বলেছেন। দুই দলের পার্থক্য দেখলে বোঝা যাবে সব। টপ অর্ডারে দেখুন ইমন (পারভেজ হোসেন) ২ ম্যাচ খেলেছে। হ্যাঁ, দলে অভিজ্ঞরাও আছে।’
পরে অবশ্য নিজেদের ব্যর্থতা মেনে নিয়েছেন ফিল্ডিং কোচ, ‘আমরা প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যাটিং করতে পারিনি। অবশ্যই ১৭০-১৮০ রান করতে পারতাম। তারা ২২০ করুক বা যাই করুক, সেটা বোলিংয়ের ব্যাপার। সেটা আমি মেনে নিচ্ছি। আমাদের আরও বেশি রান করা দরকার ছিল। দারুণ উইকেট ছিল। ভারতও অনেক ভালো বল করেছে। আমরাও ম্যাচের অনেক সময়ে অনেক সুযোগ নিতে পারিনি।’
কোনো রাখঢাক রাখলেন না ইমরুল কায়েস। বিপিএলে প্লেয়ার্স ড্রাফটে ‘সি’ শ্রেণিতে থাকা নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন বাংলাদেশের ওপেনার। আগামী বিপিএলের জন্য ৬টি শ্রেণিতে ১৮৮ জন স্থানীয় খেলোয়াড়ের নাম চূড়ান্ত করেছে বিসিবি। সেখানে ক্রিকেট থেকে দূরে থাকা মাশরাফি বিন মর্তুজাকে ‘বি’ শ্রেণিতে রাখলেও ‘সি’ শ্রেণিতে জায়গা পান ইমরুল। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে মাশরাফি বিন মর্তুজার দিকেও ইঙ্গিত করেছেন এই ক্রিকেটার।
আগামী বিপিএলে ‘এ’ শ্রেণিতে থাকা ক্রিকেটারদের মূল্য ৬০ লাখ টাকা করে। স্থানীয় খেলোয়াড়দের ড্রাফটের তালিকায় ‘এ’ শ্রেণির ১২ ক্রিকেটার লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহ, শরীফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, মুশফিকুর রহিম, মোস্তাফিজুর রহমান, নাজমুল হোসেন, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, তাসকিন আহমেদ ও তাওহিদ হৃদয়।
‘বি’ শ্রেণিতে থাকা ক্রিকেটারদের মূল্য ৪০ লাখ টাকা করে। এই তালিকায় আছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, আফিফ হোসেন, এনামুল হক, হাসান মাহমুদ, জাকের আলী, শামীম হোসেন, নুরুল হাসান, পারভেজ হোসেন, মেহেদী হাসান, তানভীর ইসলাম, তানজিদ হাসান ও তানজিম হাসান। ‘সি’ শ্রেণিতে থাকা ক্রিকেটারদের মূল্য ২৫ লাখ টাকা করে। এই তালিকায় মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মুমিনুল হকদের সঙ্গে আছেন ইমরুল, যা নিয়ে তিনি ক্ষোভ ঝেড়েছেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে।
তিনি লেখার শুরুটা করেছেন এভাবে ‘আসসালামু আলাইকুম। বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফটের আগে ক্রিকেটারদের গ্রেডিং দেখে চিন্তা করছি, গ্রেডিংটা আসলে কিসের ভিত্তিতে করা হয়। জাতীয় দল, সারা বছরের ঘরোয়া পারফরম্যান্স, বিপিএলের পারফরম্যান্স নাকি শুধু নাম দেখে করা হয়। বছরজুড়ে ক্রিকেটের আশপাশে না থাকা ক্রিকেটারের জায়গা হলো ‘বি’ গ্রেডে।
অথচ গত বিপিএলে দুর্দান্ত পারফর্ম করা ক্রিকেটাররা ‘সি’ গ্রেডে। তবে কি শুধু নাম কিংবা চেহারা দেখেই বিপিএলের ড্রাফটের গ্রেড নির্ধারণ করা হয়?’ ‘বি’ গ্রেডে থাকা খেলোয়াড়দের মধ্যে একমাত্র মাশরাফিই এখন ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত নন, আসলে বিপিএল ছাড়া কিছু খেলছেনই না।
বিপিএলে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ইমরুল বলেছেন, ‘বিপিএলের ২০১৮-১৯ মৌসুমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে আমি ভালো করতে পারিনি। যে কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজের পর আমাকে জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া হয়। পরে বিসিবির একজন কর্মকর্তার সঙ্গে যখন কথা হলো, তখন বাদ দেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানালেন, বিপিএলে আমার পারফরম্যান্স তুলনামূলক ভালো ছিল না। যেহেতু প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারিনি, তাই আমি কোন সংকোচ ছাড়াই এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিলাম।’
ইমরুল এরপর যোগ করেন, ‘তবে জাতীয় দলে ফিরতে আমি কঠোর পরিশ্রম করতে থাকি। ২০১৯-২০ মৌসুমে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে ১৩ ম্যাচে ৪৪২ রানও করেছিলাম। কিন্তু এমন পারফরম্যান্সের পরও আমাকে জাতীয় দলে ডাকা হয়নি। এমনকি জাতীয় দলের কোনো ক্যাম্পেও রাখা হয়নি। তবে কি বিপিএলে পারফর্ম না করলেই বাদ? কিন্তু পারফর্ম করলে, সেটাও তো বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না। আমাদের ক্রিকেটের দুর্দিন কি তবে শেষ হবে না?’
গত মৌসুমে কুমিল্লার হয়ে ৫ ম্যাচে ১৫২ রান করেছিলেন ইমরুল। সব মিলিয়ে বিপিএলে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ইমরুল। ১১১ ম্যাচে রান করেছেন ২৩৪০ রান, স্ট্রাইক রেট ১১৭.২৯, গড় ২৩.৮৭। তবে এসবের বাইরে অন্য একটি পরিচয় আছে তার। অধিনায়ক হিসেবে কুমিল্লাকে ৩টি শিরোপা জিতিয়েছেন এ ওপেনার।
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আগামী ১৬ অক্টোবর বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের। তার আগে তারা নতুন দুঃসংবাদ পেয়েছে।
প্রথম টেস্টে নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে ছাড়াই খেলতে হবে প্রোটিয়াদের। কনুইয়ের ইনজুরির কারণে তিনি প্রথম ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছেন। ফলে মিরপুরে ২১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া টেস্টে সফরকারীদের নেতৃত্ব দেবেন এইডেন মার্করাম। এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা (সিএসএ)।
এর আগে পিঠের চোটের কারণে পেসার নান্দ্রে বার্গার পুরো সিরিজ থেকে ছিটকে যান। পরবর্তীতে প্রোটিয়া স্কোয়াডে যুক্ত করা হয় ডিওয়াল্ড ব্রেভিস ও লুঙ্গি এনগিডিকে। এদিকে, সিএসএ’র আশা বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে খেলতে পারবেন বাভুমা, সে লক্ষ্যে তিনি দলের সঙ্গেই এই সফরে আসবেন। মূলত প্রোটিয়া মেডিকেল টিমের সঙ্গে চোট সারার কাজে মনোনিবেশ করবেন অধিনায়ক বাভুমা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টেস্টে শুরু হবে ২৯ অক্টোবর থেকে। ৩৫ বছর বয়সী বাভুমা আয়ারল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ব্যাট করার সময় কনুইয়ে আঘাত পান। যে কারণে তিনি সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতেও খেলতে পারেননি। চোটে পড়া ম্যাচটিতেও রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরতে হয় ড্রেসিংরুমে। পরবর্তীতে আর ফিল্ডিং করা হয়নি বাভুমার।
আয়ারল্যান্ড সিরিজের বাকি সময়টা দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক হিসেবে ছিলেন রাসি ভ্যান ডার ডুসেন। সিরিজটিতে বিশ্রামে ছিলেন আরেক তারকা এইডেন মার্করাম। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে তিনি ফের মাঠে ফিরছেন। বাভুমার অনুপস্থিতি পূরণে দলে ডাকা হয়েছে ব্রেভিসকে। যদিও এখন পর্যন্ত তার আন্তর্জাতিক টেস্টে অভিষেক হয়নি। প্রোটিয়া জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত দুটি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার।
তবে ১২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে ব্রেভিসের। দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের হয়ে সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের বিপক্ষেও তিনি একটি ম্যাচ খেলেছেন। ৫ উইকেটে হারের ম্যাচটিতে দুই ইনিংসে ৪৯ ও ৭৪ রান করেছেন ব্রেভিস।
এদিকে, এনগিডি আইরিশদের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডেতেই খেলেছেন। যেখানে প্রথম দুটি ম্যাচেই চারটি করে উইকেট শিকার করেন এই ডানহাতি পেসার। বার্গারের চোট তার টেস্ট দলে জায়গা করে দিয়েছে। যেখানে আগে থেকেই বাংলাদেশ সিরিজের জন্য প্রোটিয়া পেস বিভাগে আছেন কাগিসো রাবাদা, ড্যান প্যাটারসন ও উইয়ান মুল্ডার।
ইংল্যান্ডে বসবাসরত স্ত্রী কয়েক ঘণ্টা ধরে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাচ্ছিলেন না। পরে জানতে পারলেন, গ্রিসের গ্লাইফাদা শহরের নিজবাড়ির সুইমিংপুলে মিলেছে তার মৃতদেহ! মৃত এই ব্যক্তি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা ফুটবলার জর্জ বালডক। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তার বরাতে তার রহস্যজনক মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
৩১ বছর বয়সি বালডকের জন্ম ইংল্যান্ডে হলেও দাদির দেশ গ্রিসের হয়ে জাতীয় দলে খেলেছেন। ইংলিশ ক্লাব শেফিল্ড ইউনাইটেডে ৭ বছর কাটিয়ে এ মৌসুমেই গ্রিক ক্লাব পানাথিনাইকোসে নাম লিখিয়েছেন। গত রোববার অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে খেলাটাই হয়ে থাকল এই ডিফেন্ডারের জীবনের শেষ ম্যাচ।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সুইমিংপুল থেকে বালডককে উদ্ধারের পর হৃৎস্পন্দন ফেরাতে সিপিআর দেওয়া হয়। কিন্তু তার জ্ঞান ফেরেনি।
স্থানীয় সময় গতকাল রাত ১০টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়) চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিবৃতিতে বালডকের পরিবার জানিয়েছে, ‘আমরা নিশ্চিত করছি যে, জর্জ বালডক আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তাকে হারিয়ে আমরা শোকাহত।’
পানাথিনাইকোস বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা হতবাক, আমাদের জর্জকে হারিয়ে আমরা শোকাহত। পানাথিনাইকোস-পরিবার তার অকাল মৃত্যুতে শোক জানাচ্ছে। আমরা জর্জের পরিবার ও প্রিয়জনদের পাশে দাঁড়াচ্ছি।’
বালডকের সাবেক ক্লাব শেফিল্ড ইউনাইটেডও তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে, ‘ব্রামল লেনে ৭ বছর কাটানোর পর এই ডিফেন্ডার এবারের গ্রীষ্মে ক্লাব ছেড়েছে। সমর্থক, কোচিং স্টাফ ও সতীর্থদের কাছে তিনি খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। শেফিল্ড ইউনাইটেডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই জর্জের পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছে।’
গ্রিস ফুটবল ফেডারেশন লিখেছে, ‘গভীর দুঃখের সঙ্গে গ্রিস জাতীয় দল এবং ফুটবল ফেডারেশন জর্জ বলডককে বিদায় জানাচ্ছে। আমাদের আপন মানুষটির অপ্রত্যাশিত প্রস্থানে যে বেদনার সৃষ্টি হয়েছে, তা বর্ণনা করার ভাষা জানা নেই। আমরা মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে পড়েছি।’ গ্রিস জাতীয় দলের হয়ে ১২টি ম্যাচ খেলেছেন বালডক। শেষ ম্যাচটি খেলেছেন এ বছরের মার্চে জর্জিয়ার বিপক্ষে। ক্লাব পর্যায়ে তিনি শেফিল্ড ও পানাথিনাইকোস ছাড়াও মিল্টন কেইনেস ডনস, অক্সফোর্ড ইউনাইটেড, টামওয়ার্থ এফসি, নর্দাম্পটন টাউন ও ভেস্টমান্নায়েইয়ারকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের একটা স্ট্যান্ডের নাম রাখা হয়েছে বিষেণ সিং বেদির নামে। ইউটিউবে তাঁর বাঁহাতি স্পিন বোলিংয়ের কিছু সাদাকালো ফুটেজ দেখে আসুন। মনে হবে স্বপ্ন দেখছেন। ছোট ছোট পায়ের সুন্দর রানআপ, রিপিটেবল অ্যাকশন আর অবিশ্বাস্য সুন্দর ফ্লাইট- সবটাই ক্রিকেটপিপাসুদের স্বপ্নের মতো। ব্যাটসম্যানদের জন্য অবশ্য দুঃস্বপ্ন। কখনো সেই সুন্দর ফ্লাইটে, না হয় গতির বৈচিত্র্যে অথবা বাঁকে পরাস্ত হয়েছেন ব্যাটসম্যানরা।
গতকাল রাতে সে মাঠেই রিয়ান পরাগ ২ ওভারের স্পিন বোলিং করলেন। ১২টি বলের মধ্যে একটিও বাঁক নেয়নি। কিন্তু বল করেছেন দু-তিন রকমের রিলিজ পয়েন্ট থেকে। একবার তো নন স্ট্রাইক প্রান্তের উইকেটের সমান ছিল পরাগের রিলিজ পয়েন্ট! একটু হেঁটে এসে ২ ওভার বাঁহাতি স্পিন করেছেন অভিষেক শর্মাও। বরুণ চক্রবর্তী তাঁর ক্যারম বল, গুগলি, অফ স্পিন করেছেন। ওয়াশিংটন সুন্দরও গতিময় স্পিনার। সেই মায়াবী ফ্লাইট খুঁজে পাবেন না তাঁর বোলিংয়েও।
ঝলমলে অক্ষরে বিষেণ সিং বেদির নাম খোদাই করা গ্যালারির সামনেই বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ক্রিকেটটা বদলে যাওয়ার বহু উদাহরণ খুঁজে পাবেন। স্পিনাররা এখন বেদির মতো ঘণ্টায় ৬০-৭০ কিলোমিটারে বোলিং করেন না, স্পিনারদের এখন হরহামেশা ৯০ কিলোমিটারে বল করতে দেখতে পাবেন। ওই গতিতেই কিছুটা বাঁক, কিছুটা অ্যাঙ্গেল, কিছুটা বৈচিত্র্য যোগ করে ব্যাটের মাঝখান থেকে দূরে থাকার চেষ্টার নামই আধুনিক টি-টোয়েন্টি বোলিং।
বাংলাদেশ দলে এ ধরনের স্পিন বোলিংটা করে থাকেন শেখ মেহেদী হাসান। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাওয়ার প্লেতে বোলিং করা স্পিনারদের মধ্যে মেহেদীর নামটা ওপরের দিকেই থাকবে। ডানহাতি কিংবা বাঁহাতি-ব্যাটসম্যান যেমনই হোক, এমন বৈচিত্র্যময় অফ স্পিন বোলিংটা করে থাকেন তিনি। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজ এক বছরের বেশি সময় পর টি-টোয়েন্টি দলে ফেরায় মেহেদীকে একাদশে জায়গা ছাড়তে হচ্ছে।
দুজনেরই প্রোফাইলে ‘অফ স্পিনার’ লেখা খুঁজে পাবেন। কিন্তু শেখ মেহেদীর সঙ্গে মিরাজের টি-টোয়েন্টি বোলিংয়ে বিরাট পার্থক্য। মেহেদী বল হাতে যা করেন, তাঁকে অফ স্পিন বলার চেয়ে শুধু ‘বোলিং’ বলা শ্রেয়। কারণ ব্যাটসম্যানের পায়ের কাজ দেখে শেষ মুহূর্তে একটা ইয়র্কারও মেরে দিতে পারেন মেহেদী।
মিরাজের সে দক্ষতা নেই তা নয়। গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে উন্নতি করা ক্রিকেটার তো মিরাজই। কিন্তু মিরাজের সাফল্য এসেছে মূলত টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে। ছোট্ট সংস্করণের ক্রিকেটে তিনি কখনোই দলে জায়গা পাকা করতে পারেননি। শুরু থেকে ধারাবাহিকভাবে খেললে হয়তো টি-টোয়েন্টির মারদাঙ্গা ক্রিকেটের মানানসই বোলিংয়ের দক্ষতাটাও মিরাজ এত দিনে রপ্ত করে ফেলতেন।
কিন্তু টি-টোয়েন্টি দলে একজন অফ স্পিনিং অলরাউন্ডারের অভাবটা মেহেদীই পূরণ করে এসেছেন। তাই মিরাজের দরকার হয়নি। মেহেদী এখনো আছেন। কিন্তু হুট করে ভারতের মতো দলের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ডাক পাওয়ায় মিরাজের টি-টোয়েন্টি বোলিংয়ের দুর্বলতাগুলো বাজেভাবে সামনে আসছে।
শুধু কি বোলিং? ব্যাটিং দক্ষতায় শেখ মেহেদীর চেয়ে মিরাজ এগিয়ে থাকলেও সেটা টি-টোয়েন্টিসুলভ নয়। টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটের চূড়ান্ত চাপের মুহূর্তে মিরাজের ব্যাট বহুবার বাংলাদেশকে বিপদমুক্ত করেছে, নিয়ে গেছে দাপুটে অবস্থানে। হার না মানা প্রচণ্ড শক্তিশালী মানসিকতার সঙ্গে দারুণ ডিফেন্সিভ টেকনিক মিরাজের টেস্ট, ওয়ানডের সাফল্যের ভিত। প্রতিপক্ষ দলের সেরা বোলারের সেরা বলটাকে ঠেকিয়ে দেওয়ায় দারুণ দক্ষ তিনি। কিন্তু ২০ ওভারের খেলায় সেই ভালো বলেই ছক্কা মারতে হয়। মিরাজের ব্যাটিং দক্ষতা সেখানে ‘সীমিত’।
অথচ ভারত সফরের টি-টোয়েন্টি সফরের দলে মিরাজকে সুযোগ দেওয়ার ব্যাখ্যায় তাঁকে সাকিব আল হাসানের বিকল্প হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। অধিনায়ক অবশ্য এ কথাও বলেছেন, এখনই সাকিব না থাকায় সৃষ্টি হওয়া বিশাল শূন্যতা পূরণ করবেন মিরাজ, তা ভাবা ঠিক হবে না। মিরাজকে ৮ থেকে ১০টি ম্যাচ দিতে হবে।
কিন্তু মিরাজ কি আসলেই সাকিবের বিকল্প হিসেবে খেলছেন? ব্যাটিংয়ের ধরন বলে তাঁকে খেলানো হচ্ছে মাহমুদউল্লাহর বিকল্প হিসেবে। চাপের মুখে জুটি গড়ে দলের মানরক্ষার কাজটা মাহমুদউল্লাহ করে এসেছেন বছরের পর বছর। হায়দরাবাদে ভারত সিরিজের শেষ ম্যাচ খেলে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দেওয়া এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ছিলেন বাংলাদেশের ‘সেফটি নেট’।
দলের জয়-পরাজয় পরে, টপ অর্ডারের নিয়মিত ধসের পর বাংলাদেশের রানটাকে একটু ভদ্রস্থ জায়গায় নেওয়ার কাজটা মাহমুদউল্লাহ করে এসেছেন সফলভাবে। গতকাল যেমন তিনি ৩৯ বলে ৪১ রান করেছেন, বাংলাদেশের রান গেছে ১৩০-এর ঘরে। কিন্তু দল হেরেছে ৮৬ রানে। তাঁর ইনিংসটি বাদ দিলে বাংলাদেশের এক শ রান করতেও কষ্ট হতো। মান বাঁচানোর এই একই লড়াই গোয়ালিয়রে লড়েছেন মিরাজ। আগের ম্যাচে মেহেদী ৩৫ রানে অপরাজিত থেকে দলের রানটাকে ১২০-এর ঘরে নিয়ে যান। যা দলের জয়-পরাজয়ে কোনো ভূমিকা রাখেনি, শুধু মান বাঁচিয়েছে। ব্যাটিংয়ে বড় পরিবর্তন না এলে টি-টোয়েন্টিতে মিরাজকে এ ভূমিকাতেই দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
জীবনানন্দ দাশের কবিতার এই লাইন কি পড়েছেন লিওনেল মেসি? না পড়ার সম্ভাবনা শতভাগ। পড়া থাকলে হয়তো মায়ামির সৈকতে দাঁড়িয়ে আটলান্টিকের বিস্তৃত জলরাশিতে তাকিয়ে আনমনে লাইনটি আওড়াতেন। খেলতে খেলতে মেসির ক্লান্তিতে ভেঙে পড়ার দৃশ্য তো নতুন নয়।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ফেরা যাক। সেদিন এমএলএসে টরন্টোর বিপক্ষে ম্যাচে প্রথমার্ধে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন মেসি। এমনকি মাঠ ছাড়ার আগেই স্বভাববিরুদ্ধভাবে পায়ের শিনগার্ডও (পায়ে থাকা সুরক্ষা গার্ড) খুলে ফেলেন। ক্লান্তিতে বিধ্বস্ত মেসির দিকে তখন যেন তাকানো যাচ্ছিল না। সবকিছু ছাপিয়ে গিয়েছিল বেঞ্চে বসা মেসির ক্লান্ত মুখের একটি ছবি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই ছবি ভাইরালও হয়েছিল।
এটুকু তবু মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু কোপা আমেরিকা ফাইনালে যা ঘটল, তা হয়তো কারও প্রত্যাশায় ছিল না। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের ৬৩ মিনিটে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন মেসি। এমন চোট মোটেই অপ্রত্যাশিত ছিল না। কাতার বিশ্বকাপের পর থেকে মেসি একরকম চোটের সঙ্গেই ঘর করছেন। কিন্তু সেদিন মেসিকে বেঞ্চে বসে শিশুর মতো কাঁদতে দেখা গেল। এভাবে ভেঙে পড়তে দেখা তার ভক্ত-সমর্থকদের তো বটেই, সাধারণ দর্শকদের জন্যও ছিল হৃদয় ভাঙার মতো দৃশ্য।
অথচ ফুটবলে মেসির আর কোনো অপূর্ণতা নেই। অধরা নেই কোনো শিরোপাও, জিতেছেন সম্ভাব্য সবকিছু। কাতার বিশ্বকাপের পর অবসরে চলে গেলেও মেসির অর্জনের ভান্ডার থেকে একটি শিশিরকণাও কেউ কেড়ে নিতে পারত না।
মেসি নিজেই বলেছেন, ফুটবলে তার আর চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। তবু কেন সেই কান্না! কে জানে, সেদিন হারের শঙ্কায়, চোটের বেদনায়, নাকি বিদায়ের চোখরাঙানিতে অঝোরে কেঁদেছিলেন মেসি! কান্নার পেছনে কারণটা যা-ই হোক, এই ঘটনা মেসির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন ভাবনাকে উসকে দিয়েছে। বিশেষ করে ২০২৬ বিশ্বকাপে মেসিকে দেখার যে প্রত্যাশা, সেটি জিইয়ে রাখতেই তাকে নিয়ে এত ভাবনা। মেসির চোটের ইতিহাস অন্তত তেমন কিছুই বলছে।
ফুটবলবিষয়ক ওয়েবসাইট ট্রান্সফারমার্কেট জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মেসি চোটে পড়েছেন ছয়বার। এর মধ্যে কোপার ফাইনালে চোটে পড়ে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ছিলেন মাঠের বাইরে। সর্বশেষ এই চোটে সব মিলিয়ে মেসি মাঠের বাইরে ছিলেন ৫৮ দিন। তবে সব মিলিয়ে ক্যারিয়ারে এর চেয়ে বেশি সময়ের জন্য মেসি মাঠের বাইরে ছিলেন মাত্র দুবার। বয়স ও ফিটনেস বিবেচনায় নিলে মেসির সাম্প্রতিক এই চোট দুশ্চিন্তায় ফেলার মতোই।
চোট কাটিয়ে সেপ্টেম্বরে মেসি মাঠে ফিরলেও সব যে ঠিক হয়ে গেছে, তা নয়। তার চোটের সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে, যেকোনো সময় আবারও একই বিপদ হাজির হতে পারে। ফলে মেসিকে নিয়ে আর্জেন্টিনা ও ইন্টার মায়ামি-উভয় দলকেই থাকতে হচ্ছে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায়।
আর্জেন্টিনা দলের কথাই ধরা যাক। কোপার ফাইনালের পর মেসিকে ছাড়াই খেলতে হয়েছে কোচ লিওনেল স্কালোনিকে। সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক বিরতিতে আর্জেন্টিনার ম্যাচে ছিলেন না মেসি। তবে এটাই হয়তো এখন আর্জেন্টিনা দলের জন্য ‘নিও নরমাল’ হতে যাচ্ছে। অর্থাৎ দলের প্রয়োজন এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে খেলাতে হবে অধিনায়ককে। মেসির চোট, ক্লান্তি ও বিশ্রাম-এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই কাজটি করতে হবে স্কালোনিকে।
এ ক্ষেত্রে শুধু মেসির জায়গায় আরেকজনকে খেলানো নয়, কৌশল ও স্টাইলেও নতুনত্ব আনতে হবে আর্জেন্টাইন এই কোচকে। সেটি কেমন হতে পারে, সেই ইঙ্গিত সেপ্টেম্বরের ম্যাচ দুটিতেই দেখা গেছে।
স্কালোনির অধীন আর্জেন্টিনা দলে মেসিকে দেখা গেছে মাঠজুড়ে খেলতে। কখনো মাঝমাঠে খেলা তৈরি করেছেন আবার কখনো ডান প্রান্তে সরে গিয়ে আক্রমণে উঠেছেন। পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়েই খেলেছেন মেসি। তবে কলম্বিয়া ও চিলির বিপক্ষে এই স্বাধীনতা উপভোগ করার সুযোগ ছিল না স্কালোনির। ফলে ‘ডাবল নাইন’ হিসেবে হুলিয়ান আলভারেজ ও লাওতারো মার্তিনেজকে খেলাতে হয়েছে তাকে। কৌশলগত এই পরিবর্তনের কারণে মাঠজুড়ে আরও কিছু পরিবর্তন আনতে হয়েছিল স্কালোনিকে।
দায়িত্বের পরিবর্তনের কারণে রদ্রিগো দি পলকেও দেখা গিয়েছিল নতুন ভূমিকায়। ফাইনাল থার্ডে অনেক সময় সূত্রধর হয়ে কাজ করতে দেখা গেছে তাঁকে। মূলত অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের সঙ্গে মিলে খেলা তৈরি করার কাজটি করতে হয়েছিল দি পলকেই। এই দুই ম্যাচে অবশ্য মেসির পরিবর্তে আক্ষরিক অর্থে দেখা গিয়েছিল নিকোলসা গঞ্জালেসকে। যদিও একেবারেই ভিন্ন দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হয়েছে তাকে এবং সেটা স্বাভাবিকও।
শুধু মেসিই নয়, স্থায়ীভাবে আনহেল দি মারিয়ার অবসরে যাওয়ার কারণেও দল নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে স্কালোনিকে। মেসিকে ছাড়া দলকে সামলানো কতটা কঠিন, সেটা জানাতে গিয়ে স্কালোনি বলেছিলেন, ‘তার (মেসির) ওপর নির্ভর না করাটা একটা দলের জন্য কঠিন। কারণ, সে একজন অসাধারণ ফুটবলার।’ পাশাপাশি অবশ্য মেসিকে ছাড়া পথ চলতে শেখার কথাও বলেছিলেন স্কালোনি। যদিও কাজটা যে কঠিন, সেই প্রমাণ কলম্বিয়ার সঙ্গে হেরে গিয়ে দিয়েছে দলটি। এখন মেসিকে সঙ্গে নিয়ে পরের দুই ম্যাচে স্কালোনির কৌশল কেমন হবে, সেটিও অনেক কিছু পরিষ্কার করে দেবে।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১১ অক্টোবর ভেনেজুয়েলার মুখোমুখি হওয়ার পর ১৬ অক্টোবর বলিভিয়ার বিপক্ষে খেলবে আর্জেন্টিনা।স্কালোনিকে অবশ্য হার-জিত সরিয়ে রেখেই নতুনভাবে দল নিয়ে ভাবতে হবে। মেসির বয়স ৩৭ পেরিয়ে গেছে। ক্যারিয়ারের শেষের শুরু হয়ে গেছে আরও আগে। ২০২৬ বিশ্বকাপ এ মুহূর্তে মেসি ও আর্জেন্টিনা দলের চূড়ান্ত লক্ষ্য। তবে সে পর্যন্ত টিকে থাকতে হলে মেসির সময় ভাগ করে খেলার কোনো বিকল্প নেই। ক্লান্তি ও চোট-দুটিই সারাক্ষণ ঘাড়ের ওপর হুমকি হয়ে আছে।
যেকোনো সময় কোনো একটা যেন পথ আগলে দাঁড়াবে! এই ভয় ও আতঙ্ক সামনের দিনগুলোতে আর্জেন্টিনা দলে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, সেটাও ভাবার বিষয়।
তবে এটুকু নিশ্চিত যে ম্যাচের গুরুত্ব এবং মঞ্চ বিবেচনা করেই মেসিকে খেলাবেন স্কালোনি। এমনকি প্রয়োজন ছাড়া মেসিকে পুরো ৯০ মিনিট মাঠে না–ও দেখা যেতে পারে। এই প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়েই মূলত পোস্ট-মেসি যুগে প্রবেশ করবে আর্জেন্টিনা। এর মধ্যেও আশার খবর হচ্ছে মেসির দুর্দান্ত ছন্দ। ফিট মেসি মাঠে নামলে এখনো সেই আগের মতোই দাপুটে ও অপ্রতিরোধ্য। অন্তত ১০ মিনিটের জন্য হলেও সেই মেসিকে মাঠে দেখাটাই তো ফুটবলপ্রেমীদের আরাধ্য!
কিংবদন্তি অন্যলোকে পাড়ি জমিয়েছেন প্রায় চার বছর আগে। তবু কীভাবে জীবন্ত? স্পেনের বার্সেলোনা শহরে ম্যারাডোনার জীবন নিয়ে ত্রিমাত্রিক প্রদর্শনী চলছে। সেখানে ম্যারাডোনার হলোগ্রাম (চেহারার অবয়ব) এবং শৈশবে যে বাড়িতে তিনি বেড়ে উঠেছেন, সেই বাড়িটির সেই সময়ের অবস্থা দৃশ্যায়ন করে দেখানো হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এই প্রদর্শনীতে জীবন্ত হয়ে ওঠেন ’৮৬ বিশ্বকাপজয়ী এ আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি।
বার্সেলোনায় আসার আগে ইতালির নেপলস ও ইসরায়েলের তেল আবিবে চলেছে ‘ডিয়েগো লিভস’ নামের এই প্রদর্শনী। আগামী দুই মাস বার্সেলোনা শহরে এই প্রদর্শনী চলবে। এই শহরেরই ক্লাব বার্সেলোনায় ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত দুই মৌসুম খেলেছেন ম্যারাডোনা। কোপা দেল রে ও কোপা দে লা লিগা জিতলেও কাতালান ক্লাবটিতে সময়টা তাঁর খুব ভালো কাটেনি। ইনজুরিতে পড়েছেন আর মানসিকভাবেও সুখে ছিলেন না।
বার্সেলোনা শহরের মধ্যভাগে ২ হাজার বর্গমিটার জায়গাজুড়ে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে বোকা জুনিয়র্সের জার্সি পরা ম্যারাডোনাকে হলোগ্রামে দেখানো হয়। ভালোবাসার এ ক্লাবের হয়ে একবারই আর্জেন্টিনার শীর্ষ লিগ জিতেছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এ ফুটবলার।
এই প্রদর্শনীতে ভক্তরা চাইলে ম্যারাডোনার মতো করে পেনাল্টি কিক নিতে পারবেন। কিংবা ১৯৮৬ মেক্সিকো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর সেই বিখ্যাত ও বিতর্কিত ‘হ্যান্ড অব গড’ গোলের অনুকরণে ভক্তরা ছবিও তুলতে পারবেন।
এই পথ-প্রদর্শনীর অন্যতম আয়োজক আভেলিনো তামারগো এএফপিকে বলেছেন, ‘এখানে মনে হবে ম্যারাডোনা আপনার পাশেই দাঁড়িয়ে। তাঁকে অনুভব করতেই এই আয়োজন।’
এই আয়োজনের পেছনে ম্যারাডোনার আত্মীয়-স্বজনদেরও সম্মতি আছে। দীর্ঘদিন কোকেন ও মদ্যপানে আসক্ত ম্যারাডোনা মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর ২০২০ সালের নভেম্বরে ৬০ বছর বয়সে মারা যান। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বুয়েনস এইরেসে একটি বাসা ভাড়া করে ম্যারাডোনাকে সেখানে রাখা হয়েছিল।
অস্ত্রোপচারের দুই সপ্তাহ পর ম্যারাডোনাকে তাঁর বিছানায় মৃত পাওয়া যায়। হার্ট অ্যাটাকে মারা যান কিংবদন্তি।
প্রদর্শনীতে ম্যারাডোনার জীবনের কিছু ছবিও দেখানো হয়। ত্রিমাত্রিক ভিডিওতে দেখানো হয় তাঁর জীবনের গল্প এবং বুয়েনস এইরেসের ভিলা ফিওরিতোয় যে বাসায় বেড়ে উঠেছেন ম্যারাডোনা, সেই বাড়িটির সেই সময়ের অবস্থা দৃশ্যায়ন করে দেখানো হয়।
তামারগো বলেছেন, ‘ম্যারাডোনা আমার শৈশবের নায়ক। আমাদের প্রজন্মের নায়ক।’ অক্টোবরের শুরুতে আর্জেন্টিনার একটি আদালত ম্যারাডোনার দেহাবশেষ কবরস্থান থেকে সরানোর অনুমতি দেন। আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসের কেন্দ্রস্থলে ’৮৬ বিশ্বকাপ কিংবদন্তির জন্য সমাধিস্তম্ভ বানিয়ে তার দেহাবশেষ সেখানে স্থানান্তর করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ম্যারাডোনার কন্যাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মাহমুদউল্লাহ আরও দুটি ম্যাচ খেলবেন। তারপর বিদায় নেবেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে। তাতে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার তালিকায় যৌথভাবে তৃতীয় স্থানে উঠে আসবেন বাকি দুই ম্যাচ খেলার পর। বাংলাদেশ থেকে তার কাছাকাছি থাকবেন ১২৯ ম্যাচ খেলা সাকিব আল হাসান।
কিন্তু সাকিব তো এবার ভারত সিরিজেই কানপুর টেস্টের আগে টেস্টের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি থেকেও অবসর ঘোষণা করেছেন। অর্থাৎ ভবিষ্যতে যা-ই হোক, বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে মাহমুদউল্লাহ আপাতত থেকে যাবেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
তবে একটি ধারাও কিন্তু খেয়াল করা যায়। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহর যত রেকর্ড, তার ধারেকাছে কোনো না কোনোভাবে আছেন সাকিব। কিংবা সাকিব এগিয়ে, তার ধারেকাছে মাহমুদউল্লাহ।
যেমন ধরুন, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক হিসেবে ৪৩ ম্যাচ খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশের হয়ে এটি রেকর্ড। দ্বিতীয় কে? ৩৯ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করা সাকিব। কিন্তু ম্যাচ জয়ে আবার দুজনে সমানে সমান।
মাহমুদউল্লাহর মতো সাকিবের নেতৃত্বেও ১৬টি করে ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে তাকালে দুজনের মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া যায় আরও একটি-এই সংস্করণে দুজনের ব্যাটিং গড়ই ২৩–এর ঘরে। মাহমুদউল্লাহর ২৩.৪৮, সাকিবের ২৩.১৯।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ছিলেন ২৬ বার। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মাহমুদউল্লাহ এ তালিকায় শীর্ষে, সাকিব ১৭ বার অপরাজিত থেকে দ্বিতীয়। দুজনে পাশাপাশি আরও একটি জায়গায়। অপরাজিত থাকা ইনিংসগুলোয় স্ট্রাইক রেটের হিসাবেও খুব কাছাকাছি দুজন।
অন্তত ১৫ বার অপরাজিত ছিলেন—বাংলাদেশের এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শুধু মাহমুদউল্লাহ ও সাকিবের স্ট্রাইক রেটই ১৪০–এর ওপরে। আর রানের বিষয়টি নিশ্চয়ই আপনার জানা।
২৩৯৫ রান নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মাহমুদউল্লাহ। ২৫৫১ রান নিয়ে শীর্ষে সাকিব। মাহমুদউল্লাহ যেহেতু আরও দুটি ম্যাচ খেলবেন, তাই ১৫৬ রানের এই ব্যবধান কমার সম্ভাবনাই বেশি। এমনকি এই শেষ দুই ম্যাচে দুটি ভালো ইনিংস খেলে ফেললে মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব চলে আসবেন আরও কাছাকাছি।