জীবনানন্দ দাশের কবিতার এই লাইন কি পড়েছেন লিওনেল মেসি? না পড়ার সম্ভাবনা শতভাগ। পড়া থাকলে হয়তো মায়ামির সৈকতে দাঁড়িয়ে আটলান্টিকের বিস্তৃত জলরাশিতে তাকিয়ে আনমনে লাইনটি আওড়াতেন। খেলতে খেলতে মেসির ক্লান্তিতে ভেঙে পড়ার দৃশ্য তো নতুন নয়।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ফেরা যাক। সেদিন এমএলএসে টরন্টোর বিপক্ষে ম্যাচে প্রথমার্ধে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন মেসি। এমনকি মাঠ ছাড়ার আগেই স্বভাববিরুদ্ধভাবে পায়ের শিনগার্ডও (পায়ে থাকা সুরক্ষা গার্ড) খুলে ফেলেন। ক্লান্তিতে বিধ্বস্ত মেসির দিকে তখন যেন তাকানো যাচ্ছিল না। সবকিছু ছাপিয়ে গিয়েছিল বেঞ্চে বসা মেসির ক্লান্ত মুখের একটি ছবি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই ছবি ভাইরালও হয়েছিল।
এটুকু তবু মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু কোপা আমেরিকা ফাইনালে যা ঘটল, তা হয়তো কারও প্রত্যাশায় ছিল না। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের ৬৩ মিনিটে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন মেসি। এমন চোট মোটেই অপ্রত্যাশিত ছিল না। কাতার বিশ্বকাপের পর থেকে মেসি একরকম চোটের সঙ্গেই ঘর করছেন। কিন্তু সেদিন মেসিকে বেঞ্চে বসে শিশুর মতো কাঁদতে দেখা গেল। এভাবে ভেঙে পড়তে দেখা তার ভক্ত-সমর্থকদের তো বটেই, সাধারণ দর্শকদের জন্যও ছিল হৃদয় ভাঙার মতো দৃশ্য।
অথচ ফুটবলে মেসির আর কোনো অপূর্ণতা নেই। অধরা নেই কোনো শিরোপাও, জিতেছেন সম্ভাব্য সবকিছু। কাতার বিশ্বকাপের পর অবসরে চলে গেলেও মেসির অর্জনের ভান্ডার থেকে একটি শিশিরকণাও কেউ কেড়ে নিতে পারত না।
মেসি নিজেই বলেছেন, ফুটবলে তার আর চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। তবু কেন সেই কান্না! কে জানে, সেদিন হারের শঙ্কায়, চোটের বেদনায়, নাকি বিদায়ের চোখরাঙানিতে অঝোরে কেঁদেছিলেন মেসি! কান্নার পেছনে কারণটা যা-ই হোক, এই ঘটনা মেসির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন ভাবনাকে উসকে দিয়েছে। বিশেষ করে ২০২৬ বিশ্বকাপে মেসিকে দেখার যে প্রত্যাশা, সেটি জিইয়ে রাখতেই তাকে নিয়ে এত ভাবনা। মেসির চোটের ইতিহাস অন্তত তেমন কিছুই বলছে।
ফুটবলবিষয়ক ওয়েবসাইট ট্রান্সফারমার্কেট জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মেসি চোটে পড়েছেন ছয়বার। এর মধ্যে কোপার ফাইনালে চোটে পড়ে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ছিলেন মাঠের বাইরে। সর্বশেষ এই চোটে সব মিলিয়ে মেসি মাঠের বাইরে ছিলেন ৫৮ দিন। তবে সব মিলিয়ে ক্যারিয়ারে এর চেয়ে বেশি সময়ের জন্য মেসি মাঠের বাইরে ছিলেন মাত্র দুবার। বয়স ও ফিটনেস বিবেচনায় নিলে মেসির সাম্প্রতিক এই চোট দুশ্চিন্তায় ফেলার মতোই।
চোট কাটিয়ে সেপ্টেম্বরে মেসি মাঠে ফিরলেও সব যে ঠিক হয়ে গেছে, তা নয়। তার চোটের সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে, যেকোনো সময় আবারও একই বিপদ হাজির হতে পারে। ফলে মেসিকে নিয়ে আর্জেন্টিনা ও ইন্টার মায়ামি-উভয় দলকেই থাকতে হচ্ছে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায়।
আর্জেন্টিনা দলের কথাই ধরা যাক। কোপার ফাইনালের পর মেসিকে ছাড়াই খেলতে হয়েছে কোচ লিওনেল স্কালোনিকে। সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক বিরতিতে আর্জেন্টিনার ম্যাচে ছিলেন না মেসি। তবে এটাই হয়তো এখন আর্জেন্টিনা দলের জন্য ‘নিও নরমাল’ হতে যাচ্ছে। অর্থাৎ দলের প্রয়োজন এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে খেলাতে হবে অধিনায়ককে। মেসির চোট, ক্লান্তি ও বিশ্রাম-এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই কাজটি করতে হবে স্কালোনিকে।
এ ক্ষেত্রে শুধু মেসির জায়গায় আরেকজনকে খেলানো নয়, কৌশল ও স্টাইলেও নতুনত্ব আনতে হবে আর্জেন্টাইন এই কোচকে। সেটি কেমন হতে পারে, সেই ইঙ্গিত সেপ্টেম্বরের ম্যাচ দুটিতেই দেখা গেছে।
স্কালোনির অধীন আর্জেন্টিনা দলে মেসিকে দেখা গেছে মাঠজুড়ে খেলতে। কখনো মাঝমাঠে খেলা তৈরি করেছেন আবার কখনো ডান প্রান্তে সরে গিয়ে আক্রমণে উঠেছেন। পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়েই খেলেছেন মেসি। তবে কলম্বিয়া ও চিলির বিপক্ষে এই স্বাধীনতা উপভোগ করার সুযোগ ছিল না স্কালোনির। ফলে ‘ডাবল নাইন’ হিসেবে হুলিয়ান আলভারেজ ও লাওতারো মার্তিনেজকে খেলাতে হয়েছে তাকে। কৌশলগত এই পরিবর্তনের কারণে মাঠজুড়ে আরও কিছু পরিবর্তন আনতে হয়েছিল স্কালোনিকে।
দায়িত্বের পরিবর্তনের কারণে রদ্রিগো দি পলকেও দেখা গিয়েছিল নতুন ভূমিকায়। ফাইনাল থার্ডে অনেক সময় সূত্রধর হয়ে কাজ করতে দেখা গেছে তাঁকে। মূলত অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের সঙ্গে মিলে খেলা তৈরি করার কাজটি করতে হয়েছিল দি পলকেই। এই দুই ম্যাচে অবশ্য মেসির পরিবর্তে আক্ষরিক অর্থে দেখা গিয়েছিল নিকোলসা গঞ্জালেসকে। যদিও একেবারেই ভিন্ন দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হয়েছে তাকে এবং সেটা স্বাভাবিকও।
শুধু মেসিই নয়, স্থায়ীভাবে আনহেল দি মারিয়ার অবসরে যাওয়ার কারণেও দল নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে স্কালোনিকে। মেসিকে ছাড়া দলকে সামলানো কতটা কঠিন, সেটা জানাতে গিয়ে স্কালোনি বলেছিলেন, ‘তার (মেসির) ওপর নির্ভর না করাটা একটা দলের জন্য কঠিন। কারণ, সে একজন অসাধারণ ফুটবলার।’ পাশাপাশি অবশ্য মেসিকে ছাড়া পথ চলতে শেখার কথাও বলেছিলেন স্কালোনি। যদিও কাজটা যে কঠিন, সেই প্রমাণ কলম্বিয়ার সঙ্গে হেরে গিয়ে দিয়েছে দলটি। এখন মেসিকে সঙ্গে নিয়ে পরের দুই ম্যাচে স্কালোনির কৌশল কেমন হবে, সেটিও অনেক কিছু পরিষ্কার করে দেবে।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১১ অক্টোবর ভেনেজুয়েলার মুখোমুখি হওয়ার পর ১৬ অক্টোবর বলিভিয়ার বিপক্ষে খেলবে আর্জেন্টিনা।স্কালোনিকে অবশ্য হার-জিত সরিয়ে রেখেই নতুনভাবে দল নিয়ে ভাবতে হবে। মেসির বয়স ৩৭ পেরিয়ে গেছে। ক্যারিয়ারের শেষের শুরু হয়ে গেছে আরও আগে। ২০২৬ বিশ্বকাপ এ মুহূর্তে মেসি ও আর্জেন্টিনা দলের চূড়ান্ত লক্ষ্য। তবে সে পর্যন্ত টিকে থাকতে হলে মেসির সময় ভাগ করে খেলার কোনো বিকল্প নেই। ক্লান্তি ও চোট-দুটিই সারাক্ষণ ঘাড়ের ওপর হুমকি হয়ে আছে।
যেকোনো সময় কোনো একটা যেন পথ আগলে দাঁড়াবে! এই ভয় ও আতঙ্ক সামনের দিনগুলোতে আর্জেন্টিনা দলে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, সেটাও ভাবার বিষয়।
তবে এটুকু নিশ্চিত যে ম্যাচের গুরুত্ব এবং মঞ্চ বিবেচনা করেই মেসিকে খেলাবেন স্কালোনি। এমনকি প্রয়োজন ছাড়া মেসিকে পুরো ৯০ মিনিট মাঠে না–ও দেখা যেতে পারে। এই প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়েই মূলত পোস্ট-মেসি যুগে প্রবেশ করবে আর্জেন্টিনা। এর মধ্যেও আশার খবর হচ্ছে মেসির দুর্দান্ত ছন্দ। ফিট মেসি মাঠে নামলে এখনো সেই আগের মতোই দাপুটে ও অপ্রতিরোধ্য। অন্তত ১০ মিনিটের জন্য হলেও সেই মেসিকে মাঠে দেখাটাই তো ফুটবলপ্রেমীদের আরাধ্য!
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে আইসিসি আচরণবিধির লেভেল–১ ভঙ্গ করায় ম্যাচ ফির ১০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে বাবর আজমকে।
বাবর আজম একটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার জন্য ২ লাখ ৭৭ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। সেই হিসেবে দশ শতাংশ টাকা হলে বাবর আজমের কাটা হবে ২৭ হাজার ৭০০ টাকা।
আইসিসির খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের আচরণবিধির ২.২ অনুচ্ছেদ ভঙ্গের দায়ে বাবরকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে- যা ‘আন্তর্জাতিক ম্যাচে ক্রিকেট সরঞ্জাম বা পোশাক, মাঠের যন্ত্রপাতি কিংবা স্থাপনাগুলোর অপব্যবহারের সঙ্গে সম্পর্কিত’। এছাড়া বাবরের শৃঙ্খলার রেকর্ডে একটি ডিমেরিট পয়েন্টও যোগ করা হয়েছে। গত ২৪ মাসে এটিই ছিল তার প্রথম অপরাধ।
গত রোববার রাওয়ালপিন্ডিতে তৃতীয় ওয়ানডেতে বাবর শাস্তিযোগ্য অপরাধটি করেন পাকিস্তানের ইনিংসে ২১তম ওভারে। আউট হওয়ার পর ক্রিজ ছাড়ার আগে ব্যাট দিয়ে স্টাম্পে আঘাত করেন। পরবর্তী সময়ে বাবর নিজের অপরাধ স্বীকার করেন এবং আইসিসি আন্তর্জাতিক প্যানেলের ম্যাচ রেফারি আলী নকভির প্রস্তাবিত শাস্তিও মেনে নেন। এ কারণে আনুষ্ঠানিক শুনানির প্রয়োজন হয়নি।
বাবরের বিরুদ্ধে অভিযোগটি আনেন অনফিল্ড আম্পায়ার অ্যালেক্স ওয়ার্ফ ও রশিদ রিয়াজ, তৃতীয় আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ এবং চতুর্থ আম্পায়ার ফয়সাল আফ্রিদি।
সাধারণত লেভেল-১ ভঙ্গের শাস্তি হিসেবে ন্যূনতম সতর্কবার্তা থেকে শুরু করে ম্যাচ ফির সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ জরিমানা এবং একটি বা দুটি ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ হয়।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই সিরিজটা দারুণ কেটেছে বাবর আজমের। তিন ম্যাচে ৮২.৫০ গড়ে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ১৬৫ রান করেন বাবর। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাবর অপরাজিত ছিলেন ১০২ রানে। এই সিরিজে শ্রীলঙ্কাকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছে পাকিস্তান।
প্যারিস সেন্ট-জার্মেইন (পিএসজি) ও কিলিয়ান এমবাপ্পের দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন এবার এক নতুন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। দুপক্ষই এখন একে-অপরের বিরুদ্ধে বিশাল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দাবি করছে- যা ফুটবল দুনিয়ার ইতিহাসে অন্যতম বড় আইনি সংঘাতে রূপ নিয়েছে।
এমবাপ্পের অভিযোগ, তার চুক্তিকে অস্থায়ী নয়, স্থায়ী হিসেবে গণ্য করার কথা ছিল। সে কারণেই তিনি দাবি তুলেছেন ২৬০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৩০১ মিলিয়ন ডলার), যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। এই দাবির মধ্যে রয়েছে- অবেতনিক বেতন, বোনাস, চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়ার ক্ষতিপূরণ, অন্যায়ভাবে বরখাস্তের অভিযোগ এবং মানসিক চাপের কারণে ক্ষতি।
এর আগে তিনি প্রায় ৫৫ মিলিয়ন ইউরো বকেয়া পাওনার দাবি করেছিলেন- তুলনায় যা অনেক কম।
অন্যদিকে পিএসজি আরও বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে- ৪৪০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৫১০ মিলিয়ন ডলার), যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬ হাজার ২৪০ কোটি। ক্লাবটির অভিযোগের মধ্যে আছে-
> ফ্রি ট্রান্সফারে চলে যাওয়ায় সম্ভাব্য ট্রান্সফার ফি হারানো।
> আল হিলালের ৩০০ মিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান।
> চুক্তিভঙ্গ ও অসৎ আচরণ।
> ক্লাবের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা।
পিএসজির দাবি, এমবাপ্পে প্রায় ১১ মাস ধরে চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত গোপন রেখেছিলেন, যার ফলে তারা ট্রান্সফারের সুযোগ হারায়। এছাড়া ২০২৩ সালের শেষ দিকে হওয়া বেতন কমানোর চুক্তিও এমবাপ্পে পরে অস্বীকার করেছেন বলে ক্লাবের অভিযোগ।
এদিকে এমবাপ্পের আইনজীবীরা বলছেন- ‘আইন যা অনুমোদন করে, এমবাপ্পে শুধু সেটুকুই চাইছেন। একজন কর্মীর মতো নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চান।’ তারা আরও জানান, পিএসজির তথাকথিত ‘লফটিং’- মূল দল থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা- এক ধরনের নৈতিক হয়রানি।
২০২৩-২৪ মৌসুম শুরুর আগে চুক্তি নবায়ন না করায় এমবাপ্পেকে প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। পরে আলোচনার পর তিনি দলে ফিরলেও সম্পর্ক আর স্বাভাবিক হয়নি। শেষ পর্যন্ত ২০২৪ সালের গ্রীষ্মে তিনি ফ্রি ট্রান্সফারে পিএসজি ছাড়েন এবং রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন। সাত বছরে ক্লাবের হয়ে ২৫৬ গোল করলেও তার বিদায় বেলার অভিজ্ঞতা ছিল তিক্ত।
হাইপ্রোফাইল এই মামলা এখন ফরাসি আদালতে বিচারাধীন। আগামী মাসেই রায় ঘোষণা হতে পারে।
জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডস শেষ ম্যাচে গোল-বন্যা বইয়ে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করল। গত সোমবার ইউরোপিয়ান বাছাইপর্বের শেষ রাউন্ডে দুই দলই বড় জয়ে মাঠ ছেড়েছে।
দুই দলই ড্র করলেই বিশ্বকাপের জায়গা নিশ্চিত ছিল। কিন্তু তারা আক্রমণাত্মক খেলায় ম্যাচ নিজেদের করে নেয়। জার্মানি লাইপজিগে স্লোভাকিয়াকে ৬-০ গোলে হারায়। নেদারল্যান্ডস অ্যামস্টারডামে লিথুয়ানিয়াকে ৪-০ গোলে হারায়। স্লোভাকিয়া গ্রুপ ‘এ’-তে দ্বিতীয় হয়। গ্রুপ ‘জি’-তে পোল্যান্ড মাল্টাকে ৩-২ গোলে হারালেও ডাচদের পেছনে থেকেই দ্বিতীয় হয়েছে। দ্বিতীয় হওয়ায় দলগুলো মার্চে ১৬ দলের ইউরোপিয়ান প্লে-অফে সুযোগ পাবে।
বেলফাস্টে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড লুক্সেমবার্গকে ১-০ গোলে হারালেও গ্রুপ ‘এ’-তে তৃতীয় থাকে। তবে নেশনস লিগের পারফরম্যান্সের কারণে তারাও প্লে-অফ খেলবে।
গ্রুপ এল-এ ক্রোয়েশিয়া আগেই প্রথম নিশ্চিত করেছিল। তারা ১৮ মিনিটে দুই গোল করে মন্টেনেগ্রোকে ৩-২ গোলে হারায়। চেক প্রজাতন্ত্র জিব্রাল্টারকে ৬-০ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকে।
লাইপজিগে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি পয়েন্টে সমান ছিল স্লোভাকিয়ার সঙ্গে। গোল ব্যবধানে তারা এগিয়ে ছিল। স্লোভাকিয়া ম্যাচে কিছু সুযোগ তৈরি করলেও কাজে লাগাতে পারেনি।
নিক ভল্টেমাড ১৮তম মিনিটে জার্মানিকে এগিয়ে নেন। ১১ মিনিট পর সের্জ গেনাব্রি দ্বিতীয় গোল করলে ম্যাচ পুরোপুরি জার্মানদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। বিরতির আগে লেরয় সানে দুই গোল করেন। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি রিডলে বাকু ও আসান ওয়েদ্রাওগো গোল করেন।
অ্যামস্টারডামে রোনাল্ড কোম্যানের দল ৫০ হাজার দর্শককে দারুণ ছন্দের ফুটবল উপহার দেয়। তারা দ্রুতগতির খেলায় লিথুয়ানিয়াকে পুরো ম্যাচ নিজেদের ঊর্ধ্বে আটকে রাখে।
টিয়ানি রেইনডার্স ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের দারুণ পাস থেকে ১৫ মিনিটে গোল করেন। প্রথমার্ধে আরও কয়েকটি সুযোগ এলেও লিথুয়ানিয়ার গোলরক্ষক এডভিনাস গার্টমোনাস অসাধারণ সেভ করে দলকে বাঁচান।
৫৮তম মিনিটে কোডি গাকপো পেনাল্টি থেকে গোল করেন। এরপর চার মিনিটের মধ্যে জাভি সিমন্স ও ডনিয়েল ম্যালেন গোল করে ব্যবধান বাড়ান। এরপর কোম্যান পাঁচজন বদলি নামান।
মাল্টায় পোল্যান্ড জিতলেও তারা দ্বিতীয় স্থানেই থাকে। ৩২ মিনিটে রবার্ট লেভান্ডভস্কি গোল করেন। চার মিনিট পর মাল্টা সমতায় ফেরে। ৫৯ মিনিটে লেভান্ডভস্কি পাভেল স্বিশোলেককে দিয়ে গোল করান। ৬৮তম মিনিটে পোল্যান্ডের কাউন্টার অ্যাটাক থেকে ক্যারল সুইডারস্কি গোল করলেও ভিডিও চেকে দেখা যায় শুরুতে কিউইয়ার বক্সে ফাউল করেছিলেন। তাই মাল্টা পেনাল্টি পায় এবং টেডি তিউমা সমতা ফেরান। তবে ৮৫তম মিনিটে পিওতর জিলেন্সকির দূরপাল্লার শট পোস্টে লেগে জালে ঢোকে এবং পোল্যান্ডের জয় নিশ্চিত হয়।
তিনটি করে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি খেলতে আগামী ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ভারত সফরে যাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ নারী দলের। তবে ভারতীয় সরকারের অনুমোদন না পাওয়ায় সিরিজটি নিয়ে এখনো শঙ্কা রয়েছে।
বিসিবির একজন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন, ভারত সরকারের অনুমোদন মেলেনি এখনো। যে কারণে সিরিজ মাঠে গড়ানো শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। গত বছর পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে এসেছিল ভারত। এর আগে ২০২৩ সালে মিরপুরে তিনটি করে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি খেলেছিল ভারতীয় নারীরা।
এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যমকে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সিরিজটির জন্য এখনো সরকারি অনুমোদন মেলেনি।’ জানা গেছে, বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের অনুমোদন যদি না মেলে তাহলে বিকল্প আরেকটি সিরিজ আয়োজন করতে চায় ভারত।
অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটল। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আসন্ন আসরে থাকছেন না দেশের অন্যতম সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট 'ক্রিকবাজ-কে তামিম নিজেই তার এই সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, আগামী ২৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে তার নাম সরিয়ে ফেলার জন্য তিনি বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফিসকে অনুরোধ করেছেন। ক্রিকবাজকে তামিম বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি বিপিএলে অংশ নিচ্ছি না। ড্রাফট থেকে আমার নাম বাদ দেওয়ার অনুরোধ করেছি।’
২০১২ সালে বিপিএলের উদ্বোধনী আসর থেকে শুরু করে প্রতিটি আসরেই খেলা তামিম ইকবালের জন্য এটিই হবে প্রথম বিপিএল-বিরতি। সর্বশেষ দুই মৌসুমে ফরচুন বরিশালকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে শিরোপাও জিতিয়েছেন।
রোববার রাতে মিলানের মাঠে ইতালির জালে গোল উৎসব করে দীর্ঘ ২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটাল নরওয়ে। আর্লিং হালান্ডের জোড়া গোলে ভর করে আজ্জুরিদের ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে নরওয়েজিয়ানরা। এই ঐতিহাসিক জয়ে ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের মূল পর্বের টিকিট নিশ্চিত করেছে তারা। অন্যদিকে, এই হারে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালির সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। ২০০৬ সালের চ্যাম্পিয়নদের এখন ২০১৮ ও ২০২২ আসরের মতো আবারও প্লে-অফের অগ্নিপরীক্ষায় নামতে হবে।
মিলানের সান সিরোতে ম্যাচের শুরুতে অবশ্য চিত্রটা ভিন্ন ছিল। ১১ মিনিটেই পিও এসপোসিতোর গোলে স্বাগতিকরা এগিয়ে যায় এবং প্রথমার্ধ শেষ করে ১-০ ব্যবধানে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে নরওয়ের ঝড়ের সামনে খড়কুটোর মতো উড়ে যায় ইতালি। ৬৩ মিনিটে আন্তোনিও নুসা সমতা ফেরানোর পর ৭৮ ও ৭৯ মিনিটে মাত্র এক মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করে ইতালির বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দেন আর্লিং হালান্ড। ম্যাচের যোগ করা সময়ে জার্গেন স্ট্র্যান্ড লারসেন চতুর্থ গোলটি করে নরওয়ের ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত করেন।
এই জয়ে ৮ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ ‘আই’-এর শীর্ষে থেকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করল নরওয়ে। তারা সর্বশেষ ১৯৯৮ সালের ফ্রান্স বিশ্বকাপে খেলেছিল। অন্যদিকে, ১৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইতালির সামনে এখন টানা তৃতীয়বার বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ার শঙ্কা।
রাতের অন্য ম্যাচে আগেই বিশ্বকাপ নিশ্চিত করা ফ্রান্স ৩-১ গোলে আজারবাইজানকে হারায়। তবে বড় চমক উপহার দিয়েছে আয়ারল্যান্ড। ট্রয় প্যারটের হ্যাটট্রিকে তারা হাঙ্গেরিকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে। এই হারে হাঙ্গেরির বিশ্বকাপ স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলেও, প্লে-অফে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখল আইরিশরা।
গেল সেপ্টেম্বরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) তরফ থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। যেখানে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলে অনিয়মের আশঙ্কা করেছে এনএসসি এবং বোর্ডকে এই বিষয়ে তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে।
এনএসসির চিঠির প্রতিক্রিয়া হিসেবে গত শনিবার এক বিবৃতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিবৃতিতে বিসিবির তরফ থেকে জানানো হয়, এনএসসির অভিযোগগুলোর বিস্তারিত পর্যালোচনা করেও কোনো ধরনের অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বিসিবি জানিয়েছে, চিঠিটি এমন সময়ে পাওয়া যায় যখন বোর্ড সাধারণ পরিষদ গঠন ও নতুন পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত ছিল। সে সময় অধিকাংশ বিভাগ নির্বাচন-সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করায় দৈনন্দিন কার্যক্রম সীমিত ছিল। সাধারণ পরিষদ গঠন, পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন ও কমিটির সভাপতি নিয়োগের পর সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে নির্বাচন-সংক্রান্ত সব নথিপত্র খতিয়ে দেখে বিসিবি। পর্যালোচনায় অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলের স্কোয়াড বাছাইয়ে কোনো অনিয়ম পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করে বোর্ড।
এছাড়া অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সাবেক অলরাউন্ডার রিয়া আক্তার শিখা কর্তৃক এনএসসিকে পাঠানো চিঠির অতিরিক্ত বিষয় এবং সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশ নারী দলের সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলমের সাক্ষাৎকারে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বিসিবি জানায়, স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা ও জবাবদিহিতার প্রতি বোর্ড সদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
দ্বিতীয় দিন শেষে কলকাতা টেস্টের নিয়ন্ত্রণ ছিল ভারতের হাতে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনার ও অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার দৃঢ়তায় স্বাগতিকদের ৩০ রানে হারিয়েছে সফরকারীরা। এতে ১৫ বছর পর ভারতের মাটিতে টেস্ট জিতল প্রোটিয়ারা।
জসপ্রীত বুমরাহর বোলিং তোপে প্রথম ইনিংসে ১৫৯ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ১৮৯ রান করে ভারত। এতে ৩০ রানের লিড পায় স্বাগতিকরা। জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে রবীন্দ্র জাদেজা ও কুলদ্বীপ যাদবের ঘূর্ণিতে ১৫৩ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
দলের হয়ে একাই লড়াই করেন অধিনায়ক বাভুমা। ১৩৬ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। এছাড়া করবিন বোচ করেন ২৫ রান। জাদেজা নেন ৪টি উইকেট।
জয়ের জন্য ভারতের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১২৪ রানের। এই রান তাড়া করতে নেমে প্রোটিয়া স্পিনারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি ভারতের টপ অর্ডার। দলীয় ৩৪ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে ভারত।
লোকেশ রাহুল ১, ধ্রুব জুরেল ১৩, ঋঝভ পন্থ ২ ও রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরে যান জয়সওয়াল। শুরুর এই ধাক্কা আর সামাল দিতে পারেনি ভারত। মাঝে কিছুটা লড়াই করেছেন ওয়াশিংটন সুন্দর ও অক্ষর প্যাটেল।
তবে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ৩৫ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৯৩ রান সংগ্রহ করে ভারত। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সময় চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন শুভমান গিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি তিনি। এতেই ৩০ রানের জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সুন্দর ৩১ ও অক্ষর করেন ২৬ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সিমন হারমার নেন ৪টি উইকেট।
২০২৬ বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা নিশ্চিত করেছে বিশ্বের বিভিন্ন মহাদেশের মোট ৩০টি দল। ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়া, উত্তর ও মধ্য আমেরিকা এবং ওশেনিয়া মিলিয়ে ধীরে ধীরে পূর্ণতা পাচ্ছে টুর্নামেন্টের দলসংখ্যা।
ইউরোপ (৩ দল)
ফ্রান্স, ইংল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়া নিজেদের গ্রুপের প্রতিযোগিতায় শীর্ষে থেকে জায়গা করে নিয়েছে ফুটবলের মহামঞ্চে।
দক্ষিণ আমেরিকা (৬ দল)
আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, উরুগুয়ে, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর ও প্যারাগুয়ে- দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে ছয়টি দলই বাছাইপর্বে দাপট দেখিয়ে নিশ্চিত করেছে বিশ্বকাপের টিকিট।
উত্তর ও মধ্য আমেরিকা (২ দল)
আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বাছাইপর্ব পেরিয়ে জায়গা করে নিয়েছে মেক্সিকো।
আফ্রিকা (৯ দল)
বিশ্বমঞ্চে আফ্রিকার প্রতিনিধিত্ব করবে আলজেরিয়া, মরক্কো, আইভরি কোস্ট, ঘানা, মিসর, সেনেগাল, তিউনিসিয়া, কেপ ভার্দে ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
এশিয়া (৭ দল)
জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, সৌদি আরব, জর্ডান, কাতার ও উজবেকিস্তান এর মধ্যেই নিশ্চিত করেছে মূল পর্বের টিকিট।
ওশেনিয়া (১ দল)
ওশেনিয়া অঞ্চল থেকে জায়গা নিশ্চিত করেছে নিউজিল্যান্ড।
টুর্নামেন্টে মোট ৪৮ দল অংশ নিলেও এখনো বেশ কিছু জায়গা খালি রয়েছে। বাকি দলগুলো প্লে-অফ ও শেষ দিকের বাছাইপর্বের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।
দুর্দান্ত এক মাইলফলকের সামনে মুশফিকুর রহিম। প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলার খুব কাছে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। সিলেটে আয়ারল্যান্ডকে ইনিংস ব্যবধানে হারানো ম্যাচটি ছিল মুশফিকের ৯৯তম টেস্ট। আগামী ১৯ নভেম্বর মিরপুর শের-ই বাংলায় হতে যাওয়া সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি হবে মিস্টার ডিপেন্ডেবলের শততম টেস্ট।
মুশফিককের এমন ব্যক্তিগত মাইলফলকের ম্যাচে তাকে বিশেষ সম্মাননা দিতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। মুশফিকের শততম টেস্টের দিনে মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে দাওয়াত পাবেন তার পরিবার। এছাড়া ক্রেস্টসহ ক্রিকেটারদের স্বাক্ষরিত একটি ব্যাট দেওয়া হবে বলেও জানা গেছে। সবমিলিয়ে ১৯ নভেম্বর শের-ই বাংলা স্টেডিয়াম মুশফিকের বন্দনায় যে মুখরিত থাকবে সেটি বলার আর অপেক্ষা রাখে না।
মুশফিক শততম টেস্ট খেলেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলবেন কি না, তা নিয়ে চলছে আলোচনা। তবে জানা গেছে, লাল বলের ক্রিকেট চালিয়ে যাবেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মুশফিক কেবল সাদা পোশাকের ক্রিকেটই খেলছেন। সিলেট টেস্টে জয়ের পর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। মুশফিকের শততম টেস্ট নিয়ে শান্ত বলেন, ‘অবশ্যই অনেক বড় একটা অর্জন, খুবই রোমাঞ্চিত। আমি প্রথম দিনের প্রেস কনফারেন্সে বলেছিলাম আমরা উদযাপন করতে চাই। খেলোয়াড়রা চায় ওই দিনটা বা ওই পুরো পাঁচ দিন আমরা উপভোগ করবো। সম্মানের জায়গা তো আছেই। এরকম একটা অর্জন আমাদের বাংলাদেশে কখনও হয়নি। সুতরাং আমরা সবসময় আশা করি এরকম একটা মানুষকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে আমাদের সম্মানটুকু দেওয়া উচিত এবং অধিনায়ক হিসেবে ওই জিনিসটা করারই চেষ্টা করবো।’
শততম টেস্টের পরও মুশফিক খেলা চালিয়ে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন শান্ত। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় আমি আশা করবো মুশফিক ভাই ১০০ টেস্ট খেলার পরও যেন উনি আরও চালিয়ে যান। কারণ এরকম অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আমাদের টেস্ট দলে প্রয়োজন। আমি আশা করবো সেটাও যেন উনি চালিয়ে যান।’
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের আগে থেকে দেশের বাইরে রয়েছেন সাকিব আল হাসান। দেশের বাইরে এ সময় জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন তিনি। তবে দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলে আর দেখা যায়নি সাকিবকে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে জাতীয় দলের জার্সিতে সাকিবের খেলার সম্ভাবনা দেখছেন না বিসিবি পরিচালক আসিফ আকবর। তার মতে সাকিব অনুশোচনা না দেখালে জাতীয় দলে তার ফেরার কোন পথ নেই।
দেশের একটি ক্রিকেটভিত্তিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আসিফ আকবর বলেন, ‘সাকিব যদি অনুশোচনাহীন থাকে, তবে আমি সম্ভাবনা দেখি না বাংলাদেশের হয়ে ক্রিকেট খেলার। বর্তমান অ্যাটিটিউডে সেভাবে থাকলে আমি নিজেও চাইব না সাকিব খেলুক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনি ২০০০ লোককে হত্যার পরে শহীদের ওপর দিয়ে এসে ক্রিকেট খেলবেন, এটা হবে না। যদি সে (সাকিব) অনুশোচনা করেন, ক্ষমা চান, তবে হয়তো পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে। এভাবে কিছু একটা হয়ে আসতে হবে। সাকিবকে সাকিব আল হাসান হয়ে আসতে হবে যেটা আগে ছিল।’
তবে সাকিবের প্রশংসাও করেছেন আসিফ আকবর। তিনি বলেন, ‘সাকিব আল হাসান ইজ সাকিব আল হাসান। সে একটা ব্র্যান্ড, এটা বাংলাদেশে ১০০ বছরেও আসবে না। আমি এটা আবারও বলছি।’
ফরিদপুর সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নে ফুটবল টুর্নামেন্ট সিজন-২ ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণী সম্পন্ন হয়েছে।
আলিয়াবাদ ইউনিয়ন ক্রিয়া সংস্থার আয়োজনে গত শুক্রবার বিকাল ৪টায় ৮দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর সদর ৩ আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী চৌধুরী নায়াব ইউসুফ।
বিশিষ্ট ব্যাংকার, সমাজসেবক ও সাদীপুর উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি নাজমুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে এ সময় জেলা কৃষক দলের সভাপতি রেজাউল ইসলাম, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ, আলিয়াবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার মৃধা, ফরিদপুর সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বেনজির আহমেদ তাবরিজ, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজওয়ান বিশ্বাস তরুণ, জেলা মহিলা দলের সভাপতি নাজরীন রহমান, টুর্নামেন্ট পরিচালক জহুরুল হক ঝন্টুসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় ‘মিয়া বাড়ির স্পোর্টিং ক্লাব’ বনাম ‘সাদীপুর জুনিয়র সুপার নাইন’ প্রতিদ্বন্দিতা করেন। মিয়া বাড়ি ১-০ গোলে মিয়া বাড়ি স্পোর্টিং ক্লাবকে পরাজিত করে ফাইনালে বিজয় হয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বর্তমান যুব সমাজকে ভয়ংকর মাদকের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই, আমরা চাই এই ধরনের আয়োজন প্রতিবছরই করা হোক, প্রতিটা ছেলে মেয়েরই পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চার প্রয়োজন। এত সুন্দর একটি আয়োজন করার জন্য তারা আয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
বিশ্বকাপ ফুটবল মানে আন্ডারডগের উঠে আসার গল্পও। ২০১৮ সালে সবচেয়ে কম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে বিশ্বকাপে এসে সবাইকে চমকে দিয়েছিল আইসল্যান্ড। সেসময় দেশটির জনসংখ্যা ছিল মাত্র ৩ লাখ ৫০ হাজার। এরপর কদিন আগে জনসংখ্যার হিসাবে দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের টিকিট কেটেছে কেপ ভার্দে, যাদের জনসংখ্যা ৫ লাখ ২৫ হাজারের কম।
সেই ধারাতে এবার বিশ্বকাপে টিকিট পাওয়ার দুয়ারে পৌঁছে গেছে কুরাসাও। কনক্যাকাফ অঞ্চলের এই দেশটি যদি শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করতে পারে, তবে তারা লিখবে নতুন এক ইতিহাস। কারণ কুরাসাওই তখন হবে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পাওয়া সবচেয়ে ছোট দেশ। কুরাসাওয়ের জনসংখ্যা মাত্র ১ লাখ ৫৬ হাজার এবং আয়তন মাত্র ৪৪৪ বর্গকিলোমিটার। এর আগে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে আয়তনের দিক থেকে সবচেয়ে ছোট দেশের স্বীকৃতি নিজেদের করে নিয়েছিল কেপ ভার্দে (৪০০০ বর্গকিলোমিটার)।
প্রথমবারের বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করার পথে শুক্রবার রাতে হ্যামিল্টনে বারমুডাকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে কুরাসাও। এখন বিশ্বকাপের চূড়ান্ত টিকিট পেতে আগামী বুধবার জ্যামাইকার বিপক্ষে একটি ড্র পেলেই চলবে দলটির।
কুরাসাও এর আগে আলোচনায় এসেছিল ২০২৩ সালের মার্চে। সেবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল তারা। সেই ম্যাচে লিওনেল মেসির হ্যাটট্রিকে আর্জেন্টিনা জিতেছিল ৭-০ গোলে। ম্যাচটিতে বড় ব্যবধানে হারলেও বিশ্বব্যাপী পরিচিতিও লাভ করে দেশটি। আর এবার তারা এখন আছে ইতিহাস গড়ার অপেক্ষায়।
কুরাসাও দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলার ঠিক উত্তরে, ক্যারিবিয়ান সাগরে অবস্থিত। তবে ভৌগোলিকভাবে দক্ষিণ আমেরিকার পাশে হলেও তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কনক্যাকাফ অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে। দেশটি মূলত দুটি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। একটি হলো কুরাসাও মূল দ্বীপ এবং অন্যটি জনবসতিহীন ‘লিটল কুরাসাও’।
কুরাসাও ১৮১৫ থেকে ১৯৫৪ পর্যন্ত কুরাসাও অ্যান্ড ডিপেনডিন্সিস কলোনির অংশ ছিল। এরপর ১৯৫৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত তারা ছিল নেদারল্যান্ডস এন্টিলিসের অংশ। ২০১০ সালের অক্টোবরে নেদারল্যান্ডস এন্টিলিসের বিলুপ্তির পর থেকে কুরাসাও রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে তারা মূলত কিংডম অব নেদারল্যান্ডসের অন্তর্গত স্বায়ত্তশাসিত একটি রাষ্ট্র। যেখানে তাদের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতির নিয়ন্ত্রণ মূলত ডাচদের হাতে। এখানে ডাচ, ইংরেজি ও পাপিয়ামেন্টো ভাষায় কথা বলা হয়।
কুরাসাওকে বিশ্বকাপের দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ার অন্যতম নায়ক ডিক অ্যাডভোকাট। যিনি এর আগে নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম রেঞ্জার্স ও সান্ডারল্যান্ডের মতো ক্লাবের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। জনসংখ্যা খুব কম হলেও কুরাসাও দলে কিন্তু শীর্ষ লিগে খেলা ফুটবলার রয়েছে। যেমন বারমুডার বিপক্ষে জোড়া গোল করা জর্ডি পাউলিনা খেলেছেন বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে।