যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর পর থেকেই লিওনের মেসির সঙ্গে জুড়ে গেছে একটি নাম—ইয়াসিন চুকো। মেসির সান্নিধ্য পেতে মাঝেমধ্যেই মাঠে ঢুকে পড়া ভক্তদের থামিয়ে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরই মধ্যে পরিচিতি পেয়েছেন দৃঢ় শারীরিক গঠনের এই দেহরক্ষী। তবে সেসব দৃশ্য এখন থেকে আর দেখা যাবে না।
মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) নিয়মবহির্ভূত হওয়ায় খেলা চলাকালে ইয়াসিনের মাঠে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে লিগ কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে তিনি শুধু মাঠের বাইরে থেকেই মেসির নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
এমএলএসের নিয়ম অনুযায়ী, খেলা চলাকালে খেলোয়াড়, কোচ ও রেফারিই কেবল মাঠে প্রবেশ করতে পারেন। তাছাড়া চুকোর হুটহাট মাঠে ঢুকে পড়ার বিষয়টি বিব্রতকর বলেও জানানো হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে নাখোশ চুকো। অনলাইনে ভিডিও বিষয়ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হাউস অফ হাইলাইটসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব ঘটনায় তিনি নিজে ‘সমস্যা নন’ বলে জানিয়েছেন।
তার কথায়, ‘ইউরোপে আমি সাত বছর কাজ করেছি। লিগ ১ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে আমার। ইউরোপে ওই ৭ বছরে মাত্র ৬ জন মাঠে প্রবেশ করে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে সেখানে গত ২০ মাসে ইতোমধ্যে ১৬ মাঠে ঢুকেছে। এটি একটি বড় সমস্যা।’
‘সমস্যা আসলে এখানকার, আমি নই। আমাকে মেসিকে সাহায্য করতে দিন।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘এমএলএস ও কনকাকাফ (ফুটবল) আমি ভালোবাসি, তবে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমি সহযোগিতা করতে পছন্দ করি। আমি হয়তো অনেকের চেয়ে ভালো নই, কিন্তু ইউরোপ থেকে আমার ব্যাপক অভিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা আমি মেনে নিয়েছি, কিন্তু একসঙ্গে আমরা আরও ভালো করতে পারতাম।’
তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাকে সরিয়ে স্বয়ং এমএলএস কর্তৃপক্ষ মাঠে মেসির নিরাপত্তার ভার নিয়েছে।
মেসির সঙ্গে কাটানো গত কয়েক মাসের ব্যবধানে নিজেকে শুধু মহাতারকার দেহরক্ষী নন, বরং তার চেয়ে বেশি কিছু বলে মনে করেন চুকো।
‘নিজেকে (মেসির) পরিবারের একজন বলে মনে হয় আমার। শুধু শারীরিকভাবেই তাকে রক্ষা করা আমার কাজ নয়, মানসিকভাবেও। সে (মেসি) আমাকে পুরোপুরি বিশ্বাস করে এবং আমার ওপর নির্ভরও করে। নিজের সমস্ত মনোযোগ আমি তার ওপর রাখার চেষ্টা করি।’
২০২৩ সালে পিএসজি ছেড়ে ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর চুকোকে নিজের দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োগ দেন লিওনেল মেসি। তারপর থেকে ফুটবলের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ এই খেলোয়াড়ের সঙ্গে আঁঠার মতো লেগে আছেন তিনি। এমনকি স্ত্রীর সঙ্গে আর্জেন্টাইন মায়েস্ত্রো যখন একাকি সময় কাটান, তখনও কাছাকাছি অবস্থান করতে দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ‘নেভি সিলের’ সাবেক সদস্য দাবি করা এই নিরাপত্তাকর্মীকে।
তায়কোয়ান্দো, বক্সিং ও মিক্সড মার্শাল আর্টে পারদর্শী ইয়াসিন শুধু মেসির নিরাপত্তাই নিশ্চিত করেন না, তার পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করে থাকেন। তার অধীনে ৫০ জনের একটি নিরাপত্তা দল কাজ করে, যারা মাঠে ও মাঠের বাইরে মেসি ও তার পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোনো বাঁধা নয় এ সত্যের জীবন্ত উদাহরণ হয়ে উঠেছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের কিশোরী চৈতী রানী দেব। সমস্ত প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছে ১৩ বছরের এই দৌড়বিদ। আগামী ৭ থেকে ১৪ ডিসেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫-এ অংশ নেবে চৈতী।
উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নের সাধারণ কৃষক সত্য দেব ও গৃহিণী পূর্ণিমা রানী দেবের চার মেয়ের মধ্যে সবচেয়ে ছোট চৈতী। জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও অধ্যবসায় তাকে এগিয়ে যেতে সাহস যুগিয়েছে। বর্তমানে সে উপজেলার ভুনবীর দশরথ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি, কিন্তু স্বপ্নের উচ্চতা অনেক বড়।
বাংলাদেশ জাতীয় প্যারালিম্পিক কমিটি (এনপিসি বাংলাদেশ)-এর ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এ প্রতিযোগিতায় ১০০ মিটার স্প্রিন্ট ইভেন্টে লড়বে চৈতী। সে পড়াশোনার পাশাপাশি নিয়মিত অনুশীলন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চের জন্য প্রস্তুত করছে।
শ্রীমঙ্গলের স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্স (এসএইচআই) এর প্রশিক্ষক দেব প্রসাদ শীল দৈনিক বাংলাকে বলেন, দীর্ঘদিনের প্রস্তুতির ফল এটি। জাতীয় পর্যায়ে সাফল্য অর্জন করে চৈতী আন্তর্জাতিক সুযোগ পেয়েছে। সামনে সে ঢাকায় ক্যাম্পে অনুশীলন করবে। রাষ্ট্র ও সমাজ পাশে দাঁড়ালে চৈতী আরও বড় অর্জন এনে দিতে পারবে।
এসএইচআই প্রতিষ্ঠাতা শারমিন ফারহানা চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে বলেন, শুরুতে চৈতী ও তার পরিবার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। পরবর্তীতে ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ ও উৎসাহে আজ আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছে সে। এটি শুধু চৈতীর অর্জন নয়, এই অঞ্চলের মেয়েদের জন্য এটি বড় অনুপ্রেরণা।
তিনি আরও বলেন, চৈতী জিতুক বা না জিতুক এই অংশগ্রহণই তার জীবনের বড় সাফল্য। সে প্রমাণ করে দেবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোনো সীমাবদ্ধতা নয়, সুযোগ ও সহযোগিতা পেলে তারাও দেশকে গর্বিত করতে পারে।
নিজের অনুভূতি জানিয়ে চৈতী দৈনিক বাংলাকে বলেন, এশিয়ার ৪৫টি দেশের দেড় হাজারের মতো ক্রীড়াবিদ অংশ নেবেন এই প্রতিযোগিতায়। সেখানে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারায় আমি গর্বিত। আমি দেশকে সবার সামনে মর্যাদার সঙ্গে তুলে ধরতে চাই।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) আবারও ফিরছে খেলোয়াড়দের নিলাম ব্যবস্থা। প্রথম দুই আসরে নিলাম হলেও এরপর থেকে প্লেয়ার্স ড্রাফটের মাধ্যমে দল গঠন করা হতো।
আসন্ন মৌসুমে আবারও সেই পুরোনো নিয়মে দল সাজাবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। নিলামে একে একে খেলোয়াড়দের নাম তোলা হবে, আর কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি চাইলে সেই খেলোয়াড়ের জন্য বিড করবে। একাধিক দল আগ্রহ দেখালে বিডিং চলবে যতক্ষণ না কোনো দল ‘সোল্ড’ ঘোষণা শোনে সেই খেলোয়াড়কে দলে নিতে পারে। দেশি ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে পারিশ্রমিক নির্ধারণ করা হয়েছে ছয়টি ক্যাটাগরিতে। এ থেকে এফ পর্যন্ত, সর্বোচ্চ ভিত্তিমূল্য ৫০ লাখ এবং সর্বনিম্ন ১১ লাখ টাকা।
প্রতি বিডে খেলোয়াড়ের দাম ক্যাটাগরি অনুযায়ী ২০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়বে। বিদেশিদের ক্ষেত্রেও থাকবে পাঁচটি ক্যাটাগরি। ‘এ’ থেকে ‘ই’ পর্যন্ত, সর্বোচ্চ ভিত্তিমূল্য ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার এবং সর্বনিম্ন ১০ হাজার ডলার। প্রতি বিডে দাম বাড়বে ১ থেকে ৫ হাজার ডলার পর্যন্ত। প্রতিটি দলকে ন্যূনতম ১৩ জন এবং সর্বোচ্চ ১৬ জন দেশি খেলোয়াড় নিতে হবে নিলাম থেকে। খরচের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
বিদেশিদের জন্য সর্বোচ্চ ব্যয় সীমা সাড়ে ৩ লাখ ডলার, যার মধ্যে দুজন ডিরেক্ট সাইনিংয়ের পারিশ্রমিকও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। নিলামের আগে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো দুজন দেশি ও দুজন বিদেশি ক্রিকেটারকে সরাসরি দলে টানতে পারবে।
একাদশে ন্যূনতম ২ এবং সর্বোচ্চ ৪ জন বিদেশি খেলানো যাবে। চুক্তির সময়ই খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকের ২৫ শতাংশ দিতে হবে। লিগ পর্বের আগে ৫০ শতাংশ, বাকি ২৫ শতাংশ টুর্নামেন্ট শেষের ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
নিলাম শেষে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দলগুলোকে নিজেদের স্কোয়াড জমা দিতে হবে। কোনো খেলোয়াড় দলভুক্ত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফিটনেস টেস্টে পাস করতে হবে এবং অনলাইনে নিবন্ধন সম্পন্ন করেই অংশ নিতে হবে।
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের আশা, নিলাম ব্যবস্থার ফিরিয়ে আনা খেলোয়াড়দের প্রকৃত বাজারমূল্য নির্ধারণ ও ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর প্রতিযোগিতা আরও রোমাঞ্চকর করে তুলবে।
‘গৌরবের কোর্টে শত বছর’ এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে এবং নওগাঁ টেনিস ক্লাবের শতবর্ষ উপলক্ষে নওগাঁয় শুরু হতে যাচ্ছে জেলা প্রশাসক টেনিস টুর্নামেন্ট-২০২৫। সোমবার বিকেলে নওগাঁ টেনিস ক্লাব প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৯২৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় নওগাঁ টেনিস ক্লাব। এরপর থেকে দেশের টেনিস খেলার জগতে নওগাঁ টেনিস ক্লাবের সুনাম এখনো অক্ষুণ্ণ রয়েছে। নওগাঁর টেনিস খেলার সুনামকে দেশ-বিদেশের মাটিতে পৌঁছে দিতে এবং নতুন নতুন টেনিস খেলোয়াড়দের তৈরি করতে নওগাঁ টেনিস ক্লাব কাজ করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় নওগাঁর টেনিস ক্লাব ও টেনিস খেলাকে নওগাঁর প্রতিটি খেলাপ্রেমী মানুষের মাঝে পৌঁছে দিতে জেলা প্রশাসকের নিজস্ব উদ্যোগে এমন টুর্নামেন্টের আয়োজন করা।
ইতোমধ্যেই টুর্নামেন্টের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া টেনিস ক্লাবের শতবর্ষ উপলক্ষে একটি নতুন কোর্ট নির্মাণকরাসহ মোট তিনটি কোর্টকে রঙিন করা এবং পুরো মাঠকে সজ্জিত করার কাজও শেষের দিকে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় আগামী ১২ নভেম্বর বিকেল ৪টায় নওগাঁ টেনিস ক্লাব মাঠে এই টুর্নামেন্ট শুরু হবে। টুর্নামেন্টে দেশের বিখ্যাত ঢাকা অফিসার্স ক্লাব ও নওগাঁ টেনিস ক্লাব দলসহ বিভিন্ন জেলার মোট ২১টি দল অংশগ্রহণ করবে।
টুর্নামেন্টের প্রতিটি খেলা যেকোনো দর্শক শৃঙ্খলা বজায় রেখে বিনা টিকেটে উপভোগ করতে পারবেন। আগামী ১৫ নভেম্বর বিকেলে একই প্রাঙ্গণে টুর্নামেন্টের সমাপনি খেলা অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্যগুলো তুলে ধরেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও নওগাঁ টেনিস ক্লাবের সহসভাপতি এবং টুর্নামেন্ট ডিরেক্টর সাদিয়া আফরিন।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন নওগাঁ টেনিস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তারিফ মোহাম্মদ আপন, টেনিস ক্লাবের সহসভাপতি কাজী মো. ইদ্রিস, কিবরিয়া আখতারুজ্জামান, সহসাধারণ সম্পাদক মো মশিউর রহমান, সাবেক সহসভাপতি প্রফেসর মো. শরিফুল ইসলাম খাঁন। এছাড়া ক্লাবের অন্যান্য সদস্য, জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মী, সুধীজনরা উপস্থিত ছিলেন।
তরুণ প্রজন্মকে খেলাধুলায় সম্পৃক্ত রাখার জন্য লায়ন্স ক্লাব অব ফরিদপুর সিটির উদ্যোগে ভাটি লক্ষীপুর যুব সমাজ ও লায়ন্স ক্লাব অব ফরিদপুর সিটির সেক্রেটারি লায়ন মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের আয়োজনে শহরের ভাটি লক্ষ্মীপুর দেওয়ান সৈয়দ বালুর মাঠে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ২ দিনব্যাপী ৯ দলীয় সিক্সার সাইট শর্ট-পিস নাইট ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৮ ও ৯ নভেম্বর দুই দিনব্যাপী এই ক্রিকেট টুর্নামেন্টে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উদ্বোধন ও ফাইনাল খেলায় চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন লায়ন্স ক্লাব অব ফরিদপুর সিটির প্রেসিডেন্ট লায়ন অনু বিনতে হাকিম।
বিশিষ্ট সমাজসেবক সৈয়দ এখলাসুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মো. আশরাফ হোসেনের সঞ্চালনায় ফাইনাল খেলায় লায়ন মহসিন শরীফ, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল, লায়ন শহিদুল ইসলাম, লায়ন শামসুল আলম, লায়ন এসএম দুলাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহজাহান মিয়া, শারিয়ার কাদির রুবেল, ইঞ্জিনিয়ার জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, সুপ্তি ইসলামসহ এলাকার সম্মানীয় ব্যক্তিরা, যুব সমাজ ও এক ঝাঁক ক্রিয়া প্রেমী তরুণ উপস্থিত ছিলেন।
টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় লায়ন মো. সাইফুল ইসলাম ফাইটারস বনাম টিম সেভেন ভাটিলক্ষীপুর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। টিম সেভেন ৬ ওভারে ৬৪ রানের টার্গেট দিলে সাইফুল ফাইটারস ৫ ওভার ৩ বলে টিম সেভেনকে পরাজিত করে বিজয়ী হন।
খেলায় ম্যান অব দ্য সিরিজ নির্জন,ম্যান অব দা ম্যাচ আসিফ, সেরা বলার অর্ক কে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
টেস্ট ক্রিকেটে ২৫ বছর হলো বাংলাদেশের। পথচলা শুরু হয়েছিল সেরাদের কাতারে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে, কিন্তু এখন বাস্তবতা কী? রজতজয়ন্তীতে সাবেক অধিনায়কেরা ফিরে দেখছেন অতীত, বলছেন বর্তমানের কথা, আর ভাবছেন ভবিষ্যৎ নিয়ে- অল্পতেই সন্তুষ্ট হয়, অল্পতেই হৃদয় ভাঙে আমরা যখন প্রথম টেস্ট খেলেছিলাম, স্বপ্ন দেখেছিলাম টেস্টে সেরা চার দলের একটি হব। সেই আশা পূরণ হয়নি, এটা বলা বাহুল্য। অন্য টেস্টখেলুড়ে দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশ এগোতে পারেনি।
টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার সময় নিজেদের কোন মাঠই ছিল না। অনুশীলনের সুযোগ-সুবিধাও ছিল না। এখন অনেক মাঠ, খেলোয়াড়েরা সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। আর্থিকভাবেও তারা স্বাবলম্বী। কিন্তু আমরা ওই পর্যায়ে যেতে পারিনি।
আরও ১০-১৫ বছর আগে কম সুযোগ-সুবিধা নিয়েও সাকিবের মানের খেলোয়াড় বের হয়েছে। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের আরেকটা সমস্যা হলো- ওরা অল্পতেই সন্তুষ্ট হয়ে যায়, আবার অল্পতেই তাদের হৃদয় ভেঙে যায় ব্যক্তিগতভাবে অনেকের অনেক অর্জন- সাকিব, তামিম, মাশরাফি, আশরাফুল, মুশফিক, মুমিনুল। মুশফিক তো সব ঠিক থাকলে ১০০ টেস্টও খেলবে। কিন্তু দল হিসেবে আমরা সাফল্য পাইনি।
এই ব্যর্থতা আমাদের সবার। সব জায়গা থেকে যে সাহায্য আসা দরকার ছিল, তা আসেনি। ক্রিকেট বোর্ড উন্নয়ন করতে পারত, এটা ঠিক। কিন্তু জেলার খেলায় বোর্ডের নিয়ন্ত্রণ নেই। ভালো সুযোগ-সুবিধা, ভালো উইকেটে খেলা, নিয়মিত লিগ আয়োজন এসবের ঘাটতি ছিল। ঘরোয়া ক্রিকেটের মান এখনো অনেক কম।
ভালো পর্যায়ে যাওয়ার স্বপ্ন খেলোয়াড়দের মধ্যে ছিল না। তারা হয়তো বলবেন, সুযোগ-সুবিধা নেই বলে ভালো খেলোয়াড় হতে পারেনি। কিন্তু আরও ১০-১৫ বছর আগে কম সুযোগ-সুবিধা নিয়েও সাকিবের মানের খেলোয়াড় বের হয়েছে। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের আরেকটা সমস্যা হলো- ওরা অল্পতেই সন্তুষ্ট হয়ে যায়, আবার অল্পতেই তাদের হৃদয় ভেঙে যায়।
২৫ বছর চলে গেল! এত বছরে টেস্ট ক্রিকেট কোথায় থাকা উচিত ছিল, তা নিয়ে প্রায়ই ভাবি। বাংলাদেশে ক্রিকেটের যে জনপ্রিয়তা, সেটা আমরা কাজে লাগাতে পারিনি।
আমাদের টেস্ট ইতিহাসে অন্তত চার প্রজন্ম পার হয়েছে। অভিষেক টেস্টেই বুলবুল ভাই (আমিনুল ইসলাম) সেঞ্চুরি করেছে। আশরাফুল এসেই দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছে। তখন অনেক সিনিয়রকে টপকে টেস্টে চলে এসেছিল সে। পরে এসেছে মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক। কিন্তু তাদের পরের প্রজন্মের কেউ আগের কাউকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি।
কেউ যদি চীনে গিয়ে ব্রায়ান লারা হতে চায়, পারবে? পারবে না। কারণ, ওই সংস্কৃতি নেই। বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতি এমন যে এখানে চাইলেও কেউ বিরাট কোহলি হতে পারবে না।
খালেদ মাসুদ, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক- ভারত, অস্ট্রেলিয়া কিংবা ইংল্যান্ড এখন এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যেখান থেকে বেড়ে ওঠার সুযোগ কম। হয়তো কিছু ইম্প্রোভাইজ বা টেকটিক্যাল পরিবর্তন আসবে। কিন্তু বাংলাদেশের তো বেড়ে ওঠার অনেক জায়গা আছে। ভুল পরিকল্পনা, ভুল মানুষ আর ভুল সিস্টেমের কারণে আমরা পিছিয়ে গেছি। অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি, খেলাধুলাও সেভাবে নেই।
খেলোয়াড়দের দায়ও আছে। কিন্তু কেউ যদি চীনে গিয়ে ব্রায়ান লারা হতে চায়, পারবে? পারবে না। কারণ, ওই সংস্কৃতি নেই। বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতি এমন যে এখানে চাইলেও কেউ বিরাট কোহলি হতে পারবে না।
আমাদের কাছে মিরপুরই সব। তিন বছর আগে ভারতের রায়পুরে খেলতে গিয়েছিলাম। ওখানে আইপিএলও হয় না। কিন্তু ওখানে যে সুযোগ-সুবিধা, আমাদের তা–ও নেই। পরিকল্পনা আর যোগ্য ব্যক্তিত্বের অভাবেই ক্রিকেটটা এগোয়নি।
এত বছর পর আমাদের আরও ভালো জায়গায় থাকা উচিত ছিল, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। টেস্ট দল হিসেবে আমরা এখনো প্রতিষ্ঠিত হতে পারিনি। ধারাবাহিকতাও নেই। ব্যাটসম্যানদের বড় রান করার অভ্যাস তৈরি হয়নি। অন্য টেস্টখেলুড়ে দেশের ব্যাটসম্যানরা বড় ইনিংস খেলতে চায়। আমাদের ব্যাটসম্যানরা যে চায় না, তা নয়। কিন্তু অভ্যাসটা তৈরি হয়নি।
কারণ, কেউ টেস্ট খেলা শুরু করলেই ঘরোয়া ক্রিকেটে আর তাকে দেখা যায় না। আমরা ফিটনেস বলতে শুধু বুঝি জিমে গিয়ে ফিট হওয়া। কিন্তু বড় ইনিংস খেলতে গেলে মানসিক ফিটনেস দরকার। এ জন্য ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা জরুরি।
আধুনিক ক্রিকেটে সাদা বলে কষ্ট কম, টাকা বেশি। এ জন্য সবাই সাদা বলে ঝুঁকতে চায়। কিন্তু কোচদের দায়িত্ব খেলোয়াড়দের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া- সাদা বল খেলে উন্নতি হবে না, তোমাকে লাল বলেই খেলতে হবে- হাবিবুল বাশার, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক বড় ইনিংস খেলতে গেলে সহজ সময় আসে, কঠিন সময়ও আসে। কখনো ক্লান্ত লাগে। সেশনের পর সেশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। এ জন্য অনেক পরিশ্রম দরকার। বেশির ভাগই সেটা করতে চায় না। বড় ইনিংস খেলার স্বপ্ন আমাদের ব্যাটসম্যানরা দেখে কি না, জানি না। কিন্তু যখন রান করব, আমি যেন একশ করে খুশি না হয়ে যাই, এই সীমাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
শেষে একটা চাওয়ার কথা বলি। আধুনিক ক্রিকেটে সাদা বলে কষ্ট কম, টাকা বেশি। এজন্য সবাই সাদা বলে ঝুঁকতে চায়। কিন্তু কোচদের দায়িত্ব খেলোয়াড়দের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া- সাদা বল খেলে উন্নতি হবে না, তোমাকে লাল বলেই খেলতে হবে।
এএফসি এশিয়ান কাপের মূল পর্বে ওঠার লড়াই থেকে ছিটকে পড়েছে বাংলাদেশ, সম্ভাবনা নেই ভারতেরও। স্রেফ নিয়মরক্ষার হলেও আদতে এটি বাংলাদেশ-ভারত মর্যাদার লড়াই।
এ কারণেই ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে ১৮ নভেম্বরের ম্যাচটি ঘিরে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে আবারও উন্মাদনা শুরু হয়েছে। টিকিট নিয়েও রীতিমতো হাহাকার অবস্থা।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) টিকিটের দাম জানিয়েছে। সোমবার দুপুর ২টা থেকে টিকি বিক্রি শুরু হয়েছে। ছয় ক্যাটাগরির টিকিট পাওয়ার কথা ইভেন্ট টিকেটিং প্ল্যাটফর্ম Quicket–এ।
কিন্তু ৬ মিনিটেই সব টিকিট শেষ হয়ে গেছে! এ ব্যাপারে বাফুফের কম্পিটিশন কমিটির চেয়ারম্যান গোলাম গাউস বলেছেন, ‘ছয় মিনিটের মধ্যে সাধারণ গ্যালারির সব টিকিট শেষ হয়ে যায়। এখন গ্রাহকরা পেমেন্ট করছে। অর্ধেকের বেশি পেমেন্টও হয়ে গেছে। এখন শুধু রেড বক্স, হসপিটালিটি বক্সের টিকিট রয়েছে।’
মুহূ্তেই টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফুটবলপ্রেমীরা। Quicket–এর ওয়েবসাইটে SOLD OUT লেখা দেখে কেউ কেউ টিকিট বিক্রিতে অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন।
সবচেয়ে কম মূল্যের টিকিট ধরা হয়েছে গ্যালারির; দাম ৫০০ টাকা। ক্লাব হাউস ২ ও ভিআইপি বক্স ৩-এর একেকটা টিকিটের দাম ৩ হাজার টাকা করে।
ভিআইপি বক্স ২-এ বসে হামজা-শমিত-মোরছালিনদের খেলা দেখতে চাইলে লাগবে ৪ হাজার টাকা। এ ছাড়া ক্লাব হাউস ১ ও রেড বক্সের দাম ধরা হয়েছে যথাক্রমে ৫ হাজার ও ৬ হাজার টাকা।
করপোরেট বক্স ও স্কাই বক্সের টিকিটের দাম জানায়নি বাফুফে। স্টেডিয়ামের এই দুই জায়গা থেকে খেলা দেখতে চাইলে [email protected]—এই ইমেইল ঠিকানায় যোগাযোগ করতে হবে।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে “উপজেলা প্রশাসন কাপ আন্তঃইউনিয়ন ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৫”-এর শুভ উদ্বোধন। শনিবার বিকেলে উপজেলার ড. কর্ণেল অলি আহমেদ মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার মং এছেন, লোহাগাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহাজাদা মিনহাজ, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সহ হাজারো দর্শক ও ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ।
উদ্বোধনী খেলায় মুখোমুখি হয় বড়হাতিয়া ইউনিয়ন বনাম চরম্বা ইউনিয়ন ফুটবল দল। খেলার শুরু থেকেই দুই দলই দর্শকদের মাতিয়ে রাখে চমৎকার পাস বিনিময় ও গোলের সুযোগ তৈরি করে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে ম্যাচটি ৩-২ গোলে বড়হাতিয়া ইউনিয়ন জয় লাভ করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, “ক্রীড়া শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি মানুষের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে অসামান্য ভূমিকা রাখে। নিয়মিত খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম নিজেদের শৃঙ্খলাবোধ, দলগত চেতনা ও নেতৃত্বের গুণাবলি বিকশিত করতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, ক্রীড়া তরুণ সমাজকে মাদক, সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কার্যক্রম থেকে দূরে রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। নতুন প্রজন্মকে ক্রীড়ামুখী ও ইতিবাচক মনোভাবসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে। এ ধরনের টুর্নামেন্ট শুধু খেলোয়াড়দের প্রতিভা বিকাশের সুযোগই তৈরি করে না, বরং পারস্পরিক সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ববোধ ও ঐক্য বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে।”
ইউএনও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে খেলা উপভোগ করার জন্য উপস্থিত দর্শক, খেলোয়াড়, আয়োজক কমিটি ও সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরো বলেন, “আজকের খেলায় যে শৃঙ্খলা ও সৌহার্দ্যের পরিবেশ বজায় ছিল, তা লোহাগাড়াবাসীর ক্রীড়াপ্রেম ও সচেতনতার প্রতিফলন। এ ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশাবাদী।”
এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, ওশেনিয়া- এই চার মহাদেশের কিছু দেশেই ক্রিকেট আবদ্ধ ছিল বহুদিন। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হিসেবে রাখলে আমেরিকাতেও ছিল, তবে মহাদেশটির মূল ভূখণ্ডে ক্রিকেট ছড়িয়ে পড়ছে বেশি দিন হয়নি।
তবে এতকিছুর ভিড়ে দক্ষিণ আমেরিকায় ক্রিকেটের চর্চা হলেও কোনো বড় টুর্নামেন্টের আয়োজন হয়নি এতদিন। এবার সেখানেও ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দেওয়ার বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইসিসি।
যদিও সে সিদ্ধান্ত শুধু দক্ষিণ আমেরিকাকে কেন্দ্র করে নয়। দুই আমেরিকাকে নিয়ে হওয়া অ্যামেরিকান গেমসে এবার প্রথমবারের মতো যুক্ত হবে ক্রিকেট। যার ফলে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা আর নেইমারের ব্রাজিলেও ক্রিকেট আরও ভালোভাবে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রকল্প বহু আগে থেকেই শুরু হয়েছে। এশিয়ান গেমসে ক্রিকেট হয়েছে, আফ্রিকান গেমসেও যোগ হয়েছে ২০২৩ সালে। লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক দিয়ে প্রায় ১২৮ বছর পর ক্রিকেট ফিরেছে বৈশ্বিক ক্রীড়ার সবচেয়ে বড় আসরে। এবার লাতিন আমেরিকায় প্যান অ্যাম গেমসেও নাম লেখাতে চলেছে ক্রিকেট। আগামী ২০২৭ সালের আসরে প্রথমবারের মতো এই গেমসে যোগ দেবে ক্রিকেট।
সবশেষ আইসিসি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও এই সভায় আরও কিছু সিদ্ধান্ত এসেছে মাল্টি স্পোর্টস গ্লোবাল ইভেন্টে খেলা নিয়ে।
২০২৮ সালের অলিম্পিকে পুরুষ ও নারী- দুই বিভাগেই অনুষ্ঠিত হবে ক্রিকেট প্রতিযোগিতা। আইসিসি জানিয়েছে, মোট ২৮টি ম্যাচ হবে এই আসরে। প্রতিটি বিভাগে থাকবে ছয়টি দল।
ছয় দলের মধ্যে পাঁচটি দল আসবে পাঁচটি অঞ্চলের শীর্ষস্থানীয় দল থেক-আফ্রিকা, আমেরিকা, এশিয়া, ইউরোপ ও ওশেনিয়া। স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নেবে। ষষ্ঠ দলটি নির্ধারিত হবে বাছাইপর্বের মাধ্যমে। তবে সেই বাছাই টুর্নামেন্টের বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি।
ক্রিকেটের এই ঐতিহাসিক ইভেন্ট শুরু হবে ২০২৮ সালের ১২ জুলাই। ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে লস অ্যাঞ্জেলেস শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিশেষভাবে তৈরি ফেয়ারগ্রাউন্ডস স্টেডিয়ামে।
এর আগে ২০২৬ সালে জাপানের আইচি-নাগোয়া এশিয়ান গেমসে, ২০২৭ সালে মিসরের কায়রোয় আফ্রিকান গেমসে এবং একই বছরে পেরুর লিমায় পান-আম গেমসেও দেখা যাবে ক্রিকেটকে। এখানেই শেষ নয়। ২০৩২ ব্রিসবেন অলিম্পিক গেমসেও ক্রিকেটকে যোগ করার আলোচনা চলছে। আইসিসির প্রধান নির্বাহী সঞ্জোগ গুপ্তা জানিয়েছেন, ২০৩২ সালের ব্রিসবেন অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্তির বিষয়েও আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ব্রিসবেন ২০৩২ আয়োজকদের সঙ্গে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্তি নিয়ে অর্থবহ আলোচনা করেছি।’ আইসিসির চেয়ারম্যান জয় শাহ ও সঞ্জোগ গুপ্তা সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের লুজান শহরে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি), এলএ-২০২৮ এবং ব্রিসবেন-২০৩২ আয়োজকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে ইভেন্ট আয়োজন, খেলার ফরম্যাট এবং যোগ্যতা নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হয়।
বড় জয় পেয়ে ওয়ার্ল্ড আর্চারি এশিয়ার সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ। ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে সংস্থাটির কংগ্রেস ও নির্বাচন। সেখানেই ইতিহাস গড়লেন কাজী রাজীব- এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি বসলেন ওয়ার্ল্ড আর্চারি এশিয়ার শীর্ষ আসনে। সভাপতি পদে কাজী রাজীব ২৯-৯ ভোটে হারিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার থমাস হানকে।
কাজী রাজীব উদ্দীন বিদায়ী কমিটির সহসভাপতিও ছিলেন। তার হাত ধরে দুই যুগ আগে বাংলাদেশে আর্চারি খেলার যাত্রা শুরু হয়। ধীরে ধীরে বাংলাদেশের আর্চারি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জায়গা করে নেয়। তার উদ্যোগেই এবার তৃতীয়বারের মতো ঢাকায় বসেছে এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপের আসর। টুর্নামেন্টটির স্থানীয় আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যানও তিনি।
সুহাইল সাত্তারের বয়স ৫০ বছর। তার ছেলে ইয়াহিয়ার বয়স মাত্র ১৭। বাবা-ছেলে দুজন মিলে গত বৃহস্পতিবার লিখেছেন ইতিহাস। সেই দিনই তারা হয়ে যান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম একসঙ্গে খেলা বাবা-ছেলে জুটি।
ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে স্বাগতিকদের বিপক্ষে তিমুর–লেস্তের হয়ে মাঠে নামেন তারা। দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার ছোট এ দেশটি এ বছরই আইসিসির সহযোগী সদস্যপদ পেয়েছে। তাই ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল তাদের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ফলাফলটা সুখকর নয়- তিমুর-লেস্তে হেরেছে ১০ উইকেটে। কিন্তু ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছেন সুহাইল ও ইয়াহিয়া। ভবিষ্যতে হয়তো আরও বাবা–ছেলেকে এক দলে খেলতে দেখা যাবে, তবে ‘প্রথম’ হয়ে থাকার সৌভাগ্য তো একবারই আসে।
তবে শুধু পুরুষ ক্রিকেট নয়, মেয়েদের ক্রিকেটেও আগেই এমন এক নজির গড়েছেন মা-মেয়ে। সুইজারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দলের ৪৫ বছর বয়সি মেট্টি ফার্নান্দেজ ও তার ১৭ বছর বয়সি মেয়ে নায়না মেট্টি সাজু এ বছরের শুরুতে খেলেছেন একসঙ্গে ছয়টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
বাবা-ছেলে একসঙ্গে কিংবা একে অপরের বিপক্ষে খেলার নজির অবশ্য আগেও দেখা গেছে ঘরোয়া ক্রিকেটে। কিংবদন্তি শিবনারায়ণ চন্দরপল ও তার ছেলে তেজনারায়ণ চন্দরপল গায়ানার হয়ে খেলেছেন ১১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ। ২০১৪ সালে উইন্ডওয়ার্ড আইল্যান্ডসের বিপক্ষে এক ম্যাচে অধিনায়ক বাবার অধীনে খেলেছিলেন ২৯ বছর বয়সি তেজনারায়ণ।
গত জুলাইয়ে আফগানিস্তানের শপাগিজা ক্রিকেট লিগের ফাইনালে আবার মুখোমুখি হন এক বাবা ও ছেলে- সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী ও তার ছেলে হাসান ইশাখিল। নবীর দল আইনাক নাইটসকে ৮ উইকেটে হারানোর পথে আমো শার্কসের হয়ে ৩৪ বলে ৫০ রানে অপরাজিত ছিলেন হাসান।
গত বৃহস্পতিবার বালিতে অনুষ্ঠিত সেই ঐতিহাসিক ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৬১ রানে গুটিয়ে যায় তিমুর–লেস্তে। ম্যাচে সুহাইল ও ইয়াহিয়া কিছুক্ষণ একসঙ্গে ব্যাটও করেছেন। ইন্দোনেশিয়া মাত্র চার ওভারেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে।
পরে একই সিরিজে আরও দুটি ম্যাচ খেলেও একই ব্যবধানে হেরেছে তিমুর-লেস্তে। মানে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচেই ১০ উইকেটে হারতে হয়েছে তাদের।
লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক ২০২৮-এ ফিরছে ক্রিকেট। তবে সেই আনন্দ ভাগ করে নিতে পারছে না বাংলাদেশ, পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দল।
দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত বোর্ড মিটিং শেষে গত শুক্রবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) জানায়, অলিম্পিকে পুরুষ ও নারী বিভাগে ছয়টি করে দল অংশ নেবে। তবে এবারের আসরে দল বাছাই হবে না আইসিসির টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে।
বরং প্রতিটি মহাদেশ থেকে শীর্ষ দলগুলো সরাসরি সুযোগ পাবে, আর ষষ্ঠ দল নির্ধারিত হবে একটি গ্লোবাল কোয়ালিফায়ারের মাধ্যমে।
এই নিয়ম অনুযায়ী, এশিয়া থেকে জায়গা প্রায় নিশ্চিত ভারতের। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বর্তমানে ভারতই এশিয়ার সেরা দল। ফলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান-সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে যারা পিছিয়ে, তারা বাদ পড়তে পারে বা কঠিন বাছাইপর্ব খেলতে হতে পারে।
আইসিসির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বোর্ড আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) ও লস অ্যাঞ্জেলেস ২০২৮ গেমসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। লস অ্যাঞ্জেলেসে পুরুষ ও নারী উভয় বিভাগে ছয়টি করে দল অংশ নেবে, যেখানে মোট ২৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।’
আয়োজক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ পেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আছে। গ্লোবাল কোয়ালিফায়ার-সংক্রান্ত বিস্তারিত জানানো হবে শিগগিরই। লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শুরু হবে আগামী ২০২৮ সালের ১২ জুলাই।
ছেলেদের ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজক ভারত ও শ্রীলঙ্কা। ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোর জন্য আহমেদাবাদ, দিল্লি, কলকাতা, চেন্নাই ও মুম্বাইকে ভেন্যু হিসেবে চূড়ান্ত করেছে আইসিসি। শ্রীলঙ্কায় খেলা হবে তিনটি ভেন্যুতে। এর মধ্যে দুটি কলম্বো ও পাল্লেকেল্লে।
আগামী বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ৮ মার্চ আহমেদাবাদের ফাইনাল দিয়ে শেষ হবে এই টুর্নামেন্ট। ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সূচি প্রকাশ করতে পারে আইসিসি। ক্রিকেটবিষয়ক পোর্টাল ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, অংশগ্রহণকারী বেশির ভাগ দল আইসিসির কাছ থেকে বিশ্বকাপের গ্রুপিং ও সূচি হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় আছে। ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি এই টুর্নামেন্টের টিকিট বণ্টন নিয়েও এখনো কিছু জানায়নি।
পূর্বের সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী, পাকিস্তান তাদের সব ম্যাচ খেলবে শ্রীলঙ্কায়। এই চুক্তি হয়েছে বিসিসিআই ও পিসিবির মধ্যে- যাতে দুদেশ একে অপরের আয়োজিত বহুজাতিক টুর্নামেন্টে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলে। পাকিস্তান যদি আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে, তাহলে ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে শ্রীলঙ্কায়।
২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফরম্যাট ২০২৪ সালের সংস্করণের মতোই হবে। ২০টি দলকে চারটি গ্রুপে ভাগ করা হবে, প্রতিটি গ্রুপে পাঁচটি করে দল। প্রতিটি দল একবার করে অন্য দলের সঙ্গে খেলবে।
প্রতিটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল উঠবে সুপার এইটে। সেখানে দুটি গ্রুপে বিভক্ত হবে চারটি করে দল। সুপার এইটে দুটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল খেলবে সেমিফাইনালে।
আয়োজক দেশ ভারত ও শ্রীলঙ্কার বাইরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শীর্ষ সাত দল- আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে আগামী বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা তিনটি দল- নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ড।
আমেরিকাস অঞ্চলের বাছাইপর্ব থেকে আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে কানাডা। ইউরোপিয়ান বাছাইপর্ব থেকে এই বিশ্বকাপে খেলার টিকিট কেটেছে নেদারল্যান্ডস ও ইতালি। এবারই প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নেবে ইতালি।
আফ্রিকান অঞ্চলের বাছাই থেকে বিশ্বকাপে খেলার টিকিট পেয়েছে জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়া। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের বাছাই পেরিয়ে নেপাল, ওমান ও আরব আমিরাত আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার টিকিট কেটেছে।
২০২৩ সাল থেকে লিওনেল মেসির বসবাস যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। সেখানে ইন্টার মিয়ামিতে খেলছেন, থাকছেন মিয়ামিতে। এবার সেই শহরের চাবি নিজের হাতে পেলেন মেসি। তার হাতে এই চাবি তুলে দেন খোদ মিয়ামির মেয়র ফ্রান্সিস সুয়ারেজ।
তবে এই চাবি অবশ্য আক্ষরিক নয়। প্রতীকী একটি চাবি তুলে দেওয়া হয় তার হাতে। মূলত তাকে সম্মাননা দিতেই এ অভিনব পন্থা অবলম্বন করে মিয়ামি কর্তৃপক্ষ।
ইন্টার মিয়ামির অন্যতম মালিক জর্জ মাস মঞ্চে উঠে মেসির হাতে প্রতীকী ‘চাবি’ তুলে দেন। তিনি বলেন, ‘এই শহরের মানুষের হৃদয় তুমি জয় করেছো। এটি আমাদের তরফ থেকে ছোট্ট এক ভালোবাসার উপহার।’ মেসি আবেগভরে বলেন, ‘আমি সত্যিই সম্মানিত বোধ করছি। এটি আমার জন্য এক বড় সম্মান।’
মিয়ামির কেসিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে মেসি গাঢ় ধূসর স্যুট পরে ছিলেন। দর্শকরা তার প্রতিটি উত্তরের ফাঁকে নাম ধরে চিৎকার করছিলেন।
আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো যৌথভাবে আয়োজন করবে বিশ্বকাপ। সে বিশ্বকাপ নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। তার কথা, ‘আমি মনে করি ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। এবারও এটি অসাধারণ কিছুই হবে। আমি মনে করি এটি যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবলের বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়। আশা করি সবাই এ সুযোগটা কাজে লাগাবে।’