২৭ বছরে লিওনেল মেসি একটুও বদলাননি।
তার বয়স তখন আট কি নয়। পাড়ার ফুটবল মাঠ দাপিয়ে বেড়ানোর দিন তখন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেল, মাঝমাঠে বল এ পা-ও পা করে দুই খেলোয়াড়কে কাটানোর পর মেসির ‘রিভার্স পাসে’ প্রতিপক্ষ রক্ষণ গড়ের মাঠ! ভিডিওটা ছড়িয়ে পড়ে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচের পর। সেদিন আর্জেন্টিনার প্রথম গোলের পথে মাঝমাঠে দুই খেলোয়াড়কে কাটানোর পর মেসির চোখধাঁধানো রিভার্স পাস মনে পড়ে?
সে দিনগুলোতে বিশ্বকাপ নিয়ে মেসি কী ভাবতেন কে জানে। যা-ই ভেবে থাকুন, সে শুধু কল্পনাই ছিল। বিশ্বকাপ নিয়ে স্বপ্ন দেখার বয়স সেটি নিশ্চয়ই নয়। ওই বয়সে পরের দিনের চিন্তাই-বা কার থাকে! স্বপ্ন হয়ে সেটি আরও পরে এসেছে। বলা যায়, ফুটবলটাকে মেসির পেশা হিসেবে নেয়ার পর।
তারপর থেকে এত বছরে লিওনেল মেসির স্বপ্ন একটুও বদলায়নি।
যুব বিশ্বকাপ, অলিম্পিকে সোনা, ক্লাব ক্যারিয়ারে ৩৭ শিরোপা, সাতটি বালন দ’র, ছয় ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু, সেসবও ছাপিয়ে যাওয়া বছর দেড়েক আগের কোপা আমেরিকা... অনন্য সব অর্জনের সারিতে কত রেকর্ডই আছে। আছে কত মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখা মুহূর্ত। কিন্তু বিশ্বকাপ-স্বপ্ন? সে অপূর্ণই থেকে গেছে।
একসময় স্বপ্ন রূপ নিয়েছে চাওয়ায়। প্রথম দুই বিশ্বকাপ বুঝি শুধু বিশ্বকাপের কাঠিন্য বুঝেই পার হলো! তৃতীয়বারে, আট বছর আগে, স্বপ্নপূরণের খুব কাছে গেলেন। শ্রেষ্ঠত্ব তখন হাতছানি দেয়। কিন্তু মারিও গোৎশা এলেন তার গল্পের ‘ভিলেন’ হয়ে। জার্মানির বিপক্ষে সে ফাইনালে তার নিজের একটা মিসের ভিডিও যখন তাকে দেখানো হলো ফিফার ‘রিভিজিট’ প্রোগ্রামে, মেসির চোখের ভাষা বিষণ্নতার কথা বলে গেল। কণ্ঠ বলল, ‘জানি না কী বলব। খুব বাজে একটা অনুভূতি।’
তার কাছের বন্ধুদের সূত্রে আরও পরে জানা যায়, ২০১৪ বিশ্বকাপের সেই ফাইনাল দুঃস্বপ্ন হয়ে এসে অনেক রাতে ঘুম ভাঙিয়েছে মেসির। মাঝে রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে অস্থিরতায়, দ্বিতীয় রাউন্ডেই শেষ অস্থিরতায়। শঙ্কায়। মেসির বুঝি আর বিশ্বকাপ জেতা হলো না!
চার বছর পর আরেক ফাইনাল যে মেসির অপূর্ণতা ঘোচানোর সমীকরণ নিয়েই হাজির হবে, তা কে জানত!
এ যে তার শেষ বিশ্বকাপ, তা সবাই জানে। সৌদি আরবের কাছে প্রথম ম্যাচেই হারের পর একেকটি ম্যাচ এসেছে ‘আজই বুঝি বিশ্বকাপে মেসিকে দেখার শেষ দিন’ শঙ্কা নিয়ে, অথচ একে একে দিন পেরিয়ে বিশ্বকাপের শেষ দিনেও মেসি প্রাসঙ্গিক, এবং তা-ও কী দারুণভাবে! এই ৩৫ বছরেও যে অদম্য তাড়না নিয়ে ঝাঁপিয়েছেন প্রতি ম্যাচে, তা দেখে আর্জেন্টিনা কিংবদন্তি গাব্রিয়েল বাতিস্তুতার মনে হলো, ‘এ তো ২০ বছরের মেসি!’ আর সাধারণ আর্জেন্টাইনের স্মৃতিতে ফেরেন ১৯৮৬-র মারাদোনা।
এই যা, শুধু মেসি আর মেসি! লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে আজ ফাইনালে মেসির আর্জেন্টিনার বাইরে আরেকটা দলও তো আছে! মহাতারকা কি সে দলে নেই? হতে পারে কিলিয়ান এমবাপ্পে চার বছর আগেই বিশ্বকাপ জিতেছেন, মেসির মতো বিশ্বকাপ তার জন্য এত কায়মনোবাক্যের প্রার্থনা নয়, কিন্তু এ তো বিশ্বকাপই। এমন অমৃত যাতে কখনো অরুচি আসে না।
দ্বৈরথ বলুন বা লিগ্যাসি-ে যেকোনো থিমের গল্পে ‘মেসি বনাম এমবাপ্পে’ দ্বৈরথটা তো আরও বেশি মানিয়ে যায়। দুজন পিএসজিতে সতীর্থ। সতীর্থদের এমন মুখোমুখি হওয়ার গল্প অনেক দেখেছে বিশ্বকাপ, কিন্তু একই ক্লাবের দুই মহাতারকার বিশ্ব শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে লড়াই? সে অনন্য এক পটভূমি। কাতারি মালিকানাধীন ক্লাবটির দুই মহাতারকার কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে যাওয়ার পেছনে দুর্মুখেরা ষড়যন্ত্র খুঁজতে পারেন, মেসি আর এমবাপ্পের তাতে কিছু যাবে-আসবে না নিশ্চিত।
নেপথ্যের গল্প শুধু কি এতটুকুই? মেসিরই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও কি সেখানে মিশে নেই? মেসির সতীর্থ এমবাপ্পে, মেসির সঙ্গে তার সম্পর্ক দারুণ, মাঠে রসায়নও জমে, কিন্তু শৈশব থেকে ফুটবল মানে এমবাপ্পের কাছে তো রোনালদোই সবকিছু! খেলার ধরনেও রোনালদোর সঙ্গেই মেলে তার। রোনালদোর বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে শেষ আটে, কিন্তু মেসি যখন বিশ্ব শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে, রোনালদোর ছায়া সেখানেও গাঢ়!
আরও গল্প চাই? চার বছর আগে শেষ ষোলোতে মেসির আর্জেন্টিনার বিদায়ের গল্প লিখেছে এমবাপ্পের দুই গোল। সেবার ম্যাচ শেষে মেসি আর এমবাপ্পের হাত মেলানোর ছবিকে কী প্রতীকীই না মনে হয়েছিল! মেসির শেষ, এমবাপ্পের শুরু- হাতে হাত যেন ব্যাটন বদলের গল্প। প্রকৃতি তখন বুঝি মুচকি হেসেছে! শেষ ষোলোকে ‘ব্যাটন’ বদলানোর মঞ্চ হিসেবে বুঝি পছন্দ হয়নি তার। ফাইনালে আজ ফল যা-ই হোক, মেসির শেষ বিশ্বকাপে শেষটা যেভাবেই হোক, ব্যাটন বদল আজ হচ্ছে নিশ্চিত।
আহা, আবার সেই ব্যক্তিকেন্দ্রিক হিসাব-নিকাশ! দুই দলের পক্ষ থেকে পইপই করে বলে দেয়া হচ্ছে, মেসি আর এমবাপ্পেই সব নন। মেসিকে কীভাবে আটকাবে ফ্রান্স বা এমবাপ্পে নামের ‘বাইকের’ সামনে কীভাবে ‘স্পিডব্রেকার’ বসাবে আর্জেন্টিনা- সে কৌশলের বাইরেও অঙ্ক আছে। এই যেমন, ফ্রান্সের আক্রমণের ‘প্রাণপাখি’ গ্রিজমান আর আর্জেন্টিনায় আক্রমণে মেসির সঙ্গী আলভারেসও বদলে দিতে পারেন হিসাব-নিকাশ।
এই তারকাপুজোর বাইরে আর আছে তারার হিসাব। সেমিফাইনালের পর থেকে দুটি শব্দবন্ধ শিরোনামে এসেছে বারবার। স্প্যানিশভাষী আর্জেন্টিনায় ‘তেরসেরা এস্ত্রাইয়া’, ফরাসিদের ‘থোয়াজিয়েম এতোয়াল।’ বাংলায় দুটিরই অর্থ এক- তৃতীয় তারা!
দুটি করে তারা শোভা পায় দুই দলের জার্সির ক্রেস্টের ওপর। আজ এক আকাশের তারা সমান প্রাপ্তির তৃতীয় তারাটা কার?
প্রতিটি উপজেলার ক্রিকেটারদের ডাটাবেজের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। যেখানে ব্যাটসম্যান-বলার থেকে শুরু করে প্রতিটি খেলোয়াড়ের তথ্য থাকবে বলে জানিয়েছেন- বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, আমরা চাই বরিশালের প্রতিটি খেলোয়াড় বরিশালের সিস্টেমের মাধ্যমেই বরিশালকে রিপ্রেজেন্টেশন করুক। সব জেলা মিলিয়ে যখন একটি শক্তিশালী বিভাগীয় দল হবে, তখন আর কাউকে ঢাকার দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। রোববার বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে ২৫ বছর (রজত জয়ন্তী) উপলক্ষে বরিশাল জীবনানন্দ দাস স্টেডিয়ামে (বরিশাল স্টেডিয়াম) আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমনটি জানিয়েছেন।
এর আগে বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বরিশাল কবি জীবনানন্দ দাশ স্টেডিয়ামে অনূর্ধ্ব ১২, বালক-বালিকাদের সিক্স এ সাইড, পেস হান্টার, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন ইভেন্টের প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। যেখানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্রিকেট অনুরাগী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। গতকাল বিকালে প্রতিযোতায় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। দুপুর ১২টার দিকে বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওছার। এছাড়া অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) সোহরাব হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লুসিকান্ত হাজং, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মেহেরাব হোসেন অপি, শাহরিয়ার নাফিস ও সোহাগ গাজীসহ সাবেক খেলোয়াড়বৃন্দ, জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দুই বারের বিপিএল চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের কর্ণধার মিজানুর রহমান, এবং বরিশাল বিভাগও জেলা ক্রীড়া সংস্থাসহ খেলোয়াড়রা ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলামকে।
বিসিবি সভাপতি আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করছি বাংলাদেশের প্রতিটি উপজেলার খেলোয়াড়দের ডাটাবেজ বোর্ডের সিস্টেমের কাছে থাকবে। জেলার কোচরা প্রতিটি উপজেলার খেলোয়াড়দের চিনবে, কতজন লেগ স্পিনার রয়েছে, কতজন পেসার রয়েছে, কতজন ব্যাটস্ ম্যান রয়েছে তা তারা জানবে। জেলা কোচ সবকিছু বিভাগের কাছে রিপোর্ট করবে, যে তার কোন উপজেলাতে কতজন ক্রিকেটার খেলছে।
তিনি বলেন, বিভাগীয় পর্যায়ের হেডকোয়ার্টারে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ছোট একটি অফিস থাকবে, যেখানে একজন ক্রিকেটের প্রধান থাকবেন এবং তার অধীনে একজন হাই পারফরমেন্স কোচ থাকবে। এখানে যত ধরনের ক্রিকেট হবে সব তার তত্ত্বাবধায়নে হবে। তবে আমরা নরমাল ক্রিকেট গ্রোথকে ডিস্টার্ব করবো না।
হুট করেই কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে পারবেন না জানিয়ে বিসিসি সভাপতি আরও বলেন, আমি মাত্র ২৯ দিন হয়েছে ক্রিকেট বোর্ডে এসেছি। তাই হুট করেই কোনো প্রতিশ্রুতি দেব না। তবে এখানে বিপিএল হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে এ স্টেডিয়ামের গ্যালারি ফুল হয়ে যাবে এটা বলতে পারি। এজন্য আমি ক্রিকেট বোর্ডকে স্ট্রংলি বলতে পারবো। এ মাঠ উন্নয়ন করে বরিশালকে কীভাবে আরও অ্যাকটিভ ক্রিকেট বিভাগ হিসেবে পরিচালনা করতে পারি সে জন্য খুব চেষ্টা করছি আমরা।
বরিশালে গত ১০-১৫ বছর লীগ না হওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, লীগ না হলে একটি ছেলের সঙ্গে আপনি অবিচার করছেন। সোহাগ গাজী, কামরুলসহ এখানকার প্লেয়ারদের নিয়ে আমরা গর্ব করি। কিন্তু খেলা না হওয়ায় কত হাজার ক্রিকেটার আমরা নষ্ট করে ফেলেছি সেটা ভেবে আমরা লজ্জা পাই না! এখানে ক্রিকেট কোচিং কোর্স হয় না, আম্পায়ারিং কোচিং কোর্স, কিউরেটর কোচিং কোর্স হয় না। ছোট ক্রিকেট বোর্ডের যে অফিস হবে সেটার মাধ্যমে এ কাজগুলো ইনশ্আল্লাহ করা হবে। এজন্য বরিশালবাসীর সহযোগিতা চান তিনি।
চলমান টেস্ট সিরিজ শেষে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলবে শ্রীলঙ্কা। গতকাল শুক্রবার আসন্ন এই সিরিজকে সামনে রেখে ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি)। বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কাকে নেতৃত্ব দেবেন চারিথ আসালাঙ্কা। ১৬ সদস্যের এই দলে একমাত্র নতুন মুখ মিলান রত্ননায়েকে। ২৮ বছর বয়সি এই বাঁহাতি ব্যাটার অবশ্য বাংলাদেশের জন্য নতুন নন। চলমান দুই টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে গলে খেলেছিলেন তিনি। আগামী ২ জুলাই শুরু হবে ওয়ানডে সিরিজ। একই মাঠে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচ হবে আগামী ৫ জুলাই। আর সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ হবে ৮ জুলাই। এই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে পাল্লেকেলেতে।
শ্রীলঙ্কা স্কোয়াড: চারিথ আসালাঙ্কা (অধিনায়ক), পাথুম নিশাঙ্কা, আভিস্কা ফার্নান্দো, নিশান মাদুশঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা, কামিন্দু মেন্ডিস, জানিথ লিয়ানাগে, দুনিথ ওয়েল্লালাগে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মহেশ থিকসানা, জেফ্রি ভ্যান্ডারসে, মিলন রত্ননায়েকে (ফিট থাকা সাপেক্ষে), দিলশান মাদুশাঙ্কা, আসিথা ফার্নান্দো ও ইশান মালিঙ্কা।
ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপ ক্লাব লেস্টার সিটিতে থেমে গেল রুড ফন নিস্টেলরয়ের কোচিং অধ্যায়। হতাশাজনক পারফরম্যান্সের কারণে ‘পারস্পরিক সমঝোতায়’ চুক্তি বাতিল করেছে ক্লাবটি। ফলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার হামজা চৌধুরীর ক্লাবটি আবারও নতুন কোচের সন্ধানে। ডাচ কিংবদন্তি ফন নিস্টেলরয় মাত্র ২৭ ম্যাচে দায়িত্ব পালন করেন লেস্টারে থেকে। তার অধীনে প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমন নিশ্চিত হয় ক্লাবটির। সেই সঙ্গে চ্যাম্পিয়নশিপেও খুব একটা উন্নতি করতে পারেনি দলটি। গত বছরের নভেম্বরে স্টিভ কুপারকে বরখাস্ত করে ২০২৭ সাল পর্যন্ত চুক্তিতে নিস্টেলরয়কে দায়িত্ব দিয়েছিল লেস্টার। তখন ক্লাবটি প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের ১৬ নম্বরে থাকলেও তার অধীনে পারফরম্যান্স আরও খারাপের দিকে যায়। অবশেষে গত ২০ এপ্রিল লিভারপুলের বিপক্ষে ১-০ গোলে হারের মধ্য দিয়ে লেস্টারের অবনমন নিশ্চিত হয়ে যায়। বিদায়বার্তায় ভ্যান নিস্টেলরয় ক্লাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘আমি লেস্টার সিটির খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ, অ্যাকাডেমি ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই তাদের পেশাদারিত্ব ও সহযোগিতার জন্য। সমর্থকদের প্রতিও কৃতজ্ঞ তাদের অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য। ক্লাবের ভবিষ্যতের জন্য রইল শুভকামনা।’
নিস্টেলরয়ের অধীনে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে লেস্টার জিতেছে মাত্র ৫ ম্যাচ। এর মধ্যে একটি ছিল এফএ কাপের ম্যাচ কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের (কিউপিআর) বিপক্ষে, বাকি চারটি চ্যাম্পিয়নশিপে, যার দুটি এসেছে ইতোমধ্যেই অবনমিত সাউথ্যাম্পটন ও ইপ্সউইচ টাউনের বিপক্ষে। নতুন কোচ নিয়োগের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন ইংলিশ কোচ শন ডাইচ, যিনি বার্নলি ও এভারটনের দায়িত্বে ছিলেন। শেফিল্ড ওয়েডনেসডের বর্তমান কোচ ড্যানি রোলও রয়েছেন এই দৌড়ে।
ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে বোকা জুনিয়র্স আগে থেকেই বিদায় নিয়েছিল। ক্ষীণ একটা আশা ছিল তাদেরই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিভারপ্লেটের। তবে সে আশাটাকে বাস্তবতায় রূপ দিতে পারেনি দলটা। ইন্টার মিলানের কাছে ২-০ গোলে হেরে বসেছে তারা। আর তার ফলে বিশ্বকাপ থেকে দলটা বিদায় নিল প্রথম রাউন্ড থেকেই। আর্জেন্টিনা থেকে আসা দুই দলেরই বিদায়ঘণ্টা বেজে গেল তাতে।
ওদিকে ক্লাব বিশ্বকাপে ব্রাজিলের পোয়াবারো চলছেই। আফ্রিকান মামেলোদি সানডাউনসের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে ফ্লুমিনেন্স চলে গেছে শেষ ষোলোয়। এর ফলে ব্রাজিলের সব দলই চলে গেছে নকআউটে।
শেষ ষোলোয় যেতে হলে রিভারপ্লেটকে হারাতে হতো ইন্টার মিলানকে। দলটা আগের ম্যাচে মন্তেরের সঙ্গে ড্র করেই বিপদটা বাধিয়েছিল। সে কারণে শেষ ম্যাচটা জিততে হতো তাদেরকে। তা হলে কোনো হিসেব ছাড়াই দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রাখতে পারত তারা।
কিন্তু তা আর হয়নি। দলটা বিপদে পড়েছে ম্যাচের ৬৬ মিনিটে। এর আগ পর্যন্ত গোল না পেলেও ইন্টারকে ঠিকই রুখে দিতে পেরেছিল তারা। ৬৬ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন লুকাস মার্তিনেজ। ১০ জনের দলে পরিণত হয় রিভারপ্লেট। এরপরই কাজটা সহজ হয়ে যায় ইন্টারের। ৭০ মিনিটে গোল করেন ফ্রান্সেসকো পিও এসপোসিতো। যোগ করা সময়ে আলেসান্দ্রো বাস্তোনি গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন। এরপর লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন গনজালো মন্তিয়েল। ২-০ গোলে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় রিভারপ্লেটকে। দিনের অন্য ম্যাচে মন্তেরে ৪-০ গোলে হারিয়েছে উরাওয়া রেড ডায়মন্ডসকে। তাতেই ইন্টার আর উরাওয়া চলে যায় শেষ ষোলোয়, বিদায় নেয় রিভারপ্লেট।
ওদিকে ব্রাজিলের দল ফ্লুমিনেন্স রুখে দিয়েছে মামেলোদি সানডাউনসকে। বলের দখল থেকে শুরু করে লক্ষ্যে শট, সব কিছুতে আফ্রিকান মামেলোদির আধিপত্য ছিল ম্যাচে। তবে এতকিছুর পরও ব্রাজিলের দলটা মাথা নোয়ায়নি। দারুণভাবে রুখে দিয়েছে প্রতিপক্ষকে। এফ গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় সেরা দল হয়ে তাই তারা চলে গেছে শেষ ষোলোয়। সেরা দল হয়েছে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড, শেষ ম্যাচে তারা হারিয়েছে উলসান হুন্দাইকে।
ফ্লুমিনেন্সের এই ম্যাচের পর ব্রাজিলের সব দলের শেষ ষোলো নিশ্চিত হয়ে গেল। পালমেইরাস, বোতাফোগো আর ফ্লামেঙ্গো আগেই নক আউটের টিকিট কেটেছিল।
শেষ ষোলোয় চার দল আছে ব্রাজিলের। শেষ আটেও যে একটা থাকবে, তাও নিশ্চিত হয়ে গেছে। নক আউটের প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি হবে পালমেইরাস আর বোতাফোগো। ওদিকে ফ্লামেঙ্গো খেলবে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে। ফ্লুমিনেন্স প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে ইন্টার মিলানকে।
প্রায় প্রতিটি খেলায় খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিতে গ্যালারিতে হাজির হন ভক্তরা। প্রিয় খেলোয়াড়কে ঘিরে বিশেষ কিছু বার্তা লিখে প্ল্যাকার্ড হাতে দেখা যায় ভক্তদের। সেই প্ল্যাকার্ডে পছন্দের খেলোয়াড়কে বিয়ের প্রস্তাব দিতে দেখা যায় হরহামেশায়। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে চলমান ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে।
লিওনেল মেসিকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন এক নারী। যা রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ঘটনাটি ঘটে গত পরশু মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে পালমেইরাসের বিপক্ষে ইন্টার মায়ামির ম্যাচে। ২-২ গোলে ড্র করে মাঠ ছাড়ে মেসির মায়ামি।
এই ম্যাচে গ্যালারিতে ৯৮ বছর বয়সি এক বৃদ্ধা মেসিকে প্ল্যাকার্ডে বিয়ের প্রস্তাব দেন। প্ল্যাকার্ডে লিখে আনেন, ‘মেসি উইল ইউ ম্যারি মি?’ ম্যাচের বিরতির সময় মাঠে ছিলেন মেসি। তখন সেই বৃদ্ধা গ্যালারি থেকে মেসির প্রতি প্ল্যাকার্ডটি উঁচিয়ে ধরে তাকে ডেকেছেন এবং বিয়ের কথাও বলেছেন। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তিও দূর থেকে ইতিবাচকভাবে মিষ্টি হাসিতে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে হাতের ইশারায় তাকে প্ল্যাকার্ডটি নামিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিত করেন।
আন্তোনেল্লা রোকুজ্জো মেসির স্ত্রী। প্রেমের পরিণতি হিসেবে ২০১৭ সালে বিয়ে করেন দুজন। তাদের তিনটি সন্তান আছে। মেসিকে এই বৃদ্ধার বিয়ের প্রস্তাবের ছবি ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই মজার সব মন্তব্য করেছেন। ইনস্টাগ্রামে একজন লিখেছেন, ‘তার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আন্তোনেল্লাও পারবে না।’
সংবাদমাধ্যমের তথ্য মতে, ৯৮ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধার নাম পলিন কানা। যুক্তরাষ্ট্রের এই ক্রীড়াপ্রেমী নারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। খেলাধুলার বড় ইভেন্টে নাতি রস স্মিথের ভিডিওতে দেখা যায় তাকে।
রস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনফ্লুয়েন্সার, তার মজার সব টিকটক ভিডিওতেও পলিনকে অংশ নিতে দেখা যায়। টিকটকে ২ কোটি ৩০ লাখ অনুসারী রয়েছে রস স্মিথের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পলিনকে অনেকেই ‘গ্রানি স্মিথ’ নামে ডাকেন। এনএফএল এবং ডব্লুডব্লুইর ম্যাচেও দুজনকে ভিডিওতে অংশ নিতে দেখা গেছে।
টেস্ট ক্রিকেটের মর্যাদা অর্জনের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশেষ সংবর্ধনার আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এ মাইলফলক স্মরণে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকাল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত স্টেডিয়ামের মিডিয়া প্লাজায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সাজিব ভূঁইয়া। বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল এতে সূচনা বক্তব্য দেবেন।
এদিনের অন্যতম আকর্ষণ থাকবে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট খেলা দলের সদস্যদের সম্মাননা প্রদান। ২০০০ সালের নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের ওই স্কোয়াডের জীবিত সদস্যদের স্মারক ব্লেজার ও ক্যাপ পরিয়ে সম্মান জানানো হবে।
প্রথম টেস্ট দলের সদস্যরা সেদিনের স্মৃতিচারণও করবেন সংক্ষিপ্ত এক পর্বে।
আয়োজনে থাকবে কেক কাটার আনুষ্ঠানিকতা এবং সাবেক খেলোয়াড় ও অতিথিদের সঙ্গে দলগত ছবি তোলার আয়োজন।
বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট একাদশ ছিল— শাহরিয়ার হোসেন, মেহরাব হোসেন, হাবিবুল বাশার, আমিনুল ইসলাম, আকরাম খান, আল সাহারিয়ার, নাইমুর রহমান (অধিনায়ক), খালেদ মাসুদ (উইকেটকিপার), মোহাম্মদ রফিক, হাসিবুল হোসেন ও রঞ্জন দাস।
আগামী মাসে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে অংশ বাংলাদেশ সফরে আসবে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। আসন্ন এই সিরিজের সূচি গত বুধবার প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৬ জুলাই বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখবে পাকিস্তান। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২০ জুলাই। সিরিজের বাকি দুই টি-টোয়েন্টি যথাক্রমে ২২ ও ২৪ জুলাই। এই সিরিজের সব ম্যাচই হবে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। সিরিজ শেষে ২৫ জুলাই দেশে ফিরে যাবে পাকিস্তান দল। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে ম্যাচগুলো। সবশেষ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি চলাকালীন এই দ্বিপক্ষীয় সিরিজ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বিসিবি ও পিসিবির শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে। বাংলাদেশ সফর শেষ করেই ক্যারিবিয়ান দীপপুঞ্জ সফরে যাবে পাকিস্তান দল। সেই সফরে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে পাকিস্তান।
বার্সেলোনার মূল দলের হয়ে ১৭ বছর খেলেছেন লিওনেল মেসি। ২০ বছর আগে পেশাদার ফুটবলে অভিষেক হয়েছিল এক কিংবদন্তি- লিওনেল মেসির। তখন কে জানত, ছোটখাটো গড়নের এই আর্জেন্টিনার তরুণ একদিন হয়ে উঠবেন ইতিহাসের সেরা ফুটবলার। দুই দশক পেরিয়ে আজ মেসি শুধু ফুটবল ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ নামই নয়- রেকর্ড, পুরস্কার আর সাফল্যের যে পাহাড় তিনি গড়েছেন, তা তুলনাহীন। আর্জেন্টিনার হয়ে টানা চারটি শিরোপা জয় করেছেন মেসি- কোপা আমেরিকা (২০২১, ২০২৪), ফিনালিসিমা (২০২২), এবং স্বপ্নের বিশ্বকাপ (২০২২)। জাতীয় দলের হয়ে এটি ছিল এক অবিশ্বাস্য ঘুরে দাঁড়ানো অধ্যায়। তবে মেসিকে আজও সবচেয়ে বেশি মনে রাখা হয় বার্সেলোনার ‘নম্বর ১০’ হিসেবেই। ক্লাবটির হয়ে ১৭ বছরে সর্বোচ্চ ৭৭৮টি ম্যাচ খেলেছেন, করেছেন রেকর্ড ৬৭২টি গোল, ৩০৩টি অ্যাসিস্ট এবং জিতেছেন ৩৫টি ট্রফি- যা ক্লাব ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এক ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোল করার ক্ষেত্রে তিনি ছাড়িয়ে গেছেন পেলের রেকর্ডও। শুধু তাই নয়, ২০১২ সালে একটি পঞ্জিকা বর্ষে সর্বোচ্চ ৯১ গোল করে গড়েছেন আরেক অনন্য রেকর্ড। চ্যাম্পিয়নস লিগে ছয়বার সর্বোচ্চ গোলদাতা, ইউরোপিয়ান গোল্ডেন ‘শু’ জিতেছেন ছয়বার, আর লা লিগায় আটবার পেয়েছেন ‘পিচিচি’ ট্রফি। জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ ও কোপা আমেরিকার মঞ্চেও মেসি রেখেছেন তার প্রতিভার ছাপ। ২০১৪ বিশ্বকাপে হয়েছিলেন সেরা খেলোয়াড়, আর বহু কাঙ্ক্ষিত আন্তর্জাতিক শিরোপা পেয়েছেন ২০২১ কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলকে হারিয়ে। ২০২২ সালে স্বপ্নের বিশ্বকাপ জিতে সব অপূর্ণতাকে পূর্ণতা দিয়েছেন তিনি। এর আগে ২০০৮ সালে বেইজিং অলিম্পিকে জিতেছেন সোনার পদক। ২০২১ সালে দীর্ঘ ২১ বছরের বার্সেলোনা অধ্যায়ের ইতি ঘটে। কিন্তু ‘নম্বর ১০’ জার্সি গায়ে মেসির প্রতিটি পদক্ষেপই আজ ইতিহাসের অংশ। গোল, অ্যাসিস্ট, রেকর্ড আর ট্রফির বাইরে- বার্সার ‘নম্বর ১০’ হিসেবে মেসি হয়ে থাকবেন ক্লাব ইতিহাসের চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি।
বহুমাত্রিক চরিত্রে সাবলীলভাবে অভিনয় করে বলিউডে নিজের শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছেন রাজকুমার রাও। দর্শকের ভালোবাসা আর একের পর এক ব্যবসাসফল ছবিই এর প্রমাণ। ভারতীয় শিল্পপতি শ্রীকান্ত বোল্লার চরিত্রে অসাধারণ পারফরম্যান্স অভিনেতা হিসেবে তাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। এবার রাজকুমারকে দেখা যাবে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে, ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীর বায়োপিকে সৌরভের চরিত্রে অভিনয় করতে চলেছেন তিনি। এত দিন মুখ না খুললেও এবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানালেন এ অভিনেতা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌরভ গাঙ্গুলীর ভূমিকায় অভিনয়ের কথা নিশ্চিত করেছেন রাজকুমার রাও। তিনি বলেন, ‘এখন যেহেতু দাদা (গাঙ্গুলী) নিজেই বলে দিয়েছেন, আমিও জানাচ্ছি, হ্যাঁ, আমি তার বায়োপিকে কাজ করছি।’ অভিনেতা জানিয়েছেন, এই চরিত্র নিয়ে বেশ নার্ভাস তিনি। কারণ, এটি বিশাল দায়িত্ব বলে মনে করছেন তিনি।
এই বায়োপিকের জন্য রাজকুমার রাওকে শিখতে হচ্ছে বাংলা ভাষা, যেখানে তার স্ত্রী পত্রলেখা তাকে সাহায্য করেছেন। ছবিটি পরিচালনা করবেন বিক্রমাদিত্য মোটওয়ানে; এটি প্রযোজনা করছে লাভ ফিল্মস।
রাজকুমার রাওয়ের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সৌরভ গাঙ্গুলী বলেন, রাজকুমার রাও একজন দারুণ অভিনেতা এবং এই চরিত্রের জন্য উপযুক্ত পছন্দ। তিনি আরও জানান, ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে ছবির শুটিং শুরু হবে এবং মুক্তি পাবে ডিসেম্বর ২০২৬-এ। গাঙ্গুলী নিজেও ছবির সৃজনশীল দিকগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত থাকবেন।
এর পাশাপাশি রাজকুমার রাওয়ের পরবর্তী ছবি ‘মালিক’। পুলকিত পরিচালিত এই অ্যাকশন-ড্রামা ছবিটি এলাহাবাদ শহরকে পটভূমি করে গড়ে উঠেছে। এক গ্যাংস্টারের অপরাধজগতের শীর্ষে পৌঁছানোর গল্প নিয়ে তৈরি ‘মালিক’ মুক্তি পাবে আগামী ১১ জুলাই ২০২৫–এ।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরীকে নিয়ে ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। গত মার্চে ভারতের বিপক্ষে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয় বাংলাদেশি এই ফুটবলারের। জুনে ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে জাতীয় দলের জার্সিতে নিজের প্রথম গোলটিও করেন তিনি। এখন আন্তর্জাতিক ফুটবলের বিরতি চলায় হামজার মনোযোগ পুরোপুরি আগামী মৌসুমের দিকেই। হামজা তার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন লিস্টার সিটির অ্যাকাডেমি দিয়ে। ২০১৭ সালে ক্লাবটির সিনিয়র দলে অভিষেক হয় তার। সাবেক প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন লেস্টার সিটির হয়ে ১০০টিরও বেশি ম্যাচ খেলেছেন এই মিডফিল্ডার। তবে তার ক্যারিয়ারে বার্টন আলবিয়ন ও ওয়াটফোর্ডের মতো ক্লাবে খেলার অভিজ্ঞতাও রয়েছে। সর্বশেষ, ২০২৪-২৫ মৌসুমের দ্বিতীয়ার্ধে হামজা ধারে যোগ দেন শেফিল্ড ইউনাইটেডে। চ্যাম্পিয়নশিপে তৃতীয় স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করলেও প্লে-অফ ফাইনালে সান্ডারল্যান্ডের কাছে হেরে প্রিমিয়ার লিগে উঠতে ব্যর্থ হয় দলটি।
ধারের মেয়াদ শেষে হামজা ২০২৫-২৬ মৌসুমের জন্য ফিরছেন তার মূল ক্লাব লিস্টার সিটিতেই। বর্তমানে ক্লাবটির সঙ্গে হামজার আরও দুই বছরের চুক্তি রয়েছে।
লিস্টার প্রিমিয়ার লিগ থেকে চ্যাম্পিয়নশিপে নেমে যাওয়ায় হামজাকে আগামী মৌসুমে ক্লাবটির হয়েই খেলতে হতে পারে। তবে গ্রীসের নামকরা ক্রীড়া গণমাধ্যম স্পোর্টস এফএস জানিয়েছে, গ্রিক সুপার লিগের ২০২৪-২৫ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন অলিম্পিয়াকোস বাংলাদেশের এই মিডফিল্ডারকে দলে ভেড়ানোর আগ্রহ দেখাচ্ছে। যদি হামজার সঙ্গে অলিম্পিয়াকোসের চুক্তি হয় তাহলে আগামী মৌসুমে তাকে দেখা যাবে চ্যাম্পিয়নস লিগে। তবে আগামী ২০২৫-২৬ মৌসুমে কোথায় দেখা যাবে বাংলাদেশের এই তারকা ফুটবলারকে- তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে ইউরোপিয়ান বড় মঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সম্ভাবনা দেশের ফুটবলের জন্য নিঃসন্দেহে বড় সুখবর। এখন দেখার বিষয়, হামজা কি লিস্টারে থেকে দলকে আবার প্রিমিয়ার লিগে তুলবেন, নাকি নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে পাড়ি জমাবেন গ্রীসে।
শ্রীলঙ্কার মাটিতে এনামুল হক বিজয়ের ব্যাট থেকে রান আসছেই না। গল টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও শূন্য রানে ফিরেছেন তিনি। আসিথা ফার্নান্ডোর বাউন্সার বলটিকে ব্যাটের ভেতরের ধার লাগিয়ে স্টাম্পে পাঠান এনামুল, যা যেন তার চলমান দুর্দশারই প্রতীক।
মজার বিষয় হলো, এই আউট হওয়ার আগে দুইবার জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। ফার্নান্ডোরই একটি বল স্লিপে ক্যাচ তুলে দিলেও উইকেটকিপার তা হাতছাড়া করেন। পরের বলেও একই অঞ্চলে ক্যাচের সুযোগ তৈরি হয়, কিন্তু বলটি নিচু হওয়ায় ফিল্ডাররা ধরতে ব্যর্থ হন।
এনামুলের এই সফরটা যেন ভাগ্যের সাথে লুকোচুরির খেলা। গল টেস্টের প্রথম ইনিংসে শূন্য, দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ রানের পর এবার আবার শূন্য। ক্রিজে দাঁড়ালেই কীভাবে যেন রান না পাওয়ার অভিশাপ তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। ব্যাট হাতে আত্মবিশ্বাসের অভাব স্পষ্ট, প্রতিটি বলই যেন তার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
এমন সময়ে প্রশ্ন উঠছে, দলের ওপেনিং জুটিতে এনামুলের স্থান কতটা যৌক্তিক? নাকি দ্রুত কোনো বিকল্প খুঁজে বের করার সময় এসেছে? শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরের ইনিংসটিই হয়তো তার জন্য শেষ সুযোগ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
হামজা চৌধুরী বাংলাদেশি হওয়ার পর প্রবাসী ফুটবলারে মনোযোগ বাফুফের। শমিত সোম, কিউবা মিচেলের পর আলোচনায় জায়ান হাকিম। এর মধ্যে প্রবাসী ফুটবলারের বড় একটি বাজার বসতে যাচ্ছে ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে। ২৮, ২৯ ও ৩০ জুন জাতীয় স্টেডিয়ামে ১৪ দেশের ৫১ প্রবাসী ফুটবলারের ট্রায়াল অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ট্রায়ালে আগ্রহী খেলোয়াড়দের একটি তালিকা তৈরি করেছে। তিন দিন এ ট্রায়াল পরিচালনা করবে বাফুফের টেকনিক্যাল কমিটি। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, কানাডা, ফিনল্যান্ড, বেলজিয়াম, ওয়েলস, ইতালি, মালয়েশিয়া, এস্তোনিয়া, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ায় থাকা প্রবাসীরা ট্রায়ালে অংশ নেবেন।
ট্রায়ালে সাড়া পড়েছে যুক্তরাজ্য থেকে বেশি। সেখান থেকে নিবন্ধন করেছেন ২০ ফুটবলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ ফুটবলার নাম লিখিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। সুইডেন থেকে ৫ ও কানাডা থেকে ২ ফুটবলার দেবেন ট্রায়াল। বাকি দেশগুলো থেকে একজন করে ট্রায়ালে অংশ নেবেন। দেশের ফুটবল ইতিহাসে এই প্রথম পঞ্চাশোর্ধ্ব বিদেশি ট্রায়াল দিচ্ছেন। তাই আয়োজনে কোনো রকমের ত্রুটি রাখতে চাইছে না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। কোন দেশের কতজন- ২০ যুক্তরাজ্য, ১৪ যুক্তরাষ্ট্র, ৫ সুইডেন, ২ কানাডা, ১ ফিনল্যান্ড, বেলজিয়াম, ওয়েলস, ইতালি, মালয়েশিয়া, এস্তোনিয়া, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া
ট্রায়ালের জন্য ২৭ জুন রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। বয়সসীমা সর্বকনিষ্ঠ ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ২৭ পর্যন্ত। তবে মূল ফোকাসটা থাকবে অনূর্ধ্ব-১৭, অনূর্ধ্ব-১৯ ও অনূর্ধ্ব-২৩ বয়সি ফুটবলারদের ওপরে। ট্রায়ালে থাকবে পাঁচ সদস্যের অভিজ্ঞ কোচিং প্যানেল। নেতৃত্বে থাকবেন বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সাইফুল বারী টিটু। থাকবেন দেশের শীর্ষ ক্লাবের কোচ এবং বাফুফের নির্বাহী কমিটিতে থাকা জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলাররাও। এই ট্রায়ালে থাকার কথা আছে জাতীয় দলের কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার। তিনি থাকেন, ট্রায়ালে পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় থাকবেন। বিশেষজ্ঞরা প্লেয়ার পারফরম্যান্সের স্বতন্ত্র মূল্যায়ন করবেন। তিন দিনের ট্রায়ালে প্রতিদিন ফুটবলারদের দুটি গ্রুপে ভাগ করে ২ ঘণ্টার সেশন হবে। শেষ দিন প্রবাসী ফুটবলারদের মধ্যে একটি প্রীতি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ট্রায়ালে অংশ নেওয়া ফুটবলাররা ব্যক্তিগত খরচে ঢাকায় আসছেন। বাফুফে শুধু তাদের জার্সি, শর্টস ও মোজা দেবে। ব্যক্তিগত ইকুইপমেন্টগুলো ট্রায়ালে অংশ নিতে আসা খেলোয়াড়দের জোগাড় করে নিতে হবে।
লিডস টেস্টে যেন সেঞ্চুরির উৎসব বসেছে ভারতের ড্রেসিংরুমে। এক টেস্টেই পাঁচটি সেঞ্চুরি করে ইতিহাস গড়েছে ভারতীয় দল। টেস্ট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক ম্যাচে ভারতের পাঁচ ব্যাটার পেয়েছেন শতরান। এই কীর্তির সুবাদে এক বিব্রতকর রেকর্ড থেকে অবশেষে মুক্তি পেল বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা। এতদিন এই তিন দেশের বিপক্ষেই এক টেস্টে ভারতের সর্বোচ্চ চারটি করে সেঞ্চুরির রেকর্ড ছিল। এবার সেই রেকর্ড পেছনে ফেলে নতুন উচ্চতায় উঠল রোহিত শর্মার দল।
লিডসের এই টেস্টে দুই ইনিংসে মিলিয়ে সেঞ্চুরি করেছেন যশস্বী জয়সওয়াল (১০১), শুবমান গিল (১৪৭), লোকেশ রাহুল (১৩৭) এবং ঋষভ পন্ত (১৩৪ ও ১১৮)। জোড়া শতরান করা পন্ত গড়েছেন আরও একটি অনন্য রেকর্ড। ১৪৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম এশিয়ান উইকেটরক্ষক হিসেবে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি পাওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তিনি। বিশ্বের দ্বিতীয় উইকেটরক্ষক হিসেবে এই কীর্তি গড়লেন তিনি। এর আগে শুধু জিম্বাবুয়ের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারই (২০০১) এই কীর্তি গড়েছিলেন। ভারতের হয়ে এক টেস্টে চার সেঞ্চুরির নজির ছিল আগেও। ২০০৭ সালে মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে, ২০১০ সালে ইডেন গার্ডেন্সে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এবং ২০১৭ সালে নাগপুরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক ইনিংসেই চার সেঞ্চুরি করেছিল ভারত। এবার সেই রেকর্ড ছাপিয়ে গেলেন পন্তরা।