ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস ক্লাবের উদ্যোগে ‘২য় ডিএমআরসি-বে ন্যাশনাল স্পোর্টস সিমুলাকরা-২০২৩’ পাওয়ার্ড বাই প্রাইম ব্যাংক-এর পর্দা উঠছে আজ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। সেই সঙ্গে জাতীয় ফুটবল দলের ডিফেন্ডার তপু বর্মণ থাকবেন বিশেষ অতিথি হিসেবে। অনুষ্ঠানের প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে দৈনিক বাংলা।
চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে থাকছে ফুটসাল, বাস্কেটবল, টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন, দাবা থেকে শুরু করে খেলাধুলাবিষয়ক কুইজ ও অলিম্পিয়াড। রং-বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুনে সুশোভিত ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ প্রাঙ্গণ। দেশের চার শতাধিক স্কুল-কলেজের পাঁচ হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রী অংশ নেবে এ অনুষ্ঠানে।
আগামী বৃহস্পতিবার শেষ হবে এই অনুষ্ঠান। চার দিনব্যাপী এ আয়োজনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম এমপি।
যুক্তরাষ্ট্রের ফিল্ম ফেস্টে দর্শকপ্রিয়তার পুরস্কার জিতেছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘HIV Girl’। তিন মিনিটের এই চলচ্চিত্রটির নির্মাতা রওনাকুর সালেহিন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুপরিচিত ফিল্ম ফেস্ট ‘ভিডিও কন্টেন্ট ফেস্ট 3 Generation’ এ চলচ্চিত্রটিকে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে। নিজের দেশ ও বিশ্বে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে যারা ভিজ্যুয়াল কাজ করে এবং সুন্দর পৃথিবী ও সামাজিক পরিবেশে মানুষের পরিবর্তনে প্রভাবিত করে, তাদের চলচ্চিত্রগুলো ফেস্টিভ্যালে পুরস্কৃত করা হয়।
প্রতি বছরের মতো এ বছরও ‘3 Generation’ তাদের উৎসব আয়োজন করে। এতে ১৪১টি চলচ্চিত্রের মধ্যে ১১টি চলচ্চিত্র জায়গা দখল করে। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধিত্ব করে রওনাকুর সালেহীনের নির্মিত সাড়ে ৩ মিনিটের এক্সপ্রিমেন্টাল চলচ্চিত্র ‘HIV Girl’। শুধু তাই নয়, সেখানে ১১টি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দর্শক পছন্দের পুরস্কার অর্জন করে রওনাকুরের এ চলচ্চিত্রটি।
HIV Girl চলচ্চিত্রটিতে এ দেখানো হয়েছে, একজন মেয়ে এইচআইভি আক্রান্ত। যেখানে সে তার নিজের গল্প বর্ণনা করছে পেইন্টিংয়ের মাধ্যমে। আর কেন সে এইআইভি আক্রান্ত তাও বিস্তারিত পেইন্টিংয়ের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা হয়। হরর সাফুকেশন বিজিএম এবং অদ্ভুত সাউন্ড ডিজাইনের মাধ্যমে সাড়ে তিন মিনিটের এ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়। চলচ্চিত্রের পেন্টিং আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন নুর এ জান্নাত এবং অভিনয়ে করেন তাহামিনা হক এনি। চিত্রনাট্য, চিত্রগ্রহণ, পোস্ট-প্রোডাকশন ছাড়াও চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন রওনাকুর সালেহীন।
জানতে চাইলে রওনাকুর সালেহীন বলেন, ‘দেশের বাইরে পুরস্কার অর্জন, এটা সত্যি একজন নির্মাতার জন্য অনেক আনন্দের। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের মতো কোনো দেশ থেকে যদি দর্শক অ্যাওয়ার্ড হয়, তা সত্যিই আনন্দের মাত্রা অনেকাংশ বাড়িয়ে দেয়। এবস্ট্রাক এবং এবিউস ফটো পেইন্টিং পোর্ট্রেটভিত্তিক নির্মিত আমার এ চলচ্চিত্রের ছোট একটা বার্তা হচ্ছে, মানুষ শরীরে নানা রোগ নিয়েও বেঁচে থাকতে পারে, যদি তার মনোবলশক্তি প্রকট থাকে, যদি সেই রোগ এইচআইভিও হয়।’
রওনাকুর সালেহীন চলচ্চিত্র নির্মাণের পাশাপাশি চিত্রগ্রাহক, চিত্রনাট্যকার, গীতিকার ও লেখক হিসেবে কাজ করছেন তিনি। বর্তমানে তার নির্মিত চলচ্চিত্র দেশের ওটিটিতে প্রদর্শিত হচ্ছে। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন ফিল্ম ফেস্টিভালের ফ্যাসিলেটর ও জুরি হিসেবেও কাজ করছেন।
একজনের জন্মগতভাবেই শরীরের নিম্নার্ধ তথা কোমর থেকে পা পর্যন্ত অংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত। একজনের চার বছর বয়সে রেটিনায় ধরা পড়ে স্পট, তখন থেকেই দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে হতে নেই বললেই চলে। আরেকজন স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের অধিকারী হলেও সপ্তাহতিনেক আগেই দুর্ঘটনায় ভেঙেছেন পা। তাদের তিনজনেরই গতকাল ছিল গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করেই তারা সে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। আশা করছেন সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণও হবেন।
গতকাল শনিবার দেশের ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ও বিবিএ প্রথমবর্ষের ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশব্যাপী। সে পরীক্ষাতেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে অংশ নেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত নাজমুন্নাহার স্বর্ণা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে হ্রস্ব দৃষ্টিশক্তির দীপ্ত বিশ্বাস। আর ভাঙা পা নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দেন মাইসুরা রহমান।
বরিশালের স্বরূপকাঠির নাজমুন্নাহার স্বর্ণা ছোটবেলা থেকেই চলচ্ছক্তিহীন। মায়ের কোলে চড়েই স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে গতকাল পৌঁছে গেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রের ফটক থেকে পরে তাকে বিএনসিসি সদস্যরা স্ট্রেচার চেয়ারে করে পরীক্ষাকক্ষে পৌঁছে দেন।
অসুস্থ দিনমজুর বাবা আর গৃহিণী মায়ের সংসারে তিন বোনের মধ্যে স্বর্ণা সবার ছোট। সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়েই সিজিপিএ ৪.৭৫ নিয়ে এসএসসিতে ও সিজিপিএ ৪.৫৯ নিয়ে এইচএসসিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। স্বর্ণা বলেন, ‘মা আমার সংগ্রামের সারথি। মায়ের কোলে উঠেই আজ এতদূর এসেছি। এখন একটাই চাওয়া, একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগটা যেন পাই।’
স্বর্ণার মা মনিজা বেগমও চান মেয়ের চাওয়া পূরণ হোক। তিনি বলেন, ওর পড়ালেখার প্রতি আগ্রহের কারণেই ছোটবেলা থেকে মেয়েকে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি। আল্লাহ যদি মেয়েটার স্বপ্নপূরণ করেন, এতেই আমাদের শান্তি।
স্বর্ণার মতোই প্রতিবন্ধকতা জয় করতে চান পুরান ঢাকার নারিন্দার দীপ্ত বিশ্বাস। কবি নজরুল সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি। দৃষ্টিশক্তি একেবারেই হারাতে বসা দীপ্ত গতকাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন শ্রুতিলেখকের সহায়তায়।
দীপ্ত বিশ্বাসের মা দিপীকা সরকার জানালেন, চার বছর বয়সে দীপ্তের রেটিনাতে স্পট ধরা পড়ে। তখন থেকেই দূরের লেখা, এমনকি ব্ল্যাকবোর্ডের লেখাও স্পষ্ট দেখতে পারে না দীপ্ত। চিকিৎসা করালেও কোনো লাভ হয়নি। বরং জিনগত সমস্যা হওয়ায় চিকিৎসায় লাভ হবে না বলে চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন।
দৃষ্টিশক্তি হারাতে থাকলেও শ্রুতিলেখককে সঙ্গী করে পড়ালেখার পাঠ থামতে দেননি দীপ্ত। ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশের সেবায় কাজ করতে চান তিনি। দীপ্ত বলেন, কিছু প্রশ্ন সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের বাইরে থেকে এলেও পরীক্ষা ভালো হয়েছে। শ্রুতিলেখক থাকায় পরীক্ষা দিতে সমস্যা হয়নি। আশা করি, ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাব।
এ দুজনের থেকে ভিন্ন পরিস্থিতির শিকার কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করা মাইসুরা। গত ৫ মে কোচিং থেকে ফেরার পথে রিকশা উল্টে গেলে পা ভেঙে যায় তার। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণই পড়ে হুমকির মুখে। কিন্তু ম্যানেজমেন্টে পড়ার যে স্বপ্ন, মাইসুরা সে স্বপ্ন হারাতে চান না। তাই শেষ পর্যন্ত আবেদন করে মেঝেতে বসে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি।
গতকাল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদ ভবনের নিচতলার ১০৫ নম্বর কক্ষে মাইসুরার পরীক্ষা নেয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবক ও বিএনসিসির সহযোগিতায় তাকে পরীক্ষার হলে নেয়া হয়।
মাইসুরা বলেন, ‘মা-বাবা সঙ্গে এসেছেন। তারা পাশে আছেন বলেই ভরসা পাচ্ছি। মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই।’
মাইসুরার বাবা মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার কাছ থেকে যথেষ্ট আন্তরিকতা পেয়েছি। তারা আমার মেয়ের পরীক্ষার জন্য সব ধরনের সাহায্য করছেন।’
[প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন দৈনিক বাংলার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি]
এশিয়া মার্কেটিং ডে ২০২৩ এবং আধুনিক মার্কেটিংয়ের জনক ফিলিপ কটলারের ৯২-তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে অদ্য ২৭ মে, ২০২৩ তারিখে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ১৭টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে এশিয়ান মার্কেটিং ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশে এই অনুষ্ঠান আয়োজনে সহায়তা করে মার্কেটিং সোসাইটি অব বাংলাদেশ। বাংলাদেশের তরুণদেরকে আরও ক্ষমতায়িত করার এবং স্মার্ট নাগরিকের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্য নিয়ে এই অনুষ্ঠানের মূল উপজীব্য ছিল “স্মার্ট জাতি ও স্মার্ট নাগরিক সৃষ্টিতে মার্কেটিংয়ের ভূমিকা”। এই মহতী অনুষ্ঠানের অন্যতম অংশগ্রহণকারী ছিল কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (সিইউবি)।
সেমিনারের লাইভ প্যানেলে প্রধান বক্তা হিসেবে অনলাইনে সংযুক্ত হন আধুনিক মার্কেটিংয়ের জনক ফিলিপ কটলার। সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর কাছে মার্কেটিং দুনিয়ার নানাদিক নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ অংশে অনুষ্ঠানটির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ'র অধ্যাপক প্রফেসর মুহাম্মদ রিদওয়ানুল হক। লাইভ প্যানেল সেশনের মেম্বার হিসেবে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সম্মানিত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এইচ এম জহিরুল হক। আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব বিজনেসের ডিন ড. জহুরুল আলম এবং স্কুল অব বিজনেসের প্রধান এস এম আরিফুজ্জামান।
সেমিনারে লাইভ প্যানেল সেশনের মেম্বার হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার ইন্সটিটিউট অব মার্কেটিংয়ের অনারারি সেক্রেটারি, হাসলিনা বিন্তি আযলান এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিভাগের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ-এর মহাপরিচালক ও চিফ ইনোভেশন অফিসার ড. সৈয়দ মুনতাসির মামুন।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ মানসম্মত উচ্চ শিক্ষা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভর্তি সংক্রান্ত সকল তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (www.cub.edu.bd) পাওয়া যাবে। বিস্তারিত তথ্যের জন্য ফোন করা যাবে ০১৭০-৭০৭০২৮০, ০১৭০-৭০৭০২৮১, ০১৭০-৭০৭০২৮৪ নম্বরে। কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর ক্যাম্পাসের ঠিকানা: প্লট-খ, ২০১/১, প্রগতি সরণী, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ।
অনলাইনে আবেদন করতে ক্লিক করুনঃ https://www.cub.edu.bd/apply.php
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও বিভাগীয় চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ও সিল জালিয়াতির অভিযোগে কোতয়ালী থানায় করা মামলায় মো. সজীব আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অভিযুক্ত সজীব বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
শনিবার একদিনের রিমান্ড শেষে সজীব আহমেদকে আদালতে হাজির করা হলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কোতোয়ালি থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (এসআই) আশ্রাফ আলী জানান, একদিনের রিমান্ড শেষে জালিয়াতির মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজীব আহমেদকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) হাসান মাতুব্বর। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত অভিযুক্তকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার আদালত তার একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সজিব আহমেদ প্রতারণার মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ও উপাচার্যের সিল ও স্বাক্ষর জাল করে গত ২৩ মে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বরাবরে বিভাগীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ইসলামিক স্টাডিজ থেকে অন্য সাধারণ বিষয়ে মাইগ্রেশনের জন্য একটি আবেদন বিশ্ববিদ্যালয় আইটি অফিসে জমা দেন। এ ঘটনার বিষয়টি পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যায়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল কোতয়ালি থানা-পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সজিব আহমেদকে হেফাজতে নেন এবং তার কাছ থেকে জাল সিল ও স্বাক্ষর সংবলিত পৃষ্ঠা ও অন্যান্য কাগজপত্র জব্দ করেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে সজিবের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত কাগজপত্র, মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকের সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য সকল কাগজ খোঁজ করে পাওয়া যায়নি বলে জানান কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন। তিনি বলেন, স্বাক্ষর জালিয়াতির ঘটনার সূত্রধরে ওই শিক্ষার্থীর ভর্তির কাগজপত্র খোঁজ করা হয়। কিন্তু ভর্তির সময় যেসকল কাগজপত্র জমা থাকার কথা তা পাওয়া যায়নি। বিষয়টি আরও গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে দর্শন বিভাগে মাইগ্রেশনের জন্য আবেদন করেন সজীব। এতে নিজের ধর্মীয় পরিচয় বদল করে হিন্দু পরিচয় ব্যবহার করেন। তা ছাড়া আবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, কলা অনুষদের ডিন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যানের জাল স্বাক্ষর যুক্ত করেন। এমনকি জাল স্মারক নম্বরও ব্যবহার করেন। এ সময় সজিব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন এবং গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার জাল অ্যাডমিট কার্ডও জমা দেন। এসব কাগজপত্র তিনি ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দেন। পরে বিভাগ পরিবর্তনের জন্য ফল প্রকাশ করার সময় বিষয়টি কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক রইছ উদ্দিনের নজরে আসে। এরপর তার সব কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায় সে মুসলমান হলেও আবেদনপত্রে নিজেকে হিন্দু পরিচয় দেয়ার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, কলা অনুষদের ডিন ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরও জাল করেছেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গত বছরের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত তিনজন প্রক্সিদাতাকে কারাদণ্ড দেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা এর মূল হোতার নাম বলেন। তবে মূল হোতার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আবার প্রক্সি জালিয়াতির মাধ্যমে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ১০ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। জালিয়াতির স্পষ্ট নথি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও তাদের বহিষ্কার করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজার বেশেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতরা।
সর্বশেষ গত ২০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সেখানেও এজাহারে নেই প্রক্সিকাণ্ডের মূল হোতা মুশফিক তাহমিদ তন্ময়ের নাম। তিনি রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আবার জড়িত নেই, এমন এক শিক্ষার্থীর নামও সেই এজাহারে রয়েছে। তাই প্রশাসনের এমন উদাসীনতায় এবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে চক্রটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে যেকোনো অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে না পারলে তা আরও বৃদ্ধি পাবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী সোমবার থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় ৩ হাজার ৯৩০টি (কোটাবিহীন) আসনের বিপরীতে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫৭৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেবেন। এর মধ্যে ‘এ’ ইউনিটে ৭২ হাজার ৫০ জন, ‘বি’ ইউনিটে ৩০ হাজার ৬৭৪ জন এবং ‘সি’ ইউনিটে ৭৫ হাজার ৮৫০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেবেন। আগামী ২৯ মে ‘সি’ ইউনিট (বিজ্ঞান), ৩০ মে ‘এ’ ইউনিট (মানবিক) এবং ৩১ মে ‘বি’ (ব্যবসায় শিক্ষা) ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন সংস্থার তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় দুই পদ্ধতিতে জালিয়াতি হতে পারে। প্রথমত, ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্রে পরীক্ষার্থী ও প্রক্সিদাতার ছবিতে কারসাজির মাধ্যমে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর হয়ে অন্যজন পরীক্ষা দিয়ে এ জালিয়াতি করতে পারে। দ্বিতীয়ত, ভর্তি পরীক্ষা শুরু হলে প্রশ্ন সংগ্রহ করে সমাধানের পর তা ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীর কাছে পাঠিয়ে হতে পারে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীতে কখনো ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের নজির মেলেনি। তবে বরাবরের মতো প্রক্সি দিয়ে বিভিন্ন বিভাগে ভর্তির নজির রয়েছে। কারও বিরুদ্ধে প্রশাসনকে সেভাবে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি করতে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী সংগ্রহ করছেন জালিয়াত চক্রের সদস্যরা। এ চক্রের মধ্যে অধিকাংশই বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জড়িত এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠনের সহসভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বেও আছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৫-২৭ জুলাই তিনটি ইউনিটে রাবির সম্মান প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা হয়। ভর্তি পরীক্ষার কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের পরীক্ষার সময় জালিয়াতিতে জড়িত তিনজনকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। তবে চক্রের মূল সিন্ডিকেট এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এদিকে জালিয়াতির অভিযোগে আটক বায়েজিদ নামে এক প্রক্সিদাতা প্রক্সিকাণ্ডের মূল হোতা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুশফিক তাহমিদ তন্ময়ের নাম জানান। এ ছাড়া পরবর্তী সময়ে অনুসন্ধানে লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের (একাডেমিক রোল নম্বর ১৯১০৬৪৮১২০) ছাত্র মহিবুল মোমিন ওরফে সনেট, কোচিং সেন্টারের পরিচালক রাবির ইইই বিভাগের ফজলুর করিম মাহিনের নাম এলেও তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক বলেন, ‘যেকোনো অপরাধের বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে অপরাধীরা আরও সক্রিয় হয়। সেদিক থেকে জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে প্রশাসনের উদাসীনতা আরও বেশি সক্রিয় হতে সাহায্য করছে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আশা করব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে কার্যকরী ও কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘আমরা জালিয়াত চক্র ঠেকাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। আগের বছরে জড়িত থাকা কয়েকজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। কোনো ধরনের অপরাধ করার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া পরীক্ষার সময় বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা সবর্দা সক্রিয় থাকবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য দিয়ে তো আমরা কাউকে বহিষ্কার করতে পারি না। আমরা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকে তথ্য নিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে কাজ করছে। তথ্য-প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে তাদের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথমবর্ষের ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়েছে। প্রকাশিত ফলাফলে পাসের হার ৩২ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
চলতি বছর ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষায় পাস করেছে ১৩ হাজার ৫৭ জন। ন্যূনতম ৪০ নম্বর না পেয়ে ফেল করেছে ২৬ হাজার ৭১৩ জন শিক্ষার্থী। মোট পরীক্ষা দিয়েছিল ৩৯ হাজার ৭৭০ জন।
শনিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ও ফেইসবুক ভেরিফাইড পেজে ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
ভর্তি কমিটির কো-অর্ডিনেটর ও সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, ‘আমরা আজ ফলাফল প্রকাশ করেছি। মোট ৩৯ হাজার ৭৭০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১৩ হাজার ৫৭ জন। পরীক্ষায় পাশের হার ৩২ দশমিক ৮৩ শতাংশ।’
চবির ‘ডি’ ইউনিটে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান/গণিত/অর্থনীতি ও মানসিক দক্ষতার ওপর ১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা হয়। জিপিএ এর উপর আরও ২০ নম্বর হিসাব করে মোট ১২০ নম্বরের ফল তৈরি করা হয়। প্রতিটি ভুল নম্বরের জন্য কাটা হয় দশমিক ২৫ নম্বর। পরীক্ষায় কোনো লিখিত অংশ ছিল না। দ্বিতীয় বার পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের মোট নম্বর থেকে ৫ নম্বর কাটা হবে।
তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের লক্ষ্যে ‘দৃষ্টি চট্টগ্রাম’ এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ইস্পাহানি-দৃষ্টি ব্রেইনস্টর্মিং বিজনেস আইডিয়া কনটেস্ট। নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় শনিবার অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার ১২তম আসরের ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের দল ‘ফ্রি লিভিং’।
ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের প্রান্তিক এলাকার কৃষি উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের একই প্লাটফর্মে এনে কৃষি ব্যবস্থাপনা ও পণ্যের বাজারজাতকরণকে আরও সহজ ও দ্রুত করার ধারণা উপস্থাপন করে দলটি।
প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় রানার্সআপ হয়েছে যথাক্রমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের টিম ফনিক্স, টিম মাউন্টেন ও চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির টিম ইরিগমাস ডুয়ালিটি।
দৃষ্টি চট্টগ্রামের সভাপতি সাইফ চৌধুরীর সভাপতিত্বে গ্রান্ড ফিনালের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান, ইস্পাহানি গ্রুপের উইং ম্যানেজার মো. নুর নবী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দৃষ্টি চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ বকুল, সহ সভাপতি বন কুসুম বড়ুয়া নুপুর, শহিদুল ইসলাম, সাবের শাহ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মুন্না, যুগ্ম সম্পাদক কাজী আরফাত, রিদোয়ান আলম আদনান ও প্রতিযোগিতার সমন্বয়কারী সাখাওয়াত হোসেন মজুমদার।
চাঁদা না পেয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তাকে অপহরণের অভিযোগে ঢাকা কলেজের দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে নিউমার্কেট থানা পুলিশ। তারা হলেন, জনি হাসান ও এস এম শফিক। তারা ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানা গেছে। গত শুক্রবার রাতে ঢাকা কলেজের উত্তর ছাত্রাবাস (নর্থ হল) থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল গনি সাবু দৈনিক বাংলাকে বলেন, অয়ন সিগমাইন্ড নামের সিসি ক্যামেরা স্থাপনের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তাকে অপহরণের মামলায় ঢাকা কলেজের দুই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার তাদেরকে আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করলে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের অয়ন সিগমাইন্ড নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কোয়ালিটি কন্ট্রোলার হিসেবে কাজ করেন মো. মেহেদী হাসান। ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয়ে অভিযুক্তরা বেশ কিছুদিন আগে থেকে মেহেদী হাসানের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা না পেয়ে তারা গত ২৫ মে সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা ব্রিজ এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির লাগানো সিসি ক্যামেরাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে যান।
ওইদিন রাতে সিয়াম ও রমজান নামে দুজন মেহেদী হাসনকে ফোন করে বিষয়টি জানান। খুলে নিয়ে আসা সিসি ক্যামেরা ফেরত পেতে তাকে ঢাকা কলেজে যেতে বলেন তারা। পরে তৌকির নামে প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারীকে ঢাকা কলেজে পাঠান মেহেদী হাসান। তৌকির ঢাকা কলেজে গেলে তাকে জিম্মি করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অভিযুক্তরা। টাকা না পেলে তাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়া হয় ৷ পরে মেহেদী হাসান ঢাকা কলেজের উত্তর ছাত্রাবাসে গেলে, তাকেও জিম্মি করা হয়। তাদেরকে ছাত্রাবাসে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এ সময় আসামিরা তাদের কাছে থাকা টাকা ও এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেন ৷ একপর্যায়ে রাতে তৌকিরকে ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু মেহেদী হাসানকে আটকে রেখে রাতভর নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনে মেহেদী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার দুপুর ১২ টার দিকে তাকে গাউছিয়া মোড়ে রেখে যান অভিযুক্তরা। পরে নিউমার্কেট থানা পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
ওসি আরও জানান, ‘প্রথমে একটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। পরে এ বিষয়ে ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে অভিযানে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়। কোনভাবে এ বিষয়ে জানতে পেরে অভিযুক্তরা ভুক্তভোগী মেহেদী হাসানকে ছাত্রবাস থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। পরে আসামিরা তাকে নিউমার্কেটের গাউছিয়া মোড়ে ফেলে রেখে চলে যায়।’
ভুক্তভোগী মেহেদী হাসান এ ঘটনায় জনি হাসান ও এস এম শফিকসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। অন্য আসামিরা হলেন, গোলাপ হোসেন, মোহেরাব হোসেন সিয়াম, অর্ণব, রমজান, গোপাল, রাব্বী তালুকদার, বেল্লাল হোসেন, তারিফ, সালমান, রায়হান, মাসুম, ফাহিম ও শাহীন ৷ এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গুচ্ছভুক্ত ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ‘সি ইউনিট’ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সারা দেশের ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি কেন্দ্রে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। গুচ্ছের দ্বিতীয় দিনের ভর্তি পরীক্ষা ৯৬ শতাংশেরও অধিক শিক্ষার্থী উপস্থিতি ছিলেন।
ভর্তি পরীক্ষা শেষে শনিবার বিকেলে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির আহবায়ক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য জানান।
উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জানান, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ৩ হাজার ৩৩২টি আসনের বিপরীতে সারা দেশে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩৯ হাজার ৮৬৪ জন। এরমধ্যে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ৩৮ হাজার ৩৪৮ জন শিক্ষার্থী যা শতকরায় ৯৬ দশমিক ১৯৭ শতাংশ।
এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. মো. গোলাম মোস্তফা জানান, ‘সি’ ইউনিটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আবেদন করেন ১৫ হাজার ৯২১ জন শিক্ষার্থী। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দেন ১২ হাজার ৮৪৩ জন। উইল্স লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ উপকেন্দ্রে ৩ হাজার ৭৮ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেয়া হয়।
তিনি আরও জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে সর্বমোট উপস্থিত ছিলেন ১৫ হাজার ২৪৩ জন। এর মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ১২ হাজার ২৯৬ জন এবং উইল্স লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২ হাজার ৯৪৭ জন উপস্থিত ছিলেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে সর্বমোট উপস্থিতির হার ৯৫.৭৬ শতাংশ।
ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির আহবায়ক এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। সারা দেশে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের চেষ্টা করব।’
‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের বিষয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির আহবায়ক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, সব কেন্দ্র থেকে খাতা আসা শুরু হয়েছে। সব কেন্দ্রের খাতা আসার পর ওএমআর শিট মূল্যায়নের কাজ শুরু হবে। কোনো সমস্যা না হলে আগামী সোমবার ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে।
এর আগে শনিবার দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয় গুচ্ছের দ্বিতীয় ভর্তি পরীক্ষা। দুপুর ১টায় ঘণ্টাব্যাপী এ পরীক্ষা চলে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (বিডিইউ) কেন্দ্রে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ‘সি’ ইউনিটের (ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বিডিইউ কেন্দ্রের একাডেমিক, প্রশাসনিক ভবন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ উপকেন্দ্রে সুশৃঙ্খল পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে এ ভর্তি পরীক্ষা।
পরীক্ষা চলাকালে বিডিইউ উপাচার্য অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আলম জোয়ার্দার ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বিডিইউ কেন্দ্র এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ উপকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় মোট ৮১০ জন পরীক্ষার্থী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশকে কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচিত করেন। এর মধ্যে ৭৭৮ জন পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। বিডিইউ কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী উপস্থিতির হার ৯৬.০৫ শতাংশ।
বিডিইউ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও উপকেন্দ্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।
গুচ্ছভুক্ত ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষার শেষ মুহূর্তে হঠাৎ বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
শনিবার দেশের ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ক্যাম্পাসে ১২ হাজার ৮৪৩ জন পরীক্ষার্থী ছাড়াও উইল্স লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ উপকেন্দ্রে অংশ নেন তিন হাজার ৭৮ জন ভর্তিচ্ছু।
পরীক্ষার শেষ মুহূর্তে হঠাৎ বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা। বৃষ্টি থেকে বাঁচতে কেউ ছাতা, কেউ ফাইলপত্র মাথায় দিয়ে জবি ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।
বৃষ্টির কারণে শিক্ষার্থীদের খুঁজে পেতে ভোগান্তিতে পড়েন অভিভাবকরা। এসময় অনেক অভিভাবকই সন্তানদের খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকদের মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে মাইকে সন্তানের নাম ঘোষণা করেন।
মাইনুল হাসান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আসার সময় জ্যাম নিয়ে এক ঝামেলা, এখন পরীক্ষা থেকে বের হতে বৃষ্টি নিয়ে আরেক ঝামেলা। ভিজে ভিজে বাসায় যেতে হবে, জ্বর এলে সামনের পরীক্ষা দিতে সমস্যা হবে।’
নীরব দাস নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পরীক্ষা মোটামুটি ভালো হয়েছে। তবে বের হতে মনে হচ্ছে অনেক ঝামেলা হবে। সব শিক্ষার্থী চাচ্ছে একসঙ্গে বের হতে, এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা।’
আজহারুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘ছোট জায়গায় এত মানুষ, ২০ মিনিট ধরে বৃষ্টিতে ভিজে দাঁড়িয়ে আছি, মেয়ে কখন আসবে জানি না। টেনশন হচ্ছে।’
মুনিয়া জাহান নামে আরেক অভিভাবক বলেন, ‘হঠাৎ বৃষ্টি চলে এল, সঙ্গে ছাতাও আনিনি। মেয়েকে বলেছিলাম এক জায়গায় থাকব, বৃষ্টির কারণে দাঁড়িয়ে আছি অন্য জায়গায়। মেয়ের কাছে মোবাইলও নেই যে কল দিয়ে কথা বলব।’
চার বছর বয়স থেকেই চোখের সমস্যা ধরা পড়ে দীপ্ত বিশ্বাসের। তখন থেকেই চোখের আলো ধাপসা হতে থাকে তার। চিকিৎসা করালেও কোনো লাভ হয়নি। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ‘সি’ ইউনিটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন দীপ্ত। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও মেধাবী এই শিক্ষার্থী জয় করেছেন সকল প্রতিবন্ধকতাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে দেশের জন্য কাজ করতে চান এই শিক্ষার্থী।
শনিবার ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে শ্রুতি লেখকের সাহায্যে পরীক্ষা দেন দীপ্ত বিশ্বাস। ভর্তি পরীক্ষা শেষে দৈনিক বাংলার সঙ্গে কথা বলেন দীপ্ত বিশ্বাস ও তার মা দিপীকা সরকার।
দীপ্ত বিশ্বাসের মা দিপীকা সরকার জানান, চার বছর বয়সে দীপ্ত বিশ্বাসের ব্রেটিলাতে স্পট ধরা পড়ে। তখন থেকেই দূরের লেখাকে স্পষ্ট দেখতে পারেন না দীপ্ত। ব্ল্যাকবোর্ডের লেখা দেখতেও সমস্যায় ভুগতে হতো তাকে। তখন থেকেই চিকিৎসা করালেও কোনো লাভ হয়নি। বরং দিনে দিনে দৃষ্টি শক্তি কমেছে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে তিনি জানান, এটি দীপ্ত বিশ্বাসের জিনগত সমস্যা। কোনো চিকিৎসায় লাভ হবে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
দীপ্ত বিশ্বাসের বাড়ি পুরান ঢাকার নারিন্দায়। কবি নজরুল সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় শ্রুতি লেখকের সাহায্যে পরীক্ষা দিয়েছে দীপ্ত। শ্রুতি লেখকের নাম মো. সাব্বির ইসলাম। ছোটবেলা থেকেই শ্রুতি লেখকের সাহায্য নিয়ে সকল প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এসেছেন বলে জানান দীপ্ত বিশ্বাস। ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে দেশের সেবায় কাজ করতে চান তিনি।
দৈনিক বাংলাকে দীপ্ত বিশ্বাস বলেন, ‘পরীক্ষা ভালো হয়েছে। কিছু প্রশ্ন শর্ট সিলেবাসের বাইরে থেকে এসেছে। শ্রুতিলেখক থাকায় পরীক্ষা দিতে কোনো সমস্যা হয়নি। আশা করি ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাব। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে দেশের জন্য কাজ করতে চাই।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের উপ-প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মিতা শবনম বলেন, ‘আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ ববস্থায় দীপ্ত বিশ্বাসের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। কোনো অসুবিধা যাতে না হয় সেজন্য সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়।’
জন্ম থেকেই শরীরের নিচের অংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত নাজমুন্নাহার স্বর্ণার। ছোটথেকেই মায়ের কোলে চড়ে সব কাজ। পেরিয়েছেন স্কুল-কলেজের গণ্ডি। মায়ের কোলে চড়েই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে এসেছিলেন শনিবার।
শনিবার ২০২২-২৩ সেশনের গুচ্ছের ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে অংশ নেন জেলার স্বরূপকাঠিতে বেড়ে ওঠা স্বর্ণা। পরে মায়ের কোল থেকে নেমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি সদস্যদের সহায়তায় হুইলচেয়ারে চেয়ারে করে স্বর্ণা যান পরীক্ষা কেন্দ্রে।
মা মনিজা বেগম বলেন, ‘মেয়ে এমন শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হলেও ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি প্রবল আগ্রহ তার। ওর স্বপ্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করবে।’
কথা স্বর্ণার সঙ্গেও। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহের কথা। আমার বন্ধুরা অনেকে প্রথম প্রথম ভিন্নভাবে নিলেও আস্তে আস্তে তারা আমাকে সাহায্য করা শুরু করে। আমার সংগ্রামের সারথি আমার মা। মায়ের কোলে উঠেই আজকে আমার এই পর্যন্ত আসা।’
তিন বোনের মধ্যে স্বর্ণা সবার ছোট। পিতা বৃদ্ধ শাহাদাৎ হোসেন হাওলাদার একজন দিনমজুর। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ, মা বৃদ্ধা মনিজা বেগম গৃহিণী। স্বর্ণা উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেছেন করেছেন স্বরূপকাঠি সরকারি কলেজ থেকে। এসএসসিতে তার জিপিএ ৪.৭৫ এবং এইএসসিতে ৪.৫৯।
মা মনিজা বেগম বলেন, ‘জন্ম থেকেই স্বর্ণার শরীরের নিচের অংশ অচল। ছোটবেলা থেকে আমি কোলে করে স্কুল-কলেজে নিয়ে যেতাম। আজও আমি কোলে করে তাকে নিয়ে এসেছি ভর্তি পরীক্ষা দেয়ানোর জন্য। স্কুল কলেজ সবজায়গায় পরীক্ষায় সে ভালো ফলাফল করত। ছোটকাল থেকেই ও পড়াশোনায় মনোযোগী। ওর বাপের বয়স হয়েছে তিনি অসুস্থ, আমারও বয়স হয়েছে আগের মত আর শক্তি নেই। সবমিলিয়ে চলছে কষ্টের উপরে। আল্লাহ যদি মেয়েটার স্বপ্ন পূরণ করে এতেই আমাদের শান্তি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘আজকে একজন ভর্তি পরীক্ষার্থী তার মায়ের কোলে উঠে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন। আমরা বিএনসিসির সদস্যদের সহায়তায় তাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেই ওই কক্ষের শিক্ষকেরা পরীক্ষা দেয়ার জন্য সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা করেছেন। পরীক্ষা শেষে আমরা তার মায়ের কাছে পৌঁছে দেই। এতটা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অদম্য ইচ্ছা শক্তি দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন ওই শিক্ষার্থী। তার স্বপ্ন যেন পূরণ হয় সেই আশা করছি।’