শুরুতেই চমক! মরগান ফ্রিম্যান হাজির হলেন। বন্ধুত্বের বার্তা ছড়ালেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অবশ্য আগেই শুরু হয়ে গেছে। ঘড়ির কাটায় বাংলাদেশ সময় ৮টা ৪২ মিনিটে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের আলোকসজ্জা এরই মধ্যে মুগ্ধ করেছে।
Ghanim Al Muftah recites from the Holy Quran at the start of the #FIFAWorldCup #Qatar2022 opening ceremony @g_almuftah pic.twitter.com/qRzZumgix1
— Marsal Qatar English (@MarsalQatar_EN) November 20, 2022
মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম বিশ্বকাপ। তাই আরব দেশগুলোর শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাদের বরণ করে উদ্বোধনের ঘোষণা দেন কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল তাহনি।
“From Qatar and the Arab world, we welcome the world to the #FIFAWorldCup #Qatar2022”
— Marsal Qatar English (@MarsalQatar_EN) November 20, 2022
HH the Amir declares open the first World Cup in the Arab world pic.twitter.com/VStI2mxn2L
আয়োজনে ছিল কাতারের নিজস্ব সংস্কৃতির পরিবেশনাও
The Qatari and Gulf art form of ‘Ardha’ performed at Al Bayt Stadium during the opening ceremony of the #FIFAWorldCup #Qatar2022 pic.twitter.com/RSXLSKIxH9
— Marsal Qatar English (@MarsalQatar_EN) November 20, 2022
কাতারের ফাহাদ আল-কুবাইসির সঙ্গে গান পরিবেশন করেন বিটিএস ব্যান্ডের জাংকুক
Jungkook of BTS and Qatari singer Fahad Al Kubaisi showcase stunning performance of 'Dreamers' during the Opening Ceremony of the FIFA World Cup Qatar 2022. #Qatar2022 #FIFAWorldCup #FIFAWorldCupQatar2022 #Dreamers #Dreamers2022 #BTS #Jungkook #FahadAlKubaisi pic.twitter.com/b3sNrsCBEI
— The Peninsula Qatar (@PeninsulaQatar) November 20, 2022
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৭’র বাছাইপর্বের ম্যাচকে সামনে রেখে ২৬ সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষনা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
বাংলাদেশের জার্সিতে আগেই অভিষিক্ত হামজা চৌধুরিতো রয়েছেনই, সাথে আরো যোগ হয়েছেন কানাডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলা শমিত সোম ও ইতালিয়ান লিগে খেলা ফাহমিদুল ইসলাম। ইতোমধ্যেই ফাহমিদুল জাতীয় দলের সাথে যোগ দিয়েছেন। হামজা ও শমিতও দ্রুতই চলে আসবেন।
আগামী ১০ জুন জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বহুল প্রতিক্ষিত ম্যাচটি নিয়ে ফুটবল সমর্থকদের মধ্যে বিপুল আগ্রহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। তার আগে ভুটানের বিপক্ষে ৪ জুন একটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে অংশ নিবে বাংলাদেশ।
এই দুই ম্যাচকে সামনে রেখে শুক্রবার থেকে ক্যাম্প শুরু করবেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। দলে নতুন কোন চমক নেই। স্ট্রাইকার সুমন রেজা শুধু দলে ফিরেছেন।
বাংলাদেশ দল :
গোলরক্ষক : মিতুল মারমা, সুজন হোসাইন ও মেহেদী হাসান শ্রাবণ
ডিফেন্ডার : শাকিল আহাদ তপু, জাহিদ হাসান শান্ত, রহমত মিয়া, ঈসা ফয়সাল, তাজ উদ্দিন, তারিক কাজী, তপু বর্মণ ও সাদ উদ্দিন
মিডফিল্ডার : মোহাম্মদ হৃদয়, সৈয়দ শাহ কাজিম, সোহেল রানা, মজিবর রহমান জনি, শেখ মোরসালিন, জামাল ভূঁইয়া, হামজা চৌধুরী ও শমিত সোম
ফরোয়াডর্ : ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, রাকিব হোসেন, শাহরিয়ার ইমন, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, আল আমিন, ফাহমিদুল ইসলাম ও সুমন রেজা
১৯৮৬ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন গ্যারি লিনেকার। ম্যারাডোনার কারণে ওই বিশ্বকাপে আলোর নিচে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিস্তৃত ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার লিনেকার। ফুটবলের মাঠ থেকে সরে গিয়ে যুক্ত হয়েছিলেন ফুটবল বিশ্লেষক এবং উপস্থাপনার কাজে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির হয়ে ফুটবলবিষয়ক জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘ম্যাচ অব দ্য ডে’ সঞ্চালনা করেছিলেন দীর্ঘ ২৫ বছর। কিন্তু ফিলিস্তিনের পক্ষ নিয়ে চাকরিটাই হারালেন তিনি।
ফিলিস্তিনের পক্ষ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্টোরি শেয়ার করার এক সপ্তাহের মাঝে বিবিসি থেকে ছাঁটাই করা হলো লিনেকারকে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শেষ ম্যাচডের পর লিনেকারের সঙ্গে ২৫ বছরের সম্পর্ক শেষ করছে বিবিসি। লিনেকারের সঙ্গে বিবিসির ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তি ছিল। কিন্তু সেটাও আর হচ্ছে না।
একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টকে কেন্দ্র করে বিতর্কের পরই মূলত বিবিসিতে নড়বড়ে হয়ে যায় গ্যারি লিনেকারের অবস্থান। ওই পোস্টে তিনি ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছিলেন। পরে অবশ্য তিনি তা মুছে দেন। ৬৪ বছর বয়সি লিনেকার দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, তিনি যে ছবি শেয়ার করেছিলেন, তাতে অনিচ্ছাকৃতভাবে এমন একটি প্রতীক ছিল যার সঙ্গে অতীতে ইহুদিবিরোধী ধারণা জড়িয়েছিল।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছে, লিনেকারের বিদায় পশ্চিমা গণমাধ্যমে একটি ক্রমবর্ধমান প্রবণতার অংশ। যেখানে যারা ইসরায়েলের সমালোচক বা ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নেন, তাদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। তাদের ভাষ্য, এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সাম্প্রতিক ঘটনাবলিকে মনে করিয়ে দেয়, যেখানে সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, এমনকি বিনোদন জগতের ব্যক্তিরাও ফিলিস্তিনপন্থি মতপ্রকাশ করায় চাকরি হারিয়েছেন।
তবে বিবিসির পক্ষ থেকে চাপের মুখে পড়লেও লিনেকারের পক্ষে জনগণের ব্যাপক সমর্থন দেখা গিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভক্ত, সাংবাদিক, সাবেক খেলোয়াড় ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সাবেক এই ইংলিশ স্ট্রাইকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
বছর তিনেক হলো জাতীয় দলের বাইরে অলরাউন্ডার রুমানা আক্তার। মাঝখানে একবার ফেসবুকে পোস্টও দিয়েছেন ‘আর নয় ক্রিকেট’। সেই ফেসবুক পোস্টেই এবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে গুরুতর অভিযোগ তুললেন রুমানা আহমেদ। রুমানার দাবি, তার সঙ্গে অন্যায়-অবিচার হয়েছে। এবং তিনি সেটার বিচার চাইলেন ক্রিকেট বোর্ডের কাছে।
গতকাল নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে রুমানা পোস্ট দিয়েছেন বিসিবির কাছে খোলা চিঠির মতো করে। তিনি লিখেছেন, ‘বিসিবির সম্মানিত অভিভাবকদের বলছি। আমি খেলি কিংবা না খেলি, এমন অনৈতিক-নৈরাজ্যমূলক ঘটনা চলতে পারে না। দয়া করে আমাকে চূড়ান্ত সমাধান দিন। কোনো কারণ ছাড়াই তিন বছর তো কোনো কৌতুকের কিছু না। আমি কখনোই বাজে ক্রিকেট খেলিনি। অনৈতিক কাজও করিনি। জ্যেষ্ঠতা কখনোই অভিশাপ হতে পারে না। যারা আমার উজ্জ্বল ক্রিকেট ক্যারিয়ার ধ্বংস করেছে, তার বিচার চাই।’
২০২৩ সালের আগস্টে সামাজিক মাধ্যমে হঠাৎই রুমানা পোস্ট দিয়েছিলেন, ‘আর ক্রিকেট নয়।’ সেই পোস্টের আগে বাংলাদেশ যে শ্রীলঙ্কা-ভারতের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছিল, কোনোটিতেই তিনি ছিলেন না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দল ঘোষণার পর বিসিবি জানিয়েছিল, তাকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল।
বিসিবির এই দাবির বিপক্ষে পাল্টা দাবি করেছিলেন বাংলাদেশ দলের এই লেগস্পিনিং অলরাউন্ডার। সে সময় রুমানা বলেছিলেন- বিশ্রাম নয়, তাকে বাদই দেওয়া হয়েছিল। টিম ম্যানেজমেন্টের সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে সংবাদমাধ্যমে এমন মন্তব্য করায় রুমানাকে তলবও করেছিল বোর্ড।
দুই বছর আগে ‘নো মোর ক্রিকেট’ পোস্ট নিয়ে বিসিবি তখন বিব্রত হয়েছিল। নারী বিভাগের তৎকালীন প্রধান শফিউল আলম নাদেল সে সময় বলেছিলেন, ‘আমরা সব সময় আমাদের ক্রিকেটারদের প্রতি সদয় বা সৎ। ওকে এটা শুধু মনে করিয়ে দিলাম, সেতো চাইলে বোর্ড- আমাদের বিভাগ থেকে শুরু করে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও), বোর্ড সভাপতি; সবার সঙ্গেই তো কথা বলার সুযোগ আছে। এটা সে না করলেও পারত।’
৩৩ বছর বয়সী রুমানা ২০১১ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন। বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন ৫০ ও ৮৭ ম্যাচ। দুই সংস্করণেই ৮০০-এর বেশি রান করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার উইকেট ১২৫।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমান বরাবরই ডেথ ওভারের নির্ভরতার নাম। এবার সেই খ্যাতিকে ছাড়িয়ে গেলেন পরিসংখ্যানেও। শারজায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচে শেষ দিকে করা সাতটি ডট বলে গড়েছেন নজিরবিহীন এক রেকর্ড। ডেথ ওভারে সবচেয়ে বেশি ডট বলের মালিক এখন মুস্তাফিজুর রহমান।
এই ম্যাচে শেষ দিকে দুটি ওভার করেন তিনি। সেখানে মাত্র একটি উইকেট পেলেও, মূল কাজটা করে দেন ডট বলেই। এই ৭ ডট বল নিয়ে ডেথ ওভারে তার ডট বলের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০০-তে, যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার কোনো বোলারের এমন কীর্তি।
এই তালিকায় অনেক আগেই শীর্ষে ছিলেন মুস্তাফিজ। তবে শনিবার রাতে তা পৌঁছে যায় নতুন এক উচ্চতায়। তার পেছনে আছেন ইংল্যান্ডের ক্রিস জর্ডান (২৪১), নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদি (২৪০), পাকিস্তানের হারিস রউফ (২২২) ও ভারতের জাসপ্রিত বুমরাহ (২০৮)।
রান খরচের দিক থেকেও প্রশংসার দাবি রাখেন মুস্তাফিজ। ডেথ ওভারে ৮৭ ইনিংসে ৭২৫ বল করে খরচ করেছেন ৯৯০ রান। এই তালিকায় কম রান দিয়ে তার ওপরে রয়েছেন শুধু বুমরাহ (৪৯৫ বলে ৫৬৩ রান) ও রউফ (৫৮৬ বলে ৭৮২ রান)।
উইকেট শিকারের দিক দিয়ে মুস্তাফিজ আছেন দ্বিতীয় স্থানে। এই তালিকায় ১০০ ইনিংসে ৬৫ উইকেট নিয়ে শীর্ষে নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদি। ৮৭ ইনিংসে মুস্তাফিজের ডেথ ওভারে উইকেট সংখ্যা ৬৩।
শুধু আন্তর্জাতিক নয়, সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলিয়েও ডেথ ওভারে ডট বলের তালিকায় মুস্তাফিজ তৃতীয় স্থানে। তার ডট বল সংখ্যা ৮১৬। এই তালিকায় শীর্ষে আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়াইন ব্রাভো (১১৬৪) ও দ্বিতীয় স্থানে আছেন ক্রিস জর্ডান (৮৯৩)।
গত সপ্তাহেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তার এক সপ্তাহ না পেরোতেই একই পথে হাঁটছেন বিরাট কোহলিও। ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণকে বিদায় বলে দিতে যাচ্ছেন কোহলি। নিজের অবসর নিয়ে ইতোমধ্যেই বোর্ডকে জানিয়েছেন তিনি। এমনটাই জানিয়েছে ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো।
ক্রিকইনফোর প্রতিবেদন, টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়ার বিষয়ে বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন কোহলি। তিনি অবসর নিতে চান- এটা জানিয়েছেন ক্রিকেট বোর্ডকে। এমনকি মাসখানেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে এই আলোচনা।
কোহলি বিদায় নিলে মোটামুটি অভিজ্ঞ ক্রিকেটার কমে যাবে ভারতীয় দলে। এরই মধ্যে রোহিত অবসর বলে দিয়েছেন, রবিচন্দ্রন অশ্বিন সব ধরনের ক্রিকেট থেকে সরে গেছেন। চেতশ্বর পূজারা ও আজিঙ্কা রাহানেও নেই দলে। এখনো টেস্ট খেলার মতো ফিটনেসে আসেননি মোহাম্মদ শামি।
আগামী মাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলতে যাওয়ার কথা ভারতের। কোহলি অবসর নিলে নতুন অধিনায়কের জন্য বড় চাপ যাবে ইংল্যান্ড সিরিজে। তবে বিসিসিআইয়ের আশা- ইংল্যান্ড সিরিজে খেলবেন তিনি।
যদি কোহলি সিদ্ধান্ত না বদলান, তবে ১৪ বছরের এক গৌরবময় টেস্ট ক্যারিয়ারের অবসান ঘটবে। যেখানে তিনি ১২৩টি টেস্ট খেলেছেন, এর মধ্যে ৬৮ টেস্টে ছিলেন অধিনায়ক। টেস্টে ৩৬ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার করেছেন ৯২৩০ রান, গড় ৪৬.৮৫। সেঞ্চুরি ৩০টি।
যদিও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) কোহলিকে অনুরোধ করেছে সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করার। কিন্তু কোহলি সেই অনুরোধ মানবেন কি না, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। ভারতীয় বার্তা সংস্থা আইএএনএসকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সে এখনো অবিশ্বাস্যরকমের ফিট ও ক্ষুধার্ত। ড্রেসিংরুমে তার উপস্থিতি পুরো দলকে উজ্জীবিত করে। আমরা তাকে অনুরোধ করেছি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে যেন কিছুটা সময় নিয়ে ভাবে।’
টেস্ট ক্রিকেটে সময়টা ভালো যাচ্ছে না কোহলির। সবশেষ অস্ট্রেলিয়া সফরে ৫ টেস্ট খেলে মাত্র ২৩.৭৫ গড়ে ১৯০ রান করেছেন। আটটি ডিসমিসালের মধ্যে সাতটিতে তিনি আউট হয়েছেন অফস্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে। একটা সময় টেস্টে তার গড় ছিল ৫০-এরও বেশি। কিন্তু শেষ পাঁচ বছরে পারফরম্যান্সের গ্রাফকে শুধুই নিচে নিয়ে গেছেন তিনি। ৩৭ ম্যাচ খেলে সেঞ্চুরি করেছেন মাত্র তিনটি। যা তার নামের সঙ্গে বেশ বেমানান।
অস্ট্রেলিয়া সফরের পর তাই কোহলি অবসরের ছোটখাটো একটা ইঙ্গিত দিয়ে রাখেন। কিন্তু সেই খবর যে এত দ্রুত সংবাদমাধ্যমে ভাসবে, তা হয়তো কেউই টের পাননি। গত মার্চে তিনি বলেছিলেন, ‘হয়তো চার বছর পর আমার আর অস্ট্রেলিয়া সফর করার সুযোগই থাকবে না।’
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনার মাঝে এবার ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে(আইপিএল) স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একটি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ক্রিকবাজ।
খবরে বলা হয়েছে, চলমান উত্তেজনার মাঝে আইপিএলে অংশ নেওয়া বিদেশি খেলোয়াড়দের উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছিল। তাদের প্রাথমিক উদ্বেগগুলোর মধ্যে ছিল নিরাপদে চলাচলের মতো বিষয়।
গতরাতে ধর্মশালায় দিল্লি ক্যাপিটালসকে আতিথ্য দেয় পাঞ্জাব কিংস। প্রথম ইনিংসের অর্ধেক খেলা হতেই কারিগরি ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায় ম্যাচ। শুরুতে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ম্যাচ বন্ধ থাকলেও পরে নিরাপত্তার কারণে ১০ মিনিটের মাথায় ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর দল, খেলোয়াড়, সম্প্রচারকর্মী ও অন্যান্য লিগ স্টাফসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে ধর্মশালা থেকে নয়াদিল্লিতে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
আজ (শুক্রবার) সংশ্লিষ্টদের ধর্মশালার হোটেল থেকে বাসে ওঠার নির্দেশ দেওয়া হয়, কিন্তু তারা কোথা থেকে দিল্লিগামী ট্রেনে উঠবেন, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা ৩৩ মিনিটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ক্রিকবাজ জানিয়েছে, এই প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত তারা বাসেই আছেন এবং গন্তব্য সম্পর্কে তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।
টুর্নামেন্ট স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আসরের বাকি ম্যাচগুলোর ভেন্যু পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়। সব বিকল্প খতিয়ে দেখার পরই সাময়িকভাবে আইপিএল স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিসিআই।
ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, খুব শিগগিরই এ বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে।
সংঘাত শুরু হওয়ার পর আইপিএল সভাপতি অরুণ ধুমাল জানিয়েছিলেন, পরবর্তী যেকোনো সিদ্ধান্ত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছি। এটি একটি চলমান অবস্থা এবং সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো নির্দেশনা পাইনি। অংশীদারদের সর্বোত্তম স্বার্থের দিকটি মাথায় রেখে এবং সব রকম কৌশলগত বিষয় বিবেচনা করেই যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
ধর্মশালার বাতিল হওয়া ম্যাচটিসহ আইপিএলের এবারের আসরে এ পর্যন্ত ৫৮টি ম্যাচ খেলা হয়েছে। গ্রুপ পর্বে এখনও ১২টি ম্যাচ খেলা বাকি।
ব্রাজিলের আনচেলত্তি প্রেমের শুরু থেকেই চলছে নাটক। গত বছর সেলেসাওদের ভালোবাসাকে দুহাতে ঢেলে রিয়ালের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছিল ইতালিয়ান এই কোচ। চলতি বছরে আবারো আনচেলত্তির প্রেমে মজেছিল ব্রাজিল। এবার অবশ্য আনচেলত্তির দিক থেকেও এসেছিল সাড়া। কিন্তু পরিণয়ের কাছাকাছি গিয়ে আবারো মঞ্চস্থ হয় নতুন নাটক। তবে সব নাটকের সমাপ্তি হচ্ছে এবার। নাটক শেষে পরিণয়ের পথে ব্রাজিলের আনচেলত্তি প্রেম। ভেঙে পড়ছে দুই পক্ষের মাঝে গড়ে ওঠা রিয়াল মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের দেওয়াল।
দ্য অ্যাথলেটিকের ভাষ্য অনুযায়ী, রিয়াল মাদ্রিদ এবং আনচেলত্তি দুই পক্ষই মৌখিকভাবে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। এবং কার্লো আনচেলত্তি চাইলে মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই লস ব্লাঙ্কোসদের ডেরা ছেড়ে যেতে পারবে। তবে হঠাৎই ঠিক কোন শর্তে এই সমঝোতা হয়েছে তা জানা যায়নি।
তবে শঙ্কা, দোলাচল আর প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে আগামী রোববার বার্সেলোনার বিপক্ষে মৌসূমের শেষ এল-ক্লাসিকোর পরেই। তখনই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে আনচেলত্তির রিয়াল ছাড়ার। তবে মৌসূম শেষ হওয়ার আগে সত্যিই ইতালিয়ান এই কোচ ক্লাব ছাড়বেন কিনা সেই আলোচনা চলছে বর্তমানে।
অবশ্য ব্রাজিল অপেক্ষা করতে চায় মৌসূম শেষ হওয়া পর্যন্তই। কয়েকদিন আগে ইএসপিএন জানিয়েছিল, আনচেলত্তিকে পেতে নতুন করে সময়সীমা বেধে দিয়েছে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)। আগামী ২৬ তারিখের মধ্যে নতুন কোচ নিয়োগ দিতে চায় সিবিএফ। যেই দিন বা তার আগের দিন শেষ হবে রিয়াল মাদ্রিদের মৌসূম।
অবশ্য ব্রাজিলের এই বাইরে সময় বাড়ানোর সুযোগ নেই বললেই চলে। কারণ আগামী মাসের শুরুর দিকেই বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দুই ম্যাচে ইকুয়েডর ও প্যারাগুয়ের বিপক্ষে মাঠে সেলেসাওরা। ৩ জুনের মধ্যে স্কোয়াড জমা দিতে হবে সেই ম্যাচ দুটির জন্য।
ইএসপিএনের এই সংবাদের পরই কার্লো আনচেলত্তি বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করে বলতে পারি– এই ক্লাব (রিয়াল মাদ্রিদ), এর সব খেলোয়াড় এবং সমর্থকদের আমি খুব ভালোবাসি, তাদের প্রতি আমার যথেষ্ট সম্মানও আছে। আমি আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে (চলতি মে মাসের) ২৫ তারিখের পর কথা বলব, তার আগে নয়। আগামী ২৫ মে’র পর কী হবে, সেই বিষয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর এখন আমার দেওয়ার দরকার নেই।’
শেষ পর্যন্ত দুইয়ে-দুইয়ে চার ঠিকই হচ্ছে। সব ধোঁয়াশা কাটিয়ে ব্রাজিলেই যাচ্ছেন কার্লো আনচেলত্তি। আর রিয়াল মাদ্রিদও হয়ত নতুন মৌসুমের আগেই নিয়ে আসবে তাদের নতুন কোচ। আর সেই দৌড়ে সবার চেয়ে এগিয়ে রিয়ালেরই সাবেক তারকা এবং লেভারকুসেন কোচ জাবি আলোনসো।
চট্টগ্রামে বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ টেস্টে দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশন সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়েছেন বাংলাদেশের ওপেনার সাদমান ইসলাম।
প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের ২২৭ রানের জবাবে সাদমানের ১২০ রানের উপর ভর কওে দ্বিতীয় দিনের চা-বিরতি পর্যন্ত ৫৭ ওভারে ৩ উইকেটে ২০৫ রান করেছে বাংলাদেশ। ৭ উইকেট হাতে নিয়ে এখনও ২২ রানে পিছিয়ে টাইগাররা।
প্রথম দিন নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে ২২৭ রান করেছিল জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় দিনের প্রথম বলে বাকী ১ উইকেট হারিয়ে ২২৭ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা।
বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল ইসলাম ২৭ দশমিক ১ ওভার বোলিং করে ৬০ রানে ৬ উইকেট নেন।
জবাবে দুই ওপেনার সাদমান ও এনামুল হকের দৃঢ়তায় ১১৮ রানের সূচনা পায় বাংলাদেশ। এনামুল হক ৩৯ রানে আউট হলেও টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন সাদমান।
১৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৮১ বলে ১২০ রান করে চা-বিরতির আগে আউট হন সাদমান। উইকেটে সেট হয়ে ৩৩ রানে থামেন মোমিনুল।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ২ ও মুশফিকুর রহিম ৯ রানে অপরাজিত আছেন।
জিম্বাবুয়ের ব্লেসিং মুজারাবানি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ও ব্রায়ান বেনেট ১টি করে উইকেট নেন।
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলী খেলার আসরে এবারও চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কুমিল্লার বাঘা শরীফ। নগরীর ঐতিহাসিক লালদীঘি মাঠে কুমিল্লা আরেক বলী রাশেদকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। গত বারের ১১৫তম আসরেও রাশেদকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন এই বাঘা শরীফ।
এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলেন বাঘা শরীফ। রাশেদকে গতবারের আসরের মতো এবারের ১১৬তম আসরেও রানার্স আপ ঘোষণা করা হয়। তারা দুজনই কুস্তির প্রশিক্ষণ নিয়েছেন জব্বারের বলী খেলার ১১৪তম আসরের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শাহজালাল বলীর কাছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে আব্দুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও বৈশাখী মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আবদুল জব্বার সওদাগরের নাতি শওকত আনোয়ার বাদল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, জব্বারের বলী খেলার এবারের আসর ছিল ১১৬তম। শুক্রবার বিকেল ৪টা থেকে মঞ্চে শুরু হয় বলী খেলার লড়াই। এতে অংশ নেন নিবন্ধিত ১২০ জন বলী। এদিন বিকেল ৪টায় এবারের বলী খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ আনুষ্ঠানিকভাবে বেলুন উড়িয়ে বলী খেলার উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী আয়োজনে তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
শওকত আনোয়ার বাদল জানান, এবারের বলী খেলায় সবচেয়ে বয়স্ক বলী ছিলেন কলিম উল্লাহ (৬৬)। আবার সবচেয়ে কম বয়সের বলী ছিল কিশোর ফয়সাল (১৬)। সবশেষে ফাইনাল রাউন্ডে বাঘা শরীফ ২৩ মিনিটে রাশেদ বলীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। এর আগেরবার ১১৫তম আসরে ১১ মিনিট লড়াই করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন বাঘা শরীফ।
শতবর্ষী এই বলী খেলায় ১১৪তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন কুমিল্লার মাংস বিক্রেতা শাহজালাল বলী। আর রানার্সআপ হয়েছিলেন চকরিয়ার তারিকুল ইসলাম (জীবন) বলী। এর আগে ২০২২ সালে শাহজালালকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হন তারিকুল ইসলাম।
আর ২০১৯ সালে তারিকুলকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছিলেন শাহজালাল বলী। তারও আগের বছর ২০১৮ সালে শাহজালালকে হারিয়ে প্রথম শিরোপা জিতেছিলেন তারিকুল। কয়েক বছর ধরে এভাবে দুজনের মধ্যে শিরোপার লড়াই চলতে থাকে।
তবে জব্বারের বলী খেলায় এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ চ্যাম্পিয়ন কক্সবাজারের রামুর দিদারুল আলম ওরফে দিদার বলী। ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি সর্বোচ্চ ১১ বার বিজয়ী হয়েছিলেন। এরপর থেকে দিদার বলী এ খেলা থেকে অবসরে আছেন। ১৯ বছর বয়সে জব্বারের খেলায় অংশ নিয়ে ৩৩ বছর বয়সে অবসরে যান এই বলী।
প্রচণ্ড গরমেও দর্শকদের আনন্দ-উল্লাস
এবার বলী খেলা মঞ্চে গড়ানোর দেড় ঘণ্টা আগে থেকেই মাঠে ভিড় করেন বলীরা। এ সময় মঞ্চের চারপাশ ঘিরে দেখা যায় দর্শকদের বাঁধভাঙা উল্লাস। বলী খেলা তো নয়, যেন পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চলের আবেগ অনুভূতির প্রাণের মেলা। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই ভিড় করেন এই বলী খেলা দেখতে। বিভিন্ন উপজেলা ও জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ আসেন এই বলী খেলায়।
নগরীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী শফিকুর রহমান। ছেলেকে নিয়ে এসেছেন জব্বারের বলী খেলা দেখতে। তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ, তারপরও ছেলের বায়না রাখতে বলী খেলা দেখাতে নিয়ে এসেছি। গরমে সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা।
রুবেল এসেছেন বাঁশখালী থেকে। তিনি বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে বলী খেলা দেখতে এসেছি। আমরা সকালে রওনা দিয়েছি। সামনে বসে খেলা দেখবো। এখানে এসে দেখি আমাদের আগেও লোক এসে মাঠে ভিড় করছে। রোদ আর গরমে মাথা ঘুরাচ্ছে। এত মানুষ নড়াচড়ার জায়গাও নাই।
নগরের পতেঙ্গা এলাকা থেকে এসেছেন সাকিব, তাসিন আর ইফতেখার। তবে ভিড়ের কারণে তারা মাঠে প্রবেশ করতে পারেননি। তাই লালদীঘি ময়দানের সীমানা প্রাচীরের ওপর উঠে ঝুঁকি নিয়েই খেলা দেখছেন। ঝুঁকির বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে তারা বলেন, বছরে একবার বলী খেলা দেখার সুযোগ হয়। ঝুঁকি না নিলে তো দেখতেই পারব না। রোদে গরমে কষ্ট হলেও খেলা দেখবো।
বলী খেলা ঘিরে বৈশাখী মেলা
প্রতি বছর বাংলা ১২ বৈশাখ অনুষ্ঠিত হয় জব্বারের বলী খেলা। বলী খেলাকে ঘিরে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা বসে লালদীঘির আশপাশের এলাকায়। এবার ২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার থেকে লালদীঘির মাঠ ও আশপাশের এলাকায় শুরু হয় বৈশাখী মেলা।
গরমের কারণে এবারের মেলায় ঝাড় ও তালপাতার হাতপাখা ছিল নারী-পুরুষের প্রথম পছন্দ। গৃহস্থালির বিভিন্ন সামগ্রী, শিশু-কিশোরদের খেলনা, গৃহসজ্জার জিনিস, তৈজসপত্র, ঝাড়, কুড়াল, আসবাবপত্র, গাছপালা সবই বিকিকিনি হচ্ছে এই মেলায়।
গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টায় নগরীর আন্দরকিল্লা এলাকায় গৃহস্থালী সামগ্রী কেনার সময় রফিক ও নুরজাহান দম্পতি বলেন, গৃহস্থালী সামগ্রী মেলায় যেগুলো পাওয়া যায়, সেগুলো সাধারণত চট্টগ্রামের হাট-বাজারে পাওয়া যায় না। তাই গরমের মধ্যেও প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে এসেছি। ঝাড়, মাটির থালাসহ তালপাতার হাতপাখা কিনেছি।
তারা বলেন, আগামীকাল শনিবার শেষ হবে প্রাণের এই মেলা। এই মেলা আরও কয়েকদিন থাকা উচিত। কারণ অনেকে ব্যস্ততার কারণে তিন দিনের মধ্যে মেলায় আসতে পারবে না। আগে এই মেলা ৭-৮ দিন পর্যন্ত হতো বলেও জানান তারা।
আবদুল জব্বারের বলী খেলা উদযাপন কমিটির ১১৬তম আসরের আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান জানান, ১৯০৯ সালে বকশিরহাটের বিশিষ্ট বণিক ও চট্টগ্রাম শহরের বদরপাতির বাসিন্দা আবদুল জব্বার সওদাগর ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যুবসমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে এই বলী খেলার প্রচলন করেছিলেন। তার মৃত্যুর পর এই প্রতিযোগিতা ‘জব্বারের বলী খেলা’ নামে পরিচিতি পায়। সেই থেকে নিয়মিত বলী খেলার আসর বসলেও মাঝখানে দুই বছর (২০২০ এবং ২০২১) করোনার জন্য এবং তারও আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় একবার বলী খেলা অনুষ্ঠিত হয়নি।
ফিক্সিং, নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেছেন তামিম ইকবাল। ক্রিকেটারদের ‘বেইজ্জত-অপমান’ করা হচ্ছে বলে দাবি করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
হার্ট অ্যাটাকের পর শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) প্রথম সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তামিম। বিসিবির সঙ্গে বৈঠক শেষে এ সময় একাধিক বিষয়ে অসন্তোষের কথা জানান জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।
মূলত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএলে) তাওহীদ হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা ইস্যু নিয়ে গতকাল (শুক্রবার) বৈঠক বসে মোহামেডান ও বিসিবি। মোহামেডানের জ্যেষ্ঠ ক্রিকেটার তামিমসহ বেশ কয়েকজন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনাটি গত ১২ এপ্রিলের। ডিপিএলে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে আইসিসির এলিট প্যানেলের আম্পায়ার সৈকতের সঙ্গে সেদিন তর্কে জড়ান মোহামেডানের অধিনায়ক হৃদয়। শুধু মাঠে তর্কে জড়িয়েই ক্ষান্ত হননি তিনি, ম্যাচ শেষে কিছুটা বিতর্কিত সুরে বলেছিলেন, ‘তিনি (সৈকত) আন্তর্জাতিক আম্পায়ার হলে আমিও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।’
ম্যাচ অফিশিয়ালদের সঙ্গে তর্ক ও তাদের কটাক্ষ করার কারণে ২ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পান হৃদয়। তবে তার শাস্তি কমানোর জন্য ডিপিএলের টেকনিক্যাল কমিটির কাছে আবেদন করে মোহামেডান কর্তৃপক্ষ। কমিটি তাতে সাড়া না দিলেও তাদের সেই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে হৃদয়ের শাস্তি কমিয়ে এক ম্যাচে নিয়ে আসে বিসিবির আম্পায়ার বিভাগ, অথচ এই এখতিয়ার তাদের নেই।
নিয়ম ভেঙে হৃদয়ের এই শাস্তি কমানোর সিদ্ধান্তের কারণে বিসিবির চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন সৈকত। তবে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে সৈকতের অভিমান ভাঙায় বিসিবির আম্পায়ার বিভাগ এবং সেই এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা নতুন করে দেওয়া হয় হৃদয়কে। এই সিদ্ধান্ত নিয়েই তৈরি হয়েছে জটিলতা।
এ বিষয়ে তামিমের ভাষ্য, ‘হৃদয়ের ইস্যুটা... ওকে দুটি ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। তখন কিন্তু কোনো খেলোয়াড় বা কেউ এটা নিয়ে কথা বলেনি! আম্পায়ার আর ম্যাচ রেফারি মিলে তাকে নিষিদ্ধ করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমরা মনে করতে পারি, সিদ্ধান্তটা কঠোর ছিল, কিন্তু এটা নিয়ে আমরা কেউ কোনো কথা বলিনি। তার কিছুদিন পর দেখলাম যে, (নিষেধাজ্ঞা) দুই ম্যাচ থেকে এক ম্যাচ করা হলো; এটা বিসিবি করেছে। তখনও আমরা কেউ কোনো কথা বলিনি। তারপর হৃদয় একটা ম্যাচ না খেলে পরের দুটি ম্যাচ খেলল। স্বাভাবিকভাবে ওর যে শাস্তি ছিল, সেটা সে ভোগ করে নিয়েছে। এখন দুটি ম্যাচ খেলার পর গতকাল শুনলাম যে, তাকে আবার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
‘এটা কোন নিয়মে, কীভাবে করা হয়েছে—তা আমার জানা নেই। এটা নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত ছিলাম। এটা হাস্যকর ছিল। কোনোভাবেই সে নিষিদ্ধ হতে পারে না যে কিনা আগেই (একবার) নিষিদ্ধ হয়েছে। বিসিবি তাকে দুটি ম্যাচ খেলতে দিয়েছে। তাকে আবার আপনি কীভাবে নিষিদ্ধ করতে পারেন?’
এছাড়া, ডিপিএলের চলতি আসরে একটি ম্যাচকে ঘিরে ফিক্সিংয়ের সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। গুলশান ক্রিকেট ক্লাব ও শাইনপুকুরের ম্যাচকে ঘিরে ওঠা সেই সন্দেহের ম্যাচটি নিয়ে বিসিবির তদন্ত চলছে।
তদন্তের অংশ হিসেবে গত ১০ এপ্রিল শাইনপুকুরের দুই ক্রিকেটার রহিম আহমেদ ও মিনহাজুল আবেদীন সাব্বিরকে মিরপুরে ডাকা হয়। এই দুজন স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে উপস্থিত হয়ে বিসিবি কর্মকর্তাদের সামনে বিতর্কিত স্টাম্পিংয়ের সেই ঘটনা পুনরায় মঞ্চায়ন করে দেখান। উইকেটের দুই পাশে দুটি ক্যামেরায় ধারণ করা হয় সেই দৃশ্য। মিডিয়াকর্মীরাও সে সময় উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মনে করেন, মিডিয়ার সামনে এই দুই ক্রিকেটারকে দিয়ে অভিনয় করানোর কোনো অধিকার কারও নেই।
‘আমরা এই জিনিসটা ক্রিকেট বোর্ডকে সরাসরি বলেছি যে দেখেন, যদি ওখানে কোনো ধরনের দুর্নীতি হয়ে থাকে বা কোনো খেলোয়াড় কোনো ধরনের দোষ করে থাকে, আমরা সবাই চাই এটার (জন্য) শাস্তি হোক; এতে আমরা শতভাগ একমত। কিন্তু তার মানে এটা না যে, আপনি ওই দুটি ছেলেকে নিয়ে গিয়ে মিডিয়ার সামনে অভিনয় করাবেন, এমনটা করার অধিকার কারো নেই।’
‘বিশ্বের কোথাও দুর্নীতি দমন ইউনিটে এমন নিয়ম নেই যে, একই জিনিস অভিনয় করিয়ে আপনি ওই দুটি ছেলেকে বেইজ্জত করবেন মিডিয়ার সামনে। এটা খেলোয়াড়দের অপমান করা। এই জিনিস নিয়ে আমরা একবিন্দুও খুশি ছিলাম না।’
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) গত আসরে কয়েকজন খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ ওঠে। যাদের নাম গণমাধ্যমে আসায়ও বিসিবিকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তামিম।
‘বিপিএলেও ১০ জনের নাম ফাঁস হয়েছে বিসিবির ভেতর থেকে; ১০ জনের ছবি মিডিয়াতে দেওয়া হয়েছে। আমরা সবাই চাই, ওখান থেকে কেউ যদি দোষী হয়, তার শাস্তি হোক।
কিন্তু তাদের মধ্যে যদি দুজন বা আটজনও নির্দোষ বলে প্রমাণিত হয়?—প্রশ্ন রেখে তামিম তাদের নামগুলো জনগণের সামনে ফাঁস করে দেওয়াকে ‘অপমানজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এই প্রত্যেকটা জিনিস নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় স্টেকহোল্ডার হলো ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটারদের যদি এভাবে ট্রিট করা শুরু করেন, তাহলে তো হলো না! এই জিনিস নিয়ে আমরা প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ করেছি আসতে। উনি এসেছেন, সঙ্গে আরও দুজন পরিচালক (নাজমুল আবেদীন ও ইফতেখার আহমেদ) ছিলেন। আমরা লম্বা আলোচনা করেছি। আমাদের পয়েন্ট তুলে ধরে উনাকে বলেছি যে, (বিষয়গুলো নিয়ে) আমরা আপসেট।’
‘এসব নিয়ে আমাদের বিতর্ক হয়েছে। উনাদের আমরা সুন্দর করে (নিজেদের) অবস্থান পরিষ্কার করেছি যে আমরা কী অনুভব করি। তারপর উনারা উনাদের মতো করে সিদ্ধান্ত দেবেন।’
আগেরদিন যেভাবে শুরু করেছিল জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার সেটা দেখে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের জন্য বড় বিপদই অপেক্ষা করছে। তবে গতকাল দ্বিতীয় দিনে সেই ধারাটা অব্যাহত রাখতে পারেনি রোডেশিয়ানরা। নাহিদ রানার শুরুর পরে শেষটা করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই অলরাউন্ডারের ফাইফারে তিনশো পেরুনোর আগেই শেষ হয়েছে জিম্বাবুয়ের ইনিংস। তবে শেষ বিকেলটা স্বস্তিতে পার করতে পারেনি বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে ২৭৩ রানে থেমেছিল জিম্বাবুয়ে। তাতে ৮২ রানের লিড পেয়েছিল সফরকারীরা। শেষ বিকেলে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিংয়ে নেমে এবারও শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দ্বিতীয় দিন শেষে এক উইকেট হারিয়ে ৫৭ রান তুলেছে বাংলাদেশ। এখনো পিছিয়ে ২৫ রানে। ২৮ রান করে অপরাজিত আছেন মাহমুদুল হাসান জয় আর মুমিনুল হক ১৫ রানে।
৮২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে টপঅর্ডারের চিরায়ত ব্যর্থতা আরেকবার উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই সাজঘরে ফিরেন সাদমান ইসলাম। তার ৪ রানে ফেরায় ভাঙে ১৩ রানের উদ্বোধনী জুটি। তবে এরপরে আর কোনো ভুল করেনি মাহমুদুল হাসান জয় আর মুমিনুল হক।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। তিনে নেমে দারুণ ব্যাটিং করেছেন মুমিনুল হক। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার এদিন কোনো সুযোগ দেননি। তবে আরেক ওপেনার জয়, ভাগ্যের কারণেই অপরাজিত থেকেছেন। উইকেটের পেছনে তার সহজ ক্যাচ ফেলেছেন মায়াভো। জীবন পেয়ে ইনিংস লম্বা করার চেষ্টা করছেন এই তরুণ ওপেনার।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন ৪৪ রান তুলেছেন জয় ও মুমিনুল। তবে এখনো ২৫ রানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। তাই আজ সকালে কঠিন সময়ের অপেক্ষা করছে বাংলাদেশি ব্যাটারদের জন্য।
এর আগে গতকাল সিলেটের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটেও অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। তাতে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানের বেশি করতে পারেনি তারা। এরপর শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশিদের ব্যাটিং শিখিয়েছিলেন দুই রোডেশিয়ান ওপেনার। তাতে কোনো উইকেট হারানো ছাড়াই দিন শেষ করেছিল জিম্বাবুয়ে।
আজ দিনের শুরুতেই বাংলাদেশি পেসারদের তোপের মুখে পড়ে জিম্বাবুয়ে। পাশাপাশি স্পিনাররাও ভালো বোলিং করেছেন। বিশেষ করে মেহেদি হাসান মিরাজ। এই ডানহাতি অফ স্পিনারের ফাইফারে জিম্বাবুয়েকে ২৭৩ রানে থামায় বাংলাদেশ।
আগের দিন ইতিবাচক ব্যাটিং করা বেনেট এদিনও ভালো শুরু করেন। মাত্র ৫৬ বলে তিনি পূর্ণ করেন ফিফটি। তবে তাকে ফিরিয়েই দিনটা শুরু করেন নাহিদ রানা। পরে নাহিদের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি দূর থেকে খেলার চেষ্টায় কট বিহাইন্ড হন ৫৬ রান করা ওপেনার। নিকোলাস ওয়েলচকে (২) উইকেটে দাঁড়াতে দেননি হাসান মাহমুদ। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে নাহিদের ব্যাক অব লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলে কট বিহাইন্ড হন ক্রেইগ আরভাইন।
প্রথম সেশনে মাত্র ৬৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে লিড পাওয়ার আশা জাগায় বাংলাদেশ। কিন্তু ওয়েসলি মাধভেরেকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন উইলিয়ামস। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে আরও একটি পঞ্চাশ করেন দারুণ ফর্মে থাকা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। মাদেভেরেকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন খালেদ আহমেদ।
এরপর শেন উইলিয়ামসকে (৫৯) ফিরিয়ে শুরু করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর একে একে নায়াশা মায়াভো (৩৫), ওয়েলিংটন মাসাকাদজা (৬), ব্লেসিং মুজারাবানি (১৭) আর ভিক্টর নিয়াউচিকে (৭) ফিরিয়ে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন মিরাজ। এর আগে ঘরের মাঠে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভারতের বিপক্ষে সবশেষ এই কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন অফ স্পিনার।
লিভারপুলের শিরোপা জিততে আর দরকার মোটে দুটি জয়। তবে সেটা খুব সহজ হবে না আর্না স্লটের দলের জন্য। কারণ পরের তিনটিই বিগ ম্যাচ; সুপার সিক্সে থাকা টটেনহাম, আর্সেনাল এবং চেলসির বিপক্ষে। তাই গতরাতে লেস্টারের বিপক্ষে জয় পাওয়াটা ভীষণ দরকার ছিল লিভারপুলের জন্য। কিন্তু ম্যাচের অবস্থা বলছিল ভিন্ন কথা। কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে ড্রয়ের দিকে যাচ্ছিল ম্যাচ। ঠিক তখনই ত্রাণকর্তা হয়ে এলেন ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড। তার একমাত্র গোলেই জয় নিয়ে ফিরেছে অলরেডরা।
রোববার দিবাগত রাতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে লেস্টার সিটিকে ১-০ গোলে হারিয়েছে লিভারপুল। এ জয়ে শিরোপা থেকে আর মাত্র একধাপ দূরে আছে লিভারপুল। ৩৩ ম্যাচে ২৪ জয় ও ৭ ড্রয়ে ৭৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লিভারপুল। ১৩ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে আর্সেনাল। অন্যদিকে এই হারে অবনমন নিশ্চিত হয়ে গেছে লেস্টার সিটির। আগামী মৌসুমে তারা খেলবে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে। ৩৩তম ম্যাচে ২৩ হারের স্বাদ পাওয়া লেস্টারের পয়েন্ট ১৮। অবনমনে সাউদাম্পটনের সঙ্গী হলো লেস্টার। তৃতীয় দল হিসেবে রেলিগেশন হতে পারে ইপসউইচ টাউনের। ৩৩ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে ১৮ নম্বরে দলটি।
চলতি মৌসুমেই লিভারপুলের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ডের। গুঞ্জন আছে অলরেডদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ফ্রি ট্রান্সফারে স্পেন জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেবেন তিনি। আর্নল্ডের এমন সিদ্ধান্তটা মানতে খানিক কষ্টই হচ্ছিল লিভারপুল ভক্তদের। এরই মধ্যে আবার ইনজুরির থাবায় পড়েন তিনি। লেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ফিরেই অলরেডদের হতাশা দূর করে দিলেন।
ম্যাচের ৭১ মিনিটে কনর ব্র্যাডলির বদলি হিসেবে মাঠে নামার ৫ মিনিটের মধ্যেই বাঁ পায়ের শটে গোল পেয়ে যান লিভারপুল ডিফেন্ডার। গোলটা হতে পারত সালাহ কিংবা ডিয়েগো জোটার। কিন্তু জটলার মাঝে গোল পাননি কেউই। আর ফাঁকায় বল পেয়ে ডেডলক ভাঙেন ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড। গোলের পর বুনো উদ্যাপনে মেতে শার্ট খুলে হলুদ কার্ডও দেখেছেন এই ডিফেন্ডার।
কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে স্বাগতিক লেস্টার সিটিকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা থেকে এখন মাত্র একহাত দূরে লিভারপুল। এখন নিজেদের পরের ম্যাচে ঘরের মাঠে জিতলেই লিগ শিরোপা ঘরে তুলবে লিভারপুল। অবশ্য ২৪ তারিখ ক্রিস্টাল প্যালেস যদি আর্সেনালকে হারিয়ে দেয়, তবে সেদিনই শিরোপা উৎসব করতে পারবে আর্নে স্লটের শিষ্যরা।
গতকাল শেষ হওয়া নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের সেরা একাদশ ঘোষণা করেছে ক্রিকেটের প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।
সেরা একাদশে বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ও শারমিন আকতারকে রাখা হয়েছে। দ্বাদশ ক্রিকেটার হিসেবেও আছেন বাংলাদেশের রাবেয়া খান। একাদশের অধিনায়ক পাকিস্তানের ফাতিমা সানা।
টুর্নামেন্টের সেরা একাদশে সর্বোচ্চ চার জন পাকিস্তানের, তিন জন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ও দুই জন করে বাংলাদেশ ও স্কটল্যান্ডের ক্রিকেটার আছেন।
একাদশের দুই ওপেনার ওয়েস্ট ইন্ডিজের হিলি ম্যাথুস ও পাকিস্তানের মুনিবা আলি। ম্যাথুস ২৪০ রান ও আসরের সর্বোচ্চ ১৩ উইকেট নিয়েছেন। ২২৩ রান করেছেন মুনিবা।
ব্যাটিং অর্ডারের তিন নম্বরে রাখা হয়েছে শারমিনকে। তিন হাফ-সেঞ্চুরিতে আসরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬৬ রান করেছেন তিনি।
চার নম্বরে রাখা হয়েছে আসরের সর্বোচ্চ ২৯৩ রান করা স্কটল্যান্ডের ক্যাথরিন ব্রাইসকে। পাশাপাশি বল হাতে ৬ উইকেটও নেন তিনি।
একাদশে উইকেটরক্ষক হিসেবে আছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার। দু’টি হাফ-সেঞ্চুরি ও এক সেঞ্চুরিতে ২৪১ রান করেছেন তিনি। উইকেটের পেছনে ২টি ক্যাচ ও ৩টি স্টাম্পিংও করেছেন নিগার।
ব্যাট হাতে ১০৭ রান ও পেস বোলিংয়ে ১২ উইকেট নিয়ে একাদশের অধিনায়ক নির্বাচিত করা হয়েছে পাকিস্তানের সানাকে।
এরপর আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের চিনেল হেনরি ও আলিয়া অ্যালাইন। হেনরি ১৭১ রান ও ৪ উইকেট নেন। অ্যালাইন ১২ উইকেট শিকারের পাশাপাশি ৬৩ রান করেন।
একাদশে অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার হিসেবে আছেন স্কটল্যান্ডের ক্যাথরিন ফ্রেজার। ৭৭ রান করার পাশাপাশি ১০ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
একাদশে শেষ দুই খেলোয়াড় হলেন- পাকিস্তানের দুই বাঁ-হাতি স্পিনার নাস্রা সান্ধু ও সাদিয়া ইকবাল। নাস্রা ১০ উইকেট ও সাদিয়া ৯ উইকেট নেন।
৬ উইকেট নিয়ে দ্বাদশ ক্রিকেটার হিসেবে আছেন লেগ স্পিনার রাবেয়া।
বাছাইপর্বের বাঁধা পেরিয়ে এ বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ।
নারী বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের একাদশ : হিলি ম্যাথুজ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), মুনিবা আলি (পাকিস্তান), শারমিন আকতার (বাংলাদেশ), ক্যাথরিন ব্রাইস (স্কটল্যান্ড), নিগার সুলতানা (বাংলাদেশ, উইকেটরক্ষক), ফাতিমা সানা (পাকিস্তান, অধিনায়ক), চিনেল হেনরি (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), আলিয়া অ্যালাইন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), ক্যাথরিন ফ্রেজার (স্কটল্যান্ড), নাস্রা সান্ধু (পাকিস্তান), সাদিয়া ইকবাল (পাকিস্তান)।
দ্বাদশ ক্রিকেটার : রাবেয়া খান (বাংলাদেশ)।